শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

হেজবুত তাওহীদ এ যুগের ভয়াবহ নব্য ফেতনা

হেজবুত তাওহীদ এ সময়ের এক ভয়াবহ নব্য ফেতনা।

অনেক সাধারণ মুসলমান এদের ফেরে পড়ে ঈমান হারাচ্ছে, অথচ আমরা এ ব্যাপারে একেবারেই বে-খবর।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ধারাবাহিকভাবে পড়ুন।
নিজে পড়ুন অপরকে পড়ার প্রতি উতসাহিত করুন।

লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করে সঠিক দ্বীন মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছানোর কাজে দ্বীনি কাফেলায় অংশ গ্রহণ করুন।
ুও
রচনায়ঃ

মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান (মধুপুরী)
সহকারী মুফতীঃ
উচ্চতর ফিক্বাহ ও ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ।
জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়ানানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

সময়ের ভয়াবহ ফেতনা
বায়াজীদ খান পন্নীর নতুন ইসলাম
#####    প্রথম পর্ব   ########

প্রাথমিক পরিচিতি

ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান আমল হরণকারী এক সর্বগ্রাসী ফেতনা ও সংগঠন সম্পর্কে কলম উঠানোর মনস্ত করেছি। এটাকে একেবারে নতুনও বলা যায়না। বাংলাদেশে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে ১৯৯৫ সাল থেকে। দীর্ঘ ১৯ বছর যাবৎ তাদের দাওয়াত প্রচারনা ও নানাবিধ কার্যক্রম অব্যাহত। সংগঠনটির নাম ‘‘হেযবুত তওহীদ’’।

অনেকেই হেযবুত তওহীদ ও হেযবুত তাহরীরকে একই সংগঠন মনে করতে পারে, তাই প্রথমেই স্পষ্ট করে নিচ্ছি যে দুটি এক নয় বরং এ-দুটি সম্পূর্ণ পৃথক দুটি সংগঠন ও মতবাদ। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিকট পাঠানু এক চিঠিতে হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা জনাব বায়জীদ খান পন্নী লিখেন- ‘‘কিছুদিন যাবৎ আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, আমাদের ‘‘হেযবুত তওহীদ’’ কে অনেক কর্মকর্তা নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘‘হিযবুত তাহরীর’’ বলে ভুল করছেন, এবং গ্রেফতার করে হয়রানী করছেন’’।
যামানার এমামের পত্রাবলী- পৃঃ ৭৪

তবে ‘‘ হেযবুত তওহীদ’’ ও হিযবুত তাহরীর সংগঠন দুটি পৃথক হলেও উভয়ের কর্মপদ্ধতী কার্যক্রম প্রায় একই রকম। তাদের মৌলিক সিকড় একই সুত্রে গাথা। সাত-আট বছর পূর্বে উলামায়ে কেরাম হিযবুত তাহরীর নিয়ে সামান্য মন্তব্য ও কিছুটা বাদ-প্রতিবাদও করেছিল। রাষ্ট্রীয়ভাবে এ সংগটনটিকে জঙ্গি সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রশাসনিক বাধার মুখে তাদের কার্যক্রম ও তৎপরতা মৃতপ্রায় হওয়ায় বর্তমানে এদের নিয়ে তেমন কোন আলোচনাও নেই। কিন্তু‘‘ হেযবুত তওহীদ’’ এর কার্যক্রম বরাবরী বাধাহীন ভাবে অব্যাহত। পরিতাপের কথা হল, আমাদের হক্বানী উলামায়ে কেরামদের মধ্য থেকে লিখনী, বক্তৃতা বা অন্য কোন মাধমে তাদের ব্যাপারে প্রতিবাদী কোন ভূমিকা দৃষ্টিগোচর হয়নি। আমাদের অনেকেরই হয়ত এ ব্যপারে তেমন কিছু জানা নেই।
তৎপরতা ও কর্মপদ্ধতী
আজ থেকে প্রায় ছয় সাত বছর আগের কথা। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন দেয়ালে হিযবুত তওহীদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন নজরে পড়ত। তাদের কয়েকটি লিফলেটও হস্তগত হয়। তখন থেকেই আমার মনে এ ব্যপারে জানার আগ্রহ সৃস্টি হয়।

১৯৯৮ সালে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা জনাব বায়জীদ খান পন্নীর লিখা ‘‘দাজ্জাল? ইহুদী খ্রষ্টান সভ্যতা!’’ নামক একটি বই প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের বিভাগীয় ও প্রসিদ্ধ নগরী সমূহের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, স্থাপনা, বাস, ট্রেন, লঞ্চ সহ বিভিন্ন গণপরিবহনগুলোতে লিফলেট ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বইটির ব্যপারে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। তাদের দাবী মত বইটি ২০০৮ সালের সর্বাধিক প্রচারিত ও সব থেকে বেশি বিক্রিত বই হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। অনেকেই হয়ত বইটির কথা শুনতে পারেন। এ বইটিতে হিযবুত তওহীদের পরিচিতি ও চিন্তাধারা নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়। বিশেষতঃ বইটি দাজ্জাল সম্পর্কে তাদের তিক্ষè ধারণা মানুষের কাছে উপস্থাপনের জন্য লিখা হয়েছে। দাজ্জাল সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বীদা হলঃ কিয়ামতের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে শেষ যমানায়, আল্লাহার পক্ষ থেকে প্রচুর ক্ষমতা প্রাপ্ত একজন মানুষের আবির্ভাব হবে। ইরাক ও শাম দেশের মাঝখানে তার অভূথ্যান হবে। সে ইয়াহুদী বংশদ্ভূত হবে। সে খাটো দেহের অধিকারী, চুল কোঁকড়া ও লাল বর্ণের হবে। তার এক চোখ কানা আর এক চোখ টেরা থাকবে। তার কপালে লেখা থাকবে ك ف ر অর্থাৎ কাফের। সকল মুসলমান সে লেখা পড়তে পারবে। প্রথমে সে নবুয়াতের দাবী করবে, তারপর ইস্ফাহান যাবে, সেখানে ৭০ হাজার ইয়াহুদী তার অনুগামী হবে। তখন সে খোদায়ী দাবী করবে। লোকেরা চাইলে সে বৃষ্টি বর্ষণ করে দেখাবে। মৃতকে পর্যন্ত জীবিত করে দেখাবে। কিত্রিম বেহেশত দোযখ তার সঙ্গে থাকবে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার বেহেশত হবে দোযখ আর তার দোযখ হবে বেহেশত। সে আরও অনেক অলৌকিক কান্ড দেখাতে পারবে। যা দেখে কাঁচা ঈমানের লোকেরা তার দলভুক্ত হয়ে জাহান্নামী হয়ে যাবে । এ সব হবে হযরত মাহদী আঃ এর সময়। ইত্যবসরে এক দিন ফজরের নামাযের একামত হত্তয়ার পর হযরত ঈসা আঃ আকাশ থেকে ফেরেশতার উপর ভর করে অবতরণ করবে। হযরত মাহদী উক্ত নামাযের ইমামতি করবেন। নামাযের পর হযরত ঈসা আঃ হাতে ছোট একটা বর্শা নিয়ে বের হবেন। তাকে দেখেই দাজ্জাল পলায়ন করতে আরম্ভ করবে। হযরত ঈসা আঃ তার  পশ্চাদ্ধবন করবেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা বাইতুল মুকাদ্দাসের পাশে ‘‘বাবেলুদ” নামক স্থানে গিয়ে তাকে নাগালে পেয়ে বর্শার আঘাতে হত্যা করবেন।

দাজ্জাল সম্বন্ধে মুসলমানদের এ আক্বীদা অসংখ্য বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ও মুসলিম উম্মাহর সর্ব সম্মত আক্বীদাকে সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করেছে বায়জীদ খান পন্নী। সে তার ‘‘দাজ্জাল? ইহুদী খৃষ্টান সভ্যতা” নামক গ্রন্থটিতে কুরআন হাদীসের স্পষ্ট অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে তা প্রমাণ করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে। পন্নী ভক্ত হেযবুত তওহীদ মতাদর্শীদের ধারণা হলঃ দাজ্জাল সম্বন্ধে মুসলমানগণ যে আক্বীদা পোষণ করে থাকে তা সম্পূর্ণ ভুল। প্রকৃতপক্ষে হাদীসে যে দাজ্জালের কথা উল্লেখ রয়েছে তা হল, বর্তমান ইয়াহুদী খৃষ্টান সভ্যতা। আর এ দাজ্জালকে সর্ব প্রথম সনাক্ত করতে  সক্ষম হয়েছে জনাব বায়াজীদ খান পন্নী, তাই তারা জনাব পন্নী সাহেবকে ‘‘দাজ্জাল সনাক্তকারী” লক্ববে ভূষিত করে থাকে।

বইটি প্রকাশের পর মনে হল, এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। যে কোন মূল্যে এ ফেতনার মুকাবেলায় অবশ্যই কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে কয়েক জনের সাথে পরামর্শও করলাম। কেউ কেউ বললেন- ছোট খাটো এসব বিষয় নিয়ে বেশি মাতা-মাতীতে অনেক সময় লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়। এসব ছোট ছোট বিষয়ে বাদ-প্রতিবাদ অনেক সময় তাদের প্রচারনার ও পরিচিতির কারণ হয়। এ ভেবে কিছু চুপ থাকি পরবর্তীতে মনে হল বিষয় আর ক্ষুদ্র পরিসরে সীমাবদ্ধ নেই।

গত এক বছর আগের কথা, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম এর  মুরাদপুর থেকে বাসে উঠেছি ফটিকছড়ির নাজিরহাট যাওয়ার জন্য। আচানক শার্ট-প্যান্ট পরিহিত এক ভদ্রলোক বাঁসে  আরোহণ করল।তার কাধে ঝুলানো একটি ব্যাগ, হাতে কিছু হ্যান্ডবিল। দেশের পরিস্থিতি ও বর্তমান বিশ্বে মুসলমানদের অধঃপতনের বিষয়ে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা ছুড়ে দিল। কথাগুলি খুব গোছালো, ভাষাও বেশ প্রাঞ্জল। বক্তৃতার খুলাসা হলঃ বিশ্ব মুসলিম অধঃপতনের এক মাত্র কারণ মুসলমানগণ প্রকৃত ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত নেই। জনাব বায়াজীদ খান পন্নী সাহেব এক নতুন সভ্যতার ডাক দিয়েছেন, এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সর্বসম্মত অংশগ্রহণী এক মাত্র উদ্যাত সংকট থেকে উত্তরণের পথ ও পন্থা হতে পারে। বক্তৃতা দিতে দিতে হ্যান্ডবিল বিতরণ করে বাস থেকে নেমে গেল। যাত্রীগণ অন্য সব হকারদের লেকচারের মতই-তার বক্তৃতার মূল্যায়ন করল। অনেক যাত্রীদের তার দেয়া লিফলেট বেশ মনোযাগের সাথে পাঠ করতে দেখলাম। আমি অপলক দৃষ্টিতে দৃশ্যটি অবলোকন করলাম ও তার থেকে গ্রহণকৃত হ্যান্ডবিলটি অধ্যয়ন করতে লাগলাম।

পূর্বেও বেশ কয়েক বার দেশের পত্র, নামে ‘‘হেযবুত তওহীদ’’ কর্তৃক প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা হস্তগত হয়েছে, সেখানেও তাদের কয়েকটি প্রবন্ধ-নিবন্ধ অধ্যয়ন করার সুুযোগ হয়েছে। অন্যসব লিফলেট ও প্রবন্ধের মতই এতেও অনেক  সুচারুভাবে দাজ্জাল সম্বন্ধে তাদের তিক্ত আক্বীদা ও রং ডং দিয়ে মতবাদটির চিন্তা-চেতনা উপস্থাপন করে বর্তমান প্রচলিত ইসলামকে প্রকৃত ইসলাম নয় বলে পন্নীর নব্য ইসলামের দিকে  দাওয়াত দেয়া হয়েছে। অন্যগুলির মত এখানেও নিচে এক সাথে কয়েকটি মুঠো ফোনের নাম্বার দেয়া আছে। তাদের কর্মপদ্ধতি হলঃ হ্যান্ডবিল ও প্রবন্ধের মর্ম ও ভাষা হয় যথারীতি তাক লাগিয়ে দেয়ার মত স্বভাবিকই যে কোন ব্যক্তি তা অধ্যয়ন করে বিমোহিত, বিশ্বাসিত বা বিস্মিত, বিভ্রম বা বিভ্রান্ত হয়ে নাম্বার গুলিতে কল করতে পারে, কল করার সাথে সাথে তারা নাম্বারটি এন্ট্রি করে রাখে ও নিয়ম তান্ত্রিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাকে তাদের দলে টানার চেষ্টা করে। নাম্বার গুলিতে যথারীতি যোগাযোগ করেই আমি বিষয়টির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি।

প্রায় দু’মাস আগের কথা, আমার সম্মানীত উস্তাদ  জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়ার প্রধান মুফতী, মুহাম্মদ হুসাইন সাহেব দাঃ বাঃ আমাকে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে বললেন- বগুড়া থেকে এক জন কলেজ পডুয়া ছাত্র কল করে দাজ্জাল সম্বন্ধে কয়েকটি হাদীস জানতে চেয়েছে, তুমি নাম্বারটিতে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে কয়েকটি হাদীস সংগ্রহ করে বলে দাও। আমি তার সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম সে বর্তমানে কলেজে পড়লেও কওমী মাদ্রাসার বেশ কয়েকটি ক্লাশ সে অধ্যয়ন করেছে। বর্তমানে তার আশে-পাশে কিশ কিছু লোক দাজ্জাল সম্বন্ধে মুসলমানদের আক্বীদা বিশ্বাস পরিপন্থি প্রচারনা চালাচ্ছে। তার সাথে কথা বলে আমি নিশ্চিত হলাম, এরা হেযবুত তওহীদের প্ররোচনার স্বীকার এর পর আমি তাকে হেযবুত তওহীদ মতাদর্শ ও বিশুদ্ধ হাদীসের আলোকে দাজ্জাল সম্বন্ধে সু-স্পষ্ট ধারণা প্রদান করলাম।

প্রথমে মনে করতাম। যেহেতু জনাব পন্নী টাঙ্গাইলের লোক তাই তাদের এ তৎপরতা ঢাকা ও টাঙ্গাইলের মাঝেই সীমাবদ্ধ, এখন দেখছি না! দেশ জুড়ে তাদের এ অপতৎপরতা এক ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে। এ ভ্রান্ত মতাদর্শ বিস্তারের জন্য স্বয়ং বায়েজিদ খান পন্নী অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করেছে। যার মাঝে উল্লেখযোগ্য হলঃ-
(১) এসলামের প্রকৃত রূপরেখা
(২) এসলাম শুধু নাম থাকবে
)৩) দাজ্জাল? ইহুদী খৃষ্টান সভ্যতা
(৪) আল্লাহর মো’জেজা ও হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা
)৫) এসলামের প্রকৃত সালাহ
(৬) মহা-সত্যের আহ্বান
)৭) এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব
)৮) যুগ সন্ধিক্ষনে আমরা
)৯) বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ
)১০) হেযবুত তওহীদের লক্ষ ও উদ্দেশ্য
)১১) যামানার এমামের পত্রাবলী
)১২) জেহাদ, কেতাল, সন্ত্রাস
)১৩) আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই।

এছাড়াও তারা নির্মাণ করেছে তাদের দাবী মত তথাকথিত দাজ্জাল এর স্বরুপ ও দাজ্জাল বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখা, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সম্মান ও পুরস্কার শির্ষক এবং ইসলাম ও উলামায়ে কেরামকে হেয় করে বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ফিল্ম। রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রাম সহ দেশের প্রসিদ্ধ নগরী সমূহে রয়েছে তাদের নিজস্ব, সতন্ত্র প্রকাশন, লাইব্রেরী ও পুস্তক বিতান।

এ সব কিছু ছাড়াও তাদের বর্তমান অন্যতম প্রচার মাধ্যম হলঃ তাদের নিয়মিত প্রকাশনা দৈনিক ‘‘দেশের পত্র’’ নামক পত্রিকা। এ পত্রিকাটি দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে, এতে এক দু’টি জাতীয় সংবাদ ছাড়া বাকী সবই হল তাদের সাংগঠনীক সংবাদ, হেযবুত তওহীদের মতাদর্শ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও ইসলাম বিরোধী বিভিন্ন লিখা। যা দেখে যে কোন ধরণের মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারে।

এই তো মাত্র কয়েক দিক আগের কথা, গত ২৮শে ফেব্র“য়ারী শুক্রবার জুমার নামাযের পর, আমাদের গ্রামের এক নবীন আলেম মাওঃ নাছীর  আমাকে দেখে অতিশয় আন্দীত হয়ে বলল- আপনা সাথে সাক্ষাৎ হয়ে ভালই হয়েছে। গত দুু’দিন আগে ‘‘দেশের পত্র’’ নামক একটি পত্রিকা দেখে আমি হতবাক। পত্রিকাটি পড়ার পর মনে করলাম, বিষয়টি নিয়ে  আপনার সাথে কথা বলা দরকার, ধর্মীয় ব্যাপারে কিসব আজগবী কথা-বার্তা। আমি তাকে এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত ধারণা দিলাম। সব শুনে সে আমাকে বলল- আমার মনে হয় এ ফেতনা অতী অল্প সময়ের ব্যবধানে এক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে।

গত কয়েক দিনের ‘‘দেশের পত্র’’ সংগ্রহ করে আমিও বিস্মিত হয়েছি। ইসলাম নিয়ে কিসব বিভ্রান্তীমূলক লেখা-লেখি। এসব লিখাকে প্রথম ও শেষ পৃষ্টার শিরেুানামও করা হয়। হেযবুত তওহীদ মতাবলম্বীদের ধারণা হল, রাসূল স. যে ইসলাম নিয়ে দুনিয়াতে আগমন করেছেন শত শত বছরের মিথ্যা ফতোয়ার ধামা-চাপা পড়ে বিকৃত হয়ে সে ইসলাম কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছে। আর হারিয়ে যাওয়া সে ইসলামকে পূনরায় আবিস্কার করেছেন জনাব বায়াজীদ খান পন্নী। বর্তমান বিশ্বের সমস্ত মুসলমান যে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত তা প্রকৃত ইসলাম নয়, তাই তো তারা  তাদের মতাদর্শ অবলম্বী ছাড়া দল মত নির্বিশেষে বর্তমান বিশ্বের সমস্ত¬ মুসলমানদের যথারীতি কাফের ও মুশরীক বলে থাকে। (নাইযু-বিল্লাহ) এজন্য তাদের অপ-প্রচারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হল আমাদের প্রাণের ধর্ম ইসলাম ও ইসলামে অতন্দ্র প্রহরী, নিবেদিত প্রাণ উলামায়ে কেরাম। তাদের লেখা-লেখি ও প্রচারনায় ইসলাম ও উলামায়ে কেরামের বিষেদগার, মানুষদের পন্নীর নব্য ইসলামের দিকে দীক্ষিত করার বিষয়টিই সর্বাধিক প্রাধান্য পায়।
উদাহরণ সরূপ বলা যায়ঃ গত ২৬ ফেব্র“য়ারী ২১৪ ইং বুধবার তাদের ‘‘দেশের প্রত্র’’ পত্রিকার প্রথম পৃষ্টার প্রথম শিরুনাম করেছে ‘‘কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া প্রকৃত এসলাম ফিরিয়ে আনলেন যে মহা-মানব” এ লেখাটিতে বায়াজীদ খান পন্নীর জীবনী আলোচনা করে অত্যান্ত কৌশলী পদ্ধতিতে পাঠকদেরকে তার নব্য ইসলামের দিকে দীক্ষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
একই ভাবে এর পর দিন ২৭ ফেব্র“য়ারী ২০১৪ ইং বৃহস্পতিবার পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্টার প্রথম শিরোনাম করেছে। ‘‘ধর্ম ব্যবসায়ীরা যেভাবে ধর্মকে বিকৃত করছে’’। লেখাটি লেখেছে রাকীব আল হাসান নামের জনৈক হেযবুত তওহীদ সদস্য। হাই লাইনের নিচে হাজার হাজার মুসল্লির নামাজ রত অবস্থায় উপর থেকে তুলা বাইতুল্লাহ শরীফের ছবি দ্বারা প্রচ্ছদ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রচ্ছদটির নিচে ভোল্ড করা বড় সাইজের অক্ষরে লিখা ‘‘ঈদের নামায, জানাযার নামায, তারাবির নামায, গরু কোরবানী, মিলাদ-মাহফিল ইত্যাদি নিরাপদ ধর্মীয় কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে চলছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের রমরমা ধর্মবাণিজ্য, অথচ জাতীয় ভাবে  আল্লাহর হুকুমের পরিবর্তে মানা হচ্ছে মানুষের তৈরি বিধান যা পরিস্কার শিরক। মোট কথা হলঃ ধর্মব্যবসায়ীগণ এসলামের এই কাজগুলির গুরুত্বের উলট পালট করছে ধর্মব্যবসার স্বার্থে’’। এরপর পথম পৃষ্টায় লেখাটির কিছু অংশ উল্লেখ করে অবশিষ্টাংশ বিতরের ৭নং পৃষ্টায় বিস্তারিত বড় প্রবন্ধ আকারে উল্লেখ করেছে। লেখাটিতে ইসলামের গুরুতপূর্ণ কিছু ইবাদত ও আহকামকে হেয়-প্রতিপন্ন করার সাথে সাথে উম্মতের হক্কানী উলামায়ে কেরামকে ধর্মব্যবসায়ী ও ধর্ম বিকৃতকারী হিসাবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
এটা তো মাত্র দু’দিনের পত্রিকা থেকে ক্ষুদ্র দু’টি নমুনা পেশ করা হল, এভাবে তারা প্রতিদিনের পত্রিকাতেই এ ধরণের সংবাদ ও ইসলামের নামে অসংখ্য ইসলাম বিরোধী প্রবন্ধ উপস্থাপন করে থাকে।
ইদানীং তারা তাদের এ ‘‘দেশের পত্র’’ পত্রিকা কেন্দ্রীক এক সাংঘাতিক ভয়াবহ অপতৎপরতা অরম্ভ করেছে। ইসলাম ও হক্কানী উলামায়ে কেরামদের নিয়ে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করার জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার নামে ‘‘দেশের পত্র’’ পত্রিকার উদ্দ্যেগে দেশ জুড়ে সেমিনার, জনসভা, প্রমান্যচিত্র প্রদর্শনী সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে যাচ্ছে। ‘‘দেশের পত্র’’ পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্টার ডান পাশে একেবারে নীচে একটি বিজ্ঞাপণ দেয়া থাকে গোলাকার হৃদয় গ্রাহী ডিজাইনে। বিজ্ঞাপণটির উপরে লেখা থাকে ‘‘জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে দেশজুড়ে চলছে জনসভা ও প্রামান্যচিত্র প্রদর্শনী, আপনার এলাকায় জনসভা ও প্রর্দশনী করতে চাইলে যোগাযেগ করুন’’। এর নিচে বিভিন্ন জিলা ও উপজিলার দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম ও মোবাইল নাম্বার দেয়া থাকে। পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্টার একেবারে উপরে বাম পাশে, উচিয়ে রাখা মুষ্টিবদ্ধ অনেকগুলি হাতের ছবি দ্বারা প্রচ্ছদ অঙ্কন করে পাশে বড় রঙ্গিন অক্ষরে লিখা থাকে ‘‘এক জাতি এক দেশ, ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ” এর নিচে লেখা থাকেঃ দেশ জুড়ে চলছে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা, চোখ রাখুন দেশের পত্রে” কিন্তু  যে কোন সচেতন ব্যক্তি মনোযোগের সাথে দেশের পত্রে চোখ বুলালেই বুঝতে সক্ষম হবে যে, এ তো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কোন প্রয়াশ নয়, বরং এটা ১৪০০ বছর যাবত চলে আসা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করে এ জাতিকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দেয়ার এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র।

তারা তাদের এ কর্মসূচী দেশ জুড়ে নিয়মিত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। প্রতি দিনই দেশের পত্র পাত্রিকায় বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হওয়া এ ধরণের সেমিনার ও জনসভার অসংখ্য সংবাদ ছবি সহ  প্রচার করা হয়। বিশেষ করে সম্প্রতি সময়ে পত্রিকাটির শেষ পৃষ্টার নিচের কিছু অংশকে এ জন্যই বরাদ্দ করা হয়েছে। শেষ পৃষ্টার নীচে ডান থেকে বাম পর্যন্ত পৃষ্টাজুড়ে বড় অক্ষরে দু’লাইনব্যাপী রঙ্গিন কালিতে শিরোনাম আকারে লিখা থাকে ‘‘জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপ-রাজনীতি ও সকল প্রকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে দেশের পত্রের উদ্দ্যোগে চলছে গণসংযোগ ও জনসভা”।
এর নিচে প্রতি দিনই এ ধরণের দু’ তিনটি করে বিশেষ সংবাদের ছবি ছাপানু হয়। যেমন গত ২৬ ফেব্র“য়ারী ২০১৪ ইং বুধবারের পত্রিকায় ঐ স্থানে তিনটি সংবাদ ছাপানু হয়েছে। এর মাঝে একটি হল ‘‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র  আলহাজ্ব মনজুরুল আলম মঞ্জুকে দৈনিক দেশের প্রত্রের স্মরণীকা তুলে দিচ্ছেন চট্টগ্রাম বুরো প্রধান রাজ্ ুআহমদ ও চট্টগ্রাম প্রতিনিধিগণ।
এমনি ভাবে তার পরের দিন ২৭ ফেব্র“য়ারী ২০১৪ ইং বৃহস্পতিবারের পত্রিকায় এ স্থানটিতে ছবি সহ দু’টি সংবাদ ছাপানু হয়েছে। এর একটি হল কুমিল্লা টাউন হল মাঠে জনসভার ছবি। ছবিটির নিচে লিখা ‘‘ধর্ম ব্যবসায়ীদের ধর্মবাণিজ্যের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষে দৈনিক দেশের পত্রের উদ্দ্যেগে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়” ছবিটির মাঝে নারী পুরুষ এক সাথে অবাধে জনসভায় অংশ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে।
আর দ্বিতীয়টি হল ভৈরবের জনসভার ছবি। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, ষ্টেজে লম্বা একটি  ডিজিটাল ব্যানার টানানো ব্যানারের এক পাশে জাতীয় পতাকা ও অন্য পাশে বায়াজীদ খান পন্নীর ছবি, মাঝখানে লেখা ‘‘ধর্মব্যবসা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘‘একজাতি একদেশ ঐক্যবদ্ধ বাংলদেশ’’ প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সুধীসমাবেশ” ছবিটিতে আরও দেখা যাচ্ছে মঞ্চে আমন্ত্রিত মেহমানদের মাঝে উপস্থিত রয়েছে ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ ক্ষমতাশীন দলের ও ভৈরবের অন্নান্য সম্মানীত ব্যক্তিবর্গ।
তাদের এসব সমাবেশ ও সেমিনারে তাদের সাংগঠনিক নেহবৃন্দ ছাড়াও বেশির ভাগ আমন্ত্রণ করা হয় ক্ষমতাশীন দলগুলোর নেতাদের। বর্তমানে তাদের এসব সেমিনারের আলচনার মূল বিষয় হল ইসলামের অপ-ব্যখ্যা করে মানুষদের পন্নীর নব্য ইসলামের দিকে দীক্ষিত করা  উম্মতের হক্বানী উলামায়ে কিরামের বদনাম ও তাদেরকে সন্ত্রাস হিসাবে সাব্যস্ত করে জনমনে ইসলাম ও ওলামায়ে কেরামের ব্যাপারে ঘৃনা সৃষ্টি করা। তাদের এ ভয়াবহ অপ-তৎপরতার ফলে ব্যপকভাবে যে ক্ষতি  সাধিত হচ্ছে তা নিম্ন রূপঃ-
)ক) সাধারণ মুসলমানদের অন্তরে উলামায়ে কেরামের ব্যপারে ঘৃনা সৃষ্টি হচ্ছে।
)খ) ইসলামের ব্যাপারে তেমন ধারণা রাখেনা এমন সরলমনা মুসলমানগণ ধর্মীয় ব্যাপারে বিভ্রান্ত হচ্ছে ।
(গ) অনেক সাধারণ মুসলমান বুঝে না বুঝে নব্য এ ফেতনার সাথে জড়িযে পড়ছে।
(ঘ) দেশ জুড়ে মানুষের কানে কানে নব্য এ মতবাদের  দাওয়াত পৌঁছে  যাচ্ছে, ফলে মানুষ প্রভাবান্নিত হচ্ছে।
(ঙ) দেশের জেনারেল প্রভাবশালী লোক ও ক্ষমতাসীনদের তারা হাত করে নিচ্ছে।
এমনিতেই ক্ষমতাসীনদের সাথে তাদের সম্পর্ক অনেক ভাল। কারণ তারাও ক্ষমতাসীন অনেক নেতাদের মত উলামায়ে কেরামকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসি বলে বেড়ায় আলেমদেরকে  শক্র মনে করে। আলেমদের দমন করতে চায়। বর্তমানেঃ হেযবুত তত্তহীদ উলামায়ে কিরামকে দমন করার জন্য ক্ষমতাসীনদের সাথে আতাত করার জোড় চেষ্টা চালাচ্ছে। এহেন নাজুক পরিস্থিতিতে এ ভয়াবহ ফেতনা প্রতিহত করা ও সরলমনা মুসলমানদের এ ব্যাপারে সর্তক করা উলামায়ে উম্মতের দ্বীনী ও নৈতিক দায়িত্ব। এ সময় বিষয়টি নিয়ে যেনে শুনে নিরবতা ভবিষ্যতে চড়া মাশুল দেয়ার কারণ হবে। তাই স্বচেতন মুসলমানদের এ ব্যাপারে জাগ্রত করার জন্য উস্তাদদের পরামর্শে এ বিষয়ে কলম উঠানোর সাহস করেছি।
এ পর্যন্ত ক্ষুদ্র  অনুসন্ধান ও অভিজ্ঞতা থেকে মতবাদটির তৎ-পরতার ‌ধরণ ও প্রচারপদ্ধতি নিয়ে, দৃষ্টান্ত মৃলক সামান্য আলোচনা করা হয়েছে। তাদের প্রকাশিত সকল গ্রন্থ আমাদের সংগ্রহে রয়েছে। সামনে তাদের গ্রন্থ সমৃহের রেফারেন্স সহ তাদের  ইসলাম বিদ্বেষী ভ্রান্ত আক্বীদা সমূহ উপস্থাপন করে কুরআন, হাদীস ফেক্বাহ ও বিশ্ববরেণ্য ইমামদের  উক্তির আলোকে তার নিরপেক্ষ পর্যালোচনা  ও জবাব দেওয়া হবে। এর আগে মতবাদটির উৎস  গোড়া ও এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব বায়াজীদ  খান পন্নীর ব্যক্তিত্ব নিয়ে সামান্য আলোচনা করাহবে।

চলবে----

হেজবুত তাওহীদ নয়, হিযবুত শয়তান!!

প্রকৃত তাওহীদ কি যারা আজও বুঝতে পারে নি, তাদের নামে আজ ”হেযবুত তাওহীদ!” অথচ তাদের কাজ-কর্ম আকিদা-বিশ্বাসে শয়তানও ফেল। এ যুগের নব ফিতনারূপে আবির্ভূত হয়েছে তথাকথিত হেযবুত তাওহীদ আর তাদের কথিত এমামুযামান বায়োজীদ খান পন্নী।তারা সম্পুর্ণ নতুন ধর্ম প্রচারে লিপ্ত।

তাদের কিছু ইমান বিধ্বংসী আকিদা দেখুন:
তারা মুলত সরলমনা মুসলিমদের বিভ্রান্তি করতে ইহুদী খৃষ্টানদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে।
১) তারা নিজেদেরকে সনাতন ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করে!আবার কোরআন হাদিসের কথা বলে আবার রসুলের কথাও বলে। 
২) তারা হিন্দুদের শ্রী কৃষ্ণ, রামচন্দ্র, যঠিষ্ঠীর, মুনি, মহাবীর, বৌদ্ধদের গৌতম বুদ্ধকে নবী বলে বিশ্বাস করে এবং তাদের নামের শেষে ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ যোগ করে!

৩) তারা হিন্দুদের পুরান, বেদ, উপনিষেদ, মহাভারত, বাইবেল প্রভৃতি গ্রন্থকে আল্লাহর প্রেরিত কিতাব বলে বিশ্বাস করে!

৪) তাদের নেতা বায়েজিদ খান পন্নি,  তাদের মত পূর্বের নবী রসুল যে কাজ করতে সামর্থ হননি তাদের নেতা সে নাকি  তার ছেয়ে বেশী কাজ করতে সামর্থ হয়েছেন মোজজার দ্বারা। নাউযুবিল্লাহ।
এর দ্বারা হেযবুত তাহহীদের অনুসারীরা তাকে নবী বলে মানে এবং এর দ্বারা নতুন ধর্ম প্রচাররে লিপ্ত

৫) তাদের মতে সারা বিশ্বে প্রকৃত মুসলিম মাত্র ৫ লক্ষ!যারা তাদের অনুসারী মাত্র, আর বাকি সব পথভ্রষ্ট।

৬) তাদের মতে, ইহুদী-খ্রিষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই দাজ্জাল! প্রকৃত দাজ্জাল বলতে কোন ব্যক্তি নয়।

৭) তাদের মতে, নারীদের পর্দা বলতে কিছুই নাই, আরবের নারীরা ধুলোবালি থেকে রক্ষা করতে হিজাব পরিধান করত!

৮) তাদের মতে, বর্তমানে পৃথিবীতে যত আলেম,ওলামা সহ যত দল আছে সব পথভ্রষ্ট,।

৯) তাদের অনুসারীদের কে যে কোন আলেমের ওয়াজ নসিহত শুনতে বারণ করা হয়।

১০) তাদের মতে মসজিদে বেতনভোগী ইমামের পিছনে নামাজ হবেনা।

১১) তাদের নামাজ হল স্প্রিট নামাজ ভিডিও দেখলে বুঝতে পারবেন।

১২) তাদের মতে বর্তমান ইসলাম বিকৃত,নাউযুবিল্লাহ। একমাত্র তাদের প্রচারীত ইসলামই প্রকৃত সত্য।
১৩) দাডি টুপি পান্জাবী সহ নামাজ রোজা হজ্ব জাকাত সহ এ গুলোর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক  নেই। নাউযুবিল্লাহ।

এরকম আরো অসংখ্য কুরআন-হাদিস বহির্ভূত আকিদা-আমাল রয়েছে; যা মানুষদেরকে সীরাতে মুস্তাকীম থেকে গোমরাহী, পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত করে। সময় স্বল্পতার কারনে লিখতে পারছি না।

চলবে ---+-

হেযবুত তওহীদের গোঁমড়ফাস।

সুপ্রিয় পাঠক! হেযবুত তওহীদের যদি কাউকে প্রশ্ন করেন যে, অাপনারা অন্য দল থাকতে অাবার এদল গঠন কেন করলেন?
তখন তারা বলে থাকে যে,
বর্তমানের সমস্ত মোসলেম কাফের এবং মোশরেক হয়ে গেছে।
সুৎরাং অাল্লাহ তা'য়ালা অামাদের এমামুযযামান পন্নী সাহেবকে মোজেজার মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন যে, হেযবুত তওহীদের মাধ্যমেই অাবার ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে।
অার অামাদের এমাম বলেছেন যে সমস্ত মোসলেম কাফের এবং মোশরেক হয়ে গেছে।
তাই অামরা অন্য দল না করে এ দলে এসেছি।
প্রমাণ-
সব মোসলেম কাফের এবং মোশরেক হোয়ে গেছে।
(সূত্রঃ অাল্লাহর মোজেজা হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা-পৃষ্ঠা-২৩)

বিশ্লেষন-
অামরা গত পর্বে প্রমাণ করেছিলাম যে, অাল্লাহর প্রেরিত দ্বীন ইসলাম এখনও পৃথিবীতে অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে।
সুৎরাং এ ধর্মের অনুসারীদেকে মুসলিমই বলতে হবে।
বেঈমান বা কাফের বলার অধিকার কারো নেই।
যারা এমন কথা বলে তাদের ব্যাপারে রাসুল সঃ এর বানী-
দুনিয়ার সব মুসলিম কাফের,মুশরিক এক কথায় ধংশ হয়ে গেছে এমন কথা যারা বলে হযরত মুহাম্মাদ সঃ তাদের ব্যাপারে বলেছেন-
عن ابي هريرة ان رسول الله صلي الله عليه وسلم قال اذا قال الرجل هلك الناس فهو اهلكهم
অর্থাৎ হযরত অাবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্নিত রাসুলুল্লাহ সঃ বলেন, যে বলবে সমস্ত মানুষ ধংশ (অর্থাৎ বেঈমান) হয়ে গেছে সে লোকটিই সবচে ধংশপ্রাপ্ত।
অথবা সে তার অনুসারিদের ধংশ করে ছাড়বে।
সূত্রঃ
সহীহ মুসলিম- হাদিস নং-২৬২৩
অাবু দাউদ.হাদিস নং-৪৯৮৩

গায়েব জান্তা মহান অাল্লাহ পাক জানতেন যে এমন কিছু লোক অাবিস্কার হবে যারা এ ধরণের কথা বলবে।
সেজন্য শেষ নবী মুহাম্মাদ সঃ কে দিয়ে ভবিষ্যতবানী করিয়েছেন।
সুৎরাং বিশ্বনবী সঃ এর এই হাদিসই প্রমাণ করে যে হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা বায়াজীদ খান পন্নী যামানার সবচে বড় পথভ্রষ্ট,গোমরাহ এবং তাকে যারা অনুস্বরণ করবে সে তাদেরকে ধংশ করেই ছাড়বে।
বাস্তবতাও তাই দেখা যাচ্ছে।

কপি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন