হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির সেরা, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব এবং আল্লাহ্তায়ালার পেয়ারে হাবীব। তাঁকে সৃষ্টি না করলে ভূমণ্ডল-নভমণ্ডল, জ্বীন-ইনসান, আঠারো হাজার মাখলুক কিছুই সৃষ্টি করতেন না। সেই পেয়ারে হাবীবকে আল্লাহ্পাক মনস্ত করলেন তাঁর কুদরতের শান বেহেস্ত, দোযখ, সপ্ত আসমান ও তাঁর আরশে মোয়াল্লা স্বচক্ষে দেখাবেন। তাই ঊর্ধ্বগমনের (মেরাজের) মাধ্যমে তাঁর দীদার (সাক্ষাৎ) লাভের ব্যবস্থা করলেন।
এ ভ্রমণে নবীজী দোযখের ভয়াবহতা, বেহেস্তের সুখসহ অনেক কিছু অবলোকন করলেন। অতঃপর আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় পৌঁছলেন। এ সময় আল্লাহ্তায়ালা এবং তাঁর ফেরেস্তারা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে দরুদ পাঠ করলেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি আল্লাহ্ তা'য়ালার দরুদ শরীফ পাঠ করার অর্থ হল, ফেরেশতাদের সম্মুখে তাঁর প্রশংসা করা এবং ফেরেশতাদের দরুদ পাঠ করার অর্থ হল, হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উচ্চ মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হওয়ার জন্য দোয়া করা। (বোখারী শরীফ)
নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় দুই ধনুক পরিমাণ ব্যবধানে বসে আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলে উম্মতের জন্য একমাস রোজা ও পাঁচওয়াক্ত নামাজে ফরজ নির্ধারণ করলেন।
আলাপের এক পর্যায়ে আল্লাহ্পাক নবীজীকে বললেন, ''হে পেয়ারে হাবীব, আমি জানি এবং আমার ফেরেস্তারা আপনার শুভাগমনের সম্মানার্থে হাদীয়া স্বরূপ আপনার ওপর দরুদ ও সালাম পাঠ করেছে। আপনি আমার জন্য হাদীয়া স্বরূপ কী এনেছেন?''
উত্তরে নবীজী যা বললেন, তার ভাবার্থ হল, হে রাব্বুল আলামীন! আপনার প্রতি হাদীয়া স্বরূপ আমার সাধ্যে আনার মত কিইবা আছে! তবে আমি আপনার জন্য যা এনেছি তা হল আমার উম্মতের পাপরাশি। নবীজীর এ জবাব পেয়ে আল্লাহ্ পাক খুব সন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, 'আপনি আপনার উম্মতদের আপনার উপর দরুদ এবং সালাম পাঠ করতে বলুন, যে উম্মত আপনার উপর একবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি রাব্বুল আলামীন তার প্রতি দশবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবো। তার আমলনামা থেকে দশটি গুনাহ কেটে দেবো এবং তথায় দশটা নেকি দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তাছাড়া তার মর্যাদা দশধাপ উঁচু করবো।''
এরপরও আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় আমাদের প্রিয় নবী রাহমাতালি্লল আলামীন হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের নাজাত চিন্তায় অত্যন্ত ব্যথাতুর হয়ে উঠেন। তা দর্শনে আল্লাহ্ পাক সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ''প্রিয় হাবীব! আপনি এত ব্যথাতুর হচ্ছেন কেন? আপনার উম্মতের যে কোনো দোয়া আমি কবুল করে নেব যদি তারা তার সাথে দরুদ শরীফ বেঁধে দেয়।'' (ইবনে মাযাহা শরীফ)।
তাই আল্লাহ্ পাক পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করে হুকুম করলেন, 'ইন্নাল লাহা ওয়া মালাইকাতাহু ইউছাল্লুনা আলান নাবীই, ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু ছাল্লু আলাইহি ওয়াসাল্লামু তাছলীমা।''
''নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ্) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁহার উপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর।'' (পবিত্র কোরআন-২২ পারা, সূরা আহ্যাব- রুকু-৭, আয়াত-৫৬)।
মেরাজ থেকে আসার পর হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখে সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু কোরআনের এ আয়াত শুনে হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আরয করলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল, আপনার প্রতি সালাম পেশের বিধানতো আমরা ইতোপূর্বে শিখিয়াছি। কিন্তু আপনার উপর দরুদ পাঠের কি বিধান তাতো আমাদের জানা নেই।''
তখন হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
এই রূপে পাঠ করিবে_
আল্লাহুম্মা ছলি্লআলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন
কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
এ দরুদ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাক জবান হতে তৈরি। অতএব, এ দরুদ সব দরুদের সেরা দরুদ, যা দরুদে ''ইব্রাহীম'' নামে খ্যাত।
আল্লাহ্ পাকের ওয়াদার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করতে হয়, হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির পর থেকেই জান্নাতে অবস্থান করেছিলেন। আল্লাহ পাকের একটি হুকুম অমান্য করে গুনাহগার হওয়ার কারণে তাঁরা দুনিয়াতে নিক্ষিপ্ত হন। হযরত আদম (আ.) ছিটকে পড়েন স্বরন্দীপ বা সিংহল বর্তমান শ্রীলংকায়। আর হযরত হাওয়া (আঃ) পড়েন লোহিত সাগরের পূর্ব পাড়ে আরবের জিদ্দায়। তাঁরা স্বীয় গুনার জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে পাগলের মত পরস্পরকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এভাবে প্রায় ৩০০ বছর কান্নাকাটির পর আরবের আরাফাতের ময়দানে তাঁদের মিলন বা সাক্ষাৎ হয়। এ সময় একদিন সুবহে সাদেকের সময় হযরত আদম আলাইহি ওয়াছাল্লাম-এর স্মরণ হয়, বেহেস্তে থাকাকালীন আল্লাহ্ পাকের আরশে মোয়াল্লায় তিনি লেখা দেখেছিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।'' তখন তিনি আরাফাতের ময়দানের এক কোণে অবস্থিত একটি পাহাড়ে গিয়ে দু'রাকাত নামাজ পড়লেন এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে এ বলে কান্নাকাটি করতে থাকলেন, ''হে আল্লাহ্ বেহেস্তে থাকাকালীন তোমার আরশে মোয়াল্লায় তোমার নামের সাথে একটি নাম মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুক্ত দেখেছিলাম, সে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আমাদের গুনাহ মার্জনা করে দোয়া কবুল কর। বলে আল্লাহ্ পাকের দরবারে কান্নাকাটি করে দোয়া পাঠ করতে থাকেন, রাব্বানা যালাম্না আন্ফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগ্ফিরলানা ওয়া তারহ্বামনা লানাকূনান্না মিনাল খা-সিরীন।'' তখন আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় এবং সাথে তাঁদের গুনাহ মার্জনা করে দেওয়া হয়। আর তখন থেকে এ পাহাড়ের নাম হয় জাবালে রহমত (রহমতের পাহাড়)।
এখানে অনুধাবন করার বিষয় হল, যে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আল্লাহ্ পাক হযরত আদম এবং হাওয়া আলাইহিওছাল্লাম-এর গুনাহ মাফ করে দোয়া কবুল করেছিলেন; সেই নামের উপর দোয়া ও সালাম ভেজার ফজিলত বা মর্তবা বা সৌভাগ্য যে কত বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া আল্লাহ্পাক এবং তাঁর ফেরেস্তারা যে কাজ করে থাকেন তার চাইতে অতি উত্তম ফজিলত পূর্ণ কাজ কীইবা হতে পারে!
হযরত রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে একরামের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হওয়ার প্রার্থনা করার নাম দরুদ। দরুদ শরীফ ইবাদতের একটি বিশেষ অঙ্গ। দরুদ শরীফ সহকারে কোনো ইবাদত না করলে উহা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ফরমাইয়াছেন, ''দোয়া আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে ঝুলন্ত রহিয়া যায়, তুমি তোমার নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ না করা পর্যন্ত উহার (অর্থাৎ দোয়া) কিছুই উপরে উঠে না।'' (তিরমিযী)
কোর্ট ফি ও সনদপ্রাপ্ত উকিল-ব্যারিস্টারের সই ছাড়া যেমন সাধারণ লোকের কোনো আরজি হাকীমের এজলাসে গ্রহণীয় হয় না, তেমনি সব হাকীমের হাকীম আল্লাহর দরবারেও কোর্ট ফি ও সনদপ্রাপ্ত ব্যক্তির সুপারিশ ছাড়া কোনো ইবাদত ও দোয়া কবুল হয় না। এখানে এই কোর্ট ফি হচ্ছে দরুদ শরীফ, আর সনদপ্রাপ্ত সুপারিশকারী হচ্ছেন আল্লাহর পেয়ারে হাবীব আমাদের প্রিয় নবী রাহমাতালি্লল আলামীন হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এই জন্য প্রত্যেক প্রকার দোয়া ও মুনাজাতের পূর্বে দরুদ শরীফ পড়া উচিত। আর আগে পরে পড়তে পারলে অতি উত্তম।
নামাজ হচ্ছে সব ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত। যেহেতু কোনো ইবাদত দরুদ শরীফ ছাড়া পরিপূর্ণ হয় না, তাই নামাজকে পরিপূর্ণ করার জন্য নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহুদের শেষে দরুদে ইব্রাহীম জুড়ে দেওয়া হয়েছে। দরুদ ইবাদত ও দোয়াকে আল্লাহর দরবারে পৌঁছে দেয়।
আমাদের কর্মদোষে অনেক সময় ইবাদত ও দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হতে পারে না; কিন্তু দরুদ শরীফ অর্থাৎ তাঁর প্রিয়তম মাহবুব-এর প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষণের দোয়া তিনি অবশ্য অতিসাদরে গ্রহণ করেন। ফলে দরুস শরীফের সাথে ইবাদত ও অন্যান্য দোয়াও কবুল না হয়ে পারে না।
রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''আমার প্রতি দরুদ শরীফ পাঠ করিলে কোয়ামতের দিন তাহার জন্য সুপারিশ করা আমার জন্য ওয়াজেব হইয়া যায়।
রাসূলে পাক এরশাদ করেন, ''যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ্ পাক তার উপর দশটি রহমত অবতীর্ণ করবেন। (মেশকাত শরীফ)
আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, হযরত রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ প্রেরণ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাহার প্রতি দশবার রহমত নাযিল করবেন এবং তাহার দশটি গোনাহ মাফ করা হবে, আর তাহার মর্যাদা দশগুণ উচ্চ করা হবে। (নাসায়ী শরীফ)
হযরত আবু দারদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন যে, রাসূলে করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমার উম্মতের যে কোনো লোক যদি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ্ পাক তার প্রতি দশটি রহমত নাজিল করেন, দশটি উচ্চ মর্যাদা দান করন, আমলনামায় দশটি নেকি লেখা হয় এবং দশটি গুনাহ মাফ করে দেন। (নাসায়ী শরীফ)
হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার কবরের নিকট আমার উপর দরুদ পাঠ করবে, আমি তা শুনবো, আর যে ব্যক্তি আমার উপর গায়েবানা (অর্থাৎ দূরে থেকে) দরুদ পাঠ করবে, তা আমার নিকট পৌঁছে দেয়া হবে। (বায়হাকী)
হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''আল্লাহ্ তায়ালার বহু ফেরেশতা যমীনে ভ্রাম্যমাণ রয়েছে, যারা আমার নিকট আমার উম্মতের পক্ষ থেকে তাদের সালাম পৌঁছে দেয়। (নাসায়ী ও দারমী)।
হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আরও বর্ণনা করেন, মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''কোনো ব্যক্তি দরুদ শরীফ পড়া মাত্র একজন ভ্রাম্যমাণ ফেরেশতা আমার দরবারে উপনীত হয়ে খবর দেয়, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! অমুকের সন্তান অমুক আপনার উপর এত মোর্তবা দরুদ শরীফ পাঠ করেছেন। অমনি আমি ও তার ওপর ঠিক তত মোর্তবা দরুদ পাঠ করি। অতঃপর সেই ফেরেশতা আল্লাহর দরবারে আরজি পেশ করে- হে মাবুদ! অমুকের সন্তান অমুক আপনার হাবীবের ওপর এত মর্তবা দরুদ পাঠ করেছেন। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ্ পাক তাকে জানিয়ে দেন, ''উত্তম কিরামান ও কাতেবীনকে বলে দাও, তার প্রত্যেক মোর্তবা দরুদ পাঠের পরিবর্তে যেন তার আমলনামা থেকে দশটি করে গোনাহ্ কেটে দেয় এবং আমার তরফ থেকে প্রত্যেক কাটা স্থানে দশটি করে নেকী লিখে রাখে।'' (মুয়াত্তা শরীফ)
হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''সেই ব্যক্তি কৃপণ, যার সম্মুখে আমার নাম উল্লেখ হয়, অথচ সে আমার নামে দরুদ পাঠ করে না। (তিরমিযী)
হযরত আবু দাররা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ''যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা আমার ওপর দশবার দরুদ পড়বে সে কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে। (তাবারানী)
এক হাদীসে উল্লেখ আছে, একদা রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে বসেছিলেন। এ সময় চারজন প্রধান ফেরেশতা এসে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় দেখে প্রশ্ন করলেন, ''হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কী চিন্তা করছেন? রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''আমার উম্মতের চিন্তা করছি, কীভাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে জান্নাতে নেওয়া যায়। এই কথা শুনে প্রথম ফেরেশতা আজরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''আপনার ওই উম্মত যে সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার আপনার প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি মৃত্যুর সময় তার জান সম্মান ও ইজ্জতের সাথে সহজে কবজ করব। দ্বিতীয় ফেরেশতা ইসরাফিল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনার যে উম্মত সকাল-সন্ধ্যা দশবার করে আপনার উপর দরুদ ও সালাম ভেজবে, আমি তার জন্য হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের নিচে সেজদারত অবস্থায় তার জন্য গুনাহ মাফির জন্য প্রার্থনা করব এবং প্রার্থনা কবুল না হওয়া পর্যন্ত সেজদা থেকে মাথা তুলব না। তৃতীয় ফেরেশতা মিকাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনার যে উম্মত প্রাতে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার আপনার প্রতি দরুদ ও সালাম জানাবে, আমি হাশরের ময়দানে তাকে নিজ হাতে হাউজে কাউসারের পানি পান করাব। চতুর্থ ফেরেশতা জিব্রাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাহু ধরে বললেন, অনুরূপ দরুদ পাঠকারীকে আমি এভাবে পুলসিরাত পার করে জান্নাতে পৌঁছে দেবো। (মাওয়াহের লুদ্নী)
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো ব্যক্তি ওযু করে আদবের সাথে বসে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করলে, আল্লাহ্তায়ালা তাহার ওপর দশবার দরুদ শরীফ পাঠ করেন। যদি আমার ওপর কেউ দশবার দরুদ পাঠ করেন তবে আল্লাহ্তায়ালা তার ওপর একশতবার দরুদ পাঠ করেন। কেউ একশত বার আমার ওপর দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ্পাক তার উপর একহাজার বার দরুদ শরীফ পাঠ করেন এবং তার জন্য বেহেশত হালাল ও দোযখ হারাম করে দেন। (মুসলিম শরীফ)
হযরত ইবনে মাস্উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উপর সর্বাধিক দরুদ পাঠকারী কিয়ামতের দিন লোকদের মধ্যে আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে। (তিরমিযী)
হযরত উবাই ইবনে কা'ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদা আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আপনার নামে অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করি; অতএব দরুদ পাঠের জন্য আমি কতটুকু সময় নির্দিষ্ট করব?
আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''যতটুকু তুমি চাও। আমি বললাম, ''এক চতুর্থাংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''যতটুকু তুমি চাও; আর যদি আরও বেশি কর, তবে তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, অর্ধেক সময়? আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও' আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম_ তবে দুই তৃতীয়াংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, আমি আপনার উপর দরুদ পাঠের জন্য আমার সমুদয় সময় নির্দিষ্ট করব। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে তোমার যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার দ্বীন ও দুনিয়ার সকল উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে আর তোমার সমস্ত গোনাহ্ মাফ হবে। (তিরমিযী)
রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সুপারিশের পূর্বে কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না কিন্তু যারা আমার ওপর সব সময় দরুদ শরীফ পাঠ করেছে, তারা আমার সুপারিশের পূর্বেই জান্নাতে চলে যাবে। তাদের জন্য আমার কিছুমাত্র সুপারিশের প্রয়োজন হবে না। (মুসলিম শরীফ)।
পবিত্র কোরআন শরীফ, হাদীস শরীফ ও বিভিন্ন ইসলাম ধর্মীয় গ্রন্থসমূহে দরুদ শরীফ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অনেক প্রকার দরুদ শরীফ আছে, যার প্রত্যেকটির মোর্তবা বা ফজিলত বা সৌভাগ্য ভিন্ন ভিন্ন। ইমাম ইব্নে কাইয়ূ্যম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু-এর মতে, দরুদ শরীফ পাঠে কম-বেশি চলি্লশ প্রকার মোর্তবা বা ফজিলত বা সৌভাগ্য রয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, দরুদ শরীফ পাঠে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। সর্বাবিধ বিপদ-আপদ দূরীভূত হয়। দেহ রোগমুক্ত থাকে। স্বাস্থ্য অটুট হয়। হায়াত বৃদ্ধি পায়। যাবতীয় অভাব-অভিযোগ মোচন হয়। ইহকাল এবং পরকালের কল্যাণসহ দ্বীন-দুনিয়ার সকল মক্বসূদ হাসিল হয়। নিয়মিত বেশি বেশি দরুদ পাঠকারীর হাশরের মাঠে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুপারিশ প্রাপ্তি ও মুক্তি লাভের আশা করা যায়। দরুদ শরীফ পাঠের সর্বাপেক্ষা স্বাদের ও মধুর বিশেষত্ব এই যে, দরুদ শরীফ পাঠের উছিলায় পাঠক উন্নতির পথে অগ্রসর হয়। তার সমগ্র জীবনের সকল প্রকার গুনাহ্ মাফ হয়ে যায় এবং স্বপ্নযোগে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দীদার নছিব হয়। অর্থাৎ জিয়ারত বা দর্শন লাভ হয়। আর সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তির জন্য দোযখ হারাম এবং বেহেস্ত অনিবার্য হয়ে যায়।
দরুদ শরীফের ফজিলত সমপর্কিত ৪০ হাদীস
الحديث الأول عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال قال رسول {1}
الله " من صلى علي صلت عليه
الملائكة ومن صلت عليه الملائكة صلى الله عليه ومن صلى الله عليه لم يبق شيءفي السموات ولا في
الأرض إلا صلى عليه
{2} " الحديث الثاني قال رسول الله " من صلى علي صلاة واحدة أمر الله حافظيه أن
لا يكتبا عليه ذنبا ثلاثة أيام
"
الحديث الثالث قال رسول الله " من صلى علي مرة خلق الله من قوله ملكا { 3}
له جناحان جناح بالمشرق وجناح بالمغرب رأسه وعنقه تحت العرش وهو يقول اللهم صل على عبدك
ما دام يصلي على نبيك
"
الحديث الرابع قال رسول الله " من صلى علي مرة صلى الله عليه بها عشرا {4}
ومن صلى علي عشرا صلى الله عليه بها مائة ومن صلى علي مائة صلى الله عليه بها ألفا ومن صلى
على الفا لم يعذبه الله بالنار
"
الحديث الخامس قال رسول الله " من صلى علي مرة كتب الله له عشر {5}
حسنات ومحا عنه عشر سيئات ورفع له عشر درجات
"
الحديث السادس قال رسول الله " أتاني جبريل{6}
يوما وقال يا محمد جئتك ببشارة لم آت بها أحدا من قبلك وهي أن الله تعالى يقول لك
من صلى عليك من أمتك ثلاث مرات غفر الله له إن كان قائما قبل أن يقعد وإن كان قاعدا غفر له قبل
أن يقوم فعند ذلك خر ساجدا لله شاكرا "
الحديث السابع قال رسول الله " من صلى علي في الصباح{7}
عشرا محيت عنه ذنوب أربعين سنة "
الحديث الثامن قال رسول الله " من صلى علي ليلة الجمعة أو{8}
يوم الجمعة مائة مرة غفر الله له خطئيته ثمانين سنة "
الحديث التاسع قال رسول الله " من صلى علي { 9}
ليلة الجمعة أو يوم الجمعة مائة مرة قضى الله له مائة حاجة ووكل الله به ملكا حين يدفن في قبره
يبشره كما يدخل أحدكم على أخيه بالهدية "
الحديث العاشر قال رسول الله " من صلى علي في يوم {10}
مائة مرة قضيت له في ذلك اليوم مائة حاجة "
الحديث الحادي عشر قال رسول الله " أقربكم مني {11}
مجلسا أكثركم علي صلاة "
الحديث الثاني عشر قال رسول الله " من صلى علي ألف مرة بشر بالجنة{ 12 }
قبل موته "
الحديث الثالث عشر قال رسول الله " جاءني جبريل عليه السلام وقال لي يا رسول الله لا { 13 }
يصلي عليك أحد إلا ويصلى عليه سبعون ألفا من الملائكة
"
الحديث الرابع عشر قال رسول الله {14 }
"
الدعاء بعد الصلاة علي لا يرد "
الحديث الخامس عشر قال رسول الله " الصلاة علي نور على الصراط{ 15}
وقال لا يلج النار من يصلي علي
الحديث السادس عشر قال رسول الله " من جعل عبادته الصلاة { 16}
علي قضى الله له حاجة الدنيا والآخرة "
الحديث السابع عشر قال رسول الله " من نسي الصلاة علي أخطأ طريق الجنة "{ 17 }
الحديث الثامن عشر } { 18 }
قال رسول الله " إن لله ملائكة في الهواء بأيديهم قراطيس من نور لا يكتبون إلا الصلاة علي وعلى أهل
بيتي "
الحديث التاسع عشر قال رسول الله " لو أن عبدا جاء يوم القيامة بحسنات أهل الدنيا ولم تكن { {1 { }
فيها الصلاة علي ردت عليه ولم تقبل منه "
{ }
الحديث العشرون قال رسول الله " أولى الناس بي أكثره1
علي صلاة "
الحديث الحادي والعشرون قال رسول الله من صلى علي في كتاب ما لم تزل الملائكة
تصلي عليه لم يندرس اسمي من ذلك الكتاب "
الحديث الثاني والعشرون قال رسول الله إن لله ملائكة
سياحين في الأرض يبلغوني الصلاة علي من أمتي فأستغفر لهم
الحديث الثالث والعشرون قال رسول
الله من صلى علي كنت شفيعه يوم القيامة ومن لم يصل علي فأنا برئ منه "
الحديث الرابع والعشرون
قال رسول الله يؤمر بقوم إلى الجنة فيخطئون الطريق قالوا يا رسول الله ولم ذاك قال سمعوا اسمي ولم
يصلوا علي "
الحديث الخامس والعشرون قال رسول الله يؤمر برجل إلى النار فأقول ردوه إلى الميزان
فأضع له شيئا كالأنملة معي في ميزانه وهو الصلاة علي فترجح ميزانه وينادي سعد فلان
الحديث
السادس والعشرون قال رسول الله ما اجتمع قوم في مجلس ولم يصل علي فيه إلا تفرقوا كقوم تفرقوا
عن ميت ولم يغسلوه
الحديث السابع والعشرون قال رسول الله " إن الله تعالى وكل بقبري ملكا أعطاه
أسماء الخلائق كلها فلا يصلي علي أحد إلى يوم القيامة إلا بلغني اسمه وقال رسول الله إن فلان بن
فلانة صلى عليك
الحديث الثامن والعشرون عن أبي بكر الصديق رضي الله تعالى عنه أنه قال الصلاة على النبي أمحى
للذنوب من الماء لسواد اللوح
الحديث التاسع والعشرون قال رسول الله إن الله تعالى أوحى إلى موسى
عليه السلام أن أردت أن أكون إليك أقرب من كلامك إلى لسانك ومن روحك لجسدك فأكثر الصلاة على
النبي الأمي
الحديث الثلاثون قال رسول الله إن ملكا أمره الله تعالى باقتلاع مدينة غضب عليها فرحمها
ذلك الملك ولم يبادر إلى اقتلاعها فغضب الله عليه وأكسر أجنحته فمر به جبريل عليه السلام فشكا له
حاله فسأل الله فيه فأمره أن يصلي على النبي فصلى عليه فغفر الله له ورد عليه أجنحته ببركة الصلاة
على النبي
الحديث الحادي والثلاثون عن عائشة رضي الله تعالى عنها قالت من صلى على رسول الله
عشر مرات وصلى ركعتين ودعا الله تعالى تقبل صلاته وتقضى حاجته ودعاؤه مقبول غير مردود
الحديث الثاني والثلاثون عن زيد بن حارثة قال سألت رسول الله عن الصلاة عليه فقال صلوا علي
واجتهدوا في الدعاء وقولوا اللهم صل على محمد وعلى آل محمد
الحديث الثالث والثلاثون عن أبي
هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلوا علي فإن صلاتكم علي زكاة لكم واسألوا الله لي
الوسلية
الحديث الرابع والثلاثون عن سهل بن سعد الساعدي أن النبي قال لا صلاة لمن لم يصل على
نبيه
الحديث الخامس والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله رغم أنف رجل
ذكرت عنده فلم يصلي علي
الحديث السادس والثلاثون عن ابن عباس رضي الله تعالى عنهما قال قال
رسول الله من قال جزى الله عنا محمدا خيرا وجزى الله نبينا محمدا بما هو أهله فقد أتعب كاتبيه
******* ----------------------------------*****************
الحديث السابع والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله لا تجعلوا بيوتكم قبورا
وصلوا علي فإن صلاتكم تبلغني حيثما كنتم
الحديث الثامن والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى
عنه قال قال رسول الله ما من أحد يصلي علي إلا رد الله علي روحي حتى أرد عليه
الحديث التاسع
والثلاثون قال رسول الله أقربكم مني منزلا يوم القيامة أكثركم علي صلاة
الحديث الأربعون نقل الشيخ
كمال الدين الدميري رحمه الله تعالى عن شفاء الصدور لابن سبع أن النبي قال من سره أن يلقى الله
وهو عليه راض فليكثر من الصلاة علي فإنه من صلى علي في كل يوم خمسمائة مرة لم يفتقر أبدا
وهدمت ذنوبه ومحيت خطاياه ودام سروره واستجيب دعاؤه وأعطي أمله وأعين على عدوه وعلى
أسباب الخير وكان ممن يرافق نبيه في الجنان
اللهم صل على سيد المرسلين وخاتم النبيين ورسول رب العالمين سيدنا محمدصلى الله عليه وسلم
أسأ ل الله ان ان يجمعنا واياكم مع النبي صلى الله عليه وسلم في الفردوس الاعلى من الجنة
وأسأله ان يكون هذا العمل خالصآ لوجهه اللهم امين
والسسسسسلام
كيفية الصلاة والتسليم على النبي :
******************************************************
======================================
قال الله تعالى: إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيماً [الأحزاب:56] فالأفضل أن تقرن الصلاة والسلام سوياً استجابةً لله عز وجل فهذا هو المجزئ في صفة الصلاة عليه الصلاة والسلام.
وعن أبي محمد بن عجرة قال: خرج علينا النبي فقلت: يا رسول الله قد علمنا كيف نسلم عليك فكيف نصلي عليك؟ فقال: { قولوا اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل ابراهيم إنك حميد مجيد } [متفق عليه].
وعن أبي حميد الساعد قال: قالوا يا رسول الله كيف نصلي عليك؟ قال: { قولوا اللهم صل على محمد وعلى أزواجه وذريته كما صليت على إبراهيم، وبارك على محمد وعلى أزواجه كما باركت على إبراهيم، إنك حميد مجيد } [متفق عليه].
وفي هذين الحديثين دلالة على الصفة الكاملة للصلاة على النبي .
এ ভ্রমণে নবীজী দোযখের ভয়াবহতা, বেহেস্তের সুখসহ অনেক কিছু অবলোকন করলেন। অতঃপর আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় পৌঁছলেন। এ সময় আল্লাহ্তায়ালা এবং তাঁর ফেরেস্তারা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে দরুদ পাঠ করলেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি আল্লাহ্ তা'য়ালার দরুদ শরীফ পাঠ করার অর্থ হল, ফেরেশতাদের সম্মুখে তাঁর প্রশংসা করা এবং ফেরেশতাদের দরুদ পাঠ করার অর্থ হল, হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উচ্চ মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হওয়ার জন্য দোয়া করা। (বোখারী শরীফ)
নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় দুই ধনুক পরিমাণ ব্যবধানে বসে আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলে উম্মতের জন্য একমাস রোজা ও পাঁচওয়াক্ত নামাজে ফরজ নির্ধারণ করলেন।
আলাপের এক পর্যায়ে আল্লাহ্পাক নবীজীকে বললেন, ''হে পেয়ারে হাবীব, আমি জানি এবং আমার ফেরেস্তারা আপনার শুভাগমনের সম্মানার্থে হাদীয়া স্বরূপ আপনার ওপর দরুদ ও সালাম পাঠ করেছে। আপনি আমার জন্য হাদীয়া স্বরূপ কী এনেছেন?''
উত্তরে নবীজী যা বললেন, তার ভাবার্থ হল, হে রাব্বুল আলামীন! আপনার প্রতি হাদীয়া স্বরূপ আমার সাধ্যে আনার মত কিইবা আছে! তবে আমি আপনার জন্য যা এনেছি তা হল আমার উম্মতের পাপরাশি। নবীজীর এ জবাব পেয়ে আল্লাহ্ পাক খুব সন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, 'আপনি আপনার উম্মতদের আপনার উপর দরুদ এবং সালাম পাঠ করতে বলুন, যে উম্মত আপনার উপর একবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি রাব্বুল আলামীন তার প্রতি দশবার দরুদ ও সালাম পাঠ করবো। তার আমলনামা থেকে দশটি গুনাহ কেটে দেবো এবং তথায় দশটা নেকি দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তাছাড়া তার মর্যাদা দশধাপ উঁচু করবো।''
এরপরও আল্লাহর আরশে মোয়াল্লায় আমাদের প্রিয় নবী রাহমাতালি্লল আলামীন হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের নাজাত চিন্তায় অত্যন্ত ব্যথাতুর হয়ে উঠেন। তা দর্শনে আল্লাহ্ পাক সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ''প্রিয় হাবীব! আপনি এত ব্যথাতুর হচ্ছেন কেন? আপনার উম্মতের যে কোনো দোয়া আমি কবুল করে নেব যদি তারা তার সাথে দরুদ শরীফ বেঁধে দেয়।'' (ইবনে মাযাহা শরীফ)।
তাই আল্লাহ্ পাক পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করে হুকুম করলেন, 'ইন্নাল লাহা ওয়া মালাইকাতাহু ইউছাল্লুনা আলান নাবীই, ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু ছাল্লু আলাইহি ওয়াসাল্লামু তাছলীমা।''
''নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ্) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁহার উপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর।'' (পবিত্র কোরআন-২২ পারা, সূরা আহ্যাব- রুকু-৭, আয়াত-৫৬)।
মেরাজ থেকে আসার পর হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখে সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু কোরআনের এ আয়াত শুনে হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আরয করলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল, আপনার প্রতি সালাম পেশের বিধানতো আমরা ইতোপূর্বে শিখিয়াছি। কিন্তু আপনার উপর দরুদ পাঠের কি বিধান তাতো আমাদের জানা নেই।''
তখন হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
এই রূপে পাঠ করিবে_
আল্লাহুম্মা ছলি্লআলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও
ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন
কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা
ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম
ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
এ দরুদ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাক জবান হতে তৈরি। অতএব, এ দরুদ সব দরুদের সেরা দরুদ, যা দরুদে ''ইব্রাহীম'' নামে খ্যাত।
আল্লাহ্ পাকের ওয়াদার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করতে হয়, হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির পর থেকেই জান্নাতে অবস্থান করেছিলেন। আল্লাহ পাকের একটি হুকুম অমান্য করে গুনাহগার হওয়ার কারণে তাঁরা দুনিয়াতে নিক্ষিপ্ত হন। হযরত আদম (আ.) ছিটকে পড়েন স্বরন্দীপ বা সিংহল বর্তমান শ্রীলংকায়। আর হযরত হাওয়া (আঃ) পড়েন লোহিত সাগরের পূর্ব পাড়ে আরবের জিদ্দায়। তাঁরা স্বীয় গুনার জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে পাগলের মত পরস্পরকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এভাবে প্রায় ৩০০ বছর কান্নাকাটির পর আরবের আরাফাতের ময়দানে তাঁদের মিলন বা সাক্ষাৎ হয়। এ সময় একদিন সুবহে সাদেকের সময় হযরত আদম আলাইহি ওয়াছাল্লাম-এর স্মরণ হয়, বেহেস্তে থাকাকালীন আল্লাহ্ পাকের আরশে মোয়াল্লায় তিনি লেখা দেখেছিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।'' তখন তিনি আরাফাতের ময়দানের এক কোণে অবস্থিত একটি পাহাড়ে গিয়ে দু'রাকাত নামাজ পড়লেন এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে এ বলে কান্নাকাটি করতে থাকলেন, ''হে আল্লাহ্ বেহেস্তে থাকাকালীন তোমার আরশে মোয়াল্লায় তোমার নামের সাথে একটি নাম মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুক্ত দেখেছিলাম, সে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আমাদের গুনাহ মার্জনা করে দোয়া কবুল কর। বলে আল্লাহ্ পাকের দরবারে কান্নাকাটি করে দোয়া পাঠ করতে থাকেন, রাব্বানা যালাম্না আন্ফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগ্ফিরলানা ওয়া তারহ্বামনা লানাকূনান্না মিনাল খা-সিরীন।'' তখন আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় এবং সাথে তাঁদের গুনাহ মার্জনা করে দেওয়া হয়। আর তখন থেকে এ পাহাড়ের নাম হয় জাবালে রহমত (রহমতের পাহাড়)।
এখানে অনুধাবন করার বিষয় হল, যে পবিত্র নামের উছিলায় বা বরকতে আল্লাহ্ পাক হযরত আদম এবং হাওয়া আলাইহিওছাল্লাম-এর গুনাহ মাফ করে দোয়া কবুল করেছিলেন; সেই নামের উপর দোয়া ও সালাম ভেজার ফজিলত বা মর্তবা বা সৌভাগ্য যে কত বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া আল্লাহ্পাক এবং তাঁর ফেরেস্তারা যে কাজ করে থাকেন তার চাইতে অতি উত্তম ফজিলত পূর্ণ কাজ কীইবা হতে পারে!
হযরত রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে একরামের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হওয়ার প্রার্থনা করার নাম দরুদ। দরুদ শরীফ ইবাদতের একটি বিশেষ অঙ্গ। দরুদ শরীফ সহকারে কোনো ইবাদত না করলে উহা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ফরমাইয়াছেন, ''দোয়া আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে ঝুলন্ত রহিয়া যায়, তুমি তোমার নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ না করা পর্যন্ত উহার (অর্থাৎ দোয়া) কিছুই উপরে উঠে না।'' (তিরমিযী)
কোর্ট ফি ও সনদপ্রাপ্ত উকিল-ব্যারিস্টারের সই ছাড়া যেমন সাধারণ লোকের কোনো আরজি হাকীমের এজলাসে গ্রহণীয় হয় না, তেমনি সব হাকীমের হাকীম আল্লাহর দরবারেও কোর্ট ফি ও সনদপ্রাপ্ত ব্যক্তির সুপারিশ ছাড়া কোনো ইবাদত ও দোয়া কবুল হয় না। এখানে এই কোর্ট ফি হচ্ছে দরুদ শরীফ, আর সনদপ্রাপ্ত সুপারিশকারী হচ্ছেন আল্লাহর পেয়ারে হাবীব আমাদের প্রিয় নবী রাহমাতালি্লল আলামীন হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এই জন্য প্রত্যেক প্রকার দোয়া ও মুনাজাতের পূর্বে দরুদ শরীফ পড়া উচিত। আর আগে পরে পড়তে পারলে অতি উত্তম।
নামাজ হচ্ছে সব ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত। যেহেতু কোনো ইবাদত দরুদ শরীফ ছাড়া পরিপূর্ণ হয় না, তাই নামাজকে পরিপূর্ণ করার জন্য নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহুদের শেষে দরুদে ইব্রাহীম জুড়ে দেওয়া হয়েছে। দরুদ ইবাদত ও দোয়াকে আল্লাহর দরবারে পৌঁছে দেয়।
আমাদের কর্মদোষে অনেক সময় ইবাদত ও দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হতে পারে না; কিন্তু দরুদ শরীফ অর্থাৎ তাঁর প্রিয়তম মাহবুব-এর প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষণের দোয়া তিনি অবশ্য অতিসাদরে গ্রহণ করেন। ফলে দরুস শরীফের সাথে ইবাদত ও অন্যান্য দোয়াও কবুল না হয়ে পারে না।
রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''আমার প্রতি দরুদ শরীফ পাঠ করিলে কোয়ামতের দিন তাহার জন্য সুপারিশ করা আমার জন্য ওয়াজেব হইয়া যায়।
রাসূলে পাক এরশাদ করেন, ''যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ্ পাক তার উপর দশটি রহমত অবতীর্ণ করবেন। (মেশকাত শরীফ)
আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, হযরত রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ প্রেরণ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাহার প্রতি দশবার রহমত নাযিল করবেন এবং তাহার দশটি গোনাহ মাফ করা হবে, আর তাহার মর্যাদা দশগুণ উচ্চ করা হবে। (নাসায়ী শরীফ)
হযরত আবু দারদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন যে, রাসূলে করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমার উম্মতের যে কোনো লোক যদি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ্ পাক তার প্রতি দশটি রহমত নাজিল করেন, দশটি উচ্চ মর্যাদা দান করন, আমলনামায় দশটি নেকি লেখা হয় এবং দশটি গুনাহ মাফ করে দেন। (নাসায়ী শরীফ)
হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার কবরের নিকট আমার উপর দরুদ পাঠ করবে, আমি তা শুনবো, আর যে ব্যক্তি আমার উপর গায়েবানা (অর্থাৎ দূরে থেকে) দরুদ পাঠ করবে, তা আমার নিকট পৌঁছে দেয়া হবে। (বায়হাকী)
হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''আল্লাহ্ তায়ালার বহু ফেরেশতা যমীনে ভ্রাম্যমাণ রয়েছে, যারা আমার নিকট আমার উম্মতের পক্ষ থেকে তাদের সালাম পৌঁছে দেয়। (নাসায়ী ও দারমী)।
হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আরও বর্ণনা করেন, মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''কোনো ব্যক্তি দরুদ শরীফ পড়া মাত্র একজন ভ্রাম্যমাণ ফেরেশতা আমার দরবারে উপনীত হয়ে খবর দেয়, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! অমুকের সন্তান অমুক আপনার উপর এত মোর্তবা দরুদ শরীফ পাঠ করেছেন। অমনি আমি ও তার ওপর ঠিক তত মোর্তবা দরুদ পাঠ করি। অতঃপর সেই ফেরেশতা আল্লাহর দরবারে আরজি পেশ করে- হে মাবুদ! অমুকের সন্তান অমুক আপনার হাবীবের ওপর এত মর্তবা দরুদ পাঠ করেছেন। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ্ পাক তাকে জানিয়ে দেন, ''উত্তম কিরামান ও কাতেবীনকে বলে দাও, তার প্রত্যেক মোর্তবা দরুদ পাঠের পরিবর্তে যেন তার আমলনামা থেকে দশটি করে গোনাহ্ কেটে দেয় এবং আমার তরফ থেকে প্রত্যেক কাটা স্থানে দশটি করে নেকী লিখে রাখে।'' (মুয়াত্তা শরীফ)
হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''সেই ব্যক্তি কৃপণ, যার সম্মুখে আমার নাম উল্লেখ হয়, অথচ সে আমার নামে দরুদ পাঠ করে না। (তিরমিযী)
হযরত আবু দাররা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ''যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা আমার ওপর দশবার দরুদ পড়বে সে কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে। (তাবারানী)
এক হাদীসে উল্লেখ আছে, একদা রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে বসেছিলেন। এ সময় চারজন প্রধান ফেরেশতা এসে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় দেখে প্রশ্ন করলেন, ''হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কী চিন্তা করছেন? রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''আমার উম্মতের চিন্তা করছি, কীভাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে জান্নাতে নেওয়া যায়। এই কথা শুনে প্রথম ফেরেশতা আজরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''আপনার ওই উম্মত যে সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার আপনার প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি মৃত্যুর সময় তার জান সম্মান ও ইজ্জতের সাথে সহজে কবজ করব। দ্বিতীয় ফেরেশতা ইসরাফিল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনার যে উম্মত সকাল-সন্ধ্যা দশবার করে আপনার উপর দরুদ ও সালাম ভেজবে, আমি তার জন্য হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের নিচে সেজদারত অবস্থায় তার জন্য গুনাহ মাফির জন্য প্রার্থনা করব এবং প্রার্থনা কবুল না হওয়া পর্যন্ত সেজদা থেকে মাথা তুলব না। তৃতীয় ফেরেশতা মিকাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনার যে উম্মত প্রাতে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার আপনার প্রতি দরুদ ও সালাম জানাবে, আমি হাশরের ময়দানে তাকে নিজ হাতে হাউজে কাউসারের পানি পান করাব। চতুর্থ ফেরেশতা জিব্রাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাহু ধরে বললেন, অনুরূপ দরুদ পাঠকারীকে আমি এভাবে পুলসিরাত পার করে জান্নাতে পৌঁছে দেবো। (মাওয়াহের লুদ্নী)
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো ব্যক্তি ওযু করে আদবের সাথে বসে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করলে, আল্লাহ্তায়ালা তাহার ওপর দশবার দরুদ শরীফ পাঠ করেন। যদি আমার ওপর কেউ দশবার দরুদ পাঠ করেন তবে আল্লাহ্তায়ালা তার ওপর একশতবার দরুদ পাঠ করেন। কেউ একশত বার আমার ওপর দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ্পাক তার উপর একহাজার বার দরুদ শরীফ পাঠ করেন এবং তার জন্য বেহেশত হালাল ও দোযখ হারাম করে দেন। (মুসলিম শরীফ)
হযরত ইবনে মাস্উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উপর সর্বাধিক দরুদ পাঠকারী কিয়ামতের দিন লোকদের মধ্যে আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে। (তিরমিযী)
হযরত উবাই ইবনে কা'ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদা আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আপনার নামে অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করি; অতএব দরুদ পাঠের জন্য আমি কতটুকু সময় নির্দিষ্ট করব?
আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''যতটুকু তুমি চাও। আমি বললাম, ''এক চতুর্থাংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''যতটুকু তুমি চাও; আর যদি আরও বেশি কর, তবে তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, অর্ধেক সময়? আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও' আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম_ তবে দুই তৃতীয়াংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, আমি আপনার উপর দরুদ পাঠের জন্য আমার সমুদয় সময় নির্দিষ্ট করব। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে তোমার যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার দ্বীন ও দুনিয়ার সকল উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে আর তোমার সমস্ত গোনাহ্ মাফ হবে। (তিরমিযী)
রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সুপারিশের পূর্বে কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না কিন্তু যারা আমার ওপর সব সময় দরুদ শরীফ পাঠ করেছে, তারা আমার সুপারিশের পূর্বেই জান্নাতে চলে যাবে। তাদের জন্য আমার কিছুমাত্র সুপারিশের প্রয়োজন হবে না। (মুসলিম শরীফ)।
পবিত্র কোরআন শরীফ, হাদীস শরীফ ও বিভিন্ন ইসলাম ধর্মীয় গ্রন্থসমূহে দরুদ শরীফ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অনেক প্রকার দরুদ শরীফ আছে, যার প্রত্যেকটির মোর্তবা বা ফজিলত বা সৌভাগ্য ভিন্ন ভিন্ন। ইমাম ইব্নে কাইয়ূ্যম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু-এর মতে, দরুদ শরীফ পাঠে কম-বেশি চলি্লশ প্রকার মোর্তবা বা ফজিলত বা সৌভাগ্য রয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, দরুদ শরীফ পাঠে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। সর্বাবিধ বিপদ-আপদ দূরীভূত হয়। দেহ রোগমুক্ত থাকে। স্বাস্থ্য অটুট হয়। হায়াত বৃদ্ধি পায়। যাবতীয় অভাব-অভিযোগ মোচন হয়। ইহকাল এবং পরকালের কল্যাণসহ দ্বীন-দুনিয়ার সকল মক্বসূদ হাসিল হয়। নিয়মিত বেশি বেশি দরুদ পাঠকারীর হাশরের মাঠে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুপারিশ প্রাপ্তি ও মুক্তি লাভের আশা করা যায়। দরুদ শরীফ পাঠের সর্বাপেক্ষা স্বাদের ও মধুর বিশেষত্ব এই যে, দরুদ শরীফ পাঠের উছিলায় পাঠক উন্নতির পথে অগ্রসর হয়। তার সমগ্র জীবনের সকল প্রকার গুনাহ্ মাফ হয়ে যায় এবং স্বপ্নযোগে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দীদার নছিব হয়। অর্থাৎ জিয়ারত বা দর্শন লাভ হয়। আর সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তির জন্য দোযখ হারাম এবং বেহেস্ত অনিবার্য হয়ে যায়।
দরুদ শরীফের ফজিলত সমপর্কিত ৪০ হাদীস
الحديث الأول عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال قال رسول {1}
الله " من صلى علي صلت عليه
الملائكة ومن صلت عليه الملائكة صلى الله عليه ومن صلى الله عليه لم يبق شيءفي السموات ولا في
الأرض إلا صلى عليه
{2} " الحديث الثاني قال رسول الله " من صلى علي صلاة واحدة أمر الله حافظيه أن
لا يكتبا عليه ذنبا ثلاثة أيام
"
الحديث الثالث قال رسول الله " من صلى علي مرة خلق الله من قوله ملكا { 3}
له جناحان جناح بالمشرق وجناح بالمغرب رأسه وعنقه تحت العرش وهو يقول اللهم صل على عبدك
ما دام يصلي على نبيك
"
الحديث الرابع قال رسول الله " من صلى علي مرة صلى الله عليه بها عشرا {4}
ومن صلى علي عشرا صلى الله عليه بها مائة ومن صلى علي مائة صلى الله عليه بها ألفا ومن صلى
على الفا لم يعذبه الله بالنار
"
الحديث الخامس قال رسول الله " من صلى علي مرة كتب الله له عشر {5}
حسنات ومحا عنه عشر سيئات ورفع له عشر درجات
"
الحديث السادس قال رسول الله " أتاني جبريل{6}
يوما وقال يا محمد جئتك ببشارة لم آت بها أحدا من قبلك وهي أن الله تعالى يقول لك
من صلى عليك من أمتك ثلاث مرات غفر الله له إن كان قائما قبل أن يقعد وإن كان قاعدا غفر له قبل
أن يقوم فعند ذلك خر ساجدا لله شاكرا "
الحديث السابع قال رسول الله " من صلى علي في الصباح{7}
عشرا محيت عنه ذنوب أربعين سنة "
الحديث الثامن قال رسول الله " من صلى علي ليلة الجمعة أو{8}
يوم الجمعة مائة مرة غفر الله له خطئيته ثمانين سنة "
الحديث التاسع قال رسول الله " من صلى علي { 9}
ليلة الجمعة أو يوم الجمعة مائة مرة قضى الله له مائة حاجة ووكل الله به ملكا حين يدفن في قبره
يبشره كما يدخل أحدكم على أخيه بالهدية "
الحديث العاشر قال رسول الله " من صلى علي في يوم {10}
مائة مرة قضيت له في ذلك اليوم مائة حاجة "
الحديث الحادي عشر قال رسول الله " أقربكم مني {11}
مجلسا أكثركم علي صلاة "
الحديث الثاني عشر قال رسول الله " من صلى علي ألف مرة بشر بالجنة{ 12 }
قبل موته "
الحديث الثالث عشر قال رسول الله " جاءني جبريل عليه السلام وقال لي يا رسول الله لا { 13 }
يصلي عليك أحد إلا ويصلى عليه سبعون ألفا من الملائكة
"
الحديث الرابع عشر قال رسول الله {14 }
"
الدعاء بعد الصلاة علي لا يرد "
الحديث الخامس عشر قال رسول الله " الصلاة علي نور على الصراط{ 15}
وقال لا يلج النار من يصلي علي
الحديث السادس عشر قال رسول الله " من جعل عبادته الصلاة { 16}
علي قضى الله له حاجة الدنيا والآخرة "
الحديث السابع عشر قال رسول الله " من نسي الصلاة علي أخطأ طريق الجنة "{ 17 }
الحديث الثامن عشر } { 18 }
قال رسول الله " إن لله ملائكة في الهواء بأيديهم قراطيس من نور لا يكتبون إلا الصلاة علي وعلى أهل
بيتي "
الحديث التاسع عشر قال رسول الله " لو أن عبدا جاء يوم القيامة بحسنات أهل الدنيا ولم تكن { {1 { }
فيها الصلاة علي ردت عليه ولم تقبل منه "
{ }
الحديث العشرون قال رسول الله " أولى الناس بي أكثره1
علي صلاة "
الحديث الحادي والعشرون قال رسول الله من صلى علي في كتاب ما لم تزل الملائكة
تصلي عليه لم يندرس اسمي من ذلك الكتاب "
الحديث الثاني والعشرون قال رسول الله إن لله ملائكة
سياحين في الأرض يبلغوني الصلاة علي من أمتي فأستغفر لهم
الحديث الثالث والعشرون قال رسول
الله من صلى علي كنت شفيعه يوم القيامة ومن لم يصل علي فأنا برئ منه "
الحديث الرابع والعشرون
قال رسول الله يؤمر بقوم إلى الجنة فيخطئون الطريق قالوا يا رسول الله ولم ذاك قال سمعوا اسمي ولم
يصلوا علي "
الحديث الخامس والعشرون قال رسول الله يؤمر برجل إلى النار فأقول ردوه إلى الميزان
فأضع له شيئا كالأنملة معي في ميزانه وهو الصلاة علي فترجح ميزانه وينادي سعد فلان
الحديث
السادس والعشرون قال رسول الله ما اجتمع قوم في مجلس ولم يصل علي فيه إلا تفرقوا كقوم تفرقوا
عن ميت ولم يغسلوه
الحديث السابع والعشرون قال رسول الله " إن الله تعالى وكل بقبري ملكا أعطاه
أسماء الخلائق كلها فلا يصلي علي أحد إلى يوم القيامة إلا بلغني اسمه وقال رسول الله إن فلان بن
فلانة صلى عليك
الحديث الثامن والعشرون عن أبي بكر الصديق رضي الله تعالى عنه أنه قال الصلاة على النبي أمحى
للذنوب من الماء لسواد اللوح
الحديث التاسع والعشرون قال رسول الله إن الله تعالى أوحى إلى موسى
عليه السلام أن أردت أن أكون إليك أقرب من كلامك إلى لسانك ومن روحك لجسدك فأكثر الصلاة على
النبي الأمي
الحديث الثلاثون قال رسول الله إن ملكا أمره الله تعالى باقتلاع مدينة غضب عليها فرحمها
ذلك الملك ولم يبادر إلى اقتلاعها فغضب الله عليه وأكسر أجنحته فمر به جبريل عليه السلام فشكا له
حاله فسأل الله فيه فأمره أن يصلي على النبي فصلى عليه فغفر الله له ورد عليه أجنحته ببركة الصلاة
على النبي
الحديث الحادي والثلاثون عن عائشة رضي الله تعالى عنها قالت من صلى على رسول الله
عشر مرات وصلى ركعتين ودعا الله تعالى تقبل صلاته وتقضى حاجته ودعاؤه مقبول غير مردود
الحديث الثاني والثلاثون عن زيد بن حارثة قال سألت رسول الله عن الصلاة عليه فقال صلوا علي
واجتهدوا في الدعاء وقولوا اللهم صل على محمد وعلى آل محمد
الحديث الثالث والثلاثون عن أبي
هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلوا علي فإن صلاتكم علي زكاة لكم واسألوا الله لي
الوسلية
الحديث الرابع والثلاثون عن سهل بن سعد الساعدي أن النبي قال لا صلاة لمن لم يصل على
نبيه
الحديث الخامس والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله رغم أنف رجل
ذكرت عنده فلم يصلي علي
الحديث السادس والثلاثون عن ابن عباس رضي الله تعالى عنهما قال قال
رسول الله من قال جزى الله عنا محمدا خيرا وجزى الله نبينا محمدا بما هو أهله فقد أتعب كاتبيه
******* ----------------------------------*****************
الحديث السابع والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله لا تجعلوا بيوتكم قبورا
وصلوا علي فإن صلاتكم تبلغني حيثما كنتم
الحديث الثامن والثلاثون عن أبي هريرة رضي الله تعالى
عنه قال قال رسول الله ما من أحد يصلي علي إلا رد الله علي روحي حتى أرد عليه
الحديث التاسع
والثلاثون قال رسول الله أقربكم مني منزلا يوم القيامة أكثركم علي صلاة
الحديث الأربعون نقل الشيخ
كمال الدين الدميري رحمه الله تعالى عن شفاء الصدور لابن سبع أن النبي قال من سره أن يلقى الله
وهو عليه راض فليكثر من الصلاة علي فإنه من صلى علي في كل يوم خمسمائة مرة لم يفتقر أبدا
وهدمت ذنوبه ومحيت خطاياه ودام سروره واستجيب دعاؤه وأعطي أمله وأعين على عدوه وعلى
أسباب الخير وكان ممن يرافق نبيه في الجنان
اللهم صل على سيد المرسلين وخاتم النبيين ورسول رب العالمين سيدنا محمدصلى الله عليه وسلم
أسأ ل الله ان ان يجمعنا واياكم مع النبي صلى الله عليه وسلم في الفردوس الاعلى من الجنة
وأسأله ان يكون هذا العمل خالصآ لوجهه اللهم امين
والسسسسسلام
كيفية الصلاة والتسليم على النبي :
******************************************************
======================================
قال الله تعالى: إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيماً [الأحزاب:56] فالأفضل أن تقرن الصلاة والسلام سوياً استجابةً لله عز وجل فهذا هو المجزئ في صفة الصلاة عليه الصلاة والسلام.
وعن أبي محمد بن عجرة قال: خرج علينا النبي فقلت: يا رسول الله قد علمنا كيف نسلم عليك فكيف نصلي عليك؟ فقال: { قولوا اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل ابراهيم إنك حميد مجيد } [متفق عليه].
وعن أبي حميد الساعد قال: قالوا يا رسول الله كيف نصلي عليك؟ قال: { قولوا اللهم صل على محمد وعلى أزواجه وذريته كما صليت على إبراهيم، وبارك على محمد وعلى أزواجه كما باركت على إبراهيم، إنك حميد مجيد } [متفق عليه].
وفي هذين الحديثين دلالة على الصفة الكاملة للصلاة على النبي .
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন