হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির সেরা, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব এবং আল্লাহ্তায়ালার পেয়ারে হাবীব। তাঁকে সৃষ্টি না করলে ভূমণ্ডল-নভমণ্ডল, জ্বীন-ইনসান, আঠারো হাজার মাখলুক কিছুই সৃষ্টি করতেন না। সেই পেয়ারে হাবীবকে আল্লাহ্পাক মনস্ত করলেন তাঁর কুদরতের শান বেহেস্ত, দোযখ, সপ্ত আসমান ও তাঁর আরশে মোয়াল্লা স্বচক্ষে দেখাবেন। তাই ঊর্ধ্বগমনের (মেরাজের) মাধ্যমে তাঁর দীদার (সাক্ষাৎ) লাভের ব্যবস্থা করলেন।
এ ভ্রমণে নবীজী দোযখের ভয়াবহতা, বেহেস্তের সুখসহ অনেক কিছু অবলোকন করলেন। অতঃপর আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় পৌঁছলেন। এ সময় আল্লাহ্তায়ালা এবং তাঁর ফেরেস্তারা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে দরুদ পাঠ করলেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি আল্লাহ্ তা'য়ালার দরুদ শরীফ পাঠ করার অর্থ হল, ফেরেশতাদের সম্মুখে তাঁর প্রশংসা করা এবং ফেরেশতাদের দরুদ পাঠ করার অর্থ হল, হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উচ্চ মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হওয়ার জন্য দোয়া করা। (বোখারী শরীফ)
নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় দুই ধনুক পরিমাণ ব্যবধানে বসে আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলে উম্মতের জন্য একমাস রোজা ও পাঁচওয়াক্ত নামাজে ফরজ নির্ধারণ করলেন।
আলাপের এক পর্যায়ে আল্লাহ্পাক নবীজীকে বললেন, ''হে পেয়ারে হাবীব, আমি জানি এবং আমার ফেরেস্তারা আপনার শুভাগমনের সম্মানার্থে হাদীয়া স্বরূপ আপনার ওপর দরুদ ও সালাম পাঠ করেছে। আপনি আমার জন্য হাদীয়া স্বরূপ কী এনেছেন?''
উত্তরে নবীজী যা বললেন, তার ভাবার্থ হল, হে রাব্বুল আলামীন! আপনার প্রতি হাদীয়া স্বরূপ আমার সাধ্যে আনার মত কিইবা আছে! তবে আমি আপনার জন্য যা এনেছি তা হল আমার উম্মতের পাপরাশি। নবীজীর এ জবাব পেয়ে আল্লাহ্ পাক খুব সন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, 'আপনি আপনার উম্মতদের আপনার উপর দরুদ এবং সালাম পাঠ করতে বলুন, যে উম্মত আপনার উপর একবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি রাব্বুল আলামীন তার প্রতি দশবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবো। তার আমলনামা থেকে দশটি গুনাহ কেটে দেবো এবং তথায় দশটা নেকি দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তাছাড়া তার মর্যাদা দশধাপ উঁচু করবো।''
এরপরও আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় আমাদের প্রিয় নবী রাহমাতালি্লল আলামীন হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের নাজাত চিন্তায় অত্যন্ত ব্যথাতুর হয়ে উঠেন। তা দর্শনে আল্লাহ্ পাক সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ''প্রিয় হাবীব! আপনি এত ব্যথাতুর হচ্ছেন কেন? আপনার উম্মতের যে কোনো দোয়া আমি কবুল করে নেব যদি তারা তার সাথে দরুদ শরীফ বেঁধে দেয়।'' (ইবনে মাযাহা শরীফ)।
তাই আল্লাহ্ পাক পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করে হুকুম করলেন, 'ইন্নাল লাহা ওয়া মালাইকাতাহু ইউছাল্লুনা আলান নাবীই, ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু ছাল্লু আলাইহি ওয়াসাল্লামু তাছলীমা।''
''নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ্) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁহার উপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর।'' (পবিত্র কোরআন-২২ পারা, সূরা আহ্যাব- রুকু-৭, আয়াত-৫৬)।
মেরাজ থেকে আসার পর হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখে সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু কোরআনের এ আয়াত শুনে হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আরয করলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল, আপনার প্রতি সালাম পেশের বিধানতো আমরা ইতোপূর্বে শিখিয়াছি। কিন্তু আপনার উপর দরুদ পাঠের কি বিধান তাতো আমাদের জানা নেই।''
তখন হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
এই রূপে পাঠ করিবে_
আল্লাহুম্মা ছলি্লআলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন
কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
এ দরুদ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাক জবান হতে তৈরি। অতএব, এ দরুদ সব দরুদের সেরা দরুদ, যা দরুদে ''ইব্রাহীম'' নামে খ্যাত।
আল্লাহ্ পাকের ওয়াদার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করতে হয়, হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির পর থেকেই জান্নাতে অবস্থান করেছিলেন। আল্লাহ পাকের একটি হুকুম অমান্য করে গুনাহগার হওয়ার কারণে তাঁরা দুনিয়াতে নিক্ষিপ্ত হন। হযরত আদম (আ.) ছিটকে পড়েন স্বরন্দীপ বা সিংহল বর্তমান শ্রীলংকায়। আর হযরত হাওয়া (আঃ) পড়েন লোহিত সাগরের পূর্ব পাড়ে আরবের জিদ্দায়। তাঁরা স্বীয় গুনার জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে পাগলের মত পরস্পরকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এভাবে প্রায় ৩০০ বছর কান্নাকাটির পর আরবের আরাফাতের ময়দানে তাঁদের মিলন বা সাক্ষাৎ হয়। এ সময় একদিন সুবহে সাদেকের সময় হযরত আদম আলাইহি ওয়াছাল্লাম-এর স্মরণ হয়, বেহেস্তে থাকাকালীন আল্লাহ্ পাকের আরশে মোয়াল্লায় তিনি লেখা দেখেছিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।'' তখন তিনি আরাফাতের ময়দানের এক কোণে অবস্থিত একটি পাহাড়ে গিয়ে দু'রাকাত নামাজ পড়লেন এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে এ বলে কান্নাকাটি করতে থাকলেন, ''হে আল্লাহ্ বেহেস্তে থাকাকালীন তোমার আরশে মোয়াল্লায় তোমার নামের সাথে একটি নাম মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুক্ত দেখেছিলাম, সে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আমাদের গুনাহ মার্জনা করে দোয়া কবুল কর। বলে আল্লাহ্ পাকের দরবারে কান্নাকাটি করে দোয়া পাঠ করতে থাকেন, রাব্বানা যালাম্না আন্ফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগ্ফিরলানা ওয়া তারহ্বামনা লানাকূনান্না মিনাল খা-সিরীন।'' তখন আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় এবং সাথে তাঁদের গুনাহ মার্জনা করে দেওয়া হয়। আর তখন থেকে এ পাহাড়ের নাম হয় জাবালে রহমত (রহমতের পাহাড়)।
এখানে অনুধাবন করার বিষয় হল, যে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আল্লাহ্ পাক হযরত আদম এবং হাওয়া আলাইহিওছাল্লাম-এর গুনাহ মাফ করে দোয়া কবুল করেছিলেন; সেই নামের উপর দোয়া ও সালাম ভেজার ফজিলত বা মর্তবা বা সৌভাগ্য যে কত বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া আল্লাহ্পাক এবং তাঁর ফেরেস্তারা যে কাজ করে থাকেন তার চাইতে অতি উত্তম ফজিলত পূর্ণ কাজ কীইবা হতে পারে!
হযরত রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে একরামের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হওয়ার প্রার্থনা করার নাম দরুদ। দরুদ শরীফ ইবাদতের একটি বিশেষ অঙ্গ। দরুদ শরীফ সহকারে কোনো ইবাদত না করলে উহা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
এ ভ্রমণে নবীজী দোযখের ভয়াবহতা, বেহেস্তের সুখসহ অনেক কিছু অবলোকন করলেন। অতঃপর আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় পৌঁছলেন। এ সময় আল্লাহ্তায়ালা এবং তাঁর ফেরেস্তারা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে দরুদ পাঠ করলেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি আল্লাহ্ তা'য়ালার দরুদ শরীফ পাঠ করার অর্থ হল, ফেরেশতাদের সম্মুখে তাঁর প্রশংসা করা এবং ফেরেশতাদের দরুদ পাঠ করার অর্থ হল, হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উচ্চ মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হওয়ার জন্য দোয়া করা। (বোখারী শরীফ)
নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় দুই ধনুক পরিমাণ ব্যবধানে বসে আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলে উম্মতের জন্য একমাস রোজা ও পাঁচওয়াক্ত নামাজে ফরজ নির্ধারণ করলেন।
আলাপের এক পর্যায়ে আল্লাহ্পাক নবীজীকে বললেন, ''হে পেয়ারে হাবীব, আমি জানি এবং আমার ফেরেস্তারা আপনার শুভাগমনের সম্মানার্থে হাদীয়া স্বরূপ আপনার ওপর দরুদ ও সালাম পাঠ করেছে। আপনি আমার জন্য হাদীয়া স্বরূপ কী এনেছেন?''
উত্তরে নবীজী যা বললেন, তার ভাবার্থ হল, হে রাব্বুল আলামীন! আপনার প্রতি হাদীয়া স্বরূপ আমার সাধ্যে আনার মত কিইবা আছে! তবে আমি আপনার জন্য যা এনেছি তা হল আমার উম্মতের পাপরাশি। নবীজীর এ জবাব পেয়ে আল্লাহ্ পাক খুব সন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, 'আপনি আপনার উম্মতদের আপনার উপর দরুদ এবং সালাম পাঠ করতে বলুন, যে উম্মত আপনার উপর একবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি রাব্বুল আলামীন তার প্রতি দশবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবো। তার আমলনামা থেকে দশটি গুনাহ কেটে দেবো এবং তথায় দশটা নেকি দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তাছাড়া তার মর্যাদা দশধাপ উঁচু করবো।''
এরপরও আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় আমাদের প্রিয় নবী রাহমাতালি্লল আলামীন হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের নাজাত চিন্তায় অত্যন্ত ব্যথাতুর হয়ে উঠেন। তা দর্শনে আল্লাহ্ পাক সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ''প্রিয় হাবীব! আপনি এত ব্যথাতুর হচ্ছেন কেন? আপনার উম্মতের যে কোনো দোয়া আমি কবুল করে নেব যদি তারা তার সাথে দরুদ শরীফ বেঁধে দেয়।'' (ইবনে মাযাহা শরীফ)।
তাই আল্লাহ্ পাক পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করে হুকুম করলেন, 'ইন্নাল লাহা ওয়া মালাইকাতাহু ইউছাল্লুনা আলান নাবীই, ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু ছাল্লু আলাইহি ওয়াসাল্লামু তাছলীমা।''
''নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ্) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁহার উপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর।'' (পবিত্র কোরআন-২২ পারা, সূরা আহ্যাব- রুকু-৭, আয়াত-৫৬)।
মেরাজ থেকে আসার পর হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখে সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু কোরআনের এ আয়াত শুনে হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আরয করলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল, আপনার প্রতি সালাম পেশের বিধানতো আমরা ইতোপূর্বে শিখিয়াছি। কিন্তু আপনার উপর দরুদ পাঠের কি বিধান তাতো আমাদের জানা নেই।''
তখন হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
এই রূপে পাঠ করিবে_
আল্লাহুম্মা ছলি্লআলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন
কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
এ দরুদ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাক জবান হতে তৈরি। অতএব, এ দরুদ সব দরুদের সেরা দরুদ, যা দরুদে ''ইব্রাহীম'' নামে খ্যাত।
আল্লাহ্ পাকের ওয়াদার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করতে হয়, হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির পর থেকেই জান্নাতে অবস্থান করেছিলেন। আল্লাহ পাকের একটি হুকুম অমান্য করে গুনাহগার হওয়ার কারণে তাঁরা দুনিয়াতে নিক্ষিপ্ত হন। হযরত আদম (আ.) ছিটকে পড়েন স্বরন্দীপ বা সিংহল বর্তমান শ্রীলংকায়। আর হযরত হাওয়া (আঃ) পড়েন লোহিত সাগরের পূর্ব পাড়ে আরবের জিদ্দায়। তাঁরা স্বীয় গুনার জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে পাগলের মত পরস্পরকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এভাবে প্রায় ৩০০ বছর কান্নাকাটির পর আরবের আরাফাতের ময়দানে তাঁদের মিলন বা সাক্ষাৎ হয়। এ সময় একদিন সুবহে সাদেকের সময় হযরত আদম আলাইহি ওয়াছাল্লাম-এর স্মরণ হয়, বেহেস্তে থাকাকালীন আল্লাহ্ পাকের আরশে মোয়াল্লায় তিনি লেখা দেখেছিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।'' তখন তিনি আরাফাতের ময়দানের এক কোণে অবস্থিত একটি পাহাড়ে গিয়ে দু'রাকাত নামাজ পড়লেন এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে এ বলে কান্নাকাটি করতে থাকলেন, ''হে আল্লাহ্ বেহেস্তে থাকাকালীন তোমার আরশে মোয়াল্লায় তোমার নামের সাথে একটি নাম মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুক্ত দেখেছিলাম, সে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আমাদের গুনাহ মার্জনা করে দোয়া কবুল কর। বলে আল্লাহ্ পাকের দরবারে কান্নাকাটি করে দোয়া পাঠ করতে থাকেন, রাব্বানা যালাম্না আন্ফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগ্ফিরলানা ওয়া তারহ্বামনা লানাকূনান্না মিনাল খা-সিরীন।'' তখন আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় এবং সাথে তাঁদের গুনাহ মার্জনা করে দেওয়া হয়। আর তখন থেকে এ পাহাড়ের নাম হয় জাবালে রহমত (রহমতের পাহাড়)।
এখানে অনুধাবন করার বিষয় হল, যে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আল্লাহ্ পাক হযরত আদম এবং হাওয়া আলাইহিওছাল্লাম-এর গুনাহ মাফ করে দোয়া কবুল করেছিলেন; সেই নামের উপর দোয়া ও সালাম ভেজার ফজিলত বা মর্তবা বা সৌভাগ্য যে কত বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া আল্লাহ্পাক এবং তাঁর ফেরেস্তারা যে কাজ করে থাকেন তার চাইতে অতি উত্তম ফজিলত পূর্ণ কাজ কীইবা হতে পারে!
হযরত রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে একরামের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হওয়ার প্রার্থনা করার নাম দরুদ। দরুদ শরীফ ইবাদতের একটি বিশেষ অঙ্গ। দরুদ শরীফ সহকারে কোনো ইবাদত না করলে উহা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন