রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

দাঁডির জন্য ৬০,০০০ টাকা মূল্য পরিশোধ করতে হলো আমাকে

দাঁডির জন্য ৬০,০০০ টাকা  মূল্য পরিশোধ ,একি অভাক হয়েছেন ? না  ভাই অভাক হওয়ার কোন কারন নেই , কারন আল্লাহ পাক যাদের কবুল করেন তাদের দ্বারা এমন কিছু করিয়ে দেখান , অন্যকে শিক্ষা দেয়ার জন্য , ইব্-রত্ হাসল করার জন্য ৷
***********************************

দাড়ী রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যা হাদীসে দ্বীন ইসলামের চিহ্ন বলে বিবেচিত। নবী কারীম সা. অসংখ্য হাদীসে দাড়ী রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন, এবং জোড়ালোভাবে দাড়ী লম্বা রাখতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাই দাড়ী রাখা নবী সা. এর নির্দেশ ও ওয়াজিব। আমার প্রিয় নবীজি সহ পৃথিবীর সকল নবী রসুলদের সুন্নত ৷ যা পালন করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষের কর্তব্য।

এমন ‍গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশের ব্যপারে মা-বাবা বাধ সাধলে এ ক্ষেত্রে তাদের কথা মান্য করা যাবে না।

এমন কি কর্ম ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ দাঁডি রাখায় বাঁধ সাজলে তা প্রত্যাক্ষান করা ঈমানী দায়িত্ব ৷ এ ক্ষেত্রে ও কারো কথা মানা যাবেনা ৷

তেমনি একটি ঘটনা ঘটে যায় আমার প্রবাসের কর্ম জীবনের শুরুতে সেই ২০০০ সনে ,

********************

যখন আমি সৌদি আরবে একটি ফুলের দোকানে চাকুরী নি , তখনও আমার মুখে লম্বা সুন্নতি দাঁডি সোভা পাচ্ছিল ,এক পর্যায়ে মালিক পক্ষ প্রথমে আমাকে ক্লিন সেইপ হতে অনুরোধ করলো , তাতে আমি রাগাম্বিত-বিচলিত হওয়াতে , দাঁডি খাটো করতে অনুরোধ করলো , তাতে ও রাজি না হওয়াতে , দোকানের ব্যবসার সমস্যা হবে এমন অনেক অনেক খোঁডা যুক্তি আমার সামনে উপস্হাপন করলে তাতে ও আমার মনে ছিড্ লক্ষ না করতে পেরে , ৷  কারন আমি আল্লাহর রহমতে জীবনে কখনো আমার দাঁডিতে খুর-ব্লেড বসাইনি , আমার দাঁডি উঠার পর থেকে ৷

আমার তিন মাসের রক্ত ঝরানো মুজুরী বাবত পাওনা বাংলার ৬০,০০০ হাজার টাকা আটকিয়ো দিলো মালিক পক্ষ ,

পরিশেষে অনেক দেন-দরবার করে ঐ রক্ত ঝরানো টাকা গুলো আদায় করা সম্ভব হয়নি ৷

পরিশেষে আখেরাতের কথা ভেবে , নবীর সুন্নতের প্রতি অকৃত্তিম ভাল বাসা ,আর শ্রদ্ধা রেখে আমাকেই , আমার প্রিয় নবিজীর সুন্নত কে সমুন্নত রাখতেই , এই দাঁডির জন্য ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হলো ৷

আলহামদুলিল্লাহ এই টাকার জন্য বিন্দু মাত্র ও আমার মনে কোন প্রকারের কষ্ট অনুভব হয়নি ৷৷৷আল্লহর নবীর সুন্নত কে জিন্দা করতে গিয়ে ৬০,০০০ টাকার এ কোরবানী যেন আল্লাহ কবুল করেন এটাই কামনা ৷

এর পর আল্লাহ পাক ছোবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাকে এর চেয়ে আরও সন্মান জনক পোষ্টে ভাল বেতনে চাকরীর বন্দোবস্হ করেছেন ৷ কারন তখন সাধারন কর্মচারী হিসাবে ২০ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করলে ও বর্তমানে ম্যানাজার দায়িত্ব সহ ৫০,০০০ হাজার টাকা বেতনের চাকুরী আল্লাহই বন্দোবস্ত করেছেন ৷ আলহামদুলিল্লাহ ৷


যে আল্লাহর জন্য , আল্লাহ ও তার জন্য হয়ে যায় ৷

{ লা-তোয়াতা লি মাখ্ লুক্বীন ফি মাছিতিল্ খালেক } কেননা মহান রাব্বুল আলামীন ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের মুকাবেলায় দুনিয়ার কারো নির্দেশই পালনযোগ্য নয়। সেমতে আপনি দাড়ী রাখুন এবং মা-বাবা সহ অন্যদর হিকমত ও আদরের সাথে বুঝাতে থাকুন ও তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করুন। 



 

দাঁডি রাখার বিধান ও এক মুষ্টির বিতরে দাঁডি কাটা হারাম , দাঁডি রাখতে মাতা পিতা নিষেধ করলে ও মাতা-পিতার কথা মান্য করা যাবেনা ৷

 এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া


আমাদের সমাজে অনেকে জানেনা  কত টুকু দাঁডি রাখা সুন্নত  তাই এখানে এর পরিমান
   সম্পর্কে আলোকপাত করবো
এ পর্বে শুধু মাত্র দাড়ি রাখার বিধানের উপর আলোকপাত করা হবে

.
وكان ابن عمر رضى الله عنه إذا حج أو اعتمر قبض على لحيته فما فضل أخذه

عبدالله بن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " أنهكوا الشوارب، وأعفوا اللحى ".أخرجه البخاري (10/5893)، ومسلم (2/259)، وغيرهما





হযরত আবদুল্লাহ বিন ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা পালন করতেন এক মুষ্টির পর অবশিষ্ট দাড়ি কাটতেন
বলে হাদীস দারা প্রমানীত . এক মুষ্টির ভিতরে দাড়ি কাটা চা টা জায়েয নেই ,  এবং এক মুষ্টি পরিমান রাখাই সুন্নত এর লম্বা   রাখলে ও ক্ষতি নেই বরং দাঁডি  লম্বা করার অনেক  সহিহ হাদিস পাওয়া যায় ৷
নিন্মে দলীল সহ বর্ননা করা হয়েছে . 

[ দলীল শুধু মাত্র আরবী কলামিষ্টদের জন্যে ]

وجاء في السيرة قصة المجوس الذين وفدوا على المدينة ودخلا على رسول الله صلى الله عليه وسلم وقد حلقا لحاهما وأعفيا شواربهما، فكره النظر إليهما وقال: " ويلكما من أمركما بهذا ؟ ! " قالا: أمرنا ربنا - يعنيان كسرى - فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " ولكن ربى أمرنى بإعفاء لحيتى وقص شاربى " حسنه الشيخ الألباني في تعليقه على فقه السيرة.
.


রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন দাড়ি লম্বা করা সরাসরি আল্লাহর নির্দেশঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ি মুন্ডানর গুনাহের প্রতি এমন ঘৃণা ছিল যে, কেউ দাড়ি কামানো চেহারার অধিকারী হলে তিনি তার থেকে চেহারা অন্নদিকে ফিরিয়ে নিতেন। একবার ইয়ামেনের শাসক দুজন দূত পাঠাল এদের দাড়ি কামানো ও লম্বা বড় গোঁফ ছিল।
এই কুৎসিত চেহারা দেখে রাসুল (সঃ) তার চেহারা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলেন এবং বললেন, “তোমাদের জন্য দুর্ভোগ ! কে তোমাদের এমন করতে বলেছে?” তারা উত্তর দিল, “আমাদের প্রভু (কিসরা) বলেছে”।
রাসুল (সঃ) জবাবে বলেন, “কিন্তু আমার প্রভু, মহান ও মহিমান্বিত যিনি, তিনি আমাকে আদেশ করেছেন যেন আমি দাড়ি ছেড়ে দেই এবং গোঁফ ছেঁটে রাখি”।
(জারির আত তাবারি, ইবন সা’দ, ইবন বিশ্রান করতিক সংরক্ষিত। আল্বানি একে হাসান বলেছেন (ফিকহ উস সিরাহ, আল গাযালি পৃঃ৫৬৯)


দাড়ির ব্যাপারে ৫ ঈমামের মতামত
==========================
ঈমাম আবু হানিফা রঃ এর মতে দাড়ি ১ মুষ্টি পরিমান রেখে অতিরিক্ত গুলো কাটা জায়েয . ইবনে ওমর রাঃ হাদীস অনূকরনে ,


الحنفية: [ দলীল ]


قال محمد بن الحسن -صاحب أبي حنيفة- رحمهما الله:
أخبرنا أبو حنيفة عن الهيثم عن ابن عمر -رضي الله عنهما-: أنه كان يقبض على لحيته ثم يقص ما تحت القبضة.
قال محمد: وبه نأخذ، وهو قول أبي حنيفة. (الآثار 900).
وهو المعتمد في المذهب، قال ابن عابدين:
الأخذ من اللحية دون القبضة ( فوق القبضة ) ، كما يفعله بعض المغاربة ومخنثة الرجال لم يبحه أحد. (الحاشية 2/417).


 তা ছাডা রসুল সাঃ  নামাজে তেলাওয়াত করার সময় মুখের নডাছডায়  দাঁডির  নডা ছডা করার কথা  ছাহাবায়ে কেরাম াঃ  রাঃ পিছন থেকে মুক্তাদি হয়ে অনুভব করতেন  , তাহলে কত টুকু  বড বা লম্বা  দাঁডি হলে  পিছন থেকে দেখা বা অনুভব করা যায় একটু ভেবে দেখুন  ,



 কিন্তু আজ কাল মওদুদী পন্থীরা দাঁডি যে একটা ইসলাম ও আমাদের  নবীর সুন্নত  তা অবজ্ঞা অবহেলা করেই একটু পেশন করে  করে  নামে মাত্র  দাঁডি রাখেন  এতে সুন্নত তো আদায় হবেনা বরং  দাঁডি কাটা বা চাটার জন্য গুনাহগার হবেন , আবার অনেকে ইসলামী কর্মির খাতায়   নাম লেখায় কিন্তু তার লেবাস পোশাকে  বেশ ভূষায় এক জন ইসলামের  কর্মি হিসাবে  প্রকাশ পায়না ৷ এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় , আপনি যদি  দেশে ইসলাম  বাস্তবায়ন করতে চান তাহলে তো আপনাকে  সর্ব প্রথম  আপনার সাডে তিন হাত বোডির মধ্যে  ইসলাম সেটিং করতে হবে তাইনা , তা দেখে আপনার অন্যান্য নেক কর্ম  আখলাক দেখেইতো  মানুষ আপনার দলে যোগ দিবে ,

আল্লাহর নবী সহ সাহাবায়ে কেরাম ঈমান , আমল, এক্বিন  , ও আখলাকের মাধ্যমে দ্বীন প্রচার করেছেন , তলোয়ার বা যুদ্ব করে নয় ৷

المالكية: মালেকি মাজহাব অনূসারে দাড়ি সেপ করা বেদয়াত. হারাম , জায়েয নেই . এবং চিঁড়া / চিঁড়ে ফেলা ও জায়েয নেই .

جاء في مواهب الجليل شرح مختصر الشيخ خليل:
وحلق اللحية لا يجوز وكذلك الشارب وهو مُثلة وبدعة , ويؤدب من حلق لحيته أو شاربه إلا أن يريد الإحرام بالحج ويخشى من طول شاربه.اهـ
وأتفق أبو الحسن المالكي في شرحه والعدوي في حاشيته على (كفاية الطالب) على أن حلق اللحية بدعة محرمة في حق الرجل.
وقال أبو العباس القرطبي المالكي في المفهم: لا يجوز حلقها ولا نتفها ولا قص الكثير منها.اهـ



الشافعية: ঈমাম শাফেয়ি রঃ মাজহাব মোতাবেক দাড়ি সেপ করা , চোখের ভৌঁর কাটা জায়েয নেই , দাড়ি মহিলা পুরুষের মধ্যে বাহিয্যক পার্থক্য াকারী , দাড়ি পুরষের সৌন্দর্য বর্ধক . যেমন লম্বা চুল মহিলাদের সৌন্দর্য ,
ইমাম নববী বর্ননা করেন দাড়ি লম্বা করার ব্যপারে ৫ টি রেওয়য়েত আছে যার সব কটিই দাড়ি একেবারেই না কাটার প্রমান বহন করে . দাড়ি যে ভাবেই আছে ঠিক সে ভাবে নিজ হালতে ছেডে দেয়া , ]

قد نص الشافعي على تحريم حلق اللحية في كتابه الأم.
وقال الحليمي الشافعي:
لا يحل لأحد أن يحلق لحيته ولا حاجبيه، وإن كان له أن يحلق شاربه، لأن لحلقه فائدة، وهي أن لا يعلق به من دسم الطعام ورائحته ما يكره، بخلاف حلق اللحية فإنه هُجنة وشهرة وتشبه بالنساء، فهو كجبِّ الذكر. (الاعلام لابن الملقن 1/711).
وقال النووي في شرحه على مسلم(3/151):
وجاء في رواية البخاري وفروا اللحى فحصل خمس روايات على حالهاأعفوا وأوفوا وأرخوا وارجوا ووفروا ومعناها كلها تركها هذا هو الظاهر من الحديث الذي تقتضيه ألفاظه وهو الذي قاله جماعة من أصحابنا وغيرهم من العلماء.
والمختار ترك اللحية على حالها وألا يتعرض لها بتقصير شئ أصلا والمختار في الشارب ترك الاستئصال والاقتصار على ما يبدو به طرف الشفة والله أعلم .


الحنابلة: হাম্বলী মাজহাব হলো হাদীসের অনূসরনে ছাহাবায়ে কেরামের আমলের ভিত্তিতে এক ক্ববজার বাহিরে গেলে কাটবে কিন্তু সীমা লঙ্গন করবেনা , লম্বা দাড়ি রাখা তাঁর মতে ওয়াজিব . এক মুষ্টির অতিরিক্ত গুলো কাটা জায়েজ . সেপ করা হারাম ,


معلوم من مذهب الإمام أحمد أنه يأخذ بالحديث ولا يتعداه وبفعل الصحابة رضي الله عنهم لذلك فالإعفاء عنده واجب ويجوز أخذ ما زاد عن القبضة لفعل الصحابة.
قال ابن مفلح في الفروع (1/92): ويعفي لحيته وفي المذهب ما لم يستهجن طولها ويحرم حلقها.

শায়খুল ইসলাম ইবন্ তাইমিয়া রঃ মতে সেপ্ করা হারাম . লম্বা দাড়ি . রাখা এবং এক মুষ্টির বাহিরে অতিরিক্ত টুকু কাটা জায়েয মাকরুহ নয় .

قال شيخ الإسلام ابن تيمية (شرح العمدة 1/182، 236) :
وأما إعفاء اللحية فإنه يترك، ولو أخذ ما زاد على القبضة لم يكره، نص عليه، كما تقدم عن ابن عمر، وكذلك أخذ ما تطاير منها.
وقال شيخ الإسلام (الفروع 2/129) :[color="red"] ويحرم حلق اللحية.[/color]



وقال الشيخ علي محفوظ (الإبداع في مضار الابتداع 409):

সার সংক্ষেপ ; ৪ ইমামদয় লম্বা দাড়ি রাখা ওয়াজিব ও সেপ্ করা হারাম হওয়ার ব্যপারে ঐক্যমত পোষন করেেছেন

وقد اتفقت المذاهب الأربعة على وجوب توفير اللحية وحرمة حلقها.

এবং ইবন হাঝম্ রঃ এজমায়ে উম্মত প্রমান করেছেন সেপ্ করা হারাম হওয়ার ব্যপারে

وقد نقل الإجماع على تحريم حلق اللحية ابن حزم رحمه الله في (المحلى 2/220) فقال: وأما فرض قص الشارب وإعفاء اللحية: ثم ذكر حديث ابن عمر رضي الله عنهما.
وقال في (مراتب الإجماع 182): اتفقوا أن حلق جميع اللحية مُثْلة لا تجوز.


ইমাম মালেক রঃ এর অন্য রেওয়ায়েত মোতাবেক অতিরিক্ত লম্বা দাড়ি র এক মুষ্টির পর নীচের আংশ ও মুখমন্ডলের উভয় পাশের দাড়ি কেটে চেটে সুন্দর করে রাখা মুস্তাহাব .


وأما المشروع في قصها هو أخذ ما زاد عن القبضة كما ثبت عن الصحابة رضي الله عنهم .
وقد استحب الإمام مالك وغيره من الأئمة أخذ ما تطاير منها وفحش من طولها وعرضها على أن لا يزيد الآخذ عن ما أخذه الصحابة رضي الله عنهم.

আর যে সকল মনিষী এক মুষ্টির ভিতরে দাড়ি কাটা জায়েয বলে মনে করেন . তাদের কথা ভিত্তি হীন .মনগড়া এদের থেকে ----------------------- সাবধান ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------ সাবধান -------------------------------------------------------------------- সাবধান ৷




وأما من قال بجواز الأخذ من اللحية بدون حد القبضة فلا دليل على قوله لأن الأمر النبوي بالإعفاء أمر مطلق وفعل الصحابة لا يخرج عن الإعفاء وأما من يزيد على فعلهم فقد دخل في المحظور ولم يمتثل الأمر النبوي فيكون فعله هذا داخل في التحريم وقد نص العلائي من الشافعية وابن عابدين من الحنفية أن هذا الفعل لم يبحه أحد والله أعلم.


وصلى الله وسلم على قدوتنا واُسوتنا سيدنا محمد وعلى آله وصحبه وسلم والحمد لله رب العالمين


http://www.talebal3elm.com/vb/showthread.php?t=11559 
 
 
দাঁডি রাখতে মাতা পিতা নিষেধ করলে ও মাতা-পিতার কথা মান্য করা যাবেনা ৷

********************************************************

এক ভাইয়ের প্রশ্ন - তাই সকলের সাথে শেয়ার না করলে মন মনেনা তাই শেয়ার করলাম ৷আস সালামু আলাইকুম, আমার বয়স ২২ বস, আমার মুখে দাড়ি কম। আমি নিয়ত করেছি দাড়ি রাখবো। কিন্তু আমার বাবা-মা বলছেন, আরো দুই-তিন বছর পর রাখতে। এ ক্ষেত্রে ইসলাম কি বলে?



উত্তর: টা এমনই

দাড়ী রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যা হাদীসে দ্বীন ইসলামের চিহ্ন বলে বিবেচিত। নবী কারীম সা. অসংখ্য হাদীসে দাড়ী রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন, এবং জোড়ালোভাবে দাড়ী লম্বা রাখতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাই দাড়ী রাখা নবী সা. এর নির্দেশ ও ওয়াজিব। যা পালন করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষের কর্তব্য। এমন ‍গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশের ব্যপারে মা-বাবা বাধ সাধলে এ ক্ষেত্রে তাদের কথা মান্য করা যাবে না।  
 
 এমন কি  ক্রম ক্ষেত্রে আপনার ম্যানাজার  বা উপরস্ত কেউ নিষেধ করলে  তাদের কথা মান্য করা যাবে না।   ৷
 
 কেননা মহান রাব্বুল আলামীন ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের মুকাবেলায় দুনিয়ার কারো নির্দেশই পালনযোগ্য নয়।
 
 সেমতে আপনি দাড়ী রাখুন এবং মা-বাবাকে হিকমত ও আদরের সাথে বুঝাতে থাকুন ও তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করুন।

আরও জানতে এখানে আসুন


http://www.youtube.com/watch?v=NHalDD_KLok


http://351224351224.blogspot.com/2011/12/blog-post_4442.html
 

 

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

দাঁডি রাখতে মাতা পিতা নিষেধ করলে ও মাতা-পিতার কথা মান্য করা যাবেনা ৷

দাঁডি রাখতে মাতা পিতা নিষেধ করলে ও মাতা-পিতার কথা মান্য করা যাবেনা ৷

********************************************************

এক ভাইয়ের প্রশ্ন - তাই সকলের সাথে শেয়ার না করলে মন মনেনা তাই শেয়ার করলাম ৷আস সালামু আলাইকুম, আমার বয়স ২২ বস, আমার মুখে দাড়ি কম। আমি নিয়ত করেছি দাড়ি রাখবো। কিন্তু আমার বাবা-মা বলছেন, আরো দুই-তিন বছর পর রাখতে। এ ক্ষেত্রে ইসলাম কি বলে?



উত্তর: টা এমনই

দাড়ী রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যা হাদীসে দ্বীন ইসলামের চিহ্ন বলে বিবেচিত। নবী কারীম সা. অসংখ্য হাদীসে দাড়ী রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন, এবং জোড়ালোভাবে দাড়ী লম্বা রাখতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাই দাড়ী রাখা নবী সা. এর নির্দেশ ও ওয়াজিব। যা পালন করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষের কর্তব্য।

 এমন ‍গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশের ব্যপারে মা-বাবা বাধ সাধলে এ ক্ষেত্রে তাদের কথা মান্য করা যাবে না।

এমন কি কর্ম ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ দাঁডি রাখায় বাঁধ সাজলে  তা  প্রত্যাক্ষান করা ঈমানী দায়িত্ব ৷ এ ক্ষেত্রে ও কারো কথা মানা যাবেনা ৷

{ লা-তোয়াতা লি মাখ্ লুক্বীন ফি মাছিতিল্ খালেক } কেননা মহান রাব্বুল আলামীন ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের মুকাবেলায় দুনিয়ার কারো নির্দেশই পালনযোগ্য নয়। সেমতে আপনি দাড়ী রাখুন এবং মা-বাবাকে হিকমত ও আদরের সাথে বুঝাতে থাকুন ও তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করুন।
আরও জানুন

http://www.youtube.com/watch?v=NHalDD_KLok


http://351224351224.blogspot.com/2011/12/blog-post_4442.html
 

দরুদ শরীফের ফজিলত সমপর্কিত ৪০ হাদীস ; সংগ্রেহে রাখার মত

দরুদ শরীফের ফজিলত সমপর্কিত ৪০ হাদীস ; সংগ্রেহে রাখার মত


عبد الله نظامى //আবদুল্লাহ নিজামী ভূঁইয়া
 মুসলমানদের মধ্যে
 এমন কোন লোক খুঁজে পাওয়া যাবেনা ; যারা আমাদের প্রিয় নবী সাঃ কে মহব্বত করেনা;
কারন তাঁর মহব্বত /আর অনূকরনের মধ্যেই রয়েছে ; মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি আর রেজামন্দি ৷
--------- আর তাঁর মহব্বতের বর্হিপ্রকাশ হবে ; একমাত্র উম্মতের আমল /আখলাক /সুন্নাতের উপর
 আমল কার কতটুকু +
তেমনি একটি আমল দরুদ শরীফ পাঠ করন ৷তবে মনগড়া দরুদ পাঠ করলে তা হবেনা
 এমন দরুদ পাঠ করতে হবে যা নবী সাঃ ছাহাবায়ে কেরাম কে শিখিয়ে গেছেন ৷ আর কেউ নবী সাঃ এর শানে কোন দরুদ-কছিদা-নাত ইত্যাদি লেখে খাকলে ..তা মানি মতলব ঠিক থাকলে পডাতে দোষের কিছু নেই.. কিন্তু হাদীসে বনিত দরুদই শ্রেষ্ঠ ও শ্রেয় ৷৷
 তাই নিন্মে
 দরুদ শরীফের ফজিলত সমপর্কিত ৪০ হাদীস  

الحديث الأول عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال قال رسول  {1}
 الله " من صلى علي صلت عليه
 الملائكة ومن صلت عليه الملائكة صلى الله عليه ومن صلى الله عليه لم يبق شيءفي السموات ولا في
 الأرض إلا صلى عليه 

{2} " الحديث الثاني قال رسول الله " من صلى علي صلاة واحدة أمر الله حافظيه أن
 لا يكتبا عليه ذنبا ثلاثة أيام


الحديث الثالث قال رسول الله " من صلى علي مرة خلق الله من قوله ملكا { 3}
 له جناحان جناح بالمشرق وجناح بالمغرب رأسه وعنقه تحت العرش وهو يقول اللهم صل على عبدك
     ما دام يصلي على نبيك

"
الحديث الرابع قال رسول الله " من صلى علي مرة صلى الله عليه بها عشرا  {4}
 ومن صلى علي عشرا صلى الله عليه بها مائة ومن صلى علي مائة صلى الله عليه بها ألفا ومن صلى
 على الفا لم يعذبه الله بالنار 
"
الحديث الخامس قال رسول الله " من صلى علي مرة كتب الله له عشر {5}
 حسنات ومحا عنه عشر سيئات ورفع له عشر درجات 
"
الحديث السادس قال رسول الله " أتاني جبريل{6}
 يوما وقال يا محمد جئتك ببشارة لم آت بها أحدا من قبلك وهي أن الله تعالى يقول لك
 من صلى عليك من أمتك ثلاث مرات غفر الله له إن كان قائما قبل أن يقعد وإن كان قاعدا غفر له قبل
 أن يقوم فعند ذلك خر ساجدا لله شاكرا " 

الحديث السابع قال رسول الله " من صلى علي في الصباح{7}
 عشرا محيت عنه ذنوب أربعين سنة " 


الحديث الثامن قال رسول الله " من صلى علي ليلة الجمعة أو{8}
 يوم الجمعة مائة مرة غفر الله له خطئيته ثمانين سنة "


الحديث التاسع قال رسول الله " من صلى علي { 9}
 ليلة الجمعة أو يوم الجمعة مائة مرة قضى الله له مائة حاجة ووكل الله به ملكا حين يدفن في قبره
 يبشره كما يدخل أحدكم على أخيه بالهدية "


الحديث العاشر قال رسول الله " من صلى علي في يوم {10}
 مائة مرة قضيت له في ذلك اليوم مائة حاجة "

الحديث الحادي عشر قال رسول الله " أقربكم مني {11}
 مجلسا أكثركم علي صلاة "

الحديث الثاني عشر قال رسول الله " من صلى علي ألف مرة بشر بالجنة{ 12 } 
 قبل موته "

الحديث الثالث عشر قال رسول الله " جاءني جبريل عليه السلام وقال لي يا رسول الله لا { 13 }
 يصلي عليك أحد إلا ويصلى عليه سبعون ألفا من الملائكة
"
الحديث الرابع عشر قال رسول الله {14 }
"
الدعاء بعد الصلاة علي لا يرد "

الحديث الخامس عشر قال رسول الله " الصلاة علي نور على الصراط{ 15}
 وقال لا يلج النار من يصلي علي


 الحديث السادس عشر قال رسول الله " من جعل عبادته الصلاة { 16}
 علي قضى الله له حاجة الدنيا والآخرة "


الحديث السابع عشر قال رسول الله " من نسي الصلاة علي أخطأ طريق الجنة "{ 17 }


الحديث الثامن  عشر } { 18 }

 قال رسول الله " إن لله ملائكة في الهواء بأيديهم قراطيس من نور لا يكتبون إلا الصلاة علي وعلى أهل

 بيتي "


الحديث التاسع عشر قال رسول الله " لو أن عبدا جاء يوم القيامة بحسنات أهل الدنيا ولم تكن    {    {1           {     }
 فيها الصلاة علي ردت عليه ولم تقبل منه " 

{  }


الحديث العشرون قال رسول الله " أولى الناس بي أكثره1
 علي صلاة "
الحديث الحادي والعشرون قال رسول الله من صلى علي في كتاب ما لم تزل الملائكة
 تصلي عليه لم يندرس اسمي من ذلك الكتاب "
الحديث الثاني والعشرون قال رسول الله إن لله ملائكة
 سياحين في الأرض يبلغوني الصلاة علي من أمتي فأستغفر لهم
 الحديث الثالث والعشرون قال رسول
 الله من صلى علي كنت شفيعه يوم القيامة ومن لم يصل علي فأنا برئ منه "
الحديث الرابع والعشرون
 قال رسول الله يؤمر بقوم إلى الجنة فيخطئون الطريق قالوا يا رسول الله ولم ذاك قال سمعوا اسمي ولم
 يصلوا علي "
الحديث الخامس والعشرون قال رسول الله يؤمر برجل إلى النار فأقول ردوه إلى الميزان
 فأضع له شيئا كالأنملة معي في ميزانه وهو الصلاة علي فترجح ميزانه وينادي سعد فلان
 الحديث
 السادس والعشرون قال رسول الله ما اجتمع قوم في مجلس ولم يصل علي فيه إلا تفرقوا كقوم تفرقوا
 عن ميت ولم يغسلوه
 الحديث السابع والعشرون قال رسول الله " إن الله تعالى وكل بقبري ملكا أعطاه
 أسماء الخلائق كلها فلا يصلي علي أحد إلى يوم القيامة إلا بلغني اسمه وقال رسول الله إن فلان بن
 فلانة صلى عليك
 الحديث الثامن والعشرون عن أبي بكر الصديق رضي الله تعالى عنه أنه قال الصلاة على النبي أمحى
 للذنوب من الماء لسواد اللوح
 الحديث التاسع والعشرون قال رسول الله إن الله تعالى أوحى إلى موسى
 عليه السلام أن أردت أن أكون إليك أقرب من كلامك إلى لسانك ومن روحك لجسدك فأكثر الصلاة على
 النبي الأمي
 الحديث الثلاثون قال رسول الله إن ملكا أمره الله تعالى باقتلاع مدينة غضب عليها فرحمها
 ذلك الملك ولم يبادر إلى اقتلاعها فغضب الله عليه وأكسر أجنحته فمر به جبريل عليه السلام فشكا له
 حاله فسأل الله فيه فأمره أن يصلي على النبي فصلى عليه فغفر الله له ورد عليه أجنحته ببركة الصلاة
 على النبي
 الحديث الحادي والثلاثون عن عائشة رضي الله تعالى عنها قالت من صلى على رسول الله
 عشر مرات وصلى ركعتين ودعا الله تعالى تقبل صلاته وتقضى حاجته ودعاؤه مقبول غير مردود
 الحديث الثاني والثلاثون عن زيد بن حارثة قال سألت رسول الله عن الصلاة عليه فقال صلوا علي
 واجتهدوا في الدعاء وقولوا اللهم صل على محمد وعلى آل محمد
 الحديث الثالث والثلاثون عن أبي
 هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلوا علي فإن صلاتكم علي زكاة لكم واسألوا الله لي
 الوسلية
 الحديث الرابع والثلاثون عن سهل بن سعد الساعدي أن النبي قال لا صلاة لمن لم يصل على
 نبيه
 الحديث الخامس والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله رغم أنف رجل
 ذكرت عنده فلم يصلي علي
 الحديث السادس والثلاثون عن ابن عباس رضي الله تعالى عنهما قال قال
 رسول الله من قال جزى الله عنا محمدا خيرا وجزى الله نبينا محمدا بما هو أهله فقد أتعب كاتبيه
******* ----------------------------------*****************
الحديث السابع والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله لا تجعلوا بيوتكم قبورا
 وصلوا علي فإن صلاتكم تبلغني حيثما كنتم
 الحديث الثامن والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى
 عنه قال قال رسول الله ما من أحد يصلي علي إلا رد الله علي روحي حتى أرد عليه
 الحديث التاسع
 والثلاثون قال رسول الله أقربكم مني منزلا يوم القيامة أكثركم علي صلاة
 الحديث الأربعون نقل الشيخ
 كمال الدين الدميري رحمه الله تعالى عن شفاء الصدور لابن سبع أن النبي قال من سره أن يلقى الله
 وهو عليه راض فليكثر من الصلاة علي فإنه من صلى علي في كل يوم خمسمائة مرة لم يفتقر أبدا
 وهدمت ذنوبه ومحيت خطاياه ودام سروره واستجيب دعاؤه وأعطي أمله وأعين على عدوه وعلى
 أسباب الخير وكان ممن يرافق نبيه في الجنان
 اللهم صل على سيد المرسلين وخاتم النبيين ورسول رب العالمين سيدنا محمدصلى الله عليه وسلم
 أسأ ل الله ان ان يجمعنا واياكم مع النبي صلى الله عليه وسلم في الفردوس الاعلى من الجنة
 وأسأله ان يكون هذا العمل خالصآ لوجهه اللهم امين
 والسسسسسلام
 كيفية الصلاة والتسليم على النبي :
 ******************************************************
 ======================================
قال الله تعالى: إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيماً [الأحزاب:56] فالأفضل أن تقرن الصلاة والسلام سوياً استجابةً لله عز وجل فهذا هو المجزئ في صفة الصلاة عليه الصلاة والسلام.
وعن أبي محمد بن عجرة قال: خرج علينا النبي فقلت: يا رسول الله قد علمنا كيف نسلم عليك فكيف نصلي عليك؟ فقال: { قولوا اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل ابراهيم إنك حميد مجيد } [متفق عليه].
وعن أبي حميد الساعد قال: قالوا يا رسول الله كيف نصلي عليك؟ قال: { قولوا اللهم صل على محمد وعلى أزواجه وذريته كما صليت على إبراهيم، وبارك على محمد وعلى أزواجه كما باركت على إبراهيم، إنك حميد مجيد } [متفق عليه].
وفي هذين الحديثين دلالة على الصفة الكاملة للصلاة على النبي .
http://www.google.com.sa/search?hl=ar&site=&q=%D9%81%D8%B6%D9%84+%D8%A7%D9%84%D8%B5%D9%84%D9%88%D8%A9+%D8%B9%D9%84%D9%89+%D8%A7%D9%84%D9%86%D8%A8%D9%89+&rlz=1R2ADSA_enSA399&oq=%D9%81%D8%B6%D9%84+%D8%A7%D9%84%D8%B5%D9%84%D9%88%D8%A9+%D8%B9%D9%84%D9%89+%D8%A7%D9%84%D9%86%D8%A8%D9%89+&aq=f&aqi=&aql=&gs_sm=e&gs_upl=6000l21079l0l22141l23l23l1l12l12l1l953l4453l3-1.3.2.2l8l0

 

পূর্নাঙ্গ হজ্বের নিয়ম [সংক্ষিপ্ত

পূর্নাঙ্গ হজ্বের নিয়ম [সংক্ষিপ্ত  



]উমরা পালন করার নিয়ম
 উমরার রুকন তিনটি:
 (১) ইহরাম বাঁধা।
(২) ত্বাওয়াফ করা।
(৩) সায়ী করা।
 উমরার ওয়াজিব দু’টি:
 (১) মীক্বাত থেকে ইহরাম বাঁধা।
(২) মাথা মুন্ডন করা কিংবা সম্পূর্ণ মাথা থেকে চুল ছোট করা
 ইহরাম বাঁধা (ফরয): উমরা পালনকারী মীকাতে পৌঁছে অথবা তার পূর্ব হতে গোসল বা উজু করে (পুরুষগণ ইহরামের কাপড় পরে) ২ রাকাআত নামায পড়ে মাথা হতে টুপি ইত্যাদি সরিয়ে কেবলামুখী হয়ে উমরার নিয়ত করবে। নিয়ত শেষে অন্ততঃ ৩ বার (পুরুষগণ সশব্দে) ৪ শ্বাসে তালবিয়াহ পাঠ করবে। তালবিয়া এইi. لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ ii. لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ iii. اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ iv. لاَ شَرِيْكَ لَكَ নিয়ত ও তালবিয়ার দ্বারা ইহরাম বাঁধা হয়ে গেল। এখন বেশী বেশী এ তালবিয়াহ পড়তে থাকবে এবং ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বিরত থাকবে।
 তাওয়াফ করা (ফরয): অতঃপর মসজিদুল হারামে প্রবেশের সুন্নাতের প্রতি লক্ষ রেখে তাওয়াফের স্থানে প্রবেশ করবে। এরপর তাওয়াফের স্থানে পৌঁছেই তালবিয়াহ বন্ধ করে দিবে। হাজরে আসওয়াদের দাগের বাঁয়ে দাঁড়িয়ে প্রথমে উমরার তাওয়াফের নিয়ত করবে। তারপর দাগের উপর এসে হাজরে আসওয়াদকে সামনে করে তাকবীরে তাহরীমার মত হাত তুলবে এবং তাকবীর বলবে। অতঃপর হাত ছেড়ে দিবে। এরপর ইশারার মাধ্যমে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করবে। অতঃপর পূর্ণ তাওয়াফে ইযতিবা ও প্রথম ৩ চক্করে রমল সহকারে উমরার ৭ চক্কর সম্পন্ন করবে। প্রত্যেক চক্কর শেষে হাজরে আসওয়াদকে ইশারার মাধ্যমে চুম্বন করবে। তাওয়াফ শেষে সম্ভব হলে কাউকে কষ্ট না দিয়ে মুলতাযামে হাযিরী দিয়ে দু’আ করবে, তারপর মাতাফের কিনারায় গিয়ে মাকামে ইবরাহীমকে সামনে রেখে বা যেখানে সহজ হয় ওয়াজিবুত তাওয়াফ দু’রাকাআত নামায আদায় করবে। এরপর যমযমের পানি পান করবে।
 সায়ী করা (ওয়াজিব): এরপর সাফা মারওয়া এর সায়ী করার উদ্দেশ্যে হাজরে আসওয়াদকে ইশারার মাধ্যমে চু্ম্বন করে বাবুস সাফা দিয়ে বের হয়ে সাফা পাহাড়ে কিছুটা উপরে চড়বে এবং বাইতুল্লাহ মুখী হয়ে দু’আ করে মারওয়া পাহাড়ের দিকে চলবে। মারওয়াতে পৌছলে একবার সওত হয়ে গেল। এভাবে সাত সওত অর্থাত, ৭ বার সায়ী সম্পন্ন করবে। মারওয়াতে কিছুটা উপরে চড়ে বাইতুল্লাহ মুখী হয়ে দু’আ করে সাফার দিকে চলবে। প্রত্যেক বার সাফা মারওয়াতে বাইতুল্লাহ মুখী হয়ে দু’আ করবে এবং প্রতিবার (পুরুষগণ) সবুজ বাতিদ্বয়ের মাঝে দ্রুত চলবে। সায়ীর পর ২ রাকাআত নফল নামায পড়বে। এবার সায়ী সম্পূর্ণ হল।হালাল হওয়া (ওয়াজিব): এরপর মাথা মুন্ডিয়ে বা চুল ছোট করে হালাল হতে হবে। এখন আপনার উমরার কাজ সম্পূর্ণ হল।
 দ্রষ্টব্য-
মাথার চুল সমান ভাবে চতুর্দিকে কাটতে হবে , অল্প অল্প করে আঙ্গুলের মাথা পরিমান যারা কেটে থাকেন এটা ভূল তরীকা , তাছাডা এটা মহিলাদের জন্য প্রযোয্য ৷ আবার কেউ তাওয়াফ ও সায়ী শেষ করে মাথা না মুনন্ডিয়ে ওমরাহ কাজ শেষ হয়ে গেছে মনে করে কাপড পরিবর্তন করে ফেলেন এবং গনতব্যে গিয়ে চুল চাটেন এটা মারাত্বক ভূল কারন মাথা মুন্ডন করা কিংবা সম্পূর্ণ মাথা থেকে চুল ছোট করা ওয়াজীব ৷ এমতাবস্হায় দম দিতে হবে ৷ কারন ওমরাহর কাজ শেষ হবে , এহরামের কাপড পরিহীত আবস্হায় মাথার চুল সেটেই হালাল হতে হবে ৷
 হজ্জের বর্ণনা
 হজ্জের রুকনসমুহঃ
 হজ্জের রুকন বা ফরয চারটি যথাঃ
(১) ইহরাম বাঁধা
(২) আরাফায় অবস্থান করা
(৩) ত্বাওয়াফে ইফাযাহ (তাওয়াফে যিয়ারত) করা
(৪) সাঈ করা ।
 হজ্জের ওয়াজিবসমূহঃ
(১) মীকাত থেকে ইহরাম বাধাঁ
(২) মাগরীব পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা
(৩) মুযদালিফাতে রাত্রি যাপন করা
(৪) তাশরীকের রাতসমুহ মিনাতে অবস্থান করা
(৫) জামরাতে পাথর নিক্ষেপ করা।
(৬) জামরাতুল আক্বাবাতে পাথর নিক্ষেপের পর মাথা মুন্ডানো
(৭) বিদায়ী ত্বাওয়াফ করা।
 মনে রাখবেন, হজ্জের রুকন আদায় না করলে হজ্জে হবেনা। আর হজ্জের ওয়াজিব আদায় না হলে তার জন্য একটি কুরবানী করতে হবে। তবে হজ্জের সুন্নাতসমুহে কোন ত্র“টি হলে তার জন্য কোন পাপ হবেনা কিংবা কুরবানীও ওয়াজিব হবেনা।
 হজ্জের প্রকারভেদঃ
 হজ্জ তিন প্রকার। যথাঃ তামাত্তু, ক্বিরাণ ও ইফরাদ। তামাত্তু হল, হজ্জের মাস সমূহে ভিন্ন ভিন্ন ইহরামে দ্বারা প্রহমে উমরা তারপর হজ্জ আদায় করা। ক্বিরাণ হল, একই ইহরামে উমরা-হজ্জ একসাথে আদায় করা। আর ইফরাদ হল, শুধু হজ্জ আদায় করা।
 হজ্জে ইফরাদ পালনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
********************
ইহরাম বাঁধা (ফরয): হজ্জে ইফরাদ পালনকারী হজ্জের মাস সমূহে মীকাতে পৌছে বা তার পূর্ব হতে (বাংলাদেশী হাজীদের জন্য বাড়ী বা ঢাকা থেকে) হাজামাত (ক্ষৌরকায) ইত্যাদি সমাপ্ত করে গোসল করে বা কমপক্ষে উজু করে ইহরামের কাপড় পড়িধান করে টুপি পরে দুরাকাআত ইহরামের নামায আদায় করবে। নামায শেষে টুপি খুলে হজ্জের নিয়ত করবে। নিয়ত শেষে অন্তত তিন বার আওয়াজ করে তালবিয়াহ পাঠ করবে। ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে। তালবিয়াহ এই –i. لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ ii. لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ iii. اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ iv. لاَ شَرِيْكَ لَكَ
তাওয়াফ করা:
 **********
অতঃপর মক্কা মুকরারমায় পৌঁছে মসজিদে প্রবেশের সুন্নত অনুযায়ী মসজিদুল হারামে প্রবেশ করে তাওয়াফের স্থানে গিয়ে প্রথমে তাওয়াফে কুদুম সম্পূর্ণ করবে। তাওয়াফের সংক্ষিপ্ত নিয়ম উমরার বয়ান থেকে দেখে নিন। ৭ চক্করে তাওয়াফ সম্পন্ন করে মাতাফের নিকটি গিয়ে মাকামে ইবরাহীমকে সামনে করে বা অন্য স্থানে ২ রাকাআত ওয়াজিবুত তাওয়াফ নামায এমনভাবে পড়বে, যেন তাওয়াফকারীদের সমস্যা না হয়। তারপর যমযমের পানি পান করবে, হজ্জের সায়ী এ তাওয়াফের পরই করার ইচ্ছা করলে উক্ত তাওয়াফে ইযতিবা ও ১ম তিন চক্করে রমল করতে হবে। উল্লেখ্য, ইফরাদ হজ্জ পালনকারীর জন্য তাওয়াফে কুদুমের পর মক্কায় অবস্থান কালে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে সাধ্যমত বিরত থেকে বেশী বেশী নফল তাওয়াফ করার চেষ্টা করবে। উল্লেখ্য সব ধরনের তাওয়াফের পর দু’রাকাআত নামায পড়া ওয়াজিব।
 ৮ই জিলহজ্বে করণীয়ঃ
**************
৮ই জিলহজ্জ সূর্যোদয়ের পর মিনা অভিমূখে রওয়ানা হওয়া সুন্নত। ঐ দিন মিনায় গিয়ে যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা এবং রাত্রি যাপন করে পর দিন ফজরের নামায সেখানে আদায় করা সুন্নাত। মুআল্লিমগণ সাধারণতঃ ৭ই জিলহজ্জ রাত্রেই হাজীদেরকে মিনার তাবুতে পৌঁছে দেয়। নতুন লোকদের জন্য পেরেশানী থেকে বাঁচার জন্য অগ্রিম যাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। ৮ তারিখ জোহরের পূ্র্বেই মিনায় পৌঁছতে হবে। এবং অতি সংক্ষিপ্ত জরুরী সামান-বিছানা এবং পরিধেয় কাপড় নিতে হবে এবং কয়েক দিনের খাবারের জন্য মুয়াল্লিমের নিকট টাকা জমা দেয়াটাই সহজ উপায়। আর মিনাতেও খানা-পিনা কিনে খাবার ব্যবস্থা আছে।
 ৯ই জিলহজ্জে করণীয়ঃ
****************
উকূফে আরাফা (ফরয): ঐদিন ফজরের নামায যথা সময়ে আদায় করে (পুরুষগণ আওয়াজ করে, এবং মহিলাগণ নীরবে ১ বার) তাকবীরে তাশরীফ পড়ে নিবে। নাস্তা ইত্যাদির জুরুত শেষে সূয উঠার পর তালবিয়া পড়তে পড়তে আরাফা অভিমুখে রওয়ানা হতে হবে। আরাফায় পৌঁছে মুয়াল্লিমের তাবুতে উকুফ করতে হবে, তাবুতে না থাকলে আরাফায় নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে অবস্থান করবে। সংক্ষেপে উকুফের পদ্ধতিঃ এই ময়দানে পৌঁছে সেখানে আউয়াল ওয়াক্তে যোহরের নামায পড়ে দাড়িয়ে, আর কষ্ট হলে বসে দু’আ-কালাম-তাসবীহ-তাহলীল পড়তে থাকবে। তারপর হানাফী মাযহাব মতে আসরের সময় হলে আসর নামায পড়ে সূয সম্পূর্ণ অস্ত যাওয়া পযন্ত পূর্বের নিয়মে দু’আ ও যিকিরে মশগুল থাকবে। অন্য আযান শুনে কোন অবস্থায় আসরের ওয়াক্তের পূর্বে আসর পড়বে না। আরাফার ময়দানে এই অবস্থানকে ‘উকুফে আরাফা’ বলা হয়। সূয সম্পূর্ণ অস্ত যাওয়ার পরে এখানে বা রাস্তায় মাগরিব না পড়ে তালবিয়াহ পড়তে পড়তে মুআল্লিমের গাড়ীতে করে মুযদালিফায় রওয়ানা হবে যাবে।
 তবে এক আজানে ২ একামতে জোহর আছর পর পর জোহরের সময়ে জময়ে মুকাদদম হিসাবে শাফেয়ী হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী পড়া হয়ে থাকে , তাতে ও আংশ গ্রহন করতে পারেন
 মুযদালিফায় রাতে অবস্থান করা (ওয়াজিব):
 *****************************
মুযদালিফা ময়দানে পৌঁছে ইশার ওয়াক্ত হওয়ার পর এক আযান ও এক ইকামতে প্রথমে মাগরিব ও পরে ইশার ফরয নামায আদায় করতে হবে। তারপর সুন্নাত, নফল ও বিতির পড়বে। অতঃপর মুযদালিফার খোলা ময়দানে রাতে অবস্থান করতে হবে। আউয়াল ওয়াক্তে ফজরের নামায পড়ে সূর্যোদয়ের পূর্ব পযন্ত মুযদালিফায় অবস্থান করে তাসবিহ-তাহলীল যিকির ও দুআয় মশগুল থাকবে। এ সময় অবস্থান করাকে “উকুফে মুযদালিফা” বলে। এখান থেকে ৪৯ টি পাথর কণা সঙ্গে নিবে। সূয উঠার কিছুক্ষণ পূর্বেই তালবিয়া পড়তে পড়তে মিনার উদ্দেশ্যে পায়ে হেটে রওয়ানা হয়ে যাবে।১০ই জিলহজ্ব করণীয়ঃ রমী করা জামরায়ে উকবা তথা বড় শয়তানকে কংকর মারা (ওয়াজিব): মিনায় পৌঁছে জরুরত সেরে এই দিন শুধুমাত্র জামরায়ে উকবায় তথা বড় শয়তানের স্থানে রমী করার জন্য ভীড় আজকাল সাধারণত আসরের নামাযের পূর্বে ভীড় কমে না। এ জন্য আউয়াল ওয়াক্তে আসর পড়ে বা প্রয়োজনে আরো পরে বড় শয়তারে বেষ্টনির মধ্যে ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবে। এইটাকেই রমী করা বলা হয়। উল্লেখ্য, ১০ই জিলহজ্ব বড় শয়তানের নিকট পৌঁছে প্রথম কংকর নিক্ষেপের পূর্বক্ষণেই তালবিয়া পড়া বন্ধ করে দিবে।
 কুরবানী করা (মুস্তহাব):
রমী শেষে সময় থাকলে এদিন অন্যথায় পরের দিন পশু বাজারে গিয়ে বা আমানতদার কাউকে পাঠিয়ে কুরবানী করবে। হজ্বে ইফরাদ পালনকারীর জন্য কুবানী করা ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব। সুতরাং তাওফীক থাকলে কুরবানী করতে চেষ্টা করবে।হালাল হওয়া (ওয়াজিব): বড় শয়তানকে কংকর মারার পরে এবং কুরবানী করলে কুরবানী শেষে মাথা মুন্ডাতে বা চুল ছাটতে হবে এবং এর মাধ্যমেই মুহরিম হজ্বের ইহরাম থেকে হালাল হয়ে গেল।
 বিশেষ দ্রঃ -----------
অনেকে মনে করেন দেশে কোরবানী করলে , এখানে হজ্বে তামাত্তু-কেরান করলে ও কোরবানী দেয়া লাগবেনা ,এটা খুবই মারাত্বক ভূল ধারনা , দেশের কোরবানীর সাথে হজের কোরবানী{ হাদী }এর সাথে কোন সমপর্ক নেই ৷ বাস্তব পক্ষে হজ উপলক্ষে যে জন্তু যবেহ করা হয় তাকে হাদী বলা হয় ,কোরবানী নয়, যদিও অনেকে ভূল বশত একেও কোরবানী বলে থাকেন ৷ যা একমাত্র হজ্বে তামাত্তু-কেরান করলে কোরবানী দেয়া ওয়াজীব হয়ে যায় ৷ আর দেশে সামর্থবানদের উজহিয়য়াহ কোরবনী ওয়াজীব , এ কারনে কোন হাজী সাহেব হজ্বে তামাত্তু-কেরান করার পর হাদী তথা কোরবানী তে অসমর্থ হলে তার কাফফারা স্বরুপ ১০টি রোজা রাখতে হবে ,৩টা হজ্বের মৌসুমে আর ৭ টা দেশে প্রর্তাবর্তন শেষে ৷
 হালাল হওয়ার সময় চেহারার নূর দাড়ী কোন ক্রমেই মুন্ডাবেন না।
*****************************************
যাদের এখনো দাঁড়ি রাখার সৌভাগ্য হয়নি তারা পূর্বেই এ ব্যাপারে পাক্কা নিয়ত করে নিবেন। যাতে করে দাঁড়ি নিয়ে রওজা শরীফ যিয়ারত করতে পারেন।তাওয়াফে যিয়ারত (ফরয) ও সায়ী করা (ওয়াজিব): হালাল হওয়া তথা ইহরাম মুক্ত হওয়ার পর স্বাভাবিক পোষাকে বাইতুল্লাহ গিয়ে তাওয়াফে যিয়ারত করা ও সাফা-মারওয়াতে সায়ী করা।
 ১০ থেকে ১২ জিলহজ্ব সূয ডোবার পূর্বে তাওয়াফে যিয়ারত সম্পূর্ণ করতে হবে। তাওয়াফে কুদূমের পরে হজ্বের সায়ী না করে থাকলে এই তাওয়াফের পরে সাফা-মারওয়াতে সায়ী করতে হবে। সায়ী করার তরীকা উমরা এর বর্ণনায় দেখে নিন। সায়ীর পরে দুরাকাআত নামায পড়বে। এরপর মিনা ফিরে আসবে।
 ১১, ১২ ও ১৩ই জিলহজ্বের করণীয়:তিন জামরায় কংকর মারা ওয়াজিবঃ
*******************************************
১১ ও ১২ জিলহজ্ব ভীড় থেকে বাঁচার জন্য বাদ আসর প্রথমে ছোট, পরে মাঝারী সবশেষে বড় জামরার বেষ্টনির মধ্যে ৭টি করে কংকর মারবে। এ কয়দিন মিনায় রাত যাপন করা সুন্নাত। উল্লেখ্য, ১২ই জিলহজ্ব ৩ জামরায় কংকর মেরে কেউ মক্কা চলে গেলে কোন অসুবিধা নাই। তবে বিশেষ জরুরত না থাকলে ১৩ই জিলহজ্ব বিকাল ৩টার দিকে পর্যায় ক্রমে তিন মাজরায় কংকর মেরে মক্কায় যাওয়া উত্তম।
 নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ জিলহজ্ব কংকর মেরে মক্কা গিয়েছিলেন। ১৩ জিলহজ্ব আসর পযন্ত তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে।
 তাওয়াফে বিদা (ওয়াজিব):
 *********************
যখন মক্কা শরীফ থেকে চলে আসার সময় হয় তখন শান্ত ভাবে কয়েক ঘন্টা পূর্বে স্বাভাবিক পোষাকে বাইতুল্লাহ শরীফে এসে ৭ চক্কর তাওয়াফ সম্পন্ন করবে। তারপর ওয়াজিবুত্ তাওয়াফ দু’রাকাত নামায পড়ে যমযমের পানি পান করে আবারও বাইতুল্লাহ যিয়ারতের তাওফীক লাভের জন্য মনে প্রাণে দু’আ করা অবস্থায় চলে আসবে। ইহাকে “তাওয়াফে বিদয়া” বলা হয়। এ তাওয়াফের মধ্যে ইযতিবা ও রমল নেই
 এবং পরে কোন সায়ী নেই, উল্লেখ্য প্রতিবার মসুজদে হারামে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় সুন্নাতের প্রতি খেয়াল রাখবে
 । হজ্জে কিরানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
***********************
আর যারা হজ্জে কিরান করতে চান তারা মীকান থেকে বা তার পূর্ব হতে একত্রে উমরা ও হজ্জের নিয়ত করে ইহরাম বাধঁবেন। তারপর তার উমরাহ শেষে ইহরাম অবস্থায় থাকবেন। তারা উমরাহ করে হালাল হতে পারবেন না। হজ্জে সকল কাজ সম্পন্ন করে পূর্বে বর্ণিত নিয়মে মাথা মুন্ডিয়ে হজ্জ্ব থেকে হালাল হওয়ার সময় হজ্জ্ব ও উমরার উভয় ইহরাম থেকে হালাল হওয় যাবে।
 উল্লেখ্য, কিরান ও তামাত্তু হ্জ্বকারীর জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব এবং তাদের জন্য মাথা মুন্ডানোর পূর্বেই কুরবানী করা ওয়াজিব।
 আর ব্যাংকের ওয়াদাকৃত সময় সাধারণত ঠিক থাকে না সে জন্য হালাল হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ জন্য তামাত্তু ও কিরানকারীরা কোনো অবস্থায় ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করবে না। বরং কাউকে পাঠিয়ে বা সমবভ হলে নিজেই কোরবানী দেয়া ভাাল
 মহিলাদের হজ্জের পার্থক্যমহিলাগণ স্বাভাবিক পোষাকেই ইহরাম বাধবে এবং মাথা ঢেকে নিবে
**********************************************************
চেহারা খোলা রাখবে না বরং চেহারার পর্দা করবে এবং এমনভাবে নেকাব লাগাবে যেন চেহারার সাথে কাপড় লেগে না থাকে। তালবিয়াহ নিম্ন আওয়াজে পড়বে। তাওয়াফের মধ্যে ইযতিবা ও রমল করবে না। সায়ীতে সবুজ বাতিদ্বয়ের মাঝে স্বাভাবিক চলবে। চুলের আগা থেকে এক ইঞ্চি পরিমাণ কেটে হালাল হবে। পুরুষদের থেকে পৃথক হয়ে মাতাফের কিনারা দিয়ে বা ছাদে গিয়ে তাওয়াফ করবে। হায়েয অবস্থায় তাওয়াফ করবে না, মক্কা শরীফে শুধু তাওয়াফের জন্য এবং মদীনা শরীফে নিদিষ্ট সময়ে শুধু রওজা যিয়ারতের জন্য মসজিদে যাবে।


 মক্কা মদীনায় হাজী সাহেবানদের করনীয় **********  পরামর্শ
 *******************************
সব সময় জিকর , কোরান তেলাওয়াত , তাওয়াফ বেশী করা দুরুদ শরীফ বেশী পডা , বাজে আলাপ না করা, এখানে এসে সংসারের চিন্তা না করে আখেরাতের সফলতার কথা মাথায় রাখা , গিবত শেকায়েত থেকে বিরত থাকা , আর নিজের জন্য ,সংসারের সকলের জন্য , সকল বন্ধুবান্ধব ও সকল মুসলমানের জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করা , বারংবার দোয়া করা , তওবা করা , বেশী বেশী নফল
 নামাজ পডা ইত্যদি, আর৫ওয়াক্ত নামাজ বাজামায়াত হারাম শরীফে পড়া কারন সেখানে ১ রাকাতে ১ লক্ষ রাকাত নামাজের ছওয়াব , তাই ১ ওয়াক্তে ৪ রাকাতে ৪ লক্ষ রাকাতের ছাওয়াব, যা এক জন মানুষের সারা জিন্দেগীর তথা ৬০ বৎসর হায়াতের নামাজের প্রায় ৩ চথতুর্থাংয়ের সমান
 যেমন-----
দৈনিক =========== ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ
 মাসিক ======= ১৭*৩০ = ৫১০ রাকাত
 বৎসর ========= ৫১০*১২ =৬১২০ রাকাত
 জিন্দেগীতে =====
৬০ বৎসর বয়স হলে নাবালিগী বাদে ৪৫ বৎসর এর নামাজ = ৬১২০*৪৫ বৎসর = ২৭৫৪০০ রাকাত
 আর মক্কার হারাম শরীফে শুধু মাত্র এক ওয়াক্ত নামাজের ৪ রাকাতে ছওয়াব চার লক্ষ রাকাত সমতুল্য
 যা একজন মানুষের সারা জিন্দিগীর নামাজের চেয়েও বেশী ,
আবার মদীনার মসজিদে নববীতে এক রাকাতে ১০০০ হাজার রাকাতের ছওয়াব পাওয়া যায় ,
ছোবহানাল্লাহ .তাহলে একমাত্র হতভাগারাই হারাম শরীফের পাশে আবস্হান করা সত্বেও মসজিদে হারামে না গিয়ে নিজ বাসায় একা একি নামাজ আদায় করেন ৷
 পরামর্শ ==
১৷ হারাম শরীফে যথা সম্ভব আজানের ১ঘন্টা/আধাঘন্টা আগে যাওয়া, নতুবা বিতরে জায়গা পাবেন্না,দেরীতে আসলে জায়নামাজ আবশ্যই সাথে আনবেন ৷
 ২৷ পেটে বা প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পানি ও খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল করুন ,
৩ ৷ জুতা সেন্ডেল পলিথিন করে সাথেই রাখুন ৷
 ৪৷ মানুষের চলাচল রাস্তা এডিয়ে বসুন ৷
 ৫৷ সাথিদের ফোন নং ,মোয়ালি্লমের ফোন সাথেই রাখুন ৷
 ৬৷হারাম শরীফের প্রবেশ পথ তথা গেইট নং খেয়াল রাখুন ৷যাতে আসা যাওয়ায় পথ ভূলে না যান ৷
 ৭ ৷ সাথী/ তাবু/হোটেল হারিয়ে ফেললে অযথা ঘূরা ঘূরি না করে অধৈয্য না হয়ে নিজের সাথে থাকা কার্ড নিরাপত্তা কর্মিদের দেখান ,
৮৷সাথীদের কয়েক জনের নাম্বর রাখুন
 ৯৷ যে কোন সময় সফরের দিন তারিখ ও সময় ভাল করে জেনে নিন ৷
 ১০৷ কংকর নিক্ষেপের সময় তাডা হুডা না করে , ধীরস্হীর ভাবে সূযোগ বুঝেই অগ্রসর হউন ৷
 লেখক কে ভূলবেননা আপনাদের দোয়ার মধ্যে ,
দোয়াই কামনা
 আল্লাহ সকলকে হজ্বে মাবরুর নছীব করুন আমিন
 

হজ মৌসুমে মক্কা মদীনায় হাজী সাহেবানদের করনীয় , বর্জনীয় কিছু পরামর্শ

 হজ্ব পরকালের সফরের এক বিশেষ নিদর্শনঃ

 আলেমগণ হজ্বের সফরকে পরকালের সফরের সাথে তুলনা করেছেন। পরকালের যাত্রীকে আত্মীয়-স্বজন, ঘর-বাড়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হয়। হজ্ব পালনকারী যখন হজ্বের সংকল্প করে বের হয় অনুরূপ পরকালের যাত্রীর ন্যায় এসব কিছু ত্যাগ করে যেতে হয়। পরকালের যাত্রীকে যেমন সাদা কাফনের কাপড় পরিয়ে খাটিয়ায়  উপর ছাওয়ার করানো হয়, তেমনি হজ্ব যাত্রী মৃত ব্যক্তির কাফনের ন্যায় ,ইহ্‌রামের দু’টুকরা সাদা সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করে যানবাহনে আরোহণ করে।
 কিয়ামত দিবসে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেয়ার মত হজ্ব পালনকারীর কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে “লাব্বায়কা আলস্নাহুম্মা লাব্বায়ক লা শারীকা লাকা লাব্বায়ক; ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মূল্‌ক। লা শারীকা লাক্‌।

মৃত্যুর পর যেমন ছোয়াল জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে তেমনি হজ্বের সফরে হাজীদেরকে বিমান বন্দরসহ সংশিস্নষ্ট স্থানে সরকারি-বেসরকারি লোকদের নিকট বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারণাসহ পরীক্ষা নিরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। মক্কা শরীফে প্রবেশ করা যেন ঐ জাহানে প্রবেশ করা যেখানে শুধুই আল্লাহর রহমত।
 বায়তুলাহ শরীফের চতুরদিকে প্রদক্ষিন  করা আরশে আজিমের চুতুর্দিকে প্রদক্ষিন করার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সাফা ও মারওয়াহ সাঈ করা হাশরের ময়দানে দিশেহারা হয়ে এদিক-ওদিক ছুটা-ছুটি করার ন্যায়। সূর্যের প্রচণ্ড খরতাপে আরাফার ময়দানে লাখ লাখ মানুষের অবস্থান যেন হাশরের মাঠের সাদৃশ্য। হজ্বের প্রতিটি আমলেই হাজীগণের সামনে কিয়ামতের চিত্র ভেসে উঠে।


 আল্লাহর ইশ্‌ক ও মহব্বত প্রকাশ করা , প্রকৃত প্রেম ও ভালবাসায় রঞ্জিত করার এক অপূর্ব দৃশ্যঃ হজ্ব আল্লাহ পাকের ইশ্‌ক ও মহব্বত প্রকাশ করার এক অপূর্ব দৃশ্য। প্রেম আকর্ষণে মাতোয়ারা প্রেমিকের ন্যায় হাজীর অন্তর্ôআত্মায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইশ্‌কের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। দারুন আগ্রহ-উদ্দীপনায় হাজী সাহেবগণ তাঁর মহান দরবারে ভিড় জমায়। আল্লাহ্‌ পাকও চান তাঁর ইশকে প্রেমিকগণ পাগল বেশে এভাবে তাঁর নিকট ছুটে আসুক।


 হাজীগণ আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে তাঁর ইশকে মাতোয়ারা হয়ে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরিধান করে পাগল ও ফকিরের বেশে এলোমেলো চুল-দাড়ি নিয়ে মাঠ-ঘাট, পাহাড়-পর্বত, নদী, সাগর-মহাসাগর, বন-জঙ্গল, মরম্ন প্রান্তôর অতিক্রম করে চিৎকার দিয়ে “লাব্বায়কা আলস্নাহুম্মা লাব্বায়ক ------- উচ্চারিত করে ছুটে চলে বায়তুলার উদ্দেশ্যে। পবিত্র মক্কা এবং মদিনায় পৌঁছে একজন হাজী মনে করে জান্নাতে পৌঁছে গেছি ,

আর আবেগ সমুদ্র এতটাই ত্বরঙ্গায়িত হয় যা বর্ণনা করা এবং অনুধাবন করা কঠিন। ইহ্‌রাম বাঁধা প্রকৃত প্রেমিক হওয়ার এক জ্বলন্তô নিদর্শন। হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়া, মুল্‌তাজামে জড়িয়ে ধরা, কা’বার চৌকাঠে মাথা ঠুকে কান্না-কাটি করা, বায়তুলার চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করা ইশ্‌কে ইলাহীর অনুপম দুশ্য। তারপর সাফা-মারওয়া দৌড়া-দৌড়ি, মিনায় গমন, আরাফায় অবস্থান, খোলা আকাশের নিচে ধূলি-ধূসরিত কঙ্করময় মুযদালিফায় রাত্রি যাপন প্রতিটি আমলেই আল্লাহর প্রেমের প্রতিফলন।

 জামরাতে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ, পশু কোরবানী ও মাথা মোন্ডানোর মাধ্যমে অনুরাগের শেষ মঞ্জিল অতিক্রম করে নিষ্পাপ শিশুর মত হাজী সাহেবগণ নিজ মোকামে ফিরে আসলেও তাঁদের অন্তôরে জ্বলতে থাকে পুনঃমিলনের অর্নিবাণ শিখা।


 হজ্বের সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বঃ

 রাজনৈতিক, আন্তôর্জাতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে হজ্বের গুরত্ব অপরিসীম। বর্তমান সমস্যা সংকুল বিশ্বে ইসলামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইসলামী চিন্তাবিদগণ হজ্ব মৌসুমে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে। হজ্ব মুসলিম উম্মার ধর্মীয় চেতনায় উদীপ্ত হওয়ার এবং আপোষ একতা ও সম্পর্ক স্থাপনের সিঁড়ি।
 হজ্বের সমাবেশে ইসলামী জনতা, দেশ, জাতি, ভাষা, বর্ণ, গোত্র ইত্যাদি বৈষম্য অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের মহান সুযোগ পায়।
 মহান আল্লাহপাক যেন আমাদের সকলকে হজ্বের তাৎপর্য ও গুরত্ব অনুধাবন করে সঠিক ভাবে হজ্ব পালন করার তওফিক দান করেন।



মক্কা মদীনায় হাজী সাহেবানদের করনীয় ,বর্জনীয় **********
 *******************************
সব সময় জিকর , কোরান তেলাওয়াত , তাওয়াফ বেশী করা দুরুদ শরীফ বেশী পডা , বাজে আলাপ না করা, এখানে এসে সংসারের চিন্তা না করে আখেরাতের সফলতার কথা মাথায় রাখা , গিবত শেকায়েত থেকে বিরত থাকা , আর নিজের জন্য ,সংসারের সকলের জন্য , সকল বন্ধুবান্ধব ও সকল মুসলমানের জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করা , বারংবার দোয়া করা , তওবা করা , বেশী বেশী নফল
 নামাজ পডা ইত্যদি, আর৫ওয়াক্ত নামাজ বাজামায়াত হারাম শরীফে পড়া কারন সেখানে ১ রাকাতে ১ লক্ষ রাকাত নামাজের ছওয়াব , তাই ১ ওয়াক্তে ৪ রাকাতে ৪ লক্ষ রাকাতের ছাওয়াব, যা এক জন মানুষের সারা জিন্দেগীর তথা ৬০ বৎসর হায়াতের নামাজের প্রায় ৩ চথতুর্থাংয়ের সমান
 যেমন-----
দৈনিক =========== ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ
 মাসিক ======= ১৭*৩০ = ৫১০ রাকাত
 বৎসর ========= ৫১০*১২ =৬১২০ রাকাত
 জিন্দেগীতে =====
৬০ বৎসর বয়স হলে নাবালিগী বাদে ৪৫ বৎসর এর নামাজ = ৬১২০*৪৫ বৎসর = ২৭৫৪০০ রাকাত
 আর মক্কার হারাম শরীফে শুধু মাত্র এক ওয়াক্ত নামাজের ৪ রাকাতে ছওয়াব চার লক্ষ রাকাত সমতুল্য
 যা একজন মানুষের সারা জিন্দিগীর নামাজের চেয়েও বেশী ,


আবার মদীনার মসজিদে নববীতে এক রাকাতে ১০০০ হাজার রাকাতের ছওয়াব পাওয়া যায় ,
ছোবহানাল্লাহ .তাহলে একমাত্র হতভাগারাই হারাম শরীফের পাশে আবস্হান করা সত্বেও মসজিদে হারামে না গিয়ে নিজ বাসায় একা একি নামাজ আদায় করেন ৷

 পরামর্শ ==
১৷ হারাম শরীফে যথা সম্ভব আজানের ১ঘন্টা/আধাঘন্টা আগে যাওয়া, নতুবা বিতরে জায়গা পাবেন্না,দেরীতে আসলে জায়নামাজ আবশ্যই সাথে আনবেন ৷
 ২৷ পেটে বা প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পানি ও খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল করুন ,
৩ ৷ জুতা সেন্ডেল পলিথিন করে সাথেই রাখুন ৷
 ৪৷ মানুষের চলাচল রাস্তা এডিয়ে বসুন ৷
 ৫৷ সাথিদের ফোন নং ,মোয়ালি্লমের ফোন সাথেই রাখুন ৷
 ৬৷হারাম শরীফের প্রবেশ পথ তথা গেইট নং খেয়াল রাখুন ৷যাতে আসা যাওয়ায় পথ ভূলে না যান ৷
 ৭ ৷ সাথী/ তাবু/হোটেল হারিয়ে ফেললে অযথা ঘূরা ঘূরি না করে অধৈয্য না হয়ে নিজের সাথে থাকা কার্ড নিরাপত্তা কর্মিদের দেখান , বা প্রবাসী কোন বাংলাদেশী বা অন্য কাউকে দেখান ৷
৮৷সাথীদের কয়েক জনের মোবাইল  নাম্বার রাখুন
 ৯৷ যে কোন সময় সফরের দিন তারিখ ও সময় ভাল করে জেনে নিন ৷
 ১০৷ কংকর নিক্ষেপের সময় তাডা হুডা না করে , ধীরস্হীর ভাবে সূযোগ বুঝেই অগ্রসর হউন ৷
11/  মক্কায় আপনজন থাকলে তাদের ফোন নং সাথে রাখুন
12/ সাথে ছোট একটা পানির বোতল রাখুন যাতে পিপাসা লাগলে দূরে যেতে না হয় ৷
13/  আর আপনি পুরান হলে নতুনদের সাহায্যের মনো ভাব নিয়ে চলুন
14/ হজের মাসালা গুলো যায়গা মত করনীয় কাজ গুলো  না জানলে  জেনে নিন , বা অপর কে বারংবার জিজ্ঞাসা করুন ,

 15/ অপরিচিত কোন লোকের দেয়া কোন কিছু খাওয়ার থেকে বিরত থাকুন ,  তবে সংঘ বদ্ধ ভাবে কেউ /কুম্পানি  কোন খাবার ,জুস , পানি , দুধ , লেবন ইত্যাদি বিতরন করলে তা খেতে পারেন , কারন এ গুলো সরকারী ব্যবস্হাপনায় , বা সাধারন মানুষ হাজিসাহেবানদের দিয়ে থাকেন ৷
 16/ নিজের বাসা  বা হোটেল থেকে অজু ইস্তিন্ঞা সেরেই মসজিদে বা হারাম শরীফে যাওয়ার  চেষ্টা করবেন ৷
17/ মক্কার ঐতিহাসীক স্হান গুলোর  যেমন  মাকামে ইব্রাহীম , হাজরে আসওয়দ , হাতিম , সাফ-মারওয়াহ সহ ঐতিহসীক স্হন গুলোর ইতিহাস জেনে নিন ৷ তহলে হজ্বের গুরুত্ব মাহাত্য দিলে স্হান পাবে ৷
/18 -- আর মুয়াল্লীম হযরাত সহ হজ্বের  দায়িত্বে নিয়োজীত সকল কে ব্যবসায়ীক মানসীকতা পরিহার করে আল্লাহর মেহমানদের মেহমানদারী যাবতীয় সূযোগ সূবিধার দিকে লক্ষ রাখতে হবে ৷ যাতে কেউ কোন কষ্ট না পায় ৷ আপনি আগত মেহমানদের খাদেম হিসাবে খেদমত করুন আল্লাহ পাক আপনাকে ব্যবসায় ও সফলতা দিবেন ,  সাথে আপনি পাচ্ছে আখেরাতে
 বিশাল এক নেকীর পাহাড ৷
19/  সাথে জরুরী খরচের টাকা রাখুন , অতিরিক্ত থাকলে বিশ্বাস যোগ্য কারো  কাছে আমানত রাখুন ৷

 লেখক কে ভূলবেননা আপনাদের দোয়ার মধ্যে ,
দোয়াই কামনা
 আল্লাহ সকলকে হজ্বে মাবরুর নছীব করুন আমিন

লিখেছেন  এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ২8সেপ্টেম্বর   ২০১3

কোরবানীর ইতিহাস/ জবিহুল্লাহ হযরত ইসমাইল? না হযরত ইসহাক আঃ ?



এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া মক্কা মোয়াজ্জমাহ

 হযরত আদম আঃ এর পুত্র হাবীল-কাবীল এর বিবাহ কে কেন্দ্র করেই সর্ব প্রথম কোরবনীর ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল . মূলত
 কুরবানীর বিধান আল্লাহ প্রদত্ত সকল শরীয়তেই বিদ্যমান ছিল
 কুরবানীর ইতিহাস ততোটাই প্রাচীন যতোটা প্রাচীন মানব অথবা ধর্মের ইতিহাস। আল্লাহ পুরস্তির কুরবানী নামক এ মহান নিদর্শন মানব জাতির প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত সকল শরীয়তেই কার্যকর ছিলো। সকল নবীর উম্মতকেই কুরবানী করতে হয়েছে। প্রত্যেক উম্মতের ইবাদতের এ ছিল একটা অপরিহার্য অংশ। আল্লাহতায়ালার এ বিধান মানব জাতির সৃষ্টি লগ্ন থেকেই কার্যকর হয়ে আসছে ।
 মানব সভ্যতার সুদীর্ঘ ইতিহাস এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, পৃথিবীর সব জাতি ও সম্প্রদায় কোন না কোন ভাবে আল্লাহর দরবারে নিজেদের প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করে । এটাই মানুষের চিরন্তন স্বভাব বা ফিতরাত। এ ফিতরাতের স্বীকৃতি প্রদান করে মহান আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছেন ঃ
وَلِـكُل�‘ِ اُم�‘َةٍ جَعَـل�’ـنَا مَن�’سَكًا لِ�‘ـيَـذ�’كُرُو�’ا اس�’مَ اللهِ عَلى مَـا رَزَقَـهُم�’ مِن�’ بَـهِيـ�’مَةِ ال�’اَن�’ـعَـامِ
“আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানীর এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওসব পশুর উপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যে সব আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন”। { সূরা আল হজ্জ-৩৪}
আমাদের কুরবানী সুন্নাতে ইবরাহীমী
========================
কুরবানী ইবাদত হিসেবে যদিও আদম আ. এর যুগ হতে হয়ে আসছে কিন্তু পরবর্তীতে হযরত ইবরাহীম আ. এর এক ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে শুরু হয়েছে। আমরা হযরত ইবরাহীম আ. এর মিল্লাতের উপর প্রতিষ্ঠিত আছি।
 এ মিল্লাতের প্রতিষ্ঠাতা ও মুসলিম জাতির পিতা হচ্ছেন হযরত ইবরাহীম আ.।
তিনি যেমন আল্লাহর নির্দেশে জীবনের সবচাইতে প্রিয় বস্তু- পুত্র ইসমাঈলকে তাঁর উদ্দেশ্যে কুরবানী করতে প্রস্তুত ছিলেন, ঈদুল আয্হার দিন মুসলমানরাও তেমনি পশু কুরবানীর মাধ্যমে নিজেদের প্রিয়তম জান-মাল আল্লাহর পথে কুরবানী করার সাক্ষ্য প্রদান করেন।
 মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম আ. এর সেই মহত্ব ও মাকবুল কুরবানীকে শাশ্বত রূপদানের জন্যেই আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল সা. এই দিনে মুসলমানদেরকে ঈদুল আয্হা উপহার দিয়েছেন এবং এ কুরবানী করার নির্দেশ দিয়েছেন।
http://www.youtube.com/watch?v=aBozqJO978s 
 http://www.youtube.com/watch?v=683sbkzULwY&feature=related 


জবিহুল্লাহ হযরত ইসমাইল? না হযরত ইসহাক ? আঃ
===========================================
কুরআন মজীদের ৩৭ তম সূরা ‘আসসাফফাত’ এ যবাহ (কুরবানী)-এর ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। পরিপূর্ণ বিশ্লেষণসহ পূর্বাপর তা লক্ষ্য করা জরুরি। ইরশাদ হয়েছে-

قالوا ابنوا له بنيانا فألقوه في الجحيم فأرادوا به كيدا فجعلنهم الاسفلين. وقال انى ذاهب الى ربى سيهدين. رب هب لى من الصلحين. فبشرنه بغلم حليم. فلما بلغ معه السعى قال يبنى انى ارى فى المنام انى اذبحك فانظر ماذا ترى قال يابت افعل ما تؤمر ستجدنى ان شاء الله من الصبرين. فلما اسلما وتله للجبين. ونادينه ان يابرهيم. قد صدقت الرءيا انا كذلك نجزى المحسنين. ان هذا لهو البلؤا المبين. وفدينه بذبح عظيم. وتركنا عليه فى الخرين. سلم على ابرهيم. كذلك نجزى المحسنين. انه من عبادنا المؤمنين. وبشرنه باسحق نبيا من الصلحين. وبركنا عليه وعلى اسحق ومن ذريتهما محسن وظالم لنفسه مبين.
তারা পরস্পর বলল, ইবরাহীমের জন্য একটি অগ্নিকুণ্ড প্রস্তুত কর এবং তাঁকে সে জ্বলন্ত অগ্নিতে নিক্ষেপ কর। মোটকথা তারা ইবরাহীমের অনিষ্ট করার ইচ্ছা করল। সুতরাং আমি তাদেরকে অধঃপতিত করে দিলাম। এবং ইবরাহীম বললেন, আমি তো আমার রব্বের দিকে ফিরে যাচ্ছি, তিনি আমাকে (উত্তম স্থানে) পৌঁছে দিবেনই। (দুআ করলেন,) হে আমার রব্ব! আমাকে একটি সুসন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাঁকে ধৈর্য্যশীল প্রকৃতির একটি পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম। অনন্তর যখন পুত্রটি তাঁর সাথে চলাফেরা করার মতো বয়সে উপনীত হল, তখন তিনি বললেন, বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে যবেহ করছি। অতএব তুমিও চিন্তা কর, তোমার কী মত?

তিনি বললেন, আব্বাজান! আপনি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছেন, পূর্ণ করুন, ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্য্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। ফলকথা, যখন তাঁরা আত্মসমর্পণ করলেন এবং পিতা পুত্রকে কাত করে শায়িত করলেন এবং আমি তাঁকে ডেকে বললাম, হে ইবরাহীম! নিশ্চয়ই আপনি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছেন। আমি বিশিষ্ট বান্দাদেরকে এরূপই পুরস্কার প্রদান করে থাকি। প্রকৃতপক্ষেও তা ছিল একটি বড় পরীক্ষা। আর আমি তার পরিবর্তে একটি শ্রেষ্ঠ যবেহের পশু দান করলাম। এবং আমি তাঁর জন্য পশ্চাতে আগমনকারীদের মধ্যে এই বাক্য থাকিতে দিলাম যে, ইবরাহীমের প্রতি সালাম হোক। আমি বিশিষ্ট বান্দাদেরকে এরূপই পুরস্কার প্রদান করে থাকি। নিঃসন্দেহে তিনি আমার ঈমানদার বান্দাগণের অন্যতম ছিলেন। আর আমি তাঁকে ইসহাক সম্বন্ধে সুসংবাদ প্রদান করলাম যে, তিনি নবী, (এবং) সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। আর আমি ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি বরকতসমূহ নাযিল করেছি। এবং তাঁদের উভয়ের বংশে অনেক নেক লোকও রয়েছে এবং অনেকে এমনও রয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের ক্ষতি সাধন করছে।-সূরা সাফফাত : ৯৭-১১৩


 উপরোক্ত আয়াতসমূহ ও সামনে উল্লেখিত এ সম্পর্কিত অন্যান্য আয়াতসমূহ সামনে রেখে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য করা দরকার।

 ১। সূরা সাফফাত-এর উপরোক্ত আয়াতসমূহে ইবরাহীম আ.-এর দু’জন সন্তানের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। প্রথম সন্তানের নাম উল্লেখ করা হয়নি; বরং غلام حليم (ধৈর্য্যশীল প্রকৃতির একটি পুত্রসন্তান) উল্লেখ করে তার কুরবানীর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় পুত্রসন্তানের সুসংবাদ নামসহ উল্লেখ করা হয়েছে-فبشرنه بإسحق ।
এ কথা সর্বজনস্বীকৃত যে, ইবরাহীম আ.-এর মাত্র দুজন পুত্রসন্তান ছিলেন : ইসমাঈল ও ইসহাক। সুতরাং একজন অর্থাৎ ইসহাক আ.-এর উল্লেখ নামসহ হলে অপরজন, যাকে غلام حليم (ধৈর্য্যশীল প্রকৃতির একটি পুত্রসন্তান) আখ্যা দিয়ে তার কুরবানীর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে সে ইসমাঈল আ. ছাড়া আর কে হবেন?

ইসহাক আ.-এর আলোচনা তো কুরবানীর ঘটনার পরে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাঁর সুসংবাদ তো নিজের ‘একমাত্র পুত্র’ ইসমাঈলকে কুরবানী করার আদেশ পালনে সফলতার পুরস্কার হিসাবে প্রদান করা হয়েছে। আয়াতের বর্ণনাভঙ্গি থেকেই তা সুস্পষ্ট।

 ২। কুরবানীর ঘটনা যে পুত্রের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে তাকে কুরআন মজীদে (সূরা সাফফাত (৩৭) : ১০৭) غلام حليم (ধৈর্য্যশীল প্রকৃতির একটি পুত্রসন্তান) আখ্যা দেওয়া হয়েছে। অথচ ইসহাক আ.কে তো غلام عليم (বড় বিদ্বান সন্তান) আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দেখুন : সূরা হিজর (১৫) : ৫৩; সূরা যারিয়াত (৫১) : ২৮
 বোঝা গেল, غلام حليم দ্বারা ইসমাইল আ. উদ্দেশ্য। যিনি নিঃসঙ্কোচে নিজের জীবন উৎসর্গ করাকে বরণ করে নিলেন। এরচেয়ে বড় حلم (সহনশীলতা) আর কী হতে পারে?
কুরআন মজীদে ইসমাঈল আ.কে من الصابرين (ধৈর্য্যশীল) বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। (দেখুন : সূরা আম্বিয়া (২১) : ৮৫) এ গুণটিই উপরোক্ত আয়াতসমূহে কুরবানীর ঘটনায় (সূরা সাফফাত (৩৭) : ১০২) উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ কুরআন মজীদের কোথাও ইসহাক আ.-এর জন্য এ গুণের উল্লেখ নেই।
 ৩। যে পুত্রের সঙ্গে কুরবানীর ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা ইবরাহীম আ.-এর দুআর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সুসংবাদ প্রদান করেছেন। ইরশাদ হয়েছে-
رب هب لى من الصلحين. فبشرنه بغلم حليم.
 (তরজমা) হে আমার রব্ব! আমাকে একটি সুসন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাঁকে ধৈর্য্যশীল প্রকৃতির একটি পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম।-সূরা সাফফাত (৩৭) : ১০০-১০১
 আর ইসহাক আ. (غلام عليم)-এর জন্মের সুসংবাদ ইবরাহীম আ.-এর দুআ ছাড়াই বৃদ্ধ বয়সে ফেরেশতাদের মুখে প্রদান করা হয়েছে। যার কারণে তিনি অনেকটা অবাকও হয়েছেন যে, আমি তো বৃদ্ধ। তাছাড়া আমার স্ত্রীও বৃদ্ধা ও বন্ধ্যা তাহলে সন্তান কীভাবে হবে? বিবি (সারা রা.)ও বিস্মিত হয়েছেন এবং এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন। কুরআন মজীদে (সূরা হুদ (১১) : ৬৯-৭৫; সূরা হিজর (১৫) : ৫১-৫৬; সূরা যারিয়াত (৫১) : ২৪-৩০) এ ঘটনা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ রয়েছে।
 লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, দুআ ব্যতীত যে غلام (পুত্রসন্তান)-এর সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে তার নাম ইসহাক। সূরা হুদ (১১:৭১) এ তা স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। আর সূরা সাফফাত (৩৭: ১০০-১০১) এ কথা সুস্পষ্ট যে, কুরবানীর ঘটনা যে পুত্রের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে তার সুসংবাদ ইবরাহীম আ.-এর দুআর পরিপ্রেক্ষিতে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তা ইসহাকের নয়, ইসমাঈলের ঘটনা।
 আল-কুরআন মজীদে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, কুরবানীর আদেশ শুধু পরীক্ষামূলক ছিল। আর পরীক্ষার স্বার্থ তখনই অর্জিত হতে পারে যদি তা ইসমাঈলকে কুরবানী করার আদেশ হত। কেননা, ইসহাক আ.-এর সুসংবাদ প্রদানের সময় আরো দুটি বিষয়ের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছিল। প্রথমত তার ভবিষ্যত প্রজন্ম থেকে ইয়াকুব জন্মলাভ করবেন। দ্বিতীয়ত তিনি (অর্থাৎ ইসহাক আ.) নবী মনোনীত হবেন।
 প্রথম বিষয়ের আলোচনা সূরা হুদ ((১১) :৭১) এবং দ্বিতীয় বিষয়টি সূরা সাফফাত ((৩৭):১১২) উল্লেখ রয়েছে। যেহেতু তাঁর সম্পর্কে পূর্ব থেকেই এ দুটি বিষয়ের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে তাই তিনি পরীক্ষার বস্তু হতে পারেন না। কেননা, পূর্ববর্তী সুসংবাদের কারণে পরীক্ষিত ব্যক্তি (ইবরাহীম আ.) অবগত আছেন যে, এই সন্তান বড় হবে। এমনকি তাঁর বংশে ইয়াকুব জন্মলাভ করবেন এবং তিনি নবী মনোনীত হবেন। আর আল্লাহ তাআলা এসব স্পষ্ট দুটি সুসংবাদ প্রদানের পর এর পরিপন্থী কোনো নির্দেশ কখনো দিবেন না। এই পরীক্ষা ইসমাঈল আ.-এর জন্যই প্রযোজ্য, যার জন্মের সুসংবাদের সাথে এমন কোনো সুসংবাদ যোগ করা হয়নি যা পরীক্ষার প্রতিবন্ধক হতে পারে।
 মোটকথা, কুরআন মজীদের উল্লেখিত আয়াতসমূহ এবং বর্ণনাভঙ্গী দ্বারা এই বিষয়টি অকাট্যভাবে প্রতীয়মান হয় যে, কুরবানীর ঘটনা ইসহাক আ.-এর নয়; বরং ইবরাহীম আ.-এর অপর পুত্র ইসমাঈল আ.-এর। এ সম্পর্কিত আরো ইঙ্গিত (যা অনেক সময় স্পষ্ট বর্ণনা থেকেও অধিক তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে থাকে) কুরআন মজীদে বিদ্যমান রয়েছে, এখানে কেবল চারটি বিষয় উপস্থাপন করা হল।
 একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে যে, এত সব আলোচনার পর যাবীহুল্লাহ (যার সঙ্গে কুরবানীর ঘটনা সংঘটিত হয়েছে) কে নাম উল্লেখ করে (ইসমাঈল) নির্দিষ্টকরণের কোনো প্রয়োজন ছিল না। তাছাড়া এই বর্ণনাভঙ্গিটিও নাম উল্লেখের তুলনায় কম স্পষ্ট নয়।
 এ বিষয়ে আরো জানতে সূরা সাফফাতের সংশ্লিষ্ট আয়াতসমূহের তাফসীর তাফসীরে ইবনে কাসীর খণ্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ১৬-২১; তাফসীরে উসমানী পৃষ্ঠা : ৫৮৩-৫৮৪; তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন খণ্ড : ৭, পৃষ্ঠা : ৪৬২-৪৬৬;, তাফহীমুল কুরআন খণ্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ২৯৭-৩০১ দেখা যেতে পারে।
* বাংলা ভাষায় কুরআন মজীদের সর্বপ্রথম অনুবাদক হিসাবে খ্যাত জনাব গিরিশ চন্দ্র সূরা সাফফাতের সংশ্লিষ্ট আয়াতের অর্থ করেছেন- হে আমার প্রতিপালক, তুমি আমাকে সাধুদিগের (একজন) দান কর। অবশেষে আমি তাহাকে প্রশান্ত বালকের (এস্‌মায়িল নামক পুত্রের) সুসংবাদ দান করিলাম।- কোরআন শরীফ (হরফ প্রকাশনী, কলকাতা-৭ থেকে মুদ্রিত), পৃষ্ঠা : ৫১৩, সূরা সাফফাত : ৯৯-১০০
 হায়, যদি আমাদের দেব নারায়ণ মহেশ্বর বাবুও এই সহজ-সত্য বিষয়টি অনুধাবন করতেন!!!
২। বাইবেলের বর্ণনার আলোকে
 যেহেতু কট্টরপন্থী ইহুদী ও খৃষ্টান সমপ্রদায়ই কুরআনের এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে এবং কুরবানীর ঘটনাটি ইসহাক আ.-এর সঙ্গেই সংঘটিত হয়েছে বলে মনে করে। তাই বাইবেলের আলোকেও এই বিষয়ে আলোচনা করা সমীচীন মনে হল।
 বাইবেল পুরাতন নিয়মের প্রথম কিতাব ‘আদি পুস্তক’-এর ১৬, ১৭, ২১ ও ২২ নং অধ্যায়ে ইসমাঈল ও ইসহাক আ.-এর সুসংবাদ ও জন্মের আলোচনা এবং কুরবানীর ঘটনাও উল্লেখ রয়েছে। যেখানে নিচের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে বিদ্যমান রয়েছে :
১। অব্রাহামের ছিয়াশি বছর বয়সে ইশ্মায়েলের জন্ম হয়েছিল।-আদি পুস্তক ১৬: ১৬
 ২। অব্রাহামের বয়স যখন একশো বছর তখন তাঁর ছেলে ইসহাকের জন্ম হয়েছিল।-আদি পুস্তক ২১:৫
 বোঝা গেল যে, বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ীও ইসমাঈল জেষ্ঠপুত্র ছিলেন, যিনি ইসহাক থেকে ১৪ বছরের বড়। আর ১৪ বছর পর্যন্ত ইসমাঈলই ইবরাহীম আ.-এর একমাত্র পুত্র ছিলেন। আদি পুস্তকের (Genesis : ) ২২তম অধ্যায়ে (২২:২) কুরবানীর যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তাতে only son (একমাত্র পুত্র) কে কুরবানী করার কথা রয়েছে। (বাইবেলের বাংলা তরজমায় ‘অদ্বিতীয় পুত্র’ কথাটি ভুল।)


স্পষ্টত বড় পুত্র ইসমাঈলের বর্তমানে ইসহাক একমাত্র পুত্র হতে পারেন না। তবে ইসহাকের জন্মের ১৪ বছর পূর্ব পর্যন্ত ইসমাঈল একমাত্র পুত্র ছিলেন। সুতরাং বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ীও কুরবানীর ঘটনা ইসমাঈলের সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট। এ বিষয়ে বাইবেলের তরজমাসমূহে ইসহাকের উল্লেখ স্পষ্ট ভ্রান্তি, যা বাইবেলের স্পষ্ট বর্ণনাসমূহেরও পরিপন্থী।
 অক্সফোর্ড থেকে প্রকাশিত Short Encyclopedia Of Islam -এর অনুসরণে ইসলামিক ফাউণ্ডেশন কর্তৃক সংকলিত ও প্রকাশিত ‘সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ’-এর নিম্নোক্ত দুটি আলোচনা লক্ষ্য করা যেতে পারে
:
‘‘ইসমাঈল (اسمعيل) (‘আ) একজন প্রসিদ্ধ নবী, বীবী হাজিরাঃ-এর গর্ভজাত হযরত ইবরাহীম (‘আ)-এর জ্যেষ্ঠপুত্র। ইসমা‘ঈল শব্দটির হিব্রু প্রতিশব্দ হইল ...।
হযরত ইবরাহীম (‘আ)-এর ৮৬ বৎসর বয়সে তাঁহার জন্ম (Genesis, ১৬:১-১৬)। তিনি ছিলেন কুরাইশ ও উত্তর ‘আরবের ‘আদনান বংশীয় অধিবাসিগণের আদি পিতা। তাঁহার জন্মের অল্প কিছুদিন পর পিতা ইবরাহীম (‘আ) আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁহাকে ও তাঁহার মাতাকে বর্তমানে যেখানে কা‘বাঃ অবস্থিত সেখানে এক জনমানবহীন মরু প্রান্তরে রাখিয়া আসেন। ...।
ইবরাহীম (‘আ) তাঁহার প্রচার ক্ষেত্র কানআান-এর দিকে চলিয়া গিয়াছিলেন। কিছুদিন পর তিনি আসিয়া দেখিলেন, ইসমাঈল (‘আ) কিছুটা বড় এবং পিতার সহিত চলাফেরা করিতে সক্ষম হইয়াছেন। তখন ইবরাহীম (‘আ) একদা স্বপ্নে তাঁহাকে কুরবানী করিতে আদিষ্ট হন। জাগ্রত হইয়া তিনি পুত্রকে বলিলেন, ‘‘হে পুত্র আমি স্বপ্নে দেখিলাম, আমি তোমাকে কুরবানী করিতেছি, তুমি কি বল? তিনি বলিলেলন, হে পিতা, আপনি যাহা করিতে আদিষ্ট হইয়াছেন তাহাই করুন। আপনি, ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্য্যশীল দেখিতে পাইবেন (৩৭ঃ১০২)।’’ পুত্রকে কুরবানী করিবার উদ্দেশ্যে ইবরাহীম (‘আ) এক প্রান্তরে (মিনা) উপস্থিত হইলেন। ইবরাহীম (‘আ) পুত্রের গলায় ছুরি চালাইবেন-এমন সময় আল্লাহর তরফ হইতে আওয়ায শুনিলেন, ‘‘হে ইবরাহীম! তুমি তোমার স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করিয়াছ। আমি এই প্রকারেই সৎকর্মশীল ব্যক্তিদিগকে পুরস্কৃত করি (৩৭:১০১-১০৫)।’’
অতঃপর আল্লাহ ইবরাহীম (‘আ)কে পুত্রের পরিবর্তে এক পশু দান করিলেন কুরবানীর জন্য (৩৭: ১০৭)। তখন হইতে ইসমাঈল (‘আ) যাবীহুল্লাহ নামে খ্যাত হইলেন। মুসলিম বিশ্ব তখন হইতে একই দিবসে সেই মহান কুরবানীর অনুষ্ঠান করিয়া থাকে আত্মোৎসর্গের প্রতীকরূপে। কুরবানী সংক্রান্ত আয়াতে ইসমাঈল (‘আ)-এর নামটির উল্লেখ নাই। এই সুযোগে য়াহুদী ও খৃস্টান লেখকগণ তাহাদের নিকটতম পূর্বপুরুষ, সারার-এর গর্ভজাত ইবরাহীম (‘আ)-এর দ্বিতীয় পুত্র ইসহাক (‘আ) কে যাবীহুল্লাহ নামে আখ্যায়িত করেন।
 তাহাদের এই দাবী ভ্রান্ত। কারণ বাইবেলোক্ত Thine only son Genesis ২২:২) ইবরাহীম (‘আ)-এর একমাত্র পুত্র নহেন। তাঁহার পূর্বে ইসমাঈলের জন্ম হইয়াছিল। Genesis, ১৬:১৬ অনুযায়ী ইবরাহীম (‘আ)-এর ৮৬ বৎসর বয়সে ইসমাঈলের জন্ম এবং Genesis ২১:৫ অনুযায়ী ১০০ বৎসর বয়সে ইসহাকের জন্ম। সুতরাং ইসহাক তাঁহার প্রথম পুত্রও নহেন। যদি হইতেন তাহা হাইলে দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত তাঁহাকে একমাত্র পুত্র বলা হইত। কুরআনের কথায় ইসহাকের জন্মের সুসংবাদ আসিয়াছিল প্রথম পুত্র ইসমাঈলের জন্ম এবং কুরবানী অনুষ্ঠানের পর ৩৭:১১২)।
খলীফা উমার ইবন ‘আবদিল-‘আযীয একদা জনৈক ইসলামে দীক্ষিত য়াহুদীকে এই সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি বলেন, য়াহুদীরা জানে, ইসমাঈলই প্রকৃত যাবীহ। তবে তাহারা আপনাদের প্রতি ঈর্ষবশত ইহা স্বীকার করে না।’’-সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ১৮৫-১৮৬
‘‘ইসহাক (اسحاق) (‘আ) ইনি বাইবেলোক্ত Issac । তাল্‌মুদ (Rosh hash-shana পৃষ্ঠা ১১) অনুসারে তাঁহার জন্ম হইয়াছিল Foaest of passah -এর সময়। মুসিলম কিংবদন্তী অনুসারে তাঁহার জন্ম ‘আাশূরা-র রাত্রিতে (আছ-ছা‘লাবী, পৃ. ৬০; আল-কিসাঈ, পৃ. ১৫০)। ইবরাহীম (‘আ)-এর নিয়ম এই ছিল যে, কোনো দরিদ্র অর্থাৎ পথিক মেহমানরূপে উপস্থিত হইলে তবে তিনি তাহার সহিত আহার করিতেন। একদা কতিপয় ফিরিশতা মানুষের রূপ ধারণ করিয়া তাঁহার মেহমান হইলেন। তাঁহাদেও আপ্যায়নের জন্য তিনি একটি ভর্জিত গো-বৎস তাঁহাদের সামনে উপস্থিত করিলেন। তাঁহারা আহার্য গ্রহণ করিতেছেন না দেখিয়া তিনি বিস্মিত এবং কিঞ্চিৎ ভীত হইলেন। মেহমানগণ তাঁহাকে জানাইলেন, তাহারা ফিরিশতা। লূত (‘আ)-এর অবাধ্য উম্মাঃকে শাস্তি দানের জন্য তাঁহারা প্রেরিত হইয়াছেন। অতঃপর ফিরিশতাগণ তাঁহাকে তাঁহার স্ত্রী সারা-র গর্ভজাত একটি পুত্রসন্তান লাভের সুসংবাদ প্রদান করেন। সারাঃ এই সুসংবাদ শ্রবণে অতিশয় আশ্চার্যন্বিতা হইলেন, (১১ঃ৬৯-৭৩), কারণ তাঁহার বয়স ছিল নব্বই এবং তাঁহার স্বামীর বয়স একশত বৎসর (Genesis, ১৭:১৮)। ইহার পর ইসহাক (‘আ) জন্মগ্রহণ করেন। বাইবেলে উক্ত হইয়াছে, ইবরাহীম (‘আ) আল্লাহর আদেশে ইসহাককে কুরবানী করিতে উদ্যত হইয়াছিলেন (Genesis, ২২:২)। কিন্তু ইহা ভ্রামাত্মক, কারণ উক্ত শ্লোকে Issac -কে Thine only son বলা হইয়াছে। অথচ ইসহাক-এর জন্মের পূর্বে ইসমাঈল ছিলেন only son । অন্যপক্ষে Issac যে ইবরাহীমের ২য় পুত্র-বাইবেলের বর্ণনায় ইহাও সুস্পষ্ট। ইসমাঈলের বংশধরগণই সেই কুরবানীর আদর্শ আজ পর্যন্ত বজায় রাখিয়াছে, ইসহাক ও তৎপুত্র য়া’কুবের বংশধর ইহাতে শরীক নহে।
 ইসহাক (‘আ) ফিলিস্তীনের হেবরন নামক স্থানে তাঁহার পৈতৃক আবাসস্থলেই বাস করিতেন (মাওদূদী, তাফহীমুল-কুরআন ২ঃ৩৮১)। এখানে তিনি তাঁহার পিতার স'লাভিষিক্তরূপে বসবাস করিতে থাকেন। তিনি যথাসময়ে নুবূওয়াত প্রাপ্ত হন। ইহার পুত্র য়া’কুব (আ), বাইবেলের Jacob ইসরাঈলীদের আদি পিতা।’’-সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ২০০-২০১)
 * তাছাড়া বাইবেলের সবচেয়ে বিশুদ্ধতম বর্ণনা, যা ‘ইঞ্জিলে বারনাবাস’ নামে প্রসিদ্ধ, তাতে ৪৩ ও ৪৪ নং অধ্যায়ে ঈসা আ.-এর স্পষ্ট বাণী উল্লেখ রয়েছে যে, কুরবানীর ঘটনা ইসমাঈল আ.-এর, ইসহাক আ.-এ��
 

বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

এক নজরে আমার প্রিয় মীরসরাই উপজেলার তথ্য


এক নজরে মীরসরাই উপজেলা :

মিরসরাই নামের ইতিহাস"

বর্তমান মিরসরাই এলাকায় মোগল আমলে একটি সামরিক ঘাটি ছিল। ঘাটিটি মেহমান সরাই নামে পরিচিত। সেখানে মির সাহেব নামে এক মুসলিম সৈনিক মারা যায়। তার নামে এই থানার নাম বলে ধারণা করা হয়।

আয়তন : ৪৮২.৮৮ বর্গ কিলোমিটার

জনসংখ্যা : ৩৬৮,৯৫০ জন

ক) পুরুষ-৪৯.০৯%

খ) মহিলা -৫০.৩৭%
...

গ) মুসলিম-৮৫.০৯%

ঘ) হিন্দু-১৩.১২%

ঙ) অন্যান্য-১.৬৯%

লোক সংখ্যার ঘনত্ব ঃ ৭৬৪ জন ( প্রতি বর্গ কিলোমিটারে)

নির্বাচনী এলাকা : ২৭৮, চট্টগ্রাম-১, মীরসরাই ।

খানা/ইউনিয়ন : ৬৯,১৮৪ পরিবার

ইউনিয়ন : ১৬ টি

পৌরসভা : ২টি

মৌজা : ১১৩টি

শিক্ষার হার : ৫২.০১%

সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ১৪৫ টি

সর: রে: প্রা: বি: : ২৩ টি

কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় : ১৪টি

বেসরকারী আন রে: প্রা: বি: : ১২টি

কেজি স্কুল : ১২টি

মাদ্রাসা : ২৪টি

স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা : ১৬টি

বেসরকারী ডিগ্রী কলেজ : ৩টি

ইন্টারমিডিয়েট কলেজ : ২টি

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ- ০১টি

মসজিদ : ৫২০টি

মন্দির : ২৬টি

প্যাগোডা : ০৯টি

চার্চ : ০৪টি

উপজেলা /আভ্যন্তরীন যোগযোগ ব্যবস্থা:

ক) পাকা রাস্তা- ০১১৩.৩০কি:মি:

খ) আধাপাকা- ০১০৮ কি:মি:

গ) কাঁচা- ১০৭২.৬০ কি:মি:

খাদ্য গুদাম : ০২টি

মিলনায়তন : ০১টি ( উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন )

রেজিষ্টার্ড ক্লাব/সংগঠন : ৯৩টি

পাবলিক লাইব্রেরী : ১টি(জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত)

রেল ষ্টেশন : ৪টি

টেলিফোন এক্সচেঞ্জ : ০১টি

পোষ্ট অফিস : ৩০টি

হাটবাজার : ৩৪টি

ব্যাংক : ২৪ টি

সরকারী হাসপাতাল : ১টি ( ৫০ শয্যা বিশিষ্ট)

স্বাস্থ্য কেন্দ্র/ক্লিনিক : পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র- ১৬টি, ইউনিয়ন সাব সেন্টার- ১১টি, কমিউনিটি

ক্লিনিক- ১৮টি, বেসরকারী ক্লিনিক- ০৩টি ।

রেজিষ্টার্ড এতিমখানা : ১৬টি

অফিসার্স ক্লাব ঃ ০১টি

প্রেস ক্লাব : ০১টি

পত্রিকা : পাক্ষিক খবরিকা, মাসিক চলমান মীরসরাই, মাসিক মীরসরাই

ডাক বাংলো : জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত- ০১টি, বন বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত- ০১টি

বেসরকারী এনজিও সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত ০২টি ।

আদিবাসী : করেরহাট, মীরসরাই, খৈয়াছরা ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের পাহাড়ী

এলাকার প্রায় ১২০০ ত্রিপুরা নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠি পরিবার বসবাস করে ।

পানীয় জল সংক্রান্ত : প্রায় ৯০% এলাকায় পানীয় জলে মাত্রারিক্ত আর্সেনিক ও আয়রন রয়েছে ।

ইলিশ প্রজনন কেন্দ্র : এ উপজেলার সাগর উপকুলে সাহেরখালি ও হাইতকান্দি পয়েন্টে অবস্থিত

নদ-নদী : ফেনী নদী ও মুহুরী নদী ।

উপজেলা ভূমি অফিস ঃ এ অফিসের আওতায় ০২ টি আদর্শগ্রাম রয়েছে, যাতে ৮০ টি পরিবারকে

পূনর্বাসন করা হয়েছে। ০১ টি আশ্রয়ণ প্রকল্প ও ০৩ টি আবাসন প্রকল্প রয়েছে, যাতে মোট ৫৬০টি

পরিবারকে পূনর্বাসন করা হয়েছে। মোট ০৬ টি বালু মহাল রয়েছে। তম্মধ্যে ০৩ টি বালু মহাল

জেলা হতে ইজারা প্রদান করা হয়েছে এবং অপর ০৩টি বালু মহাল ইজারা না হওয়ায় খাস

কালেকশন করা হচ্ছে। উক্ত উপজেলা ভূমি অফিসের আওতায় ০৮ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের

মাধ্যমে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে সাধারণ খাতে দাবীর পরিমান ১৯,৯১,৬৮০/= টাকা এবং এ পর্যন্ত

আদায়ের পরিমান ৬,২১,৭৪০/= টাকা এবং সংস্থা খাতে দাবীর পরিমান ৮০,৭৩,১৫৫/= টাকা

এবং এ পর্যন্ত আদায়ের পরিমান ৬১,১৬৯/= টাকা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ঃ এ অফিসের আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি প্রদান

কার্যক্রম চালু আছে। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে এখনও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। ২০১০ সালে বিনামূল্যে

বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঃ এ অফিসের আওতায় মোট ১৪৫ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩ টি

বেসরকারী ও রেজিঃ প্রাঃ বিদ্যালয় এবং ১৪ টি কমিউনিটি প্রাঃ বিদ্যালয়ে ২০০৯ শিক্ষা বর্ষে

৫৫,২১৬ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। মোট ১১০১ জন শিক্ষকের মধ্যে ১০৪০ জন শিক্ষক

কর্মরত রয়েছে। ৬১ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

উপবৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য ঃ মোট ১৭৯ টি সুবিধাভোগী বিদ্যালয়ে সর্বমোট ১৫,১৪০ জন সুবিধাভোগী

শিক্ষার্থীকে বর্তমান শিক্ষাবর্ষে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ঃ ২০০৯ শিক্ষা বর্ষ হতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা

আরম্ভ করা হয়েছে। এ বছর মোট ৫৪০৬ জন শিক্ষার্থী সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে ও

৪৮০০ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। পাশের হার ৮৯%।

উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরঃ এর আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে ০৬ টি উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নয়ন কাজ

চলছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ৪৪ লক্ষ টাকা করে মোট ২.৬৪ কোটি টাকার কাজ চলছে। কাজের

অগ্রগতি ৮৫%।

উপজেলা মৎস্য অফিস ঃ এ অফিসের আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে ৫০৪ জন লোককে প্রশিক্ষণ প্রদান

প্রদান পূর্বক দারিদ্র বিমোচন প্রকল্পের আওতায় ৬.১১ লক্ষ টাকা এবং মৎস্য খাতে ক্ষুদ্র ঋণ

প্রকল্পের আওতায় ১.৪০ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা পশু সম্পদ অফিস ঃ এ অফিসের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন ছাগল উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় ৬৬ জন

কে ৩.৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

ক্ষুদ্র ঋণ তহবিল প্রকল্পের আওতায় ৪৫ জনকে ২.৬০ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

হাঁস/মুরগী পালন প্রকল্পের আওতায় ১২ জনকে ২.০০ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

পশুসম্পদ উন্নয়ন আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় ১৩১ জনকে

৮.৩৭ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ঋণ আদায় কার্যক্রম সন্তোষজনক।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরঃ এ অফিসের মাধ্যমে ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে ০২ টি গভীর নলকুপ এবং

৩২ টি অগভীর নলকুপ বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে। মীরসরাই উপজেলা ৮৫% স্যানিটেশনের আওতায়

এসেছে। মীরসরাই উপজেলায় আর্সেনিক এর মাত্রা ৩৯.৭৭% এবং অর্সেনিক রোগীর সংখ্যা

৪০ জন। আর্সেনিক এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষার জন্য মীরসরাই উপজেলায় ৫০০০ টি গভীর

নলকুপ বসানো প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকা্রঃ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মস্তাননগর হাসপাতালে ০৭ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে।

জেনারেটর ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব্র সংকট রয়েছে। তাছাড়া টেলিফোন ও গ্যাস সংযোগ অতীব জরুরী ৷

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

দাঁতে পোকা হয়না ,,আসলে তা দন্তক্ষয় ,কেন হয় , করনীয় বজনীয়

দাঁতের রোগ দন্তক্ষয়         


দাঁতের সাথে আঁতের সর্ম্পক আছে এ কথা কম বেশি সবাই শুনেছেন । আর আজ সাধারণ ভাবে পরিচিত দাঁতের পোকা নিয়ে আলোচনা করব । তবে আলোচনার শুরুতেই বলে দিতে চাই দাঁতে পোকা হয় না; হয় দন্তক্ষয় । দাঁতের যে রোগটি নিয়ে জনমনে সবচেয়ে ভুল ধারণা আসন গেড়ে বসেছে তার নাম হলো দাঁতের ক্ষয় রোগ। দন্ত চিকিৎসকরা একে ডেন্টাল ক্যারিজ বলে থাকেন কিন্তু অনেকেই একে দাঁতের পোকা হিসেবে অভিহিত করেন। অথচ দাঁতে কোনো পোকা হয় না বরং এসিডের কারণে ডেন্টাল ক্যারিজ মানে দাঁতের ক্ষয়রোগ ঘটে থাকে। দন্তক্ষয়ের ফলে দাঁতে যে ধরনের ক্ষুদ্র গর্তের সৃষ্টি হয় সেখান থেকে পোকা বের করে দেখানো হয় অথচ কথিত এই পোকার দাতের ওই ক্ষুদ্র গর্তে মোটেও জায়গা হওয়ার কথা নয় । অথচ অনেকেই এই অতি ক্ষুদ্র গর্ত থেকেই এক বা একাধিক পোকা বের করে দেখান । আমাদের গা গরম থাকে । গরম থাকে আমাদের মুখগহববরও। কাজেই আমাদের মুখের মধ্যে যে স্বাভাবিক তাপ থাকে অথবা আমরা যখন গরম কোনো খাবার দাবার বা চা, দুধ ইত্যাদি পান করি সে অবস্হায় ওই ধরনের পোকা বেঁচে থাকতে পারবে না। দাঁতের রোগ কেবল আমাদের দেশে হয়না পৃথিবীর সব দেশের লোকেরই দন্ত বা মাড়ি সংক্রান্ত রোগের জন্য অনেক ক্ষেত্রে দাঁত উঠিয়ে ফেলতে হয় । বিভিন্ন ডেন্টাল হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এ ধরনের দাঁত উঠিয়ে ফেলার কাজ নিয়মিত হচ্ছে । অথচ উঠিয়ে আনা দাঁতের মধ্যে কেউ কোনোদিন কোনো পোকা দেখতে পায় নি । আলোচনার শুরুতেই তাই স্পষ্ট ভাষায় আমরা বলে দিতে চাই, জীবিত মানুষের দাঁতে কখনো কোনো অবস্থায়ই পোকা হয় না । দাঁতে যা হয় তার নাম দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ । অতি ধীরে ধীরে অব্যাহত গতিতে এই রোগের বিকাশ হয় । কেনো এই রোগ দেখা দেয় ? হ্যাঁ সে কথার জবাব দিতে যেয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন, মুখে জমে থাকা খাদ্যদ্রব্য বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার মুখগহ্বরের বিভিন্ন রোগজীবাণু ভেংগে ফেলে যাকে বিপাক ক্রিয়া বলা হয়। আর এই ক্রিয়ার উপজাত হিসেবে ল্যাকটিক এসিড, এসিটিক এসিড, পাইরোভিক এসিড সহ নানা ধরনের এসিড তৈরি হয়। এ সব ফলে আমাদের মুখের ভেতরে এসিডের আক্রমণ ঘটে । এসিডের এই আক্রমণের ফলে দাঁত থেকে ক্যালসিয়াম, ফসফরাসের মত গুরুত্বপুর্ণ খনিজসমুহ দাঁতের উপরিভাগের অংশ এনামেল থেকে বের হয়ে যায়। আর এভাবেই দাঁতের ক্ষয়রোগ দেখা দেয়।
এই রোগকে অনেকেই দাঁতের পোকা বলে অভিহিত করে থাকেন। তবে বংশগত কারণেও দাতের ক্ষয়রোগ হতে পারে । মুখের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা অর্থাৎ নিয়মিত মুখ পরিস্কার করা না হলে এই রোগ দেখা দেয়। এই বিবরণ থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে দাঁতে কোনো পোকা হয় না। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অন্যতম পুরান এবং অভিজাত দন্ত চিকিৎসা কেন্দ্র ঢাকা ডেন্টার ক্লিনিকের মালিক ডা.আবদুল্লাহ খানের সাথে আমরা দন্ত রোগের ব্যাপারে আলাপ করেছি । নিয়মিত দাঁত পরিস্কার করা হলে মুখে স্বাস্থ্য বজায় থাকে । প্রথমত রাতে শোয়ার সময় অবশ্যই দাঁত পরিস্কার করতে হবে । আর সকালে নাস্তা খাওয়ার পর দাঁত পরিস্কার করতে হবে । কোনো অবস্থায় এই কাজে গাফলতি করা চলবে না। দাত পরিস্কার করার জন্য এলোমেলো ভাবে ব্রাশ চালালে হবে না। বরং প্রতিটি দাঁতের গোড়ার ময়লা যেনো বের করে আনতে পারে সেজন্য সঠিক ভাবে ব্রাশ চালাতে হবে । এই কাজটি সঠিক ভাবে করা না হলে দাঁত পরিস্কার করা উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে না । ফলে দাঁতের ফাকে জমে থাকা ময়লা থেকে দাঁত ক্ষয় রোগের সূচনা ঘটনার মতো কারণ দেখা দিতে পারে।
যাদের মাত্র দাঁত উঠছে তাদের দাঁতের যত্ন নিতে হবে কিনা ? এমন একটি প্রশ্ন অনেকের মনে দেখা দেয়। আবার অনেকেই শিশুদের দাঁতের যত্নের ব্যাপারে আদৌও মনোযোগী হন না। অথচ বাস্তবতা হলো ছোট শিশু যার মুক্তার দানার মত দাঁত যার মাত্র গজাচ্ছে সে দাঁতেও ক্ষয় রোগ আক্রমণ করতে পারে। আর এই ক্ষয় রোগের মূল কারণটি হলো সময় মতো সঠিক ভাবে দাঁত পরিস্কার না করা। বিশেষ করে শিশু যদি দুধ খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়ে তা হলে তার দাতের ফাকে আটকে থাকা দুধ এবং ব্যাকেটেরিয়ার কারণে দন্তক্ষয় দেখা দিতে পারে । শিশু নিজে দাঁতের যত্ন নিতে পারে বলে শিশুর অভিভাবক অর্থাৎ পিতা মাতার এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া একান্ত ভাবে প্রয়োজন। তা হলে শিশুর দাঁত শেষ পর্যন্ত দন্তক্ষয় রোগের আক্রমণের শিকার হবে। কষ্ট পাবে আদরের ছোট্টমনিটি। দন্তক্ষয়ের লক্ষণগুলো কি? হ্যাঁ এমন প্রশ্নের জবাব দিতে যেয়ে ডা. আবদুল্লাহ খান আমাদের বলেছেন, দন্তক্ষয়ের প্রথম দিকে এক বা একাধিক দাঁত স্পর্শ কাতর হয়ে উঠতে পারে, দাঁত শির শির করতে পারে। এরপর দাতে ছোট আকারের দাগ বা ফাটল দেখা দিতে পারে। তবে এ সময়ও যদি চিকিৎসকের কাছে কেউ না যান, তা হলে অবস্থার আরো অবনতি ঘটতে থাকবে। দাঁতে ব্যাথা হতে থাকবে। বিশেষ করে রাতের ঘুম নষ্ট হওয়ার মতো ব্যাথা হতে থাকবে। এরপর চিকিৎসকের কাছে না গেলে ক্ষয় দাঁতের ভেতরের মজ্জাকে আক্রমণ করবে। দাঁতের এই মজ্জাকে চিকিৎসকরা পাল্প বলে থাকেন। দন্তক্ষয়ের এ পর্যায়ে যে ব্যাথা হবে তা বেশ যন্ত্রনাদায়ক হয়ে উঠবে। এরপর দাঁতে সংক্রমণ ঘটতে পারে এবং দাতে পূঁজ জমতে পারে ।এ ছাড়া ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়ের কারণে আর সে সব জটিলতা দেখা দিতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দাঁতের মাড়ি বা চোয়ালে সংক্রমণ ঘটা, ভাঙ্গা দাঁতের কারণে জিভে ঘা হওয়া । জিভের এই ঘা মোটেও ভাল কিছু নয়। এ ছাড়া দাঁতে সংক্রমণের কারণে হৃৎরোগ হতে পারে। দন্তক্ষয়ের জন্য চিকিৎসা হিসেবে ফিলিং এবং রুট ক্যানেল করা হয়। এ সব চিকিৎসার কোনোটাই ব্যয়বহুল নয়। কেবল চিকিৎসা সময় মতো শুরু করতে হয়।
কিন্তু দন্তরোগের কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাঁত ফেলে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। অনেকেই মনে করে, দাঁত ফেলে দিলে চোখের জ্যোতি কমে যায়। প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটা অন্যরকম। কতগুলো ভালো আপেলের সঙ্গে যদি একটি খারাপ আপেল থাকে তবে খারাপ আপেলটি অন্য ভালো আপেলগুলোকেও ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। তেমনি একটি খারাপ দাঁত আশপাশের ভালো দাঁতকে নষ্ট করে ফেলতে পারে। এছাড়া একটি খারাপ দাঁতে সাধারণত অসংখ্য জীবাণু থাকে। এসব জীবাণু শরীরের রক্তের সঙ্গে মিশে যায় এবং শরীরের গুরুত্বপুর্ণ অংশ যেমন চোখ, কান, কিডনি, হৃৎপিন্ড ইত্যাদিতে মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে। কাজেই খারাপ দাঁত পুষে রেখে অযথা ক্ষতির আশংকা বাড়ানো মোটেপও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আর সে দাঁত ফেলে দিলে চোখের জ্যোতি কমে যায় এ ধরণের লোক কথার কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই।#
http://bangla.irib.ir/2010-04-21-07-49-31/2010-04-22-08-10-35/item/8262-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A6%A6%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%9F

 

কুকুরের দাঁতে পোকা আসেনা কেন ? এক চমৎকার তথ্য

মানুষ দাঁতের কত যত্ন করে। টুথপেস্ট দিয়ে প্রতিদিন দাঁত ঘষে। দাঁতের ফাঁকে যেন খাদ্যকণা আটকে না থাকে সে জন্য কাঠি বা সুতা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার (ফ্লস) করে। তার পরও দাঁতে পোকা ধরে। যন্ত্রণায় কতই না কষ্ট পেতে হয়! অথচ কুকুর সারা দিন বাসি-পচা খাবার খায়। দাঁত ঘষার তো প্রশ্নই নেই। অথচ তাদের দাঁতে সাধারণত পোকা ধরে না। সব সময় ঝকঝকে সাদা। ধারালো দাঁতগুলো সব সময় ব্যবহারোপযোগী। কুকুরের দাঁত এত ভালো থাকে কীভাবে? কে তার দাঁত পরিষ্কার করে দেয়? কেউ না, নিজেই! আমরা দেখেছি, কুকুর মাঝেমধ্যে নিজের শরীর কামড়ায়। তাদের গায়ে একধরনের মাছি বসে, লেজ দিয়ে যতটুকু পারা যায়, তারা সেই মাছি তাড়ায়। তাতেও কাজ না হলে অতিষ্ঠ হয়ে কামড়ায়। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক সময় মাছি না বসলেও তারা লেজের কাছাকাছি মুখ নিয়ে কামড়ায়। এই অভ্যাস তার দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে। কুকুরের দেহের একটি গ্রন্থি থেকে একধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়, যা গুণের দিক দিয়ে ফ্লোরাইডের সমতুল্য। ফ্লোরাইড দাঁতের জন্য ভালো। আমাদের টুথপেস্টে সে জন্যই ফ্লোরাইড মেশানো হয়। কুকুরের এই নির্দিষ্ট গ্রন্থি তার লেজের ঠিক নিচের দিকে থাকে। লেজের আশপাশে কামড়ানোর সময় ফ্লোরাইড তার দাঁতে লাগে। ফলে কুকুরের দাঁতে সহজে পোকা ধরে না ৷

 

হেফাজতঃ 201জন শুরা কমিটি, গঠিত হয়েছে ২৫ সদস্যের নীতি নির্ধারনী কমিটি , ঘোষিত ৭ কর্মসূচি , ১৩ দপা সহ আরও ৮ দপা দাবী

হেফাজতঃ 201 জন সদস্য শুরা কমিটি, গঠিত হয়েছে ২৫ সদস্যের নীতি নির্ধারনী কমিটি , ঘোষিত ৭ কর্মসূচি , ১৩ দপা সহ আরও ৮ দপা দাবী


     

চট্টগ্রাম, ২১ সেপ্টেম্বর :


  ২০১ সদস্য বিশিষ্ট শুরা কমিটি পূর্ণ গঠন করল হেফাজতে ইসলাম এর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার আল জামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রসায় হেফাজত নেতাদের শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলনে এ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া গঠন করা হয়েছে ২৫ সদস্যের একটি নীতি নিধারক কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ১৩ দফা দাবী গুলোকে সমুন্নত রেখে সম্মেলন থেকে ঘোষণা করা হয় ৭ দফা কর্মসূচি ও ৮ দফা দাবী। আর অনতিবিলম্বে সরকার যদি এসব দাবী-দাওয়া বাস্তবায়ন করা না হলে সচিবালয় ঘেরাও সহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হেফাজত নেতারা জানান। ৫ মে পরবর্তী সময়ে প্রথম বারের মত হেফাজতের এই শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলনকে ঘিরে একদিকে হেফাজত নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। অন্যদিকে আইন-শৃংঙ্খলা বাহীনির সদস্যদের বেশ তৎপর ও সর্তক থাকতে দেখা গেছে। তবে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার অবতারণা ছাড়াই সমাপ্ত হয়ে হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলন।

হেফাজতের ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লমা মুহবুল্লাহ বাবুনগরীর নিজস্ব প্রতিষ্টান বাবুনগর মাদ্রাসায় শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন তথা শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর, বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও দারুল উলূম হাটহাজারীর মুহতামিম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী।

হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী’র সঞ্চালনায় হেফাজত আমীরে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, আপনারা জানেন, কিছুদিন পূর্বে দেশের কিছু নাস্তিক-মুরতাদ কর্তৃক জঘন্যতম কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মহান আল্ল¬াহ তায়ালা, হযরত রাসূল (সা.) পবিত্র কুরআন, ও ইসলামের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাসের ওপর আক্রমণ করে ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন লেখা প্রকাশ করায় এবং তা ব্যাপকভাবে সচেতন মুসলমানদের গোচরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরাম ও তাওহিদী জনতা ঈমানী চেতনার তাগিদে নাস্তিক-মুরতাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসে।

তিনি বলেন, শতকরা নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ। আজ সেই বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে সমূলে উৎখাতের হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে একটি প্রভাবশালী ইসলামবিদ্বেষী চক্র। বস্তুতপক্ষে তারা এ দেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। দীর্ঘদিন থেকেই কতিপয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাদের বলিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে প্রতিনিয়ত ইসলাম, মুসলমান ও আলিম-ওলামাদের হেয়প্রতিপন্ন করার হীন চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা আলিম-ওলামা ও মাদারিসে দীনিয়্যার বিরুদ্ধে হরদম মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করে জাতিকে বিভক্ত করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, কুরআন-হাদিসের বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষাকেন্দ্র কওমী মাদরাসাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে সরকার সম্প্রতি ‘কওমী মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃকপক্ষ আইন ২০১৩’ নামে জাতীয় সংসদে একটি বিল পাস করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। আমরা এই আইনটি পর্যালোচনা করে দেখেছি যে, তা বাস্তবায়িত হলে কওমী মাদরাসার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। কওমী মাদরাসাগুলো সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। কওমী মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, সম্পদের সংরক্ষণ ও তার ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে সরকার গ্রাস করে ফেলবে। ফলে মাদরাসাগুলো আলিয়া মাদরাসার মতোই শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের আখলাক-চরিত্র, আমলী পরিবেশ সবকিছু ক্রমেই মুছে যাবে। এই আইন পাশ হলে কুরআন-হাদিসের কোনো ইলম রাখেন না এমন ব্যক্তিগণও মাদরাসার নেতৃত্ব ও দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হতে পারবে। যা দারুল উলূম দেওবন্দের উসূলের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এই আইন পাশ করা থেকে সরকারকে বিরত রাখার জন্য কঠিন ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়ের অপরিহার্য দাবি।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী আরও বলেন, বিগত ৯ মার্চ ২০১৩ ইং প্রাচীন ও বৃহৎ ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলূম হাটহাজারী মিলনায়তনে দেশের প্রতিনিধিত্বশীল শীর্ষ আলিম-ওলামা-পীর-মাশায়েখদের সম্মেলনে লংমার্চ পরবর্তী ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা সারাদেশে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। জেলায় জেলায় শানে রেসালাত মহাসমাবেশে লাখো জনতার সমাগম ঘটে। দেশের মানুষ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আল্লাহ ও তার রাসূলের সম্মান রক্ষার্থে রাজপথে নেমে আসে। গড়ে তোলে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক বৃহত্তর গণ আন্দোলন। কিন্তু সরকার জনগণের হৃদয়ের অনুভূতি ও প্রাণের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়। তারা নানা কৌশলে আলিম-ওলামা ও নবীপ্রেমিক জনতার এই গণজাগরণকে নস্যাত করার অপচেষ্টা চালায়।

সম্মেলনে হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, গত ৫ মে ঢাকা অবরোধের পর প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় হেফাজতে ইসলামের দ্বিতীয় মহাসমাবেশ। সমাবেশে আসার পথে তাওহীদি জনতার উপর সরকারি দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসী, সন্দেহভাজন কিছু ফোর্স ও যৌথবাহিনী দিনভর আক্রমণ চালিয়ে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে ও বিস্ফোরন্মুখ করে তোলে। মাগরিবের পূর্বেই ১৬টি তাজাপ্রাণ কেড়ে নেয়া হয়। পানি-খাদ্য ইত্যাদি কোনো কিছুর গাড়ির প্রবেশ বন্ধ করে দিয়ে তৃষ্ণার্থ, ক্ষুধার্থ ও ক্লান্ত লক্ষ লক্ষ নবীপ্রেমিক জনতাকে পরিকল্পিতভাবে মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখী করা হয়। যা ইতিহাসে একটি ন্যক্করজনক ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

উক্ত সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, আপনারা জানেন, মধ্যরাত থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দশ হাজারের অধিক সদস্য ভারি গোলাবারুদ ও প্রাণঘাতী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিরীহ, জিকিররত ও ঘুমন্ত জনতার ওপর পৈশাচিক আক্রমণ শুরু করে। যে ধরনের অভিযান কেবল কোনো যুদ্ধাকবলিত দেশেই শত্র“র বিরুদ্ধে পরিচালিত হতে দেখা যায়। এই হামলায় বহুসংখ্যক আলিম-ওলামা ও তাওহীদি জনতা শাহাদত বরণ করেন। হাজার হাজার আলিম আহত, পঙ্গু ও চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যান। বিবিসি, সিএনএন, আল-জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও মানবাধিকারসংস্থাগুলো এসব গণহত্যার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ঘটনার শত শত ভিডিওচিত্র প্রচারিত হয়। আমাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে কী ধরনের ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়েছে তা আপনারা সকলেই জানেন। আল্লাহর অসীম রহমত ও আপনাদের দোয়ায় আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পেরেছি। এখনও আলিম-ওলামাদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ করা হল, আবার তাঁদের বিরুদ্ধেই উল্টো মামলা দায়ের করে আলিম-ওলামা, তালিবে ইলমদের ব্যাপক হয়রানি, মাদরাসার পরিচালকদের হুমকি-ধমকী, অনুসন্ধান ও প্রতিবেদনের নামে নাজেহাল করা হচ্ছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলায় দায়িত্বশীল ও আলিম ওলামাদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। প্রখ্যাত আলিম, সাবেক মন্ত্রী, মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবকে গ্রেফতার করে ১৫ দিন রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করবো, সরকার গ্রেফতারকৃত আলিমদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবেন।

এছাড়া সম্মেলনে নূর হোসাইন কাশেমী, মুফতি ইজহারুল ইসলাম, শাহীনূর পাশা চৌধুরী, আবদুল লতিফ নিজামী, জাফরুল্লাহ খান, মাহফুজুল হক, মাওলানা ইদরিস, মাওলানা শাখাওয়াত হোসাইন, আবুল হাসনাত আমিনি, তাজুল ইসলাম, মাওলানা লোকমান, মুফতি হারুণ ইজহার, সরওয়ার কামাল আজিজি, আবদুল বাসেত, ওবায়দুল রহমান নদভী, ওবায়দুল রহমান মাহাবুব, মাওলানা মোস্তাক, আবদুর রব ইউসুফি, জুনায়েদ আল হাবিব, আবদুল জব্বার জিহাদী, মামুনূল হক, শফিক উদ্দিন, ইলিয়াছ ওসমানী, হাবিবুল্লা ও মীর ইদরিস প্রমুখ



হেফাজতে ইসলাম এর সম্মেলনে ঘোষিত ৭ কর্মসূচি :


কওমী মাদরাসার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ধ্বংস ও সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘কওমী মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন- ২০১৩’ বিল সংসদে পাশ করার সরকারি চেষ্টা অবলিম্বে বন্ধের দাবিতে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ১২ টায় সারাদেশে একযোগে স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর যে-সকল জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন-ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হয়নি সেসব শাখায় কমিটি গঠন করে এর তালিকা কেন্দ্রে (সাংগঠনিক সম্পাদক বরাবরে) প্রেরণ করা, হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী ঘোষিত ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ওলামা-সুধী সমাবেশ ও পেশাজীবি সংলাপ এর আয়োজন করা, আগামী ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে দুই দিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলন এর আয়োজন করা, ১ লা ডিসেম্বর ’১৩ থেকে ৩১ জানুয়ারি ’১৪ এর মধ্যে প্রত্যেক জেলায় শানে রেসালত সম্মেলনের ব্যবস্থা করা, শহীদদের জিয়ারত ও শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি কেন্দ্রে প্রেরণ করা ও সরকার যদি হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত তাওহীদি জনতার প্রাণের দাবি ১৩ দফাসহ উত্থাপিত অন্যান্য দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন না করলে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।

হেফাজতে ইসলাম এর সম্মেলনে ঘোষিত ৮ দাবী-দাওয়া 

ওলামা সম্মেলন থেকে হেফাজতের নতুন আট দফা

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির ওলামা সম্মেলন থেকে সরকারের প্রতি নতুন করে আরো আট দফা দাবী পেশ করেছে দলটি। শনিবার দিনব্যাপী সম্মেলন শেষে এসব দাবী প্রদান করেন। দাবীগুলো হচ্ছে –

১. সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের ঈমান আকিদার হেফাজত, মহান আল্লাহ ও প্রিয় নবী(স.) এর সম্মান রক্ষা, ধর্মীয় মুল্যবোধ সংরক্ষন, সমাজে শান্তি-শৃংখলা প্রতিষ্ঠা, নৈতিক অবক্ষয় রোধ সর্বত্র নারীর পূর্ণ নিরাপত্তা, ন্যায্য অধিকার ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা পরিবেশ সৃষ্টির মহান লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দাবী অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে ।

২. ৫ মে শাপালা চত্বরে আলীম ওলামা ও নবী প্রেমিক জনতার উপর পরিচালিত গণহত্যার স্বাধীন, সুষ্ঠু বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন এবং প্রকৃত ঘটনা জাতীকে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে ।

৩. প্রখ্যাত আলেমেদিন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী ও হুইপ মুফতি ওযাক্কাছ সহ গ্রেপ্তারবকৃত সকল নেতা কর্মীর অবিলম্বে মুক্তি দান ও সরা দেশে হাজার হাজার আলিম- ওলামার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৪. পশ্চিমা সংৃতর আলোকে প্রণীত নারী নীতিমালা কোরআন- সুন্না -তথা ইসলাম বিরোধী ধারা সমূহ বাতিল করে আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদেশের স্বার্থে সংঘতিপূর্ণ নারী নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

৫. কওমী মাদ্রাসার স্বকীয়তা ধ্বংস ও সরকারের অযুক্তিক নিয়ন্ত্রন আরোপের উদ্দ্যেশে কওমী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আইন -২০১৩ জাতীয় সংসদে পাশ করার জাবতীয় তৎপরতা ও পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে ।

৬. দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের ঈমান আমল সংরক্ষন ও ধর্মীয় শিক্ষা- দিক্ষার প্রাণকেন্দ্র মাদ্রাসায় ছাত্র কমানোর তথা কথিত আন্দোলন সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের দৃষ্ঠান্তমুলক বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে ।

৭. দেশের অবিসংবাদিত আধ্যাত্বিত রাহবার, শাযখুল ইসলাম আল্লামা আহম্বমদ শফি সহ আলিম-ওলামার বিরোদ্ধে সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও মদদ পুষ্ট ব্যাক্তিদের লাগামহীন কটুক্তি মিথ্যাচার ও দৃষ্টান্তমূলক মস্তব্য বন্ধ করতে হবে ।

৮. বন্ধ করে দেওয়া সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া খুলে দেওয়ার পাশাপশি দৈনিক আমাদেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানেন মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সাধারণ আদিলুর রহমানের মুক্তি দিতে হবে।

===============================্

হেফাজতের জাতিয় ওলামা সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি: ২০১ সদস্য বিশিষ্ট শুরা কমিটি গঠন

http://www.bdtoday.net/blog/blogdetail/detail/2300/salamat/27666#.Uj2jsB_pfIV




এছাড়া সূত্র আরো জানায়, সদ্য গঠিত ২৫ সদস্য বিশিষ্ট নীতিনির্ধারণ কমিটিকে ৫টি সুনিদিষ্ট কাজের দায়িত্বভার অপন করা হয়।

 সুনিদিষ্ট কাজ গুলো হল
  ১//১০ অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় নিবার্হী কমিটি গঠন,
২//অর্থ ও অডিট কমিটি গঠন,
৩//সংবিধান প্রণয়ন কমিটির গঠন,
৪/5//  ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা।

 অন্যদিকে ৫ মে পরবর্তী সময়ে প্রথম বারের মত হেফাজতের এই শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলনকে ঘিরে হেফাজত নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যতা দেখা দিয়েছে। গত শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ হাটহাজারী মাদ্রাসা, নাজিরহাট মাদ্রসা ও বাবুনগর মাদ্রসায় অবস্থান নেন বলে জানা গেছে। তবে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার অবতারণা ছাড়াই সমাপ্ত হলে হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলনে আইন-শৃংঙ্খলা বাহীনি র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি’র প্রায় শতাধিকসদস্য সহ গোয়েন্দা সংস্থার বেশ কিছু কর্মকর্তা টহলরত ছিল বলে জানান হাটহাজারী সার্কেল এর এ.এস.পি আা.ফ.ম নিজাম উদ্দিন।

http://ctgtimes.com/archives/53574?fb_source=pubv1

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির পূর্ণাঙ্গ রূপ

"মজলিসে শূরা"
...
আমিরে হেফাজত, সকল নায়েবে আমির, মহা সচিব, যুগ্ন মহা সচিব, সকল সম্পাদক, সকল জেলা আমির, সকল মহানগর আমির, সকল জেলা সেক্রেটারি, সকল মহানগর সেক্রেটারি প্রতিটি জেলা থেকে পাঁচ জন প্রধান প্রধান আলেম।

"আলায়ে মজলিসে শূরা" (সাব কমিটি)

১| আমিরে হেফাজত শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ্‌ আহমদ শফী সাহেব (দাঃবাঃ)

২| সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরি

৩| আল্লামা আশরাফ আলি, মুহাদ্দিস হাটহাজারি মাদরাশা

৪| মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

৫| নায়েবে আমীর মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, ঢাকা

৬| মুফতি মোজাফফর আহমদ, পটিয়া

৭| আল্লামা আব্দুল হামিদ, পির সাহেব মধুপর

৮| আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জি

৯| মুফতি আবুল হাসান, রংপুর

১০| মাওলানা সাজেদুর রহমান, বি বাড়িয়া

১১| মাওলানা মোস্তাক আহমদ, খুলনা

১২| মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, বরিশাল

১৩| মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, ঢাকা

১৪| মাওলানা আব্দুস সামাদ, রাজশাহী

১৫| মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, পির সাহেব নানুপুর

১৭| মাওলানা ইদরিস সাহেব, নাজিরহাট বড় মাদরাশা

১৮| যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা সলিম উল্লাহ খান

১৯| মাওলানা লোকমান হাকীম, চট্টগ্রাম মহানগর

২০| মাওলানা এনামুল হক, চিকরিয়া

২১| মাওলানা আনাস মাদানী, সাহেবজাদা আমিরে হেফাজত

২২| মাওলানা ইলিয়াস ওসমানী, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক

২৩| মাওলানা হাবীবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক

২৪| আজিজুল হক ইসলামাবাদি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক

২৫| মুফতী হারুন ইজহার, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক

এই "আলায়ে আহলে শূরা" বা সাব কমিটির দাইত্ত হলো আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণ গঠন। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি পূরণ পূর্ণ গঠন। কেন্দ্রীয় অর্থ ও অডিট কমিটি গঠন। মিডিয়া ও প্রচার চেল গঠন।

নামাযে হাত বাঁধা বিস্তারীত

নামাযে হাত বাঁধা সুন্নত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে হাত বেঁধেছেন। তাঁর ডান হাত থাকত বাম হাতের কব্জির উপর। সাহাবায়ে কেরামকে এভাবেই নামায পড়ার আদেশ করা হত এবং তাঁরাও এভাবেই হাত বেঁধে নামায পড়তেন।
নামাযে হাত বাঁধা
হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর দিয়ে দুই হাত তুললেন। রাবী বলেন, দুই কান বরাবর। এরপর পরিধানের চাদর গায়ে জড়িয়ে নিলেন, এরপর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন …।
عن وائل بن حجر : أنه رأى النبي صلى الله عليه وسلم رفع يديه حين دخل في الصلاة كبر، وصف همام حيال أذينه، ثم التحف بثوبه، ثم وضع يده اليمنى على اليسرى …
-সহীহ মুসলিম ১/১৭৩
হযরত হুলব আতত্বয়ী রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হতেন এবং তাঁর ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يؤمنا فيأخذ شماله بيمينه. رواه الترمذي وقال : حديث حسن.
-জামে তিরমিযী ১/৩৪; ইবনে মাজাহ ৫৯
হযরত সাহল ইবনে সাদ রা. বলেন, লোকদেরকে আদেশ করা হত, পুরুষ যেন নামাযে ডান হাত বাম বাহুর উপর রাখে।’-সহীহ বুখারী ১/১০৪
كان الناس يؤمرون أن يضع الرجل اليد اليمنى على ذراعه اليسرى في الصلاة. قال أبو حاتم : لا أعلمه إلا ينمى ذلك إلى النبي صلى الله عليه وسلم.
হযরত জাবির রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন নামাযরত ব্যক্তির নিকট দিয়ে গমন করছিলেন, যিনি ডান হাতের উপর বাম হাত রেখে নামায পড়ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত খুলে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫০৯০
مر رسول الله صلى الله عليه وسلم برجل وهو يصلي قد وضع يده اليسرى على اليمنى فانتزعها ووضع اليمنى على اليسرى. قال الهيثمي في مجمع الزوائد ٢/٢۷٥ : رجاله رجال الصحيح.
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, আমি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘আমরা নবীগণ আদিষ্ট হয়েছি দ্রুত (সময় হওয়ামাত্র) ইফতার করতে, বিলম্বে (সময়ের শেষের দিকে) সাহরী খেতে এবং নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতে।’
سمعت نبي الله صلى الله عليه وسلم يقول : إنا معاشر الأنبياء أمرنا بتعجيل فطرنا وتأخير سحورنا وأن نضع أيماننا على شمائلنا في الصلاة. قال الهيثمي في مجمع الزوائد ١/ ٢۷٥: رجاله رجال الصحيح.
-সহীহ ইবনে হিববান ৩/১০১, হাদীস : ১৭৬৬; আলমুজামুল কাবীর ১১/১৫৯, হাদীস : ১১৪৮৫
হারিছ ইবনে গুতাইফ রা. বলেন, ‘আমি এটা ভুলিনি যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখতে দেখেছি, অর্থাৎ নামাযে।’
مهما رأيت نسيت لم أنس أني رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم وضع يده اليمنى على اليسرى يعني : في الصلاة.
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৫৬; মুসনাদে আহমদ ৪/১০৫, হাদীস : ১৬৯৬৭-৬৮, ২২৪৯৭
মোটকথা, নামাযে হাত বেঁধে দাঁড়ানো সুন্নাহ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক সাহাবী তা বর্ণনা করেছেন। এ কারণে নামাযে হাত ছেড়ে দাঁড়ানো, যা মালেকী মাযহাবের কোনো কোনো ইমাম গ্রহণ করেছেন, মূল সুন্নাহ নয়।
মালেকী মাযহাবের প্রাচীন গ্রন্থ ‘‘আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা’’য় আছে, আবদুর রহমান ইবনুল কাসিম রাহ. ইমাম মালিক রাহ. থেকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখার বিষয়ে বর্ণনা করেছেন যে, ‘ফরয নামাযে এই নিয়ম আমার জানা নেই এবং তিনি তা অপছন্দ করতেন। তবে নফল নামাযে কিয়াম যখন দীর্ঘ হয় তখন হাত বাঁধতে বাঁধা নেই।’
قال : وقال مالك في وضع اليمنى على اليسرى في الصلاة قال : لا أعرف ذلك في الفريضة وكان يكرهه، ولكن في النوافل إذا طال القيام فلا بأس بذلك يعين به نفسه.
কিন্তু এ রেওয়ায়েত উল্লেখ করার পর সুহনূন (গ্রন্থকার) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহব রাহ. সুফিয়ান ছাওরী রাহ.-এর সূত্রে একাধিক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতে দেখেছেন।
قال سحنون عن ابن وهب عن سفيان الثوري عن غير واحد من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم أنهم رأوا رسول الله صلى الله عليه وسلم واضعا يده اليمنى على اليسرى في الصلاة.
-আলমুদাওয়ানাহ ১/৭৬
ইমাম মালেক রাহ.-এর অন্য অনেক শাগরিদ তাঁর থেকে হাত বাঁধার নিয়ম বর্ণনা করেছেন। মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত মনীষীদের অনেকেই তাঁর এই রেওয়ায়েতকেই বিশুদ্ধ ও অগ্রগণ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
ইমাম মালিক রাহ.-এর ‘আলমুয়াত্তা’য় এ নিয়মই বর্ণিত হয়েছে।
আততাজ ওয়াল ইকলীল লিমুখতাসারিল খালীল’ কিতাবে ইমাম মালেক রাহ. থেকে হাত বাঁধার নিয়ম বর্ণনা করার পর ইবনে রুশদ মালেকীর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘এটিই অগ্রগণ্য ও শক্তিশালী। কারণ প্রথম যুগে মানুষকে এরই আদেশ করা হত।’
ابن رشد : وهذا هو الأظهر، لأن الناس كانوا يؤمرون به في الزمان الأول.
তদ্রূপ কাযী ইয়ায মালেকী রাহ. থেকে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আমাদের শায়খগণ ডান হাতের পাতা বাম হাতের কব্জির উপর মুঠ করার নিয়মই গ্রহণ করেছেন।’
عياض : اختار شيوخنا قبض كف اليمنى على رسغ اليسرى.
-আততাজ ওয়াল ইকলীল, আবু আবদিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ আলমাওওয়াক আলমালেকী (৮৯৭ হি.) মাওয়াহিবুল জালীলের সাথে মুদ্রিত ২/২৪০
ইমাম কুরতুবী মালেকী রাহ.ও (৬৭১ হি.) হাত বাঁধার রেওয়ায়েতকে অগ্রগণ্য সাব্যস্ত করে বলেন, ‘এটিই সঠিক। কারণ হযরত ওয়াইল রা. ও অন্যান্য সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছেন।’ -আলজামি লিআহকামিল কুরআনিল কারীম ২০/১৫০ এ প্রসঙ্গে মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত মনীষী ইমাম ইবনে আবদুল বার রাহ. (৪৬৩ হি.) শক্তিশালী আলোচনা করেছেন। তিনি হাত বাঁধার নিয়মকে শুধু অগ্রাধিকারই দেননি; বরং এর বিপরীতে ইমাম মালেক রাহ. থেকে যা কিছু বর্ণনা করা হয় তা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় খন্ডনও করেছেন। তাঁর আলোচনার কিছু অংশ মূল পাঠসহ তুলে দেওয়া হল।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে (নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ভিন্ন কিছু বর্ণিত হয়নি এবং কোনো সাহাবী এ নিয়মের বিরোধিতা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। শুধু আবদুল্লাহ ইবনুয যুবায়ের রা. সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়, তিনি নামাযে হাত ছেড়ে রাখতেন, তবে এর বিপরীত কথাও তাঁর থেকে বর্ণিত হয়েছে। ইতিপূর্বে আমরা তাঁর বক্তব্য উল্লেখ করেছি যে, ‘সুন্নাহ হচ্ছে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।’
জুমহূর তাবেয়ীন ও মুসলিম উম্মাহর আহলুর রায় ও আহলুল আছর উভয় ঘরানার অধিকাংশ ফকীহ এই নিয়মই গ্রহণ করেছেন।’
لم تختلف الآثار عن النبي صلى الله عليه وسلم في هذا الباب ولا أعلم عن أحد من الصحابة في ذلك خلافا الاشيء روي عن ابن الزبير أنه كان يرسل يديه إذا صلى وقد روى عنه خلافه مما قدمنا ذكره عنه وذلك قوله صلى الله عليه وسلم (كذا) وضع اليمين على الشمال من السنة، وعلى هذا جمهور التابعين وأكثر فقهاء المسلمين من أهل الرأي والأثر.
-আততামহীদ ২০/৭৪-৭৫
তিনি আরো বলেন, ‘ইবনুল কাসিম ছাড়া অন্যরা ইমাম মালেক রাহ. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ফরয-নফল কোনো নামাযেই হাত বাঁধতে বাধা নেই। আর এটিই তাঁরা মদীনাবাসী শাগরিদদের বর্ণনা।’
… وقال عنه (أي عن مالك) غير ابن القاسم : لا بأس بذلك في الفريضة والنافلة، وهي رواية المدنيين عنه.
-প্রাগুক্ত
এরপর কোনো কোনো তাবেয়ী থেকে নামাযে হাত ছেড়ে রাখার যে বর্ণনা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি বলেন, ‘এই হচ্ছে কতিপয় তাবেয়ীর (আমলের) কিছু বিবরণ। তবে তা (আলোচিত সুন্নাহর) খিলাফ ও বিরোধিতা নয়। কারণ তাদের কেউ (হাত বাঁধা) অপছন্দ করতেন এমনটা পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও তা দলীল হিসেবে গ্রহণ করা যেত না। কারণ সুন্নাহর অনুসারীদের জন্য সুন্নাহই হচ্ছে দলীল। আর যারা এর বিরোধিতা করে তাদের বিরুদ্ধেও দলীল হচ্ছে সুন্নাহ, বিশেষত যে সুন্নাহয় কোনো সাহাবীর ভিন্নমত নেই।
فهذا ما روي عن بعض التابعين في هذا الباب وليس بخلاف، لأنه لا يثبت عن واحد منهم كراهية، ولو ثبت ذلك ما كانت فيه حجة، لأن الحجة في السنة لمن اتبعها، ومن خالفها فهو محجوج بها، ولا سيما سنة لم يثبت عن واحد من الصحابة خلافها.
-প্রাগুক্ত ২০/৭৬
তিনি আরো বলেন, ‘(হাত বাধার ক্ষেত্রে) ফরয-নফলে পার্থক্য করার কোনো যুক্তি নেই, যদিও কেউ বলে থাকেন যে, হাত বাঁধার নিয়মটি নফল নামাযের ক্ষেত্রে, ফরযের ক্ষেত্রে নয়। কারণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত নফল নামায ঘরে আদায় করতেন। সুতরাং এটা যদি তাঁর ঘরের নামাযের নিয়ম হত তাহলে তা বর্ণনা করতেন তাঁর স্ত্রীগণ। কিন্তু তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই বর্ণনা করেননি। যাঁরা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন তাঁরা তাঁর নিকট রাত্রিযাপন করতেন না এবং তাঁর ঘরেও প্রবেশ করতেন না। তাঁরা তো তা-ই বর্ণনা করেছেন, যা তাঁকে করতে দেখেছেন তাঁর পিছনে ফরয নামায আদায়ের সময়।’
وكذلك لا وجه للتفرقة بين النافلة والفريضة، ولو قال قائل إن ذلك في الفريضة دون النافلة، لأن أكثر ما كان يتنفل رسول الله صلى الله عليه وسلم في بيته ليلا، ولو فعل ذلك في بيته لنقل عنه ذلك أزواجه ولم يأت عنهن في ذلك شيء، ومعلوم أن الذين رووا عنه أنه كان يضع يمينه على يساره في صلاته لم يكونوا ممن يبيت عنده، ولا يلج بيته، وإنما حكوا عنه ما رأوا منه في صلاتهم خلفه في الفرائض، والله أعلم.
-প্রাগুক্ত ২০/৭৯
হাত কোথায় বাঁধা হবে
তো এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে হাত বাঁধতেন এবং সাহাবায়ে কেরামও হাত বাঁধতেন। এখন প্রশ্ন হল, কোথায় তাঁরা হাত বাঁধতেন? মৌখিক বর্ণনায় হাত বাঁধার মূল প্রসঙ্গ যত পরিষ্কারভাবে এসেছে কোথায় বাঁধতেন তা সেভাবে আসেনি। কেন আসেনি? আসার প্রয়োজন হয়নি। কারণ সবাই হাত বাঁধছেন। কোথায় বাঁধছেন তা সবার সামনেই পরিষ্কার। কাজেই তা মুখে বর্ণনা করার প্রয়োজন হয়নি। তো যে সুন্নাহ কর্মে ও অনুসরণে ব্যাপকভাবে রয়েছে তা মৌখিক বর্ণনায় সেভাবে নেই। এ ধরনের ক্ষেত্রে পরের যুগের লোকদের জন্য সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল ও ফতোয়া সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাঁরা ঐ সময়ের কর্ম ও অনুশীলনের প্রত্যক্ষদর্শী।
নামাযে হাত বাঁধার সুন্নাহর উপর সাহাবা-তাবেয়ীন কীভাবে আমল করেছেন-এ বিষয়ে ইমাম তিরমিযী রাহ. (২৭৯ হি.) বলেন-
والعمل على هذا عند أهل العلم من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم والتابعين ومن بعدهم، يرون أن يضع الرجل يمينه على شماله في الصلاة، ورأى بعضهم أن يضعهما فوق السرة، ورأى بعضهم أن يضعهما تحت السرة، وكل ذلك واسع عندهم.
অর্থাৎ আহলে ইলম সাহাবা-তাবেয়ীন ও তাঁদের পরবর্তী মনীষীগণ এই হাদীসের উপর (ডান হাত দ্বারা বাম হাত ধরা) আমল করেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত এই ছিল যে, নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতে হবে। তাঁদের কেউ নাভীর উপর হাত রাখার কথা বলতেন, আর কেউ নাভীর নিচে রাখাকে (অগ্রগণ্য) মনে করতেন। (তবে) দুটো নিয়মই তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল।-জামে তিরমিযী ১/৩৪
বস্ত্তত এটা হচ্ছে হাত বাঁধার হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা ও প্রায়োগিক পদ্ধতি। সাহাবা-তাবেয়ীনের যমানা থেকে এ দুটি নিয়মই চলে আসছে। পরবর্তীতে জুমহূর ফকীহ ও মুজতাহিদ ইমামগণ এ দুই নিয়ম গ্রহণ করেছেন। এভাবে উম্মাহর তাওয়ারুছ ও ব্যাপক চর্চার মাধ্যমে নামাযে হাত বাঁধার যে নিয়ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছেছে তা উল্লেখিত হাদীসসমূহেরই ব্যবহারিক রূপ। এ কারণে পরবর্তী যুগে বিচ্ছিন্ন কোনো নিয়ম আবিষ্কার করে তাকে হাদীস শরীফের উপর আরোপ করা হাদীসের তাহরীফ ও অপব্যাখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়।
নাভীর নিচে হাত বাঁধা
উপরোক্ত দুই নিয়মের মাঝে নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়মটি রেওয়ায়েতের বিচারে অগ্রগণ্য। ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. (২৩৮ হি.) বলেছেন, ‘নাভীর নিচে হাত বাঁধা রেওয়ায়েতের বিচারে অধিক শক্তিশালী এবং ভক্তি ও বিনয়ের অধিক নিকটবর্তী।’
تحت السرة أقوى في الحديث تحت السرة أقوى في الحديث وأقرب إلى التواضع
তাবেয়ী আবু মিজলায লাহিক ইবনে হুমাইদ রাহ. (মৃত্যু : ১০০ হি.-এর পর) নামাযে কোথায় হাত বাঁধবে-এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘ডান হাতের পাতা বাম হাতের পাতার পিঠের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৩
এই রেওয়ায়েতের সনদ সহীহ।
সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই -
حدثنا يزيد بن هارون قال : أخبرنا الحجاج بن حسان قال : سمعت أبا مجلز ـ أو سألته ـ قال : قلت كيف أصنع؟ قال : يضع باطن كف يمنيه على ظاهر كف شماله ويجعلها أسفل من السرة.
বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.ও (মৃত্যু : ৯৬ হি.) এই ফতোয়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬০
এই রেওয়ায়েতের সনদ হাসান। সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই-
حدثنا وكيع، عن ربيع، عن أبي معشر، عن إبراهيم قال : يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة.
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আশশাইবানী রাহ. (১৮৯ হি.) বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. নাভীর নিচে হাত বাঁধতেন। এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা এই নিয়মই অনুসরণ করি এবং এটিই (ইমাম) আবু হানীফার সিদ্ধান্ত।’-কিতাবুল আছার, হাদীস : ১২১
সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
قال محمد : أخبرنا الربيع بن صبيح، عن أبي معشر، عن إبراهيم : أنه كان يضع يده اليمنى على يده اليسرى تحت السرة. قال محمد : وبه نأخذ وهو قول أبي حنيفة رحمه الله. (كتاب الصلاة، باب الصلاة قاعدا والتعمد على شيء أو يصلي إلى سترة)
প্রসঙ্গত আগেই বলা হয়েছে যে, সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল হচ্ছে হাত বাঁধা সংক্রান্ত মারফূ হাদীসসমূহের ব্যবহারিক রূপ। এ কারণে মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান রাহ. ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ-এর সূত্রে হাত বাঁধার মরফূ হাদীস বর্ণনা করার পর এই নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন।
রেওয়ায়েতটি এই-
أخبرنا أبو حنيفة، عن حماد عن إبراهيم أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يعتمد بإحدى يديه على الأخرى في الصلاة، يتواضع لله تعالى. قال محمد : ويضع بطن كفه الأيمن على رسغه الأيسر، تحت السرة، فيكون الرسغ في وسط الكف، (كتاب الأثار، كتاب الصلاة، باب الصلاة قاعدا والتعمد على شيء أو يصلي إلى سترة)
ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে এক হাতের উপর অন্য হাত বাঁধতেন। এভাবে তিনি আল্লাহর সামনে বিনীত হতেন।’
(ইমাম) মুহাম্মাদ বলেন, ‘ডান হাতের তালু বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে, নাভীর নিচে; সুতরাং কব্জি থাকবে হাতের তালুর মাঝে।’-কিতাবুল আছার, হাদীস : ১২০
খাইরুল কুরূন ও পরবর্তী যুগের হাদীস ও ফিকহের বিখ্যাত ইমামগণও নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়ম গ্রহণ করেছেন।
ইমাম ইবনে কুদামা হাম্বলী রাহ. (৬২০ হি.) বলেন, নামাযে কোথায় হাত বাঁধা হবে এ বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা আছে। (ইমাম) আহমদ রাহ. থেকে বর্ণিত, দুই হাত নাভীর নিচে রাখবে। এটি (হযরত) আলী রা., আবু হুরায়রা রা., আবু মিজলায রাহ., ইবরাহীম নাখায়ী রাহ., (সুফিয়ান) ছাওরী রাহ., ইসহাক (ইবনে রাহুয়াহ) রাহ. থেকে বর্ণিত।-আলমুগনী ২/১৪১
উল্লেখ্য, ইবনে কুদামা হাম্বলী রাহ. ‘আলমুগনী’তে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ. থেকে মোট তিনটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন। তবে মূল মতন অর্থাৎ ‘মুখতাসারুল খিরাকী’তে শুধু নাভীর নিচে হাত বাঁধার কথাই বলা হয়েছে।
আরবী পাঠ-ويجعلهما ويجعلهما تحت سرته
মুখতাসারে’র ভূমিকায় লেখক ইমাম আবুল কাসিম উমার ইবনুল হুসাইন আলখিরাকী (৩৩৪ হি.) বলেছেন, ‘আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ.-এর মাযহাব অনুসারে (শরীয়তের মাসাইল) এই কিতাবে সংকলন করেছি।’
اختصرت هذا الكتاب ليقرب على متعلمه على مذهب أبي عبد الله أحمد بن محمد بن حنبل رضي الله عنه.
-আলমুগনী ১/৭-৮
শায়খ আবুল হুসাইন ইয়াহইয়া ইবনে আবুল খায়ের রাহ. (মৃত্যু ৫৫৮ হি.) বলেন, (ইমাম) আবু ইসহাক (আলমারওয়াযী) রাহ. বলেছেন, ‘এক হাত অন্য হাতের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’-আলবায়ান ফী মাযাহিবিল ইমামিশ শাফেয়ী ২/১৭৫
উল্লেখ্য, ইমাম আবু ইসহাক আলমারওয়াযী রাহ. শাফেয়ী মাযহাবের একজন প্রসিদ্ধ মনীষী। ইমাম শাফেয়ী রাহ. নাভীর উপর (বুকের নিচে) হাত বাঁধার নিয়ম গ্রহণ করলেও আবু ইসহাক মারওয়াযী নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়মকেই অগ্রগণ্য মনে করেছেন।
ইমাম নববী রাহ. (৬৭৬ হি.) বলেন, (ইমাম) আবু হানীফা, (সুফিয়ান) ছাওরী ও ইসহাক (ইবনে রাহুয়াহ) বলেন, ‘দুই হাত নাভীর নিচে রাখবে। আমাদের (শাফেয়ী মাযহাবের) মনীষীদের মধ্যে আবু ইসহাক আলমারওয়াযী রাহ.ও তা গ্রহণ করেছেন। আর ইবনুল মুনযির তা বর্ণনা করেছেন আবু হুরায়রা, (ইবরাহীম) নাখায়ী ও আবু মিজলায রাহ. থেকে।
তিনি আরো বলেন, ‘আলী ইবনে আবী তালিব রা. থেকে দুটি রেওয়ায়েত আছে : এক. নাভীর উপর হাত বাঁধা, দুই. নাভীর নিচে হাত বাঁধা।
-আলমাজমূ শরহুল মুহাযযাব ৪/৩৩০
উল্লেখ্য, জনৈক গবেষক একটি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. নামাযে বুকের উপর হাত বাঁধার অনুসারী ছিলেন। কিন্তু তার এই প্রয়াস যথার্থ নয়। কারণ হাদীস ও ফিকহের বিখ্যাত মনীষীগণ ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়ম গ্রহণ করেছেন। ইবনুল মুনযির রাহ. (৩১৮ হি.) স্বয়ং ইসহাক ইবনে রাহুয়াহর দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন যে, ‘নাভীর নিচে হাত বাঁধা রেওয়ায়েতের বিচারে শক্তিশালী এবং ভক্তি ও বিনয়ের অধিক নিকটবর্তী।’
সুতরাং এখানে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। আর যে রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, তিনি বুকের উপর হাত বাঁধতেন ঐ রেওয়ায়েতেও তা নিশ্চিতভাবে বলা হয়নি। বলা হয়েছে, তিনি বিতর নামাযে বুকের উপর হাত বাঁধতেন বা বুকের নিচে।
আরবী পাঠ-
كان إسحاق يوتر بنا … ويضع يديه على ثدييه أو تحت الثديين.
আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি যে, নাভীর নিচে ও নাভীর উপরে (বুকের নিচে) দু’ জায়গায় হাত বাঁধার নিয়মই সাহাবা-তাবেয়ীনের যুগে ছিল। তাঁরা একটিকে অগ্রগণ্য মনে করলেও কেউ অন্যটিকে অনুসরণযোগ্য মনে করতেন। তো ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. যদি নাভীর নিচে হাত বাঁধাকে অগ্রগণ্য মনে করার পর কখনো কখনো নাভীর উপরে হাত বাঁধার নিয়ম অনুসরণ করে থাকেন তাতে আশ্চর্যের কী আছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই একটি অস্পষ্ট রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে কোনো একটি বিচ্ছিন্ন মত কারো উপর আরোপ করার অবকাশ নেই। এটি বরং আরোপকারীর দলীল-প্রমাণের দৈন্য এবং শুযূয ও বিছিন্নতাকেই প্রকটভাবে প্রকাশিত করে দেয়।
মূল আলোচনায় ফিরে আসি। এ পর্যন্ত আমরা খাইরুল কুরূন ও পরবর্তী যুগের হাদীস ও ফিকহের বিখ্যাত ইমামগণের ফতোয়া ও আমল লক্ষ্য করেছি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সাহাবা-তাবেয়ীনের যমানায় নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়ম ব্যাপকভাবে অনুসৃত হয়েছে, যা হাত বাঁধার মরফূ হাদীসমূহেরই ব্যাখ্যা ও ব্যবহারিক রূপ।
নাভীর নিচে হাত বাঁধা যেমন সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল ও ফতোয়া দ্বারা প্রমাণিত তেমনি মারফূ রেওয়ায়েতের সূত্রেও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
নাভীর নিচে হাত বাঁধার মারফূ রেওয়ায়েত
১. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নীচে রেখেছেন।
সনদসহ রেওয়ায়েতের আরবী পাঠ এই-
حدثنا وكيع، عن موسى بن عمير، عن علقمة بن وائل بن حجر، عن أبيه قال : رأيت النبي صلى الله عليه وسلم يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة.
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৫১
এই বর্ণনার সনদ সহীহ। ইমাম কাসেম ইবনে কুতলূবুগা রাহ. (৮৭৯ হি.) বলেন-وهذا إسناد جيد এটি একটি উত্তম সনদ।-আততা’রীফু ওয়াল ইখবার রিতাখরীজি আহাদীছিল ইখতিয়ার-হাশিয়া শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা
উল্লেখ্য, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবার একাধিক পান্ডুলিপিতে হাদীসটি এভাবেই অর্থাৎ ةحة السرة (নাভীর নিচে) কথাটাসহ আছে। এর মধ্যে ইমাম মুরতাযা আযাবীদী-এর পান্ডুলিপি ও ইমাম আবিদ আসসিন্দী রাহ.-এর পান্ডুলিপি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইমাম কাসিম ইবনে কুতলূবুগা রাহ., আল্লামা আবদুল কাদির ইবনে আবু বকর আসসিদ্দীকি ও আল্লামা মুহাম্মাদ আকরাম সিন্ধীর পান্ডুলিপিতেও হাদীসটি এভাবে আছে। পক্ষান্তরে অন্য কিছু পান্ডুলিপিতে এই বর্ণনায় ةحة السرة (নাভীর নিচে) কথাটা নেই। এ কারণে ভারতবর্ষে মুদ্রিত মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবার পুরানো সংস্করণে এই হাদীসে ةحة السرة (নাভীর নিচে) অংশটি ছিল না। বর্তমানে মদীনা মুনাওয়ারার বিখ্যাত ফকীহ ও মুহাদ্দিস শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামার তাহকীক-সম্পাদনায় মুসান্নাফের যে মুদ্রণ পাঠক-গবেষকদের কাছে পৌঁছেছে তাতে হাদীসটি ةحة السرة (নাভীর নিচে) অংশসহ রয়েছে। কারণ শায়খের সামনে প্রথমোক্ত পান্ডুলিপি দুটিও ছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর শায়খ বলেন-
ومن نقل الحديث من إحدى النسخ الأربع خ. ظ. ن. ش. التي ليست فيها هذه الجملة : معذور في عدم إثبات هذه الزيادة، ولكنه ليس معذورا في نفي ورودها، ومن نقله عن إحدى النسختين اللتين فيهما هذه الزيادة هو معذور في إثباتها، بل واجب عليه ذلك ولا يجوز لها حذفها فعلى م التنابز والتنابذ؟
উৎসাহী আলিমগণ শায়খের পূর্ণ আলোচনা মুসান্নাফের টীকায় দেখে নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, যারা মুআম্মাল ইবনে ইসমাইলের মুনকার রেওয়ায়েত অবলীলায় গ্রহণ করেন তাদের তো এই রেওয়ায়েত গ্রহণে দ্বিধা থাকার কথা নয়। কারণ এক. এই রেওয়ায়েতের সনদ ইবনে খুযায়মার ঐ রেওয়ায়েতের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। দুই. ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে অন্য সূত্রে বর্ণিত কিছু রেওয়ায়েতেও এর বেশ সমর্থন পাওয়া যায়। ইমাম তবারানী রাহ. হুজর আবুল আম্বাসের সূত্রে ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর এই বিবরণ উল্লেখ করেছেন। তাতে আছে, ‘তিনি তার ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন এবং তা রাখলেন পেটের উপর।’
সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
حدثنا أبو مسلم الكشي ثنا حجاج بن نصير ثنا شعبة عن سلمة بن كهيل قال : سمعت حجرا أبا العنبس يحدث عن وائل الحضرمي أنه صلى مع رسول الله صلى الله عليه وسلم …، ثم وضع يده اليمنى على اليسرى وجعلها على بطنه.
-আলমুজামুল কাবীর ২২/৪৪, হাদীস : ১১০
তেমনি সুনানে দারেমী ও আলমু’জামুল কাবীর তবারানীতে আবদুল জাববার ইবনে ওয়াইলের সূত্রে ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর যে বিবরণ বর্ণিত হয়েছে, তাতে আছে, ‘তিনি ডান হাত বাম হাতের উপর কব্জির কাছে রাখলেন।’ সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
قال الإمام الدارمي في السنن (باب وضع اليمين على الشمال في الصلاة) : أخبرنا أبو نعيم، ثنا زهير، عن أبي إسحاق، عن عبد الجبار بن وائل، عن أبيه قال : رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم يضع يده اليمنى على اليسرى قريبا من الرسغ. انتهى
ورواه الطبراني بطريق عبدان بن أحمد، ثنا عمرو بن عثمان الحمصي، ثنا إسماعيل بن عياش، عن يونس بن أبي إسحاق عن أبي إسحاق به.
-সুনানে দারেমী ১/২২৮; আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ২২/২৫, হাদীস : ৫২
এই রেওয়ায়েতগুলো সামনে রাখলে বোঝা যায়, আসিম ইবনে কুলাইবের সূত্রে ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর যে বিবরণ যাইদা ইবনে কুদামা বর্ণনা করেছেন, যাতে ‘ডান হাত বাম হাতের পাতার পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর’ রাখার কথা আছে, তার অর্থ ‘বাহু বাহুর উপর’ রাখা নয়; বরং ডান হাতের পাতা এমনভাবে রাখা যে, তা বাম হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর কিছু অংশের উপর থাকে। এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব বুকের উপর হাত বাঁধার মতটি পর্যালোচনা করার সময় ইনশাআল্লাহ।
নাভীর নিচে হাত বাঁধার বিষয়ে জয়ীফ সনদে বর্ণিত কিছু রেওয়ায়েতও আছে। তবে রেওয়ায়েতগুলোর বিষয়বস্ত্ত উপরে বর্ণিত হাদীস, আছার ও আমলে মুতাওয়ারাছ দ্বারা সমর্থিত।
২. হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নাহ হচ্ছে নামাযে হাতের পাতা হাতের পাতার উপর নাভীর নিচে রাখা।’-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮৭৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৬
সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই-
حدثنا محمد بن محبوب، حدثنا حفص بن غياث، عن عبد الرحمن بن إسحاق، عن زياد بن زيد، عن أبي جحيفة أن عليا رضي الله عنه قال : السنة وضع الكف على الكف في الصلاة تحت السرة.
قال المزي في تحفة الأشراف ٨/٤٥٨، هذا الحديث في رواية ابي سعيد بن الأعرابي، وابن داسة وغير واحد عن أبي داود، ولم يذكره أبو القاسم.
৩. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘নামাযে হাতের পাতাসমূহ দ্বারা হাতের পাতাসমূহ নাভীর নীচে ধরা হবে।’
সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
حدثنا مسدد، حدثنا عبد الواحد بن زياد، عن عبد الرحمن بن إسحاق الكوفي، عن سيار أبي الحكم، عن أبي وائل قال : قال أبو هريرة رضي الله عنه : أخذ الأكف على الأكف في الصلاة تحت السرة.
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৮, তাহকীক : শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামাহ; তুহফাতুল আশরাফ, হাদীস : ১৩৪৯৪
এই দুই রেওয়ায়েতের সনদে আবদুর রহমান ইবনে ইসহাক নামক একজন রাবী আছেন। ইমাম তিরমিযী রাহ. তার সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে হাসান বলেছেন। দেখুন : জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৪৬২; আরো দেখুন : হাদীস ২৫২৭
আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে হাদীসটি (২৫২৬) বর্ণনা করার পর ইমাম তিরমিযী বলেন, কোনো কোনো মনীষী এই আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের স্মৃতিশক্তি সম্পর্কে সমালোচনা করেছেন। আরবী পাঠ-
ا هذا حديث غريب وقد تكلم بعض أهل العلم في عبد الرحمن هذا من قبل حفظه وهو كوفي، وعبد الرحمن بن إسحاق القرشي مديني وهو أثبت من هذا. انتهى
উল্লেখ্য, শায়খ আলবানী ও আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে শাওয়াহেদের (অন্যান্য বর্ণনার সমর্থনের) কারণে সিলসিলাতুস সহীহায় উল্লেখ করেছেন। দেখুন : সিলসিলাতুস সহীহা হাদিস
৪. আনাস রা. থেকে বর্ণিত, ‘তিনটি বিষয় (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) নবী-স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত: ইফতারে বিলম্ব না করা, সাহরী শেষ সময়ে খাওয়া এবং নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নিচে রাখা।’
ثلاث من أخلاق النبوة : تعجيل الأفظار، وتأخير السحور، ووضع اليد اليمنى على اليسرى في الصلاة تحت السرة.
-আলমুহাল্লা ৩/৩০; আলজাওহারুন নাকী ২/৩১
উল্লেখ্য, ইবনে হাযম রাহ. (৪৫৬ হি.) তাঁর নামাযে হাত বাঁধার আলোচনায় নাভীর নিচে হাত বাঁধার একটি মারফূ হাদীস ও একটি আছর উল্লেখ করেছেন। তবে সেগুলোর সনদ উল্লেখ করেননি।
পক্ষান্তরে এ আলোচনায় বুকের উপর হাত বাঁধার একটি রেওয়ায়েতও উল্লেখ করেননি, না সনদসহ না সনদ ছাড়া। তদ্রূপ হাত বাঁধার নিয়ম উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘মুস্তাহাব হল, নামাযী তার ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে।’
ويستحب أن يضع المصلي يده اليمنى على كوع يده اليسرى في الصلاة، في وقوفه كله فيها.
-আলমুহাল্লা ৩/২৯
সারসংক্ষেপ : নামাযে হাত বাঁধা সুন্নাহ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক সাহাবী তা বর্ণনা করেছেন। এই সুন্নাহর ব্যবহারিক রূপ খাইরুল কুরূনে কী ছিল তা সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল ও ফতোয়া এবং সে যুগ থেকে চলে আসা ‘আমলে মুতাওয়ারাছ’ দ্বারা প্রমাণিত, যা ইবাদত-বন্দেগীর সঠিক ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ও শক্তিশালী সূত্র। এ সূত্রে নামাযে হাত বাঁধার দু’টি নিয়ম পাওয়া যায় : নাভীর নিচে হাত বাঁধা ও নাভীর উপর (বুকের নীচে) হাত বাঁধা। দু’টো নিয়মই আহলে ইলম সাহাবা-তাবেয়ীনের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল, যা ইমাম তিরমিযী রাহ. জামে তিরমিযীতে বর্ণনা করেছেন। তবে রেওয়ায়েতের বিচারে নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়মটি অগ্রগণ্য। ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. তা পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন।
খাইরুল কুরূন ও পরবর্তী যুগের হাদীস-ফিকহের বড় বড় ইমাম এই নিয়ম গ্রহণ করেছেন। এঁদের মধ্যে ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম সুফিয়ান ছাওরী, ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান, ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল প্রমুখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উপরন্তু বেশ কিছু মরফূ হাদীসেও নাভীর নিচে হাত বাঁধার নিয়ম বর্ণিত হয়েছে।
সুতরাং এটি নামাযে হাত বাঁধার মাসনূন তরীকা। এ সম্পর্কে দ্বিধা ও সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই।
http://www.peaceinislam.com/anonymous/11881