- আল্লাহ তায়ালা মানব সৃ্ষ্টির ২০০০ বৎসর পূর্বেই সকলের রিজিকের বন্দোবস্হ / বাজেট করে রেখেছেন
ইমাম কুরতুবী রহ. وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا (সূরা হুদ: ৬) আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে হযরত আবু মূসা রা.ও হযরত আবু মালেক রহ.প্রমূখ আশআরী গোত্রের একটি ঘটনা উল্লেখ করে বলেন যে, তারা ইয়েমেন থেকে হিজরত করে মদীনা শরীফ পৌঁছলেন। তাঁদের সাথে পাথেয় সরূপ আহার্য পানীয় যা ছিল, তা নিঃশেষ হয়ে গেলে তারা নিজেদের পক্ষ থেকে একজন মূখপাত্র প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ স.এর নিকট প্রেরণ করলেন যেন তিনিতাদের জন্য কোন আহার্যের ব্যবস্থা করেন। এ প্রতিনিধি যখন রাসূলে আকরাম স·এর গৃহদ্বারে হাযির হলেন, তখন গৃহাভ্যন্তর হতে রাসূলে পাক স·এর কুরআন তিলাওয়াতের সুমধুর ধ্বনি ভেসে এলো। তিনি পাঠ করছিলেনঃ
وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا.............
অর্থাৎ-পৃথিবীতে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই, যার রিযিকের দ্বায়িত্ব আল্লাহ গ্রহণ করেননি।
(সূরা হুদ: ৬)
সাহাবী এ আয়াতে কারীমা শ্রবন করে মনে করলেন যে, আল্লাহ তা‘য়ালা স্বয়ং যখন সকল প্রাণীকূলের দায়িত্ব নিয়েছেন এবং আমরা আশআরী গোত্রের লোকেরা আল্লাহ তা‘য়ালার নিকট নিশ্চয় অন্যান্য জন্তু জানোয়ারের চেয়ে নিকৃষ্ট নই। অতএব তিনি অবশ্যই আমাদের জন্য রিঝিকের ব্যবস্থা করবেন। এ ধারণা করে তিনি রাসূলুল্লাহ সা·কে নিজেদের অসুবিধার কথা না বলেই সেখান থেকে ফিরে গিয়ে সাথীদেরকে বললেন-“শুভ সংবাদ, তোমাদের জন্য আল্লাহর সাহায্য আসছে।” তাঁরা এ কথার অর্থ বুঝলেন যে, তাদের মূখপাত্র নিজেদের দুরবস্থার কথ রাসূলে পাক স·কে অবহিত করেছে। তিনি তাঁদের আহার্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই তারা নিশ্চিত মনে বসে রইল।
তাঁরা উপবিষ্টই ছিলেন, এমন সময় দুই ব্যক্তি গোশত-রুটিপূর্ণ একটিقصعة অর্থাৎ বড় খাঞ্চা বহন করে উপস্থিত হয়ে আশআরীদের দান করলেন। অতপর আশআরী গোত্রের লোকদের আহার করার পরও প্রচুর গোশত-রুটি রয়ে গেল। তখন তারা পরামর্শ করে অবশিষ্ট খানা রাসূলুল্লাহ সা.এর সমীপে প্রেরণ করা বাঞ্চনীয় মনে করলেন, যেন তিনি প্রয়োজন অনুসারে ব্যয় করতে পারেন। সিদ্ধান্তঅনুযায়ী তাঁরা তাঁদের দুই ব্যক্তির মাধ্যমে অবশিষ্ট খাবারগুলো রাসূল সা·এর খেদমতে পাঠিয়ে দিলেন।
তাঁরা খাঞ্চা নিয়ে রাসূল সা·এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ সা.আপনার প্রেরিত রুটি-গোশত অত্যন্তসু-স্বাদু ও উপাদেয় এবং প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত হয়েছে।” উত্তরে রাসূল সা·বললেন, আমি তো কোন খাদ্য প্রেরণ করিনি।
তখন তাঁরা পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করলেন যে, আমাদের অসুবিধার কথা আপনার কাছে ব্যক্ত করার জন্য অমুক ব্যক্তিকে আপনার নিকট প্রেরণ করেছিলাম। তিনি ফিরে গিয়ে এ কথা বলেছিল। আমরা মনে করেছি যে, আপনিই খানা প্রেরণ করেছেন। এসব কিছু শুনে রাসূল সা·বললেন, ‘আমি নই বরং এসব খাবার ঐ পবিত্র সত্তা প্রেরণ করেছেন যিনি সকল প্রাণীর রিঝিকের দায়িত্ব নিয়েছেন’।
সূত্রঃ তাফসীরে মা‘আরিফুল কুরআন, পৃঃ ৬২২ (সংক্ষিপ্ত)
এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া[ নিজামী]
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
নুরুলগনি ইসলামী একাডিমী
http://www.sonarbangladesh.com/blog/DaliaNuzha/89002
http://www.youtube.com/user/abdullahnezami
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন