বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৯

আল্লাহর রসুল নাকি মুসলিম ও মুমিন ছিলেন না ? নাউয়ুবিল্লাহ ,একটি পর্যালোচনা

           আল্লাহর রসুল নাকি মুসলিম ও মুমিন ছিলেন না ?  নাউয়ুবিল্লাহ ,একটি পর্যালোচনা

                    এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 

বর্তমান ফেতনা আর ফাসাদের যুগে একে অপরকে কাফের মুশরিক আর মুনাফিক বলাটা একেবারেই একটা পেশন হয়ে দাডিয়েছে । কিন্তু দুঃখের বিষয় কিছু গন্ড মূর্খ জাহেল বক্তা নামের কলঙ্ক  আল্লাহর রাসুল সাঃ ও ছাডেন নি ।আল্লাহর   রসুল সাঃ নাকি মুসলমান ছিলেন না (নাউজু বিল্লাহ

কত বড জাহেল আর মুর্খ হলে এমন কথা বলতে পারে হায়রে জাহালাত (অজ্ঞতা, মুর্খতা) কতটুকু হলে এমনটি বলতে পারে  আবার অন্য এক  ওয়ায়েজ বলছেন: “আমার নবী মুসলমান ও নয়, আমার নবী ইমানদারও নয়নাউজু বিল্লাহনবী মুসলমান হলে নাকি আমাদের সমান হয়ে যান কারণ আমরাও মুসলমান হায়রে আফসোস
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হয়তো  বড় বলতে গিয়ে মুসলমান নয়, ইমানদার নয় বলতে হচ্ছে? নাউজু বিল্লাহ। মূলত তারা ঐ সকল ইহুদী খৃষ্টানদের মত আচরণ করছেন যারা অতি ভক্তির কারণে হযরত ওযাইর আঃ ও ঈসা আঃ কে আল্লাহর একটা অংশ তথা পুত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন । নাউযুবিল্লাহ ।


জাহালাত বা অজ্ঞতা কত মারাত্মক আকার ধারণ করলে মানুষ রকম ওয়াজ করতে পারে?
এদের ওয়াজ শুনে মানুষ হেদায়ত পাওয়া তো দূরের কথা, বরং গোমরাহ হবে এ সকল বক্তা যারা নামের সাথে কাদেরী রেজভী হাশেমী নূরী মাইজভান্ডারি    ইত্যাদি উপাধী গুলো ধারন করেন এমন সব বক্তারাই যখন  বললেন যে ' আমার নবী মুসলমান নয় বরং ইসলাম ' ' ঈমানদার নয় বরং ঈমান '  এমন কথা জাহেল মুর্খ আর পথভ্রষ্ট ছাডা কেউ  বলতে পারেন না।  মুসলিম বা মুসলমান কী আর ইসলাম কী? ঈমান কী আর ঈমানদার কী? এই বিষয়েও  স্বল্পজ্ঞান ও যাদের নাই তারা বক্তা হয় কি ভাবে।???
ইসলাম কীআর মুসলমান কে? ঈমান কি আর ঈমানদার কি  তা আমরা সবাই জানি কিন্তু অন্ধ জাহেল বক্তারা কিন্তু তাও জানেনা কিন্তু তার পরও মানুষের ঈমান হরণ করার জন্য বক্তা সেজে বসে আছে।
আমরা সর্ব প্রথম সংক্ষপে  জানার চেষ্টা করবো
মুসলিম কাকে বলে
?
মুসলিম অর্থ অনুগত অনুসরন করা । পরিভাষিক অর্থ হল, যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগত হয়, আল্লাহকে নিজের মালিক , প্রভু মাবুদ হিসেবে মেনে নেয়, নিজেকে পুরোপুরি আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দেয় এবং দুনিয়ায় আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করে সে- মুসলিম আকীদা-বিশ্বাস কর্মপদ্ধতির নাম 'ইসলাম' ।আর এ কর্ম পদ্ধতি মহান আল্লাহ তার হাবীব মুহাম্মদ সাঃ এর মাধ্যমে পৃথিবী বাসীকে জানিয়েছেন। মানব জাতির সৃষ্টিলগ্ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জাতির মধ্যে যেসব নবী এসেছেন এটিই ছিল তাঁদের সবার দীন জীবন বিধানসে হিসাবে এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রসুল সাঃ কি আল্লাহর অনুগত্য করেন নি? আমরা আবশ্যই বলবো যে আমাদের রসুল আল্লাহর আনুগত্য করার মতই করেছেন বরং পূর্ণাজ্ঞঙ্গ হক আদায় করেই করেছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।=============
আরও একটু ব্যখ্যা সহকারে বললে আরও স্পস্ট হবে যেমন  ইসলাম অর্থ কি? মুসলিম কাকে বলে?

ইসলাম আরবী শব্দ যার অর্থআনুগত্ত করা বা আত্মসমর্পন করা
আর শান্তির আরবী শব্দ হচ্ছেসালাম
আরবী ভাষার বিখ্যাত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অভিধানইবনে মানজুর রচিতলিসানুল আরব বলা হয়েছে, ইসলাম শব্দটিইসতিসলাম ( ﺍﺳﺘﺴﻼﻣﺎ) শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে কারো কাছে নত হওয়া, আত্মসমর্পণ করা
: আমাদের অনেকেই মনে করিﺳﻠﻢ এই তিনটি অক্ষর থেকে যেহেতু ইসলাম সালাম উভয় শব্দের উৎপত্তি, তাই উভয় এর অর্থ একই হবে
অথচ বাস্তবে একই মূল ধাতু থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন শব্দের অর্থ ভিন্ন ভিন্ন হয়। :
যেমনঃ ﺳﻠﻢ থেকে উৎপন্ন শব্দ সমূহ হলোঃ ইসলামﺍﺳﻼﻡআত্মসমর্পণ সালাম- ﺳﻼﻡভালো থাকা / শান্তি সালামা- ﺳﻠﻤﺎচামড়ার প্রস্তুতি (ট্যানারী) সালিমা- ﺳﻠﻴﻤﺎবিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া (স্ত্রী বাচক) সালিমﺳﻠﻴﻢবিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া (পুং বাচক) আসলাম- ﺍﺳﻠﻢ -সপে দেয়া (submit) ইসতিসলাম- ﺍﺳﺘﺴﻼﻣﺎ -আত্মসমর্পণ করা মুসালﻣﺴﻞ -যাতে কোন মতদ্বন্দ হয়নি (Undisputed) : বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ সাহিব বিন আব্বাদ [ ﺍﻟﺼﺎﺣﺐ ﺑﻦ ﻋﺒﺎﺩ ] (মৃত্যুঃ ৩৮৫ হিজরী) রচিত আল-মুহিত ফিল লুগাহ [ ﺍﻟﻤﺤﻴﻂ ﻓﻲ ﺍﻟﻠﻐﺔ ] এর ﺳﻠﻢ অধ্যায়
: প্রসিদ্ধ ফিক্বাহ গ্রন্থ ইমাম ইবনে আবেদীন (রাহিমাহুল্লাহ) রচিতরুদ্দুল মুহতারে ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ ﺷﺮﺡ ﺗﻨﻮﻳﺮ ﺍﻷﺑﺼﺎﺭ ) বলা হয়েছেঃ ﺍﻋْﻠَﻢْ ﺃَﻥَّ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡَ ﻋَﻠَﻰ ﻭَﺟْﻬَﻴْﻦِ : ﺷَﺮْﻋِﻲٍّ ، ﻭَﻫُﻮَ ﺑِﻤَﻌْﻨَﻰ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ . ﻭَﻟُﻐَﻮِﻱٍّ ، ﻭَﻫُﻮَ ﺑِﻤَﻌْﻨَﻰ ﺍﻟِﺎﺳْﺘِﺴْﻠَﺎﻡِ ﻭَﺍﻟِﺎﻧْﻘِﻴَﺎﺩِ ﻛَﻤَﺎ ﻓِﻲ ﺷَﺮْﺡِ ﺍﻟْﻌُﻤْﺪَﺓِ ﻟِﻠﻨَّﺴَﻔِﻲِّﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ/২৯৮

অর্থাৎ, “জেনে রাখো, ইসলামের অর্থ দুইটি
ইসলামী শারীয়াতের পরিভাষায়ঃ এটার অর্থ হচ্ছে ঈমানআভিধানিক / শাব্দিক অর্থে এর অর্থ হলোঃ আত্মসমর্পণ ﺍﻟِﺎﺳْﺘِﺴْﻠَﺎﻡِ এবং মান্য করা ﻭَﺍﻟِﺎﻧْﻘِﻴَﺎﺩِ ঠিক যেভাবে ইমাম নাসাফীর আল-উমদাহ এর ব্যাখ্যাগ্রন্থে এসেছে
: ইবনে তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) মাজমু আল ফাতওয়াতে বলেছেনঃ : ﻓَﺎﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡُ ﻳَﺘَﻀَﻤَّﻦُ ﺍﻟِﺎﺳْﺘِﺴْﻠَﺎﻡَ ﻟِﻠَّﻪِ ﻭَﺣْﺪَﻩُﻣﺠﻤﻮﻉ ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ /৯১ . অর্থাৎ, “ইসলাম এর অর্থের মধ্যে রয়েছে এক আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা
: ইসলামের শত্রুরা বিভিন্ন ভাবে আমাদের মধ্যে অনেক ভুল ধারনা ঢুকিয়ে দিতে চায়যাতে আমরা প্রকৃত ইসলাম না জানি, সেটা থেকে দূরে থাকি, তাহলে তারা আমাদেরকে পরাজিত করে রাখতে পারবেযার একটা উদাহরণ হলোঃ স্বয়ংইসলাম শব্দের অর্থ এর ভুল আভিধানিক অর্থের প্রচলন
//: অনেক মুসলমান সঠিক ব্যাপারটা না জানার কারণেইসলাম মানে শান্তি বলে থাকেনইংরেজরা যখন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে, তখন তৎকালীন ইংরেজ গভর্ণর ডঃ ম্যাকলিকে আলিয়া মাদ্রাসার সিলেবাস তৈরী করার দায়িত্ব দেয়
এই সুযোগে তারা ইসলামের অনেক মৌলিক পরিভাষা; যেমন ইসলাম, ইলাহ, রব, তাওহীদ, শিরক, তাগুত, জিহাদ ইত্যাদি পরিবর্তন করেতন্মধ্যে বাত্বিলের সাথে ইসলামের অনিবার্য দ্বন্দ সংঘাতকে এড়ানো জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ইসলামের অর্থশান্তি হিসেবে প্রচার করে থাকে
জিহাদ সহিংস দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসলামশান্তির ধর্ম এরকম একটি ব্যঙ্গাত্মক বিবৃতি সংক্রান্ত একটি অকৃতজ্ঞ সমালোচনার জবাবে উল্লেখিত ইসলামের ভাষাগত মৌলিক ব্যাখ্যা অর্থ তুলে দরা হল
আল্লাহ বলেনঃ ‘’আর যে আল্লাহ এর উদ্দেশে আত্মসমর্পণ করেছে সৎকাজ করে এবং ইব্রাহিমের সুদৃঢ় ধর্মের অনুসরণ করে, তার অপেক্ষা কার ধর্ম উৎকৃষ্ট? এবং আল্লাহ ইব্রাহিমকে স্বীয় বন্ধুরুপে গ্রহন করেছিলেন‘’ (সুরা নিসা: ১২৫)
‘’যখন তার প্রভু তাকে বলেন, তুমি আনুগত্য স্বীকার কর, সে বলেছিলঃ আমি বিশ্ব জগতের প্রতিপালকের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম(আল বাকারা: ১৩১)


তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম যে মুসলিম শব্দের অর্থ আত্নসর্মপনকারী,  অনুগত কারী  এখন প্রশ্ন হল আমাদের নবী মুহাম্মদ সাঃ কি আত্নসমর্পনকারী ছিলেন না?  আবশ্যই তিনি আত্মসমর্পণ কারী ছিলেন তার মত আত্মসমর্পণ কারী তথা মুসলিম আর কেউ হতে পারেনা।

এখন আমি কয়েকটি কোরান মজিদের আয়াতের উল্লেখ করছি  তার অর্থ সহ যেখানে নবী রাসুলগণ নিজেদেরকে মুসলিম বলেছেন।আরবি মুসলিম শব্দের অর্থ বাংলায় যেখানে আনুগত্যকারী বলা হয়েছে সেখানে মুসলিম অর্থ মুসলিম অথবা মুসলমান  তাহলে বুঝত সহজ হবে। انا مسلم অর্থ আমি মুসলিম বা আমি মুসলমান। এ তবুও অনুবাদকারীগণ যা লিখেছেন শাব্দিক অর্থে আনুগত্যকারী তা আমি পরিবর্তন করলাম না।যা উপরে আলোকপাত করা হয়েছেকোরান মজিদে আল্লাহ বলছেন:قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (162) لَا شَرِيكَ لَهُ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (163)( 162 ) আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কোরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে।( 163 ) তাঁর কোন অংশীদার নেই আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল।[ আর্তসমর্পনকারী বা মুসলিম]
সুরা আনআম।
فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَمَا سَأَلْتُكُم مِّنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ ۖ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ (72)
অর্থ: তারপরও যদি বিমুখতা অবলম্বন কর, তবে আমি তোমাদের কাছে কোন রকম বিনিময় কামনা করি না। আমার বিনিময় হল আল্লাহর দায়িত্বে। আর আমার প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন আমি আনুগত্য অবলম্বন করি। সুরা ইউনুছ, ৭২। 


إِذْ قَالَ لَهُ رَبُّهُ أَسْلِمْ ۖ قَالَ أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
স্মরণ কর, যখন তাকে তার পালনকর্তা বললেনঃ অনুগত হও। সে বললঃ আমি বিশ্বপালকের অনুগত হলাম। [তথা বিশ্বপ্রতিপালকের নিকট আত্বসমর্পণ করলাম ] বাকারা, ৩১। 


رَبِّ قَدْ آتَيْتَنِي مِنَ الْمُلْكِ وَعَلَّمْتَنِي مِن تَأْوِيلِ الْأَحَادِيثِ ۚ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَنتَ وَلِيِّي فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ۖ تَوَفَّنِي مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
হে পালনকর্তা আপনি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতাও দান করেছেন এবং আমাকে বিভিন্ন তাৎপর্য সহ ব্যাখ্যা করার বিদ্যা শিখিয়ে দিয়েছেন। হে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা, আপনিই আমার কার্যনির্বাহী ইহকাল ও পরকালে। আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যুদান করুন এবং আমাকে স্বজনদের সাথে মিলিত করুন। সুরা ইউছুফ, ১০১।


إِنَّا أَنزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ ۚ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا لِلَّذِينَ هَادُوا وَالرَّبَّانِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوا مِن كِتَابِ اللَّهِ وَكَانُوا عَلَيْهِ شُهَدَاءَ ۚ فَلَا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلَا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلًا ۚ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
অর্থ: আমি তওরাত অবর্তীর্ন করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। আল্লাহর আজ্ঞাবহ পয়গম্বর, দরবেশ ও আলেমরা এর মাধ্যমে ইহুদীদেরকে ফয়সালা দিতেন। কেননা, তাদেরকে এ খোদায়ী গ্রন্থের দেখাশোনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং তাঁরা এর রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত ছিলেন। অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না, যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। সুরা মায়েদা, ৪৪।


وَإِذْ أَوْحَيْتُ إِلَى الْحَوَارِيِّينَ أَنْ آمِنُوا بِي وَبِرَسُولِي قَالُوا آمَنَّا وَاشْهَدْ بِأَنَّنَا مُسْلِمُونَ
আর যখন আমি হাওয়ারীদের মনে জাগ্রত করলাম যে, আমার প্রতি এবং আমার রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তখন তারা বলতে লাগল, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা অনুগত্যশীল। সুরা মায়েদা, ১১১।


উপরোক্ত আয়াতগুলোতে নবী রাসুলগণ নিজেদেরকে মুসলিম বলেছেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশও আছে যে, নিজেকে মুসলিম বলুন। তাঁরা তাই বলেছেন। তারপরও রাসুল সা.কে বড় বলার জন্য মুসলমান নয় বলতে হবে কেন?এটা কি ডাহা মিথ্যা নয়? এটা কি কোরআনের অপব্যাখ্যা নয়? এটা কি কোরআনের আয়াত অস্বীকার করা নয়?
আমরা মনে করি আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টি জগতের মধ্যে সব চেয়ে শ্রেষ্ট। সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামের সরদার। আল্লাহর পরে তাঁর মর্যাদা।তিনিই সর্ব শ্রেষ্ঠ মহামানব এবং সমগ্র নবী-রসুলদের সরদার তিনিই আল্লাহর কাছে আত্বসমর্পনকারী তথা মুসলিম।


আর মোমেন বা ইমানদার হওয়া সম্পর্কে যেমন

পবিত্র কুরআন বলা হয়েছেঃ
ﻟَّﻴْﺲَ ﺍﻟْﺒِﺮَّ ﺃَﻥ ﺗُﻮَﻟُّﻮﺍ ﻭُﺟُﻮﻫَﻜُﻢْ ﻗِﺒَﻞَ ﺍﻟْﻤَﺸْﺮِﻕِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻐْﺮِﺏِ ﻭَﻟَٰﻜِﻦَّ ﺍﻟْﺒِﺮَّ ﻣَﻦْ ﺁﻣَﻦَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻠَﺎﺋِﻜَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺒِﻴِّﻴﻦَ ﻭَﺁﺗَﻰ ﺍﻟْﻤَﺎﻝَ ﻋَﻠَﻰٰ ﺣُﺒِّﻪِ ﺫَﻭِﻱ ﺍﻟْﻘُﺮْﺑَﻰٰ ﻭَﺍﻟْﻴَﺘَﺎﻣَﻰٰ ﻭَﺍﻟْﻤَﺴَﺎﻛِﻴﻦَ ﻭَﺍﺑْﻦَ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻞِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺎﺋِﻠِﻴﻦَ ﻭَﻓِﻲ
ﺍﻟﺮِّﻗَﺎﺏِ ﻭَﺃَﻗَﺎﻡَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗَﻰ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺍﻟْﻤُﻮﻓُﻮﻥَ ﺑِﻌَﻬْﺪِﻫِﻢْ ﺇِﺫَﺍ ﻋَﺎﻫَﺪُﻭﺍ ۖ ﻭَﺍﻟﺼَّﺎﺑِﺮِﻳﻦَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺒَﺄْﺳَﺎﺀِ ﻭَﺍﻟﻀَّﺮَّﺍﺀِ ﻭَﺣِﻴﻦَ ﺍﻟْﺒَﺄْﺱِ ۗ ﺃُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺻَﺪَﻗُﻮﺍ ۖ ﻭَﺃُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺘَّﻘُﻮﻥَ
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যেআর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার
উক্ত আয়াতে মোমেনদের গুনাগুন বর্ণনা করা হয়েছে, এ গুন কি  নবী সাঃ এর কাছে ছিলনা?? আবশ্ই ছিল তিনিই তো উম্মতকে শিখিয়েছেন।  তিনিই ফাস্ট  মোমেন বা ইমানদার।


আরও যেমন 
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ
মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে,
23:2
الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ
যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;
وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ
যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,
23:4
وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ
যারা যাকাত দান করে থাকে
23:5
وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ
এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে
23:6
 إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ 

এ সব গুনাবলী কি রসুললল সাঃ এর ছিলনা ? যদি থাকে তাহলে কেন মুমিন বা ইমানদার বলা হবেনা ??/

উপল্লোখিত আলোচনার দ্বারা প্রতিয়মান হল  যে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ কে যেমনি ভাবে মুসলিম বলা যাবে তেমনি ঈমানদার ও বলা যাবে অন্যথায় কোরআন করিমের উপল্লোখিত আয়াত সমূহকে অস্বীকার্ কতে হবে যেটা ঈমানহারা পথভ্রষ্ট হওয়ার কারণ হবে সুতরাং ঐ সকল পথভ্রষ্ট বক্তাদৈর অনূসস্বরণ না করাই নিরাপদ । 

এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক 

নূরলগনি ইসলামি একাডেমী কাটাছরা মিরসরাই চট্টগ্রাম ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন