বুধবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ভালোবাসা দিবস আমাদের সংস্কৃতি নয়,ভালোবাসা দিবস নামক সামাজিক এ ক্যান্সার থেকে আপনার সন্তানদের দূরে রাখুন।

ভালোবাসা দিবস আমাদের সংস্কৃতি নয়,ভালোবাসা দিবস নামক সামাজিক এ  ক্যান্সার থেকে আপনার সন্তানদের  দূরে রাখুন।
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ,

গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ বা ‘ভালোবাসা দিবস’ নামে নতুন একটি দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। আগে শুধু এ দেশেই নয়, বেশির ভাগ মুসলিম দেশেই এটা পালিত হতো না। হোটেল মালিকসহ ব্যবসায়ীদের একটি অংশও ব্যবসায় মুনাফার স্বার্থে এটাকে উৎসাহ জোগাচ্ছেন। ‘ভালোবাসা দিবসে’র ইতিহাস ও ভিত্তি কী? ড. খালিদ বেগ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেছেন। সেখান থেকে কিছু কথা তুলে ধরা জরুরি।
বিজাতীয় সংস্কৃতি চর্চা করছে যেসব মুসলমান, তাদের বেশির ভাগই জানে না যে, আসলে তারা কী করছে। তারা অন্ধভাবে অনুকরণ করছে তাদের সাংস্কৃতিক নেতৃবর্গকে, যারা তাদের মতোই অন্ধ।



যাকে নির্দোষ আনন্দ মনে করা হচ্ছে, তার শেকড় যে পৌত্তলিকতায় প্রোথিত হতে পারে, এটা ওরা বোঝেই না। যে প্রতীকগুলো তারা আঁকড়ে ধরেছে, সেগুলো হয়তোবা (ধর্মীয়) অবিশ্বাসের প্রতীক। আর যে ধ্যানধারণা তারা ধার নিয়েছে, তা হতে পারে কুসংস্কার। এসব কিছু হয়তো ইসলামের শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
‘ভালোবাসা দিবস’-এর প্রচলন ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ থেকে স্বাভাবিকভাবেই উঠে গিয়েছিল। তবে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে এটা উদযাপিত হতো। দিবসটি হঠাৎ করে বহু মুসলিম দেশে গজিয়ে উঠেছে।


ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি নিয়ে কাহিনী-কিংবদন্তি প্রচুর। এটা স্পষ্ট, খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে রোমানরা এটা শুরু করেছিল পৌত্তলিক পার্বণ হিসেবে। 'উর্বরতা ও জনসমষ্টির দেবতা' লুপারকাসের সম্মানার্থেই এটা করা হতো। এর প্রধান আকর্ষণ ছিল লটারি। ‘বিনোদন ও আনন্দে’র জন্য যুবকদের মাঝে যুবতীদেরকে বণ্টন করে দেয়াই ছিল এই লটারির লক্ষ্য। পরবর্তী বছর আবার লটারি না হওয়া পর্যন্ত যুবকরা এই ‘সুযোগ’ পেত।
ভালোবাসা দিবসের নামে আরেকটি ঘৃণ্য প্রথা ছিল, যুবতীদের প্রহার করা। সামান্য ছাগলের চামড়া পরিহিত দুই যুবক একই চামড়ার তৈরি বেত দিয়ে এ নির্যাতন চালাত। উৎসর্গিত ছাগল ও কুকুরের রক্তে এই যুবকদের শরীর থাকত রঞ্জিত। এ ধরনের 'পবিত্র ব্যক্তি'দের 'পবিত্র' বেতের একটি আঘাত খেলে যুবতীরা আরো ভালোভাবে গর্ভধারণ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করা হতো। খ্রিষ্টধর্ম এই কুপ্রথা বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে প্রথমে মেয়েদের বদলে সন্ন্যাসীদের নামে লটারি চালু হলো। মনে করা হয়েছিল, এর ফলে যুবকরা তাদের জীবনকে অনুসরণ করবে। খ্রিষ্টধর্ম এ ক্ষেত্রে শুধু এটুকুই সফল হলো যে, ভালোবাসা দিবসের নাম ‘লুপারক্যালিয়া’ থেকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ হয়েছে। গেলাসিয়াস নামের পোপ ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দে এটা করেন সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের সন্ন্যাসীর সম্মানার্থে। তবে ৫০ জন ভ্যালেন্টাইনের কথা শোনা যায়। তাদের মধ্যে মাত্র দুজন সমধিক পরিচিত। অবশ্য তাদের জীবন ও আচরণ রহস্যাবৃত। একটি মত অনুসারে, ভ্যালেন্টাইন ছিলেন ‘প্রেমিকের সন্ন্যাসী’। তিনি একবার কারাবন্দী হয়েছিলেন। কিন্তু পড়ে যান কারাগারের অধিকর্তার কন্যার প্রেমে।



লটারি নিয়ে মারাত্মক সঙ্কট দেখা দেয়ায় ফরাসি সরকার ১৭৭৬ খ্রিষ্টাব্দে ভ্যালেন্টাইন দিবস উদযাপন নিষিদ্ধ করে দেয়। এদিকে, সময়ের সাথে সাথে একপর্যায়ে ইতালি, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানি থেকে দিবসটি বিদায় নেয়। সপ্তদশ শতকে পিউরিটানরা যখন বেশ প্রভাবশালী ছিল, তখন ইংল্যান্ডেও ভালোবাসা দিবস নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে রাজা দ্বিতীয় চার্লস আবার এটি পালনের প্রথা চালু করেন।



ইংল্যান্ড থেকে ভ্যালেন্টাইন গেল ‘নতুন দুনিয়া’য়; অর্থাৎ আমেরিকায়। সেখানে উৎসাহী ইয়াঙ্কিরা পয়সা কামানোর বড় সুযোগ খুঁজে পেল এর মাঝে।
ইসথার এ হাওল্যান্ডের মতো কেউ কেউ সর্বপ্রথম ১৮৪০ সালে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ভ্যালেন্টাইন ডে কার্ড বের করেন। হাওল্যান্ড প্রথম বছরই পাঁচ হাজার ডলার দামের কার্ড বিক্রি করেছিলেন। তখন ‘পাঁচ হাজার ডলার’ মানে অনেক। এরপর থেকে ‘ভ্যালেন্টাইন শিল্প’ জমজমাট হয়ে ওঠে।


‘হ্যালোউইন’-এর ক্ষেত্রেও ভ্যালেন্টাইনের ঘটনা ঘটেছে। ওই উৎসবে ভূত-পেত্নীর মতো পোশাক পরে দৈত্যদানব পূজার প্রাচীন পৌত্তলিক প্রথার পুনরাবৃত্তি করা হয় মাত্র। খ্রিষ্ট্রধর্ম পুরনো নাম বদলিয়ে ‘হ্যালোউইন’ রাখলেও উৎসবটির ভিত্তি রয়ে গেছে পৌত্তলিকতাকেন্দ্রিক।

পৌত্তলিক জাতির মানুষরা ভূত-প্রেতকে খুব ভয় পেত। বিশেষ করে তাদের জন্মদিনে ভয়টা যেত বেড়ে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তনের মুহুর্তে যেমন বয়সের বছরপূর্তি­ এসব অপশক্তি আরো বেশি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায় বলে বিশ্বাস করা হতো। তাই পরিবার-পরিজন হাসি-আনন্দে সে ব্যক্তিকে ঘিরে রাখা হতো, যার জন্মদিন পালন করা হতো। তাদের বিশ্বাস, এভাবে মন্দ থেকে তাকে রক্ষা করা যায়।


ইসলামবিরোধী ধ্যান-ধারণা ও বিশ্বাসে যেসব প্রথা ও উৎসবের মূল নিহিত, সেগুলোর ব্যাপারে ইসলাম উদাসীন থাকবে বলে কি মনে করা যায়?
অবিরাম মিডিয়ার প্রচারণাসহ নানাভাবে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক প্রোপাগান্ডা চলছে। এটা একটা বিরাট ট্র্যাজেডি যে, এ অবস্থায় মুসলমানরাও ভ্যালেন্টাইন, হ্যালোউইন ভূত, এমনকি সান্তাক্লসকে আলিঙ্গন করছে।” ড. খালিদ বেগের এই গুরুত্বপূর্ণ অভিমতগুলো লন্ডনের ইমপ্যাক্ট ইন্টারন্যাশনাল সাময়িকীর মার্চ ২০০১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
কথা হলো পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের ওপর যার ভিত্তি, সেই ভ্যালেন্টাইন ডে বাংলাদেশের মতো কোনো দেশে­ যেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলিম, পালন করা উচিত নয়। ইসলাম আমাদেরকে শিখিয়েছে সবাইকে প্রকৃত অর্থেই ভালোবাসতে। এটা বিশেষ কোনো দিবস, এভাবে উদযাপনের ওপর নির্ভর করে না। আমাদের দেশে ‘ভালোবাসা দিবস’ কিছু তরুণ-তরুণীর অবাধ মেলামেশার উপায়ে পরিণত হয়েছে। এটা মুসলিম সংস্কৃতির অংশ নয়। অশ্লীলতা বাড়িয়ে দেয়­ পাশ্চাত্য সংস্কৃতির এমন কোনো কিছু আমাদের দেশে চলতে দেয়া অনুচিত। বাংলাদেশসহ মুসলিম দেশগুলোতে এসব বন্ধ করার ব্যাপারে পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষক, ইমাম, সমাজকর্মী প্রমুখের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
============


সত্যি আমরা দূর্ভাগা জাতি।

আমরা না জানি নিজেদের ধর্ম, না জানি নিজেদের কৃষ্টি ও সভ্যতা। এজন্য প্রথমেই এগিয়ে আসা উচিত্‌ রাষ্ট্রকে।

কিন্তু অতি পরিতাপের বিষয় আমাদের দেশের রাষ্ট্র প্রধান থেকে শুরু করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী যখন "ভ্যালেন্টাইন্‌স ডে বা ভালোবাসা দিবসে" নিজেদেরকে ঐ দিবসে উপস্থিত থেকে জনসাধারণকে ভালোবাসা দিবসে সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। বক্তৃতা ও বিবৃতি দিয়ে বিদেশী অপসংস্কৃতিকে পালনের জন্য সহজ-সরল মানুষগুলোকে আহ্বান জানায়। বিশেষকরে উড়তি বয়সের তরুন-তরুনী, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা বেশি আকৃষ্ট হয়।

এই সংস্কৃতি শুধু বেহায়াপনা তৈরী করে না সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। মুক্তমনা সংস্কৃতির নামে সমাজে আজ নারী প্রগতিবীদ ও কিছু সুশীল! সমাজপতিরা উদার মানসিকতার কথা বলে, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে, নারীদের বেপর্দা করে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। সন্তান-সন্ততিদের মায়ের স্নেহ ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করেছে। অথচ ইসলাম কখনো নারীকে অন্তপুরে বন্দি রাখতে বলেনি।

পর্দা করে সকল কাজে অংশীদার হতে বলেছে।
 অনেকের পিতা মাতা আছেন যাঁরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন তবে তাদের ছেলে-মেয়েরা এই সমস্ত অপসংস্কৃতিতে অংশগ্রহণ করছে। তাই আমি মনে করি সর্বপ্রথমে পরিবারের পিতা-মাতাকে সন্তানের মঙ্গলের জন্য এগিয়ে আসা উচিত্‌। আজ শহর থেকে গ্রামেও এই ভালোবাসা দিবস ছড়িয়ে গেছে। গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের সহজ-সরল বাবা মাকে ভুল বুঝিয়ে অর্থ নিয়ে এই অপসংস্কৃতিকে পালন করছে। আজ ইউরোপ আমেরিকায় ভালোবাসার নামে দিনে দুপুরে সবারই সামনে যেভাবে ভালোবাসার প্রমাণ দেয় তা পশু প্রবৃত্তিকেও ছাড়িয়ে গেছে।
অনেক অমুসলিম দেশে হোটেল রেস্তোরা গুলো অগ্রীম বুকিং দিয়ে রাখতে হয় ,ঐ দিনটি প্রেমিক প্রেমিকাদের ভালবাসার প্রমান স্বরূপ , কথিত আছে যে সারা বছর টানকী মারার পর ঐ দিন নাকী চুডান্ত ফলাফল পাওয়ার দিন হিসাবে তাদের কাছে গন্য করা হয় । ছি, ছি , ছি, এই নগ্নতাকে ধিক্কার জানাই এই বেহায়া পনাকে , ধিক্কার জানাই এই স্বঘোষিত  বেইশ্যা  দিবস কে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন