শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১২

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে 01

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে

মেহেদী হাসান
তারিখ: ৩০ ডিসেম্বর, ২০১২
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ইস্যুতে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে। স্কাইপ কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর এই বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক আরো বেড়েছে। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার পক্ষ থেকে বিচারের স্বচ্ছতা, আন্তর্জাতিক মানের অভাব এবং রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
বিচারের শুরু থেকে ১৯৭৩ সালের আইন এবং বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে আসছেন আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক বিশ্বের প্রভাবশালী বিভিন্ন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইন বিশেষজ্ঞরা। ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপ কথোপকথন ফাঁসের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশ এ বিচার নিয়ে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারকে উদ্দেশ করে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। ন্যাটো জোটভুক্ত দেশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুলের চিঠি নিয়ে ইতোমধ্যে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিচারকে কেন্দ্র করে আরো অনেক প্রভাবশালী মুসলিম দেশের সাথে বাংলাদেশের তিক্ত সম্পর্ক সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে। সম্প্রতি সুদান ও সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত মুসলিম বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং ইসলামিক স্কলারদের সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
৪১ বছর আগে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রতি তীè নজর ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশ, সংস্থা ও ব্যক্তিদের। স্কাইপ কেলেঙ্কারির ফলে এখন গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে এ বিচার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই বিচারপ্রক্রিয়ার খবর যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পাচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার ফলে এক দিকে যেমন সরকার দেশের অভ্যন্তরে এ বিচার নিয়ে নাজুক অবস্থায় পড়েছে, তেমনি বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, ইসলামপন্থীদের দমনের লক্ষ্যে সরকার এ বিচারের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশে এভাবে ইসলামপন্থীদের দমন অব্যাহত থাকলে মুসলিম দেশ হিসেবে তারা চুপ করে থাকতে পারে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
তুরস্কের সাথে সম্পর্কের অবনতি : ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধ বিচার ইস্যুতে প্রভাবশালী দেশ তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। যুদ্ধাপরাধ বিচার নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। ঢাকাস্থ তুরস্কের দূতাবাসের পক্ষ থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর আবদুল্লাহ গুলের চিঠি পৌঁছে দেয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এরপর সে চিঠি রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ডিসেম্বর বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। আবদুল্লাহ গুলের চিঠিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল আখ্যায়িত করে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অসন্তোষের কথা জানিয়ে দেয়া হয় তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে। এর পাল্টা জবাব হিসেবে পরের দিন বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে তুরস্ক সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয় তাকে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তার চিঠিতে বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়ার কারণে অর্থাৎ শীর্ষ ইসলামপন্থী নেতাদের শাস্তি দেয়া হলে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থসামাজিক অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে সামাজিক অস্থিতিশীলতা ও রক্তপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো ক্ষুণœ হতে পারে।
বিচার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা ছাড়াও তুরস্ক থেকে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হয় যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়ার জন্য। গত ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা সফর করেন তারা। তুরস্ক প্রতিনিধিদলের সফর নিয়েও দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এ দিকে সরকারের সমর্থনপুষ্ট সংগঠন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) তুরস্কের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিষোদগারমূলক অপপ্রচারে নেমেছে। বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ও বাণিজ্যের অংশীদার দেশটির ক্ষমতাসীন দল ও প্রেসিডেন্টকে মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী দলের সাথে যুক্ত বলে মন্তব্য করা হয়েছে। সরকারসমর্থক সংগঠনের এ ধরনের ঢালাও মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরো অবনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
তুরস্ক ছাড়াও মরক্কো, লিবিয়া, মিসর, তিউনিসিয়াসহ অনেক দেশের সরকারি নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিরোধী নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের এ বিচার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে রাজপথে কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে এ বিচার বন্ধের দাবি জানিয়ে। জাতিসঙ্ঘ ও ওআইসিকে এ বিচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার হুঁশিয়ারি : গত ১২ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পবিত্র মক্কা নগরীতে আন্তর্জাতিক ফিকাহ বোর্ডের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশে আলেম ও ধর্মীয় নেতাদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতন বন্ধ এবং কারারুদ্ধ ইসলামি চিন্তাবিদ ও নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শায়খ। ফিকাহ বোর্ডের ২১তম এই বোর্ড সভা উদ্বোধন করেন মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালেদ আল ফয়সাল। সভায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য যেসব চেষ্টা চালানো হচ্ছে, তাতে দেশটি মুসলিম উম্মাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর থেকে সুদানের রাজধানী খার্তুমে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিম বিশ্বের ১৫০টি দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও ইসলাম বিশেষজ্ঞরা এতে অংশ নেন। সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এক বিভীষিকাময় সময় পার করছেন। এ সময় মুসলিম উম্মাহ নীরব থাকতে পারে না। তারা বাংলাদেশ সরকারকে দমন-পীড়ন পরিহার করার আহ্বান জানান। এই সম্মেলন থেকেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যদি এভাবে ইসলামপন্থীদের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত থাকে, তবে বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। ইসলামপন্থীদের ওপর সরকারের দমন-নির্যাতন বন্ধ না হলে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিবাদ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয় সম্মেলনে।
ইসলামিক মুভমেন্ট অব সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. আলী ওসমান সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সুদানের প্রেসিডেন্ট ড. ওমর আল বশির। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইখওয়ানুল মুসলিমিনের মুর্শিদে আম ড. মোহাম্মদ বদিই। অন্যান্যের মধ্যে তিউনিসিয়া বিপ্লবের নায়ক ইসলামি চিন্তাবিদ রশিদ আল ঘানুসি, তুরস্কের ড. একমেলেদ্দিন, পাকিস্তান জামায়াতের আমির মুনাওয়ার হাসান প্রমুখ।
মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিসর, জর্ডান, সিরিয়া, তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কয়েত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অধ্যাপক গোলাম আযমসহ অন্য নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।
লিবিয়ার সংসদে ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া মরক্কোসহ বিভিন্ন দেশের ইসলামপন্থী দলের পক্ষ থেকে সেসব দেশের সরকারের প্রতি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী নেতা তিউনিসিয়ায় শুরু হওয়া আরব বসন্তের নেপথ্য নায়ক রশিদ আল ঘানুশি বাংলাদেশের এ বিচার বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের জন্য গণভোট আয়োজনের আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রতি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের চাপ : লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিশ্বখ্যাত সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বিচার শুরুর পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে অভিযোগ করেছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের জন্য এ বিচারের আয়োজন করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বন্দী নেতাদের কে কোন দলের, সে পরিচয়ও নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেছে ইকোনমিস্ট। বেশ কয়েকবার একই অভিযোগ করা হয়েছে সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা সৌদি গেজেটে। এ ছাড়া গালফ নিউজসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরো অনেক প্রভাশালী দৈনিকে এ বিচারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। দ্য ইকোনমিস্ট স্কাইপ সংলাপ বিষয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে সম্পূর্ণ বিচার আবার শুরুর প্রয়োজন হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত সর্বাধিক প্রচারিত দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে গত ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে এই বলে যে, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাজনৈতিক হস্তপে নিয়ে বাংলাদেশ সরকারবিরোধী দল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে। ট্রাইব্যুনালকে নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিচারপ্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিচার পথচ্যুত হতে পারে এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হতে পারে।
ট্রাইব্যুনালের প্রথম মামলা তথা জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায় চলতি মাসে হওয়ার কথা থাকলেও হস্তেেপর অভিযোগের পর এখন এ মামলা নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ওয়াদা করেছিল তারা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শেষ করবে। কিন্তু বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে, বিচারপ্রক্রিয়াকে সরকার রাজনীতিকীকরণ করেছে। যে ১০ জনের বিচার হচ্ছে, তাদের প্রায় সবাই বিএনপির মিত্র ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল জামায়াতের নেতা।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘ট্রাইব্যুনাল পপাতদুষ্ট বলে সরকারবিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তি হলো যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক ও বেলজিয়াম প্রবাসী আইনজীবী আহমেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘ কথোপকথন। গত আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে অনুষ্ঠিত ছয়টি কথোপকথনের অনুলিপি পর্যালোচনা করে দেখেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। তাদের কেউই এই কথোপকথনের নির্ভুলতা নিয়ে মন্তব্য করেননি।’
প্রায় একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাধর্মী সাময়িকী ফরেন পলিসিতে। এ ছাড়া হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে বিচারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও মাওলানা সাঈদীর সাক্ষী সুখরঞ্জন বালী গুম হওয়ার বিষয় নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
স্কাইপ সংলাপ ফাঁসের পর বিশ্বের বিভিন্ন অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীরাও আন্দোলনে নেমেছেন। ট্রাইব্যুনাল ভেঙে দেয়ার দাবিতে তারা কোয়ালিশন অব বাংলাদেশ আমেরিকা অ্যাসোসিয়েশন নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতর ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সামনে বিােভ করেছেন। বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বান কি মুনের বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। একই দাবিতে কোয়ালিশন নিউ ইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মাধ্যমে সরকারের কাছেও স্মারকলিপি দেয়।
ব্রিটেনের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ব্যারন অ্যাভেবারি (এরিক লুবক) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়া আবার নতুন করে শুরু করার আহ্বান জানান। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চক এবং পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস গ্রুপের সদস্য লর্ড অ্যাভেবারি বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম নতুন করে শুরুর ব্যাপারে চাপ দিতে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের এগিয়ে আসা উচিত। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়শনের বক্তব্য নেয়ার আহ্বান জানান। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র‌্যাপ বিচারের স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করেছিলেন। সেসব সুপারিশ বিচারিক কার্যক্রমে গ্রহণ করা হয়নি।

http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=77933


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন