আমার এ ব্লগে সকল দর্শকদের জানাই আন্তরীক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা . উক্ত ব্লগে শুধু মাত্র কুরআন হাদীসের আলোকে ইসলামী মূল্যবোধের উপর বিশদ আলোচনা করা হবে , দর্শকদের যে কোন যূক্তি ও গঠন মূলক মনতব্য সাদরে গ্রহন করা হবে , ধন্যবাদন্তে--======================== এম,এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
Translate
শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৩
গনক-ঠাকুরের হুকুম কি ? গনক নয় , আল্লাহই বলতে পারেন ২৫ অক্টোবর বা তার পর কি হবে
আগামি ২৫ অক্টোবর 2013 দেশে কী ঘটবে, সেটি একমাত্র গণকই
*********************************
*********************************************
**********************************************************
যারা গণকের কাছে আসে, তারা তিনভাগে বিভক্তঃ
বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৩
কওমী মাদ্রাসা ও কুরবানীর চামডা কালেকশনে কোটি পতির ছেলে ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত লোকদের সন্তান ও আছেন
আমরা বা কওমী পডুয়ারা স্বঃপুত ভাবে , বিনা শ্রমে দ্বীনি খেদমত সহ মাদ্রাসার গরীব দুঃখী ছাত্রদের সহযোগিতা কল্পে কুরবানীর পশুর চামডা সহ অন্যান্য কালেকশান করে থাকি , এবং ওস্তাদ- সহ পাঠিদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ,যা মাত্র ঈদের দিন কয়েক ঘন্টা , পরে যার যার বাডি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে ও ঈদের আনন্দ ভাগা-ভাগি করে থাকি এখানে আসলে মজটাই আালাদা ৷ আমাদের মধ্যে ধনী-গরীব কোন বেদাবেদ নেই ৷ সকলেই মিলে-মিশে ওস্তাতদের অনগত্যের মাধ্যমে , দ্বিনের ঝান্ডা উচু রাখতে আমাদের সমষ্টিগত এ প্রয়াস ৷
আমাদের ছাত্রদের মধ্যে যেমন রয়েছে নিন্ম মধ্যম ও উঁচু বৃত্তের ছাত্র তেমনি রয়েছে কোটিপতির ছেলেও ৷
ছেলেটি কওমী মাদরাসায় পড়ে। বয়স আর কতো হবে;
১৪ বা ১৬,মাদরাসা/দ্বীনের প্রতি দরদ থাকার
কারণে ঈদের দিন
বাড়ী না গিয়ে চামড়া কালেকশনে এসেছে।
একটি বাসার সামনে দাড়ানো আছে বিশাল এক গরু।
সে এটা জবেহ দিবে। এবং মাদরাসার জন্য
চামড়া চাইবে। ছেলেটির ইচ্ছে পূরণ হলো। সে উক্ত
গরু জবেহ করলো। এবং মালিকের কাছে চামড়ার
ব্যাপারে আবেদন জানালো।
লোকটিকে বুঝানো হলো যে মাদরাসায় অনেক এতীম ও
দরিদ্র ছাত্র দ্বীনী এলেম শিক্ষা করছে। তাদের
খাওয়া দাওয়ার খরচ বাবদ
প্রতি মাসে মাদরাসা কতৃপক্ষের বহু টাকা ব্যায়
হয়। আপনাদের যাকাত সদকা এবং কুরবানীর পশুর
চামড়া দ্বারা এর ব্যায়ভার অনেকটাই পূরণ
করতে সক্ষম। সুতরাং চামড়াটা মাদ্রাসায়
দিয়ে দিন।
লোকটি এতো কিছু শুনার পরও চামড়া তো দিলই
না উল্টো ছেলেটিকে প্রচন্ড ধমকা ধমকি করলো। এর
তীব্রতা এতই ছিলো যে ছেলেটির চোখ থেকে টলটল
করে পানি ঝরা শুরু করলো। তারপরও ঐ সাহেবের
দীলে ভয় আসলো না যে আমি কাকে ধমক দিলাম??
উনি কি এটা ভাবলেন না যে ছেলেটি কুরআন
বুকে ধারন করেছে তাকে আমি কিভাবে ধমক দেই?
যাইহোক,
এবার ছেলেটি কথা বলা আরম্ভ করলো।
সে লোকটি কে সম্বোধন করে বললোঃ আপনি কত
টাকা দামের গরু জবাই দিয়েছেন? জানেন আমার
বাড়ীতে আপনার গরুর চাইতে ডবল গরু আমার বাপ
একাই জবাই দিয়েছেন!!
আমাদের কি ভাবেন?
আমরা ফকির মিসকিন? যেভাবে সেভাবে আচরণ
করে ফেলবেন? কি অধিকার আছে আপনার
আমাকে এভাবে ধমক দেয়ার?
চামড়া না দিলে সুন্দর
করে বলবেন! তেজ দেখান কেন??? কওমী মাদরাসায়
শুধু এতীম আর লিল্লাহ এর ছাত্ররাই পড়ে না।
এখানে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত লোকদের
সন্তানেরাও পড়ে। মেধাবী ছেলেরাও
পড়ে...সুতরাং ভেবেচিন্তে ব্যবহার খারাপ করবেন।
আপনার চামড়া জীবনে পা ধরলেও আর নেবোনা!!
যাইহোক, লোকটি পড়ে অনুতপ্ত হয় এবং প্রতি বৎসর
চামড়া মাদরাসায় দান করেন।
গত ৫ই মে শাহাদাত বরনকারীদের মধ্যে এক জন ছাত্র ছিল বিরাট এক কোটি পতির সে ঢাকা-চিটাগাং বা দেশের ভিতর দুরের সফরে বিমানেই যাতায়াত করত , সেই ছিল কওমী মাদ্রাসার ছাত্র
আমাদের ছাত্রদের মধ্যে যেমন রয়েছে নিন্ম মধ্যম ও উঁচু বৃত্তের ছাত্র তেমনি রয়েছে কোটিপতির ছেলেও ৷
ছেলেটি কওমী মাদরাসায় পড়ে। বয়স আর কতো হবে;
১৪ বা ১৬,মাদরাসা/দ্বীনের প্রতি দরদ থাকার
কারণে ঈদের দিন
বাড়ী না গিয়ে চামড়া কালেকশনে এসেছে।
একটি বাসার সামনে দাড়ানো আছে বিশাল এক গরু।
সে এটা জবেহ দিবে। এবং মাদরাসার জন্য
চামড়া চাইবে। ছেলেটির ইচ্ছে পূরণ হলো। সে উক্ত
গরু জবেহ করলো। এবং মালিকের কাছে চামড়ার
ব্যাপারে আবেদন জানালো।
লোকটিকে বুঝানো হলো যে মাদরাসায় অনেক এতীম ও
দরিদ্র ছাত্র দ্বীনী এলেম শিক্ষা করছে। তাদের
খাওয়া দাওয়ার খরচ বাবদ
প্রতি মাসে মাদরাসা কতৃপক্ষের বহু টাকা ব্যায়
হয়। আপনাদের যাকাত সদকা এবং কুরবানীর পশুর
চামড়া দ্বারা এর ব্যায়ভার অনেকটাই পূরণ
করতে সক্ষম। সুতরাং চামড়াটা মাদ্রাসায়
দিয়ে দিন।
লোকটি এতো কিছু শুনার পরও চামড়া তো দিলই
না উল্টো ছেলেটিকে প্রচন্ড ধমকা ধমকি করলো। এর
তীব্রতা এতই ছিলো যে ছেলেটির চোখ থেকে টলটল
করে পানি ঝরা শুরু করলো। তারপরও ঐ সাহেবের
দীলে ভয় আসলো না যে আমি কাকে ধমক দিলাম??
উনি কি এটা ভাবলেন না যে ছেলেটি কুরআন
বুকে ধারন করেছে তাকে আমি কিভাবে ধমক দেই?
যাইহোক,
এবার ছেলেটি কথা বলা আরম্ভ করলো।
সে লোকটি কে সম্বোধন করে বললোঃ আপনি কত
টাকা দামের গরু জবাই দিয়েছেন? জানেন আমার
বাড়ীতে আপনার গরুর চাইতে ডবল গরু আমার বাপ
একাই জবাই দিয়েছেন!!
আমাদের কি ভাবেন?
আমরা ফকির মিসকিন? যেভাবে সেভাবে আচরণ
করে ফেলবেন? কি অধিকার আছে আপনার
আমাকে এভাবে ধমক দেয়ার?
চামড়া না দিলে সুন্দর
করে বলবেন! তেজ দেখান কেন??? কওমী মাদরাসায়
শুধু এতীম আর লিল্লাহ এর ছাত্ররাই পড়ে না।
এখানে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত লোকদের
সন্তানেরাও পড়ে। মেধাবী ছেলেরাও
পড়ে...সুতরাং ভেবেচিন্তে ব্যবহার খারাপ করবেন।
আপনার চামড়া জীবনে পা ধরলেও আর নেবোনা!!
যাইহোক, লোকটি পড়ে অনুতপ্ত হয় এবং প্রতি বৎসর
চামড়া মাদরাসায় দান করেন।
গত ৫ই মে শাহাদাত বরনকারীদের মধ্যে এক জন ছাত্র ছিল বিরাট এক কোটি পতির সে ঢাকা-চিটাগাং বা দেশের ভিতর দুরের সফরে বিমানেই যাতায়াত করত , সেই ছিল কওমী মাদ্রাসার ছাত্র
শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৩
বেদ্-পুরান , রাম -কৃঞ্চ,দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু এরা আসলে কি ? এদের ব্যপারে ইসলাম কি বলে ? {সংকলিত}
দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু এইরকম নাম না জানা বহু দেব-দেবীকে যে আমাদের হিন্দু ভাই বোনেরা পূজা করে এই সব দেব-দেবীদের সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ?
আলেমদের এইসব দেব-দেবীদের সম্পর্কে অভিমত কি ?
আল-কোরআনের সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা বলেছেন আমি জ্বীন ও মানুষ উভয়ের মাঝেই নবী প্রেরন করেছি। মানুষের মাঝে তো কারা নবী হিসাবে আসছে এটা আমরা সবাই জানি।
কিন্তু জ্বীনদের মাঝে নবী কারা ?
মানব জাতির পৃথিবীতে বসবাস করার অনেক আগে থেকেই জ্বীনরা এই পৃথিবীতে বসবাস করত।বুখারী মুসলিম শরীফের অনেক হাদীসেই হযরত আদম আলাইহিস সাল্লামের পৃথিবীতে আগমণের পূর্বে জ্বীন জাতির অনেক ঘটনা পাওয়া যায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তখন জ্বীনদের মাঝে অনেক নবী এসেছিল।
এখন জ্বীনদের মাঝে কারা নবী এই সম্পর্কে সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে মা আরেফুল কোরআনে মুফতী মোহাম্মদ শফী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেছেন হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ বেদের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। বেদে অল্ল মুহাম্মদ শব্দ গুলি এসেছে।
বেদের ৪ টা ভাগ। 1ঋকবেদ 2অথর্ববেদ 3সাম বেদ ও4 যযুর্জবেদ।
বেদের অনেক শ্লোক আর আল-কোরআনের অনেক আয়াতের অর্থের সাথে অনেকাংশে মিলও পাওয়া যায় । পুরা বেদের কোথাও মূর্তি পূজার কথা উল্লেখ নাই। কিন্তু কালের বিবর্তনের কারণে সংস্কার করতে করতে আজকে হিন্দুধর্মটাই এখন মুর্তি পুজার ধর্মে পরিনত হয়েছে।
বেদ পৃথিবীতে এসেছিল প্রায় ২০-৩০ হাজার বছর আগে। তো স্বাভাবিক ভাবেই ধরা যায় বেদ আদম আলাইহিস সাল্লাম পৃথিবীতে আসার আগেই জ্বীনদের উপর নাযিল হয়েছিল।কারণ তখন পৃথিবীর অদিবাসী ছিল জ্বীন। তারপর জ্বীনদের মাধ্যমে বেদের বাণী ঋষিদের কাছে পৌছেছিল। এরপর মানব জাতির কাছে। দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু এরা হয়ত জ্বীনদের মাঝে নবী ছিলেন। আর বেদ হয়ত দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব এদের উপর নাযিল হয়েছিল। কারন আপনি দেখবেন দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব উনাদের আকার আকৃতি হল অনেকটা হাতির মত শূড়, কারো অনেক গুলি হাত পা আবার কারো ৪ টা মুখ।
মানুষের কখনো এরকম আকৃতি হতে পারে না। তবে জ্বীনদের এরকম আকৃতি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারন জ্বীনদের আকৃতি সম্পর্কে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় যে দলীল টা পাওয়া যায় সেখানে উনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলেছিলেন বিভিন্ন বিচিত্র আকৃতির প্রানীকে আপনার কাছে আসতে দেখলাম।
আবার দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু উনাদের আকৃতি গুলিও কিন্তু বিচিত্র আকৃতির। হতে পারে উনারা জ্বীনদের মাঝে নবী ছিলেন পরবর্তীতে ঋষিদের মাধ্যমে যখন বেদের বাণী গুলি মানুষের কাছে এসেছিল তখন মানুষ আল্লাহ কে বাদ দিয়ে দূর্গা কালি লক্ষী শিব কেই উপাস্য বানিয়ে ফেলেছে।
আরবের কাফেররা যে লাত উজ্জার পূজা করত হাদীস শরীফেও কিন্তু বলা আছে যে তারা জ্বীন ছিল। { বা পূর্বেকার জমানার নেক-কার } মানুষ ছিল ,আবার অনেক জ্বীন পরবর্তী তে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনলেও তাদের মানুষ অনুসারীরা আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনে নি। এই জাতীয় বর্ননাও বিভিন্ন রেওয়াতে পাওয়া যায়।
তো এখন কথা হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসার পর কিন্তু পূর্ববর্তী সকল নবী রাসুলদের বিধান রহিত হয়ে গেছে। তাই বেদের সকল বিধান রহিত হয়ে গেছে। সবাই কে অবশ্যই আল-কোরআন ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনতে হবে। খ্রিষ্টান রা যেমন ঈসা আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহর ছেলে বানিয়ে ফেলছে, ইহুদীরা যেমন উযাইর আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহর ছেলে বানিয়ে ফেলছে ঠিক তেমনি হিন্দু ভাই বোনেরাও দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু কে তাদের আল্লাহ বানিয়ে ,আল্লাহ সুবহানাতায়ালর সাথে শিরক বা অংশীবাদ করছে। (ইসলাম আসার পর যে কেউ অন্য ধর্ম পালন করবে তা কখনো গ্রহনযোগ্য হবেনা আল কোরআন) কারণ বর্তমানে ইসলামই হল একমাত্র আল্লাহ তায়ালার মনোনীত ধর্ম ।
বেশ কিছু বছর আগে সৌদি আরব সরকার থেকে বিনামূল্যে তাফসীরে মা আরেফুল কোরআনের বাংলা ভাষায় একটা অখন্ড-খণ্ড বাংলাদেশে দেয়া হয়েছিল ব্যাপক ভাবে। ঐ এক খন্ডে প্রকাশিত তাফসীরে মা আরেফুল কো
রআনের প্রচ্ছদ টা কাল ছিল। দেশের সকল লাইব্রেরি মসজিদে ও অনেকের বাসায় এটা এখনো আছে। আপনি ঐ তাফসীর মা আরেফুল কোরআনের অখন্ড খন্ডের ৪১৩-৪১৪ পৃষ্ঠা উল্টালে সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতের ব্যাখ্যা পাবেন। সেইখানে আমি আপনাদের কে দূর্গা কালি লক্ষী শিব সম্পর্কে যা বলেছি তা হুবহু পাবেন।
তাছাড়া কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি উনার লেখা তাফসীরে মাযহারীতেও দূর্গা কালি লক্ষী শিব সম্পর্কে একই কথা বলেছেন।
যাই হোক এটা মূলত আলেমদের একটা ধারনা। এটা ভুলও হতে পারে।
তবে আমরা মুসলমানদের উচিত হবে না দূর্গা
কালি লক্ষী শিব সম্পর্কে বা অন্য যে কোন ধর্ম গ্রন্হ বা ধর্মকে খারাপ বলা বা তাদের কে গালিগালাজ করা।
কারন ধর্ম যার যার স্বাধীন ব্যপার , প্রত্যেকের ধর্মকে তাদের কাছে সুন্দয্য, ও ছহীহ মনে হয় ৷ যদি ও সেটা ব্যখ্যার দাবী রাখে ৷
*********************************************************************
বেদ :-------------------------------------------------
আজ থেকে অনেক আগে লিখা একটি কিতাব, যাকিনা বহু পুরনো ফলে সেই কারনে তাকে সনাতন কিতাব বলা হয়ে থাকে।
অনেকেই বেদ নিয়ে বলে থাকে এটা একটি ঐশি কিতাব। আমিও বলি হতে পারে এটা ঐশি কিতাব, হতেও পারে নাও পারে কেননা কোরআন হাদীসে এর কোন ব্যখ্যা পাওয়া যায়না। তবে এ নিয়ে বাডাবাডির প্রয়োজন নেই ৷ প্রয়োজনে গবেষনা করুন ৷
তবে বেদ পড়লে বোঝা যায় তাতে কেবল এক ঈশ্বরবাদের কথা’ই বলা আছে, মুর্তি পূজার কথা নিষিদ্ধ আছে, গরুর গশত খাওয়া, কবর দেওয়ার প্রথার কথা পাওয়া যায়।
যেমন এক জায়গায় বলছেঃ “আজ্ঞা যজন্তি বিশ্বেশং পাষানাদিষু সর্বদা সর্ব-ভূতে” অর্থঃ ভগবান মূর্তিতে নন ভগবান সর্বভূতে। সুতরাং সর্বভুতের ভজনাই ঈশ্বরের উপসনা।“সর্বভুতস্তিং যোমাং ভজত্যেক ত্বমাস্তি”। প্রচলিত মূর্তি পূজা বেদ কখনও সমর্থন করে না।
অবশ্য কোরআন সূরা ইউনুস ৪৮ নং আয়াতে বলা আছে “ওয়ালি কুল্লি উম্মাতির রাসুলুন। অর্থঃ প্রত্যেক জাতীর জন্যই রয়েছে রাসুল। সূরা ফাতির ২৫ নং আয়াতে বলা আছে “ওয়া ইম্মিল উম্মাতি ইল্লা খালাফিহা নাজির।
অর্থঃ এমন কোন জাতি নেই যার কাছে সতর্ককারী আগমন করে নাই। নাজির এবং বশির বলতে নবী রাসুলকে বুঝায়। এই আয়াতের পূর্বাংশে মহানবী (সাঃ) কেও বাশিরাও ওয়া নাজিরা বলা হয়েছে। ওয়া লাকাদ বায়াছনা ফি কুল্লে উম্মাতির রাসুলান (সূরা নাহল ৩৭ আয়াত)
অর্থঃ নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে কোন না কোন রাসুল পাঠিয়েছিলাম।” সূরা রাদ ৮ নং আয়াতঃ ওয়া লিকুল্লে কাওমিন হাদ- অর্থাৎ প্রত্যেক জাতির জন্য হাদী বা পথ প্রদর্শক রয়েছে।” পবিত্র কোরআনে নবীদেরকে হাদী খেতাবেও ভুষিত করা হয়েছে। এই সব বর্ণানা থেকে জানা যায় যে, বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন যুগে সতর্ককারী, পথ প্রদর্শক রুপে নবী রাসুল আগমন করেছে। প্রতিটি মুসলমানদের উচিত ঐসব নবী রাসুলদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।
*****ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা কৃষ্ণবর্ণের এক নবী পাঠিয়েছিলেন যার নাম কোরআনে উল্লেখ করা হয় নাই-( কাশ্শাফ, মাদারেক) এই বর্ণনা থেকে একজন কৃষ্ণ বর্ণের নবীর আবির্ভাবের সংবাদ পাওয়া যায়।
**** মোজাদ্দেদ আলফে সানী (রঃ) সরহিন্দ এলাকায় কাশফে কতিপয় নবীর সামাধী দর্শন করেছিলেন ( হাদীকা মাহমুদিয়া)। খ্যাতনামা তাপস মির্যা মাজহার জান এক স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কৃষ্ণ এবং রামচন্দ্রকে নবীরুপে স্বীকার করেছেন (মাকামাতে মাজহারী)
****দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মোহাম্মদ কাসেম নানুতবী (রঃ) কৃষ্ণ এবং রামচন্দ্রকে সত্য নবী বলেছেন মোবাহাসা শাহজাহানপুর, সৎ ধরম প্রচার)
****মৌলানা ওয়াহিদুজ্জামান কোরআনের তাফসিরে লিখেছেন,“স্মরণ রাখা উচিত যে, কৃষ্ণ আল্লাহর এক প্রিয় ও সৎপথ প্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন এবং নিজ যুগ ও জাতীর জন্য খোদার পক্ষ থেকে সতর্ককারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন (তফসীরে ওয়াহিদী)।
****খাজা হাসান নিজামী বলেছেন, “কৃষ্ণ ভারতের পথ প্রদর্শক ছিলেন। কৃষ্ণ প্রকৃত পক্ষে দুষ্কৃতিকারীদের বিনাশ কল্পে প্রেরিত হয়েছিলেন” (কৃষণবিতি)।
**** মৌলানা সোলায়মান নদভী ভারতের রামচন্দ্র, কৃষ্ণ এবং বুদ্ধকে নবীরুপে স্বীকার করেছে (সীরাত মুবারক, ১৯৮২)।
****মুফতি মোহাম্মদ শফি তার তফসীর মা’রেফুল কোরআনে বেদের সকল ঋষিকেই পয়গম্বর রুপে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন (৩য় খন্ড দ্রষ্টব্য)
****জামাতে ইসলাসীর পত্রিকা পৃথিবী ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় রিখেছে, “গীতার শ্রীকৃষ্ণও ছিলেন একেশ্বরবাদী এই পরম পুরষের উল্লেখ করে মহানবী বলেছেনঃ ‘কানা ফিল হিন্দে নবীয়ান আসওয়াদুল লাওনা এসমুহু কাহেন’ (হাদীস দোলমী, তারিখ হামদান, বাবুল কাফ)। অর্থাৎ ভারতে এক নবীর আবির্ভাব ঘটে যিনি কৃষ্ণবর্ণ এবং কানাই নামে পরিচিত। সুতরাং মনে করার যথেষ্ট আবকাশ রয়েছে নবুয়তের ধারার সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট, যদিও এখন ভিন্ন পরিচয়ে তাঁর পরিচয় (৩৬ পৃঃ)
****মৌলানা মহিউদ্দিন খান সম্পাদিত মাসিক মদীনা পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘সহজেই প্রতীয়মান হয় যে, তৌরাত ওইঞ্জিলের মতই গীতা, বেদ ও পুরাণও আল্লাহপাকের নাজিলকৃত কিতাব বা সহীফা ছিল এবং ঐ গুলি ঐ যামানার নবী ও রাসুলগণের উপর আল্লাহ্ পাকের তরফ থেকেই নাজিল হয়েছিল ( ডিসেম্ব র১৯৮৯)।
****কেউ কেউ কৃষ্ণকে কৃষ্ণস্তভগবান স্বয়ং বা কৃষ্ণই ভগবানের পূর্ণ অবতার বলে উল্লেখ করেছেন। আবার মহাভারতের মতে কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অষ্টমাংশ অবতার এবং কোন কোন পুরাণে তাঁকে ষষ্টাংশ অবতার বলা হয়েছে দেখুন মহাভারত ১৮/৫/২৪, ১২/২৮০/৬২, বায়ু পুরাণ, ১/২৩/২১৭, ২-২১৯১, লিঙ্গ পুরাণ, ১/২৪/১২৫-১২৬)।
বৈষ্ণবদেব প্রধান গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবতেও কৃষ্ণকে অংশাবতার বলা হয়েছে (৪র্থ স্কন্দ, ১৪ অধ্যায়, ১০ম স্কন্দ, ২য় অধ্যায়) অতএব আমরা’ই মূল জায়গা থেকে তাকে দেবতা কিংবা বগবান বানিয়েছি, সে নিজে বগবান সাজে নাই। অতএব কৃষ্ণ ঈশ্বর বা ভগবান ছিলেন না, তিনি ছিলেন ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ, আদর্শ মানব।
তবে সব কিছুই আল্লাহই ভাল জানেন ,তিনিই আলেমুল গাইব্ , আমরা শুধু বিশ্লেষন গবেষনা করতে পারি পূর্নাঙ্গ সমাধান দিতে পারিনা ,
সংকলীত :----------------
এম এম আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া
আলেমদের এইসব দেব-দেবীদের সম্পর্কে অভিমত কি ?
আল-কোরআনের সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা বলেছেন আমি জ্বীন ও মানুষ উভয়ের মাঝেই নবী প্রেরন করেছি। মানুষের মাঝে তো কারা নবী হিসাবে আসছে এটা আমরা সবাই জানি।
কিন্তু জ্বীনদের মাঝে নবী কারা ?
মানব জাতির পৃথিবীতে বসবাস করার অনেক আগে থেকেই জ্বীনরা এই পৃথিবীতে বসবাস করত।বুখারী মুসলিম শরীফের অনেক হাদীসেই হযরত আদম আলাইহিস সাল্লামের পৃথিবীতে আগমণের পূর্বে জ্বীন জাতির অনেক ঘটনা পাওয়া যায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তখন জ্বীনদের মাঝে অনেক নবী এসেছিল।
এখন জ্বীনদের মাঝে কারা নবী এই সম্পর্কে সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে মা আরেফুল কোরআনে মুফতী মোহাম্মদ শফী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেছেন হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ বেদের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। বেদে অল্ল মুহাম্মদ শব্দ গুলি এসেছে।
বেদের ৪ টা ভাগ। 1ঋকবেদ 2অথর্ববেদ 3সাম বেদ ও4 যযুর্জবেদ।
বেদের অনেক শ্লোক আর আল-কোরআনের অনেক আয়াতের অর্থের সাথে অনেকাংশে মিলও পাওয়া যায় । পুরা বেদের কোথাও মূর্তি পূজার কথা উল্লেখ নাই। কিন্তু কালের বিবর্তনের কারণে সংস্কার করতে করতে আজকে হিন্দুধর্মটাই এখন মুর্তি পুজার ধর্মে পরিনত হয়েছে।
বেদ পৃথিবীতে এসেছিল প্রায় ২০-৩০ হাজার বছর আগে। তো স্বাভাবিক ভাবেই ধরা যায় বেদ আদম আলাইহিস সাল্লাম পৃথিবীতে আসার আগেই জ্বীনদের উপর নাযিল হয়েছিল।কারণ তখন পৃথিবীর অদিবাসী ছিল জ্বীন। তারপর জ্বীনদের মাধ্যমে বেদের বাণী ঋষিদের কাছে পৌছেছিল। এরপর মানব জাতির কাছে। দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু এরা হয়ত জ্বীনদের মাঝে নবী ছিলেন। আর বেদ হয়ত দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব এদের উপর নাযিল হয়েছিল। কারন আপনি দেখবেন দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব উনাদের আকার আকৃতি হল অনেকটা হাতির মত শূড়, কারো অনেক গুলি হাত পা আবার কারো ৪ টা মুখ।
মানুষের কখনো এরকম আকৃতি হতে পারে না। তবে জ্বীনদের এরকম আকৃতি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারন জ্বীনদের আকৃতি সম্পর্কে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় যে দলীল টা পাওয়া যায় সেখানে উনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলেছিলেন বিভিন্ন বিচিত্র আকৃতির প্রানীকে আপনার কাছে আসতে দেখলাম।
আবার দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু উনাদের আকৃতি গুলিও কিন্তু বিচিত্র আকৃতির। হতে পারে উনারা জ্বীনদের মাঝে নবী ছিলেন পরবর্তীতে ঋষিদের মাধ্যমে যখন বেদের বাণী গুলি মানুষের কাছে এসেছিল তখন মানুষ আল্লাহ কে বাদ দিয়ে দূর্গা কালি লক্ষী শিব কেই উপাস্য বানিয়ে ফেলেছে।
আরবের কাফেররা যে লাত উজ্জার পূজা করত হাদীস শরীফেও কিন্তু বলা আছে যে তারা জ্বীন ছিল। { বা পূর্বেকার জমানার নেক-কার } মানুষ ছিল ,আবার অনেক জ্বীন পরবর্তী তে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনলেও তাদের মানুষ অনুসারীরা আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনে নি। এই জাতীয় বর্ননাও বিভিন্ন রেওয়াতে পাওয়া যায়।
তো এখন কথা হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসার পর কিন্তু পূর্ববর্তী সকল নবী রাসুলদের বিধান রহিত হয়ে গেছে। তাই বেদের সকল বিধান রহিত হয়ে গেছে। সবাই কে অবশ্যই আল-কোরআন ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনতে হবে। খ্রিষ্টান রা যেমন ঈসা আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহর ছেলে বানিয়ে ফেলছে, ইহুদীরা যেমন উযাইর আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহর ছেলে বানিয়ে ফেলছে ঠিক তেমনি হিন্দু ভাই বোনেরাও দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু কে তাদের আল্লাহ বানিয়ে ,আল্লাহ সুবহানাতায়ালর সাথে শিরক বা অংশীবাদ করছে। (ইসলাম আসার পর যে কেউ অন্য ধর্ম পালন করবে তা কখনো গ্রহনযোগ্য হবেনা আল কোরআন) কারণ বর্তমানে ইসলামই হল একমাত্র আল্লাহ তায়ালার মনোনীত ধর্ম ।
বেশ কিছু বছর আগে সৌদি আরব সরকার থেকে বিনামূল্যে তাফসীরে মা আরেফুল কোরআনের বাংলা ভাষায় একটা অখন্ড-খণ্ড বাংলাদেশে দেয়া হয়েছিল ব্যাপক ভাবে। ঐ এক খন্ডে প্রকাশিত তাফসীরে মা আরেফুল কো
রআনের প্রচ্ছদ টা কাল ছিল। দেশের সকল লাইব্রেরি মসজিদে ও অনেকের বাসায় এটা এখনো আছে। আপনি ঐ তাফসীর মা আরেফুল কোরআনের অখন্ড খন্ডের ৪১৩-৪১৪ পৃষ্ঠা উল্টালে সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতের ব্যাখ্যা পাবেন। সেইখানে আমি আপনাদের কে দূর্গা কালি লক্ষী শিব সম্পর্কে যা বলেছি তা হুবহু পাবেন।
তাছাড়া কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি উনার লেখা তাফসীরে মাযহারীতেও দূর্গা কালি লক্ষী শিব সম্পর্কে একই কথা বলেছেন।
যাই হোক এটা মূলত আলেমদের একটা ধারনা। এটা ভুলও হতে পারে।
তবে আমরা মুসলমানদের উচিত হবে না দূর্গা
কালি লক্ষী শিব সম্পর্কে বা অন্য যে কোন ধর্ম গ্রন্হ বা ধর্মকে খারাপ বলা বা তাদের কে গালিগালাজ করা।
কারন ধর্ম যার যার স্বাধীন ব্যপার , প্রত্যেকের ধর্মকে তাদের কাছে সুন্দয্য, ও ছহীহ মনে হয় ৷ যদি ও সেটা ব্যখ্যার দাবী রাখে ৷
*********************************************************************
বেদ :-------------------------------------------------
আজ থেকে অনেক আগে লিখা একটি কিতাব, যাকিনা বহু পুরনো ফলে সেই কারনে তাকে সনাতন কিতাব বলা হয়ে থাকে।
অনেকেই বেদ নিয়ে বলে থাকে এটা একটি ঐশি কিতাব। আমিও বলি হতে পারে এটা ঐশি কিতাব, হতেও পারে নাও পারে কেননা কোরআন হাদীসে এর কোন ব্যখ্যা পাওয়া যায়না। তবে এ নিয়ে বাডাবাডির প্রয়োজন নেই ৷ প্রয়োজনে গবেষনা করুন ৷
তবে বেদ পড়লে বোঝা যায় তাতে কেবল এক ঈশ্বরবাদের কথা’ই বলা আছে, মুর্তি পূজার কথা নিষিদ্ধ আছে, গরুর গশত খাওয়া, কবর দেওয়ার প্রথার কথা পাওয়া যায়।
যেমন এক জায়গায় বলছেঃ “আজ্ঞা যজন্তি বিশ্বেশং পাষানাদিষু সর্বদা সর্ব-ভূতে” অর্থঃ ভগবান মূর্তিতে নন ভগবান সর্বভূতে। সুতরাং সর্বভুতের ভজনাই ঈশ্বরের উপসনা।“সর্বভুতস্তিং যোমাং ভজত্যেক ত্বমাস্তি”। প্রচলিত মূর্তি পূজা বেদ কখনও সমর্থন করে না।
অবশ্য কোরআন সূরা ইউনুস ৪৮ নং আয়াতে বলা আছে “ওয়ালি কুল্লি উম্মাতির রাসুলুন। অর্থঃ প্রত্যেক জাতীর জন্যই রয়েছে রাসুল। সূরা ফাতির ২৫ নং আয়াতে বলা আছে “ওয়া ইম্মিল উম্মাতি ইল্লা খালাফিহা নাজির।
অর্থঃ এমন কোন জাতি নেই যার কাছে সতর্ককারী আগমন করে নাই। নাজির এবং বশির বলতে নবী রাসুলকে বুঝায়। এই আয়াতের পূর্বাংশে মহানবী (সাঃ) কেও বাশিরাও ওয়া নাজিরা বলা হয়েছে। ওয়া লাকাদ বায়াছনা ফি কুল্লে উম্মাতির রাসুলান (সূরা নাহল ৩৭ আয়াত)
অর্থঃ নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে কোন না কোন রাসুল পাঠিয়েছিলাম।” সূরা রাদ ৮ নং আয়াতঃ ওয়া লিকুল্লে কাওমিন হাদ- অর্থাৎ প্রত্যেক জাতির জন্য হাদী বা পথ প্রদর্শক রয়েছে।” পবিত্র কোরআনে নবীদেরকে হাদী খেতাবেও ভুষিত করা হয়েছে। এই সব বর্ণানা থেকে জানা যায় যে, বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন যুগে সতর্ককারী, পথ প্রদর্শক রুপে নবী রাসুল আগমন করেছে। প্রতিটি মুসলমানদের উচিত ঐসব নবী রাসুলদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।
*****ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা কৃষ্ণবর্ণের এক নবী পাঠিয়েছিলেন যার নাম কোরআনে উল্লেখ করা হয় নাই-( কাশ্শাফ, মাদারেক) এই বর্ণনা থেকে একজন কৃষ্ণ বর্ণের নবীর আবির্ভাবের সংবাদ পাওয়া যায়।
**** মোজাদ্দেদ আলফে সানী (রঃ) সরহিন্দ এলাকায় কাশফে কতিপয় নবীর সামাধী দর্শন করেছিলেন ( হাদীকা মাহমুদিয়া)। খ্যাতনামা তাপস মির্যা মাজহার জান এক স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কৃষ্ণ এবং রামচন্দ্রকে নবীরুপে স্বীকার করেছেন (মাকামাতে মাজহারী)
****দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মোহাম্মদ কাসেম নানুতবী (রঃ) কৃষ্ণ এবং রামচন্দ্রকে সত্য নবী বলেছেন মোবাহাসা শাহজাহানপুর, সৎ ধরম প্রচার)
****মৌলানা ওয়াহিদুজ্জামান কোরআনের তাফসিরে লিখেছেন,“স্মরণ রাখা উচিত যে, কৃষ্ণ আল্লাহর এক প্রিয় ও সৎপথ প্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন এবং নিজ যুগ ও জাতীর জন্য খোদার পক্ষ থেকে সতর্ককারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন (তফসীরে ওয়াহিদী)।
****খাজা হাসান নিজামী বলেছেন, “কৃষ্ণ ভারতের পথ প্রদর্শক ছিলেন। কৃষ্ণ প্রকৃত পক্ষে দুষ্কৃতিকারীদের বিনাশ কল্পে প্রেরিত হয়েছিলেন” (কৃষণবিতি)।
**** মৌলানা সোলায়মান নদভী ভারতের রামচন্দ্র, কৃষ্ণ এবং বুদ্ধকে নবীরুপে স্বীকার করেছে (সীরাত মুবারক, ১৯৮২)।
****মুফতি মোহাম্মদ শফি তার তফসীর মা’রেফুল কোরআনে বেদের সকল ঋষিকেই পয়গম্বর রুপে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন (৩য় খন্ড দ্রষ্টব্য)
****জামাতে ইসলাসীর পত্রিকা পৃথিবী ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় রিখেছে, “গীতার শ্রীকৃষ্ণও ছিলেন একেশ্বরবাদী এই পরম পুরষের উল্লেখ করে মহানবী বলেছেনঃ ‘কানা ফিল হিন্দে নবীয়ান আসওয়াদুল লাওনা এসমুহু কাহেন’ (হাদীস দোলমী, তারিখ হামদান, বাবুল কাফ)। অর্থাৎ ভারতে এক নবীর আবির্ভাব ঘটে যিনি কৃষ্ণবর্ণ এবং কানাই নামে পরিচিত। সুতরাং মনে করার যথেষ্ট আবকাশ রয়েছে নবুয়তের ধারার সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট, যদিও এখন ভিন্ন পরিচয়ে তাঁর পরিচয় (৩৬ পৃঃ)
****মৌলানা মহিউদ্দিন খান সম্পাদিত মাসিক মদীনা পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘সহজেই প্রতীয়মান হয় যে, তৌরাত ওইঞ্জিলের মতই গীতা, বেদ ও পুরাণও আল্লাহপাকের নাজিলকৃত কিতাব বা সহীফা ছিল এবং ঐ গুলি ঐ যামানার নবী ও রাসুলগণের উপর আল্লাহ্ পাকের তরফ থেকেই নাজিল হয়েছিল ( ডিসেম্ব র১৯৮৯)।
****কেউ কেউ কৃষ্ণকে কৃষ্ণস্তভগবান স্বয়ং বা কৃষ্ণই ভগবানের পূর্ণ অবতার বলে উল্লেখ করেছেন। আবার মহাভারতের মতে কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অষ্টমাংশ অবতার এবং কোন কোন পুরাণে তাঁকে ষষ্টাংশ অবতার বলা হয়েছে দেখুন মহাভারত ১৮/৫/২৪, ১২/২৮০/৬২, বায়ু পুরাণ, ১/২৩/২১৭, ২-২১৯১, লিঙ্গ পুরাণ, ১/২৪/১২৫-১২৬)।
বৈষ্ণবদেব প্রধান গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবতেও কৃষ্ণকে অংশাবতার বলা হয়েছে (৪র্থ স্কন্দ, ১৪ অধ্যায়, ১০ম স্কন্দ, ২য় অধ্যায়) অতএব আমরা’ই মূল জায়গা থেকে তাকে দেবতা কিংবা বগবান বানিয়েছি, সে নিজে বগবান সাজে নাই। অতএব কৃষ্ণ ঈশ্বর বা ভগবান ছিলেন না, তিনি ছিলেন ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ, আদর্শ মানব।
তবে সব কিছুই আল্লাহই ভাল জানেন ,তিনিই আলেমুল গাইব্ , আমরা শুধু বিশ্লেষন গবেষনা করতে পারি পূর্নাঙ্গ সমাধান দিতে পারিনা ,
সংকলীত :----------------
এম এম আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া
01829138114
00966504967863
জ্বীন জাতির সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু চমৎকার ঘটনা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে জ্বিনদের উঠাবসার অনেক বিবরণ সহীহ হাদীসে পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবনে মোট ৬ রাত জ্বীনদের সাথে কাটিয়েছেন। মুসনাদে আহমদে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্নিত আছে যে একবার আহলে সুফফার লোকদের মধ্যে সকলকে কেউ না কেউ খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেছে। শুধু আমি একা থেকে গেছি। আমাকে কেউ নিয়ে যায়নি। আমি মসজিদে বসে ছিলাম। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
মসজিদে এলেন। তার হাতে ছিল খেজুরের ছড়ি। তা দিয়ে তিনি আমার বুকে মৃদু আঘাত করলেন এবং বললেন আমার সাথে চলো। এরপর আমরা রওয়ানা হলাম। যেতে যেতে আমরা মদীনার বাকীয়ে গরক্বদ পর্যন্ত পৌছে গেলাম। ওখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের ছড়ি দিয়ে একটা রেখা টানলেন এবং আমাকে বললেন এর মধ্যে বসে যাও, আমি না আসা পর্যন্ত এখানেই থাকবে। এরপর তিনি চলতে শুরু করলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে খেজুড় গাছের ঝাড়ের ভিতর দিয়ে দেখতে থাকলাম। শেষ পর্যন্ত একটা কালো কুয়াশা ছেয়ে যেয়ে উনার ও আমার মাঝে যোগাযোগ কেটে গেল। আমি নিজের জায়গায় বসে শুনতে পাচ্ছিলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছড়ি ঠুকছিলেন এবং বলছিলেন “বসে যাও, বসে যাও” অবশেষে সকাল হতে শুরু করল। কুয়াশা উঠে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন তুমি যদি এই বৃত্ত থেকে বের হতে তাইলে জ্বীনরা তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেত। আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
জিজ্ঞাস করলেন তুমি কি দেখেছিল ? আমি বললাম কিছু বিচিত্র আকৃতির প্রাণি কে আমি আসতে দেখেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ওরা ছিল নসীবাইনের জ্বিনদের প্রতিনিধি দল। অরা আমার কাছে এসেছিল কোরআন শিখতে।
তিবরানী থেকে হযরত বিলাল বিন হারিস রাঃ থেকে বর্নিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এস্তেঞ্জা করতে গেলেন। আমি তার অনতিদূরে পানির পাত্র নিয়ে পাশেই ছিলাম। সেখানে আমি কিছু লোকের ঝগড়া বিবাদ ও চেচাঁমিচি শুনলাম। এই ধরনের চেচামিচি আমি আগে কখনই শুনি নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে আসলে আমি এই চেচামিচির কারন জানতে চাইলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন আমার কাছে মুসলমান জ্বীন ও মুশরিক জ্বীনেরা ঝগড়া করছিল। তারা আমার কাছে আবেদন করল আমি যেন তাদের বাসস্থান ঠিক করে দিই। তো আমি মুমিন জ্বীনদের পাহাড়-পর্বত ও মুশরিক জ্বীনদের জন্য খাদ, গুহা ও সামুদ্রিক দ্বীপ ঠিক করে দেই।
তিরমিযী শরীফে হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্নিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাহাবীদের সামনে সূরা আর রহমানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন। সাহাবীরা চুপচাপ থেকে পুরা সূরাটা শুনলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বলেন তোমরা চুপ করে আছ কেন ? আমি এই সূরাটি লাইলাতুল জ্বীনে/জ্বীন রজনীতে জ্বীনদের সামনে পড়েছিলাম। যখন আমি আল্লাহর এই বাণী তোমরা তোমাদের মহান প্রতিপালকের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে তেলাওয়াত করছিলাম তখন জ্বীন রা বলত- “ হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার কোন নেয়ামতকেই অস্বীকার করি না। ”
মেশকাত শরীফে মেরাজ রজনীর বর্ণনায় হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন প্রথম আসমানে অবতরনের পর আমি নিচের দিকে তাকিয়ে দেখতে পাই জ্বীনরা আগুন, ধোয়া ও বিভিন্ন জাদু মন্ত্র ও বিভিন্ন আকৃতি ধারন করে অনেক রকম কাজ করছে। তো আমি জিবরাইল কে বলি এসব কি ? তখন জিবরাইল আমাকে বলে জ্বিনরা সারাদিনই এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
এরা শুধু মানুষের চার পাশেই ঘুরে, অথচ আকাশ মন্ডলী ও গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে তারা খুব কমই চিন্তা করে। যদি তারা এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করতো তাইলে তারা সবাই ইসলামে প্রবেশ করতো। খুব কম জ্বীন ই আল্লাহ কে মানে।
তথ্য সূত্রঃ তাফসিরে জালালাইনের এর সম্মানিত লেখক আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রনীত লাক্বতুল মারজ্বানি ফী আহকামিল জান্ন গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ জ্বীন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস, মদীনা পাবলিকেশন্স, ৩৮/২, বাংলাবাজার, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৩
মুসলিম উম্মাহ’র ১৪৩৩ তম কুরবানী , ফাযায়েল- মাছায়েলে কুরবানী /কুরবানীর তাৎপয্য
কুরবানী
আরবি শব্দ,
আরবিতে কুরবানুন, কুরবুন শব্দ থেকে নির্গত যার অর্থ নৈকট্য, উৎসর্গ, বিসর্জন ও ত্যাগ ইত্যাদি।
একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ইসলামে...র একটি অন্যতম ঐতিহ্য। শরীয়তের পরিভাষায়, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যুলহজ্জ মাসের ১০, ১১ ও ১২ এ তিনটি দিনে আল্লাহর নামে নির্দিষ্ট নিয়মে হালাল পশু যবেহ করাই হল কুরবানী।
ত্যাগ-তিতিক্ষা ও প্রিয়বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করাই কুরবানীর তাৎপর্য।
প্রচলিত কুরবানী হযরত ইবরাহীম -এর অপূর্ব আত্মত্যাগের ঘটনারই স্মৃতিবহ। হাদীসে বর্ণিত আছে, ‘রাসূলুল্লাহ -এর সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ কুরবানী কী? তিনি বললেন, ‘এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীম -এর সুন্নাত।’ তাঁরা বললেন, এতে আমাদের কি কল্যাণ নিহিত আছে? তিনি বললেন, ‘এর প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে।’ তাঁরা পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, বকরীর পশমেও কি তাই? জবাবে তিনি বললেন, ‘বকরীর প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকি আছে।’ মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম থেকে অব্যাহত ভাবে চলে আসছে কুরবানীর ঐতিহ্য ধারা।
আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে হজরত ইবরাহীম স্বপ্নাদিষ্ট হয়েছিলেন প্রিয়তম বস্তু তথা তাঁর পুত্র ইসমাইল -কে কুরবানী করার জন্য। সে অনুযায়ী তিনি পরম করুণাময় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয়পুত্রকে কুরবানী দিতে উদ্যত হন। কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁকে আর শেষ পর্যন্ত পুত্রকে কুরবানী দিতে হয়নি। ইসমাইল -এর পরিবর্তে কুরবানী হয় একটি পশু। মহান আল্লাহর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হজরত ইবরাহীম । এই সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরাই ঈদুল আযহার পশু কুরবানীর প্রধান মর্মবাণী। কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের পাশাপাশি মানবিক গুণাবলির বিকাশ সাধন, চিন্তার স্বচ্ছতা, ত্যাগের মহিমা, হৃদয়ের উদারতা সবকিছু মিলে কুরবানীর এক স্মরণীয় অধ্যায়।
কার উপর কুরবানী ওয়াজিব ?
সুস্থ মস্তিষ্ক, প্রাপ্তবয়স্ক, মুকীম (মুসাফির নয় এমন ব্যক্তি) ব্যক্তিই ১০ যুলহজ্জ ফজর হতে ১২ যুলহজ্জ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব (সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা সেই পরিমাণ নগদ অর্থ) পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য যাকাতের নিসাবের মতো সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়। বরং যে অবস্থায় সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয় সেই অবস্থায় কুরবানীও ওয়াজিব হবে।
কুরবানী না করার পরিনাম ---
নেক আমলসমূহের মধ্যে কুরবানী একটি বিশেষ আমল। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সবসময় কুরবানী করেছেন এবং সামর্থ থাকা সত্ত্বেও কুরবানী বর্জনকারী ব্যক্তির প্রতি তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। মহানবী বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’
কুরবানীর এ ফযীলত হাসিল করতে হলে প্রয়োজন সেই আবেগ-অনুভূতি, প্রেম-ভালবাসা ও ঐকান্তিকতা যা নিয়ে কুরবানী করেছিলেন আল্লাহর খলীল হযরত ইবরাহীম । কেবল গোশত ও রক্তের নাম কুরবানী নয়। বরং আল্লাহর রাহে নিজের সম্পদের একটি অংশ বিলিয়ে দেওয়ার এক দৃপ্ত শপথের নাম কুরবানী। গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। কেননা আল্লাহ তাআলার নিকট গোশত ও রক্তের কোন মূল্য নেই। মূল্য আছে কেবল তাকওয়া, পরহেযগারী ও ইখলাসের। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর কাছে কখনো যবেহকৃত পশুর গোশত ও রক্ত পৌঁছবে না, পেঁৗঁছবে কেবল তাকওয়া [সূরা আল-হজ্জ: ৩]।
অতএব আমাদের একান্ত কর্তব্য, খাঁটি নিয়ত-সহকারে কুরবানী করা এবং তা থেকে শিক্ষার্জন করা। নিজেদের আনন্দে অন্যদের শরীক করা ঈদুল আযহার শিক্ষা। কুরবানীকৃত পশুর গোশত তিন অংশে ভাগ করে এক অংশ নিজের জন্য সংরক্ষণ, দ্বিতীয় অংশ আত্মীয়-স্বজনকে প্রদান এবং তৃতীয় অংশ সমাজের অভাবগ্রস্থ ও দরিদ্র মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া ইসলামের বিধান। কুরবানীকৃত পশুর চামড়া অনাথ আশ্রম, এতিমখানা ও মাদরাসায় পড়–য়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের জন্য প্রদান করলে দ্বিবিধ সওয়াব হাসিল হয়।
এক দুঃখী মানুষের সাহায্য দ্বিতীয় দীনী শিক্ষার বিকাশ। প্রকৃতপক্ষে কুরবানীদাতা কেবল পশুর গলায় চুরি চালায় না, বরং সে তো চুরি চালায় সকল প্রবৃত্তির গলায় আল্লাহর প্রেমে পাগলপারা হয়ে। এটিই কুরবানীর মূল নিয়ামক ও প্রাণশক্তি।
এ অনুভূতি ব্যতিরেকে যে কুরবানী করা হয় তা হযরত ইবরাহীম ও ইসমাঈল -এর সুন্নাত নয়, এটা এক রসম তথা প্রথা মাত্র। এতে গোশতের ছড়াছড়ি হয় বটে কিন্তু সেই তাকওয়া হাসিল হয় না যা কুরবানীর প্রাণশক্তি। পশু কুরবানীর মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে মানুষের মধ্যে বিরাজমান পশু শক্তি, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুগুলোকেই কুরবানী দিতে হয়। আর হালাল অর্থে অর্জিত পশু কুরবানীর মাধ্যমে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয়। আমরা চাই ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সকল অনিশ্চয়তা-শঙ্কা দূর হোক। হিংসা-হানাহানি ও বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে কুরবানীর আনন্দে শামিল হয়ে সকলের মধ্যে সাম্য ও সহমর্মিতার মনোভাব জাগিয়ে তুলতে হবে।আরো দেখুন
৷
উপরোক্ত লেখাটি ডঃ আ ফ ম খাদিল কতৃক রচিত , মাসীক আত্ -তাওহীদ সম্পাদক
*********************************************
পৃথিবীতে মানব সভ্যতার ইতিহাসের মতো কুরবানীর ইতিহাসও প্রাচীন। কুরবানীর বিধান ছিলো না, এমন কোনো জাতির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘আমি প্রত্যেক জাতির জন্য কুরবানী নির্ধারণ করেছি।' [সুরা হাজ : ৩৪]। তবে যুগে যুগে কুরবানীর নিয়ম-পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন ধারায় ছিলো। হাসান বসরী (রহ.) এর মতে, সূরা আল কাওছারে বর্ণিত ‘ফাসল্লি লি রবিবকা অনহার' অর্থাৎ ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন এবং কুরবানী করুন' আয়াতটি নাযিল করে মহান আল্লাহ তাআলা ঈদুল আযহার সালাত আদায় ও কুরবানীর নির্দেশ দান করেন। [আহকামুল কুরআন, ৩য় খন্ড, পৃ. ৪৭৫]। আল্লাহর নির্দেশে আদিষ্ট হয়ে ২য় হিজরীতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদুল আযহার সালাত আদায় ও কুরবানী করেন। সেই হতে প্রতিবছর মুসলিম উম্মাহ যথারীতি কুরবানী করে আসছে। এ হিসেবে মুসলিম উম্মাহ এ বছর ১৪৩৩তম কুরবানী কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে কুরবানী কী, কেন কুরবানী করতে হবে, কীভাবে কুরবানী করতে হবে, কুরবানীর শিক্ষাই-বা কী? ইত্যাদি বিষয়ে সম্যক জ্ঞান থাকা আমাদের একান্ত আবশ্যক।
কুরবানীর পশু সংক্রান্ত জরুরি মাসায়েল
যেসব পশু দিয়ে কুরবানী দেয়া যাবে : গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা, উট ইত্যাদি পশু কুরবানী দেয়া যাবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এই যে, গরু, মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। উট কমপক্ষে পাঁচ বছরের হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মনে হয় তাহলে তা দিয়ে কুরবানী বৈধ। -হেদায়া, শামী, আলমগীরী
যে পশুই কুরবানী দেয়া হোক না কেন তা হতে হবে সুস্থ ও সবল। কুরবানীর পশু চয়নের ক্ষেত্রে মনে রাখবে, এই পশুটি আল্লাহর দরবারে উপহার দেয়া হচ্ছে। তাই উৎকৃষ্ট পশু উপহার দেয়া উচিত। দুনিয়াতে আমরা কোনো উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তির নিকট যদি কোন উপহার পাঠাই, তাহলে সবচে' ভাল এবং উৎকৃষ্ট জিনিসটি পাঠাই। তাহলে মহান আল্লাহর নিকট পাঠানো জিনিস কেন উৎকৃষ্ট হবে না?
পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কুরবানী দেয়া যাবে না : (১) যে পশুর দৃষ্টিশক্তি নেই। (২) যে পশুর শ্রবণশক্তি নেই। (৩) এই পরিমাণ লেংড়া যে, জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না। (৪) লেজের অধিকাংশ কাটা। (৫) কানের অধিকাংশ কাটা। (৬) অত্যন্ত দুর্বল, জীর্ণ-শীর্ণ প্রাণী। (৭) গোড়াসহ শিং উপড়ে গেছে। (৮) পশু এমন পাগল যে, ঘাস পানি ঠিকমত খায় না। মাঠেও ঠিকমত চরানো যায় না। (৯) জন্মগতভাবে কান নেই। (১০) দাঁত মোটেই নেই বা অধিকাংশ নেই। (১১) স্তনের প্রথমাংশ কাটা। (১২) রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে গেছে। (১৩) ছাগলের দুটি দুধের যে কোন একটি কাটা। (১৪) গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোন দুটি কাটা। (১৫) জন্মগতভাবে একটি কান নেই।
পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কুরবানী দেয়া যাবে : (তবে উত্তম হচ্ছে পরিপূর্ণ সুস্থ পশু দেয়া, ত্রুটিযুক্ত প্রাণী না দেয়া) (১) পশু পাগল, তবে ঘাস-পানি ঠিকমত খায়। (২) লেজ বা কানের কিছু অংশ কাটা, তবে অধিকাংশ আছে। (৩) জন্মগতভাবে শিং নেই। (৪) শিং আছে, তবে ভাংগা। (৫) কান আছে, তবে ছোট। (৬) পশুর একটি পা ভাংগা, তবে তিন পা দিয়ে সে চলতে পারে। (৭) পশুর গায়ে চর্মরোগ। (৮) কিছু দাঁত নেই, তবে অধিকাংশ আছে। স্বভাবগত এক অন্ডকোষ বিশিষ্ট পশু। (১০) পশু বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম। (১১) পুরুষাঙ্গ কেটে যাওয়ার কারণে সঙ্গমে অক্ষম।
কতজন মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে : ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু শুধু এক ব্যক্তি কুরবানী দিতে পারবে। গরু, মহিষ, উট সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি মিলে কুরবানী দিতে পারবে। অনেকে মনে করে থাকে, কুরবানীর পশুতে একাধিক শরীক থাকলে অংশ নির্ধারণ করতে হবে বেজোড় সংখ্যা হিসেবে।
শরীক হতে হবে তিনজন, পাঁচজন বা সাতজন- এই ধারণা ঠিক নয়। সঠিক বিষয় হচ্ছে এই যে, এক থেকে সাত পর্যন্ত যে কোন অংশে পশুটিকে ভাগ করা যাবে। তাই দু'জন, তিনজন, চারজন, পাঁচজন, ছয়জন ও সাত ব্যক্তি মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে।
একাধিক শরীক থাকলে করণীয় : একাধিক শরীক থাকলে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, অংশহিসেবে ভাগ যেন যথার্থ হয়। প্রাপ্য অংশের চেয়ে কেউ যেন কম বা বেশি না পায়। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কারো যেন নিয়তে গড়মিল না থাকে। কোন অংশীদারের যদি শুধু মাংস খাওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানী হবে না। এজন্য কুরবানী শুদ্ধ হওয়ার জন্য সবার নিয়ত শুদ্ধ হওয়া জরুরি।
ভাল পশু ক্রয়ের পর ত্রুটিযুক্ত হয়ে গেলে : কুরবানীর উদ্দেশ্যে ভাল পশু ক্রয়ের পর যদি তা এই পরিমাণ ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়, যা দ্বারা কুরবানী জায়েজ হবে না তাহলে দেখতে হবে ক্রেতা ধনী না দরিদ্র? ক্রেতা যদি দরিদ্র হয় তাহলে সেই ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়েই সে কুরবানী দিবে। আর যদি ক্রেতা ধনী হয়, তাহলে দ্বিতীয় আরেকটি পশু কিনে কুরবানী দিতে হবে। প্রথমটি দিয়ে কুরবানী শুদ্ধ হবে না। (ফতোয়ায়ে শামী, ৫ম খন্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা)
পশু জবাই করার জন্য যেসব শর্তঃ ইসলামী শরীয়তে পশু জবাই করার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। (১) জবাইকারী ব্যক্তি মুসলমান হতে হবে। (২) জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হবে। (৩) পশুর খাদ্যনালী, শ্বাসনালী ও গলায় অবস্থিত অন্যান্য রগ ভালভাবে কাটতে হবে। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, ২য় খন্ড, ৩৭৫ পৃষ্ঠা।)
জবাই করার নিয়মাবলী : (১) জবাই করার পূর্বে পশুকে ঘাস, পানি ইত্যাদি ভালভাবে খাওয়াতে হবে। কোরবানীর প্রাণীকে ক্ষুধার্থ বা পিপাসার্ত রাখা অন্যায়। (২) পশুকে কোরবানী করার স্থানে টেনে হিঁচেড়ে নেয়া অন্যায়। (৩) জবাই করার জন্য পশুকে শোয়াতে হবে সহজ সুন্দরভাবে। কঠোরভাবে নয়। (৪) কেবলার দিকে ফিরিয়ে শোয়াতে হবে, বাম পার্শ্বের উপর। (৫) পশুর চার পায়ের মধ্যে তিনটি বাঁধবে। (৬) আগে থেকেই ছুরি ধারা দিয়ে রাখবে। ভোঁতা ছুরি দিয়ে জবাই করবে না। (৭) ছুরি যদি ধরাতে হয় তাহলে পশুর সামনে ধারাবে না। আড়ালে ধারাবে। (৮) কোরবানীর পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধারানো অন্যায়। বরং আগে থেকেই ধার দিয়ে নিবে (ফতোয়ায়ে রহীমিয়া, ১ম খন্ড, ৯৮ পৃষ্ঠা) (৯) গলায় জবাই করতে হবে। (১০) এমনভাবে জবাই করা যাবে না যাতে গলা পুরাপুরি আলাদা হযে যায়। (১১) জবাই করার সময় ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার' বলতে হবে। (১২) যাতে দ্রুত জবাই হয়ে যায় এবং পশুর কষ্ট কম হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। (১৩) একটি পশুকে আরেকটি পশুর সামনে জবাই না করা ভাল। (১৪) পশুর প্রাণ বের হওয়ার পূর্বে চামড়া খসানোর কাজ শুরু না করা। (১৬) ঘাড়ের দিক থেকে জবাই করা যাবে না। (১৭) বিখ্যাত সাহাবী হযরত ইবনে আববাস রা. এর মত অনুযায়ী ঘাড়ের দিকে থেকে জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ নয়। (জাওয়াহিরুল ফিক্হ, ২য় খন্ড, ২৭৩ পৃষ্ঠা)
প্রতি বছর আমরা পশু কোরবানী করে থাকি। গোস্ত নিজেরা খাই এবং অন্যকে দেই। চামড়া বিক্রি করে গরীবদের মাঝে সে অর্থ বিলিয়ে দেই। এ বিষয়ে ইসলামের দিকনির্দেশনা পুরাপুরিভাবে আমরা অনেকেই জানি না। তাই গোস্ত বণ্টন সম্পর্কে শরীয়তের বিধান জেনে নেই।
(১) কোরবানীর পশুর গোস্ত তিন ভাগ করে এক ভাগ গরীব মানুষকে, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীকে দিবে। বাকি এক ভাগ নিজে খাবে। (২) আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী গোস্ত নিতে আসবে এই অপেক্ষা না করে নিজ দায়িত্বে তাদের ঘরে গোস্ত পৌঁছে দেয়া উচিত। (৩) যদি একাধিক শরীক থাকে তাহলে গোস্ত ভাগ করবে ওজন করে। অনুমান বা আন্দাজ করে নয়। কারণ অনুমান করে ভাগ করলে বেশকম হতে পারে, যা গুণাহের কারণ। (৪) যে কসাই গোস্ত তৈরি করে দিবে তাকে আলাদাভাবে কাজের জন্য মজুরি দিতে হবে। মজুরি হিসেবে কোরবানীর গোস্ত দেয়া জায়েজ নেই। তার প্রাপ্য মজুরি দেয়ার পর লিল্লাহ গোস্ত আলাদা দেবে। (৫) কারো ভাগে যদি পায়া, ক্ষুর, মাথা বা কোন হাড্ডি বেশি যায় তাহলে তার অংশ থেকে গোস্ত একটু কমিয়ে দিতে হবে। যেন গড়ে সমান হয়। (৬) কোরবানী যেহেতু আল্লাহর জন্য করা হয়, তাই এতে নিজে ভোগ করার চেয়ে গরীব মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা বেশি করা উচিত। (৭) কোরবানীর গোস্ত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে, যতদিন ইচ্ছা রেখে খাওয়া যায়, এতে কোন বাধা নেই। (৮) পশুর রশি ও গলার মালা ইত্যাদি দান করে দিতে হবে।
চামড়া সংক্রান্ত আলোচনা : (১) কোরবানীর পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবে। (২) চামড়া যদি বিক্রি করা হয় তাহলে তার মূল্য অবশ্যই গরীব মানুষের মধ্যে দান করে দিতে হবে। নিজে ব্যবহার করা যাবে না। (৩) চেষ্টা করা উচিত চামড়ার টাকা পরিবর্তন না করে হুবহু দান করে দিতে।
কোরবানীর সাথে আকিকা দেয়া যায় কিনা : কোরবানীর সাথে আকিকা দেয়া যায়। এতে কোন সমস্যা নেই। কোরবানীর গোস্তের মতো আকিকার গোস্তও নিজে খেতে পারবে, অপরকে খাওয়াতে পারবে, দিতেও পারবে। ছেলের আকিকা হলে দুইটি ছাগল অথবা গরুতে দুই শরীক এবং মেয়ের আকিকা হলে একটি ছাগল অথবা গরুতে এক শরীক দিতে হবে। যেমন একটি হাদীসে এসেছে, বিখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনে শোয়াইব (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যার সন্তান হয় সে যদি চায় আকিকা দিতে, তাহলে ছেলে সন্তান হলে দুটি ছাগল এবং মেয়ে সন্তান হলে একটি ছাগল আকিকা দিবে। আবু দাউদ, নাসায়ী। এখানে আরেকটি বিষয় জানা জরুরি। তা এই যে, যদি কারো ছেলে সন্তান হয় এবং তার দুটি ছাগল আকিকা দেয়ার সামর্থ না থাকে তাহলে একটি ছাগল দিলেই হবে। অনুরূপভাবে গরু-মহিষে দুই শরীক দিতে সক্ষম না হলে এক শরীক দিলেও চলবে।
প্রিয় পাঠক! এখানে একটি ভুল ধারণার অবসান হওয়া উচিত। কেউ মনে করতে পারে, এখানে মেয়ে সন্তান হলে মাত্র একটি ছাগল দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আর ছেলে হলে দুটি। এতে করে ছেলেদের মর্যাদা বেশি দেয়া হয়েছে। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কোনভাবেই ছেলের মর্যাদা বেশি দেয়া হয়নি। কারণ, আকিকা দেয়া হয় সন্তানের উপর থেকে বিপদ আপদ যেন দূর হয়ে যায় এই উদ্দেশ্যে। সাধারণত ছেলে সন্তানের উপর বিপদ আপদ বেশি আসে এবং মেয়ে সন্তানের উপর কম আসে। তাই আল্লাহর রাসূল (সা.) ছেলের জন্য দুই এবং মেয়ের জন্য একটি ছাগল আকিকা দিতে বলেছেন।
পশু কোরবানীর সাথে পশুত্বের কোরবানী করতে হবে
আমরা মানুষ। আমাদের মধ্যে যেমন ফেরেশতার স্বভাব আছে তেমনি পশুর স্বভাবও আছে। মানুষের মধ্যে যত ভালো গুণ রয়েছে, সেগুলো হলো-ফেরেশতার স্বভাব। আর হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, অন্যায়ভাবে কারো উপর আক্রমণ করা, মানুষের ধন-সম্পদ অবৈধভাবে দখল করা, কারো অধিকার কেড়ে নেয়া ইত্যাদি হলো পশুর স্বভাব। পবিত্র কোরবানী ঈদে আমরা পশু কোরবানী করে থাকি। কুরবানীর মূল ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এই উপলক্ষে অর্জিত তাকওয়া বা আল্লাহভীতি দ্বারা নিজের পশু স্বভাবকে কোরবানী করি না। তাই আমাদের সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার দূর হয় না। যদি পশু কোরবানীর সাথে সাথে আমরা নিজেদের পশুস্বভাবকেও কোরবানী করতে পারি, তবেই আমাদের সমাজ হবে সুখময়, শান্তিময় ও আনন্দময়। আল্লাহর রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমলে মানুষ যেরূপ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে জীবন যাপন করেছে, অনুরূপ পবিত্র স্বভাবের অধিকারী হয়ে আজও সেরূপ শান্তি ও নিরাপত্তা আমরা লাভ করতে পারি। এ জন্যে আমাদেরকে সাহাবায়ে কেরামের গুণাবলী অর্জন করতে হবে। তাদের মাঝে ছিল সব উত্তম গুণাবলী। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর মহা ত্যাগের মহা স্মৃতি পবিত্র কুরবানী অনুষ্ঠান থেকে লব্ধ শিক্ষা দ্বারা আমরা যাতে নিজেদের চরিত্র গঠন করতে পারি, আল্লাহ আমাদের সেই তাওফিক দিন। এটাই একমাত্র কামনা।
আরবি শব্দ,
আরবিতে কুরবানুন, কুরবুন শব্দ থেকে নির্গত যার অর্থ নৈকট্য, উৎসর্গ, বিসর্জন ও ত্যাগ ইত্যাদি।
একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ইসলামে...র একটি অন্যতম ঐতিহ্য। শরীয়তের পরিভাষায়, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যুলহজ্জ মাসের ১০, ১১ ও ১২ এ তিনটি দিনে আল্লাহর নামে নির্দিষ্ট নিয়মে হালাল পশু যবেহ করাই হল কুরবানী।
ত্যাগ-তিতিক্ষা ও প্রিয়বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করাই কুরবানীর তাৎপর্য।
প্রচলিত কুরবানী হযরত ইবরাহীম -এর অপূর্ব আত্মত্যাগের ঘটনারই স্মৃতিবহ। হাদীসে বর্ণিত আছে, ‘রাসূলুল্লাহ -এর সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ কুরবানী কী? তিনি বললেন, ‘এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীম -এর সুন্নাত।’ তাঁরা বললেন, এতে আমাদের কি কল্যাণ নিহিত আছে? তিনি বললেন, ‘এর প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে।’ তাঁরা পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, বকরীর পশমেও কি তাই? জবাবে তিনি বললেন, ‘বকরীর প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকি আছে।’ মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম থেকে অব্যাহত ভাবে চলে আসছে কুরবানীর ঐতিহ্য ধারা।
আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে হজরত ইবরাহীম স্বপ্নাদিষ্ট হয়েছিলেন প্রিয়তম বস্তু তথা তাঁর পুত্র ইসমাইল -কে কুরবানী করার জন্য। সে অনুযায়ী তিনি পরম করুণাময় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয়পুত্রকে কুরবানী দিতে উদ্যত হন। কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁকে আর শেষ পর্যন্ত পুত্রকে কুরবানী দিতে হয়নি। ইসমাইল -এর পরিবর্তে কুরবানী হয় একটি পশু। মহান আল্লাহর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হজরত ইবরাহীম । এই সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরাই ঈদুল আযহার পশু কুরবানীর প্রধান মর্মবাণী। কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের পাশাপাশি মানবিক গুণাবলির বিকাশ সাধন, চিন্তার স্বচ্ছতা, ত্যাগের মহিমা, হৃদয়ের উদারতা সবকিছু মিলে কুরবানীর এক স্মরণীয় অধ্যায়।
কার উপর কুরবানী ওয়াজিব ?
সুস্থ মস্তিষ্ক, প্রাপ্তবয়স্ক, মুকীম (মুসাফির নয় এমন ব্যক্তি) ব্যক্তিই ১০ যুলহজ্জ ফজর হতে ১২ যুলহজ্জ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব (সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা সেই পরিমাণ নগদ অর্থ) পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য যাকাতের নিসাবের মতো সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়। বরং যে অবস্থায় সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয় সেই অবস্থায় কুরবানীও ওয়াজিব হবে।
কুরবানী না করার পরিনাম ---
নেক আমলসমূহের মধ্যে কুরবানী একটি বিশেষ আমল। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সবসময় কুরবানী করেছেন এবং সামর্থ থাকা সত্ত্বেও কুরবানী বর্জনকারী ব্যক্তির প্রতি তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। মহানবী বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’
কুরবানীর এ ফযীলত হাসিল করতে হলে প্রয়োজন সেই আবেগ-অনুভূতি, প্রেম-ভালবাসা ও ঐকান্তিকতা যা নিয়ে কুরবানী করেছিলেন আল্লাহর খলীল হযরত ইবরাহীম । কেবল গোশত ও রক্তের নাম কুরবানী নয়। বরং আল্লাহর রাহে নিজের সম্পদের একটি অংশ বিলিয়ে দেওয়ার এক দৃপ্ত শপথের নাম কুরবানী। গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। কেননা আল্লাহ তাআলার নিকট গোশত ও রক্তের কোন মূল্য নেই। মূল্য আছে কেবল তাকওয়া, পরহেযগারী ও ইখলাসের। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর কাছে কখনো যবেহকৃত পশুর গোশত ও রক্ত পৌঁছবে না, পেঁৗঁছবে কেবল তাকওয়া [সূরা আল-হজ্জ: ৩]।
অতএব আমাদের একান্ত কর্তব্য, খাঁটি নিয়ত-সহকারে কুরবানী করা এবং তা থেকে শিক্ষার্জন করা। নিজেদের আনন্দে অন্যদের শরীক করা ঈদুল আযহার শিক্ষা। কুরবানীকৃত পশুর গোশত তিন অংশে ভাগ করে এক অংশ নিজের জন্য সংরক্ষণ, দ্বিতীয় অংশ আত্মীয়-স্বজনকে প্রদান এবং তৃতীয় অংশ সমাজের অভাবগ্রস্থ ও দরিদ্র মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া ইসলামের বিধান। কুরবানীকৃত পশুর চামড়া অনাথ আশ্রম, এতিমখানা ও মাদরাসায় পড়–য়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের জন্য প্রদান করলে দ্বিবিধ সওয়াব হাসিল হয়।
এক দুঃখী মানুষের সাহায্য দ্বিতীয় দীনী শিক্ষার বিকাশ। প্রকৃতপক্ষে কুরবানীদাতা কেবল পশুর গলায় চুরি চালায় না, বরং সে তো চুরি চালায় সকল প্রবৃত্তির গলায় আল্লাহর প্রেমে পাগলপারা হয়ে। এটিই কুরবানীর মূল নিয়ামক ও প্রাণশক্তি।
এ অনুভূতি ব্যতিরেকে যে কুরবানী করা হয় তা হযরত ইবরাহীম ও ইসমাঈল -এর সুন্নাত নয়, এটা এক রসম তথা প্রথা মাত্র। এতে গোশতের ছড়াছড়ি হয় বটে কিন্তু সেই তাকওয়া হাসিল হয় না যা কুরবানীর প্রাণশক্তি। পশু কুরবানীর মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে মানুষের মধ্যে বিরাজমান পশু শক্তি, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুগুলোকেই কুরবানী দিতে হয়। আর হালাল অর্থে অর্জিত পশু কুরবানীর মাধ্যমে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয়। আমরা চাই ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সকল অনিশ্চয়তা-শঙ্কা দূর হোক। হিংসা-হানাহানি ও বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে কুরবানীর আনন্দে শামিল হয়ে সকলের মধ্যে সাম্য ও সহমর্মিতার মনোভাব জাগিয়ে তুলতে হবে।আরো দেখুন
৷
উপরোক্ত লেখাটি ডঃ আ ফ ম খাদিল কতৃক রচিত , মাসীক আত্ -তাওহীদ সম্পাদক
*********************************************
পৃথিবীতে মানব সভ্যতার ইতিহাসের মতো কুরবানীর ইতিহাসও প্রাচীন। কুরবানীর বিধান ছিলো না, এমন কোনো জাতির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘আমি প্রত্যেক জাতির জন্য কুরবানী নির্ধারণ করেছি।' [সুরা হাজ : ৩৪]। তবে যুগে যুগে কুরবানীর নিয়ম-পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন ধারায় ছিলো। হাসান বসরী (রহ.) এর মতে, সূরা আল কাওছারে বর্ণিত ‘ফাসল্লি লি রবিবকা অনহার' অর্থাৎ ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন এবং কুরবানী করুন' আয়াতটি নাযিল করে মহান আল্লাহ তাআলা ঈদুল আযহার সালাত আদায় ও কুরবানীর নির্দেশ দান করেন। [আহকামুল কুরআন, ৩য় খন্ড, পৃ. ৪৭৫]। আল্লাহর নির্দেশে আদিষ্ট হয়ে ২য় হিজরীতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদুল আযহার সালাত আদায় ও কুরবানী করেন। সেই হতে প্রতিবছর মুসলিম উম্মাহ যথারীতি কুরবানী করে আসছে। এ হিসেবে মুসলিম উম্মাহ এ বছর ১৪৩৩তম কুরবানী কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে কুরবানী কী, কেন কুরবানী করতে হবে, কীভাবে কুরবানী করতে হবে, কুরবানীর শিক্ষাই-বা কী? ইত্যাদি বিষয়ে সম্যক জ্ঞান থাকা আমাদের একান্ত আবশ্যক।
কুরবানীর পশু সংক্রান্ত জরুরি মাসায়েল
যেসব পশু দিয়ে কুরবানী দেয়া যাবে : গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা, উট ইত্যাদি পশু কুরবানী দেয়া যাবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এই যে, গরু, মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। উট কমপক্ষে পাঁচ বছরের হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মনে হয় তাহলে তা দিয়ে কুরবানী বৈধ। -হেদায়া, শামী, আলমগীরী
যে পশুই কুরবানী দেয়া হোক না কেন তা হতে হবে সুস্থ ও সবল। কুরবানীর পশু চয়নের ক্ষেত্রে মনে রাখবে, এই পশুটি আল্লাহর দরবারে উপহার দেয়া হচ্ছে। তাই উৎকৃষ্ট পশু উপহার দেয়া উচিত। দুনিয়াতে আমরা কোনো উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তির নিকট যদি কোন উপহার পাঠাই, তাহলে সবচে' ভাল এবং উৎকৃষ্ট জিনিসটি পাঠাই। তাহলে মহান আল্লাহর নিকট পাঠানো জিনিস কেন উৎকৃষ্ট হবে না?
পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কুরবানী দেয়া যাবে না : (১) যে পশুর দৃষ্টিশক্তি নেই। (২) যে পশুর শ্রবণশক্তি নেই। (৩) এই পরিমাণ লেংড়া যে, জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না। (৪) লেজের অধিকাংশ কাটা। (৫) কানের অধিকাংশ কাটা। (৬) অত্যন্ত দুর্বল, জীর্ণ-শীর্ণ প্রাণী। (৭) গোড়াসহ শিং উপড়ে গেছে। (৮) পশু এমন পাগল যে, ঘাস পানি ঠিকমত খায় না। মাঠেও ঠিকমত চরানো যায় না। (৯) জন্মগতভাবে কান নেই। (১০) দাঁত মোটেই নেই বা অধিকাংশ নেই। (১১) স্তনের প্রথমাংশ কাটা। (১২) রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে গেছে। (১৩) ছাগলের দুটি দুধের যে কোন একটি কাটা। (১৪) গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোন দুটি কাটা। (১৫) জন্মগতভাবে একটি কান নেই।
পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কুরবানী দেয়া যাবে : (তবে উত্তম হচ্ছে পরিপূর্ণ সুস্থ পশু দেয়া, ত্রুটিযুক্ত প্রাণী না দেয়া) (১) পশু পাগল, তবে ঘাস-পানি ঠিকমত খায়। (২) লেজ বা কানের কিছু অংশ কাটা, তবে অধিকাংশ আছে। (৩) জন্মগতভাবে শিং নেই। (৪) শিং আছে, তবে ভাংগা। (৫) কান আছে, তবে ছোট। (৬) পশুর একটি পা ভাংগা, তবে তিন পা দিয়ে সে চলতে পারে। (৭) পশুর গায়ে চর্মরোগ। (৮) কিছু দাঁত নেই, তবে অধিকাংশ আছে। স্বভাবগত এক অন্ডকোষ বিশিষ্ট পশু। (১০) পশু বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম। (১১) পুরুষাঙ্গ কেটে যাওয়ার কারণে সঙ্গমে অক্ষম।
কতজন মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে : ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু শুধু এক ব্যক্তি কুরবানী দিতে পারবে। গরু, মহিষ, উট সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি মিলে কুরবানী দিতে পারবে। অনেকে মনে করে থাকে, কুরবানীর পশুতে একাধিক শরীক থাকলে অংশ নির্ধারণ করতে হবে বেজোড় সংখ্যা হিসেবে।
শরীক হতে হবে তিনজন, পাঁচজন বা সাতজন- এই ধারণা ঠিক নয়। সঠিক বিষয় হচ্ছে এই যে, এক থেকে সাত পর্যন্ত যে কোন অংশে পশুটিকে ভাগ করা যাবে। তাই দু'জন, তিনজন, চারজন, পাঁচজন, ছয়জন ও সাত ব্যক্তি মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে।
একাধিক শরীক থাকলে করণীয় : একাধিক শরীক থাকলে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, অংশহিসেবে ভাগ যেন যথার্থ হয়। প্রাপ্য অংশের চেয়ে কেউ যেন কম বা বেশি না পায়। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কারো যেন নিয়তে গড়মিল না থাকে। কোন অংশীদারের যদি শুধু মাংস খাওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানী হবে না। এজন্য কুরবানী শুদ্ধ হওয়ার জন্য সবার নিয়ত শুদ্ধ হওয়া জরুরি।
ভাল পশু ক্রয়ের পর ত্রুটিযুক্ত হয়ে গেলে : কুরবানীর উদ্দেশ্যে ভাল পশু ক্রয়ের পর যদি তা এই পরিমাণ ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়, যা দ্বারা কুরবানী জায়েজ হবে না তাহলে দেখতে হবে ক্রেতা ধনী না দরিদ্র? ক্রেতা যদি দরিদ্র হয় তাহলে সেই ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়েই সে কুরবানী দিবে। আর যদি ক্রেতা ধনী হয়, তাহলে দ্বিতীয় আরেকটি পশু কিনে কুরবানী দিতে হবে। প্রথমটি দিয়ে কুরবানী শুদ্ধ হবে না। (ফতোয়ায়ে শামী, ৫ম খন্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা)
পশু জবাই করার জন্য যেসব শর্তঃ ইসলামী শরীয়তে পশু জবাই করার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। (১) জবাইকারী ব্যক্তি মুসলমান হতে হবে। (২) জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হবে। (৩) পশুর খাদ্যনালী, শ্বাসনালী ও গলায় অবস্থিত অন্যান্য রগ ভালভাবে কাটতে হবে। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, ২য় খন্ড, ৩৭৫ পৃষ্ঠা।)
জবাই করার নিয়মাবলী : (১) জবাই করার পূর্বে পশুকে ঘাস, পানি ইত্যাদি ভালভাবে খাওয়াতে হবে। কোরবানীর প্রাণীকে ক্ষুধার্থ বা পিপাসার্ত রাখা অন্যায়। (২) পশুকে কোরবানী করার স্থানে টেনে হিঁচেড়ে নেয়া অন্যায়। (৩) জবাই করার জন্য পশুকে শোয়াতে হবে সহজ সুন্দরভাবে। কঠোরভাবে নয়। (৪) কেবলার দিকে ফিরিয়ে শোয়াতে হবে, বাম পার্শ্বের উপর। (৫) পশুর চার পায়ের মধ্যে তিনটি বাঁধবে। (৬) আগে থেকেই ছুরি ধারা দিয়ে রাখবে। ভোঁতা ছুরি দিয়ে জবাই করবে না। (৭) ছুরি যদি ধরাতে হয় তাহলে পশুর সামনে ধারাবে না। আড়ালে ধারাবে। (৮) কোরবানীর পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধারানো অন্যায়। বরং আগে থেকেই ধার দিয়ে নিবে (ফতোয়ায়ে রহীমিয়া, ১ম খন্ড, ৯৮ পৃষ্ঠা) (৯) গলায় জবাই করতে হবে। (১০) এমনভাবে জবাই করা যাবে না যাতে গলা পুরাপুরি আলাদা হযে যায়। (১১) জবাই করার সময় ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার' বলতে হবে। (১২) যাতে দ্রুত জবাই হয়ে যায় এবং পশুর কষ্ট কম হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। (১৩) একটি পশুকে আরেকটি পশুর সামনে জবাই না করা ভাল। (১৪) পশুর প্রাণ বের হওয়ার পূর্বে চামড়া খসানোর কাজ শুরু না করা। (১৬) ঘাড়ের দিক থেকে জবাই করা যাবে না। (১৭) বিখ্যাত সাহাবী হযরত ইবনে আববাস রা. এর মত অনুযায়ী ঘাড়ের দিকে থেকে জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ নয়। (জাওয়াহিরুল ফিক্হ, ২য় খন্ড, ২৭৩ পৃষ্ঠা)
কোরবানীর পশুর গোস্ত বণ্টন ও চামড়া সম্পর্কিত মাসায়েল :
প্রতি বছর আমরা পশু কোরবানী করে থাকি। গোস্ত নিজেরা খাই এবং অন্যকে দেই। চামড়া বিক্রি করে গরীবদের মাঝে সে অর্থ বিলিয়ে দেই। এ বিষয়ে ইসলামের দিকনির্দেশনা পুরাপুরিভাবে আমরা অনেকেই জানি না। তাই গোস্ত বণ্টন সম্পর্কে শরীয়তের বিধান জেনে নেই।
(১) কোরবানীর পশুর গোস্ত তিন ভাগ করে এক ভাগ গরীব মানুষকে, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীকে দিবে। বাকি এক ভাগ নিজে খাবে। (২) আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী গোস্ত নিতে আসবে এই অপেক্ষা না করে নিজ দায়িত্বে তাদের ঘরে গোস্ত পৌঁছে দেয়া উচিত। (৩) যদি একাধিক শরীক থাকে তাহলে গোস্ত ভাগ করবে ওজন করে। অনুমান বা আন্দাজ করে নয়। কারণ অনুমান করে ভাগ করলে বেশকম হতে পারে, যা গুণাহের কারণ। (৪) যে কসাই গোস্ত তৈরি করে দিবে তাকে আলাদাভাবে কাজের জন্য মজুরি দিতে হবে। মজুরি হিসেবে কোরবানীর গোস্ত দেয়া জায়েজ নেই। তার প্রাপ্য মজুরি দেয়ার পর লিল্লাহ গোস্ত আলাদা দেবে। (৫) কারো ভাগে যদি পায়া, ক্ষুর, মাথা বা কোন হাড্ডি বেশি যায় তাহলে তার অংশ থেকে গোস্ত একটু কমিয়ে দিতে হবে। যেন গড়ে সমান হয়। (৬) কোরবানী যেহেতু আল্লাহর জন্য করা হয়, তাই এতে নিজে ভোগ করার চেয়ে গরীব মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা বেশি করা উচিত। (৭) কোরবানীর গোস্ত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে, যতদিন ইচ্ছা রেখে খাওয়া যায়, এতে কোন বাধা নেই। (৮) পশুর রশি ও গলার মালা ইত্যাদি দান করে দিতে হবে।
চামড়া সংক্রান্ত আলোচনা : (১) কোরবানীর পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবে। (২) চামড়া যদি বিক্রি করা হয় তাহলে তার মূল্য অবশ্যই গরীব মানুষের মধ্যে দান করে দিতে হবে। নিজে ব্যবহার করা যাবে না। (৩) চেষ্টা করা উচিত চামড়ার টাকা পরিবর্তন না করে হুবহু দান করে দিতে।
কোরবানীর সাথে আকিকা দেয়া যায় কিনা : কোরবানীর সাথে আকিকা দেয়া যায়। এতে কোন সমস্যা নেই। কোরবানীর গোস্তের মতো আকিকার গোস্তও নিজে খেতে পারবে, অপরকে খাওয়াতে পারবে, দিতেও পারবে। ছেলের আকিকা হলে দুইটি ছাগল অথবা গরুতে দুই শরীক এবং মেয়ের আকিকা হলে একটি ছাগল অথবা গরুতে এক শরীক দিতে হবে। যেমন একটি হাদীসে এসেছে, বিখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনে শোয়াইব (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যার সন্তান হয় সে যদি চায় আকিকা দিতে, তাহলে ছেলে সন্তান হলে দুটি ছাগল এবং মেয়ে সন্তান হলে একটি ছাগল আকিকা দিবে। আবু দাউদ, নাসায়ী। এখানে আরেকটি বিষয় জানা জরুরি। তা এই যে, যদি কারো ছেলে সন্তান হয় এবং তার দুটি ছাগল আকিকা দেয়ার সামর্থ না থাকে তাহলে একটি ছাগল দিলেই হবে। অনুরূপভাবে গরু-মহিষে দুই শরীক দিতে সক্ষম না হলে এক শরীক দিলেও চলবে।
প্রিয় পাঠক! এখানে একটি ভুল ধারণার অবসান হওয়া উচিত। কেউ মনে করতে পারে, এখানে মেয়ে সন্তান হলে মাত্র একটি ছাগল দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আর ছেলে হলে দুটি। এতে করে ছেলেদের মর্যাদা বেশি দেয়া হয়েছে। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কোনভাবেই ছেলের মর্যাদা বেশি দেয়া হয়নি। কারণ, আকিকা দেয়া হয় সন্তানের উপর থেকে বিপদ আপদ যেন দূর হয়ে যায় এই উদ্দেশ্যে। সাধারণত ছেলে সন্তানের উপর বিপদ আপদ বেশি আসে এবং মেয়ে সন্তানের উপর কম আসে। তাই আল্লাহর রাসূল (সা.) ছেলের জন্য দুই এবং মেয়ের জন্য একটি ছাগল আকিকা দিতে বলেছেন।
পশু কোরবানীর সাথে পশুত্বের কোরবানী করতে হবে
আমরা মানুষ। আমাদের মধ্যে যেমন ফেরেশতার স্বভাব আছে তেমনি পশুর স্বভাবও আছে। মানুষের মধ্যে যত ভালো গুণ রয়েছে, সেগুলো হলো-ফেরেশতার স্বভাব। আর হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, অন্যায়ভাবে কারো উপর আক্রমণ করা, মানুষের ধন-সম্পদ অবৈধভাবে দখল করা, কারো অধিকার কেড়ে নেয়া ইত্যাদি হলো পশুর স্বভাব। পবিত্র কোরবানী ঈদে আমরা পশু কোরবানী করে থাকি। কুরবানীর মূল ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এই উপলক্ষে অর্জিত তাকওয়া বা আল্লাহভীতি দ্বারা নিজের পশু স্বভাবকে কোরবানী করি না। তাই আমাদের সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার দূর হয় না। যদি পশু কোরবানীর সাথে সাথে আমরা নিজেদের পশুস্বভাবকেও কোরবানী করতে পারি, তবেই আমাদের সমাজ হবে সুখময়, শান্তিময় ও আনন্দময়। আল্লাহর রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমলে মানুষ যেরূপ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে জীবন যাপন করেছে, অনুরূপ পবিত্র স্বভাবের অধিকারী হয়ে আজও সেরূপ শান্তি ও নিরাপত্তা আমরা লাভ করতে পারি। এ জন্যে আমাদেরকে সাহাবায়ে কেরামের গুণাবলী অর্জন করতে হবে। তাদের মাঝে ছিল সব উত্তম গুণাবলী। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর মহা ত্যাগের মহা স্মৃতি পবিত্র কুরবানী অনুষ্ঠান থেকে লব্ধ শিক্ষা দ্বারা আমরা যাতে নিজেদের চরিত্র গঠন করতে পারি, আল্লাহ আমাদের সেই তাওফিক দিন। এটাই একমাত্র কামনা।
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৩
হাজী সাহেবানদের উদ্দেশ্যে মক্কা-মদীনায় অবস্হান কালীন সময়ে কিছু পরামর্শ মূলক 21টি টিপস্
হাজী সাহেবানদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ মূলক 21 টি টিপস্ ,
হাজী সাহেবান গন মক্কা মদীনায় অবস্হান কালীন সময়ে
করনীয় কিছু পরামর্শ
পরামর্শ ==
১৷ হারাম শরীফে যথা সম্ভব আজানের ১ঘন্টা/আধাঘন্টা আগে যাওয়া, নতুবা ভিতরে জায়গা পাবেন্ না ,দেরীতে আসলে জায়নামাজ আবশ্যই সাথে আনবেন ৷
২৷ পেটে বা প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পানি ও খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল করুন ,
৩ ৷ জুতা সেন্ডেল পলিথিন করে সাথেই রাখুন ৷
৪৷ মানুষের চলাচলের রাস্তা এডিয়ে বসুন ৷
৫৷ সাথিদের ফোন নং ,মোয়ালি্লমের ফোন নং সাথেই রাখুন ৷
৬৷হারাম শরীফের প্রবেশ পথ তথা গেইট নং খেয়াল রাখুন ৷যাতে আসা যাওয়ায় পথ ভূলে না যান ৷
৭ ৷ সাথী/ তাবু/হোটেল হারিয়ে ফেললে অযথা ঘূরা ঘূরি না করে অধৈয্য না হয়ে নিজের সাথে থাকা কার্ড নিরাপত্তা কর্মিদের দেখান , বা সাথিদের কে ফোন করুন ৷
৮৷সাথীদের কয়েক জনের মোবাইল নাম্বার রাখুন
৯৷ যে কোন সময় ,যে,কোন, সফরের দিন তারিখ ও সময় গাডির নং ভাল করে জেনে নিন ৷
১০৷ কংকর নিক্ষেপের সময় তাডা হুডা না করে , ধীরস্হীর ভাবে সূযোগ বুঝেই অগ্রসর হবেন৷
11/ মক্কায় আপনজন থাকলে তাদের ফোন নং সাথে রাখুন
12/ সাথে ছোট একটা পানির বোতল রাখুন যাতে পিপাসা লাগলে দূরে যেতে না হয় ৷
13/ আর আপনি পুরান হলে নতুনদের সাহায্যের মনো ভাব নিয়ে চলুন
14/ হজের মাসালা গুলো জায়গা মত করনীয় কাজ গুলো না জানলে জেনে নিন , বা অপর কে বারংবার জিজ্ঞাসা করুন ,
15/ অপরিচিত কোন লোকের দেয়া কোন কিছু খাওয়ার থেকে বিরত থাকুন , তবে সংঘ বদ্ধ ভাবে কেউ /কুম্পানি কোন খাবার ,জুস , পানি , দুধ , লেবন ইত্যাদি বিতরন করলে তা খেতে পারেন , কারন এ গুলো সরকারী ব্যবস্হাপনায় , বা সাধারন মানুষ হাজি সাহেবানদের দিয়ে থাকেন ৷
16/ নিজের বাসা বা হোটেল থেকে অজু ইস্তিন্ঞা সেরেই মসজিদে বা হারাম শরীফে যাওয়ার চেষ্টা করবেন ৷
17/ মক্কার ঐতিহাসীক স্হান গুলোর যেমন মাকামে ইব্রাহীম , হাজরে আসওয়দ , হাতিম , সাফ-মারওয়াহ ,আরাফাত মিনা,সহ ঐতিহসীক স্হান গুলোর ইতিহাস জেনে নিন ৷ তাহলে হজ্বের গুরুত্ব মাহাত্য দিলে স্হান পাবে ৷
/18 -- আর মুয়াল্লীম হযরাত সহ হজ্বের দায়িত্বে নিয়োজীত সকল কে ব্যবসায়ীক মানসীকতা পরিহার করে আল্লাহর মেহমানদের মেহমানদারী যাবতীয় সূযোগ সূবিধার দিকে লক্ষ রাখতে হবে ৷ যাতে কেউ কোন কষ্ট না পায় ৷ আপনি আগত মেহমানদের খাদেম হিসাবে খেদমত করুন আল্লাহ পাক আপনাকে ব্যবসায় ও সফলতা দিবেন , সাথে আপনি পাচ্ছে আখেরাতে বিশাল এক নেকীর পাহাড ৷
19/ মক্কা-মদীনার বিশালাকার অট্যালিকা দেখে নিজেকে ছোট ভাববেননা এসবই আল্লাহ দান ।এই জন্য শুকরিয়া আদায় করুন।
20/ হজ্ব উপলক্ষ্যে সারা পৃথিবী থেকে আগত বিভিন্ন মানুষের কথা-চলাফেরা-কালচার দেখে দোষ তালাশ করবেন না। কারণ এলাকা ভেদে মানুষের কালচারের সাথে আপনার মিল নাও হতে পারে,যা তাদের জন্য হয়তো ভাল।
21/ মক্কা-মদীনায় বিভিন্ন মানুষের চলাফেরা ,খাদ্যাঅভ্যাস নীচু মান ,কি উঁচু মান এগুলো নিয়ে সমালোচনা না করে নিজের আমলের চিন্তা নিজে করুন।
লেখক কে ভূলবেননা আপনাদের দোয়ার মধ্যে ,
দোয়াই কামনা
আল্লাহ সকলকে হজ্বে মাবরুর নছীব করুন আমিন
আলেমগণ হজ্বের সফরকে পরকালের সফরের সাথে তুলনা করেছেন।
=============================================
1 পরকালের যাত্রীকে আত্মীয়-স্বজন, ঘর-বাড়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হয়।
হজ্ব পালনকারী যখন হজ্বের সংকল্প করে বের হয় অনুরূপ পরকালের যাত্রীর ন্যায় এসব কিছু ত্যাগ করে যেতে হয়।
2 পরকালের যাত্রীকে যেমন সাদা কাফনের কাপড় পরিয়ে খাটিয়ায় উপর ছাওয়ার করানো হয়, তেমনি হজ্ব যাত্রী মৃত ব্যক্তির কাফনের ন্যায় ,ইহ্রামের দু’টুকরা সাদা সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করে যানবাহনে আরোহণ করে।
3 কিয়ামত দিবসে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেয়ার মত হজ্ব পালনকারীর কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে “লাব্বায়কা আলস্নাহুম্মা লাব্বায়ক লা শারীকা লাকা লাব্বায়ক; ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মূল্ক। লা শারীকা লাক্।
4 মৃত্যুর পর যেমন ছোয়াল জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে তেমনি হজ্বের সফরে হাজীদেরকে বিমান বন্দরসহ সংশিস্নষ্ট স্থানে সরকারি-বেসরকারি লোকদের নিকট বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারণাসহ পরীক্ষা নিরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়।
5 বায়তুলাহ শরীফের চতুরদিকে প্রদক্ষিন করা আরশে আজিমের চুতুর্দিকে প্রদক্ষিন করার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
6 সাফা ও মারওয়াহ সাঈ করা হাশরের ময়দানে দিশেহারা হয়ে এদিক-ওদিক ছুটা-ছুটি করার ন্যায়।
7 সূর্যের প্রচণ্ড খরতাপে আরাফার ময়দানে লাখ লাখ মানুষের অবস্থান যেন হাশরের মাঠের সাদৃশ্য। হজ্বের প্রতিটি আমলেই হাজীগণের সামনে কিয়ামতের চিত্র ভেসে উঠ।
আল্লাহ সকল হাজী সাহেবানদের হজ কবুল করুন আমিন
আলেমগণ হজ্বের সফরকে পরকালের সফরের সাথে তুলনা করেছেন। আগামী কয়েক দিন পরই আল্লাহর মেহমানগন আসতে শুরু করবেন।যাদেরকে আল্লাহ ডাক দিবেন তারাই এ ডাকে সাড়াদিয়ে আরাফাতে সমবেত হবেন ।এই জন্য আগাম প্রস্তুতী গ্রহন করতে হবে ।
1 পরকালের যাত্রীকে আত্মীয়-স্বজন, ঘর-বাড়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হয়।
হজ্ব পালনকারী যখন হজ্বের সংকল্প করে বের হয় অনুরূপ পরকালের যাত্রীর ন্যায় এসব কিছু ত্যাগ করে যেতে হয়।
2 পরকালের যাত্রীকে যেমন সাদা কাফনের কাপড় পরিয়ে খাটিয়ায় উপর ছাওয়ার করানো হয়, তেমনি হজ্ব যাত্রী মৃত ব্যক্তির কাফনের ন্যায় ,ইহ্রামের দু’টুকরা সাদা সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করে যানবাহনে আরোহণ করে।
3 কিয়ামত দিবসে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেয়ার মত হজ্ব পালনকারীর কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে “লাব্বায়কা আলস্নাহুম্মা লাব্বায়ক লা শারীকা লাকা লাব্বায়ক; ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মূল্ক। লা শারীকা লাক্।
4 মৃত্যুর পর যেমন ছোয়াল জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে তেমনি হজ্বের সফরে হাজীদেরকে বিমান বন্দরসহ সংশিস্নষ্ট স্থানে সরকারি-বেসরকারি লোকদের নিকট বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারণাসহ পরীক্ষা নিরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়।
5 বায়তুলাহ শরীফের চতুরদিকে প্রদক্ষিন করা আরশে আজিমের চুতুর্দিকে প্রদক্ষিন করার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
6 সাফা ও মারওয়াহ সাঈ করা হাশরের ময়দানে দিশেহারা হয়ে এদিক-ওদিক ছুটা-ছুটি করার ন্যায়।
7 সূর্যের প্রচণ্ড খরতাপে আরাফার ময়দানে লাখ লাখ মানুষের অবস্থান যেন হাশরের মাঠের সাদৃশ্য। হজ্বের প্রতিটি আমলেই হাজীগণের সামনে কিয়ামতের চিত্র ভেসে উঠ।
আল্লাহ সকল হাজী সাহেবানদের হজ কবুল করুন আমিন
লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
মসজিদে হারামের এক ওয়াক্ত নামাজের ছাওয়াব ৬০ বৎসরের পুরো জিন্দেগীর নামাজের ছাওয়াবের ছেয়েও আরও বেশী
মসজিদে হারামের এক ওয়াক্ত নামাজের ছাওয়াব ৬০ বৎসরের পুরো জিন্দেগীর নামাজের ছাওয়াবের ছেয়ে ও আরও বেশী ****************
হাজী সাহেবান গন , সৌদি প্রবাসী ভাই গন , মক্কা মদীনায় অবস্হান কালীন সময়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ হারাম শরীফে পড়ার চেষ্টা করবেন ,
কারন সেখানে ১ রাকাতে ১ লক্ষ রাকাত নামাজের ছওয়াব , তাই ১ ওয়াক্তে ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাজের , ৪ রাকাতে ৪ লক্ষ রাকাতের ছাওয়াব, যা এক জন মানুষের সারা জিন্দেগীর তথা ৬০ বৎসর হায়াতের নামাজের প্রায় ৩ চতুর্থাংশের সমান
যেমন-----
দৈনিক =========== ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ
মাসিক ======= ১৭*৩০ = ৫১০ রাকাত
বৎসর ========= ৫১০*১২ =৬১২০ রাকাত
জিন্দেগীতে =====
৬০ বৎসর বয়স হলে নাবালিগী বাদে ৪৫ বৎসর এর নামাজ = ৬১২০*৪৫ বৎসর = ২'৭৫'৪০০ রাকাত
আর মক্কার হারাম শরীফে শুধু মাত্র এক ওয়াক্ত নামাজের ৪ রাকাতে ছওয়াব চার লক্ষ রাকাত সমতুল্য
যা একজন মানুষের সারা জিন্দিগীর নামাজের চেয়েও বেশী ,
হাদিসে আসছে
আবার মদীনার মসজিদে নববীতে এক রাকাতে ১০০০ হাজার রাকাতের ছওয়াব পাওয়া যায় ,অন্য এক রেওয়াতে এক রাকাতে ৫০ হাজার রাকাত নামাজের ছাওয়াব পাওয়া যায় ।
মসজিদুল হারামের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে রসুল সাঃ এরশাদ করেন
" ইন্নাছ্ ছালাতা বে- মিয়াতে আলফ্ ছালাহ্ "
তাছাডা
মসজিদুল হারামে ১ ওয়াক্তের নামাজ কে ৫৫ বছর ৬ মাস ২০ দিনের নামাজের সমতুল্য হিসাবে তুলনা করা হয়েছে," ফতহুলবারী,
তাছাডা আযযরকসী শাফেয়ী ফি আ- লামিছ -ছাজেদ " এ বর্ণনা করেছেন যে মসজিদুল হারামে
একদিন একরাত তথা পাচ ওয়াক্ত নামাজের ছাওয়াব ২ শত বছর নয় মাস ১০ রাত" নামাজের সমতুল্য বলা হয়েছে,
মাছায়ালাটি পাবেন
"আত্-তুহফা ফী আহকামিল ওমরাহ্ ওয়াল- মাছজিদীল হারাম " ১০৯ পৃষ্ঠা। সৌদি আরব থেকে ছাপানো।
উল্লেখ্য মসজিদুল হারামের এ ছাওয়াব শুধু মসজিদুল হারামে সীমাবদ্ব নয় বরং হুদুদ হারামের যে কোন স্হানেই প্রযোজ্, তাছাডা এ ছাওয়াব ফরজ নফল এমনকি তাছবিহ তাহলিল দান ছকদা সব কিছুতেই ১ লাখ ছাওয়াব।
ছোবহানাল্লাহ .তাহলে একমাত্র হতভাগারাই হারাম শরীফের পাশে আবস্হান করা সত্বেও মসজিদে হারামে না গিয়ে নিজ বাসায় একা একি নামাজ আদায় করতে পারেন বা অযথা সময় নষ্ট করতে পারেন।
সোদি প্রবাসী ভাইয়েরা যার যার অবস্হানে থেকে কাজের ফাঁকে যত বার পারা যায় , গন গন মক্কা-মদীনায় গিয়ে হারামাইন শরিফাইনে জমাতে নামাজ পডে অগনিত নেকী অর্জনের এ সূবর্ন সূযোগ হাতছাডা করবেন না ৷ আর যারা দেশে বা অন্য দেশে আছেন হজ্বের সামর্থ থাকলে হজ্ব করে বা ওমরাহ ফালনের মাধ্যমে এ সূবর্ন সূযোগ নিয়ে নিজের আমল নামা ভারী করতে সচেষ্ট হবেন ৷
মৌলানা আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
দাওরায়ে হাদিস মাষ্টার্স
ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া
প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষক মাদ্রাসা হোছাইনিয়া আজিজুল উলুম রাজঘাটা,
লোহাগাড়া,চট্টগ্রাম।
লেখক গবেষক ব্লগার ও ইসলামি অনলাইন এক্টিভিস্ট ।
বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩
পত্র-পত্রিকায় বিছমিল্লাহ বা ৭৮৬ লেখা কত টুকু শরিয়ত সন্মত
পত্র-পত্রিকায় কুরআন মজীদের আয়াত, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, হাদীস শরীফ / ৭৮৬ / ইত্যাদি লেখার প্রচলন
হযরত মাওলানা মুফতী রশীদ আহমদ লুধিয়ানুবী রাহ.-এর খেদমতে নিম্নোক্ত ইসতিফতা পেশ করা হয়েছিল :
প্রশ্ন : পত্র-পত্রিকায় কুরআন মজীদের আয়...াত, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, হাদীস শরীফ ইত্যাদি লেখার প্রচলন আছে। অথচ ঐসব পত্রিকায় ছবি থাকে, সিনেমার বিজ্ঞাপন থাকে। এরপর পুরানো কাগজে বিক্রি হয়ে যায়। এর দ্বারা দোকানদাররা গ্রাহকদেরকে জিনিসপত্র মুড়িয়ে দেয়। তদ্রূপ পুরানো পত্রিকা এখানে সেখানে পড়ে থাকে। পায়ের নীচে পড়ে। এ অবস্থায় পত্রিকায় আয়াত-হাদীস লেখা জায়েয হবে কি?
তাছাড়া কিছুদিন যাবৎ সরকারী দফতরে সরকারী চিঠিপত্রে পুরা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লেখা হচ্ছে। এই কাগজগুলোরও উপরের অবস্থা হয়ে থাকে। তো এই সকল চিঠিপত্রে কি বিসমিল্লা লেখা
জায়েয হবে? পুরা বিসমিল্লাহর স্থলে যদি বিসমিহী সুবহানাহু
ওয়া তাআলা বা বিসমিহী তাআলা কিংবা ৭৮৬ লেখা হয়
তাহলে সুন্নতের ছওয়াব পাওয়া যাবে কি না?
হযরত মুফতী ছাহেব উপরের প্রশ্নের এই জবাব দিয়েছেন:
‘বর্তমানের পত্রপত্রিকা ও বিজ্ঞাপনে (যার অবস্থা প্রশ্নে বলা হয়েছে) কুরআন মজীদের আয়াত ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লেখা জায়েয় নয়। সরকারী দাফতরিক কাগজপত্রে লেখা জায়েয; বরং মুস্তাহসান (ভালো)। কেউ অমর্যাদা করলে সে গুনাহগার হবে। বিসমিল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ বা ৭৮৬ লেখা কুরআনে কারীম, আল্লাহর রাসূলের আমল ও উম্মতের মুতাওয়ারাছ আমলের খেলাফ। হোদায়বিয়ার সন্ধির সময় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিসমিল্লাহ লেখার আদেশ করেছিলেন। মুশরিকরা আপত্তি করে বলেছিল,
اكتب ما كنت تكتب باسمك اللهم
এ থেকে প্রমাণ হয়, ইসলামে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখাই নির্ধারিত। এর পরিবর্তে অন্য কোনো শব্দ লিখলে বিসমিল্লাহর ছওয়াব পাওয়া যাবে না এবং সুন্নত আদায় হবে না।
৫ রবিউল আওয়াল ১৪০১ হি.
(আহসানুল ফাতাওয়া খন্ড ৮, পৃ. ২৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে আমলের
তাওফীক দান করুন। আমীন।
তাছাডা বিছমিল্লাহ এর পরিবর্তে ৭৮৬ লেখা একে বারেই না জায়েয কেননা মাওঃ তারেক মানাওয়ার সহ অন্যান্য ওয়াজের ভিডিওতে শুনেছি ে যে হরে কৃষ্ণ কে অক্ষরে পরিনত করলে ও ৭৮৬ হয় , হযরত মাওলানা মুফতী রশীদ আহমদ লুধিয়ানুবী রাহ.-এর খেদমতে নিম্নোক্ত ইসতিফতা পেশ করা হয়েছিল :
প্রশ্ন : পত্র-পত্রিকায় কুরআন মজীদের আয়...াত, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, হাদীস শরীফ ইত্যাদি লেখার প্রচলন আছে। অথচ ঐসব পত্রিকায় ছবি থাকে, সিনেমার বিজ্ঞাপন থাকে। এরপর পুরানো কাগজে বিক্রি হয়ে যায়। এর দ্বারা দোকানদাররা গ্রাহকদেরকে জিনিসপত্র মুড়িয়ে দেয়। তদ্রূপ পুরানো পত্রিকা এখানে সেখানে পড়ে থাকে। পায়ের নীচে পড়ে। এ অবস্থায় পত্রিকায় আয়াত-হাদীস লেখা জায়েয হবে কি?
তাছাড়া কিছুদিন যাবৎ সরকারী দফতরে সরকারী চিঠিপত্রে পুরা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লেখা হচ্ছে। এই কাগজগুলোরও উপরের অবস্থা হয়ে থাকে। তো এই সকল চিঠিপত্রে কি বিসমিল্লা লেখা
জায়েয হবে? পুরা বিসমিল্লাহর স্থলে যদি বিসমিহী সুবহানাহু
ওয়া তাআলা বা বিসমিহী তাআলা কিংবা ৭৮৬ লেখা হয়
তাহলে সুন্নতের ছওয়াব পাওয়া যাবে কি না?
হযরত মুফতী ছাহেব উপরের প্রশ্নের এই জবাব দিয়েছেন:
‘বর্তমানের পত্রপত্রিকা ও বিজ্ঞাপনে (যার অবস্থা প্রশ্নে বলা হয়েছে) কুরআন মজীদের আয়াত ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লেখা জায়েয় নয়। সরকারী দাফতরিক কাগজপত্রে লেখা জায়েয; বরং মুস্তাহসান (ভালো)। কেউ অমর্যাদা করলে সে গুনাহগার হবে। বিসমিল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ বা ৭৮৬ লেখা কুরআনে কারীম, আল্লাহর রাসূলের আমল ও উম্মতের মুতাওয়ারাছ আমলের খেলাফ। হোদায়বিয়ার সন্ধির সময় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিসমিল্লাহ লেখার আদেশ করেছিলেন। মুশরিকরা আপত্তি করে বলেছিল,
اكتب ما كنت تكتب باسمك اللهم
এ থেকে প্রমাণ হয়, ইসলামে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখাই নির্ধারিত। এর পরিবর্তে অন্য কোনো শব্দ লিখলে বিসমিল্লাহর ছওয়াব পাওয়া যাবে না এবং সুন্নত আদায় হবে না।
৫ রবিউল আওয়াল ১৪০১ হি.
(আহসানুল ফাতাওয়া খন্ড ৮, পৃ. ২৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে আমলের
তাওফীক দান করুন। আমীন।
তাহলে এ ৭৮৬ কে বিছমিল্লাহর স্হানে লেখার প্রবনতা ইহুদী/খৃষ্টান/ মুশরিক/ বা হিন্দুদের চক্রান্ত ছাডা কিছুই না
সুতরং এ থেকে শতর্ক থাকা জরুরী ৷ তবে হরফে আবজাদের হিসাব অনুযায়ী যদি হতে হয় তহলে ৭৮৭ হওয়া চাই ৭৮৬ নয় ৷
কাজেই খানা-খাওয়া , তেলাওয়াত সহ দৈনন্দিন কাজে যেখানে বিছমিল্লাহ পডতে বা লেখতে হয়, বিছমিল্লাহই লেখতে-পডতে হবে ৷
র এর স্হলে ৭৮৬/৭৮৭ লেখা-পডা কোনটাই জায়েয নেই , বরং অনেকের মতে শীরক ৷
গত জীবনে যারা এমনটি করেছি তা থেকে তওবাহ করে সঠিক তরিকার উপর আসার তাওফীক দান করুন আমিন
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)