হাদিস শাস্ত্রের
কতিপয় পরিভাষা]
সাহাবী (صحابى
যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
সাহচর্য লাভ করেছেন বা তাঁকে দেখেছেন ও তাঁর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন, অথবা জীবনে একবার তাঁকে দেখেছেন এবং ঈমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁকে এর
সাহাবী বলে।
তাবিঈ (تابعى)
যিনি রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন সাহাবীর নিকট হাদীস
শিক্ষা করেছেন অথবা তাঁকে দেখেছেন এবং মুসলমান হিসাবে মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁকে
তাবিঈ বলে।
মুহাদ্দিস (محدث)]
যে ব্যক্তি হাদীস চর্চা করেন এবং বহু সংখ্যক হাদীসের সনদ ও মতন সম্পর্কে বিশেষ
জ্ঞান রাখেন তাঁকে মুহাদ্দিস বলে।
শায়খ (شييخ)[
হাদীসের শিক্ষাদাতা রাবীকে শায়খ বলে।
শায়খায়ন (شيخين)]
সাহাবীগণের মধ্যে আবু বকর ও উমর (রা.)-কে একত্রে শায়খায়ন বলা হয়। কিন্তু
হাদীসশাস্ত্রে ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম (রহ.)-কে এবং ফিক্হ-এর পরিভাষায় ইমাম
আবু হানীফা (রহ.) ও আবু ইউসুফ (রহ.)-কে একত্রে শায়খায়ন বলা হয়।
হাফিয (حافظ)[
যিনি সনদ ও মতনের বৃত্তান্ত সহ এক লক্ষ হাদীস আয়ত্ব করেছেন তাঁকে হাফিয বলা
হয়।
হুজ্জাত (حجة)[
অনুরূপভাবে যিনি তিন লক্ষ হাদীস আয়ত্ব করেছেন তাঁকে হুজ্জাত বলা হয়।
হাকিম (حاكم)[
যিনি সব হাদীস আয়ত্ব করেছেন তাঁকে হাকিম বলা হয়।
রিজাল (رجال)[]
হাদীসের রাবী সমষ্টিকে রিজাল বলে। যে শাস্ত্রে রাবীগণের জীবনী বর্ণনা করা
হয়েছে তাঁকে আসমাউর-রিজাল (اسماء الرجال) বলা হয়।
রিওয়ায়ত (رواية)[
হাদীস বর্ণনা করাকে রিওয়ায়ত বলে। কখনও কখনও মূল হাদীসকেও রিওয়ায়ত বলা হয়।
যেমন, এই কথার সমর্থনে একটি রিওয়ায়ত (হাদীস) আছে।
সনদ (سند)[
হাদীসের মূল কথাটুকু যে সূত্র পরম্পরায় গ্রন্থ সংকলনকারী পর্যন্ত পৌঁছেছে
তাকে সনদ বলা হয়। এতে হাদীস বর্ণনাকারীদের নাম একের পর এক সজ্জিত থাকে।
মতন (متن)[
হাদীসের মূল কথা ও তার শব্দ সমষ্টিকে মতন বলে।
মরফূ’ (مرفوع)[
যে হাদীসৈর সনদ (বর্ণনা পরম্পরা) রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম পর্যš— পৌঁছেছে, তাকে মরফূ’ হাদীস বলে।
মাওকুফ (موقوف)]
যে হাদীসের বর্ণনা-সূত্র ঊর্ধ্ব দিকে সাহাবী পর্যন্ত পৌঁছেছে, অর্থাৎ যে সনদ-সূত্রে কোন সাহাবীর কথা বা কাজ বা অনুমোদন বর্ণিত হয়েছে তাকে
মাওকূফ হাদীস বলে। এর অপর নাম আসার (اثار) ।
মাকতু (مقطوع)[
যে হাদীসের সনদ কোন তাবিঈ পর্যন্ত পৌঁছেছে, তাকে মাকতু’ হাদীস বলা হয়।
মুত্তাফাকুন
আলাইহি (متفق عليه)[]
যে হাদীসের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম উভয়ই একমত এবং
তারা উক্ত হাদীস লিপিবদ্ধ করেছেন তাই মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদীস।
সাহীহ (صحيح)[
যে মুত্তাসিল হাদীসের সনদে উলেখিত প্রত্যেক রাবীই পূর্ণ আদালত ও
যাবতা-গুণসম্পন্ন এবং হাদীসটি যাবতীয় দোষত্র“টি মুক্ত তাকে
সাহীহ হাদীস বলে।এবং
এর দ্বারা আক্বাইদ সংক্রান্ত মাছয়ালা প্রমানের সাথে সাথে শরয়ী বিধি বিধানও প্রমানে
বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
হাসান (حسن)[]
যে হাদীর্সে কোন রাবীর যারতগুণে পরিপূর্ণতার অভাব রয়েছে তাকে হাসান হাদীস বলা
হয়। ফিকহবিদগণ সাধারণত সাহীহ ও হাসান হাদীসের ভিত্তিতে শরী‘আতের বিধান নির্ধারণ করেন।
যঈফ (ضعيف)
যে হাদীসের রাবী কোন হাসান হাদীসের রাবীর গুণসম্পন্ন নন তাকে যঈফ হাদীস বলে।যঈফ হাদিসের দ্বারায়
ফাজায়েল তরগীব ও তরহীব সম্পর্কিত বিধান প্রমানীত হয়।
বিঃদ্রঃ:-- রাবীর দুর্বলতার কারণেই হাদীসকে দুর্বল বলা
হয়, অন্যথায় রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কোন কথাই যঈফ নয়।যঈফ অর্থ দূর্বল কিন্তু একে জাল বলে আখ্যায়িত
করা অনূচীত।
বরং যে বা যাহারা যঈফ হাদিসকে জাল বলে আখ্যায়িত করেন,জাল হাদিস,
জাল হাদিস বলে মুখের ফেনা বাহির করে ফেলেন
মূলত তারা এ কর্মের দ্বারা রসুল সাঃ এর উপর মিথ্যার এলজাম দিয়ে থাকেন
পরোক্ষ ভাবে।যেমন সাধারণত জাল্ শব্দের অর্থ নকল, মিথ্যা, বানোয়াট,ই
বুঝায়, যার আরবী হল তযবীর অর্থাৎ
জাল্। কিন্তু হাদিসের পরিভাষায় যে হাদীসের রাবী কোন হাসান হাদীসের রাবীর গুণসম্পন্ন নন তাকে যঈফ হাদীস বলে।আর "যঈফ" ইহা একটি আরবী শব্দ এর
অর্থ হল দূর্বল।কিন্তু কোন প্রকারেই জঈফ হাদিসকে "জাল" হাদিস বলা যাবেনা।বা "যঈফ" শব্দের অর্থ "জাল" যাবেনা।
যারাই বলেন মূলত তারা সাধারনকে ধোকা দিয়ে ,শব্দের অপব্যাখ্যা করে অদৃশ্য কোন ফায়দা
হাছিল করতে চায়।
যেমন ধরুন যারা বলেন আমরা কোরআন এবং ছহীহ
হাদিস মানি ও ছেহাহ ছিত্তার হাদিস মানি এর অর্থ দাড়ায় যে ছেহাহ ছিত্তার বাহিরে আর কোন ছহিহ হাদীস নেই?আসলে তা নয় বরং ছেহা ছিত্তার বাহিরেও অসংখ্য
ছহি হাদিস বিদ্ধমান । অথচ ছেহাহ ছিত্তায় গডে মিলে সর্বমোট ৩৮৭৭৫ টি হাদিস (তকরার সহ)অথচ নবী সাঃ
হইতে রেওয়ায়েত কৃত হাদিসের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষাধীক।আর ইমাম বোখারীর সংকলন কৃত
সেই বোখারী শরিফে হাদীসের সংখ্যা-7275 টি হলেও তাঁর সংকলনে ছিল প্রায় ৬ লক্ষাধীক হাদিস। আর
মুখস্হ ছিল প্রায় ৩ লক্ষাধীক হাদিস।তাহলে পূর্ণাঙ্গ
শরিয়তের উপর আমল করতে হলে 38775 টি হাদিস কি যথেষ্ট? তাই যদি হয় তাহলে অন্যান্য হাদিসের উপর কি ভাবে আমল করা সম্ভব? তাছাড়া যদি ৩৮৭৭৫ টি হাদিস কে যদি ছহিহ মানী
আর বাকী সব হাদিসকে যঈফ জাল্(তাদের ভাষায়) বলি তাহলে এর অর্থ কি দাড়াল ? আমাদের
প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ, যিনি সমস্ত গুনাহর থেকে পাক পবিত্র নিশ্পাপ
হওয়া সত্বেও প্রায় ৯,৬০,০০০টির মত জাল অর্থাৎ নকল, মিথ্যা বানোয়াট, ও ভূল কথা
বলেছেন ।নাউযুবিল্লাহ! এমন কথা বলা বা বিশ্বাস করা কোন ঈমানদার মুসলমান কি করতে
পারে?এক কথায় বলব যে , না, না,কখনো কোন মুসলিম এমন আক্বিদাহ বিশ্বাস রাখতে পারেনা।
তাহলে কেন সাধারন মুসলমানকে ধোকা দেয়ার জন্য কথায় কথায় ছহিহ হাদিসের জিকির করা
হচ্ছে?কার সার্থে? কাকে খুশি করার জন্য।না জানি এর পিছনে কোন গভীর চক্রান্ত
লুকায়ীত আছে!
বর্তমানে
আহলে হাদিসের ভাইয়েরা সাহীহ,ও যঈফ এই
দুই প্রকারের হাদিস নিয়েই বিশেষ আলোচনা করে থাকেন এবং মানুষকে এভাবে বুঝিয়ে থাকেন
যে আমরা কোরআন আর ছহিহ হাদিস মানি আর ছহীহ অর্থ সঠিক ও সত্য আর যঈফ অর্থ নকল মিথ্যা
বানোয়াট জাল্। এটাই মানুষ স্বাভাবিক ভাবে ছহীহ এবং জাল শব্দের অর্থ বুঝে থাকেন।এবং বুঝিয়ে থাকেন আসলে কিন্তু
ব্যাপারটা এমন নয় বরং হাদিসের ক্ষেত্রে ছহিহ এবং যঈফ কাকে বলে তা আমাদের প্রচলিত
পরিভাষা দিয়ে বুঝলে হবেনা বরং কোরআন-হাদিসকে তার নিজস্ব
পরিভাষা দিয়েই বুঝতে হবে অন্যাথায় হীতে বিপরীত হবে।
এই জন্য আগে এ সংক্রান্ত কিছু ব্যবহারীত কিছু
শব্দের অর্থ বুঝতে হবে যেমন
রিওয়ায়ত (رواية)]
হাদীস বর্ণনা করাকে রিওয়ায়ত বলে। কখনও কখনও মূল হাদীসকেও রিওয়ায়ত বলা হয়।
যেমন, এই কথার সমর্থনে একটি রিওয়ায়ত (হাদীস) আছে।
সনদ (سند)[]
হাদীসের মূল কথাটুকু যে সূত্র পরম্পরায় গ্রন্থ সংকলনকারী পর্যন্ত পৌঁছেছে
তাকে সনদ বলা হয়। এতে হাদীস বর্ণনাকারীদের নাম একের পর এক সজ্জিত থাকে।
মতন (متن)
হাদীসের মূল কথা ও তার শব্দ সমষ্টিকে মতন বলে।
এবার আসুন মূল কথায়
যেমন হাদিসের পরিভাষায় সাহীহ (صحيح) বলা হয়:-
যে মুত্তাসিল হাদীসের সনদে উলেখিত প্রত্যেক রাবীই পূর্ণ আদালত ও
যাবতা-গুণসম্পন্ন এবং হাদীসটি যাবতীয় দোষত্র“টি মুক্ত তাকে
সাহীহ হাদীস বলে।এবং
এর দ্বারা আক্বাইদ সংক্রান্ত মাছয়ালা প্রমানের সাথে সাথে শরয়ী বিধি বিধানও প্রমানে
বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
হাসান حسن বলা হয়;-
যে হাদীসে কোন
রাবীর যারতগুণে পরিপূর্ণতার অভাব রয়েছে তাকে হাসান হাদীস বলা হয়। ফিকহবিদগণ
সাধারণত সাহীহ ও হাসান হাদীসের ভিত্তিতে শরী‘আতের বিধান
নির্ধারণ করেন।
যঈফ (ضعيف)] বলা হয়:-
যে হাদীসের রাবী কোন হাসান হাদীসের রাবীর গুণসম্পন্ন নন তাকে যঈফ হাদীস বলে।যঈফ হাদিসের দ্বারায়
ফাজায়েল তরগীব ও তরহীব সম্পর্কিত বিধান প্রমানীত হয়।উপরোক্ত সংজ্ঞাটি আলেম ওলামা
সহ যারা হাদিস অধ্যয়ন করেন তাদের জন্য। তাই
অনেক ক্ষেত্রে উক্ত সংজ্ঞাটি
সাধারনের বুঝতে অনেক কষ্ট হয়ে যায় এই জন্য
সাধারনের সুবিধার্থে এই ভাবে বলা হয় থাকে যে,
যেমন হাদিস বর্নণাকারীদের অবস্হার পরিপেক্ষিতে
হাদিস ছহিহ, হাছান বা যঈফ হয়ে থাকে।
যেমন হাদিসের বর্নণাকারী যোগ্যতার মাফকাঠিতে
তিন ধরনের হয়ে থাকে 1. উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন হাদিস বর্নণাকারী 2.মধ্যম যোগ্যতা সম্পন্ন হাদিস বর্নণাকারী ও3.
নিন্ম যোগ্যতা সম্পন্ন হাদিস বর্নণাকারী
(অর্থাৎ ফাস্ট ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাস, ও থার্ট ক্লাস) তাই উচ্চ যোগ্যতা
সম্পন্ন বর্নণাকারীদের হাদিস কে "সাহীহ হাদিস" বলা হয়। মধ্যম যোগ্যতা
সম্পন্ন বর্নণাকারীদের হাদিসকে "হাসান হাদিস" বলা হয়। আর নিন্ম যোগ্যতা
সম্পন্ন বর্নণাকারীদের হাদিস কে "যঈফ হাদিস "বলা হয়।
কিন্তু নিন্ম যোগ্যতা সম্পন্ন বর্নণাকারীদের
বর্নণাকৃত হাদিসকে কোন ভাবেই জাল মিথ্যা বানোয়াট
হাদিস বলার সুযোগ নেই। হাদিস
বর্নণাকারীর দুর্বলতার কারণেই হাদীসকে দুর্বল বা যঈফ বলা
হয়, অন্যথায় রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কোন কথাই যঈফ নয়।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হক কথা বুঝার তাওফিক দান
করুন আমিন।
মাওযূ’ (موضوع)[
যে হাদীসের রাবী জীবনে কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর নামে মিথ্যা কথা রটনা করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে, তার বর্ণিত হাদীসকে মাওযূ’
হাদীস বলে। এরূপ
ব্যক্তির বর্ণিত হাদীস গ্রহণযোগ্য নয়।
শিয়া
দৃষ্টিভঙ্গি
শিয়া দৃষ্টিভঙ্গিতে ছয়জন প্রসিদ্ধ হাদিস সংগ্রাহককে এতটা মূল্যায়ন করা হয়
না। শিয়া মতানুসারে পাঁচজন প্রসিদ্ধ হাদিস সংগ্রাহক রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথম
চারজন সবচেয়ে প্রসিদ্ধ:
·
আল-ইসতিবাসার
·
আল-তাহজিব
·
মুন লা ইয়াহ্দুরুহু আল-ফাকিহ
শিয়ারা রাফেজি নামে ও পরিচিত।
ইবাদি
দৃষ্টিভঙ্গি
ইবাদি মত মূলত আরব রাষ্ট্র ওমানে প্রচলিত। এই মতে সুন্নিদের অনুসৃত কিছু হাদিস
গ্রহণ করা হয়, আবার অনেকগুলোই গ্রহণ করা হয় না। হাদিস
গ্রহণের ব্যাপারে তাদের নিজস্ব মত রয়েছে। সুন্নিরা বিপুল সংখ্যক হাদিস গ্রহণ
করেছেন যা ইবাদিরা করেননি। তাদের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ এবং একচেটিয়া হাদিস গ্রন্থ
হচ্ছে:
·
আল-জামি আল-সহিহ্[১] - যার অপর নাম মুসনাদ আল-রাবি ইবন হাবিব। আবু ইয়াকুব ইউসুফ ইবন ইবরাহিম আল-ওয়ারিজলানি এই গ্রন্থ সংকলন করেছেন।
এরা খারেজী নামে ও পরিচিত।
অমুসলিম
দৃষ্টিভঙ্গি[
ইসলামের প্রায় সকল হাদিস যখন সংকলন শেষ হয় তার পরপরই পাশ্চাত্য জগতের সাথে
মুসলিমদের মূল বিরোধ এবং সংযোগ শুরু হয়। একদিকে যেমন ক্রুসেডের মাধ্যমে সম্পর্ক দিনে দিনে বিরূপ আকার ধারণ
করছিল অন্যদিকে আবার তেমনই একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করছিল। পাশ্চাত্যে প্রথমে
কুরআনের অনুবাদ করা হয়। এর অনেক পরে কতিপয় চিন্তাবিদ হাদিস এবং ইসলামী
আইনশাস্ত্রসহ অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেন। বর্তমান কালের কয়েকজন বিখ্যাত
অমুসলিম হাদিস বিশেষজ্ঞ হচ্ছেন:
তথ্যসূত্র
2.
ঝাঁপ দাও↑ হাদীসে আরবাঈন, চলিশ হাদীস , সংকলন: মুফতী
সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আমীমুল ইহসান বারকাতী, অনুবাদ ও ব্যাখ্যা মাওলানা সাইয়্যেদ
মুহাম্মাদ সাফওয়ান নোমানী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ নাঈমুল ইহসান বারকাতী ।
গ্রন্থপঞ্জি
কিতাবুস সিত্তা
কিতাবুস কথাটি কিতাব كتاب থেকে আগত, যার অর্থ বই। আর
সিত্তা হচ্ছে ৬টি। ইসলামী পরিভাষায় হাদীসের ছয়খানা অন্যতম হাদীসগ্রন্থকে একত্রে
কিতাবুস সিত্তাহ বলে।
কিতাবুস সিত্তা গ্রন্থাবলী ও এর সংকলকদের নাম
|
|||||||
ক্রমিক নং
|
গ্রন্থের নাম
|
সংকলকের নাম
|
জন্ম
|
ওফাত
|
জীবন কাল
|
হাদীস সংখ্যা
|
|
১
|
সহীহ বুখারী
|
১৯৪ হিজরী
|
২৫৬ হিজরী
|
৬২ বছর
|
৭৩৯৭টি
|
||
২
|
সহীহ মুসলিম
|
২০৪ হিজরীতে নিশাপুরে
|
২৬১ হিজরী
|
৫৭ বছর
|
৪০০০টি
|
||
৩
|
জামে আত তিরমিযী
|
২০৯ হিজরীতে খোরাসানের তিরমিযী শহরে
|
২৭৯ হিজরী
|
৭০ বছর
|
৩৮১২টি
|
||
৪
|
সুনানে আবু দাউদ
|
২০২ হিজরীতে সীস্তান নামক স্থানে
|
২৭৫ হিজরী
|
৭৩ বছর
|
৪৮০০টি
|
||
৫
|
সুনানে নাসায়ী
|
২১৫ হিজরী নাসা শহরে
|
৩০৩ হিজরী
|
৮৮ বছর
|
৫৭৬১ টি
|
||
৬
|
আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মাযাহ আল কাযবীনি
|
২১৭ হিজরীতে কাসবীন শহরে
|
২৭৩ হিজরী
|
৬৪ বছর
|
৪৩৪৯টি
|
সর্বোচ্চ হাদীস
বর্ণনাকারী কয়েকজন সাহাবী
কিতাবুস সিত্তা গ্রন্থাবলী ও এর সংকলকদের নাম
|
|||||
ক্রমিক নং
|
সাহাবীর নাম
|
ওফাত
|
জীবন কাল
|
বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা
|
|
১
|
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) প্রকৃত নাম আবদুর রহমান
|
৫৭ হিজরী
|
৭৮ বছর
|
৫৩৭৪ টি
|
|
১
|
উম্মুল মুমিনিন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.)
|
৫৮ হিজরী
|
৬৭ বছর
|
২২১০টি
|
|
১
|
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)
|
৬৮ হিজরী
|
৭১ বছর
|
১৬৬০টি
|
|
১
|
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)
|
৭০ হিজরী
|
৮৪ বছর
|
১৬৩০টি
|
|
১
|
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)
|
৭৪ হিজরী
|
৯৪ বছর
|
১৫৪০টি
|
হাদিসঃ ফাকিহগনের
পরিভাষায় নবী (সাঃ) আল্লাহ্র মননিত রাসুল হিসাবে যা কিছু বলেছেন যা কিছু করেছেন
এবং যা কিছু বলার বা করার অনুমুতি দিয়েছেন অথবা সমর্থন জানিয়েছেন তাকে হাদিস
বলে।
হাদিসে
কুদসীঃ এ ধরনের হাদিসের মুল কথা সরাসরি আল্লাহ্র
নিকট থেকে প্রাপ্ত এবং আল্লাহ্র সাথে সম্পর্কিত। যেমন আল্লাহ তাঁর নবী(সাঃ)কে
ইলহাম,কিংবা স্বপ্ন যোগে অথবা জিবরীল (আঃ) এর মাধমে তা জানিয়েছেন
মহানবী (সাঃ) তা
নিজ ভাষায় বর্ণনা করেছেন তাকে
হাদিসে কুদসি বলে।
** কুরানের
আয়াত যেভাবে
অবতীর্ণ হত তা ঠিক সেইভাবে মানুষকে জানাতেন।কুরানের
আয়াত এবং হাদিসে কুদসির মাঝে এই বিশাল পার্থক্য।
কাওলি
হাদিসঃ কাওলি
মানে হল বাচনিক। কোন বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যা বলেছেন অর্থাৎ যে হাদিসে তাঁর
কোন কথা বিধৃত হয়েছে তাকে কাওলি হাদিস বলে।
ফেলী
হাদিসঃ ফেলী অর্থ হল কর্ম মুলক। যে হাদিসে
রাসুল(সাঃ) এর কাজের বিবরন উল্লেখিত হয়েছে তাকে ফেলী হাদস বলে।
তাকরিরি
হাদিসঃ সাহাবিগনের যে সকল কথা ও কাজ মাহানবী (সাঃ)
এর অনুমদন বা সমর্থন প্রাপ্ত হয়েছে সে ধরনের কোন কথা বা কাজের বিবরন হতেও
শরীয়তের জানা যায়। অতএব যে হাদিসে এ ধরনের কোন ঘটনা বা কাজের উল্লেখ পাওয়া যায়
তাকে তাকরির হাদিস বলে।
আছারঃ আছার
শব্দের অর্থ কখনও কখনও রাসুলুইল্লাহ(সাঃ)এর হাদিস নির্দেশ করে।তবে কেও কেও হাদিস ও
আছার এর মধ্যে পার্থক্য করে থাকেন।তাদের মতে সাহাবিদের থেকে শরীয়ত সম্পর্কে যা
কিছু বলা হয়েছে তাকে আছার বলে। তবে এই বেপারে সবাই একমত যে শরীয়তের সম্পর্কে
সাহাবিদের নিজস্ব কোন মতবাদ বা কোন বিধান দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা।কাজেই এই বেপারে
তাঁদের কথা মুলতঃ রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর ই কথা। হয়ত কোন কারন বসত তারা শুরুতে
নবী(সাঃ)এর নাম উল্লেখ করেন্নি।হাদিসের পরিভাষায় এই সকল হাদিসকে মাওকুফ হাদিসও
বলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন