Translate

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

হজ মৌসুমে মক্কা মদীনায় হাজী সাহেবানদের করনীয় , বর্জনীয় কিছু পরামর্শ

 হজ্ব পরকালের সফরের এক বিশেষ নিদর্শনঃ

 আলেমগণ হজ্বের সফরকে পরকালের সফরের সাথে তুলনা করেছেন। পরকালের যাত্রীকে আত্মীয়-স্বজন, ঘর-বাড়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হয়। হজ্ব পালনকারী যখন হজ্বের সংকল্প করে বের হয় অনুরূপ পরকালের যাত্রীর ন্যায় এসব কিছু ত্যাগ করে যেতে হয়। পরকালের যাত্রীকে যেমন সাদা কাফনের কাপড় পরিয়ে খাটিয়ায়  উপর ছাওয়ার করানো হয়, তেমনি হজ্ব যাত্রী মৃত ব্যক্তির কাফনের ন্যায় ,ইহ্‌রামের দু’টুকরা সাদা সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করে যানবাহনে আরোহণ করে।
 কিয়ামত দিবসে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেয়ার মত হজ্ব পালনকারীর কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে “লাব্বায়কা আলস্নাহুম্মা লাব্বায়ক লা শারীকা লাকা লাব্বায়ক; ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মূল্‌ক। লা শারীকা লাক্‌।

মৃত্যুর পর যেমন ছোয়াল জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে তেমনি হজ্বের সফরে হাজীদেরকে বিমান বন্দরসহ সংশিস্নষ্ট স্থানে সরকারি-বেসরকারি লোকদের নিকট বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারণাসহ পরীক্ষা নিরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। মক্কা শরীফে প্রবেশ করা যেন ঐ জাহানে প্রবেশ করা যেখানে শুধুই আল্লাহর রহমত।
 বায়তুলাহ শরীফের চতুরদিকে প্রদক্ষিন  করা আরশে আজিমের চুতুর্দিকে প্রদক্ষিন করার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সাফা ও মারওয়াহ সাঈ করা হাশরের ময়দানে দিশেহারা হয়ে এদিক-ওদিক ছুটা-ছুটি করার ন্যায়। সূর্যের প্রচণ্ড খরতাপে আরাফার ময়দানে লাখ লাখ মানুষের অবস্থান যেন হাশরের মাঠের সাদৃশ্য। হজ্বের প্রতিটি আমলেই হাজীগণের সামনে কিয়ামতের চিত্র ভেসে উঠে।


 আল্লাহর ইশ্‌ক ও মহব্বত প্রকাশ করা , প্রকৃত প্রেম ও ভালবাসায় রঞ্জিত করার এক অপূর্ব দৃশ্যঃ হজ্ব আল্লাহ পাকের ইশ্‌ক ও মহব্বত প্রকাশ করার এক অপূর্ব দৃশ্য। প্রেম আকর্ষণে মাতোয়ারা প্রেমিকের ন্যায় হাজীর অন্তর্ôআত্মায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইশ্‌কের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। দারুন আগ্রহ-উদ্দীপনায় হাজী সাহেবগণ তাঁর মহান দরবারে ভিড় জমায়। আল্লাহ্‌ পাকও চান তাঁর ইশকে প্রেমিকগণ পাগল বেশে এভাবে তাঁর নিকট ছুটে আসুক।


 হাজীগণ আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে তাঁর ইশকে মাতোয়ারা হয়ে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরিধান করে পাগল ও ফকিরের বেশে এলোমেলো চুল-দাড়ি নিয়ে মাঠ-ঘাট, পাহাড়-পর্বত, নদী, সাগর-মহাসাগর, বন-জঙ্গল, মরম্ন প্রান্তôর অতিক্রম করে চিৎকার দিয়ে “লাব্বায়কা আলস্নাহুম্মা লাব্বায়ক ------- উচ্চারিত করে ছুটে চলে বায়তুলার উদ্দেশ্যে। পবিত্র মক্কা এবং মদিনায় পৌঁছে একজন হাজী মনে করে জান্নাতে পৌঁছে গেছি ,

আর আবেগ সমুদ্র এতটাই ত্বরঙ্গায়িত হয় যা বর্ণনা করা এবং অনুধাবন করা কঠিন। ইহ্‌রাম বাঁধা প্রকৃত প্রেমিক হওয়ার এক জ্বলন্তô নিদর্শন। হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়া, মুল্‌তাজামে জড়িয়ে ধরা, কা’বার চৌকাঠে মাথা ঠুকে কান্না-কাটি করা, বায়তুলার চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করা ইশ্‌কে ইলাহীর অনুপম দুশ্য। তারপর সাফা-মারওয়া দৌড়া-দৌড়ি, মিনায় গমন, আরাফায় অবস্থান, খোলা আকাশের নিচে ধূলি-ধূসরিত কঙ্করময় মুযদালিফায় রাত্রি যাপন প্রতিটি আমলেই আল্লাহর প্রেমের প্রতিফলন।

 জামরাতে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ, পশু কোরবানী ও মাথা মোন্ডানোর মাধ্যমে অনুরাগের শেষ মঞ্জিল অতিক্রম করে নিষ্পাপ শিশুর মত হাজী সাহেবগণ নিজ মোকামে ফিরে আসলেও তাঁদের অন্তôরে জ্বলতে থাকে পুনঃমিলনের অর্নিবাণ শিখা।


 হজ্বের সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বঃ

 রাজনৈতিক, আন্তôর্জাতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে হজ্বের গুরত্ব অপরিসীম। বর্তমান সমস্যা সংকুল বিশ্বে ইসলামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইসলামী চিন্তাবিদগণ হজ্ব মৌসুমে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে। হজ্ব মুসলিম উম্মার ধর্মীয় চেতনায় উদীপ্ত হওয়ার এবং আপোষ একতা ও সম্পর্ক স্থাপনের সিঁড়ি।
 হজ্বের সমাবেশে ইসলামী জনতা, দেশ, জাতি, ভাষা, বর্ণ, গোত্র ইত্যাদি বৈষম্য অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের মহান সুযোগ পায়।
 মহান আল্লাহপাক যেন আমাদের সকলকে হজ্বের তাৎপর্য ও গুরত্ব অনুধাবন করে সঠিক ভাবে হজ্ব পালন করার তওফিক দান করেন।



মক্কা মদীনায় হাজী সাহেবানদের করনীয় ,বর্জনীয় **********
 *******************************
সব সময় জিকর , কোরান তেলাওয়াত , তাওয়াফ বেশী করা দুরুদ শরীফ বেশী পডা , বাজে আলাপ না করা, এখানে এসে সংসারের চিন্তা না করে আখেরাতের সফলতার কথা মাথায় রাখা , গিবত শেকায়েত থেকে বিরত থাকা , আর নিজের জন্য ,সংসারের সকলের জন্য , সকল বন্ধুবান্ধব ও সকল মুসলমানের জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করা , বারংবার দোয়া করা , তওবা করা , বেশী বেশী নফল
 নামাজ পডা ইত্যদি, আর৫ওয়াক্ত নামাজ বাজামায়াত হারাম শরীফে পড়া কারন সেখানে ১ রাকাতে ১ লক্ষ রাকাত নামাজের ছওয়াব , তাই ১ ওয়াক্তে ৪ রাকাতে ৪ লক্ষ রাকাতের ছাওয়াব, যা এক জন মানুষের সারা জিন্দেগীর তথা ৬০ বৎসর হায়াতের নামাজের প্রায় ৩ চথতুর্থাংয়ের সমান
 যেমন-----
দৈনিক =========== ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ
 মাসিক ======= ১৭*৩০ = ৫১০ রাকাত
 বৎসর ========= ৫১০*১২ =৬১২০ রাকাত
 জিন্দেগীতে =====
৬০ বৎসর বয়স হলে নাবালিগী বাদে ৪৫ বৎসর এর নামাজ = ৬১২০*৪৫ বৎসর = ২৭৫৪০০ রাকাত
 আর মক্কার হারাম শরীফে শুধু মাত্র এক ওয়াক্ত নামাজের ৪ রাকাতে ছওয়াব চার লক্ষ রাকাত সমতুল্য
 যা একজন মানুষের সারা জিন্দিগীর নামাজের চেয়েও বেশী ,


আবার মদীনার মসজিদে নববীতে এক রাকাতে ১০০০ হাজার রাকাতের ছওয়াব পাওয়া যায় ,
ছোবহানাল্লাহ .তাহলে একমাত্র হতভাগারাই হারাম শরীফের পাশে আবস্হান করা সত্বেও মসজিদে হারামে না গিয়ে নিজ বাসায় একা একি নামাজ আদায় করেন ৷

 পরামর্শ ==
১৷ হারাম শরীফে যথা সম্ভব আজানের ১ঘন্টা/আধাঘন্টা আগে যাওয়া, নতুবা বিতরে জায়গা পাবেন্না,দেরীতে আসলে জায়নামাজ আবশ্যই সাথে আনবেন ৷
 ২৷ পেটে বা প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পানি ও খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল করুন ,
৩ ৷ জুতা সেন্ডেল পলিথিন করে সাথেই রাখুন ৷
 ৪৷ মানুষের চলাচল রাস্তা এডিয়ে বসুন ৷
 ৫৷ সাথিদের ফোন নং ,মোয়ালি্লমের ফোন সাথেই রাখুন ৷
 ৬৷হারাম শরীফের প্রবেশ পথ তথা গেইট নং খেয়াল রাখুন ৷যাতে আসা যাওয়ায় পথ ভূলে না যান ৷
 ৭ ৷ সাথী/ তাবু/হোটেল হারিয়ে ফেললে অযথা ঘূরা ঘূরি না করে অধৈয্য না হয়ে নিজের সাথে থাকা কার্ড নিরাপত্তা কর্মিদের দেখান , বা প্রবাসী কোন বাংলাদেশী বা অন্য কাউকে দেখান ৷
৮৷সাথীদের কয়েক জনের মোবাইল  নাম্বার রাখুন
 ৯৷ যে কোন সময় সফরের দিন তারিখ ও সময় ভাল করে জেনে নিন ৷
 ১০৷ কংকর নিক্ষেপের সময় তাডা হুডা না করে , ধীরস্হীর ভাবে সূযোগ বুঝেই অগ্রসর হউন ৷
11/  মক্কায় আপনজন থাকলে তাদের ফোন নং সাথে রাখুন
12/ সাথে ছোট একটা পানির বোতল রাখুন যাতে পিপাসা লাগলে দূরে যেতে না হয় ৷
13/  আর আপনি পুরান হলে নতুনদের সাহায্যের মনো ভাব নিয়ে চলুন
14/ হজের মাসালা গুলো যায়গা মত করনীয় কাজ গুলো  না জানলে  জেনে নিন , বা অপর কে বারংবার জিজ্ঞাসা করুন ,

 15/ অপরিচিত কোন লোকের দেয়া কোন কিছু খাওয়ার থেকে বিরত থাকুন ,  তবে সংঘ বদ্ধ ভাবে কেউ /কুম্পানি  কোন খাবার ,জুস , পানি , দুধ , লেবন ইত্যাদি বিতরন করলে তা খেতে পারেন , কারন এ গুলো সরকারী ব্যবস্হাপনায় , বা সাধারন মানুষ হাজিসাহেবানদের দিয়ে থাকেন ৷
 16/ নিজের বাসা  বা হোটেল থেকে অজু ইস্তিন্ঞা সেরেই মসজিদে বা হারাম শরীফে যাওয়ার  চেষ্টা করবেন ৷
17/ মক্কার ঐতিহাসীক স্হান গুলোর  যেমন  মাকামে ইব্রাহীম , হাজরে আসওয়দ , হাতিম , সাফ-মারওয়াহ সহ ঐতিহসীক স্হন গুলোর ইতিহাস জেনে নিন ৷ তহলে হজ্বের গুরুত্ব মাহাত্য দিলে স্হান পাবে ৷
/18 -- আর মুয়াল্লীম হযরাত সহ হজ্বের  দায়িত্বে নিয়োজীত সকল কে ব্যবসায়ীক মানসীকতা পরিহার করে আল্লাহর মেহমানদের মেহমানদারী যাবতীয় সূযোগ সূবিধার দিকে লক্ষ রাখতে হবে ৷ যাতে কেউ কোন কষ্ট না পায় ৷ আপনি আগত মেহমানদের খাদেম হিসাবে খেদমত করুন আল্লাহ পাক আপনাকে ব্যবসায় ও সফলতা দিবেন ,  সাথে আপনি পাচ্ছে আখেরাতে
 বিশাল এক নেকীর পাহাড ৷
19/  সাথে জরুরী খরচের টাকা রাখুন , অতিরিক্ত থাকলে বিশ্বাস যোগ্য কারো  কাছে আমানত রাখুন ৷

 লেখক কে ভূলবেননা আপনাদের দোয়ার মধ্যে ,
দোয়াই কামনা
 আল্লাহ সকলকে হজ্বে মাবরুর নছীব করুন আমিন

লিখেছেন  এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ২8সেপ্টেম্বর   ২০১3

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন