Translate

রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮

গীলয় বা গুলন্জ বা আন্গুরুজ লতার উপকারীতা

আশ্চর্য ভেষজ 'গিলয়' সেবনের ১০ উপকার জেনে নিন

সূত্রঃঃঃ - কালের কন্ঠ 

সংযোজিত, 


বহু প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাবিদ্যায় গিলয় নামে একটি ভেষজ ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে এ ভেষজটির আয়ুর্বেদিক ওষুধও পাওয়া যায়। 

তবে এটি এক এক এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত যেমন গীলোয় বা গীলয় গুলন্ছ, আঙ্গুরুজ, অমৃতা,পদ্ধগুরুজ ইত্যাদি। তবে এটা ঔষধী গুনে ভরা,     


গিলয়ের রয়েছে বহু উপকারিতা। এ লেখায় তুলে ধরা হলো গিলয়ের ১০ উপকারিতা। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে এনডিটিভি। 
১. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গিলয় খুবই কার্যকর। এটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহের কোষগুলোকে সুস্থ রাখে এবং নানা রোগ থেকে রক্ষা করে। এছাড়া এটি দেহের দূষিত পদার্থ দূর করে, রক্ত পরিষ্কার করে এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে। হৃদরোগ, মূত্রসংক্রান্ত নানা রোগ ও উর্বরতাজনিত রোগ প্রতিরোধে এর যথেষ্ট কার্যকারিতা রয়েছে। 
২. ক্রনিক জ্বর
ক্রনিক জ্বর নিরাময়ে গিলয় যথেষ্ট কার্যকর বলে জানান ভারতীয় চিকিৎসক ড. আশুতোষ গৌতম। তিনি বলেন, ঘন ঘন জ্বর হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে গিলয়।

এছাড়া এটি ডেঙ্গু, সোয়াইন ফ্লু ও ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধেও দেহের প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম হয়। ১ ইন্ছি পরিমান পানিতে ভিজেয়ে ৩ ঘন্টাপর সেবন বা চার মত করে সেবন  
৩. হজমে উন্নতি
হজমশক্তির উন্নতির জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর একটি ভেষজ। পেটের নানা ধরনের সমস্যার চিকিৎসায় এ ভেষজ ব্যবহৃত হয় বলে জানান দিল্লির একজন পুষ্টিবিদ।


ক্ষেত্রে আধ গ্রাম গিলয় পাউডার কিছুটা আমলকির সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করতে হবে। এছাড়া কোষ্টকাঠিন্য সমস্যায় এটি সামান্য গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। 
৪. ডায়াবেটিস চিকিৎসায়
ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে এ ভেষজটি যথেষ্ট কার্যকর। ভারতের ফোর্টিজ হাসপাতালের ড. মনোজ কে. আহুজা বলেন, গিলয় ডায়াবেটিস (বিশেষত টাইপ ২ ডায়াবেটিস) নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। 

সকালে খালি পেটে ১ ইন্ছি পরিমান  লতা কাচা অথবা  রাতে ভিজিয়ে সকালে সেবন।তবে এর সাথে খিরা করলা টমেটোর জুস ও মিশিয়ে সেবন করলে খুব উপকারী। 

৫. মানসিক চাপ কমাতে
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে গিলয় কার্যকর। এটি মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে ও চিন্তাভাবনা স্থীর করে মানসিক চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। 
৬. শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করতে
ড. আশুতোষ জানান, গিলয় শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা দূর করতে কার্যকর। এটি ঠাণ্ডা, কাশি ও টনসিলের মতো সমস্যাও উপশম করে। 
৭. আথ্রাইটিস
প্রদাহরোধী ও আথ্রাইটিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার উপাদান রয়েছে গিলয়ে। এ কারণে আথ্রাইটিসের ব্যথা যাদের রয়েছে তারা এ ভেষজটি গ্রহণ করতে পারেন। অস্থিসন্ধির ব্যথার জন্য গিলয় দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে বলে জানান ড. আশুতোষ। এছাড়া আদার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে রিউমেটয়েড আথ্রাইটিসের চিকিৎসায়। 
৮. শ্বাসকষ্ট কমাতে
শ্বাসকষ্টজনিত নানা ধরনের সমস্যা উপশমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে গিলয়। এটি কাশি ও শ্বাসের সময় শব্দ হওয়া দূর করে এবং শ্বাস নেওয়ার কষ্ট উপশম করে। 
৯. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে
গিলয় দৃষ্টিশক্তি পরিষ্কার করতে ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে গিলয় পাউডার প্রথমে সেদ্ধ করে তা ঠাণ্ডা করতে হবে। এরপর তা চোখের পাতার ওপর লাগাতে হবে। 
১০. বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহে যে ক্ষয় হয়, তা কিছুটা রোধ করতে পারে গিলয়। এতে অ্যান্টি-এজিং প্রপার্টি থাকায় তা বয়স বৃদ্ধির প্রকোপ চেহারায় প্রকাশ পেতে দেয় না।



চলবে 

সংযোজীত  


 জেনে নিন গুলঞ্চ লতার বিভিন্ন উপকারিতা

গুলঞ্চ একটি দীর্ঘ লতানো উদ্ভিদ। সাধারণত অন্য গাছকে অবলম্বন করে বেড়ে উঠে। পরিণত বয়সে লতাগুলো আঙ্গুলের ন্যায় মোটা হয়। লতার গায়ের ছাল কাগজের মত পাতলা। নিচে সবুজ এবং ভিতরে সাদা। স্বাদ তিক্ত ও পিচ্ছিল। পাতা সরল, একান্তর, অনেকটা পান আকৃতির, শীতকালে পাতা পড়ে, বসন্তে আবার নতুন পাতা বের হয়। ছোট হরিদ্রাভ সাদা ফুল ও মটরের মতো বীজ হয়। ফল পাকলে লাল বর্ণের দেখায়। গুলঞ্চের পাতা ও কাণ্ডের ভেষজগুণ অনন্য।


চলুন জেনে নিই গুলঞ্চ লতার বিভিন্ন উপকারিতা....


১) ১০ থেকে ১২ গ্রাম গুলঞ্চের কাঁচা পাতা বা কাণ্ড থেঁতো করে নিন। এরপর ১ কাপ গরম জলে ৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরে হাত দিয়ে কচলিয়ে ছেঁকে জলটুকু দিনে ২ থেকে ৩ বার পান করলে অনেক দিন ধরে ভুগতে থাকা রাতজ্বর সেরে যাবে।


২) সব ধরনের চর্মরোগে ৮ থেকে ১০ গ্রাম কাঁচা কাণ্ড থেঁতো করে ১ কাপ জলে ভিজিয়ে রেখে পরে কচলিয়ে ছেঁকে জলটুকু দিনে ২ থেকে ৩ বার পান করতে হবে। নিয়মিত এক মাস পান করলে চর্মরোগ সেরে যাবে।


৩) কৃমি দূর করতে ২ থেকে ৩ চা চামচ গুলঞ্চের কাণ্ডের রস দিনে ২ থেকে ৩ বার চিনি মিশিয়ে খেলে কৃমি থাকবে না। কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ দিন পান করতে হবে।


৪) শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে গুলঞ্চের কাঁচা পাতার রস উপকারী।


৫) বহুদিনের বাতজ্বর বা থেমে থেমে জ্বরের চিকিত্‍সায় গুলঞ্চের কাণ্ড ব্যবহার হয়। ১ ইন্ছি পরিমান কেটে বাকল ছাডিয়ে ভিতরের শাস সেবন অথবা শুকিয়ে চার মত সেবন। 


৬) জন্ডিস, হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া, বহুমূত্র, অর্শরোগে গুলঞ্চের কাঁচা পাতা ও কাণ্ড দুটোই ব্যবহার হয়।


৭) চর্মরোগ, শ্বাসনালির অনিয়ম, স্নায়ুশূল রোগে ব্যবহৃত হয়।


৮) বোধশক্তি উন্নত করতে গুলঞ্চের কাঁচা পাতা রস ব্যবহার হয়।


৯) কাঁচা কাণ্ডের রস মূত্র বৃদ্ধিকারক ও গনোরিয়ার চিকিত্‍সায় উপকারী।


১০) পান করার পরিমাণঃ পাতার রস ২ থেকে ৩ চামচ এবং কাঁচা পাতা বা কাণ্ড ৮ থেকে ১২ গ্রাম পান করতে হবে। তাজা গুলঞ্চ ব্যবহার করা ভালো।



গুলঞ্চ লতার উপকার, ব্যবহার, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং ডোজ:


গিলয় (গুলঞ্চ) বা টিনোস্পোরা হচ্ছে একটি পর্ণমোচী উদ্ভিদ যা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বহুলভাবে জন্মায়। প্রশমণের গুণ এবং স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য আয়ুর্বেদিক এবং ঘরোয়া চিকিৎসায় এটির কদর অসামান্য। বস্তুত, স্বাস্থ্যের সার্বিক উপকারিতার ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতার জন্য আয়ুর্বেদে এটিকে ‘‘রসায়ন’’ নামে অভিহিত করা হয়। শুনলে আপনি আগ্রহী হয়ে উঠবেন যে সংস্কৃতে এটিকে ‘‘অমৃত’’ বলা হয়েছে, যার অর্থ ‘‘অমরত্বসুধা’’। এই উদ্ভিদের অসাধারণ গুণের দিকে তাকিয়ে আমার মনে হয়, পুরাণে ‘‘দেবতারা’’ যা পান করে চিরকালীন যৌবন এবং স্বাস্থ্যের অধিকারী হতেন বলে বর্ণিত আছে, তা হয়তো ছিল এই গুলঞ্চ বা গিলয়।

গুলঞ্চ হচ্ছে একটি লতানে উদ্ভিদ, যার কাণ্ড দুর্বল এবং রসালো। কাণ্ডের রং হচ্ছে সাদা থেকে ধূসর এবং তা 1-5 সেমি পর্যন্ত মোটা হতে পারে। গুলঞ্চের পাতা দেখতে হৃদয়ের (হার্ট) আকারের এবং তাতে মেমব্রেন (ঝিল্লি) আছে। তাতে গ্রীষ্মকালে সবজেটে-হলুদ রঙের ফুল ফোটে আর গুলঞ্চের ফল সাধারণত শীতকালে দেখা যায়। গুলঞ্চের সবুজ রঙের আঁটিযুক্ত ফল (ড্রুপ) হয়ে থাকে যা পাকলে লাল বর্ণ ধারণ করে। গুলঞ্চের কাণ্ডেই অধিকাংশ নিরাময়যোগ্য গুণ আছে, তবে পাতা, ফল, এবং শিকড় বা মূলেও অল্পবিস্তর গুণ আছে।

গুলঞ্চের কিছু প্রাথমিক তথ্য:

  • বৈজ্ঞানিক নামটিনোস্পোরা কর্ডিফোলিয়া
  • পরিবার:  মেনিসপার্মেসিয়া
  • সাধারণ নামগিলয়, গুড়ুচি, গুলবেল, হার্ট-লিভড মুনসিড, টিনোস্পোরা
  • সংস্কৃত নাম :অমৃত, তন্ত্রিকা, কুণ্ডলিনী, চক্রলক্ষ্মীণি
  • ব্যবহৃত অংশ: কাণ্ড, পাতা
  • আদিতে কোথায় উদ্ভূত এবং ভৌগৌলিক বণ্টন: আদিতে ভারতীয় উপমহাদেশে পাওয়া যেত গুলঞ্চ লতা কিন্তি চিনেও পাওয়া যায়।
  • বলকারী: উষ্ণ
  1. গুলঞ্চের স্বাস্থ্য- উপকারিতা - Giloy benefits for health in Bengali
  2. গুলঞ্চ কীভাবে ব্যবহার করা হয় - How giloy is used in Bengali
  3. গুলঞ্চ ডোজ - Giloy dosage in Bengali
  4. গুলঞ্চ ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - Giloy side effects in Bengal

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে গুলঞ্চ একটি পরিচিত গুল্ম। গুলঞ্চের কাণ্ড শুধুমাত্র নিরাময়ের একটি চমৎকার এজেন্ট নয়, কিন্তু রাসায়নিকভাবে এটি আপনার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যাতে ঠিকভাবে এবং তাদের সম্পূর্ণ শক্তি-সহ কাজ করে তা নিশ্চিত করে। এই আয়ুর্বেদিক মহৌষধের স্বাস্থ্যের উপকারিতা একবার দেখে নেওয়া যাক।

  • ওজন কমাতে গুলঞ্চ: গুলঞ্চ হাইপোলিপিডেমিক হিসাবে কাজ করে বলে নিয়মিত সেবন করলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ দেয়। শরীরের পরিপাক প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে এবং যক্কৃৎ রক্ষা করে।
  • জ্বরের জন্য গুলঞ্চ: গুলঞ্চ ইমিউনোমডিউলেটরি প্রক্রিয়া করে এবং তার অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান আছে। ডেঙ্গি জ্বরের মতো জীবাণুর সংক্রমণের হাত থেকে এটি রক্ষা করে।
  • ডায়বিটিসের জন্য গুলঞ্চ:  ইনসুলিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হয় বলে ডায়বিটিসের ক্ষেত্রে এটি কার্যকরী হয়।
  • শ্বাসকষ্ট রুখতে গুলঞ্চ: দেখা গিয়েছে, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস-এর চিকিৎসায় গুলঞ্চ কার্যকরী ভূমিকা নেয় এবং হাঁপানি বা অ্যাজমার উপসর্গ কমানোর ক্ষেত্রেও এটি কাজে লাগে।
  • মহিলাদের জন্য গুলঞ্চ: রোগ প্রতিরোধী উপাদানগুলির জন্য রজঃনিবৃত্তি উত্তর (পোস্টমেনোপজাল) মহিলাদের জন্য গুলঞ্চ খুব কাজে লাগে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান অস্টিওপোরোসিস (হাড়ের ক্ষয়)  রোধ কমাতে পারে।
  • পরুরষদের জন্য  গুলঞ্চ: গুলঞ্চের ব্যবহারে বীর্যধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বা ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়।
  • ক্যান্সারের জন্য গুলঞ্চ: কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গুলঞ্চের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদানের জন্য গুলঞ্চের ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুলঞ্চ: দুশ্চিন্তা, অবসাদ এবং অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য গুলঞ্চের ব্যবহার হয়।
  1. গুলঞ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় - Giloy boosts immunity in Bengali
  2. ডেঙ্গির জন্য গুলঞ্চ - Giloy for Dengue in Bengali
  3. ডায়বিটিসের জন্য গুলঞ্চ - Giloy for diabetes in Bengali

গুলঞ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় - Giloy boosts immunity in Bengali

প্রতিরোধ ক্ষমতার (ইমিউনোমডুলেটিং) জন্য ঘরোয়া চিরাচরিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে গুলঞ্চের ব্যপক বাবহার হয়ে থাকে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা মনে করেন, গুলঞ্চ হচ্ছে সর্বোত্তম প্রতিরোধ ক্ষমতাশীল ভেষজের অন্যতম। শারীরিক পরীক্ষার জন্য কোনওরকম মানদণ্ড ব্যতিরেকে 68 জন HIVআক্রান্ত রোগীদের দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। ছ’মাসের জন্য এক ভাগের রোগীদের দেওয়া হয় গুলঞ্চ অন্য দলটিকে প্ল্যাসিবো (এমন কোনও পদার্থ যার কোনও ভেষজ গুণ নেই) দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের পর দেখা যায় যাঁদের গুলঞ্চ দেওয়া হয়েছিল তাঁদের স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটার সঙ্গে রোগের সার্বিক উপসর্গ কমেছে। এথনোফার্মাকোলজিতে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে লেখা হয়েছে, গুলঞ্চ বা টিনোস্পোরায় উপস্থিত একগুচ্ছ প্রাকৃতিক বায়োকেমিক্যাল এই গুল্মের ইমিউনোমডুলেটরি (প্রতিরোধ) ক্ষমতার জন্য দায়ি। অন্যান্য গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, শরীরে ফ্যাগোসাইট (এক ধরনের প্রতিরোধী কোশ) উত্তেজিত হলে ইমিউনোমডুলেটরি প্রক্রিয়া শুরু হয়।

ডেঙ্গির জন্য গুলঞ্চ - Giloy for Dengue in Bengali

আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের মতে ডেঙ্গির প্রাথমিক উপসর্গ ঠেকাতে গুলঞ্চের রস উপকারী। ফলিত গবেষণার একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত এক রোগিনীর কথা বলা হয়েছে যাঁকে 15 দিন দিনে দু’বার করে 40ml গুলঞ্চের রস খাওয়ানো হয়েছিল। 15 দিন পরে রোগিনীকে পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর প্লেটলেট সংখ্যা বেড়েছে, জ্বর এবং র‌্যাশ কমেছে। তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চোখে পড়েনি। সংখ্যায় কম প্লেটলেট বহনকারী  200 জন রোগীর ওপর আরও একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল, যেখানে রোগীদের 5 দিন পেঁপে এবং গুলঞ্চ পাতা ছেঁচে তার রসের 5ml করে মিশ্রণ খাওয়ানো হয়। সমস্ত রোগীদের মধ্যে প্লেটলেট সংখ্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা দিয়েছিল। কাজেই, একথা নিশ্চিন্তে বলা যায় যে ডেঙ্গির প্রাথমিক চিকিৎসা গুলঞ্চ বা টিনোস্পোরার সাহায্যে করা হলে উপকার পাওয়া যায়।

ডায়বিটিসের জন্য গুলঞ্চ - Giloy for diabetes in Bengali

চিরাচরিত এবং ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতিতে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে (হাইপোগ্লাইসেমিক)বরাবর গুলঞ্চ ব্যবহার হয়ে আসছে। গুলঞ্চের ডায়বিটিস প্রতিরোধী ক্ষমতা প্রমাণে প্রাণীদের ওপর এবং পরীক্ষাগারে প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে গুলঞ্চ বা টিনোস্পোরা যথেষ্ট কার্যকরী। আরও বলা হয়েছে যে এই গুল্মটি ইনসুলিনের ক্ষমতা বাড়িয়ে এবং শরীরে অক্সিডেটিভ চাপ কমিয়ে এর হাইপোগ্লাইসেমিক প্রভাব বিস্তার করে। এছাড়া, গ্লুকোজের বিপাকীয় প্রক্রিয়ার (গ্লুকোনিওজেনেসিস এবং গ্লুকোজেনোলাইসিস) জটিল পর্যায়ে হস্তক্ষেপ করে এবং তার ফলে সার্বিকভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে। কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (CSIR) এবং ন্যাশনাল বটানিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইন ইন্ডিয়া যৌথভাবে একটি পলিহার্বাল ট্যাবলেট পণ্য (একটির বেশি গুল্মের সমন্বয়ে তৈরি) বাজারজাত করছেন যার অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে গুলঞ্চ। CSIR জানিয়েছে, এটি একটি আয়ুর্বেদিক সংযোজন হিসাবে আনা হয়েছে, যা রক্তে শর্করার হার কম করার কাজে লাগে এবং অন্যান্য ডায়বিটিস প্রতিরোধী ওষুধের যে সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এতে তা নেই। যে কোনও ভেষজ বা ঔষধি গুল্ম গ্রহণের আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। (আরও পড়ুন: ডায়বিটিস ট্রিটমেন্ট(ডায়বিটিসের চিকিৎসা) ).

গুলঞ্চ গাছের কাণ্ড এবং পাতা থেকে ক্কাথ (কাধা) বার করে তা খাওয়া যেতে পারে তবে পাওডার আকারে বা গুঁড়ো করে গ্রহণের চলই বেশি। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো গুলঞ্চের অন্য পণ্য যেমন ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, এবং গুলঞ্চের রস পান করা যেতে পারে। যদি আপনার এই গুল্মের স্বাদ অপছন্দ হয় তাহলে আপনি ভেষজ (হার্বাল) চা  হিসাবেও পান করতে পারেন।

আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের মতে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দুশ্চিন্তা ত্যাগ করে 1-2 g গুলঞ্চের কাণ্ড বা পাতার গুঁড়ো এবং 5 ml পর্যন্ত গুলঞ্চ কাণ্ড বা পাতার রস গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে, অতিরিক্ত সংযোজিত খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া শ্রেয়।

  • গুলঞ্চ হচ্ছে একটি উৎকৃষ্ট হাইপোগ্লাইসেমিক এজেন্ট (রক্তে শর্করা কমায়), কাজেই যদি এমন হয় যে আপনি ডায়বিটিসে আক্রান্ত হয়ে ওষুধ খাচ্ছেন, তাহলে যে কোনও প্রকারেই গুলঞ্চ সেবন করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
  • অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন বা সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোকালীন সময়ে গুলঞ্চের সম্ভাব্য উপকারিতা কী, সে সম্পর্কে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় না। কাজেই অন্তঃসত্ত্বা বা মাতৃদুগ্ধ পান করানোকালীন সময়ে কোনও মহিলা গুলঞ্চ সেবন করতে ইচ্ছুক হলে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
  • টিনোস্পোরা একটি উৎকৃষ্ট ইমিউনোমডুলেটরি অর্থাৎ যা আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উজ্জীবিত করে যাতে আপনি আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করেতে পারেন। সুতরাং আপনি যদি কোনও অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে গুলঞ্চ সেবনের আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া শ্রেয়।
और पढ़ें ...




সৌজন্যে 

প্রাকৃতিক চিকিৎসা নিতে আমাদের ভূবনে স্বাগতম 

00966504967863 ওয়াতসাফ/ইমু


ত্বকের যত্নে দারুচিনির চার গুণ



1 টি মন্তব্য: