শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

কাশি হলে করনীয় , বিনা পয়সার চিকিৎসা নিন জামেলা ছাডা সংকলিত

ঢাকা: বদলাচ্ছে ঋতু। আর ঋতুর সঙ্গেই যেন রোগ-বালাইয়ের আছে এক গোপন আত্মীয়তা। আর এর মাঝে দেহঘরে সবচেয়ে বেশি বেড়াতে আসা অতিথির নাম কাশি। শীতের কল্যাণে যার ভাইরাস জাঁকিয়ে বসলেই হারাম হয়ে যায় রাতের ঘুম। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য তো এই কাশি যেন গলার কাঁটা হয়ে বিধে থাকে গোটা শীতকাল। তো গলার কাঁটা সরাতে অ্যান্টিবায়োটিক গিলে গিলে হয়রান? সময় হয়েছে প্রকৃতির দুয়ারে ধরনা দেবার।করণীয়:১. থাইম চা: থাইম এদিকটায় একটু অপরিচিত শোনালেও জার্মানিতে এই সুগন্ধী মশলাটা কাশির রীতিমতো অফিসিয়াল ওষুধ। আমাদের সুপারশপগুলোতেও মিলবে এই থাইম। থাইমের ক্ষুদে পাতাগুলোর ভেতর লুকিয়ে আছে কাশির মহৌষধ। যা গলার ট্রাকিয়াল ও ইলিয়াল মাংসপেশীকে নমনীয় করে। কাশির ফলে গলার জ্বলুনিও কমাতে পারে থাইম। শুধু কষ্ট করে দু চামচ থাইম পাতা বেটে চা বানিয়ে গরম গরম গিলে ফেলুন।২. গোল মরিচ চা: জননন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের নাটকে মরিচের চা তো দেখেছেন। এবার একই চায়ের কথা বললেন গবেষকরাও। অবশ্য প্রাচীন চীনেও এই ওষুধের প্রচলন ছিল। দেড় কাপ পানিতে এক চামচ কালো গোল মরিচের গুড়ো ও দুই চামচ মধু মিশিয়ে ১৫ মিনিট সেদ্ধ করুন। তারপর যেটা দাঁড়াবে সেটা ছেঁকে পান করলেই সেরে যাবে কফযুক্ত কাশি। অবশ্য শুকনো কাশির জন্য এ দাওয়াই কাজ করবে না।৩. হলুদ: অনেকেই এটা খেয়ে অভ্যস্ত নন। তবে এটা শতভাগ সত্য যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে হলুদের গুণের শেষ নেই। প্রাচীনকাল থেকেই রোগ সারাতে হলুদ ব্যবহার করে আসছেন কবিরাজরা। আর কাশির ক্ষেত্রে আধুনিক হার্বাল বিশেষজ্ঞরা যা বলে থাকেন তা হলো, এক গ্লাস গরম দুধে আধ চামচ হলুদ মিশিয়ে কোনমতে তা খেয়ে ফেলা। অথবা গিলতে সমস্যা হলে গার্গল করতে পারেন। সেক্ষেত্রে গরম পানিতে আধ চামচ হলুদ গুড়ো ও আধ চামচ লবণ মিশিয়ে গার্গল করতে পারেন। শুকনো কাশি হলে আধ চামচ হলুদের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দু-তিনবার খেলে উপশম মিলবে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদ পুড়িয়ে সেটার ধোঁয়া গিললেও নাকি শুকনো কাশি সেরে যায়।৪. মধু: পুঁথিতে তো লেখা আছেই, তারওপর কদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট স্কুল অব মেডিসিনের এক গবেষণাতেও মিলল মধুর গুণের প্রমাণ। সেখানে দুই বছরের বেশি বয়সী একদল শিশুকে কাশির নিরাময় হিসেবে নিয়মিত মধু খাওয়ানো হয়েছিল। দেখা গেল মধু খাওয়ার পর রাতের যন্ত্রণাদায়ক কাশি বন্ধ হয়ে গেছে, ঘুমও হয়েছে ভাল। তবে রোগ ভেদে মধুর প্রয়োগও ভিন্ন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম দুধের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রাতভর কাশতে হবে না। এছাড়া কাশি দূর করতে আঙুরের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়।৫. আদা: কাশির জন্য সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসাটা হলো আদা। আর এক্ষেত্রে আদার টুকরোর ওপর লবণ ছিটিয়ে ভাল করে চিবিয়ে রস খাওয়াটাই উত্তম। এছাড়া, পরিমাণমতো পানিতে এক ইঞ্চি আদা কুচি করে সেটা সেদ্ধ করে পানির পরিমাণ অর্ধেক করে ফেলুন। তারপর পানিটা ছেঁকে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন। দিনে তিন-চার বার এ পানীয় পান করলে কাশি ভাগবেই।৬. রসুন: রসুনের ভেষজ গুণ নিয়ে এমনিতেই কয়েক হাজার শব্দ লেখা যায়। কাশিই বা বাদ যাবে কেন। কাশির ক্ষেত্রে রেসিপিটা হলো ৫ কোয়া রসুনকে থেঁতলে সামান্য ঘিয়ের মধ্যে হাল্কা ভেজে খেয়ে ফেলুন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যারিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারেও কিন্তু কিছু দিন আগে সাধারণ সর্দি ও কাশি সারাতে রসুনের কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।৭. লেবু: নানা ভেষজ গুণের কারণে লেবু দিনে দিনে লিজেন্ডের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। বেমক্কা কাশি শুরু হয়ে গেলে আধখানা লেবুর ওপর গোল মরিচ আর লবণ ছিটিয়ে কপাকপ খেয়ে ফেলুন। থমকে যাবে কাশির দমক।৮.শোয়ার তরিকা: পরিশেষে, যাবতীয় ভেষজ প্রয়োগের পর নিরাপত্তার শেষ বলয় হিসেবে রয়েছে শোয়ার তরিকা। মাথাটা একটু উঁচু করে শুলে কাশির উপক্রম কম হবে। এভাবে শুলে নাক থেকে গলায় কফ জমতে পারে না বলেই এমনটা হয়। -
সংকলিত

 

1 টি মন্তব্য: