বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

পানের অপকারীতা ও বৈঞ্জানীক গবেষনা:-

পানের অপকারীতা  বৈঞ্জানীক গবেষনা:-

পানের সাথে তিল তিল করে  যে বিষ পাণ করা হচ্ছে সেটা আমরা কয়জনেইবা জানি!তাহলে আসুন জেনে নেই কি করে বা কি ভাবে আমরা পানের সাথে বিষ পাণ করি একটি সিগারেটের সাথে যেমন নিকেটিন দেওয়া থাকে আর পানের সাথেও তেমন আমরা নিকেটিন মিশিয়ে বিষ পাণ করি অর্থাৎ বিড়ি-সিগারেটের তামাক পুড়িয়ে পাণ করি আর পানের তামাক চিবিয়ে পুরো রসটাই পাণ করি।এ যেন ঠান্ডা মাথায় দেখে শুনে নিজের গলায় নিজে রশি দিয়ে ফাঁস দেওয়ার মত আবস্হা  নিকোটিন হেরোইনের চেয়েও ভয়াবহ। যদি আপনি ধূমপান করেনতবে মাত্র ৬ সেকেন্ডের মধ্যে তা আপনার মস্তিষ্কে পৌঁছে যাবেযা হেরোইনের চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুত কাজ করে।আর পানের সাথে 3মিনিটেই মস্তিসকে পৌঁছে যা্য়। যদিও পান আমাদের তেমন উপকারী খাদ্য না হলেও কিন্তু পান আমাদেরকে তিল তিল করে যে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।যা আজকাল বিভিন্ন গবেষনায় ফুটে উঠছে।সুপারী ও জর্দার সংমিশ্রনের পান ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় :-এখন পান সুপারী তামাক ও জর্দার মিশ্রনের বিভিন্ন ক্ষতিকারক দিক নিয়ে আলোচনা করব। এর আগে জেনে নেয়া যাক পান খাওয়র প্রকারবেদ ১. খালি পান কোন কিছুর সংমিশ্রন ব্যতিরেকে  2. পান আদা লবঙ্গ এলাচির ইত্যাদি মসল্লার সংমিশ্রন 3. পান চুন সুপারীর সংমিশ্রন  4 পান চুন সুপারী তামাক জর্দার সংমিশ্রন ১ম ও দ্বিতীয় স্বাস্হ্যের জন্য উপকারী ৩য় প্রকার সামান্য ক্ষতিকর হলেও ৪র্থ প্রকার মারা্ত্বক ক্ষতি এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বহন করে। আর এই পর্যন্ত যে সকল বৈজ্ঞানীক গবেষনা হয়েছে মূলত ৩য় ও ৪র্থ প্রকার নিয়েই তাহলে আসুন এবার আমরা ঐ সকল গবেষনায় কি বেরিয়ে আসছে জানার চেষ্টা করব।
(ক) আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা এজেন্সী'র মতে সুপারি ও পান ক্যান্সারজনক পদার্থ (কার্সিনোজেন) যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সুপারিসহ পান খেলে মুখ গহ্বরের ক্যান্সার হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছেসুপারি দিয়ে পান খেলে মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৯.৯ গুন (জর্দা সহ) এবং ৮.৪ গুন ( জর্দা ছাড়া)


(খ)২০০৪ সালেবিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার করা গবেষনা অনুযায়ী এশিয়ার দেশগুলোতে মুখগহবরের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশী। আক্রান্ত রোগীদের ইতিহাস নিয়ে দেখা গিয়েছে যে তাদের একটা বড় অংশ পান পাতা চিবানোতে অভ্যস্ত।
(গ) পানের সঙ্গে চুনার মিশ্রন :-ক্যান্সারের সঙ্গে চুনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছিলো অবশ্য অনেক আগেই-সেই ১৯৯২ সালেপাপুয়া নিউগিনিতে করা একটি গবেষনায়। পরবর্তীতে ২০০২ এবং ২০০৮ সালে করা দুটো পৃথক গবেষনায় প্রমাণিত হয় যে শুধুমাত্র জর্দা ও সুপারীও ক্যান্সার তৈরীতে সরাসরি অবদান রাখে  মোটামোটি সাম্প্রতিক২০০৯ সালে তাইওয়ানে করা একটি গবেষনায় প্রমাণ হয় যে শুধু ক্যন্সার নয়হৃদরোগের সঙ্গেও আছে পান সুপরী  চিবানোর সরাসরি সংযোগ।


(ঘ) ২০১০ সালে বিজ্ঞানীদের চমকে দিয়ে প্রমাণিত হয় যেপান খাওয়া লোকদের ক্যান্সার হওয়া শুধু মুখগহবরেই সীমাবদ্ধ নেইপান এমনকি গলবিলশ্বাসনালীযকৃৎঅগ্নাশয় ও ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার পিছনেও ভূমিকা রাখে। পান কিভাবে ক্যান্সার ঘটায় তা নিয়ে নানা মত আছে। কেউ বলেন পানে থাকা ট্যানিন ইএর জন্য দায়ীযদিও কি উপায়ে তা এখনো অজানা। আরেকদলের মতেপানের উপাদান সরাসরি কোষের ডিএনএর উপরে কাজ করে ক্যান্সার তৈরীতে ভূমিকা রাখে।আবার কেউ বলেনপানে থাকা চুন মুখের অভ্যন্তর কে ক্ষারীয় করে ফ্রি র্যাডিকেল তৈরীতে সহায়তা করে যা ক্যান্সার কোষ সৃষ্টির জন্য দায়ী।


(ঙ) অন্তত প্রায় ১০ বছর ধরে যাদের নিয়মিত ভাবে সুপারী চিবানোর অভ্যাস আছে তাদের চেহারাতেও আসে পরিবর্তন। গালের চর্বি ঝরে মুখ লম্বাটে হয় যায়ফিবরোসিস তৈরী উচ্চারনেও পরিবর্তন আসে। চেহারার এই ধরণের পরিবর্তনকে বলা হয় গুটকা সিন্ড্রোম(বাস্তবে আমি তা অনেককে দেখেছি যে পান খাওয়ার কারনে মুখ শক্ত হয় যাওয়ায় কথা বলতেও সমস্যা হয়েছে।পরক্ষনে মুখ ও জিহবা ভাল করে পরিস্কার করেই সরিষার তৈল মেখেই ভারী মুখ হালকা করেছেন)   পানের সঙ্গে বেশি খয়ের খেলে ফুসফুসে ইনফেকশান হয়। পানে বেশিমাত্রায় চুন খেলে দাঁতের ক্ষতি হয়। যাদের জ্বর এবং দাঁতের সমস্যায় ভোগেন তাদের পান খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত।তেমনি ভাবে হাঁপানী রুগিদেরও।  তাই শিশুরা এবং অন্তঃস্বত্ত্ব মহিলাদের পান খাওয়াও উচিত নয়। তবে যারা মাঝে মধ্যে  পান খেতে অভ্যস্হ তাদের বেলায় এমন মারাত্বক ক্ষতি ভয়ে আনবেনা আশা করা যায়।


(চ) অনেকে পানের সাথে পচা বা মজে যাওয়া সুপারি খেয়ে থাকেনযার গন্ধ প্রায়ই মানব বিষ্ঠার চেয়েও বেশি খারাপ। পান খাওয়া ব্যক্তি নিয়মিত এই দুর্গন্ধ-যুক্ত সামগ্রী খেয়ে অভ্যস্ত হওয়ার কারণে হয়তো গন্ধ উপলব্ধি করতে পারে না। কিন্তু যারা পান খায় নাতারা টের পায় যে গন্ধটি কতো জঘন্য।  রাসূল (সা.) বলেছেন যে, “তোমাদের মধ্যে কেউ যেনো দুর্গন্ধ যুক্ত সামগ্রী (যেমন: কাঁচা পিয়াজকাঁচা রসুন) খেয়ে মসজিদে প্রবেশ না করেযতক্ষণ পর্যন্ত সে দুর্গন্ধ মুক্ত না হয়। কিছু নামাযী  আছেন যারা তামাকদ্রব্য দিয়ে পান খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করার পর তাদের পাশে কেউ নামাজে দাঁড়ালে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় যে গন্ধ বের হয়তাতে পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির নি:শ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তেমনি ভাবে ধূমপায়ীদের মুখের দুর্গন্ধের ও একই দশা। এই জন্য নিতান্ত এমন অভ্যাস থাকলেও মসজিদে প্রবেশের পূর্বে বা জনসমাগম হয় এমন মজলিশে গমন পূর্বে আবশ্যই ব্রাশ বা মেসওয়াক দিয়ে দাঁত মুখ পরিস্কার করেই প্রবেশ করা অপরিহার্য। মুখের দূর্গন্ধ ঘামের দূর্গন্ধ তেমনি পাঁয়ের মুজার দূর্গন্ধ এগুলো অনেক বিরক্তি কর  আমার আপনার এমন কোন  কৃতকর্মের দ্বারা যেন কোন মুসলিম কষ্ট না পায় সে দিকে স্বজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রসুল সাঃ বলেন প্রকৃত মুসলিম ঐ ব্যক্তিযার হাত ও মুখ  হইতে অপর ব্যক্তি নিরাপদ থাকে।
(ছ)  চা বাগানে কিছু পোকা আছেযেগুলো বিষ প্রয়োগেও মরে নাসেগুলো তামাকের পাতা ভিজানো পানি দিয়ে নিধন করতে হয়। তাহলে সহজেই বুঝা যায় এ ক্ষেত্রে বিষের চেয়ে অধিক শক্তিশালি বিষাক্ত দ্রব্য হলো তামাক পাতা। সেই তামাক পাতাই আমাদের অনেকে গুল হিসাবে সরাসরি ব্যবহার করে আবার জর্দা হিসেবে পানের সাথে খেয়ে থাকে। যারা পানের সঙ্গে তামাক জাতীয় দ্রব্যাদি গ্রহণ করেনতাদের সাধারণের চেয়ে ৫ গুণ বেশি মুখে ক্যান্সার হওয়ার আশংকা থাকে। জর্দা বিষাক্ততাই এতে যতোই সুগন্ধি মেশানোই হোকনা কেনো তা জীবনের সৌরভ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনে।


(জ)  যখন আমরা কেউ পান খাওয়া শুরু করি তখন আগে একটু পান সুপারি আর একটু চূর্ন পরে আস্তে আস্তে এটা অভ্যাস হয়ে যায় তখন একটু করে জর্দ্দা নেওয়া শুরু করি  আর তা আস্তে আস্তে নেশায় পরিনত হতে শুরু করে তখন আর জর্দা তামাক ছাড়া পান ভাল লাগেনা কিন্তু এমনিতেই পানের উপকার আছে কিন্তু সেই উপকারী বস্তুটার সঙ্গে তামাকসাদা পাতা,পাতি জর্দা,নুরানী জর্দা,হাকীমপুরী জর্দা সহ আরও কত কি মিশ্রন করা হয়।এতে করে ঐ পানটা এক প্রকার বিষে পরিনত হয়।
তাহলে কি দাড়ালো একটু লক্ষ্য করে দেখুন আপনি পান খাওয়ার পরে আপনার জিব্বাহ এবং আপনার গোলাপী রংএর ঠোট দুটো কতটা লাল হয়েছে এটা শুধু চুন সুপারি আর পান খেলে এ অবস্থা আর তার সাথে যদি একটু জর্দা মিলিয়ে নেন তাহলে দেখবেন জিব্বাহ এবং গোলাপী রং এর ঠোট দুটো কত তা কালো হয়েছে তা একবার আয়নাতে পান খাওয়ার পর দেখলে বুঝতে পারবেনতামাক আর জর্দা দিয়ে পান খাওয়ার পর কি আবস্হা হয়।  



 পানের উপর বিভিন্ন গবেষনার ফলাফল পাঠকদের উদ্দ্যেশে সংক্ষিপ্ত আকারে যা তুলে ধরা হয়েছে এতে প্রতিয়মান হয় যেধূমপানকে আজকাল বিশেষজ্ঞ ওলামাগন যে কারনে হারাম হিসাবে ফতোয়া দিচ্ছেন প্রায় ঐ রকম স্বাস্হ ঝূঁকি তথা ক্যান্সার এর ঝূঁকি  জর্দা তামাক জাতীয় দ্রব্যের সংমিশ্রনে পান খাওয়ার মধ্যেও রয়েছে,এই জন্য অনেক বিশেষজ্ঞ গবেষক ওলামায়ে কেরাম জর্দা ও তামাক মিশ্রিত পান খাওয়াকেও হারাম বলেছেন। তাই এই নিয়ে  ওলামাদের এই নিয়ে আরও গবেষনার দাবী রাখে।যাতে করে জাতী হারাম-হালালকে পার্থক্য করে চলতে পারে।কারণ ধূমপানে তামাককে পুডিয়ে ধোঁয়াটাই নিচ্ছে আর পানের মাধ্যমে সরাসরি সেই তামককেই চিবানো হচ্ছে। পানের অনেক ভাল দিক আছে। কিন্তু খারাপ দিকগুলো ভালো দিকগুলোকে ছাপিয়ে যায়। পান খাওয়ার পরপরই একটু তারতম্য হলে মাথা ঘোরাঘাম ইত্যাদি বের হতে পারে। অনেক সময় হাঁপানিরক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এমনকি হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। হাঁপানী রুগিদের পান সুপারী একেবারেই অনুচিত। দীর্ঘদিনের অভ্যাসে দাঁত ও মাড়িতে বিশ্রী দাগ পড়ে। সাময়িকভাবে জিহ্বা পুরু হয়। ক্ষুধামন্দা হয়। জর্দার নিকোটিন নেশার উদ্রেক করে। এখানে সেখানে পানের পিক ফেলার কারণে পরিবেশ নোংরা হয়। ফলে পরিবেশ দূষিত হয়। সবকিছু ছাপিয়ে যে ব্যাপারটি আমাদের জন্য আতঙ্কের তা হলোপান-সুপারি জর্দা ইত্যাদি মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক ক্যান্সার রিসার্চ এজেন্সি পান-সুপারিকে মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে মনে করে।যা উপরে আলোকপাত করা হয়েছে। নিয়মিত পান খেলে মুখেজিহ্বায়গ্রাসনালিতে এবং পাকস্থলীতে ক্যান্সার হতে পারে। এই উপমহাদেশে মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ পান-সুপারি ওজর্দা। অতএব খারাপ দিকগুলো বিবেচনা করে তামাকদ্রব্য মিশ্রিত পান ও ধূমপানের  অভ্যাস পরিত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।আর যে সকল কারনে ধূমপানকে মাকরুহে তাহরিমী বা হারাম বিবেচনা করা হয় তেমনি তামাকও জর্দা মিশ্রত পান খেলেও ঠিক একই ধরনের সমস্যা তথা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় সেহেতু এটাও তেমনি হারাম। আল্লাহ আমাদের সহায় হউক আমিন।
ওয়া-ছাল্লাল্লাহ আলা সাইয়্যেদেনা মুহাম্মাদ ওয়া- আলা  আলিহি ওয়া-আছহাবিহী ওয়া-বারীক ওয়াছাল্লীম
       
লেখক :--  এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 

 প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী  মিরসরাই 

অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্  ও ব্লগার 

    ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া 

   মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম  


                            


বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫

কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ নিয়ে আহলে হাদীস ভাইদের অপব্যাখ্যার জবাব

কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ নিয়ে আহলে হাদীস ভাইদের অপব্যাখ্যার জবাব

 আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর লোক হাদীসের দোহাই দিয়ে সাধারন মানুষদের  এমন ভাবে বিভ্রান্ত করে পথভ্রষ্টের দিকে  নিয়ে যাচ্ছে।যা রীতিমত উদ্দ্যেগের বিষয়,হক্কানী ওলামায়ে কেরামকে  সর্বদা এর সমোচীত জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এদের  কাজ হলো , জনসাধানের অন্তরে প্রতিটি আমলের ব্যাপারে  সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয়া।অথচ সারা পৃথিবীতে সকলের কাছে যে আমলটি বা বাক্যটি গ্রহন যোগ্য একটি আমল,যা নিয়ে দেড হাজার বছরের মধ্যে কেউ কোন সন্দেহ পোষন বা মতানৈক্য করতে দেখা যায়নি এমন একটি গ্রহন যোগ্য আমল কে আজকে তারা শীর্কের তক্মা লাগাতেও দ্বীধাবোধ করছেনা।


 তারা তাদের মনগড়া ফতোয়ার  মাধ্যমে মানুষের ঈমান আমল সব বরবাদ করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।তাদের ভ্রান্ত ফাতওয়ার মধ্যে থেকে একটা হলো, যে কালিমায়ে তায়্যিবা তথা, ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ বলে কোটি কোটি মানুষ নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দেয়, যে কালিমা ছহিশুদ্ধ ও আত্ববিশ্বাসের সাথে তার হক্ব আদায় করে পাঠ করলে তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায় সেই কালিমায়ে তায়্যিবাহ ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ  একসাথে বলা , পড়া বা লিখা নাকী শির্কনাউযুবিল্লাহ তারা বলে থাকেন এটা নাকী আলেমদের বানানো!


তাদের দাবী হলো কালিমায়ে তায়্যিবা ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ এক সাথে বলা যাবে না। তাদের কথা অনুযায়ী কালিমা হলো শুধু  لا اله الا الله আর ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ কালিমার অংশ না। বরং যে ব্যক্তি এক সাথে কালিমা পড়বে সে ইমানদার না হয়ে মুশরিক হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ,  কত বড জগন্য মিথ্যাচার।


অথচ , আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বীদা হলো , এ কালিমা পড়া শুধু জায়েয না বরং কোন মানুষ ইমানদার হওয়ার জন্য এ কালিমা পড়া ফরযও বটে।এবং এ কালিমা যে পড়বে সে মুশরিক হবে না বরং তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যাবে।
এখানে   একটা কথা বলে রাখা দরকার  আহলে হাদিস দাবিদাররা শুধু মাত্র বোখারী মুসলিম তিরমিযি


-
আবুদাউদ নেসায়ীর গুটি কয়েক হাদীস মানে আর লক্ষ লক্ষ হাদীসের জখিরাকে তারা অস্বীকার করে  আর নিজেদের কে আহলে হাদীস দাবী করে যার করণে এদের এই দশা।অথচ  প্রসিদ্ধ ৬টি হাদিসের কিতাব ছাডাও অসংখ্য হাদিসের কিতাব রয়েছে যেখানে অসংখ্য ছহি হাদীসও রয়েছে কিন্তু তাদের কাছে সেই এলেম নেই ।ছেহাহ্ব ছিত্তার ৬টি হাদিসের কিতাবে যেমন ১- সহীহ বুখারী হাদীস সংখ্যা- ৭৩৯৭টি। ২- সহীহ মুসলিম হাদীস সংখ্যা-৪০০০টি। ৩- জামে আত তিরমিযী  হাদীস সংখ্যা-৩৮১২টি। ৪- সুনানে আবু দাউদ  হাদীস সংখ্যা-৪৮০০টি। ৫- সুনানে নাসায়ী  হাদীস সংখ্যা-৫৭৬১ টি ।৬- সুনানে ইবনে মাযাহ দীস সংখ্যা-৪৩৪৯টি। সর্বমোট ৩০১১৯ টি হাদিস রয়েছে
  অথচ নবী সাঃ এর  থেকে রেওয়ায়েতকৃত হাদিসের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষাধীক। তাই শুধু মাত্র ৩০১১৯টি হাদিসের উপর আমল করে আহলে হাদীস হওয়া যায়না    অথচ নবী সাঃ এর  থেকে রেওয়ায়েতকৃত হাদিসের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষাধীক।
 তাই শুধু মাত্র ৩০১১৯টি হাদিসের উপর আমল করে আহলে হাদীস হওয়া যায়না  বরং আহলে খবিস্ হওয়া যায় ।এবার দেখুন  ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ  পাঠকরার বৈধতার হাদিস 



১ম দলীল:-হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ) তার প্রসিদ্ধ কিতাব আল ইসাবা ফি তাময়িজিস সাহাবানামক গ্রন্থে বিশিষ্ট ইমাম ও মুহাদ্দিস ইমাম ইউনুস ইবনে বুকাইর (রহ) -এর কিতাব জিয়াদাতুল মাগাজি. -থেকে নুয়াইম আল গিফারি (রা:) এর জিবনীতে নিন্মক্ত হাদিসটি উল্যেখ করেন:
ﻧﻌﻴﻢ ﺍﻟﻐﻔﺎﺭﻱّ : ﺍﺑﻦ ﻋﻢ ﺃﺑﻲ ﺫﺭّ ﻟﻪ ﺻﺤﺒﺔ، ﺫﻛﺮﻩ ﻳﻮﻧﺲ ﺑﻦ ﺑﻜﻴﺮ ﻓﻲ ﺯﻳﺎﺩﺍﺕ ﺍﻟﻤﻐﺎﺯﻱ ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ، ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻳﻮﻧﺲ، ﻋﻦ ﻳﻮﺳﻒ ﺑﻦ ﺻﻬﻴﺐ، ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺑﻦ ﺑﺮﻳﺪﺓ، ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ، ﻗﺎﻝ : ﺍﻧﻄﻠﻖ ﺃﺑﻮ ﺫﺭ ﻭﻧﻌﻴﻢ ﺍﺑﻦ ﻋﻢ ﺃﺑﻲ ﺫﺭ، ﻭﺃﻧﺎ ﻣﻌﻬﻢ ﻳﻄﻠﺐ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪ
ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺁﻟﻪ ﻭﺳﻠّﻢ ﻭﻫﻮ ﻣﺴﺘﺘﺮ ﺑﺎﻟﺠﺒﻞ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺃﺑﻮ ﺫﺭ : ﻳﺎ ﻣﺤﻤﺪ، ﺃﺗﻴﻨﺎﻙ ﻟﻨﺴﻤﻊ ﻣﺎ ﺗﻘﻮﻝ، ﻗﺎﻝ : ﺃﻗﻮﻝ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ
ﺍﻟﻠَّﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪ، ﻓﺂﻣﻦ ﺑﻪ ﺃﺑﻮ ﺫﺭ ﻭﺻﺎﺣﺒﻪ
অর্থ, হযরত বুরাইদা (রা) বলেন- হযরত আবু জর(রা) ও তার চাচাত ভাই হযরত নুয়াইম আল গিফারি (রা) ও আমি একসাথে বের হলাম রাসুল (স) এর সন্ধানে। নবি(স) একটি পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করে ছিলেন। তখন হযরত আবু জর(রা) তাকে বললেন- হে মুহাম্মাদ, আমরা এসেছি তোমার কাছে তুমি কি বল তা শুনার জন্যে। তিনি (নবি (স)) বললেন আমি তো এটাই বলি, লা ইলাহা ইল্লাল্লহু মোহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ) এরপর হযরত আবু জর (রা) ও তার সাথিরা মান আনয়ন করলেন। (আল ইসবা ফি তাময়িজিস সাহাবা- ৬ খন্ড, ৩৮৫)
সনদ পর্যালোচনা।
এই হাদিসের রাবিদের সবাই গ্রহনযোগ্য।
১.ইউসুফ ইবনে সুহাইব ইবনে হাজার আসকালানি (রহ) বলেন তিনি সিকাহ (তাকরিবুত তাহজিব-৬৪২ পৃ:) ২.আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা ইবনে হাজার আসকালানি বলেন তিনি সিকাহ (তাকরিবুত তাহজিব -৩৩১ পৃ:) ৩.হজরত বুরাইদা (রা:)- তিনি সাহাবী আর সাহাবীদের ব্যাপারে মুহাদ্দিসে কেরাম কোন কালাম করেন নি। এই হাদিসটি যে সহিহ তাতে কোন সন্দেহ নেই।
এই হাদিসে স্পষ্টভাবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহএকসাথে এসেছে এবং নবী (স:) এই কালিমার দাওয়াত দিতেন তাও হাদিসে বর্নিত হয়েছে। সুতরাং যারা এই কালিমাকে অস্বিকার করে তারা যে নবী (স:) এর দাওয়াতকেই অস্বিকার করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।



২য় দলীল :- মুসলিম শরীফের একটি বাব (পরিচ্ছেদ) কায়েম করা হয়েছে স্বয়ং এই কালিমায়ে তায়্যিবাহর এই শব্দ গুলো দিয়েই  ।পরিচ্ছদের নাম , ﺑﺎﺏ ﺍﻻﻣﺮ ﺑﻘﺘﺎﻝ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺣﺘﻰ ﻳﻘﻮﻟﻮﺍ ﻻ ﺍﻟﻪ الا الله ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ অর্থাৎ, লোকদের সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ,যে পর্যন্ত না তারা লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ( ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ) বলে।  

(অর্থাৎ যতক্ষন পর্যন্ত তারা  লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ( ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ) এ কথা বলবেনা বা সাক্ষ্য দিবেনা ততক্ষন পর্যন্ত যুদ্ধ করবে। আর যখনি তারা এটাকে স্বীকার করবে ,বলবে বা পডবে  বা সাক্ষ্য দিবে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকবে।)

মুসলিম শরীফ ,ইসলামিয়া কুতুব খানা ঢাকা,বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত আরবী নুসখার ৩৭নং পৃষ্ঠার ৬নং পরিচ্ছেদের ৩২ নং হাদীস বাংলাদেশ ইসলামি সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত মুসলিম শরীফের বাংলা অনুবাদের প্রথম খন্ডের ১০৯ নং পৃষ্ঠার ৯নং অনুচ্ছেদ।




তৃতীয় দলিল:-

ﺭﻭﻯ ﺳﻴﺪﻧﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺁﻟﻪ ﻭﺳﻠﻢ ‏( ﻟﻤﺎ ﺍﻗﺘﺮﻑ ﺁﺩﻡ ﺍﻟﺨﻄﻴﺌﺔ ﻗﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺏ ﺃﺳﺄﻟك ﺑﺤﻖ ﻣﺤﻤﺪ ﺇﻻ ﻏﻔﺮﺕ ﻟﻲ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻳﺎ ﺁﺩﻡ ﻛﻴﻒ ﻋﺮﻓﺖ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﻭﻟﻢ ﺃﺧﻠﻘﻪ؟ ﻗﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺏ ﺇﻧﻚ ﻟﻤﺎ ﺧﻠﻘﺘﻨﻲ ﺭﻓﻌﺖ
ﺭﺃﺳﻲ ﻓﺮﺃﻳﺖ ﻋﻠﻲ ﻗﻮﺍﺋﻢ ﺍﻟﻌﺮﺵ ﻣﻜﺘﻮﺑﺎ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻌﻠﻤﺖ ﺃﻧﻚ ﻟﻢ ﺗﻀﻒ ﺇﻟﻰ ﺍﺳﻤﻚ ﺇﻻ ﺃﺣﺐ ﺍﻟﺨﻠﻖ ﺇﻟﻴﻚ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺻﺪﻗﺖ ﻳﺎ ﺁﺩﻡ ﺇﻧﻪ ﻷﺣﺐ ﺍﻟﺨﻠﻖ ﺇﻟﻰ ﻭﺇﺫ ﺳﺄﻟﺘﻨﻲ ﺑﺤﻘﻪ ﻓﻘﺪ ﻏﻔﺮﺕ ﻟﻚ ﻭﻟﻮ ﻻ ﻣﺤﻤﺪ ﻣﺎ ﺧﻠﻘﺘﻚ
অনুবাদঃ হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালামের নিকট তাঁর নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণের বিষয়টি ধরা পড়ল, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ, আমি মুহাম্মাদের ওয়াসীলা নিয়ে তোমার দরবারে ফরিয়াদ করছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও। অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম, তুমি মুহাম্মাদকে কীভাবে চিনলে, এখনো যাকে সৃষ্টি করি নাই?
তিনি বললেন, হে আল্লাহ, তুমি যখন আমাকে সৃষ্টি করেছিলে, আমি তখন আমার মাথা উঠিয়েছিলাম। তখন দেখতে পেয়েছিলাম, আরশের খুটিগুলোর উপর লেখা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সমগ্র সৃষ্টির মধ্য সবচেয়ে প্রিয় না হলে তুমি তাঁর নাম তোমার নামের সাথে মিলাতে না।
অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সে আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর যেহেতু তুমি তাঁর ওয়াসীলা নিয়ে আমার নিকট দোয়া করেছ, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।
আর(জেনে রাখ) মুহাম্মাদকে সৃষ্টি না করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।
(দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাকী ৫/৪৮৯, আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম-২/৬১৫ , আল মুজামুল আওসাত লিত তাবারানী- ৬৪৯৮)
যে সকল মুহাদ্দিসীন এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেনঃ
১-ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ। আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
২- ইমাম তকী উদ্দীন দামেশকী বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ। দাফউ শুবহাহঃ ১/৭২
৩-ইমাম কস্তলানী বলেন, হাদিসটি বিশুদ্ধ। মাওয়াহিবুল লাদুনিয়াহঃ ১/১৬
৪- ইমাম সামহুদী বলেন, হাদিসটি সহীহ। ওয়াফাউল ওয়াফাঃ২/৪১৯
৫- ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী বলেন, বিভিন্ন সনদে বর্ণিত এ হাদিসটি বিশুদ্ধ। আল খাসাইসঃ১/৮
৬- আহলে হাদীসদের মাথার মুকুট যাকে তারা তাদের ইমাম বলে থাকে (যদিও তিনি আমাদের মত মাযহাবী , তিনি ছিলেন হাম্বলী মাযেহাবের অনুসারী) সেই ইবনু তাইমিয়্যাহ এ হাদীসটি দলীল হিসাবে তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন। মাজমাউল ফাতাওয়াঃ২/১৫৯
সুতরাং প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণের এসব মন্তব্যের পর আর কোন সন্দেহ থাকল না যে, নিঃসন্দেহে বলা যায় হাদিসটি সহীহ। 




৪র্থ দলীল :-ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺣﻤﺸﺎﺩ ﺍﻟﻌﺪﻝ ﺍﻣﻼﺀ ﻫﺮﻭﻥ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺒﺎﺱ ﺍﻟﻬﺎﺷﻤﻲ ﺛﻨﺎ ﺟﻨﺪﻝ ﺑﻦ ﻭﺍﻟﻖ ﺛﻨﺎ ﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﺃﻭﺱ ﺍﻻﻧﺼﺎﺭﻱ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺍﺑﻲ ﻋﺮﻭﺑﺔ ﻋﻦ ﻗﺘﺎﺩﺓ ﻋﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﻤﺴﻴﺐ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﻭﺣﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻲ ﻋﻴﺴﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻳﺎ ﻋﻴﺴﻲ ﺍﻣﻦ ﺑﻤﺤﻤﺪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺍﻣﺮ ﻣﻦ ﺍﺩﺭﻛﻪ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻚ ﺍﻥ ﻳﺆﻣﻨﻮﺍ ﺑﻪ ﻓﻠﻮ ﻻ ﻣﺤﻤﺪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﺎ ﺧﻠﻘﺖ ﺍﺩﻡ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﻟﻮﻻ ﻣﺤﻤﺪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﺎ ﺧﻠﻘﺖ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻭﻟﻘﺪ ﺧﻠﻘﺖ ﺍﻟﻌﺮﺵ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻤﺎﺀ ﻓﻀﻄﺮﺏ ﻓﻜﺘﺒﺖ ﻋﻠﻴﻪ ” ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﺴﻜﻦ .
ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻻﺳﻨﺎﺩ
অর্থ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত , মহান আল্লাহ পাক   হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে ওহী করলেন,
হে হযরত ঈসা  আপনি মুহাম্মদের প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মতের মধ্যে উনাকে যারা পেতে চায় তাঁদের নির্দেশ করুন, তাঁরা যেন  তাঁর প্রতি ঈমান আনে। যদি মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না হতেন তবে আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করতাম না। যদি মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি না হতেন তবে জান্নাত এবং জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না। আর যখন আমি পানির উপর আরশ সৃষ্টি করলাম তখন তা টলমল করছিলো, যখনই আরশের মধ্যে     ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ     লিখে দেই তৎক্ষণাৎ আরশ স্থির হয়ে যায়। এই হাদীস শরীফের সনদ সহীহ।কিতাবু তাওয়ারীখিল মুতাক্বাদ্দিমীন- যিকরু আখবারী সাইয়্যিদুল মুরসালীন ওয়া খাতামুন নাব্যিয়িন মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব মুছতাফা ছলাওয়াতুল্লাহি আলাইহি ওয়া আলিহীত ত্বহীরিন ৪র্থ খন্ড ১৫৮৩ পৃষ্ঠা। লিখক আল মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাঈন লিল হাকীম নিসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি, মুখতাছারুল মুসতাদরাক ২য় খন্ড ১০৬৭ পৃষ্ঠা হাদীস নং-3




৫ম দলীল :- আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে উল্লেখ করেন-
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺷﺠﺮﺓ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻭﺭﻗﺔ ﺍﻻ ﻣﻜﺘﻮﺏ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ    
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জান্নাতের এমন কোন গাছ নেই যার পাতার মধ্যে ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮل الله ﻢ কালিমা লিখিত নেই। খাছায়েছুল কুবরা ১ম খন্ড ১৩ পৃষ্ঠা।




৬ষ্ট দলীল:- হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি আরো বর্ননা করেন,-
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﻜﺘﻮﺏ ﻋﻠﻲ ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
অর্থ: হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জান্নাতের দরজায় লিখা রয়েছে-ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ   খাছায়িছুল কুবরা ১ম খন্ড
উল্লিখিত নির্ভরযোগ্য হাদীস থেকে এ কথা প্রমানিত হলো কালিমায়ে তায়্যিবা হচ্ছে লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মাদুর রসূলাল্লাহ  ﻻ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
এবং কোন মানুষ ইমানদার হওয়ার জন্য এ কালিমা পড়া ফরয। এবং এ কালিমা যে পড়বে সে মুশরিক হবে না বরং তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যাবে। তবে  মুসলমান হওয়া বা ঈমান আনার  ক্ষেত্রে  কালিমায়ে  শাহাদাত যেমন  পাঠ করা হয়   যেমন اشهد ان لا اله الا الله واشهد ان محدمد رسول الله   তেমনি ভাবে কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ ও পাঠ করা হয়ে থাকে কারণ এর অর্থ বা সারমর্ম لااله الا الله محمد رسول الله  এর সারমর্ম ও প্রায় কাছাকাছি ওখানে শাব্দিক  ভাবে শাহাদাতের বর্ননা করা হয়েছে এখানে তা নেই কিন্তু উদ্দ্যেশ্য একই ।যে আল্লাহর ওয়াহদানিয়াতের সাক্ষ্য ও মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহর  সাঃ এর রেসালতের সাক্ষ্য বা স্বীকৃতি প্রধান ।এতে শীর্ক হবে কোন যুক্তিতে ?




৭তম দলীল :- এই  কালিমায়ে তাইয়্যেবাহর   لا اله الا الله ( লাইলাহা ইল্লাল্লাহ )  শব্দটি পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতের অংশ   অপর দিকে  محمد رسول الله  ও কোরআনের অন্য আর একটি আয়াতের অংশ যেমন محمد الرسول  الله اشداء على الكفار  সুতরাং কোরআনের প্রতিটি হরফ তেলাওয়াত করলে প্রত্যেক হরফে কমাজকম ১০ নেকী পাওয়া যাবে গুনাহ হওয়ারতো প্রশ্নই উঠেনা ।



৮ম দলীল:- এজমায়ে উম্মত  কারণ দীর্ঘ ১৫০০ শত বছরের ব্যবধানে অদ্যাবধী  পৃথিবীর কোনই মনিষী   لااله الا الله محمد رسول الله এই ব্যপারে  দ্বিমত পোষন করেননি   এর উপর  সমস্ত উম্মতের আমলি এজমা সাব্যস্হ হয়েছে  । কিন্তু  আজকে ১৫০০ শত বছর পর গর্তের  ইউউপোকার মত ডানা মেলে  কেউ যদি বলে এই কালিমাতে শীর্ক আছে পড়া যাবেনা  তাদেরকেই জাতি ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করবে।

9ম:-খাছায়িছুল কুবরা ১ম খন্ড   হাদীস নং- 5,  একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ননা রয়েছে
অর্থ: হযরত ইবনে আসাকির রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইবনে নাজ্জার রহমাতুল্লাহি আলাইহি  দু'জন স্বীয় ইতিহাসগ্রন্থে হযরত আবুল হাসান আলী ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাশীমি আররক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি  থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি ভারতবর্ষের কোন এক এলাকায় পৌঁছে একটি কালো রঙ্গের গোলাপ গাছ দেখলাম। এর অকটি ফুল অনেক বড়, যার রঙ কালো, সুগন্ধিময় এবং অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ছিলো। ঐ ফুলটির গায়ে সাদা হরফে লিখা ছিলো-
لا اله الا الله محمد رسول الله ابو بكر وعمر
আমি মনে মনে চিন্তা করলাম এবং আমার বিশ্বাস হলো নিশ্চয়ই এটা কারো কাজ হবে। তাই আমি অন্য একটি বন্ধ কলি খুলে দেখলাম। আশ্চর্যের বিষয় তাতেও এরূপ লিখা ছিলো। এধরনের গোলাপ গাছ সেখানে প্রচুর পরিমান ছিলো। " সুবহানাল্লাহ্ !দলীল-  ইবনে আসাকির, ইবনে নাজ্জার।




১০ম:-  হযরত আদম আঃ থেকে শুরু করেই যত গুলো নবী-রাসুল দুনিয়াতে আগমন করেছিলেন তাঁরা সকলেই তাওহীদের ব্যপারে এক ছিলেন।  যেমন আদম আঃ এর সময় তাওহিদের কালিমা ছিল "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ আদমু ছফিউল্লাহ " আবার নূহ আঃএর সময়"লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ নূহ্ রাসুলুল্লাহ " মুসা আঃ এর সময় "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুসা কালিমুল্লাহ" ঈসা আঃ এর সময় "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ঈসা রুহূল্লাহ" আমাদের প্রিয় নবী, খাতামুন নাবিয়্যিন ওয়াল-মুরছালীন ছাইয়্যেদেনা ওয়া হাবিবানা  মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সময় "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ"( সাঃ)তাহলে কথিত ভাইয়েরা মানুষকে কেন ধোকা দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত?কি তাদের উদ্দ্যেশ্য? সাধারণের এ ব্যাপারে আর কিছু বুঝার বাকী থাকলোনা।এখন প্রশ্ন হল দুনিয়ার সকল নবী-রসুলগন কি তাদের মতে উম্মতকে শীর্কের শিক্ষা দিয়েছেন ?নাউযুবিল্লাহ!


( 11) খাইবার যুদ্ধে হযরত আলী রাঃ এর হাতে যে পতাকা বা ঝান্ডা দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্ল্লাহ লেখা ছিল এক সাথে । হাদিসটি ছহি সনদে আবু হোরাইরাহ রাঃ হইত বর্ণিত।যে আহলে হাদিসের ভাইয়েরা সৌদি আরবের বিশিষ্ট ওলামাদের অনুকরণ করে থাকেন ঐ দেশের রাষ্ট্রিয় পতাকায় এক সাথে লেখা আছে "لااله الا الله محمد رسول الله "  তাহলে কি তারা একথা বলার দুঃসাহস দেখাবেন  যে সৌদি আরবও রাষ্ট্রিয় ভাবে শীর্কের প্রচার করছেন? সুতরাং এই শব্দটা কালিমাতুত তাওহীদ, কালিমাতুত শীর্ক না ।


উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য দলীলগুলো থেকে প্রমানিত হলো ইসলামের কালিম হচ্ছে " লা'ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলাল্লাহ
অথচ সালাফী  আহলে হাদীসরা  বলছে এধরনের কোন কালিমা শরীফ নাকি ইসলামে নাই। নাউযুবিল্লাহ !!
শুধু তাইনয়  তাদের সাথে তালমিলিয়ে আমাদের দেশের একটি বড দলের সমর্থিত একবক্তাও বলেছে কালিমা,লা'ইলাহা ইল্লাল্লাহু " এই বাক্যের পাশাপাশি "মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ  লিখা শিরক। নাউযুবিল্লাহ !!

অথচ উপরোক্ত আলোচনায়  দেখুন, স্পষ্ট ভাবেই এই দুইটা বাক্য সব খানেই পাশা পাশিই আছে॥ এবং হাদীসের  ইমামগনও পাশাপাশি ভাবে নিজেদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন। এত সহীহ দলীল থাকার পরও কিভাবে এরা বিরোধীতা করে ? হাদীস শরীফে আছে, আখেরী জামানায় কিছু মিথ্যাবাদী দাজ্জালের  বের হবে। এরা এমন সব কথা বলবে তোমরা শোন নাই তোমাদের বাপ দাদারাও শোনে নাই। " আল্লাহ সকলকে হেদায়েত দান করুন আমিন 

ওয়া-ছাল্লাল্লাহু আলা ছাইয়্যেদেনা মুহাম্মাদ ওয়া-আলা আলিহী ওয়া আছহাবিহী ওয়া-বারীক ওয়াছাল্লীম।
   


লেখক :--  এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 

 প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী  মিরসরাই 

অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্  ও ব্লগার 

    ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া 

   মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম