শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

পূর্নাঙ্গ হজ্বের নিয়ম [সংক্ষিপ্ত

পূর্নাঙ্গ হজ্বের নিয়ম [সংক্ষিপ্ত  



]উমরা পালন করার নিয়ম
 উমরার রুকন তিনটি:
 (১) ইহরাম বাঁধা।
(২) ত্বাওয়াফ করা।
(৩) সায়ী করা।
 উমরার ওয়াজিব দু’টি:
 (১) মীক্বাত থেকে ইহরাম বাঁধা।
(২) মাথা মুন্ডন করা কিংবা সম্পূর্ণ মাথা থেকে চুল ছোট করা
 ইহরাম বাঁধা (ফরয): উমরা পালনকারী মীকাতে পৌঁছে অথবা তার পূর্ব হতে গোসল বা উজু করে (পুরুষগণ ইহরামের কাপড় পরে) ২ রাকাআত নামায পড়ে মাথা হতে টুপি ইত্যাদি সরিয়ে কেবলামুখী হয়ে উমরার নিয়ত করবে। নিয়ত শেষে অন্ততঃ ৩ বার (পুরুষগণ সশব্দে) ৪ শ্বাসে তালবিয়াহ পাঠ করবে। তালবিয়া এইi. لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ ii. لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ iii. اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ iv. لاَ شَرِيْكَ لَكَ নিয়ত ও তালবিয়ার দ্বারা ইহরাম বাঁধা হয়ে গেল। এখন বেশী বেশী এ তালবিয়াহ পড়তে থাকবে এবং ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বিরত থাকবে।
 তাওয়াফ করা (ফরয): অতঃপর মসজিদুল হারামে প্রবেশের সুন্নাতের প্রতি লক্ষ রেখে তাওয়াফের স্থানে প্রবেশ করবে। এরপর তাওয়াফের স্থানে পৌঁছেই তালবিয়াহ বন্ধ করে দিবে। হাজরে আসওয়াদের দাগের বাঁয়ে দাঁড়িয়ে প্রথমে উমরার তাওয়াফের নিয়ত করবে। তারপর দাগের উপর এসে হাজরে আসওয়াদকে সামনে করে তাকবীরে তাহরীমার মত হাত তুলবে এবং তাকবীর বলবে। অতঃপর হাত ছেড়ে দিবে। এরপর ইশারার মাধ্যমে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করবে। অতঃপর পূর্ণ তাওয়াফে ইযতিবা ও প্রথম ৩ চক্করে রমল সহকারে উমরার ৭ চক্কর সম্পন্ন করবে। প্রত্যেক চক্কর শেষে হাজরে আসওয়াদকে ইশারার মাধ্যমে চুম্বন করবে। তাওয়াফ শেষে সম্ভব হলে কাউকে কষ্ট না দিয়ে মুলতাযামে হাযিরী দিয়ে দু’আ করবে, তারপর মাতাফের কিনারায় গিয়ে মাকামে ইবরাহীমকে সামনে রেখে বা যেখানে সহজ হয় ওয়াজিবুত তাওয়াফ দু’রাকাআত নামায আদায় করবে। এরপর যমযমের পানি পান করবে।
 সায়ী করা (ওয়াজিব): এরপর সাফা মারওয়া এর সায়ী করার উদ্দেশ্যে হাজরে আসওয়াদকে ইশারার মাধ্যমে চু্ম্বন করে বাবুস সাফা দিয়ে বের হয়ে সাফা পাহাড়ে কিছুটা উপরে চড়বে এবং বাইতুল্লাহ মুখী হয়ে দু’আ করে মারওয়া পাহাড়ের দিকে চলবে। মারওয়াতে পৌছলে একবার সওত হয়ে গেল। এভাবে সাত সওত অর্থাত, ৭ বার সায়ী সম্পন্ন করবে। মারওয়াতে কিছুটা উপরে চড়ে বাইতুল্লাহ মুখী হয়ে দু’আ করে সাফার দিকে চলবে। প্রত্যেক বার সাফা মারওয়াতে বাইতুল্লাহ মুখী হয়ে দু’আ করবে এবং প্রতিবার (পুরুষগণ) সবুজ বাতিদ্বয়ের মাঝে দ্রুত চলবে। সায়ীর পর ২ রাকাআত নফল নামায পড়বে। এবার সায়ী সম্পূর্ণ হল।হালাল হওয়া (ওয়াজিব): এরপর মাথা মুন্ডিয়ে বা চুল ছোট করে হালাল হতে হবে। এখন আপনার উমরার কাজ সম্পূর্ণ হল।
 দ্রষ্টব্য-
মাথার চুল সমান ভাবে চতুর্দিকে কাটতে হবে , অল্প অল্প করে আঙ্গুলের মাথা পরিমান যারা কেটে থাকেন এটা ভূল তরীকা , তাছাডা এটা মহিলাদের জন্য প্রযোয্য ৷ আবার কেউ তাওয়াফ ও সায়ী শেষ করে মাথা না মুনন্ডিয়ে ওমরাহ কাজ শেষ হয়ে গেছে মনে করে কাপড পরিবর্তন করে ফেলেন এবং গনতব্যে গিয়ে চুল চাটেন এটা মারাত্বক ভূল কারন মাথা মুন্ডন করা কিংবা সম্পূর্ণ মাথা থেকে চুল ছোট করা ওয়াজীব ৷ এমতাবস্হায় দম দিতে হবে ৷ কারন ওমরাহর কাজ শেষ হবে , এহরামের কাপড পরিহীত আবস্হায় মাথার চুল সেটেই হালাল হতে হবে ৷
 হজ্জের বর্ণনা
 হজ্জের রুকনসমুহঃ
 হজ্জের রুকন বা ফরয চারটি যথাঃ
(১) ইহরাম বাঁধা
(২) আরাফায় অবস্থান করা
(৩) ত্বাওয়াফে ইফাযাহ (তাওয়াফে যিয়ারত) করা
(৪) সাঈ করা ।
 হজ্জের ওয়াজিবসমূহঃ
(১) মীকাত থেকে ইহরাম বাধাঁ
(২) মাগরীব পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা
(৩) মুযদালিফাতে রাত্রি যাপন করা
(৪) তাশরীকের রাতসমুহ মিনাতে অবস্থান করা
(৫) জামরাতে পাথর নিক্ষেপ করা।
(৬) জামরাতুল আক্বাবাতে পাথর নিক্ষেপের পর মাথা মুন্ডানো
(৭) বিদায়ী ত্বাওয়াফ করা।
 মনে রাখবেন, হজ্জের রুকন আদায় না করলে হজ্জে হবেনা। আর হজ্জের ওয়াজিব আদায় না হলে তার জন্য একটি কুরবানী করতে হবে। তবে হজ্জের সুন্নাতসমুহে কোন ত্র“টি হলে তার জন্য কোন পাপ হবেনা কিংবা কুরবানীও ওয়াজিব হবেনা।
 হজ্জের প্রকারভেদঃ
 হজ্জ তিন প্রকার। যথাঃ তামাত্তু, ক্বিরাণ ও ইফরাদ। তামাত্তু হল, হজ্জের মাস সমূহে ভিন্ন ভিন্ন ইহরামে দ্বারা প্রহমে উমরা তারপর হজ্জ আদায় করা। ক্বিরাণ হল, একই ইহরামে উমরা-হজ্জ একসাথে আদায় করা। আর ইফরাদ হল, শুধু হজ্জ আদায় করা।
 হজ্জে ইফরাদ পালনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
********************
ইহরাম বাঁধা (ফরয): হজ্জে ইফরাদ পালনকারী হজ্জের মাস সমূহে মীকাতে পৌছে বা তার পূর্ব হতে (বাংলাদেশী হাজীদের জন্য বাড়ী বা ঢাকা থেকে) হাজামাত (ক্ষৌরকায) ইত্যাদি সমাপ্ত করে গোসল করে বা কমপক্ষে উজু করে ইহরামের কাপড় পড়িধান করে টুপি পরে দুরাকাআত ইহরামের নামায আদায় করবে। নামায শেষে টুপি খুলে হজ্জের নিয়ত করবে। নিয়ত শেষে অন্তত তিন বার আওয়াজ করে তালবিয়াহ পাঠ করবে। ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে। তালবিয়াহ এই –i. لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ ii. لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ iii. اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ iv. لاَ شَرِيْكَ لَكَ
তাওয়াফ করা:
 **********
অতঃপর মক্কা মুকরারমায় পৌঁছে মসজিদে প্রবেশের সুন্নত অনুযায়ী মসজিদুল হারামে প্রবেশ করে তাওয়াফের স্থানে গিয়ে প্রথমে তাওয়াফে কুদুম সম্পূর্ণ করবে। তাওয়াফের সংক্ষিপ্ত নিয়ম উমরার বয়ান থেকে দেখে নিন। ৭ চক্করে তাওয়াফ সম্পন্ন করে মাতাফের নিকটি গিয়ে মাকামে ইবরাহীমকে সামনে করে বা অন্য স্থানে ২ রাকাআত ওয়াজিবুত তাওয়াফ নামায এমনভাবে পড়বে, যেন তাওয়াফকারীদের সমস্যা না হয়। তারপর যমযমের পানি পান করবে, হজ্জের সায়ী এ তাওয়াফের পরই করার ইচ্ছা করলে উক্ত তাওয়াফে ইযতিবা ও ১ম তিন চক্করে রমল করতে হবে। উল্লেখ্য, ইফরাদ হজ্জ পালনকারীর জন্য তাওয়াফে কুদুমের পর মক্কায় অবস্থান কালে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে সাধ্যমত বিরত থেকে বেশী বেশী নফল তাওয়াফ করার চেষ্টা করবে। উল্লেখ্য সব ধরনের তাওয়াফের পর দু’রাকাআত নামায পড়া ওয়াজিব।
 ৮ই জিলহজ্বে করণীয়ঃ
**************
৮ই জিলহজ্জ সূর্যোদয়ের পর মিনা অভিমূখে রওয়ানা হওয়া সুন্নত। ঐ দিন মিনায় গিয়ে যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা এবং রাত্রি যাপন করে পর দিন ফজরের নামায সেখানে আদায় করা সুন্নাত। মুআল্লিমগণ সাধারণতঃ ৭ই জিলহজ্জ রাত্রেই হাজীদেরকে মিনার তাবুতে পৌঁছে দেয়। নতুন লোকদের জন্য পেরেশানী থেকে বাঁচার জন্য অগ্রিম যাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। ৮ তারিখ জোহরের পূ্র্বেই মিনায় পৌঁছতে হবে। এবং অতি সংক্ষিপ্ত জরুরী সামান-বিছানা এবং পরিধেয় কাপড় নিতে হবে এবং কয়েক দিনের খাবারের জন্য মুয়াল্লিমের নিকট টাকা জমা দেয়াটাই সহজ উপায়। আর মিনাতেও খানা-পিনা কিনে খাবার ব্যবস্থা আছে।
 ৯ই জিলহজ্জে করণীয়ঃ
****************
উকূফে আরাফা (ফরয): ঐদিন ফজরের নামায যথা সময়ে আদায় করে (পুরুষগণ আওয়াজ করে, এবং মহিলাগণ নীরবে ১ বার) তাকবীরে তাশরীফ পড়ে নিবে। নাস্তা ইত্যাদির জুরুত শেষে সূয উঠার পর তালবিয়া পড়তে পড়তে আরাফা অভিমুখে রওয়ানা হতে হবে। আরাফায় পৌঁছে মুয়াল্লিমের তাবুতে উকুফ করতে হবে, তাবুতে না থাকলে আরাফায় নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে অবস্থান করবে। সংক্ষেপে উকুফের পদ্ধতিঃ এই ময়দানে পৌঁছে সেখানে আউয়াল ওয়াক্তে যোহরের নামায পড়ে দাড়িয়ে, আর কষ্ট হলে বসে দু’আ-কালাম-তাসবীহ-তাহলীল পড়তে থাকবে। তারপর হানাফী মাযহাব মতে আসরের সময় হলে আসর নামায পড়ে সূয সম্পূর্ণ অস্ত যাওয়া পযন্ত পূর্বের নিয়মে দু’আ ও যিকিরে মশগুল থাকবে। অন্য আযান শুনে কোন অবস্থায় আসরের ওয়াক্তের পূর্বে আসর পড়বে না। আরাফার ময়দানে এই অবস্থানকে ‘উকুফে আরাফা’ বলা হয়। সূয সম্পূর্ণ অস্ত যাওয়ার পরে এখানে বা রাস্তায় মাগরিব না পড়ে তালবিয়াহ পড়তে পড়তে মুআল্লিমের গাড়ীতে করে মুযদালিফায় রওয়ানা হবে যাবে।
 তবে এক আজানে ২ একামতে জোহর আছর পর পর জোহরের সময়ে জময়ে মুকাদদম হিসাবে শাফেয়ী হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী পড়া হয়ে থাকে , তাতে ও আংশ গ্রহন করতে পারেন
 মুযদালিফায় রাতে অবস্থান করা (ওয়াজিব):
 *****************************
মুযদালিফা ময়দানে পৌঁছে ইশার ওয়াক্ত হওয়ার পর এক আযান ও এক ইকামতে প্রথমে মাগরিব ও পরে ইশার ফরয নামায আদায় করতে হবে। তারপর সুন্নাত, নফল ও বিতির পড়বে। অতঃপর মুযদালিফার খোলা ময়দানে রাতে অবস্থান করতে হবে। আউয়াল ওয়াক্তে ফজরের নামায পড়ে সূর্যোদয়ের পূর্ব পযন্ত মুযদালিফায় অবস্থান করে তাসবিহ-তাহলীল যিকির ও দুআয় মশগুল থাকবে। এ সময় অবস্থান করাকে “উকুফে মুযদালিফা” বলে। এখান থেকে ৪৯ টি পাথর কণা সঙ্গে নিবে। সূয উঠার কিছুক্ষণ পূর্বেই তালবিয়া পড়তে পড়তে মিনার উদ্দেশ্যে পায়ে হেটে রওয়ানা হয়ে যাবে।১০ই জিলহজ্ব করণীয়ঃ রমী করা জামরায়ে উকবা তথা বড় শয়তানকে কংকর মারা (ওয়াজিব): মিনায় পৌঁছে জরুরত সেরে এই দিন শুধুমাত্র জামরায়ে উকবায় তথা বড় শয়তানের স্থানে রমী করার জন্য ভীড় আজকাল সাধারণত আসরের নামাযের পূর্বে ভীড় কমে না। এ জন্য আউয়াল ওয়াক্তে আসর পড়ে বা প্রয়োজনে আরো পরে বড় শয়তারে বেষ্টনির মধ্যে ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবে। এইটাকেই রমী করা বলা হয়। উল্লেখ্য, ১০ই জিলহজ্ব বড় শয়তানের নিকট পৌঁছে প্রথম কংকর নিক্ষেপের পূর্বক্ষণেই তালবিয়া পড়া বন্ধ করে দিবে।
 কুরবানী করা (মুস্তহাব):
রমী শেষে সময় থাকলে এদিন অন্যথায় পরের দিন পশু বাজারে গিয়ে বা আমানতদার কাউকে পাঠিয়ে কুরবানী করবে। হজ্বে ইফরাদ পালনকারীর জন্য কুবানী করা ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব। সুতরাং তাওফীক থাকলে কুরবানী করতে চেষ্টা করবে।হালাল হওয়া (ওয়াজিব): বড় শয়তানকে কংকর মারার পরে এবং কুরবানী করলে কুরবানী শেষে মাথা মুন্ডাতে বা চুল ছাটতে হবে এবং এর মাধ্যমেই মুহরিম হজ্বের ইহরাম থেকে হালাল হয়ে গেল।
 বিশেষ দ্রঃ -----------
অনেকে মনে করেন দেশে কোরবানী করলে , এখানে হজ্বে তামাত্তু-কেরান করলে ও কোরবানী দেয়া লাগবেনা ,এটা খুবই মারাত্বক ভূল ধারনা , দেশের কোরবানীর সাথে হজের কোরবানী{ হাদী }এর সাথে কোন সমপর্ক নেই ৷ বাস্তব পক্ষে হজ উপলক্ষে যে জন্তু যবেহ করা হয় তাকে হাদী বলা হয় ,কোরবানী নয়, যদিও অনেকে ভূল বশত একেও কোরবানী বলে থাকেন ৷ যা একমাত্র হজ্বে তামাত্তু-কেরান করলে কোরবানী দেয়া ওয়াজীব হয়ে যায় ৷ আর দেশে সামর্থবানদের উজহিয়য়াহ কোরবনী ওয়াজীব , এ কারনে কোন হাজী সাহেব হজ্বে তামাত্তু-কেরান করার পর হাদী তথা কোরবানী তে অসমর্থ হলে তার কাফফারা স্বরুপ ১০টি রোজা রাখতে হবে ,৩টা হজ্বের মৌসুমে আর ৭ টা দেশে প্রর্তাবর্তন শেষে ৷
 হালাল হওয়ার সময় চেহারার নূর দাড়ী কোন ক্রমেই মুন্ডাবেন না।
*****************************************
যাদের এখনো দাঁড়ি রাখার সৌভাগ্য হয়নি তারা পূর্বেই এ ব্যাপারে পাক্কা নিয়ত করে নিবেন। যাতে করে দাঁড়ি নিয়ে রওজা শরীফ যিয়ারত করতে পারেন।তাওয়াফে যিয়ারত (ফরয) ও সায়ী করা (ওয়াজিব): হালাল হওয়া তথা ইহরাম মুক্ত হওয়ার পর স্বাভাবিক পোষাকে বাইতুল্লাহ গিয়ে তাওয়াফে যিয়ারত করা ও সাফা-মারওয়াতে সায়ী করা।
 ১০ থেকে ১২ জিলহজ্ব সূয ডোবার পূর্বে তাওয়াফে যিয়ারত সম্পূর্ণ করতে হবে। তাওয়াফে কুদূমের পরে হজ্বের সায়ী না করে থাকলে এই তাওয়াফের পরে সাফা-মারওয়াতে সায়ী করতে হবে। সায়ী করার তরীকা উমরা এর বর্ণনায় দেখে নিন। সায়ীর পরে দুরাকাআত নামায পড়বে। এরপর মিনা ফিরে আসবে।
 ১১, ১২ ও ১৩ই জিলহজ্বের করণীয়:তিন জামরায় কংকর মারা ওয়াজিবঃ
*******************************************
১১ ও ১২ জিলহজ্ব ভীড় থেকে বাঁচার জন্য বাদ আসর প্রথমে ছোট, পরে মাঝারী সবশেষে বড় জামরার বেষ্টনির মধ্যে ৭টি করে কংকর মারবে। এ কয়দিন মিনায় রাত যাপন করা সুন্নাত। উল্লেখ্য, ১২ই জিলহজ্ব ৩ জামরায় কংকর মেরে কেউ মক্কা চলে গেলে কোন অসুবিধা নাই। তবে বিশেষ জরুরত না থাকলে ১৩ই জিলহজ্ব বিকাল ৩টার দিকে পর্যায় ক্রমে তিন মাজরায় কংকর মেরে মক্কায় যাওয়া উত্তম।
 নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ জিলহজ্ব কংকর মেরে মক্কা গিয়েছিলেন। ১৩ জিলহজ্ব আসর পযন্ত তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে।
 তাওয়াফে বিদা (ওয়াজিব):
 *********************
যখন মক্কা শরীফ থেকে চলে আসার সময় হয় তখন শান্ত ভাবে কয়েক ঘন্টা পূর্বে স্বাভাবিক পোষাকে বাইতুল্লাহ শরীফে এসে ৭ চক্কর তাওয়াফ সম্পন্ন করবে। তারপর ওয়াজিবুত্ তাওয়াফ দু’রাকাত নামায পড়ে যমযমের পানি পান করে আবারও বাইতুল্লাহ যিয়ারতের তাওফীক লাভের জন্য মনে প্রাণে দু’আ করা অবস্থায় চলে আসবে। ইহাকে “তাওয়াফে বিদয়া” বলা হয়। এ তাওয়াফের মধ্যে ইযতিবা ও রমল নেই
 এবং পরে কোন সায়ী নেই, উল্লেখ্য প্রতিবার মসুজদে হারামে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় সুন্নাতের প্রতি খেয়াল রাখবে
 । হজ্জে কিরানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
***********************
আর যারা হজ্জে কিরান করতে চান তারা মীকান থেকে বা তার পূর্ব হতে একত্রে উমরা ও হজ্জের নিয়ত করে ইহরাম বাধঁবেন। তারপর তার উমরাহ শেষে ইহরাম অবস্থায় থাকবেন। তারা উমরাহ করে হালাল হতে পারবেন না। হজ্জে সকল কাজ সম্পন্ন করে পূর্বে বর্ণিত নিয়মে মাথা মুন্ডিয়ে হজ্জ্ব থেকে হালাল হওয়ার সময় হজ্জ্ব ও উমরার উভয় ইহরাম থেকে হালাল হওয় যাবে।
 উল্লেখ্য, কিরান ও তামাত্তু হ্জ্বকারীর জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব এবং তাদের জন্য মাথা মুন্ডানোর পূর্বেই কুরবানী করা ওয়াজিব।
 আর ব্যাংকের ওয়াদাকৃত সময় সাধারণত ঠিক থাকে না সে জন্য হালাল হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ জন্য তামাত্তু ও কিরানকারীরা কোনো অবস্থায় ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করবে না। বরং কাউকে পাঠিয়ে বা সমবভ হলে নিজেই কোরবানী দেয়া ভাাল
 মহিলাদের হজ্জের পার্থক্যমহিলাগণ স্বাভাবিক পোষাকেই ইহরাম বাধবে এবং মাথা ঢেকে নিবে
**********************************************************
চেহারা খোলা রাখবে না বরং চেহারার পর্দা করবে এবং এমনভাবে নেকাব লাগাবে যেন চেহারার সাথে কাপড় লেগে না থাকে। তালবিয়াহ নিম্ন আওয়াজে পড়বে। তাওয়াফের মধ্যে ইযতিবা ও রমল করবে না। সায়ীতে সবুজ বাতিদ্বয়ের মাঝে স্বাভাবিক চলবে। চুলের আগা থেকে এক ইঞ্চি পরিমাণ কেটে হালাল হবে। পুরুষদের থেকে পৃথক হয়ে মাতাফের কিনারা দিয়ে বা ছাদে গিয়ে তাওয়াফ করবে। হায়েয অবস্থায় তাওয়াফ করবে না, মক্কা শরীফে শুধু তাওয়াফের জন্য এবং মদীনা শরীফে নিদিষ্ট সময়ে শুধু রওজা যিয়ারতের জন্য মসজিদে যাবে।


 মক্কা মদীনায় হাজী সাহেবানদের করনীয় **********  পরামর্শ
 *******************************
সব সময় জিকর , কোরান তেলাওয়াত , তাওয়াফ বেশী করা দুরুদ শরীফ বেশী পডা , বাজে আলাপ না করা, এখানে এসে সংসারের চিন্তা না করে আখেরাতের সফলতার কথা মাথায় রাখা , গিবত শেকায়েত থেকে বিরত থাকা , আর নিজের জন্য ,সংসারের সকলের জন্য , সকল বন্ধুবান্ধব ও সকল মুসলমানের জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করা , বারংবার দোয়া করা , তওবা করা , বেশী বেশী নফল
 নামাজ পডা ইত্যদি, আর৫ওয়াক্ত নামাজ বাজামায়াত হারাম শরীফে পড়া কারন সেখানে ১ রাকাতে ১ লক্ষ রাকাত নামাজের ছওয়াব , তাই ১ ওয়াক্তে ৪ রাকাতে ৪ লক্ষ রাকাতের ছাওয়াব, যা এক জন মানুষের সারা জিন্দেগীর তথা ৬০ বৎসর হায়াতের নামাজের প্রায় ৩ চথতুর্থাংয়ের সমান
 যেমন-----
দৈনিক =========== ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ
 মাসিক ======= ১৭*৩০ = ৫১০ রাকাত
 বৎসর ========= ৫১০*১২ =৬১২০ রাকাত
 জিন্দেগীতে =====
৬০ বৎসর বয়স হলে নাবালিগী বাদে ৪৫ বৎসর এর নামাজ = ৬১২০*৪৫ বৎসর = ২৭৫৪০০ রাকাত
 আর মক্কার হারাম শরীফে শুধু মাত্র এক ওয়াক্ত নামাজের ৪ রাকাতে ছওয়াব চার লক্ষ রাকাত সমতুল্য
 যা একজন মানুষের সারা জিন্দিগীর নামাজের চেয়েও বেশী ,
আবার মদীনার মসজিদে নববীতে এক রাকাতে ১০০০ হাজার রাকাতের ছওয়াব পাওয়া যায় ,
ছোবহানাল্লাহ .তাহলে একমাত্র হতভাগারাই হারাম শরীফের পাশে আবস্হান করা সত্বেও মসজিদে হারামে না গিয়ে নিজ বাসায় একা একি নামাজ আদায় করেন ৷
 পরামর্শ ==
১৷ হারাম শরীফে যথা সম্ভব আজানের ১ঘন্টা/আধাঘন্টা আগে যাওয়া, নতুবা বিতরে জায়গা পাবেন্না,দেরীতে আসলে জায়নামাজ আবশ্যই সাথে আনবেন ৷
 ২৷ পেটে বা প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পানি ও খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল করুন ,
৩ ৷ জুতা সেন্ডেল পলিথিন করে সাথেই রাখুন ৷
 ৪৷ মানুষের চলাচল রাস্তা এডিয়ে বসুন ৷
 ৫৷ সাথিদের ফোন নং ,মোয়ালি্লমের ফোন সাথেই রাখুন ৷
 ৬৷হারাম শরীফের প্রবেশ পথ তথা গেইট নং খেয়াল রাখুন ৷যাতে আসা যাওয়ায় পথ ভূলে না যান ৷
 ৭ ৷ সাথী/ তাবু/হোটেল হারিয়ে ফেললে অযথা ঘূরা ঘূরি না করে অধৈয্য না হয়ে নিজের সাথে থাকা কার্ড নিরাপত্তা কর্মিদের দেখান ,
৮৷সাথীদের কয়েক জনের নাম্বর রাখুন
 ৯৷ যে কোন সময় সফরের দিন তারিখ ও সময় ভাল করে জেনে নিন ৷
 ১০৷ কংকর নিক্ষেপের সময় তাডা হুডা না করে , ধীরস্হীর ভাবে সূযোগ বুঝেই অগ্রসর হউন ৷
 লেখক কে ভূলবেননা আপনাদের দোয়ার মধ্যে ,
দোয়াই কামনা
 আল্লাহ সকলকে হজ্বে মাবরুর নছীব করুন আমিন
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন