‘ বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ‘
নূরুলগনি ইসলামি একাডেমী কাটাছরা মিরসরাই’র উদ্যোগে আয়োজিত
২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ রোজ মঙ্গলবার
১ম
বার্ষিক মাহফিল উপলক্ষে দেয়া
‘পরিচালকের বাণী’
আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
সকল প্রশংসা আল্লাহতায়ালার জন্য যার অশেষ মেহেরবানী আর দয়ায়
নূরুলগনি ইসলামি একাডেমী ১ম বর্ষ পূর্ণ করে ২য় বর্ষে পদার্পন করেছে এ জন্য শাহেনশাহে
রাজাধীরাজ মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে শোকর
গুজার করছি ’ আলহামদুলিল্লাহ’ ।
এবং লাখো কোটি দরুদ ও ছালাম প্রেরণ করছি তাজেদার মদীনা, রাহমাতু্ল্লীল
আলামিন, খাতামুন নাবিয়্যীন ওয়াল মুরছালীন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ
বিন আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম বিন আবদুল মুনাফ
সাঃ এর উপর এবং তার প্রিয় ছাহাবী ও বংশধর সহ সকল মুত্তাকীনদের উপর ।
সন্মানীত এলাকাবাসী,
আজকের এ মুহর্তে আপনাদের মাঝে উপস্হিত না হতে পেরে আন্তরীক
ভাবে দুঃখিত।আমার অনূপুস্হিতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সর্বস্তরের মুরুব্বিয়ানে
কেরাম ও যুব সমাজ যারা এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের উন্নতি কল্পে এগিয়ে আসছেন, বিশেষত মাহফিল
পরিচালনার ক্ষেত্রে যে আন্তরিক সহযোগিতা সহমর্মিতা দিয়ে সহায়তা করেছেন তাদের সকলের
প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ রসুল সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি মানুষের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা
সে আল্লাহর শুকরিয়া ও আদায় করেনা।তাই আমি পুনরায়
মক্কার পবিত্র ভূমি থেকে আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।দোয়া করি আল্লাহ
যেন সকলের শ্রমকে কবুল ও মন্জুর করে দ্বীনের এক নিষ্ঠ খাদেম হিসাবে কবুল করে নেন এটাই
কামনা করছি আল্লাহুম্মা আমিন ।
পেয়ারে হাজেরীন,
অত্র প্রতিষ্ঠান কারো ব্যক্তিগত সম্পদ নয় বরং এটা হল ওয়াকফ্
সম্পত্তি যা জাতীয় সম্পদ,সমাজের সম্পদ,এবং আপনাদেরই সম্পদ,আপনাদেরই প্রতিষ্ঠান তাই
সে হিসাবে এর রক্ষনা-বেক্ষন, সূনাম- দূর্ণাম,উন্নতি-অবনতি সব কিছুই আল্লাহর ইচ্ছা ও
আপনাদের উপর নির্ভর তাই অদূর ভবিষ্যতেও আপনাদের সকলের দোয়া পরামর্শ ও সহযোগিতা এ প্রতিষ্ঠানের
সাথেই থাকবে এটাই আমার প্রত্যাশা।
সন্মানীত উপস্হিতী,
অনেকের মাঝে নূরানী শিক্ষা সম্পর্কে একটি সন্দেহের
অবতারনা হয়েছে যে,এখানে পডালে নাকি মাদরাসায় পডানো বাধ্যতামূলক,এ জন্য অনেকে তাদের
সন্তানদের এখানে ভর্তি করাতে অনীহা প্রকাশ করেন। আসলে এমন ধারণা অমূলক ভিত্তিহীন।কারণ
আমাদের নূরানী সিষ্টেমের প্রতিষ্ঠান গুলোর মূল উদ্যেশ্য হল কৌমলমতি শিশুদের অন্তরে
ইসলামের মূল শিক্ষা তথা কোরআনের শিক্ষা আর ঈমানের নূরটা ঢেলে দেয়া।
কারণ শিশুকালের যে কোন শিক্ষা শিশুদের অন্তরে পাথরে
খোদাইকরা নকসার মত অংকৃত হয়ে থাকে।যার ফলশ্রুতিতে এ শিশু বড হয়েও বিজাতীয় অপসংস্কৃতি
ঈমান ও ইসলাম বিরোধী যে কোন কার্যকলাপে লিপ্ত হতে তার অন্তরে থাকা
কোরআন
হাদিসের এই নূর বা আলো তাকে বাধা প্রদান করবে।ফলে সে ঈমানহারা হওয়ার থেকে রক্ষা পাবে।
এই জন্যই আমাদের মূল টার্গেট হল ৩ বছরে পূর্ণাঙ্গ কোরআন শরীফ ছহিহ শুদ্ধ ভাবে পডার
সাথে সাথে প্রাথমিক ভাবে অজু গোসল ও নামাজের মাছায়ালা মাছায়েল গুলো শিক্ষা দান করা।এ
শিশু পরবর্তি উচ্ছতর কোন শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ হলেও কিন্তু নামাজ রোজা কোরআন তেলাওয়াত
ছহীহ শুদ্ধ ভাবে আদায়ে সক্ষম হবে।যা একজন মুসলিম হিসাবে অত্যন্ত জরুরী। এবং এর সাথে
বাংলা অংক ইংরেজী ও ভূগোল ইত্যাদি পাঠ দানের মাধ্যমে একটা শিশুকে যে কোন প্রতিষ্ঠানে
৪র্থ শ্রেনীতে ভর্তি হওয়ার মত যোগ্য করে গডে তোলা হয়।এ সকল প্রতিষ্ঠান গুলো পূর্বেকার
জমানার মক্তব গুলোকে আধুনিক মক্তব হিসাবে রুপান্তর করা হয়েছে।যেটা এ শতাব্দীর মুজাদ্দেদ
মাওঃ কারী বেলায়েত ছাহেব রহঃ এর যুগান্তকরী সংযোজন।
সুতরাং আমাদের এ কোর্স শেষে আপনার শিশুকে যে লাইনেই
পডাতে চান আপনাদেরই স্বদিচ্ছার উপর নির্ভরশীল।একান্তভাবে মাদরাসার লাইনে পডাতে হবে
এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।তবে মাদরাসার লাইনে পডাতে চাইলে সর্বাত্বক সহযোগিতা ও করা
হবে। কিন্তু আপনার শিশুকে প্রাথমিক ভাবে কোরআনের শিক্ষা দেয়া আপনার আমার সকলের ঈমানী
দায়িত্ব এবং সন্তানের অধিকার। কিন্তু এ দায়িত্ব আমরা কতটুকু পালন করেছি সেটা কিন্তু
আমাদের সকল কে কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর দরবারে জবাবদেহী করতে হবে।এ জন্য আমাদেরকে সচেতন
হতে হবে।
হে সন্মানীত অতিথিবৃন্দ ,
আপনাদের
আগমন ও পদচারনায় অত্র একাডেমী ও এলাকাবাসী আজ ধন্য ।আমরা জানি আপনারা অত্যন্ত ব্যস্ততা সত্বেও আমাদের মাঝে উপস্হিত হয়েছেন বলে আমরা এলাকাবাসী ও একাডেমী কর্তৃপক্ষ কৃতজ্ঞ।সদ্য প্রতিষ্ঠিত অত্র একাডেমী আপনাদেরই
প্রতিষ্ঠান , অত্র প্রতিষ্ঠান চায় আপনাদের মত যোগ্য খোদাভিরু দানবীর শিক্ষাবিধ ও সমাজসেবকদের অকৃত্রিম ভালবাসা ও পৃষ্ঠপোষকতা ।আমরা দোয়া করি যেন আল্লাহ
তায়ালা আমাদের সকলের শ্রমকে কবুল করে দ্বীনের একনিষ্ঠ খাদেম হিসাবে কবুল করে নেন আমিন।
পেয়ারে হাজেরীন,
এখন আপনাদের
সামনে জানুয়ারী ০১৮ হইতে ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত
আপনাদের থেকে প্রাপ্য
দান অনূদানের সংক্ষিপ্ত হিসাব তুলে ধরছি===
জমা
-:
খরচ -:
ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি ফিস = ৪৬২০
শিক্ষক বেতন = ৭৫২৫০
ছাত্র ছাত্রীদের থেকে বেতন আদায় = ১৯০৪০ নির্ন্মান /উন্নয়ন =
১৮৩০২৮
এককালীন চাঁদা/উন্নয়ন = ১৫২৫১৩ উদ্বোধনী মাহফিল = ২১৭৮০
উদ্বোধনী মাহফিল আয় = ১৯৩২০ গোরাবা সহায়তা[ চাঁদা ফান্ড ]= ৪৪৮
মাদরাসা বাডির আয় ফল বিক্রি = ৪০০ অফিসিয়াল/আসবাবপত্র == ৩৫৯৮৪
জাকাত = ১০০০ গোরাবা সহায়তা [ছদকা ফান্ত] = ৩৬১
ফিতরা = ২২৭৫ ===================
ছদকা = ৩৫০ সর্বমোট খরচ ৩,১৬,৮৫১ টাকা
===============================
সর্ব মোট
জমা = ১,৯৯,৫১৮ টাকা
সর্বমোট খরচ
= ৩,১৬,৮৫১ টাকা
সর্ব মোট জমা = ১,৯৯,৫১৮
টাকা
=========================
বর্তমান কর্জ = ১,১৭,৩৩৩ টাকা
সন্মানীত উপস্হিতী,
এখন আপনাদের সামনে
প্রতিষ্ঠানের সফলতার কারগুজারী তুলে ধরছি।আমাদের ২টি ফান্ড আছে চাঁদা ও ছদকা ফান্ড,
চাঁদা ফান্ড থেকে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় খরচ বহন করা হয়ে থাকে এবং ছদকা ফান্ড থেকে দুস্ত
ও গরীব ছাত্র ছাত্রীদের কে বিভিন্ন ধরনের সাহার্য্য সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।
গত বছর আমদের চাঁদা
ফান্ডে কর্জ হলেও কিন্তু ছদকা ফান্ডে এখনও জমা আছে ৩২৬৪ টাকা ।আর আমাদের ছদকা ফান্ড
সচল হলে এ ফান্ড থেকে দুস্হ ও গরীব ছাত্রদের যথা সম্ভব সাহার্য্য সহযৌগিতা করা হবে
ইনশাআল্লাহ ।এ বছর আমরা ছাত্র/ছাত্রীদের কে সাময়ীক হালকা কিছু নাস্তার ব্যবস্তা করেছিলাম
ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক আকারে করার চিন্তাভাবনা আছে।বর্তমানে মোট ছাত্র ছাত্রী ৩২জন, আর
মেধা তালিকায় ১ম শ্রেনীতে উর্ত্তীর্ণ ১৫জন ছাত্র/ছাত্রীর মধ্যে ৬ জন A+ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছে ।এবং A+ প্রাপ্ত ৬ জন কে পুরস্কার
দেয়ার ব্যবস্তা করা হয়েছে। এবং সর্বোচ্ছ ক্লাসে উপস্হিতির জন্য ৩ জন কে পুরস্কৃত করা
হয়েছে।
সন্মানী উপস্হিতী ,
চলতি বছর ২০১৯ আনুমানিক খরচের বাজেট প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা
যেমন =;
শিক্ষক বেতন বাবত =
১,৪৪,০০০
ফ্লোর পাকা করণ বাবত = ৭০,০০০
দমদমা স্হাপন বাবত == ২৫০০০
ক্যান্টিন/ অফিসকক্ষ তৈরী বাবত = ২৫০০০
কুতুবখানা কিতাব ক্রয়= ২০০০০
অফিসিয়াল/বিদ্যুত/অন্যান্য = ২৫০০০
সর্ব মোট বাজেট === ৩,০৯০০০
সন্মানীত উপস্হিতী ,
আমাদের সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল একাডেমীর ঘরর সমস্যা
,আগামী ১ বছর পর আমাদের ঘরের সংকুলান হবেনা কারণ বর্তমান আমাদের রুম হল মাত্র তিনটি,
কিন্ত ক্লাসের জন্য ৪টি রুমের প্রয়োজন তাছাডা অফিস ও মতবখ এর জন্যও বিশেষ ঘরের প্রয়োজন
আছে সে জন্য জরুরী ভিত্তিতে জমিনের প্রয়োজনীয়তা অনূভব করছি, যদি হয় তাহলে আপাদত সাধারণ
ঘর নির্মাণ করে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে ,নতুবা ভবন নির্মানের পরিকল্পনা হাতে নিতে
হবে এ জন্য সকলের দোয়া পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করছি।এ লক্ষ পুরনে যদি ভবন নির্মাণ
করতে হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা হল সাইক্লোন সেন্টারের মত করে ৪ তলা ভবন নির্মান
করা, এতে করে নীচের খোলা জায়গাটা খেলাধুলা ও মাহফিলের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।এবং ক্রমান্নয়ে
একাডেমীর অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা ও সহজ হয়ে যাবে। এ জন্য বিশেষত সকল এলাকাবাসী সন্মানীত অতিথিবৃন্দ শুভাকাঙ্খি শুভানুধ্যায়ীদের
কাছে দোয়া ও পরামর্শ কামনা করছি।
পরিশেষে যারা অত্র একাডেমীর অগ্রযাত্রায় মেধা, শ্রম, অর্থ ও বুদ্ধিপরামর্শ ও দোয়া দিয়ে সহযোগিতা
করেছেন তাদের সকলের নেক হায়াত ও উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করছি। আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
ইতি
দোয়ার মোহতাজ
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
খাদেম নূরুলগনি
ইসলামি একাডেমী কাটাছরা জোরারগঞ্জ মিরসরাই চট্টগ্রাম ।
২৬/০২/২০১৯ইং
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন