হযরত আদম আঃ থেকে নূহ্ আঃ পর্যন্ত তৎকালীন পৃথিবীর সকল মানুষই মুসলিম ছিল, অর্থাৎ
এ ৫ জন যথাক্রমে ওয়াদ,সূয়া , ইয়াগুছ, ইয়াউক, ও নসর , এরা প্রকৃত পক্ষে সে জামানার মুত্তাকী পরহেজগার লোক বা সে জমানার অলী, সবাই এদের সন্মন করত , তাদের কৃত নছিহত শুনতো আমল করত,ভক্তরা সূদীর্ঘকাল পর্যন্ত তাদের পদান্ক অনূসরন করে সঠিক ও তাওহীদের উপর অটল ছিল কিন্তু তাদের সকলের এন্তেকালের পর শয়তান মানুষের রুপ ধারণ করে ভক্তদের কাছে এসে প্ররোচনার জাল আঁটল এভাবে যে,
ক, তোমরা যে সকল মহাপুরুষদের পদান্ক অনূসরন করছ তাদের ছবি এঁকে উপাসানলয়ে রেখে এবাদত করলে এবাদতে পূর্নতা লাভ করবে, মানুষবেশী শয়তানের পরামর্শে তাই করল, এভাবে অনেক দিন চলতে থাকে।
খ,পরবর্তীতে এদের মৃত্যুর পর অন্য প্রজন্মের কাছে অন্য আর একটি পন্দী আঁটল এভাবে যে, তোমাদের মুরুব্বীদের মূর্তী ভাষ্ককর্য তৈরী করে তোমাদের সামনে রেখে দাও তাহলে আল্লাহর এবাদতে একাগ্রতা ও পূর্নতা লাভ করবে, তারা শয়তানের ধোকা বুঝতে না পেরে প্রতিকৃতি উপাসনালয়ে রেখে এদের সৃতি জাগরীত করে এবাদতে বিশেষ পুলক অনূভব করতে লাগল,এ ভাবে অনেক দিন চলতে লাগল ৷
গ,তৃতীয় ধাপে এসে পরবর্তী বংশধরদেরএমন ভাবে প্ররোচনা করল যে মালায়ূন শয়তান কামীয়াব হল আর ভক্তরা পথভ্রষ্ট হয়ে ইতিহাসের সর্বনিন্ম আস্তাকূডে নিক্ষিপ্ত হলো ৷
শয়তান বল্ল যে তোমাদের পূর্ব পূরুষরাই শুধু মাত্র এসব মূর্তীর সন্মানই করেনী বরং এসকল মূর্তীরই এবাদত করেছে, তাদের আপদে বিপদে তাদের উসিলায় দোয়া করছে, তাদের কাঋে হাজত রাওয়া করছে
সুতরাং তোমরাও তোমাদের বাপ দাদার অনূসরন কল্পে এদেরই এবাদত কর,কাজেই শয়তানের পরামর্শে তাইই করল৷এ ভাবে পৃথিবীতে সর্ব প্রথম মূর্তি পূজার সূচনা হয়। মুলত
গুলো সর্বপ্রথম উপাশনায় ব্যবহারীত হয়নি বরং ভাষ্কার্য হিসাবে সন্মান প্রদর্শ ও পরে এবাদতে ধাবিত হয়।
এই মূর্তিগুলি পরবর্তীকালে আরবদের মধ্যেও চালু ছিল।
ওয়াদ ছিল ‘কালব’ গোত্রের দেবতা, ‘সুওয়া’ ‘হুযাইল’ গোত্রের, ‘ইয়াগুছ’ ‘মায্যাহ’ গোত্রের, ‘ইয়া‘উক’ ইয়ামেনের ‘হামদান’ গোত্রের এবং ‘নাসর’ ইয়ামেন অঞ্চলের ‘হিমইয়ার’ গোত্রের দেবতা ছিল। (ড. জামীল আব্দুল্লাহ আল-মিসরী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফি যামানির রাসূল ওয়াল খোলাফায়ির রাশেদীন, (মদীনা মুনওয়ারা : মাকতাবাতুদ দার, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ৩১।
[﴿ أَفَرَءَيۡتُمُ ٱللَّٰتَ وَٱلۡعُزَّىٰ ١٩ وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلۡأُخۡرَىٰٓ ٢٠ ﴾ [النجم: ١٩، ٢٠ “তোমরা কি ভেবে দেখছো ‘লাত’ ও ‘উয্যা’ সম্পর্কে এবং তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্পর্কে ? সূরা আন্ নাজম: ১৯-২০।
লাত: চারকোণ বিশিষ্ট একটি পাথরের মূর্তি, যার চতুষ্পার্শে আরবরা তাওয়াফ করতো। এটি তায়েফে স্থাপন করা হয়েছিল।
মানাত : কালো পাথরে নির্মিত মূর্তি, যা লোহিত সাগরের উপকূলে কোদাইদ এলাকার মুসাল্লাল নামক জায়গায় স্থাপন করা হয়েছিল। (প্রাগুক্ত)
উয্যা: উয্যা ছিল ‘আরাফাতের নিকটবর্তী ‘নাখলা’ নামক স্থানের মূর্তি। কুরাইশদের নিকট এ মূর্তিটি সর্বাধিক সম্মানিত ছিল।
ইসাফ’ ছিল কা‘বাঘর সংলগ্ন।
পৌত্তলিকরা বিভিন্নভাবে উল্লেখিত মূর্তির উপাসনা করত।যেমন:-
ক. তারা মূর্তির সামনে নিবেদিত চিত্তে বসে থাকত এবং তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করত। তাদেরকে জোরে জোরে ডাকত এবং প্রয়োজনপূরণ, মুশকিল আসান বা সমস্যার সমাধানের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করত।
খ. মূর্তিগুলোর উদ্দেশ্যে হজ্ব ও তওয়াফ করতো। তাদের সামনে অনুনয় বিনয় এবং সিজদায় উপনীত হতো।
গ. মূর্তির নামে নযর-নেওয়ায ও কুরবানী করত। এমর্মে কুরআনে এসেছে, “তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে সেসব জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নিয়ে যবাই করা হয়েছে,যদিও আজকাল কিছু ইতিহাস বিকৃতিকারী মূর্খপন্ডিতরা আমাদের দেশের পাঠ্যবইয়ে পর্যন্ত লেখতে দ্ধীধাবোধ করেননি যে দেবতাদের নামে উৎসর্গকৃত পশুর গোশ্ত হালাল।নাউযুবিল্লাহ।
ঘ. মূর্তির সন্তুষ্টি লাভের জন্য পানাহারের জিনিস, উৎপাদিত ফসল এবং চতুষ্পদ জন্তুর একাংশ মূর্তির জন্য তারা পৃথক করে রাখতো। পাশাপাশি আল্লাহর জন্যেও একটা অংশ রাখতো। পরে বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে আল্লাহর জন্য রাখা অংশ মূর্তির কাছে পেশ করতো। কিন্তু মূর্তির জন্য রাখা অংশ কোন অবস্থায়ই আল্লাহর কাছে পেশ করতো না। আল-কুরআন, সূরা আল-মায়িদা
=========
আরব জাতির অধিকাংশ গোত্র, বিশেষ করে খোজার বংশের অন্তর্গত গোত্রসমূহ এক অত্যন্ত নিম্নস্তরের জড়বাদের প্রতি আসক্ত ছিল। ইতর প্রাণী ও উদ্ভিদ দ্রুতগামী হরিণ, ঘোড়া, উট, খেজুরগাছ, পর্বত, পাথর ইত্যাদির মত অজৈব বস্তু প্রধান উপাস্য বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল।
(যেমন আজকাল আমাদের গুনেধরা সমাজের মুর্খরা মাজারের গজার মাছ,হরিণ,উট,কবুতর,ও নির্দিষ্ট গাছে সুতা,পুটলি বেঁধে বরকত ও মনোবাসনা পূরণের জন্য অনেকে নযর নেয়ায ওমান্নত করে থাকেন) অবশ্য এক সার্বভৌম ঐশী সত্ত্বার ধারণা অপরিজ্ঞাত ছিল না। কিন্তু তার প্রভাব অত্যন্ত নগন্য সংখ্যক লোকের মধ্যে সীমিত ছিল। এই লোকগুলি পৌত্তলিকতার মোহপাশ থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিবেশী সেবীয়, মূসা কিম্বা ঈসা আঃ এর শরীয়তের ও পার্থিব পৌরাণিক ধারণা দ্বারা রঞ্জিত দার্শনিক সংশয়বাদের আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক সর্বশক্তিমান আল্লাহর ধারণা স্পষ্ট স্বীকার করত এবং যুগের অশ্লীলতা ও স্থূল জড়বাদের বিরুদ্ধে অন্তরে বিদ্রোহ অনুভব করত।
পৌত্তলিক আরবদের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে ধারণা ব্যক্তি বা গোত্র ভেদে বিভিন্নরকম ছিল।
তৎকালীন জাহেলীযুগে আরবরা নিজেদের তৈরী বিভিন্ন রকম কূ-প্রথা ও কুসংস্কারের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল। তাদের অভ্যাস ছিল যে, শস্যক্ষেত্র, বাগান এবং ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে যা কিছু আয় হত; তার একাংশ আল্লাহর জন্যে এবং একাংশ উপাস্য দেবদেবীদের নামে পৃথক করে রাখত।(যেমনটি মাজার পন্থিরা করে থাকে) আল্লাহর নামের অংশ থেকে ফকির-মিসকীনকে দান করা হত এবং দেবদেবীর অংশ মন্দিরের পূজারী, সেবায়ত ও রক্ষকদের জন্যে ব্যয় করত।
প্রথমতঃ এটাই কম অবিচার ছিল না যে, যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ এবং সমুদয় উৎপন্ন ফসলও তিনিই দান করেছেন, কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত বস্তুসমূহের মধ্যে প্রতিমাদেরকে অংশীদার করা হত।যেমনটি আজকাল মাজারে করা হয় তদুপরি তারা আরও অবিচার করত এই যে, কখনও উৎপাদন কম হলে তারা কমের ভাগটি আল্লাহর অংশ থেকে কেটে নিত, অথচ মুখে বলতঃ আল্লাহ তো সম্পদশালী, অভাবমুক্ত-তিনি আমাদের সম্পদের মুখাপেক্ষী নন। এরপর প্রতিমাদের অংশ এবং নিজেদের ব্যাবহারের অংশ পুরোপুরি নিয়ে নিত। আবার কোনসময় এমন হত যে, প্রতিমাদের কিম্বা নিজেদের অংশ থেকে কোন বস্তু আল্লাহর অংশে পড়ে গেলে তা হিসাব ঠিক করার জন্যে সেখান থেকে তুলে নিত। পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর অংশ থেকে কোন বস্তু নিজেদের কিম্বা প্রতিমাদের অংশে পড়ে যেত, তবে তা সেখানেই থাকতে দিত এবং বলতঃ আল্লাহ অভাবমুক্ত; তাঁর অংশ কম হলেও ক্ষতি নেই।
এ সংক্রান্ত কোরআনের আয়াতসমূহ-আল্লাহ যেসব শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো থেকে তারা এক অংশ আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করে অতঃপর নিজ ধারণা অনুসারে বলে, এটা আল্লাহর এবং এটা আমাদের অংশীদারদের। অতঃপর যে অংশ তাদের অংশীদারদের, তা তো আল্লাহর দিকে পৌঁছে না এবং যা আল্লাহর তা তাদের উপাস্যদের দিকে পৌঁছে যায়। তাদের বিচার কতই না মন্দ।(৬:১৩৬)
(হিস্ট্রি অব আরবস -ফিলিপ কে হি্ট্টি। দি স্পিরিট অব ইসলাম -সৈয়দ আমীর আলী। এন্সিয়েন্ট মনার্কী –শিলথন)।
ঙ.যখন কোনো সফরের ইচ্ছা করত, তখন তারা বাহনে আরোহন করার সময় মূর্তি স্পর্শ করত। সফরে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে এটা ছিল তাদের শেষ কাজ এবং ফিরে এসেও ঘরে প্রবেশের পূর্বে এটা ছিল তাদের সর্বপ্রথম কাজ।বর্তমান আমাদের সমাজে বিকৃতমস্তিক্কধারী জাহেলরা বিদেশ ভ্রমন,বিবাহ,ব্যবসা,ও যে কোন শুভকাজ শুরু করেন মাযার যেয়ারতের মাধ্যমে শুরু করে থাকে,এগুলো শরিয়ত বহির্ভূতকাজ।এছাড়াও তারা বিভিন্ন মূর্তির নামে পশু মানত করতো।
পৃথিবীর প্রথম ও কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি :-
ইবনু আবী হাতেম-এর বর্ণনায় এসেছে যে, ‘ওয়াদ’ মূর্তিই ছিল এদের মধ্যে প্রথম এবং সর্বাধিক নেককার ব্যক্তি।যা একটু আগে বর্নণা করেছিলাম যে৫জন বিশষ্ট নেককারের কথা তন্মধ্যে প্রথমজন। তিনি মারা গেলে লোকেরা তার প্রতি ভক্তিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। শয়তান এই সুযোগ গ্রহণ করে এবং লোকদেরকে তার মূর্তি বানাতে প্ররোচনা দেয়। ফলে ওয়াদ-এর মূর্তিই হ’ল পৃথিবীর সর্বপ্রথম মূর্তি, আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার পূজা শুরু হয়’।আর মক্কা তথা কাবার প্রধান বা প্রথম মূর্তি হল "হুবাল" যা দিয়ে কাবা এবং তার আশে পাশে মূর্তি পূজা শুরু হয়।
মক্কা তথা কাবা শরীফে কি ভাবে মুর্তিপুজা শুরু হল তা ৬ষ্ট রত্ন অংশে বর্ননা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
অতএব পৃথিবীর প্রাচীনতম শিরক হ’ল নেককার মানুষের কবর অথবা তাদের প্রতিকৃতি বা মূর্তিপূজা। যা আজও প্রায় সকল ধর্মীয় সমাজে চালু আছে এবং বর্তমানে যা মুসলিম সমাজে স্থানপূজা, কবর পূজা, ছবি-প্রতিকৃতি, মিনার ও ভাষ্কর্য পূজায় রূপ নিয়েছে।উক্ত পাঁচটি মূর্তির মাহাত্ম্য ও তাদের প্রতি ভক্তি, লোকদের হৃদয়ে এমনভাবে প্রোথিত হয়েছিল যে, তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এবং পারস্পরিক চুক্তি সম্পাদনকালে তাদের নাম উল্লেখ করত। এতদ্ব্যতীত তারা নানাবিধ সামাজিক অনাচারে ডুবে গিয়েছিল। সম্প্রদায়ের এইরূপ পতন দশায় আল্লাহ তাদের হেদায়াতের জন্য নূহ্ (আ.)-কে রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেন {আ‘রাফ ৭/৬১}।
এর ফলে তখনকার সময় প্রায় সকল মানুষই মুর্তি পূজায় লিপ্ত হয়ে পথভ্রষ্টতার অতল গহবরে নিমজ্জিত হয়। এসকল মূর্তির কাছে মনোবসনা পূ্ন্যের কামনা করত,নজর-নেওয়াজ কোরবানী ইত্যাদী সব কিছুই করত ,যেমন আজকাল মাজার সমূহে হচ্ছে৷আল্লাহ আমাদের সমাজকে এসব শীর্ক থেকে হেফাজত করুক আমিন।
কেউ কেউ এ সকল মূর্তিকেই স্বয়ং খোদা মনে করতো, কেউ বা খোদাকে পাওয়ার মাধ্যম মনে করতো ৷
এ ভাবে যখন গোটা জাতিই শিরকে লিপ্ত হলো চতুর্রদিকে কূফরীর অন্ধকার চেয়ে গেছে ঠিক তেমনি সে মূহুর্তে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের হেদায়েতের জন্য হযরত নূহ আঃ কে রসুল হিসাবে প্রেরন করলেন ৷
কিন্তু তিনি ৯৫০ বৎসর পর্যন্ত দাওয়াতের কাজ করার পর মাএ ৪০জন বা ৪০ জোড়া মহিলা পুরুষ মিলে তাঁর ধর্ম গ্রহন করলেন।
অবশেষে তিনি ওহী মারফত জানতে পারলেন যে এজাতি আর হেদায়েত পাবেনা তখনি আল্লাহর হুকুমে তিনি তাদের ধবংসের জন্য দোয়া করলেন ,
এবং আল্লাহ তায়ালা মহাপ্লাবন দ্বারা সকল কাফেরদের ধবংস করে দিলেন ৷==এই ইতিহাস সকলেরই জানা আছে।
তেমনি ভাবেই আজকাল আমাদের দেশের স্বাথম্বেশী পেট পূজারী গূটি কয়েক ওলামায়েছুর ছএ ছায়ায় কবর কেন্দ্রিক লাল -সালু কাপড , মুমবাতি আগর বাতি জালিয়ে গডে তুলছে শীর্কের কারখনা , সেখানেই করা হচ্ছে ঈমান বিধংসী কর্মকান্ড ৷বর্তমানে আমাদের দেশে কবর কেন্দ্রীক যা করা হচ্ছে , পূর্বেকার যূগে ও প্রাথমীক ভাবেএমন কর্মকান্ড করা হতো যার ফলে গোটা জাতিকে কুফরের অন্ধকারে ধবংস হয়েছিল , এখনও অদূর ভবিষ্যতের এ দেশের আবস্হা এমন হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
এদেশের মূর্তি পূজকরা সাধারনত ৪ টি কাজ করে থাকে ,
[১] বাৎসরীক ২ টি বড় অনূষ্ঠান দূর্গাপূজা ও কালীপূজা এ ছাডা আরও ছোট ছোট অনূষ্ঠান ৷
[২] প্রতিমাদের সামনে প্রদীপ মূমবাতী আগরবাতী ইত্যাদী প্রজ্যলীত করন ৷
[৩] এদের নামে পশূ / পাঁঠা কোরবনী [বলী] দিয়ে থাকে ,
[৪] প্রতিমাদের সামনে মাথা নত ও সেজদা করে থাকে ৷
দুর্গার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র বলে, ‘আয়ুরারোগ্যং বিজয়ং দেহি দেবি নমস্তুতে। রূপং দেহি যশো দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে। পুত্রান দেহি ধনং দেহি সর্ব্বকামাংশ্চ দেহি মে।।’ (হে ভগবতী, আপনাকে প্রণাম করি, আপনি আমাকে রোগমুক্ত করুন, বিজয়ী করুন, যশ ও সৌভাগ্য প্রদান করুন, পুত্র ও ধন দিন এবং আমার সকল কামনা পূর্ণ করুন।)
বর্তমান মাজার পন্থীদের ও ৪ টি কাজ
[১] বাৎসরীক ওরস ও মিলাদ মাহফিলের নামে কত কিছু,
[২] কবরের সামনে মুমবাতি আগরবাতি প্রজ্জলন ,
[৩] পীরের / মাজারের নামে পশু কোরবানী /মান্নত করন ,
[৪] কবর ওয়ালার কাছে কিছু চাওয়া ,মনোবাসনা পূন্যের জন্য কবর কেন্দ্রিক দোয়া করা ,ক্ষেএ বিশেষ কবর কে সেজদা করা ইত্যাদি ৷
আর অনেক মাজার পন্থীরা মাজার/কবর /বা পীরের কাছে ধন সম্পত্তী /সন্তান /রোগমূক্তি/ সহ মনোবাসনা পূন্যের দোয়া করে থাকে,
পাঠক বৃন্দই পার্থক্য করুন প্রতিমাপূজক ও বর্তমান মাজার পূজারীদের মধ্যে কোন প্রাথক্য আছে কি ?
ইসলাম মানবজাতির জন্য হেদায়েতের আলো। মানুষের চিন্তা ও কর্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য এবং সকল ভ্রান্তি ও প্রান্তিকতা থেকে রক্ষা করার জন্য এই দ্বীন আল্লাহ তাআলা দান করেছেন। তাই একজন প্রকৃত মু’মিন যেমন মূর্খতা ও অবিশ্বাসের শিকার হতে পারেন না তেমনি অজ্ঞতা ও অন্ধ-বিশ্বাসেরও শিকার হন না। সকল প্রকার কুফর ও শীরক্ থেকে আল্লাহ তার চিন্তা ও কর্মকে রক্ষা করেন। কুফর শীর্ক হল মানব-সমাজের সবচেয়ে বড় কুসংস্কার। মানুষ এই কুসংস্কারের শিকার তখনই হয় যখন ইসলামের শিক্ষাকে ত্যাগ করে মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত মতবাদের অনুসরণ করে। পৃথিবীতে যত প্রকারের শীর্ক ও কুফর আছে সবগুলোর মূলে রয়েছে বিভিন্ন কাল্পনিক ও অবাস্তব ধারণা ও অতীভক্তি ।
এজন্য কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- فاجتنبوا الرجس من الأوثان واجتنبوا قول الزور ‘তোমরা অপবিত্রতা থেকে তথা মূর্তিসমূহ থেকে দূরে থাক। আর দূরে থাক মিথ্যাকথন থেকে।’-সূরা হজ্ব : ৩০-৩১
বস্তুত মিথ্যাই সকল পৌত্তলিকতার জনক। অতএব পৌত্তলিকতা থেকে মুক্ত থাকতে হলে মিথ্যার সকল ছিদ্রপথ বন্ধ করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা বস্তু কিংবা কোনো স্থান বা কাল সম্পর্কে ভিত্তিহীন বিশ্বাস পোষণ করার অবকাশ ইসলামে নেই। তদ্রূপ কল্পনাপ্রসূত ধারণার উপর ভিত্তি করে ভক্তি নিবেদনে সীমালঙ্ঘন করারও সুযোগ নেই। এ জাতীয় সকল ধারণা ও আচরণ ইসলামে নিষিদ্ধ। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা যেমন সত্যবিমুখ অবিশ্বাসীদের মর্মন্তদ পরিণাম ঘোষণা করেছেন তেমনি ধর্মের নামে ভিত্তিহীন কর্ম ও বিশ্বাস প্রচার কারীদেরকে ‘আল্লাহর উপর মিথ্যারোপকারী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।অতএব দু’টোই গোমরাহী ও সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য।
মাযারকেন্দ্রিক কার্যকলাপের তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট
মাযারকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে 4টি অনাচার হয়ে থাকে তার অধিকাংশই রিপুতাড়িত কর্মকাণ্ড যাপরিহার করতে হবে।
প্রথমত:- নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, গান-বাদ্য এবং মদ ও গাঁজা হচ্ছে মাযার কেন্দ্রিক মেলা ও ওরসের অন্যতম অনুষঙ্গ। এগুলোর তাত্ত্বিক সূত্র একটিই। তা হচ্ছে, নোংরামী ও রিপুর চাহিদা-পূরণ। এজন্য দেখা যায়, এইসব মাযার-ওরসে অংশ গ্রহণকারীদের সিংহভাগ হল সমাজের অশিক্ষিত ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন জনগোষ্ঠী।
যে কর্মগুলি সাধারণ আবস্হায় হারাম হলেও মাযারে তা হালাল হিসাবে গন্য করে থাকে জ্ঞানপাপিরা।
দ্বিতীয়:- অনাচার মাযারের সেবকদের বৈষয়িক ধান্দা। এরা মাযারে আগত নারী-পুরুষের দান-দক্ষিণা ও মান্নত-কোরবানী গ্রহণ করে এবং ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ ও আশীর্বাণী বিক্রি করে। বলাবাহুল্য, এখানে তত্ত্বের চেয়ে বৈষয়িক দিকটিই বড়।
তৃতীয়:- অনাচার হচ্ছে কুফর ও শিরক। মাযারপন্থী বা মাযারে আগত লোকেরা বিভিন্ন কুফরী ও শিরকী ধারণা পোষণ করে। যেমন মাযার বা মাযারে শায়িত ব্যক্তিকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মনে করা; হাজত-পূরণকারী, বালা-মুসীবত থেকে উদ্ধারকারী এবং মানুষের উপকার-অপকারের মালিক মনে করা ইত্যাদি। এসকল শিরকী বিশ্বাস থেকে তারা বিভিন্ন শিরকী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। যথা : মাযারের নামে মান্নত করা, মাযারে এসে সিজদা করা, পশু জবাই করা, মাযারওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে রোনাযারী করা এবং মাল-দৌলত, সন্তান-সন্ততি, সুস্থতা ও স্বচ্ছলতা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। এভাবে বিশ্বাসের শিরক, মানুষকে কর্মের শিরকের মাঝেও লিপ্ত করে দেয়।
চতুর্থ ও সর্বশেষ অনাচারটি হল:- কুরআন-সুন্নাহ এবং দ্বীন-শরীয়তের বিকৃতিসাধন। মাযার কেন্দ্রিক সকল গর্হিত কার্যকলাপের পক্ষে সামপ্রদায়িতাধর্মী জেদ ও হঠকারিতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একশ্রেণীর আলখেল্লাধারী গুরু বিভিন্ন অবাস্তব ধারণা প্রচার করে এবং নির্দ্বিধায় কোরআন-সুন্নাহর তাহরীফ ও অপব্যাখ্যা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাশুধু ‘অপব্যাখ্যা’ থাকে না; বরং জরুরিয়্যাতে দ্বীন বা দ্বীনের সর্বজনবিদিত আকীদা ও আমলকে অস্বীকার করা হয়।
মাজার বা কবরস্হানে যা করা যাবে:-
কবর-যিয়ারতের সাথে এসব অনাচারের কোনো সম্পর্ক নেই ইসলামে কবর যিয়ারতের বিধান আছে, কিন্তু' কবরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করার অবকাশ নেই। কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল, আখিরাতের স্মরণ জাগ্রত করা এবং কবরবাসীর জন্য দোয়া করা। হাদীস শরীফে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা যিয়ারত করতে পার। কারণ তা আখিরাত কে স্বরন করিয়ে দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২১২৭) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও তাঁর সাহাবীদের কবর যিয়ারত করেছেন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। কবর যিয়ারতেরও মাসাইল ও নিয়মকানুন আছে। সে মোতাবেক কবর যিয়ারত করলে তাহবে ছওয়াবের কাজ। পক্ষান্তরে কোনো কবরকে ‘মাযারে’ পরিণত করে বছর বছর নির্দিষ্ট স্থানে জমায়েত হওয়া এবং উৎসবে পরিণত করা সম্পূর্ণ হারাম। হাদীস শরীফে পরিষ্কার ভাষায় তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা নিজেদের ঘরকে কবর বানিও না। (অর্থাৎ কবরের মতো ইবাদত-বন্দেগী শূন্য করো না) এবং আমার কবরকে উৎসবের স্থান বানিও না। বরং আমার প্রতি দরূদ পড়। কেননা তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছবে।’-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২০৪০
তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবরকেই যখন উৎসবের স্থান বানানোর অবকাশ নেই তখন অন্যদের কথা তো বলাই বাহুল্য।
আমরা কিন্তু ওলী আল্লাহ বিরোধী না ,বরং আমাদের দেশ সহ সারা পৃথিবীর সত্যিকারের হক্কানী আলেম-ওলামা, পীর, মাশায়েখ, আউলিয়ায়ে কেরাম আমাদের মাথার মুকুট সমতূল্য সন্মানের পাত্র এতেকোন সন্দেহের অবকাশ নেই৷কারন হক্কানী ওলামায়ে কেরামরাই হলেন এ দ্বীনের ধারক বাহক, যাদের কে নবীর ওয়ারীস হিসাবে খেতাব্ দেয়া হয়েছে ৷তাদের কথা মানবো শুনবো ও আমল করবো তাদের লেখা বই পুস্তুক পডবো, ওয়াজ নছিহত শুনবো , এবং তাদের এন্তেকালের পর পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে তাদের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করবো ৷এবং সময় সূযোগ হলে তাদের কবর যেয়ারত করব ৷
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সব ধরনের গোমরাহী থেকে রক্ষা করুন এবং সঠিক পথে চলার তাওফীক দান করুন।