প্রকৃত আহলে হাদীস কারা ?
যুগযুগ ধরে হাদীস, উসূলে হাদীস, ফিক্বাহ, উসূলে ফিক্বাহ এবং হাদীসের ব্যাখ্যা ও হাদীসের বর্ণনাকারীদের
ইতিহাসের কিতাব সমূহের ভাষ্য মতে, যারা হাদীসের
সনদ ও মতন (বর্ণনাকরী ও মূল বিষয়) নিয়ে নিবেদিত এবং হাদীস শরীফের সংরক্ষন, হিফাযত, সঠিক বুঝ এর অনুসরন-অনুকরন নিজের মূল্যবান জীবন উৎসর্গ করেছেন
তাদেরকেই আহলে হাদীস বা আছহাবুল হাদীস বলা হয়। চাই সে হানাফী হোক বা শাফেয়ী, মালেকী অথবা হাম্বলী।
শাইখুল ইসলাম
ইবনে তাইমিয়্যা যাকে গাইরে মুক্বাল্লিদরাও অনুসরন করে থাকে, তিনি বলেন,
“কেবল মাত্র হাদীস
শ্রবণ, লিখন অথবা বর্ণনায়
সীমাবদ্ধ ব্যক্তিদেরকেই “আহলে হাদীস” বলা হয় না বরং আমাদের নিকট “আহলে হাদীস” বলতে ঐ সমস্ত ব্যক্তিদেরকে বুঝায় যারা হাদীস সংরক্ষন, পর্যবেক্ষন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অর্থ অনুধাবন করার যোগ্যতা সম্পন্ন এবং
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অর্থের অনুসারী হবে।”
(নাক্বদুল মানতিক, পৃ:১৮, কায়রো থেকে প্রকাশ ১৯৫১ইং
বর্তমানে যারা
আহলে হাদীসের দাবিদার...
গাইরে মুক্বাল্লিদরা
“আহলে হাদীস” বলতে তক্বলীদ অমান্যকারী একটি দল ও একটি নির্দিষ্ট
মতবাদ। অনুরূপভাবে যেথায়ই আহলে হাদীস বা আহলুল হাদীস শব্দ দেখতে পাওয়া যায় এর দ্বারা
তারা নিজেদেরকেই মনে করা চাই সে জাহেল বা মূর্খ হোক, নামাযী হোক বা বেনামাযী হোক হাদীস সম্বন্ধে তার কোন জ্ঞান থাক বা না থাক, কেবল আহলে হাদীস দলে ভর্তি হলেই আহলে হাদীস
উপাধী পেয়ে যাবে।
(আখবারুল ইত্তেছাল, পৃ:৫, কলাম-১, সংখ্যা-
২, ফে: ১৯৬২ আহলে
হাদীসের তদানিন্তন জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা ইসমাইল কর্তৃক প্রকাশিত)
তাই এ দলের সবার
উপাধি “আহলে হাদীস” যদিও তাদের অনেকেরই পেটে বোমা বিস্ফোরণ ঘটালেও
একটি হাদীস নির্গত হবে না। উপরন্তু তাদের নামধরী আলেমেদের অনেকেই ফিক্বহে হাদীস সম্বন্ধে
কিঞ্চিত জ্ঞানও রাখে না,
বুঝার চেষ্টাও
করে না। এর প্রমান হিসেবে তাদেরই নেতা নবাব ছিদ্দিক হাসান খানের (যিনি ১২৮৫ হিজরীতে
মৌলভী আব্দুল হক্ব বেনারসী থেকে লিখিতভাবে মুহাম্মাদী উপাধি লাভ করেন -- মাযহাবে আহলুস
সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ,
পৃ:৩৬)
উক্তি পেশ করছি :
“আপনি তাদেরকে
কেবল হাদীসের শব্দ নকল করতে দেখবেন, হাদীস বুঝার প্রতি তারা কোন ভ্রুক্ষেপই করে না। এতটুকু তারা
নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে করে। অথচ এ ভ্রান্ত ধারনা মূল লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে, কেননা হাদীসের কেবল শব্দের গন্ডীতে সীমাবদ্ধ
না থেকে হাদীস বুঝা,
এর অর্থ
ও মর্ম নিয়ে গবেষনা করাই হল মূল উদ্দেশ্য।
(আল-হিত্তাহ ফী
যিকরিচ্ছিহাহ ছিত্তাহ,
পৃ : ৫৩)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন