রবিবার, ৩ জুন, ২০১২

কুরআন-হাদীছের আলোকে শবে বরাত - পর্ব ০0৬


 মুফতী মীযানুর রহমান সাঈদ

কুরআনের দৃষ্টিতে লাইলাতুল বারাআত - ৩

এ মহাগ্রন্থের ২৫ তম পারা ও ৪৪ নং সূরা “ দুখানের ” শুরুতে যে পাঁচটি আয়াত রয়েছে সে আয়াতগুলোই লাইলাতুল বারাআত বিষয়ক আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। তাই আয়াতগুলো প্রথমে অর্থসহ পেশ করা হচ্ছে।

حم وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ ۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ أَمْرًا مِّنْ عِندِنَا ۚ إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ

“ হা মীম (এ অক্ষরদুটি হরূফে মুকাত্ত্যিয়াত বা বিকর্তিত বর্ণ যার অর্থ আল্লাহই ভাল জানেন) শপথ প্রকাশ্য কিতাবের। নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক জ্ঞানপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে আমিই প্রেরণকারী। ”

( সূরা দুখানঃ ১-৫ )

আয়াতে উল্লেখিত ليلة مباركة লাইলাতুম মুবারাকাহ (বরকতময় রাত) শব্দের ব্যাখ্যা বা তাফসীরকে কেন্দ্র করেই “ কুরআনের দৃষ্টিতে লাইলাতুল বারাআত ” শীর্ষক আলোচনার সূত্রপাত।

আমরা এর আগের দুটি পর্বে বিশ্ববিখ্যাত ও সর্বজননন্দিত ছয়টি তাফসীর গ্রন্থ যথা তাফসীরে কাবীর, তাফসীরে রুহুল মাআনী, তাফসীরে রুহুল বায়ান, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে তবরী, তাফসীরে বগবী প্রভৃতি থেকে এ আয়াত সমূহের তাফসীর আলোকপাত করেছিলাম এবং মুফাসসিরে কেরা্মের এক জামাআত এর তাফসীরে শবে ক্বদরের পাশাপাশি শবে বরাতও করেছিলেন, তার প্রমাণও উল্লেখ করেছিলাম।

এই পর্বে আমরা আরও দুটি যুগ প্রসিদ্ধ ও সর্বজনগ্রাহ্য কিছু তাফসীর গ্রন্থের উদ্ধৃতি পেশ করব ইনশাল্লাহ।

সপ্তম তাফসীরগ্রন্থ তাফসীরে খাযেন

ইমাম খাযেন (রহঃ) তার তাফসীর গ্রন্থে লাইলাতুম মুবারাকাহ এর সম্পর্কে উল্লেখ করেনঃ

“ হযরত ইবনে জায়েদ (রহঃ) বলেনঃ লাইলাতুমমুবারাকাহ তা হলো শবে ক্বদর। অন্যান্য তাফসীরকারক বলেছেনঃ রাতটি মধ্য শাবানের রাত। এবং হযরত ইকরামা (রঃ) বলেন রাতটি মধ্য-শাবানের রাত যেখানে পূর্ণ বৎসরের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ের ফয়সালা হয় এবং জীবিত ব্যক্তিদেরকে মৃত ব্যক্তিদের থেকে পৃথক করা হয়। ”

( তাফসীরে খাযেনঃ খ – ৪, পৃ – ১৪৩ )

অষ্টম তাফসীরগ্রন্থ তাফসীরে ইবনে কাছীর

ইমাম ইবনে কাছীর (রহঃ) তার স্বীয় গ্রন্থ তাফসীরে কুরআনুল আযীমে উল্লেখ করেছেনঃ

“ বরকতময় রাত বলতে শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে। যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আমি কুরআনে করীম শবে ক্বদরে নাযিল করেছি এবং কুরআন রমজান মাসেই নাযিল করেছি।
আর যারা বলেন, বরকতময় রাত বলতে মধ্য শা’বানের রাতকে বুঝানো হয়েছে – যেমনটি ইকরামাহ কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে – তাদের কথা সত্য থেকে বহু দূরে এবং যে হাদীছটি উছমান ইবনে আখনাস থেকে বর্ণিত অর্থাৎ “ এক শাবান মাস হতে অন্য শাবান মাস পর্যন্ত মানুষের হায়াত মাউত ও রিযিকের বার্ষিক ফয়সালা হয়ে থাকে এমনকি কোন লোক বিবাহ করে এবং বাচ্চাও জন্ম গ্রহণ করে অথচ সে জানে না তার নাম মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে। ” এ হাদীছটি মুরসাল (অর্থাৎ হাদীছটিতে রসূল (সঃ) থেকে বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ নেই।) এ ধরণের হাদীছ দ্বারা সহীহ হাদীছকে খন্ডন করা যায় না। ”

( তাফসীরে ইবনে কাছীরঃ খ – ৪, পৃ – ১৪৮ )

ইবনে কাছীরের মন্তব্যের পর্যালোচনা

উল্লেখ্য, ইমাম ইবনে কাছীর তাঁর উপরোক্ত বক্তব্যে বরকতময় রাতের ব্যাখ্যা যাঁরা মধ্য-শাবানের রাত দিয়ে করেছেন তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করে তাঁদের মতটিকে সঠিক থেকে দূরে বলে মন্তব্য করেছেন মাত্র। অতঃপর এদের দলীল সম্পর্কে যে উক্তি পেশ করেছেন (অর্থাৎ হাদীছটি মুরসাল) এর দ্বারা দলীলটি অগ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রমাণ বহন করে না। কেননা হাদীছ বিশারদগণ ভাল করেই জানেন যে, অনেক ফক্বীহ ও হাদীছের ইমামগণের নিকট মুরসাল হাদীছ গ্রহণযোগ্য। আমাদের মাযহাবের ইমাম ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)ও এদের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং হাদীছটির ব্যাপারে ইবনু কাছীরের এ মন্তব্য কতটুকু সঠিক, তা আমরা “ শবে বরাত হাদীছের আলোকে ” শীর্ষক শিরোনামে সবিস্তারে পর্যালোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

মোটকথা

এ পর্যন্ত যে সব তাফসীর গ্রন্থের উদ্ধৃতি পেশ করা হলো, তাতে ليلة مباركة লাইলাতুমমুবারাকাহ শব্দের প্রথম মর্মার্থ তথা শবে ক্বদর এর পাশাপাশি দ্বিতীয় মর্মার্থ তথা শবে বরাত সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হল। এতে প্রমাণিত হয় যে, অধিকাংশ তাফসীরবিশারদের মতে ليلة مباركة লাইলাতুমমুবারাকাহ শব্দের ব্যাখ্যা যেমনিভাবে ‘ শবে ক্বদর ’ (যা রমজান মাসেই অবস্থিত) হতে পারে অনুরূপভাবে ‘ শবে বরাত ’ও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে শবে ক্বদর দিয়ে ব্যাখ্যা করা অধিক গ্রহণযোগ্য। এ ব্যাপারে মুফাসসিরে কুরআনের তেমন দ্বিমত নেই হেতু তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে তাবারী ইত্যাদি গ্রন্থে ক্বদরের মতটিকে জোরালো ভাষায় পেশ করা হয়েছে। যা ইতিপূর্বে আমরা আলোচনা করেছি। এ মতটি তাফসীরে আদওয়াউল বয়ানে আল্লামা মুহাম্মদ আমীন শীনক্বীতী এবং তাফসীরে মাআরিফুল কুরআনে আল্লামা মুফতী শফী সাহেব (রহঃ)ও বর্ণনা করেছেন।

ليلة مباركة লাইলাতুমমুবারাকাহ এর অর্থ যে শবেবরাতও হতে পারে এবং যা আয়াতের আরেকটি প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাও বটে তা কিন্তু কেউই অস্বীকার করেন নি। বরং সম্ভাব্য ও প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যা হিসেবে সকলেই তা উল্লেখ করেছেন।


সুতরাং কেউ যদি ليلة مباركة লাইলাতুমমুবারাকাহ এর অর্থ শবে বরাত দিয়ে করাকে ভ্রান্ত তাফসীর বলে মত পোষণ করেন পক্ষান্তরে সে সকল মুফাসসিরের তাফসীরকে যে উপেক্ষা করলো বা ভ্রান্ত বলল – এতে যেমন কোন সন্দেহ নেই, তেমনিভাবে ইসলামী বিধানশাস্ত্র সম্পর্কে সে যে অজ্ঞ তাতেও সন্দেহের অবকাশ নেই।

তাই আমাদের বক্তব্য হলো – যদি কেউ উপরোক্ত তাফসীর গ্রন্থসমূহের আলোকে সূরা দুখানে উদ্ধৃত ليلة مباركة লাইলাতুমমুবারাকাহ এর তাফসীর শবে বরাত দ্বারা করেন, তাহলে এ ব্যাখ্যা কোনক্রমেই বাতিল বা ভ্রান্ত বলার সুযোগ নেই। বরং এদের মতকেও শ্রদ্ধার সাথে মূল্যায়ন করা ঈমানী কর্তব্য।

তবে হ্যাঁ ليلة مباركة লাইলাতুমমুবারাকাহ এর এধরণের বিরোধপূর্ণ তাফসীরদ্বয়ের মধ্যে কোন মীমাংসা পাওয়া যায় কি না অথবা কোন্‌ তাফসীর অধিক গ্রহণযোগ্য – এ নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হতে পারে। প্রথম মতটি অধিক গ্রহণযোগ্য বলা হলে তাতে কোন আপত্তি থাকবে না, যেমন বিভিন্ন তাফসীরে কুরআনের অন্যান্য আয়াত ও হাদীছের কিছু বিবরণের সাহায্যে এরূপই বলা হয়েছে।

ليلة مباركة লাইলাতুম মুবারাকাহ এর তাফসীরের মাঝে বিরোধের মীমাংসা

লাইলাতুম মুবারাকাহ – এর ব্যাখ্যা নিয়ে দুই দল মুফাসসির এর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তার কারণ ও সমাধান পেশ করার পূর্বে তাফসীর নিয়ে কিছু মৌলিক কথা পেশ করা জরুরী মনে করছি। তা নিম্নরূপঃ

তাফসীরের মাঝে বিরোধ মীমাংসার নীতিমালা

ক) আল্লাহ পাকের মহাগ্রন্থ কুরআনের তাফসীর বা ব্যাখ্যা করার মহা দায়িত্ব যাঁরা পালন করেছেন তাঁরা সকলেই আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই করেছেন এটা সকল মুসলমানের মেনে নিতে হবে। কেননা যাঁরা এ লক্ষ্যে তাফসীর করেননি তাঁদেরকে ‘ মুফাসসির ’ বলার অবকাশ কোথায় ? বরং তাদের তাফসীরকেতো ভ্রান্ত তাফসীর বা “ তাফসির বির রায় ” বলতে হবে। যা উম্মতের জন্য গোমরাহীর কারণ। এখানে লাইলাতুম মুবারাকাহর ব্যাপারে আল্লামা সিরাজীর মতটিকে কিছুক্ষণের জন্য বাদ দিলে যে দু’ধরণের তাফসীর পরিলক্ষিত হয়, উভয় দলের মুফাসসিরগণ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই যে তাফসীর পেশ করেছেন এতে কোন হক্বপন্থী ঈমানদারের দ্বিমত থাকার অবকাশ নেই।

কেননা যেসব মুফাসসির লাইলাতুম মুবারাকাহর ব্যাখ্যা লাইলাতুল ক্বদর দিয়ে করেছেন, তাফসীরের মূল সূত্র تفسير القرآن بالقرآن (কুরআনের অন্যান্য আয়াত ও হাদীছের কিছু বিবরণ দ্বারা তাফসীর) ধরেই করেছেন।

আবার যারা উক্ত শব্দ দ্বারা লাইলাতুল বারাআত তথা ১৫ই শাবানের রাতকে সাব্যস্ত করেছেন তা তাফসীরের দ্বিতীয় মূল সূত্র تفسير القرآن بالا حاديث النبوية (হাদীছের আলোকেই) করেছেন।

এখানে প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে দু’দলের মধ্যে মতভেদ হলো কেন ? এর সংক্ষিপ্ত জবাব হলো, আল্লাহ ও রসূলের বাণী কুরআন ও হাদীছের মধ্যে বহু জায়গায় শব্দ ও বাক্যের মধ্যে অর্থের দিক দিয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে তথা একাধিক অর্থের অবকাশ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নবীজীর সাহাবাগণের মধ্যে এ জাতীয় আয়াত বা হাদীছের তাফসীর ও ব্যাখ্যা নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। একই কারণে মুজতাহিদ ইমামগণের মধ্যেও মতভেদ দেখা দিয়ে চার মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। তাই আলোচ্য আয়াতের তাফসীরে যে দু’টি মত দেখা দিয়েছে তার কারণও ‘ লাইলাতুম মুবারাকাহ ’ শব্দের মধ্যে অস্পষ্টতা বিদ্যমান থাকায় এবং এর ব্যাখ্যায় হাদীছের বর্ণনাও একাধিক হওয়ায়। তবে একথা সর্বজন স্বীকৃত যে, এ ধরণের মতভেদ উম্মতের জন্য কখনও অকল্যাণকর নয় এবং হতেও পারে না। বরং সকল মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে যে কোন একটি মত মেনে নেয়াই উম্মতের ঈমানী দায়িত্ব।

(ধরুণ, একটি বিষয় নিয়ে দুই মতের সহীহ হাদীস পাওয়া গেছে। প্রথম মতের হাদীসও নবী করীম (সঃ) থেকে পাওয়া গেছে, অর্থাৎ তিনি নিজেই এই মতটি উল্লেখ করেছেন। আবার দ্বিতীয় মতের হাদীসও নবী করীম (সঃ) থেকে পাওয়া গেছে, অর্থাৎ তিনিও নিজেই এই মতটি উল্লেখ করেছেন। এখন এখান থেকে যে কোন একটি মতকে অস্বীকার করা মানে হল, নবী করীম (সঃ) এর মতকে অস্বীকার করা। তাই তাফসীর বিশারদগণ, মুফাসসিরে কেরাম, মুহাদ্দিসগণ, সমস্ত উলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত হয়েছেন, কোন বিষয় নিয়ে মতভেদ দেখা দিলে এবং উভয় পক্ষে যদি সঠিক দলীল প্রমাণ থাকে, তাহলে এর কোন একটিকে ভুল বা ভ্রান্ত বলা যাবে না; বরং সকল মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে যে কোন একটি মত মেনে নেয়াই উম্মতের ঈমানী দায়িত্ব। )

খ) ইসলামী শরীয়তের মূল ভিত্তি চার টি।

১। কুরআন
২। হাদীছ
৩। ইজমা
৪। ক্বিয়াস

এসব মিলেই শরীয়ত। মুসলমানের জন্য এগুলো আবশ্যকভাবে পুরোটাই মেনে চলা জরুরী। সুতরাং কোন বিষয়বস্তু (যেমন এখানের আলোচ্য বিষয় শবে বরাত) সরাসরি কুরআনে না পাওয়া গেলেও এ মন্তব্য করা ঠিক হবে না যে, শরীয়তে তার কোন অস্তিত্ব নেই। বরং তাকে দেখতে হবে কুরআনের সঠিক তাফসীর – যা হাদীছ ও সাহাবাগণের বাণী সম্বলিত – সে বিশাল তাফসীর-ভান্ডারের দিকে। আর এ কথা পূর্বে উদ্ধৃত হয়েছে যে, হাদীছের বর্ণনাকারীগণের কিছু কিছু বর্ণনা অনেক কারণে এক রকম হয় না বিধায় তাফসীরে দ্বিমত থাকা স্বাভাবিক। সুতরাং সকল মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

গ) মতভেদপূর্ণ তাফসীরের উপর আমল করার নীতি মালার ব্যাপারেও জ্ঞান ধারণা থাকা আবশ্যকীয় যা নিম্নে প্রদত্ত হলো।

মতবিরোধপূর্ণ আয়াত ও হাদীছের মধ্যে সর্বোত্তম পন্থা হলো, উভয়ের মধ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়ে মতবিরোধ মীমাংসার পথ অবলম্বন করে আমল করা। যাকে উসূলের কিতাবে ( تطبيق ) তাতবীক বলা হয়।

আর তা সম্ভবপর না হলে যে মতটি দলীলের দিক থেকে মজবুত বা শক্তিশালী তার উপর আমল করা, যাকে উসূলের ভাষায় ( ترجيح ) তারজীহ বলা হয়।

এটাও সম্ভব না হলে অর্থাৎ উভয় মত সমমানসম্পন্ন দলীল দ্বারা প্রমাণিত হলে তখন একটিকে منسوخ বা রহিত অপরটিকে ( ناسخ ) নাসেখ বলে সাব্যস্ত করা। যেটি ( ناسخ ) নাসেখ বলে সাব্যস্ত হবে তারই উপর আমল করতে হয়।

এ কথাগুলো ভালভাবে অনুধাবন করতঃ পরবর্তী পর্বে লাইলাতুম মুবারাকাহের বিরোধ মীমাংসার দিকে সামান্য আলোকপাত করা হবে ইনশাল্লাহ।

শেষ কথাঃ

তাফসীরের নীতিমালাকে অস্বীকার করে নিজে নিজেই মুফাসসির হয়ে গিয়ে কেউ মনগড়া তাফসীর করলে, সেই তাফসীর পরিত্যাজ্য বলে পরিগণিত হবে। ঠিক তেমনি উসূলে হাদীসের নীতিমালাকে অগ্রাহ্য করে নিজে নিজেই মুহাদ্দদিস হয়ে গিয়ে কেউ যদি হাদীস সম্পর্কে মত প্রদান করে, সেই মতও ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।

আর যারা শবে বরাত সম্পর্কে কোন সহীহ হাদীস নেই বলে মিথ্যাচার করে, তাদের সামনে শুধু পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতই পেশ করছি-

لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ

মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর অভিশম্পাত। {সূরা আলে ইমরান-৬১}

( চলবে ইনশাল্লাহ )

( পরবর্তী পর্বঃ কুরআনের দৃষ্টিতে লাইলাতুল বারাআত - ৪ )
http://sonarbangladesh.com/blog/Tarek000/112796 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন