রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১

যৌন শিক্ষা ও এর খুটিনাটি১৮+সেক্স এডুকেশন

(একটি  ১৮+ সেক্স এডুকেশন বিষয়ক লেখা , যৌনতা নিয়ে যাদের এলার্জি আছে তাদের পড়তে হবেনা  ।)

 একজন অনুজ , আমার ডাক্তার পরিচয় পাওয়ার পরে একদিন সন্ধ্যায় ইচ্ছে করে আমার সাথে বাড়ি ফিরতে চাইলেন। তার বাড়ির রাস্তা ভিন্ন দিকে আর আমিও রোগী দেখে দেখে ততদিনে বুঝতে পারি অনেক কিছুই। বুঝলাম , একটু আড়ালে কিছু আলোচনা করতে চান। আন্দাজে ভুল হয়নি। অতি সংক্ষেপে তিনি আমাকে জানালেন তার প্রেমিকার সাথে তার প্রথম যৌণ অভিজ্ঞতায় তার অতি দ্রুত স্খলনের ( প্রি ম্যাচিউর ইজাকুলেশন) সমস্যার কথা। 
.
সে একজন ডাক্তারকে দেখিয়েছেন ওই ডাক্তার কিছু ভিটামিন ওষুধ   দিয়েছিলেন।এই ভিটামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পর কিছুদিন তিনি ভাল ছিলেন । নতুন একজন গার্লফ্রেন্ডের সাথে আবার যৌন সম্পর্ক করার সময় বর্তমানে নাকি সমস্যা টা আবার হয়েছে  ।  
.
প্রি-ম্যাচিউর ইজাকুলেশন বা দ্রুত বীর্যপাতের জন্য আসলে ভিটামিন কোন কাজের ওষুধ না তবুও এই ডাক্তার দিয়েছিলেন এবং এতে নাকি রোগী কিছুদিন ভালো ছিলেন। কারণটা কি ? 
  আমি সেই তরুণকে অনেকভাবে  বোঝালাম যে এটা কোনো সমস্যা ন না , আর সত্যি সত্যি সমস্যা থাকলে ভিটামিনে কোনো রেজাল্ট পাওয়া যেত না । এটা মানসিক কারণে হয়েছে । তরুণটি আমার কথা মানলেন না , তিনি বললেন এই ভিটামিন জাতীয় ওষুধেই রেজাল্ট ভালো এসেছেন, আমি যেনো এমন টাইপের কিছু ওষুধ এর নাম বলে দেই ।
.

আসুন , আমরা একটু বুঝার চেষ্টা করি ঘটনাটা আসলে কি ঘটেছে। ছেলেটির সমস্যা ছিলো অতিদ্রুত স্খলন। এর সরাসরি ফলাফল যেইটা হয় , পুরুষ বা নারীর যৌণ তৃপ্তি বা ক্লাইমেক্স / অর্গাজম এ পৌছানোর আগেই সঙ্গম শেষ হয়ে যাওয়া । ব্যাপারটা অনেকটা প্রচন্ড ক্ষুধার মুখে দুই লোকমা খাওয়ার পরে প্লেট কেড়ে নেওয়ার মতন। বিস্তারিত আর বললাম না । 
.
কেন ঘটে এই রকম? যাদের সত্যি সত্যি কোন রকম ইনফেকশন ( যৌণ রোগ), এনাটমিক বা যৌণাঙ্গের গঠনগত সমস্যা আছে কিংবা ফিজিওলজিকাল বা কার্যকারিতার দিক থেকে কোন সমস্যা আছে - তারা ছাড়া বাকি সবার জীবনেই এইটা ঘটতে পারে মানসিক কারণে । 
.
★ প্রথমত, জীবনে প্রথম যৌণ সঙ্গম করতে গেলে ১ম কিছুদিন অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণে অতিদ্রুত স্খলন ঘটতে পারে। নিজের উত্তেজনাকে মানসিক ও শারীরীক ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে না পারাটাই কারণ । 
★ দ্বিতীয়ত , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে কোন রকম অপরাধবোধে ভুগলে । 
★ তৃতীয়ত , কোন কারণে যথেষ্ট সময় না থাকলে তাড়াহুড়া ও টেনশনে । 
★ চতুর্থত , আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকে অতিরিক্ত টেনশনে । 
★ পঞ্চমত , সঙ্গিনীর সাথে কোন কারণে যথেষ্ট স্বস্তি বা কম্ফোর্ট লেভেল না থাকলে । 
.
এখন কথা হলো , এর জন্য ওষুধ  খাওয়া কত জরুরী? 
.
যাদের কোন কারণে যৌণ রোগ বা ইনফেকশন আছে কেবল তাদের জন্যই ঔষুধ প্রয়োজন হতে পারে। জীবনের ১ম যৌণ অভিজ্ঞতায় কোন রোগ কারণ না হওয়ারই কথা । রইলো বাকি এনাটমিকাল ও ফিজিওলজিকাল কোন সমস্যা । এইটা প্রকৃতিতে খুবই রেয়ার। ডাক্তারের পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে এইটা বের হয়ে আসবে। কিন্তু উল্লেখিত তরুণের এই ধরনের কোন সমস্যা ধরা পড়ে নাই। 
.
আর মানসিক সমস্যার জন্য ভিটামিন? বুঝতেই পারছেন, এইটা ঠিক খাপ খায় না । তারপরেও মাঝে মাঝে নাছোড়বান্দা রোগী হইলে কিছু ডাক্তার রোগীর মন রক্ষা করতে গিয়ে ভিটামিন, স্যালাইন - এইসব বেকার জিনিস পত্র প্রেস্ক্রাইব করেন। তাহলে ছেলেটি উপকার পেলো কি করে? 
.
এখানে আমাদের আসলে তার সমস্যার মূলে পৌছাতে হবে। আমি যা বুঝেছিলাম, উনি তার প্রেমিকাকে তৃপ্ত করতে পারবেন কি পারবেন না সেই অতিরিক্ত টেনশন, সাথে ১ম বারের অতিরিক্ত উত্তেজনা = এর ফলে সমস্যায় পড়েছিলেন। ভিটামিন খাওয়ার পরে তার ভিতরে বিশ্বাস চলে আসে যে উনার সমস্যা মিটে গেছে । উনি এখন যৌন ভাবে সবল । এই ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ও কমফোর্ট লেভেল তাকে যে রিল্যাক্সসেশন বা আরাম দিয়েছে - তাতেই উনি পরের বার গুলোতে ভালো পারফর্ম করতে পেরেছেন। 
.
এখন , ঝড়ে বক পড়লো আর তাতে ফকিরের / ভিটামিনের কেরামতি বেড়ে গেলো। 
.
এই রকম কেরামতি কেন দরকার হয়? মূল সমস্যা কি? সমাধান কি? 
.
একজন ডাক্তার হয়েও সেই তরুণকে বুঝাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে আমি এইটা নিয়ে অনেক ভেবেছি। কেন উনি বুঝতে চাইলেন না একেবারেই? এবং ভেবে ভেবে , তার সাথে এর উপরে পড়ালেখা করে আমি যা বের করেছি তা হলো , মানুষের বিশ্বাসের সাথে তথ্যের লড়াইয়ে বিশ্বাসের জয় হবেই।
.
 এই তরুণের বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই কোন যৌণ শিক্ষা নেই । তার শেখার সূত্র ছিলো হয়ত আদিরসাত্মক সাহিত্য , নীল ছবি কিংবা নিদেন পক্ষে বড় ভাইদের অভিজ্ঞতা । এর কোনটাই সঠিক শিক্ষা দেয় না , দিতে পারে না । বরং এসব থেকে মানুষ বেশির ভাগ সময়েই ভয়াবহ ভুল শেখে । 
.
আবার এই সব সূত্র গুলো কোনটা স্বাভাবিক, কোনটা সমস্যা আর কোনটা রোগ- তাও শিক্ষা দেয় না । যারা এই সব নোংরা পথে কিছু শিখতে পছন্দ করেন না , তাদের জন্য কি কোন ভিন্ন পরিষ্কার পথ খোলা আছে? সার্বিক ভাবে - নাহ। যারা সেই রকম উচ্চ শিক্ষিত এবং ইন্টারনেট এ সংযুক্ত , তারা কিছুটা ভালো অবস্থানে আছেন। ইন্টারনেট থেকেই শিখতে পারেন কিন্তু সেই ওয়েবসাইট গুলো কি নির্ভরযোগ্য?
.
 লাইক , ভিয়ারাস বাড়িয়ে ইউটিউব থেকে  টাকা কামানো মেডিকেল বিষয়ক তথ্য দেওয়া ইউটিউবার গণ যে  সঠিক তথ্য দিচ্ছে  তা বুঝার কিন্তু উপায় একজন তরুণের নাই। অর্থাৎ একজন তরুণ কোন তথ্যটি সঠিক,  কোন তথ্যটি ভুল তা যাচাই করতে পারে না ,  ফলে  ভুল তথ্য গুলোকে সে সঠিক  হিসেবে মনে করে। (বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমি ইউটিউব থেকে কোন টাকা ইনকাম করি না, আমার মনিটাইজেশন অফ করা।  তাই কেউ এটা বলবেন না যে আমিও ইউটিউবে টাকা ইনকামের জন্য তথ্য দিয়ে থাকি ) 
.
আমাদের দেশের তরুণ তরুণিদের তাই মূল সমস্যা হলো:  একটা ভালো, ভদ্র , পদ্ধতিগত ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষা বা জ্ঞানের মাধ্যম - যা থেকে মানুষ সঠিক শিক্ষাটা নিতে পারে- তার অভাব। আর এরই সুযোগ নেয় যত রকমের হাতুড়ে আব জাব কোম্পানি ও ডাক্তার গুলো । বাংলাদেশে অশিক্ষা তো আছেই , তার চেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো , যারা স্কুল কলেজে পড়েন, তারা কুশিক্ষিত কিংবা অর্ধ শিক্ষিত । 
.
  এখনো মানুষ জানে না , মেয়েদের প্রতি মাসে রক্তপাত হওয়াটা (মাসিক বা রজঃস্রাব) যেমন একটা স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া , সেই রকম পুরুষের কিছুদিন পর পর ইরেকশন বা যৌণাঙ্গ দৃঢ় হওয়া থেকে শুরু করে ইজাকুলেশন বা ধাতু নির্গত হওয়াটা একটা অতি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া । স্বপ্নদোষ নামে যাকে  মানুষ এটা সেটা খেয়ে রোগমুক্তির আশা করে, সেইটা আসলে কোন রোগই না । একবার চিন্তা করুন, মেয়েরা যদি দল বেধে "ঋতুদোষের" জন্য ওষুধ খাওয়া শুরু করে তাহলে ব্যাপার কি দাঁড়াবে? 
.
সময়ের আগেই ধাতু নির্গমন বা ইজাকুলেশন কোন দুর্বলতার লক্ষণ নয় । এইটা কোন রোগও নয়। তবে , পুষ্টিহীন নারী শরীরে যেমন ঋতুস্রাবের সমস্যা হতে পারে, অতিরিক্ত পুষ্টিহীনতায় ভুগলে পুরুষেরও পারফর্মেন্সে ঘাটতি হতে পারে। তবে সে সব ঘাটতি মলম মেখে দূর করা যায় না । বেটার পার্ফর্মেন্সের জন্য চাই বেটার স্বাস্থ্য । সুস্বাস্থ্য। চিকিৎসকের  পরামর্শ সঠিক ভাবে অনুসরন করা । 
.
যারা জানেন না , তাদের জন্য বলি, অতিরিক্ত শুকনা কিংবা অতিরিক্ত মোটা হলে , উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিস হলে , সিগারেট - মদ জাতীয় বদভ্যাস থাকলে - যৌণ দক্ষতা কমে যেতে পারে। বাচ্চা হতেও সমস্যা হতে পারে। তার মানে এইনা যে আপনাকে সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে জিমে গিয়ে ডাম্বেল ভাজতে হবে, কিন্তু , স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান না হলে স্ত্রীর প্রেম পাইতে কিংবা বাচ্চার বাপ হইতে সমস্যা হতেই পারে। 
.
যারা যৌণ শিক্ষার নাম শুনলেই সব গেলো গেলো বলে চিল্লাতে ভালোবাসেন, সেই সব মানুষদের মন রক্ষা করতে গিয়ে আমাদের পাঠ্য বই গুলাতে যথা সম্ভব কম তথ্য দেওয়া থাকে। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে , উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আগে মানব দেহ সিলেবাসেই ছিলো না ( বায়োলজি) । আশা করি এখন সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মানুষের যৌণ বা রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেম আমি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াতে দেখিনি। এমন কি , মেডিকেলের ফিজিওলজি ম্যাডাম আমাদের বলেছিলেন, " এইটা তোমরা বাড়িতে পড়ে নিও।" এই থেকেই বুঝা যায় , মানুষের দেহের এই অংশ বা সিস্টেমটিকে নিয়ে সঠিক শিক্ষার পরিবেশ বাংলাদেশে প্রায় অনুপস্থিত । কিন্তু তাতে কি প্রলয় বন্ধ আছে? 
.
যারা বলেন, সঠিক যৌণ শিক্ষা দিলে মানুষের নৈতিক আচরণে ধ্বস নামবে , এতদিন তো এই শিক্ষা বাংলাদেশে বন্ধই আছে এক রকম, তাতে কি ধ্বস নামা বন্ধ হয়েছে? কমেছে? নাকি, বেড়েছে? 
যৌণ শিক্ষা বন্ধ আছে । কিন্তু যৌণ সঙ্গম কি বেড়েছে না কমেছে? 
যৌণ শিক্ষা বন্ধ আছে । কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষকে যৌণ সুড়সুড়ি দেওয়া কি বন্ধ আছে? 
.
যারা এর বিরোধিতা করেন, তারা কি দায়িত্ব নিয়েছেন ছেলে মেয়ে গুলো যাতে কোন বিপদে না পড়ে , অশিক্ষা - কুশিক্ষা জনিত স্বাস্থ্যহানি না ঘটায় - সেইটা বন্ধে? 
অসামাজিক কার্যকলাপ বাদ দেন, যারা সামাজিক কার্যকলাপ (বিয়ে, বাচ্চা নেওয়া, একটা স্বাভাবিক যৌণ জীবন কাটাতে চান) করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিপদ , আপদ, রোগ, শোক, বিব্রতকর অবস্থা এবং কখনো কখনো মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছেন , তাদের শিক্ষার কোন ব্যবস্থা কি নিয়েছেন? 
.
আমরা যারা ডাক্তার , তারা প্রতিদিনই কারো না কারো মারাত্মক কোন সমস্যার কথা শুনি বলে আমরা টের পাই , এই " লুকিয়ে রাখা" , " চেপে রাখা" , "দমিয়ে রাখা" যৌণ অজ্ঞতাজনিত সমস্যা গুলো কি হারে মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে। আর কত সহজেই একটা সঠিক শিক্ষা মানুষকে এই কষ্ট গুলো থেকে রক্ষা করতে পারে। 
কিছু ঘটনা ঃ 
.
১। এই ২০২১ সালের শেষের দিকে এসে শুনতে হয় শান্ডা বা মান্ডার তেল আর শিয়ালের বাম এর বেচাবিক্রির জন্য হাতুরেদের শোর গোল। 
২। এই যুগেও মানুষ জানে না কোনটা স্বাভাবিক যৌণতা আর কোনটা অস্বাভাবিক। 
৩। অতি আধুনিক দম্পতিকেও বিয়ের পরে পর্ণ দেখে শিক্ষা নিতে হয় কেমনে কি করে। যারা এই সব দেখা পাপ বলে বিশ্বাস করেন, তাদের অবস্থা আরো করুণ। 
৪। পতিতার কাছ থেকে "অভিজ্ঞতা" ও "জ্ঞান " আহোরণ করতে গিয়ে যৌণ রোগ বাধিয়ে আসে। 
৫। জানে না কিভাবে বাচ্চা হয়। 
৬। বিয়ের আট মাসেও না জানা কি ভাবে সঙ্গম করতে হয়। 
৭। জানে না কি ভাবে গর্ভ ধারণ আটকানো যায়। 
৮। অবৈধ গর্ভপাত এখনো বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যবসা। 
৯। এখনো সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে হওয়া নিয়ে স্ত্রীকেই দায়ী করা হয়। 
১০। এখনো যে কোন সমস্যা হলে মানুষ পরিচিত ডাক্তারদের কাছে ছোটে । কিন্তু যৌন সমস্যার ক্ষেত্রে বেশির ভাগই লজ্জায় চেপে রাখে আর নিজে নিজে রাস্তার ক্যানভাসারদের কাছ থেকে বা এক ফাইলে যথেষ্ট টাইপের কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ কিনে কিনে খায়।। 
১১। এই যুগে মানুষ শান্ডার তেল,ধোনেশ পাখির তেল, শিয়ালের বাম, শিকড় বাকড় তাবিজ তুমার , তুক তাক আর ভিটামিন- স্যালাইনের পিছনে টাকা নষ্ট করে। 
.
এখন সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনার কথা বলি । স্রেফ " কি ভাবে আদর করতে হয় জানে না বলে" স্ত্রীকে বছরের পর বছর ধরে যা করা হয়েছে তাকে শুধু তুলনা করা চলে "ধর্ষণ" হিসেবে । স্ত্রী স্বামীকে ভালোবাসেন কিন্তু তার যন্ত্রনা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো যে অত্যন্ত ধর্ম ভীরু সেই দম্পতি যৌণতা এক প্রকার বাদ দেন। এক পর্যায়ে স্ত্রী স্বামীকে অনুরোধ করেন, " তোমার দরকার হলে তুমি আরেকটা বিয়ে করো । আমি মানা করবো না।" 
.
এখন প্রশ্ন হইলো , আল্লাহ মানুষের ভিতর যৌণ সঙ্গম নামক একটা প্রক্রিয়া দিয়েছেন যার মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা প্রকাশিত হওয়ার কথা। যার মাধ্যমে নতুন শিশু জন্ম হওয়ার কথা । সেই প্রক্রিয়াটা একজন স্ত্রীর জন্য এত কষ্টের কেন হবে? কেন একজন স্ত্রীর মনে হবে তাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে ? আর স্বামীই বা কেন বুঝবে না কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা ধর্ষণ ? এই মারাত্মক অবস্থাটা কিন্তু আমি দেখেছি আমার পরিচিত গন্ডিতে ! ঘটনার কেউ মূর্খ , অশিক্ষিত নয়। বরং উচ্চ শিক্ষিত । এরা কেউ পাশবিক নয় বরং সঙ্গী- সঙ্গীনীর প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল। এরা কেউ ধর্মহীন নয় - এদের কেউ কেউ প্রচন্ড ধার্মিক  । 
.
বাংলাদেশের সমাজের যেই অংশটি কম শিক্ষিত  , তাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। 
.
আমাদের বুঝতে হবে , যৌণ শিক্ষা শুধুমাত্র বায়োলজির বিষয় নয়। এর সাথে জড়িত আছে স্বাস্থ্য। এর সাথে জড়িত আছে যৌণতার সামাজিক, ধর্মীয়/নৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অবশ্যই অর্থনৈতিক ইস্যু । যৌণতার সাথে জড়িত আছে ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ও আবেগ এর বিকাশ। এখনো বাংলাদেশে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার ভয়াবহ। আমরা এখনো এই সব স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করতে পারছি না বলে অন্য কোন দিকে উন্নতির কথা ভাবতেই পারছি না । প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছি দুনিয়া থেকে। আমরা কি একটা স্বাস্থ্য, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক,পারিবারিক (বাচ্চা হওয়া থেকে শুরু করে একটা বাচ্চাকে সঠিক ভাবে লালন পালন করতে কি কি করা লাগে, কেমন খরচ হয়) ও নৈতিক শিক্ষাসহ একটা পরিপূর্ণ ও ব্যালেন্সড যৌণ শিক্ষার সিলেবাস তৈরী করতে পারি না?
.
সরকার কি যৌণ শিক্ষার এই দিকে কিছু সিস্টেমিক ও সাহসী পদক্ষেপ নেবেন?
.
Md. Faijul Huq

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন