সুরা ওয়াকিয়াহ তিলাওয়াতের বিশেষ কিছু ফজিলত ঃঃ
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ [রা.] বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে মাসউদ [রা.] তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন। [বাইহাকি:শুআবুল ঈমান-২৪৯৮]
সুরা আর রাহমান, সুরা হাদিদ ও সুরা ওয়াকিয়া’র তেলাওয়াতকারীকে কেয়ামতের দিন জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিবাসী হিসেবে ডাকা হবে। অন্য এক হাদিসে আছে, সুরা ওয়াকিয়াহ হলো ধনাঢ্যতার সুরা,
সুতরাং তোমরা নিজেরা তা পড় এবং তোমাদের সন্তানদেরকেও এ সুরার শিক্ষা দাও। অন্য এক বর্ণনায় আছে: তোমাদের নারীদেরকে এ সুরার শিক্ষা দাও। আম্মাজান হজরত আয়েশা [রা.] কে এ সুরা তেলাওয়াত করার জন্য আদেশ করা হয়েছিল।
তাছাড়া এ সুরা শারিরিক সুস্থতা রক্ষা ও অসুস্থতা দূরীকরণেও উপকারী। ইমাম গাজালী রহ. বলেন: মাশায়েখদের কাউকে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, আমাদের আওলিয়ায়ে কিরামের মধ্যে যে অভাবের সময় সুরা ওয়াকিয়াহ তেলাওয়াতের আমল জারী আছে তার উদ্দেশ্য কি এটা নয় যে, এর উছিলায় আল্লাহ তায়ালা যেনো অভাব মোচন করে দেন এবং দুনিয়াবী প্রাচুর্য দান করেন, তাহলে আখেরাতের আমল দিয়ে দুনিয়াবী সম্পদ কামনা করা কি বৈধ হলো?
তখন তিনি উত্তরে বলেছিলেন, এ আমলের দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য ছিল, আল্লাহ তায়ালা যেনো তাদেরকে যে হালাতে রেখেছেন তার উপরই তুষ্ট থাকার তৌফিক দান করেন। অথবা এমন রিজিক দান করেন যার দ্বারা তারা ইবাদতের শক্তি যোগাবেন অথবা ইলম অর্জনের পাথেয় যোগাবেন। তাই এখানে দুনিয়া তলব করা উদ্দেশ্য হলো না বরং নেকীর কাজের উদ্দেশ্য করা হলো। তাছাড়া অভাবের সময় এ সুরার আমলের কথাটা তো হাদিস দ্বারাই প্রমানিত। এমনকি বর্ণিত আছে যে হজরত ইবনে মাসউদ [রা.] কে যখন তার সন্তানদের জন্য একটি দিনারও রেখে না যাওয়ার কারণে তিরস্কার করা হলো তখন তিনি উত্তরে বলেছিলেন, তাদের জন্য আমি সুরা ওয়াকিয়াহ রেখে গেলাম।
(এখানে একটা কথা না বললে নয় তাহল, আমাদের দেশে প্রায় সকল ক্বওমী মাদরাসায় মাগরীবের পর অধ্যয়ন শুরুর আগে সুরায়ে ওয়াকেয়া তেলাওয়াতের উপর জোর তাগিদ দেয়া হয়। এবং গুরুত্ব সহকারে এ আমলটি করা হয়।এবং ফজরের পর সুরায়ে ইয়াসিনের আমল করা হয়। এবংরাতে শোয়ার পূর্বে সুরায়ে মুলক্ এর আমল।ও শেষ রাতে তাহাজ্জতের আমল।
রীজিকের পরাগতের সাথে সাথে দুনিয়া আখেরাতের মঙ্গল ও কামিয়াবীর নিয়তেই মূলত এ আমলটি করা হয়। আল্লাহ তায়ালা এ আমল এর বরকতে সকল ক্বওমী মাদরাসায় সরকারী কোন দান অনুদান সহযোগিতা ছাডা গায়েবী মদদ নাজেল করেন আমলের বরকতে। এতে সন্দেহের অবকাশ নাই।
তাছাডা যে কেউ সুরায়ে ওয়াক্বেয়ার আমল করে রীজিকের পারগত সহ দুনিয়া আখেরাতের মঙ্গল কামনার্থে আমলটি করতে পারেন। আমরা অনেক আলেম ওলামা আউলিয়ায়ে কেরামের জিন্দেগী অধ্যয়ন করলে ও এ আমলের কথা জানতে পারি।
বর্তমান করোনার পরবর্তী পরিস্থিতিতে যারা অভাব অনটনের আশংকা করছেন তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ তারা প্রতি দিন মাগরীবের পর সুরায়ে ওয়াকিয়ার আমল করতে পারেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালা রহম করবেন পরাগত দান করবেন। ইনশাআল্লাহ। )
[ফয়জুল কাদির-৪/৪১] মূল- হজরত মাওলানা ইউনুস বিন উমর পালনপূরী অনুবাদ- মাওলানা মিরাজ রহমান।।
সংযোজন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
হে রব, আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করু।
উত্তরমুছুন