Translate

রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১

যৌন শিক্ষা ও এর খুটিনাটি১৮+সেক্স এডুকেশন

(একটি  ১৮+ সেক্স এডুকেশন বিষয়ক লেখা , যৌনতা নিয়ে যাদের এলার্জি আছে তাদের পড়তে হবেনা  ।)

 একজন অনুজ , আমার ডাক্তার পরিচয় পাওয়ার পরে একদিন সন্ধ্যায় ইচ্ছে করে আমার সাথে বাড়ি ফিরতে চাইলেন। তার বাড়ির রাস্তা ভিন্ন দিকে আর আমিও রোগী দেখে দেখে ততদিনে বুঝতে পারি অনেক কিছুই। বুঝলাম , একটু আড়ালে কিছু আলোচনা করতে চান। আন্দাজে ভুল হয়নি। অতি সংক্ষেপে তিনি আমাকে জানালেন তার প্রেমিকার সাথে তার প্রথম যৌণ অভিজ্ঞতায় তার অতি দ্রুত স্খলনের ( প্রি ম্যাচিউর ইজাকুলেশন) সমস্যার কথা। 
.
সে একজন ডাক্তারকে দেখিয়েছেন ওই ডাক্তার কিছু ভিটামিন ওষুধ   দিয়েছিলেন।এই ভিটামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পর কিছুদিন তিনি ভাল ছিলেন । নতুন একজন গার্লফ্রেন্ডের সাথে আবার যৌন সম্পর্ক করার সময় বর্তমানে নাকি সমস্যা টা আবার হয়েছে  ।  
.
প্রি-ম্যাচিউর ইজাকুলেশন বা দ্রুত বীর্যপাতের জন্য আসলে ভিটামিন কোন কাজের ওষুধ না তবুও এই ডাক্তার দিয়েছিলেন এবং এতে নাকি রোগী কিছুদিন ভালো ছিলেন। কারণটা কি ? 
  আমি সেই তরুণকে অনেকভাবে  বোঝালাম যে এটা কোনো সমস্যা ন না , আর সত্যি সত্যি সমস্যা থাকলে ভিটামিনে কোনো রেজাল্ট পাওয়া যেত না । এটা মানসিক কারণে হয়েছে । তরুণটি আমার কথা মানলেন না , তিনি বললেন এই ভিটামিন জাতীয় ওষুধেই রেজাল্ট ভালো এসেছেন, আমি যেনো এমন টাইপের কিছু ওষুধ এর নাম বলে দেই ।
.

আসুন , আমরা একটু বুঝার চেষ্টা করি ঘটনাটা আসলে কি ঘটেছে। ছেলেটির সমস্যা ছিলো অতিদ্রুত স্খলন। এর সরাসরি ফলাফল যেইটা হয় , পুরুষ বা নারীর যৌণ তৃপ্তি বা ক্লাইমেক্স / অর্গাজম এ পৌছানোর আগেই সঙ্গম শেষ হয়ে যাওয়া । ব্যাপারটা অনেকটা প্রচন্ড ক্ষুধার মুখে দুই লোকমা খাওয়ার পরে প্লেট কেড়ে নেওয়ার মতন। বিস্তারিত আর বললাম না । 
.
কেন ঘটে এই রকম? যাদের সত্যি সত্যি কোন রকম ইনফেকশন ( যৌণ রোগ), এনাটমিক বা যৌণাঙ্গের গঠনগত সমস্যা আছে কিংবা ফিজিওলজিকাল বা কার্যকারিতার দিক থেকে কোন সমস্যা আছে - তারা ছাড়া বাকি সবার জীবনেই এইটা ঘটতে পারে মানসিক কারণে । 
.
★ প্রথমত, জীবনে প্রথম যৌণ সঙ্গম করতে গেলে ১ম কিছুদিন অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণে অতিদ্রুত স্খলন ঘটতে পারে। নিজের উত্তেজনাকে মানসিক ও শারীরীক ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে না পারাটাই কারণ । 
★ দ্বিতীয়ত , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে কোন রকম অপরাধবোধে ভুগলে । 
★ তৃতীয়ত , কোন কারণে যথেষ্ট সময় না থাকলে তাড়াহুড়া ও টেনশনে । 
★ চতুর্থত , আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকে অতিরিক্ত টেনশনে । 
★ পঞ্চমত , সঙ্গিনীর সাথে কোন কারণে যথেষ্ট স্বস্তি বা কম্ফোর্ট লেভেল না থাকলে । 
.
এখন কথা হলো , এর জন্য ওষুধ  খাওয়া কত জরুরী? 
.
যাদের কোন কারণে যৌণ রোগ বা ইনফেকশন আছে কেবল তাদের জন্যই ঔষুধ প্রয়োজন হতে পারে। জীবনের ১ম যৌণ অভিজ্ঞতায় কোন রোগ কারণ না হওয়ারই কথা । রইলো বাকি এনাটমিকাল ও ফিজিওলজিকাল কোন সমস্যা । এইটা প্রকৃতিতে খুবই রেয়ার। ডাক্তারের পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে এইটা বের হয়ে আসবে। কিন্তু উল্লেখিত তরুণের এই ধরনের কোন সমস্যা ধরা পড়ে নাই। 
.
আর মানসিক সমস্যার জন্য ভিটামিন? বুঝতেই পারছেন, এইটা ঠিক খাপ খায় না । তারপরেও মাঝে মাঝে নাছোড়বান্দা রোগী হইলে কিছু ডাক্তার রোগীর মন রক্ষা করতে গিয়ে ভিটামিন, স্যালাইন - এইসব বেকার জিনিস পত্র প্রেস্ক্রাইব করেন। তাহলে ছেলেটি উপকার পেলো কি করে? 
.
এখানে আমাদের আসলে তার সমস্যার মূলে পৌছাতে হবে। আমি যা বুঝেছিলাম, উনি তার প্রেমিকাকে তৃপ্ত করতে পারবেন কি পারবেন না সেই অতিরিক্ত টেনশন, সাথে ১ম বারের অতিরিক্ত উত্তেজনা = এর ফলে সমস্যায় পড়েছিলেন। ভিটামিন খাওয়ার পরে তার ভিতরে বিশ্বাস চলে আসে যে উনার সমস্যা মিটে গেছে । উনি এখন যৌন ভাবে সবল । এই ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ও কমফোর্ট লেভেল তাকে যে রিল্যাক্সসেশন বা আরাম দিয়েছে - তাতেই উনি পরের বার গুলোতে ভালো পারফর্ম করতে পেরেছেন। 
.
এখন , ঝড়ে বক পড়লো আর তাতে ফকিরের / ভিটামিনের কেরামতি বেড়ে গেলো। 
.
এই রকম কেরামতি কেন দরকার হয়? মূল সমস্যা কি? সমাধান কি? 
.
একজন ডাক্তার হয়েও সেই তরুণকে বুঝাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে আমি এইটা নিয়ে অনেক ভেবেছি। কেন উনি বুঝতে চাইলেন না একেবারেই? এবং ভেবে ভেবে , তার সাথে এর উপরে পড়ালেখা করে আমি যা বের করেছি তা হলো , মানুষের বিশ্বাসের সাথে তথ্যের লড়াইয়ে বিশ্বাসের জয় হবেই।
.
 এই তরুণের বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই কোন যৌণ শিক্ষা নেই । তার শেখার সূত্র ছিলো হয়ত আদিরসাত্মক সাহিত্য , নীল ছবি কিংবা নিদেন পক্ষে বড় ভাইদের অভিজ্ঞতা । এর কোনটাই সঠিক শিক্ষা দেয় না , দিতে পারে না । বরং এসব থেকে মানুষ বেশির ভাগ সময়েই ভয়াবহ ভুল শেখে । 
.
আবার এই সব সূত্র গুলো কোনটা স্বাভাবিক, কোনটা সমস্যা আর কোনটা রোগ- তাও শিক্ষা দেয় না । যারা এই সব নোংরা পথে কিছু শিখতে পছন্দ করেন না , তাদের জন্য কি কোন ভিন্ন পরিষ্কার পথ খোলা আছে? সার্বিক ভাবে - নাহ। যারা সেই রকম উচ্চ শিক্ষিত এবং ইন্টারনেট এ সংযুক্ত , তারা কিছুটা ভালো অবস্থানে আছেন। ইন্টারনেট থেকেই শিখতে পারেন কিন্তু সেই ওয়েবসাইট গুলো কি নির্ভরযোগ্য?
.
 লাইক , ভিয়ারাস বাড়িয়ে ইউটিউব থেকে  টাকা কামানো মেডিকেল বিষয়ক তথ্য দেওয়া ইউটিউবার গণ যে  সঠিক তথ্য দিচ্ছে  তা বুঝার কিন্তু উপায় একজন তরুণের নাই। অর্থাৎ একজন তরুণ কোন তথ্যটি সঠিক,  কোন তথ্যটি ভুল তা যাচাই করতে পারে না ,  ফলে  ভুল তথ্য গুলোকে সে সঠিক  হিসেবে মনে করে। (বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমি ইউটিউব থেকে কোন টাকা ইনকাম করি না, আমার মনিটাইজেশন অফ করা।  তাই কেউ এটা বলবেন না যে আমিও ইউটিউবে টাকা ইনকামের জন্য তথ্য দিয়ে থাকি ) 
.
আমাদের দেশের তরুণ তরুণিদের তাই মূল সমস্যা হলো:  একটা ভালো, ভদ্র , পদ্ধতিগত ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষা বা জ্ঞানের মাধ্যম - যা থেকে মানুষ সঠিক শিক্ষাটা নিতে পারে- তার অভাব। আর এরই সুযোগ নেয় যত রকমের হাতুড়ে আব জাব কোম্পানি ও ডাক্তার গুলো । বাংলাদেশে অশিক্ষা তো আছেই , তার চেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো , যারা স্কুল কলেজে পড়েন, তারা কুশিক্ষিত কিংবা অর্ধ শিক্ষিত । 
.
  এখনো মানুষ জানে না , মেয়েদের প্রতি মাসে রক্তপাত হওয়াটা (মাসিক বা রজঃস্রাব) যেমন একটা স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া , সেই রকম পুরুষের কিছুদিন পর পর ইরেকশন বা যৌণাঙ্গ দৃঢ় হওয়া থেকে শুরু করে ইজাকুলেশন বা ধাতু নির্গত হওয়াটা একটা অতি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া । স্বপ্নদোষ নামে যাকে  মানুষ এটা সেটা খেয়ে রোগমুক্তির আশা করে, সেইটা আসলে কোন রোগই না । একবার চিন্তা করুন, মেয়েরা যদি দল বেধে "ঋতুদোষের" জন্য ওষুধ খাওয়া শুরু করে তাহলে ব্যাপার কি দাঁড়াবে? 
.
সময়ের আগেই ধাতু নির্গমন বা ইজাকুলেশন কোন দুর্বলতার লক্ষণ নয় । এইটা কোন রোগও নয়। তবে , পুষ্টিহীন নারী শরীরে যেমন ঋতুস্রাবের সমস্যা হতে পারে, অতিরিক্ত পুষ্টিহীনতায় ভুগলে পুরুষেরও পারফর্মেন্সে ঘাটতি হতে পারে। তবে সে সব ঘাটতি মলম মেখে দূর করা যায় না । বেটার পার্ফর্মেন্সের জন্য চাই বেটার স্বাস্থ্য । সুস্বাস্থ্য। চিকিৎসকের  পরামর্শ সঠিক ভাবে অনুসরন করা । 
.
যারা জানেন না , তাদের জন্য বলি, অতিরিক্ত শুকনা কিংবা অতিরিক্ত মোটা হলে , উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিস হলে , সিগারেট - মদ জাতীয় বদভ্যাস থাকলে - যৌণ দক্ষতা কমে যেতে পারে। বাচ্চা হতেও সমস্যা হতে পারে। তার মানে এইনা যে আপনাকে সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে জিমে গিয়ে ডাম্বেল ভাজতে হবে, কিন্তু , স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান না হলে স্ত্রীর প্রেম পাইতে কিংবা বাচ্চার বাপ হইতে সমস্যা হতেই পারে। 
.
যারা যৌণ শিক্ষার নাম শুনলেই সব গেলো গেলো বলে চিল্লাতে ভালোবাসেন, সেই সব মানুষদের মন রক্ষা করতে গিয়ে আমাদের পাঠ্য বই গুলাতে যথা সম্ভব কম তথ্য দেওয়া থাকে। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে , উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আগে মানব দেহ সিলেবাসেই ছিলো না ( বায়োলজি) । আশা করি এখন সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মানুষের যৌণ বা রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেম আমি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াতে দেখিনি। এমন কি , মেডিকেলের ফিজিওলজি ম্যাডাম আমাদের বলেছিলেন, " এইটা তোমরা বাড়িতে পড়ে নিও।" এই থেকেই বুঝা যায় , মানুষের দেহের এই অংশ বা সিস্টেমটিকে নিয়ে সঠিক শিক্ষার পরিবেশ বাংলাদেশে প্রায় অনুপস্থিত । কিন্তু তাতে কি প্রলয় বন্ধ আছে? 
.
যারা বলেন, সঠিক যৌণ শিক্ষা দিলে মানুষের নৈতিক আচরণে ধ্বস নামবে , এতদিন তো এই শিক্ষা বাংলাদেশে বন্ধই আছে এক রকম, তাতে কি ধ্বস নামা বন্ধ হয়েছে? কমেছে? নাকি, বেড়েছে? 
যৌণ শিক্ষা বন্ধ আছে । কিন্তু যৌণ সঙ্গম কি বেড়েছে না কমেছে? 
যৌণ শিক্ষা বন্ধ আছে । কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষকে যৌণ সুড়সুড়ি দেওয়া কি বন্ধ আছে? 
.
যারা এর বিরোধিতা করেন, তারা কি দায়িত্ব নিয়েছেন ছেলে মেয়ে গুলো যাতে কোন বিপদে না পড়ে , অশিক্ষা - কুশিক্ষা জনিত স্বাস্থ্যহানি না ঘটায় - সেইটা বন্ধে? 
অসামাজিক কার্যকলাপ বাদ দেন, যারা সামাজিক কার্যকলাপ (বিয়ে, বাচ্চা নেওয়া, একটা স্বাভাবিক যৌণ জীবন কাটাতে চান) করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিপদ , আপদ, রোগ, শোক, বিব্রতকর অবস্থা এবং কখনো কখনো মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছেন , তাদের শিক্ষার কোন ব্যবস্থা কি নিয়েছেন? 
.
আমরা যারা ডাক্তার , তারা প্রতিদিনই কারো না কারো মারাত্মক কোন সমস্যার কথা শুনি বলে আমরা টের পাই , এই " লুকিয়ে রাখা" , " চেপে রাখা" , "দমিয়ে রাখা" যৌণ অজ্ঞতাজনিত সমস্যা গুলো কি হারে মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে। আর কত সহজেই একটা সঠিক শিক্ষা মানুষকে এই কষ্ট গুলো থেকে রক্ষা করতে পারে। 
কিছু ঘটনা ঃ 
.
১। এই ২০২১ সালের শেষের দিকে এসে শুনতে হয় শান্ডা বা মান্ডার তেল আর শিয়ালের বাম এর বেচাবিক্রির জন্য হাতুরেদের শোর গোল। 
২। এই যুগেও মানুষ জানে না কোনটা স্বাভাবিক যৌণতা আর কোনটা অস্বাভাবিক। 
৩। অতি আধুনিক দম্পতিকেও বিয়ের পরে পর্ণ দেখে শিক্ষা নিতে হয় কেমনে কি করে। যারা এই সব দেখা পাপ বলে বিশ্বাস করেন, তাদের অবস্থা আরো করুণ। 
৪। পতিতার কাছ থেকে "অভিজ্ঞতা" ও "জ্ঞান " আহোরণ করতে গিয়ে যৌণ রোগ বাধিয়ে আসে। 
৫। জানে না কিভাবে বাচ্চা হয়। 
৬। বিয়ের আট মাসেও না জানা কি ভাবে সঙ্গম করতে হয়। 
৭। জানে না কি ভাবে গর্ভ ধারণ আটকানো যায়। 
৮। অবৈধ গর্ভপাত এখনো বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যবসা। 
৯। এখনো সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে হওয়া নিয়ে স্ত্রীকেই দায়ী করা হয়। 
১০। এখনো যে কোন সমস্যা হলে মানুষ পরিচিত ডাক্তারদের কাছে ছোটে । কিন্তু যৌন সমস্যার ক্ষেত্রে বেশির ভাগই লজ্জায় চেপে রাখে আর নিজে নিজে রাস্তার ক্যানভাসারদের কাছ থেকে বা এক ফাইলে যথেষ্ট টাইপের কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ কিনে কিনে খায়।। 
১১। এই যুগে মানুষ শান্ডার তেল,ধোনেশ পাখির তেল, শিয়ালের বাম, শিকড় বাকড় তাবিজ তুমার , তুক তাক আর ভিটামিন- স্যালাইনের পিছনে টাকা নষ্ট করে। 
.
এখন সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনার কথা বলি । স্রেফ " কি ভাবে আদর করতে হয় জানে না বলে" স্ত্রীকে বছরের পর বছর ধরে যা করা হয়েছে তাকে শুধু তুলনা করা চলে "ধর্ষণ" হিসেবে । স্ত্রী স্বামীকে ভালোবাসেন কিন্তু তার যন্ত্রনা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো যে অত্যন্ত ধর্ম ভীরু সেই দম্পতি যৌণতা এক প্রকার বাদ দেন। এক পর্যায়ে স্ত্রী স্বামীকে অনুরোধ করেন, " তোমার দরকার হলে তুমি আরেকটা বিয়ে করো । আমি মানা করবো না।" 
.
এখন প্রশ্ন হইলো , আল্লাহ মানুষের ভিতর যৌণ সঙ্গম নামক একটা প্রক্রিয়া দিয়েছেন যার মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা প্রকাশিত হওয়ার কথা। যার মাধ্যমে নতুন শিশু জন্ম হওয়ার কথা । সেই প্রক্রিয়াটা একজন স্ত্রীর জন্য এত কষ্টের কেন হবে? কেন একজন স্ত্রীর মনে হবে তাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে ? আর স্বামীই বা কেন বুঝবে না কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা ধর্ষণ ? এই মারাত্মক অবস্থাটা কিন্তু আমি দেখেছি আমার পরিচিত গন্ডিতে ! ঘটনার কেউ মূর্খ , অশিক্ষিত নয়। বরং উচ্চ শিক্ষিত । এরা কেউ পাশবিক নয় বরং সঙ্গী- সঙ্গীনীর প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল। এরা কেউ ধর্মহীন নয় - এদের কেউ কেউ প্রচন্ড ধার্মিক  । 
.
বাংলাদেশের সমাজের যেই অংশটি কম শিক্ষিত  , তাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। 
.
আমাদের বুঝতে হবে , যৌণ শিক্ষা শুধুমাত্র বায়োলজির বিষয় নয়। এর সাথে জড়িত আছে স্বাস্থ্য। এর সাথে জড়িত আছে যৌণতার সামাজিক, ধর্মীয়/নৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অবশ্যই অর্থনৈতিক ইস্যু । যৌণতার সাথে জড়িত আছে ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ও আবেগ এর বিকাশ। এখনো বাংলাদেশে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার ভয়াবহ। আমরা এখনো এই সব স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করতে পারছি না বলে অন্য কোন দিকে উন্নতির কথা ভাবতেই পারছি না । প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছি দুনিয়া থেকে। আমরা কি একটা স্বাস্থ্য, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক,পারিবারিক (বাচ্চা হওয়া থেকে শুরু করে একটা বাচ্চাকে সঠিক ভাবে লালন পালন করতে কি কি করা লাগে, কেমন খরচ হয়) ও নৈতিক শিক্ষাসহ একটা পরিপূর্ণ ও ব্যালেন্সড যৌণ শিক্ষার সিলেবাস তৈরী করতে পারি না?
.
সরকার কি যৌণ শিক্ষার এই দিকে কিছু সিস্টেমিক ও সাহসী পদক্ষেপ নেবেন?
.
Md. Faijul Huq

বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

মরিয়ম ফুল বেবী কনসেভ ও ডেলীভারীতে কি ভাবে সেবন করবেন

মরিয়ম ফুলের কাহিনী- ফুলের নাম-“মরিয়ম ফুল”, মরু অঞ্চলের ক্ষণজন্মা উদ্ভিদ মরিয়ম ফুল, বৈজ্ঞানিক নাম- Anastatica hierochuntica । এই ফুলকে হযরত ঈসা (আঃ) এর মায়ের নাম নামানুসারে “মরিয়ম ফুল বা মরিয়ম বুটি”, নবী সাঃ এর কন্যা ফাতিমার নামানুসারে “ফাতিমার হাত বা হ্যান্ড অব ফাতিমা” এবং এর বৈশিষ্ট্য অনুসারে “পুনরুত্থান উদ্ভিদ” বলা হয়।

কারণ এই ফুল দেখতে খটখটে শুকনো ও মরা মনে হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই তরতর করে পাপড়ি মেলতে শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই ফুটন্ত ফুলের মতো তাজা আর পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত হয়ে যায়। এ এক আশ্চর্য ফুল ।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এর ব্যবহার হয়ে আসছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। অত্যন্ত দূর্লভ এই ফুলের উপকারিতা বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের প্রসবকালীন সময়ে এই ফুলের ব্যবহার এক রকম আবশ্যক। ঐতিহ্যবাহী ধাত্রীরা শত শত বছর ধরে প্রসবকালীন সময়ে মায়ের বেদনা লাঘব করার জন্য এই ফুলের ব্যবহার করছেন।নরমাল ডেলীভারীতে খুব কার্যকর। 

এই কুদরতি ফুলটি আল্লাহর রহমতে বেবি কন্সিভ করতে সহায়তা করে এবং লেবার পেইন কমাতে সাহায্য করে।

শুধু আমাদের দেশেই নয়, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই এর ব্যবহার হয়ে থাকে। ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মনীষী এর ব্যবহারের উপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন এবং বাতলে দিয়েছেন এর ব্যবহারের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিসমূহ। খ্রীষ্ট ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেলেও এর কথা বর্ণনা করা হয়েছে বলে অনেকে বর্ননা করেছেন।তবে সত্যতা যাচায় সম্ভব হয়নি।


। এটি কোরআন হাদিসের কোন কথা নয় বরং  ভেষজ চিকিৎসা হিসাবে  বিবেচিত। 


সেবনবিধিঃ  
ডেলীভারী নরমাল ডেলিভারিতে মরিয়ম ফুল 

যারা ডেলীভারীর জন্য  ব্যবহার করবেন একটি ফুল কে পরিস্কার  গরম পানিতে ডুবন্ত করে ভিজিয়ে রাখবেন কিছু সময় পর এটি অটোমেটিক  ফুটে যাবে  এর পর ঐ পানি টুকু এক কাপ করে কিছু সময় পর পর  সেবন করতে হবে। 
আর 
বেবী কনসেভ করতে মরিয়ম ফুল 

যারা কনসেভ করানোর জন্য  ব্যবহার করবেন তারা রাতে হালকা নরমাল পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন  ফুলটি ফুটে গেলে উঠিয়ে নিন এবং  ঐ পানি থেকে যত টুকু পারনে ভোর বেলা ফজরের নামাজের আগে শেষ  রাতে  সেবন করুন  এবং  রতি কার্য সম্পাদন করুন। এ ভাবে নিয়মিত  কয়েক দিন করতে থাকুন। ফুলটি পানি থেকে উঠানোর পর সুষ্ক স্হানে রেখে দিন  দেখবেন এটি আবার আগের মত হয়ে গেছে,  আবার ভিজিয়ে  রাখুন ঐ নিয়মে সেবন করতে  থাকুন। 

এখন আপাদত বড ছোট ও মাঝারী সাইজের মরিয়ম ফুল পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। 

সৌজন্যে
 ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস 
০১৮২৯৩১৮১১৪ 
ইমু ওয়াতসাফ এ। 


রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১

ভোটের ৪ টি মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রয়েছে

ভোটের ৪ টি অর্থ  বা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রয়েছে 
সারাদেশে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে৷ এ নির্বাচনকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও বলা হয়৷ ইউনিয়ন পরিষদ ব্যবস্থায় নির্বাচন একটি অপরিহার্য বিষয়৷ নির্বাচনে রাষ্ট্রের নাগরিকগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে বাছাই করার সুযোগ পায়৷ বর্তমানে প্রার্থীর দৃষ্টিতে ভোট হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার মোক্ষম হাতিয়ার৷
প্রার্থী মনে করে ভোট হচ্ছে ভিআইপি মর্যাদা অর্জন করা, টেন্ডারবাজি করা, আধিপত্য অর্জন করা এবং জনগণের উপর শোষণের ক্ষমতা অর্জন করার একটি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম৷ আর অনেক ভোটার মনে করে ভোট মানে প্রার্থী থেকে কিছু টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া৷ তবে সাধারণত এলাকার উন্নয়ন যাকে দিয়ে বেশি হবে বলে মনে করে ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে থাকে৷ অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে এই ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম৷ ইসলামে কাউকে ভোট দেওয়ার অর্থ সুদূর প্রসারী৷
ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিটি ভোট ৪টি অর্থ
প্রদান করে৷ 
১. সাক্ষ্য প্রদান করা ২. সুপারিশ করা ৩. প্রতিনিধি নিয়োগ করা ও ৪. আমানত তার প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়া৷ 
শরীয়তে উপরোক্ত বিষয়গুলোর গুরুত্ব খুবই বেশি৷ ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে প্রার্থীর ভবিষ্যতের সকল কাজ কর্মের জিম্মাদারী নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া৷ প্রার্থী ভালো কাজ করলে ভোটার যেভাবে তার থেকে সওয়াব পাবে, তেমনি প্রার্থী খারাপ কাজ করলেও তার দায়ভার ভোটারের কাঁধে বর্তাবে৷ উল্লেখিত ৪টি বিষয় নিয়ে নিম্নে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হলো৷ 

১, সাক্ষ্য দেয়া ঃ

আমরা জানি ‘মিথ্যা সাক্ষ্য’ হচ্ছে একটি ভয়াবহ কবীরা গুনাহের নাম৷ ভোটার যদি প্রার্থীর আমানতের খেয়ানত, বে-আমল, বাজে স্বভাব, দুর্নীতি ও অযোগ্যতার ব্যাপারে অবগত হওয়ার পরেও তাকে ভোট প্রদান করে থাকে, তাহলে ভোটার প্রার্থীর ব্যাপারে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করল, যা একটি স্পষ্টত কবিরা গুনাহ৷ 
হযরত আবূ বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে সতর্ক করব না?’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল!’ 

তিনি বললেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে শরীক স্থাপন করা ও পিতা-মাতার নাফরমানী করা৷ (এ কথা বলার সময় তিনি হেলান দিয়ে বসে ছিলেন৷ এরপর সোজা হয়ে) বসে বললেন) সাবধান! মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া৷ সাবধান! মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া৷ অতঃপর ক্রমাগত বলেই চললেন। এমনকি আমি মনে মনে বললাম, তিনি মনে হয় আর থামবেন না’৷- (বুখারী শরীফ: হাদীস নং ৫৯৭৬) 

২,  সুপারিশ করাঃ 
কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি কেউ কোনো ভালো (কাজের) সুপারিশ করে তাহলে তাতে তার অংশ থাকবে, আর কেউ কোনো মন্দ (কাজের) সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে; আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে নযর রাখেন৷-(সূরা নিসা: আয়াত নং ৮৫) 

আয়াতের মর্ম খুবই স্পষ্ট- প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যদি ভালো কাজ করে তাহলে ভোটার তা থেকে সওয়াব পাবে, আর যদি প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে খারাপ কাজ করে তাহলেও ভোটার সে খারাপ কাজের গুনাহের যিম্মাদার হবে৷ সুতরাং ভোট প্রদানের সময় ভোটারের বিবেচনা করা উচিত- প্রার্থীর কাজ ভোটারের আমলনামার নেকির পাল্লা ভারি করবে, নাকি গোনাহের পাল্লা৷ 

৩,  প্রতিনিধি নিয়োগ করাঃ 
বর্তমানে ভোটার জনপ্রতিনিধি নিয়োগ করে তার অর্থ  সম্পদ ও পেশী শক্তির বিবেচনায়, অথচ জনপ্রতিনিধি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল তার সততা  ইনসাফ ও জ্ঞানের পরিধির প্রতি লক্ষ্য রেখে।
একটি জাতির জন্য আল্লাহ তা‘আলা জনপ্রতিনিধি নিয়োগ করেছিলেন এভাবে-  
‘আর তাদের নবী তাদেরকে বলেছিল, আল্লাহ্ অবশ্যই তালুতকে তোমাদের রাজা করেছেন। তারা বললো, আমাদের উপর তার রাজত্ব কীরূপে হবে; যখন আমরা তার অপেক্ষা রাজত্বের অধিক হক্দার এবং তাকে প্রচুর ঐশ্বর্য্য দেয়া হয়নি। নবী বললেন, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাবান।’ (সূরা বাকারা: আয়াত নং ২৪৭) 

৪, আমানত প্রাপকের কাছে পৌঁছে
 দেওয়াঃ 
ভোট একটি আমানত৷ আমানত তার প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়া ঈমানদারদের জন্য ওয়াজিব৷ আল্লাহ তা‘আলা আমানতকে তার যথাযথ প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা আমানতকে তার যথাযথ প্রাপকের কাছে পৌঁছে দাও।’ – (সূরা নিসা: আয়াত নং ৫৮) 
আমানত রক্ষার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমানত রক্ষা করে না, তার কোনো ঈমান নেই। যে ব্যক্তি কথা রক্ষা করে না তার কোনো দ্বীন নেই।’ – (সুনানুল বায়হাকি কুবরা: ১২৪৭০) 

আমরা অনেকে মনে করি ভোট প্রদান একটি পার্থিব বিষয় মাত্র, বিষয়টি মোটেও এমন নয়;  বরং এ ভোটের মাধ্যমে  ইসলামের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিধান সংযুক্ত রয়েছে এই ভোটের সাথে৷ দল বা প্রতিকের প্রতি আবেগী না হয়ে প্রার্থীকে যাচাই করা উচিত শরীয়তের মানদণ্ডে তার সততা নিষ্ঠা ও যোগ্যতা কত টুকু আছে।
অথচ তা বিবেচনায় না নিয়ে  সামান্য এক কাপ চা বা  ৫ শত বা হাজার টাকার বিনিময়ে  এ মহান কাজটিকে বিতর্কিত  করে আমার ঈমান বিক্রি করছিনা তো!
 আল্লাহ তা‘আলা যেন এই গুরু দায়িত্বকে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফীক দান করেন আমিন। 
মূল 
লেখক: মুফতি নাজমুল হাসান 
নবীন আলেম, লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট৷ 

মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১

৬৪ জন আলেম মুক্তিযোদ্ধা

#চাপা_পড়ে_যাওয়া_ইতিহাস 
……………………………………
#মহান_মুক্তিযুদ্ধে_অংশ_গ্রহনকারী_সসস্ত্র 
৬৬ জন আলেম বীর মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা
======================================
#জালেমের_বিরুদ্ধে_রুখে_দাঁড়ানো ,মজলুমের পক্ষে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ মূখর হয়ে উঠা সকল ধর্ম ও শ্রেষ্ঠ মতাদর্শ গুলোর প্রাণ কথা। আর ইসলাম তো এ ব্যাপারে শত ভাগ আপোষহীন। তাই ইসলামের সত্য,সুন্দর এবং মানবতা ও শান্তির ধারক বাহক উলামায়ে-কেরাম সব সময় জালেমের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে আপোষহীন থেকে মানব সমাজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ বেনিয়াদের জুলুমে যখন আক্রান্ত উপমহাদেশ,তখন উলামায়ে কেরামের কণ্ঠ চিরেই সর্ব প্রথম ইংরেজ খেদাও আন্দোলনের সংগ্রামী ডাক এসেছিল। ভারত উপমহাদেশ এখন ‘দারুল হারব’ শত্রু কবলিত, এ এক ফতোয়া টলিয়ে দিয়েছিল ইংরেজদের মসনদ। এ সবই ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাম্রাজ্যবাদের দোসর ইসলাম বিদ্ধেষী কুচক্রি মহল যা ছাই চাপা দিয়েও চেপে রাখতে পারেনি। 

#পাকিস্তানিদের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তান তথা আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল নির্মম ভাবে। তখন পাক জালিমদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই দেশের লড়াকু আমজনতার সঙ্গে তৎকালীন আলেম সমাজও। প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন দুর্বার গতিতে। এটা ইতিহাসের অবিসংবাদিত সত্য ও অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। স্বাধীনতার পর ৪৪ বছর পর্যন্ত এই সত্যকে পদদলিত করা হয়েছে। ইতিহাসের পবিত্র দেহকে করা হয়েছে ক্ষতবিক্ষত। আলেম সমাজ সহ সাধারণ জনগণ যারা ধর্মের কারণে দাড়ি,টুপি ব্যবহার করে তাদের গায়েও ঢালাও ভাবে সেঁটে দেয়া হয়েছে রাজাকার,আল-বদর ও আল-সামসের অভিশপ্ত ফলক। তারা প্রজন্ম ৭১-এর পরে জন্ম হলেও!

#জনপ্রিয় লেখক সাংবাদিক শাকের হুসাইন শিবলী ইতিহাসের অনির্বায্য সত্যকে স্ব-মহিমায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উন্মোচিত করেছেন চেপে রাখা এক অধ্যায়ের। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি শহর,গ্রাম ঘুরে বেড়িয়ে কষ্টিপাথরে যাচাই করে রচনা করেছেন একটি প্রামান্য গ্রন্থ ‘আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে’ উক্ত গ্রন্থ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অংশ গ্রহণ কারী কয়েক জন আলেম মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশ করা হল। যাতে আলেম সমাজ সম্পর্কে সৃষ্ট ভূল ধারনার অবসান ঘটে।

১/ মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসেনানী মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী (টাঙ্গাইল) 
২/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (নোয়াখালী) 
৩/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শাহ আহমদুল্লাহ আশ্রাফ (ঢাকা) 
৪/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ 
৫/ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বু্দ্ধীজীবি মাওলানা অলিউর রহমান 
৬/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (সিলেট) 
৭/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (সিলেট) 
৮/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুর রহমান (কুমিল্লা) 
৯/ হাতিয়া দ্বীপের সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুস্তাফির রহমান (হাতিয়া দ্বীপ) 
১০/ মুক্তিযুদ্ধে অকুতোভয় সৈনিক মুহাদ্দিস আব্দুস সোবহান 
১১/ মুক্তিযোদ্ধা মুফতি আব্দুস সালাম (চট্টগ্রাম) 
১২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবু ইসহাক 
১৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবুল কালাম 
১৪/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আব্দুল মালেক (পটিয়া) 
১৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা দলিলুর রহমান (চন্দ্র কোনা) 
১৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মতিউর--রাসুল (রানীর হাট) 
১৭/ সাহসী বীর গেরিলা কমান্ডার মাওলানা মৌলভী সৈয়দ (চট্রলা) 
১৮/ মুক্তিযোদ্ধা আল্লামা দানেশ (পটিয়া) 
১৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা নোমান আহমদ 
২০/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী মোঃ মকসুদ আহমদ 
২১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল মতিন মজুমদার (কুমিল্লা) 
২২/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী নুরুল আফসার (ফেনী) 
২৩/ মুক্তিযোদ্ধা নানু ক্বারী (কুমিল্লা) 
২৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কাজী আব্দুল মতিন (চাঁদপুর) 
২৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মতিউর রহমান (নারায়ণগঞ্জ) 
২৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মির্জা মোঃ নূরুল হক (নারায়ণগঞ্জ) 
২৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আলিফুর রহমান (রংপুর) 
২৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ক্বারী আব্দুস সালাম সরকার (রংপুর) 
২৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদ আলী 
৩০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মাহতাফ উদ্দিন (কুড়িগ্রাম) 
৩১/ সেক্টর কমান্ডার মাওলানা সামসুল হুদা (কুড়িগ্রাম) 
৩২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আমজাদ হোসেন (কুড়িগ্রাম) 
৩৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কামরুজ্জামান (নরসিংদী) 
৩৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা বশির উদ্দিন (টাঙ্গাইল) 
৩৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা বজলুর রহমান 
৩৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ময়মনসিংহ) 
৩৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কাজী মুতাসিম বিল্লাহ 
৩৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা সাইফুল মালেক সাহেব (জামালপুর) 
৩৯/ মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী খাঁন (চরমোনাই মাদ্রাসা) 
৪০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইউসুফ 
৪১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইসহাক রহঃ (চরমোনাই) 
৪২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মৌলভী মির্জা আব্দুল হামিদ (বরিশাল) 
৪৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুখলিসুর রহমান (চান্দিনা) 
৪৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা লোকমান আহমেদ আমিনী 
৪৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোঃ ফিরোজ আহমদ (নোয়াখালী) 
৪৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা উসমান গণি (নোয়াখালী) 
৪৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল আউয়াল (চাঁদপুর) 
৪৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আতাউর রহমান খাঁন (কিশোরগঞ্জ) 
৪৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আতাহার আলী রহঃ (কিশোরগঞ্জ) 
৫০/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আব্দুস সোবহান (চট্টগ্রাম) 
৫১/ মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবু ইউসুফ (চট্টগ্রাম) 
৫২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ফজলুল হক (নূর নগরী) 
৫৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা খায়রুল ইসলাম (যশোর) 
৫৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মহিউদ্দিন (ময়মনসিংহ) 
৫৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ক্বারী আব্দুল খালেক সাহেব 
৫৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা সামসুদ্দিন কাশেমী (ঢাকা) 
৫৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা জহিরুল হক (বি-বাড়ীয়া) 
৫৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইসহাক ওবায়দী (নোয়াখালী) 
৫৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুফতি নূরুল্লাহ রহঃ (বি-বাড়ীয়া) 
৬২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মিরাজ রহমান (যশোর) 
৬৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আলী (শরীয়তপুর) 
৬৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা এমদাদুল হক আড়াই হাজারী (চট্টগ্রাম) 
৬৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ (কিশোরগঞ্জ) 
৬৬/ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী (মোমেন শাহী)। 

#আমাদের আলেম সমাজ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে দেশকে শত্রুমূক্ত করেছিলেন এবং এটা যে সূর্যালোকের ন্যায় স্পষ্ট তার কিঞ্চিত নমুনা পেশ করা হল মাত্র। বিস্তারিত জানতে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস গুলো অধ্যায়ন করুন।

তথ্য সূত্রঃ-স্মৃতির পাতায় হাফেজ্জী হুজুর 
(সংগৃহীত)

ইমাম আশআরী ও মাতুরীদি পর্ব ০১

ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী ও ইমাম আবুল হাসান আশআরী আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মহান দুই মুখপাত্র-

শায়খ মুহাম্মাদ আবদুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ-

ইমাম মাতুরীদী রহি.-

ইমাম মাতুরীদীর নাম মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন মাহমুদ । উপনাম আবু মানসুর । সমরকন্দের নিকটবর্তী একটি মহল্লার নাম মাতুরীদ । তিনি সেখানকার অধিবাসী ছিলেন । সেদিকে সম্পৃক্ত করেই তাঁকে মাতুরীদী বলা হয় । বিভিন্ন শক্তিশালী আলামত থেকে বোঝা যায় , ২৪০ হিজরীর কাছাকাছি সময়ে তাঁর জন্ম হয়ে থাকবে। ওফাত হয়েছে ৩৩৩ হিজরীতে। তাঁর উসতাযগণের মধ্যে ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল রাহ . (২৪৮ হি .) , ইমাম আবু নসর ‘ ইয়াযী , ইমাম নাসীর ইবনে ইয়াহইয়া বলখী (২৬৮ হি .) এবং ইমাম আবু বকর আহমদ ইবনে ইসহাক জুযজানী রাহ . - এর কথা বিশেষভাবে আলোচিত হয় । আবু বকর জুযজানী হলেন ইমাম আবু সুলাইমান জুযজানীর শাগরিদ , যিনি ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান শায়বানী (১৮৯ হি .) - এর শাগরিদ । আর ইমাম মুহাম্মাদ হলেন ইমাম আবু হানীফা , ইমাম মালেক , ইমাম সুফিয়ান সাওরীসহ হাদীস,ফিকহ ও আকাইদের অনেক ইমামের শাগরিদ। এমনিভাবে মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল রাযী সরাসরি ইমাম মুহাম্মাদের শাগরিদ । অপর দিকে নাসীর ইবনে ইয়াহইয়া ইমাম আবু সুলায়মান জুযজানীরও শাগরিদ আবার ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সামাআরও শাগরিদ । মুহাম্মাদ ইবনে সামাআ ইমাম আবু ইউসুফের শাগরিদ আর তিনি ইমাম আবু হানীফার শাগরিদ । মাতুরীদী রাহ . - এর বিশিষ্ট উসতায ইমাম আবু নসর ‘ ইয়াযী , যিনি ফকীহ হওয়ার পাশাপাশি অনেক বড় মুজাহিদ ছিলেন । এমনকি জীবনের শেষে তিনি আল্লাহ্র রাস্তায় শাহাদাতের মহাসৌভাগ্যও লাভ করেন । তিনিও ফিকহশাস্ত্রে ইমাম আবু বকর জুযজানীর শাগরিদ ছিলেন ।

এসব বলার উদ্দেশ্য হলো, ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী রাহ.-এর ইলমী সনদ খায়রুল কুরূনের ইমামদের সাথে যুক্ত। তিনি উসুলুদ্দীন (ইসলামী আকাইদ), হাদিস, তাফসীর, ফিকাহ ও উসুলের ইলম আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইমামগণের নিকট হাসিল করেছেন। আর আমৃত্যু তিনি এই নির্ভরযোগ্য ইলমই তাঁর কিতাবসমূহে প্রচার করে গিয়েছেন । তাঁর মূল ব্যস্ততা ছিল বিভিন্ন ভ্রান্ত ফেরকার খণ্ডন করা এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের পথ ও আদর্শকে দলীলের মাধ্যমে শক্তিশালী করা । সেজন্যই মুসলিম উম্মাহ তাঁকে 'ইমামুল হুদা' উপাধিতে স্মরণ করে । তাঁর কিতাবসমূহের মধ্যে " تأويلات أهل السنة ও " كتاب التوحيد" মুদ্রিত হয়েছে ।

ইমাম আশআরী রহি.

ইমাম আশআরী রাহ.এর উপনাম আবুল হাসান । নাম আলী ইবনে ইসমাঈল। নবী সা.এর বিশিষ্ট সাহাবী আবু মূসা আশআরী রা . - এর বংশধর । জন্ম ২৬০ হি. আর ওফাত ৩২৪ হি .। বসরার অধিবাসী ।
এটা একটা আশ্চর্য বিষয় যে , আবুল হাসান আশআরী রাহ . প্রথমে মুতাযিলা ফেরকার বড় ব্যক্তিত্ব আবু আলী জুব্বায়ীর শাগরিদ ও তার আকীদার অনুসারী ছিলেন । আল্লাহ তা'য়ালার অনুগ্রহে পরবর্তীতে তাঁর কাছে মু'তাযিলাদের গোমরাহী স্পষ্ট হয়ে যায়। ফলে তিনি প্রকাশ্যে তওবা করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদায় ফিরে আসেন এবং মু'তাযিলাদের ভ্রান্ত আকীদাসমূহের খণ্ডনে কলম ধরেন। তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকাইদের সমর্থনে এবং বিভিন্ন বাতিল ফেরকার সংশয়সমূহের অপনোদনে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কিতাব রচনা করেন । তার কিতাবসমূহের মধ্যে ‘ আলইবানা আন উসূলিদ দিয়ানা ' ও ' আল লুমা '

'মাকালাতুল ইসলামিয়্যীন ওয়াখতিলাফুল মুসল্লীন'. (مقالات الإسلاميين واختلاف المصلين) 'ইসতিহসানুল খাওযি ফী ইলমিল কালাম' (استحسان الخوض في علم الكلام) ইত্যাদি ছাপা হয়েছে।

আবুল হাসান আশআরী রাহ. ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর ইলম হাসিল করেছেন তার সমসাময়িক শাফেয়ী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফকীহ আবু ইসহাক মারওয়াযী থেকে।তিনি আবুল আব্বাস ইবনে সুরাইজের শাগরিদ।ইবনে সুরাইজ হলেন ইমাম আবুল কাশেম আনমাতির শাগরিদ আর তিনি ইমাম মুযানির।আর মুযানী ছিলেন ইমাম শাফেয়ীর বিশিষ্ট শাগরিদ।

আবুল হাসান আশআরীর অন্যান্য উস্তাদগণের মধ্যে যাকারিয়া সাজি(৩০৭ হি.) আবু খলিফা জুমাহী(৩০৫ হি.) আব্দুর রহমান ইবনে খালাফ বসরী (২৭৯ হি.) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এদের মধ্যে যাকারিয়া সাজী বহুত বড় হাফিজুল হাদিস এবং মুফতী ছিলেন। তিনি ইলমে ফিকহ হাসিল করেছেন ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর দুই শাগরিদ রবী ও মুযানী রাহ. থেকে।

শামসুদ্দীন যাহাবী রাহ. লিখেছেন-

كان من أئمة الحديث ، أخذ عنه أبو الحسن الأشعري مقالة السلف في الصفات ، واعتمد عليها أبو الحسن في عدة تأليف

যাকারিয়া সাজী ইলমে হাদীসের ইমামগনের মধ্যে অন্যতম।আবুল হাসাল আশআরী আল্লাহ্ তায়া’লার সিফাত সংক্রান্ত বিষয়ে সালাফের নীতি তাঁর থেকেই গ্রহণ করেছেন এবং তিনি তাঁর বিভিন্ন কিতাবে এই নীতিরই অনুসরণ করেছেন। -সিয়ারু আ'লামিন নুবালা খ পৃষ্ঠা ১৪
১৯৮

ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী বয়সে ইমাম আবুল হাসান আশআরীর বড় ছিলেন । তাঁর জন্ম ইমাম আশআরীর আগে হয়েছিল , তবে ওফাত হয়েছিল পরে। ওদিকে আশআরী রাহ . এর মত তাঁর জীবনে দুই ভাগ ছিল না ; তিনি শুরু থেকে ওফাত অবধি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের নীতি ও আদর্শের উপর অবিচল ছিলেন।

আল-আকীদাতুত তহাবিয়্যা

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের এই ইমামদ্বয় ছিলেন ইমাম আবু জাফর তহাবী রাহ . - এর সমসাময়িক । ইমাম আবু জাফর তহাবী হিজরী তৃতীয় শতকের শেষার্ধে ও চতুর্থ শতকের প্রথম এক - চতুর্থাংশে মিসরে ইলমে হাদীস ও ইলমে ফিকহের বড় ইমামগণের অন্যতম ছিলেন । আকীদার দিক থেকে তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ইমাম ছিলেন আর মাযহাবের দিক থেকে হানাফী মাযহাবের ফকীহ ছিলেন । তাঁর জন্ম ২৩৯ হিজরীতে আর ওফাত ৩২১ হিজরীতে । হাদীস শাস্ত্রে তাঁর রচিত ' শরহু মাআনিল আসার ’ ও ‘ শরহু মুশকিলিল আসার ' হল তাজদীদী কিতাব । ইলমে ফিকহ ও ইলমে তাফসীরেও তাঁর লিখিত কিতাবগুলো সর্বজন সমাদৃত । তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকাইদ বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত কিতাব রচনা করেন , যাঁ ‘ আলআকীদাতুত তহাবিয়্যা ' নামে পরিচিত । সমগ্র পৃথিবীতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের নীতি ও আদর্শের মুখপত্র হিসেবে এই কিতাবটি গ্রহণ করা হয়েছে । এই পুস্তিকার শুরুতে ইমাম তহাবী রাহ . লিখেছেন

هذا ذكر بيان عقيدة أهل السنة والجماعة على مذهب فقهاء الملة ، أبي حنيفة النعمان بن ثابت الكوفي ، وأبي يوسف يعقوب بن إبراهيم الأنصاري ، وأبي عبد الله محمد بن الحسن الشيباني ، رضوان الله عليهم أجمعين ، وما يعتقدون من أصول الدين .

ইমাম তহাবী রাহ . এখানে বলেন , তিনি এই পুস্তিকায় আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা বর্ণনা করবেন । আর এসব আকীদা তিনি হানাফী মাযহাবের প্রথম সারির তিন ইমাম ( ইমাম আবু হানীফা রাহ . ৮০ হি . - ১৫০ হি . , ইমাম আবু ইউসুফ রাহ.১১৩ হি.- ১৮২ হি . ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান ১৩২ হি.১৮৯ হি.) এর রেওয়ায়েত ও আকিদা মোতাবেক বর্ণানা করবেন।

যদ্দুর জানি , ইতিহাসে এমন কোনো বর্ণনা সংরক্ষিত নেই , যার দ্বারা বোঝা যায় , এই ইমামত্রয়ের অর্থাৎ ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী , ইমাম আবুল হাসান আশআরী ও ইমাম আবু জাফর তহাবী পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটেছে । তবে যেহেতু এই তিনজনই ইলমে ওহী ও উলূমে শরীয়তে পারদর্শী ছিলেন এবং দ্বীন ও ইলমে দ্বীন নিয়মমাফিক সালাফে সালেহীনের স্থলবর্তী ইমামগণ থেকে হাসিল করেছেন সেজন্য তাঁরা সকলে একই গন্তব্যে পৌঁছেছেন এবং ইসলামী আকীদার প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে তাঁরা যে খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন তার ফলাফল একই হয়েছে । তিনজন একই সময়ে ইসলামী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মাসলাক ও নীতি - আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করেছেন । পার্থক্য এটুকু যে , ইমাম তহাবী সংক্ষেপে শুধু মৌলিক আকীদাগুলো উপস্থাপন করেছেন । আর ইমাম মাতুরীদী ও ইমাম আশআরী সেই আকীদাগুলো ব্যাখ্যা ও দলীলসহ সবিস্তারে আলোচনা করেছেন । পাশাপাশি সেসব আকীদার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভ্রান্ত ফেরকা বিকৃতির যে অপচেষ্টা চালিয়েছে তার খণ্ডনও করেছেন । নতুবা মূল আকীদার বিষয়ে এই তিন ইমামের আলোচনায় মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই । এজন্যই আমরা দেখি , মাতুরীদী মাসলাকের অনুসারী অনেক আলেম ‘ আলআকীদাতুত তহাবিয়্যা ' - এর ব্যাখ্যা লিখেছেন । তবে তাদের কেউই ইমাম তহাবীর সঙ্গে মতবিরোধ করেননি। এমনিভাবে আশআরী আলেমগণও ‘ আলআকীদাতুত তহাবিয়্যার সঙ্গে একমত । এই পুস্তিকা তাদের নিকটও গ্রহণযোগ্য ।

আহলুস সুন্নাহ আশআরী বা মাতুরীদী কেন ?
এখানে এই কথা স্পষ্ট করে দেয়া জরুরি যে , আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা ما أنا عليه وأصحابي
( যে পথে আমি ও আমার সাহাবীরা আছি ) - এর বাস্তবরূপ ৷ চতুর্থ শতাব্দী থেকে এই আকীদার অনুসারী অধিকাংশ মানুষকে আশআরী বা মাতুরীদী বলা হয় । এর কারণ হল , আকীদায়ে আহলে সুন্নতের সংরক্ষণ ও এ বিষয়ে উদ্ভূত বিভিন্ন বাতিল ফেরকার খণ্ডনে এই দুই ইমাম অধিক পরিচিতি লাভ করেন । মুসলিম উম্মাহ তাঁদের এই খেদমত গ্রহণ করে । সেজন্য তাঁদের মাসলাকের অনুসারীগণ ‘ মাতুরীদী ’ বা ‘আশআরী ’ নিসবতে পরিচিতি লাভ করেন।

এই বাস্তবতাটি একাধিক আলেম স্পষ্টভাবে আলোচনা করেছেন । আমরা এখানে কয়েকজন মনীষীর বক্তব্য উদ্ধৃত করব।
আল্লামা মুরতাযা যাবীদী ( ১২০৫ হি . ) রাহ . লেখেন

وليعلم أن كلا من الإمامين أبي الحسن وابي منصور رضي الله عنهما وجزاهما عن الإسلام خيرا، لم يبدعا من عندهما رأيا ، ولم يشتقا مذهبا ، إنما هما مفزران لمذاهب السلف ، مناضلان عما كانت عليه اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم ، فأحدهما قام بنصرة نصوص مذهب الشافعي وما دلت عليه ، والثاني قام بنصرة نصوص مذهب أبي حنيفة وما دلت عليه ، وناظر كل منهما ذوي البدع والضلالات ، حتى انقطعوا وولوا منهزمين . وهذا في الحقيقة هو أصل الجهاد الحقيقي ( من أنواع الجهاد باللسان والقلم ) ، الذي تقدمت الإشارة إليه ، فالانتساب إليهما إنما هو باعتبار أن كلا منهما عقد على طريق السلف نطاقا ، وتمسك وأقام الحجج والبراهين عليه ، فصار المقتدي به في تلك المسائل والدلائل يسمى أشعريا وماتريديا
. وذكر العز بن عبد السلام أن عقيدة الأشعري أجمع عليها الشافعية والمالكية والحنفية وفضلاء الحنابلة ، ووافقه على ذلك من أهل عصره شيخ المالكية في زمانه أبو عمرو ابن الحاجب ، وشيخ الحنفية جمال الدين الحصيري ، وأقره على ذلك التقي السبكي فيما نقله عنه ولده التاج "

মুরতাযা যাবীদী রাহ. - এর এই বক্তব্য তাঁর কিতাব ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন ' - এর দ্বিতীয় খণ্ডের শুরুতে ( ২ । ৬-৭ ) রয়েছে ।
ইতহাফ হল ইমাম গাযালী রাহ . - এর কিতাব “ ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন' এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ । 'ইহইয়া ' এর দ্বিতীয় অধ্যায় হল ' قواعد العقائد ' অর্থাৎ আকীদা সংক্রান্ত নীতিমালা । এর ব্যাখ্যায় শুরুতে আল্লামা যাবীদী রাহ . ভূমিকা হিসেবে যা লিখেছেন তাতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআ ' বলতে কাদের বুঝায় সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন । উচ্চতর স্তরে অধ্যয়নরত তালিবে ইলমগণ এটি মুতালাআ করতে পারেন । সেখানে আল্লামা যাবীদী রাহ . বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গ্রন্থের উদ্ধৃতিতে এ বিষয়টিও স্পষ্ট করেছেন যে , ইমাম মাতুরীদী রাহ . ও ইমাম আশআরী রাহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা সংক্রান্ত ইলম কোন মাধ্যমে হাসিল করেছেন ?

সেখানে যাবীদী রাহ . সংক্ষেপে এই গুরুত্বপূর্ণ কথাটির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যে , ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী রাহ . এবং ইমাম আবুল হাসান আশআরী রাহ . -আল্লাহ পানাহ- কোনো নতুন আকীদা বা নতুন ফেরকা আবিষ্কার করেননি । " আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা তো সাহাবায়ে কেরাম , তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের যুগ থেকে চলে আসছে । ইমাম মাতুরীদী ও ইমাম আশআরী সেসব আকীদারই সংকলন ও বিশ্লেষণ করেছেন এবং সেগুলোর প্রতি বাতিলপন্থীদের উত্থাপিত আপত্তিসমূহের জবাব দিয়েছেন । সেজন্য তাঁদের পরবর্তীদেরকে তাঁদের দিকে সম্বন্ধ করা হয় ।

আবুল হাসান আশআরী রাহ . ছিলেন ইরাকের বাসিন্দা । তাই চতুর্থ শতাব্দী থেকে ইরাক , শাম ও খোরাসানে আহলুস সুন্নাহ বলতে আশাইরা তথা আশআরী রাহ . - এর অনুসারীদের বোঝানো হয় । আর আবু মানসুর মাতুরীদী রাহ . ছিলেন হানাফী এবং সমরকন্দের অধিবাসী । সেজন্য ' মা ওরাআন নাহর ' - এ আহলুস সুন্নাহ বলতে মাতুরীদীয়া তথা মাতুরীদী রাহ . - এর অনুসারীদের বোঝানো হয় । ( দেখুন , শরহুল আকায়েদের উপর মুস্তফা ইবনে মুহাম্মাদ কাসতালী ( ৯০১ হি . ) - এর হাশিয়া এবং শামসুদ্দীন আহমাদ ইবনে মূসা খয়ালী ( ৮৭০ হি . ) - এর হাশিয়া । আরো দেখুন ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন , খ . ২ পৃ . ৬ )

স্মর্তব্য , ইরাক , শাম ও খোরাসানের হানাফী আলেমগণের অধিকাংশ মাতুরীদীই ছিলেন । তবে যেহেতু আশআরী ও মাতুরীদী মাসলাকের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই সেহেতু হানাফীদেরকেও সাধারণত আশআরী বলা হয়। বিশেষত যেসব অঞ্চলে আবুল হাসান আশআরী রাহ.-এর ইলম ও খেদমত অধিক প্রচারিত হয়েছে।

কারণ সেখানে তিনিই ছিলেন "সুন্নাহ'-এর নিদর্শন।
তাই পুরো আহলুল সুন্নাহ ওয়াল জামাআতকে তাঁর দিকেই নিসবত করা হত।
যেমন হিন্দুস্তানে বেরেলবীদের মোকাবেলায় সকল আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অনুসারীকে দেওবন্ধী বলা হয়, অথচ তাদের অনেকেই দেওবন্দের সাথে যুক্ত নয়।

যাইহোক, ইমাম আবু মানসুর মাতৃরীদী রাহ. ও ইমাম আবুল হাসান আশআরী রাহ. এবং তাঁদের অনুসারীগণ যে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অন্তর্ভুক্ত- এটা স্বতঃসিদ্ধ বিষয়। তা অস্বীকার করেন একমাত্র মু'তাযিলীগণ এবং ওই সালাফীগণ যারা মুশাব্বিহার মাসলাক গ্রহণ করেছেন কিংবা তার দিকে ঝুঁকে গেছেন।

উল্লিখিত বাস্তবতাটি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী অনেক মুহাক্কিক আলেম স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। এখানে আমরা ইমাম বায়হাকী (৪৫৮ হি.) রাহ.-এর বক্তব্য থেকে সংশ্লিষ্ট অংশটুকু উদ্ধৃত করছি।
ইমাম বায়হাকী রাহ. এর বক্তব্যটি মুহাদ্দিস ইবনে আসাকির দিমাশকী (৪৯৯ হি.-৫৭১ হি.) -এর কিতাব

تبيين كذب المفتري، فيما نسب إلى الإمام أبي الحسن الأشعري"

(পৃ. ৮৬-৯১, প্রকাশনা: আলমাকতাবাতুল আযহারিয়্যা লিত তুরাস, কায়রো, মিশর)-এ সনদসহ বর্ণিত আছে। সেখান থেকে তাজুদ্দীন সুবকী রাহ. তাঁর কিতাব "তবাকাতুশ শাফিইয়্যাতিল কুবরা' (খ. ৩. পৃ. ৩৯৫-৩৯৯)-এ ইমাম আশআর রাহ.-এর জীবনীতে সংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন।

ইমাম বায়হাকী রাহ. তাঁর এক পত্রে লেখেন

إلى أن بلغت النوبة إلى شيخنا (أي امام جماعتنا) أبي الحسن الأشعري حمه الله تعالى، فلم يحدث في دين الله حدثا ، ولم يأت فيه ببدعة ، بل أخذ أقاويل الصحابة والتابعين ومن بعدهم من الائمة في أصول الدين ، فنصرها بزيادة شرح وتبيين ، وأن ما قالوا في الأصول وجاء به الشرع صحيح في العقول ، خلاف ما زعم أهل الأهواء من أن بعضه لا يستقيم في الآراء . فكان في بيانه تقوية ( لدلائل ) أهل السنة والجماعة ، ونصرة لأقاويل من مضى من الائمة ، كأبي حنيفة وسفيان الثوري من أهل الكوفة ، والأوزاعي وغيره من أهل الشام ، ومالك والشافعي من أهل الحرمين ، ومن نحا نحوهما من الحجاز ، وغيرها من سائر البلاد ، وكأحمد بن حنبل وغيره من أهل الحديث ، والليث بن سعد وغيره ، وأبي عبد الله محمد بن إسماعيل البخاري ، وأبي الحسين مسلم بن الحجاج النيسابوري ، إمامي أهل الآثار وحفاظ السن ، التي عليها مدار الشرع رضي الله عنهم أجمعين
وذلك دأب من تصدى من الأئمة في هذه الأمة ، وصار رأسا في العلم من أهل السنة في قديم الدهر وحديثه ...

উচ্চতর স্তরে অধ্যয়নরত তালিবে ইলমগণ ইমাম বায়হাকী রাহ . - এর বক্তব্যের বাকি অংশ 'তাবয়ীনু কাযিবিল মুফতারী ’ বা ‘ তবাকাতুশ শাফিইয়্যাতিল কুবরা ' থেকে দেখে নিতে পারেন ।
যদি এই বাস্তবতাটি উপলব্ধি করা যায় তাহলে ওইসকল সালাফী ভাইয়ের বাড়াবাড়ি ও প্রান্তিকতার ব্যাপারে আফসোস না করে উপায় থাকবে না , যারা ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী ও ইমাম আবুল হাসান আশআরীকে-আল্লাহ্ পানাহ- আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত থেকে খারিজ বলতে কোনো দ্বিধা বোধ করে না !!

প্রবন্ধের বাকী দুই পর্ব পরবর্তী পোস্টে আসবে ইনশাআল্লাহ

মাসিক আল-কাউসার
রবিউল আউয়াল ১৪৪৩ || নভেম্বর ২০২১ 
কপি কৃত।