এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
'ইমাম আবু হানিফা চার প্রসিদ্ধ ইমামের মাঝে বড় ইমাম হিসাবে পরিচিত। পাক-ভারত উপমহাদেশে তাঁর মাযহাবের অনুসারীর সংখ্যাই বেশী। খলীফা মানসুরের সময় ইমাম আবু হানিফাকে প্রধান বিচারপতির পদ গ্রহনের জন্য আহবান জানানো হয়। তিনি উক্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে খলীফাকে সম্বোধন করে বলেন, ’’ আল্লাহর শপথ, কোন ব্যাপারে আমার ফয়সালা যদি আপনার বিরুদ্ধে যায় এবং আপনি আমাকে হুকুম দেন যে হয়ত সিদ্বান্ত পাল্টাও না হলে তোমাকে ফোরাত নদীদে ডুবিয়ে মারা হবে। তখন আমি ডুবে মরতে প্রস্তুত থাকব তবু সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারবনা। তা ছাড়া আপনার দরবারে এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের মনোতুষ্টি করার মত কাজীর প্রয়োজন।’’
ইমাম আবু হানিফা খলীফার প্রস্তাব প্রত্যখ্যান করার পর তাকে ত্রিশটি বেত্রাঘাত করা হয়। যার ফলে তাঁর সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। তখন খলীফা মানসুরের চাচা আব্দুস সামাদ ইবনে আলী তাকে এজন্য খুবই তিরষ্কার করে বলেন- “ইনি শুধু ইরাকের ফকীহ নন, সমগ্র প্রাচ্যবাসীর ফকীহ।’’ এতে মনসুর লজ্জিত হয়ে প্রত্যেক চাবুঘাতের বদলে এক হাজার দিরহাম ইমাম আবু হানিফার কাছে পাঠান।
ইমাম আবু হানিফা উক্ত দিরহাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তখন তাকে বলা হয় তিনি এ অর্থ গ্রহণ করে নিজের জন্য না রাখলেও দুঃখী-গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেন। এর জবাবে ইমাম বলেন- "তোমার কাছে কি কোন হালাল অর্থ রয়েছে ?
মানসুর এতে আরও প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠে। ইমামকে আরও চাবুকাঘাত করার আদেশ দেন। কারারুদ্ধ করে পানাহারে নানাভাবে কষ্ট দেয়া হয়। তারপর একটা বাড়ীতে নজরবন্দী করে রাখা হয়। সেখানেই ইমাম আবু হানিফার মৃত্যূ হয়। কারো কারো মতে তাঁকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। নির্মম নির্যাতনের শিকার ইমাম আবু হানিফা মৃত্যুর আগে অসিয়ত করে যান যে, খলীফা মানসুর জনগনের অর্থ অন্যায়ভাবে দখল করে বাগদাদের যেই এলাকায় শহর নির্মাণ করেছে সে এলাকায় যেন তাঁকে দাফন করা না হয়। মূলত খলীফা মানসুর তার ক্ষমতার স্বার্থেই ইমাম আবু হানিফাকে বিচারকের পদে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। তাই ইমাম তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ইমাম আবু হানিফা এই বিষয়টি স্পষ্ট করেই খলীফা মানসুরকে জানিয়ে দিয়ে বলেন- “আপনি আমাদেরকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ডেকে আনেননি। বরং আপনি চান যে আপনার ভয়ে যেন আমরা আপনার মর্জি মাফিক কথা বলি’’।
বর্তমান যামানায় ইমাম আবু হানিফা সর্বজন সমাদৃত। আজকে যে সকল মুসলিম শাসকগণ, ইমাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের উপর নির্যাতন করছেন কিংবা কারাবন্ধী করছেন তাদের অনেকেই ইমাম আবু হানিফার মাযহাব অনুসারী বলে দাবী করেন। কিন্তু ইতিহাস এই সত্যেরই সাক্ষী যে, সারা জাহানে ইমাম আবু হানিফার মর্যাদা এবং তৎকালীন জালিম শাসকদের মর্যাদায় আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে।
তথ্যসুত্র: ইসলামী চিন্তাবিদদের উপর নির্যাতন যুগে যুগে-১
জ্ঞানের গভীরতা
======================
তাবেয়ীনদের সময়ে (সাহাবীদের পরের সময়ে)। বাগদাদ ছিল ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজধানী। তৎকালীন প্রখ্যাত বহু আলিম এখানে বসবাস করতেন। তাই এটি হয়ে উঠেছিল ইসলামী জ্ঞানের কেন্দ্রভূমি।
একদিন রোমের রাজা একজন দূতকে মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তিনটি প্রশ্নসহ পাঠালেন। দূত শহরে এসে খলিফাকে জানালেন যে, সে রোমের রাজার কাছ থেকে তিনটি প্রশ্ন এনেছেন এবং মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন তার উত্তর দেওয়ার জন্য।
খলিফা সকল আলিমদের একত্র হতে বললেন। রোমান দূত একটি উঁচু স্থানে দাঁড়ালেন এবং বললেন, আমি এসেছি তিনটি প্রশ্ন নিয়ে যদি আপনারা এর উত্তর দিতে পারেন আমি এ স্থান ত্যাগ করব প্রচুর সম্পদ রেখে যা আমাকে রোমের রাজা সঙ্গে দিয়ে দিয়েছেন।
প্রশ্নগুলো হল-
. আল্লাহর আগে কি ছিল?
. আল্লাহ এ মূহূতেِ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
. এই মুহুর্তে আল্লাহ কোন কাজে নিয়োজিত আছেন?
সবাই চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন; এর মধ্যে একটি ছোট বালক খলিফার কাছে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার জন্য অনুমতি চাইল; খলিফা তাকে অনুমতি দিলেন।
প্রশ্নোত্তর শুরু হল :
বালক : আপনি কি গুনতে জানেন?
দূত : হ্যাঁ।
বালক : তাহলে ১০ থেকে উল্টো দিকে গুনুন।
দূত : (দূতটি গননা শুরু করল) ১০, ৯, ৮,...... ১।
বালক : ১- এর আগে কি?
দূত : ১- এর আগে কিছুই নেই।
বালক : ঠিক আছে গাণিতিক একের আগে যদি কিছুই না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে আশা করেন কি থাকবে এই ‘এক‘- এর আগে যা নিশ্চিত সত্য, শাশ্বত, চিরস্থায়ী, সুস্পষ্ট।
(বালকটির স্পষ্ট উত্তরে দূতটি হতবিহ্বল হয়ে গেল, কিছু অস্বীকার করতে পারল না।)
দূত : তাহলে এখন বল, আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
বালক : একটি মোমবাতি আনুন এবং তাতে আগুন জ্বালান
(মোমবাতি জ্বালানো হল)
বালক : এখন বলুন আগুনের শিখা কোন দিকে মুখ করে আছে ?
দূত : এটাতো চতুর্দিকেই আলো ছড়াচ্ছে; এটা কোন এক দিকে নির্দিষ্ট নেই।
বালক : যদি এই বস্তু চতুর্দিকেই আলো ছড়াতে পারে; তাহলে আপনি কিভাবে এরকম অনুমান করতে পারেন আল্লাহ সম্পর্কে যে তিনি নির্দিষ্ট কোন একটি দিকে মুখ করে থাকবেন, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর অধিপতি; সকল আলোর আলো।
(রোমান দূত বোকা বনে গেল। সে অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হল। এতটুকু একটি বালক তার সব প্রশ্নের এত সাবলীলভাবে উত্তর দিচ্ছে যে, তার যক্তি-প্রমাণের কাছে কোনরূপ দ্বিমত পোষণ করা যাচ্ছে না। অবশেষে সে তার শেষ প্রশ্ন করার জন্য মুখ খুলতে গেল।)
বালক : থামুন। এখানে প্রশ্ন করছেন আপনি আর জবাব দিচ্ছি আমি। আর যেহেতু উত্তরদাতা প্রশ্নকর্তা থেকে বড় তাই আপনি নিচে নেমে আসুন আর আমাকে উপরে আসন গ্রহন করতে দিন ।
এরপর দূত নিচে নেমে এল এবং বালকটি উচু স্থানে আসন গ্রহন করার পর দূত তার শেষ প্রশ্নটি করল।
দূত : বল এখন আল্লাহ কি করছেন?
বালক : এই মুহুর্তে আল্লাহ তোমাকে উচু স্থান থেকে নিচে নামিয়ে অপমান করেছেন এবং আমাকে নিচু স্থান থেকে উচু স্থানে উঠিয়ে সম্মানীত করেছেন। আর এভাবেই যে আল্লাহর একত্ব বিশ্বাস করে তিনি তাকে উপরে উঠিয়ে সম্মানীত করেন এবং আল্লাহর একত্বে অবিশ্বাসীদেরকে অপদস্থ করেন।
অতঃপর রোমান দূতের আর কিছু বলার থাকল না, সেই স্থান ত্যাগ করা ছাড়া।
এই ছেলেটি পরবর্তীতে বড় হয়ে ইসলামের এক মহান জ্ঞানী পন্ডিত হিসেবে আবির্ভূত হন এবং তিনিই হলেন ইমাম আবু হানিফা (র)।
আল্লাহ তা’য়ালা তাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন। আমীন।
'ইমাম আবু হানিফা চার প্রসিদ্ধ ইমামের মাঝে বড় ইমাম হিসাবে পরিচিত। পাক-ভারত উপমহাদেশে তাঁর মাযহাবের অনুসারীর সংখ্যাই বেশী। খলীফা মানসুরের সময় ইমাম আবু হানিফাকে প্রধান বিচারপতির পদ গ্রহনের জন্য আহবান জানানো হয়। তিনি উক্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে খলীফাকে সম্বোধন করে বলেন, ’’ আল্লাহর শপথ, কোন ব্যাপারে আমার ফয়সালা যদি আপনার বিরুদ্ধে যায় এবং আপনি আমাকে হুকুম দেন যে হয়ত সিদ্বান্ত পাল্টাও না হলে তোমাকে ফোরাত নদীদে ডুবিয়ে মারা হবে। তখন আমি ডুবে মরতে প্রস্তুত থাকব তবু সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারবনা। তা ছাড়া আপনার দরবারে এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের মনোতুষ্টি করার মত কাজীর প্রয়োজন।’’
ইমাম আবু হানিফা খলীফার প্রস্তাব প্রত্যখ্যান করার পর তাকে ত্রিশটি বেত্রাঘাত করা হয়। যার ফলে তাঁর সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। তখন খলীফা মানসুরের চাচা আব্দুস সামাদ ইবনে আলী তাকে এজন্য খুবই তিরষ্কার করে বলেন- “ইনি শুধু ইরাকের ফকীহ নন, সমগ্র প্রাচ্যবাসীর ফকীহ।’’ এতে মনসুর লজ্জিত হয়ে প্রত্যেক চাবুঘাতের বদলে এক হাজার দিরহাম ইমাম আবু হানিফার কাছে পাঠান।
ইমাম আবু হানিফা উক্ত দিরহাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তখন তাকে বলা হয় তিনি এ অর্থ গ্রহণ করে নিজের জন্য না রাখলেও দুঃখী-গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেন। এর জবাবে ইমাম বলেন- "তোমার কাছে কি কোন হালাল অর্থ রয়েছে ?
মানসুর এতে আরও প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠে। ইমামকে আরও চাবুকাঘাত করার আদেশ দেন। কারারুদ্ধ করে পানাহারে নানাভাবে কষ্ট দেয়া হয়। তারপর একটা বাড়ীতে নজরবন্দী করে রাখা হয়। সেখানেই ইমাম আবু হানিফার মৃত্যূ হয়। কারো কারো মতে তাঁকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। নির্মম নির্যাতনের শিকার ইমাম আবু হানিফা মৃত্যুর আগে অসিয়ত করে যান যে, খলীফা মানসুর জনগনের অর্থ অন্যায়ভাবে দখল করে বাগদাদের যেই এলাকায় শহর নির্মাণ করেছে সে এলাকায় যেন তাঁকে দাফন করা না হয়। মূলত খলীফা মানসুর তার ক্ষমতার স্বার্থেই ইমাম আবু হানিফাকে বিচারকের পদে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। তাই ইমাম তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ইমাম আবু হানিফা এই বিষয়টি স্পষ্ট করেই খলীফা মানসুরকে জানিয়ে দিয়ে বলেন- “আপনি আমাদেরকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ডেকে আনেননি। বরং আপনি চান যে আপনার ভয়ে যেন আমরা আপনার মর্জি মাফিক কথা বলি’’।
বর্তমান যামানায় ইমাম আবু হানিফা সর্বজন সমাদৃত। আজকে যে সকল মুসলিম শাসকগণ, ইমাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের উপর নির্যাতন করছেন কিংবা কারাবন্ধী করছেন তাদের অনেকেই ইমাম আবু হানিফার মাযহাব অনুসারী বলে দাবী করেন। কিন্তু ইতিহাস এই সত্যেরই সাক্ষী যে, সারা জাহানে ইমাম আবু হানিফার মর্যাদা এবং তৎকালীন জালিম শাসকদের মর্যাদায় আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে।
তথ্যসুত্র: ইসলামী চিন্তাবিদদের উপর নির্যাতন যুগে যুগে-১
জ্ঞানের গভীরতা
======================
তাবেয়ীনদের সময়ে (সাহাবীদের পরের সময়ে)। বাগদাদ ছিল ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজধানী। তৎকালীন প্রখ্যাত বহু আলিম এখানে বসবাস করতেন। তাই এটি হয়ে উঠেছিল ইসলামী জ্ঞানের কেন্দ্রভূমি।
একদিন রোমের রাজা একজন দূতকে মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তিনটি প্রশ্নসহ পাঠালেন। দূত শহরে এসে খলিফাকে জানালেন যে, সে রোমের রাজার কাছ থেকে তিনটি প্রশ্ন এনেছেন এবং মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন তার উত্তর দেওয়ার জন্য।
খলিফা সকল আলিমদের একত্র হতে বললেন। রোমান দূত একটি উঁচু স্থানে দাঁড়ালেন এবং বললেন, আমি এসেছি তিনটি প্রশ্ন নিয়ে যদি আপনারা এর উত্তর দিতে পারেন আমি এ স্থান ত্যাগ করব প্রচুর সম্পদ রেখে যা আমাকে রোমের রাজা সঙ্গে দিয়ে দিয়েছেন।
প্রশ্নগুলো হল-
. আল্লাহর আগে কি ছিল?
. আল্লাহ এ মূহূতেِ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
. এই মুহুর্তে আল্লাহ কোন কাজে নিয়োজিত আছেন?
সবাই চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন; এর মধ্যে একটি ছোট বালক খলিফার কাছে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার জন্য অনুমতি চাইল; খলিফা তাকে অনুমতি দিলেন।
প্রশ্নোত্তর শুরু হল :
বালক : আপনি কি গুনতে জানেন?
দূত : হ্যাঁ।
বালক : তাহলে ১০ থেকে উল্টো দিকে গুনুন।
দূত : (দূতটি গননা শুরু করল) ১০, ৯, ৮,...... ১।
বালক : ১- এর আগে কি?
দূত : ১- এর আগে কিছুই নেই।
বালক : ঠিক আছে গাণিতিক একের আগে যদি কিছুই না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে আশা করেন কি থাকবে এই ‘এক‘- এর আগে যা নিশ্চিত সত্য, শাশ্বত, চিরস্থায়ী, সুস্পষ্ট।
(বালকটির স্পষ্ট উত্তরে দূতটি হতবিহ্বল হয়ে গেল, কিছু অস্বীকার করতে পারল না।)
দূত : তাহলে এখন বল, আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
বালক : একটি মোমবাতি আনুন এবং তাতে আগুন জ্বালান
(মোমবাতি জ্বালানো হল)
বালক : এখন বলুন আগুনের শিখা কোন দিকে মুখ করে আছে ?
দূত : এটাতো চতুর্দিকেই আলো ছড়াচ্ছে; এটা কোন এক দিকে নির্দিষ্ট নেই।
বালক : যদি এই বস্তু চতুর্দিকেই আলো ছড়াতে পারে; তাহলে আপনি কিভাবে এরকম অনুমান করতে পারেন আল্লাহ সম্পর্কে যে তিনি নির্দিষ্ট কোন একটি দিকে মুখ করে থাকবেন, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর অধিপতি; সকল আলোর আলো।
(রোমান দূত বোকা বনে গেল। সে অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হল। এতটুকু একটি বালক তার সব প্রশ্নের এত সাবলীলভাবে উত্তর দিচ্ছে যে, তার যক্তি-প্রমাণের কাছে কোনরূপ দ্বিমত পোষণ করা যাচ্ছে না। অবশেষে সে তার শেষ প্রশ্ন করার জন্য মুখ খুলতে গেল।)
বালক : থামুন। এখানে প্রশ্ন করছেন আপনি আর জবাব দিচ্ছি আমি। আর যেহেতু উত্তরদাতা প্রশ্নকর্তা থেকে বড় তাই আপনি নিচে নেমে আসুন আর আমাকে উপরে আসন গ্রহন করতে দিন ।
এরপর দূত নিচে নেমে এল এবং বালকটি উচু স্থানে আসন গ্রহন করার পর দূত তার শেষ প্রশ্নটি করল।
দূত : বল এখন আল্লাহ কি করছেন?
বালক : এই মুহুর্তে আল্লাহ তোমাকে উচু স্থান থেকে নিচে নামিয়ে অপমান করেছেন এবং আমাকে নিচু স্থান থেকে উচু স্থানে উঠিয়ে সম্মানীত করেছেন। আর এভাবেই যে আল্লাহর একত্ব বিশ্বাস করে তিনি তাকে উপরে উঠিয়ে সম্মানীত করেন এবং আল্লাহর একত্বে অবিশ্বাসীদেরকে অপদস্থ করেন।
অতঃপর রোমান দূতের আর কিছু বলার থাকল না, সেই স্থান ত্যাগ করা ছাড়া।
এই ছেলেটি পরবর্তীতে বড় হয়ে ইসলামের এক মহান জ্ঞানী পন্ডিত হিসেবে আবির্ভূত হন এবং তিনিই হলেন ইমাম আবু হানিফা (র)।
আল্লাহ তা’য়ালা তাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন। আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন