শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৬

দাওয়াতে তাবলীগের মেহনত মুসলিমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং তা সার্বজনীন وদেখুন কারগুজারী

অমুসল‌িমদ‌ের মাঝ‌ে দাওয়াত‌ে তাবলীগ‌ের সফলতা অপর‌িসীম,
তাবলিগী ভাইয়েরা শুধু যে মুসলমানদের দাওয়াত দেন শুধু তা না , বরং অমুসলিমদের কে দাওয়াত দিয়ে থাকেন যেটা বিভিন্ন  কারগুজারী ও ওলামাদের বয়ানে শুনতে পাই যার কারণে হাজার হাজার অমুসলিম ইসলামের শীতল ছায়া তলে আশ্রয় নিচ্ছে৷এমনকি সাধারণ মানুষের সাথে সাথে গীর্জার পাদ্রীদের কাছে হক্বের দাওয়াত দিয়ে,ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হচ্ছে আল্লাহর মেহেরবানীতে । নিম্নে উদাহরণ স্বরূপ দু’একটি দেশের কথা উল্লেখ করা হল-
১. আফ্রিকা মহাদেশঃ আফ্রিকাতে দু’ধরণের লোক বাস করে, কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ। এদের মাঝে এত বেশী শত্রুতা যে, দেখা মাত্রই একে অন্যের ওপর আক্রমণ করে বসে। সরকার এ পরিস্থিতির উত্তরণে হাজার কোটি টাকা খরছ করেও ফলাফল অশ্বডিম্ব। কিন্তু ১৯৫৮ ইংরেজীতে আফ্রিকায় দাওয়াতে তাবলীগের এক ইজতেমার মাধ্যমে উভয় গোত্র একই দস্তরখানে খানা আরম্ভ করল। ফলে তাবলীগের মেহনতের বদৌলতে দীর্ঘদিনের সেই শত্রুতা দূর হয়ে গেল। এমন এমনও ঘটনা ঘটেছে যে আফ্রিকার বন জঙ্গলে বসবাসকারী আমাজন সম্প্রদায় যারা সর্বদা উলঙ্গবস্হায় বসবাস করত লজ্জা শরম কি জিনিষ তা তারা বুঝতোনা এমন সম্প্রদায়ের লোকেরা দাওয়াত তাবলীগের মেহনতে ইসলামের মাহা্ত্ব্য বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। স্বদলবলে গ্রামকে গ্রাম মানুষ ইসলাম গ্রহন করছে। তেমনি একটি সত্য ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব যে আওলাদে সহাবী, আরব দাঈ'র হাতে প্রথম সফরেই ১৯হাজার মানুষের ইসলাম গ্রহনের কাহিনী। আফ্রিকা জিবুতি ইরিত্রিয়া রাষ্টে সফর শেষ করে তিনি বাংলাদেশের ২০১৬ সালের বিশ্ব ইজতেমায় এসেছেন। নাম আলী আবদুর রহমান বিন আব্দুল্লাহ কাহতানী। তিনি ছিলেন সৌদি আরবের এক নামকরা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক। সাহাবী তালহা (রাযি) এর বংশধর। রক্তে সাহাবীওয়ালী জজবা। নিজেকে লুকিয়ে রাখেন। কোরআন তেলাওয়াত আর রাত জেগে দীর্ঘ নামাজ তার প্রিয় অভ্যাস। আফ্রিকার জিবুতি ইরিত্রিয়া রাষ্টে তিনি জামাত নিয়ে গিয়েছিলেন। পাহাড়ী মরুভুমি অঞ্চল। নানান জাতীর মানুষের বাস সেখানে। দুভাষী ছিলেন জিবুতি ইরিত্রিয়ার রাজধানী আসমারার নওসুলিম নাগরিক।
তাঁর ভাষায়, আমরা প্রথম পাহড়ী একটি গ্রামে প্রবেশ করি, তাবু টানিয়ে সেখানে রাত্রী যাপন করি। জামাতে দুজন আফ্রিকান, একজন আমেরিকান আর আটজন আরব সাথী। জামাতের অধিকাংশ সাথীই পুরানো এবং জিম্মাদার, সারা রাত আমল হল। ফজরের আযান দিয়ে আমরা নামাজ পড়লাম। আযান শুনে কয়েক হাজার মানুষ আমাদের কাছে ছুটে এল। নামাজ অবস্থায়ই তীর ধনুক দিয়ে আমাদের
ঘিরে ধরল। আমরা নামাজ শেষ করে যার যার আমলে লেগে গেলাম। তাদের একজন এগিয়ে এলো। স্থানীয় ভাষায় জামাতের সাথী আফ্রিকানের সাথে কথা বলল। সে জানাল ঐ ব্যক্তি তাদের রাজা। এই অঞ্চলে সাসিনিয়া জাতীর ১৫ হাজার লোক বাসকরে। এরা সভ্যতা থেকে অনেকটা দূরে, তবে রাজার হুকুম ছাড়া একটা পাঁ ও তারা এদিক সেদিক করে না।
রাজা আমাদের পরিচয় জানতে চাইলে, দুভাষী ভাই বললেন,এরা মুসলিম,আরবের মক্কা থেকে এসেছেন। পবিত্র কাবার প্রতিবেশি তারা। রাজা জানতে চাইল আমাদের কাছে কোন, ঐশী গ্রন্থ আছে কি না। আমরা কোরআন শরীফ দেখালাম। সে ভেতরের পৃষ্টা দেখতে চাইল।কোরআন দেখেই রাজা কিছু না বলেই নিরবে চলে গেলেন। আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না।বেলা ১১টার দিকে আবার
রাজা এল। হাতে প্রচীন একটি কোরআন শরীফ। পেছনে তার হাজার হাজার অনুসারী। আমরা মনে মনে একটু চিন্তিত হলেও পূর্ণ ভরসা আল্লাহর উপরই। যাই হোক দেখলাম মুহুর্তের মধ্যে এসেই সে আমার সামনে সেজদায় লুটিয়ে পড়ল। সাথে পুরো সাসিননিয় জাতী গোষ্টি। আমাদের দুভাষী ভাই বললেন, সেজদাহ কেবল একজনকেই করতে হয়, যিনি আমাদের সবার রব। তখন রাজা কোরআন শরীফ দেখিয়ে তার পূর্ব পুরুষদের এক ভবিষ্যৎ বাণী তথা নছিহত বলতে লাগল যে, এটা আমার বাবা আমাদের সাবেক রাজা আমাকে দিয়ে গেছেন। তাকে তার বাবা। এভাবে কয়েক পুরুষ ধরে এই গ্রন্থ আমরা বংশ পরাম্পর সংগ্রহ করে আসছি। আমার বাবা মৃত্যুর পূর্বে সিন্দুক থেকে এই গ্রন্থ বের করে আমার হাতে দিয়ে গেছেন। আর বলেছেন আমাদের জাতীর মুক্তির বার্তা নিয়ে একদল পবিত্র মানুষ, পবিত্র দেশ থেকে তোমাদের কাছে আসবে। তারা সৃষ্টিকর্তার ভাষায় তোমাদের কোন এক প্রভাতে ডাকবে এবং ভোরের প্রার্থনারত অবস্থায় তোমাদের সাথে তাদের সাক্ষাৎ হবে। তাদের হাতে এই ঐশী গ্রন্থ থাকবে। তোমরা তাদের কথা শুনবে। তারা যা করতে চায়, তা করবে। এবং সেভাবে চলবে। আমি সারা জীবন তাদের জন্য প্রতিটি ভোরে অপেক্ষা করেছি। তাদের দেখা পাই নি। তুমিও তাদের অপেক্ষায় থাকবে।( ছোবহানাল্লাহ।)
আমার বাবা, তার বাবা এভাবে অনেক পুরুষ ধরে এরকম বিশ্বাস নিয়ে আমরা তাদের অপেক্ষা করছি। আজ আপনাদের আওয়াজ শুনে এখানে এসে দেখলাম আপনারা সেই পবিত্র মানুষ। বলুন আমরা আপনাদের কি নির্দেশ পালন করতে পারি। আমি
আপনাদের ঐশী গ্রন্থ দেখে আমার জাতীর কাছে সেই সুসংবাদ পৌছে দিয়েছি। যুগ যুগ ধরে তোমরা যাদের অপেক্ষায় তারা আজ
তোমাদের কাছে হাজির। তারা সব আজ আপনাদের কাছে সমার্পিত। বলেই রাজা তার মাথার তাঁজ কে আমাদের পায়ের কাছে
রেখে দিল। আমাদের সাথীরা আবেগে আর আনন্দে কাঁদতে থাকল। কেউ সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন। আমরা পরার্মশ করে পর্যক্রমে পুরো জাতীকে কালেমা, লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, পড়ালাম। কয়েকটি মসজিদ তৈরি করে তাদের দ্বীন ও নামাজ শেখানোর ব্যবস্থা করা হল। আসমারা থেকে আরো কজন মুবাল্লীগ আনা হল। জিবুতি ইরিত্রিয় কেন্দ্রীয় মার্কাজে আমরা খবর পাঠালাম। সিনিমিয়ারার বাসিন্দারা কয়েকদিন ব্যাপি নানান খাবারের আয়োজন করল। আমরা হালাল খাবার রান্না তাদের শিখালাম। আমি নিজেও তিন মাস থেকে তাদের ভাষা শিখে ফেলেছি। বাংলাদেশে ২০দিন লাগিয়ে আরো কিছু কাজ শিখে জামাত
নিয়ে আবার তাদের কাছে যাব। পার্সপোট তৈরি করে দিয়ে, ভিসা প্রসেসিং করে আমাদের সাথে তাদের ৫জন প্রতিনিধিকে নিয়ে এসেছি, আলহামদুলিল্লাহ।
বলতে বলতে, কাহাতানী কাঁদতে থাকলেন। বললেন আমি আরো দশজন আরবের মতোই গাফিল দুনিয়াদার ছিলাম।
একবার আমার হাতে, আপনাদের হিন্দুস্থানেরমাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ রহ এর লেখা, "হায়াতুস সাহাবা" কিতাব পৌছল। পড়তে পড়তে আমি আবেগী হলাম। এতো আমার পূর্ব পুরুষের জীবন গাথা। হায় তা আমি জানিনা।সাহাবাওয়ালা রক্ত,
তালহার স্রোতসীনী খুন আমর ভেতরে টগবগিয়ে উঠল। আমি তাবলীগের সন্ধান পেলাম। দেখলাম, মাওলানা ইলিয়াস
রামাহিমাল্লাহু বলেছেন, আমি চাই আরবের সওগাতকে আবার আরবরা বুকে টেনে নিবে। এ দাওয়াতের কাজ তাদের
হক। তাদের পূর্বসূরীদের আমানত। তারা যখন একাজে চলবে, তখন সারা দুনিয়াতে দ্বীনের রৌশনী চমকাতে থাকবে।
এই দাওয়াতের রাস্তায় বের হওয়ার পর তারবানী'র সত্যতা আজ নিজ চোখে দেখছি। এর আগে এই সফরেই ইউরোপে
আমাদের জামাতের আরব সাথীদের হাতে ৪ হাজার খ্রিষ্টান কালেমা পড়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্সে এমন দুই হাজার লোক, যাদের পূব পুরুষ মুসলমান ছিলেন। দাওয়াতের মেহনত না থাকার কারনে তারা পর্যায়ক্রমে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহন করেছে। হায় আমরা একাজ ভূলে
কোথায় ছিলাম, কোথায় আছি। ইজতেমাতে আমরা ১৩ ভাই এসেছি। ৪জন তাবলীগে আল্লাহর রাস্তায় সময় লাগাবে।সূত্র তাবলিগী সাথি হাকীম সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ ছাহেবের ষ্টাটাস থেকে।
২. ইউরোপঃ ইউরোপে ১০ বছরে ২০ হাজার ইংরেজ মুসলমান হয়েছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি মেইল এ তথ্য প্রকাশ করেছে। অবশ্যই এখানে প্রচলিত তাবলীগের মেহনতের সাথে অন্যান্য দ্বীন প্রচারকদের ও অবদানও আছে এতে কোন সন্দেহ নেই।
৩. ইংলেন্ডঃ ইংলেন্ডে তাবলীগ জামাতের মেহনতে প্রতি বছর প্রায় ১০ সহস্রাধীক বৃটিশ মুসলমান হচ্ছে। ১৯৯১ সালে চার্চে গমনকারী খ্রিষ্টানদের সংখ্যা ছিল ৮,৫৪,০০০ এবং মসজিদে গমনকারী মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ৫,৩৬,০০০ হাজার। ১৯৯২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মসজিদে গমনকারী মুসলমানদের সংখ্যা ৪০,০০০0 আর চার্চে গমনকারী খ্রিষ্টানদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২০,০০০।
৪. ফ্রান্সঃ ফ্রান্সে খুব দ্রুতগতিতে ইসলামের বিস্তার লাভ করছে।মাওঃ তারেক জামীল ছাঃ মাঃ জিঃ এর বয়ানে শুনতে পাই যে ফ্রান্সের এক পাদ্রী তাবলীগি জামাতের হাতে মুসলমান হয়ে রাইওয়ান্ড মারকাজে এসে সময় লাগিয়েছেন এবং সময় লাগাতে গিয়ে তিউনিশিয়াতে মৃত্যু বরন করেছেন। ১৫ বছরে প্রায় দেড় হাজার মসজিদ নির্মিত হয়েছে। ডঃ কাজি ইব্রাহীম নামক এক গবেষক তিনি জানিয়েছেন বর্তমানে সারা পৃথিবীতে গড়ে দৈনিক প্রায়৬৮ হাজার মানুষ ইসলাম গ্রহন করছেন।তবে তা সমগ্র বিশ্বে ছিডিয়ে ছিটিয়ে থাকা দাওয়াতে তাবলীগ সহ অন্যান্য দাওয়াতী কায্যক্রমের ফসল।
5 মালায়শিয়ার একটি গ্রামের মুসলমানদের মুর্তাদ হওয়ার পর ইসলামে প্রর্ত্যাবর্তেনর কারগুজারী
সানদাকান সাবাহ, মালয়শিয়ার একটি লেক, ছোট পর্বত ও বন বেষ্টিত খুবই সুন্দর একটা এলাকা। সানদাকান একটি গ্রামের নাম এবং সাবাহ হলো জেলার নাম। সানদাকান গ্রামে এক সময় প্রচুর মুসলমান বাস করতো এবং তারা ধার্মিকও ছিল বটে। কালের বিবর্তনে যে গুটি কয়েক ঐতিহ্যবাহী মুসলিম ধর্মপ্রান পরিবার ছিল কোন কারনে তারা এই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এই গুটি কয়েক মুসলমান পরিবারই ছিল পুরো গ্রামের মুসলমানদের নির্দেশদাতা ও সব সময়ের পরামর্শদাতা। তারা থাকাকালীন গ্রামের এক প্রান্তে খুব সুন্দর করে একটি মসজিদ নির্মান করে গিয়েছিলেন। যখন উনারা চলে যান তখন গ্রাম বাসীদের মধ্যে কোন প্রজ্ঞাপূর্ন লোক ছিলনা যে কিনা মুসলমানদের সব সময়ের জন্য পরামর্শ দিবে।বা সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ করবে,তাই পূর্বের দেখানো নিয়ম অনুসারে যে যেভাবে পেরেছে সেভাবেই আমল করেছে। ঠিক তখনই শুরু হয় মালয়শিয়ার প্রযুক্তির ছোয়া এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি ও উন্নয়নের জোয়ার। এই সংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে দিয়ে গ্রামবাসীরা আস্তে আস্তে তাদের আমল থেকে দূরে সরে যায়, ফলশ্রুতিতে ১৯৯৬ সাল থেকে ঐ গ্রামের ১০০% লোকই মুরদাত হয়ে যায়। এভাবেই কেটে যায় প্রায় ১৮ বছর ! এর মধ্যে কতো লোকের মৃত্যু হয়েছে, আর কতো বাচ্চার জন্ম হয়েছে সৌন্দয্যের অপার লীলাভুমি এই সানদাকান এ।২০১৪ সালের ঘটনা,পাকিস্তান ইন্দোনেশিয়ার একটি যৌথ জামাত যায় এই সাবাহ শহরে। মালয়েশিয়া মারকাজ থেকে যে এলাকার সফরের কথা উল্লেখ ছিল তার প্রথম এলাকাটিই ছিল সাবাহের সানদাকান গ্রামে ! ৮ জনের একটি জামাত সকালে সেখানে পৌছায়। কিন্তু দুপুর অবদি এলাকায় মসজিদের কোন চিহ্নও খুজে পাননি তারা। অবশেষে স্থানীয় এক বৃদ্ধ যে কিনা আগে মুসলমান ছিল জামাতের লোকেরা ভাগ্যক্রমে তার কাছেই এই এলাকার মসজিদের সন্ধান চায়। মসজিদের কথা শুনেই লোকটি চমকে উঠল এই ভেবে যে, এতদিন পর এরা কোথা থেকে আসলো মসজিদের খোজ করতে? যাই হোক, ঐ বৃদ্ধ এলাকার এক প্রান্তে একটি টিলার উপর ঝোপ ঝাড়ের ভিতর জীর্ন শীর্ন একটি কুঠির দেখিয়ে দিয়ে বলেন যে, এটা ছিল আমাদের মসজিদ !!! জামাতের লোকেরা ঝোপ ঝাড় পেরিয়ে মসজিদে গিয়ে দেখে, মসজিদের মেঝেতে পুর হয়ে শ্যাওলা জমে আছে। দরজা জানালা গুলোর কোন অস্তিত্ব নেই। ময়লা আবর্জনা স্তপের মতো পড়ে আছে। মসজিদের এই করুন দশার কথা জানতে চাইলে বৃদ্ধটি কাঁদো কাঁদো স্বরে অতীত ইতিহাস বললো।
দেরি না করে তৎক্ষনাত জামাতের লোকেরা মসজিদ সাফাই কাজে লেগে গেলো। চারজন মসজিদ সাফাই করছেন, আর বাকী চারজন ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার করছেন। এরই মধ্যে জোহরের সালাতের সময় হয়ে গেলে জামাতের সাথী মাওলানা মুস্তাক নকভী আযান দেন। প্রায় ১৮ বছর পর এই মসজিদে আজানের ধ্বনি শুনতে পেয়ে আশে পাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। কি ঘটতেছে আসলে সেখানে, উৎসুক জনতা ঝোপ ঝাড় ঠেলে মসজিদে ভিতরে নামাযরত জামাতের আমীর ড. রিজওয়ান ইয়াকভী এর দিকে তাকিয়ে আছে !! সলাত শেষ করে জনতার উদ্দেশ্যে ড. সাহেব বললেন, "এটা আল্লাহর ঘর, এটা ইবাদতের ঘর, এটা মুসলিমদের আনাগোনায় মুখরিত থাকার ঘর, এটা আযানের ধ্বনির ঘর। এই ঘরটাকে আপনারা কেন বাতিল ঘরে পরিনত করেছেন?" মুরদাত হয়ে যাওয়া এক বৃদ্ধ বলে উঠলেন "আমরা এতদিন এই আমলহীন অবস্থায় অতিবাহিত করেছি, কিন্তু আজ অবদি কেউ আমাদের এসে বলেনি যে, তোমরা কেন নামায পড়ছোনা? তোমরা কেন শরীয়ারহ বিধিবিধান মেনে চলছোনা? আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে কয়েকটি ধর্মপ্রান পরিবারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় আমরা চলছিলাম। উনারা চলে যাওয়ার পর এই দ্বিতীয় বার আমরা আবার কোন নির্দেশদাতা পেলাম যে কিনা আমাদের পথ দেখাবে। দীর্ঘ এক মাস মেহনতের পর সানদাকান গ্রাম বাসী আবার দ্বীনের পথে ফিরে আসে। আর এভাবেই দাওয়াতের মাধ্যমে মুরদাত হয়ে যাওয়া হতভাগারা পুনরায় দ্বীনের পথে ফিরে আসে। তাই বলা হয় দাওয়াত থাকবে তো দ্বীন থাকবে, আর দ্বীন থাকবে তো দুনিয়া থাকবে। তাই আসুন আমরা বেশী থেকে বেশী দাওয়াতের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করি। আপনি কে, কোন পন্থী, কোন আক্বীদার সেটা দেখার বিষয় নয়, আপনি যেই হোন না কেন একজন মুসলিম হিসেবে দাওয়াতের কাজ করা আমার আপনার অবশ্য কর্তব্য। একটি মালয় ভাষার পোষ্ট হতে সংক্ষেপে অনুবাদকৃত] — সংকলীত
6. ফিলিপাইনে শত অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করার পরও যে স্বল্পসংখ্যক মুসলমান এখন ম্যানিলা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে টিকে আছেন তাদের মধ্যে খ্রীষ্ট ধর্ম প্রচার করার লক্ষ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক মিশন বিপুল উদ্যোগ আয়োজন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে আমেরিকা ভিত্তিক একটি মিশনের উদ্যোগই সবচাইতে বেশি। সে মিশনেরই দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার প্রধান পাদ্রী ডক্টর দীলু সানতোষ। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি কাল ধরে তিনি কাজ করেছেন মুসলিম এলাকাগুলোর মধ্যে, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই যে, একজন মুসলমানকেও তিনি খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ডক্টর দিলুই রূপান্তরিত হয়ে গেলেন ডক্টর খালেদে! কি করে এটা সম্ভব হলো? তাহল একমাত্র দাওয়াতের মেহনতে,১৯৮৩ খ্রীষ্টাব্দের এপ্রিলের ঘটনা এটি। পরবর্তিতে নবমুসলিম ডক্টর খালেদ বললেন, উপর্যুক্ত লক্ষ্য সামনে নিয়েই আমি কয়েকজন সঙ্গী-সাথী নিয়ে ১৯৮৪ খ্রীষ্টাব্দে একটি ইসলামী সংগঠন গড়ে তুলি। আমাদের প্রচেষ্টায় গত দু’বছরে দুই লক্ষ আশি হাজার লোক ইসলামে দীক্ষিত হয়েছে।ছুবহানাল্লাহ।
দাওয়াতের কাজে আমাদের সর্বাপেক্ষা বড় সাফল্য হচ্ছে, যে কোযান প্রদেশে একই সাথে আটজন খ্রীষ্টান ধর্মযাজকের ইসলাম গ্রহণ। এদের সাথে আমার কিছুটা পূর্ব পরিচয় ছিল ।সেই সুবাধে আমি তাদেরকে দ্বীনে হক্বের দাওয়াত দিই (মক্কা শরীফ থেকে ‘আখবারুল আলম-আল-ইসলামী’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রতিবেদক আমের উবায়দ কর্তৃক গৃহীত একটি সাক্ষাৎকার।)
(দৈনিক ইনকিলাব, শুক্রবার ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৩৯৪) অনুবাদ: মুহি উদ্দীন খান।
৭. উগাণ্ডায় বাংলাদেশী এক দায়ী মাওঃ মোস্তাক মোহাম্মদ ইমরান খান ও তার সাথীদের প্রচেষ্টায় সাধারণ থেকে আরম্ভ করে জেল খানায় পর্যন্ত দাওয়াতে তাবলিগের উসিলায় তিন বছরের ব্যবধানে হাজারের অধীক মুসলমান হয়েছেন।তন্মধ্যে ত্রিশ জন জেল খানাতেই ইসলাম গ্রহন করেছেন। সুতরাং এ প্রশ্নটি অবান্তর যে, তারা
৮. বাংলাদেশ; দিনাজপুরের হিজলা বনের ভিতরে প্রায় সাওতাল উপজাতীয়দের বসবাস । সেখানে প্রায় সকল সাওতালকে খৃষ্টান মিশনারীরা খৃষ্টান বানিয়ে ফেলেছে। তার পরও বর্তমানে সেখানে সরাসরি গির্জায় ঢুকে সরাসরি খৃষ্টান পাদ্রি সহ অন্যান্যদের মধ্য দাওয়াত দেয়ার জন্য এক দল দায়ী মুফতি যুবায়ের আহমাদএর নেতৃত্বে ছুটে গেছেন। তাছাডা বিভিন্ন জামাতের নেতৃত্বে ও দেশের বিভিন্ন উপজাতীয় এলাকা সহ অন্যান্য স্হানে দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।এমনকি এই দ্বীনের দায়ীগন হিন্দু,বৌদ্ধ খৃষ্টানদের বুকে জডিয়ে ধরে অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াত তাদের কর্ণ কুহরে পৌঁছিয়ে দিতে সচেষ্ট রয়েছেন।এবং সফলতাও পাচ্ছেন।অপর দিকে উত্তরবঙ্গে অনেক গরীব এলাকা রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন মুসলিমদের প্রলোভন দেখিয়ে খৃষ্টান বানানোর পর এই সকল দায়ীদের মেহনতে আবার স্বধর্মে প্রর্ত্যাবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছেনপাবর্তীপুর, দিনাজপুরে। পঞ্চগড তালিমুদ্দিন ফাউন্ডেশনের আওতায় এক দল দায়ী। তাছাডা দেশের অন্যান্য স্হানেও ননমুসলিমদের দাওয়াত দেয়ার জন্য এজতেমায়ী এনফেরাদী সব পর্যায়ে আমল হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ ।আল্লাহ এই সকল দ্বীনি ভাইদের হাওছেলাহ আরও বাডিয়ে দিন আমিন।সুতরাং অমুসলিমদের দাওয়াত দেয় না, এমন কথা বলার অবকাশ নেই। হ্যাঁ তারা ডাকঢোল বাজিয়ে এসব করে না ঠিক। তবে এ কাজগুলোতে তাদেরই ভূমিকা সবচেয়ে বেশী।
9. ১ চিল্লার মেহনতে ১৮০০
বিধর্মীর ইসলাম গ্রহণ !!!
মাওলানা তারিক জামিল
সাহেব এক বয়ানে বলেন-
আমেরিকার শিকাগো শহরের
টেক্সিচালকদের একটি জামাত
৪০ দিনের জন্য
ব্রাজিলগিয়েছিলো। এক
চিল্লার মেহনতে তাদের
হাতে ১৮০০ ব্রাজিলীয় মুসলমান
হয়েছে। আঠার শত(১৮০০)
সদস্যের একটা গোত্রের সবাই
ইসলাম গ্রহণ করেছে। প্রথমে
গোত্র-প্রধানকে দাওয়াত দেয়া
হয়েছিলো। সে ইসলাম গ্রহণ করে
গোত্রের সবাইকে সমবেত করে
দাওয়াত দিলে তারাও ইসলাম
গ্রহণ করে।
ভায়েরা আমার ! এটা হলো
সামান্য একটু মেহনতের ফলাফল।
আর যখন সকল মুসলমান এই
দাওয়াতের মেহনতকে
আপন যিম্মাদারী মনে করে এতে
ঝাপিয়ে পড়বে তখন অবস্তা কী
দাড়াবে একটু ভেবে দেখুন। সমগ্র
পৃথিবীতে অতিদ্রুত ইসলামের
প্রসার ঘটবে ইনশাআল্লাহ। সমগ্র
দুনিয়ার মানুষ এখন ইসলামের জন্য
উদগ্রীব।দুনিয়ার প্রত্যেক
প্রান্তে তাবলীগ জামাতের
অপেক্ষা করা হচ্ছে, তাদেরকে
কোথাও পেলে লোকেরা
তাদের খেদমত করার জন্য ছুটে
আসে। কে কার আগে খেদমত
করবে তার জন্য রীতিমত
প্রতিযোগিতা চলে।
আল্লাহ আমাদের জান-মালকে
এই মেহনতে কবুল করুন।
আমিন,,,,,,,,,,
এমনি হাজারো ঘটনা বর্নণা করে শেষ করা যাবেনা ।
লেখক;_
মৌলানা আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
দাওরায়ে হাদিস মাষ্টার্স
জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া
লেখক গবেষক ইসলামি অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ব্লগার

1 টি মন্তব্য:

  1. ‘জিহাদি বই’ শব্দটি ইসলামের ‘শত্রু’দের আবিষ্কার।

    ‘জিহাদি বই’ শব্দটির এ রকম ব্যবহার 20/30 বছর আগেও ছিল না। আগে তফসির, ফিকাহ, হাদিস গ্রন্থ, ইসলামের ইতিহাস বই, ইসলামি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই, ইসলামি অর্থনীতির বই এভাবে বলা হতো। এখন বর্তমানে " ইসলামের ইতিহাস গ্রন্হ "এমন কি হাদিস বা তাফসীর গ্রন্হ কে জেহাদি বই হিসাবে চারিয়ে দেয়া হচ্ছে । এটা বড়ই দুঃখ জনক উদ্দেগের ব্যাপার

    জিহাদ নানা ধরনের হতে পারে। যুদ্ধ বা জেহাদ তার একটি দিক মাত্র। নফসের বিরুদ্ধে, রিপুর বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ হতে পারে।

    যুদ্ব মুখে হতে পারে কলমের সাহার্য্যে হতে পারে ,কেননা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলাও জেহাদ এ গুলো ও এক ধরনের জেহাদ, কেননা জেহাদের একটা অর্থ চেষ্টা করাও আছে সে হিসাবে কেউ সংসারের ব্যায় ভার বহন করার জন্য সন্তান সন্ততীর মুখে হাসি ফুটানোর দেশে-বিদেশে মাথার ঘাম পাতালে ফেলে হাড়ভাঙ্গা চেষ্টা মেহনত করছে ,সেটাও এক প্রকারের জেহাদ । তবে শত্রুর বিরুদ্ধে ঢাল-তলোয়ার অস্রসস্র দিয়ে মোকাবেলা করা জিহাদের চূড়ান্ত রূপ যুদ্ধ। এটা শুধু রাষ্ট্র করতে পারে, ব্যক্তিগত নয় -তাও এ যুগে আন্তর্জাতিক আইন মেনে করতে হয়। মুসলিম রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিয়েছে। ইসলাম বলেছে ওয়াদা-চুক্তি রক্ষা করতে হবে। এ কারণে কোনো মুসলিম রাষ্ট্র এখন যুদ্ধ/জেহাদ করতে চাইলেও করতে পারে না। যে কেউ এটা করে সে অন্যায় করে।

    সে ইউরোপ আমেরিকাই করুক বা অন্য কোনো ইসলামি রাষ্ট্রই করুক।

    সন্ত্রাস জিহাদ নয়, জিহাদ নয়, জিহাদ নয়। সন্ত্রাস সন্ত্রাসই ,সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্কও নেই ।ইসলাম কখনো সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ কে প্রস্রয় দেনি দিবেওনা

    বর্তমান জঙ্গিবাদ একটি কালচার যেমনি ভাবে নাস্তিক্যবাদ একটি কালচার ।এদুয়ের কোন দেশ জাতি বা ধর্ম নেই

    উত্তরমুছুন