আমার এ ব্লগে সকল দর্শকদের জানাই আন্তরীক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা . উক্ত ব্লগে শুধু মাত্র কুরআন হাদীসের আলোকে ইসলামী মূল্যবোধের উপর বিশদ আলোচনা করা হবে , দর্শকদের যে কোন যূক্তি ও গঠন মূলক মনতব্য সাদরে গ্রহন করা হবে , ধন্যবাদন্তে--======================== এম,এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫
মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫
Tafsire Ma'arifulquraan: তাফসীরে মা‘আরিফুল কুরআন (বাংলা) সংক্ষিপ্ত
Tafsire Ma'arifulquraan: তাফসীরে মা‘আরিফুল কুরআন (বাংলা) সংক্ষিপ্ত: ১- সূরা আল-ফাতিহা ২- সূরা আল-বাক্বারা ৩-সূরা আলি ইমরান
বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫
পূজার উৎসবে কোন মুসলমানের যাওয়া ও প্রসাদ খাওয়া জায়েয কি ?
পূজার উৎসবে কোন মুসলমানের যাওয়া ও প্রসাদ খাওয়া জায়েয কি না?
=============================================== আল্লাহ্ পবিত্র কুর'আনের মোট চার জায়গায় উল্লেখ করেছেন- * সূরা বাকারার ১৭৩ নং আয়াতে, * সূরা মায়িদাহ’র ৩ নং আয়াতে, * সূরা আন’আমের ১৪৫ নং আয়াতে, * সূরা নাহলের ১১৫ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আল্লাহ্ তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস খাওয়া।
আর যে পশু জবাই করার সময় আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে”
=============================================== আল্লাহ্ পবিত্র কুর'আনের মোট চার জায়গায় উল্লেখ করেছেন- * সূরা বাকারার ১৭৩ নং আয়াতে, * সূরা মায়িদাহ’র ৩ নং আয়াতে, * সূরা আন’আমের ১৪৫ নং আয়াতে, * সূরা নাহলের ১১৫ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আল্লাহ্ তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস খাওয়া।
আর যে পশু জবাই করার সময় আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে”
অর্থাৎ যা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয় বা জবেহ করা হয় সেটা আমাদের জন্য ভক্ষন করা আল্লাহ্ হারাম করে দিয়েছেন। আর এই কারনেই পূজার প্রস্বাদ খাওয়া হারাম। কারণ এতে বিন্দু মাত্রও কারো সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই যে হিন্দুদের পুজাতে, পশু সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী কার নামে উৎসর্গ করা হয়ে থাকে।সুতরাং হিন্দু বা অন্যান্য মুর্তিপুজকদের ধর্মীয় উৎসবে প্রাসাদ বা যে কোন পশুর মাংস ভক্ষন করা মুসলিমদের জন্য হারাম।
এখন আসি পূজার অনুষ্ঠানে মুসলিমদের যাওয়ার বিষয়ে-
আমাদের দেশে যখন হিন্দুদের পূজার উৎসব চলতে থাকে তখন অনেক মুসলিম-ই তাদের ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে। ঐ অনুষ্ঠানে উপভোগ করে।অনেকে উৎসুক ভাবেই যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় হিন্দুদের চাইতে উৎসুক মুসলিমই বেশী ।
এখন একটু ভেবে দেখুন, সেখানে কি হয়?, পুর্তিপূজা হচ্ছে,তার সামনে মাথা নত করে সেজদাহ করা হচ্ছে এগুলো সবই আল্লাহর সাথে শির্ক করা।
এখন একটু ভেবে দেখুন, সেখানে কি হয়?, পুর্তিপূজা হচ্ছে,তার সামনে মাথা নত করে সেজদাহ করা হচ্ছে এগুলো সবই আল্লাহর সাথে শির্ক করা।
আর শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়, সবচেয়ে জঘন্যতম অপরাধ। মহান আল্লাহ বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্র সাথে শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়।(সুরা লুকমানঃ ১৩) আর শির্কের অপরাধ আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। মহান আল্লাহ বলেন : "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না,কিন্তু এর চেয়ে ছোট পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন,এবং যে কেউ আল্লাহর অংশী স্থির করে, সে মহাপাপে আবদ্ধ হয়েছে। (সূরা নিসাঃ ৪৮)। .
এখন দেখুন, কোরআনের ভাষায় সেখানে সবচেয়ে বড় অন্যায় পাপ আপনার সামনে হচ্ছে। আর আপনি মন ভরে তাউপভোগ করছেন । সমর্থন দিচ্ছেন ।আর রাসুল (সাঃ) বললেন-তোমাদের কেউ কোন গর্হিত/ অন্যায় কাজ হতে দেখলে সে যেন নিজের হাতে (শক্তি প্রয়োগে)তা সংশোধন করে দেয়,যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে তবে যেন মুখ দ্বারা তা সংশোধন করে দেয়, আর যদি তাও না পারে তবে যেন সে ঐ কাজটিকে অন্তর থেকে ঘৃণা করবে। আর এটা হল ঈমানের নিম্নতম স্তর। [সহিহ মুসলিম,ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং ৭৮] .
অথচ আপনি ঐ অন্যায়কে বাঁধা তো দেনই না, মনথেকেও ঘৃণা করেন না বরং ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে মনে মনে উপভোগ করেন। অন্তত মন থেকে ঘৃণা করলেও দুর্বলতম ঈমানদার হিসেবে আপনার ঈমান থাকত কিন্তু ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে তাদের অনুষ্ঠান মনে মনে উপভোগ করার পরেও কি আপনি দাবী করবেন যে- আপনার ঈমান ঠিক আছে। এটা হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়। তবে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজীত বা অন্য কোন জরুরী কাজে সেখানে গেলে অবশ্যই তা এর আওতাভূক্ত নয়।
আর একটি পরিতাপের বিষয় হল মুসলিমরা তাদের পুজায় অংশগ্রহন করে,কিন্তু হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের, মুসলিমদের ঈদের অনুষ্ঠানে কয় জনকে দেখেছেন?মুসলিম হিসাবে লজ্যা থাকা চাই ।তবে একটা কথা স্বরণ রাখতে হবে প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বঃ স্বঃ স্হানে রেখে আমাদেরকে চলতে হবে। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার বা মন্দ বলারও কোন অবকাশ নেই। তাদের কর্ম ও কর্ম ফল তাদের জন্য আমাদের কর্ম ও কর্ম ফল আমাদের জন্য। اكم دينكم ولى دين । সুরায়ে কাফেরুন"
আর একটি পরিতাপের বিষয় হল মুসলিমরা তাদের পুজায় অংশগ্রহন করে,কিন্তু হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের, মুসলিমদের ঈদের অনুষ্ঠানে কয় জনকে দেখেছেন?মুসলিম হিসাবে লজ্যা থাকা চাই ।তবে একটা কথা স্বরণ রাখতে হবে প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বঃ স্বঃ স্হানে রেখে আমাদেরকে চলতে হবে। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার বা মন্দ বলারও কোন অবকাশ নেই। তাদের কর্ম ও কর্ম ফল তাদের জন্য আমাদের কর্ম ও কর্ম ফল আমাদের জন্য। اكم دينكم ولى دين । সুরায়ে কাফেরুন"
মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৫
৬ষ্ঠ রত্ন:- আল্লাহর ৯৯ গুনবিশিষ্ট নামগুলি ১০০% জাহেলিয়াতের প্রভাব মূক্ত
৬ষ্ঠ রত্ন:- আল্লাহর ৯৯ গুনবিশিষ্ট নামগুলি ১০০% জাহেলিয়াতের প্রভাব মূক্ত
গত ৩ জুলাই 2015 নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে তথাকথীত সাংবাদিকও কলামিষ্ট্ খ্যাত আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছিলেন, যে "আজকের আরবি ভাষায় যেসব শব্দ, এর সবই তৎকালীন কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, এর সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম।সে বলেছিল যে,তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল"। নাউযুবিল্লাহ ।
প্রিয় দেশবাসী মুসলিম ভাইবোনেরা আপনারা সকলেই অবগত আছেন এই পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক আল্লাহদ্রোহী ভন্ড,জাহেল-মূর্খ, মুরতাদদের আবির্ভাব ঘটেছিল,ইসলামের আলোকে নিভিয়ে ফেলার জন্য।কিন্তু কোন বেঈমান-কাফেরের দল ইসলামের চুল পরিমান ও ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়নি।বরং তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।যারাই ইসলামের আলোকে নিভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করবে তারাই এর আগুনে পুড়ে ছারখার হতে বাধ্য। ।এই সকল মুরতাদদের কথার সত্যতার বিন্দুমাত্রও এর অবকাশ নেই।যারা নিজের স্রষ্টাকে অস্বীকার করে তাদের চেয়ে অপদার্থ আর কেউ আছে বলে মনে হয়না।কাজেই কেউ যেনএই ধরণের আগাছাদের কথায় বিভ্রান্তী না হন এই জন্যই আমার এ প্রয়াস ।এবার আসা যাক মূল কথায়
১* আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহ ১০০%জাহেলিয়াত মূক্ত কারণ অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমানীত
যখন ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে রাহমান ,রাহীম,গাফুর, রাজ্জাক,হাইয়ূল-ক্বাইয়ূম ইত্যাদী আল্লাহর গুনবাচক নাম গুলো উচ্ছারণ করতেন তখনি কাফেররা বলত ماالحى القيوم؟ ماالرحمن؟ماالرحيم ؟ما الغفار ؟ অর্থাৎ ؟ কে রাহমান ?কে রাহীম ? কে গাফুর ? কে রাজ্জাক? ইত্যাদী,
মূলত কাফেররা এই সকল নাম সম্পর্কে কোন প্রকারের অবগতও ছিলেন না। যদি দেবতাদের নাম হত, বা আগে থেকে অবগত থাকত তাহলে তারা এ প্রশ্ন কখনই করতেন না যে, কে রাহমান ?কে রাহীম ? কে রাজ্জাক ইত্যাদী।অবশ্যই আল্লাহর মূল নাম "আল্লাহ" সম্পর্কে সকলেই অবগত ছিলেন।কিন্তু গুনবাচক নাম সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিলনা।
২ * ইসলাম ধর্ম, দেবতা তথা মূর্তি পুজাকে বিশ্বাস তথা এলাউ করেনা , ইসলামে দেবতা পুজার কোন স্হান নেই। আপনারা যারা ইতিহাস জানেন তাদের ও আবশ্যই জানা থাকার কথা যে আজকে যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ধর্ম সহ অন্যান্য ধর্মে দেবতা পুজার যে হিড়িক চলছে, ঐ সকল ধর্মের মূল গ্রন্হেই বর্ণিত আছে যে মূর্তি দেবতা পুজা নট এলাউ । সেখানে ইসলাম ধর্মে আল্লাহর গুনবাচক নাম কে দেবতাদের নাম বলে মানুষ কে বিভ্রান্তি করার অপকৌশল মাত্র ।
পবিত্র কোরআনে পূর্ণাঙ্গ একটি সুরাই অবতীর্ণ করা হয়েছে ," সূরায়ে কাফেরুন" যেখানে দেবতা পুজাকে সম্পূর্ন ভাবে প্রত্যাখান করা হয়েছে ।
যেমন এরশাদ হচ্ছে قل يا ايهاالكافرون لا اعبد ماتعبدون ولا انتم عبدون ما اعبد অর্থাৎ 1 বলুন ( হে নবী) হে কাফেরকুল 2 আমি এবাদত করিনা ,তোমরা যার এবাদত কর । 3 এবং তোমরাও এবাদত কারী নও , যার এবাদত আমি করি । 4 এবং আমি এবাদতকারী নই যার এবাদত তোমরা কর। 5 তোমরা এবাদতকারী নও যার এবাদত আমি করি 6 তোমাদের কর্ম ও কর্ম ফল তোমাদের জন্য এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে ।
এই পূর্নাঙ্গ একটি সুরা সহ অন্যান্য আয়াতে দেবতা পুজাকে যেখানে সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাখান করা হয়েছে ,সেখানে আল্লাহর ৯৯ নাম দেবতাদের নাম হয় কি করে ? এই আগাছাদের জানা দরকার ।
এই সুরার শানে নুযুল দেখলে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বর্নণা করেন ,একবার তৎকালীন মক্কার বড বড কাফেরদের লীডার যেমন ওলীদ ইবনে মুগীরা ,আস ইবনে ওয়ায়েল, আসওয়াদ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ও উমাইয়া ইবনে খলফ প্রমুখ মক্কার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কয়েকজন রাসুল সাঃ এর কাছে এসে প্রস্তাব দিল।
আসুন আমরা পরস্পরের মধ্যে এই শান্তি চুক্তি করি যে, একবছর আপনি আমাদের উপাস্য তথা দেবতাদের এবাদত করবেন এবং এক বছর আমরা আপনার উপাস্যের তথা আল্লাহর এবাদত করব । ( কুরতুবী ) মারেফুল কোরআন বাংলা পৃঃ 1479 ।
এর পরিপেক্ষিতে জিবরাইল আঃ এই পূর্নাঙ্গ সূরা নিয়ে আল্লাহর পক্ষথেকে হাজির হলেন এবং কাফেরদের এই সকল ক্রিয়া-কর্মের সাথে সম্পূর্ন স্মপর্কচ্ছেদ ও ভয়কট করার নির্দেশ দিলেন এবং আল্লাহর অকৃত্রিম ভালবাসা ও এবাদতে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছন।
এখানে আগাছাদের কাছে প্রশ্ন যদি আল্লাহর ৯৯ নাম দেবতাদের নামই হতো তাহলে কাফেরদের প্রস্তাব মেনে নিলেইতো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। কাফের মুশরীকদের সাথে এত যুদ্ধ করতে হতোনা আবার নবী সাঃ তাঁর প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে মদীনাতে হিজরত করতে হতোনা।সুতরাং এতে কারো বুঝতে কষ্ট হবেনা যে দেবতাদের নাম ও আল্লাহর গুনবাচক নাম সম্পর্নই ভিন্ন।
৩ * একবার কাফের /মুশরিকরা নবী সাঃ থেকে আল্লাহর বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল অথবা অন্য রেওয়াতে এসেছে মুশরিকরা আল্লাহর প্রিয় হাবীব সাঃ এর কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে আল্লাহ কিসের তৈরী? স্বর্নরৌপ্প অথবা অন্য কিছুর থেকে তৈরী ? তখন তাদের জবাবে সুরায়ে এখলাস সমপূর্ন অবতীর্ণ হয়। আর বলা হয় "আল্লাহ"হলেন তিনি, যিনি একক অদ্বিতীয় যার কোন শরীক নেই যার কোন মাতা পিতা নেই , তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকে ও কেউ জন্ম দান করেননি। কারন সন্তান প্রজনন সৃষ্টির বৈশিষ্ট স্রষ্টার নয় । তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কেউ তাঁর সমতূল্য নয় এবং আকার আকৃতিতে কেউ তাঁর সাথে সামঞ্জস্য রাখেনা । তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তিনিই হলেন আল্লাহ ।
আর দেবতা বলা হয় যার শরীক আছে যাদের ছেলে-মেয়ে আছে, যাকে জন্ম দান করেছেন কেউ ,তিনিও কাউকে জন্ম দিয়েছেন। তাছাড়া দেবতা তথা মূর্তি গুলো কোন এক সময় মানুষ ছিল, তাদের মৃত্যুর পর ভক্তরা তার মূর্তি বানিয়ে তাদের পুজা শুরু করে দিয়েছে ।। ইসলাম তথা মুসলমানগন মানব পুজা করেনা ।
মুসলমান এমন দেবতাদের এবাদত করেনা ।যাকে শরিয়তে ইসলামে শীর্ক ও হারাম করা করা হয়েছে ।
৪*অপর দিকে আল্লাহর গুনবাচক নাম আর-রাহমান এরالرحمن পরিচয় দেয়ার জন্য কোরআন মজীদের পূনাঙ্গ একটি সূরা,সূরা আর-রাহমান অবতীর্ণ করা হয়েছে।কারণ তৎকালীন মক্কার কাফেররা আল্লাহ তায়ালার এই নাম সমপর্কে অবগত ছিলনা।তাই মুসলমানদের মুখে "রাহমান"নাম শুনে ওরা বলাবলি করত:وماالرحمن রহমান আবার কি?সুতরাং কাফেরদের অবহিত করার জন্য সূরার শুরুতে এই নাম ব্যবহার করা হয়েছে।এবং অত্র সুরার প্রথম থেকেই শেষ পর্যন্ত ৭৮টি আয়াতে মূলত সেই "রাহমান"এর পরিচয় গুনাবলী,কুদরত,বৈশিষ্ট আর ক্ষমতার কথা বর্নণা করা হয়েছে। সুতরাং রাহমান সহ আল্লাহর প্রসিদ্ধ ৯৯ নামের সাথে দেবতা-মুর্তির নামের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ।আললাহ যেমন অবদী আল্লাহর সকল নাম ও অবদী, তাছাড়া আল্লাহর এ প্রসিদ্ধ ৯৯ নাম ছাড়া আরও প্রায় ৩ হাজার বা ১০ হাজার গুনবাচক নামের কথা বিভিন্ন ওলামাদের (নুর ইসলাম আদীবওওলীপুরী )মুখে শুনে থাকি,সবই আল্লাহর জন্য প্রজোয্য,যদিও তা আমাদের জানা নেই।
ঐসকল খোদাদ্রোহী নাস্তিকদের প্রতি জিজ্ঞাসা আল্লাহর গুনবাচক নাম গুলো দেবতাদের নাম হয় কি ভাবে ?যেমন ধরুন আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহের একটি" حى القيوم" অর্থাৎ যিনি জিবীত এবং চিরন্জীব।পৃথিবীতে এমন কোন দেবতার কি অস্হিস্ত আছে যে,যিনি জিবীত এবং চিরজিবী ?
তাহলে এটা দেবতার নাম হয় কি ভাবে ؟
আল্লাহর অপর গুনবাচক নাম যেমন "خالق" সৃষ্টি কর্তা অর্থাৎ ভূমন্ডল-নবমন্ডলে মানব দানব আসমান জমিন গ্রহ -নক্ষত্র সহ সব কিছুরই যিনি সৃষ্টি কর্তা ।
পৃথিবীতে যারা দেবতা পুজক তারাও আজ পর্যন্ত এই কথার দাবী করার সাহস পায়নি যে তাদের দেবতা ছোট একটি মশা মাছি আর পিপিলীকার মত ছোট্ট প্রানী সৃষ্টি করেছে ।তাহলে خالق দেবতার নাম হয় কি ভাবে?তেমনি ভাবে "الصمد" অর্থাৎ অমুখাপেক্ষী । আল্লাহ যিনি মানব দানব তথা সৃষ্টি কুলের মত কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী নয়।
পৃথিবীতে এমন কোন দেবতা আছে কি? যে কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নয় ? প্রথমত দেবতার অস্হিত্বের জন্য মাটি, পাথর,রং, অলংকার,পোশাক,আর মানবের হাতের স্পর্শের মুখাপেক্ষী। মানবের হাতের তৈরী এ মূর্তি বা দেবতা কি ভাবে الصمد "অমুখাপেক্ষী"আল্লাহর এ গুনবাচক নাম ধারণ করতে পারে?
এই সকল নাস্তিকদের প্রতি জিজ্ঞাসা ।এইভাবে আল্লাহর অন্যান্য গুনবাচক নামও একই ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখুন,এমন কোন একটা নাম পাওয়া যাবেনা যেটা দেবতাদের নামের সাথে সামান্যতম্ সামঞ্জস্য রাখতে সক্ষম।এখানে এক্ষুদ্র লেখনিতে তা বিশ্লেষন সম্ভব না।আক্বলমন্দ কে ইশারাই যথেষ্ট।
৪* আল্লাহর ৯৯ নাম গুলো কি ? যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন
ولله الاسماء الحسنى فادعوه بها وذروااللذين يلحدون فى اسمائه سيجزون ما كانوا يعملون
অর্থাৎ আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সেই নাম ধরেই তাকে ডাক। আর তাদের বর্জন কর ,যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃত কর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।আল আরাফ -আয়াত ১৮০ ।উক্ত আয়াতে মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদেরকে তাঁকে তাঁর সুন্দরতম নাম দিয়ে স্বরণ করতে বলেছেন।
মূল "আল্লাহ" শব্দ হল আল্লাহর জাতী নাম ।আর আল্লাহ জাল্লাহ শানুহুর ৯৯ নামের কিছু নাম এসেছে আল্লাহর নিজের পছন্দে যা কোরআনুল করিমে আল্লাহ নিজেকে নিজে অভিহিত করেছেন, কিছু এসেছে জিব্রায়িল ফেরেশতার পরামর্শে। যা হাদীসে রসুল সা্ঃ দ্বারা প্রমানীত এ নাম গূলো সম্পর্কে পৃথিবীবাসী কখনো এর পূর্বে ওয়াকেফহাল ছিলেননা একমাত্র এটা দ্বীনিয়াল্ ইসলামের বৈশিষ্ট। ৯৯ নামের হাদিসটি আবু হোরায়রা (রা) বর্ণিত, এর সনদ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাছাড়া আরও অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমানীত যে , আল্লাহর ৯৯ নাম দ্বারা তাকে ডাকার জন্য বলেছেন।যেমন আবু হোরাইরাহ রাঃ থেকে এক দীর্ঘ হাদিসে সেই ৯৯ নামের বর্ণনা পাওয়া যায় নিন্মে হাদিসটি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করা হল ।
عن أبي هريرة ، رضي الله عنه ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : " إن لله تسعا وتسعين اسما مائة إلا واحدا ، من أحصاها دخل الجنة ، وهو وتر يحب الوتر " .
أخرجاه في الصحيحين من حديث سفيان بن عيينة ، عن أبي الزناد ، عن الأعرج ، عنه رواه البخاري ، عن أبي اليمان ، عن شعيب بن أبي حمزة ، عن أبي الزناد به وأخرجه الترمذي ، عن الجوزجاني ، عن صفوان بن صالح ، عن الوليد بن مسلم ، عن شعيب فذكر بسنده مثله ، وزاد بعد قوله : " يحب الوتر " : هو الله الذي لا إله إلا هو الرحمن الرحيم ، الملك ، القدوس ، السلام ، المؤمن ، المهيمن ، العزيز ، الجبار ، المتكبر ، الخالق ، البارئ ، المصور ، الغفار ، القهار ، الوهاب ، الرزاق ، الفتاح ، العليم ، القابض ، الباسط ، الخافض ، الرافع ، المعز ، المذل ، السميع ، البصير ، الحكم ، العدل ، اللطيف ، الخبير ، الحليم ، العظيم ، الغفور ، الشكور ، العلي ، الكبير ، الحفيظ ، المقيت ، الحسيب ، الجليل ، الكريم ، الرقيب ، المجيب ، الواسع ، الحكيم ، الودود ، المجيد ، الباعث ، الشهيد ، الحق ، الوكيل ، القوي ، المتين ، الولي ، الحميد ، المحصي ، المبدئ ، المعيد ، المحيي ، المميت ، الحي ، القيوم ، الواجد ، الماجد ، الواحد ، الأحد ، الفرد ، الصمد ، القادر ، المقتدر ، المقدم ، المؤخر ، الأول ، الآخر ، الظاهر ، [ ص: 515 ] الباطن ، الوالي ، المتعالي ، البر ، التواب ، المنتقم ، العفو ، الرءوف ، مالك الملك ، ذو الجلال والإكرام ، المقسط ، الجامع ، الغني ، المغني ، المانع ، الضار ، النافع ، النور ، الهادي ، البديع ، الباقي ، الوارث ، الرشيد ، الصبور
ثم قال الترمذي : هذا حديث غريب وقد روي من غير وجه عن أبي هريرة [ رضي الله عنه ] ولا نعلم في كثير من الروايات ذكر الأسماء إلا في هذا الحديث .
মূলত:এই নাম গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বিশেষ ক্ষমতা মাহাত্য ও কুদরতের বহিঃপ্রকাশ করে থাকেন ।
তাছাড়া উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখায় (মুফতি শফি ছাঃ রাহঃ তফসীরে মারেফুল কোরআন বাংলা সংস্করণ মাওঃ মহিউদ্দিন খান কতৃক ৫০৬ পৃঃ ) বলেছেন এই নিদ্দিষ্ট নাম গুলি যদি আল্লাহ ছাডা অপর কারো ক্ষেত্রে ভ্রান্ত বিশ্বাসের ভিত্তিতে হয় ,যাকে এসব শব্দ সম্বোধন করা হচ্ছে তাকেই যদি খালেক কিংবা রায্যাক মনে করা হয় ,( যেমনটি আঃ গাফ্ফার চোধুরী বলেছেন এই নাম গুলি দেবতাদের নাম ) তাহলে তা সম্পূর্ণ কূফর। (অর্থাৎ কাফের হয়ে যাবে ) ।আর বিশ্বাস যদি ভ্রান্ত না হয়, শুধু অমনোযোগিতা কিংবা না বুঝার দরুন কাউকে খালেক ,রায্যাক রাহমান কিংবা সুবহান বলে ডাকা হয়, যেমনটি ( যেমনটি আঃ গাফ্ফার চোধুরী বলেছেন এই নাম গুলি দেবতাদের নাম ) তাহলে তা যদি ও কুফর নয়, কিন্তু শেরেকী সূলভ শব্দ হওয়ার কারনে কঠিন পাপের কাজ ।( মারেফুল কোরআন বাংলা বঙ্গানুবাদ মহিউদ্দিন খান কৃত ৫০৬ পৃঃ ) অর্থাৎ শির্ক হওয়ার কারনে বিনা তাওবায় ক্ষমা যোগ্য নয় ।
৫*তৎকালীন আইয়্যামে জাহেলিয়াতে
কাবা শরীফে ৩৬০টির মত মূর্তি ছিলো তাদের নামের সাথে আল্লাহর ৯৯ নামের কোনো দূরতম সম্পর্ক নেই, হুবাল,লাত ,উজ্জা, মানাত, অবগাল ,দুল খালসা, , মালাকবেল, এল্লাহ নেব, নের্গাল,সিন সুয়া, ইগুছ,নছর, নুহা, সুয়া, রুভা , ‘ছাফা’ পর্বতে ‘এসাফ’ এবং ‘মারওয়ায়’ ‘নায়েলা’ইত্যাদি।
শুধু "এল্লাহ" নামটি আল্লাহর নামের কাছাকাছি, কিনতু এল্লাহ দেবতার নাম হলেও কাফেররা "আল্লাহ"কে আল্লাহই ডাকতো। আর দেবতাদের ডাকতো আল্লাহ পর্যন্ত পৌছার মাধ্যম হিসাবে ।সেই কারণে আমরা দেখতে পাই জাহেলিয়াত যুগেও আবদুল ওজজাহ আবদুল লাত মুলত দেবতাদের নামের সাথে মিল রেখেই নাম রাখতো মুশরেকরা, আবার আবদুল্লাহ যেমন আমাদের নবী সাঃ এর পিতার নাম ছিল ।আরও অনেকেই এনাম রেখেছিল ।কিন্তু আল্লাহর মূল নামের সাথে পরিচিত থাকলেও গুনবিশিষ্ট নামের সাথে পরিচিত ছিলনা তাইতো প্রশ্ন করেছিল ما الرحمن؟ماالرحيم؟ কে রাহমান ?কে রাহীম ? ইত্যাদী।
কিনতু আল্লাহর গুনবাচকতায় বিভিন্নতা ছিলো। কিন্তু শাব্দিক উচ্চারণে একই আল্লাহ শব্দে আল্লাহকে ডাকতো কাফেররা এবং মুসলমানরা, কিন্তু ৯৯ বা ততোধিক নামের গুনবাচকতার অর্থে মুসলমানদের আল্লাহ আলাদা ।
দেবতাদের যে নামেই ডাকা হতনা কেন, সেগুলি কখনো আল্লাহর নাম ছিলনা। দেবতাদের নাম থেকে আল্লাহর নাম এডাপ্ট করা হয়নি। আর আল্লাহর নাম জাহেলিয়াত যুগে ও আল্লাহই ছিল ।
আবার নাস্তিকদের কেউ বলেন যে "আল্লাহ" শব্দটা নাকী জাহেলিয়াতের শব্দ তারা বলে থাকেন যে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এর পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ, আবদ+আল্লাহ= আব্দুল্লাহ। আরবী আবদ অর্থ- দাস, অর্থাৎ আল্লাহর দাস। কিন্তু কোন্ আল্লাহর দাস? তখন তো মক্কায় ইসলাম প্রচার হয়নি। অর্থাৎ মক্কার কুরাইশরা সবাই ছিল মূর্তি পুজক?
আসলে আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের মক্কার সেই কাফেরদের সংস্কৃতি থেকে আসেনি, আল্লাহ যেমন আজলী-আবদী তেমনি আল্লাহর নাম ও আজলী-আবদী
বরং আল্লাহ শব্দটি প্রথম মানব হযরত আদম আঃ এর সময় থেকেই পরিচিত ছিল, যেমন আদম আঃ এর সময় তাওহিদের কালিমা ছিল "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ আদমু ছফিউল্লাহ " (ছফি+আল্লাহ) আবার নূহ আঃ সময়"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ নূহ রাসুলুল্লাহ "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মুসা কালিমুল্লাহ"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ ঈসা রুহূল্লাহ ইত্যাদি । আর আদম আঃ থেকে শুরু করে নূহ আঃ এর যূগ পর্যন্ত তৎকালীন সকলমানুষই তাওহীদ তথা একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন , মুসলিম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আত্নসমর্পণকারী ছিলেন,কোন কুফর- শীর্ক বা মূর্তি দেবতা পূজা তাদের কে স্পর্শ করেনি।আল্লাহকে আল্লাহ হিসাবেই মানতো,চিনতো। কিন্তু এর পরবর্তিতে নূহ আঃএর বংশে কুফর শীর্ক মূর্তি পুজা আরম্ভ হলেও,আল্লাহ কে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে মূর্তি বা দেবতাদের ডাকতো এই ভেবে যে তারা আল্লাহর নিকটবর্তি করে দেবে, আল্লাহর কাছে সুপারীশ করবে ইত্যাদি।পরবর্তিতে কাফেররা আল্লাহকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেবতাদেরকেও ডাকতো সহযোগী হিসাবে, যেমন আজকাল আমাদের দেশের হিন্দুরাও মূর্তি-দেবতা পুজায় সেরা হওয়ার পরও জিজ্ঞাসা করলে বলবে , আল্লাহ একজন ,খৃষ্টানরাও তাই বলে, তবে সাথে অংশীদারিত্ব সাব্যস্হ করেন, যা ইসলাম এলাউড করেনা। সুতরাং আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের কাফেরদের শব্দ নয় বরং এই শব্দটি আদিকাল থেকেই পরিচিত একটি শব্দ একটা সত্বা, যিনি হলেন আমার আপনার সকলের সৃষ্টি কর্তা । আল্লাহ তায়ালা। তাছাড়া জাহেলিয়াত বলা হয় হযরত ঈসা আঃকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেয়ার পর থেকে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃএর আগমনের আগ পর্যন্ত প্রায় ৫৭০ বছর, এর মধ্যবর্তী সময়কেই একমাত্র জাহেলী যুগ বলা হয়। এতে পৃথিবীর সকল ঐতিহাসীক একমত,অথচ আল্লাহ শব্দটির সাথে জাহেলী যুগের সাথে কোন সম্পর্কই নেই বরংএর আগের থেকেও দুনিয়াবাসী পরিচিত ছিল।যা উপরের আলোচনা দ্বারায় স্পষ্ট হয়েছে। ====
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে আল্লাহ্ একটি আরবি শব্দ, ইসলাম ধর্মানুযায়ী যার মানে হল "বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা এবং প্রতিপালকের নাম"। আল্লাহ" শব্দটি আরবি "আল" (বাংলায় যার অর্থ সুনির্দিষ্ট বা একমাত্র) এবং "ইলাহ" (বাংলায় যার অর্থ সৃষ্টিকর্তা) শব্দদ্বয়ের সম্মিলিত রূপ, যার অর্থ দাড়ায় "একমাত্র আললাহ" বা "একক আললাহ""আল্লাহ" শব্দটি বর্তমানে প্রধানতঃ মুসলমানরাই সর্বাধীক ব্যবহার করে থাকেন। তবে আরবি খ্রিস্টানরাও প্রাচীন আরবকাল থেকে "আল্লাহ" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে থাকেন।
সুতরাং আল্লা শব্দটি জাহেলী যুগের শব্দ বলে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মুসলিমদের বোকা বানানো যাবেনা বরং নাস্তিকরাই বোকা সেজে ইতিহাসের আস্তাকুডে নিক্ষিপ্ত হবে ।
৬* কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি " হুবাল" বা হুবুল" ইলাত বা ইলাহ নয়
ঐভদ্রলোক অন্য এক বক্ততায় বলছে কাবার প্রথম মূর্তির নাম নাকী " ইলাত, বা ইলাহ," থেকে আল্লাহ শব্দ এসেছে ,নাউযুবিল্লাহ । অথচ এই আগাছা বুড়ো বয়সে ইতিহাস বিকৃত করে মানুষ কে কি মেসেজ দিতে চাচ্ছে আমরা জানিনা আসলে ইতিহাস বলছে মক্কার প্রথম ও প্রধান মূর্তির নাম হল"হুবাল" বা হুবুল " যা সর্ব প্রথম তৎকালীন মুশরেকদের সরদার আমর বিন লুহাই সিরিয়া থেকে এনে সেই কাবা ঘরে রেখেছিল সেই থেকে মক্কা তথা কাবা ঘরে মূর্তি পুজা শুরু হয়। সুতরাং হুবাল বা হুবুল হল কাবার প্রথম মূর্তি ।
এখন আমর বিন লুহাই কি ভাবে মূর্তি আনলেন তা জেনে নেয়ার চেষ্টা করব ইনাআল্লাহ।
আমর ইবন লুহাই বনু খুজা‘আ গোত্রের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। ছোটবেলা থেকে এ লোকটি ধর্মীয় পূণ্যময় পরিবেশে প্রতিপালিত হয়েছিল। ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল অসামান্য। সাধারণ মানুষ তাকে ভালবাসার চোখে দেখতো এবং নেতৃস্থানীয় ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনে করে তার অনুসরণ করতো। এক পর্যায়ে এ লোকটি সিরিয়া সফর করে। সেখানে যে মূর্তিপূজা করা হচ্ছে সে মনে করলো এটাও বুঝি আসলেই ভাল কাজ। যেহেতু সিরিয়ায় অনেক নবী আবির্ভূত হয়েছেন এবং আসমানী কিতাব নাযিল হয়েছে। কাজেই সিরিয়ার জনগণ যা করছে সেটা নিশ্চয় ভালো কাজ এবং পূণ্যের কাজ হবে। এরূপ চিন্তা করে সিরিয়া থেকে ফেরার পথে সে ‘হুবাল’ নামের এক মূর্তি নিয়ে এসে সেই মূর্তি কা‘বাঘরের ভেতর স্থাপন করলো। এরপর সে মক্কাবাসীদের মূর্তিপূজার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে শির্ক করার আহবান জানালো। মক্কার লোকেরা ব্যাপকভাবে তার ডাকে সাড়া দেয়। মক্কার জনগণকে মূর্তিপূজা করতে দেখে আরবের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তাদের অনুসরণ করলো। কেননা, কা‘বাঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের বৃহত্তর আরবের লোকেরা ধর্মগুরু মনে করতো। (শায়খ মুহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহাব, মুখতাছারুস সীরাত, প্রাগুক্ত, পৃ. ২)।
অবশ্য তার পূর্বেই নূহ ‘আলাইহিস সালাম-এর সময়ে সর্বপ্রথম পৃথিবীতে মূর্তিপূজার সূচনা হয়। তারা ওয়াদ্দ, সুওয়া, ইয়াগুছ, ইয়া‘উক ও নসর নামক মূর্তির পূজা করত। এ মর্মে কুরআনে এসেছে
﴿ وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ ﴾ [نوح:٢٣]
“তারা বলল, তোমরা ছাড়বে না তোমাদের উপাস্যদের এবং তোমরা ওয়াদ্দ, সূওয়া, ইয়াগুছ,
ওয়াদ ছিল ‘কালব’ গোত্রের দেবতা, ‘সুওয়া’ ‘হুযাইল’ গোত্রের, ‘ইয়াগুছ’ ‘মায্যাহ’ গোত্রের, ‘ইয়া‘উক’ ইয়ামেনের ‘হামদান’ গোত্রের এবং ‘নাসর’ ইয়ামেন অঞ্চলের ‘হিমইয়ার’ গোত্রের দেবতা ছিল। (ড. জামীল আব্দুল্লাহ আল-মিসরী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফি যামানির রাসূল ওয়াল খোলাফায়ির রাশেদীন, (মদীনা মুনওয়ারা : মাকতাবাতুদ দার, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ৩১।যা ইতে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। সুতস সুতরাং
কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি " হুবাল" বা হুবুল" ইলাত বা ইলাহ নয় ।
পরিশেষে জাতীয় কবি নজরুলের একটি কবিতার ভাষায় বলতে চাই,
উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেস আর নিন্দাবাদ
আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ
মানুষের অনাগত কল্যানে উহারা চির অবিশ্বাসী
ওরা বলে,হবে নাস্তিক সব মানুষ, করিবে হানাহানি।
মোরা বলি, হবে আস্তিক, হবে আল্লাহ মানুষে জানাজানি।
নিত্য সজীব যৌবন যার, এস এস সেই নৌ-জোয়ান
সর্ব-ক্লৈব্য করিয়াছে দূর তোমাদেরই চির আত্নদান!
ওরা কাদা ছুডে বাঁধা দেবে ভাবে-ওদের অস্র নিন্দাবাদ।
মোরা ফুল ছড়ে মারিব ওদের, বলিব-"এক আল্লাহ জিন্দাবাদ"।
উঃয়য়হহ উ উহারাউউউহাhttp://www.bangla-kobita.com/nazrulislam/ek-allah-jindabad/
আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ইতিহাস পড়ার ও বুঝার তাওফিক দান করুন আমিন।
গত ৩ জুলাই 2015 নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে তথাকথীত সাংবাদিকও কলামিষ্ট্ খ্যাত আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছিলেন, যে "আজকের আরবি ভাষায় যেসব শব্দ, এর সবই তৎকালীন কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, এর সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম।সে বলেছিল যে,তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল"। নাউযুবিল্লাহ ।
প্রিয় দেশবাসী মুসলিম ভাইবোনেরা আপনারা সকলেই অবগত আছেন এই পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক আল্লাহদ্রোহী ভন্ড,জাহেল-মূর্খ, মুরতাদদের আবির্ভাব ঘটেছিল,ইসলামের আলোকে নিভিয়ে ফেলার জন্য।কিন্তু কোন বেঈমান-কাফেরের দল ইসলামের চুল পরিমান ও ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়নি।বরং তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।যারাই ইসলামের আলোকে নিভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করবে তারাই এর আগুনে পুড়ে ছারখার হতে বাধ্য। ।এই সকল মুরতাদদের কথার সত্যতার বিন্দুমাত্রও এর অবকাশ নেই।যারা নিজের স্রষ্টাকে অস্বীকার করে তাদের চেয়ে অপদার্থ আর কেউ আছে বলে মনে হয়না।কাজেই কেউ যেনএই ধরণের আগাছাদের কথায় বিভ্রান্তী না হন এই জন্যই আমার এ প্রয়াস ।এবার আসা যাক মূল কথায়
১* আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহ ১০০%জাহেলিয়াত মূক্ত কারণ অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমানীত
যখন ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে রাহমান ,রাহীম,গাফুর, রাজ্জাক,হাইয়ূল-ক্বাইয়ূম ইত্যাদী আল্লাহর গুনবাচক নাম গুলো উচ্ছারণ করতেন তখনি কাফেররা বলত ماالحى القيوم؟ ماالرحمن؟ماالرحيم ؟ما الغفار ؟ অর্থাৎ ؟ কে রাহমান ?কে রাহীম ? কে গাফুর ? কে রাজ্জাক? ইত্যাদী,
মূলত কাফেররা এই সকল নাম সম্পর্কে কোন প্রকারের অবগতও ছিলেন না। যদি দেবতাদের নাম হত, বা আগে থেকে অবগত থাকত তাহলে তারা এ প্রশ্ন কখনই করতেন না যে, কে রাহমান ?কে রাহীম ? কে রাজ্জাক ইত্যাদী।অবশ্যই আল্লাহর মূল নাম "আল্লাহ" সম্পর্কে সকলেই অবগত ছিলেন।কিন্তু গুনবাচক নাম সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিলনা।
২ * ইসলাম ধর্ম, দেবতা তথা মূর্তি পুজাকে বিশ্বাস তথা এলাউ করেনা , ইসলামে দেবতা পুজার কোন স্হান নেই। আপনারা যারা ইতিহাস জানেন তাদের ও আবশ্যই জানা থাকার কথা যে আজকে যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ধর্ম সহ অন্যান্য ধর্মে দেবতা পুজার যে হিড়িক চলছে, ঐ সকল ধর্মের মূল গ্রন্হেই বর্ণিত আছে যে মূর্তি দেবতা পুজা নট এলাউ । সেখানে ইসলাম ধর্মে আল্লাহর গুনবাচক নাম কে দেবতাদের নাম বলে মানুষ কে বিভ্রান্তি করার অপকৌশল মাত্র ।
পবিত্র কোরআনে পূর্ণাঙ্গ একটি সুরাই অবতীর্ণ করা হয়েছে ," সূরায়ে কাফেরুন" যেখানে দেবতা পুজাকে সম্পূর্ন ভাবে প্রত্যাখান করা হয়েছে ।
যেমন এরশাদ হচ্ছে قل يا ايهاالكافرون لا اعبد ماتعبدون ولا انتم عبدون ما اعبد অর্থাৎ 1 বলুন ( হে নবী) হে কাফেরকুল 2 আমি এবাদত করিনা ,তোমরা যার এবাদত কর । 3 এবং তোমরাও এবাদত কারী নও , যার এবাদত আমি করি । 4 এবং আমি এবাদতকারী নই যার এবাদত তোমরা কর। 5 তোমরা এবাদতকারী নও যার এবাদত আমি করি 6 তোমাদের কর্ম ও কর্ম ফল তোমাদের জন্য এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে ।
এই পূর্নাঙ্গ একটি সুরা সহ অন্যান্য আয়াতে দেবতা পুজাকে যেখানে সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাখান করা হয়েছে ,সেখানে আল্লাহর ৯৯ নাম দেবতাদের নাম হয় কি করে ? এই আগাছাদের জানা দরকার ।
এই সুরার শানে নুযুল দেখলে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বর্নণা করেন ,একবার তৎকালীন মক্কার বড বড কাফেরদের লীডার যেমন ওলীদ ইবনে মুগীরা ,আস ইবনে ওয়ায়েল, আসওয়াদ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ও উমাইয়া ইবনে খলফ প্রমুখ মক্কার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কয়েকজন রাসুল সাঃ এর কাছে এসে প্রস্তাব দিল।
আসুন আমরা পরস্পরের মধ্যে এই শান্তি চুক্তি করি যে, একবছর আপনি আমাদের উপাস্য তথা দেবতাদের এবাদত করবেন এবং এক বছর আমরা আপনার উপাস্যের তথা আল্লাহর এবাদত করব । ( কুরতুবী ) মারেফুল কোরআন বাংলা পৃঃ 1479 ।
এর পরিপেক্ষিতে জিবরাইল আঃ এই পূর্নাঙ্গ সূরা নিয়ে আল্লাহর পক্ষথেকে হাজির হলেন এবং কাফেরদের এই সকল ক্রিয়া-কর্মের সাথে সম্পূর্ন স্মপর্কচ্ছেদ ও ভয়কট করার নির্দেশ দিলেন এবং আল্লাহর অকৃত্রিম ভালবাসা ও এবাদতে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছন।
এখানে আগাছাদের কাছে প্রশ্ন যদি আল্লাহর ৯৯ নাম দেবতাদের নামই হতো তাহলে কাফেরদের প্রস্তাব মেনে নিলেইতো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। কাফের মুশরীকদের সাথে এত যুদ্ধ করতে হতোনা আবার নবী সাঃ তাঁর প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে মদীনাতে হিজরত করতে হতোনা।সুতরাং এতে কারো বুঝতে কষ্ট হবেনা যে দেবতাদের নাম ও আল্লাহর গুনবাচক নাম সম্পর্নই ভিন্ন।
৩ * একবার কাফের /মুশরিকরা নবী সাঃ থেকে আল্লাহর বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল অথবা অন্য রেওয়াতে এসেছে মুশরিকরা আল্লাহর প্রিয় হাবীব সাঃ এর কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে আল্লাহ কিসের তৈরী? স্বর্নরৌপ্প অথবা অন্য কিছুর থেকে তৈরী ? তখন তাদের জবাবে সুরায়ে এখলাস সমপূর্ন অবতীর্ণ হয়। আর বলা হয় "আল্লাহ"হলেন তিনি, যিনি একক অদ্বিতীয় যার কোন শরীক নেই যার কোন মাতা পিতা নেই , তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকে ও কেউ জন্ম দান করেননি। কারন সন্তান প্রজনন সৃষ্টির বৈশিষ্ট স্রষ্টার নয় । তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কেউ তাঁর সমতূল্য নয় এবং আকার আকৃতিতে কেউ তাঁর সাথে সামঞ্জস্য রাখেনা । তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তিনিই হলেন আল্লাহ ।
আর দেবতা বলা হয় যার শরীক আছে যাদের ছেলে-মেয়ে আছে, যাকে জন্ম দান করেছেন কেউ ,তিনিও কাউকে জন্ম দিয়েছেন। তাছাড়া দেবতা তথা মূর্তি গুলো কোন এক সময় মানুষ ছিল, তাদের মৃত্যুর পর ভক্তরা তার মূর্তি বানিয়ে তাদের পুজা শুরু করে দিয়েছে ।। ইসলাম তথা মুসলমানগন মানব পুজা করেনা ।
মুসলমান এমন দেবতাদের এবাদত করেনা ।যাকে শরিয়তে ইসলামে শীর্ক ও হারাম করা করা হয়েছে ।
৪*অপর দিকে আল্লাহর গুনবাচক নাম আর-রাহমান এরالرحمن পরিচয় দেয়ার জন্য কোরআন মজীদের পূনাঙ্গ একটি সূরা,সূরা আর-রাহমান অবতীর্ণ করা হয়েছে।কারণ তৎকালীন মক্কার কাফেররা আল্লাহ তায়ালার এই নাম সমপর্কে অবগত ছিলনা।তাই মুসলমানদের মুখে "রাহমান"নাম শুনে ওরা বলাবলি করত:وماالرحمن রহমান আবার কি?সুতরাং কাফেরদের অবহিত করার জন্য সূরার শুরুতে এই নাম ব্যবহার করা হয়েছে।এবং অত্র সুরার প্রথম থেকেই শেষ পর্যন্ত ৭৮টি আয়াতে মূলত সেই "রাহমান"এর পরিচয় গুনাবলী,কুদরত,বৈশিষ্ট আর ক্ষমতার কথা বর্নণা করা হয়েছে। সুতরাং রাহমান সহ আল্লাহর প্রসিদ্ধ ৯৯ নামের সাথে দেবতা-মুর্তির নামের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ।আললাহ যেমন অবদী আল্লাহর সকল নাম ও অবদী, তাছাড়া আল্লাহর এ প্রসিদ্ধ ৯৯ নাম ছাড়া আরও প্রায় ৩ হাজার বা ১০ হাজার গুনবাচক নামের কথা বিভিন্ন ওলামাদের (নুর ইসলাম আদীবওওলীপুরী )মুখে শুনে থাকি,সবই আল্লাহর জন্য প্রজোয্য,যদিও তা আমাদের জানা নেই।
ঐসকল খোদাদ্রোহী নাস্তিকদের প্রতি জিজ্ঞাসা আল্লাহর গুনবাচক নাম গুলো দেবতাদের নাম হয় কি ভাবে ?যেমন ধরুন আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহের একটি" حى القيوم" অর্থাৎ যিনি জিবীত এবং চিরন্জীব।পৃথিবীতে এমন কোন দেবতার কি অস্হিস্ত আছে যে,যিনি জিবীত এবং চিরজিবী ?
তাহলে এটা দেবতার নাম হয় কি ভাবে ؟
আল্লাহর অপর গুনবাচক নাম যেমন "خالق" সৃষ্টি কর্তা অর্থাৎ ভূমন্ডল-নবমন্ডলে মানব দানব আসমান জমিন গ্রহ -নক্ষত্র সহ সব কিছুরই যিনি সৃষ্টি কর্তা ।
পৃথিবীতে যারা দেবতা পুজক তারাও আজ পর্যন্ত এই কথার দাবী করার সাহস পায়নি যে তাদের দেবতা ছোট একটি মশা মাছি আর পিপিলীকার মত ছোট্ট প্রানী সৃষ্টি করেছে ।তাহলে خالق দেবতার নাম হয় কি ভাবে?তেমনি ভাবে "الصمد" অর্থাৎ অমুখাপেক্ষী । আল্লাহ যিনি মানব দানব তথা সৃষ্টি কুলের মত কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী নয়।
পৃথিবীতে এমন কোন দেবতা আছে কি? যে কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নয় ? প্রথমত দেবতার অস্হিত্বের জন্য মাটি, পাথর,রং, অলংকার,পোশাক,আর মানবের হাতের স্পর্শের মুখাপেক্ষী। মানবের হাতের তৈরী এ মূর্তি বা দেবতা কি ভাবে الصمد "অমুখাপেক্ষী"আল্লাহর এ গুনবাচক নাম ধারণ করতে পারে?
এই সকল নাস্তিকদের প্রতি জিজ্ঞাসা ।এইভাবে আল্লাহর অন্যান্য গুনবাচক নামও একই ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখুন,এমন কোন একটা নাম পাওয়া যাবেনা যেটা দেবতাদের নামের সাথে সামান্যতম্ সামঞ্জস্য রাখতে সক্ষম।এখানে এক্ষুদ্র লেখনিতে তা বিশ্লেষন সম্ভব না।আক্বলমন্দ কে ইশারাই যথেষ্ট।
৪* আল্লাহর ৯৯ নাম গুলো কি ? যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন
ولله الاسماء الحسنى فادعوه بها وذروااللذين يلحدون فى اسمائه سيجزون ما كانوا يعملون
অর্থাৎ আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সেই নাম ধরেই তাকে ডাক। আর তাদের বর্জন কর ,যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃত কর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।আল আরাফ -আয়াত ১৮০ ।উক্ত আয়াতে মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদেরকে তাঁকে তাঁর সুন্দরতম নাম দিয়ে স্বরণ করতে বলেছেন।
মূল "আল্লাহ" শব্দ হল আল্লাহর জাতী নাম ।আর আল্লাহ জাল্লাহ শানুহুর ৯৯ নামের কিছু নাম এসেছে আল্লাহর নিজের পছন্দে যা কোরআনুল করিমে আল্লাহ নিজেকে নিজে অভিহিত করেছেন, কিছু এসেছে জিব্রায়িল ফেরেশতার পরামর্শে। যা হাদীসে রসুল সা্ঃ দ্বারা প্রমানীত এ নাম গূলো সম্পর্কে পৃথিবীবাসী কখনো এর পূর্বে ওয়াকেফহাল ছিলেননা একমাত্র এটা দ্বীনিয়াল্ ইসলামের বৈশিষ্ট। ৯৯ নামের হাদিসটি আবু হোরায়রা (রা) বর্ণিত, এর সনদ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাছাড়া আরও অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমানীত যে , আল্লাহর ৯৯ নাম দ্বারা তাকে ডাকার জন্য বলেছেন।যেমন আবু হোরাইরাহ রাঃ থেকে এক দীর্ঘ হাদিসে সেই ৯৯ নামের বর্ণনা পাওয়া যায় নিন্মে হাদিসটি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করা হল ।
عن أبي هريرة ، رضي الله عنه ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : " إن لله تسعا وتسعين اسما مائة إلا واحدا ، من أحصاها دخل الجنة ، وهو وتر يحب الوتر " .
أخرجاه في الصحيحين من حديث سفيان بن عيينة ، عن أبي الزناد ، عن الأعرج ، عنه رواه البخاري ، عن أبي اليمان ، عن شعيب بن أبي حمزة ، عن أبي الزناد به وأخرجه الترمذي ، عن الجوزجاني ، عن صفوان بن صالح ، عن الوليد بن مسلم ، عن شعيب فذكر بسنده مثله ، وزاد بعد قوله : " يحب الوتر " : هو الله الذي لا إله إلا هو الرحمن الرحيم ، الملك ، القدوس ، السلام ، المؤمن ، المهيمن ، العزيز ، الجبار ، المتكبر ، الخالق ، البارئ ، المصور ، الغفار ، القهار ، الوهاب ، الرزاق ، الفتاح ، العليم ، القابض ، الباسط ، الخافض ، الرافع ، المعز ، المذل ، السميع ، البصير ، الحكم ، العدل ، اللطيف ، الخبير ، الحليم ، العظيم ، الغفور ، الشكور ، العلي ، الكبير ، الحفيظ ، المقيت ، الحسيب ، الجليل ، الكريم ، الرقيب ، المجيب ، الواسع ، الحكيم ، الودود ، المجيد ، الباعث ، الشهيد ، الحق ، الوكيل ، القوي ، المتين ، الولي ، الحميد ، المحصي ، المبدئ ، المعيد ، المحيي ، المميت ، الحي ، القيوم ، الواجد ، الماجد ، الواحد ، الأحد ، الفرد ، الصمد ، القادر ، المقتدر ، المقدم ، المؤخر ، الأول ، الآخر ، الظاهر ، [ ص: 515 ] الباطن ، الوالي ، المتعالي ، البر ، التواب ، المنتقم ، العفو ، الرءوف ، مالك الملك ، ذو الجلال والإكرام ، المقسط ، الجامع ، الغني ، المغني ، المانع ، الضار ، النافع ، النور ، الهادي ، البديع ، الباقي ، الوارث ، الرشيد ، الصبور
ثم قال الترمذي : هذا حديث غريب وقد روي من غير وجه عن أبي هريرة [ رضي الله عنه ] ولا نعلم في كثير من الروايات ذكر الأسماء إلا في هذا الحديث .
মূলত:এই নাম গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বিশেষ ক্ষমতা মাহাত্য ও কুদরতের বহিঃপ্রকাশ করে থাকেন ।
তাছাড়া উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখায় (মুফতি শফি ছাঃ রাহঃ তফসীরে মারেফুল কোরআন বাংলা সংস্করণ মাওঃ মহিউদ্দিন খান কতৃক ৫০৬ পৃঃ ) বলেছেন এই নিদ্দিষ্ট নাম গুলি যদি আল্লাহ ছাডা অপর কারো ক্ষেত্রে ভ্রান্ত বিশ্বাসের ভিত্তিতে হয় ,যাকে এসব শব্দ সম্বোধন করা হচ্ছে তাকেই যদি খালেক কিংবা রায্যাক মনে করা হয় ,( যেমনটি আঃ গাফ্ফার চোধুরী বলেছেন এই নাম গুলি দেবতাদের নাম ) তাহলে তা সম্পূর্ণ কূফর। (অর্থাৎ কাফের হয়ে যাবে ) ।আর বিশ্বাস যদি ভ্রান্ত না হয়, শুধু অমনোযোগিতা কিংবা না বুঝার দরুন কাউকে খালেক ,রায্যাক রাহমান কিংবা সুবহান বলে ডাকা হয়, যেমনটি ( যেমনটি আঃ গাফ্ফার চোধুরী বলেছেন এই নাম গুলি দেবতাদের নাম ) তাহলে তা যদি ও কুফর নয়, কিন্তু শেরেকী সূলভ শব্দ হওয়ার কারনে কঠিন পাপের কাজ ।( মারেফুল কোরআন বাংলা বঙ্গানুবাদ মহিউদ্দিন খান কৃত ৫০৬ পৃঃ ) অর্থাৎ শির্ক হওয়ার কারনে বিনা তাওবায় ক্ষমা যোগ্য নয় ।
৫*তৎকালীন আইয়্যামে জাহেলিয়াতে
কাবা শরীফে ৩৬০টির মত মূর্তি ছিলো তাদের নামের সাথে আল্লাহর ৯৯ নামের কোনো দূরতম সম্পর্ক নেই, হুবাল,লাত ,উজ্জা, মানাত, অবগাল ,দুল খালসা, , মালাকবেল, এল্লাহ নেব, নের্গাল,সিন সুয়া, ইগুছ,নছর, নুহা, সুয়া, রুভা , ‘ছাফা’ পর্বতে ‘এসাফ’ এবং ‘মারওয়ায়’ ‘নায়েলা’ইত্যাদি।
শুধু "এল্লাহ" নামটি আল্লাহর নামের কাছাকাছি, কিনতু এল্লাহ দেবতার নাম হলেও কাফেররা "আল্লাহ"কে আল্লাহই ডাকতো। আর দেবতাদের ডাকতো আল্লাহ পর্যন্ত পৌছার মাধ্যম হিসাবে ।সেই কারণে আমরা দেখতে পাই জাহেলিয়াত যুগেও আবদুল ওজজাহ আবদুল লাত মুলত দেবতাদের নামের সাথে মিল রেখেই নাম রাখতো মুশরেকরা, আবার আবদুল্লাহ যেমন আমাদের নবী সাঃ এর পিতার নাম ছিল ।আরও অনেকেই এনাম রেখেছিল ।কিন্তু আল্লাহর মূল নামের সাথে পরিচিত থাকলেও গুনবিশিষ্ট নামের সাথে পরিচিত ছিলনা তাইতো প্রশ্ন করেছিল ما الرحمن؟ماالرحيم؟ কে রাহমান ?কে রাহীম ? ইত্যাদী।
কিনতু আল্লাহর গুনবাচকতায় বিভিন্নতা ছিলো। কিন্তু শাব্দিক উচ্চারণে একই আল্লাহ শব্দে আল্লাহকে ডাকতো কাফেররা এবং মুসলমানরা, কিন্তু ৯৯ বা ততোধিক নামের গুনবাচকতার অর্থে মুসলমানদের আল্লাহ আলাদা ।
দেবতাদের যে নামেই ডাকা হতনা কেন, সেগুলি কখনো আল্লাহর নাম ছিলনা। দেবতাদের নাম থেকে আল্লাহর নাম এডাপ্ট করা হয়নি। আর আল্লাহর নাম জাহেলিয়াত যুগে ও আল্লাহই ছিল ।
আবার নাস্তিকদের কেউ বলেন যে "আল্লাহ" শব্দটা নাকী জাহেলিয়াতের শব্দ তারা বলে থাকেন যে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এর পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ, আবদ+আল্লাহ= আব্দুল্লাহ। আরবী আবদ অর্থ- দাস, অর্থাৎ আল্লাহর দাস। কিন্তু কোন্ আল্লাহর দাস? তখন তো মক্কায় ইসলাম প্রচার হয়নি। অর্থাৎ মক্কার কুরাইশরা সবাই ছিল মূর্তি পুজক?
আসলে আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের মক্কার সেই কাফেরদের সংস্কৃতি থেকে আসেনি, আল্লাহ যেমন আজলী-আবদী তেমনি আল্লাহর নাম ও আজলী-আবদী
বরং আল্লাহ শব্দটি প্রথম মানব হযরত আদম আঃ এর সময় থেকেই পরিচিত ছিল, যেমন আদম আঃ এর সময় তাওহিদের কালিমা ছিল "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ আদমু ছফিউল্লাহ " (ছফি+আল্লাহ) আবার নূহ আঃ সময়"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ নূহ রাসুলুল্লাহ "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মুসা কালিমুল্লাহ"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ ঈসা রুহূল্লাহ ইত্যাদি । আর আদম আঃ থেকে শুরু করে নূহ আঃ এর যূগ পর্যন্ত তৎকালীন সকলমানুষই তাওহীদ তথা একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন , মুসলিম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আত্নসমর্পণকারী ছিলেন,কোন কুফর- শীর্ক বা মূর্তি দেবতা পূজা তাদের কে স্পর্শ করেনি।আল্লাহকে আল্লাহ হিসাবেই মানতো,চিনতো। কিন্তু এর পরবর্তিতে নূহ আঃএর বংশে কুফর শীর্ক মূর্তি পুজা আরম্ভ হলেও,আল্লাহ কে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে মূর্তি বা দেবতাদের ডাকতো এই ভেবে যে তারা আল্লাহর নিকটবর্তি করে দেবে, আল্লাহর কাছে সুপারীশ করবে ইত্যাদি।পরবর্তিতে কাফেররা আল্লাহকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেবতাদেরকেও ডাকতো সহযোগী হিসাবে, যেমন আজকাল আমাদের দেশের হিন্দুরাও মূর্তি-দেবতা পুজায় সেরা হওয়ার পরও জিজ্ঞাসা করলে বলবে , আল্লাহ একজন ,খৃষ্টানরাও তাই বলে, তবে সাথে অংশীদারিত্ব সাব্যস্হ করেন, যা ইসলাম এলাউড করেনা। সুতরাং আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের কাফেরদের শব্দ নয় বরং এই শব্দটি আদিকাল থেকেই পরিচিত একটি শব্দ একটা সত্বা, যিনি হলেন আমার আপনার সকলের সৃষ্টি কর্তা । আল্লাহ তায়ালা। তাছাড়া জাহেলিয়াত বলা হয় হযরত ঈসা আঃকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেয়ার পর থেকে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃএর আগমনের আগ পর্যন্ত প্রায় ৫৭০ বছর, এর মধ্যবর্তী সময়কেই একমাত্র জাহেলী যুগ বলা হয়। এতে পৃথিবীর সকল ঐতিহাসীক একমত,অথচ আল্লাহ শব্দটির সাথে জাহেলী যুগের সাথে কোন সম্পর্কই নেই বরংএর আগের থেকেও দুনিয়াবাসী পরিচিত ছিল।যা উপরের আলোচনা দ্বারায় স্পষ্ট হয়েছে। ====
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে আল্লাহ্ একটি আরবি শব্দ, ইসলাম ধর্মানুযায়ী যার মানে হল "বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা এবং প্রতিপালকের নাম"। আল্লাহ" শব্দটি আরবি "আল" (বাংলায় যার অর্থ সুনির্দিষ্ট বা একমাত্র) এবং "ইলাহ" (বাংলায় যার অর্থ সৃষ্টিকর্তা) শব্দদ্বয়ের সম্মিলিত রূপ, যার অর্থ দাড়ায় "একমাত্র আললাহ" বা "একক আললাহ""আল্লাহ" শব্দটি বর্তমানে প্রধানতঃ মুসলমানরাই সর্বাধীক ব্যবহার করে থাকেন। তবে আরবি খ্রিস্টানরাও প্রাচীন আরবকাল থেকে "আল্লাহ" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে থাকেন।
সুতরাং আল্লা শব্দটি জাহেলী যুগের শব্দ বলে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মুসলিমদের বোকা বানানো যাবেনা বরং নাস্তিকরাই বোকা সেজে ইতিহাসের আস্তাকুডে নিক্ষিপ্ত হবে ।
৬* কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি " হুবাল" বা হুবুল" ইলাত বা ইলাহ নয়
ঐভদ্রলোক অন্য এক বক্ততায় বলছে কাবার প্রথম মূর্তির নাম নাকী " ইলাত, বা ইলাহ," থেকে আল্লাহ শব্দ এসেছে ,নাউযুবিল্লাহ । অথচ এই আগাছা বুড়ো বয়সে ইতিহাস বিকৃত করে মানুষ কে কি মেসেজ দিতে চাচ্ছে আমরা জানিনা আসলে ইতিহাস বলছে মক্কার প্রথম ও প্রধান মূর্তির নাম হল"হুবাল" বা হুবুল " যা সর্ব প্রথম তৎকালীন মুশরেকদের সরদার আমর বিন লুহাই সিরিয়া থেকে এনে সেই কাবা ঘরে রেখেছিল সেই থেকে মক্কা তথা কাবা ঘরে মূর্তি পুজা শুরু হয়। সুতরাং হুবাল বা হুবুল হল কাবার প্রথম মূর্তি ।
এখন আমর বিন লুহাই কি ভাবে মূর্তি আনলেন তা জেনে নেয়ার চেষ্টা করব ইনাআল্লাহ।
আমর ইবন লুহাই বনু খুজা‘আ গোত্রের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। ছোটবেলা থেকে এ লোকটি ধর্মীয় পূণ্যময় পরিবেশে প্রতিপালিত হয়েছিল। ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল অসামান্য। সাধারণ মানুষ তাকে ভালবাসার চোখে দেখতো এবং নেতৃস্থানীয় ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনে করে তার অনুসরণ করতো। এক পর্যায়ে এ লোকটি সিরিয়া সফর করে। সেখানে যে মূর্তিপূজা করা হচ্ছে সে মনে করলো এটাও বুঝি আসলেই ভাল কাজ। যেহেতু সিরিয়ায় অনেক নবী আবির্ভূত হয়েছেন এবং আসমানী কিতাব নাযিল হয়েছে। কাজেই সিরিয়ার জনগণ যা করছে সেটা নিশ্চয় ভালো কাজ এবং পূণ্যের কাজ হবে। এরূপ চিন্তা করে সিরিয়া থেকে ফেরার পথে সে ‘হুবাল’ নামের এক মূর্তি নিয়ে এসে সেই মূর্তি কা‘বাঘরের ভেতর স্থাপন করলো। এরপর সে মক্কাবাসীদের মূর্তিপূজার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে শির্ক করার আহবান জানালো। মক্কার লোকেরা ব্যাপকভাবে তার ডাকে সাড়া দেয়। মক্কার জনগণকে মূর্তিপূজা করতে দেখে আরবের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তাদের অনুসরণ করলো। কেননা, কা‘বাঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের বৃহত্তর আরবের লোকেরা ধর্মগুরু মনে করতো। (শায়খ মুহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহাব, মুখতাছারুস সীরাত, প্রাগুক্ত, পৃ. ২)।
অবশ্য তার পূর্বেই নূহ ‘আলাইহিস সালাম-এর সময়ে সর্বপ্রথম পৃথিবীতে মূর্তিপূজার সূচনা হয়। তারা ওয়াদ্দ, সুওয়া, ইয়াগুছ, ইয়া‘উক ও নসর নামক মূর্তির পূজা করত। এ মর্মে কুরআনে এসেছে
﴿ وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ ﴾ [نوح:٢٣]
“তারা বলল, তোমরা ছাড়বে না তোমাদের উপাস্যদের এবং তোমরা ওয়াদ্দ, সূওয়া, ইয়াগুছ,
ওয়াদ ছিল ‘কালব’ গোত্রের দেবতা, ‘সুওয়া’ ‘হুযাইল’ গোত্রের, ‘ইয়াগুছ’ ‘মায্যাহ’ গোত্রের, ‘ইয়া‘উক’ ইয়ামেনের ‘হামদান’ গোত্রের এবং ‘নাসর’ ইয়ামেন অঞ্চলের ‘হিমইয়ার’ গোত্রের দেবতা ছিল। (ড. জামীল আব্দুল্লাহ আল-মিসরী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফি যামানির রাসূল ওয়াল খোলাফায়ির রাশেদীন, (মদীনা মুনওয়ারা : মাকতাবাতুদ দার, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ৩১।যা ইতে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। সুতস সুতরাং
কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি " হুবাল" বা হুবুল" ইলাত বা ইলাহ নয় ।
পরিশেষে জাতীয় কবি নজরুলের একটি কবিতার ভাষায় বলতে চাই,
উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেস আর নিন্দাবাদ
আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ
মানুষের অনাগত কল্যানে উহারা চির অবিশ্বাসী
ওরা বলে,হবে নাস্তিক সব মানুষ, করিবে হানাহানি।
মোরা বলি, হবে আস্তিক, হবে আল্লাহ মানুষে জানাজানি।
নিত্য সজীব যৌবন যার, এস এস সেই নৌ-জোয়ান
সর্ব-ক্লৈব্য করিয়াছে দূর তোমাদেরই চির আত্নদান!
ওরা কাদা ছুডে বাঁধা দেবে ভাবে-ওদের অস্র নিন্দাবাদ।
মোরা ফুল ছড়ে মারিব ওদের, বলিব-"এক আল্লাহ জিন্দাবাদ"।
উঃয়য়হহ উ উহারাউউউহাhttp://www.bangla-kobita.com/nazrulislam/ek-allah-jindabad/
আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ইতিহাস পড়ার ও বুঝার তাওফিক দান করুন আমিন।
লেখক :-- এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী মিরসরাই
অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্ ও ব্লগার
ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া
মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম
লেখক :-- এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী মিরসরাই
অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্ ও ব্লগার
অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্ ও ব্লগার
ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া
মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম
৪র্থ রত্ন:- পৃথিবীতে মূর্তিপূজা তথা কবর বা মাজার পূজার সূচনা
৪র্থ রত্ন:- পৃথিবীতে মূর্তিপূজা তথা কবর বা মাজার পূজার সূচনা
হযরত আদম আঃ থেকে নূহ্ আঃ পর্যন্ত তৎকালীন পৃথিবীর সকল মানুষই মুসলিম ছিল,( আত্বসমর্পন কারী) তাওহীদের উপর অটল ছিল , কোন ফেরক্বা বন্দী ছিলনা, এমন অবস্হা হযরত নূহ আঃ এর জামানা পর্যন্ত চলতে থাকে . ইমাম বগবী রঃ বলেন হযরত আদম আঃ ও নূহ আঃ এর মধ্যবর্তী সময়ে ৫ জন বিশিষ্ট মুত্তাকী ধর্মভীরু নেককার লোক ছিলেন, যার বর্ননা সূরা নূহ্ এ ভাবেই এসেছে , , وفالوا لا تذرن الهتكم ولا تذرن ودا ولاسواعا ولا يغوث ويعوق ونسرا الاية سورة نوح
এ ৫ জন যথাক্রমে ওয়াদ,সূয়া , ইয়াগুছ, ইয়াউক, ও নসর , এরা প্রকৃত পক্ষে সে জামানার মুত্তাকী পরহেজগার লোক বা সে জমানার অলী, সবাই এদের সন্মন করত , তাদের কৃত নছিহত শুনতো আমল করত,ভক্তরা সূদীর্ঘকাল পর্যন্ত তাদের পদান্ক অনূসরন করে সঠিক ও তাওহীদের উপর অটল ছিল কিন্তুতাদের সকলের এন্তেকালের পর শয়তান মানুষের রুপধারণকরে ভক্তদের কাছে এসে প্ররোচনার জাল আঁটল এভাবে যে,
ক, তোমরা যে সকল মহাপুরুষদের পদান্ক অনূসরন করছ তাদের ছবি এঁকে উপাসানলয়ে রেখে এবাদত করলে এবাদতে পূর্নতা লাভ করবে, মানুষবেশী শয়তানের পরামর্শে তাই করল, এভাবে অনেক দিন চলতে থাকে।
খ,পরবর্তীতে এদের মৃত্যুর পর অন্য প্রজন্মের কাছে অন্য আর একটি পন্দী আঁটল এভাবে যে, তোমাদের মুরুব্বীদের মূর্তী তৈরী করে তোমদের সামনে রেখে দাও তাহলে আল্লাহর এবাদতে একাগ্রতা ও পূর্নতা লাভ করবে, তারা শয়তানের ধোকা বুঝতে না পেরে প্রতিকৃতি উপাসনালয়ে রেখে এদের সৃতি জাগরীত করে এবাদতে বিশেষ পুলক অনূভব করতে লাগল,এ ভাবে অনেক দিন চলতে লাগল ৷
গ,তৃতীয় ধাপে এসে পরবর্তী বংশধরদেরএমন ভাবে প্ররোচনা করল যে মালয়ূন শয়তান কামীয়াব হল আর ভক্তরা পথভ্রষ্ট হয়ে ইতিহাসের সর্বনিন্ম আস্তাকূডে নিক্ষিপ্ত হলো ৷
শয়তান বল্ল যে তোমাদের পূর্ব পূরুষরাই শুধু মাত্র এসব মূর্তীর সন্মানই করেনী বরং এসকল মূর্তীরই এবাদত করেছে, এগুলোই হচ্ছে ওদের উপাসক,
সুতরাং তোমরাও তোমাদের বাপ দাদার অনূসরন কল্পে এদেরই এবাদত কর,কাজেই শয়তানের পরামর্শে তাইই করল৷এ ভাবে পৃথিবীতে সর্ব প্রথম মূর্তি পূজার সূচনা হয়।
ইমাম বোখারী (রহঃ) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) হ’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন যে, এই লোকগুলি হযরত নূহ (আ.)-এর যুগের নেককার ব্যক্তি ছিলেন। তাদের মৃত্যুর পর শয়তান তাদের অনুসারীদের এই মর্মে ধোঁকা দিল যে, এঁদের বসার স্থানগুলিতে এক একটি মূর্তি বানাও ও তাদের নামে নামকরণ কর। লোকেরা তাই করল। ...
এই মূর্তিগুলি পরবর্তীকালে আরবদের মধ্যেও চালু ছিল।
ওয়াদ ছিল ‘কালব’ গোত্রের দেবতা, ‘সুওয়া’ ‘হুযাইল’ গোত্রের, ‘ইয়াগুছ’ ‘মায্যাহ’ গোত্রের, ‘ইয়া‘উক’ ইয়ামেনের ‘হামদান’ গোত্রের এবং ‘নাসর’ ইয়ামেন অঞ্চলের ‘হিমইয়ার’ গোত্রের দেবতা ছিল। (ড. জামীল আব্দুল্লাহ আল-মিসরী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফি যামানির রাসূল ওয়াল খোলাফায়ির রাশেদীন, (মদীনা মুনওয়ারা : মাকতাবাতুদ দার, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ৩১।এ মর্মে কুরআন মাজীদে এসেছে
[﴿ أَفَرَءَيۡتُمُ ٱللَّٰتَ وَٱلۡعُزَّىٰ ١٩ وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلۡأُخۡرَىٰٓ ٢٠ ﴾ [النجم: ١٩، ٢٠ “তোমরা কি ভেবে দেখছো ‘লাত’ ও ‘উয্যা’ সম্পর্কে এবং তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্পর্কে ? সূরা আন্ নাজম: ১৯-২০।
লাত: চারকোণ বিশিষ্ট একটি পাথরের মূর্তি, যার চতুষ্পার্শে আরবরা তাওয়াফ করতো। এটি তায়েফে স্থাপন করা হয়েছিল।
মানাত : কালো পাথরে নির্মিত মূর্তি, যা লোহিত সাগরের উপকূলে কোদাইদ এলাকার মুসাল্লাল নামক জায়গায় স্থাপন করা হয়েছিল। (প্রাগুক্ত)
উয্যা: উয্যা ছিল ‘আরাফাতের নিকটবর্তী ‘নাখলা’ নামক স্থানের মূর্তি। কুরাইশদের নিকট এ মূর্তিটি সর্বাধিক সম্মানিত ছিল।
ইসাফ’ ছিল কা‘বাঘর সংলগ্ন। আর ‘নায়েলা’ ছিল যমযমের কাছে। কুরায়শরা কা‘বা সংলগ্ন মূর্তিটাকেও অপর মূর্তির কাছে সরিয়ে দেয়। এটা ছিল সে জায়গা যেখানে আরবরা কুরবানী করত। (সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী, নবীয়ে রহমত, অনু: আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী, (ঢাকা ও চট্টগ্রাম : মজলিস নাশরাত-ই-ইসলাম, ১৯৯৭ খৃ), পৃ. ১১১।তাহের সূরাটী, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫১৫। তবে অন্য এক বর্নণায় ছাফা’ পর্বতে ‘এসাফ’ এবং ‘মারওয়ায়’ ‘নায়েলা’র কথা এসেছে।
পৌত্তলিকরা বিভিন্নভাবে উল্লেখিত মূর্তির উপাসনা করত।যেমন:-
ক. তারা মূর্তির সামনে নিবেদিত চিত্তে বসে থাকত এবং তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করত। তাদেরকে জোরে জোরে ডাকত এবং প্রয়োজনপূরণ, মুশকিল আসান বা সমস্যার সমাধানের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করত।
খ. মূর্তিগুলোর উদ্দেশ্যে হজ্ব ও তওয়াফ করতো। তাদের সামনে অনুনয় বিনয় এবং সিজদায় উপনীত হতো।
গ. মূর্তির নামে নযর-নেওয়ায ও কুরবানী করত। এমর্মে কুরআনে এসেছে, “তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে সেসব জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নিয়ে যবাই করা হয়েছে,যদিও আজকাল কিছু ইতিহাস বিকৃতিকারী মূর্খপন্ডিতরা আমাদের দেশের পাঠ্যবইয়ে পর্যন্ত লেখতে দ্ধীধাবোধ করেননি যে দেবতাদের নামে উৎসর্গকৃত পশুর গোশ্ত হালাল।নাউযুবিল্লাহ।
ঘ. মূর্তির সন্তুষ্টি লাভের জন্য পানাহারের জিনিস, উৎপাদিত ফসল এবং চতুষ্পদ জন্তুর একাংশ মূর্তির জন্য তারা পৃথক করে রাখতো। পাশাপাশি আল্লাহর জন্যেও একটা অংশ রাখতো। পরে বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে আল্লাহর জন্য রাখা অংশ মূর্তির কাছে পেশ করতো। কিন্তু মূর্তির জন্য রাখা অংশ কোন অবস্থায়ই আল্লাহর কাছে পেশ করতো না। আল-কুরআন, সূরা আল-মায়িদা :৩, যেমনটি আজকাল আমাদের দেশের মূর্খ শ্রেনীর কিছু লোকজন মাজারের নামে এমন সব কিছু উৎসর্গ করে থাকেন।
=========
আরব জাতির অধিকাংশ গোত্র, বিশেষ করে খোজার বংশের অন্তর্গত গোত্রসমূহ এক অত্যন্ত নিম্নস্তরের জড়বাদের প্রতি আসক্ত ছিল। ইতর প্রাণী ও উদ্ভিদ দ্রুতগামী হরিণ, ঘোড়া, উট, খেজুরগাছ, পর্বত, পাথর ইত্যাদির মত অজৈব বস্তু প্রধান উপাস্য বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল।
(যেমন আজকাল আমাদের গুনেধরা সমাজের মুর্খরা মাজারের গজার মাছ,হরিণ,উট,কবুতর,ও নির্দিষ্ট গাছে সুতা,পুটলি বেঁধে বরকত ও মনোবাসনা পূরণের জন্য অনেকে নযর নেয়ায ওমান্নত করে থাকেন) অবশ্য এক সার্বভৌম ঐশী সত্ত্বার ধারণা অপরিজ্ঞাত ছিল না। কিন্তু তার প্রভাব অত্যন্ত নগন্য সংখ্যক লোকের মধ্যে সীমিত ছিল। এই লোকগুলি পৌত্তলিকতার মোহপাশ থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিবেশী সেবীয়, মূসা কিম্বা ঈসা আঃ এর শরীয়তের ও পার্থিব পৌরাণিক ধারণা দ্বারা রঞ্জিত দার্শনিক সংশয়বাদের আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক সর্বশক্তিমান আল্লাহর ধারণা স্পষ্ট স্বীকার করত এবং যুগের অশ্লীলতা ও স্থূল জড়বাদের বিরুদ্ধে অন্তরে বিদ্রোহ অনুভব করত।
পৌত্তলিক আরবদের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে ধারণা ব্যক্তি বা গোত্র ভেদে বিভিন্নরকম ছিল। কোন কোন গোত্র প্রাকৃতিক বস্তুতে দেবত্ব আরোপ করত, কেউ কেউ মৃত্তিকা, দন্ড কিংবা পাথর পূজা করত; কেউ কেউ পরকালে বিশ্বাস করত আবার কারও সে সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না। তাদের দৈববাণীর জন্যে বৃক্ষ ছিল, পুরোহিতবৃন্দ ছিল যারা সাধারণতঃ মন্দির বা গীর্জার সাথে যুক্ত থাকত। লিঙ্গপূজা তাদের মধ্যে অজ্ঞাত ছিল না। প্রজনন শক্তিসমূহ পাথর ও কাঠের তৈরী স্মৃতিস্তম্ভের তলায় পূজা লাভ করত।
তৎকালীন জাহেলীযুগে আরবরা নিজেদের তৈরী বিভিন্ন রকম কূ-প্রথা ও কুসংস্কারের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল। তাদের অভ্যাস ছিল যে, শস্যক্ষেত্র, বাগান এবং ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে যা কিছু আয় হত; তার একাংশ আল্লাহর জন্যে এবং একাংশ উপাস্য দেবদেবীদের নামে পৃথক করে রাখত।(যেমনটি মাজার পন্থিরা করে থাকে) আল্লাহর নামের অংশ থেকে ফকির-মিসকীনকে দান করা হত এবং দেবদেবীর অংশ মন্দিরের পূজারী, সেবায়ত ও রক্ষকদের জন্যে ব্যয় করত।
প্রথমতঃ এটাই কম অবিচার ছিল না যে, যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ এবং সমুদয় উৎপন্ন ফসলও তিনিই দান করেছেন, কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত বস্তুসমূহের মধ্যে প্রতিমাদেরকে অংশীদার করা হত।যেমনটি আজকাল মাজারে করা হয় তদুপরি তারা আরও অবিচার করত এই যে, কখনও উৎপাদন কম হলে তারা কমের ভাগটি আল্লাহর অংশ থেকে কেটে নিত, অথচ মুখে বলতঃ আল্লাহ তো সম্পদশালী, অভাবমুক্ত-তিনি আমাদের সম্পদের মুখাপেক্ষী নন। এরপর প্রতিমাদের অংশ এবং নিজেদের ব্যাবহারের অংশ পুরোপুরি নিয়ে নিত। আবার কোনসময় এমন হত যে, প্রতিমাদের কিম্বা নিজেদের অংশ থেকে কোন বস্তু আল্লাহর অংশে পড়ে গেলে তা হিসাব ঠিক করার জন্যে সেখান থেকে তুলে নিত। পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর অংশ থেকে কোন বস্তু নিজেদের কিম্বা প্রতিমাদের অংশে পড়ে যেত, তবে তা সেখানেই থাকতে দিত এবং বলতঃ আল্লাহ অভাবমুক্ত; তাঁর অংশ কম হলেও ক্ষতি নেই।
এ সংক্রান্ত কোরআনের আয়াতসমূহ-আল্লাহ যেসব শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো থেকে তারা এক অংশ আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করে অতঃপর নিজ ধারণা অনুসারে বলে, এটা আল্লাহর এবং এটা আমাদের অংশীদারদের। অতঃপর যে অংশ তাদের অংশীদারদের, তা তো আল্লাহর দিকে পৌঁছে না এবং যা আল্লাহর তা তাদের উপাস্যদের দিকে পৌঁছে যায়। তাদের বিচার কতই না মন্দ।(৬:১৩৬)
(হিস্ট্রি অব আরবস -ফিলিপ কে হি্ট্টি। দি স্পিরিট অব ইসলাম -সৈয়দ আমীর আলী। এন্সিয়েন্ট মনার্কী –শিলথন)।
ঙ.যখন কোনো সফরের ইচ্ছা করত, তখন তারা বাহনে আরোহন করার সময় মূর্তি স্পর্শ করত। সফরে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে এটা ছিল তাদের শেষ কাজ এবং ফিরে এসেও ঘরে প্রবেশের পূর্বে এটা ছিল তাদের সর্বপ্রথম কাজ।বর্তমান আমাদের সমাজে বিকৃতমস্তিক্কধারী জাহেলরা বিদেশ ভ্রমন,বিবাহ,ব্যবসা,ও যে কোন শুভকাজ শুরু করেন মাযার যেয়ারতের মাধ্যমে শুরু করে থাকে,এগুলো শরিয়ত বহির্ভূতকাজ।এছাড়াও তারা বিভিন্ন মূর্তির নামে পশু মানত করতো। সর্বপ্রথম মূর্তির নামে পশু ছেড়েছিল, ‘আমর ইবন লুহাই।
পৃথিবীর প্রথম ও কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি :-
ইবনু আবী হাতেম-এর বর্ণনায় এসেছে যে, ‘ওয়াদ’ মূর্তিই ছিল এদের মধ্যে প্রথম এবং সর্বাধিক নেককার ব্যক্তি।যা একটু আগে বর্নণা করেছিলাম যে৫জন বিশষ্ট নেককারের কথা তন্মধ্যে প্রথমজন। তিনি মারা গেলে লোকেরা তার প্রতি ভক্তিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। শয়তান এই সুযোগ গ্রহণ করে এবং লোকদেরকে তার মূর্তি বানাতে প্ররোচনা দেয়। ফলে ওয়াদ-এর মূর্তিই হ’ল পৃথিবীর সর্বপ্রথম মূর্তি, আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার পূজা শুরু হয়’।আর মক্কা তথা কাবার প্রধান বা প্রথম মূর্তি হল "হুবাল" যা দিয়ে কাবা এবং তার আশে পাশে মূর্তি পূজা শুরু হয়।
মক্কা তথা কাবা শরীফে কি ভাবে মুর্তিপুজা শুরু হল তা ৬ষ্ট রত্ন অংশে বর্ননা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
অতএব পৃথিবীর প্রাচীনতম শিরক হ’ল নেককার মানুষের কবর অথবা তাদের প্রতিকৃতি বা মূর্তিপূজা। যা আজও প্রায় সকল ধর্মীয় সমাজে চালু আছে এবং বর্তমানে যা মুসলিম সমাজে স্থানপূজা, কবর পূজা, ছবি-প্রতিকৃতি, মিনার ও ভাষ্কর্য পূজায় রূপ নিয়েছে।উক্ত পাঁচটি মূর্তির মাহাত্ম্য ও তাদের প্রতি ভক্তি, লোকদের হৃদয়ে এমনভাবে প্রোথিত হয়েছিল যে, তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এবং পারস্পরিক চুক্তি সম্পাদনকালে তাদের নাম উল্লেখ করত। এতদ্ব্যতীত তারা নানাবিধ সামাজিক অনাচারে ডুবে গিয়েছিল। সম্প্রদায়ের এইরূপ পতন দশায় আল্লাহ তাদের হেদায়াতের জন্য নূহ্ (আ.)-কে রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেন {আ‘রাফ ৭/৬১}।
এর ফলে তখনকার সময় প্রায় সকল মানুষই মুর্তি পূজায় লিপ্ত হয়ে পথভ্রষ্টতার অতল গহবরে নিমজ্জিত হয়। এসকল মূর্তির কাছে মনোবসনা পূ্ন্যের কামনা করত,নজর-নেওয়াজ কোরবানী ইত্যাদী সব কিছুই করত ,যেমন আজকাল মাজার সমূহে হচ্ছে৷আল্লাহ আমাদের সমাজকে এসব শীর্ক থেকে হেফাজত করুক আমিন।
কেউ কেউ এ সকল মূর্তিকেই স্বয়ং খোদা মনে করতো, কেউ বা খোদাকে পাওয়ার মাধ্যম মনে করতো ৷
এ ভাবে যখন গোটা জাতিই শিরকে লিপ্ত হলো চতুর্রদিকে কূফরীর অন্ধকার চেয়ে গেছে ঠিক তেমনি সে মূহুর্তে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের হেদায়েতের জন্য হযরত নূহ আঃ কে রসুল হিসাবে প্রেরন করলেন ৷
কিন্তু তিনি ৯৫০ বৎসর পর্যন্ত দাওয়াতের কাজ করার পর মাএ ৪০জন বা ৪০ জোড়া মহিলা পুরুষ মিলে তাঁর ধর্ম গ্রহন করলেন।
অবশেষে তিনি ওহী মারফত জানতে পারলেন যে এজাতি আর হেদায়েত পাবেনা তখনি আল্লাহর হুকুমে তিনি তাদের ধবংসের জন্য দোয়া করলেন ,
এবং আল্লাহ তায়ালা মহাপ্লাবন দ্বারা সকল কাফেরদের ধবংস করে দিলেন ৷==এই ইতিহাস সকলেরই জানা আছে।
তেমনি ভাবেই আজকাল আমাদের দেশের স্বাথম্বেশী পেট পূজারী গূটি কয়েক ওলামায়েছুর ছএ ছায়ায় কবর কেন্দ্রিক লাল -সালু কাপড , মুমবাতি আগর বাতি জালিয়ে গডে তুলছে শীর্কের কারখনা , সেখানেই করা হচ্ছে ঈমান বিধংসী কর্মকান্ড ৷বর্তমানে আমাদের দেশে কবর কেন্দ্রীক যা করা হচ্ছে , পূর্বেকার যূগে ও প্রাথমীক ভাবেএমন কর্মকান্ড করা হতো যার ফলে গোটা জাতিকে কুফরের অন্ধকারে ধবংস হয়েছিল , এখনও অদূর ভবিষ্যতের এ দেশের আবস্হা এমন হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
এদেশের মূর্তি পূজকরা সাধারনত ৪ টি কাজ করে থাকে ,
[১] বাৎসরীক ২ টি বড় অনূষ্ঠান দূর্গাপূজা ও কালীপূজা এ ছাডা আরও ছোট ছোট অনূষ্ঠান ৷
[২] প্রতিমাদের সামনে প্রদীপ মূমবাতী আগরবাতী ইত্যাদী প্রজ্যলীত করন ৷
[৩] এদের নামে পশূ / পাঁঠা কোরবনী [বলী] দিয়ে থাকে ,
[৪] প্রতিমাদের সামনে মাথা নত ও সেজদা করে থাকে ৷
দুর্গার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র বলে, ‘আয়ুরারোগ্যং বিজয়ং দেহি দেবি নমস্তুতে। রূপং দেহি যশো দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে। পুত্রান দেহি ধনং দেহি সর্ব্বকামাংশ্চ দেহি মে।।’ (হে ভগবতী, আপনাকে প্রণাম করি, আপনি আমাকে রোগমুক্ত করুন, বিজয়ী করুন, যশ ও সৌভাগ্য প্রদান করুন, পুত্র ও ধন দিন এবং আমার সকল কামনা পূর্ণ করুন।)
বর্তমান মাজার পন্থীদের ও ৪ টি কাজ
[১] বাৎসরীক ওরস ও মিলাদ মাহফিলের নামে কত কিছু,
[২] কবরের সামনে মুমবাতি আগরবাতি প্রজ্জলন ,
[৩] পীরের / মাজারের নামে পশু কোরবানী /মান্নত করন ,
[৪] কবর ওয়ালার কাছে কিছু চাওয়া ,মনোবাসনা পূন্যের জন্য কবর কেন্দ্রিক দোয়া করা ,ক্ষেএ বিশেষ কবর কে সেজদা করা ইত্যাদি ৷
আর অনেক মাজার পন্থীরা মাজার/কবর /বা পীরের কাছে ধন সম্পত্তী /সন্তান /রোগমূক্তি/ সহ মনোবাসনা পূন্যের দোয়া করে থাকে,
পাঠক বৃন্দই পার্থক্য করুন প্রতিমাপূজক ও বর্তমান মাজার পূজারীদের মধ্যে কোন প্রাথক্য আছে কি ?
ইসলাম মানবজাতির জন্য হেদায়েতের আলো। মানুষের চিন্তা ও কর্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য এবং সকল ভ্রান্তি ও প্রান্তিকতা থেকে রক্ষা করার জন্য এই দ্বীন আল্লাহ তাআলা দান করেছেন। তাই একজন প্রকৃত মু’মিন যেমন মূর্খতা ও অবিশ্বাসের শিকার হতে পারেন না তেমনি অজ্ঞতা ও অন্ধ-বিশ্বাসেরও শিকার হন না। সকল প্রকার কুফর ও শীরক্ থেকে আল্লাহ তার চিন্তা ও কর্মকে রক্ষা করেন। কুফর শীর্ক হল মানব-সমাজের সবচেয়ে বড় কুসংস্কার। মানুষ এই কুসংস্কারের শিকার তখনই হয় যখন ইসলামের শিক্ষাকে ত্যাগ করে মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত মতবাদের অনুসরণ করে। পৃথিবীতে যত প্রকারের শীর্ক ও কুফর আছে সবগুলোর মূলে রয়েছে বিভিন্ন কাল্পনিক ও অবাস্তব ধারণা ও অতীভক্তি ।
এজন্য কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- فاجتنبوا الرجس من الأوثان واجتنبوا قول الزور ‘তোমরা অপবিত্রতা থেকে তথা মূর্তিসমূহ থেকে দূরে থাক। আর দূরে থাক মিথ্যাকথন থেকে।’-সূরা হজ্ব : ৩০-৩১
বস্তুত মিথ্যাই সকল পৌত্তলিকতার জনক। অতএব পৌত্তলিকতা থেকে মুক্ত থাকতে হলে মিথ্যার সকল ছিদ্রপথ বন্ধ করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা বস্তু কিংবা কোনো স্থান বা কাল সম্পর্কে ভিত্তিহীন বিশ্বাস পোষণ করার অবকাশ ইসলামে নেই। তদ্রূপ কল্পনাপ্রসূত ধারণার উপর ভিত্তি করে ভক্তি নিবেদনে সীমালঙ্ঘন করারও সুযোগ নেই। এ জাতীয় সকল ধারণা ও আচরণ ইসলামে নিষিদ্ধ। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা যেমন সত্যবিমুখ অবিশ্বাসীদের মর্মন্তদ পরিণাম ঘোষণা করেছেন তেমনি ধর্মের নামে ভিত্তিহীন কর্ম ও বিশ্বাস প্রচার কারীদেরকে ‘আল্লাহর উপর মিথ্যারোপকারী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।অতএব দু’টোই গোমরাহী ও সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য।
মাযারকেন্দ্রিক কার্যকলাপের তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট
মাযারকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে 4টি অনাচার হয়ে থাকে তার অধিকাংশই রিপুতাড়িত কর্মকাণ্ড যাপরিহার করতে হবে।
প্রথমত:- নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, গান-বাদ্য এবং মদ ও গাঁজা হচ্ছে মাযার কেন্দ্রিক মেলা ও ওরসের অন্যতম অনুষঙ্গ। এগুলোর তাত্ত্বিক সূত্র একটিই। তা হচ্ছে, নোংরামী ও রিপুর চাহিদা-পূরণ। এজন্য দেখা যায়, এইসব মাযার-ওরসে অংশ গ্রহণকারীদের সিংহভাগ হল সমাজের অশিক্ষিত ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন জনগোষ্ঠী।
যে কর্মগুলি সাধারণ আবস্হায় হারাম হলেও মাযারে তা হালাল হিসাবে গন্য করে থাকে জ্ঞানপাপিরা।
দ্বিতীয়:- অনাচার মাযারের সেবকদের বৈষয়িক ধান্দা। এরা মাযারে আগত নারী-পুরুষের দান-দক্ষিণা ও মান্নত-কোরবানী গ্রহণ করে এবং ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ ও আশীর্বাণী বিক্রি করে। বলাবাহুল্য, এখানে তত্ত্বের চেয়ে বৈষয়িক দিকটিই বড়।
তৃতীয়:- অনাচার হচ্ছে কুফর ও শিরক। মাযারপন্থী বা মাযারে আগত লোকেরা বিভিন্ন কুফরী ও শিরকী ধারণা পোষণ করে। যেমন মাযার বা মাযারে শায়িত ব্যক্তিকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মনে করা; হাজত-পূরণকারী, বালা-মুসীবত থেকে উদ্ধারকারী এবং মানুষের উপকার-অপকারের মালিক মনে করা ইত্যাদি। এসকল শিরকী বিশ্বাস থেকে তারা বিভিন্ন শিরকী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। যথা : মাযারের নামে মান্নত করা, মাযারে এসে সিজদা করা, পশু জবাই করা, মাযারওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে রোনাযারী করা এবং মাল-দৌলত, সন্তান-সন্ততি, সুস্থতা ও স্বচ্ছলতা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। এভাবে বিশ্বাসের শিরক, মানুষকে কর্মের শিরকের মাঝেও লিপ্ত করে দেয়।
চতুর্থ ও সর্বশেষ অনাচারটি হল:- কুরআন-সুন্নাহ এবং দ্বীন-শরীয়তের বিকৃতিসাধন। মাযার কেন্দ্রিক সকল গর্হিত কার্যকলাপের পক্ষে সামপ্রদায়িতাধর্মী জেদ ও হঠকারিতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একশ্রেণীর আলখেল্লাধারী গুরু বিভিন্ন অবাস্তব ধারণা প্রচার করে এবং নির্দ্বিধায় কোরআন-সুন্নাহর তাহরীফ ও অপব্যাখ্যা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাশুধু ‘অপব্যাখ্যা’ থাকে না; বরং জরুরিয়্যাতে দ্বীন বা দ্বীনের সর্বজনবিদিত আকীদা ও আমলকে অস্বীকার করা হয়।
মাজার বা কবরস্হানে যা করা যাবে:-
কবর-যিয়ারতের সাথে এসব অনাচারের কোনো সম্পর্ক নেই ইসলামে কবর যিয়ারতের বিধান আছে, কিন্তু' কবরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করার অবকাশ নেই। কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল, আখিরাতের স্মরণ জাগ্রত করা এবং কবরবাসীর জন্য দোয়া করা। হাদীস শরীফে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা যিয়ারত করতে পার। কারণ তা আখিরাত কে স্বরন করিয়ে দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২১২৭) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও তাঁর সাহাবীদের কবর যিয়ারত করেছেন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। কবর যিয়ারতেরও মাসাইল ও নিয়মকানুন আছে। সে মোতাবেক কবর যিয়ারত করলে তাহবে ছওয়াবের কাজ। পক্ষান্তরে কোনো কবরকে ‘মাযারে’ পরিণত করে বছর বছর নির্দিষ্ট স্থানে জমায়েত হওয়া এবং উৎসবে পরিণত করা সম্পূর্ণ হারাম। হাদীস শরীফে পরিষ্কার ভাষায় তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা নিজেদের ঘরকে কবর বানিও না। (অর্থাৎ কবরের মতো ইবাদত-বন্দেগী শূন্য করো না) এবং আমার কবরকে উৎসবের স্থান বানিও না। বরং আমার প্রতি দরূদ পড়। কেননা তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছবে।’-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২০৪০
তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবরকেই যখন উৎসবের স্থান বানানোর অবকাশ নেই তখন অন্যদের কথা তো বলাই বাহুল্য।
আমরা কিন্তু ওলী আল্লাহ বিরোধী না ,বরং আমাদের দেশ সহ সারা পৃথিবীর সত্যিকারের হক্কানী আলেম-ওলামা, পীর, মাশায়েখ, আউলিয়ায়ে কেরাম আমাদের মাথার মুকুট সমতূল্য সন্মানের পাত্র এতেকোন সন্দেহের অবকাশ নেই৷কারন হক্কানী ওলামায়ে কেরামরাই হলেন এ দ্বীনের ধারক বাহক, যাদের কে নবীর ওয়ারীস হিসাবে খেতাব্ দেয়া হয়েছে ৷তাদের কথা মানবো শুনবো ও আমল করবো তাদের লেখা বই পুস্তুক পডবো, ওয়াজ নছিহত শুনবো , এবং তাদের এন্তেকালের পর পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে তাদের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করবো ৷এবং সময় সূযোগ হলে তাদের কবর যেয়ারত করব ৷
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সব ধরনের গোমরাহী থেকে রক্ষা করুন এবং সঠিক পথে চলার তাওফীক দান করুন।
হযরত আদম আঃ থেকে নূহ্ আঃ পর্যন্ত তৎকালীন পৃথিবীর সকল মানুষই মুসলিম ছিল,( আত্বসমর্পন কারী) তাওহীদের উপর অটল ছিল , কোন ফেরক্বা বন্দী ছিলনা, এমন অবস্হা হযরত নূহ আঃ এর জামানা পর্যন্ত চলতে থাকে . ইমাম বগবী রঃ বলেন হযরত আদম আঃ ও নূহ আঃ এর মধ্যবর্তী সময়ে ৫ জন বিশিষ্ট মুত্তাকী ধর্মভীরু নেককার লোক ছিলেন, যার বর্ননা সূরা নূহ্ এ ভাবেই এসেছে , , وفالوا لا تذرن الهتكم ولا تذرن ودا ولاسواعا ولا يغوث ويعوق ونسرا الاية سورة نوح
এ ৫ জন যথাক্রমে ওয়াদ,সূয়া , ইয়াগুছ, ইয়াউক, ও নসর , এরা প্রকৃত পক্ষে সে জামানার মুত্তাকী পরহেজগার লোক বা সে জমানার অলী, সবাই এদের সন্মন করত , তাদের কৃত নছিহত শুনতো আমল করত,ভক্তরা সূদীর্ঘকাল পর্যন্ত তাদের পদান্ক অনূসরন করে সঠিক ও তাওহীদের উপর অটল ছিল কিন্তুতাদের সকলের এন্তেকালের পর শয়তান মানুষের রুপধারণকরে ভক্তদের কাছে এসে প্ররোচনার জাল আঁটল এভাবে যে,
ক, তোমরা যে সকল মহাপুরুষদের পদান্ক অনূসরন করছ তাদের ছবি এঁকে উপাসানলয়ে রেখে এবাদত করলে এবাদতে পূর্নতা লাভ করবে, মানুষবেশী শয়তানের পরামর্শে তাই করল, এভাবে অনেক দিন চলতে থাকে।
খ,পরবর্তীতে এদের মৃত্যুর পর অন্য প্রজন্মের কাছে অন্য আর একটি পন্দী আঁটল এভাবে যে, তোমাদের মুরুব্বীদের মূর্তী তৈরী করে তোমদের সামনে রেখে দাও তাহলে আল্লাহর এবাদতে একাগ্রতা ও পূর্নতা লাভ করবে, তারা শয়তানের ধোকা বুঝতে না পেরে প্রতিকৃতি উপাসনালয়ে রেখে এদের সৃতি জাগরীত করে এবাদতে বিশেষ পুলক অনূভব করতে লাগল,এ ভাবে অনেক দিন চলতে লাগল ৷
গ,তৃতীয় ধাপে এসে পরবর্তী বংশধরদেরএমন ভাবে প্ররোচনা করল যে মালয়ূন শয়তান কামীয়াব হল আর ভক্তরা পথভ্রষ্ট হয়ে ইতিহাসের সর্বনিন্ম আস্তাকূডে নিক্ষিপ্ত হলো ৷
শয়তান বল্ল যে তোমাদের পূর্ব পূরুষরাই শুধু মাত্র এসব মূর্তীর সন্মানই করেনী বরং এসকল মূর্তীরই এবাদত করেছে, এগুলোই হচ্ছে ওদের উপাসক,
সুতরাং তোমরাও তোমাদের বাপ দাদার অনূসরন কল্পে এদেরই এবাদত কর,কাজেই শয়তানের পরামর্শে তাইই করল৷এ ভাবে পৃথিবীতে সর্ব প্রথম মূর্তি পূজার সূচনা হয়।
ইমাম বোখারী (রহঃ) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) হ’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন যে, এই লোকগুলি হযরত নূহ (আ.)-এর যুগের নেককার ব্যক্তি ছিলেন। তাদের মৃত্যুর পর শয়তান তাদের অনুসারীদের এই মর্মে ধোঁকা দিল যে, এঁদের বসার স্থানগুলিতে এক একটি মূর্তি বানাও ও তাদের নামে নামকরণ কর। লোকেরা তাই করল। ...
এই মূর্তিগুলি পরবর্তীকালে আরবদের মধ্যেও চালু ছিল।
ওয়াদ ছিল ‘কালব’ গোত্রের দেবতা, ‘সুওয়া’ ‘হুযাইল’ গোত্রের, ‘ইয়াগুছ’ ‘মায্যাহ’ গোত্রের, ‘ইয়া‘উক’ ইয়ামেনের ‘হামদান’ গোত্রের এবং ‘নাসর’ ইয়ামেন অঞ্চলের ‘হিমইয়ার’ গোত্রের দেবতা ছিল। (ড. জামীল আব্দুল্লাহ আল-মিসরী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফি যামানির রাসূল ওয়াল খোলাফায়ির রাশেদীন, (মদীনা মুনওয়ারা : মাকতাবাতুদ দার, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ৩১।এ মর্মে কুরআন মাজীদে এসেছে
[﴿ أَفَرَءَيۡتُمُ ٱللَّٰتَ وَٱلۡعُزَّىٰ ١٩ وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلۡأُخۡرَىٰٓ ٢٠ ﴾ [النجم: ١٩، ٢٠ “তোমরা কি ভেবে দেখছো ‘লাত’ ও ‘উয্যা’ সম্পর্কে এবং তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্পর্কে ? সূরা আন্ নাজম: ১৯-২০।
লাত: চারকোণ বিশিষ্ট একটি পাথরের মূর্তি, যার চতুষ্পার্শে আরবরা তাওয়াফ করতো। এটি তায়েফে স্থাপন করা হয়েছিল।
মানাত : কালো পাথরে নির্মিত মূর্তি, যা লোহিত সাগরের উপকূলে কোদাইদ এলাকার মুসাল্লাল নামক জায়গায় স্থাপন করা হয়েছিল। (প্রাগুক্ত)
উয্যা: উয্যা ছিল ‘আরাফাতের নিকটবর্তী ‘নাখলা’ নামক স্থানের মূর্তি। কুরাইশদের নিকট এ মূর্তিটি সর্বাধিক সম্মানিত ছিল।
ইসাফ’ ছিল কা‘বাঘর সংলগ্ন। আর ‘নায়েলা’ ছিল যমযমের কাছে। কুরায়শরা কা‘বা সংলগ্ন মূর্তিটাকেও অপর মূর্তির কাছে সরিয়ে দেয়। এটা ছিল সে জায়গা যেখানে আরবরা কুরবানী করত। (সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী, নবীয়ে রহমত, অনু: আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী, (ঢাকা ও চট্টগ্রাম : মজলিস নাশরাত-ই-ইসলাম, ১৯৯৭ খৃ), পৃ. ১১১।তাহের সূরাটী, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫১৫। তবে অন্য এক বর্নণায় ছাফা’ পর্বতে ‘এসাফ’ এবং ‘মারওয়ায়’ ‘নায়েলা’র কথা এসেছে।
পৌত্তলিকরা বিভিন্নভাবে উল্লেখিত মূর্তির উপাসনা করত।যেমন:-
ক. তারা মূর্তির সামনে নিবেদিত চিত্তে বসে থাকত এবং তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করত। তাদেরকে জোরে জোরে ডাকত এবং প্রয়োজনপূরণ, মুশকিল আসান বা সমস্যার সমাধানের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করত।
খ. মূর্তিগুলোর উদ্দেশ্যে হজ্ব ও তওয়াফ করতো। তাদের সামনে অনুনয় বিনয় এবং সিজদায় উপনীত হতো।
গ. মূর্তির নামে নযর-নেওয়ায ও কুরবানী করত। এমর্মে কুরআনে এসেছে, “তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে সেসব জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নিয়ে যবাই করা হয়েছে,যদিও আজকাল কিছু ইতিহাস বিকৃতিকারী মূর্খপন্ডিতরা আমাদের দেশের পাঠ্যবইয়ে পর্যন্ত লেখতে দ্ধীধাবোধ করেননি যে দেবতাদের নামে উৎসর্গকৃত পশুর গোশ্ত হালাল।নাউযুবিল্লাহ।
ঘ. মূর্তির সন্তুষ্টি লাভের জন্য পানাহারের জিনিস, উৎপাদিত ফসল এবং চতুষ্পদ জন্তুর একাংশ মূর্তির জন্য তারা পৃথক করে রাখতো। পাশাপাশি আল্লাহর জন্যেও একটা অংশ রাখতো। পরে বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে আল্লাহর জন্য রাখা অংশ মূর্তির কাছে পেশ করতো। কিন্তু মূর্তির জন্য রাখা অংশ কোন অবস্থায়ই আল্লাহর কাছে পেশ করতো না। আল-কুরআন, সূরা আল-মায়িদা :৩, যেমনটি আজকাল আমাদের দেশের মূর্খ শ্রেনীর কিছু লোকজন মাজারের নামে এমন সব কিছু উৎসর্গ করে থাকেন।
=========
আরব জাতির অধিকাংশ গোত্র, বিশেষ করে খোজার বংশের অন্তর্গত গোত্রসমূহ এক অত্যন্ত নিম্নস্তরের জড়বাদের প্রতি আসক্ত ছিল। ইতর প্রাণী ও উদ্ভিদ দ্রুতগামী হরিণ, ঘোড়া, উট, খেজুরগাছ, পর্বত, পাথর ইত্যাদির মত অজৈব বস্তু প্রধান উপাস্য বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল।
(যেমন আজকাল আমাদের গুনেধরা সমাজের মুর্খরা মাজারের গজার মাছ,হরিণ,উট,কবুতর,ও নির্দিষ্ট গাছে সুতা,পুটলি বেঁধে বরকত ও মনোবাসনা পূরণের জন্য অনেকে নযর নেয়ায ওমান্নত করে থাকেন) অবশ্য এক সার্বভৌম ঐশী সত্ত্বার ধারণা অপরিজ্ঞাত ছিল না। কিন্তু তার প্রভাব অত্যন্ত নগন্য সংখ্যক লোকের মধ্যে সীমিত ছিল। এই লোকগুলি পৌত্তলিকতার মোহপাশ থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিবেশী সেবীয়, মূসা কিম্বা ঈসা আঃ এর শরীয়তের ও পার্থিব পৌরাণিক ধারণা দ্বারা রঞ্জিত দার্শনিক সংশয়বাদের আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক সর্বশক্তিমান আল্লাহর ধারণা স্পষ্ট স্বীকার করত এবং যুগের অশ্লীলতা ও স্থূল জড়বাদের বিরুদ্ধে অন্তরে বিদ্রোহ অনুভব করত।
পৌত্তলিক আরবদের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে ধারণা ব্যক্তি বা গোত্র ভেদে বিভিন্নরকম ছিল। কোন কোন গোত্র প্রাকৃতিক বস্তুতে দেবত্ব আরোপ করত, কেউ কেউ মৃত্তিকা, দন্ড কিংবা পাথর পূজা করত; কেউ কেউ পরকালে বিশ্বাস করত আবার কারও সে সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না। তাদের দৈববাণীর জন্যে বৃক্ষ ছিল, পুরোহিতবৃন্দ ছিল যারা সাধারণতঃ মন্দির বা গীর্জার সাথে যুক্ত থাকত। লিঙ্গপূজা তাদের মধ্যে অজ্ঞাত ছিল না। প্রজনন শক্তিসমূহ পাথর ও কাঠের তৈরী স্মৃতিস্তম্ভের তলায় পূজা লাভ করত।
তৎকালীন জাহেলীযুগে আরবরা নিজেদের তৈরী বিভিন্ন রকম কূ-প্রথা ও কুসংস্কারের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল। তাদের অভ্যাস ছিল যে, শস্যক্ষেত্র, বাগান এবং ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে যা কিছু আয় হত; তার একাংশ আল্লাহর জন্যে এবং একাংশ উপাস্য দেবদেবীদের নামে পৃথক করে রাখত।(যেমনটি মাজার পন্থিরা করে থাকে) আল্লাহর নামের অংশ থেকে ফকির-মিসকীনকে দান করা হত এবং দেবদেবীর অংশ মন্দিরের পূজারী, সেবায়ত ও রক্ষকদের জন্যে ব্যয় করত।
প্রথমতঃ এটাই কম অবিচার ছিল না যে, যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ এবং সমুদয় উৎপন্ন ফসলও তিনিই দান করেছেন, কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত বস্তুসমূহের মধ্যে প্রতিমাদেরকে অংশীদার করা হত।যেমনটি আজকাল মাজারে করা হয় তদুপরি তারা আরও অবিচার করত এই যে, কখনও উৎপাদন কম হলে তারা কমের ভাগটি আল্লাহর অংশ থেকে কেটে নিত, অথচ মুখে বলতঃ আল্লাহ তো সম্পদশালী, অভাবমুক্ত-তিনি আমাদের সম্পদের মুখাপেক্ষী নন। এরপর প্রতিমাদের অংশ এবং নিজেদের ব্যাবহারের অংশ পুরোপুরি নিয়ে নিত। আবার কোনসময় এমন হত যে, প্রতিমাদের কিম্বা নিজেদের অংশ থেকে কোন বস্তু আল্লাহর অংশে পড়ে গেলে তা হিসাব ঠিক করার জন্যে সেখান থেকে তুলে নিত। পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর অংশ থেকে কোন বস্তু নিজেদের কিম্বা প্রতিমাদের অংশে পড়ে যেত, তবে তা সেখানেই থাকতে দিত এবং বলতঃ আল্লাহ অভাবমুক্ত; তাঁর অংশ কম হলেও ক্ষতি নেই।
এ সংক্রান্ত কোরআনের আয়াতসমূহ-আল্লাহ যেসব শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো থেকে তারা এক অংশ আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করে অতঃপর নিজ ধারণা অনুসারে বলে, এটা আল্লাহর এবং এটা আমাদের অংশীদারদের। অতঃপর যে অংশ তাদের অংশীদারদের, তা তো আল্লাহর দিকে পৌঁছে না এবং যা আল্লাহর তা তাদের উপাস্যদের দিকে পৌঁছে যায়। তাদের বিচার কতই না মন্দ।(৬:১৩৬)
(হিস্ট্রি অব আরবস -ফিলিপ কে হি্ট্টি। দি স্পিরিট অব ইসলাম -সৈয়দ আমীর আলী। এন্সিয়েন্ট মনার্কী –শিলথন)।
ঙ.যখন কোনো সফরের ইচ্ছা করত, তখন তারা বাহনে আরোহন করার সময় মূর্তি স্পর্শ করত। সফরে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে এটা ছিল তাদের শেষ কাজ এবং ফিরে এসেও ঘরে প্রবেশের পূর্বে এটা ছিল তাদের সর্বপ্রথম কাজ।বর্তমান আমাদের সমাজে বিকৃতমস্তিক্কধারী জাহেলরা বিদেশ ভ্রমন,বিবাহ,ব্যবসা,ও যে কোন শুভকাজ শুরু করেন মাযার যেয়ারতের মাধ্যমে শুরু করে থাকে,এগুলো শরিয়ত বহির্ভূতকাজ।এছাড়াও তারা বিভিন্ন মূর্তির নামে পশু মানত করতো। সর্বপ্রথম মূর্তির নামে পশু ছেড়েছিল, ‘আমর ইবন লুহাই।
পৃথিবীর প্রথম ও কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি :-
ইবনু আবী হাতেম-এর বর্ণনায় এসেছে যে, ‘ওয়াদ’ মূর্তিই ছিল এদের মধ্যে প্রথম এবং সর্বাধিক নেককার ব্যক্তি।যা একটু আগে বর্নণা করেছিলাম যে৫জন বিশষ্ট নেককারের কথা তন্মধ্যে প্রথমজন। তিনি মারা গেলে লোকেরা তার প্রতি ভক্তিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। শয়তান এই সুযোগ গ্রহণ করে এবং লোকদেরকে তার মূর্তি বানাতে প্ররোচনা দেয়। ফলে ওয়াদ-এর মূর্তিই হ’ল পৃথিবীর সর্বপ্রথম মূর্তি, আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার পূজা শুরু হয়’।আর মক্কা তথা কাবার প্রধান বা প্রথম মূর্তি হল "হুবাল" যা দিয়ে কাবা এবং তার আশে পাশে মূর্তি পূজা শুরু হয়।
মক্কা তথা কাবা শরীফে কি ভাবে মুর্তিপুজা শুরু হল তা ৬ষ্ট রত্ন অংশে বর্ননা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
অতএব পৃথিবীর প্রাচীনতম শিরক হ’ল নেককার মানুষের কবর অথবা তাদের প্রতিকৃতি বা মূর্তিপূজা। যা আজও প্রায় সকল ধর্মীয় সমাজে চালু আছে এবং বর্তমানে যা মুসলিম সমাজে স্থানপূজা, কবর পূজা, ছবি-প্রতিকৃতি, মিনার ও ভাষ্কর্য পূজায় রূপ নিয়েছে।উক্ত পাঁচটি মূর্তির মাহাত্ম্য ও তাদের প্রতি ভক্তি, লোকদের হৃদয়ে এমনভাবে প্রোথিত হয়েছিল যে, তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এবং পারস্পরিক চুক্তি সম্পাদনকালে তাদের নাম উল্লেখ করত। এতদ্ব্যতীত তারা নানাবিধ সামাজিক অনাচারে ডুবে গিয়েছিল। সম্প্রদায়ের এইরূপ পতন দশায় আল্লাহ তাদের হেদায়াতের জন্য নূহ্ (আ.)-কে রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেন {আ‘রাফ ৭/৬১}।
এর ফলে তখনকার সময় প্রায় সকল মানুষই মুর্তি পূজায় লিপ্ত হয়ে পথভ্রষ্টতার অতল গহবরে নিমজ্জিত হয়। এসকল মূর্তির কাছে মনোবসনা পূ্ন্যের কামনা করত,নজর-নেওয়াজ কোরবানী ইত্যাদী সব কিছুই করত ,যেমন আজকাল মাজার সমূহে হচ্ছে৷আল্লাহ আমাদের সমাজকে এসব শীর্ক থেকে হেফাজত করুক আমিন।
কেউ কেউ এ সকল মূর্তিকেই স্বয়ং খোদা মনে করতো, কেউ বা খোদাকে পাওয়ার মাধ্যম মনে করতো ৷
এ ভাবে যখন গোটা জাতিই শিরকে লিপ্ত হলো চতুর্রদিকে কূফরীর অন্ধকার চেয়ে গেছে ঠিক তেমনি সে মূহুর্তে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের হেদায়েতের জন্য হযরত নূহ আঃ কে রসুল হিসাবে প্রেরন করলেন ৷
কিন্তু তিনি ৯৫০ বৎসর পর্যন্ত দাওয়াতের কাজ করার পর মাএ ৪০জন বা ৪০ জোড়া মহিলা পুরুষ মিলে তাঁর ধর্ম গ্রহন করলেন।
অবশেষে তিনি ওহী মারফত জানতে পারলেন যে এজাতি আর হেদায়েত পাবেনা তখনি আল্লাহর হুকুমে তিনি তাদের ধবংসের জন্য দোয়া করলেন ,
এবং আল্লাহ তায়ালা মহাপ্লাবন দ্বারা সকল কাফেরদের ধবংস করে দিলেন ৷==এই ইতিহাস সকলেরই জানা আছে।
তেমনি ভাবেই আজকাল আমাদের দেশের স্বাথম্বেশী পেট পূজারী গূটি কয়েক ওলামায়েছুর ছএ ছায়ায় কবর কেন্দ্রিক লাল -সালু কাপড , মুমবাতি আগর বাতি জালিয়ে গডে তুলছে শীর্কের কারখনা , সেখানেই করা হচ্ছে ঈমান বিধংসী কর্মকান্ড ৷বর্তমানে আমাদের দেশে কবর কেন্দ্রীক যা করা হচ্ছে , পূর্বেকার যূগে ও প্রাথমীক ভাবেএমন কর্মকান্ড করা হতো যার ফলে গোটা জাতিকে কুফরের অন্ধকারে ধবংস হয়েছিল , এখনও অদূর ভবিষ্যতের এ দেশের আবস্হা এমন হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
এদেশের মূর্তি পূজকরা সাধারনত ৪ টি কাজ করে থাকে ,
[১] বাৎসরীক ২ টি বড় অনূষ্ঠান দূর্গাপূজা ও কালীপূজা এ ছাডা আরও ছোট ছোট অনূষ্ঠান ৷
[২] প্রতিমাদের সামনে প্রদীপ মূমবাতী আগরবাতী ইত্যাদী প্রজ্যলীত করন ৷
[৩] এদের নামে পশূ / পাঁঠা কোরবনী [বলী] দিয়ে থাকে ,
[৪] প্রতিমাদের সামনে মাথা নত ও সেজদা করে থাকে ৷
দুর্গার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র বলে, ‘আয়ুরারোগ্যং বিজয়ং দেহি দেবি নমস্তুতে। রূপং দেহি যশো দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে। পুত্রান দেহি ধনং দেহি সর্ব্বকামাংশ্চ দেহি মে।।’ (হে ভগবতী, আপনাকে প্রণাম করি, আপনি আমাকে রোগমুক্ত করুন, বিজয়ী করুন, যশ ও সৌভাগ্য প্রদান করুন, পুত্র ও ধন দিন এবং আমার সকল কামনা পূর্ণ করুন।)
বর্তমান মাজার পন্থীদের ও ৪ টি কাজ
[১] বাৎসরীক ওরস ও মিলাদ মাহফিলের নামে কত কিছু,
[২] কবরের সামনে মুমবাতি আগরবাতি প্রজ্জলন ,
[৩] পীরের / মাজারের নামে পশু কোরবানী /মান্নত করন ,
[৪] কবর ওয়ালার কাছে কিছু চাওয়া ,মনোবাসনা পূন্যের জন্য কবর কেন্দ্রিক দোয়া করা ,ক্ষেএ বিশেষ কবর কে সেজদা করা ইত্যাদি ৷
আর অনেক মাজার পন্থীরা মাজার/কবর /বা পীরের কাছে ধন সম্পত্তী /সন্তান /রোগমূক্তি/ সহ মনোবাসনা পূন্যের দোয়া করে থাকে,
পাঠক বৃন্দই পার্থক্য করুন প্রতিমাপূজক ও বর্তমান মাজার পূজারীদের মধ্যে কোন প্রাথক্য আছে কি ?
ইসলাম মানবজাতির জন্য হেদায়েতের আলো। মানুষের চিন্তা ও কর্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য এবং সকল ভ্রান্তি ও প্রান্তিকতা থেকে রক্ষা করার জন্য এই দ্বীন আল্লাহ তাআলা দান করেছেন। তাই একজন প্রকৃত মু’মিন যেমন মূর্খতা ও অবিশ্বাসের শিকার হতে পারেন না তেমনি অজ্ঞতা ও অন্ধ-বিশ্বাসেরও শিকার হন না। সকল প্রকার কুফর ও শীরক্ থেকে আল্লাহ তার চিন্তা ও কর্মকে রক্ষা করেন। কুফর শীর্ক হল মানব-সমাজের সবচেয়ে বড় কুসংস্কার। মানুষ এই কুসংস্কারের শিকার তখনই হয় যখন ইসলামের শিক্ষাকে ত্যাগ করে মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত মতবাদের অনুসরণ করে। পৃথিবীতে যত প্রকারের শীর্ক ও কুফর আছে সবগুলোর মূলে রয়েছে বিভিন্ন কাল্পনিক ও অবাস্তব ধারণা ও অতীভক্তি ।
এজন্য কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- فاجتنبوا الرجس من الأوثان واجتنبوا قول الزور ‘তোমরা অপবিত্রতা থেকে তথা মূর্তিসমূহ থেকে দূরে থাক। আর দূরে থাক মিথ্যাকথন থেকে।’-সূরা হজ্ব : ৩০-৩১
বস্তুত মিথ্যাই সকল পৌত্তলিকতার জনক। অতএব পৌত্তলিকতা থেকে মুক্ত থাকতে হলে মিথ্যার সকল ছিদ্রপথ বন্ধ করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা বস্তু কিংবা কোনো স্থান বা কাল সম্পর্কে ভিত্তিহীন বিশ্বাস পোষণ করার অবকাশ ইসলামে নেই। তদ্রূপ কল্পনাপ্রসূত ধারণার উপর ভিত্তি করে ভক্তি নিবেদনে সীমালঙ্ঘন করারও সুযোগ নেই। এ জাতীয় সকল ধারণা ও আচরণ ইসলামে নিষিদ্ধ। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা যেমন সত্যবিমুখ অবিশ্বাসীদের মর্মন্তদ পরিণাম ঘোষণা করেছেন তেমনি ধর্মের নামে ভিত্তিহীন কর্ম ও বিশ্বাস প্রচার কারীদেরকে ‘আল্লাহর উপর মিথ্যারোপকারী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।অতএব দু’টোই গোমরাহী ও সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য।
মাযারকেন্দ্রিক কার্যকলাপের তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট
মাযারকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে 4টি অনাচার হয়ে থাকে তার অধিকাংশই রিপুতাড়িত কর্মকাণ্ড যাপরিহার করতে হবে।
প্রথমত:- নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, গান-বাদ্য এবং মদ ও গাঁজা হচ্ছে মাযার কেন্দ্রিক মেলা ও ওরসের অন্যতম অনুষঙ্গ। এগুলোর তাত্ত্বিক সূত্র একটিই। তা হচ্ছে, নোংরামী ও রিপুর চাহিদা-পূরণ। এজন্য দেখা যায়, এইসব মাযার-ওরসে অংশ গ্রহণকারীদের সিংহভাগ হল সমাজের অশিক্ষিত ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন জনগোষ্ঠী।
যে কর্মগুলি সাধারণ আবস্হায় হারাম হলেও মাযারে তা হালাল হিসাবে গন্য করে থাকে জ্ঞানপাপিরা।
দ্বিতীয়:- অনাচার মাযারের সেবকদের বৈষয়িক ধান্দা। এরা মাযারে আগত নারী-পুরুষের দান-দক্ষিণা ও মান্নত-কোরবানী গ্রহণ করে এবং ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ ও আশীর্বাণী বিক্রি করে। বলাবাহুল্য, এখানে তত্ত্বের চেয়ে বৈষয়িক দিকটিই বড়।
তৃতীয়:- অনাচার হচ্ছে কুফর ও শিরক। মাযারপন্থী বা মাযারে আগত লোকেরা বিভিন্ন কুফরী ও শিরকী ধারণা পোষণ করে। যেমন মাযার বা মাযারে শায়িত ব্যক্তিকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মনে করা; হাজত-পূরণকারী, বালা-মুসীবত থেকে উদ্ধারকারী এবং মানুষের উপকার-অপকারের মালিক মনে করা ইত্যাদি। এসকল শিরকী বিশ্বাস থেকে তারা বিভিন্ন শিরকী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। যথা : মাযারের নামে মান্নত করা, মাযারে এসে সিজদা করা, পশু জবাই করা, মাযারওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে রোনাযারী করা এবং মাল-দৌলত, সন্তান-সন্ততি, সুস্থতা ও স্বচ্ছলতা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। এভাবে বিশ্বাসের শিরক, মানুষকে কর্মের শিরকের মাঝেও লিপ্ত করে দেয়।
চতুর্থ ও সর্বশেষ অনাচারটি হল:- কুরআন-সুন্নাহ এবং দ্বীন-শরীয়তের বিকৃতিসাধন। মাযার কেন্দ্রিক সকল গর্হিত কার্যকলাপের পক্ষে সামপ্রদায়িতাধর্মী জেদ ও হঠকারিতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একশ্রেণীর আলখেল্লাধারী গুরু বিভিন্ন অবাস্তব ধারণা প্রচার করে এবং নির্দ্বিধায় কোরআন-সুন্নাহর তাহরীফ ও অপব্যাখ্যা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাশুধু ‘অপব্যাখ্যা’ থাকে না; বরং জরুরিয়্যাতে দ্বীন বা দ্বীনের সর্বজনবিদিত আকীদা ও আমলকে অস্বীকার করা হয়।
মাজার বা কবরস্হানে যা করা যাবে:-
কবর-যিয়ারতের সাথে এসব অনাচারের কোনো সম্পর্ক নেই ইসলামে কবর যিয়ারতের বিধান আছে, কিন্তু' কবরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করার অবকাশ নেই। কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল, আখিরাতের স্মরণ জাগ্রত করা এবং কবরবাসীর জন্য দোয়া করা। হাদীস শরীফে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা যিয়ারত করতে পার। কারণ তা আখিরাত কে স্বরন করিয়ে দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২১২৭) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও তাঁর সাহাবীদের কবর যিয়ারত করেছেন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। কবর যিয়ারতেরও মাসাইল ও নিয়মকানুন আছে। সে মোতাবেক কবর যিয়ারত করলে তাহবে ছওয়াবের কাজ। পক্ষান্তরে কোনো কবরকে ‘মাযারে’ পরিণত করে বছর বছর নির্দিষ্ট স্থানে জমায়েত হওয়া এবং উৎসবে পরিণত করা সম্পূর্ণ হারাম। হাদীস শরীফে পরিষ্কার ভাষায় তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা নিজেদের ঘরকে কবর বানিও না। (অর্থাৎ কবরের মতো ইবাদত-বন্দেগী শূন্য করো না) এবং আমার কবরকে উৎসবের স্থান বানিও না। বরং আমার প্রতি দরূদ পড়। কেননা তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছবে।’-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২০৪০
তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবরকেই যখন উৎসবের স্থান বানানোর অবকাশ নেই তখন অন্যদের কথা তো বলাই বাহুল্য।
আমরা কিন্তু ওলী আল্লাহ বিরোধী না ,বরং আমাদের দেশ সহ সারা পৃথিবীর সত্যিকারের হক্কানী আলেম-ওলামা, পীর, মাশায়েখ, আউলিয়ায়ে কেরাম আমাদের মাথার মুকুট সমতূল্য সন্মানের পাত্র এতেকোন সন্দেহের অবকাশ নেই৷কারন হক্কানী ওলামায়ে কেরামরাই হলেন এ দ্বীনের ধারক বাহক, যাদের কে নবীর ওয়ারীস হিসাবে খেতাব্ দেয়া হয়েছে ৷তাদের কথা মানবো শুনবো ও আমল করবো তাদের লেখা বই পুস্তুক পডবো, ওয়াজ নছিহত শুনবো , এবং তাদের এন্তেকালের পর পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে তাদের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করবো ৷এবং সময় সূযোগ হলে তাদের কবর যেয়ারত করব ৷
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সব ধরনের গোমরাহী থেকে রক্ষা করুন এবং সঠিক পথে চলার তাওফীক দান করুন।
১ম রত্ন:-নাস্তিক্যবাদিদের মতে ‘যা দেখি না তা মানি না’ বিজ্ঞানের আলোকে যুক্তি খন্ডন,
১ম রত্ন:-নাস্তিক্যবাদিদের মতে ‘যা দেখি না তা মানি না’ বিজ্ঞানের আলোকে যুক্তি খন্ডন,
নাস্তিক্য বাদিদের মতে ‘যা দেখি না তা মানি না’ এই কথাটা কত টুকু যুক্তিযুক্ত তা বিজ্ঞানের আলোকেই জেনে নেয়ার চেষ্টা করবো।
আজকাল আমাদের দেশে নাগরীক জীবনে নৈতীক শিক্ষার অভাবের কারণে শিক্ষা ব্যবস্হায় ধস নামার ফলে যত্রতত্র নাস্তিকদের দৌরাত্ব্য লক্ষ করা যাচ্ছে।এতে করে আমাদের সামাজীক জীবনে যেমন বিশ্রিঙ্খলা তৈরী হচ্ছে তেমনি ভাবে নতুন প্রজন্মের মনে বিভিন্ন বিভ্রান্তির দানা বাঁধছে।আজকাল ইন্টারনেট,ফেইজবুক,ব্লগও ইউটোব সহ নানান সামাজীক যোগাযোগের মাধ্যমে নাস্তিকরা ইসলামের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে অসত্য বানোয়াট কূরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে বিভিন্ন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।তারা ইসলাম, মুসলমান ,নবী-রসুল,ছাহাবায়ে কেরাম,এমন কি ইসলামের বিধিবিধান সহ সয়ং মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালাকে নিয়েও তারা কটুক্তি করতে কুন্ঠবোধ করেনি।এমন পরিস্হিতিতে যার যার অবস্হান থেকে এর প্রতিবাদ করা ঈমানী দায়িত্ব।এবং তৎ সঙ্গে লেখনীর মাধ্যমে ঐ সকল বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারের যুক্তিনির্ভর জবাবের মাধ্যমে সর্বসাধারণকে সতর্ক করাও অপরিহার্য কর্তব্য।কারণ তারা অজ্ঞতার কারণেই এমন বিভ্রান্তি চড়াচ্ছে।নাস্তিক্যবাদীদের প্রত্যেকটি কথার জবাব যূক্তিভিত্তিক লেখনীর মাধ্যমে দিয়েই তাদেরকে ইসলামের শীতল ছায়াতলে টানার চেষ্টা করাই যুক্তিযুক্ত,কিন্তু হত্যাকান্ড সমাধান নয়, বিচার বহির্ভূত যে কোন হত্যাকান্ড অমানবিক ,কাউকে হত্যাকরে কারো মতবাদকে দমানোর নজির প্রায় নেই বললেই চলে।যদিও তা সাময়ীক ।
ফেইজবুকে এক ভদ্র লোক এক নাস্তিকের সাথে তার কথোপকোথনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন,
ঐ নাস্তিক ভদ্রলোকটিসহ অন্যান্যদের যুক্তি হল "যা দেখি না তা মানি না" সেই হিসাবে স্রষ্টাকে দেখা যায়না তাই স্রষ্টাকে মানা যাবেনা বা স্রষ্টার অস্তিস্তকে বিশ্বাস করা যাবেনা ।এই অজ্ঞতাপূর্ণ বাক্যটি উচ্চারণ করে এমন এক মহান স্রষ্টাকে দর্শন লাভ করার আকাঙ্খায় জেদ ধরে বসে আছেন, অথচ সেই স্রষ্টার অসংখ্য অগণিত সৃষ্টিকেই তারা দেখার যোগ্যতা রাখেন না।সেখানে স্রষ্টাকে দেখবেন কি ভাবে?কিন্তু স্রষ্টার অগণীত সৃষ্টিকে না দেখেও বিশ্বাস করেন কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল স্রস্টাকে বিশ্বাস করেন না।
তাই আমার এ প্রবন্ধে বিজ্ঞানের আলোকেই তাদের যুক্তিটা খন্ডন করবো ইনশাআল্লাহ ।কারণ কোরান-হাদীস বা কোন ধর্মীয় গ্রন্থের যুক্তি বা রেফারেন্স তাদের কাছে যেহেতু অগ্রহন যোগ্য সেহেতু তাদের সেই কথিত বিজ্ঞান দিয়েই তাদেরকে দপা-রপাই যুক্তিযুক্ত।
১-যেমন, যে বাতাসের সাগরে মানব সম্প্রদায় ডুবে আছে, সেই বাতাসের উপাদান অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি মৌলিক পদার্থগুলোকে মানুষ মোটেও দেখতে পায় না।
প্রতিবার নি:শ্বাস নেয়ার সময় কোটি কোটি অক্সিজেন পরমাণু গ্রহণ করছে কিন্তু এর একটি পরমাণুকেও দর্শন লাভ করতে পারছে না। অথচ শুধুমাত্র একটি অক্সিজেন পরমাণুতে আটটি ইলেকট্রন, আটটি প্রোটন ও আটটি নিউট্রন কণিকা বর্তমান আছে। মানুষের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করেও এই মৌলিক কণিকাগুলোর দর্শন লাভ করা সম্ভব নয়।
তাই বলে কি বস্ত্তবাদে বিশ্বাসীরা ‘যা দেখিনা তা মানি না’ এই নীতির উপর ভিত্তি করে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন এবং তাদের ভিতরে অবস্থিত মৌলিক কণিকাগুলোর অস্তিত্বকে অস্বিকার করার দুঃসাহস দেখাবেন ?
এটা একটা মৌলিক প্রশ্ন ।
২- হাবিশ্বের সূচনা লগ্নে Stable Atom হিসেবে মৌলিক পদার্থ হাইড্রোজেনই সর্বপ্রথম আবির্ভূত হয়। বর্তমান মহাবিশ্বের শতকরা ৭৫ ভাগ পদার্থই হচ্ছে এই হাইড্রোজেন নামক মৌলিক পদার্থ। প্রতিটি নক্ষত্রের ভেতর জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। সমগ্র মহাবিশ্বটি এই হাইড্রোজেন নামক মহাসুক্ষ্ম পরমাণুতে ভরপুর। বস্ত্তবাদীরাও অদৃশ্য হাইড্রোজেন দ্বারা এ মহাবিশ্বটি পূর্ণ হয়ে আছে বলে বিশ্বাস করেন।কিন্তু দেখেননা, না দেখেও বিশ্বাস করেন, অথচ তারা এই অদৃশ্য হাইড্রোজেনের স্রষ্টাকে অদৃশ্যের অজুহাতে তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে শুধু মানব সভ্যতার সাথেই প্রতারণা করছেন না, তারা নিজেরাও নিজেদেরকে প্রতারিত করছেন।
অদৃশ্য সৃষ্টি মানবেন আর অদৃশ্য স্রষ্টা মানবেন না এটা কোনো ধরণের মূর্খতা? দ্বিমুখী নীতির এর চেয়ে নির্লজ্জ উদাহরণ আর কী হতে পারে?
৩-এই মহাবিশ্বে শূন্য বলতে কিছুই নেই। কার্যত সর্বত্র শক্তি, তেজস্ক্রিয়তা ও মহাসুক্ষ্ম কণিকা দ্বারা ভরপুর। দৃষ্টি আওতার বহির্ভূত বলে আমরা তা দেখতে পাই না। প্রায় ভরশূন্য মহাসুক্ষ্ম কণিকা নিউট্রিনো প্রায় আলোর গতিতে সকল প্রকার বস্ত্তকে ভেদ করে মহাবিশ্বব্যাপি পরিভ্রমণরত রয়েছে। প্রতি ইঞ্চি জায়গা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন (১ মিলিয়ন = ১০ লক্ষ) মহাসুক্ষ্ম নিউট্রিনো কণিকা অতিক্রম করে চলে যাচ্ছে। এদের গতিপথ কেউই রুখতে পারে না।
এমন কি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ভিতর দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ বিলিয়ন (১ বিলিয়ন=১০০০ মিলিয়ন) পরিমাণ নিউট্রিনো কণিকা ভেদ করে চলে যাচ্ছে। অথচ আমরা তা অনুভব করতে পারি না,বা দেখিনা। অদৃশ্য নিউট্রিনো কণাগুলোর এসব নীরব কর্মকান্ড প্রমাণ করছে যে, ‘যা দেখিনা তা মানি না’ উক্তিটি শুধু অজ্ঞ বা মূর্খলোকদের জন্যই সাজে, জ্ঞানী ব্যক্তিদের জন্য কখনোই তা শোভনীয় নয়।
৪- ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস নামক দুইটি মহাসুক্ষ্ম জগৎ রয়েছে। এদের আকৃতি ও গঠন আমাদের দৃষ্টি শক্তির আওতার বহির্ভূত, তাই আমরা এদেরকে দেখতে পাই না। এরা এতই ক্ষুদ্রজগতের বাসিন্দা যে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে এরা রীতিমত আসা-যাওয়া করলেও আমরা এদের দেখতে বা অনুভব করতে পারি না। এদের কারণেই আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই, কখনো বা মৃত্যুও ঘটে। এই মহাসুক্ষ্ম ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া জগৎও যেন ঐ সব বস্ত্তবাদে বিশ্বাসী নাস্তিক বিজ্ঞানীদের প্রশ্ন করছে-হে জ্ঞানী সমাজ! কেন মিথ্যার ভান করছ? আমাদের না দেখেও যদি শুধুমাত্র আমাদের উপস্থিতির চিহ্ন দিয়ে বিশ্বাস করা যায় তাহলে স্রষ্টাকে না দেখে তার অনন্য, মহাবিস্ময়কর, কল্পনাতীত অগণিত জীবন্ত দর্শণ দেখার পরও কেন তাকে অস্বীকার করা হবে? এর কি কোনো যুক্তি আছে? এটাতো স্পষ্টত আত্মপ্রবঞ্চনার শামিল।উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো অনেক বেশি সুক্ষ্ম বলে আমরা তা দেখতে পাই না।
5-কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই মহাবিশ্বের বেশির ভাগ জিনিসই আমরা দেখতে পাই না। মাথার উপর কি বিশাল বিস্তৃত আকাশ।তাতে অবস্থান করছে লক্ষ কোটি মহাজাগতিক বস্ত্ত। যেমন, ধুমকেতু,কোয়াসার,ব্লাকহোল,সুপার নোভা, নিউট্রন স্টার, গ্যালাক্সী ইত্যাদি।
এই বস্ত্তগুলো কতটা বিশাল তা শুধু গ্যালাক্সীর কথা বিবেচনা করলেই বুঝা যাবে। এক একটি গ্যালাক্সীর আয়তন এক থেকে দেড় লক্ষ আলোকবর্ষ। আজকের বিজ্ঞান সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাবিশ্বের যতটুকু অবস্থান অবলোকন করতে পেরেছে, বিজ্ঞানীদের অনুমান তা মোট মহাবিশ্বের বড়জোড় দশ ভাগ হবে। এই দশ ভাগের মধ্যেই চারশ কোটি গ্যালাক্সীসহ বিলিয়ন বিলিয়ন মহাজাগতিক বস্ত্তর সন্ধান পাওয়া গেছে।
তাহলে সহজেই অনুমান করা যায় বাকি ৯০ ভাগ মহাবিশ্বে গ্যালাক্সীর মত কিংবা তার চেয়ে বহুগুণ বড় কত বিলিয়ন বিলিয়ন মহাজাগতিক বস্ত্ত অবস্থান করছে। আজ পর্যন্ত আমরা যার সন্ধান লাভ করতে পারিনি,কিন্তু বিশ্বাস করি নাস্তিকরাও বিশ্বাস করেন ।একেমন অদ্ভুদ কান্ডজ্ঞানহীন কথা যে স্রষ্টার সৃষ্টিকে অদৃশ্য হওয়া সত্বেও বিশ্বাস করবে আর স্রষ্টাকে অদৃশ্য হওয়ার অজুহাতে বিশ্বাস করা যাবেনা।এদের চেয়ে কপাল পোড়া অপদার্থ জীবকি আর হতে পারে?
6- ১৮৮০ সালের পর থেকে আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা শুরু হলেও তা ব্যাপকতা লাভ করে ১৯ শতকের গোড়ার দিকে। কিন্তু তখনো মহাকাশ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা তেমন কিছুই জানতেন না, কারণ তখনো টেলিস্কোপ (Telescope) আবিষ্কার হয়নি। ১৯২০ সালে ইডুইন হাবেল টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন। এজন্যে তখনো সবাই মহাকাশ বলতে আমাদের সৌরজগৎ সহ খালিচোখে দেখা যায় এই নগণ্য আকাশকেই মনে করতো। এর বেশি কল্পনাও করতে পারতো না। শুধু কি মহাকাশ বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখাতেই মানুষের জ্ঞান ছিল আজকের তুলনায় অতি নগণ্য। আজ হতে মাত্র এক থেকে দেড় শত বছর পূর্বে যদি বিজ্ঞান সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের অবস্থা হয় এতটাই নাজুক তবে চিন্তা করুন আজ থেকে১৪০০ বছর পূর্বে বিজ্ঞান সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান কতটা সীমাবদ্ধ ছিল। থাকবেই বা কী করে?
তখনকার যুগতো বিজ্ঞানের যুগ ছিল না, তখনকার যুগ ছিল জমাট বাধা অন্ধকার ও কুসংস্কারের যুগ। গোটা মানব সম্প্রদায় নানাবিধ কুসংস্কারে আছন্ন ছিল। কিন্তু অবাক করার মত বিষয় হচ্ছে আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে অন্ধকার অনুন্নত, জ্ঞানের আলোহীন পরিবেশে আরব মরুর বুকে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে তার প্রিয় বাণী বাহকের কাছে অবতীর্ণ করলেন এমন কিছু বাণী যার মাধ্যমে সেই কুসংস্কার আছন্ন যুগেই পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে মানব জাতিকে জানিয়ে দিলেন গ্যালাক্সী সম্পর্কে। আরো জানালেন বিগ ব্যাংগ থিওরী, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, Cosomic String অভিকর্ষবল, ব্ল্যাকহোল, সম্প্রসারণ শীল মহাবিশ্ব, গ্যালাক্সিদের পশ্চাদ মুখিবেগ সম্পর্কে।
এভাবে আরো শ’খানেক বিষয়ে উদাহরণ আছে। উক্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে পবিত্র কুরআনই যে মানব জাতিকে সর্বপ্রথম ধারণা দিয়েছেএ ব্যাপারটি নিশ্চিত করার জন্যে এবং এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষনের সমস্ত পথ বন্ধ করে দেয়ার জন্যে উক্ত বিষয়গুলো পবিত্র কুরআনের যে সূরার যে আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তা যথাক্রমে তুলে ধরছি।
২৫নং সূরা আল ফুরক্বান ৬১/৬২নং আয়াতে, তাফসীর মারেফুল কোরআন বাংলা , যথাক্রমে৯৬৪/৯৬৫/৯৬৬/৯৬৭/৯৬৮ পৃষ্ঠায় বিস্তারীত বর্নণা করা হয়েছে। ২১নং সূরা সূরায়ে আম্বিয়া ৩০/৩১নং আয়াতে, ৩৫ নংসূরা সূরায়ে ফাতির এর ৪১নং আয়াতে, ৫১নং সূরা, সূরায়ে আযযারিয়াতের ৭/৪৭/৪৮ নং আয়াতে, ৫৬নং সূরা, সূরায়ে ওয়াক্বিয়াহর ৭৫ ও ৭৬ নং আয়াতে, ৫৭নং সূরা সূরায়ে হাদীদের ৪/৫/৬নং আয়াতে এবং ৭১ নং সূরা, সূরায়ে নূহ এর ১৫/১৬/১৭/১৮/ও ১৯ নং আয়াতে এসব বিষয় সম্পর্কেআলোচনা করা হয়েছে।
একবার চিন্তা করুন যেখানে আজ হতে এক থেকে দেড় শত বছর পূর্বে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে মানুষ কল্পনাও করতে পারতো না সেখানে আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে কিভাবে ১টি গ্রন্থে সুস্পষ্টভাবেএই বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হল? নিঃসন্দেহে এর রচয়িতা মহান স্রষ্টা নিজেই।
7- মাইকেল ফ্যারাডে যখন মৃত্যু শয্যায় তখন তার এক সহকর্মী তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ফ্যারাডে স্রষ্টা সম্পর্কে এখন তোমার ধারণা কী? মৃত্যুপথ যাত্রী ফ্যারাডে প্রশ্নটি পুনরাবৃত্তি করে বললেন, ধারণা? স্রষ্টাকে অশেষ ধন্যবাদ আমাকে আর কোনো ধ্যান ধারণার উপর নির্ভর করতে হবে না। আমি কাকে বিশ্বাস করতাম জানতে পেরেছ।
১৬শ’ শতাব্দির বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও দার্শনিক ফ্রান্সিস বেকনের একটি বাণী স্বরণ করিয়ে দিতে চাই । ফ্রান্সিস বেকন বলেছিলেন-সামান্য দর্শন জ্ঞান মানুষকে নাস্তিকতার দিকে নিয়ে যায়, আর গভীর দর্শন জ্ঞান মানুষকে ধর্মের পথে টেনে আনে
আজকে যে সকল তরুন, নাস্তিক্যবাদের দিকে ধাবীত হচ্ছে তাহল অল্প বিদ্যা ভয়ংকর হওয়ার সাথে সাথে পারিবারীক ভাবে সন্তানদের কে ধর্মীয় শিক্ষার নাগালে রেখেই প্রাচ্যাত্বের শিক্ষায় শিক্ষিত করার কারনে।
8-স্রষ্টার অস্বিত্বে কি ভাবে একটা লোক অবিশ্বাসী হতে পারে আমার বুঝে আসেনা
যদি আপনাকে কোন এক ব্যক্তি বলে এই শহরে একটা কারখানা আছে , যার নাই কোন মালিক , নাই কোন ইন্জিনিয়র , নাই কোন মিস্ত্রি , সমস্ত কারখানা মেসিন পত্র নিজে নিজে হয়ে গেছে , সমস্ত নাট-বল্টু নিজে নিজে লেগে গেছে । সমস্ত মেশিন নিজে নিজে চলছে । আশ্চার্য আশ্চার্য জিনিস পত্র নিজে নিজে বের হচ্ছে ।
এখন আপনিই বলুন যে , আপনাকে যে এই কথা বলবে তখন আপনি আশ্চার্য হয়ে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন কিনা?
এখন আপনি বিচার করুন , একটা কারখানা সম্বন্ধে আপনি কখনো এটা মানার জন্য প্রস্তুত হবেন না যে , এটা কেউ চালানো ছাড়া নিজে নিজে চলছে । তাহলে আপনি বলুন পৃথিবী ও আকাশের যে বিশাল কারখানা আমাদের সামনে চলছে , যেখানে চাঁদ ,সূর্য ও মহাবিশ্বে গ্যালাক্সীর মত কিংবা তার চেয়ে বহুগুণ বড় কত বিলিয়ন বিলিয়ন মহাজাগতিক বস্ত্ত অবস্থান করছে। এবং বড় বড় নক্ষত্র ঘড়ির কাটার মত চলছে ,আপনি এটা কিভাবে মানবেন ,যে এটা কেউ বানানো ছাড়া নিজে নিজে হয়ে গেছে এবং কারো চালানো ছাড়া নিজে নিজে চলছে ?
মানব জাতি তুচ্ছ বির্য ছিল । কিছু দিন পর বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে খুব সংকৃর্ণ স্হান হতে বের হয়েছে । তার জন্য মায়ের স্তন হতে দুধ উৎপন্ন হয়েছে , কিছু দিন পর ঐ মানবকে বুদ্ধি জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে । এখন আমার প্রশ্ন ? এত সব কিছু কে করলো ? নিশ্চয় আপনি উত্তর দিবেন সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালাই করেছেন ।
দুনিয়ার মধ্যে যে কোন কাজ চাই ছোট হোক কিংবা বড় , কখনো সুব্যবস্হা ছাড়া নিয়মিত ভাবে চলতে পারে না । যতক্ষণ পর্যন্ত তার কোন না কোন দায়িত্বশীল না হবে । এক স্কুলের দুজন প্রধান শিক্ষক , এক বিভাগের দুজন ডাইরেক্টর , এক ফোজের দুই কমান্ডর , এক দেশের দুজন প্রধানমন্ত্রী আপনি কি কখনো শুনেছেন ? আর যদি কখনো এমন হয় তবে আপনিই বলুন কি প্রতিষ্ঠান টিকে থাকবে ? এখন আপনি চিন্তা করুন যে , আপনার উপর কোটি কোটি ভারী - ভারী গাড়ি ঘুরছে যা আপনি স্বচোখে দেখছেন , এই পৃথিবী যেখানে আপনি বসবাস করছেন , এই চাঁদ যে রাতে বের হয় , এই সূর্য যে প্রতিদিন বেব হয় । এই সব কিছুর সুন্দর ব্যবস্হায় চলা একথার প্রমান নয় যে , এই পৃথিবীর স্রষ্টা এবং ব্যবস্হাপক কেবল এক আল্লাহ ,
পৃথিবীতে অসংখ্য জিনিষ আছে যা দেখা যায় না তবে মানুষ তার অস্বিত্ব স্বীকার করে । যেমনটি পূর্বেও আলোচনা করা হয়েছে
এক ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত কথা-বার্তা বলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করে তখন আমরা তার অন্তরে আত্মার অস্তিত্ব থাকার পূর্ণ বিশ্বাস করি । কিন্তু যখন সে জমিনে পড়ে যায় । আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায় , শরীর ঢিলা হয়ে যায় , তখন আমরা তার অন্তর হতে আত্মা বের হয়ে যাওয়ার পূর্ণ বিশ্বাস করি। অথচ তার আত্মা বের হতে আমরা দেখিনি ।
সুতরাং এমনি হাজারো লাখো উদাহরণ আছে যে অনেক সৃষ্টির রহস্য আমরা জানিনা বা দেখিনা কিন্তু না দেখা সত্বেও আমরা বিশ্বাস করি কিন্তু স্রষ্টাকে দেখা যায়না তাই বলে "যা দেখি না তা মানি না"এমন কথা আল্লাহদ্রোহী নাস্তিক ,গন্ডমূর্খ নাফরমানদের মানায়, কোনআস্তিকের জন্য নয় ।
পরিশেষে পরামর্শ স্বরুপ বলবো আজকে মানুষ নাস্তিক্যবাদের দিকে কেন ধাবীত হচ্ছে ?তার ৪টি কারণ আমরা খুঁজে পেয়েছি । ১ম:- পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ৪২০টির মত ধর্ম প্রচলীত আছে আমরা সকল ধর্মকে শ্রদ্ধা করি,আপনি নিজের জ্ঞান বুদ্ধি গবেষনা দিয়ে সত্যকে গ্রহন করবেন এটাই বাস্তব,কিন্তু আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ ধর্মই হল ইসলাম।ইসলাম ছাড়া কোন ধর্মই বর্তমানে আল্লাহর নিকট গ্রহন যোগ্য নয়।আল কোরআন:
যাই হউক আপনি যে কোন ধর্মেরই অনূসারী হউননা কেন যদি পারিবারিক ভাবে সন্তানদেরকে ছোট বেলা থেকেই ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত না করেন তাহলে কোন এক সময় এ সন্তান নাস্তিক্যবাদের দিকে ধাবীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।এই জন্যই অবিভাবককেই সন্তানদের প্রাথমীক ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্হা করতে হবে।এ ক্ষেত্রে বড় আলেম মুফতি মোহাদ্দেস হওয়া জরুরী নয় বরং যে পরিমান এলেম অর্জনের দ্বারায় হারাম হালাল ও জরুরীয়াতে দ্বীন ও আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে চিনতে পারে ততটুটুক যথেষ্ট।
২য়:-পারিবারীক ভাবে ধর্মীয় অনূশাসন মেনে না চললেও ঐ সন্তান-সন্ততি কোন এক সময় নাস্তিক্যবাদের দিকে ধাবীত হতে পারে অথবা নাস্তিক্যবাদকে সমর্থন দিতে পারে।ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে সে নিজেও নাস্তিক্যবাদের দিকে ধাবীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।এজন্য অভিবাবকদের করনীয় পারিবারীক ভাবে যত টুকু সম্ভব ধর্মীয় অনূশাসন মেনে চলা। বিজাতীয় অশ্লীল কালসার থেকে পরিবারকে মূক্ত রাখা।
৩য়:-স্কুল-কলেজ ওবিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে নাস্তিক্যবাদিদের লেখা পাঠ্যবই পাঠ করলে ধীরে ধীরে ঐ সকল ছাত্র-ছাত্রী সে যে কোন ধর্মাবলম্বী হউকনা কেন মনে মগজে নাস্তিক্ হয়ে বের হবে ।এই জন্য করণীয় ;সরকারকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী লেখকদের বই, পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে জাগতিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক তথা ধর্মীয় শিক্ষার বই অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
৪র্থ:- মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ধর্মীয় অনুভূতীতে আঘাত দেয়ার শাস্তি না হওয়ার কারণে মানুষ নাস্তিক্যবাদের দিকে ধাবীত হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।। এই জন্য সরকারই কঠোর আইনের মাধ্যমে এ জাতিকে নাস্তিক্যবাদের অভিশাপ থেকে মূক্তি দিতে পারে ,কারন শাস্তির ভয়ে হলেও তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া থেকে বিরত থাকবে। সুতরাং ১ম ও২য় আমাদের সাধারণ জনগনকে ব্যবস্হা নিতে হবে এবং ৩য় ও ৪র্থ টি সরকারকেই করতে হবে।
লেখক :-- এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী মিরসরাই
অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্ ও ব্লগার
ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া
মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম
লেখক :-- এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী মিরসরাই
অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্ ও ব্লগার
অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্ ও ব্লগার
ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া
মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম