১.সমকামিতা কি?
উইকিপিডিয়ার মতে সমকামিতা বলতে বোঝায়, সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি স্নেহ বা প্রণয়ঘটিত এক ধরণের যৌন প্রবণতা। এ প্রবণতা কি ব্যধি না সুস্থ মানসিকাতর যৌন আকাক্সক্ষা?
বিষয়টি বিতর্কের।
তবে সমকামিতা যে কোনো ধর্মেই নিষিদ্ধ।এবং এটা অত্যন্ত নিকৃষ্ট ও নির্লজ্জ বেহাপনার সর্ব নিন্ম পর্যায়ের এক অপকর্ম। ধর্মে কোনো কিছু নিষিদ্ধের একটি কারণ হচ্ছে তা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। যে কোন ধর্ম কোনো ক্ষতিকর বিষয়কে সমাজের জন্য অনুমতি দেয় না। এটা একমাত্র বর্তমান বিশ্বের বিকৃত মস্তিষ্ক সম্পন্ন মানুষ নামের কলঙ্কদের দ্বারা সংগঠিত হচ্ছে,তথা কথিত ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে আইন করে পশ্চিমাদের বিকৃত মস্তিষ্ক প্রসূত কালচার বিশ্ব ব্যপি চড়িয়ে দিচ্ছে।
এতে করে পৃথিবী ধবংশ তথা কেয়ামতকে তরান্বিত করা হচ্ছে এতে সন্দেহ নেই।
২. অবশ্যই ইসলামে homosexuality সম্পূর্ণ হারাম। এবং স্বাভাবিক ব্যভিচারের চেয়েও খারাপ।
লুত (আ) এর কওমকে (Sodom আর Gomorrah নগরী) আল্লাহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন যেসব কারণে এর মধ্যে সমকামিতা ছিল একটি।
আমি এখানে কুরআনের আয়াত আর হাদিসগুলো উল্লেখ করছি।
• "এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি।
যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ?
তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।" (আরাফ ৭:৮১-৮২)
• "সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর?
এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্য সঙ্গিনী হিসেবে যাদের সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর?
বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।" (শুয়ারা ২৬:১৬৫-১৬৬)
• "স্মরণ কর লূতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর পরিণতির কথা তোমরা অবগত আছ! তোমরা কি কামতৃপ্তির জন্য নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরা তো এক বর্বর সম্প্রদায়।
উত্তরে তাঁর কওম শুধু এ কথাটিই বললো, লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও।
এরা তো এমন লোক যারা শুধু পাকপবিত্র সাজতে চায়।
অতঃপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করলাম তাঁর স্ত্রী ছাড়া।
কেননা, তার জন্যে ধ্বংসপ্রাপ্তদের ভাগ্যই নির্ধারিত করেছিলাম।" (কুরআন ২৭: ৫৪ -৫৭)
• "আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ সুসংবাদ নিয়ে ইব্রাহীমের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, আমরা লুতের জনপদের অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করব। নিশ্চয় এর অধিবাসীরা অপরাধী।" (২৯:৩১)
৩.সমকামিতার শাস্তি আল্লাহর ভয়াবহ গজব ও "লুত সাগর" বা "মৃত সাগর" একটি নিদর্শন।
লুত সম্প্রদায়ের প্রেতাত্মারা এবার বাংলাদেশে!
সমকামিতার শাস্তি আল্লাহর ভয়াবহ গজব- যার পরিনতি জাতি ধংস হওয়া।
ইয়া আল্লাহ, আমাদের রক্ষা করুন এ ভয়াবহ বিপদ থেকে। আমরা কওমের লুতের মত গযব চাই না।
বাংলাদেশে এই প্রথম সমকামী বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘রূপবান’ এর গজব শুরু হলো। সমকামিতার মত বিকৃত যৌনচর্চার জন্য কওমে লুতকে মহান আল্লাহ আজাব দিয়ে সমূলে ধংস্ব করেছিলেন। সমকামিতা হল কুকুর-শূকরের মত নিকৃষ্ট জন্তু-জানোয়ারের যৌনাচারের চেয়েও নোংরা এক বিকৃত যৌনচর্চা!
[পবিত্র কোরআনে লুত (আঃ) এর কওম কতৃক ব্যাপকভাবে সমকামিতার জন্য আল্লাহ গজব সম্পর্কে মানবজাতিকে হুশিয়ার করা হয়েছে। কওমে লূত-এর বর্ণিত ধ্বংসস্থলটি বর্তমানে ‘বাহরে মাইয়েত’ বা ‘বাহরে লূত’ অর্থাৎ ‘মৃত সাগর’ বা ‘লূত সাগর’ নামে খ্যাত। যা ফিলিস্তীন ও জর্ডান নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে বিশাল অঞ্চল জুড়ে নদীর রূপ ধারণ করে আছে।[সর্বশেষ হিসাব মতে উক্ত অঞ্চলটির আয়তন দৈর্ঘ্যে ৭৭ কিলোমিটার (প্রায় ৫০ মাইল), প্রস্থে ১২ কিঃ মিঃ (প্রায় ৯ মাইল) এবং গভীরতায় ৪০০ মিটার (প্রায় কোয়ার্টার মাইল)।
-ঢাকা, দৈনিক ইনকিলাব ২৮ এপ্রিল ২০০৯ পৃঃ ৮।]
যেটি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে বেশ নীচু। এর পানিতে তৈলজাতীয় পদার্থ বেশী। এতে কোন মাছ, ব্যাঙ এমনকি কোন জলজ প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না। এ কারণেই একে ‘মৃত সাগর’ বা ‘মরু সাগর’ বলা হয়েছে। সাদূম উপসাগর বেষ্টক এলাকায় এক প্রকার অপরিচিত বৃক্ষ ও উদ্ভিদের বীজ পাওয়া যায়, সেগুলো মাটির স্তরে স্তরে সমাধিস্থ হয়ে আছে। সেখানে শ্যামল-তাজা উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যার ফল কাটলে তার মধ্যে পাওয়া যায় ধূলি-বালি ও ছাই। এখানকার মাটিতে প্রচুর পরিমাণে গন্ধক পাওয়া যায়। Natron ও পেট্রোল তো আছেই। এই গন্ধক উল্কা পতনের অকাট্য প্রমাণ।
[স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব, পৃঃ ২৫৮।]
আজকাল সেখানে সরকারী প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ হ’তে পর্যটকদের জন্য আশপাশে কিছু হোটেল-রেস্তোঁরা গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনা থেকে শিক্ষা হাছিলের জন্য কুরআনী তথ্যাদি উপস্থাপন করে বিভিন্ন ভাষায় উক্ত ঘটনা লিপিবদ্ধ করে তা থেকে উপদেশ গ্রহণের জন্য পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই হ’ত সবচাইতে যরূরী বিষয়। আজকের এইড্স আক্রান্ত বিশ্বের নাফরমান রাষ্ট্রনেতা, সমাজপতি ও বিলাসী ধনিক শ্রেণী তা থেকে শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম হ’ত। কেননা এগুলি মূলতঃ মানুষের জন্য শিক্ষাস্থল হিসাবে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হয়েছে।
যেমন আল্লাহ বলেন,
إِنَّ فِىْ ذَالِكَ لَآيَاتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِيْنَ، … إِنَّ فِىْ ذَلِكَ لَاَيَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ-
‘নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন সমূহ রয়েছে চিন্তাশীলদের জন্য’ … এবং বিশ্বাসীদের জন্য’ (হিজর ১৫/৭৫, ৭৭)। একই ঘটনা বর্ণনা শেষে অন্যত্র তিনি বলেন, وَلَقَدْ تَّرَكْنَا مِنْهَآ آيَةً بَيِّنَةً لِّقَوْمٍ يَّعْقِلُوْنَ- ‘জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আমরা অত্র ঘটনার মধ্যে স্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি’ (আনকাবূত ২৯/৩৫)।
লুত সম্প্রদায়ের বদভ্যাসের প্রতি ইঙ্গিত ‘বিশ্ববাসীর মধ্যে কেন তোমরাই কেবল পুরুষদের নিকটে (কুকর্মের উদ্দেশ্যে- আ‘রাফ ৭/৮১) এসে থাক’? ‘আর তোমাদের স্ত্রীগণকে বর্জন কর, যাদেরকে তোমাদের জন্য তোমাদের পালনকর্তা সৃষ্টি করেছেন? নিঃসন্দেহে তোমরা সীমা লঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়’ [শো‘আরা ২৬/১৬৫-১৬৬]
‘তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ কখনো করেনি’। ‘তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে প্রকাশ্যে গর্হিত কর্ম করছ’? জবাবে তাঁর সম্প্রদায় কেবল একথা বলল যে, আমাদের উপরে আল্লাহর গযব নিয়ে এসো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’।. তিনি তখন বললেন, ‘হে আমার পালনকর্তা! এই দুষ্কৃতিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাকে সাহায্য কর’ [আনকাবূত ২৯/২৮-৩০; আ‘রাফ ৭/৮০]
আল্লাহ বলেন,‘অবশেষে যখন আমাদের হুকুম এসে পৌঁছল, তখন আমরা উক্ত জনপদের উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপরে ক্রমাগত ধারায় মেটেল প্রস্তর বর্ষণ করলাম’। ‘যার প্রতিটি তোমার প্রভুর নিকটে চিহ্নিত ছিল। আর ঐ ধ্বংসস্থলটি (বর্তমান আরবীয়) যালেমদের থেকে বেশী দূরে নয়’ [হূদ ১১/৮২-৮৩]
এটা ছিল তাদের কুকর্মের সাথে সামঞ্জস্যশীল শাস্তি। কেননা তারা যেমন আল্লাহর আইন ও প্রাকৃতিক বিধানকে উল্টিয়েছিল অর্থাৎ স্ত্রীসঙ্গ বাদ দিয়ে মানুষের স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে পুংমৈথুনে ও সমকামিতায় লিপ্ত হয়েছিল, ঠিক তেমনি তাদেরকে মাটি উল্টিয়ে উপুড় করে শাস্তি দেওয়া হ’ল।
ডঃ জামু বলেন, তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন আকারের এক হাযার উল্কাপিন্ড সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওযন ছিল ৩৬ টন। এর মধ্যে অনেকগুলি আছে নুড়ি পাথর, যাতে গ্রানাইট ও কাঁচা অক্সাইড লৌহ মিশ্রিত। তাতে লাল বর্ণের চিহ্ন অংকিত ছিল এবং ছিল তীব্র মর্মভেদী। বিস্তর গবেষণার পরে স্থির হয় যে, এগুলি সেই প্রস্তর, যা লূত জাতির উপরে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল’ (সংক্ষেপায়িত)।[মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম, স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব পৃঃ ২৫৬।] ইতিহাস-বিজ্ঞান বলে, সাদূম ও আমুরার উপরে গন্ধক (Sulpher)-এর আগুন বর্ষিত হয়েছিল।[স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব, পৃঃ ২৫৮।]
এমন কি তাদের প্রত্যেকের নামে আলাদা ভাবে লাল বর্ণের অঙ্কনকৃত আল্লাহর গজবের সেই উল্কা পিন্ড আর পাথর নিক্ষিপ্ত হয়ে ছিল।
তাহলে একটু বুঝার চেষ্টা করুন আল্লহ কতটুকু নারাজ হলে এমন আযাব নাজেল করতে পারেন। আরও জানার কথা হল এমন নির্ধারিত আযাব এবং এমন ভয়াবহ আযাব পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোন জাতির উপর নাজেল করেন নি একমাত্র সমকামী সম্প্রদায়ের প্রতি ।
হযরত লূত (আঃ)-এর নাফরমান কওমের শোচনীয় পরিণতি বর্ণনা করার পর দুনিয়ার অপরাপর জাতিকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, وَمَا هِىَ مِنَ الظَّلِمِيْنَ بِبَعِيْدٍ، ‘(জনপদ উল্টানো ও প্রস্তর বর্ষণে নিশ্চিহ্ন ঐ ধ্বংসস্থলটি) বর্তমান কালের যালেমদের থেকে খুব বেশী দূরে নয়’ (হূদ ১১/৮৩)।.
মক্কার কাফেরদের জন্য উক্ত ঘটনাস্থল ও ঘটনার সময়কাল খুব বেশী দূরের ছিল না। মক্কা থেকে ব্যবসায়িক সফরে সিরিয়া যাতায়াতের পথে সর্বদা সেগুলো তাদের চোখে পড়ত। কিন্তু তা থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করতো না। বরং শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে অবিশ্বাস করত ও তাঁকে অমানুষিক কষ্ট দিত।
সমকামীতার ভয়াবহ শাস্তি
আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,
إذا استحلت أمتي خمسا فعليهم الدمار: إذا ظهر التلاعن وشربوا الخمور ولبسوا الحرير واتخذوا القيان واكتفى الرجال بالرجال والنساء بالنساء، رواه البيهقي-
‘যখন আমার উম্মত পাঁচটি বিষয়কে হালাল করে নেবে, তখন তাদের উপর ধ্বংস নেমে আসবে।
(১) যখন পরস্পরে অভিসম্পাৎ ব্যাপক হবে
(২) যখন তারা মদ্যপান করবে
(৩) রেশমের কাপড় পরিধান করবে (৪) গায়িকা-নর্তকী গ্রহণ করবে
(৫) পুরুষ-পুরুষে ও নারী-নারীতে সমকামিতা করবে’।[বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, ত্বাবারানী, সনদ হাসান; আলবানী, ছহীহুত তারগীব হা/২৩৮৬।]
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির প্রতি ফিরে তাকাবেন না, যে ব্যক্তি কোন পুরুষ বা নারীর মলদ্বারে মৈথুন করে’। [তিরমিযী, মিশকাত]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, অভিশপ্ত ঐ ব্যক্তি, যে লূতের কওমের মত কুকর্ম(সমকামিতা) করে।[মিশকাতঃ ৩৫৮৩]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আমি আমার উম্মতের জন্য সবচেয়ে (ক্ষতিকর হিসাবে) ভয় পাই লূত জাতির কুকর্মের’। [তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত]
ইসলামী শরী‘আতে এই সমকামিতার একমাত্র শাস্তি হ’ল উভয়ের মৃত্যুদন্ড (যদি উভয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে একাজ করে) [তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত: ৩৫৭৫, সনদ হাসান ‘দন্ডবিধি সমূহ’ অধ্যায়]
বাংলাদেশের আইনে সমকামীতা
৪.#বাংলাদেশের আইনে সমকামিতাঃ
বর্তমান বিশ্বে অনেক দেশেই এই নোংরা বিকৃত যৌনচর্চা সমকামিতাকে বৈধতা দিলেও বাংলাদেশ রয়েছে শক্ত অবস্থানে। এই নোংরা যৌনচর্চাটি প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলে, বাংলাদেশের আইনে সমকামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের শাস্তি প্রদান করে। বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাকৃতভাবে কোনো পুরুষ, নারী বা জন্তুর সাথে প্রকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে যৌন সহবাস করেন, সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা দশ বছর পর্যন্ত কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন। এ ধারায় বর্ণিত অপরাধীরূপে গণ্য হবার জন্য যৌন সহবাসের নিমিত্তে অনুপ্রবেশই যথেষ্ট বিবেচিত হবে।
সমকামীদের শরিয়তে শাস্তির বিধান ঃ
৫. এবার হাদিস দেখুনঃ
"ইবনে আব্বাস বলেন, রাসুল (স) বলেছেন, তোমরা যদি কাউকে পাও যে লুতের সম্প্রদায় যা করত তা করছে, তবে হত্যা কর যে করছে তাঁকে আর যাকে করা হচ্ছে তাকেও।"
(আবু দাউদ ৩৮: ৪৪৪৭)
"আবু সাইদ আল খুদ্রি বলেন, রাসুল (স) বলেছেন, একজন পুরুষ আরেক পুরুষের যৌনাঙ্গ দেখবে না।
এক নারী আরেক নারীর যৌনাঙ্গ দেখবে না। এক পুরুষ আরেক পুরুষের সাথে অন্তত (undergarment) না পরে একই চাদরের নিচে ঘুমাবে না।
এক নারী আরেক নারীর সাথে কখনও অন্তত undergarment না পরে একই চাদরের নিচে ঘুমাবে না।" (আবু দাউদ,৩১: ৪০০৭)
"আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেন, এক পুরুষ আরেক পুরুষের সাথে বা এক নারী আরেক নারীর সাথে ঘুমাতে পারবে না লজ্জাস্থান ঢাকা ব্যতীত। তবে ব্যতিক্রম করা যাবে, শিশু আর পিতার ক্ষেত্রে... রাসুল (স) ৩য় আরেকজনের কথা বলেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি।" (আবু দাউদ, ৩১: ৪০০৮)
"জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেছেন, আমি আমার কওমের জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা আশঙ্কা করি সেটা হল লুতের কওম যা করত সেটা যদি কেউ করে... "
(তিরমিজি, ১৪৫৭)
৬. সমকামীদের আরও শাস্তি
হাদিস আমাদের জানাচ্ছেঃ
"ইবনে আব্বাস বলেন, অবিবাহিত কাউকে যদি সমকামিতায় পাওয়া যায় তাহলে তাঁকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে।"
(আবু দাউদ, ৩৮: ৪৪৪৮)
"যে কাউকে লুতের কওমের মতো করতে দেখলে যে দিচ্ছে আর যে পাচ্ছে দুজনকেই হত্যা কর।" (তিরমিজি ১: ১৫২)
মুয়াত্তা শরীফের (৪১৪১.১১১) নাম্বার হাদিসে এর শাস্তি বলা আছে পাথর মেরে হত্যা।
"ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেছেন, অভিশপ্ত সে,
যে কিনা কোন পশুর সাথে সেক্স করে, আর অভিশপ্ত সে যে কিনা সেটা করে যা লুতের সম্প্রদায় করত।" (আহমাদ:১৮৭৮)
"ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, আলী (রা) তাঁর সময়ে ২ জন সমকামীকে পুড়িয়ে দেন।
আর আবু বকর(রা) তাদের উপর দেয়াল ধ্বসিয়ে দেন।"
(মিশকাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭৬৫, প্রস্তাবিত শাস্তি)
মদ্দা কথা সমকামিতার শাস্তি সাধারণ জেনা ব্যবিচারের থেকেও কঠিন আর সে কাজ কে কিছু বিকৃত মস্তিষ্ক সম্পন্ন আইন করে বৈধতা দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক (আমীন)।
৭. সম্প্রতি
ভারতের সমকামিতার ব্যাপারে আদালতের রায় নিয়ে বেশ উল্লাস প্রকাশ করে আমাদের এক পত্রিকা হেডলাইন করেছে "ভারতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা সমকামিতা আর অপরাধ নয়"।
অতচ, হেডলাইন হতে পারতো ভারতে মানব সভ্যতার চরম নিকৃষ্টতম এবং জঘন্য বিকৃত যৌন রুচির রাষ্ট্রগত অনুমোদন।
ধরুন, এই পত্রিকা মালিক বা সম্পাদকের এক ছেলে সমকামী। সে বিয়ে করে আরেক ছেলেকে ঘরে এনেছে। এই সম্পাদক কখনো নাতিপুতির মুখ দেখবেনা, পুত্র বধুকে বউ মা'বলে ডাকার পরিবর্তে বউ বাপ ডাকতে হবে! হা হা হা।
স্বাস্থ্য ঝুঁকিঃঃ
৮. এবার আসি সমকামিতার স্বাস্থ্য ঝুঁকিঃ
অনেক ডাক্তারের মতে সমকামিরা ভয়ানক রোগের ঝুঁকিতে থাকে সবসময় যেমন,লিঙ্গ দিয়ে দুর্গন্ধ পুঁজ বের হওয়া, লিঙ্গে ঘা হওয়া, সিফিলিস,গনেরিয়া, প্রস্রাবে ইনফেকশ ও হেপাটাইটিস বি, এইডস ইত্যাদি।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে---- সমকামীদের এইডস হয় বহুগুন বেশী। বিশ্বের মাত্র ১.৮% লোক সমকামী হলেও এইডস রোগীর শতকরা ৬৪ জন সমকামী।
সমকামিরা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নামক ভয়ানক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তাদের নানা ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী। যেমন- পায়ুপথের ক্যান্সার ৩৭ গুণ, হডকিনস লিম্ফোমা ৪গুন, টেস্টিস ক্যান্সার ৩গুন
গে বাউল সিনড্রোম নামক জটিল রোগে তারা আক্রান্ত হয়। এতে পায়ুপথ দিয়ে রক্ত পরে, অর্শ, বদহজম, পেট ব্যাথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি হয়।
এছাড়া সমকামিরা নানা ধরণের ভয়াবহ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। প্রাকৃতিক নিয়মানুসারে নারীপুরুষের মেলামেশা হলে এসব সম্ভাবনা অনেক কম। কারণ, মেয়েদের যৌনাঙ্গ এমনভাবে সৃষ্টি সেটা যৌনমিলনের ফলে আঘাতপ্রাপ্ত হয় না, সেখানে জীবাণু ধ্বংসের জন্য নানা রকমের পদার্থ থাকে যা পায়ুপথে থাকে না।
কথা হলো, ভারতে গো মূত্র পান করে আর আমরা গরুর দূধ পান করি, ভারতে অধিকাংশ লোক খোলা আকাশের নিচে প্রাকৃতিক কাজ সারে আমরা টয়লেট ব্যাবহার করি, ভারতে অগণিত দেবদেবীর পূজা করে আমরা এক আল্লাহর ইবাদত করি, তাদের দেশে সমকামিতা বৈধ আমাদের দেশে বিবাহ বৈধ। ভারতের সংস্কৃতি কখনো আমাদের সংস্কৃতি হতে পারেনা।
আরও দুঃখ জনক ব্যপার তাহল
বর্তমানে হাজারে ১ জন ও হবেনা যারা এ বিকৃত যৌনতাকে পছন্দ বা সমর্থন করেন!তাদের অধিকার রক্ষা করতে যেয়ে ভারতের আদালত এমন ঘৃন্য কাজকে আইনি বৈধতা দিয়েছে অথচ সে দেশে সংখ্যালুঘু ১৩% মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার ব্যপারে আদালতের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ব তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেডে নেয়া হচ্ছে মাইকে আযান, নামাজ, কোরবানী সহ আরও অনেক।
আমরা এ ঘৃনীত সমকামীতার বৈধতাকে ধিক্কার জানাই, নিন্দা জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি।
পরিশেষে আকুল আবেদন করবো যারা সমকামীতে অভ্যস্ত তাদের কে আল্লাহ যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সে জন্য দোয়া করি।
সংকলন ও সংযোজন
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
নুরুলগনি ইসলামি একাডেমী কাটাছরা, মিরসরাই চট্টগ্রাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন