বুধবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১২

জান্নাতের সার্টিফিকেট দেওয়ার সাধ্য কারও নেই ;

 مولانا عبد الله نظامى
এ পৃথিবীতে জান্নাত প্রদানের অধিকার যদি কারও থাকত তাহলে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই এ অধিকার সবচেয়ে বেশি সংরক্ষণ করতেন। তিনি ছিলেন নবীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।




কিন্তু তিনি তো কাউকে জান্নাতের টিকেট দিয়ে যাননি। বরং তিনি তার কলিজার টুকরা হজরত ফাতেমা (রা.) কে ডেকে বলেছেন, হে ফাতেমা! আমার কাছে অর্থসম্পদ চাও, আমি আমার সাধ্যমতো তোমার দাবি পূরণ করব। আমি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী বলে তুমি আমার ওপর ভরসা করে বসে থেকো না। জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য তুমি আমল করে যাও। তোমার বদ আমলের কারণে যদি আল্লাহ পাক তোমাকে জাহান্নামের বাসিন্দা করেন শ্রেষ্ঠ নবী হয়েও আমি তোমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে পারব না। তুমি যদি দুনিয়া থেকে ইমান-আমল ঠিক করে আসতে পার, আর সামান্য ঠেকে যাও তাহলে অন্যান্য উম্মতের মতো আল্লাহর দরবারে তোমার জন্য সুপারিশ করতে পারব; এর চেয়ে বেশি কিছু করতে পারব না।







ফাতেমাকে মহব্বত :



হজরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত ফাতেমা (রা.) কে কেমন মহব্বত করতেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ থেকে কিছুটা অনুমান করা যায়। যেমন, রহমতে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথাও সফরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলে যাত্রার প্রারম্ভে অবশ্যই হজরত ফাতেমা (রা.) এর বাড়িতে গিয়ে দেখা করতেন এবং বলতেন, হে ফাতেমা! আমি অমুক স্থানে সফরে যাচ্ছি। আবার সফর থেকে ফেরার পথে নিজ বাড়িতে আসার আগে হজরত ফাতেমার বাড়িতে গিয়ে বলতেন, হে ফাতেমা আমি সফর থেকে ফিরে এসেছি।





কন্যা সন্তান মাতা-পিতার জন্য জান্নাত :



হাদিস শরিফে এসেছে, ‘কন্যা সন্তান হলো মাতা-পিতার জন্য জান্নাত, আর পুত্র সন্তান নে

য়ামত।’ অর্থাৎ ওই মাতা-পিতা আল্লাহ পাক যাদেরকে মেয়ে সন্তান দান করেছেন, অতপর তারা সেই মেয়েকে সঠিকভাবে প্রতিপালন করেছে এবং তার যাবতীয় হক আদায় করেছে।



মাতা-পিতার প্রতি মেয়ের দুটি হক রয়েছে :



১. দ্বীনি, ২. দুনিয়াবী।

দুনিয়াবী হক হলো_ মেয়ের সুস্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা। তার পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি খেয়াল রাখা।

আর দ্বীনি হক হলো_ তাকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করা, পর্দানশীন বানানো, স্বামীর মর্যাদা শিক্ষা দেওয়া, ধৈর্য-সহ্য শিক্ষা দেওয়া ইত্যাদি।



দ্বীনি শিক্ষা ব্যতীত তাদের উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান বানানো আদৌ সম্ভব নয়। মেয়ের পেছনে লাখ লাখ টাকা খরচ করে তাকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার পর সে যখন বড় হবে তখন তাকে অন্যত্র বিবাহ দিতে হবে, সে অন্যের ঘরে চলে যাবে, তখন পিতা-মাতা হবে তার দুইনম্বর আপন, আর স্বামী হবে এক নম্বর আপন;

এ বিষয়গুলো বুঝেও যেসব পিতা-মাতা তাদের মেয়েদের পেছনে নিঃস্বার্থভাবে মেধা, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাদের হজরত ফাতেমা (রা.) এর মতো চরিত্রবান করে গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালান, সেসব পিতা-মাতার জন্যই তাদের মেয়েরা জান্নাত প্রাপ্তির উছিলা হবে। হাদিসে এ কথাটিই বলা হয়েছে, মেয়ে হলো মাতা-পিতার জন্য জান্নাত।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন