শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

মধুর উৎস কোথায় ?

মধু বিক্রেতারা এত মধু পায় কই?জনৈক ব্যক্তির এমন প্রশ্নে অামাকে মধুর উৎস খুজতে বাধ্য করেছে। তাই অামি ব্যক্তিগত গবেষনার জন্য মধুর  উৎস খুজতে থাকি।তাই  বিভিন্ন গবেষক, কৃষিবিদ, সহ টেলিভিশনের প্রোগ্রাম খুজতে থাকি শেষ পর্যন্ত অামার প্রাপ্ত গবেষনা/ তথ্য  সহ সাধারনত সত্য সন্ধানীদের  জন্য। 

,এখানে বৈশাখী টেলিভিশনের কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান, হাসনাত সোলায়মান গবেষক উদ্বানতত্ব বিভাগ শেরে বাংলা কৃষি বিদ্যালয় এর উপস্হাপনায় বিসিকের মাঠ পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অালোকে অামার এ গবেষনাতত্ব।

মুলত অজ্ঞতাবশত প্রশ্নটি করা হয়েছে,  কারন যারা গ্রামে গঞ্জে বসবাস করেন  হয়তো তার জীবনে ২/৪/১০ টি মধুর বাসা দেখেছেন, এমন ব্যক্তি যখন শুনবে যে মণ কে মণ  টন কে টন মধুর ভান্ডার এর কথা স্বাভাবিক ভাবেই তার মনে প্রশ্ন জাগার কথা।

কারণ পূর্বেকার সময় গ্রামে-গঞ্জে গাছে বনে জঙ্গলের মধুর বাসা থেকেই  শুধু মাত্র মধু অারোহন করা হত কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে বৈজ্ঞানীক পদ্ধতিতে বিভিন্ন খেতে কাঠের বাক্সে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে টনে টনে মধু অারোহন করা হচ্ছে।
এমন তথ্য সমপর্কে অনেকেই ওয়াকেফহাল নয়।তাই এমন অদ্ভুত প্রশ্ন।

বর্তমানে "বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কর্পোরেশন " বিসিক এর সহায়তায় ২০১২-২০১৭ দীর্ঘ ৫ বছরের জন্য   ৯  কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মৌচাষ প্রকল্প চালু করা হয়।  এপ্রকল্পের অাওতায় বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্তা করে মৌচাষের জন্য প্রয়োজনীয় সরাঞ্ঝাম  যেমন মৌবাক্স, হাত মোজা,ধোঁয়ার মেশিন সহ মধু নিশকাষন মেশিন বা যন্ত্র সহ যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়। ৪৪ জেলায় কর্ম সুচি পরিচালনা করা হচ্ছে তন্মধ্যে ২ কোটি টাকা ঋণ ও দেয়া হচ্ছে।

এবং ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৭ হাজার মৌচাষিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে  প্রস্তুত করা হয়।  এগ্রিকালচার সোসাইটি র রিপোর্ট  ২০১৩-১৪ মোতাবেক  বছরে প্রায়  ১ হাজার ৪ শত টন মধু অারোহন করা হয় কিন্তু চাহিদা রয়েছে প্রায়  ৩ হাজার টন।
উক্ত সেক্টরে( ২০১৩-১৪) কর্মরত অাছেন প্রায় ২ লক্ষাধিক প্রশিক্ষিত মৌচাষি। তারা সারা  বছর বিভিন্ন  ফল অার ফসলের মৌসমে মৌবাক্স বসিয়ে মধু অারোহন করে জিবীকা নির্বাহ করছেন এতে করে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্তা হচ্ছে তেমনি বিভিন্ন পর্যায়ে লোকদের ক্ষুদ্র ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।  (তথ্য সুত্র:- শ্যাম সুন্দর শিকদার চেয়ারম্যান বিসিক) পক্ষান্তরে বিদেশ থেকে মধু অামদানি কমেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন উক্ত সেক্টর থেকে বছরে প্রায়  ১ হাজার  কোটি টাকা অায় করা সম্ভব। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রায়   অাডাই হাজার টন মধু উতপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তাহলে কি পরিমাণ মধু অামাদের দেশে উতপাদন হচ্ছে  তা উপলব্দির সময় এসেছে। তাছাডা সাতক্ষিরাতে মধু সংরক্ষণাগার নির্মান করা হচ্ছে ভবিষ্যৎ এ দেশের চাহিদা পুরন করে বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।  


পৃথিবীতে মৌচাষের জনক Langstroth's এর নেত্বীত্বে ১৮৯৩ সাল থেকে মৌচাষ শুরু হলেও বাংলাদেশে ১৯৬৩ সাল থেকে ডঃ অাঃ হামিদ খানের প্রচেষ্টায় শুরু হলে ও বর্তমানে বানিজ্যিক ভাবে মৌচাষ করা হচ্ছে।
বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ৫ প্রকারের মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু অারোহন করা হয়। যেমন  ১' এপিস মেলিপেরা, ২' এপিস ডরসাটা,৩'  এপিস সেরেনা, ৪' এপিস ফ্লোরিয়া,  ৫' এপিস ট্রাইগোনা।
তবে উপপ্রজাতি সহ প্রায় ২ হাজার প্রজাতির  মৌমাছি  রয়েছে।  (হাসনাত সোলায়মান গবেষক উদ্বানত্ব) 

তবে বাংলাদেশে শুধু মাত্র ২ প্রজাতি তথা এপিস মেরিফেরা ও এপিস ফ্লোরিয়া মৌমাছির চাষ বা পালন করা হয়।তবে  এ ২ প্রজাতির মৌমাছি কিন্তু কামডায় না বলে মধু চাষ বা অারোহন সহজ হয়।কাজেই যাদের কাছে এমন তথ্য জানা থাকবে তাদের মনে  অার প্রশ্নের উদয় হবেনা অাশা করি।

এম এম অাবদুল্লাহ ভুঁইয়া
লেখক গবেষক 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন