Translate

বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৩

মদিনা সনদের ধারা ও বর্তমান সরকারের করণীয় তুলে ধরা হলো।

মদিনা সনদের ধারা ও বর্তমান সরকারের করণীয় তুলে ধরা হলো। {সংগৃহীত-ও সংযোযীত}


লিখেছেন লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:২৫:৫৯ দুপুর



ইসলামের মূল মন্ত্র হচ্ছে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ”!! সোজা কথায় আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই, মানে কোন মার্ক্স এঙ্গেল নাই, আব্রাহাম, ওয়াশিংটন নাই। রাজা নাই, বাদশাহ নাই, জমিদার নাই, বস নাই, ভয় নাই—– নাই নাই নাই!!! কোন মানব রচিত তন্ত্র মন্ত্র মতবাদ নাই নাই নাই!!! অতএব কেউ যদি মুখে সাক্ষ্য দেয় যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আরও স্বীকার করে মুহাম্মদর রাসুল আল্লাহ (মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর প্রেরিত রাসুল ) তাঁর মানে সে আর কোন নেতা পেতাকে মুক্তির দিশারী ভাবলে আমি মনে করি তা এই স্বীকার উক্তি আসলে কথার কথা মাত্র, তাতে কোন প্রত্যয় নেই।

যারা মদিনা সনদকে ধর্মনিরপেক্ষতা বলে ভাবেন তারা আসলে বাস্তব সত্য জানেন না বা জেনেও সেই বাস্তবতা মেনে নিতে পারেন না।

মদিনা সনদ বা সমঝোতা কখনও ধর্মনিরপেক্ষতা ছিলনা। কারণ সে সনদে পৌত্তলিকদের সাথে কোন সমঝোতা হয়নি। সেটি ছিল এক আল্লাহতে বিশ্বাসী ধর্মীয়দের সহ অবস্থান মাত্র। মদিনা সনদে শুধু মাত্র এক আল্লাহতে বিশ্বাসী ধর্ম গোত্রকে তাদের ধর্ম কর্ম তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী চালিয়ে যাবার স্বাধীনতা দিয়েছিল তেমনি এক আল্লাহয় বিশ্বাসী ধর্ম অন্য এক আল্লাহয় বিশ্বাসী ধর্মের প্রতি কোন প্রকার বৈরী প্রচারণা চালাতে নিষেধ ও করেছিল।

কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী মদিনার ইহুদিরা সে সমঝোতাকে সম্মান করে নাই যার ফলে মুসলিম ইহুদী সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। তাছাড়া মদিনা সনদে গোত্র ভিত্তিক সরকার ব্যবস্থাও বহাল ছিল!

মদিনা সনদে রাসুল সাঃকে সর্বময় চুড়ান্ত ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। উনার সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে সমঝোতা হয়েছিল।

বেশী দূরে যাচ্ছি্ না, এই বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা আদর্শ যে মদিনা সনদের মত নয় তাঁর প্রমাণ – এই দেশের সংবিধানে মুহাম্মদ সাঃ এর নির্দেশিত পথকে চুড়ান্ত বলে বিবেচনা করা তো দূরের কথা, দাবী করা হয়ে তাকে ইসলামকে রাষ্ট্রের ধর্ম করা হলে অন্যান্য ধর্মীয়দের প্রতি অবিচার করা হয়।

এই দেশে যে কেউ রাজনীতি করতে পারবে কিন্তু শর্ত যে, আমাদের রাষ্ট্রীয় সংবিধানের মধ্যে রাখা সব শর্তের মধ্যে থাকতে হবে! যে কারণে বাংলাদেশের সংবিধান ধর্মীয় সমন্নয়কে সমর্থন করলে মদিনা সনদকে সমর্থন করেনা। মদিনা সনদকে সমর্থন করলে নবী সাঃ প্রচলিত শাসন ব্যবস্থাকে চুড়ান্ত বলে গণ্য করতে হবে।

কিন্তু আমাদের সংবিধান তাঁর নাগরিকদেরকে সব ধরণের মানব রচিত মতবাদ প্রতিষ্ঠার স্বাধীনতা দিলেও শতকরা ৮৫ ভাগ জনগণের ধর্ম বিশ্বাস মদিনা সনদের প্রণেতা মুহাম্মদ সাঃ এর কর্তৃক কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক রাজনীতি করাকে বে-আইনি ঘোষণা করে রেখেছে। কেউ যদি আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করার কথা বলে রাজনীতি করে তাহলে তাকে দেশের প্রচলিত সংবিধান লংগনের অপরাধে জেলে যেতে হবে। এখানে কেউ যেন আবার আমার কথাকে জামাতের রাজনৈতিক স্লোগান “আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের শাসন” পক্ষে বলে ধরে নিবেন না। আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের শাসন জামাতের আবিষ্কৃত কোন নতুন প্যাটেন্ট নয়! এইটি আজ থেকে ১৪শত বছর আগ থেকেই মদিনা সনদের প্রণেতা মুহাম্মদ সাঃ প্রচলিত করেছিলেন। এই দর্শনের বাহকরা যুগে যুগে সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র পরিচালনা করার রাজনীতি করে আসছেন। এই দর্শনের ভিত্তিতে মুসলিমগণ বিগত ১৪ শত বছরে বেশ কয়েকটি সম্রাজ্য শত শত রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

যে ব্যক্তি মুখে আর বুকে “লাই-লাহা ইলল্লালাহ মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ” স্বীকার করে নেয় তখন তার উপর রাষ্ট্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা তাঁর উপর ফরজ হয়ে যায়। এখান থেকে শর্টকাটের কোন বেইল নাই!

মদীনার সনদ

ধারা : করণীয়

---------

১) সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে একটি সাধারণ জাতি গঠন করবে।

করণীয়:

হাসিনাকে এখনি সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে।

২) হযরত মুহাম্মদ (স) ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন।

করণীয়:

যেহেতু আল্লার রাসুল (সাHappy আমাদের মাঝে নেই সেহেতু নবী রাসুলদের উত্তরসরী হিসাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ও সর্বজন সীকৃত আলেম কে রাষ্ট্র প্রধান বানানো হোক।

মদীনা সনদ জারী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীত্ব হারাতে হবে। কেননা মদীনা সনদ কোন মহিলা প্রধানমন্ত্রী সাপোর্ট করবেনা।

৩) কোন সম্প্রদায় গোপনে কুরাইশদের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদীনা বা মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের কোনরুপ সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবে না।

করণীয়:

এখানে ভারতের সাথে টিপাইমুখ বাধ, গোপন করিডোর চুক্তি ও বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশ থেকে গোপনে অস্ত্র কেনা যাবেনা।

৪) মুসলিম, খ্রীস্টান, ইহুদী, পৌত্তলিক ও অন্যান্য সম্প্রদায় ধর্মীয় ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মীয় কাজে কোন রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

করণীয়:

বাংলাদেধে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী আওয়ামী ছাত্রলীগ সহ সকল কে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে নাস্তিকরা ইসলাম সহ অন্য কোনো ধর্মেই নাক গলাতে পারবেনা।

৫) মদিনার উপর যে কোন বহিরাক্রমণ কে রাষ্ট্রের জন্য বিপদ বলে গণ্য করতে হবে। এবং সেই আক্রমণ কে প্রতিরোধ করার জন্য সকল সম্প্রদায়কে এক জোট হয়ে অগ্রসর হতে হবে।

করণীয়:

বাংলাদেশকে বিদেশী শক্তির(ভারতের) কালো থাবা থেকে বাচাতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি ও বিপক্ষ শক্তি বলে বিভক্ত করা যাবেনা। বরং দেশ রক্ষায় দল মত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য স্থাপন করতে হবে।

৬) রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।

করণীয়:

অতিদ্রুত বিরোধী দলের উপর পুলিশের গুলি ও সংখ্যা লঘু নির্যাতন বন্ধ করে , গ্রামে গন্জে সকল নাগরীক কে তাদের গনতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। এবং নিরাপত্তার ব্যবস্হা করতে হবে ৷

৭) অসহায় ও দূর্বলকে সর্বাবস্থায় সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।

করণীয়:

বাংলাদেশের সকল অসহায় ও দুর্বল (গরীব) নাগরিককে সরকারী ভাবে সাহায্য সহযোগীতা করতে হবে। যাতে কেউ অখানা ও অচিকিৎসায় মারা না যায় ৷

৮) সকল প্রকার রক্তক্ষয়, হত্যা ও বলাৎকার নিষিদ্ধ করতে হবে এবং মদীনাকে পবিত্র নগরী বলে ঘোষণা করা হবে।

করণীয়:

বাংলাদেশে বর্তমানে যে রক্তক্ষয়,হত্যা ও পুলিশী নির্যাতন চলছে তা নিষিদ্ধ করে দেশকে প্রবিত্র ঘোষণা দিতে হবে।

ইভটিজিং ধষ্রন জেনা ব্যভিচারের সকল উপকরন বনধ করতে হবে , দোষীদের উপযুক্ত দৃষ্ান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে ৷

৯) কোন লোক ব্যক্তিগত অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই বিচার করা হবে। তজ্জন্য অপরাধীর সম্প্রদায় কে দায়ী করা যাবে না।

করণীয়:

বাংলাদেশে যদি প্রকৃত কোনো যুদ্ধাপরাধী/মানবতা বিরোধী অপরাধ করে থাকে তাহলে তার নিরপেক্ষ বিচার করেতে হবে ৷ তাছাডা যুদ্ধ ছাডা ও স্বাধীনতার পর এ পযন্ত যত মানবতা বিরোধী সকল অপ কমের বিচার করতে হবে ৷এজন্য কোন সম্প্রদায় বা দলকে দায়ী করা যাবেনা।

১০) মুসলমান, ইহুদী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা পরষ্পর বন্ধুসুলভ আচরণ করবে।

করণীয়:

সরকারকে বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের মাঝে যে সম্প্রীতি আছে তা রক্ষা করতে হবে।

১১) রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের এবং তিনি হবেন সর্বোচ্চ বিচারালয়ের সর্বোচ্চ বিচারক।

করণীয়:

রাষ্ট্রপ্রতিই সর্বোচ্চ বিচারক হিসাবে নিযুক্ত হবেন।এবং তিনি নিজেই প্রধান বিচার পতির পদে অধিষ্ট হয়ে বিচার কায্য ও সমাধান করবেন , ও নামাজে ইমামতি করবেন।

১২) মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুমতি ব্যতীত মদীনাবাসীগণ কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।

করণীয়:

রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ব্যতীত বাংলাদেশ কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা দিতে পারবেনা।

১৩) মুসলমানদের কেউ যদি অন্যায় কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নিজ সন্তান বা আত্নীয় হলেও এ ব্যাপারে তাকে ক্ষমা করা যাবে না।

করণীয়:

নির্বাচনের সময় দেশের জনগনকে দেয়া ওয়াদা (ইসলাম বিরোধী কোনো আইন পাশ করা হবেনা) ভঙ্গ করে হাসিনা যে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সে জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।পাশাপাশি তার পুত্র জয় বিদেশী পত্রিকায় দেশবিরোধী ও ইসলাম বিরোধী যে প্রবন্ধ লিখেছে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারন রসল সাঃ বলেছেন যদি তার মেয়ে ও যদি চুরি বা অন্য কোন অপরাধ করে থাকে তা বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষনা দিয়েছেন ৷

আরো করনীয় পরামর্শ দিতে পারেন সবাই

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন