সোমবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে [2013 ]আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী

হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী
জাতির আবেগ-অনুভূতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাস্তিক ও ইসলামের দুশমনরা তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করে ইসলামের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে
---------------------------------------------------------------------------------------------
উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীন দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল-জামিয়াতুল আহ্লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহ্ফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার) লক্ষাধিক মুসল্লীর অংশগ্রহণে আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে জামিয়ার মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, শীর্ষ আলেম, পীরে কামেল আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী বলেছেন, উলামা-মাশায়েখ, দাড়ি-টুপিধারী ও নামাযীদের বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী ইসলামের দুশমনরা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় হিংসাত্মক আক্রমণ ও ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে এ দেশকে ইরাক ও আফগানিস্তানের পরিণতি ভোগ করানোর এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলাম, মুসলমান, উলামা-মাশায়েখ ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রই এদেশের জনসাধারণ বরদাশত করবে না। জাতির আবেগ-অনুভূতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাস্তিক ও ইসলামের দুশমনরা তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করে ইসলামের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে এবং দেশব্যাপী বেহায়াপনা, উলঙ্গপনা, ব্যভিচার ছড়িয়ে দিয়ে মুসলমানদের ঈমান-আমল ও সভ্যতা-সংস্কৃতিকে ধ্বংসে নতুন আরেক ষড়যন্ত্র শুরু করছে। কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ করা হবে না মর্মে বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার শুরু থেকেই ইসলাম বিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। যারা দ্বীন ঈমানের হেফাজতের কথা বলছে, তাদের নির্দয়, নির্মমভাবে দমন করা হচ্ছে। জেল-জুলুম ও ফাঁসির ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার হাজার বার হোক, তাতে আমাদের কোন আপত্তি নেই, কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে আলেম সমাজ, মাদ্রাসা, দাড়ি-টুপি, পর্দা তথা দ্বীন-ইসলামের বিরুদ্ধে যে কোন ষড়যন্ত্রে এদেশের আলেম সমাজ ও তৌহিদী জনতা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। তিনি সরকারের প্রতি অবিলম্বে ইসলাম, মুসলমান, নামাযী, দাড়ি-টুপীধারীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত সকল অপতৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানান।
আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ সর্বত্র ইসলামকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। আমাদের অনৈক্য আর নিজ ধর্মের মধ্যে কতিপয় গোমরাহ ও ধর্মবিরোধীর কারণেই বিধর্মীরা সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এবং চিহ্নিত নাস্তিকরা যেভাবে একের পর এক ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার মূলক আঘাত হানার প্রয়াস এবং দাড়ি-টুপীধারী পুরুষ ও পর্দানশীন নারীদের উপর হামলা চালানোর মত বর্বরতা ও দুঃসাহস দেখাচ্ছে, তাতে কোন মুসলমানই উদ্বিগ্ন না হয়ে পারে না।
আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী আত্মশুদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, তাক্বওয়া তথা খোদা ভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অপরদিকে আল্লাহ্র ভয় মানুষের অন্তরে না থাকার ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কারো পক্ষে শরীয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা, অনাচার-ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়া, জুলুম-অত্যাচারে লিপ্ত হওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, খোদাভীতির অপর নাম তাক্বওয়া, আর এই তাক্বওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে দেশে-বিদেশে মুসলমানগণ নানাভাবে পর্যুদস্ত ও নির্যাতিত হচ্ছে। মুসলমানদেরকে এই দুর্দশা থেকে রেহাই পেতে পূর্ণাঙ্গ তাক্বওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানী শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। তিনি সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলমানদেরকে এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী আরো বলেন, ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোন স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোন হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না। আর ইসলামী শিক্ষায়ও কোন প্রকার সন্ত্রাসের স্থান নেই। অথচ দেশে বিদেশে আজ ইসলাম ও মুসলমানদেরকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ ধর্ম পালন করলে, ধর্মীয় তৎপরতা চালালে এবং তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কেউ অংশ নিলে কেউ মৌলবাদী, প্রগতি বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী হয় না। অথচ নামায আদায় ও দাড়ি-টুপী পরলে অথবা ইসলাম ধর্মীয় কোন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিলেই প্রগতি বিরোধী, দেশ বিরোধী ও মৌলবাদীর রং লাগানো হয়।
তিনি বলেন, নৈতিকতা ও সততার অভাবে দেশ আজ দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। এমতাবস্থায় সুশাসন ও সুনাগরিক তৈরীর জন্য শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মকে বাধ্যতামূলক করা দরকার। ধর্মহীন শিক্ষানীতি প্রণীত হওয়ার ফলে নতুন প্রজন্ম ইসলামের ভাবাদর্শ থেকে ছিটকে পড়ে নৈতিক ও চারিত্রিক অধঃপতনের দিকে দ্রুত ধাবিত হয়ে পড়ছে। যার কুফল ইতিমধ্যেই আমরা অবলোকন করতে শুরু করেছি। সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, খুনখারাবি, ধর্ষণ-ব্যভিচার বিরামহীনভাবে বাড়ছে। আল্লামা শাহ্্ আহমদ শফী তার বয়ানের এক পর্যায়ে উপস্থিত মুসল্লীদেরকে সম্বোধন করে বলেন যে, আপনারা আমার মুখে মুখে বলুন- চুরি করব না, ডাকাতি করব না, ঘুষ খাব না, বোমাবাজি করব না, ব্যভিচার-ধর্ষণ করব না, সন্ত্রাস-রাহাজানি করব না, কাউকে হত্যা করব না, কারো প্রতি জুলুম অত্যাচার করব না, কারো সম্পদ অত্মসাত করব না ইত্যাদি। তিনি এ পর্যায়ে শ্রোতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এরপরও কি আমাদেরকে সন্ত্রাসী, বোমাবাজি বলবেন?
গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারী) শুক্রবার অনুষ্ঠিত হাটহাজারী মাদ্রাসার দস্তারবন্দী ও বার্ষিক ইসলামী সম্মেলনে আরো যেসব ইসলামী নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, মাওলানা মোস্তফা আল-হোসাইনী, মুফতী নূর আহমদ, মুফতী আব্দুচ্ছালাম চাটগামী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ্্ বাবুনগরী, মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা আব্দুল মালেক হালিম, মাওলানা মুহাম্মদ নোমান মেখলী, মাহমুদুল হাসান ফতেপুরী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা লোকমান, মুফতী জসীম উদ্দীন, মাওলানা সৈয়দ আলম আরমানী, আজিজুল হক আল-মাদানী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, ড. আ.ফ.ম. খালেদ হোসেন, মাওলানা নজির আহমদ প্রমুখ।
সম্মেলনে হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, সংবিধান সংশোধন করে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি সংযোজনের পর থেকে নাস্তিক ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ইসলম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে একের পর এক যেভাবে দুঃসাহস দেখিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে একের পর এক মসজিদে হামলা ও ভাংচুর চালাচ্ছে, আমাদের প্রাণের স্পন্দন হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে, বয়োবৃদ্ধ দাড়ি-টুপীধারীদের উপর উঠতি তরুণরা যেভাবে বর্বর আচরণ করছে, তাতে আমরা হতভম্ব ও বিস্মিত না হয়ে পারছি না। একজন বৃদ্ধের দাড়ি টেনে ধরে পুলিশের সামনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা যেভাবে নাজেহাল করেছে, তাতে শুধু আমি নই, দেশের কোটি কোটি মুসলমান আঘাত পেয়েছেন বলে আমার বিশ্বাস। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে একজন মুসলমানের দাড়ি টেনে ধরে নাজেহাল করা হবে, এটা ভাবতেও হতবাক হতে হয়। তিনি বলেন, আল্লাহ্্র নবী দাড়ি রাখতেন, সাহাবায়ে কেরাম, ওলী-আউলিয়া এবং উলামা-মাশায়েখগণ দাড়ি রাখেন, নামাযী দ্বীনদার মুসলমানগণ দাড়ি রাখেন। অথচ আজ ঢালাওভাবে দাড়িধারীদেরকে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে। আসলে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবী এটা একটা খোলস মাত্র। এদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ইসলামকে এদেশ থেকে চিরতরে মুছে ফেলা। তিনি বলেন, নাস্তিক-মুরতাদ ও ক্ষমতাসীন মহলের ইসলামবিদ্বেষী এ আচরণের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বি-বাড়ীয়া দারুল আরকাম মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা সাজেদুর রহ্্মান বলেন, বর্তমান বিশ্বে ইসলাম ও মুসলিম মিল্লাতের বিরুদ্ধে পরিচালিত ইহুদী-খ্রীস্টান মিশনারি ও ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের সর্বাত্মক আগ্রাসনের কবলে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী মুসলমানরা তথাকথিত নাস্তিক্যবাদী ও ফ্যাসিবাদীদের আস্ফালনে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ধুয়া তুলে সারা দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। ঢাকার শাহবাগ, চট্টগ্রামের জামালখান, খুলনা, সিলেটসহ সারাদেশে যুদ্ধঅপরাধীদের বিচারের নামে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভূড়িভোজ, উন্মাদনা, উলঙ্গ ও বেহায়াপনা বিনোদন ও নাটক চলছে। তাদের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে এ দেশের আলেম-ওলামা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইসলামী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। এখানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা তরুণ প্রজন্মের আবরণে আওয়ামী নাস্তিক্যবাদী, ফ্যাসিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাড়িত। এখানে যারা বক্তৃতা দিচ্ছেন, তাদের বক্তব্যে দেশে গৃহযুদ্ধসহ নৈরাজ্যমূলক কর্মকা-ের উসকানি প্রদানের পাশাপাশি ইসলাম ও দাঁড়ি-টুপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গারমূলক অপপ্রচার। তাদের হাতে প্রতিদিনই ইসলামপন্থী ও আলেম-উলামাদের নাজেহাল হবার সচিত্র সংবাদ পত্রিকার পাতা খুললেই আমরা দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু বিচারের নামে প্রহসনের নাটক করে যদি সেটাকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্র করা হয়, যার স্পষ্ট লক্ষণ শাহবাগের তৎপরতায় আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাহলে এদেশের আলেম সমাজসহ সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা বসে থাকবে না।
সম্মেলনে চট্টগ্রাম হাইলধর মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা আব্দুল মালেক হালিম বলেন, সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি ও লুটপাটসহ সকল ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফেরাতে সরকার শাহবাগ চত্বরে সাজানো নাটক মঞ্চস্থ করছে। চরম ইসলাম বিদ্বেষী শাহরিয়া কবীর, ফতোয়া নিষিদ্ধকারী বিচারপতি গোলাম রব্বানী, ধর্মহীন শিক্ষানীতির অন্যতম প্রবক্তা জাফর ইকবাল গং এবং মহানবী (সা.) সম্পর্কে অশ্লীল ও অত্যন্ত ঘৃণ্যভাবে কটূক্তি ও গালিগালাজকারী আসিফ মহিউদ্দীনসহ আরো অনেক নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষীরা তাদের নীল নকশা বাস্তবায়নে এদেশকে ইসলাম শূন্য করার শপথ নিয়ে সরলমনা তরুণ প্রজন্মকে বিভিন্ন এজেন্সীর মাধ্যমে প্ররোচণা দিয়ে তথাকথিত মুক্তি যুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত করে বিপদগামী করার ঘৃণ্য মানসে শাহবাগের নাটকের খলনায়ক বনেছে। সাংস্কৃতিক জগতকে বেলেল্লাপানার করাল গ্রাসে নিশ্চিহ্ন করার পর এবার তারা রাজনৈতিকক অঙ্গন থেকে ইসলামকে বিতাড়িত করার জন্য যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধের বিচারের ধুয়া তুলে যে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে, তা নিছক কোনো গতানুগতিক রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের অংশ নয়। বরং এটা এমন এক রাজনৈতিক এজেন্ডা, যার পেছনে ইসলামকে এদেশ থেকে সমূলে উৎখাতের এক সুগভীর ষড়যন্ত্র। বামপন্থী ও সেক্যুলার রাজনীতির সমর্থক অল্প বয়সের তরুণরা আজ যেভাবে দাড়ি-টুপীধারী নামাযীদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে, এতে চরম উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না।
তিনি বলেন, আমাদের অনৈক্য আর নিজ ধর্মের মধ্যে কতিপয় গোমরাহ ও ধর্মবিরোধীর কারণেই বিধর্মীরা সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোন স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোন হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না।
চট্টগ্রাম বাবুনগর মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, কলেজ পড়–য়া এক তরুণ পুলিশের সামনে একজন বয়স্ক মুরুব্বিকে দাড়ি ধরে যেভাবে মারধর করেছে, এরকম অবস্থা সমাজে আরও ঘটতে থাকলে জমিনে সরাসরি আল্লাহর গযব নেমে আসবে। তিনি বলেন, দাড়ি রাখার অপরাধে এটা করা হলে আল্লাহ্ তাদের ক্ষমতার রশি টেনে তাদের অবশ্যই ক্ষমতাচ্যুত করবেন। অতীতে এ ধরেণের বহু নজির রয়েছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে এমন আগ্রাসন ও অত্যাচারে আমাদের চুপ থাকা মোটেও উচিত হবে না।
উল্লেখ্য, সম্মেলনের শেষে বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জামিয়ার বিগত বৎসরের প্রায় ২ সহস্রাধিক দাওরায়ে হাদীস (টাইটেল) উত্তীর্ণ তরুণ আলেমকে বিশেষ সম্মান সূচক পাগড়ী প্রদান করা হয়। বিশেষ সমাবর্তনে জামিয়া প্রধান হযরত আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী তরুণ আলেমদের উদ্দেশ্যে উপদেশমূলক দীর্ঘ বক্তব্য রেখে বলেন, তোমরা ইসলামের আদর্শ ও শান্তির বাণী প্রচার করার জন্য দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়। সম্মেলনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার উলামায়ে কিরাম ছাড়াও লক্ষাধিক মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন। আখেরী মুনাজাতে জামিয়া প্রধান দেশের ও বিশ্বের সকল মুসলমানের শান্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধি কাম
http://noorbd.com/news.php?id=363

না করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন। এ সময় সমগ্র ক্যাম্পাস জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন