বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৮

আল্লাহ শব্দটিও আদিকাল থেকেই প্রচলিত

"আল্লাহ শব্দ " আদিকাল থেকেই প্রচলিত-ঃ
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
কিছু অহংকারী,স্রষ্টাকে অস্বীকারকারী ,ইতিহাস বিকৃতিকারী গুষ্টির  কেউ বলেন যে "আল্লাহ" শব্দটা নাকী জাহেলিয়াতের শব্দ তারা বলে থাকেন যে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ  পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ, আবদ+আল্লাহ= আব্দুল্লাহ। আরবী আবদ অর্থ- দাস, অর্থাৎ আল্লাহর দাস। কিন্তু কোন্ আল্লাহর দাস? তখন তো মক্কায় ইসলাম প্রচার হয়নি। অর্থাৎ তখন মক্কার কুরাইশরা সবাই ছিল মূর্তি পুজক?

এর জবাবে বলতেচাই যে,

সর্ব প্রথম আমাদের কে জানতে আইয়্যামে জাহেলিয়াত কাকে বলে? আইয়্যামে জাহেলিয়াত তথা বর্বর বা অন্ধকার যুগ বলা হয় হযরত ঈসা আঃ কে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নেয়ার পর থেকে সাইয়্যেদুল মুরসালীন নবী মুহাম্মদ সাঃ এর আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত  মধ্যবর্তী  প্রায়  ৫৭০ বছর পর্যন্ত এই সময়কেই বলা হয় আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা  অন্ধকার যুগ ।

আর সেই নাস্তিক আঃ গাফ্ফার চৌধুরী বলছেন "আল্লাহ" শব্দটির উৎপত্তি নাকী জাহেলিয়াতের যুগ থেকে ।
আসলে সে জাহেলিয়াতের যুগ কাকে বলে সেই ইতিহাসের খবর ও তার কাছে নেই অথচ সে নাকী কলামিষ্ট্!
1. আসলে আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের মক্কার সেই কাফেরদের সংস্কৃতি থেকে আসেনি, বরং "আল্লাহ" শব্দটি প্রথম মানব ও নবী হযরত আদম আঃ এর সময় থেকেই পরিচিত ছিল, আর  আদম আঃ- হইতে নবী ঈসা আঃ এর পূর্ববর্তী সময়কে জাহেলিয়াতের যুগ বলা হয়না । তাহলে "আল্লাহ "শব্দটি জাহেলিয়াত যুগের শব্দ হল কি করে?

2.এর থেকে যদি পিচনে তাকাই  তাহলে দেখি  যে, আমরা পৃথিবীর আদি বসতি জিনদের ইতিহাস দেখি বা ফেরেসতাদের এবাদতের ইতিহাস দেখি সেখানে বলা হয়েছে "আল্লাহর "এবাদতের জন্য পৃথিবীতে যে ঘর নির্মান করা হয়েছিল তাছিল মক্কার সেই কাবা,"তথা বায়তুল্লাহ"  বায়ত+ আল্লাহ)    অর্থাৎ সেখানে "আল্লাহ" শব্দ এসেছে।

3.তাছাড়া  আদম আঃ এর সময় তাওহিদের কালিমা ছিল "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ আদমু ছফিউল্লাহ " (ছফি+আল্লাহ)আবার নূহ আঃ সময়"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ নূহ রাসুলুল্লাহ "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মুসা কালিমুল্লাহ"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ ঈসা রুহূল্লাহ ইত্যাদি ।"আল্লাহ" শব্দটি  উচ্চারীত হচ্ছে    যা আদি কাল থেকেই প্রত্যেক  যুগেই পরিচিত ছিল,।

4 . আল্লাহ শব্দটি আসমানেই লেখা ছিল,যেমন হাদীসে এসেছে আদম আঃ দুনিয়াতে আসার পর দীর্ঘ ১হাজার বছর পর্যন্ত  কান্নাকাটি করার পর হঠাৎ দেখতে ফেলেন আসমানে লেখা "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" এই পাক কালিমার ওসীলা দিয়ে  দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে ক্ষমা করে দিলেন। এখানে লক্ষনীয় হল উক্ত পাক কালিমায় এক সাথে ২ স্হানে আল্লাহ শব্দ  পাওয়া যায়, উল্লেখ্য তখন জাহেলিয়াত , মূর্তি বা দেবতার কল্পনাও করা যায়নি ,সে সময় ও "আল্লাহ" শব্দ বিদ্ধমান ছিল।

আর আদম আঃ থেকে শুরু করে নূহ আঃ এর যূগ পর্যন্ত তৎকালীন সকল মানুষই তাওহীদ তথা একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন , মুসলিম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আত্নসমর্পণকারী ছিলেন,কোন কুফর- শীর্ক বা মূর্তি দেবতা পূজা তাদের কে স্পর্শ করেনি।আল্লাহকে আল্লাহ হিসাবেই মানতো,চিনতো। কিন্তু এর পরবর্তিতে নূহ আঃএর বংশে কুফর শীর্ক মূর্তি পুজা আরম্ভ হলেও,আল্লাহ কে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে মূর্তি বা দেবতাদের ডাকতো এই ভেবে যে তারা আল্লাহর নিকটবর্তি করে দেবে, আল্লাহর কাছে সুপারীশ করবে ইত্যাদি।

  আল্লাহ শব্দটি আদি কাল থেকেই ছিল। আল্লাহর অস্বীস্ত নিয়ে বা তাঁর সার্বভৌমত্ব  নিয়ে কারো প্রশ্ন ছিলনা,কিন্তু  তারা  সেই মহাপরাক্রমশালী  আল্লাহকে পাবার জন্যই মাধ্যম ধরেছিল। আর সেই মাধ্যম হল তৎকালীন সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গের মূর্তি । তারা সেই  প্রতিমা বা দেবতা  পূজা করত আল্লাহকে পাবার জন্য।

পরবর্তিতে কাফেররা আল্লাহকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেবতাদেরকেও ডাকতো সহযোগী হিসাবে, যেমন আজকাল আমাদের দেশের হিন্দুরাও মূর্তি-দেবতা পুজায় সেরা হওয়ার পরও জিজ্ঞাসা করলে বলবে , আল্লাহ একজন ,খৃষ্টানরাও তাই বলে, তবে সাথে অংশীদারিত্ব সাব্যস্হ করেন, যা ইসলাম এলাউড করেনা।

সুতরাং আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের কাফেরদের শব্দ নয় বরং এই শব্দটি আদিকাল থেকেই পরিচিত একটি শব্দ একটা সত্বা, যিনি হলেন আমার আপনার সকলের সৃষ্টি কর্তা । আল্লাহ তায়ালা।আল্লাহ যেমন আযলী-আবদী  তেমনি তার নামও আযলী- আবদী।

যদিও আজকাল গন্ডমূর্খ গাফ্ফার গংরা ইতিহাস বিকৃতী করে জাতিকে  বিভ্রান্তী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে ।তবে জেনে রাখা ভাল এই ইতিহাস বিকৃতীকারীরাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন