| ||||
লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ১৫ জানুয়ারী ২০১৩, দুপুর ১২:২৮
| ||||
আদ্ দোয়ায়ু মুখ্ খুল্ এবাদহ্ , দোয়াই হলো এবাদতের মূল , বা অন্য রেওয়ায়েতে আদ্ দোয়ায়ু হুয়াল্ এবাদাহ্ , দোয়াই এবাদত ৷ সুতরাং দোয়াই এবাদত , আর এবাদতই দোয়া ৷কাজেই আমাদের মানবজাতীর জন্য এ দুটোর বিকল্প নেই ৷
হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রভু তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ আর আমি হচ্ছি তোমার বান্দা এবং আমি আমার সাধ্য-মত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করি। আমার প্রতি তোমার নিয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহ-খাতা স্বীকৃতি করছি। অতএব, তুমি আমাকে মাফ করে দাও নিশ্চয়ই তুমি ভিন্ন আর কেউ গুনাহ মার্জনাকারী নেই। কোনো কোনো সময় দোয়া কবুল হয় না। কেননা দোয়াকারী এমন কিছু চান যা তার জন্যে আদৌ কল্যাণকর নয়। অনেক সময় দোয়াকারী নিজেই অনুধাবন করেন যে, তিনি দোয়ার মাধ্যমে যা প্রার্থনা করেছিলেন তা ভুল ছিল। 'যেমন: কোনো অসুস্থ ব্যক্তি অথবা ছোট শিশু এমন কোনো খাদ্যের আবেদন করে যা তার জন্যে ক্ষতিকর, অথচ সে তা বোঝে না।' সুতরাং এমন অবস্থায় আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন না। নিম্নে দোয়া কবুল না হওয়ার কিছু কারণ উল্লেখ করা হল: { ১ } হারাম অর্থ দ্বারা জীবনধারণ করা , যেমন চুরি, ডাকাতি, সুদ,ঘোষ, ওজনে কম, ও দূনীতি, চাঁদা বাজি , ফেরকাবজি , পরের হক্ব নষ্ট , অংশীদারদের বঞ্চিত করন , কুফরী শীরকী ও বেদআতী কর্মকান্ডের মাধ্যমে উপার্জীত রোজগার আবশ্যই হারাম , এ রকম উপার্জীত টাকা দিয়ে কেনা খাদ্য দ্রব্য কাপড- চোপড ইত্যদি পরে হাজারো নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাত, তাবলীগি ইজতেমায় গিয়ে দোয়া করলে ঐ দোয়া আল্লাহ কখনো কবুল করবেন না ৷ দোয়া একপ্রকার এবাদত। এবাদত ক বুল হওয়ার শর্ত হচ্ছে হারাম থেকে দূরে থাকা। অনুরূপভাবে দোয়া কবুলের জন্যেও শর্ত হচ্ছে হারাম ভক্ষণ না করা। আল্লাহ তাআলা হাদিসে কুদসিতে বলেন: তোমার দায়িত্ব হলো দোয়া করা। আর আমার দায়িত্ব হলো কবুল করা। হারাম ভক্ষণকারীর দোয়া ব্যতীত অন্য কোনো দোয়াই পর্দার আড়ালে থাকে না। ২- আল্লাহর নির্ধারিত নিয়ম-কানুনের বাইরে চাওয়া , দোয়ার মাধ্যমে এমন কিছু চাওয়া ঠিক নয় যা আল্লাহর নির্ধারিত নিয়মের বহির্ভূত। 'যেমন, গাছ রোপণ না করেই ফলের জন্যে দোয়া করা। বিবাহ না করে সন্তানের দোয়া করা ' এ ধরনের দোয়া প্রাকৃতিক নিয়মের বহির্ভূত। কাজেই তা কবুল হওয়ার আশা রাখা আদৌ যুক্তিসংগত নয়। ৩- নিষ্ঠুরতা ও নির্দয়তা কঠোর, নির্মম, নির্দয় ও নিষ্ঠুরদের দোয়া আল্লাহর নিকট কবুল হয় না। এ প্রকৃতির মানুষ অহংকারী হয়ে থাকে। ইখলাসের সহিত আল্লাহকে ডাকে না। নির্দয় মানুষের মনকে আল্লাহ তাআলা পাথর কিংবা তার চেয়েও শক্ত বলে ঘোষণা করেছেন: ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُمْ مِنْ بَعْدِ ذلِكَ فَهِيَ كَالْحِجارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً وَ إِنَّ مِنَ الْحِجارَةِ لَما يَتَفَجَّرُ مِنْهُ الْأَنْهارُ وَ إِنَّ مِنْها لَما يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ الْماءُ وَ إِنَّ مِنْها لَما يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ وَ مَا اللَّهُ بِغافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُون এর (ঘটনার) পরও তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল, তা পাথর অথবা তদপেক্ষা কঠিন! পাথরের মধ্যে কতক এমনও আছে যা থেকে নদী-নালা প্রবাহিত হয়। আর কতক এমনও আছে যা বিদীর্ণ হওয়ার পর তা থেকে পানি নির্গত হয়। আবার কতক এমনও আছে যা আল্লাহর ভয়ে ধ্বসে পড়ে! আর আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে বেখবর নন। (সুরা: আল্ বাকারা, ৭৪।) { ৪ ] দোয়া কবুলে কল্যাণ না থাকা , যেসব দোয়ায় বান্দার কল্যাণ থাকেনা সেসব দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন না। আল্লাহ তাআলা তাঁর মনোনীত ও অমনোনীত উভয় বান্দাদের পার্থিব কল্যাণ দান করেন। কিন্তু আখেরাতের কল্যাণ শুধুমাত্র মনোনীত বান্দাদের দান করেন। মোমিন ব্যক্তি স্বীয় অজান্তে পার্থিব জীবনে এমন কিছু চেয়ে থাকেন যা তার জন্যে অকল্যাণকর। সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাকে তা দেন না। অপরপক্ষে পারলৌকিক জীবনের জন্যে যা চান তাই দেন। আর কাফেরদেরকে পার্থিব জীবনে যা চায় তা চাওয়ার পূর্বেই দিয়ে থাকেন, কিন্তু বেহেস্তে তাদেরকে কিছুই দেবেন না। (বিহারুল আনওয়ার, খঃ ৬৯, পৃঃ ৫২) ৫- অন্যের প্রতি অত্যাচার করা অন্যের হক নষ্ট করা এবং অন্যের প্রতি জুলুম-অত্যাচার করা, দোয়া কবুল না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। আল্লাহ তাআলা অত্যাচারীদের সাহায্য করেন না। وَ الظَّالِمُونَ ما لَهُمْ مِنْ وَلِيٍّ وَ لا نَصير জালিমদের কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। (সুরা: আশ শুরা, ৮।) আমিরুল মোমেনিন হজরত আলী রাঃ বলেন: আল্লাহ তাআলা হজরত ইসা(আঃ) প্রতি এমর্মে ওহি নাজিল করেন যে, হে ইসা! বনিইসরাইলকে বলেন, "যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আমার কোনো একটি প্রাণীর প্রতিও জুলুম করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমিও তাদের কোনো দোয়া কবুল করব না!" (এদ্দাতুদ্ দায়ি, অধ্যায়, ৩।) ৬- গোনাহে লিপ্ত হওয়া আল্লাহর নিকট বান্দা এমন কিছু চেয়ে দোয়া করে যে, যদি তাকে সেটা দেওয়া হয় তাহলে পরবর্তীতে সে উক্ত বস্তুর মাধ্যমে গোনাহে লিপ্ত হবে। এ কারণে আল্লাহ তাআলা ফেরেস্তাদের বলেন: 'তার চাহিদা পূরণ করো না! কেননা সে গুনাহের দিকে অগ্রসর হবে।' এ কারণে আমার পক্ষ থেকে দোয়া গ্রহণ হতে বঞ্চিত করা হয়েছে। (বিহারুল আনওয়ার, খঃ ৬৯, পৃঃ ৫২।) তাছাডা একদিন ইব্রাহিম ইবনে আদহাম (মৃত্য: ১৬২ হিজরী) (রাহিমাহুল্লাহ) বসরা শহরের একটি বাজারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকজন তার পাশে সমবেত হয়ে জিজ্ঞাস করল: হে আবু ইসহাক ! আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা কুরআনে বলেন: “আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব” কিন্তু আমরা অনেক প্রার্থনা করার পরও আমাদের দোয়া কবুল হচ্ছেনা। সে (ইব্রাহিম) বললেন, “ওহে বসরার অধিবাসী, দশটি ব্যাপারে তোমাদের অন্তর মরে গেছে"।
প্রথম: তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে অবগত কিন্তু তার প্রদত্ত কর্তব্যসমূহ পালন কর না;
দ্বিতীয়: তোমরা কুরআন পড় কিন্তু সে অনুযায়ী আমল কর না; তৃতীয়: তোমরা দাবী কর যে রাসূলুল্লাহ -সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ভালবাস কিন্তু তার সুন্নাহকে পরিত্যাগ কর; চতুর্থ: তোমরা নিজেদেরকে শয়তানের শত্রু হিসাবে দাবী কর কিন্তু তোমরা তার পদাংক অনুসরন কর; পঞ্চম: তোমার জান্নাতে যেতে উদগ্রীব কিন্তু তার জন্য পরিশ্রম কর না; ষষ্ঠ: তোমরা জাহান্নামের ভয়ে আতঙ্কিত কিন্তু পাপের ম্যাধমে প্রতিনিয়ত তার নিকটবর্তী হচ্ছ; সপ্তম: তোমরা স্বীকার কর মৃত্য অনিবার্য কিন্তু তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত কর না; অষ্টম: তোমরা সর্বদা অন্যর দোষ বের করতে সচেষ্ট কিন্তু নিজের দোষ-ত্রুটির ব্যাপারে উদাসীন; নবম: তোমারা আল্লাহ’র অনুগ্রহ উপভোগ কর কিন্তু তার জন্য শুকরিয়া আদায় কর না; দ্বাদশ: তোমরা মৃতদেহ’র দাফন সম্পন্ন করার পর তার থেকে শিক্ষা গ্রহন কর না। সুত্র: আবু নুয়াইম, হিলিইয়া আল-আউলিয়া ৮:১৫,১৬ |
আমার এ ব্লগে সকল দর্শকদের জানাই আন্তরীক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা . উক্ত ব্লগে শুধু মাত্র কুরআন হাদীসের আলোকে ইসলামী মূল্যবোধের উপর বিশদ আলোচনা করা হবে , দর্শকদের যে কোন যূক্তি ও গঠন মূলক মনতব্য সাদরে গ্রহন করা হবে , ধন্যবাদন্তে--======================== এম,এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া
Translate
রবিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৩
দোয়া কবুল না হওয়ার কারন ১৬ টি ,এবং দোয়া কবুলের হওয়ার সময় 20 টি
| ||||
লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ১৫ জানুয়ারী ২০১৩, দুপুর ১২:২৮
| ||||
40 হাদীস বাংলা অনুবাদ সহ
الحديث الأول
" إنما الأعمال بالنيات "
عَنْ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ أَبِي حَفْصٍ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ:
" إنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إلَى مَا هَاجَرَ إلَيْهِ" .
رَوَاهُ إِمَامَا الْمُحَدِّثِينَ أَبُو عَبْدِ اللهِ مُحَمَّدُ بنُ إِسْمَاعِيل بن إِبْرَاهِيم بن الْمُغِيرَة بن بَرْدِزبَه الْبُخَارِيُّ الْجُعْفِيُّ [رقم:1]، وَأَبُو الْحُسَيْنِ مُسْلِمٌ بنُ الْحَجَّاج بن مُسْلِم الْقُشَيْرِيُّ النَّيْسَابُورِيُّ [رقم: 1907 ] رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي "صَحِيحَيْهِمَا" اللذِينِ هُمَا أَصَحُّ الْكُتُبِ الْمُصَنَّفَةِ.
হাদীস - ১ " إنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إلَى مَا هَاجَرَ إلَيْهِ" .
رَوَاهُ إِمَامَا الْمُحَدِّثِينَ أَبُو عَبْدِ اللهِ مُحَمَّدُ بنُ إِسْمَاعِيل بن إِبْرَاهِيم بن الْمُغِيرَة بن بَرْدِزبَه الْبُخَارِيُّ الْجُعْفِيُّ [رقم:1]، وَأَبُو الْحُسَيْنِ مُسْلِمٌ بنُ الْحَجَّاج بن مُسْلِم الْقُشَيْرِيُّ النَّيْسَابُورِيُّ [رقم: 1907 ] رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي "صَحِيحَيْهِمَا" اللذِينِ هُمَا أَصَحُّ الْكُتُبِ الْمُصَنَّفَةِ.
আমীরুল মু'মিনীন আবু হাফস্ উমার বিন আল-খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন-
আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
সমস্ত কাজের ফলাফল নির্ভর করে নিয়্যতের উপর, আর প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়্যত করেছে, তাই পাবে। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্য হিজরত করেছে, তার হিজরত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের দিকে হয়েছে, আর যার হিজরত দুনিয়া (পার্থিব বস্তু) আহরণ করার জন্য অথবা মহিলাকে বিয়ে করার জন্য তার হিজরত সে জন্য বিবেচিত হবে যে জন্য সে হিজরত করেছে।
[সহীহ্ আল-বুখারীঃ ১, সহীহ্ মুসলিমঃ ১৯০৭। মুহাদ্দিসগণের দুই ইমাম আবু আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল বিন ইব্রাহীম বিন মুগীরা বিন বারদেযবাহ্ আল-বুখারী এবং আবুল হাসান মুসলিম বিন হাজ্জাজ বিন মুসলিম আল-খোশায়রী আন্-নিশাপুরী আপন আপন সহীহ্ গ্রন্থে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যা সবচেয়ে সহীহ্ গ্রন্থদ্বয় বলে বিবেচিত হয়।]
الحديث الثاني
"مجىء جبريل ليعلم المسلمين أمر دينهم"
عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْضًا قَالَ
" بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم ذَاتَ يَوْمٍ، إذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ، شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ، لَا يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ، وَلَا يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌ. حَتَّى جَلَسَ إلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم . فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إلَى رُكْبَتَيْهِ، وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخْذَيْهِ، وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنْ الْإِسْلَامِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْإِسْلَامُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَتُقِيمَ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ، وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إنْ اسْتَطَعْت إلَيْهِ سَبِيلًا. قَالَ: صَدَقْت . فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ! قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِ. قَالَ: أَنْ تُؤْمِنَ بِاَللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ. قَالَ: صَدَقْت. قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِحْسَانِ. قَالَ: أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّك تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاك. قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ السَّاعَةِ. قَالَ: مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ السَّائِلِ. قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَاتِهَا؟ قَالَ: أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ. ثُمَّ انْطَلَقَ، فَلَبِثْنَا مَلِيًّا، ثُمَّ قَالَ: يَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنْ السَّائِلُ؟. قَلَتْ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ ".
[ رَوَاهُ مُسْلِمٌ رقم: 8 ]
হাদীস - ২
এটাও উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বর্ণনা করেছেনঃ একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসেছিলাম, এমন সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয় যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদা, চুল ছিল ভীষণ কালো; তার মাঝে ভ্রমণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারে নাই। সে নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গিয়ে বসে, নিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুতে রেখে বললেনঃ "হে মুহাম্মাদ, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন"।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল, সালাত প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত আদায় কর, রমাদানে সওম সাধনা কর এবং যদি সামর্থ থাকে তবে (আল্লাহর) ঘরের হজ্জ কর।
তিনি (লোকটি) বললেনঃ "আপনি ঠিক বলেছেন"। আমরা বিস্মিত হলাম, সে নিজে তার নিকট জিজ্ঞাসা করেছে আবার নিজেই তার জবাবকে ঠিক বলে ঘোষণা করছে। এরপর বললঃ "আচ্ছা, আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন"।
তিনি (রাসূল) বললেনঃ "তা হচ্ছে এই- আল্লাহ্, তাঁর ফিরিশ্তাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ ও আখেরাত বিশ্বাস করা এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দকে বিশ্বাস করা।
সে (আগুন্তুক) বললঃ "আপনি ঠিক বলেছেন"। তারপর বললঃ "আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন"।
তিনি বলেনঃ "তা হচ্ছে এই- তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ, আর তুমি যদি তাঁকে দেখতে নাও পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন"।
সে বললঃ "আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন"।
তিনি (রাসূল) বললেনঃ "যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী কিছু জানে না"।
সে (আগন্তুক) বললঃ "আচ্ছা, তার লক্ষণ সম্পর্কে বলুন"। তিনি (রাসূল) বললেনঃ "তা হচ্ছে এই- দাসী নিজের মালিককে জন্ম দেবে, সম্পদ ও বস্ত্রহীন রাখালগণ উঁচু উঁচু প্রাসাদে দম্ভ করবে"।
তারপর ঐ ব্যক্তি চলে যায়, আর আমি আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন তিনি (রাসূল) আমাকে বললেনঃ "হে উমার, প্রশ্নকারী কে ছিলেন, তুমি কি জান? আমি বললামঃ "আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল অধিক ভাল জানেন"। তিনি বললেনঃ "তিনি হলেন জিবরীল। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন।"
[সহীহ্ মুসলিমঃ ৮]
الحديث الثالث
"بني الإسلام على خمس"
عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: سَمِعْت رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ
" بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَحَجِّ الْبَيْتِ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ، رقم : 8 وَمُسْلِمٌ ، رقم : 16]
" بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَحَجِّ الْبَيْتِ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ، رقم : 8 وَمُسْلِمٌ ، رقم : 16]
হাদীস - ৩
আবু আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ্ বিন উমার বিন আল-খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ পাঁচটি জিনিসের উপর ইসলামের বুনিয়াদ রাখা হয়েছে- সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, আল্লাহর ঘরের হজ্জ করা এবং রমাদানে সওম পালন করা।
[বুখারীঃ ৭, মুসলিমঃ ২১]
الحديث الرابع
"إن أحدكم يجمع في بطن أمه"
عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم -وَهُوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ-:
"إنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا نُطْفَةً، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يُرْسَلُ إلَيْهِ الْمَلَكُ فَيَنْفُخُ فِيهِ الرُّوحَ، وَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ: بِكَتْبِ رِزْقِهِ، وَأَجَلِهِ، وَعَمَلِهِ، وَشَقِيٍّ أَمْ سَعِيدٍ.
فَوَاَللَّهِ الَّذِي لَا إلَهَ غَيْرُهُ إنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إلَّا ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُهَا.
وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إلَّا ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا".
হাদীস - ৪
আবূ আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ্ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-যিনি সত্যবাদী ও যার কথাকে সত্য বলে মেনে নেয়া হয়-আমাদেরকে বলেছেনঃ তোমাদের সকলের সৃষ্টি নিজের মায়ের পেটে চল্লিশ দিন যাবৎ শুক্র রূপে জমা হওয়ার মাধ্যমে শুরু হতে থাকে, পরবর্তী চল্লিশ দিন জমাট বাঁধা রক্ত রূপে থাকে, পরবর্তী চল্লিশ দিন মাংসপিণ্ড রূপে থাকে, তারপর তার কাছে ফিরিশ্তা পাঠানো হয়। অতঃপর সে তার মধ্যে রূহ প্রবেশ করায় এবং তাকে চারটি বিষয় লিখে দেয়ার জন্য হুকুম দেয়া হয়- তার রুজি, বয়স, কাজ এবং সে কি সৌভাগ্যবান না দুর্ভাগ্যবান।
অতএব, আল্লাহর কসম-যিনি ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই-তোমাদের মধ্যে একজন জান্নাতবাসীর মত কাজ করে- এমনকি তার ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র এক হাত ব্যবধান থাকে, এ অবস্থায় তার ভাগ্য তার উপর প্রভাব বিস্তার করে বলে সে জাহান্নামবাসীর মত কাজ শুরু করে এবং তার ফলে তাতে প্রবেশ করে।
এবং তোমাদের মধ্যে অপর এক ব্যক্তি জাহান্নামীদের মত কাজ শুরু করে দেয়- এমনকি তার ও জাহান্নামের মধ্যে মাত্র এক হাত ব্যবধান থাকে, এ অবস্থায় তার ভাগ্য তার উপর প্রভাব বিস্তার করে বলে সে জান্নাতবাসীদের মত কাজ শুরু করে আর সে তাতে প্রবেশ করে।
[বুখারীঃ ৩২০৮, মুসলিমঃ ২৬৪৩]
الحديث الخامس
"من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد"
عَنْ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أُمِّ عَبْدِ اللَّهِ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ: رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم
"مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ , رقم: 2697، وَمُسْلِمٌ , رقم: 1718]
হাদীস - ৫
উম্মুল মু'মিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু 'আনহা হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন কোন নতুন বিষয় সংযুক্ত করবে যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখ্যাত হবে (অর্থাৎ, তা গ্রহণযোগ্য হবে না)।
[বুখারীঃ ২৬৯৭, মুসলিমঃ ১৭১৮]
মুসলিমের বর্ণনার ভাষা হলো এই যে,
যে ব্যক্তি এমন কাজ করবে যা আমাদের দ্বীনে নেই, তা গ্রহণযোগ্য হবে না (অর্থাৎ, রদ হয়ে যাবে)।
الحديث السادس
"إن الحلال بين وإن الحرام بين"
"إن الحلال بين وإن الحرام بين"
عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: سَمِعْت رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ:
"إنَّ الْحَلَالَ بَيِّنٌ، وَإِنَّ الْحَرَامَ بَيِّنٌ، وَبَيْنَهُمَا أُمُورٌ مُشْتَبِهَاتٌ لَا يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنْ النَّاسِ، فَمَنْ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ فَقْد اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ، وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ، كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يَرْتَعَ فِيهِ.
أَلَا وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى، أَلَّا وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ، أَلَّا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، وَإذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، أَلَا وَهِيَ الْقَلْبُ".
হাদীস - ৬
আবু আব্দুল্লাহ্ আন্-নোমান বিন বশীর রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ নিঃসন্দেহে হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট, আর এ দু'য়ের মধ্যে কিছু সন্দেহজনক বিষয় আছে যা অনেকে জানে না। অতএব, যে ব্যক্তি সন্দিহান বিষয় হতে নিজেকে রক্ষা করেছে; সে নিজের দ্বীনকে পবিত্র করেছে এবং নিজের সম্মানকেও রক্ষা করেছে। আর যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত বিষয়ে পতিত হয়েছে; সে হারামে পতিত হয়েছে। এবং তার অবস্থা সেই রাখালের মত যে নিষিদ্ধ চারণ ভূমির চারপাশে (গবাদি) চরায় আর সর্বদা এ আশংকায় থাকে যে, যে কোন সময় কোন পশু তার মধ্যে প্রবেশ করে চরতে আরম্ভ করবে।
সাবধান! প্রত্যেক রাজা-বাদশাহর একটি সংরক্ষিত এলাকা আছে। আর আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হচ্ছে তাঁর হারামকৃত বিষয়াদি। সাবধান! নিশ্চয়ই শরীরের মধ্যে একটি মাংসপিণ্ড আছে; যখন তা ঠিক থাকে তখন সমস্ত শরীর ঠিক থাকে, আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন গোটা দেহ নষ্ট হয়ে যায় -এটা হচ্ছে অন্তও (হৃদপিণ্ড)।
[বুখারীঃ ৫২, মুসলিমঃ ১৫৯৯]
الحديث السابع
"الدين النصيحة"
عَنْ أَبِي رُقَيَّةَ تَمِيمِ بْنِ أَوْسٍ الدَّارِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ
"الدِّينُ النَّصِيحَةُ. قُلْنَا: لِمَنْ؟ قَالَ لِلَّهِ، وَلِكِتَابِهِ، وَلِرَسُولِهِ، وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ" .
[رَوَاهُ مُسْلِمٌ , رقم: 55]
হাদীস - ৭
আবু রুকাইয়্যা তামীম বিন আওস আদ্-দারী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দ্বীন হচ্ছে শুভকামনা। আমরা জিজ্ঞেস করলামঃ কার জন্য? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্, তাঁর কিতাবের, তাঁর রাসূলের, মুসলমান নেতাদের এবং সকল মুসলমানের জন্য।
[মুসলিমঃ ৫৫]
الحديث الثامن
"أمرت أن أقاتل الناس"
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ
أُمِرْت أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ، وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ؛ فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إلَّا بِحَقِّ الْإِسْلَامِ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ تَعَالَى.
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ , رقم: 25 ، وَمُسْلِمٌ , رقم: 22]
হাদীস - ৮
আমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের সঙ্গে লড়াই করতে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল। আর তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয়। যদি তারা এরূপ করে তবে তারা আমার হাত থেকে নিজেদের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করে নেবে, অবশ্য ইসলামের হক যদি তা দাবী করে তবে আলাদা কথা; আর তাদের হিসাব নেয়ার দায়িত্ব আল্লাহর উপর ন্যস্ত।
[বুখারীঃ ২৫, মুসলিমঃ ২২]
الحديث التاسع
"ما نهيتكم عنه فاجتنبوه"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ صَخْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْت رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ
مَا نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ فَاجْتَنِبُوهُ، وَمَا أَمَرْتُكُمْ بِهِ فَأْتُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ، فَإِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَثْرَةُ مَسَائِلِهِمْ وَاخْتِلَافُهُمْ عَلَى أَنْبِيَائِهِمْ.
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ , رقم: 7288 ، وَمُسْلِمٌ , رقم: 1337]
হাদীস - ৯
আবু হোরায়রা আব্দুর রহমান বিন সাখর রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন- আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আমি তোমাদেরকে যেসব বিষয় নিষেধ করেছি, তা থেকে বিরত থাক। আর যেসব বিষয়ে আদেশ করেছি, যথাসম্ভব তা পালন কর। বেশী বেশী প্রশ্ন করা আর নবীদের সথে মত বিরোধ করা তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
[বুখারীঃ ৭২৮৮, মুসলিমঃ ১৩৩৭]
الحديث العاشر
"إن الله طيب لا يقبل إلا طيبا"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم
إنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللَّهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ فَقَالَ تَعَالَى: "يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنْ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا"، وَقَالَ تَعَالَى: "يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ.
ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إلَى السَّمَاءِ: يَا رَبِّ! يَا رَبِّ! وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِّيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لَهُ؟.
হাদীস - ১০
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা পাকপবিত্র, তাই তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই কবূল করে থাকেন। আল্লাহ্ তা'আলা মুমিনদের ঐ কাজই করার হুকুম দিয়েছেন যা করার হুকুম তিনি রাসূলদেরকে দিয়েছেন। আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেনঃ ((হে রাসূলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং নেক আমল করুন।)) আল্লাহ্ তা'আলা আরো বলেছেনঃ ((হে মুমিনগণ! আমরা তোমাদের যে পবিত্র জীবিকা দান করেছি তা থেকে আহার কর।))
তারপর তিনি (রাসূলুল্লাহ্) এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন যে ব্যক্তি দীর্ঘ সফরে বের হয় এবং তার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে ও কাপড় ধুলোবালিতে ময়লা হয়ে আছে। অতঃপর সে নিজের দুই হাত আকাশের দিকে তুলে ধরে ও বলেঃ হে প্রভু! হে প্রভু! অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোষাক হারাম, সে হারামভাবে লালিত-পালিত হয়েছে; এ অবস্থায় কেমন করে তার দো'আ কবূল হতে পারে।
[মুসিলমঃ ১০১৫]
"دع ما يريبك إلى ما لا يريبك"
عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ سِبْطِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَرَيْحَانَتِهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ:
حَفِظْت مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم "دَعْ مَا يُرِيبُك إلَى مَا لَا يُرِيبُك".
[ رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ , رقم: 2520 ، وَالنَّسَائِيّ , رقم: 5711 ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ]
হাদীস - ১১ حَفِظْت مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم "دَعْ مَا يُرِيبُك إلَى مَا لَا يُرِيبُك".
[ رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ , رقم: 2520 ، وَالنَّسَائِيّ , رقم: 5711 ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্নেহাস্পদ দৌহিত্র আবু মুহাম্মাদ হাসান বিন আলী বিন আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেনঃ
"আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে এ কথা শুনে স্মরণ রেখেছিঃ সন্দেহযুক্ত বিষয় বর্জন করে সন্দেহমুক্ত বিষয় গ্রহণ কর।"
[তিরমিযীঃ ২৫২০, নাসায়ীঃ ৫৭১১, ইমাম তিরমিযী বলেছেনঃ হাদীসটি সহীহ হাসান]
الحديث الثاني عشر
"من حسن إسلام المرء"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم :
"مِنْ حُسْنِ إسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ".
[حَدِيثٌ حَسَنٌ، رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ, رقم: 2318، ابن ماجه, رقم: 3976]
হাদীস – ১২
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"অনর্থক অপ্রয়োজনীয় বিষয় ত্যাগ করাই একজন ব্যক্তির উত্তম ইসলাম।"
[হাদীসটি হাসান। তিরমিযীঃ ২৩১৮, ইবনে মাজাহঃ ৩৯৭৬]
الحديث الثالث عشر
"لا يؤمن أحدكم حتى يحب لأخيه ما يحب لنفسه"
عَنْ أَبِي حَمْزَةَ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ خَادِمِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ:
"لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ, رقم: 13، وَمُسْلِمٌ, رقم: 45]
হাদীস – ১৩
আবু হামযাহ্ আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু 'আনহু-রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাদেম-হতে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।"
[বুখারীঃ ১৩, মুসলিমঃ ৪৫]
الحديث الرابع عشر
" لا يحل دم امريء مسلم إلا بإحدى ثلاث"
عَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم:
"لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إلَّا بِإِحْدَى ثَلَاثٍ: الثَّيِّبُ الزَّانِي، وَالنَّفْسُ بِالنَّفْسِ، وَالتَّارِكُ لِدِينِهِ الْمُفَارِقُ لِلْجَمَاعَةِ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ, رقم: 6878، وَمُسْلِمٌ, رقم: 1676]
হাদীস – ১৪
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"কোন মুসলমানের রক্তপাত করা তিনটি কারণ ব্যতীত বৈধ নয়- বিবাহিত ব্যক্তি যদি ব্যভিচার করে, আর যদি প্রাণের বদলে প্রাণ নিতে হয়, এবং যদি কেউ স্বীয় দ্বীনকে পরিত্যাগ করে মুসলিম জামা'আত হতে আলাদা হয়ে যায়।"
[বুখারীঃ ৬৮৭৮, মুসলিমঃ ১৬৭৬]
الحديث الخامس عشر
"من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليقل خيرا"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ:
"مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاَللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاَللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاَللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ, رقم: 6018، وَمُسْلِمٌ, رقم: 47]
হাদীস – ১৫
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও আখেরাতকে বিশ্বাস করে, তার হয় উত্তম কথা বলা উচিত অথবা চুপ থাকা উচিত। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও আখেরাতকে বিশ্বাস করে, আপন প্রতিবেশীর প্রতি তার সদয় হওয়া উচিত। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও আখেরাতকে বিশ্বাস করে, আপন অতিথিকে তার সম্মান করা উচিত।"
[বুখারীঃ ৬০১৮, মুসলিমঃ ৪৭]
الحديث السادس عشر
" لا تغضب"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنْ رَجُلًا قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم أَوْصِنِي. قَالَ:
لَا تَغْضَبْ، فَرَدَّدَ مِرَارًا، قَالَ: لَا تَغْضَبْ" .
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ: 6116]
হাদীস – ১৬
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল: আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেন:
রাগ করো না। লোকটি বার বার রাসূলের নিকট উপেদশ চায় আর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: রাগ করো না।
[বুখারী: ৬১১৬]
الحديث السابع عشر
"إن الله كتب الإحسان على كل شيء"
عَنْ أَبِي يَعْلَى شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ:
"إنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْإِحْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ، فَإِذَا قَتَلْتُمْ فَأَحْسِنُوا الْقِتْلَةَ، وَإِذَا ذَبَحْتُمْ فَأَحْسِنُوا الذِّبْحَةَ، وَلْيُحِدَّ أَحَدُكُمْ شَفْرَتَهُ، وَلْيُرِحْ ذَبِيحَتَهُ".
]رَوَاهُ مُسْلِمٌ: 1955]
হাদীস - ১৭
আবূ ইয়ালা শাদ্দাদ বিন আওস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সমস্ত জিনিস উত্তম পদ্ধতিতে করার বিধান করে দিয়েছেন। সুতরাং যখন তুমি হত্যা করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে আর যখন তুমি যবেহ্ করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে যবেহ্ করবে। তোমাদের প্রত্যেকের আপন ছুরি ধারালো করে নেয়া উচিত ও যে জন্তুকে যবেহ্ করা হবে তার কষ্ট লাঘব করা উচিত।
[মুসলিম: ১৯৫৫]
الحديث الثامن عشر
"اتق الله حيثما كنت"
عَنْ أَبِي ذَرٍّ جُنْدَبِ بْنِ جُنَادَةَ، وَأَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ:
"اتَّقِ اللَّهَ حَيْثُمَا كُنْت، وَأَتْبِعْ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا، وَخَالِقْ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ".
[رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ: 1987] وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ، وَفِي بَعْضِ النُّسَخِ: حَسَنٌ صَحِيحٌ.
হাদীস - ১৮
আবূ যার জুনদুব বিন জুনাদাহ্ এবং আবূ আব্দুর রহমান মু'আয বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা হতে বর্ণিত আছে, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
তুমি যেখানে যে অবস্থায় থাক না কেন আল্লাহকে ভয় কর এবং প্রত্যেক মন্দ কাজের পর ভাল কাজ কর, যা তাকে মুছে দেবে; আর মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার কর।
[তিরমিযী: ১৯৮৭, এবং (তিরমিযী) বলেছেন যে, এটা হচ্ছে হাসান হাদীস। কোন কোন সংকলনে এটাকে সহীহ্ (হাসান) বলা হয়েছে।]
الحديث التاسع عشر
"احفظ الله يحفظك"
عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ:
"كُنْت خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَوْمًا، فَقَالَ: يَا غُلَامِ! إنِّي أُعَلِّمُك كَلِمَاتٍ: احْفَظْ اللَّهَ يَحْفَظْك، احْفَظْ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَك، إذَا سَأَلْت فَاسْأَلْ اللَّهَ، وَإِذَا اسْتَعَنْت فَاسْتَعِنْ بِاَللَّهِ، وَاعْلَمْ أَنَّ الْأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوك بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوك إلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَك، وَإِنْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوك بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوك إلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْك؛ رُفِعَتْ الْأَقْلَامُ، وَجَفَّتْ الصُّحُفُ".
[رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ: 2516] وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
وَفِي رِوَايَةِ غَيْرِ التِّرْمِذِيِّ: "احْفَظْ اللَّهَ تَجِدْهُ أمامك، تَعَرَّفْ إلَى اللَّهِ فِي الرَّخَاءِ يَعْرِفُك فِي الشِّدَّةِ، وَاعْلَمْ أَنَّ مَا أَخْطَأَك لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَك، وَمَا أَصَابَك لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَك، وَاعْلَمْ أَنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبْرِ، وَأَنْ الْفَرَجَ مَعَ الْكَرْبِ، وَأَنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا".
হাদীস - ১৯
আবূ আব্বাস আব্দুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু বর্ণনা করেছেন- একদিন আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পিছনে ছিলাম, তিনি আমাকে বললেন: "হে যুবক! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শেখাবো- আল্লাহকে স্মরণ করবে তো তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন, আল্লাহকে স্মরণ করলে তাঁকে তোমার সামনেই পাবে। যখন কিছু চাইবে তো আল্লাহর কাছেই চাইবে; যখন সাহায্য চাইবে তো আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে। জেনে রাখ, সমস্ত মানুষ যদি তোমার কোন উপকার করতে চায় তবে আল্লাহ্ তোমার জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, তা ব্যতীত আর কোন উপকার করতে পারবে না। আর যদি সমস্ত মানুষ তোমার কোন অনিষ্ট করতে চায় তবে আল্লাহ্ তোমার জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তা ব্যতীত আর কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং পৃষ্ঠা শুকিয়ে গেছে।"
[তিরমিযী: ২৫১৬, হাদীসটি সহীহ্ (হাসান) বলেছেন।]
তিরমিযী ছাড়া অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে:
"আল্লাহকে স্মরণ করবে তো তাঁকে তোমার সম্মুখে পাবে, তুমি স্বচ্ছল অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করবে তো তিনি তোমাকে কঠিন অবস্থায় স্মরণ করবেন। মনে রেখো- যা তুমি পেলে না, তা তোমার পাবার ছিল না, আর যা তুমি পেলে তা তুমি না পেয়ে থাকতে না। আরো জেনে রাখো- ধৈর্য্য ধারণের ফলে (আল্লাহর) সাহায্য লাভ করা যায়। কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ আসে। কঠিন অবস্থার পর স্বচ্ছলতা আসে।"
الحديث العشرون
"إذا لم تستح فاصنع ما شئت"
عَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ عُقْبَةَ بْنِ عَمْرٍو الْأَنْصَارِيِّ الْبَدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم:
"إنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلَامِ النُّبُوَّةِ الْأُولَى: إذَا لَمْ تَسْتَحِ فَاصْنَعْ مَا شِئْت".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ: 3483].
হাদীস - ২০
আবূ মাসউদ উকবাহ্ বিন আমর আল-আনসারী আল-বদরী রাদিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত হয়েছে- তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
"অতীতের নবীগণের কাছ থেকে মানুষ একথা জানতে পেরেছে- যদি তোমার লজ্জা না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা তাই কর।"
[বুখারী: ৩৪৮৩]
"قل آمنت بالله ثم استقم"
عَنْ أَبِي عَمْرٍو وَقِيلَ: أَبِي عَمْرَةَ سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ:
"قُلْت: يَا رَسُولَ اللَّهِ! قُلْ لِي فِي الْإِسْلَامِ قَوْلًا لَا أَسْأَلُ عَنْهُ أَحَدًا غَيْرَك؛ قَالَ: قُلْ: آمَنْت بِاَللَّهِ ثُمَّ اسْتَقِمْ".
[رَوَاهُ مُسْلِمٌ: 38]
হাদীস - ২১
আবূ আমরকে আবূ আমরাহ্ও বলা হয়- সুফিয়ান বিন আব্দুল্লাহ্ হতে বর্ণনা করেছেন-
আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন কিছু বলে দিন যেন আপনাকে ব্যতীত আর কারো কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন না হয়। তিনি বললেন: বল- 'আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি'; তারপর এর উপর দৃঢ় থাক।"
[মুসলিম: ৩৮]
الحديث الثاني والعشرون
"أرأيت إذا صليت المكتوبات وصمت رمضان"
عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْأَنْصَارِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا:
"أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ: أَرَأَيْت إذَا صَلَّيْت الْمَكْتُوبَاتِ، وَصُمْت رَمَضَانَ، وَأَحْلَلْت الْحَلَالَ، وَحَرَّمْت الْحَرَامَ، وَلَمْ أَزِدْ عَلَى ذَلِكَ شَيْئًا؛ أَأَدْخُلُ الْجَنَّةَ؟ قَالَ: نَعَمْ".
[رَوَاهُ مُسْلِمٌ: 15]
হাদীস – ২২
আবূ আব্দুল্লাহ্ জাবের বিন আব্দুল্লাহ্ আল-আনসারী (রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা) হতে বর্ণিত হয়েছে-
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে জিজ্ঞাসা করলেন: আপনি কি মনে যদি আমি ফরয নামায আদায় করি, রমযানে রোযা রাখি, হালালকে হালাল বলে ও হারামকে হারাম বলে ঘোষণা করি এবং এর সঙ্গে কোন কিছু না জুড়ে দেই, তাহলে কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো? তিনি বললেন: হাঁ।
[মুসলিম: ১৫]
الحديث الثالث والعشرون
"االطهور شطر الإيمان"
عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْحَارِثِ بْنِ عَاصِمٍ الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم:
"الطَّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ، وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَآنِ -أَوْ: تَمْلَأُ- مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، وَالصَّلَاةُ نُورٌ، وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ، وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ، وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَك أَوْ عَلَيْك، كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو، فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا".
[رَوَاهُ مُسْلِمٌ: 223]
হাদীস - ২৩
আবূ মালেক আল-হারেস বিন আসেম আল-আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
"পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক; আল-হামদুলিল্লাহ্ (সমস্ত প্রশংসা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য) পাল্লা পরিপূর্ণ করে দেয় এবং সোবহান আল্লাহ্ (আল্লাহ্ পবিত্র) ও আল-হামদুলিল্লাহ্ (সমস্ত প্রশংসা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য) উভয়ে অথবা এর একটি আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে যা আছে তা পূর্ণ করে দেয়। নামায হচ্ছে আলো, সাদকা হচ্ছে প্রমাণ, সবর উজ্জ্বল আলো, আর কুরআন তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ। প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আত্মার ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে সকাল শুরু করে- আর তা হয় তাকে মুক্ত করে দেয় অথবা তাকে ধ্বংস করে দেয়।"
[মুসলিম: ২২৩]
الحديث الرابع والعشرون
"يا عبادي إني حرمت الظلم على نفسي"
عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فِيمَا يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى، أَنَّهُ قَالَ:
"يَا عِبَادِي: إنِّي حَرَّمْت الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي، وَجَعَلْته بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا؛ فَلَا تَظَالَمُوا. يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ ضَالٌّ إلَّا مَنْ هَدَيْته، فَاسْتَهْدُونِي أَهْدِكُمْ. يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ جَائِعٌ إلَّا مَنْ أَطْعَمْته، فَاسْتَطْعِمُونِي أُطْعِمْكُمْ. يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ عَارٍ إلَّا مَنْ كَسَوْته، فَاسْتَكْسُونِي أَكْسُكُمْ. يَا عِبَادِي! إنَّكُمْ تُخْطِئُونَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا؛ فَاسْتَغْفِرُونِي أَغْفِرْ لَكُمْ. يَا عِبَادِي! إنَّكُمْ لَنْ تَبْلُغُوا ضُرِّي فَتَضُرُّونِي، وَلَنْ تَبْلُغُوا نَفْعِي فَتَنْفَعُونِي. يَا عِبَادِي! لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ، مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْئًا. يَا عِبَادِي! لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ، مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي شَيْئًا. يَا عِبَادِي! لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ، فَسَأَلُونِي، فَأَعْطَيْت كُلَّ وَاحِدٍ مَسْأَلَته، مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِمَّا عِنْدِي إلَّا كَمَا يَنْقُصُ الْمِخْيَطُ إذَا أُدْخِلَ الْبَحْرَ. يَا عِبَادِي! إنَّمَا هِيَ أَعْمَالُكُمْ أُحْصِيهَا لَكُمْ، ثُمَّ أُوَفِّيكُمْ إيَّاهَا؛ فَمَنْ وَجَدَ خَيْرًا فَلْيَحْمَدْ اللَّهَ، وَمَنْ وَجَدَ غَيْرَ ذَلِكَ فَلَا يَلُومَن إلَّا نَفْسَهُ".
[رَوَاهُ مُسْلِمٌ: 2577]
হাদীস - ২৪
আবূ যর আল-গিফারী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বরকতময় ও সুমহান রবের নিকট হতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ্ বলেছেন:
"হে আমার বান্দাগণ! আমি যুলুমকে আমার জন্য হারাম করে দিয়েছি, আর তা তোমাদের মধ্যেও হারাম করে দিয়েছি; অতএব তোমরা একে অপরের উপর যুলুম করো না।
হে আমার বান্দাগণ! আমি যাকে হেদায়াত দিয়েছি সে ছাড়া তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট। সুতরাং আমার কাছে হেদায়াত চাও, আমি তোমাদের হেদায়াত দান করব।
হে আমার বান্দাগণ! আমি যাকে অন্ন দান করেছি, সে ছাড়া তোমরা সকলেই ক্ষুধার্ত। সুতরাং তোমরা আমার নিকট খাদ্য চাও, আমি তোমাদের খাদ্য দান করব।
হে আমার বান্দাগণ! তোমরা সবাই বিবস্ত্র, সে ব্যতীত যাকে আমি কাপড় পরিয়েছি। সুতরাং আমার কাছে বস্ত্র চাও, আমি তোমাদেরকে বস্ত্রদান করব।
হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাতদিন গোনাহ্ করছ, আর আমি তোমাদের গোনাহ্ ক্ষমা করে দেই। সুতরাং আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব।
হে আমার বান্দাগণ! তোমরা কখনোই আমার ক্ষতি করার সামর্থ রাখ না যে আমার ক্ষতি করবে আর তোমরা কখনোই আমার ভালো করার ক্ষমতা রাখ না যে আমার ভালো করবে।
হে আমার বান্দাগণ! তোমরা পূর্বাপর সকল মানুষ ও জিন যদি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মোত্তাকী ও পরহেযগার ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তবে তা আমার রাজত্বে কিছুই বৃদ্ধি করবে না।
আমার বান্দাগণ! তোমাদের পূর্বাপর সকল মানুষ ও জিন যদি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে পাপী ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তবে তা আমার রাজত্বে কিছুই কমাতে পারবে না।
হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের পূর্বের ও তোমাদের পরের সকলে, তোমাদের সমস্ত মানুষ ও তোমাদের সমস্ত জিন যদি সবাই একই ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার কাছে চায় এবং আমি সকলের চাওয়া পূরণ করে দেই তবে আমার নিকট যা আছে তাতে সমুদ্রে এক সুঁই রাখলে যতটা কম হয়ে যায় তা ব্যতীত আর কিছু কম হতে পারে না।
হে আমার বান্দাগণ! আমি তোমাদের আমলকে (কাজকে) তোমাদের জন্য গণনা করে রাখি, আর আমি তার পুরোপুরি প্রতিফল দিয়ে দেব। সুতরাং যে ব্যক্তি উত্তম প্রতিফল পাবে তার আল্লাহর প্রশংসা করা উচিত, আর যে তার বিপরীত পাবে তার শুধু নিজেকেই ধিক্কার দেয়া উচিত।"
[মুসলিম: ২৫৭৭]
الحديث الخامس والعشرون
"ذهب أهل الدثور بالأجور"
عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْضًا،
"أَنَّ نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالُوا لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالْأُجُورِ؛ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ أَمْوَالِهِمْ. قَالَ: أَوَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا تَصَّدَّقُونَ؟ إنَّ بِكُلِّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةً، وَكُلِّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةً، وَكُلِّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةً، وَكُلِّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةً، وَأَمْرٌ بِمَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ، وَنَهْيٌ عَنْ مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ، وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ. قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ؟ قَالَ: أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ وِزْرٌ؟ فَكَذَلِكَ إذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلَالِ، كَانَ لَهُ أَجْرٌ".
[رَوَاهُ مُسْلِمٌ: 1006]
হাদীস - ২৫
আবূ যর রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহর কিছু সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন:
"হে আল্লাহর রাসূল! বিত্তবান লোকেরা প্রতিফল ও সওয়াবের কাজে এগিয়ে গেছে। আমরা নামায পড়ি তারাও সেরকম নামায পড়ে, আমরা রোযা রাখি তারাও সেরকম রোযা রাখে, তারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ সদকা করে।
তিনি বলেন: আল্লাহ্ কি তোমাদের জন্য এমন জিনিস রাখেননি যে তোমরা সদকাহ্ দিতে পার। প্রত্যেক তাসবীহ্ (সোবহান আল্লাহ্) হচ্ছে সদকাহ্, প্রত্যেক তাকবীর (আল্লাহু আকবার) হচ্ছে সদকাহ্, প্রত্যেক তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ্) হচ্ছে সদকাহ্, প্রত্যেক তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) হচ্ছে সদকাহ্, প্রত্যেক ভালো কাজের হুকুম দেয়া হচ্ছে সদকাহ্ এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত করা হচ্ছে সদকাহ্। আর তোমাদের প্রত্যেকে আপন স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও হচ্ছে সদকাহ্।
তারা জিজ্ঞাসা করেন: হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে কেউ যখন যৌন আকাঙ্খা সহকারে স্ত্রীর সাথে সম্ভোগ করে, তাতেও কি সওয়াব হবে?
তিনি বলেন: তোমরা কি দেখ না, যখন সে হারাম পদ্ধতিতে তা করে, তখন সে গোনাহ্গার হয় কি না! সুতরাং অনুরূপভাবে যখন সে ঐ কাজ বৈধভাবে করে তখন সে তার জন্য প্রতিফল ও সওয়াব পাবে।"
[মুসলিম: ১০০৬]
الحديث السادس والعشرون
"كل سلامى من الناس عليه صدقة"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم:
"كُلُّ سُلَامَى مِنْ النَّاسِ عَلَيْهِ صَدَقَةٌ، كُلَّ يَوْمٍ تَطْلُعُ فِيهِ الشَّمْسُ تَعْدِلُ بَيْنَ اثْنَيْنِ صَدَقَةٌ، وَتُعِينُ الرَّجُلَ فِي دَابَّتِهِ فَتَحْمِلُهُ عَلَيْهَا أَوْ تَرْفَعُ لَهُ عَلَيْهَا مَتَاعَهُ صَدَقَةٌ، وَالْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ، وَبِكُلِّ خُطْوَةٍ تَمْشِيهَا إلَى الصَّلَاةِ صَدَقَةٌ، وَتُمِيطُ الْأَذَى عَنْ الطَّرِيقِ صَدَقَةٌ".
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ: 2989، وَمُسْلِمٌ: 1009]
হাদীস - ২৬
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"প্রত্যেহ যখন সূর্য উঠে মানুষের (শরীরের) প্রত্যেক গ্রন্থির সাদকাহ্ দেয়া অবশ্য কর্তব্য। দু'জন মানুষের মাঝে ইনসাফ দেয়া হচ্ছে সাদকাহ্, কোন আরোহীকে তার বাহনের উপর আরোহন করতে বা তার উপর বোঝা উঠাতে সাহায্য করা হচ্ছে সাদকাহ্, ভাল কথা হচ্ছে সাদকাহ্, সালাতের জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপ হচ্ছে সাদকাহ্ এবং কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরানো হচ্ছে সাদকাহ্।"
[বুখারী: ২৯৮৯, মুসলিম: ১০০৯]
الحديث السابع والعشرون
"البر حسن الخلق"
عَنْ النَّوَّاسِ بْنِ سَمْعَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: "الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ، وَالْإِثْمُ مَا حَاكَ فِي صَدْرِك، وَكَرِهْت أَنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ" رَوَاهُ مُسْلِمٌ [رقم:2553]. وَعَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: أَتَيْت رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ: "جِئْتَ تَسْأَلُ عَنْ الْبِرِّ؟ قُلْت: نَعَمْ. فقَالَ: استفت قلبك، الْبِرُّ مَا اطْمَأَنَّتْ إلَيْهِ النَّفْسُ، وَاطْمَأَنَّ إلَيْهِ الْقَلْبُ، وَالْإِثْمُ مَا حَاكَ فِي النَّفْسِ وَتَرَدَّدَ فِي الصَّدْرِ، وَإِنْ أَفْتَاك النَّاسُ وَأَفْتَوْك" .
حَدِيثٌ حَسَنٌ، رَوَيْنَاهُ في مُسْنَدَي الْإِمَامَيْنِ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ [رقم:4/227]، وَالدَّارِمِيّ [2/246] بِإِسْنَادٍ حَسَنٍ.
হাদীস - ২৭
আন-নওয়াস বিন সাম'আন রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
"উত্তম চরিত্র হচ্ছে নেকী, আর গোনাহ্ তাকে বলে যা তোমার মনকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে এবং তা লোকে জানুক তা তুমি অপছন্দ কর।"
[মুসলিম: ২৫৫৩]
ওয়াবেসা বিন মা'বাদ রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন:
আমি একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলে তিনি আমাকে বললেন: "তুমি কি নেকী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছ?"
আমি বলি: জী হাঁ।
তিনি বললেন: "নিজের মনকে জিজ্ঞাসা কর; যা সম্পর্কে তোমার আত্মা ও মন আশ্বস্ত থাকে তা হচ্ছে নেকী, আর গোনাহ্ হচ্ছে তা যা যদিও লোক (তার স্বপক্ষে) ফাতাওয়া দিয়ে দেয় তবুও তোমার আত্মাকে অশ্বস্তিতে রাখে ও মনে সংশয় সৃষ্টি করে।"
[-এটি হচ্ছে হাসান হাদীস যা আমি দুই ইমাম আহমদ বিন হাম্বল ও আদ্-দারেমীর মুসনাদ থেকে উৎকৃষ্ট সদনে উদ্ধৃত করেছি।]
الحديث الثامن والعشرون
"أوصيكم بتقوى الله وحسن الخلق"
عَنْ أَبِي نَجِيحٍ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: "وَعَظَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَوْعِظَةً وَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ، وَذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ، فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ! كَأَنَّهَا مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَأَوْصِنَا، قَالَ: أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ، وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإِنْ تَأَمَّرَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ، فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ فَسَيَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا، فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيينَ، عَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ؛ فَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ".
رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ [رقم:4607]، وَاَلتِّرْمِذِيُّ [رقم:266] وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
হাদীস - ২৮
আবূ নাজ্জীহ্ আল-'ইরবাদ বিন সারিয়াহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন:
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বক্তৃতায় আমাদের উপদেশ দান করেন যাতে আমাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে ও আমাদের চোখে পানি এসে যায়।
আমরা নিবেদন করি: হে আল্লাহর রাসূল! মনে হচ্ছে বিদায়কালীন উপদেশ; আপনি আমাদেরকে অসীয়াত করুন।
তিনি বললেন: "আমি তোমাদের মহান আল্লাহকে ভয় করতে অসীয়াত করছি, আর আনুগত্য দেখাতে অসীয়াত করছি; যদি কোন গোলামও তোমাদের আমীর হয় তবুও। তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা অনেক মতবিরোধ দেখবে; সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের পদ্ধতি মেনে চল, তা দাঁত দিয়ে (অর্থাৎ, খুব শক্তভাবে) ধরে রাখ; আর অভিনব বিষয় সম্পর্কে সাবধান থাক, কারণ প্রত্যেক অভিনব বিষয় হচ্ছে বিদ'আত, প্রত্যেক বিদ'আত হচ্ছে গোমরাহী এবং প্রত্যেক গোমরাহীর পরিণাম হচ্ছে জাহান্নামের আগুন।"
[-আবূ দাউদ(৪৬০৭) ও তিরমিযী(২৬৬) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, এটা সহীহ্ (হাসান) হাদীস।]
الحديث التاسع والعشرون
"تعبد الله لا تشرك به شيئا"
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قُلْت يَا رَسُولَ اللَّهِ! أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ وَيُبَاعِدْنِي مِنْ النَّارِ، قَالَ: "لَقَدْ سَأَلْت عَنْ عَظِيمٍ، وَإِنَّهُ لَيَسِيرٌ عَلَى مَنْ يَسَّرَهُ اللَّهُ عَلَيْهِ: تَعْبُدُ اللَّهَ لَا تُشْرِكْ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيمُ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَتَصُومُ رَمَضَانَ، وَتَحُجُّ الْبَيْتَ، ثُمَّ قَالَ: أَلَا أَدُلُّك عَلَى أَبْوَابِ الْخَيْرِ؟ الصَّوْمُ جُنَّةٌ، وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ الْمَاءُ النَّارَ، وَصَلَاةُ الرَّجُلِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ، ثُمَّ تَلَا: " تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ " حَتَّى بَلَغَ "يَعْمَلُونَ"، ثُمَّ قَالَ: أَلَا أُخْبِرُك بِرَأْسِ الْأَمْرِ وَعَمُودِهِ وَذُرْوَةِ سَنَامِهِ؟ قُلْت: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ: رَأْسُ الْأَمْرِ الْإِسْلَامُ، وَعَمُودُهُ الصَّلَاةُ، وَذُرْوَةُ سَنَامِهِ الْجِهَادُ، ثُمَّ قَالَ: أَلَا أُخْبِرُك بِمَلَاكِ ذَلِكَ كُلِّهِ؟ فقُلْت: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ! فَأَخَذَ بِلِسَانِهِ وَقَالَ: كُفَّ عَلَيْك هَذَا. قُلْت: يَا نَبِيَّ اللَّهِ وَإِنَّا لَمُؤَاخَذُونَ بِمَا نَتَكَلَّمُ بِهِ؟ فَقَالَ: ثَكِلَتْك أُمُّك وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ عَلَى وُجُوهِهِمْ -أَوْ قَالَ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ- إلَّا حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ؟!" .
رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ [رقم:2616] وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
হাদীস - ২৯
মু'আয বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন:
আমি নিবেদন করি: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কাজ বলুন যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দেবে।
তিনি বললেন: তুমি এক বৃহৎ বিষয়ে প্রশ্ন করেছ। এটা তার জন্য খুবই সহজ আল্লাহ্ যার জন্য সহজ করে দেন। তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করো না, নামায প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত দাও, রমযানে রোযা রাখ এবং (কা'বা) ঘরে হজ্জ কর।
তারপর তিনি বলেন: আমি কি তোমাদের কল্যাণের দরজা দেখাব না? রোযা হচ্ছে ঢাল, সাদকাহ্ গোনাহেক নিঃশেষ করে দেয় যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়; আর কোন ব্যক্তির গভীর রাতের নামায।
তারপর তিনি পড়েন: تتجافي جنوبهم عن المضاجع হতে يعلمون পর্যন্ত। যার অর্থ হলো: তারা শয্যা পরিত্যাগ করে তাদের রবকে ভয়ে ও আশায় ডাকে এবং আমরা তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। তাদের কর্মের জন্য যে চক্ষু শীতলকারী প্রতিফল রক্ষিত আছে তা তাদের কেউই জানে না। [সূরা আস্-সাজদাহ্: ১৬-১৭]
তিনি আবার বলেন: আমি তোমাদের কর্মের মূল এবং তার স্তম্ভ ও তার সর্বোচ্চ চূড়া বলবো কি?
আমি নিবেদন করি: হে আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই বলুন।
তিনি বললেন: কর্মের মূল হচ্ছে ইসলাম, তার স্তম্ভ হচ্ছে নামায এবং তার সর্বোচ্চ চূড়া হচ্ছে জিহাদ।
তারপর তিনি বলেন: আমি কি তোমাকে এসব কিছু আয়ত্তে রাখার জিনিস বলবো না?
আমি নিবেদন করি: হে আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই বলুন।
তিনি নিজের জিভ ধরে বললেন: এটাকে সংযত কর।
আমি জিজ্ঞেস করি: হে আল্লাহর নবী! আমরা যা বলি তার হিসাব হবে কি?
তিনি বললেন: তোমার মা তোমাকে হারাক, হে মু'আয! জিভের উৎপন্ন ফসল ব্যতীত আর কিছু এমন আছে কি যা মানুষকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করে।
[তিরমিযী: ২৬১৬ এবং তিনি বলেছেন: এটা হাসান (সহীহ্) হাদীস।]
الحديث الثلاثون
"إن الله تعالى فرض فرائض فلا تضيعوها"
عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيِّ جُرْثُومِ بن نَاشِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَال: "إنَّ اللَّهَ تَعَالَى فَرَضَ فَرَائِضَ فَلَا تُضَيِّعُوهَا، وَحَدَّ حُدُودًا فَلَا تَعْتَدُوهَا، وَحَرَّمَ أَشْيَاءَ فَلَا تَنْتَهِكُوهَا، وَسَكَتَ عَنْ أَشْيَاءَ رَحْمَةً لَكُمْ غَيْرَ نِسْيَانٍ فَلَا تَبْحَثُوا عَنْهَا".
حَدِيثٌ حَسَنٌ، رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ ["في سننه" 4/184]، وَغَيْرُهُ.
হাদীস - ৩০
আবূ সা'লাবাহ্ আল-খুশানী জুরসূম বিন নাশির রাদিয়াল্লাহু 'আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা'আলা ফরযসমূহকে অবশ্য পালনীয় করে দিয়েছেন, সুতরাং তা অহবেলা করো না। তিনি সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, সুতরাং তা লঙ্ঘন করো না। এবং কিছু জিনিস হারাম করেছেন, সুতরাং তা অমান্য করো না। আর তিনি কিছু জিনিসের ব্যাপারে নিরবতা অবলম্বন করেছেন-তোমাদের জন্য রহমত হিসেবে; ভুলে গিয়ে নয়-সুতরাং সেসব বিষয়ে বেশী অনুসন্ধান করো না।"
[হাদীসটি হাসান (সহীহ্), আদ্-দারেকুতনী: ৪/১৮৪ ও অন্যান্য কয়েকজন বর্ণনা করেছেন।]
الحديث الحادي والثلاثون
"ازهد في الدنيا يحبك الله"
عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ! دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إذَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِي اللَّهُ وَأَحَبَّنِي النَّاسُ؛ فَقَالَ: "ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبُّك اللَّهُ، وَازْهَدْ فِيمَا عِنْدَ النَّاسِ يُحِبُّك النَّاسُ" .
[حديث حسن، رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ، رقم: 4102، وَغَيْرُهُ بِأَسَانِيدَ حَسَنَةٍ]
হাদীস - ৩১
আবুল আব্বাস সাহল বিন সা'দ আস্-সা'ইদী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন:
"এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হয়ে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কাজ বলুন যা করলে আল্লাহ্ আমাকে ভালবাসেন, লোকেরাও আমাকে ভালবাসে।
তখন তিনি বললেন: দুনিয়ার প্রতি অনুরাগী হবে না, তাহলে আল্লাহ্ তোমাকে ভালবাসবেন; আর মানুষের কাছে যা আছে তার ব্যাপারে আগ্রহী হবে না, তাহলে মানুষও তোমাকে ভালবাসবে।"
[ইবনে মাজাহ্: ৪১০২]
الحديث الثاني والثلاثون
"لا ضرر ولا ضرار"
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ سَعْدِ بْنِ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ الْخُدْرِيّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: " لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ" .
حَدِيثٌ حَسَنٌ، رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ [راجع رقم:2341]، وَالدَّارَقُطْنِيّ [رقم:4/228]، وَغَيْرُهُمَا مُسْنَدًا. وَرَوَاهُ مَالِكٌ [2/746] فِي "الْمُوَطَّإِ" عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مُرْسَلًا، فَأَسْقَطَ أَبَا سَعِيدٍ، وَلَهُ طُرُقٌ يُقَوِّي بَعْضُهَا بَعْضًا.
হাদীস - ৩২
আবু সাঈদ সা'দ বিন মালিক বিন সিনান আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"ক্ষতি করা উচিত নয়, আর ক্ষতির সম্মুখীন হওয়াও উচিত নয়।"
[হাদীসটি হাসান। এটিকে ইবনে মাজাহ (দেখুন হাদীস নং: ২৩৪১), আদ্-দারেকুতনী (হাদীস নং: ৪/২২৮) এবং অন্যান্যগণ মুসনাদ বলেছেন। ইমাম মালেক মুয়াত্তা গ্রন্থে (হাদীস নং: ২/৭৪৬) একে মুরসাল বলেছেন, এই সনদের সঙ্গে যে আমর বিন ইয়াহ্ইয়া নিজের পিতা হতে যিনি নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তিনি আবু সাঈদকে বাদ দিয়েছেন। তাঁর কাছে অন্য বর্ণনাকারীও আছেন যারা একে অপরকে সমর্থন করেন।]
الحديث الثالث والثلاثون
"البينة على المدعي واليمين على من أنكر "
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: "لَوْ يُعْطَى النَّاسُ بِدَعْوَاهُمْ لَادَّعَى رِجَالٌ أَمْوَالَ قَوْمٍ وَدِمَاءَهُمْ، لَكِنَّ الْبَيِّنَةَ عَلَى الْمُدَّعِي، وَالْيَمِينَ عَلَى مَنْ أَنْكَرَ" .
حَدِيثٌ حَسَنٌ، رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ [في"السنن" 10/252]، وَغَيْرُهُ هَكَذَا، وَبَعْضُهُ فِي "الصَّحِيحَيْنِ".
হাদীস - ৩৩
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
যদি মানুষকে কেবল তাদের দাবী অনুযায়ী দিয়ে দেয়া হয় তাহলে তারা অন্যের সম্পদ ও জীবন দাবী করে বসবে। তবে নিয়ম হচ্ছে দাবীদারকে প্রমাণ পেশ করতে হবে, যে অস্বীকার করবে তাকে শপথ করতে হবে।
[এ হাদীসটি হাসান। এটাকে বায়হাকী ও অন্যান্যগণ এভাবে বর্ণনা করেছেন এবং এর কিছু অংশ সহীহ্ হাদীসের অনুরূপ।]
الحديث الرابع والثلاثون
"من رأى منكم منكرا فليغيره بيده"
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْت رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ: "مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ" .
رَوَاهُ مُسْلِمٌ [رقم:49].
হাদীস - ৩৪
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"তোমাদের মধ্যে কেউ কোন অন্যায় দেখলে তা সে তার হাত দ্বারা প্রতিহত করবে, যদি তা সম্ভব না হয় তবে মুখ দ্বারা প্রতিহত করবে, তাও যদি না করতে পারে তাহলে অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করবে। আর এ হচ্ছে (অন্তর দিয়ে প্রতিহত করা) দুর্বলতম ঈমান।"
[মুসলিম: ৪৯]
الحديث الخامس والثلاثون
"لا تحاسدوا ولا تناجشوا ولا تباغضوا"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم " لَا تَحَاسَدُوا، وَلَا تَنَاجَشُوا، وَلَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، وَلَا يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إخْوَانًا، الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لَا يَظْلِمُهُ، وَلَا يَخْذُلُهُ، وَلَا يَكْذِبُهُ، وَلَا يَحْقِرُهُ، التَّقْوَى هَاهُنَا، وَيُشِيرُ إلَى صَدْرِهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنْ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ، كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ: دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ" .
رَوَاهُ مُسْلِمٌ [رقم:2564].
হাদীস - ৩৫
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-
রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের জন্য নিলাম ডেকে দাম বাড়াবে না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করবে, একে অপর থেকে আলাদা হয়ে যেও না, একজনের ক্রয়ের উপর অন্যজন ক্রয় করো না। হে আল্লাহর বান্দাগণ! পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। মুসলমান মুসলমানের ভাই, সে তার উপর যুলুম করে না এবং তাকে সঙ্গীহীন ও সহায়হীনভাবে ছেড়ে দেয় না। সে তার কাছে মিথ্যা বলে না ও তাকে অপমান করে না। তাকওয়া হচ্ছে- এখানে, তিনি নিজের বুকের দিকে তিনবার ইশারা করেন। কোন মানুষের জন্য এতটুকু মন্দ যথেষ্ট যে, সে আপন মুসলমান ভাইকে নীচ ও হীন মনে করে। এক মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও মান-সম্মান অন্য মুসলমানের জন্য হারাম।
[মুসলিম: ২৫৬৪]
الحديث السادس والثلاثون
"من نفس عن مسلم كربة"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: "مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ، يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِما سَتَرَهُ اللهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ، وَاَللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ، وَمَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إلَى الْجَنَّةِ، وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ، وَيَتَدَارَسُونَهُ فِيمَا بَيْنَهُمْ؛ إلَّا نَزَلَتْ عَلَيْهِمْ السَّكِينَةُ، وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ، وَذَكَرَهُمْ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ، وَمَنْ أَبَطْأَ بِهِ عَمَلُهُ لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ".
رَوَاهُ مُسْلِمٌ [رقم:2699] بهذا اللفظ.
হাদীস - ৩৬
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন মুমিনের দুঃখ দূর করে দেয়, আল্লাহ্ কেয়ামতের দিন তার দুঃখ দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির বিপদ দূর করে দেয়, আল্লাহ্ দুনিয়াতে ও আখেরাতে তার বিপদ দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহ্ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। যে বান্দা আপন ভাইকে সাহায্য করবে, আল্লাহ্ সে বান্দাকে সাহায্য করবেন। যে ব্যক্তি জ্ঞান লাভের জন্য রাস্তা অতিক্রম করে, আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন। যেসব লোক আল্লাহর ঘরসমূহের মধ্যে কোন ঘরে (অর্থাৎ, মসজিদে) সমবেত হবে, কুরআন পড়বে, সকলে মিলিত হয়ে তার শিক্ষা নেবে ও দেবে, তাদের উপর অবশ্যই প্রশান্তি অবতীর্ণ হবে, রহমত তাদের ঢেকে নেবে, ফিরিশ্তাগণ তাদের ঘিরে থাকবে আর আল্লাহ্ তাদের কথা এমন সকলের মধ্যে উল্লেখ করবেন যারা তাঁর কাছে উপস্থিত। যে ব্যক্তি আপন কাজে অলস তার বংশ পরিচয় তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
[মুসলিম: ২৬৯৯]
الحديث السابع والثلاثون
"إن الله كتب الحسنات والسيئات"
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فِيمَا يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى، قَالَ: "إنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ، ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ، فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ إلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ، وَإِنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً".
رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ [رقم:6491]، وَمُسْلِمٌ [رقم:131]، في "صحيحيهما" بهذه الحروف.
হাদীস - ৩৭
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রব হতে বর্ণনা করেন যে,
নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ ভাল ও মন্দ কাজকে লিখে রেখেছেন। তারপর তিনি এ ব্যাখ্যা করেন: যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য দৃঢ় সংকল্প করে কিন্তু তা সম্পন্ন করতে পারে না, তবু আল্লাহ্ তার জন্য পরিপূর্ণ নেকী লেখেন; আর দৃঢ় সংকল্প করে সে যদি তা সম্পন্ন করে তবে আল্লাহ্ নিজের কাছে তার জন্য দশ নেকী থেকে সাতশ' পর্যন্ত; বরং তার চেয়েও বেশী নেকী লেখেন। এর বিপরীত, যদি সে মন্দ কাজের সংকল্প করে কিন্তু তা কাজে পরিণত না করে, আল্লাহ্ তার জন্য পরিপূর্ণ নেকী লেখেন; কিন্তু যদি সে তার সংকল্প করে তা কাজে পরিণত করে, তবে তার জন্য একটি মন্দ কাজ লেখেন।
[বুখারী: ৬৪৯১, মুসলিম: ১৩১]
الحديث الثامن والثلاثون
"من عادى لي وليا فقد آذنته بالحرب"
عَنْ أَبِي هُرَيْرَة رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ: "مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقْد آذَنْتهُ بِالْحَرْبِ، وَمَا تَقَرَّبَ إلَيَّ عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبَّ إلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُهُ عَلَيْهِ، وَلَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ، فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْت سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ، وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا، وَلَئِنْ سَأَلَنِي لَأُعْطِيَنَّهُ، وَلَئِنْ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ".
رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ [رقم:6502].
হাদীস - ৩৮
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার কোন বন্ধুর সঙ্গে শত্রুতা করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। আমি যে দ্বীনী দায়িত্ব ফরয করেছি আমার বান্দাহ্ তা ব্যতীত অন্য কোন পছন্দসই জিনিসের দ্বারা আমার অধিক নিকটবর্তী হতে পারে না। আর আমার বান্দাহ্ নফলের সাহায্যে আমার নিকটবর্তী হতে থাকে, এমনকি আমি তাকে ভালবাসতে থাকি। সুতরাং আমি যখন তাকে ভালবাসতে থাকি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই; যা দ্বারা সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই; যার দ্বারা সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই; যার দ্বারা সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই; যার দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায় আমি অবশ্যই তাকে তা দেই। সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি তাকে অবশ্যই আশ্রয় দান করি।
[বুখারী: ৬৫০২]
الحديث التاسع والثلاثون
"إن الله تجاوز لي عن أمتي الخطأ والنسيان"
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: "إنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ" .
حَدِيثٌ حَسَنٌ، رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ [رقم:2045]، وَالْبَيْهَقِيّ ["السنن" 7
হাদীস – ৩৯
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
আমার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ আমার উম্মাতের অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি ও ভুল ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং তার সে কাজ যা সে বাধ্য হয়ে করেছে।
[এ হাদীসটি হাসান। ইবনে মাজাহ্ (নং-২০৪৫), বায়হাকী (নং-৭) ও আরো অনেকেই এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।]
الحديث الأربعون
"كن في الدنيا كأنك غريب أو عابر سبيل"
عَنْ ابْن عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بِمَنْكِبِي، وَقَالَ: "كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّك غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ". وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَقُولُ: إذَا أَمْسَيْتَ فَلَا تَنْتَظِرْ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلَا تَنْتَظِرْ الْمَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِك لِمَرَضِك، وَمِنْ حَيَاتِك لِمَوْتِك.
رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ [رقم:6416].
হাদীস – ৪০
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাঁধ ধরে বললেন:
দুনিয়াতে অপরিচিত অথবা ভ্রমণকারী মুসাফিরের মত হয়ে যাও।
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা বলতেন, সন্ধ্যা বেলা যখন তোমার সাধ্য হবে, তখন সকালের অপেক্ষা করো না। আর সকাল আসলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। অসুস্থতার পূর্বে সূস্থতার মূল্য অনুধাবন কর, আর মৃত্যুর জন্য জীবিত অবস্থায় সংগ্রহ করে নাও।
[বুখারী: ৬৪১৬]
সোমবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৩
৪৭ তম বিশ্ব এজতেমার ১ম পর্ব ছবি ব্লগ
{ ১ } দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি এবং মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি, অগ্রগতি আর দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ কামনা করে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে গতকাল ১৫/১/২০১৩ রবিবার শেষ হয়েছে তাবলীগ জামাতের ৪৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়। এ সময় লাখো লাখো মুসল্লী অশ্রুসিক্ত নয়নে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণে ব্যাকুল হয়ে পড়েন।
দীনের সত্যিকার হেদায়াত লাভ ও পরিপূর্ণ মুমীন হিসেবে নিজেদের আল্লাহর নিকট পেশ করার জজবা নিয়ে প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও মুরুব্বীগণের হৃদয়গ্রাহী বয়ান গভীর মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করেন। এসময় মুসল্লীদের এই মহতী জনসমুদ্রে বিরাজ করে সুনসান নীরবতা। দ্বীনের ওই আহ্বান সারা বিশ্বে পৌঁছে দেয়ার তামান্না নিয়ে দাওয়াতে মেহনতের কাজে নিজেদের উৎসর্গ করার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য কামনা করেন। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করে আসছেন। তাবলীগ জামাতের প্রধান শূরা সদস্য দিল্লীর হযরত মাওলানা জোবায়েরুল হাসান। তিনি এবারও আরবী ও উর্দূ ভাষায় তাৎপর্যপূর্ণ প্রথম পর্বের আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন। { ২ } দক্ষিণে খিলক্ষেত, উত্তরে বোর্ডবাজার, পূর্বে টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরী ও পশ্চিমে আশুলিয়া পর্যন্ত অন্তত ১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত বিশাল জনসমুদ্র থেকে মধ্যাহ্নের আকাশ কাঁপিয়ে ধ্বনি ওঠে ‘ইয়া আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ’। মুঠোফোনে এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তুলেছেন পরওয়ারদিগারের দরবারে। বান্দারা প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় বুক ভাসিয়েছেন। { ৩ } স্বাগতিক বাংলাদেশের ৩২ জেলার মুসল্লি ছাড়াও বিশ্বের শতাধিক দেশের কয়েক হাজার তাবলিগ অনুসারী ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন। ৪ দিন বিরতি দিয়ে আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। ওই পর্বের সমাপনী দোয়া হবে আগামী রোববার ২০/১/২০১৩ জানুয়ারি। ================== { ৪ } বিদেশী মেহমান ১৬ হাজার // এজতেমায় আগত লোক সংখ্যা বি বি সির বাস্য মতে প্রায় ৩০ লক্ষাধীক // ৯০টি দেশের মুসল্লীদের অংশ গ্রহন ================ { ৫ } এশিয়া, ইউরোপ,আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ কমপক্ষে ৯০টি দেশের তাবলীগ জামায়াতের প্রায় ১৬ হাজার বিদেশী মেহমান এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ভারত, পাকিস্তান থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশী মেহমান আগমন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তাবলীগের কাজে বের হওয়ার জন্য এবার ইজতেমা স্থলে প্রথম পর্বে প্রায় ৫ হাজার জামাত তৈরী হয়েছে বলে ইজতেমার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে এসব জামাত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন তাবলীগ সূত্র । { ৬ } এবারের প্রথম পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে ছিল সউদী আরব, ভারত, পাকিস্তান, সুইডেন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সোমালিয়া, মিশর, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা, কাতার, ইরান, ইরাক, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, লেবানন, বাহরাইন, জার্মানী, সুদান, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, নরওয়ে, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, হংকং, বেলজিয়াম ইত্যাদি। এসব বিদেশী মেহমানদের বেশীর ভাগই ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ গ্রহণ করার জন্য মাঠে থাকবেন ৷ { ৭ } প্রচারবিমুখ ইজতেমা : এবারও তাবলিগ জামাতের শীর্ষ ‘মুরব্বিরা’ রেডিও এবং টেলিভিশনে আখেরি মোনাজাত সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি দেননি। ক্যামেরায় মুরব্বিদের ছবি তোলাও বারণ করে দিয়েছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ। { ৮ } ১২ মুসল্লির মৃত্যু : ইজতেমার প্রথম পর্বের তিন দিনে ১২ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতেই মারা গেছেন ৬ জন। এরা হলেন—ভারতের কলকাতার চব্বিশ পরগনার মো. রফিক উদ্দিন (৬৩), যশোরের মনিরামপুর থানার তেঁতুলিয়া এলাকার সৈয়দ আলী খান (৭০), ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার মৈন্দা গ্রামের আলাউদ্দিন শেখ (৫০), রংপুরের খলিলুর রহমান (৮০), চাঁদপুরের উত্তর দাজদি এলাকার আবুল খায়ের পাটোয়ারী (৫৫) এবং যশোরের আনসার আলী মিস্ত্রি। মাসলেহাল জামাতের জিম্মাদার মো. আদম আলী জানান, গতকাল ফজরের নামাজের পর নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। { ৯ } তাবলিগের বিনিময় নেওয়া চলবে না: একমাত্র নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করেন এমন কোন দল বা পাটি এ পর্যন্ত আমার জানা মতে নেই এক মাত্র তাবলীগ জামাত ছাডা ৷ তারা নিজের জান মাল সময় সব কিছুই ব্যয় করে এক মাত্র আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য , তাদের এক মাত্র উদ্যেশ্যই হচ্ছে আল্লাহর পথ ভূলা মানুষ কে আল্লাহর পথে এনে আখেরাত মুখী করে দেয়া , আল্লাহর সাথে সমপর্ক করিয়ে দেয়া , কিন্তু বিনিময়ে তারা কিছুই চায়না এক মাত্র স্রষ্টার সন্তুষ্টি ৷ যেমন আললাহ বলেন ==== মানুষকে আল্লাহর তওহীদের দিকে আহ্বান করার জন্য কোনরূপ বিনিময় গ্রহণ করা সম্পূর্ণ নিষেধ। আল্লাহ তাঁর রসুলকে নির্দেশ দেন, তুমি তাদের নিকট কোন মজুরি দাবি করো না (সূরা ইউসুফ-১০৪), বল! আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না (সুরা সাদ-৮৬), নবী-রসুলদেরকে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেছেন। সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর; বল! এর জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন মজুরি চাই না। (সূরা আনআম-৯০)। মানুষকে তওহীদের দিকে আহ্বান করে প্রত্যেক নবীই বলতেন, আমি তোমাদের কাছে কোন মজুরি চাই না, আমার বিনিময় তো আল্লাহর কাছে (সূরা শুয়ারা-১৮০)। তথ্য সূত্র -: আদ্য প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকার পাতা থেকে | |
ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড : বিদেশী মেহমান ১৬ হাজার // এজতেমায় আগত লোক সংখ্যা বি বি সির বাস্য মতে প্রায় ৩০ লক্ষাধীক // ৯০টি দেশের মুসল্লীদের অংশ গ্রহন/ ১ম পর্বের ছবি
|
বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৩
বিভিন্ন প্রকারের “খতম” এর বিদা’আত সমূহ
বিভিন্ন প্রকরের “খতম” এর বিদা’আত
ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
আমাদের সমাজে বিভিন্ন প্রকারের ‘খতম’ প্রচলিত আছে। এধরনের “খতমের” নিয়ম, ফজীলত ইত্যাদির বিবরণ ‘মকসুদুল মোমিনীন’, ‘নাফেউল খালায়েক’ ইত্যাদি বিভিন্ন বইয়ে পাওয়া যায়। সাধারণত, দুটি কারণে ‘খতম’ পাঠ করা হয়:
(১) বিভিন্ন বিপদাপদ কাটানো বা জাগতিক ফল লাভ;
(২) মৃতের জন্য সাওয়াব পাঠানো।
উভয় প্রকারের খতমই ‘বানোয়াট’ ও ভিত্তিহীন। এ সকল খতমের জন্য পঠিত বাক্যগুলি অধিকাংশই খুবই ভাল বাক্য। এগুলি কুরআনের আয়াত বা সুন্নাহ সম্মত দোয়া ও যিকর। কিন্তু এগুলি এক লক্ষ বা সোয়া লক্ষ বার পাঠের কোনো নির্ধারিত ফযীলত, গুরুত্ব বা নির্দেশনা কিছুই কোনো সহীহ বা যয়ীফ হাদীসে বলা হয় নি। এ সকল ‘খতম’ সবই বানোয়াট। উপরন্তু এগুলিকে কেন্দ্র করে কিছু হাদীসও বানানো হয়েছে। ‘বিসমিল্লাহ’ খতম, দোয়া ইউনুস খতম, কালেমা খতম ইত্যাদি সবই এ পর্যায়ের। বলা হয় ‘সোয়া লাখ বার ‘বিসমিল্লাহ’ পড়লে অমুক ফল লাভ করা যায়’ বা ‘সোয়া লাখ বার দোয়া ইউনূস পাঠ করলে অমুক ফল পাওয়া যায়’ ইত্যাদি। এগুলি সবই ‘বুজুর্গ’দের অভিজ্ঞতার আলোকে বানানো এবং কোনোটিই হাদীস নয়।
তাসমিয়া বা (বিসমিলাহ), তাহলীল বা (লা ইলাহা ইলালাহ) ও দোয়া ইউনুস- এর ফযীলত ও সাওয়াবের বিষয়ে সহীহ হাদীস রয়েছে। তবে এগুলি ১ লক্ষ, সোয়া লক্ষ ইত্যাদি নির্ধারিত সংখ্যায় পাঠ করার বিষয়ে কোনো হাদীস বর্ণিত হয় নি। “খতমে খাজেগানের” মধ্যে পঠিত কিছু দোয়া সুন্নাহ সম্মত ও কিছু দোয়া বানানো। তবে পদ্ধিতিটি পুরোটাই বানানো।
এখানে আরো লক্ষণীয় যে, এ সকল খতমের কারণে সমাজে এ ধরণের “পুরোহিততন্ত্র” চালু হয়েছে। ইসলামের নির্দেশনা হলো, বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি ইউনূস (আ)-এর মতই নিজে “দুআ ইউনূস” বা অন্যান্য সুন্নাহ সম্মত দুআ পড়ে মনের আবেগে আল্লাহ্র কাছে কাঁদবেন এবং বিপদমুক্তি প্রার্থনা করবেন। একজনের বিপদে অন্যজন কাঁদবেন, এমনটি নয়। বিপদগ্রস্ত মানুষ অন্য কোনো নেককার আলিম বা বুজুর্গের নিকট দুআ চাইতে পারেন। তবে এখানে কয়েকটি বিষয় মনে রাখতে হবে:
(১) অনেকে মনে করেন, জাগতিক রাজা বা মন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে যেমন মধ্যস্থতাকারী বা সুপারিশকারীর প্রয়োজন, আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করতেও অনুরূপ কিছুর প্রয়োজন। আলিম-বুজুর্গের সুপারিশ বা মধ্যস্ততা ছাড়া আল্লাহ্র নিকট দুআ বোধহয় কবুল হবে না। এ ধরনের চিন্তা সুস্পষ্ট শিরক। জাগতিক সম্রাট, মন্ত্রী, বিচারক বা নেতা আমাকে ভালভাবে চিনেন না বা আমার প্রতি তার মমতা কম এ কারণে তিনি হয়ত আমার আবেদন রাখবেন না বা পক্ষপাতিত্ব করবেন। কিন্তু মহান আল্লাহর ক্ষেত্রে কি এরূপ চিন্তা করা যায়? ইসলামের বিধিবিধান শিখতে, আত্মশুদ্ধির কর্ম শিখতে, কর্মের প্রেরণা ও উদ্দীপনা পেতে বা আল্লাহর জন্য ভালোবাসা নিয়ে আলেম ও বুজুর্গগণের নিকট যেতে হয়। প্রার্থনা, বিপদমুক্তি ইত্যাদির জন্য একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইতে হয়।
(২) কুরআন কারীম ও বিভিন্ন সহীহ হাদীসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, যে কোনো মুমিন নারী বা পুরুষ যে কোনো অবস্থায় আল্লাহর কাছে নিজের মনের আবেগ প্রকাশ করে দুআ করলে ইবাদত করার সাওয়াব লাভ করবেন। এছাড়া আল্লাহ তার দুআ কবুল করবেন। তিনি তাকে তার প্রার্থিত বিষয় দান করবেন, অথবা এ প্রার্থনার বিনিময়ে তার কোনো বিপদ কাটিয়ে দিবেন অথবা তার জন্য জান্নাতে কোনো বড় নিয়ামত জমা করবেন।
(৩) নিজে দুআ করার পাশাপাশি জীবিত কোনো আলিম-বুজুর্গের কাছে দুআ চাওয়াতে অসুবিধা নেই। তবে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নিজের জন্য নিজের দুআই সর্বোত্তম দুআ। এছাড়া দুআর ক্ষেত্রে মনের আবেগ ও অসহায়ত্বই দুআ কবুলের সবচেয়ে বড় অসীলা। আর বিপদগ্রস্ত মানুষ যতটুকু আবেগ নিয়ে নিজের জন্য কাঁদতে পারেন, অন্য কেউ তা পারে না।
(৪) অনেকে মনে করেন, আমি পাপী মানুষ আমার দুআ হয়ত আল্লাহ শুনবেন না। এ চিন্তুা খুবই আপত্তিকর ও আল্লাহ্র রহমত থেকে হতাশার মত পাপের পথ।কুরআনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র কাফেররাই আল্লাহ্র রহমত থেকে হতাশ হয়। কুরআন ও হাদীসে বারংবার বলা হয়েছে যে, পাপ-অন্যায়ের কারণেই মানুষ বিপদগ্রস্ত হয় এবং বিপদগ্রস্ত পাপী ব্যক্তির মনের আবেগময় দুআর কারণেই আল্লাহ্ বিপদ কাটিয়ে দেন।
(৫) হাদীস শরীফে বলা হয়েছে যে, “দুআ ইউনূস” পাঠ করে দুআ করলে আল্লাহ্ কবুল করবেন। (লা ইলাহা ইলা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতুম মিনায যালিমীন) অর্থ- আপনি ছাড়া কোনো মাবূদ নেই, আপনি মহা-পবিত্র, নিশ্চয় আমি অত্যাচারীদের অন্তভূক্ত হয়েছি।
এর মর্মার্থ হলো: “বিপদে ডাকার মত, বিপদ থেকে উদ্ধার করার মত বা বিপদে আমার ডাক শুনার মত আপনি ছাড়া কেউ নেই। আমি অপরাধ করে ফেলেছি, যে কারণে এ বিপদ। আপনি এ অপরাধ ক্ষমা করে বিপদ কাটিয়ে দিন।” আল্লাহ্র একত্বের ও নিজের অপরাধের এ আন্তরিক স্বীকারোক্তি আলাহ এত পছন্দ করেন যে, এর কারণে আল্লাহ্ বিপদ কাটিয়ে দেন।
(৬) “খতম” ব্যবস্থা চালু করার কারণে এখন আর বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি নিজে দুআ ইউনূস পাঠ বা খতম করে কাঁদেন না। বরং তিনি নির্দিষ্ট সংখ্যক আলিম-বুজুর্গকে দাওয়াত দেন। যারা সকলেই বলেন: “নিশ্চয় আমি যালিম বা অপরাধী।” আর যার অপরাধে আল্লাহ্ তাকে বিপদ দিয়েছেন তিনি কিছুই বলেন না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, দাওয়াতকৃত আলিমগণ প্রত্যেকেই যালিম বা অপরাধী, শুধু দাওয়াতকারী ব্যক্তিই নিরপরাধ!
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা অনুধাবনের তাওফীক প্রদান করুন।
সুত্রঃ বই- হাদীসের নামে জালিয়াতি
(১) বিভিন্ন বিপদাপদ কাটানো বা জাগতিক ফল লাভ;
(২) মৃতের জন্য সাওয়াব পাঠানো।
উভয় প্রকারের খতমই ‘বানোয়াট’ ও ভিত্তিহীন। এ সকল খতমের জন্য পঠিত বাক্যগুলি অধিকাংশই খুবই ভাল বাক্য। এগুলি কুরআনের আয়াত বা সুন্নাহ সম্মত দোয়া ও যিকর। কিন্তু এগুলি এক লক্ষ বা সোয়া লক্ষ বার পাঠের কোনো নির্ধারিত ফযীলত, গুরুত্ব বা নির্দেশনা কিছুই কোনো সহীহ বা যয়ীফ হাদীসে বলা হয় নি। এ সকল ‘খতম’ সবই বানোয়াট। উপরন্তু এগুলিকে কেন্দ্র করে কিছু হাদীসও বানানো হয়েছে। ‘বিসমিল্লাহ’ খতম, দোয়া ইউনুস খতম, কালেমা খতম ইত্যাদি সবই এ পর্যায়ের। বলা হয় ‘সোয়া লাখ বার ‘বিসমিল্লাহ’ পড়লে অমুক ফল লাভ করা যায়’ বা ‘সোয়া লাখ বার দোয়া ইউনূস পাঠ করলে অমুক ফল পাওয়া যায়’ ইত্যাদি। এগুলি সবই ‘বুজুর্গ’দের অভিজ্ঞতার আলোকে বানানো এবং কোনোটিই হাদীস নয়।
তাসমিয়া বা (বিসমিলাহ), তাহলীল বা (লা ইলাহা ইলালাহ) ও দোয়া ইউনুস- এর ফযীলত ও সাওয়াবের বিষয়ে সহীহ হাদীস রয়েছে। তবে এগুলি ১ লক্ষ, সোয়া লক্ষ ইত্যাদি নির্ধারিত সংখ্যায় পাঠ করার বিষয়ে কোনো হাদীস বর্ণিত হয় নি। “খতমে খাজেগানের” মধ্যে পঠিত কিছু দোয়া সুন্নাহ সম্মত ও কিছু দোয়া বানানো। তবে পদ্ধিতিটি পুরোটাই বানানো।
এখানে আরো লক্ষণীয় যে, এ সকল খতমের কারণে সমাজে এ ধরণের “পুরোহিততন্ত্র” চালু হয়েছে। ইসলামের নির্দেশনা হলো, বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি ইউনূস (আ)-এর মতই নিজে “দুআ ইউনূস” বা অন্যান্য সুন্নাহ সম্মত দুআ পড়ে মনের আবেগে আল্লাহ্র কাছে কাঁদবেন এবং বিপদমুক্তি প্রার্থনা করবেন। একজনের বিপদে অন্যজন কাঁদবেন, এমনটি নয়। বিপদগ্রস্ত মানুষ অন্য কোনো নেককার আলিম বা বুজুর্গের নিকট দুআ চাইতে পারেন। তবে এখানে কয়েকটি বিষয় মনে রাখতে হবে:
(১) অনেকে মনে করেন, জাগতিক রাজা বা মন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে যেমন মধ্যস্থতাকারী বা সুপারিশকারীর প্রয়োজন, আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করতেও অনুরূপ কিছুর প্রয়োজন। আলিম-বুজুর্গের সুপারিশ বা মধ্যস্ততা ছাড়া আল্লাহ্র নিকট দুআ বোধহয় কবুল হবে না। এ ধরনের চিন্তা সুস্পষ্ট শিরক। জাগতিক সম্রাট, মন্ত্রী, বিচারক বা নেতা আমাকে ভালভাবে চিনেন না বা আমার প্রতি তার মমতা কম এ কারণে তিনি হয়ত আমার আবেদন রাখবেন না বা পক্ষপাতিত্ব করবেন। কিন্তু মহান আল্লাহর ক্ষেত্রে কি এরূপ চিন্তা করা যায়? ইসলামের বিধিবিধান শিখতে, আত্মশুদ্ধির কর্ম শিখতে, কর্মের প্রেরণা ও উদ্দীপনা পেতে বা আল্লাহর জন্য ভালোবাসা নিয়ে আলেম ও বুজুর্গগণের নিকট যেতে হয়। প্রার্থনা, বিপদমুক্তি ইত্যাদির জন্য একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইতে হয়।
(২) কুরআন কারীম ও বিভিন্ন সহীহ হাদীসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, যে কোনো মুমিন নারী বা পুরুষ যে কোনো অবস্থায় আল্লাহর কাছে নিজের মনের আবেগ প্রকাশ করে দুআ করলে ইবাদত করার সাওয়াব লাভ করবেন। এছাড়া আল্লাহ তার দুআ কবুল করবেন। তিনি তাকে তার প্রার্থিত বিষয় দান করবেন, অথবা এ প্রার্থনার বিনিময়ে তার কোনো বিপদ কাটিয়ে দিবেন অথবা তার জন্য জান্নাতে কোনো বড় নিয়ামত জমা করবেন।
(৩) নিজে দুআ করার পাশাপাশি জীবিত কোনো আলিম-বুজুর্গের কাছে দুআ চাওয়াতে অসুবিধা নেই। তবে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নিজের জন্য নিজের দুআই সর্বোত্তম দুআ। এছাড়া দুআর ক্ষেত্রে মনের আবেগ ও অসহায়ত্বই দুআ কবুলের সবচেয়ে বড় অসীলা। আর বিপদগ্রস্ত মানুষ যতটুকু আবেগ নিয়ে নিজের জন্য কাঁদতে পারেন, অন্য কেউ তা পারে না।
(৪) অনেকে মনে করেন, আমি পাপী মানুষ আমার দুআ হয়ত আল্লাহ শুনবেন না। এ চিন্তুা খুবই আপত্তিকর ও আল্লাহ্র রহমত থেকে হতাশার মত পাপের পথ।কুরআনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র কাফেররাই আল্লাহ্র রহমত থেকে হতাশ হয়। কুরআন ও হাদীসে বারংবার বলা হয়েছে যে, পাপ-অন্যায়ের কারণেই মানুষ বিপদগ্রস্ত হয় এবং বিপদগ্রস্ত পাপী ব্যক্তির মনের আবেগময় দুআর কারণেই আল্লাহ্ বিপদ কাটিয়ে দেন।
(৫) হাদীস শরীফে বলা হয়েছে যে, “দুআ ইউনূস” পাঠ করে দুআ করলে আল্লাহ্ কবুল করবেন। (লা ইলাহা ইলা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতুম মিনায যালিমীন) অর্থ- আপনি ছাড়া কোনো মাবূদ নেই, আপনি মহা-পবিত্র, নিশ্চয় আমি অত্যাচারীদের অন্তভূক্ত হয়েছি।
এর মর্মার্থ হলো: “বিপদে ডাকার মত, বিপদ থেকে উদ্ধার করার মত বা বিপদে আমার ডাক শুনার মত আপনি ছাড়া কেউ নেই। আমি অপরাধ করে ফেলেছি, যে কারণে এ বিপদ। আপনি এ অপরাধ ক্ষমা করে বিপদ কাটিয়ে দিন।” আল্লাহ্র একত্বের ও নিজের অপরাধের এ আন্তরিক স্বীকারোক্তি আলাহ এত পছন্দ করেন যে, এর কারণে আল্লাহ্ বিপদ কাটিয়ে দেন।
(৬) “খতম” ব্যবস্থা চালু করার কারণে এখন আর বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি নিজে দুআ ইউনূস পাঠ বা খতম করে কাঁদেন না। বরং তিনি নির্দিষ্ট সংখ্যক আলিম-বুজুর্গকে দাওয়াত দেন। যারা সকলেই বলেন: “নিশ্চয় আমি যালিম বা অপরাধী।” আর যার অপরাধে আল্লাহ্ তাকে বিপদ দিয়েছেন তিনি কিছুই বলেন না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, দাওয়াতকৃত আলিমগণ প্রত্যেকেই যালিম বা অপরাধী, শুধু দাওয়াতকারী ব্যক্তিই নিরপরাধ!
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা অনুধাবনের তাওফীক প্রদান করুন।
সুত্রঃ বই- হাদীসের নামে জালিয়াতি
বুধবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৩
দেওয়ানবাগ ভণ্ড পীর সম্পর্কে লোমহর্ষক ১৯ টি তথ্য :সাবধান ঈমানদার মুসলিম ! সংকলিত
দেওয়ানবাগ ভণ্ড পীর সম্পর্কে লোমহর্ষক তথ্য :
দেওয়ানবাগী ভণ্ড পীর (চিনে রাখুন , জেনে রাখুন এবং প্রচার করুন ইসলামের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টিকারী এক ভণ্ডপীরের কাহিনী ) নিয়ে লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরধ করছি সবাইকে । আলোচনার স্বার্থে আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে তাদের বিভিন্ন বইয়ে পাওয়া কিছু কথা এখানে ধারাবাহিক ভাবে প্রথমেতুলে ধরছি ।
১. "'দেওয়ানবাগী স্বপ্নে দেখেন ঢাকা এবং ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থানে এক বিশাল বাগানে ময়লার স্তূপের উপর বিবস্ত্র অবস্থায় নবীজীর প্রাণহীন দেহ পড়ে আছে (নাওযুবিল্লাহ)। মাথা দণি দিকে, পা উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা হাঁটুতে ভাঁজ হয়ে খাড়া আছে। আমি উদ্ধারের জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। তাঁর বাম পায়ের হাঁটুতে আমার ডান হাত দিয়ে স্পর্শ করার সাথে সাথে দেহে প্রাণ ফিরে এল। এবং তিনি আমাকে বললেন, ''হে ধর্মের পুনর্জীবনদানকার ী, ইতিপূর্বে আমার ধর্ম পাঁচবার পুনর্জীবন লাভ করেছে।"
( সূত্র: রাসূল কি সত্যিই গরিব ছিলেন-দেওয়ানবাগ থেকে প্রকাশিত )
২. "একদিন ফজরের পর মোরাকাবারত অবস্থায় আমার তন্দ্রা এসে যায়। আমি তখন নিজেকে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় রওজা শরীফের নিকট দেখতে পাই। দেখি রওজা শরীফের উপর শুকনা পাতা এবং আগাছা জমে প্রায় এক ফুট পুরুহয়ে আছে। আমি আরো ল্য করলাম, রওজা শরীফে শায়িত মহামানবের মাথা মোবারক পূর্ব দিকে এবং মুখমণ্ডল দণি দিকে ফিরানো। এ অবস্থা দেখে আমি আফসোস করতে লাগলাম। এমন সময় পাতার নীচ থেকে উঠে এসে এ মহামানব বসলেন। তার বুক পর্যন্ত পাতার উপর বের হয়ে পড়ে। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি দয়া করে আমার রওজা পরিষ্কার করে দেবেন না ? আমি বললাম, জী, দেব। তিনি বললেন, তাহলে দিন না। এভাবে বারবার তিনবার বলায় আমি এক একটা করেপাতা পরিষ্কার করে দেই। এরপর আমার তন্দ্রা ভেঙে যায়।"
( সূত্র: রাসূল কি সত্যিই গরিব ছিলেন-দেওয়ানবাগ থেকে প্রকাশিত )
৩. "দেওয়ানবাগী এবং তার মুরীদদের মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ্, সমস্ত নবী, রাসূল (সা), ফেরেস্তা, দেওয়ানবাগী ও তার মুর্শিদচন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস্ত ওলি আওলিয়া, এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মাদী ইসলামের প্রচারক নির্বাচিত করা হয়।
অত:পর আল্লাহ সবাইকে নিয়ে একমিছিল বের করে। মোহাম্মাদী ইসলামের চারটি পতাকা চারজনের_ যথাক্রমে আল্লাহ, রাসূল (সা), দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের হাতে ছিল। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকিরা সবাই পিছনের সারিতে। আল্লাহ নিজেই স্লোগান দিয়েছিলেন_ ''মোহাম্মাদী ইসলামের আলো_ ঘরে ঘরে জ্বালো।"
(সূত্র: সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা- ১২/০৩/৯৯ )
৫. দেওয়ানবাগীর এক পা-চাটা চাকর বলে (নাম মাওলানা আহমাদুল্লাহ যুক্তিবাদী,)
"আমি স্বপ্নে দেখলাম হযরত ইব্রাহীম (আ) নির্মিত মক্কারকাবা ঘর এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা) বাবে রহমতে হাজির হয়েছেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে নবী করীম (সা) বলছেন_''তুমি যে ধারণা করছ যে, শাহ্ দেওয়ানবাগী হজ্জ করেননি আসলে এটা ভুল। আমি স্বয়ং আল্লাহর নবী মোহাম্মাদ (সা) তার সাথে আছিএবং সর্বণ থাকি। আর কাবা ঘর ও তার সামনে উপস্থিত আছে। আমার মোহাম্মাদী ইসলাম শাহ্দেওয়ানবাগী প্রচার করতেছেন।
আমি যুক্তি খণ্ডনে যাবো না ।শুধু আপনাদের উপর বিষয়গুলো ছেড়ে দিলাম । কতো বড় ভণ্ড হলে এরকম বলতে পারে । একটা কথাও কোরআন হাদীস কিংবা ইজমা কিয়াসের ভিত্তিতে নয় । সব মনগড়া ।
৬ /ভণ্ড পীরের একটা লোমহর্ষক তথ্য :
"তথাকথিত ছুফী সম্রাট দেওয়ানবাগী পীর জাল দলিলের মাধ্যমে জোর পূর্বক কয়েক কোটি টাকার জমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর। গত কয়েকমাস আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার ছেলে মহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পিছনে ১৪২/১ দক্ষিণ কমলাপুরে ৮০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয়ের পর থেকেই তথাকথিত পীর দেওয়ানবাগী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল। ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর সন্ত্রাসী বাহিনী গত ২০০২ সালে রাতের অন্ধকারে বাড়ির ভাড়াটিয়াদের জোর পূর্বক বেরকরে জমিটি দখল করে নেয়। ভূমি অফিসের কিছু অসাধু অফিসারে সাথে অবৈধ লেনদেন করে তিনি কাগজপত্র তৈরি করেন। জমি দখলের বিরুদ্ধে জজ কোর্টে মামলা করলে কোর্ট গত ২০০৩ সালে স্থগিতাদেশ প্রদান করে। উল্লেখ্য যে দেয়ানবাগীও তার সন্ত্রাসীচক্র উক্ত বাড়িতে বর্তমানে উটের খামার করে। এখন নিয়মিত শতাধিক সন্ত্রাসী সেখানে অবস্থান করে। তার সন্ত্রাসী বাহিনী মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য নিয়মিত মোবাইলে হুমকি দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানায় একাধিক জিডি করা হয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, উক্ত জমির উপর আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে সমাধি করা হয়। তার পালিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তিনি মতিঝিল ও আরামবাগ এলাকায় একাধিক বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। তাই জমি ফেরত পেতে জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।" ( দৈনিক সংগ্রাম )
৭ , “আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমে আল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকে দাড়ী গোফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃআল্লাহ কোন পথেঃ২৩
৮ , সাংবাদিক সম্মেলনে সে বলে “শুধু আমি নই, আমার স্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্য লক্ষ্য মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ।
৯ , “দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন।” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং।
১০ , “আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলে দিলাম। ক’দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল। নবিজীর হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ২৩, সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা।
১১, “কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখন তাঁর আর কোন ইবাদাত লাগেনা।” –আল্লাহ কোন পথে,পৃঃ ৯০
১২ ,“জিব্রাইল বলতে আর কেও নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল।”–সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ১ম সঙ্খ্যাঃ২১
১৩ , “সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। সুভে সাদেক অর্থ প্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তারাতারি আযান দিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাজের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়া হয়না।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মাসিকআত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ৯৯, পৃঃ ৯
“ ১৪ , মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগী কে পুলসিরাত বলা হয়।” –সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ ৬০
১৫ ,“ আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভূর পরিচয় নিজের মাঝে না পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরে যাবে। তখন তাঁর আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায়না। আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আত্মার এরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযোখ বলা হয়।”(নাউযুবিল্লাহ) –আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪
১৬ ,দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন। অতঃপর দরুদে মাহদী রচনা করে্ন ।
দরুদে মাহদীঃ (নাউযুবিল্লাহ)
“আল্লাহুম্মা ছাল্লী আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আ’লা ইমাম মাহদী রাহমাতাল্লিল আলামীন ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম। ”
১৭ , ময়লার স্তূপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসুল (সাঃ) কে দেখেছি। (নাউযুবিল্লাহ) মীন যালীক
১৮ , দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বপ্ন দেখে ফেলেন। এ স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন,
“ আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থানজুড়ে এক বিশাল বাগান ফুলে-ফলে সুশোভিত। ওই বাগানে আমি একা একা হেটে বেড়াচ্ছি। হঠাত বাগানের এক স্থানে একটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাই ওই ময়লার স্তূপে রাসুল (সাঃ) এর প্রানহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারক হাটুতে ভাজ হয়ে খারা অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে গিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাটুতে আমার ডান হাত দ্বারা স্পর্শ করলাম। সাথে সাথেই তাঁর দেহ মোবারকে প্রাণ ফিরে এল। তিনি চোখ মেলে আমার দিকে তাকালেন। মূহুর্তের মধ্যেই রাসূল (সাঃ) সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে গেলেন। তিনি উঠে বসে হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে ধর্ম পূনর্জীবন দানকারী! ইতমধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসূল (সাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে হেটে হেটে আমার সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ” (নাউযুবিল্লাহ)–সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ
১৯ , “রাসূল স. সত্যিই কি গরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।
ভন্ড দেওয়ানবাগী সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফতোয়াঃ
ক. দেওয়ানবাগের পীর নিতান্তই গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট।
খ. ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহন করাতো দূরের কথা, এর সাহায্য সহযোগিতা করা, সান্নিধ্যে উঠা-বসা বরং তাঁর সাথে কোন রকম সংশ্রব রাখা হারাম।
গ. আর তাঁর অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
(১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/ ৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং। )
এত কুকর্মের পরেও বিনা বাধায় তাঁর কাজ সে করে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম বাধার সম্মুখীন না হওয়ায় দিন দিন তাঁর অপশক্তি ক্রমবর্ধমান ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটু খোঁজ নিলে এ রকম আরও হাজার হাজার গাজাখুরী মতবাদ শুনতে পারবেন, যা সেয় প্রতিদিন বিনা দ্বিধায় বলে চলেছেন। (সংগৃহীত)
সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব এ সকল ফেৎনা সমপর্কে তাওহীদ বাদী ঈমানদার মুসলমানকে সজাগ ও সতর্ক করা
http://www.shobujbanglablog.net/32712.html
https://www.facebook.com/IsalamiSasanatantraChatraAndolanaComilla#!/IsalamiSasanatantraChatraAndolanaComilla
দেওয়ানবাগী ভণ্ড পীর (চিনে রাখুন , জেনে রাখুন এবং প্রচার করুন ইসলামের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টিকারী এক ভণ্ডপীরের কাহিনী ) নিয়ে লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরধ করছি সবাইকে । আলোচনার স্বার্থে আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে তাদের বিভিন্ন বইয়ে পাওয়া কিছু কথা এখানে ধারাবাহিক ভাবে প্রথমেতুলে ধরছি ।
১. "'দেওয়ানবাগী স্বপ্নে দেখেন ঢাকা এবং ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থানে এক বিশাল বাগানে ময়লার স্তূপের উপর বিবস্ত্র অবস্থায় নবীজীর প্রাণহীন দেহ পড়ে আছে (নাওযুবিল্লাহ)। মাথা দণি দিকে, পা উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা হাঁটুতে ভাঁজ হয়ে খাড়া আছে। আমি উদ্ধারের জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। তাঁর বাম পায়ের হাঁটুতে আমার ডান হাত দিয়ে স্পর্শ করার সাথে সাথে দেহে প্রাণ ফিরে এল। এবং তিনি আমাকে বললেন, ''হে ধর্মের পুনর্জীবনদানকার ী, ইতিপূর্বে আমার ধর্ম পাঁচবার পুনর্জীবন লাভ করেছে।"
( সূত্র: রাসূল কি সত্যিই গরিব ছিলেন-দেওয়ানবাগ থেকে প্রকাশিত )
২. "একদিন ফজরের পর মোরাকাবারত অবস্থায় আমার তন্দ্রা এসে যায়। আমি তখন নিজেকে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় রওজা শরীফের নিকট দেখতে পাই। দেখি রওজা শরীফের উপর শুকনা পাতা এবং আগাছা জমে প্রায় এক ফুট পুরুহয়ে আছে। আমি আরো ল্য করলাম, রওজা শরীফে শায়িত মহামানবের মাথা মোবারক পূর্ব দিকে এবং মুখমণ্ডল দণি দিকে ফিরানো। এ অবস্থা দেখে আমি আফসোস করতে লাগলাম। এমন সময় পাতার নীচ থেকে উঠে এসে এ মহামানব বসলেন। তার বুক পর্যন্ত পাতার উপর বের হয়ে পড়ে। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি দয়া করে আমার রওজা পরিষ্কার করে দেবেন না ? আমি বললাম, জী, দেব। তিনি বললেন, তাহলে দিন না। এভাবে বারবার তিনবার বলায় আমি এক একটা করেপাতা পরিষ্কার করে দেই। এরপর আমার তন্দ্রা ভেঙে যায়।"
( সূত্র: রাসূল কি সত্যিই গরিব ছিলেন-দেওয়ানবাগ থেকে প্রকাশিত )
৩. "দেওয়ানবাগী এবং তার মুরীদদের মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ্, সমস্ত নবী, রাসূল (সা), ফেরেস্তা, দেওয়ানবাগী ও তার মুর্শিদচন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস্ত ওলি আওলিয়া, এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মাদী ইসলামের প্রচারক নির্বাচিত করা হয়।
অত:পর আল্লাহ সবাইকে নিয়ে একমিছিল বের করে। মোহাম্মাদী ইসলামের চারটি পতাকা চারজনের_ যথাক্রমে আল্লাহ, রাসূল (সা), দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের হাতে ছিল। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকিরা সবাই পিছনের সারিতে। আল্লাহ নিজেই স্লোগান দিয়েছিলেন_ ''মোহাম্মাদী ইসলামের আলো_ ঘরে ঘরে জ্বালো।"
(সূত্র: সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা- ১২/০৩/৯৯ )
৫. দেওয়ানবাগীর এক পা-চাটা চাকর বলে (নাম মাওলানা আহমাদুল্লাহ যুক্তিবাদী,)
"আমি স্বপ্নে দেখলাম হযরত ইব্রাহীম (আ) নির্মিত মক্কারকাবা ঘর এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা) বাবে রহমতে হাজির হয়েছেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে নবী করীম (সা) বলছেন_''তুমি যে ধারণা করছ যে, শাহ্ দেওয়ানবাগী হজ্জ করেননি আসলে এটা ভুল। আমি স্বয়ং আল্লাহর নবী মোহাম্মাদ (সা) তার সাথে আছিএবং সর্বণ থাকি। আর কাবা ঘর ও তার সামনে উপস্থিত আছে। আমার মোহাম্মাদী ইসলাম শাহ্দেওয়ানবাগী প্রচার করতেছেন।
আমি যুক্তি খণ্ডনে যাবো না ।শুধু আপনাদের উপর বিষয়গুলো ছেড়ে দিলাম । কতো বড় ভণ্ড হলে এরকম বলতে পারে । একটা কথাও কোরআন হাদীস কিংবা ইজমা কিয়াসের ভিত্তিতে নয় । সব মনগড়া ।
৬ /ভণ্ড পীরের একটা লোমহর্ষক তথ্য :
"তথাকথিত ছুফী সম্রাট দেওয়ানবাগী পীর জাল দলিলের মাধ্যমে জোর পূর্বক কয়েক কোটি টাকার জমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর। গত কয়েকমাস আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার ছেলে মহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পিছনে ১৪২/১ দক্ষিণ কমলাপুরে ৮০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয়ের পর থেকেই তথাকথিত পীর দেওয়ানবাগী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল। ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর সন্ত্রাসী বাহিনী গত ২০০২ সালে রাতের অন্ধকারে বাড়ির ভাড়াটিয়াদের জোর পূর্বক বেরকরে জমিটি দখল করে নেয়। ভূমি অফিসের কিছু অসাধু অফিসারে সাথে অবৈধ লেনদেন করে তিনি কাগজপত্র তৈরি করেন। জমি দখলের বিরুদ্ধে জজ কোর্টে মামলা করলে কোর্ট গত ২০০৩ সালে স্থগিতাদেশ প্রদান করে। উল্লেখ্য যে দেয়ানবাগীও তার সন্ত্রাসীচক্র উক্ত বাড়িতে বর্তমানে উটের খামার করে। এখন নিয়মিত শতাধিক সন্ত্রাসী সেখানে অবস্থান করে। তার সন্ত্রাসী বাহিনী মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য নিয়মিত মোবাইলে হুমকি দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানায় একাধিক জিডি করা হয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, উক্ত জমির উপর আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে সমাধি করা হয়। তার পালিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তিনি মতিঝিল ও আরামবাগ এলাকায় একাধিক বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। তাই জমি ফেরত পেতে জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।" ( দৈনিক সংগ্রাম )
৭ , “আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমে আল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকে দাড়ী গোফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃআল্লাহ কোন পথেঃ২৩
৮ , সাংবাদিক সম্মেলনে সে বলে “শুধু আমি নই, আমার স্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্য লক্ষ্য মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ।
৯ , “দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন।” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং।
১০ , “আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলে দিলাম। ক’দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল। নবিজীর হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ২৩, সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা।
১১, “কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখন তাঁর আর কোন ইবাদাত লাগেনা।” –আল্লাহ কোন পথে,পৃঃ ৯০
১২ ,“জিব্রাইল বলতে আর কেও নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল।”–সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ১ম সঙ্খ্যাঃ২১
১৩ , “সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। সুভে সাদেক অর্থ প্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তারাতারি আযান দিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাজের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়া হয়না।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মাসিকআত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ৯৯, পৃঃ ৯
“ ১৪ , মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগী কে পুলসিরাত বলা হয়।” –সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ ৬০
১৫ ,“ আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভূর পরিচয় নিজের মাঝে না পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরে যাবে। তখন তাঁর আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায়না। আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আত্মার এরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযোখ বলা হয়।”(নাউযুবিল্লাহ) –আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪
১৬ ,দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন। অতঃপর দরুদে মাহদী রচনা করে্ন ।
দরুদে মাহদীঃ (নাউযুবিল্লাহ)
“আল্লাহুম্মা ছাল্লী আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আ’লা ইমাম মাহদী রাহমাতাল্লিল আলামীন ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম। ”
১৭ , ময়লার স্তূপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসুল (সাঃ) কে দেখেছি। (নাউযুবিল্লাহ) মীন যালীক
১৮ , দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বপ্ন দেখে ফেলেন। এ স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন,
“ আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থানজুড়ে এক বিশাল বাগান ফুলে-ফলে সুশোভিত। ওই বাগানে আমি একা একা হেটে বেড়াচ্ছি। হঠাত বাগানের এক স্থানে একটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাই ওই ময়লার স্তূপে রাসুল (সাঃ) এর প্রানহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারক হাটুতে ভাজ হয়ে খারা অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে গিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাটুতে আমার ডান হাত দ্বারা স্পর্শ করলাম। সাথে সাথেই তাঁর দেহ মোবারকে প্রাণ ফিরে এল। তিনি চোখ মেলে আমার দিকে তাকালেন। মূহুর্তের মধ্যেই রাসূল (সাঃ) সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে গেলেন। তিনি উঠে বসে হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে ধর্ম পূনর্জীবন দানকারী! ইতমধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসূল (সাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে হেটে হেটে আমার সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ” (নাউযুবিল্লাহ)–সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ
১৯ , “রাসূল স. সত্যিই কি গরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।
ভন্ড দেওয়ানবাগী সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফতোয়াঃ
ক. দেওয়ানবাগের পীর নিতান্তই গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট।
খ. ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহন করাতো দূরের কথা, এর সাহায্য সহযোগিতা করা, সান্নিধ্যে উঠা-বসা বরং তাঁর সাথে কোন রকম সংশ্রব রাখা হারাম।
গ. আর তাঁর অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
(১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/ ৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং। )
এত কুকর্মের পরেও বিনা বাধায় তাঁর কাজ সে করে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম বাধার সম্মুখীন না হওয়ায় দিন দিন তাঁর অপশক্তি ক্রমবর্ধমান ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটু খোঁজ নিলে এ রকম আরও হাজার হাজার গাজাখুরী মতবাদ শুনতে পারবেন, যা সেয় প্রতিদিন বিনা দ্বিধায় বলে চলেছেন। (সংগৃহীত)
সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব এ সকল ফেৎনা সমপর্কে তাওহীদ বাদী ঈমানদার মুসলমানকে সজাগ ও সতর্ক করা
http://www.shobujbanglablog.net/32712.html
https://www.facebook.com/IsalamiSasanatantraChatraAndolanaComilla#!/IsalamiSasanatantraChatraAndolanaComilla
مسكات عراءيس 2013
১ তাই আজকে আমার হাতে গডা হাজারো ডিজাইন থেকে কিছু শেয়ার করলাম | |
ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড : হাতের কাজ
| |
বিষয়শ্রেণী: বিবিধ
email == ABDULLAHNEZAMI123@GMAIL.COM
PHONE - 00966561351224
|
মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৩
সবুজ চা ,বাঁধাকপি,আদা, জলপাইয়ের পাতা ,জলপাই , হলুদের , গোলমরিচ, কমলা। , ডিম , লবঙ্গ , গাঁজর, আঙ্গুর, এর উপকারীতা কাঁচা আম সংকলিত
| |
লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ০৯ জানুয়ারী ২০১৩, দুপুর ১২:৩১
| |
টমেটো-------
** টমেটো পাচন শক্তি বাড়ায়। পেটের যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে টমেটো খাওয়া ভালো। তা একেবারে ওষুধের মতো কাজ করে। ** ঘন ঘন ঢেঁকুর উঠলে, পেট ফাঁপলে, মুখে ছালা হলে টমেটোর স্যুপের মধ্যে আদা এবং বিটলবণ মিশিয়ে পান করুন। উপকার পাবেন। ** টমেটোর স্যুপ খেলে এনার্জি বাড়ে। পেট হালকা হয়। ** ঠাণ্ডার সময় গরম গরম স্যুপ খেলে সর্দি-কাশি হয় না। শরীরে রক্তের অভাব পূরণ করে টমেটো। অ্যানিমিয়া হলে টমেটোর জুস খান, উপকার পাবেন। বেরি বেরি, গিট বাত, একজিমা প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধ করে টমেটো। **মধুমেহ রোগীদের জন্য টমেটোর জুস খুব ভালো ওষুধ। ** জ্বরের পরে দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য টমেটো খান। প্রায় ৪০০০ বছর আগে থেকেই চীনে ওষধ হিসাবে ব্যাবহার করা হচ্ছে সবুজ চা বা গ্রিন টি। সময়ের পরিবর্তনে গ্রিন টির ব্যবহার চীনের বাইরে পুরো বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। গবেষকরা গ্রিন টি’র মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন অনেক রোগের নিরাময় গুণ। নিয়মিত সবুজ চা পান করলে, ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের ঝুঁকিও অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। ***আমাদের শরীরের জন্য সবুজ চা পানের উপকারিতা** *ক্যান্সার প্রতিরোধ করে *হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি কমায় *রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় *উপকারি কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায় *সবুজ চা ভাইরাসজনিত ফ্লু রোধ করে বা দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে *বার্ধক্য রোধ করে শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখে *ইনফেকশান কার্যকর হওয়ার ঝুকি কমায় *কিডনি রোগের জন্য উপকারি *ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর *দাঁতক্ষয় এবং পেটের রোগ সারাতে গ্রিন টি কাজ করে। ***নিয়মিত পরিমিত সবুজ চা পান করুন। অনাকাংক্ষিত অনেক রোগের ঝুঁকি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। সুত্র :বাংলা নিউজ ২৪ বাঁধাকপি এমন এক তরকারী যা রান্না করতে খুব বেশী কষ্ট করতে হয় না৷ যে কোনভাবে রান্না করলেই খেতে সুস্বাদু লাগে৷ বাঁধাকপির বেশ কিছু ভেষজ গুণ আছে৷ যা নিম্নে দেওয়া হল। *বাঁধাকপির পাতা কাঁচা যদি আপনি রোজ ৫০ গ্রাম করে খেতে পারেন তাহলে আপনার পায়রিয়া এবং দাঁতের অন্য কোন সমস্যা থাকবে না৷ * প্রতিদিন বাঁধাকপির পাতা ৫০ গ্রাম খেলে আপনার মাথায় চুল গজাবে৷ * বাঁধাকপির রস খেলে ঘা সেরে যায়৷ * এক গ্লাস দই এর ঘোলের মধ্যে এক কাপ বাঁধাকপির রস, এক চতুর্থাংশ পালং শাকের রস মিশিয়ে প্রতিদিন দু' বার পান করলে খুব অল্পদিনের মধ্যে আপনার কোলাইটিস সংক্রান্ত সমস্যা দূর হয়ে যাবে। *বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ ও সি এবং ক্যালশিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য খনিজ লবণ রয়েছে। *বাঁধাকপিতে এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন বেরিয়ে যাওয়ার ফলে মহিলাদের স্তনে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে। *বাঁধাকপি খেলে অন্ত্র, মলদ্বার এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়। *বাঁধাকপি দাঁতের সমস্যা রোধ করে। * লেবুর জুস থেকে কাঁচা বাঁধাকপিতে ভিটামিন ‘সি’-এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। *কাঁচা বাঁধাকপি পাকস্থলির বর্জ্য পরিষ্কার করে। *কাঁচা বাঁধাকপি কোষ্ঠ্যকাঠিন্য কমাতেও এই সবজি দারুণ কার্যকরী। *বাঁধাকপি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। *বাঁধাকপি শীতের সময় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা থাকে। প্রাতে খেলে নুন আদা অরুচি থাকে না দাদা।’ আরো কতশত উপকারিতা বিজ্ঞানীরা বের করেছেন তা বলাই বাহুল্য। কৃত্রিম ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফ্যাসাদে পড়ে এখন সবাই একটু শান্তি খুঁজছেন প্রাকৃতিক ও ভেষজ দ্রব্যের দিকে। একটু ঠাণ্ডা লেগে গেলে কিংবা খেলার মধ্যে হাঁপিয়ে উঠলে আদা খাওয়া যায়। কারণ আদা কাশি কমাতে সহায়ক। আদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। আছে যথেষ্ট পরিমাণ আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফরফরাসের মতো খনিজ পদার্থ। এছাড়া সামান্য পরিমাণে আছে সোডাম, জিঙ্ক ও ম্যাঙ্গানিজ। আদা রান্না অথবা কাঁচা দু’ভাবেই খাওয়া যায়। গলার খুসখুসে ভাব কমাতে কাঁচা আদা খুবই উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আদা থাকলে যে কোনো ধরনের ঠাণ্ডাসংক্রান্ত রোগবালাই, কাঁশি ও হাঁপানির তীব্রতা কমিয়ে দেয়। আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের ক্ষেত্রেও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে আদা। এছাড়া চুল পড়া ও বমিরোধক হিসেবেও আদা বেশ কাজে দেয়। ভিটামিন -ই, এ, বি ও সি এর পরিমাণও কম নয় আদার মধ্যে। রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতেও আদা দারুণ কার্যকর। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে খেলে বাড়বে হজম শক্তি। আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপা রোধে আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া যারা গলার চর্চা করেন তারা অনেকেই গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা আর লবণকে পছন্দ করে থাকেন। আসলে মসলা ছাড়াও আদার রয়েছে বিভিন্ন গুণ। ইউনিভার্সিটি অব মিয়ামি মেডিক্যাল স্কুলের বিজ্ঞানীদের মতে, খাদ্যের সঙ্গে নিয়মিত আদা খেলে গিঁটে ব্যথা সারে অনেকখানি। শীতে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে? এককাপ আদার চা খেয়ে নিন। বেশ আরাম বোধ করবেন। আদা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করে রক্ত পরিসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে রক্তনালী প্রসারিত করে। ফলে শরীর গরম থাকে দীর্ঘক্ষণ। এছাড়া যাদের মোশন সিকনেস আছে, তারা আদার সাহায্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। বার্তা২৪ ডটনেট জলপাইয়ের পাতা যুদ্ধে শান্তির প্রতীক হলো জলপাইয়ের পাতা এবং মানুষের শরীরের শান্তির দূত হলো জলপাইয়ের তেল বা অলিভ ওয়েল। আরবিতে জয়তুন নামে ডাকা হয়। ভেষজ গুণে ভরা এই ফলটি লিকুইড গোল্ড বা তরল সোনা নামেও পরিচিত। গ্রীক সভ্যতার প্রারম্ভিক কাল থেকে এই তেল ব্যাবহার হয়ে আসছে রন্ধন কর্মে ও চিকিৎসা শাস্ত্রে। আকর্ষণীয় এবং মোহনীয় সব গুণ এই জলপাইয়ের তেলের মধ্য রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, জলপাই তেলে এমন উপাদান রয়েছে, যেগুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখে। জলপাই তেল পেটের জন্য খুব ভালো। এটা শরীরে এসিড কমায়, লিভার পরিষ্কার করে। যাদের কোষ্টকাঠিণ্য রয়েছে, তারা দিনে এক চা চামচ জলপাই তেল খেলে উপকার পাবেন। গবেষকরা বলেন, জলপাই তেল গায়ে মাখলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক কুচকানো প্রতিরোধ হয়। গবেষকরা ২৫ মিলিয়ন লোকজনের উপর গবেষণা করে দেখিয়েছেন প্রতিদিন দুই চা চামচ জলপাই তেল ১ সপ্তাহ ধরে খেলে তা দেহের ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায়। অন্যদিকে স্পেনিশ গবেষকার দেখিয়েছেন, খাবারে জলপাই তেল ব্যবহার করলে কোলন বা মলাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়। এটা পেইন কিলার হিসাবেও কাজ করে। গবেষকরা আরো জানান, গোসলের পানিতে চার ভাগের এক ভাগ চা চামচ জলপাই তেল ঢেলে গোসল করলে রিলাক্স পাওয়া যায়। মেয়েদের রূপ বাড়াতে এটা অনেকটা কার্যকর। ইসলাম ধর্মেও জলপাইয়ের তেল খাওয়া এবং ব্যবহারের গুরত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, “কুলু আয যাইতু ওয়াদ দাহিনু বিহি, ফা ইন্নাহু মিন শাজারাতিন মুবারাকাতিন” অর্থ- তোমরা এই তেলটি খাও, তা শরীরে মাখাও।” জলপাই শীতকালীন ফল। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই ফলটি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে সবুজ জলপাই সহজলভ্য। পৃথিবীর অনেক দেশে কালো জলপাই জন্মে। জলপাইয়ের পাতা ও ফল দুটোই ভীষণ উপকারী। জলপাইয়ের রস থেকে যে তেল তৈরি হয় তার রয়েছে যথেষ্ট পুষ্টিগুণ। প্রচণ্ড পরিমাণে টক এই ফলে রয়েছে উচ্চমানের ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই। এই ভিটামিনগুলো দেহের রোগজীবাণু ধ্বংস করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, রক্তে চর্বি জমে যাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে হূৎপিণ্ডের রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে। ফলে হূৎপিণ্ড থেকে অধিক পরিশোধিত রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছায়, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে। ত্বকের কাটাছেঁড়া দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। উচ্চরক্তচাপ ও রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে এর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সেদ্ধ জলপাইয়ের চেয়ে কাঁচা জলপাইয়ের পুষ্টিমূল্য অধিক। এই ফলের আয়রন রক্তের আরবিসির কর্মশক্তি বৃদ্ধি করে। জলপাইয়ের খোসায় রয়েছে আঁশজাতীয় উপাদান। এই আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, কোলনের পাকস্থলীর ক্যানসার দূর করতে রাখে অগ্রণী ভূমিকা। জলপাইয়ের পাতারও রয়েছে যথেষ্ট ঔষধি গুণ। এই পাতা ছেঁচে কাটা, ক্ষত হওয়া স্থানে লাগালে কাটা দ্রুত শুকায়। বাতের ব্যথা, ভাইরাসজনিত জ্বর, ক্রমাগত মুটিয়ে যাওয়া, জন্ডিস, কাশি, সর্দিজ্বরে জলপাই পাতার গুঁড়া জরুরি পথ্য হিসেবে কাজ করে। মাথার উকুন তাড়াতে, ত্বকের ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাকজনিত সমস্যা দূর করার জন্য এই পাতার গুঁড়া ব্যবহূত হয়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে জলপাই পাতার গুঁড়া ও জলপাইয়ের তেল ব্যবহারে হাড় ও মাংসপেশির ব্যথা কমে। জলপাইয়ের তেল কুসুম গরম করে চুলের গোড়াতে ম্যাসাজ করলে চুলের পুষ্টি ও বৃদ্ধি ভালো হয়, চুলের ঝরে যাওয়া তুলনামূলকভাবে কমে।সর্দি-কাশি হলে শরীর একেবারে রোগা-পাতলা হয়ে যায়। এই রোগে রান্নায় জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ এই তেলের ফ্যাট খুব সহজে হজম করা যায়। এই তেল কডলিভার অয়েলের চেয়েও ভালো কাজ করে। তা ছাড়া কডলিভার অয়েলের বদলে জলপাইয়ের তেলও কাঁচা খেতে পারলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। কাঁচা খেতে অসুবিধা হলে কমলালেবুর রস বা অন্য যেকোনো ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। যদি মুখে ছালা হয় তাহলে গরম জলের মধ্যে হলুদের পাউডার মিশিয়ে কুলকুচি করুন৷ সেরে যাবে৷যদি শরীরের কোন অংশ পুড়ে যায় তাহলে জলের মধ্যে হলুদের পাউডার মিশিয়ে লাগান৷ আরাম পাবেন৷ সূর্যের তাপে গা জ্বলে গেলে হলুদের পাউডারের মধ্যে বাদামের চূর্ণ এবং দই মিশিয়ে লাগান৷ সর্দি-কাশি হলে হলুদ খান৷ কাশি কমাতে হলে হলুদের গাঠ মুখে রেখে চুষুন৷ এছাড়া এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুড়ো এবং গোলমরিচ গুড়ো মিশিয়ে পান করুন৷ আয়ুর্বেদের মতে হলুদ নাকি রক্ত শুদ্ধ করে৷ তাই হলুদের ফুলের পেস্ট লাগালে চর্ম রোগ দূর হয়৷ হলুদ চেহারার সৌন্দর্য বাড়াতেও সাহায্য করে৷ হলুদের সঙ্গে চন্দন মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হ্য়৷ হলুদের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা প্রভৃতি নানা পদার্থ রয়েছে৷ তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের মতা জন্মায়৷ লিভারের েেত্র হলুদ খাওয়া খুবই ভাল ৷ কাচা হলুদ যে কতটা উপকারী তা হয়ত সকলেই জানেন৷ তবে কাচা হলুদ খাওয়ার পাশাপাশি আপনি রান্নাতেও বেশী পরিমাণে হলুদ ব্যবহার করতে পারেন৷ কারণ হলুদ এর প্রয়োগে আপনার রান্নাটা ভীষণই স্বাস্থ্যকর হয়ে যাবে৷ হলুদের মধ্যে এমন কিছু পদার্থ আছে যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ মতা গড়ে৷শরীরের যন্ত্রনা কমায়৷ এছাড়া আর এতে নানা সমস্যা দূর হয়৷ হলুদ কি সমস্যা দূর করে চলুন তা জেনে নিই৷ কিছুদিন আগেই একটা গবেষণাতে প্রমানিত হয়েছিল হলুন নাকি ক্যান্সার সারায়৷ হলুদের মধ্যে ফিনোলিক যৌগিক কারকিউমিন রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে৷ আরেকটি গবেষণাতে প্রমানিত হয়েছে হলুদ মোটা হওয়া থেকে বাঁচায়৷ হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে যা শরীরে খুব তাড়াতাড়ি মিশে যায়৷ শরীরের কলা গুলোকে বাড়তে দেয় না৷ গা ব্যথা হলে দুধের মধ্যে হলুদ মিশিয়ে খান আরাম পাবেন৷ জয়েন্টের ব্যথা হলে হলুদের পেস্ট তৈরি করে লেপ লাগান৷ গলায় ব্যাথা হলে কাচা হলুদ আদার সঙ্গে পিষে তার গুড় মিশিয়ে গরম করুন৷ তারপরে সেটা খান গলা ব্যথা কমে যাবে৷ ঘা এর মধ্যে হলুদের লেপ লাগান৷ ঘা তাড়াতাড়ি সেরে যাবে৷ বাংলাবার্তা ২৪ ডটনেট মশলার জগতে এক বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে গোলমরিচ। স্বাদে ঝাল হলেও কাঁচা মরিচ বা শুকনো মরিচের মত গোলমরিচের ঝাল তেমন উগ্র নয়। উপরন্তু একটু সুঘ্রাণও রয়েছে গোলমরিচের ঝালের। একারণে খাদ্যদ্রব্য ও নানা ধরনের তরকারিকে মুখরোচক করতে ব্যবহৃত হয় গোলমরিচের গুঁড়ো। এছাড়া মাছ ও মাংস রান্নার ক্ষেত্রে গোলমরিচের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এমনকি সুপ, আলুর দম, অর্ধসিদ্ধ ডিম ইত্যাদিকে মুখরোচক করতেও গৃহিণীরা আশ্রয় নেন গোলমরিচের। মরিচের গুঁড়ো সহযোগে তৈরি নাড়ু মজাদারই বটে। বিশেষজ্ঞদের মতে গোলমরিচের আদি জন্মস্থান হলো দক্ষিণ এশিয়া। চিরঞ্জীব বনৌষধিতে উল্লেখ রয়েছে যে ভারতের দাক্ষিণাত্যের কানাড়া জেলার জঙ্গলে আগে গোলমরিচ অনাদরে অবহেলায় জন্মাতে দেখা যেত। পরে অবশ্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওইসব এলাকায় গোলমরিচের চাষ ছড়িয়ে পড়ে। লতা জাতীয় বর্ষজীবী এই উদ্ভিদের জন্যে আমাদের দেশের মাটি বেশ উপযোগী। কারণ যেসব জায়গা সব সময় ভেজা থাকে সেখানে গোলমরিচ ভাল জন্মে। তবু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এর চাষ বিস্তৃত হয়নি। তবে সুখের বিষয় এই যে, শহর বন্দর এমনকি গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় মুদির দোকানে গোলমরিচ পাওয়া যায়। এ কারণে বলা যায় গোলমরিচ এমন একটা উপকারী মশলা যা সব সময় আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যায়। গোলমরিচের রয়েছে যথেষ্ট ভেষজগুণ। নিদ্রাহীনতা, টাক রোগ, ঢুলুনি রোগ, বিষাক্ত পোকার জ্বালা, ফিক ব্যথা, গনোরিয়া, ক্রিমি, নাসা রোগ, আমাশয় ইত্যাদি রোগে গোলমরিচের সফল ব্যবহার রয়েছে। স্থূলদেহী বা হাল্কা পাতলা যে কোন ধরনের মানুষ নিদ্রাহীনতায় ভুগতে পারেন। এক্ষেত্রে একটি গোলমরিচ নিয়ে নিজের মুখের লালায় ঘষে কাজলের মত চোখে লাগাতে হবে (অবশ্য পুরো গোলমরিচটা ঘষে নেয়ার দরকার নেই)। এর দ্বারা নিদ্রাহীনতা চলে যাবে। যেসব কীটপতঙ্গ কামড়ালে বা হুল ফোটালে জ্বালা করে যেমন বোলতা, ভীমরুল, কাঁকড়া, বিছা, ডাঁস ইত্যাদির জ্বালা দমন করতে গোলমরিচ পানিতে ঘষে তার সাথে 2-5 ফোঁটা ভিনিগার মিশিয়ে হুলবিদ্ধ স্থানে লাগালে জ্বালা প্রশমিত হয়। কেবল যে মাথায় টাক রোগে চুল ওঠে যায় তা নয়। ভ্রু, গোঁফ, দাড়ি ইত্যাদি লোমশ জায়গায়ও টাক রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ধানি পেঁয়াজের রস টাকের স্থানে লাগাতে হবে। এরপর ওই জায়গায় গোলমরিচ ও সৈন্ধব লবণ একসাথে বেটে লাগিয়ে রাখতে হবে। দেখা যাবে ব্যবহারের কয়েকদিন পর সেখানে নতুন চুল গজিয়েছে। অনেকে ঢুলুনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কথা বলতে বলতে মনের অগোচরেই তিনি ঘুমিয়ে যাচ্ছেন। এই অহেতুক দুষ্ট ব্যাধি দমনে মরিচ বেশ উপকারী। এক্ষেত্রে মুখের লালায় গোলমরিচ ঘষে চোখে কাজলের মত লাগাতে হবে। কোমরে, পাঁজরে বা ঘাড়ে অনেকের ফিক ব্যথা হয়ে থাকে। এই ব্যথা নিরাময়ে আশ্রয় নিতে হবে গোলমরিচের। গোলমরিচের গুঁড়ো এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় গরম পানিসহ সকালে ও বিকেলে খেলে এই ব্যথা উপশম হবে। এমন অনেক রোগ আছে যেগুলো হঠাৎ আক্রমণ করে থাকে। মূত্রাবরোধ হলো এমন একটি বেদনাদায়ক রোগ। এই রোগে প্রস্রাব একটু একটু হতে থাকে আবার থেমেও যায়। এক্ষেত্রে গোলমরিচ দু'গ্রাম নিয়ে চন্দনের মত বেটে একটু মিশ্রি বা চিনি দিয়ে শরবত করে খেতে হবে। গনোরিয়া রোগকে আয়ুর্বেদিক মতে বলা হয় উপসর্গিক মেহ। এ রোগে প্রস্রাবের সময় বা পরে অথবা অন্য সময়েও টিপলে একটু পুঁজের মত বেরোয়। এক্ষেত্রে মরিচচূর্ণ 800 মিলিগ্রাম মাত্রায় দু'বেলা মধুসহ খেতে হবে। প্রথমে 2_3 দিন একবার করে খাওয়া ভাল। শিশুদের ফুলো রোগেও মরিচ উপকারী। অনেক সময় দেখা যায় ঠাণ্ডা হাওয়া লাগলে বা প্রস্রাবের ওপর শিশু শুয়ে থাকলে এমনকি শীতকালে উপযুক্ত বস্ত্রের অভাবে শিশু ফুলে গেছে। এই অবস্থায় টাট্কা মাখনের সাথে 50 মিলিগ্রাম মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে সেটা একটু একটু করে জিভে লাগিয়ে দিতে হবে। শিশু তা চেটে খেয়ে ফেলবে, এতে ফুলোর উপকার হবে। আয়ুর্বেদিক মতে অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াস বিকারগ্রস্ত হলে তার পরিণতিতে রসবহ স্রোতের বিকার উপস্থিত হয়। আর এর ফলে জন্ম নেয় ক্রিমি। এর দরুন 2 থেকে 7-8 বছরের ছেলেমেয়েদের পেটের উপরের অংশে (দু'ধারের পাঁজরের হাড়গুলোর সংযোগস্থলের নিচে) মোচড়ানি ব্যথা হয়। এর ফলে শিশুর মাথা একটু বড় হয়ে যায়। মুখ দিয়ে পানি ওঠে না। যখন তখন পেটে ব্যথা ধরে। এক্ষেত্রে এই বয়সের বাচ্চাদের জন্যে 50 মিলিগ্রাম মাত্রায় মরিচের গুঁড়োর সাথে একটু দুধ মিশিয়ে খেতে দিতে হবে। দরকারবশত সকাল বিকাল দু'বেলাই খেতে দেয়া যায়। নাসা রোগ ভয়ঙ্কর না হলেও ছোট নয়। এর লক্ষণ হলো: প্রথমে নাকে সর্দি, তারপর নাক বন্ধ হয়। কোন কোন সময় কপালে যন্ত্রণা হয়। ঘ্রাণশক্তির হ্রাস ঘটে। দুর্গন্ধও বেরোয় মুখ থেকে। খাবারের রুচি থাকে না। কারও কারও ঘাড়ে যন্ত্রণা হতে শুরু করে। আবার নাক দিয়ে রক্তও পড়ে। এক্ষেত্রে পুরনো আখের গুড় 5 গ্রাম, গরুর দুধের দই 25 গ্রাম এবং সেই সাথে এক গ্রাম মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে দু'বার খেতে হবে। কথায় বলে লোভে পাপ আর পাপে মৃতু্য। খাওয়ার সময় লোভ সামলানো যায় না। আবার খেলেও হজম হয় না। একটু তেল, ঘি জাতীয় গুরুপাক জিনিস খেলে তো কথাই নেই। গলা, বুক জ্বালা করবে, অম্বলের ঢেকুর উঠবে। তারপর বমি হবে। কোন সময় এই ক্ষেত্র উপস্থিত হলে খাওয়ার পরই গোলমরিচের গুঁড়ো এক গ্রাম বা দেড় গ্রাম মাত্রায় পানিসহ খেতে হবে। এর দ্বারা সেদিনকার মত নিষকৃতি পাওয়া যাবে। অনেকে প্রায়শই আমাশয় রোগে ভুগে থাকেন। আমাশয় হলে অনেক সময় আম বা মল বেশি পড়ে না। কিন্তু শুলুনি বা কোঁথানি থাকে যথেষ্ট। এক্ষেত্রে মরিচচূর্ণ এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকেলে দু'বার পানিসহ খেতে হবে। এর দ্বারা আমদোষ 2-3 দিনের মধ্যেই চলে যাবে। পেট গরম হলে অনেকক্ষত্রে কাশি দেখা দেয়। এ ধরনের কাশিতে সর্দি উঠে যাবার পর একটু উপশম হয় কিংবা পানি খেয়ে বমি হয়ে গেলে সেই কাশির উদ্বেগটা চলে যায়। এই অবস্থার সৃষ্টি হয় অগ্নাশয়ের বিকৃতি থেকে। এক্ষেত্রে গোলমরিচ গুঁড়ো করে কাপড়ে ছেঁকে নিয়ে সেই গুঁড়ো এক গ্রাম মাত্রায় নিয়ে একটু গাওয়া ঘি ও মধু মিশিয়ে অথবা ঘি ও চিনি মিশিয়ে সকাল থেকে মাঝে মাঝে একটু একটু করে 7/8 ঘণ্টার মধ্যে এটি চেটে খেতে হবে। নপ্রিয় ও সহজলভ্য একটি ফল কমলা। এটি সারা বছরই পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা। তাই এটি আর এখন বিদেশি কোন ফল নয়। জনপ্রিয় এই ফলটির পুষ্টিগুণ সবার জানা উচিত। কমলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ হল : * ১০০ গ্রাম কমলাতে আছে ভিটামিন বি ০.৮ মিলিগ্রাম, সি ৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩০০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম। * দৈনিক যতটুকু ভিটামিন ‘সি’ প্রয়োজন তার প্রায় সবটাই একটি কমলা থেকে সরবরাহ হ’তে পারে। * কমলায় আছে শক্তি সরবরাহকারী চর্বিমুক্ত ৮০ ক্যালরি, যা শক্তির ধাপগুলোর জন্য জ্বালানি হিসাবে কাজ করে। * কমলায় আছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা ক্যান্সার প্রতিরোধক, স্বাস্থ্যকর, রক্ত তৈরিকারক এবং ক্ষত আরোগ্যকারী হিসাবে খুবই উপযোগী। * কমলা বি ভিটামিন ফোলেটের খুব ভাল উৎস, যা জন্মগত ত্রুটি এবং হৃদরোগের জন্য ভাল কাজ করে। * প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয় পটাসিয়ামের ৭ ভাগ পূরণ করা সম্ভব কমলা দিয়ে, যা শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন। * কমলাতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেল ড্যামেজ করে। ফলে ত্বকে সজীবতা বজায় থাকে। * এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। * কমলাতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে। * এর ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম থাকায় ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। * পটাসিয়াম ইকেট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে এবং কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ভাল রাখতে সহায়তা করে। * কমলাতে উপস্থিত লিমিনয়েড মুখ, ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলীকে কোমল রাখে এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। * ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় ওযন কমাতেও সহায়তা করে। \ সংকলিত \ কমলার জুস খেয়ে নিন""" সকালের নাস্তায় নিয়মিত ডিম খেলে স্মৃতি শক্তি বাড়ে।কথাটা নতুন করে জানালেন বিজ্ঞানীরা ।তারা ডিমে খুজে" কোলেন "নামে নতুন এক ধরণের উপাদান পেয়েছেন।ইউনিবার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষক রোডা আউ এবং তার দল গত দশ বছর ধরে ডিম এবং তার পুষ্টিগুণ নিয়ে কাজ করছিলেন।তারা দশ বছরে একহাজার ৪০০ প্রাপ্ত বয়স্ক বৃটিশের উপর একটি গবেষণা চালান।গবেষণায় দেখা গেছে ,১৪০০ বৃটিশের যারা নিয়মিত সকালের নাস্তায় ডিম খাওয়ার অভ্যাস করেছেন তাদের স্মৃতি শক্তি বাকীদের তুলনায় অনেক তুখোর । লবঙ্গ লবঙ্গ সাধারণত রান্নার সময় অনেকে ব্যবহার করেন। গরম মসলার মধ্যেও লবঙ্গ থাকে। তা রান্নার স্বাদ বাড়ায়। এছাড়া লবঙ্গের আরও বিশেষ কিছু গুণ আছে, যা আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে ভীষণ ফলদায়ী। চলুন সেগুলো জেনে নিই। —লবঙ্গ কফ-কাশি দূর করে। —পানির পিপাসা পেলে বা বুকে অস্বস্তি হলে লবঙ্গ খাওয়া দরকার। তাতে পিপাসা মেটে। শরীরে ফুর্তি নিয়ে আসে। —হজমে লবঙ্গ সহায়তা করে। —খিদে বাড়ায়। —পেটের কৃমি নাশ করে দেয়। —লবঙ্গ পিষে মিশ্রি বা মধুর সঙ্গে খাওয়া ভীষণ ভালো। এতে রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। —এটা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কাজ করে। হাঁপানির মাত্রা কম করে। —চন্দনের গুঁড়োর সঙ্গে লবঙ্গ পিষে লাগালে ত্বকের যে কোনো সমস্যা দূর হয়ে যায়। —দাঁতের ক্ষেত্রে লবঙ্গ ভীষণ ভালো ওষুধ। দাঁতে ব্যথা হলে লবঙ্গ মুখে রাখুন কমে যাবে। —মুখে দুর্গন্ধ দূর করে লবঙ্গ। —মুখে ছালা হলে পানের মতো পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খান, ছালা কমে যাবে। খেজুর একটি পুষ্টিকর ফল। সারা বছর পাওয়া গেলেও রমজানের সময়ে এর সহজলভ্যতা ও চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। আমাদের দেশেও এখন খেজুরের আবাদ করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সৌদি কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের খেজুরই আমরা বেশি খেয়ে থাকি। গাঢ় খয়েরি রঙের খেজুরে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর স্বাদ এতই মিষ্টি, যেন মনে হয়, চিনি ও মধুর এক অপূর্ব মিশ্রণ। খেজুরের পুষ্টিগুণঃ খেজুরে আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। ফ্রক্টোজ ও ডেক্সট্রোজের মতো সাধারণ সুগার। আছে ট্যানিনস নামক পলিফেনোলিক এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা একাধারে এন্টি-ইনফেকটিভ, এন্টি-ইনফ্লামেটরি ও এন্টি হেমোরেজিক হিসেবে পরিচিত। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ। এটি বিটা ক্যারোটিন নামক এন্টি অক্সিডেন্ট ফ্লাভোনয়েডে সমৃদ্ধ। আয়রনের চমৎকার উৎস হচ্ছে, খেজুর যা আমাদের দেহের জন্য অপরিহার্য। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও ম্যাগনেশিয়াম। ভিটামিন 'কে'-সহ ভিটামিন-বি কমপ্লেক্সে সমৃদ্ধ খেজুর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পাইরিডক্সিন, নিয়াসিন, পজেন্টামেনিক এসিড ও বিবোফ্লাভিন। খেজুরের উপকারিতাঃ == কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খেজুর একটি উপকারী ফল। == নিকোটিনিক উপাদানের কারণে এটি দেহের অন্ত্রের নানা জটিলতা দূর করতে সাহায্য করে। == সুগার, ফ্যাট, প্রোটিন ও ভিটামিনের অপূর্ব সমন্বয়ের জন্য এটি দেহের ওজন বাড়াতে একটি পুষ্টিকর ডায়েট। == হার্টকে সুস্থ, সবল ও নানা জটিলতা থেকে নিরাপদ রাখতে সাহায্য করে। == শিশুর পুষ্টিহীনতা দূর করতে সহায়তা করে। == খুসখুসে কাশি, ব্রঙ্কাইটিস সমস্যায় খেজুর খুব আরামদায়ক। == পটাসিয়ামে সমৃদ্ধতার জন্য এটি নার্ভাস সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। == নিয়মিত ৪০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম শতকরা ৪০ ভাগ স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাস করে। এক্ষেত্রে খেজুর খুবই সহায়তা করে থাকে। == রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও যৌন দুর্বলতা কমাতে খেজুর সহায়ককারী হিসেবে কাজ করে। == খেজুরে আছে ফ্লুরিন যা দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে থাকে। == রাত কানা, অ্যানিমিয়া ও ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। == সর্বোপরি, লক্ষণীয় বিষয়, খেজুর একটি এনার্জি বা শক্তিবৃদ্ধিকারক, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল। ১০০ গ্রাম খেজুরে যা থাকেঃ এনার্জি - ২৭৭ কিলোক্যালরি কার্বো হাইড্রেট - ৭৪.৯৭ গ্রাম প্রোটিন - ১.৮১ গ্রাম ফ্যাট - ০.১৫গ্রাম ডায়েটরি ফাইবার - ৬.৭ গ্রাম ডায়েটরি সুগার - ৬৩ গ্রাম বেশ কয়েকটি জরিপে বেশি পরিমাণ বাদাম খাওয়া (দিনে ২/৩ বার) এবং ওজন কমে যাওয়ার মধ্যে একটি সম্পর্ক প্রমাণিত হয়েছে। বেথ ইজরায়েল মেডিকেল সেন্টারের গবেষকরা ২০১০ সালে ২০ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ছোট একটি জরিপ পরিচালনা করেন। এতে দেখা যায় নাস্তার সময় কিছু আখরোট খেলে দুপুরের খাবার সময় পেট ভরাভরা লাগে, ফলে কম খাওয়া সম্ভব হয়। ক্যালরি কম খাওয়া হলে ওজন হ্রাসে সহায়তা হয়। বাদাম খেলে যেহেতু পেট ভরাভরা লাগে, তাই তো কম ক্যালরি খাওয়ার ব্যাপারে সহায়ক হবে। বাদামে থাকে পর্যাপ্ত চর্বি ও প্রোটিন এবং এর চর্বির প্রায় পুরোটাই অসম্পৃক্ত ধাচের অর্থাতৎ স্বাস্থ্যকর। এতে ভিটামিন বেশি না পাওয়া গেলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। তাছাড়াও ম্যাগনেসিয়ামসহ প্রয়োজনীয় আরো কিছু খনিজ এতে রয়েছে। খাদ্য নিয়ন্ত্রণ যারা করেন, তারা ক্যালরি বেড়ে যাওয়ার ভয়ে বাদামের চর্বি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। বাদামে শর্করা সামান্যই আছে। ফলে বাদাম খেলে ওজন বাড়বে না। ১.৫ আউন্স বাদামে বিদ্যমান পুষ্টি (গ্রাম হিসেবে): সাধারণ বাদাম, ক্যালোরি ২৪৯ গ্রাম, ফ্যাট ২১.১ গ্রাম, প্রোটিন ১০.১ গ্রাম, পেস্তা বাদাম- ক্যালোরি ২৪৩ গ্রাম, ফ্যাট ১৯.৬ গ্রাম, প্রোটিন ৯.১ গ্রাম, বিদেশী বাদাম- ক্যালোরি ২৫৪ গ্রাম, ফ্যাট ২২.৫ গ্রাম, প্রোটিন ৯.৪ গ্রাম, বড় বাদাম- ক্যালোরি ২৭৯ গ্রাম, ফ্যাট ২৮.২ গ্রাম, প্রোটিন ৬.১ গ্রাম, কাজু বাদাম- ক্যালোরি ২৪৪ গ্রাম, ফ্যাট ১৯.৭ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৫ গ্রাম, বাদুর বাদাম- ক্যালোরি ২৭৫ গ্রাম, ফ্যাট ২৬.৫ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৪ গ্রাম, আখরোট- ক্যালোরি ২৭৮ গ্রাম, ফ্যাট ২৭.৭ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৫ গ্রাম, ম্যাকাড্যামিয়াস- ক্যালোরী ৩০৫ গ্রাম, ফ্যাট ৩২.৪ গ্রাম, প্রোটিন ৩.৩ গ্রাম, পেক্যান্স- ক্যালোরী ৩০২ গ্রাম, ফ্যাট ৩১.৬ গ্রাম, প্রোটিন ৪.০ গ্রাম। আম যদিও আমাদের জাতীয় ফল নয়, তবে অবশ্যই প্রিয় ফল। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে আম খেতে পছন্দ করে না। আম কাঁচা অথবা পাকা যেভাবেই খাওয়া হোক তা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অনেক ক্ষেত্রে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের গুণ আরও বেশি। কাঁচা আমের গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে সত্যিই অবাক হতে হয়। জেনে নিন কাঁচা আমের উপকারিতা: আমাদের শরীরের রক্ত পরিস্কার রাখে কাঁচা আম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখে বিটা ক্যারোটিন থাকায় হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করে কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় রক্তসল্পতা সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় গরমে ঠাণ্ডা জতীয় রোগ প্রতিরোধ কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ সাহায্য করে লিভার ভালো রাখে নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করে অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করে ত্বক উজ্জ্বল করে দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করে ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্টকাঠিন্য দূর করে এছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এখন কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। এমন কি পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে থাকে।বেশি বেশি কাঁচা আম খেয়ে, শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন। ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য পুষ্টি। এতে পটাশিয়াম আছে প্রচুর পরিমাণে। বমি হলে মানুষের রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। ডাবের পানি পূরণ করে এই ঘাটতি। তাই অতিরিক্ত গরম, ডায়রিয়া, বমির জন্য উৎকৃষ্ট পানীয় ডাবের পানি। এতে পানির পরিমাণ প্রায় ৯৪ শতাংশ। তাই ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায়, পুরো দেহের শিরা-উপশিরায় সঠিকভাবে রক্ত চলতে সাহায্য করে। কারণ, পানি বেশি পান করলে কিডনির কাজ করতে সুবিধা হয়, দেহে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বাড়ে, ত্বকসহ প্রতিটি অঙ্গে পৌঁছায় বিশুদ্ধ রক্ত। ফলে পুরো দেহ হয়ে ওঠে সতেজ ও শক্তিশালী। এতে কোনো চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই। প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান থাকার জন্য বাড়ন্ত শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্য ডাবের পানি যথেষ্ট উপকারী। তারুণ্য ধরে রাখতে ডাবের পানি যথেষ্ট উপযোগী। এতে চিনির পরিমাণও অল্প। তবে ডায়াবেটিসের রোগীরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে ডাবের পানি খাবেন। কিডনিতে পাথর হয়েছে বা ডায়ালাইসিস চলছে, এ ধরনের রোগীরা এই ফল খাবেন না। কারণ, এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম, যা কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু যারা সুস্থ মানুষ, তাদের কিডনির জন্য ডাবের পানি আশীর্বাদস্বরূপ। কিডনি দেহের ছাঁকন যন্ত্র। এই অঙ্গ শরীরের নোংরা ও ক্ষতিকর অংশগুলোকে দেহের বাইরে বের করতে সাহায্য করে। এই ফলে নেই কোনো ভিটামিন এ। তার পরও শরীরের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম রয়েছে ডাবের পানিতে, যা হাড়কে করে মজবুত। সেই সঙ্গে জোগায় ত্বক, চুল, নখ ও দাঁতের পুষ্টি। প্রাচীন রোমে মাশরুমের জনপ্রিয়তা এত ব্যাপক ছিল যে, একে বলা হতো ‘ঈশ্বরের খাবার’। ১৭০০ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুমের চাষ শুরু হয়। খাদ্য ছাড়াও বিভিন্ন উল ও রং তৈরিতে এটি ব্যবহার হয়। সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবারের নাম মাশরুম। এর স্ট্যান্ডার্ড নাম ‘Agricus bisporus’ আমাদের দেশে খাদ্য হিসেবে এর প্রচলন খুব বেশিদিন না হলেও বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা অনেক। মুখরোচক খাদ্য হিসেবে এর প্রচলন শুরু হয় প্রাচীন মিসরে। প্রায় তিন হাজারেরও বেশি সময় আগে মিসরের ফারাওদের কাছে এটি ছিল জনপ্রিয় এক খাবার। তখন কেবল অভিজাতরাই এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারত। মাশরুম এক প্রকার সাদা সবজি। তবে খাদ্যগুণ বিবেচনায় এর অবস্থান সবজি ও মাংসের মাঝামাঝি হওয়ায় এটিকে সবজিমাংস নামেও অভিহিত করা হয়। এটি ভিটামিন ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। কোনো ব্যক্তির দৈনিক যে পরিমাণ ভিটামিন গ্রহণ করা প্রয়োজন তা মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুমে আছে ১৯ থেকে ৩৫ শতাংশ প্রোটিন। এছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফলিক অ্যাসিড ও লৌহ। এতে চর্বি ও শর্করার পরিমাণ কম এবং আঁশ বেশি থাকায় ডায়াবেটিক রোগীদের আদর্শ খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। কোলেস্টেরল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোবাস্টাটিন ও এন্টাডেনিন থাকায় মাশরুম খাওয়া উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীদের জন্য ভালো। এছাড়া এটি ডেঙ্গুজ্বর ও হেপাটাইসিস-বি জন্ডিসের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। গর্ভবতী মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতেও মাশরুমের ভূমিকা অনন্য। মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড ও লৌহ থাকায় এটি রক্তশূন্যতা দূরীকরণেও কার্যকর। চীনে বর্তমানে ১১ প্রজাতির মাশরুম বিভিন্ন রোগে সরাসরি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের দেশেও মাশরুম গুটিবসন্ত, অ্যাজমা ও উচ্চ রক্তচাপজনিত চিকিৎসায় ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ ব্যাপকতা লাভ করেছে। অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম উৎপাদন শুরু না হলেও ৮ প্রকার মাশরুম চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে মাশরুম একটি অপরিচিত সবজি। সঙ্গত কারণেই এর রান্নার প্রক্রিয়াটি অনেকের কাছেই অজানা। ভালোভাবে রান্না করা হলে এটি আমাদের মুখেও স্বাদ লাগবে। মাশরুম রান্নার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত প্রণালী হলো- মাশরুম সবজি মাশরুম অন্যান্য দেশী সবজির সাথে মিশিয়ে রান্না করা যায়। এর জন্য যে পরিমাণে সবজি নিতে হবে- উপকরণ ও পরিমাণ শুকনো মাশরুম ১০০ গ্রাম আলু ৫টি (২৫০ গ্রাম) মটরশুটি ২৫০ গ্রাম টমেটো ৫০০ গ্রাম পেঁয়াজ ১০০ গ্রাম আদা ৫০ গ্রাম রসুন ৫ থেকে ৬ টি কোয়া তেল ৩ থেকে ৪ চামচ অন্য মসলা ও লবণ প্রয়োজনমত রান্না প্রণালী -------------- • শুকনো মাশরুম গরম পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে ; • আলু, মটরশুটি, টমেটো ধুয়ে নিতে হবে। পেঁয়াজ, মটরশুটি ও আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে ; • এরপর আলু, টমেটো ও পেঁয়াজ কুটতে হবে। পেঁয়াজ একটু তেলে ভেজে নিতে হবে ; • আদা, রসুন বেটে নিতে হবে। মসলা তেলে ভেজে লবণ ও কাটা সবজি দিয়ে নাড়তে হবে ; • এরপর একটু গরম পানি দিয়ে তরকারী সিদ্ধ করতে হবে ; • মাশরুম টুকরা করে কেটে সিদ্ধ সবজির সাথে দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট রান্না করে তুলে নিতে হবে। মাশরুম বিরিয়ানী মাশরুমের স্বাদ কিছুটা মাংসের মত। এজন্য মাশরুমের সাথে সবজি মিশিয়ে সহজেই সুস্বাদু বিরিয়াণী তৈরি করা যায়। মাশরুম বিরিয়াণী প্রস্তুত প্রণালী হলো- উপকরণ ও পরিমাণ (জনপ্রতি) পোলাউর চাল ১৫০ গ্রাম মাশরুম ১০০ গ্রাম গাজর ৫০ গ্রাম মটরশুটি ৫০ গ্রাম ফুলকপি ৫০ গ্রাম (এখানে অন্য যে কোন সফট ভেজিটেবল দিতে পারেন) পেঁয়াজ ১০০ গ্রাম ধনেপাতা ২৫ গ্রাম রসুন ৫ গ্রাম আদা ৫ গ্রাম কাঁচা মরিচ ৫ গ্রাম টক দই ৫০ গ্রাম তেল/মাখন ৫০ গ্রাম অন্য মসলা, লবণ ও পানি প্রয়োজনমত রান্না প্রণালী ------------- • চাল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। মসলা বেটে নিতে হবে ; • পেঁয়াজ সোনালী করে ভেজে রাখতে হবে ; • মাশরুম পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে ভেজে রাখতে হবে ; • সবজি ধুয়ে কেটে সিদ্ধ করে নিতে হবে ; • চাল তেলে ভেজে সামান্য পানি দিয়ে প্রায় রান্না করার অবস্হায় নিয়ে আনতে হবে ; • দই ভাল করে ফেটে ধনে পাতা কুচির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে ; • এরপর সিদ্ধ সবজি, মাশরুম, দই মিশাতে হবে ; • একটি পাত্রে আবার খানিকটা তেল/মাখন দিয়ে চুলায় দিতে হবে। এরপর সবজি, মাশরুম পেঁয়াজ এর মিশ্রণ দিয়ে একটু নাড়তে হবে এবং প্রায় সিদ্ধ পোলাউর চাল মিশিয়ে ১০ মিনিট হালকা আঁচে চুলায় রাখতে হবে ; • তুলে পোলাউর উপর ভাজা পেঁয়াজ, কাজু বাদাম ইত্যাদি মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে। মাশরুম ফ্রাই নাস্তা হিসেবে মাশরুম ফ্রাই চা-এর সাথে পরিবেশন করা যায়। ইফতারীর সময় বেসনের সাথে সবজি দিয়ে পাকুড়া তৈরির মত করে সবজির পরিবর্তে মাশরুমের পাকুড়া তৈরি করা হলে তা যথেষ্ট সুস্বাদু হবে। উপকরণ ও পরিমাণঃ মাশরুম ১০ থেকে ১২টি ডিম ১ টি বেসন ১ থেকে ২ টেবিল চামচ লবণ, গোল মরিচ গুড়া, সয়াবিন তেল পরিমাণ মত রান্না প্রণালী ------------- • মাশরুম ধুয়ে পরিষ্কার করে পানি ছাড়িয়ে নিতে হবে ; • একটি পাত্রে ডিম ভেঙ্গে বেসন, লবণ, গোল মরিচের গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে প্রয়োজনমত পানি দিয়ে ঘন করে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। মাশরুমগুলো মিশ্রণে ভালোভাবে ডুবিয়ে নিতে হবে ; • পাত্রে তেল গরম করতে হবে এবং একত্রে কয়েকটি মাশরুম ভেজে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে। মাশরুম হালিম আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরণের ডালের সাথে মাংস মিশিয়ে হালিম তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে হালিমের জন্য প্রয়োজনীয় ডালের সাথে মাশরুম মিশিয়ে মাশরুমের হালিম বানানো যায়। তাছাড়া পাতলা ডালের সাথে মাশরুম দিয়ে মাশরুম স্যুপও তৈরি করা যেতে পারে। উপকরণ ও পরিমাণ মুগ ডাল ১২৫ গ্রাম মসুর ডাল ২৫০ গ্রাম ছোলার ডাল ১২৫ গ্রাম মাশরুম তাজা ৫০০ গ্রাম (শুকনো হলে ৫০ গ্রাম) পেঁয়াজ কুঁচি, আদা, রসুন, জিরার গুড়া, হলুদের গুড়া, তেজপাতা, লবণ ও পানি পরিমাণ মত রান্না প্রণালী ------------- • মাশরুম ধুয়ে পানি ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে রাখতে হবে ; • ডালগুলো ধুয়ে পানিতে ছাড়িয়ে নিতে হবে ; • মুগ ডাল সামান্য ভেজে ধুয়ে মসুর ও ছোলার ডালের সাথে মিশিয়ে ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করার সময় ডালের সাথে আদা, রসুন, পেঁয়াজ কুঁচি ও লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। ডাল খুব ঘন করা যাবে না ; • কাটা মাশরুম পেঁয়াজ কুচির সাথে ১ থেকে ২ মিনিট গরম তেলে হালকাভাবে ভেজে নিতে হবে। তারপর সিদ্ধ ডালের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে ; • সামান্য জিরার গুড়া এবং গোল মরিচের গুড়া মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে। চিকেন মাশরুম স্যুপ আমাদের দেশের রেস্তেরাগুলোতে চিকেন কর্নস্যুপ অত্যন্ত জনপ্রিয়। চিকেন কর্নের সাথে মাশরুম দিলে স্যুপের পুষ্টিমাণ বাড়বে এবং স্বাদও ভিন্নতর হবে। চিকেন মাশরুম স্যুপ তৈরি করার জন্য নীচের উপরকরণগুলোর প্রয়োজন হবে। উপকরণ ও পরিমাণ মাশরুম ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ ২টি মুরগীর স্টক ৪ কাপ পানি ৩ কাপ কর্নফ্লাওয়ার বা ময়দা ১ কাপ বাটার অয়েল ২০ গ্রাম আদা ২৫ গ্রাম লবণ, টেস্টিং সল্ট পরিমাণ মত রান্না প্রণালী ------------ • মুরগির স্টক তৈরি করার জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের একটি মুরগি ২.৫০ লিটার পানিতে পরিমাণ মত লবণ আদা দিয়ে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে। মাংসগুলো নরম হয়ে আলাদা হয়ে গেলে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে মুরগির হাড়গুলো আলাদা করতে হবে এবং মাংস স্টক পানির সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে নিতে হবে ; • মাশরুম ও পেঁয়াজ চাকা করে কেটে নিতে হবে। তারপর বাটার অয়েল দিয়ে হালকাভাবে ভেজে নিতে হবে ; • এবার এসব ভাজা মাশরুম, মুরগির হাড় ও মাংস সিদ্ধ স্টক পানিতে ৫ থেকে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজন মত লবণ ও একটি কাপে অল্প পানিতে কর্নফ্লাওয়ার গুলিয়ে নিতে হবে ; • ২ থেকে ৩ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে ; • প্রয়োজন মত টেস্টিং সল্ট দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে। মাশরুম স্যান্ডউইচ স্যান্ডউইচ বর্তমানে শহরের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়। দ্রুত তৈরি এবং সহজে বহন করার কারণে স্যান্ডউইচ সব বয়সের মানুষের কাছে পরিচিত। স্যান্ডউইচ সাধারণত: মাংস, মাছ কিংবা ডিম দিয়ে হয়। মাছ, মাংস, ডিমের পরিবর্তে মাশরুম ব্যবহার করা হলে স্যান্ডউইচ স্বাদ ও পুষ্টিমাণ ভিন্নরকমের হবে। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তারা এই স্যান্ডউইচ খেতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে বাটারের পরিবর্তে কোলস্টেরল মুক্ত কর্ন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ মাশরুম ৫০ গ্রাম বাটার ৫০ গ্রাম পেঁয়াজ, লবণ পরিমাণ মত পাউরুটি ১টি রান্না প্রণালী ------------- প্রথমে মাশরুমগুলো স্লাইস করে কেটে নিতে হবে। তারপর ফ্রাইপ্যানে বাটার/কর্ন অয়েল বা ভেজিটেবল ঘির মধ্যে পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে মাশরুমগুলো হালকা করে ভেজে নিতে হবে ; তারপর দুই পিস পাউরুটির ভিতর ভাজা মাশরুমগুলো সুন্দর করে স্প্রেড করে দিন। এরপর মিয়োনিজ, টমেটো, পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করতে হবে। মাশরুম ওমলেট ডিম একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। ডিমের সাথে মাশরুম মিশালে সেই খাবারের মান ও গুণ দু-ই বৃদ্ধি পায়। নীচে মাশরুম ওমলেট রান্নার উপকরণ দেওয়া হলো- ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ মাশরুম ১০০ গ্রাম বাটার ১৫ গ্রাম ডিম ২টি দুধ ১ থেকে ২ কাপ লবণ ও মরিচ গুড়া পরিমাণ মত রান্না প্রণালী -------------- • মাশরুম ধুয়ে পরিষ্কার করে কেটে নিতে হবে ; • অল্প তাপে বাটার দিয়ে মাশরুমগুলো ৫ থেকে ৭ মিনিট ভেজে নিতে হবে ; • ডিম ও দুধ একসঙ্গে ফেটে নিয়ে মাশরুমের কড়াইতে ঢেলে নিতে হবে ; • প্রয়োজন মত লবণ ও মরিচের গুড়া দিয়ে ভাল করে নেড়ে নামিয়ে ফেলতে হবে। • যাদের কোলস্টেরল সমস্যা আছে তারা ডিমের কুসুমটি বাদ দিয়ে সাদা অংশের সাথে মাশরুম মিশিয়ে পুষ্টিকর উপাদেয় ওমলেট তৈরি করে খেতে পারেন। বেশ কয়েকটি রেসিপি দিলাম। সুস্বাদু খাবেন, পাশাপাশি সুস্থ থাকবেন। আর, কৃতজ্ঞতা স্বরুপ আমাকেও চাইলে একবার দাওয়াত দিতে পারেন। পাকা জামের মধুর রসে! উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘এ’তে ভরপুর জাম আমাদের রক্ত পরিষ্কার করে, দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। ফলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করে। চোখের ইনফেকশনজনিত সমস্যা ও সংক্রামক (ছোঁয়াচে) রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। রাতকানা রোগ ও চোখের ছানি অপারেশন হয়েছে এমন রোগীর জন্য জাম ভীষণ উপকারী। জামে গার্লিক এসিড, ট্যানিস নামে এক ধরনের উপকরণ রয়েছে, যা ডায়রিয়া ভালো করতে সাহায্য করে। | |
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)