শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৯

ওয়াদা ভঙ্গের কারণে ৪ প্রকারের গুনাহ হয়ে থাকে

ওয়াদা ভঙ্গের কারণে ৪ প্রকারের গুনাহ হয়ে থাকে
                    এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
ওয়াদাহ বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলা ইসলামী সমাজ তথা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ তথা এবাদত অথচ এ ব্যাপারে আমরা একেবারেই উদাসীন।আমরা মুসলিম সমাজে বসবাস করি বটে জন্ম সূত্রে মুসলমান হয়েছি বটে যা অনেক বড নেয়ামত ও কিন্তু ইসলামী কৃষ্টিকালসার সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোন ধারণা না থাকার কারণে ইসলামী জীবনযাপন কি ভাবে করতে হয় সেই জ্ঞান না থাকার কারণে,জীবন চলার পথে ইসলামের বিধি বিধান তথা ছোট থেকে ছোট একটি কাজ ও কি ভাবে সম্পাদন করতে হয় সেই বিধান যে ইসলাম আমাদের দিয়েছে সেই ধারণা টুকুও আমাদের না থাকার কারণে আমাদের সমাজে যত সব অশান্তি আর বিশৃংখলা।অথচ ইসলামই আমাদের সব সমস্যার দিয়েছেন ।কিন্তু আমরা তা জানার ও চেষ্টা করিনা।
ওয়াদা পালন সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন:
 يَا
يُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ   
হে মুমিনগন! তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ করবেযে জিনিসটি সমাজের উন্নয়ন ঘটায় তা হচ্ছে সমাজের সবার উপর সবার আস্থা ভরসাআর এই আস্থার জন্ম হয় ওয়াদা তথা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ করার মাধ্যমে

 হাদিসে বলা হয়েছে, যে  অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ করে না তার ঈমান নেইসুতরাং ওয়াদা পূর্ণ করা হচ্ছে ঈমানের পরিচয়,ঈমানদারদের পরিচয়তবে মনে রাখতে হবে যে তার ঈমান নেই বলতে এর অর্থ এ নয় যেঐ ব্যক্তি কাফের, বরং তার কাছে ঈমান আছে বটে তার ঈমান দূর্বল বা অসম্পূর্ণ ঈমানের অধীকারী। তাই পূরনাঙ্গ ঈমানদার দাবী করতে হলে লেনদেন করাকালীন সময়ে আবশ্যই তাকে ওয়াদা পূর্নকারী হতে হবে।



ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি হলো: সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে পরস্পরের সাথে যে মৌখিক বা লিখিত চুক্তি বা অঙ্গীকার করা। ওয়াদা একটি আরবী শব্দ, “আহদ শব্দ হতে নির্গত। আভিধানিক অর্থ হচ্ছে: অঙ্গীকার, চুক্তি, প্রতিশ্রুতি, ওয়াদা, প্রতিজ্ঞা ইত্যাদি।

ইসলামী পরিভাষায়: কোনো লোকের সঙ্গে অপর কোনো ব্যক্তি অঙ্গীকার করলে বা কাউকে কোনো কথা দিলে তা পালন করার নাম ওয়াদা। সেটা যেমন ওয়াদাই ইউকনা কেন। এমনকি ২০/৫০ টাকার মোয়ামেলাই হউকনা কেন? 
জীবনে প্রতিনিয়ত চলার পথে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকি পেয়েও থাকি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা জঘন্য অপরাধ কথা জেনেশুনেও আমরা সজ্ঞানে অহরহ প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদাহ ভঙ্গ করে চলেছি

 প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা যেন আজকাল আমাদের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছেযেমন আপনি কারো সাথে যে কোন লেনদেন করতে গিয়ে বললেন যে ভাই আমি তোমাকে আগামী কাল বা এক সাপ্তহ পর বা অমুক তারিখ বা শনিবার/সোমবার জোহরের নামাজের পর বা বিকাল ৫টা বাজে কাজটা করে দেব বা সাক্ষাত করব অথবা তোমার পাওনা টাকাটা পরিশোধ করে দেবএকথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গে অলিখিত তথা মুখিক একটি ওয়াদাহ বা চুক্তি হয়ে গেল, এই ওয়াদাহ পালন করা বা রক্ষা করা আপনার/আমার উপর আবশ্যই আবশ্যই পালনীয় হয়ে গেল,তথা ওয়াজিব হয়ে গেল যা পূরণ না করলে আপনি গুনাহগার হবেনতাও ছোট খাটো কোন গুনাহ নয় বরং কবিরাহ গুনাহ।

ইসলাম এসব প্রতিশ্রুতি পালন করার জোরালো তাকিদ করেছে আল্লাহ ওয়াদা পালনকারীকে ভালোবাসেন প্রতিশ্রুতি পালন করা আল্লাহর তায়ালার একটা অন্যতম গুন রাসুল সাঃ ও তার জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে ওয়াদাহ পালনে ছিলেন বন্ধপরিকর।এবং হযরাত ছাহাবায়ে কেরাম তাবেয়ীন তবে তাবেয়ীন সহ সকল অলী আল্লাহরদের সেই সোনালী জীবনেও ছিল ওয়াদা পালনে কঠোরতা ।
1 আল্লাহ নিজে প্রতিশ্রুতি পালন সম্পর্কে আল কোরআনে ইরশাদ করেন : স্মরণ রাখিও যে, আল্লাহরই সত্বাধীন রহিয়াছে যাহা কিছু আসমান সমূহে এবং যমীনে আছে স্মরণ রাখিও যে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, কিন্তু অধিকাংশ লোক বিশ্বাস করে না (সূরা ইউনুস-৫৫)
2 আল কোরআনের অন্য এক জায়গায় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : মুমিনেরা তোমরা কেন বল যা তোমরা তা করনা?
 3 আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃন্য সে ব্যাক্তি, যে নিজে যা বলে কিন্তু সে তা করেনা (সুরা সফ-/) 4 প্রতিশ্রুতি পূরণ করার ক্ষমতা থাকা অবস্থায় এবং প্রতিশ্রুতি পালন করতে ধর্মীয় কোনো বাধা না থাকলে যেকোনো মূল্যে তা পূরণ করা ওয়াজিব বিশেষ কোনো যৌক্তিক কারণে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়লে, যাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তাকে বিনয়ের সাথে নিজের অপারগতা সম্পর্কে অবহিত করে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে কিন্তু তা নাকরে নির্ধারিত সময়ে ওয়াদা/প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করাতো দূরে থাক এ জন্য কোন অনুতপ্তও হতে দেখা যায়না।এমনকি সে যে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিল সেটার কোন গুরুত্বই নেই তার কাছে। অথচ কবিরাহ গুনাহর মত একটা জগন্য গুনাহ তার মাথায় চেপে বসলো।
এমতাবস্হায় কেউ যদি রাগান্তিত হয়ে মুনাফেক বা অন্য কোন ভাষায় তাকে গালমন্দো করা হয় তখন সে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠবে অথচ কাজটি যে একেবারেই অগ্রহনযোগ্য মুনাফিকীর কাজ সেটা তার জানা নেই।যদিও সরাসরি ঠুনকো অযুহাতে কাউকে মুনাফিক বা কাফের বলার অনূমতি ইসলাম দেয়না।
5 ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি পালন আমানতদারী মানুষের কল্যাণমুখী গুণগুলোর মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ তা সত্যবাদিতার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ
6  আল কুরআনে মহান রাব্বুল আলামীন প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তির পরিচয় গুণাবলীর কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেন: এবং যারা নিজেদের আমানত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে (সূরা মুমিনুন-)
7 নেক বান্দা নেক আমলের আলোচনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : এবং প্রতিশ্রুতি দিলে তারা পূর্ণ করে (সূরা বাকারা-১৭৭)
8  ইসলামে প্রতিশ্রুতি পালন বাধ্যতামূলক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন : এবং তোমরা প্রতিশ্রুতি পালন করবে, প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে তোমাদের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে (সূরা বনি ইসরাইল-৩৪)

প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা মুনাফিকের স্বভাব:
মুনাফেক্বী দুই প্রকারঃ . বড় মুনাফেক্বীঃ বড় মুনাফেক্বী হচ্ছে, বাইরে ঈমান প্রকাশ করা এবং ভিতরে কুফরী লুকিয়ে রাখা
. ছোট মুনাফেক্বীঃ ছোট মুনাফেক্বী হচ্ছে, ভিতরে কুফরী গোপন না রেখে অর্থাৎ মুসলিম হওয়ার পরও মুনাফেক্বদের চরিত্রের সাথে সাদৃশ্য রাখা যেমনঃ মিথ্যা বলা, কথায় কথায় গালীগালাজ করা ,ওয়াদা ভঙ্গ করা, আমানতের খেয়ানত করা
হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন : মুনাফিকের আলামত তিনটি :
. তারা অধিক পরিমাণে মিথ্যা কথা বলে,
. প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না
. এবং তাদের কাছে আমানত হিসেবে কোনো জিনিস গচ্ছিত রাখলে তা খেয়ানত করে (বুখারী মুসলিম)
অর্থাৎ তাদের মুখে এক অন্তরে আরেক নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, আবার ঘুষও খায়, দুর্নীতিও করে, অন্যের হক আদায় করে না ওয়াদা পালনে গডিমশি মুখে দাবি করে মুসলমান, কাজে দেখায় মুনাফেকি
 মুমিন বান্দাগন  যাকে-তাকে যখন-তখন প্রতিশ্রুতি দেন না, অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বুঝে শুনে ওয়াদাহ দিয়ে থাকেন।যদি দেন তাহলে যেকোনো মূল্যে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন ওয়াদা পালন করা আখলাকে হামীদা বা প্রশংসনীয় আচরণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, এটি ঈমানের একটি অঙ্গ ওয়াদা পালন করা মানে কথা দিয়ে কথা রাখা, যে লোক ওয়াদা পালন করে তাকে সবাই বিশ্বাস করে, ভালোবাসে, ওয়াদা পালন করলে আল্লাহ খুশি হন



প্রতিশ্রুতি, প্রতিজ্ঞা বা ওয়াদা পালন করা মানব জীবনের একটি মহত্তম গুণ সংসার জীবনে কঠিনতম কাজগুলোর মধ্যে প্রতিশ্রুতি রক্ষা, ওয়াদা পালন করা কঠিনতম সর্বোত্কৃষ্ট কাজ সংসার, সমাজ জীবনে যারা এই গুণের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন,তারাই মানুষের কাছে আদরণীয়,সম্মানিত ব্যক্তি মনে রাখতে হবে অপরের সাথে ওয়াদা করা, প্রতিশ্রুতি দেয়া, শপথ সংকল্প বা বিভিন্ন ধরনের চুক্তি এবং অঙ্গীকার পালন করা ঈমানের একটি অঙ্গ

যে কোন ধর্মে ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি পালনের গুরুত্ব অপরিসীম দুনিয়ার সবাই ওয়াদা পালনকারী ব্যাক্তিকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে থাকে তাকে সম্মান করে এবং মান্যও করে ইসলামেও এর ব্যাতিক্রম নয় ইসলামে ওয়াদার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশী ওয়াদা ভঙ্গকারীকে ইসলামে ভৎসনা করে, এমনকি ওয়াদা ভঙ্গকারীকে মুনাফিকের সাথে তুলনা করা হয়েছে

ওয়াদা ভঙ্গের পরিণাম সম্পর্কে হাদিসে আছে, কেয়ামতের দিন ওয়াদা ভঙ্গকারীর জন্য পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং বলা হবে এটি অমুকের ওয়াদা ভঙ্গের পতাকা। (বোখারি : ৫৮২৩)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'কেয়ামতের দিনে আমি তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাদী হবোতন্মধ্যে প্রথম ব্যক্তি হলো, যে আমাকে সাক্ষী রেখে ওয়াদা করে অতঃপর তা ভঙ্গ করে।' (বোখারি : ২১১৪)। ওয়াদা ভঙ্গের আরেকটি পরিণাম হলো আল্লাহর লানতপ্রাপ্তি এবং অন্তর শক্ত হয়ে যাওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, '(আর বনি ইসরাইলের) ওয়াদা ভঙ্গের কারণে আমি তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছি এবং তাদের অন্তরকে শক্ত করে দিয়েছি।' (সূরা মায়েদা : ১৩)।

ওয়াদাহ ভঙ্গের কারণে এক সাথে  ৪ প্রকারের গুনাহ হয়ে থাকে
প্রথমত= ওয়াদাহ ভঙ্গ করার কারনে মুনাফেকির আলামত সহ ওয়াদাহ ভঙ্গের গুনাহে গুনাহগার হচ্ছে।
দ্বীতিয়ত = ওয়াদাহ পূর্ণ করতে না পারার কারণে মিথ্যা কথা বলার গুনাহে গুনাহগার হচ্ছে ।
তৃতীয়ত= ওয়াদাহ পূর্ণ করতে না পারার কারণে উক্ত ব্যক্তির মনে কষ্ট দেয়ার গুনাহে গুনাহগার হচ্ছে। চতুর্থত = সে তার কৃত ওয়াদাহ পূর্ণ না করার কারণে যদি দ্বিতীয় ব্যক্তিও যদি কারো সাথে ওয়াদাহ ভঙ্গের কারণ হয়ে দাডায় সে ক্ষেত্রে ১ম ব্যক্তিই সেই গুনাহের গুনাহে গুনাহগার হবেন।
সুতরাং আমাদের সকলকে ওয়াদা পূর্ণ করার তাওফিক দান করুন আমিন।
প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে: যেমন স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত নির্ধারিত মোহরানার প্রতিশ্রুতি, পিতা-মাতা সন্তানের সাথে, ভাই ভাইয়ের সাথে, বোন বোনের সাথে, আত্মীয় আত্মীয়ের সাথে বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হওয়া সমাজে চলতে গিয়ে, অফিসে-আদালতে কাজকর্ম করতে গিয়ে লিখিত বা অলিখিত নানা রকম ওয়াদা বা অঙ্গীকার করতে হয় ব্যবসা-বাণিজ্য লেনদেন চলে বিশ্বাস প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে কোনো দেশের ভিসা গ্রহণ করা হলে সে দেশের আইনকানুন মানার জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় কোনো দেশে বসবাসকারীও কার্যত সে দেশের রাষ্ট্রীয় আইনকানুন মেনে চলার প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ নির্বাচনের সময় জয়ী হওয়ার জন্য নেতারা জনগণকে ভূরিভূরি ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন দেশপ্রেমিক সভা-সমিতিতে নানান প্রতিশ্রুতি দেন এভাবে জীবনের বহু ক্ষেত্রে মানুষ মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা পরবর্তীকালে পালন করার কথা আমরা খুব কমই ভাবি এসব প্রতিশ্রুতি পালন বা রক্ষা করা অপরিহার্য কর্তব্য প্রতিশ্রুতি পালন না করলে মনের স্বচ্ছতা কমে যায় সব চেষ্টা মেহনত ব্যর্থ হয় ঈমান নষ্ট হয় পরিবার, সমাজ রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা অশান্তি দেখা দেয় তা ছাড়া জেনেশুনে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা সম্পূর্ণ শিষ্টাচারের পরিপন্থী মিথ্যাচার ইসলামে যা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ বা হারাম
রাসূলে করীম (সা) বলেছেন : যে আমানত প্রত্যর্পণ করে না, তার ঈমান নেই আর যে ওয়াদা রক্ষা করে না তার কোনো ধর্মই নেইপ্রিয় বন্ধুগন দেখুন আর ভাবুন ইসলামে ওয়াদার গুরুত্ব কত আপরীসিম
 তাই যেসব প্রতিশ্রুতি পালন করা যাবে না বা পালনে সামর্থ নেই বা সন্দেহ আছে তখন সে সব মিথ্যা প্রতিশ্রুতি থেকে বিরত থাকা এবং কথায় কথায় প্রতিশ্রুতি দেয়ার ফ্যাশন থেকে নিজেকে রক্ষা করা উচিত ওয়াদা ভঙ্গ করা যে কত বড় অপরাধ তা যদি আমরা জানতাম তাহলে আমরা কখনো ওয়াদা ভঙ্গ করতাম নাআমরা মুসলিম জাতি হিসাবে আমরা আবশ্যই গর্বিত কিন্তু ইসলামের কর্ম কৃষ্টি কালসার সম্পর্কে অবগত নই। আসুন! আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ওয়াদা রক্ষা করার চর্চা করি। কখনো যদি মনে হয়, এ কথাটি আমার রাখা সম্ভব হবে না তাহলে তার কাছ থেকে বিনয়ের সঙ্গে সময় নিয়ে বলবে, ভাই আমাকে আরও কিছু সময় দিন। ইনশাআল্লাহ আপনার পাওনা পরিশোধ করব বা কাজটি সম্পন্ন করব। এটি হলো মুসলমানের চরিত্র। আর মুনাফিকের চরিত্র হলো পালিয়ে বেড়ানো, সময় মত না আসা, বা পরিশোধ না করা ,মোবাইল বন্ধ রাখা, আরেকজনকে দিয়ে মোবাইল রিসিভ করানো।বা বিভিন্ন বাহানা তৈরী করা। বারংবার ডেইট দেয়া ইত্যাদি
আফসোস মুসলমান সমাজে মুনাফেকি আচরণই বেশি হচ্ছে।আমরা মুসলমান বটে তবে মুসলমানিত্ব কি তা আমরা জানিনা বা জানার চেষ্টাও করিনা।
 হে আল্লাহ! আমাদের ক্ষমা করুন এবং ওয়াদা রক্ষাকারী হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

 আসুন আমরা ওয়াদা পালনের প্রতিজ্ঞা করি এই ওয়াদা পালনের মাধমে সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করি আল্লাহ আমাদের সেই তাওফীক দান করুন আমীন!
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগনি ইসলামি একাডেমী
কাটাছরা,মিরসরাই চট্টগ্রাম