রবিবার, ৫ আগস্ট, ২০১২

“কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা ও প্রসঙ্গ কর্মসংস্থানঃ”//বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মতে প্রতি দশ জন মানুষের দৈহিক সুস্থতার জন্য অন্তত একজন

“কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা ও প্রসঙ্গ কর্মসংস্থানঃ”
দ্বীনি শিক্ষার মারকায এই কওমী মাদ্রাসাগুলোকে আজ বাংলাদেশের কোন কোন সমালোচক ভূলবশত অসত্য বিশেষনে বিশেষায়িত করতে চান।
তারা এগুলোকে অপ্রয়োজনীয়, বেকার ও বেকারত্ব সৃষ্টিকারী ইত্যাকার কটুবাক্যে কালিমা লেপন করে এগুলোর ভাবগাম্ভীর্য বিনষ্ট করতে সচেষ্ট। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে, টেনে টোনে, জোড়াতালি দিয়ে বুঝাতে চান যে, এসব মাদ্রাসায় পড়ে কোন চাকরী-নকরী পাওয়া যায়না। ইচ্ছেমত টাকা পয়সা কামাই করা যায়না। বিলাসী জীবন উপভোগ করা যায়না।
তাহলে এইসব প্রতিষ্ঠান দিয়ে সমাজের কি লাভ। এসব বুদ্ধিজীবি ভাইদের উদ্দেশ্যে আমরা কিছু আরজ করতে চাই তারা যদি বুদ্ধির সদ্ব্যবহার করেন এবং নিম্নোক্ত কথাগুলোতে একটু চিন্তা করেন তাহলে আশা করি তারা তাদের উপরোক্ত অবস্থান থেকে সরে আসবেন।
স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি নির্বিশেষে পৃথিবীর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নিছক রুজি-রোজগার ও আর্থিক উন্নতি সাধনকে নিজেদের শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বলে ঘোষনা দেয়নি দিতে পারে ও না। বরং ছাত্রদের জ্ঞান ও প্রতিভার উপযুক্ত বিকাশ সাধনই হলো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিন্ন উদ্দেশ্য।
তাহলে কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষাপ্রাপ্ত কোন আলিমকে এ মানদন্ডে কেন বিচার করা হয় যে তিনি তার এই লেখাপড়ার দ্বারা মাসে কত টাকা রোজগার করতে পারেন এটা আমাদের বোধগম্য নয়।
চোখে রঙ্গিন চশমা লাগিয়ে তাকালে সবকিছুর সঠিক রং অনুমান করা যায়না চশমা খুলে তাকালে তবেই আসল রং বুঝা যায়।**************
যে সব বন্ধু কওমী শিক্ষিতদেরকে বেকার ও অকর্মণ্য দোষে দোষী করতে চান, যদি দয়া করে চোখ থেকে রঙ্গিন চশমাটি সরিয়ে তাকাতেন তাহলে দেখতেন যে, কওমী আলিমগন বেকার তো ননই বরং ভীষন ব্যস্ত।
মানুষকে দ্বীনের সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে নৈতিকতা ও আদর্শের গুণ অর্জনের প্রতি উৎসাহিত করা এবং তাদেরকে আখেরাতমুখী বানানোর মত ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজে তারা সদা নিয়োজিত। আমাদের অনেক আলেমে দ্বীন রয়েছেন যাদের ডায়রীতে বিপুল পরিমাণ কাজের দীর্ঘ ফিরিস্তি পরে রয়েছে। কিন্তু সময়ের অভাবে তারা তাতে হাত দিতে পারছেননা।
বলা হচ্ছে কওমী আলিমদের কোন কর্মক্ষেত্র নেই আসলেই কি বিষয়টি এরকম, কিছুতেই না। বরং তাদের কর্মক্ষেত্র অসংখ্য ও অগণিত সুবিশাল ও সুবিস্তৃত। তবে এগুলোকে কঠিন পর্দা দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়েছে যা উন্মোচন করতে দেওয়া হচ্ছেনা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মতে প্রতি দশ জন মানুষের দৈহিক সুস্থতার জন্য অন্তত একজন
*********************************
চিকিৎসক এবং একজন আইন উপদেষ্টা বিদ্যমান থাকা একটি মৌলিক অধিকার
**************************************************
এখন আমরা বলতে চাই মানুষ কি শুধু শরীরের নাম। না বরং শরীর ও রুহ এ দুইয়ের সমন্বয়ে হল মানুষ। সামান্য শরীরের জন্য যদি বিশ্ববিবেক প্রতি দশ জনের জন্য একজন চিকিৎসক ও আইন উপদেষ্টার প্রয়োজন মনে করে তাহলে মানুষের রুহ ও আত্মার সুস্থতার জন্য রুহানী চিকিৎসক ও শরয়ী আইন উপদেষ্টার প্রয়োজনীয়তা কিভাবে অস্বীকার করা যায়।
একজন হক্কানী আলিম হলেন মানুষের রুহ ও আত্মার চিকিৎসক
তিনি মানুষের যাবতীয় আমল-আখলাক, কাজকর্ম, লেনদেন ইত্যাদির আইন উপদেষ্টা। অতএব বিশ্ব বিবেকের নীতি অনুযায়ী যদি চিন্তা করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে কর্ম সংস্থান ও চাহিদার তুলনায় আলিমদের সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল।
শেষে একটি কথা না বলে পারছিনা
কওমী বিদ্বেষী কতিপয় চিন্তাবিদ অযথা এ উক্তি করে থাকেন যে কওমী শিক্ষিতদের অধিকাংশই অভাবী। অভাবের তারনায় তারা সন্ত্রাসের পথ বেছে নেন কিন্তু আমরা অভাবে স্বভাব নষ্ট, এই প্রবাদ সর্বক্ষেত্রে সত্য বলে মেনে নিতে পারছিনা। কে বলেছে অভাবের কারনে মানুষ সন্ত্রাসী হয়? অভাবের কারনে মানুষ সন্ত্রাসী হয়না বরং তুলনামূলক বেশি সংযমী হয়। অধিক খোদাভীরু ও আল্লাহ্‌ওয়ালাই হয়। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় অপকর্ম, দুর্নীতি, অত্যাচার ইত্যাদির ৮০% ঘটে সমাজের ধনী লোকদের দ্বারা আর হয়ত ২০% ঘটে গরীব লোকদের মাধ্যমে।
বস্তুত কোন মানুষ যদি সন্ত্রাসী হয় তাহলে সেটা মন্দ সাহচর্য ও মন্দ পরিবেশ এবং অশিক্ষা ও কুশিক্ষার কারণে কিংবা জীবন যাত্রায় মওত ও আখেরাতের ভয় বিদ্যমান না থাকার কারণে।
আসলে রোগের সঠিক কারণ নির্ণয় না করে আমরা জাতিকে ঔষধ সেবন করিয়ে যাচ্ছি। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। চিন্তাবিদ মহলের জন্য বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন