এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
নুরুলগনি ইসলামী একাডিমী
কাটাছরা
মিরসরাই
চট্গ্রাম
আকীদার অর্থ
=========
আভিধানিক দিক থেকে আকীদাহ শব্দটি উৎকলিত হয়েছে, আল-আকদু, আতাওসীকু, আল-ইহকামু, বা দৃঢ় করে বাঁধা বুঝানোর অর্থে।
পরিভাষায় আকীদাহ বলতে বুঝায়: এমন সন্দেহাতীত প্রত্যয় এবং দৃঢ় বিশ্বাসকে যাতে বিশ্বাসকারীর নিকট কোন সন্দেহের উদ্রেক করতে পারে না।
তাহলে ইসলামী আক্বীদা বলতে বুঝায় : মহান আল্লাহর উপর দৃঢ় ঈমান বিশ্বাস রাখা, অনিবার্য করণেই *** আল্লাহর একত্ববাদ ও তাঁর আনুগত্যকে মেনে নেওয়া এবং *** ফিরিশতা, *** আসমানী কিতাবসমুহ, সকল **** রাসূল, **কিয়ামত দিবস, **তাকদীদের ভালো মন্দ, **কুরআন হাদীসে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত সকল গায়েবী বিষয় এবং যাবতীয় সংবাদ, অকাট্যভাবে প্রমাণিত সকল তত্বমূলক বা কর্মমূলক বিষয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত:
=====================
যারা সত্যিকার অর্থে রসুল সাঃ এর প্রকৃত সুন্নাত ও আদর্শ পালন কল্পে , যাবতীয় নবআবিষ্কৃত বেদআত,
ও কূসংষ্কার থেকে নিজেকে দূরে রেখে এক মাত্র সুন্নতের উপরই সূদৃঢ থেকেছে তারাই আহলুস সুন্নাহ,
আর যারা জামাতে ছাহাবা এর
অনুগত তাদেরকে আল জামা‘আত বলা হয় এই মর্মে যে, তাঁরা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে, দ্বীনের ব্যাপারে বিচ্ছিন্ন না হয়ে হিদায়াতপ্রাপ্ত ইমামদের ছত্রছায়ায় একত্রিত হয়েছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধাচারণে লিপ্ত হন নি, এছাড়া যে সমস্ত বিষয়ে আমাদের পূর্বসূরী সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণ একমত হয়েছেন তারা তাঁর অনুসরণ করে, তাই এ সমস্ত কারণেই তাঁদেরকে আল-জামা‘আত বলা হয়।
এছাড়া রাসূলের সুন্নাহর অনুসারী হওয়ার কারণে কখনো তাদেরকে কখনো আহলুল আসার, কখনো অনুকরণকারী দল, বা সাহায্যপ্রাপ্ত ও সফলতা লাভকারী দল বলেও আখ্যায়িত করা হয়।
ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণের মূল উৎস এবং উহার প্রমাণপঞ্জি উপস্থাপনের পদ্ধতি
===================================================
১. ইসলামী আকীদা গ্রহণের মূল উৎস কুরআনে করীম, সহীহ হাদীস ও সালফে-সালেহীনের ইজমা।ও কেয়াস ,
২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত সহীহ হাদীস গ্রহণ করা ওয়াজিব, এমনকি তা যদি খবরে আহাদও হয়।
৩. কুরআন-সুন্নাহ বুঝার প্রধান উপাদান, কুরআন সুন্নারই অন্যান্য পাঠ, যার মধ্যে রয়েছে অপর আয়াত বা হাদীসের স্পষ্ট ব্যাখ্যা, এছাড়া আমাদের পূর্বসূরী সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন এবং আমাদের সম্মানিত ইমামগণ প্রদত্ত ব্যাখ্যা। আর আরবদের ভাষায় যা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত। তবে ভাষাগত দিক থেকে অন্য কোন অর্থের সম্ভাবনা থাকলেও সাহাবা, তাবেয়ীনদের ব্যাখ্যার বিপরীত কোন ব্যাখ্যা গ্রহণ করা যাবে না। সম্ভাব্য কোন অর্থ এর বিপরীত কোন অর্থ বহন করলেও তাঁদের ব্যাখ্যার উপরেই অটল থাকতে হবে।
৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের মূল বিষয়বস্তুসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করেছেন। এজন্য দ্বীনের মধ্যে নতুন করে কোন কিছু সংযোজন করার কারও অধিকার নেই।
৫. প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সর্ব বিষয়ে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সামনে আত্মসমর্পন করা। সুতরাং নিজের মানসিক ঝোঁক বা ধারণার বশঃবর্তী হয়ে, আবেগপ্রবণ হয়ে অথবা বুদ্ধির জোরে বা যুক্তি দিয়ে কিংবা কাশফ অথবা কোন পীর-উস্তাদের কথা, অজুহাত দিয়ে কুরআন সুন্নাহর কোন কিছুর বিরোধিতা করা যাবে না।
৬. কুরআন, সুন্নার সাথে জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিবেকের কোন সংঘাত বা বিরোধ নেই। কিন্তু কোন সময় যদি উভয়ের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয় এমতাবস্থায় কুরআন সুন্নাহর অর্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৭. আকীদা সংক্রান্ত বিষয়ে শরী‘আতসম্মত ভাষাও শব্দ প্রয়োগ করা এবং বিদ‘আতী পরিভাষাসমূহ বর্জন করা
আর সংক্ষেপে বর্ণিত শব্দ, বাক্য বা বিষয়সমূহ যা বুঝতে ভুল-শুদ্ধ উভয়েরই সম্ভাবনা থাকে, এমতাবস্থায় বক্তা থেকে ঐ সমস্ত বাক্য বা শব্দের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া,
তারপর তন্মধ্য থেকে যা হক বা সঠিক বলে প্রমাণিত হবে তা শরী‘আত সমর্থিত শব্দের মাধ্যমে সাব্যস্ত করতে হবে, আর যা বাতিল তা বর্জন করতে হবে।
৮. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ, ভ্রুল-ত্রুটির উর্ধ্বে। আর সামষ্টিকভাবে মুসলিম উম্মাহও ভ্রান্তির উপরে একত্রিত হওয়া থেকে মুক্ত। কিন্তু ব্যক্তি হিসাবে (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত) এ উম্মতের কেউই নিষ্পাপ নন।
আমাদের সম্মানিত ইমামগণ এবং অন্যান্যরা যে সব বিষয়ে মত পার্থক্য করেছেন, সে সমস্ত বিষয়ের সূরাহার জন্য কুরআন ও সুন্নার দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তবে উম্মতের মুজতাহিগণের যে সমস্ত ভুল-ত্রুটি হবে সেগুলোর জন্য সঙ্গত ওজর ছিল বলে ধরে নিতে হবে। [অর্থাৎ ইজতিহাদী ভুলের কারণে তাঁদের মর্যাদা সমুন্নতই থাকবে এবং তাঁদের প্রতি সুন্দর ধারণা পোষণ করতে হবে।]
কারন তাঁরা তাদের ইজতেহাদে ভূল করলে ও একগুন ছাওয়াবের অধিকারী হবে , আর ছহীহ হলে ডাবল ছাওয়াব পাবেন ,
৯. এ উম্মতের মধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান সমৃদ্ধ ও ইলহামপ্রাপ্ত অনেক মনীষী রয়েছেন। সুস্বপ্ন সত্য এবং তা নবুওয়াতের একাংশ। সত্য-সঠিক দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের বাণী সত্য এবং তা শরী‘আত সম্মতভাবে কারামত বা সুসংবাদের অন্তর্ভুক্ত। তবে এটি ইসলামী আকীদা বা শরী‘আত প্রবর্তনের কোন উৎস নয়।
১০. দ্বীনের কোন বিষয়ে অযথা তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া অত্যন্ত জঘন্য ও নিন্দনীয়।
তবে উত্তম পন্থায় বিতর্ক বৈধ। আর যে সমস্ত বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া থেকে শরী‘আত নিষেধ করেছে, তা থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য। এমনিভাবে অজানা বিষয়ে বিবাদে লিপ্ত হওয়াও মুসলিমদের জন্য অনুচিৎ, বরং ঐ অজানা বিষয় সর্বজ্ঞ ও সর্বজ্ঞানী আল্লাহর উপর সোপর্দ করা উচিৎ।
১১. কোন বিষয়ে বর্জন গ্রহণের জন্য ওহির পথ অবলম্বন করতে হবে। অনুরূপভাবে কোন বিষয় বিশ্বাস বা সাব্যস্ত করার জন্যও ওহীর পদ্ধতির অনুসরণ করতে হবে। সুতরাং বিদ‘আতকে প্রতিহত করার জন্য বিদআতের আশ্রয় নেয়া যাবে না। আর কোন বিষয়ের অবজ্ঞা ঠেকাতে অতিরঞ্জন করার মাধ্যমে মোকাবেলা করা যাবে না। অনুরূপ কোন বিষয়ের অতিরঞ্জন ঠেকাতে অবজ্ঞাও করা যাবে না। [অর্থাৎ যতটুকু শরী‘আত সমর্থন করে ততটুকুই করা যাবে]
১২. দ্বীনের মধ্যে নব সৃষ্ট সব কিছুই বিদ‘আত এবং প্রতিটি বিদ‘আতই হলো পথভ্রষ্টতা। আর প্রত্যেক পথভ্রষ্টতার পরিণতিই জাহান্নাম।
অন্ধকারের ধূম্রজালে আবদ্ধ,ভ্রান্তির শৃংঙ্খলে বেষ্টিত,কুফর ও শিরকের দাবানলে দগ্ধ,পৃথিবীর মোহে আসক্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ় দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের দিশা দানের জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুক্তির দূত ,পথ হারা মানুষের সুপথের দিশারী ,রাহামাতুল্লিল আলামীন সায়্যিদুনা মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাঁর পক্ষ থেকে রাসূল হিসাবে এ ধরাধামে পাঠিয়েছেন ।
তাঁর আগমনের পর হক-বাতিলের সঠিক পরিচয় সকলের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠে । অসত্যের সকল নিশানা থেকে সত্য তার সর্বাঙ্গ সুন্দর রূপ নিয়ে বের হয়ে আসে।
মহান আল্লাহর অপার কৃপায় ও তাঁর বন্ধুর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে দলে দলে মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহান করে । মানব হিতৈষী এ মহা মানব দীর্ঘ ৬৩ বছর এ পৃথিবীতে জীবন যাপন করে মানুষকে সত্যপথের সন্ধান দিয়ে বন্ধুর মিলনে গমন করেন অনন্ত জগত আখিরাতের পানে।
সঠিক পথের পাথেয় হিসাবে উম্মাতের কাছে রেখে যান দুটি মহা মূল্যবান সম্পদ তথা পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহ।হাদীস শরীফে এসেছেঃ
إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : تركت فيكم أمرين لن تضلوا ماتمسكتم بهما كتاب الله و سنة نبيه (صدق رسول الله صلى الله عليه وسـلم )
প্রত্যেকটি জ্ঞানকে গ্রন্থ থেকে মন্থন করার জন্য শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য । তাইতো মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন নাযিল করে ক্ষান্ত হননি।বরং তাঁর সাথে পবিত্র গ্রন্থকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সায়্যিদুনা রাসূল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে শিক্ষক হিসাবে প্রেরণ করেছেন । যিনি সুন্নাহের মাধ্যমে উহাকে শিক্ষা দিয়েছেন।
ঠিক তেমনি মহা মূল্যবান দুটি জিনিস তথা পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহের আলোকে জীবন গঠনের জন্য শিক্ষক বা আদর্শ হিসাবে সায়্যিদুনা রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেখে গিয়েছেন তাঁর পবিত্র বংশধর ,ছিদ্দীকীন ,সাহাবায়ে কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণকে।যাদের আদর্শ অনুসরনের জন্য আমাদেরকে আদেশও করেছেন।
** তাঁর পবিত্র বংশধরগণের আদর্শ অনুসরন করা সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال : رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فى حجته يوم عرفة وهو على ناقته القصواء يخطب فسمعته يقول:( ياأيها الناس إنى تركت فيكم ماإن أخذتم به لن تضلوا:كتاب الله وعترتى أهل بيتى .....)
*সাহাবা কিরামের আদর্শ অনুসরনের ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে:
عن ابن عمر رضي الله عنهما قال :خطبنا عمر بالجابية فقال :يا أيها الناس :اني قمت فيكم كمقام رسول الله صلي الله عليه وسلم فينا فقال : أوصيكم بأصحابى ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم
অন্য হাদিসে এসেছে
عن عبد الله بن عمر قال :قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : …وإن بنى إسرائيل تفرقت على ثنتين وسبعين ملة وتفترق أمتى على ثلاث و سبعين ملة كلهم فى النار إلا ملة واحدة قالوا: ومن هذا يا رسول الله ؟ قال : ما أنا عليه وأصحابى
উল্লেখ্য যে,৭৩ ফেরকা সম্পর্কে ছাহীহ হাদীছে এসেছেঃ
عن أبي هريرة رضي الله ان رسول الله صلي الله عليه وسلم قال:(تفرقت اليهود علي احدي وسبعين فرقة ،أو اثنتين و سبعين فرقة و النصاري مثل ذلك،وتفترق أمتي علي ثلاث وسبعين فرقة)6
**ছিদ্দীকীন এবং আউলিয়া কিরামগণের আদর্শ অনুসরন সম্পর্কে পবিত্র কুরান মাজীদে সিরাতে মুস্তাকীমের পরিচয় দানের মধ্য দিয়ে এসেছেঃ
صراط الذين أنعمت عليهم (الفاتحة)
(আল্লাহ তায়ালা যাদের উপর নিয়ামত দিয়েছেন তাঁদের পথ সিরাতে মুস্তাকীম)
আর মহান আল্লাহ তায়ালা যাদের উপর নিয়ামত দান করেছেন তাঁরা হচ্ছেন নিম্নোক্ত আয়াতে উল্লেখিত আম্বিয়া-মুরছালীন,ছিদ্দীকীন,শোহাদা এবং আউলিয়া কিরাম।
মহান আল্লাহ বলেনঃ
ومن يطع الله والرسول فأولئك مع الذين أنعم الله عليهم من النبيين والصديقين والشهداء والصالحين و حسن أولئك رفيقا 7
উপরোক্ত আয়াত প্রমাণ করে যে,নাবী-রাসূলগণ,সাহাবা কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণের পথ ও মতের উপর থাকাই হচ্ছে সিরাতুল মুস্তাকীমের উপর থাকা।
তাই বলা যায়,আম্বিয়া–মুরছালীন,ছিদ্দীকীন,শোহাদা,রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র বংশধর,সাহাবা কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণের পথ ও মতের অনুসরনই হচ্ছে "সিরাতে মুস্তাকীমের" অনুসরন ।তাঁদের আদর্শ গ্রহণই হচ্ছে কুরআন এবংসুন্নাহের অনুসরন। আর তাঁদের অনুসারীগণই হচ্ছে নাজাত প্রাপ্ত দল ।হাদীস শরীফে যাদের নামকরণ করা হয়েছে " জামায়াত"(আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত)বলে। ইরশাদ হচ্ছেঃ
عن معاوية بن أبى سفيان أنه قام فينا فقال ألا إن من قبلكم من أهل الكتاب افترقوا على ثنتين وسبعين ملة وإن هذه الملة ستفترق على ثلاث و سبعين. ثنتان و سبعون فى النار وواحدة فى الجنة وهى الجماعة .8
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণীত হলো সায়্যিদুনা রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওফাত মুবারকের পরে তাঁর বংশধর ,ছিদ্দীকীন, সাহাবা কিরাম ,আউলিয়া কিরাম এবং শোহাদাগণের পথ অনুসরন হচ্ছে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত "অনুসরনের নামান্তর।
*********************************************************************************
আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব
************************************************
**********************************************
উল্লেখ্য যে – ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী (ইঃ324হিঃ) এবং ইমাম আবুল মানছূর আল মাতুরীদী (ইঃ333হিঃ) ইমাম দ্বয়কে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " এর ইমাম বলা হয়ে থাকে।এর দ্বারা এ উদ্দেশ্য নয় যে, তাঁদের পূর্বে আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব
ছিলনা।বরং সাহাবা কিরাম,তাবেয়ীন এবং তাবে তাবেয়ীন হচ্ছেন এই নামের অধিক উপযুক্ত।
উল্লেখিত ইমামদ্বয়কে " আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " এর ইমাম বলার কারণ হচ্ছে –
35 হিজরী সনে হযরত উসমান(রাঃ)এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে খারিজী ফিত্নার দানা বেঁধে উঠতে আরম্ভ করে।37 হিজরী সনে ছিফ্ফীনের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সে ফিতনার সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ ঘটে। তারপর ক্রমান্বয়ে " মুর্যিয়া " " জাবরিয়া " ফেরকারও সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম হাসান বাসরী (রাঃ)(ইঃ110 হিঃ) এর দরবারে কতিপয় বিদয়াতী মহান আল্লাহ পাকের জন্য জিসম (শরীর)সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা চালায় । তাই তিনি তাদেরকে মজলিসের এক পাশে তাঁড়িয়ে দেন ।পরে তারা " হাশাভীয়্যাহ" ফেরকা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে ।
ইমাম হাসান বাসরী (রাঃ) এর সাথে তাঁর ছাত্র ওয়াছেল বিন আতা (ইঃ131 হিঃ) অবাধ্যতা করে ভ্রান্ত মতবাদ গ্রহন করে। তিনি তাকেও তাঁর মজলিস থেকে তাঁড়িয়ে দেন
।পরবর্তীতে "মুতাজিলা "ফেরকা হিসাবে তারা পরিচিতি লাভ করে ।এভাবে ক্রমান্বয়ে ইসলামের ভিতরে বিভিন্ন বাতিল ফেরকার অনুপ্রবেশ ঘটতে থাকে।
আগমন ঘটে ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী(রাঃ)এর।তিনি সকল বাতিল ফেরকার ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডন করে সঠিক মতাদর্শের উপর পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহের আলোকে বিভিন্ন কিতাব রচনা করেন ।তার সমসাময়িক ইমাম আবুল মানছুর আল মাতুরীদী(রাঃ)ও অনূরুপ খিদমতের আঞ্জাম দেন। এই ইমামদ্বয়ের মতাদর্শকে সারা দুনিয়ার মুষ্টিমেয় কিছু সংখ্যক লো্ক ব্যতীত সকলেই গ্রহন করে নেয়।তাইতো তাঁদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত কিছু সংখ্যক আলিম ব্যতিত তাঁদের মতাদর্শের পতাকাধারী হয়ে আছেন দুনিয়ার সকল বিখ্যাত ওলামায়ে কিরাম।আজো বিশ্বের অসংখ্য-অগনীত ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে "আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের "আক্বিদার কিতাব পড়ানো হয়
।সহস্র বছরোত্তর ঐতিহ্য ধন্য মিশরের আল্ আযহার বিশ্ববিদ্যালয়েও তাই। ভারতীয় উপমহাদেশের ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ ভারত , দারুল উলুম করচি পাকিস্তান ,কলকাতা আলিয়া ,ও বাংলদেশের জামেয়া ইসলাময়া পটিয়া,জামেয়া হাটহজারী , নানুপুর , জিরি , বসুন্দরা মাদ্রাসা,ঢাকা আলিয়া ইত্যাদি সকল সরকারী -বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সূমুহে পড়ানো হয়ঃ
যেমন ;--------------------------------------
العقيدة الطحاوية للإمام أبو جعفر الطحاوى ، المتوفى 321 هــ . العقائــد النسفية لشيخ الإسلام النسفى ، المتوفى 508هـــ . و شرح المواقف للإمام الجرجانى،و الفقه الأكبر للامام أبي حنيفة رضي الله عنهم ,وشرح العقائد وغيره .
ইত্যাদি আক্বীদার কিতাব সমূহ।
সুতরাং প্রমাণীত হলো "আশয়ারী ও মাতুরীদী " অনুসারীগণ যুগ যুগ ধরে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " হিসাবে পরিচিত
عن أنس بن مالك رضى الله عنه يقول : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : إن امتى لا تجتمع على ضلالة فإذا رأيتم اختلافا فعليكم بالسّواد الأعظم ( صدق رسول صلى الله عليه وسلم )9
وفي الحديث الصحيح:يد الله مع الجماعة10
9.ابن ماجه/كتاب الفتن/باب السواد الأعظم.10 رواه الترمذي/كتاب الفتن/باب في لزوم الجماعة
“আল্লাহ্ কোথায়
====================
এক্ষণে আমরা “আল্লাহ্ কোথায়?” এ বিষয়ে কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীস এবং সালফে সালেহীন তথা শ্রেষ্ঠ যুগের মহা পণ্ডিতদের বক্তব্য ও আকীদাহ্ দলীলসহ আলোচনা করার চেষ্টা করব:
সমগ্র জাহানের প্রতিপালক ও সংরক্ষক মহান আল্লাহ্ তা’আলা সপ্তাকাশের উপর অবস্থিত সুমহান আরশের উপর সমুন্নত, তিনি সর্বস্থানে বিরাজিত নন। তাঁর ক্ষমতা অসীম ও সর্বব্যাপী। তিনি সব কিছু দেখেন ও শোনেন। কোন কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়। তিনি আরশে আ’যীমে থেকেই সব কিছু সুচারুরূপে পরিচালিত করেন।তাই তাঁর আসীম ক্ষমতা ও কুদরত সর্বস্থানে বিরাজিত , কিন্তু তাঁর সত্তা বা জাত সর্বস্থানে বিরাজিত , নয় ,
যদি তাই হয় তাহলে
এ কথার অর্থ দাঁড়ায়, ভাল-মন্দ সকল বস্তু এবং স্থানেই মহান আল্লাহর অস্তিত্ব বিদ্যমান । মানুষ-জিন, গরু-ছাগল, কুকুর-শুকর, মসজিদ-মন্দির, উপাসনালয়-বেশ্যালয় ইত্যাদি শব্দগুলো ‘সবকিছুর’ই অন্তর্ভুক্ত। মলতঃ উক্ত কথাটি ইবনে আরাবী, মনসূর হাল্লাজ প্রমূখ বেদ্বীন সুফীদের কথার সাথে মিলে যায়,
ঐ সকল সূফীদের কথা হল: (وما الكلب والخنزير إلا إلهنا : وما ربنا في الكنيسة إلا راهب) অর্থাৎ-কুকুর-শুকর এগুলো মলতঃ আমাদের উপাস্য, আর গির্জায় অবস্থানকারী পাদ্রী আমাদের প্রতিপালক ছাড়া আর কিছুই নয়। আর ইবনে আরাবীর কথা হল: (العبد رب والرب عبد : يا ليت شعري من المكلف؟) বান্দা হল রব আর রবই হল বান্দা, হায় আমি যদি জানতাম কে আদেশ প্রাপ্ত? তাই তো আজকাল কোন কোন সুফি দরবেশ বলে থাকে ‘যত কল্লা তত আল্লাহ্’।
১) মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেন:
(ان ربكم الله الذي خلق السموات والأرض في ستة أيام ثم استوى على العرش)
অর্থ:‘ নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্, যিনি আকাশ সমূহ এবং পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।’ (সূরা আরাফ-৫৪)
২) আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেন:
الرحمن على العرش استوى
অর্থ: ‘রহমান (আল্লাহ্) আরশে সমুন্নত।’ (সূরা ত্বহা-৫) এ কথায় কোনই সন্দেহ নেই যে আরশ আসমান রয়েছে জমিনে নয়।
৩) তাই মহান আল্লাহ্ অন্যস্থানে বলেন:
أأمنتم من في السماء أن يخسف بكم الأرض
অর্থ: ‘তেমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছো যে, যিনি আকাশে অবস্থিত রয়েছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দিবেন না।’ (মূলক-১৬)
এ ছাড়া বহু আয়াতে আল্লাহ্ পাক নিজের পরিচয়ে বলেছেন যে, তিনি আকাশের উপর মহান আরশেই রয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে অধিক প্রমাণের জন্য নিম্ন লিখিত আয়াত গুলো দেখা যেতে পারে। ( ইউনুস-৩, রা’দ-২, ফুরক্বান- ৫৯, সাজদাহ্-৪, হাদীদ-৪)
৪) হাদীছে রাসূলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
ألا تأمنوني وأنا أمين من في السماء يأتيني خبر السماء صباحاً ومساءً -متفق عليه
অর্থ: ‘তোমরা কি আমাকে আমানতদার মনে কর না, অথচ যিনি আসমানে আছেন আমি তাঁর আমানতদার। আমার কাছে আসমানের খবর সকাল-সন্ধ্যায় আসে।” (বুখারী ও মুসলিম) আসমানে যিনি আছেন নিশ্চয় তিনি মহান আল্লাহ্। কোন সন্দেহ আছে কি ?
৫) হযরত মুয়াবিয়া বিন হাকাম আস্ সুলামী (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
) জনৈক দাসীকে প্রশ্ন করেছিলেন : ‘আল্লাহ্ কোথায়?’ উত্তরে সে বলেছিল : আল্লাহ্
====================================================
আসমানে। তিনি বললেন , আমি কে? সে বলল: আপনি আল্লাহ্র রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মনিবকে বললেন: তাকে আজাদ করে দাও। কেননা সে ঈমানদার। (ছহীহ মুসলিম)
৬) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন:
(ارحموا من في الأرض يرحمكم من في السماء )
অর্থাৎ-‘ যারা জমিনে আছে তোমরা তাদের প্রতি দয়াশীল হও যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়াশীল হবেন।’ (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ)
৭) সুপ্রসিদ্ধ মে’রাজের ঘটনা বুখারী -মুসলিম সহ বহু হাদীস গ্রন্থে রয়েছে।
হে বিবেকবান মুসলিম ভাই! আল্লাহ্ যদি সর্বত্র সবকিছুতেই বিরাজিত থাকেন, তবে মে’রাজের কি দরকার ছিল? মে’রাজের রাত্রে বোরাকে চড়ে সপ্তাকাশের উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্র দরবারে গমনই তো প্রমাণ করে যে মহান আল্লাহ্ সাত আসমানের উপর অবস্থিত আরশেই রয়েছেন। নতুবা মে’রাজ অর্থহীন হয়ে যায় না কি?
এ ক্ষেত্রে সালফে সালেহীনের বা আকাবেরদের আকীদা বা কিছু উক্তি:=
=====================================
৮) ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ্ আরশে আছেন একথা বিশ্বাস করে, কিন্তু সন্দেহ করে যে আল্াহ আসমানে আছে না জমিনে তবে সে কাফের বলে গণ্য হবে। (দ্র: আল্ ফিকহুল আবসাত)
৯) ইমাম আওযায়ী বলেন: আমরা তাবেয়ীগণের উপস্থিতে বলতাম, নিশ্চয় মহান আল্লাহ্ তাঁর আরশের উপর রয়েছেন। তাঁর গুণাগুণ সম্পর্কে যে বর্ণনা এসেছে আমরা সবই তা বিশ্বাস করি। (ইমাম যাহাবী প্রণীত মুখতাছার উলু দ্রষ্টব্য)
১০) ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন: ( الله في السماء وعلمه في كل مكان لا يخلو منه شيء ) ‘আল্লাহ্ রয়েছেন আসমানে এবং তাঁর ইলম সর্বাস্থানে পরিব্যপ্ত , তার জ্ঞান থেকে কোন স্থান খালি নেই।
১১) ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন: আমি যে তরিকার উপর প্রতিষ্ঠিত ও যাদেরকে ঐ তরিকার উপর পেয়েছি যেমন সুফিয়ান সাওরী, মালিক প্রমুখগণ তা হল- এ কথার স্বীকৃত দেয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন হক মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র রাসূল আর আল্লাহ্ তিনি আসমানে আরশের উপর রয়েছেন। তিনি তার বান্দার নিকটবর্তী হন যে ভাবে ইচ্ছা করেন এবং যে ভাবে চান ঠিক সেভাবেই …।
দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন
তবে কি ভাবে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন তার প্রকৃত আবস্হা আল্লাহই ভল জানেন,
এ বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে , মাথা পেতে বিশ্বাস করাই বান্দার কাজ .
১২) ইমাম আহমাদ (রাহ) কে জিজ্ঞেস করা হল: আল্লাহ্ সপ্তাকাশে আরশের উপর রয়েছেন। সৃষ্টিকুল থেকে পৃথক আছেন এবং তার কুদরত ও ইলম সকল স্থানে পরিব্যাপ্ত। উত্তরে তিনি বললেন: হ্যাঁ, তিনি স্বীয় আরশে রয়েছেন এবং কোন বস্তু তার ইলমের বাইরে নয়।
১৩) ইমাম ইবনে খুযাইমা বলেন: (من لم يقر بأن الله على عرشه استوى فوق سبع سماواته بائن من حلقه فهو كافر يستتاب فإن تاب وإلا ضربت عنقه وألقي على مزبلة لئلا يتأذى بريحه أهل القبلة وأهل الذمة ) ”যে ব্যক্তি স্বীকার করে না যে আল্লাহ্ তা’আলা সপ্তাকাশে স্বীয় আরশে সমুন্নত, সৃষ্টি জগত হতে সম্পূর্ণ আলাদা-সে কাফের। তাকে তওবা করার নির্দেশ দিতে হবে। তওবা না করলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। অতঃপর তার লাশ ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করতে হবে যাতে করে কিবলা ওয়ালা মুসলমানগণ এবং কর প্রদানকারী অমুসলিমগণ তার দূর্গন্ধে কষ্ট না পায়। (ইমাম যাহাবী প্রণীত মুখতাছার উলু দ্রষ্টব্য)
১৪) বড় পীর হিসেবে খ্যাত হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) স্বীয় ‘গুনিয়াতুত্ তালেবীন’ নামক গ্রন্থে বলেন: ‘আল্লাহ্ পাক আরশে সমুন্নত রয়েছেন। রাজত্ব নিজ আয়ত্তে রেখেছেন। সমস্ত বস্তুকে বেষ্টন করে রেখেছেন। ….. আর এ ভাবে তাঁর পরিচয় দেয়া জায়েজ নয় যে, তিনি প্রত্যেক স্থানে বিরজমান; বরং বলতে হবে তিনি আসমানে আরশের উপর রয়েছেন যেমনটি তিনি (নিজেই) বলেছেন: الرحمن على العرش استوى “রহমান (আল্লাহ্) আরশে সমুন্নত”। (ত্বা-হা/৫)
একথা স্বাভাবিক ভাবেই বলতে হবে কোন প্রকার অপব্যখ্যা করে নয়। তিনি যে আসমানে আছেন একথা নবী-রাসলদের প্রতি নাযিলকৃত প্রত্যেক কিতাবেই লিখিত আছে। তবে আরশে তিনি কিভাবে রয়েছেন তার পদ্ধতি কারো জানা নেই।’
১৫) মানুষের সৃষ্টিগত ফিৎরাতও একথা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ তায়ালা আসমানেই রয়েছেন সব স্থানে নয়। এর প্রমাণে আপনি আপনার স্নেহের কচি শিশুকে প্রশ্ন করুন- আল্লাহ্ কোথায়? দেখবেন তার পবিত্র মুখ থেকে জবাব বেরুবে, ‘উপরে’। বা সে তার কচি আঙ্গুল উঠিয়ে উপর দিকেই ইশারা করবে, অর্থাৎ তিনি (আল্লাহ্) আকাশে রয়েছেন, সব জায়গাতে নয়। আরও বহু আয়াত ও হাদীস রয়েছে যেগুলো দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় আল্লাহ তায়ালা সব জায়গায় বিরাজমান নন। বরং তার ক্ষমতা, রাজত্ব, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, জ্ঞান, দৃষ্টি ইত্যাদি সর্বত্র ও সব কিছুতে বিরাজমান। কিন্তু তিনি স্বত্বাগতভাবে অবস্থান করেন, সাত আসমানের উপর আরশে আযীমে।
সম্মানিত পাঠক!
এই হল কুরআন-হাদীস এবং সালফে সালেহীনের আকিদাহ্ ও বিশ্বাস যা সংক্ষেপে উদ্ধৃত করা হল। যার সার সংক্ষেপ হল- মহান আল্লাহ্ আরশে রয়েছেন তিনি সর্বত্র সবকিছুতে বিরাজিত নয়। আর এটাই হল বিশুদ্ধ আকীদা।
একটি সংশয় নিরসন:
================
কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ্ বান্দার ‘সাথে’ রয়েছেন বলা হয়েছে। এর অর্থ এ নয় যে তিনি তাদের সাথে মিলিত ও সংযুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। কেননা এরূপ অর্থ পূর্বসূরী বিদ্বানগণ কেহই করেন নি। পক্ষান্তরে এটা ভাষাগতভাবেও আবশ্যক নয়। আল্লাহ্ তা’আলা ‘সাথে’ থাকার ব্যাখ্যা নিজেই দিয়েছেন। যেমন- তিনি বলেন: وهو معكم أين ما كنتم والله بما تعملون بصير “তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সাথেই রয়েছেন। আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্মের সম্যক দ্রষ্টা।” (হাদীদ /
৪) অর্থাৎ তাঁর দৃষ্টির মাধ্যমে তিনি আমাদের সাথে আছেন, স্ব অস্তিত্বে নয়। হযরত মুসা ও হারূন (আঃ)কে আল্লাহ্ ফেরাউনের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন: إنني معكما أسمع وأرى “আমি তোমাদের সাথেই রয়েছি শুনছি ও দেখছি।” (সূরা ত্বা-হা/ ৪৬) অত্র আয়তে আল্লাহ্ পাক সাথে থাকার অর্থ নিজেই করেছেন দেখা ও শোনার মাধ্যমে।
অর্থাৎ আমি তোমাদের সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী। যেমন- সাধারণভাবে আমরা বলে থাকি ‘আপনি উমুক কাজটি করুন আমরা আপনার সাথে আছি’। অর্থাৎ আমরা আপনাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করব। যেমন- টেলিফোনে কথা বলার সময় একজন অপরজনকে বলে থাকে: কে আপনি আমার সাথে? জবাবে বলে আমি উমুক আপনার সাথে। অথচ এখানে দুজন অঙ্গা-অঙ্গী হয়ে থাকে না। দু’জন দু’দেশ থেকে কথা বলে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে সাথে থাকার অর্থ মিশে থাকা নয় বরং মহান আল্লাহ্ সেই আরশে আ’যীমে থেকেই তাঁর সাহায্য-সহযোগিতা, দেখা-শোনা ও জ্ঞানের মাধ্যমে আমাদের সাথে রয়েছেন। তিনি অসীম ক্ষমতাবান এবং যা চান তাই করতে পারেন।
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে হক জানা ও তা মানার তাওফীক দিন। আমীন।
যুগে যুগে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ওলামায়ে কিরাম তথা আমরা যাদের উত্তর সূরীঃ
=============*****************************=========================
*ইমামে আযম আবু হানিফা (রাঃ)ইঃ(150হিঃ)*ইমাম মালেক(রাঃ)ইঃ (179হিঃ)*ইমাম শাফেয়ী(রাঃ)ইঃ (204হিঃ)*ইমাম আহামাদ(রাঃ)ইঃ( 241 হিঃ)*
এবং এলমে নাহু-ছরফ এর ইমামগন যেমন ছিবওয়াই , আখফশ , ফারাবী ,ইত্যাদি
ইমাম যুন্নুন মিশরী(রাঃ)ইঃ (245 হিঃ)*ইমাম বুখারী(রাঃ)ইঃ (256 হিঃ)* ইমাম তাবারী(রাঃ)ইঃ(310হিঃ)*ইমাম জুয্যাজ(রাঃ)ইঃ( 311 হিঃ)* ইমাম তাহাবী(রাঃ)ইঃ(321 হিঃ)*ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী(রাঃ)ইঃ(324হিঃ)*ইমাম মাতুরিদী(রাঃ)ইঃ(333 হিঃ)*হাফেয ইবনু হিব্বান (রাঃ)ইঃ(354হিঃ)*আবু ওসমান মাগরিবী(রা)ইঃ(373হিঃ) *হাফেয আবু বাকর কেলাবাযী(রাঃ)ইঃ (385হিঃ)*ইমাম খাত্তাবী(রাঃ)ইঃ(388 হিঃ)*
হাফেয হালিমী(রাঃ)ইঃ (403 হিঃ)*সাইফুস সুন্নাহ বাকেল্লানী (রাঃ)ইঃ(403 হিঃ)*ইমাম সাহল নিশাপুরী(রাঃ)ইঃ(404হি:)*ইমাম ইবনে ফুরেক আশয়ারী (রাঃ)ইঃ(406হিঃ)*ইমাম আবু আলি মারজুকী (রাঃ)ইঃ(421হিঃ)*হাফেয ইবনে বাত্তাল মালেকী(রাঃ)ইঃ (449 হিঃ)*হাফেয বায়হাকী(রাঃ)ইঃ(458 হিঃ)*ইমাম আব্দুল কারিম কুশায়রী(রাঃ)ইঃ(465 হিঃ)*ইমাম সিরাজী(রাঃ)ইঃ(476 হিঃ)*ইমামুল হারামাঈন(রাঃ)ইঃ(478হিঃ)*ফখরুল ইসলাম বাযদুবী (রাঃ)ইঃ( 482হিঃ)*ইমাম রাগেব ইস্পাহানী(রা)ইঃ(502 ইঃ)*হুজ্জাতুল ইসলাম গাজ্জালী(রঃ)ইঃ (505 হিঃ)*ইমাম নাসাফী(রাঃ)ইঃ(508হিঃ)*ইমাম ইবনে আকিল হাম্বলী(রাঃ)ইঃ(513 হিঃ)
*ইমাম ইবনে কুশাইরী(রাঃ)ইঃ(514 হিঃ)*ইবনে রুশদ(রাঃ)ইঃ( 520 হিঃ)*ইমাম নাজমুদ্দিন নাসাফী(রাঃ)ইঃ( 537 হিঃ)*হাফেয ইবনুল আরাবী(রাঃ)ইঃ (543হিঃ)*ইমাম কাজী আয়ায মালেকী(রাঃ)ইঃ( 544 হিঃ)*ইমাম শাহারাস্তানী(রাঃ)ইঃ( 548হিঃ)*ইমাম সিরাজ উদ্দিন আউশী(রাঃ)ইঃ (569হিঃ)*হাফেয ইবনে আসাকের দামেস্কী(রাঃ)ইঃ( 571হিঃ)*ইমাম আহামাদ কাবির রেফায়ী(রাঃ)ইঃ( 578 হিঃ)*মুজাহিদ সালাহ উদ্দিন আইউবী(রঃ)ইঃ(589 হিঃ)*হাফেয ইবনুল যাওজী(রাঃ)ইঃ( 597 হিঃ)*ইমাম হেবাতুল্লাহ মক্কী(রাঃ)ইঃ (599হিঃ)*হাফেয ইবনে আসির(রাঃ)ইঃ( 606হিঃ)*ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী(রাঃ)ইঃ(606 হিঃ)*ইমাম ফাখরুদ্দীন ইবনে আসাকের ইঃ(602 হিঃ)*ইমাম ইব্রাহিম শায়বানী(রাঃ)ইঃ (629 হিঃ)*উছুলী সাইফুদ্দীন আমদী(রাঃ)ইঃ
(631হিঃ)*ইমাম জামালুদ্দীন হুছাইরী(রা)ইঃ(636হিঃ)*সুলতানুল ওলামা(রা)ইঃ(660হিঃ)*ইমাম আবু শামা মাকদিসী(রাঃ)ইঃ (665হিঃ)*ইমাম কুরতুবী মালেকী(রাঃ)(671হিঃ)*ইমাম নববী(রাঃ)ইঃ(676হিঃ)*ইমাম জাকারিয়া কাযবানী(রাঃ)ইঃ(682হিঃ)*ইমাম কারাফী মালেকী(রাঃ)ইঃ(684হিঃ)*ইমাম বায়যাবী(রাঃ)ইঃ (685হিঃ)*হাফেয ইবনে মুনির(রাঃ)ইঃ(695হিঃ)*হাফেয ইবনে আবি যামরাহ(রাঃ)ইঃ(699 হিঃ)*হাফেয ইবনে দাকীক ঈদ(রাঃ)ইঃ(702হিঃ)*ইমাম ইবনে আতাউল্লাহ ইসকান্দারানী(রাঃ)ইঃ (709হিঃ)*ইমাম হাফিজুদ্দীন নাসাফী(রাঃ)ইঃ( 710হিঃ)*ইমাম ইবনে মানযুর আফ্রিকী(রাঃ)ইঃ (711হিঃ)*হাফেয ইবনে জামায়া(রাঃ)ইঃ (733হিঃ)*ইমাম ইবনে যাহবাল(রাঃ)ইঃ (733হিঃ)*ইমাম ইবনুল হায মাগরেবী,মালেকী(রঃ)ইঃ(737হিঃ)*ইমাম খাযেন(রাঃ)ইঃ(741হিঃ)*সম্রাট ইবনে কালাওন(রাঃ)ইঃ(741হিঃ )*হাফেয নাছিরুদ্দীন দামেষ্কী ইঃ (৭৪২হিঃ )* ইমাম তিবী(রাঃ)ইঃ (743হিঃ)*শাইখুল ইসলাম তাকী উদ্দিন সুবকী(রাঃ)ইঃ (756হিঃ)*হাফেয সালাহ উদ্দিন আলায়ী(রাঃ)ইঃ (761হিঃ)*ইমাম ইয়াফেয়ী ইয়ামানী(রাঃ)ইঃ (768হিঃ)*ইমাম ইবনে সুবকী(রাঃ)ইঃ (771হিঃ)*ইমাম কিরমানী(রাঃ)ইঃ (786হিঃ)*ইমাম সাতাবী (রাঃ)ইঃ (790হিঃ)*ইমাম তাফতাযানী(রাঃ)ইঃ (792হিঃ)*ইবনে খালদুন(রাঃ)ইঃ (808হিঃ)
*হাফেয নূরুদ্দিন হাইছামী(রাঃ)ইঃ (808হিঃ)*হাফেয ইরাকী(রাঃ)ইঃ (826হিঃ)*ইমাম তকী উদ্দিন হিসনী(রাঃ)ইঃ (829হিঃ)*শাইখুল ইসলাম হাফেয ইবনে হাজার(রাঃ)ইঃ(852হিঃ)*ইমাম বাদরুদ্দিন আইনী(রাঃ)ইঃ (855হিঃ)*ইমাম জালালুদ্দিন মাহাল্লী(রাঃ)ইঃ(868হিঃ)*ইমাম ইবনে আমিরুল হাজ হানাফী(রাঃ)ইঃ( 879হিঃ)*ইমাম বুরহানুদ্দিন বাকায়ী(রাঃ)ইঃ( 885হিঃ)*ইমাম সানুছী(রাঃ)ইঃ (895হিঃ)*ইমাম রুমী হানাফী(রাঃ)ইঃ (901হিঃ)*ইমাম আসমুনী(রাঃ)ইঃ(902হিঃ)*হাফেয সাখাবী(রাঃ)ইঃ (902হিঃ)*ইমাম খালেদ আযহারী(রাঃ)ইঃ( 905হিঃ)*হাফেয জালালুদ্দীন সুয়ূতী(রাঃ)ইঃ( 911হিঃ)*হাফেয কাস্তাল্লানী(রাঃ)ইঃ (923হিঃ)*হাফেয ইবনে তুলুন হানাফী(রাঃ)ইঃ (953হিঃ)*ইমাম শায়ারানী(রাঃ)ইঃ (973হিঃ)*হাফেয ইবনে হাযার মক্কী(রাঃ)ইঃ (974হিঃ)*ইমাম খাতীব সারবিনী(রাঃ)ইঃ( 977হিঃ)*ইমাম রামলী(রাঃ)ইঃ (1004হিঃ)*
ইমাম মুল্লাহ আলী কারী হানাফী(রাঃ)ইঃ (1014হিঃ)*ইমাম লাক্কানী(রাঃ)(1041হিঃ)*ইমাম ইবনে মুকরী (রাঃ)ইঃ (1041হিঃ) *
ইমাম শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী ইঃ( 1052 হিঃ) *ইমাম ইবনে আল্লান মাক্কী (রাঃ)ইঃ
**********************************************************************************
(1057হিঃ)*ইমাম ইব্রাহীম লাক্কানী মালেকী(রাঃ)ইঃ (1078হিঃ)*ইমাম কামাল উদ্দিন বিয়াদী হানাফী(রাঃ)ইঃ (1098হিঃ)*ইমাম মুহিব্বুল্লাহ বিহারী (রাঃ)ইঃ (1119হিঃ)*ইমাম আব্দুল বাকী যুরকানী(রাঃ)ইঃ (1122হিঃ)*ইমাম আলাভী হাদ্দাদ হাদারামী(রাঃ)ইঃ (1132হিঃ)*ইমাম সিন্দী হানাফী(রাঃ)ইঃ (1138হিঃ)*ইমাম আব্দুল গণী নাবলুসী(রাঃ)ইঃ( 1143হিঃ)*ইমাম দারদিরী
মালেকী(রাঃ)ইঃ (1201হিঃ)*হাফেয মুরতাদা যুবায়দী(রাঃ)ইঃ (1205হিঃ)*ইমাম খালিল মুরাদী(রাঃ)ইঃ (1206হিঃ)*শাহ আব্দুল আযীজ মুহাদ্দীস দেহলভী (রাঃ)ইঃ (1239হিঃ)*ইমাম ফকীহ ইবনে আবেদীন শামী(রাঃ)ইঃ(1252)হিঃ*ইমাম আলূছী বাগদাদী(রাঃ)ইঃ( 1270হিঃ) *ইমাম খালেদ নক্সেবন্দী(রাঃ)ইঃ( 1299হিঃ)* ইমাম আঃহাই লাকনাভী(রাঃ) (1304হিঃ) *ইমাম আহম্মাদ রেযা খাঁন বেরলভী(রাঃ)ইঃ(1340হি) * ইমাম নাবহানী (রাঃ)ইঃ(1350হিঃ) *মুফতী সায়্যিদ মুহামমদ আমীমুল ইহসান(রাঃ) ( ইঃ1394হিঃ)*শাহ সূফী নেছারুদদীন আহমাদ
ছারছীনাভী(রাঃ) (1952ইং) *শাহ সূফী আবূ জাফর মুহামমাদ ছালিহ ছারছীনাভী (রাঃ) (1990ইং )*সায়্যিদ আলাভী মালিকী মাককী(রাঃ) *প্রফেসর বোরহান উদদীন ওয়েসী আহমাদী(রাঃ)*শেরে বাংলা আযীযুল হক(রাঃ)*
*শাইখুল আযহারগণের তালিকা(যারা আহলুস্সুন্নাত ওয়াল জামাতের ঝান্ডাবাহী ছিলেন)-
************************************************************************************
ঃ*মুহাম্মাদ আল খারাসী ইঃ(1690ইং)*ইব্রাহীম আল বারমাভী ইঃ(1694ইং)*মুহাম্মাদ আন্নাশ্রাতী ইঃ(1708ইং)*আব্দুল বাকী ইঃ(1719ইং)*মুহাম্মাদ শানান ইঃ(1721ইং)*ইব্রাহীম আল ফাইওমী ইঃ(1725ইং)* *মুহাম্মাদ আল হাফনী ইঃ(1767ইং)*আব্দুর রাঊফ আস সাজানী ইঃ( 1768ইং) *আব্দুল্লাহ আশশাব্রাভী ইঃ(1775ইং)*আহমাদ আদ দামানহুরী ইঃ(1776ইং)*আহমাদ আল আরূসী ইঃ(1793ইং)*আব্দুল্লাহ আশ্ শারকাভী ইঃ(1812ইং)*মুহাম্মাদ আশ্ শানওয়ানী ইঃ(1818ইং)*মুহাম্মাদ আল-আরূসী ইঃ(1829ইং)* আহমাদ আদ-দামহূজ়ী ইঃ(1830ইঃ )* হাসান আল আত্তার ইঃ(1834ইঃ) * হাসান আল কাওসীনী ইঃ (1838ইং)* আহমদ আব্দুল আল-জাওয়াদ আল-সাকতী ইঃ(1848ইং)* ইব্রাহীম আল-বাজূরী ইঃ(1860ইং) *শামসুদ্দীন আল-ইনবাবী ইঃ(1892ইং)*মোহাম্মদ আল-মাহদী আল –আব্বাসী ইঃ(1898ইং)*মোস্তাফা মোহাম্মদ আল-আরূসী ইঃ(1876ইং)*সালিম বিন আবি ফারাজ ইঃ(1916ইং)*হাসূনা আল-নাওয়াভী ইঃ(1924ইং)*আব্দুর রহমান আল-নাওয়াভী ইঃ(1900ইং)*আলী মোহাম্মদ আল-বাবলাভী ইঃ(1905ইং)* আব্দুর রাহমান আশ-শারবীণী ইঃ(1926ইং)* মোহাম্মদ আবুল ফজল আলজীজাভী ইঃ(1928ইং) * মোহাম্মদ আল-আহমদ আদ-দাওয়াহিরী ইঃ(1944ইং) * মোহাম্মদ মোস্তাফা আল-মোরাগী ইঃ(1945ইং) *আব্দুল মাজীদ সালিম ইঃ(1945ইং) * মোস্তাফা আব্দুর রাজ্জাক ইঃ(1947ইং)* মোহাম্মদ মামুন আশ-শাণাবী ইঃ(1950ইং, ) * মোহাম্মদ খাদির হাসান ইঃ(1958ইং)* *ইব্রাহীম ইব্রাহীম হামরূশ ইঃ(1960ইং) মাহমুদ শালতুত ইঃ(1963ইং)*হাসান মামুণ ইঃ(1973ইং)*আব্দূর রাহমান তাজ ইঃ(1975ইং)*মুফতি আযাম হিন্দ মো্স্তাফা রেজা খান* মোহাম্মদ আল ফাহহাম * মোহাম্মদ আব্দুর রাহমান বিছার *আব্দুল হালীম মাহমুদ ইঃ (1978ইং)* জাদুল হাক আলী জাদুল হাক ইঃ(1996ইং) রাদিআল্লাহু আনহুম।
মহান আল্লাহ সমপর্কে আক্বিদা
========================
১. একমাত্র মহান আল্লাহই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা।
আকাশ, পৃথিবী, আলো-বাতাস, আগুন-পানি, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারা, ছায়াপথ, গাছ, শষ্য, ফল, ফুল, তৃণ-লতা, ভাল-মন্দ, মানুষ, জ্বীন, সাদা-কালো ইত্যাদি দৃশ্য ও অদৃশ্যমন, আমাদের জানা-অজানা, আবিস্কৃতকিংবা অনাবিস্কৃত সব কিছুরই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা হলেন মহন আল্লাহ তা‘য়ালা।এক সময় এসব কোন কিছুরই অস্তিত্ব কোথাও ছিল না। আল্লাহ তা‘য়ালা সবকিছুকে সৃষ্টি করলেন। অস্তিত্ব প্রদান করলেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনেইরশাদ হয়েছে: : اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْ অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘য়ালাইসব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। (সূরা ঝুমারঃ ৬২)اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘য়ালাআসমান ও জমিন এবং এতোদভয়ের মধ্যেবর্তী সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। ( সূরাআসসাজদাহ: ৪)
২. আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।
তাঁর কোন শরীক বা অংশিদার নেই।কোন ভাবেই তাঁর সাথে কারো কোন অংশিদারী নেই। তিনি কারো কাছে কোন কিছুরমুখাপেক্ষি নন। কারো থেকে জন্ম গ্রহন করেননি এবং তাঁর পবিত্র স্বত্তা থেকেকোউ জন্ম গ্রহনও করেনি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে: قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (1) اللَّهُ الصَّمَدُ (2) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ (3) অর্থাৎ- ১.হে নবী আপনি বলে দিন, তিনি আল্লাহ এক। ২.অল্লাহ অমুখাপেক্ষী। ৩•তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। (সূরা ইখলাসঃ ১-৩)
৩. তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।
অতীতে কেউ কখনো তাঁর সমকক্ষছিল না এবং ভবিষ্যতেও কেউ তাঁর সমকক্ষ কখনো হবে না। তিনি অতুলনীয়। তাঁরসাথে কারো কোন তুলনাই চলে না। তিনিই সর্বোচ্চ ও সর্ববৃহৎ। পবিত্র কুরআনেইরশাদ হয়েছে:لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيঅর্থাৎ-তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি সর্ব বিষয় শোনেন ও দেখেন। (সূরা শুরাঃ১১)وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌঅর্থাৎ- তাঁর (আল্লাহর)সমতুল্য কেউ নেই। (সূরা ইখলাসঃ ৪)
৪. তিনি অনন্ত-অনাদী কাল ব্যাপী আছেন, চিরকাল থাকবেন।
তার আদিও নেই অন্তও নেই। তিনিই একমাত্র চিরন্তন।চিরকালব্যপী একমাত্র তিনিই আছেন ও থাকবেন। حى القيوم অন্য কিছু বা কেউ এমন ছিল না বাথাকবে না। সারা জাহানের সব কিছুই নশ্বর। কেবল তিনিই অবিনশ্বর। পৃথিবীরকোন সৃষ্টি যেমনঃ আগুন, পানি, গ্রহ, নক্ষত্র, চন্দ্র, সূর্য, কোন শক্তিইত্যাদি কোন কিছুই চিরন্তন কিংবা চিরস্থায়ী নয়। একমাত্র মহান আল্লাহছাড়া অন্য কোন কিছুকে চিরন্তন কিংবা চিরস্থায়ী মনে করা বা বিশ্বাস করাস্পষ্ট শিরক বা কুফরী। কেউ যদি কোন অগ্নিশিখাকে কিংবা কোন শক্তিকে চিরন্তনবলে একান্তভাবে বিশ্বাস করে তবে সে আর মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারেনা।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে:
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
অর্থাৎ-তিনিই প্রথম, তিনিইসর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও তিনিই অপ্রকাশমান এবং তিনিই সব বিষয়ে জ্ঞাত। (সূরা হাদীদঃ ০৩)
ولا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ لا إِلَهَإِالا هُوَ كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ الا وَجْهَهُ لَهُ الْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
অর্থাৎ-তোমরা (তোমাদের সৃষ্টিকর্তা, প্রতিপালনকারী, জীবন ও মৃত্যু দানকারী, রিঝিকদাতা, ধন-সম্পদ প্রদানকারী ইত্যাদিহিসেবে) মহান অল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশিদার হিসেবে ডেকোনা বা মেনেনিওনা। তোমাদের মা‘বুদ বা উপাস্য একমাত্র তিনি আল্লাহ। এমাহাবিশ্বের সব কিছুই এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে একমাত্র তিনিআল্লাহছাড়া। এ জগতের যাবতীয় আইন প্রণয়নের ক্ষমতা একমাত্রতাঁরই। কেননা প্রত্যেকেই এক সময় তাঁর নিকটেই প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরাক্বসছঃ ৮৮)
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ. وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَام
অর্থাৎ- মহাবিশ্বের সকল কিছুই ধ্বংসশীল, কেবলআপনার মহিমাময় ও মহানুভব প্রতিপালক ছাড়া। (সূরা আর রাহমানঃ ২৬-২৭)
৫.সকল অহংকারের একমাত্র মালিক তিনি।
সকল দোষ হতে তিনি পূত-পবিত্র। প্রকৃতসকল সম্মান ও মর্যাদা তাঁরই। সকল মান সম্মানের প্রকৃত মালিকও তিনি। এপ্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
অর্থাৎ-তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিইএকমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপশালী, মহামন্বিত। তারা যাকে অংশিদার করে আল্লাহ তায়ালা তা থেকেপবিত্র। (সূরা হাশরঃ ২০)
হাদিসে কুদ্সিতে তিনি স্বয়ং ঘোষণা করেছেনঃ
قال رسول الله صلى الله عليه و سلم \\\" قال الله عزوجل الكبرياء ردائي والعظمة إزاري فمن نازعني واحدا منهما قذفته في النار
অর্থাৎ- রাসূল সা•বলেন, মহান আল্লাহ তা‘য়ালা বলেছেনঃ অহংকার আমার কুদরাতী চাদর তুল্য। আরসম্মান আমার কুদরাতী পরিধেয়। যে আমার এসব কিছু নিয়ে টানাটানি করবে তাকেআমি জাহান্নামের শান্তি আস্বাদন করাব। (আবু দাউদ শরীফ)
৬. তিনি নিরাকার।
আমাদের জানা অজানা কোন কিছুর সাথেই তাঁর মহান স্বত্তার কোন ধরণের সাদৃশ্যচলেনা। তিনি নিরাকার। আমরা তাঁকে নির্দিষ্ট কোন অবয়বে বা আকারে কল্পনাওকরতে পারি না। এ ব্যাপারে রাসূল সা.বলেছেন: تفكروا في آلآء الله ولاتتفكروا في الله অর্থাৎ- তোমরা আল্লাহর সৃষ্টি বা নিদর্শন এর মধ্যেগবেষণা কর আল্লাহ সম্পর্কে নয়। (আল মু‘জেম আল ও-সেতী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৫০পৃঃ)
৭. তিনি সকল বিচারকের বিচারক।
তিনি মহা রাজাধিরাজ। তিনি সকল বাদশাহরবদশাহ। কুরআনে ইরশাদ قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء অর্থাৎ- হে নবী আপনি সকলকে জানিয়ে ঘোষণা করুন; ‘আল্লাহইহলেন সকল বাদশাহের প্রকৃত বাদশাহ। যাকে ইচ্ছা এ পৃথিবীর কোন অংশের সাময়িকরাজত্ব দান করেন’। (সূরা আল ইমরানঃ ২৬) وَأَنتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِينَ অর্থাৎ- আপনি (আল্লাহ) হলেন সকল বিচারকের বিচারক। (সূরাহুদঃ ৪৫)
৮. মহা-পরাক্রমশালী অসীম ক্ষমতাবান একমাত্র পবিত্র স্বত্ব।
তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। ইরশাদ হয়েছেঃ
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ
অর্থাৎ-নিশ্চয়ই আপনার প্রভূ মহাশক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী। (সূরা হুদঃ ৬৬) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে:
إِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ
অর্থাৎ- নিশ্চই আপনার প্রতিপালক তিনি ইচ্ছাকরেন তাই করে থাকেন। (সূরা হুদঃ ১০৭)
৯. তিনিই একমাত্র আইনদাতা।
এপৃথিবীতে নিজেদের খেয়াল খুশিমত কোন আইন রচনার অধিকার কোন মানুষের নেই এবংপ্রয়োজনও নেই। এ পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত সারাদুনিয়ার মানুষের চলার জন্য, ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যাবস্থা পরিচালনা, অন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায়ে রাখা, অর্থনৈতিক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করাইত্যাদি সব বিষয়ের প্রয়োজনীয় সকল বিধানাবলী অল্লাহ তা‘য়ালা পবিত্রকুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে জগতবাসিকে জানিয়ে দিয়েছেন।
কুরআন সুন্নাহরমধ্যে স্পষ্ট বর্ণনা নেই এমন কোন আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রেওনতুন আইন কুরআন সুন্নাহর মূলনীতি বজায়ে রেখে কুরআন সুন্নাহ ঘোষিতনির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে আইন রচনা করতে হবে। কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী নাকরে নিজেদের খেয়াল খুশি মত আইন রচনা করলে তা কুরআন সুন্নাহকে অস্বীকারকরার নামন্তর। আর এটাই হল কুফরী। এ প্রসঙ্গে তিনি পবিত্র কুরআনে অসংখ্যআয়াত নাঝিল করেছেন। মহান আল্লাহ তা‘য়ালা বলেনঃ
ক. مَّا فَرَّطْنَا فِي الكِتَابِ مِن شَيْءٍ অর্থাৎ-আমি এ কুরআনে কোন কিছুর বর্ণনাই বাদ দেইনি। (সূরা আনআমঃ ৩৮)
খ.أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللّهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ
অর্থাৎ- তারা কিঅন্ধকার ও মুর্খ যুগের শাসন ব্যবস্থা চায়? অথচ শান্তিকামীদের জন্য আল্লাহঅপেক্ষা উত্তম আইন প্রণয়নকারী আর কে আছে? (সূরা মায়েদাঃ ৫০)
গ. وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থাৎ- রাসুল সা.তোমাদের জন্য (মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিধি-বিধান সহ অন্যান্য) যা কিছুনিয়ে এসেছেন তার পুরোটাই অনুসরণ কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক।আর জেনে রাখ আল্লাহ তাঁর অবাধ্যদেরকে কঠোর শাস্তিদাতা। (সূরা হাশরঃ ০৭)ঘ. إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ অর্থাৎ-আল্লাহই একমাত্র আইন দাতা। (সূরা আনআমঃ ৫৭)
১০. তিনিই সকল ক্ষমতার মালিক।
সার্বভৌমত্বে একমাত্র তাঁর।তিনিই সকল ক্ষমতার উৎস। إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ অর্থাৎ-নিশ্চই আপনি সর্বময় ক্ষমতার মালিক। (সূরা আল ইমরানঃ ২৬)وَلَمْ يَكُن لَّهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًاঅর্থাৎ-সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি প্রত্যেকবস্তুকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর সেগুলোকে পরিমিত ও যথাযথ করেছেন (সূরা ফুরকানঃ০২)
১১. সারা জাহানের তিনি প্রতিপালক, জীবন ও মৃত্যু দাতা, রিঝিক দাতাতিনি এক আল্লাহ।
আমাদের জানা অজানা সারা জাহানের একমাত্র প্রতিপালক মহানআল্লাহ তা‘য়ালা। তিনি সকলকে জীবন ও মৃত্যু দান করেন। আমাদের জানা অজানাসকল প্রাণীকে একমাত্র তিনিই রিঝিক দান করেন। মহান আল্লাহ তা‘য়ালা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেনঃ
وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُبِينٍ
অর্থাৎ-আরপৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই , তবে সবার জীবিকারদায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন। তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং সমাপিত হয়, এসব কিছু এ সুবিন্যস্ত কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। (সূরা হুদঃ ৬)
قُلْ مَن رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ قُلِ اللّهُ قُلْ أَفَاتَّخَذْتُم مِّن دُونِهِ أَوْلِيَاء لاَ يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا
অর্থাৎ-জিজ্ঞেস করুন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের প্রতিপালক কে? বলে দিন-আল্লাহ।বলুন, এর পরও কি তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে অভিভাক হিসেবে গ্রহন করবেযারা নিজেদেরই ভালো-মন্দ কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না? (সূরা আর্ র‘য়াদঃ১৬)
كَيْفَ تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنتُمْ أَمْوَاتاً فَأَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
অর্থাৎ-তোমরা কিভাবে আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী কর? অথচ তোমরা ছিলে মৃত্যুঅতপর তিনিই (আল্লাহ) তেমাদেরকে জীবন দান করেছেন। আবার মৃত্যু দান করবেন।পূনরায় জীবিত করবেন। শেষটায় তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরাবাকারাঃ ২৮)
هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ
অর্থাৎ- তিনি (আল্লাহ) মহানসত্তা যিনি তোমাদেরকে জীবনদান করেন এবং মৃত্যু বরণ করান। (সূরা গাফেরঃ৬৮)
وَاللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَاء بِغَيْرِ حِسَاب
অর্থাৎ-তিনিআল্লাহ যাকে ইচ্ছা অসীম রিঝিক দান করেন।
قُلْ مَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ
অর্থাৎ হে নবী আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, আসমান ওজমিনে আল্লহ ছাড়া অন্নদাতা আর কে আছে? (সূরা ইউনুছঃ ৩১)
وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
অর্থাৎ-নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘য়ালাউত্তম রিঝিক দাতা। (সূরা হজ্জঃ ৫
১২/
আল্লাহ এক অদ্বিতীয়
তাঁর কোন শরীক নেই
তাঁর কোন বংশ পরিক্রমা নেই . قل هو الله احد الله الصمد لم يلد ولم يولد ولم يكن له كفوا احد
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য জিসিম (শরীর)সাব্যস্ত করা কুফুরী।পবিত্র কোরআনে যে সকল আয়াতে আল্লাহর হাত. মুখ ইত্যাদি হওয়ার বর্ননা আসছে .যেমন كل شئ هالك الا وجه সেখানে কোন প্রকরের ব্যখ্যা করা ব্যতিরেকেই ঈমান আনা , এর প্রকৃত অর্থ আল্লাহর উপর ছেড়ে দেয়া.
তিনি সকল সৃষ্টির স্রষ্টা . এ সৃষ্টির মধ্যে অন্য কেউ অংশিদারীত্ব নেই , তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকরী
১৩/
তিনিই আরশেই সমাচিন ثم الاستوى على العرش
তবে কোথায় কি ভাবে সমাচীন তঁার খুজাখুজি ব্যতিরেকে শুধূ মাত্র আরশেই সমাচিন এ ভাবেই ঈমান বা বিশ্বাস করা
এ সমপকে উপরে বিস্তাীত আলোচনা করা হয়েছে .
১৪/
এক মাত্র আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন কাদীম (অনাদী) । কোন সৃষ্টির জন্য " কাদীম " সাব্যস্ত করা যাবেনা । যেমন পৃথিবীকে কাদীম (অনাদী) বলা।
১৫/
আল্লাহ তায়লার জন্য স্থান ,কাল ,দিক ইত্যাদী নির্ধারন করা হারাম।এগুলি সব কিছুই তাঁর সৃষ্টি।
**সায়্যিদুনা রাসুল পাক(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে সম্পৃক্তঃ**
===================**************************************************
তিনি সকল সৃষ্টি জীব থেকে শ্রেষ্ট ।তিনি শেষ ও সর্ব শ্রেষ্ট নবী . তিনি আখেরী নবী .
এ সমপর্কে ২য় পর্বে আলোচনা করা হবে ইনশা আল্লাহ >
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
নুরুলগনি ইসলামী একাডিমী
কাটাছরা
মিরসরাই
চট্গ্রাম
আকীদার অর্থ
=========
আভিধানিক দিক থেকে আকীদাহ শব্দটি উৎকলিত হয়েছে, আল-আকদু, আতাওসীকু, আল-ইহকামু, বা দৃঢ় করে বাঁধা বুঝানোর অর্থে।
পরিভাষায় আকীদাহ বলতে বুঝায়: এমন সন্দেহাতীত প্রত্যয় এবং দৃঢ় বিশ্বাসকে যাতে বিশ্বাসকারীর নিকট কোন সন্দেহের উদ্রেক করতে পারে না।
তাহলে ইসলামী আক্বীদা বলতে বুঝায় : মহান আল্লাহর উপর দৃঢ় ঈমান বিশ্বাস রাখা, অনিবার্য করণেই *** আল্লাহর একত্ববাদ ও তাঁর আনুগত্যকে মেনে নেওয়া এবং *** ফিরিশতা, *** আসমানী কিতাবসমুহ, সকল **** রাসূল, **কিয়ামত দিবস, **তাকদীদের ভালো মন্দ, **কুরআন হাদীসে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত সকল গায়েবী বিষয় এবং যাবতীয় সংবাদ, অকাট্যভাবে প্রমাণিত সকল তত্বমূলক বা কর্মমূলক বিষয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত:
=====================
যারা সত্যিকার অর্থে রসুল সাঃ এর প্রকৃত সুন্নাত ও আদর্শ পালন কল্পে , যাবতীয় নবআবিষ্কৃত বেদআত,
ও কূসংষ্কার থেকে নিজেকে দূরে রেখে এক মাত্র সুন্নতের উপরই সূদৃঢ থেকেছে তারাই আহলুস সুন্নাহ,
আর যারা জামাতে ছাহাবা এর
অনুগত তাদেরকে আল জামা‘আত বলা হয় এই মর্মে যে, তাঁরা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে, দ্বীনের ব্যাপারে বিচ্ছিন্ন না হয়ে হিদায়াতপ্রাপ্ত ইমামদের ছত্রছায়ায় একত্রিত হয়েছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধাচারণে লিপ্ত হন নি, এছাড়া যে সমস্ত বিষয়ে আমাদের পূর্বসূরী সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণ একমত হয়েছেন তারা তাঁর অনুসরণ করে, তাই এ সমস্ত কারণেই তাঁদেরকে আল-জামা‘আত বলা হয়।
এছাড়া রাসূলের সুন্নাহর অনুসারী হওয়ার কারণে কখনো তাদেরকে কখনো আহলুল আসার, কখনো অনুকরণকারী দল, বা সাহায্যপ্রাপ্ত ও সফলতা লাভকারী দল বলেও আখ্যায়িত করা হয়।
ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণের মূল উৎস এবং উহার প্রমাণপঞ্জি উপস্থাপনের পদ্ধতি
===================================================
১. ইসলামী আকীদা গ্রহণের মূল উৎস কুরআনে করীম, সহীহ হাদীস ও সালফে-সালেহীনের ইজমা।ও কেয়াস ,
২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত সহীহ হাদীস গ্রহণ করা ওয়াজিব, এমনকি তা যদি খবরে আহাদও হয়।
৩. কুরআন-সুন্নাহ বুঝার প্রধান উপাদান, কুরআন সুন্নারই অন্যান্য পাঠ, যার মধ্যে রয়েছে অপর আয়াত বা হাদীসের স্পষ্ট ব্যাখ্যা, এছাড়া আমাদের পূর্বসূরী সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন এবং আমাদের সম্মানিত ইমামগণ প্রদত্ত ব্যাখ্যা। আর আরবদের ভাষায় যা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত। তবে ভাষাগত দিক থেকে অন্য কোন অর্থের সম্ভাবনা থাকলেও সাহাবা, তাবেয়ীনদের ব্যাখ্যার বিপরীত কোন ব্যাখ্যা গ্রহণ করা যাবে না। সম্ভাব্য কোন অর্থ এর বিপরীত কোন অর্থ বহন করলেও তাঁদের ব্যাখ্যার উপরেই অটল থাকতে হবে।
৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের মূল বিষয়বস্তুসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করেছেন। এজন্য দ্বীনের মধ্যে নতুন করে কোন কিছু সংযোজন করার কারও অধিকার নেই।
৫. প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সর্ব বিষয়ে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সামনে আত্মসমর্পন করা। সুতরাং নিজের মানসিক ঝোঁক বা ধারণার বশঃবর্তী হয়ে, আবেগপ্রবণ হয়ে অথবা বুদ্ধির জোরে বা যুক্তি দিয়ে কিংবা কাশফ অথবা কোন পীর-উস্তাদের কথা, অজুহাত দিয়ে কুরআন সুন্নাহর কোন কিছুর বিরোধিতা করা যাবে না।
৬. কুরআন, সুন্নার সাথে জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিবেকের কোন সংঘাত বা বিরোধ নেই। কিন্তু কোন সময় যদি উভয়ের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয় এমতাবস্থায় কুরআন সুন্নাহর অর্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৭. আকীদা সংক্রান্ত বিষয়ে শরী‘আতসম্মত ভাষাও শব্দ প্রয়োগ করা এবং বিদ‘আতী পরিভাষাসমূহ বর্জন করা
আর সংক্ষেপে বর্ণিত শব্দ, বাক্য বা বিষয়সমূহ যা বুঝতে ভুল-শুদ্ধ উভয়েরই সম্ভাবনা থাকে, এমতাবস্থায় বক্তা থেকে ঐ সমস্ত বাক্য বা শব্দের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া,
তারপর তন্মধ্য থেকে যা হক বা সঠিক বলে প্রমাণিত হবে তা শরী‘আত সমর্থিত শব্দের মাধ্যমে সাব্যস্ত করতে হবে, আর যা বাতিল তা বর্জন করতে হবে।
৮. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ, ভ্রুল-ত্রুটির উর্ধ্বে। আর সামষ্টিকভাবে মুসলিম উম্মাহও ভ্রান্তির উপরে একত্রিত হওয়া থেকে মুক্ত। কিন্তু ব্যক্তি হিসাবে (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত) এ উম্মতের কেউই নিষ্পাপ নন।
আমাদের সম্মানিত ইমামগণ এবং অন্যান্যরা যে সব বিষয়ে মত পার্থক্য করেছেন, সে সমস্ত বিষয়ের সূরাহার জন্য কুরআন ও সুন্নার দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তবে উম্মতের মুজতাহিগণের যে সমস্ত ভুল-ত্রুটি হবে সেগুলোর জন্য সঙ্গত ওজর ছিল বলে ধরে নিতে হবে। [অর্থাৎ ইজতিহাদী ভুলের কারণে তাঁদের মর্যাদা সমুন্নতই থাকবে এবং তাঁদের প্রতি সুন্দর ধারণা পোষণ করতে হবে।]
কারন তাঁরা তাদের ইজতেহাদে ভূল করলে ও একগুন ছাওয়াবের অধিকারী হবে , আর ছহীহ হলে ডাবল ছাওয়াব পাবেন ,
৯. এ উম্মতের মধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান সমৃদ্ধ ও ইলহামপ্রাপ্ত অনেক মনীষী রয়েছেন। সুস্বপ্ন সত্য এবং তা নবুওয়াতের একাংশ। সত্য-সঠিক দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের বাণী সত্য এবং তা শরী‘আত সম্মতভাবে কারামত বা সুসংবাদের অন্তর্ভুক্ত। তবে এটি ইসলামী আকীদা বা শরী‘আত প্রবর্তনের কোন উৎস নয়।
১০. দ্বীনের কোন বিষয়ে অযথা তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া অত্যন্ত জঘন্য ও নিন্দনীয়।
তবে উত্তম পন্থায় বিতর্ক বৈধ। আর যে সমস্ত বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া থেকে শরী‘আত নিষেধ করেছে, তা থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য। এমনিভাবে অজানা বিষয়ে বিবাদে লিপ্ত হওয়াও মুসলিমদের জন্য অনুচিৎ, বরং ঐ অজানা বিষয় সর্বজ্ঞ ও সর্বজ্ঞানী আল্লাহর উপর সোপর্দ করা উচিৎ।
১১. কোন বিষয়ে বর্জন গ্রহণের জন্য ওহির পথ অবলম্বন করতে হবে। অনুরূপভাবে কোন বিষয় বিশ্বাস বা সাব্যস্ত করার জন্যও ওহীর পদ্ধতির অনুসরণ করতে হবে। সুতরাং বিদ‘আতকে প্রতিহত করার জন্য বিদআতের আশ্রয় নেয়া যাবে না। আর কোন বিষয়ের অবজ্ঞা ঠেকাতে অতিরঞ্জন করার মাধ্যমে মোকাবেলা করা যাবে না। অনুরূপ কোন বিষয়ের অতিরঞ্জন ঠেকাতে অবজ্ঞাও করা যাবে না। [অর্থাৎ যতটুকু শরী‘আত সমর্থন করে ততটুকুই করা যাবে]
১২. দ্বীনের মধ্যে নব সৃষ্ট সব কিছুই বিদ‘আত এবং প্রতিটি বিদ‘আতই হলো পথভ্রষ্টতা। আর প্রত্যেক পথভ্রষ্টতার পরিণতিই জাহান্নাম।
অন্ধকারের ধূম্রজালে আবদ্ধ,ভ্রান্তির শৃংঙ্খলে বেষ্টিত,কুফর ও শিরকের দাবানলে দগ্ধ,পৃথিবীর মোহে আসক্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ় দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের দিশা দানের জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুক্তির দূত ,পথ হারা মানুষের সুপথের দিশারী ,রাহামাতুল্লিল আলামীন সায়্যিদুনা মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাঁর পক্ষ থেকে রাসূল হিসাবে এ ধরাধামে পাঠিয়েছেন ।
তাঁর আগমনের পর হক-বাতিলের সঠিক পরিচয় সকলের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠে । অসত্যের সকল নিশানা থেকে সত্য তার সর্বাঙ্গ সুন্দর রূপ নিয়ে বের হয়ে আসে।
মহান আল্লাহর অপার কৃপায় ও তাঁর বন্ধুর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে দলে দলে মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহান করে । মানব হিতৈষী এ মহা মানব দীর্ঘ ৬৩ বছর এ পৃথিবীতে জীবন যাপন করে মানুষকে সত্যপথের সন্ধান দিয়ে বন্ধুর মিলনে গমন করেন অনন্ত জগত আখিরাতের পানে।
সঠিক পথের পাথেয় হিসাবে উম্মাতের কাছে রেখে যান দুটি মহা মূল্যবান সম্পদ তথা পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহ।হাদীস শরীফে এসেছেঃ
إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : تركت فيكم أمرين لن تضلوا ماتمسكتم بهما كتاب الله و سنة نبيه (صدق رسول الله صلى الله عليه وسـلم )
প্রত্যেকটি জ্ঞানকে গ্রন্থ থেকে মন্থন করার জন্য শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য । তাইতো মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন নাযিল করে ক্ষান্ত হননি।বরং তাঁর সাথে পবিত্র গ্রন্থকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সায়্যিদুনা রাসূল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে শিক্ষক হিসাবে প্রেরণ করেছেন । যিনি সুন্নাহের মাধ্যমে উহাকে শিক্ষা দিয়েছেন।
ঠিক তেমনি মহা মূল্যবান দুটি জিনিস তথা পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহের আলোকে জীবন গঠনের জন্য শিক্ষক বা আদর্শ হিসাবে সায়্যিদুনা রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেখে গিয়েছেন তাঁর পবিত্র বংশধর ,ছিদ্দীকীন ,সাহাবায়ে কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণকে।যাদের আদর্শ অনুসরনের জন্য আমাদেরকে আদেশও করেছেন।
** তাঁর পবিত্র বংশধরগণের আদর্শ অনুসরন করা সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال : رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فى حجته يوم عرفة وهو على ناقته القصواء يخطب فسمعته يقول:( ياأيها الناس إنى تركت فيكم ماإن أخذتم به لن تضلوا:كتاب الله وعترتى أهل بيتى .....)
*সাহাবা কিরামের আদর্শ অনুসরনের ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে:
عن ابن عمر رضي الله عنهما قال :خطبنا عمر بالجابية فقال :يا أيها الناس :اني قمت فيكم كمقام رسول الله صلي الله عليه وسلم فينا فقال : أوصيكم بأصحابى ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم
অন্য হাদিসে এসেছে
عن عبد الله بن عمر قال :قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : …وإن بنى إسرائيل تفرقت على ثنتين وسبعين ملة وتفترق أمتى على ثلاث و سبعين ملة كلهم فى النار إلا ملة واحدة قالوا: ومن هذا يا رسول الله ؟ قال : ما أنا عليه وأصحابى
উল্লেখ্য যে,৭৩ ফেরকা সম্পর্কে ছাহীহ হাদীছে এসেছেঃ
عن أبي هريرة رضي الله ان رسول الله صلي الله عليه وسلم قال:(تفرقت اليهود علي احدي وسبعين فرقة ،أو اثنتين و سبعين فرقة و النصاري مثل ذلك،وتفترق أمتي علي ثلاث وسبعين فرقة)6
**ছিদ্দীকীন এবং আউলিয়া কিরামগণের আদর্শ অনুসরন সম্পর্কে পবিত্র কুরান মাজীদে সিরাতে মুস্তাকীমের পরিচয় দানের মধ্য দিয়ে এসেছেঃ
صراط الذين أنعمت عليهم (الفاتحة)
(আল্লাহ তায়ালা যাদের উপর নিয়ামত দিয়েছেন তাঁদের পথ সিরাতে মুস্তাকীম)
আর মহান আল্লাহ তায়ালা যাদের উপর নিয়ামত দান করেছেন তাঁরা হচ্ছেন নিম্নোক্ত আয়াতে উল্লেখিত আম্বিয়া-মুরছালীন,ছিদ্দীকীন,শোহাদা এবং আউলিয়া কিরাম।
মহান আল্লাহ বলেনঃ
ومن يطع الله والرسول فأولئك مع الذين أنعم الله عليهم من النبيين والصديقين والشهداء والصالحين و حسن أولئك رفيقا 7
উপরোক্ত আয়াত প্রমাণ করে যে,নাবী-রাসূলগণ,সাহাবা কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণের পথ ও মতের উপর থাকাই হচ্ছে সিরাতুল মুস্তাকীমের উপর থাকা।
তাই বলা যায়,আম্বিয়া–মুরছালীন,ছিদ্দীকীন,শোহাদা,রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র বংশধর,সাহাবা কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণের পথ ও মতের অনুসরনই হচ্ছে "সিরাতে মুস্তাকীমের" অনুসরন ।তাঁদের আদর্শ গ্রহণই হচ্ছে কুরআন এবংসুন্নাহের অনুসরন। আর তাঁদের অনুসারীগণই হচ্ছে নাজাত প্রাপ্ত দল ।হাদীস শরীফে যাদের নামকরণ করা হয়েছে " জামায়াত"(আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত)বলে। ইরশাদ হচ্ছেঃ
عن معاوية بن أبى سفيان أنه قام فينا فقال ألا إن من قبلكم من أهل الكتاب افترقوا على ثنتين وسبعين ملة وإن هذه الملة ستفترق على ثلاث و سبعين. ثنتان و سبعون فى النار وواحدة فى الجنة وهى الجماعة .8
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণীত হলো সায়্যিদুনা রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওফাত মুবারকের পরে তাঁর বংশধর ,ছিদ্দীকীন, সাহাবা কিরাম ,আউলিয়া কিরাম এবং শোহাদাগণের পথ অনুসরন হচ্ছে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত "অনুসরনের নামান্তর।
*********************************************************************************
আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব
************************************************
**********************************************
উল্লেখ্য যে – ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী (ইঃ324হিঃ) এবং ইমাম আবুল মানছূর আল মাতুরীদী (ইঃ333হিঃ) ইমাম দ্বয়কে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " এর ইমাম বলা হয়ে থাকে।এর দ্বারা এ উদ্দেশ্য নয় যে, তাঁদের পূর্বে আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব
ছিলনা।বরং সাহাবা কিরাম,তাবেয়ীন এবং তাবে তাবেয়ীন হচ্ছেন এই নামের অধিক উপযুক্ত।
উল্লেখিত ইমামদ্বয়কে " আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " এর ইমাম বলার কারণ হচ্ছে –
35 হিজরী সনে হযরত উসমান(রাঃ)এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে খারিজী ফিত্নার দানা বেঁধে উঠতে আরম্ভ করে।37 হিজরী সনে ছিফ্ফীনের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সে ফিতনার সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ ঘটে। তারপর ক্রমান্বয়ে " মুর্যিয়া " " জাবরিয়া " ফেরকারও সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম হাসান বাসরী (রাঃ)(ইঃ110 হিঃ) এর দরবারে কতিপয় বিদয়াতী মহান আল্লাহ পাকের জন্য জিসম (শরীর)সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা চালায় । তাই তিনি তাদেরকে মজলিসের এক পাশে তাঁড়িয়ে দেন ।পরে তারা " হাশাভীয়্যাহ" ফেরকা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে ।
ইমাম হাসান বাসরী (রাঃ) এর সাথে তাঁর ছাত্র ওয়াছেল বিন আতা (ইঃ131 হিঃ) অবাধ্যতা করে ভ্রান্ত মতবাদ গ্রহন করে। তিনি তাকেও তাঁর মজলিস থেকে তাঁড়িয়ে দেন
।পরবর্তীতে "মুতাজিলা "ফেরকা হিসাবে তারা পরিচিতি লাভ করে ।এভাবে ক্রমান্বয়ে ইসলামের ভিতরে বিভিন্ন বাতিল ফেরকার অনুপ্রবেশ ঘটতে থাকে।
আগমন ঘটে ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী(রাঃ)এর।তিনি সকল বাতিল ফেরকার ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডন করে সঠিক মতাদর্শের উপর পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহের আলোকে বিভিন্ন কিতাব রচনা করেন ।তার সমসাময়িক ইমাম আবুল মানছুর আল মাতুরীদী(রাঃ)ও অনূরুপ খিদমতের আঞ্জাম দেন। এই ইমামদ্বয়ের মতাদর্শকে সারা দুনিয়ার মুষ্টিমেয় কিছু সংখ্যক লো্ক ব্যতীত সকলেই গ্রহন করে নেয়।তাইতো তাঁদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত কিছু সংখ্যক আলিম ব্যতিত তাঁদের মতাদর্শের পতাকাধারী হয়ে আছেন দুনিয়ার সকল বিখ্যাত ওলামায়ে কিরাম।আজো বিশ্বের অসংখ্য-অগনীত ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে "আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের "আক্বিদার কিতাব পড়ানো হয়
।সহস্র বছরোত্তর ঐতিহ্য ধন্য মিশরের আল্ আযহার বিশ্ববিদ্যালয়েও তাই। ভারতীয় উপমহাদেশের ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ ভারত , দারুল উলুম করচি পাকিস্তান ,কলকাতা আলিয়া ,ও বাংলদেশের জামেয়া ইসলাময়া পটিয়া,জামেয়া হাটহজারী , নানুপুর , জিরি , বসুন্দরা মাদ্রাসা,ঢাকা আলিয়া ইত্যাদি সকল সরকারী -বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সূমুহে পড়ানো হয়ঃ
যেমন ;--------------------------------------
العقيدة الطحاوية للإمام أبو جعفر الطحاوى ، المتوفى 321 هــ . العقائــد النسفية لشيخ الإسلام النسفى ، المتوفى 508هـــ . و شرح المواقف للإمام الجرجانى،و الفقه الأكبر للامام أبي حنيفة رضي الله عنهم ,وشرح العقائد وغيره .
ইত্যাদি আক্বীদার কিতাব সমূহ।
সুতরাং প্রমাণীত হলো "আশয়ারী ও মাতুরীদী " অনুসারীগণ যুগ যুগ ধরে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " হিসাবে পরিচিত
عن أنس بن مالك رضى الله عنه يقول : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : إن امتى لا تجتمع على ضلالة فإذا رأيتم اختلافا فعليكم بالسّواد الأعظم ( صدق رسول صلى الله عليه وسلم )9
وفي الحديث الصحيح:يد الله مع الجماعة10
9.ابن ماجه/كتاب الفتن/باب السواد الأعظم.10 رواه الترمذي/كتاب الفتن/باب في لزوم الجماعة
“আল্লাহ্ কোথায়
====================
এক্ষণে আমরা “আল্লাহ্ কোথায়?” এ বিষয়ে কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীস এবং সালফে সালেহীন তথা শ্রেষ্ঠ যুগের মহা পণ্ডিতদের বক্তব্য ও আকীদাহ্ দলীলসহ আলোচনা করার চেষ্টা করব:
সমগ্র জাহানের প্রতিপালক ও সংরক্ষক মহান আল্লাহ্ তা’আলা সপ্তাকাশের উপর অবস্থিত সুমহান আরশের উপর সমুন্নত, তিনি সর্বস্থানে বিরাজিত নন। তাঁর ক্ষমতা অসীম ও সর্বব্যাপী। তিনি সব কিছু দেখেন ও শোনেন। কোন কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়। তিনি আরশে আ’যীমে থেকেই সব কিছু সুচারুরূপে পরিচালিত করেন।তাই তাঁর আসীম ক্ষমতা ও কুদরত সর্বস্থানে বিরাজিত , কিন্তু তাঁর সত্তা বা জাত সর্বস্থানে বিরাজিত , নয় ,
যদি তাই হয় তাহলে
এ কথার অর্থ দাঁড়ায়, ভাল-মন্দ সকল বস্তু এবং স্থানেই মহান আল্লাহর অস্তিত্ব বিদ্যমান । মানুষ-জিন, গরু-ছাগল, কুকুর-শুকর, মসজিদ-মন্দির, উপাসনালয়-বেশ্যালয় ইত্যাদি শব্দগুলো ‘সবকিছুর’ই অন্তর্ভুক্ত। মলতঃ উক্ত কথাটি ইবনে আরাবী, মনসূর হাল্লাজ প্রমূখ বেদ্বীন সুফীদের কথার সাথে মিলে যায়,
ঐ সকল সূফীদের কথা হল: (وما الكلب والخنزير إلا إلهنا : وما ربنا في الكنيسة إلا راهب) অর্থাৎ-কুকুর-শুকর এগুলো মলতঃ আমাদের উপাস্য, আর গির্জায় অবস্থানকারী পাদ্রী আমাদের প্রতিপালক ছাড়া আর কিছুই নয়। আর ইবনে আরাবীর কথা হল: (العبد رب والرب عبد : يا ليت شعري من المكلف؟) বান্দা হল রব আর রবই হল বান্দা, হায় আমি যদি জানতাম কে আদেশ প্রাপ্ত? তাই তো আজকাল কোন কোন সুফি দরবেশ বলে থাকে ‘যত কল্লা তত আল্লাহ্’।
১) মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেন:
(ان ربكم الله الذي خلق السموات والأرض في ستة أيام ثم استوى على العرش)
অর্থ:‘ নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্, যিনি আকাশ সমূহ এবং পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।’ (সূরা আরাফ-৫৪)
২) আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেন:
الرحمن على العرش استوى
অর্থ: ‘রহমান (আল্লাহ্) আরশে সমুন্নত।’ (সূরা ত্বহা-৫) এ কথায় কোনই সন্দেহ নেই যে আরশ আসমান রয়েছে জমিনে নয়।
৩) তাই মহান আল্লাহ্ অন্যস্থানে বলেন:
أأمنتم من في السماء أن يخسف بكم الأرض
অর্থ: ‘তেমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছো যে, যিনি আকাশে অবস্থিত রয়েছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দিবেন না।’ (মূলক-১৬)
এ ছাড়া বহু আয়াতে আল্লাহ্ পাক নিজের পরিচয়ে বলেছেন যে, তিনি আকাশের উপর মহান আরশেই রয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে অধিক প্রমাণের জন্য নিম্ন লিখিত আয়াত গুলো দেখা যেতে পারে। ( ইউনুস-৩, রা’দ-২, ফুরক্বান- ৫৯, সাজদাহ্-৪, হাদীদ-৪)
৪) হাদীছে রাসূলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
ألا تأمنوني وأنا أمين من في السماء يأتيني خبر السماء صباحاً ومساءً -متفق عليه
অর্থ: ‘তোমরা কি আমাকে আমানতদার মনে কর না, অথচ যিনি আসমানে আছেন আমি তাঁর আমানতদার। আমার কাছে আসমানের খবর সকাল-সন্ধ্যায় আসে।” (বুখারী ও মুসলিম) আসমানে যিনি আছেন নিশ্চয় তিনি মহান আল্লাহ্। কোন সন্দেহ আছে কি ?
৫) হযরত মুয়াবিয়া বিন হাকাম আস্ সুলামী (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
) জনৈক দাসীকে প্রশ্ন করেছিলেন : ‘আল্লাহ্ কোথায়?’ উত্তরে সে বলেছিল : আল্লাহ্
====================================================
আসমানে। তিনি বললেন , আমি কে? সে বলল: আপনি আল্লাহ্র রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মনিবকে বললেন: তাকে আজাদ করে দাও। কেননা সে ঈমানদার। (ছহীহ মুসলিম)
৬) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন:
(ارحموا من في الأرض يرحمكم من في السماء )
অর্থাৎ-‘ যারা জমিনে আছে তোমরা তাদের প্রতি দয়াশীল হও যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়াশীল হবেন।’ (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ)
৭) সুপ্রসিদ্ধ মে’রাজের ঘটনা বুখারী -মুসলিম সহ বহু হাদীস গ্রন্থে রয়েছে।
হে বিবেকবান মুসলিম ভাই! আল্লাহ্ যদি সর্বত্র সবকিছুতেই বিরাজিত থাকেন, তবে মে’রাজের কি দরকার ছিল? মে’রাজের রাত্রে বোরাকে চড়ে সপ্তাকাশের উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্র দরবারে গমনই তো প্রমাণ করে যে মহান আল্লাহ্ সাত আসমানের উপর অবস্থিত আরশেই রয়েছেন। নতুবা মে’রাজ অর্থহীন হয়ে যায় না কি?
এ ক্ষেত্রে সালফে সালেহীনের বা আকাবেরদের আকীদা বা কিছু উক্তি:=
=====================================
৮) ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ্ আরশে আছেন একথা বিশ্বাস করে, কিন্তু সন্দেহ করে যে আল্াহ আসমানে আছে না জমিনে তবে সে কাফের বলে গণ্য হবে। (দ্র: আল্ ফিকহুল আবসাত)
৯) ইমাম আওযায়ী বলেন: আমরা তাবেয়ীগণের উপস্থিতে বলতাম, নিশ্চয় মহান আল্লাহ্ তাঁর আরশের উপর রয়েছেন। তাঁর গুণাগুণ সম্পর্কে যে বর্ণনা এসেছে আমরা সবই তা বিশ্বাস করি। (ইমাম যাহাবী প্রণীত মুখতাছার উলু দ্রষ্টব্য)
১০) ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন: ( الله في السماء وعلمه في كل مكان لا يخلو منه شيء ) ‘আল্লাহ্ রয়েছেন আসমানে এবং তাঁর ইলম সর্বাস্থানে পরিব্যপ্ত , তার জ্ঞান থেকে কোন স্থান খালি নেই।
১১) ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন: আমি যে তরিকার উপর প্রতিষ্ঠিত ও যাদেরকে ঐ তরিকার উপর পেয়েছি যেমন সুফিয়ান সাওরী, মালিক প্রমুখগণ তা হল- এ কথার স্বীকৃত দেয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন হক মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র রাসূল আর আল্লাহ্ তিনি আসমানে আরশের উপর রয়েছেন। তিনি তার বান্দার নিকটবর্তী হন যে ভাবে ইচ্ছা করেন এবং যে ভাবে চান ঠিক সেভাবেই …।
দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন
তবে কি ভাবে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন তার প্রকৃত আবস্হা আল্লাহই ভল জানেন,
এ বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে , মাথা পেতে বিশ্বাস করাই বান্দার কাজ .
১২) ইমাম আহমাদ (রাহ) কে জিজ্ঞেস করা হল: আল্লাহ্ সপ্তাকাশে আরশের উপর রয়েছেন। সৃষ্টিকুল থেকে পৃথক আছেন এবং তার কুদরত ও ইলম সকল স্থানে পরিব্যাপ্ত। উত্তরে তিনি বললেন: হ্যাঁ, তিনি স্বীয় আরশে রয়েছেন এবং কোন বস্তু তার ইলমের বাইরে নয়।
১৩) ইমাম ইবনে খুযাইমা বলেন: (من لم يقر بأن الله على عرشه استوى فوق سبع سماواته بائن من حلقه فهو كافر يستتاب فإن تاب وإلا ضربت عنقه وألقي على مزبلة لئلا يتأذى بريحه أهل القبلة وأهل الذمة ) ”যে ব্যক্তি স্বীকার করে না যে আল্লাহ্ তা’আলা সপ্তাকাশে স্বীয় আরশে সমুন্নত, সৃষ্টি জগত হতে সম্পূর্ণ আলাদা-সে কাফের। তাকে তওবা করার নির্দেশ দিতে হবে। তওবা না করলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। অতঃপর তার লাশ ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করতে হবে যাতে করে কিবলা ওয়ালা মুসলমানগণ এবং কর প্রদানকারী অমুসলিমগণ তার দূর্গন্ধে কষ্ট না পায়। (ইমাম যাহাবী প্রণীত মুখতাছার উলু দ্রষ্টব্য)
১৪) বড় পীর হিসেবে খ্যাত হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) স্বীয় ‘গুনিয়াতুত্ তালেবীন’ নামক গ্রন্থে বলেন: ‘আল্লাহ্ পাক আরশে সমুন্নত রয়েছেন। রাজত্ব নিজ আয়ত্তে রেখেছেন। সমস্ত বস্তুকে বেষ্টন করে রেখেছেন। ….. আর এ ভাবে তাঁর পরিচয় দেয়া জায়েজ নয় যে, তিনি প্রত্যেক স্থানে বিরজমান; বরং বলতে হবে তিনি আসমানে আরশের উপর রয়েছেন যেমনটি তিনি (নিজেই) বলেছেন: الرحمن على العرش استوى “রহমান (আল্লাহ্) আরশে সমুন্নত”। (ত্বা-হা/৫)
একথা স্বাভাবিক ভাবেই বলতে হবে কোন প্রকার অপব্যখ্যা করে নয়। তিনি যে আসমানে আছেন একথা নবী-রাসলদের প্রতি নাযিলকৃত প্রত্যেক কিতাবেই লিখিত আছে। তবে আরশে তিনি কিভাবে রয়েছেন তার পদ্ধতি কারো জানা নেই।’
১৫) মানুষের সৃষ্টিগত ফিৎরাতও একথা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ তায়ালা আসমানেই রয়েছেন সব স্থানে নয়। এর প্রমাণে আপনি আপনার স্নেহের কচি শিশুকে প্রশ্ন করুন- আল্লাহ্ কোথায়? দেখবেন তার পবিত্র মুখ থেকে জবাব বেরুবে, ‘উপরে’। বা সে তার কচি আঙ্গুল উঠিয়ে উপর দিকেই ইশারা করবে, অর্থাৎ তিনি (আল্লাহ্) আকাশে রয়েছেন, সব জায়গাতে নয়। আরও বহু আয়াত ও হাদীস রয়েছে যেগুলো দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় আল্লাহ তায়ালা সব জায়গায় বিরাজমান নন। বরং তার ক্ষমতা, রাজত্ব, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, জ্ঞান, দৃষ্টি ইত্যাদি সর্বত্র ও সব কিছুতে বিরাজমান। কিন্তু তিনি স্বত্বাগতভাবে অবস্থান করেন, সাত আসমানের উপর আরশে আযীমে।
সম্মানিত পাঠক!
এই হল কুরআন-হাদীস এবং সালফে সালেহীনের আকিদাহ্ ও বিশ্বাস যা সংক্ষেপে উদ্ধৃত করা হল। যার সার সংক্ষেপ হল- মহান আল্লাহ্ আরশে রয়েছেন তিনি সর্বত্র সবকিছুতে বিরাজিত নয়। আর এটাই হল বিশুদ্ধ আকীদা।
একটি সংশয় নিরসন:
================
কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ্ বান্দার ‘সাথে’ রয়েছেন বলা হয়েছে। এর অর্থ এ নয় যে তিনি তাদের সাথে মিলিত ও সংযুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। কেননা এরূপ অর্থ পূর্বসূরী বিদ্বানগণ কেহই করেন নি। পক্ষান্তরে এটা ভাষাগতভাবেও আবশ্যক নয়। আল্লাহ্ তা’আলা ‘সাথে’ থাকার ব্যাখ্যা নিজেই দিয়েছেন। যেমন- তিনি বলেন: وهو معكم أين ما كنتم والله بما تعملون بصير “তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সাথেই রয়েছেন। আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্মের সম্যক দ্রষ্টা।” (হাদীদ /
৪) অর্থাৎ তাঁর দৃষ্টির মাধ্যমে তিনি আমাদের সাথে আছেন, স্ব অস্তিত্বে নয়। হযরত মুসা ও হারূন (আঃ)কে আল্লাহ্ ফেরাউনের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন: إنني معكما أسمع وأرى “আমি তোমাদের সাথেই রয়েছি শুনছি ও দেখছি।” (সূরা ত্বা-হা/ ৪৬) অত্র আয়তে আল্লাহ্ পাক সাথে থাকার অর্থ নিজেই করেছেন দেখা ও শোনার মাধ্যমে।
অর্থাৎ আমি তোমাদের সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী। যেমন- সাধারণভাবে আমরা বলে থাকি ‘আপনি উমুক কাজটি করুন আমরা আপনার সাথে আছি’। অর্থাৎ আমরা আপনাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করব। যেমন- টেলিফোনে কথা বলার সময় একজন অপরজনকে বলে থাকে: কে আপনি আমার সাথে? জবাবে বলে আমি উমুক আপনার সাথে। অথচ এখানে দুজন অঙ্গা-অঙ্গী হয়ে থাকে না। দু’জন দু’দেশ থেকে কথা বলে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে সাথে থাকার অর্থ মিশে থাকা নয় বরং মহান আল্লাহ্ সেই আরশে আ’যীমে থেকেই তাঁর সাহায্য-সহযোগিতা, দেখা-শোনা ও জ্ঞানের মাধ্যমে আমাদের সাথে রয়েছেন। তিনি অসীম ক্ষমতাবান এবং যা চান তাই করতে পারেন।
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে হক জানা ও তা মানার তাওফীক দিন। আমীন।
যুগে যুগে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ওলামায়ে কিরাম তথা আমরা যাদের উত্তর সূরীঃ
=============*****************************=========================
*ইমামে আযম আবু হানিফা (রাঃ)ইঃ(150হিঃ)*ইমাম মালেক(রাঃ)ইঃ (179হিঃ)*ইমাম শাফেয়ী(রাঃ)ইঃ (204হিঃ)*ইমাম আহামাদ(রাঃ)ইঃ( 241 হিঃ)*
এবং এলমে নাহু-ছরফ এর ইমামগন যেমন ছিবওয়াই , আখফশ , ফারাবী ,ইত্যাদি
ইমাম যুন্নুন মিশরী(রাঃ)ইঃ (245 হিঃ)*ইমাম বুখারী(রাঃ)ইঃ (256 হিঃ)* ইমাম তাবারী(রাঃ)ইঃ(310হিঃ)*ইমাম জুয্যাজ(রাঃ)ইঃ( 311 হিঃ)* ইমাম তাহাবী(রাঃ)ইঃ(321 হিঃ)*ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী(রাঃ)ইঃ(324হিঃ)*ইমাম মাতুরিদী(রাঃ)ইঃ(333 হিঃ)*হাফেয ইবনু হিব্বান (রাঃ)ইঃ(354হিঃ)*আবু ওসমান মাগরিবী(রা)ইঃ(373হিঃ) *হাফেয আবু বাকর কেলাবাযী(রাঃ)ইঃ (385হিঃ)*ইমাম খাত্তাবী(রাঃ)ইঃ(388 হিঃ)*
হাফেয হালিমী(রাঃ)ইঃ (403 হিঃ)*সাইফুস সুন্নাহ বাকেল্লানী (রাঃ)ইঃ(403 হিঃ)*ইমাম সাহল নিশাপুরী(রাঃ)ইঃ(404হি:)*ইমাম ইবনে ফুরেক আশয়ারী (রাঃ)ইঃ(406হিঃ)*ইমাম আবু আলি মারজুকী (রাঃ)ইঃ(421হিঃ)*হাফেয ইবনে বাত্তাল মালেকী(রাঃ)ইঃ (449 হিঃ)*হাফেয বায়হাকী(রাঃ)ইঃ(458 হিঃ)*ইমাম আব্দুল কারিম কুশায়রী(রাঃ)ইঃ(465 হিঃ)*ইমাম সিরাজী(রাঃ)ইঃ(476 হিঃ)*ইমামুল হারামাঈন(রাঃ)ইঃ(478হিঃ)*ফখরুল ইসলাম বাযদুবী (রাঃ)ইঃ( 482হিঃ)*ইমাম রাগেব ইস্পাহানী(রা)ইঃ(502 ইঃ)*হুজ্জাতুল ইসলাম গাজ্জালী(রঃ)ইঃ (505 হিঃ)*ইমাম নাসাফী(রাঃ)ইঃ(508হিঃ)*ইমাম ইবনে আকিল হাম্বলী(রাঃ)ইঃ(513 হিঃ)
*ইমাম ইবনে কুশাইরী(রাঃ)ইঃ(514 হিঃ)*ইবনে রুশদ(রাঃ)ইঃ( 520 হিঃ)*ইমাম নাজমুদ্দিন নাসাফী(রাঃ)ইঃ( 537 হিঃ)*হাফেয ইবনুল আরাবী(রাঃ)ইঃ (543হিঃ)*ইমাম কাজী আয়ায মালেকী(রাঃ)ইঃ( 544 হিঃ)*ইমাম শাহারাস্তানী(রাঃ)ইঃ( 548হিঃ)*ইমাম সিরাজ উদ্দিন আউশী(রাঃ)ইঃ (569হিঃ)*হাফেয ইবনে আসাকের দামেস্কী(রাঃ)ইঃ( 571হিঃ)*ইমাম আহামাদ কাবির রেফায়ী(রাঃ)ইঃ( 578 হিঃ)*মুজাহিদ সালাহ উদ্দিন আইউবী(রঃ)ইঃ(589 হিঃ)*হাফেয ইবনুল যাওজী(রাঃ)ইঃ( 597 হিঃ)*ইমাম হেবাতুল্লাহ মক্কী(রাঃ)ইঃ (599হিঃ)*হাফেয ইবনে আসির(রাঃ)ইঃ( 606হিঃ)*ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী(রাঃ)ইঃ(606 হিঃ)*ইমাম ফাখরুদ্দীন ইবনে আসাকের ইঃ(602 হিঃ)*ইমাম ইব্রাহিম শায়বানী(রাঃ)ইঃ (629 হিঃ)*উছুলী সাইফুদ্দীন আমদী(রাঃ)ইঃ
(631হিঃ)*ইমাম জামালুদ্দীন হুছাইরী(রা)ইঃ(636হিঃ)*সুলতানুল ওলামা(রা)ইঃ(660হিঃ)*ইমাম আবু শামা মাকদিসী(রাঃ)ইঃ (665হিঃ)*ইমাম কুরতুবী মালেকী(রাঃ)(671হিঃ)*ইমাম নববী(রাঃ)ইঃ(676হিঃ)*ইমাম জাকারিয়া কাযবানী(রাঃ)ইঃ(682হিঃ)*ইমাম কারাফী মালেকী(রাঃ)ইঃ(684হিঃ)*ইমাম বায়যাবী(রাঃ)ইঃ (685হিঃ)*হাফেয ইবনে মুনির(রাঃ)ইঃ(695হিঃ)*হাফেয ইবনে আবি যামরাহ(রাঃ)ইঃ(699 হিঃ)*হাফেয ইবনে দাকীক ঈদ(রাঃ)ইঃ(702হিঃ)*ইমাম ইবনে আতাউল্লাহ ইসকান্দারানী(রাঃ)ইঃ (709হিঃ)*ইমাম হাফিজুদ্দীন নাসাফী(রাঃ)ইঃ( 710হিঃ)*ইমাম ইবনে মানযুর আফ্রিকী(রাঃ)ইঃ (711হিঃ)*হাফেয ইবনে জামায়া(রাঃ)ইঃ (733হিঃ)*ইমাম ইবনে যাহবাল(রাঃ)ইঃ (733হিঃ)*ইমাম ইবনুল হায মাগরেবী,মালেকী(রঃ)ইঃ(737হিঃ)*ইমাম খাযেন(রাঃ)ইঃ(741হিঃ)*সম্রাট ইবনে কালাওন(রাঃ)ইঃ(741হিঃ )*হাফেয নাছিরুদ্দীন দামেষ্কী ইঃ (৭৪২হিঃ )* ইমাম তিবী(রাঃ)ইঃ (743হিঃ)*শাইখুল ইসলাম তাকী উদ্দিন সুবকী(রাঃ)ইঃ (756হিঃ)*হাফেয সালাহ উদ্দিন আলায়ী(রাঃ)ইঃ (761হিঃ)*ইমাম ইয়াফেয়ী ইয়ামানী(রাঃ)ইঃ (768হিঃ)*ইমাম ইবনে সুবকী(রাঃ)ইঃ (771হিঃ)*ইমাম কিরমানী(রাঃ)ইঃ (786হিঃ)*ইমাম সাতাবী (রাঃ)ইঃ (790হিঃ)*ইমাম তাফতাযানী(রাঃ)ইঃ (792হিঃ)*ইবনে খালদুন(রাঃ)ইঃ (808হিঃ)
*হাফেয নূরুদ্দিন হাইছামী(রাঃ)ইঃ (808হিঃ)*হাফেয ইরাকী(রাঃ)ইঃ (826হিঃ)*ইমাম তকী উদ্দিন হিসনী(রাঃ)ইঃ (829হিঃ)*শাইখুল ইসলাম হাফেয ইবনে হাজার(রাঃ)ইঃ(852হিঃ)*ইমাম বাদরুদ্দিন আইনী(রাঃ)ইঃ (855হিঃ)*ইমাম জালালুদ্দিন মাহাল্লী(রাঃ)ইঃ(868হিঃ)*ইমাম ইবনে আমিরুল হাজ হানাফী(রাঃ)ইঃ( 879হিঃ)*ইমাম বুরহানুদ্দিন বাকায়ী(রাঃ)ইঃ( 885হিঃ)*ইমাম সানুছী(রাঃ)ইঃ (895হিঃ)*ইমাম রুমী হানাফী(রাঃ)ইঃ (901হিঃ)*ইমাম আসমুনী(রাঃ)ইঃ(902হিঃ)*হাফেয সাখাবী(রাঃ)ইঃ (902হিঃ)*ইমাম খালেদ আযহারী(রাঃ)ইঃ( 905হিঃ)*হাফেয জালালুদ্দীন সুয়ূতী(রাঃ)ইঃ( 911হিঃ)*হাফেয কাস্তাল্লানী(রাঃ)ইঃ (923হিঃ)*হাফেয ইবনে তুলুন হানাফী(রাঃ)ইঃ (953হিঃ)*ইমাম শায়ারানী(রাঃ)ইঃ (973হিঃ)*হাফেয ইবনে হাযার মক্কী(রাঃ)ইঃ (974হিঃ)*ইমাম খাতীব সারবিনী(রাঃ)ইঃ( 977হিঃ)*ইমাম রামলী(রাঃ)ইঃ (1004হিঃ)*
ইমাম মুল্লাহ আলী কারী হানাফী(রাঃ)ইঃ (1014হিঃ)*ইমাম লাক্কানী(রাঃ)(1041হিঃ)*ইমাম ইবনে মুকরী (রাঃ)ইঃ (1041হিঃ) *
ইমাম শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী ইঃ( 1052 হিঃ) *ইমাম ইবনে আল্লান মাক্কী (রাঃ)ইঃ
**********************************************************************************
(1057হিঃ)*ইমাম ইব্রাহীম লাক্কানী মালেকী(রাঃ)ইঃ (1078হিঃ)*ইমাম কামাল উদ্দিন বিয়াদী হানাফী(রাঃ)ইঃ (1098হিঃ)*ইমাম মুহিব্বুল্লাহ বিহারী (রাঃ)ইঃ (1119হিঃ)*ইমাম আব্দুল বাকী যুরকানী(রাঃ)ইঃ (1122হিঃ)*ইমাম আলাভী হাদ্দাদ হাদারামী(রাঃ)ইঃ (1132হিঃ)*ইমাম সিন্দী হানাফী(রাঃ)ইঃ (1138হিঃ)*ইমাম আব্দুল গণী নাবলুসী(রাঃ)ইঃ( 1143হিঃ)*ইমাম দারদিরী
মালেকী(রাঃ)ইঃ (1201হিঃ)*হাফেয মুরতাদা যুবায়দী(রাঃ)ইঃ (1205হিঃ)*ইমাম খালিল মুরাদী(রাঃ)ইঃ (1206হিঃ)*শাহ আব্দুল আযীজ মুহাদ্দীস দেহলভী (রাঃ)ইঃ (1239হিঃ)*ইমাম ফকীহ ইবনে আবেদীন শামী(রাঃ)ইঃ(1252)হিঃ*ইমাম আলূছী বাগদাদী(রাঃ)ইঃ( 1270হিঃ) *ইমাম খালেদ নক্সেবন্দী(রাঃ)ইঃ( 1299হিঃ)* ইমাম আঃহাই লাকনাভী(রাঃ) (1304হিঃ) *ইমাম আহম্মাদ রেযা খাঁন বেরলভী(রাঃ)ইঃ(1340হি) * ইমাম নাবহানী (রাঃ)ইঃ(1350হিঃ) *মুফতী সায়্যিদ মুহামমদ আমীমুল ইহসান(রাঃ) ( ইঃ1394হিঃ)*শাহ সূফী নেছারুদদীন আহমাদ
ছারছীনাভী(রাঃ) (1952ইং) *শাহ সূফী আবূ জাফর মুহামমাদ ছালিহ ছারছীনাভী (রাঃ) (1990ইং )*সায়্যিদ আলাভী মালিকী মাককী(রাঃ) *প্রফেসর বোরহান উদদীন ওয়েসী আহমাদী(রাঃ)*শেরে বাংলা আযীযুল হক(রাঃ)*
*শাইখুল আযহারগণের তালিকা(যারা আহলুস্সুন্নাত ওয়াল জামাতের ঝান্ডাবাহী ছিলেন)-
************************************************************************************
ঃ*মুহাম্মাদ আল খারাসী ইঃ(1690ইং)*ইব্রাহীম আল বারমাভী ইঃ(1694ইং)*মুহাম্মাদ আন্নাশ্রাতী ইঃ(1708ইং)*আব্দুল বাকী ইঃ(1719ইং)*মুহাম্মাদ শানান ইঃ(1721ইং)*ইব্রাহীম আল ফাইওমী ইঃ(1725ইং)* *মুহাম্মাদ আল হাফনী ইঃ(1767ইং)*আব্দুর রাঊফ আস সাজানী ইঃ( 1768ইং) *আব্দুল্লাহ আশশাব্রাভী ইঃ(1775ইং)*আহমাদ আদ দামানহুরী ইঃ(1776ইং)*আহমাদ আল আরূসী ইঃ(1793ইং)*আব্দুল্লাহ আশ্ শারকাভী ইঃ(1812ইং)*মুহাম্মাদ আশ্ শানওয়ানী ইঃ(1818ইং)*মুহাম্মাদ আল-আরূসী ইঃ(1829ইং)* আহমাদ আদ-দামহূজ়ী ইঃ(1830ইঃ )* হাসান আল আত্তার ইঃ(1834ইঃ) * হাসান আল কাওসীনী ইঃ (1838ইং)* আহমদ আব্দুল আল-জাওয়াদ আল-সাকতী ইঃ(1848ইং)* ইব্রাহীম আল-বাজূরী ইঃ(1860ইং) *শামসুদ্দীন আল-ইনবাবী ইঃ(1892ইং)*মোহাম্মদ আল-মাহদী আল –আব্বাসী ইঃ(1898ইং)*মোস্তাফা মোহাম্মদ আল-আরূসী ইঃ(1876ইং)*সালিম বিন আবি ফারাজ ইঃ(1916ইং)*হাসূনা আল-নাওয়াভী ইঃ(1924ইং)*আব্দুর রহমান আল-নাওয়াভী ইঃ(1900ইং)*আলী মোহাম্মদ আল-বাবলাভী ইঃ(1905ইং)* আব্দুর রাহমান আশ-শারবীণী ইঃ(1926ইং)* মোহাম্মদ আবুল ফজল আলজীজাভী ইঃ(1928ইং) * মোহাম্মদ আল-আহমদ আদ-দাওয়াহিরী ইঃ(1944ইং) * মোহাম্মদ মোস্তাফা আল-মোরাগী ইঃ(1945ইং) *আব্দুল মাজীদ সালিম ইঃ(1945ইং) * মোস্তাফা আব্দুর রাজ্জাক ইঃ(1947ইং)* মোহাম্মদ মামুন আশ-শাণাবী ইঃ(1950ইং, ) * মোহাম্মদ খাদির হাসান ইঃ(1958ইং)* *ইব্রাহীম ইব্রাহীম হামরূশ ইঃ(1960ইং) মাহমুদ শালতুত ইঃ(1963ইং)*হাসান মামুণ ইঃ(1973ইং)*আব্দূর রাহমান তাজ ইঃ(1975ইং)*মুফতি আযাম হিন্দ মো্স্তাফা রেজা খান* মোহাম্মদ আল ফাহহাম * মোহাম্মদ আব্দুর রাহমান বিছার *আব্দুল হালীম মাহমুদ ইঃ (1978ইং)* জাদুল হাক আলী জাদুল হাক ইঃ(1996ইং) রাদিআল্লাহু আনহুম।
মহান আল্লাহ সমপর্কে আক্বিদা
========================
১. একমাত্র মহান আল্লাহই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা।
আকাশ, পৃথিবী, আলো-বাতাস, আগুন-পানি, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারা, ছায়াপথ, গাছ, শষ্য, ফল, ফুল, তৃণ-লতা, ভাল-মন্দ, মানুষ, জ্বীন, সাদা-কালো ইত্যাদি দৃশ্য ও অদৃশ্যমন, আমাদের জানা-অজানা, আবিস্কৃতকিংবা অনাবিস্কৃত সব কিছুরই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা হলেন মহন আল্লাহ তা‘য়ালা।এক সময় এসব কোন কিছুরই অস্তিত্ব কোথাও ছিল না। আল্লাহ তা‘য়ালা সবকিছুকে সৃষ্টি করলেন। অস্তিত্ব প্রদান করলেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনেইরশাদ হয়েছে: : اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْ অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘য়ালাইসব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। (সূরা ঝুমারঃ ৬২)اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘য়ালাআসমান ও জমিন এবং এতোদভয়ের মধ্যেবর্তী সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। ( সূরাআসসাজদাহ: ৪)
২. আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।
তাঁর কোন শরীক বা অংশিদার নেই।কোন ভাবেই তাঁর সাথে কারো কোন অংশিদারী নেই। তিনি কারো কাছে কোন কিছুরমুখাপেক্ষি নন। কারো থেকে জন্ম গ্রহন করেননি এবং তাঁর পবিত্র স্বত্তা থেকেকোউ জন্ম গ্রহনও করেনি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে: قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (1) اللَّهُ الصَّمَدُ (2) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ (3) অর্থাৎ- ১.হে নবী আপনি বলে দিন, তিনি আল্লাহ এক। ২.অল্লাহ অমুখাপেক্ষী। ৩•তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। (সূরা ইখলাসঃ ১-৩)
৩. তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।
অতীতে কেউ কখনো তাঁর সমকক্ষছিল না এবং ভবিষ্যতেও কেউ তাঁর সমকক্ষ কখনো হবে না। তিনি অতুলনীয়। তাঁরসাথে কারো কোন তুলনাই চলে না। তিনিই সর্বোচ্চ ও সর্ববৃহৎ। পবিত্র কুরআনেইরশাদ হয়েছে:لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيঅর্থাৎ-তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি সর্ব বিষয় শোনেন ও দেখেন। (সূরা শুরাঃ১১)وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌঅর্থাৎ- তাঁর (আল্লাহর)সমতুল্য কেউ নেই। (সূরা ইখলাসঃ ৪)
৪. তিনি অনন্ত-অনাদী কাল ব্যাপী আছেন, চিরকাল থাকবেন।
তার আদিও নেই অন্তও নেই। তিনিই একমাত্র চিরন্তন।চিরকালব্যপী একমাত্র তিনিই আছেন ও থাকবেন। حى القيوم অন্য কিছু বা কেউ এমন ছিল না বাথাকবে না। সারা জাহানের সব কিছুই নশ্বর। কেবল তিনিই অবিনশ্বর। পৃথিবীরকোন সৃষ্টি যেমনঃ আগুন, পানি, গ্রহ, নক্ষত্র, চন্দ্র, সূর্য, কোন শক্তিইত্যাদি কোন কিছুই চিরন্তন কিংবা চিরস্থায়ী নয়। একমাত্র মহান আল্লাহছাড়া অন্য কোন কিছুকে চিরন্তন কিংবা চিরস্থায়ী মনে করা বা বিশ্বাস করাস্পষ্ট শিরক বা কুফরী। কেউ যদি কোন অগ্নিশিখাকে কিংবা কোন শক্তিকে চিরন্তনবলে একান্তভাবে বিশ্বাস করে তবে সে আর মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারেনা।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে:
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
অর্থাৎ-তিনিই প্রথম, তিনিইসর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও তিনিই অপ্রকাশমান এবং তিনিই সব বিষয়ে জ্ঞাত। (সূরা হাদীদঃ ০৩)
ولا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ لا إِلَهَإِالا هُوَ كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ الا وَجْهَهُ لَهُ الْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
অর্থাৎ-তোমরা (তোমাদের সৃষ্টিকর্তা, প্রতিপালনকারী, জীবন ও মৃত্যু দানকারী, রিঝিকদাতা, ধন-সম্পদ প্রদানকারী ইত্যাদিহিসেবে) মহান অল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশিদার হিসেবে ডেকোনা বা মেনেনিওনা। তোমাদের মা‘বুদ বা উপাস্য একমাত্র তিনি আল্লাহ। এমাহাবিশ্বের সব কিছুই এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে একমাত্র তিনিআল্লাহছাড়া। এ জগতের যাবতীয় আইন প্রণয়নের ক্ষমতা একমাত্রতাঁরই। কেননা প্রত্যেকেই এক সময় তাঁর নিকটেই প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরাক্বসছঃ ৮৮)
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ. وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَام
অর্থাৎ- মহাবিশ্বের সকল কিছুই ধ্বংসশীল, কেবলআপনার মহিমাময় ও মহানুভব প্রতিপালক ছাড়া। (সূরা আর রাহমানঃ ২৬-২৭)
৫.সকল অহংকারের একমাত্র মালিক তিনি।
সকল দোষ হতে তিনি পূত-পবিত্র। প্রকৃতসকল সম্মান ও মর্যাদা তাঁরই। সকল মান সম্মানের প্রকৃত মালিকও তিনি। এপ্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
অর্থাৎ-তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিইএকমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপশালী, মহামন্বিত। তারা যাকে অংশিদার করে আল্লাহ তায়ালা তা থেকেপবিত্র। (সূরা হাশরঃ ২০)
হাদিসে কুদ্সিতে তিনি স্বয়ং ঘোষণা করেছেনঃ
قال رسول الله صلى الله عليه و سلم \\\" قال الله عزوجل الكبرياء ردائي والعظمة إزاري فمن نازعني واحدا منهما قذفته في النار
অর্থাৎ- রাসূল সা•বলেন, মহান আল্লাহ তা‘য়ালা বলেছেনঃ অহংকার আমার কুদরাতী চাদর তুল্য। আরসম্মান আমার কুদরাতী পরিধেয়। যে আমার এসব কিছু নিয়ে টানাটানি করবে তাকেআমি জাহান্নামের শান্তি আস্বাদন করাব। (আবু দাউদ শরীফ)
৬. তিনি নিরাকার।
আমাদের জানা অজানা কোন কিছুর সাথেই তাঁর মহান স্বত্তার কোন ধরণের সাদৃশ্যচলেনা। তিনি নিরাকার। আমরা তাঁকে নির্দিষ্ট কোন অবয়বে বা আকারে কল্পনাওকরতে পারি না। এ ব্যাপারে রাসূল সা.বলেছেন: تفكروا في آلآء الله ولاتتفكروا في الله অর্থাৎ- তোমরা আল্লাহর সৃষ্টি বা নিদর্শন এর মধ্যেগবেষণা কর আল্লাহ সম্পর্কে নয়। (আল মু‘জেম আল ও-সেতী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৫০পৃঃ)
৭. তিনি সকল বিচারকের বিচারক।
তিনি মহা রাজাধিরাজ। তিনি সকল বাদশাহরবদশাহ। কুরআনে ইরশাদ قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء অর্থাৎ- হে নবী আপনি সকলকে জানিয়ে ঘোষণা করুন; ‘আল্লাহইহলেন সকল বাদশাহের প্রকৃত বাদশাহ। যাকে ইচ্ছা এ পৃথিবীর কোন অংশের সাময়িকরাজত্ব দান করেন’। (সূরা আল ইমরানঃ ২৬) وَأَنتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِينَ অর্থাৎ- আপনি (আল্লাহ) হলেন সকল বিচারকের বিচারক। (সূরাহুদঃ ৪৫)
৮. মহা-পরাক্রমশালী অসীম ক্ষমতাবান একমাত্র পবিত্র স্বত্ব।
তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। ইরশাদ হয়েছেঃ
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ
অর্থাৎ-নিশ্চয়ই আপনার প্রভূ মহাশক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী। (সূরা হুদঃ ৬৬) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে:
إِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ
অর্থাৎ- নিশ্চই আপনার প্রতিপালক তিনি ইচ্ছাকরেন তাই করে থাকেন। (সূরা হুদঃ ১০৭)
৯. তিনিই একমাত্র আইনদাতা।
এপৃথিবীতে নিজেদের খেয়াল খুশিমত কোন আইন রচনার অধিকার কোন মানুষের নেই এবংপ্রয়োজনও নেই। এ পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত সারাদুনিয়ার মানুষের চলার জন্য, ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যাবস্থা পরিচালনা, অন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায়ে রাখা, অর্থনৈতিক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করাইত্যাদি সব বিষয়ের প্রয়োজনীয় সকল বিধানাবলী অল্লাহ তা‘য়ালা পবিত্রকুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে জগতবাসিকে জানিয়ে দিয়েছেন।
কুরআন সুন্নাহরমধ্যে স্পষ্ট বর্ণনা নেই এমন কোন আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রেওনতুন আইন কুরআন সুন্নাহর মূলনীতি বজায়ে রেখে কুরআন সুন্নাহ ঘোষিতনির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে আইন রচনা করতে হবে। কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী নাকরে নিজেদের খেয়াল খুশি মত আইন রচনা করলে তা কুরআন সুন্নাহকে অস্বীকারকরার নামন্তর। আর এটাই হল কুফরী। এ প্রসঙ্গে তিনি পবিত্র কুরআনে অসংখ্যআয়াত নাঝিল করেছেন। মহান আল্লাহ তা‘য়ালা বলেনঃ
ক. مَّا فَرَّطْنَا فِي الكِتَابِ مِن شَيْءٍ অর্থাৎ-আমি এ কুরআনে কোন কিছুর বর্ণনাই বাদ দেইনি। (সূরা আনআমঃ ৩৮)
খ.أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللّهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ
অর্থাৎ- তারা কিঅন্ধকার ও মুর্খ যুগের শাসন ব্যবস্থা চায়? অথচ শান্তিকামীদের জন্য আল্লাহঅপেক্ষা উত্তম আইন প্রণয়নকারী আর কে আছে? (সূরা মায়েদাঃ ৫০)
গ. وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থাৎ- রাসুল সা.তোমাদের জন্য (মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিধি-বিধান সহ অন্যান্য) যা কিছুনিয়ে এসেছেন তার পুরোটাই অনুসরণ কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক।আর জেনে রাখ আল্লাহ তাঁর অবাধ্যদেরকে কঠোর শাস্তিদাতা। (সূরা হাশরঃ ০৭)ঘ. إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ অর্থাৎ-আল্লাহই একমাত্র আইন দাতা। (সূরা আনআমঃ ৫৭)
১০. তিনিই সকল ক্ষমতার মালিক।
সার্বভৌমত্বে একমাত্র তাঁর।তিনিই সকল ক্ষমতার উৎস। إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ অর্থাৎ-নিশ্চই আপনি সর্বময় ক্ষমতার মালিক। (সূরা আল ইমরানঃ ২৬)وَلَمْ يَكُن لَّهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًاঅর্থাৎ-সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি প্রত্যেকবস্তুকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর সেগুলোকে পরিমিত ও যথাযথ করেছেন (সূরা ফুরকানঃ০২)
১১. সারা জাহানের তিনি প্রতিপালক, জীবন ও মৃত্যু দাতা, রিঝিক দাতাতিনি এক আল্লাহ।
আমাদের জানা অজানা সারা জাহানের একমাত্র প্রতিপালক মহানআল্লাহ তা‘য়ালা। তিনি সকলকে জীবন ও মৃত্যু দান করেন। আমাদের জানা অজানাসকল প্রাণীকে একমাত্র তিনিই রিঝিক দান করেন। মহান আল্লাহ তা‘য়ালা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেনঃ
وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُبِينٍ
অর্থাৎ-আরপৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই , তবে সবার জীবিকারদায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন। তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং সমাপিত হয়, এসব কিছু এ সুবিন্যস্ত কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। (সূরা হুদঃ ৬)
قُلْ مَن رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ قُلِ اللّهُ قُلْ أَفَاتَّخَذْتُم مِّن دُونِهِ أَوْلِيَاء لاَ يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا
অর্থাৎ-জিজ্ঞেস করুন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের প্রতিপালক কে? বলে দিন-আল্লাহ।বলুন, এর পরও কি তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে অভিভাক হিসেবে গ্রহন করবেযারা নিজেদেরই ভালো-মন্দ কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না? (সূরা আর্ র‘য়াদঃ১৬)
كَيْفَ تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنتُمْ أَمْوَاتاً فَأَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
অর্থাৎ-তোমরা কিভাবে আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী কর? অথচ তোমরা ছিলে মৃত্যুঅতপর তিনিই (আল্লাহ) তেমাদেরকে জীবন দান করেছেন। আবার মৃত্যু দান করবেন।পূনরায় জীবিত করবেন। শেষটায় তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরাবাকারাঃ ২৮)
هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ
অর্থাৎ- তিনি (আল্লাহ) মহানসত্তা যিনি তোমাদেরকে জীবনদান করেন এবং মৃত্যু বরণ করান। (সূরা গাফেরঃ৬৮)
وَاللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَاء بِغَيْرِ حِسَاب
অর্থাৎ-তিনিআল্লাহ যাকে ইচ্ছা অসীম রিঝিক দান করেন।
قُلْ مَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ
অর্থাৎ হে নবী আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, আসমান ওজমিনে আল্লহ ছাড়া অন্নদাতা আর কে আছে? (সূরা ইউনুছঃ ৩১)
وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
অর্থাৎ-নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘য়ালাউত্তম রিঝিক দাতা। (সূরা হজ্জঃ ৫
১২/
আল্লাহ এক অদ্বিতীয়
তাঁর কোন শরীক নেই
তাঁর কোন বংশ পরিক্রমা নেই . قل هو الله احد الله الصمد لم يلد ولم يولد ولم يكن له كفوا احد
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য জিসিম (শরীর)সাব্যস্ত করা কুফুরী।পবিত্র কোরআনে যে সকল আয়াতে আল্লাহর হাত. মুখ ইত্যাদি হওয়ার বর্ননা আসছে .যেমন كل شئ هالك الا وجه সেখানে কোন প্রকরের ব্যখ্যা করা ব্যতিরেকেই ঈমান আনা , এর প্রকৃত অর্থ আল্লাহর উপর ছেড়ে দেয়া.
তিনি সকল সৃষ্টির স্রষ্টা . এ সৃষ্টির মধ্যে অন্য কেউ অংশিদারীত্ব নেই , তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকরী
১৩/
তিনিই আরশেই সমাচিন ثم الاستوى على العرش
তবে কোথায় কি ভাবে সমাচীন তঁার খুজাখুজি ব্যতিরেকে শুধূ মাত্র আরশেই সমাচিন এ ভাবেই ঈমান বা বিশ্বাস করা
এ সমপকে উপরে বিস্তাীত আলোচনা করা হয়েছে .
১৪/
এক মাত্র আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন কাদীম (অনাদী) । কোন সৃষ্টির জন্য " কাদীম " সাব্যস্ত করা যাবেনা । যেমন পৃথিবীকে কাদীম (অনাদী) বলা।
১৫/
আল্লাহ তায়লার জন্য স্থান ,কাল ,দিক ইত্যাদী নির্ধারন করা হারাম।এগুলি সব কিছুই তাঁর সৃষ্টি।
**সায়্যিদুনা রাসুল পাক(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে সম্পৃক্তঃ**
===================**************************************************
তিনি সকল সৃষ্টি জীব থেকে শ্রেষ্ট ।তিনি শেষ ও সর্ব শ্রেষ্ট নবী . তিনি আখেরী নবী .
এ সমপর্কে ২য় পর্বে আলোচনা করা হবে ইনশা আল্লাহ >