Translate

বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮

ঠুনকো অজুহাতে কাউকে কাফের নাস্তিক ও মুরতাদ বলা

কথায় কথায় যাকে তাকে সামান্য অযুহাতে নাস্তিক মুরতাদ কাফের ফতোয়া দেয়া বা বলা একটি পর্যালোচনা।
         #এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া।

কুফরের ফতোয়া হলো পৃথিবীর সবচেয়ে সঙ্গীন মাসআলা। কাউকে কাফের, মুরতাদ, নাস্তিক ফতোয়া দেওয়া এতটা সহজ ছিলোনা পূর্ববর্তীদের নিকট কিন্তু বর্তমানে!

যতটা সহজ করে নিয়েছে ফেইসবুক আর অনলাইনের কথিত মূর্খ পন্ডিত আর আল্লামারা!

এখানে আমি শুধু হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব ‘ফতোয়া আলমগীরী’-থেকে একটি উদ্বৃতি পেশ করছি।সেখানে বলা হয়েছে:
ﺇﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺄَﻟَﺔِ ﻭُﺟُﻮﻩٌ ﺗُﻮﺟِﺐُ ﺍﻟْﻜُﻔْﺮَ ، ﻭَﻭَﺟْﻪٌ ﻭَﺍﺣِﺪٌ ﻳَﻤْﻨَﻊُ ، ﻓَﻌَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﻔْﺘِﻲ ﺃَﻥْ ﻳَﻤِﻴﻞَ ﺇﻟَﻰ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻮَﺟْﻪِ ﻛَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺨُﻠَﺎﺻَﺔِ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺯِﻳَّﺔِ ﺇﻟَّﺎ ﺇﺫَﺍ ﺻَﺮَّﺡَ ﺑِﺈِﺭَﺍﺩَﺓٍ ﺗُﻮﺟِﺐُ ﺍﻟْﻜُﻔْﺮَ ، ﻓَﻠَﺎ ﻳَﻨْﻔَﻌُﻪُ ﺍﻟﺘَّﺄْﻭِﻳﻞُ ﺣِﻴﻨَﺌِﺬٍ ﻛَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺒَﺤْﺮِ ﺍﻟﺮَّﺍﺋِﻖِ ،
, যদি কোন ব্যক্তি অস্পষ্ট কোন কথা বলে, যার নিরানব্বইটি ব্যাখ্যা হল কুফরী। কিন্তু একটি ব্যাখ্যা এমন রয়েছে, যা সঠিক অর্থাত যা কুফরী নয়  তাহলে মুফতীর জন্য জরুরী হল নিরানব্বইটি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ঐ একটি ব্যাখ্যা গ্রহণ করে তাকে কাফের ফতোয়া প্রদান থেকে বিরত থাকা। তবে শর্ত হল, ঐ ব্যক্তি তার কোন কথা বা কাজ দ্বারা যদি কোন নির্ধারণ না করে দেয়।(ফতোয়া আলমগীরী, ৩/৩১২)।অর্থাৎ ঐ ব্যক্তির স্পষ্ট কথা- লেখা বা কাজ দ্বারা কুফরী বুঝা গেল তখন কুফরী মোরতাদ বা নাস্তিক্যবাদের উপর ফাতাওয়া দেয়া যাবে।অন্যথায় নয়,

ফতোয়া আলমগীরীর ইবারত সামনে রাখুন আর বর্তমানে প্রতিদিন কয়েকবার কুফরী ফতোয়া দানকারী কথিত মুফতী বা ফেইজবুক অনলাইনে  প্রতি লক্ষ করুন, একজনের বক্তব্য যেখানে কুফরের লেশ নেই, সেটাকে টেনে একদম ঈমানহারা বানিয়ে ফেলছেন!
এটা একেবারেই গ্রহনযোগ্ নয়।
একজন মানুষকে কখন আপনি নাস্তিক, মুরতাদ, কাফের বলতে পারেন?

বিষয়টি লম্বা আলোচনার দাবী রাখে। প্রথমে এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদীস শুনুন। তিনি বলেন:
" ﺛﻼﺙ ﻣﻦ ﺃﺻﻞ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺍﻟﻜﻒ ﻋﻤﻦ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻻ ﻧﻜﻔﺮﻩ ﺑﺬﻧﺐ ﻭﻻ ﻧﺨﺮﺟﻪ ﻣﻦ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺑﻌﻤﻞ .....
অর্থাৎ তিন জিনিস হল ঈমানের মূল। সেই লোক সম্পর্কে বিরত থাকা যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়েছে। কোন গোনাহের কারণে আমরা তাকে কাফের বলবোনা এবং কোন আমলের কারণে ইসলাম থেকে বের করে দিবোনা। ( আবু দাউদ, ২৫৩২ শায়খ মুহি উদ্দীন আবদুল হামীদ তাহকীককৃত। সুনানে সাইদ বিন মানসুর, ২৩৬৭, মাকাতাবাতুশ শামেলা)

মানুষ ভুল করতেই পারে! হয়তো আপনার ইজতেহাদে মনে হতে পারে তিনি ভ্রান্ত! তাই বলে তাকে একেবারে ইসলামের গন্ডি থেকে বের করে দিয়ে প্রতিদিন ফতোয়া প্রদান!!

শরীয়তে যারা আহলে কিবলা, তাঁদেরকে ও ‘কাফের’ ফতোয়া প্রদান করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে দ্বীনের আত্যাবশ্যকীয় কোন বিষয় অস্বীকার করলে ভিন্ন কথা। যেমন কেউ সরাসরি ইসলামের পাচ বুনিয়াদের যে কোন একটিকে অস্বীকার করল,তেমনি ভাবে ইমানের সাতটি রুকুন থেকে কোন একটিকে অস্বীকার করল বা শরিয়তের এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ  কাজকে এমন ভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা যা কিনা অস্বীকার করার নামান্তর ইত্যাদি,  তখন ভিন্ন কথা।

এ প্রসঙ্গে কয়েকজন ইমামের বক্তব্য তুলে ধরছি।
মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন:
" ﺇﻋﻠﻢ ﺃﻥ ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺄﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﺗﻔﻘﻮﺍ ﻋﻠﻰ ﻣﺎﻫﻮ ﻣﻦ ﺿﺮﻭﺭﻳﺎﺕ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻛﺤﺪﻭﺙ ﺍﻟﻌﺎﻟﻢ ﻭﺣﺸﺮ ﺍﻷﺟﺴﺎﺩ ﻭﻋﻠﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺑﺎﻟﺠﺰﺋﻴﺎﺕ ﻭﻣﺎﺃﺷﺒﻪ ﺫﻟﻚ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺴﺎﺋﻞ ﺍﻟﻤﻬﻤﺎﺕ ﻓﻤﻦ ﻭﺍﻇﺐ ﻃﻮﻝ ﻋﻤﺮﻩ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻄﺎﻋﺎﺕ ﻭﺍﻟﻌﺒﺎﺩﺍﺕ ﻣﻊ ﺍﻋﺘﻘﺎﺩ ﻗﺪﻡ ﺍﻟﻌﺎﻟﻢ ﻭﻧﻔﻲ ﺍﻟﺤﺸﺮ ﺃﻭ ﻧﻔﻲ ﻋﻤﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺑﺎﻟﺠﺰﺋﻴﺎﺕ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﻭﺇﻥ ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺄﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻧﻪ ﻻ ﻳﻜﻔﺮ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﻮﺟﺪ ﺷﻴﺊ ﻣﻦ ﺍﻣﺎﺭﺍﺕ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﻭﻟﻢ ﻳﺼﺪﺭ ﻋﻨﻪ ﺷﻴﺊ ﻣﻦ ﻣﻮﺟﺒﺎﺗﻪ .
অর্থাৎ আহলে কিবলা দ্বারা উদ্দেশ্য হল যারা দ্বীনের আত্যাবশ্যকীয় বিষয়ে সকলের সাথে একমত।

যেমন, পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়া, কিয়ামতের দিন মানুষের আমলে হিসাব-নিকাশ সহ অন্যান্ন আকীদা। যে ব্যক্তি জীবনভর আল্লাহর আনুগত্য করল, কিন্তু সাথে সাথে আকীদা পোষণ করল পৃথবী চিরস্থায়ী, হিসাব-নিকাশ মিথ্যা। তাহলে সে আহলে কিবলা হবেনা।

আহলে কিবলা দ্বারা আহলুস সুন্নাহ এর নিকট উদ্দেশ্য হল: কুফর সংক্রান্ত কোন আকীদা সরাসরি প্রকাশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে কাফের বলা যাবেনা। (শারহু ফিকহিল আকবার, পৃষ্টা নং, ১৮৯)

আল্লামা ফাখরুল ইসলাম বাযদাওয়ী “কাশফুল আসতার” ইজমা সংক্রান্ত আলোচনায়, ইমাম সাইফুদ্দীন আমুদী এবং “গায়াতুত তাহকীক শরহে হুসামী”তে রয়েছে:
" ﻭﺇﻥ ﻏﻠﻰ ﻓﻴﻪ ﺣﺘﻲ ﻭﺟﺐ ﺇﻛﻔﺎﺭﻩ ﺑﻪ ﻻﻳﻌﺘﺒﺮ ﺧﻼﻓﻪ ﻭ ﻭﻓﺎﻗﻪ ﺃﻳﻀﺎ ﻟﻌﺪﻡ ﺩﺧﻮﻟﻪ ﻓﻲ ﻣﺴﻤﻰ ﺍﻷﻣﺔ ﺍﻟﻤﺸﻬﻮﺩ ﻟﻬﺎ ﺑﺎﻟﻌﺼﻤﺔ ﻭﺇﻥ ﺻﻠﻰ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﻭﺍﻋﺘﻘﺪ ﻧﻔﺴﻪ ﻣﺴﻠﻤﺎ ﻷﻥ ﺍﻷﻣﺔ ﻟﻴﺴﺖ ﻋﺒﺎﺭﺓ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺼﻠﻴﻦ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ . ﺑﻞ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﻭﻫﻮ ﻛﺎﻓﺮ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﺪﺭﻱ ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻓﺮ .
অর্থাৎ অর্থাৎ যদি সে কূপ্রবৃত্তির অনুসরণে বাড়াবাড়ি করে, যার কারণে কাফের হওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়,

তাহলে এর কারণে ইজমা এর মধ্যে তার বিরোধিতার কোন প্রভাব পড়বেনা। যদিও সে কিবলার দিকে মুখ করে নামায পড়ে। নিজেকে মুসলমান দাবী করে। কেননা উম্মত কেবলার দিকে মুখ করে নামায আদায়কারীর নাম নয়। বরং মুমীনদের নাম। আর সে হল কাফের। যদিও নিজেকে সে কাফের মনে না করে।(. আল ইহকাম ফি উসূলিল আহকাম, ১/২১৪ দারুল কুতুবিল আরাবী, বায়রুত)

আল্লামা ইবনে আবীদীন শামী রহ. ইবনুল হুমামের “তাহরুরীল উসূল”এর হাওয়ালায় লিখেন:
ﺇﺫ ﻻ ﺧﻼﻑ ﻓﻲ ﻛﻔﺮ ﺍﻟﻤﺨﺎﻟﻒ ﻓﻲ ﺿﺮﻭﺭﻳﺎﺕ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﻣﻦ ﺣﺪﻭﺙ ﺍﻟﻌﺎﻟﻢ ﻭﺣﺸﺮ ﺍﻷﺟﺴﺎﺩ ﻭﻧﻔﻲ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﺑﺎﻟﺠﺰﺋﻴﺎﺕ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﺍﻟﻤﻮﺍﻇﺐ ﻃﻮﻝ ﻋﻤﺮﻩ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻄﺎﻋﺎﺕ ﻛﻤﺎ ﻓﻲ ﺷﺮﺡ ﺍﻟﺘﺤﺮﻳﺮ
অর্থাৎ দ্বীনের আত্যাবশ্যকীয় বিষয়কে যারা অস্বীকার করবে, তাদের কুফরীর ব্যাপারে করো কোন মতানৈক্য নেই। যদিও সে আহলে কিবলা। সারা জীবন আল্লাহর আনুগত্য করছে।(. ফতোয়া শামী, ৪/২৪৩ দারুল কুতুবিল আরাবী।)
আল্লামা ইবনে নুজাইম মিশরী বলেন:
ﻓﺎﻟﺤﺎﺻﻞ ﺃﻥ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻋﺪﻡ ﺗﻜﻔﻴﺮ ﺃﺣﺪ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺨﺎﻟﻔﻴﻦ ﻓﻴﻤﺎ ﻟﻴﺲ ﻣﻦ ﺍﻷﺻﻮﻝ ﺍﻟﻤﻌﻠﻮﻣﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺿﺮﻭﺭﺓ ،
দ্বীনের মূল উসূল ব্যতিত যদি অন্য কোন বিষয়ে মতানৈক্য করে, তাহলে তাকে কাফের বলা হবেনা।( আল বাহরুর রায়েক, ৩/৪০১ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বায়রুত।)

ইলমে আকায়িদের প্রসিদ্ধ কিতাব “আল মাওয়াকিফ” এর মধ্যে রয়েছে:
" ﻻﻳﻜﻔﺮ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﺇﻻ ﻓﻴﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﺍﻧﻜﺎﺭ ﻣﺎ ﻋﻠﻢ ﻣﺠﻴﺌﻪ ﺑﻪ ﺑﺎﻟﻀﺮﻭﺭﺓ ﺃﻭ ﺍﺟﻤﻊ ﻋﻠﻴﻪ ﻛﺈﺳﺘﺤﻼﻝ ﺍﻟﻤﺤﺮﻣﺎﺕ .
অর্থাৎ আহলে কিবলাকে কাফের বলা হবেনা। তবে যে দ্বীনের আত্যাবশ্যকীয় বিষয়কে অস্বীকার করবে, যে বিষয়ে সকলে ঐক্যমত, তাহলে তাকে কাফের বলা হবে। যেমন কেউ হারামকে হালাল মনে করল। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, ১/১০৫)

যদি কেউ প্রকাশ্যে কথা লেখনি বক্ততা দ্বারা ইসলামের কোন মূল বিষয় গুলো থেকে একটিকে অস্বীকার করে তখন হুকুম দেয়া যাবে তার আবস্হার ভিত্তিতে কাফের মুরতাদ বা নাস্তিক ইত্যাদি।

তবে এগুলো বহুল চিন্তা ফিকির করেই করতে হয়। তাছাডা বিগ্গজনদের কাজ। এমন নয় যে আমার আপনার সাথে মতের কোন অমিল হওয়ার কারনে ঠুনকো অজুহাতে কাফের মুরতাদ বেইমান বা নাস্তিক বলে দিলাম এটা যেন না হয়। কারণ বীনা দলীলে আপনি কাউকে এমন অপবাদ দেয়ার পর যদি সত্যিই সে কাফের মরতাদ বা নাস্তিক হয়তো ভাল বেচে গেলেন
নাহয় এটা আপনার উপর বর্তাবে।

কারণ রসুল সাঃ কাউকে ঠুকনো অজুহাতে প্রমান ছাডা  কাফের বলতে সরাসরি নিষেধ করেছেন
কারণ রসুল সাঃ বলেন (মর্মটা এমন) যে  যদি কাউকে কাফের বলা হয় তখন যে কোন একজন এর উপযুক্ত, অর্থাৎ যদি সে বাস্তবে কাফের না হয় তাহলে যে ব্যক্তি কাফের বলেছেন তার উপর বর্তাবে বা পতিত হবে।অর্থাৎ সে মৃত্যুর পূর্বে হলেও কুফরি কাজ করেই মৃত্যু বরণ করবে। নাউযুবিল্লাহ
কত বড জগন্ম সতর্কবানী।

“কুল্লিয়াতে আবুল বাকা” এর মধ্যে রয়েছে:

" ﻓﻼ ﻧﻜﻔﺮ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﺄﺕ ﺑﻤﺎ ﻳﻮﺟﺐ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﻭﻫﺬﺍ ﻣﻦ ﻗﺒﻴﻞ ﻗﻮﻟﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻐﻔﺮ ﺍﻟﺬﻧﻮﺏ ﺟﻤﻴﻌﺎ ﻣﻊ ﺃﻥ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﻏﻴﺮ ﻣﻐﻔﻮﺭ ﻭﻣﺨﺘﺎﺭ ﺟﻤﻬﻮﺭ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺘﻜﻠﻤﻴﻦ ﻋﺪﻡ ﺇﻛﻔﺎﺭ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺒﺘﺪﻋﺔ ﺍﻟﻤﺄﻭﻟﺔ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺓ ﻟﻜﻮﻥ ﺍﻟﺘﺎﻭﻳﻞ ﺷﺒﻬﺔ ﻛﻤﺎ ﻓﻲ ﺧﺰﺍﻧﺔ ﺍﻟﺠﺮﺟﺎﻧﻲ ﻭﺍﻟﻤﺤﻴﻂ ﺍﻟﺒﺮﻫﺎﻧﻲ ﻭﺃﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﺮﺍﺯﻱ ﻭﺃﺻﻮﻝ ﺍﻟﺒﺰﺩﻭﻱ . ﻭﺭﺍﻩ ﺍﻟﻜﺮﺧﻲ ﻭﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﺍﻟﺸﻬﻴﺪ ﻋﻦ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺃﺑﻲ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺍﻟﺠﺮﺟﺎﻧﻲ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﺑﻦ ﺯﻳﺎﺩ ﻭﺷﺎﺭﺡ ﺍﻟﻤﻮﺍﻗﻒ ﻭﺍﻟﻤﻘﺎﺻﺪ ﻭﻷﻣﺪﻱ ﻋﻦ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲ ﻭﺍﻷﺷﻌﺮﻱ ﻻ ﻣﻄﻠﻘﺎ .
অর্থাৎ আমরা আহলে কিবলাকে কাফের বলবোনা। যতক্ষণ পর্যন্দ তাদের থেকে কুফরকে ওয়াজিবকারী কোন কাজ প্রকাশ পাবেনা। এটার উদাহরণ হল: যেমন আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন “আল্লাহ সমস্ত গোনাহকে মাফ করে দেন”্ অতচ তিনি কুফরকে মাফ করেননা। আর আহলে সুন্নাহ এর অধিকাংশ ইমামদের বক্তব্য হল: যে বেদয়াতী দ্বীনের আত্যাবশ্যকীয় বিষয় ছাড়া অন্য কোথাও তাবীল করবে, তাকে কাফের বলা হবেনা।
যেমনটা আছে !খিজানাতুল জুরজানী” ও “মুহিতুল বুরহানী”, আহকামে রাযী” এবং “উসূলে বাযদাভী”তে।

আর ইমাম কারখী এবং হাকিম শাহীদ রহ. ইমাম আবু হানীফা থেকে এমনটা রেওয়ায়াত করেছেন। আর জুরজানী হাসান ইবনে জিয়াদ থেকে এবং আমুদী, মাওয়াকিফের ব্যাখ্যাকার ইমাম শাফেয়ী এবং আশআরী রহ. থেকে এমনটি রেওয়ায়াত করেছেন।( কুল্লিয়াতু আবুল বাকা, পৃষ্টা নং, ৫৫৪)

শরীয়তে একজন ‘আহলে কিবলা’-কে কাফের, মুরতাদ ফতোয়া দিতে কতটুকু সতর্কতা অবলম্বন করেছে! নফসের সাথে জিহাদ বড় জিহাদ, শালিনতার সাথে নিজেকে আবৃত রাখলে হিজাবের প্রয়েজান নেই এমন বক্তব্য কেউ দিলে আপনার ইলম অনুযায়ী তাঁর পর্যালোচনা করার অধিকার অবশ্যই রয়েছে! হিজাবের বিষয়টি অন্তত ভাইয়েরা আল্লামা যাহিদ কাউসারী রহ. এর লিখিত মাকালা ‘হিজাবুল মারআহ’ এবং আবু মুয়াজ তারেক বিন আউযুল্লাহ এর কিতাব " ﺍﻟﻨﻘﺪ ﺍﻟﺒﻨﺎﺀ ﻟﺤﺪﻳﺚ ﺃﺳﻤﺎﺀ ﻓﻲ ﻛﺸﻒ ﺍﻟﻮﺟﻪ ﻭﺍﻟﻜﻔﻴﻦ ﻟﻠﻨﺴﺎﺀ" বইটি পড়ার অনুরোধ থাকলো।

একজনের কার্যকলাপ আপনার কাছে ভালো না লাগতে পারে! তাকে মনে হতে পারে গাদ্দার! আপনি থাকে ইচ্ছামত গালিগালাজ করেন! কোন সমস্যা নাই! কিন্তু কাউকে নাস্তিক, মুরতাদ ফতোয়া দেওয়ার আগে অন্তত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই হাদীসটি মনে রাখবেন:
ﺃﺟﺮﺃﻛﻢ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻔﺘﻴﺎ ﺃﺟﺮﺃﻛﻢ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺎﺭ
অর্থাৎ যারা দ্রুত ফতোয়া দেয়, তারা দ্রুত জাহান্নামে যাবে। (সুনানে দারেমী, হাদীস নং ১৫৭)

এখানে একটা কথা খেয়াল করুন যারা আলেম মুফতি গবেষক তাদের ফতোয়া দিতে খুব সতর্কতা অভলম্বন করে ফতোয়া দিতে বলা হচ্ছে নাহয় জাহান্নামের ভয় দেখানো হচ্ছে আর যারা ফেইজবুকে অনলাইনে অপলাইনে মতের অমিল হওয়ার কারণে যাকে তাকে কাফের নাস্তিক শব্দ ব্যবহার করেন তাদের ব্যপারে কি হবে একটু চিন্তার বিষয়।

ফেইসবুকে ইদানিং কিছু সেলিব্রেটি এ রকম দাঁত গজিয়েছেন! যারা সর্বক্ষণ অন্যের সমালোচনা এবং পর্যালোচনা নিয়ে ব্যস্থ! কিন্তু যখন তাকে অথবা তাঁর দলের কাউকে নিয়ে কেউ লেখে, তখন তিনি চেতনার ফেরি করে বেড়ান! তখন নসীহত করেন আমাদের মুখে বড়দের সমালোচনা মানায়না! আল্লাহ তুমি আমাদের রক্ষা করো।

আমরা অন্যের মতকে কেন যেন একেবারেই সহয্য করতে পারছিনা।অপরকে ঠুনকো অযুহাতে কাফের ফাতাওয়া দিয়ে বসি!

আল্লারহ রসুল এ পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন  কাফেরদের মুসলিম বানানের জন্য

আর আমরা মুসলিমদের ঠুনকো অযুহাতে কাফের বানাচ্ছি!
হায় আফসোস!!

বর্তমান সমাজে কিছু কথিত নামধারী সুন্নিতো  তারা ঠিকাধারী নিয়েছেন মানুষকে কাফের বানানোর জন্য। যখন তখন যাকে তাকে কাফের  ফতোয়া দিতে ঠোটে বাজেনা।গালীগালাজ তো লেগেই থাকে মনে হবে যেন তাদের  মুখটা যেন গালীগালাজের পচা নর্দমা।
অাল্লাহ হেদায়েত করুক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন