Translate

মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১

আসলে ওয়াহ্হাবী ‎কে ‎বা ‎কারা? ‎

আমি ছাত্র জীবন শেষ করে  শিক্ষকতার জীবন মিলে প্রায় দীর্ঘ ২১ বছর অতিবাহীত করার পর প্রবাস জীবনও  প্রায় ২১ বছর অতিবাহীত করার পর একটা বিষয়ে চিন্তা করলাম যে , দেশে বিদেশে প্রচলিত একটি শব্দ "ওয়াহ্হাবি " শুনতে অত্যন্ত খারাপ লাগে, তাই স্হীর করলাম এ বিষয়ে কিছু গবেষনা করব।

 
তাই বিভিন্ন মনিষীদের বই লেখনি ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন গবেষনা মূলক বই অধ্যয়ন করলাম।
তাই গবেষনা পূর্বক যে কথাটি আমি বুঝতে পেরেছি তাই পাঠকদের উদ্দ্যেশে উপস্হাপন করলাম,

এর পর  ও আপনাদের কাছে কোন তথ্য থাকলে অবশ্যই শেয়ার করার অনুরোধ রইল। কারণ আমরা সকলেই সত্য অন্বেষনকারী ।

তাহলে আসা যাক ওহহাবী বা ওহাবী আন্দোলন আসলে  কি ?আসলে কে বা কারা ওহহাবী তা জেনে নেয়া  যাক।
======================

আসলে ওহাবী আন্দোলন বলে খ্যাত  খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর আরবের একটি সংস্কার আন্দোলন। এ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহহাব (১৭০৩-১৭৯২ খ্রি.)
যা আজ থেকে প্রায়  দুইশত ত্রিশ বছর আগের কথা। 

  তিনি একজন ধর্মীয় আলেম এবং সংস্কারক ছিলেন। তিনি আমাদের এ ভারতীয় উপমহাদেশের বিপ্লবী আলেম মাওলানা শাহ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভীর সমসাময়িক ছিলেন। দ্বাদশ শতাব্দীর প্রখ্যাত আলিম মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহ্হাব নজদী (রহঃ) (মৃতঃ ১২০৬ হিঃ) মূলত হাম্বলী মায্হাবেরই মুক্বাল্লিদ্ ছিলেন।

 তৎকালীন সৌদি আরবে বিশেষত নজ্‌দ এলাকায় কুফর শিরক্, বিদয়া’ত, কবরপূজা, মাযারপূজা, গাছপূজা, আগুনপূজা ও প্রতিমা-মানব ইত্যাদি পূজা-উপাসনার মোকাবিলা ও প্রতিরোধে তার কার্যকরী, সাহসী ও বীরবিক্রম পদক্ষেপ আসলেও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসার দাবী রাখে। তাঁরই অবদানে তদানীন্তন আরব মধ্যযুগীয় বর্বরতা, সীমাহীন ভ্রষ্টতা ও শিরক কুফরের অতুলনীয় অন্ধকারাচ্ছন্নতা থেকে রেহাই পেয়েছিল ততকালীন  সৌদি আরব।

 তবে অনেক বিষয়ে বাড়াবাড়ির ফলে তাঁর সঙ্গে তদানীন্তন সউদী আরবের  অনেক  আলেম উলামাদের সাথে  মহামতানৈক্য ও সৃষ্টি হয়।  এবং এর বিরোধীরা  তাঁকে ওহহাবী বলে তিরস্কার করতে আরম্ভ করলেন ।

 এদিকে ভারতবর্ষের লা-মায্হাবীরাও যেহেতু মুসলমানদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হিসেবে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহ্হাব নজদীর  মতবাদ গ্রহণ করত বলে তাদেরকেও মুসলমানদের একটি গ্রুপ তাদেরকেও  ওহ্হাবী বলে আখ্যায়িত করতে থাকেন।

  আর তখন তারা নিজেদেরকে মুহাম্মদী,  আহলে হাদীস বলে প্রচারের চেষ্টায় মেতে উঠে।  বর্তমান   অন্য সকল নাম বাদ দিয়ে  আহলে হাদীস আন্দোলন নামের ব্যানারে নিজেদের  কে প্রকাশ করছে ৷অপরদিকে সৌদি আরবে তারা নিজেদের কে সালাফী হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে।

   তবে  ওয়াহহাবী এ নামটি মূলত ইংরেজ কতৃক সীকৃত যা আমি আমার এই ব্লগেও উপস্হাপন করেছি।

কিন্তু  বাংলাদেশের কোন কোন স্হানে দেওবন্দী ওলামাদের কে ওহহাবী বলে তিরস্কার করতে দেখা যায়।

 কিন্তু দেওবন্দী ওলামাদের সাথে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহ্হাব নজদীর সাথে কোন সমপর্কই নেই , কারন একেতো তিনি হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী আর সকল দেওবন্দী ওলামাগন   হানাফী মাযহাব এর অনূসারী ,

,তিনি হলেন লামাযহাবী গায়রেমোকল্লিদদের ইমাম  দেওবন্দীদের ইমাম নয়, দেওবন্দীগন সঠিক আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত এর অনুসারী   ৷ 

তাছাড়া সৌদি আরবের সেই মুহাম্মদ বিন আবদুল ওহহাবের মতবাদ কে কেন্দ্র করে ইতিহাসে ঘৃনিত সেই ওহহাবী ফেরক্বার সাথে ও তুলনা অকল্পনীয় মনে হয়।

   কারণ  সম্রাজ্যবাদী ইহুদী-খৃষ্টানরা তাদের হীন চন্ত্রান্ত চরিতার্থ করার স্বার্থে হিজরি ২য়/৩য় শতাব্দীতে উত্তর আফ্রিকায় প্রচারিত সেখানকার জনৈক আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে রুস্তম  খারিজীর ফেরকার নামের সাথে  সৌদি আরবের তথাকথিত সেই আবদুল ওয়াহহাব নজদীর  নামটিকে ও সৈই ঘৃনীত বাতেল ওহাবী ফেরকার নামটি ব্যবহার করে এক বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন ,
 এটি ছিল আবাজী খারেজী মতবাদে বিশ্বাসী এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের শিক্ষার পরিপন্থী একটি ভ্রান্ত ফিরকা।  এরাই হল আসলে ওহহাবী ফেরক্বাহ। 

সে তার এলাকায় ( আফ্রিকায়) ইসলামী শরিয়ত বন্ধ ঘোষনা করার সাথে সাথে হজ্বের যাত্রা বাতেল করে এবং তার মতাদর্শ বিরোধীদের কাফের বলে ঘোষনা দেন। এর ফলে সেখানে যুদ্ধ বিদ্রোহ সহ নানান ফেতনা দেখা দিয়েছিল । কিন্তু তৎকালীন সঠিক   আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদাহ ধারী ওলামারা  উল্টো তাকে কাফের বলে ঘোষনা করেছিলেন । যাকে সকলেই ঘৃনা করেন , আমরাও ঘৃনা করি,   সময়কাল ছিল  হিজরী ২য শতাব্দী,  মৃ্ত্যু 197 হিজরী ।



আর   মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব রহ. আরব উপদ্বীপে ১২০০/১৩০০ হিজরীতে যে মহান সংস্কারের ডাক দিয়েছিলেন, যার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াত-তাওহীদ ও সুন্নাতের ডাক, কুসংস্কার, শিরক, বিদআত বর্জনের উদাত্ত আহবান।  তাঁর আসল নাম হল মুহাম্মদ কিন্তু পিতার নাম আব্দুল ওয়াহহাব ,,
আর নাজদ হল ঐ এলাকা বা জন্মস্হান। 


তবে স্বার্থম্বেসী  মহল বিভ্রান্ত ছডানোর জন্য সেই হিজরি ২য়/৩য় শতাব্দীতে উত্তর আফ্রিকায় প্রচারিত সেখানকার  আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে রুস্তম  খারিজী  নামের সাথে ওহাবী ফেরকার নামটি ব্যবহার করে।   সৌদি আরবের সেই সংস্কারক কেও ওয়াহহাবী বলে  আখ্যায়ীত করতে থাকেন ।

উভয়ের মধ্যকার  সময়ের অনেক ডিপারেন্স ।  যখন এ ফেরকাটি উদ্ভব হয়েছি তখন  শাইখ   মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব রহ. এর 20/22 তম পূর্ব পুরুষের ও জন্ম হয়নি । তাসত্বেও তাকে ওহহাবী হিসাবে সম্বোধন করা হয়েছে। যা নিতান্ত ভূল ছিল মনে হয়। বা উদ্দেশ্য প্রণীত।
 তাছাডা বর্তমান সৌদি আরবের সেই  মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব রহ. কে ওহহাবী না বলে মুহাম্মদী বলাই উচিত ছিল, তার নাম অনুসারে , কারন  আবদুল ওহহাব তো পিতার নাম,
 মুহাম্মদ যেহেতু সংস্কার করেছিলেন ।  সে হিসাবে মুহাম্মদীই বলা যেত। 
 কিন্তু  তাকে বলা হল ওয়াহহাবী
কিন্তুু
আর সেই আফ্রিকার সেই প্রবক্তার নামই ছিল কিন্তু  আবদুল ওহহাব।  মূলত সেইই ছিল ওহহাবী মতবাদের প্রবক্তা, যার ইশারা হাদীসে রসুলেও এসেছে ।


কিন্তু পরবর্তিতে  আমাদের  দেশে একটি কুচক্রি মহল তথা মাজার পন্থিরা  সহ নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী তথা শাহরিয়ার কবির গংরা  সৌদি  ওহহাবী,   দেওবন্দি ওহহাবী  বলে সকলকে একাকার করে তিরস্কার/উপহাস করাে থাকেন  অথচ  এদের সাথে সেই ফেরকায়ে ওয়াহহাবিয়্যতর সাথে কোন সম্পর্কই নেই।  তাছাডা দেওবন্দি ওলামা ও সৌদি ওলামা উভয়ে দুটো ভিন্ন দ্বারায় পরিচালিত যদিও উভয়েই হক্ব ও আহলে সুন্নাতের মতাদর্শে  বিশ্বাসী। 

 কিন্তু এদের কেউ ( সৌদি আরবের কেউ বা ওলামায়ে দেওবন্দীদের কেউ)   সেই ইতিহাসে ঘৃনিত  আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে রুস্তম  খারিজীর আক্বিদা বা মতাদর্শে বিশ্বাসী নয় । কারন সেই আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে রুস্তম  খারিজী   যেহেতু তার এলাকায়  ইসলামী শরিয়ত বন্ধ ঘোষনা করার সাথে সাথে হজ্বের যাত্রা বাতেল করে এবং তার মতাদর্শ বিরোধীদের কাফের বলে ঘোষনা করেছিলেন কিন্তু  সৌদি আরবের সেই শেখ মুহাম্মদ বিন আবদুল ওহহাব নজদী বা দেওবন্দি ওলামা  কতৃক শরিয়তের কোন হুকুম কে কি কখনো বন্ধ বা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছিলেন বা এদের কেউ হজের সফর কে বাতেল করেছিলেন বা তাদের মতাদর্শ  কেউ মেনে না চললে কাফের বলে সম্বোধন করেছিলেন ? না কখনো করেননি ।তাহলে এরা সেই  ইতিহাসে ঘৃনিত সেই ওহাবীর অনূসারী হয় কি ভাবে ? এটাই বিবেকের কাছে প্রশ্ন ।  

তাছাডা আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে রুস্তম  খারিজী ইতিহাসের এক  ঘৃনীত ব্যক্তি এতে কোন সন্দেহ নেই কারণ তার আক্বিদাহ সমপূর্ণ আহলে সুন্নাতের বিপরীত ছিল তাছাড়া হযরত আলী রাঃ এর জামানার সেই ফেরক্বায়ে খারেজীয়া আরও জগন্য বাতেল ফেরক্বাহ ছিল  যা সকলেরই জানা কথা , কিন্তু     আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে রুস্তম  খারিজী     সেই বাতিল ফেরক্বার প্রতিনিধিত্ব করত বলেও তার নামের সাথে খারেজীর উপাধীও দেয়া হয়েছিল  । 

কিন্তু বর্তমানে যাদের দিকে এ ঘৃনীত নিসবতটি করা হয় এদের সাথে ওদের কোন সম্পর্কই নেই।

তাছাড়া এখানে প্রসঙ্গক্রমে একটা কথা না বললে হয়না যে বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলে দেওবন্দ ভিত্তিক কওমী মাদ্রাসা গুলোকে অনেকে না জেনে না বুঝে খারেজী মাদ্রাসা হিসাবেও অবহিত করে থাকেন কিন্তু এটা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন যে এরা কি আসলে সেই ইতিহাসের সেই ঘৃনীত খারেজীদর প্রতিনিধিত্বকারী মাদ্রাসা? না আসলে তা না বর্তমান পৃথিবীতে ফেরক্বায়ে খারেজীয়ার  অস্তিত্ত ও খুজে পাওয়া যায়না, 

 তবে এদেরকে কেন খারেজী বলা হয়? তাহলে বুঝতে হবে  খারেজী শব্দের অর্থ কি? খারেজী শব্দের অর্থ " হল বাহির হয়ে যাওয়া" মূলত যারা ততকালীন হযরত আলী রাঃ এর জামাত থেকে বের হয়ে গিয়েছিল তাদের কে ইতিহাসে  খারেজী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। বর্তমানে  তাদের অস্তিত্ব ও নেই  পৃথিবীতে। 

আর বর্তমানে কওমী মাদরাসা গুলো কখনো সেই অর্থে খারেজী নয় বা খারেজী মাদরাসা নয় বরং 
   কওমী মাদ্রাসা গুলো সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে থাকায় এসকল প্রতিষ্ঠানকে অনেকে খারেজী মাদ্রাসা হিসাবেও অবহিত করেন ।আর কওমী মাদ্রাসা যেহেতু কওমের সাহায্য সহযোগিতায় চলে বিধায় কওমী মাদ্রাসা বলা হয়।আর ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসার আদলে  দেওবন্দী নেসাব আর অবকাঠামো মতে চলে বিধায় দেওবন্দি মাদ্রাসা বলা হয়।
যাহোক আবার মূল কথায় ফিরে আসি ।

 স্বীয় মতের  বিরোধীদের কে ঘায়েল করতে ওহহাবী বলে তিরস্কার করা একটি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহর করে থাকেন অনেকে ।যেটি বৃটিশদের থেকে দ্বার করা।

যেমনটি   বৃটিশ আমলে আমাদের বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা নিসার আলী ওরফে তীতুমীর এবং হাজী শরীয়তুল্লাহর ফরায়েজী আন্দোলন সবই বৃটিশ ঐতিহাসিক ও আমলা ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টার প্রমুখ কর্তৃক (ওহাবী) বলে অভিহিত হয়।

কারণ হান্টারের ভাষ্যমতে, সৈয়দ আহমদ বেরলভী মক্কায় গিয়ে ওহাবী আন্দোলনে দীক্ষিত হয়ে আসেন,যেটি ডাহা মিথ্যা  অপবাদ ছিল কারণ  তিনি বা আমাদের তীতুমীর, হাজী শরীয়তুল্লাহ প্রমুখ বীরপুরুষগণ যখন ১৮২০ সালের দিকে হজে যান তখন মক্কা-মদীনায় সুদৃঢ় তুর্কী শাসন চলছিল এবং ঐ সময় ঐ  সব পবিত্র নগরীতে তথাকথিত  ওহাবী আন্দোলনের নামটি উচ্চারণ করাও ছিল গুরুতর অপরাধ। 

এর এক দশক পূর্বেই তুর্কী সুলতানরা ১২৪৪ হিজরীতে/১৮১৩ খ্রি.  সেই কথিত সৌদি আরবের তথা কথিত ওহাবীদেরকে হটিয়ে মুক্ত করে ফেলেছিলেন। তখন  ওহাবীদের কোন কতৃত্বই ছিলনা  
সুতরাং ওটা ছিল নেহাৎই রাজনৈতিক প্রচারণা এবং অসত্য বিবরণ। 
এখানে আরও একটা কথা বলে রাখি তাহল  হক্ব ও ন্যায়ের পক্ষে অন্যায় অত্যাচার জুলুমের বিরুদ্বে কথা বলেছেন ইংরেজদের বিরুদ্বে জেহাদের ফতোয়া দিয়েছিলেন  বলেই ইংরেজরা দেওবন্দি ওলামাসহ সমসাময়ীক আজাদী আন্দোলনের সকল কে ওহাবী বলে তিরস্কার করেছিলেন ৷

 আজও যারা হক্বের পক্ষে কুফর শীরক বেদআতের বিরুদ্ধে  কবর পুজা, ভন্ড পীরের  বিরুদ্বে কথা বলেন তাদের কে ও ঐ সেই ইংরেজদের দালাল তথা মাজার পুজারীরা  ওহাবী বলে তিরস্কার করে থাকেন ৷

 অথচ সেই  ২য় শতাব্দীর সেই আসল ওহাবী আন্দোলনের আক্বিদাহ  আর সৌদি আরবের সেই মুহাম্মদ বিন আবদুল ওহহাব নজদীর কথিত ওহহাবীর আক্বিদাহ, আর দেওবন্দি ওলামাদের আক্বিদার মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান । কাজেই ভারত উপমহাদেশের দেওবন্দি ওলামাদের কে ওহহাবী বলে তিরস্কার করা জগন্য ঘৃন্য অপরাধ  আর মারাত্বক ঘৃন্য অপবাদ ছাডা আর কিছুই না ।

ইংরেজ আমলে 
১৮৬৪ সালে ‘গ্রেট ওহাবী ট্রায়াল’ নামে উপমহাদেশীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে  ইংরেজ‘ কতৃক কোলকাতা হাইকোর্টে’ সরকারী মামলা হয়েছিল-যার ভিত্তিতে অনেকেরই ফাঁসি ও দ্বীপান্তরের শাস্তি হয়েছিল। সে মামলার অভিযুক্তগণ আদালতে তাদেরকে ওহাবী বলে অভিহিত করার প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, আমরা ওহাবী নই, আমরা  মুহাম্মাদী তরীকারই অনুসারী।’ তারা ওহাবীর পরিবর্তে তাদেরকে সুন্নী বলে অভিহিত করার দাবী ও করেছিলেন। কিন্ত  ইংরেজরা তা মানেন নি। 
 স্বয়ং হান্টার লেখেন, কার্যত ওহাবীরা হচ্ছে সুন্নী সম্প্রদায়ের একটি অগ্রগামী অংশ এবং ইসলামের শুদ্ধাচারপন্থী অংশ। বাংলা ও উত্তর পশ্চিম ভারতের প্রায় সকল মুসলমানই সুন্নী সম্প্রদায়ভুক্ত। (ইন্ডিয়ান মুসলিমস পৃ. ৪৫-৪৬) 

বর্তমানে ‘ওহাবী তত্ত্ব’ পুনঃআবিষ্কারকারীগণ সেই নোংরা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করে জানান দিলেন, ব্রিটিশ বেনিয়ারা ৬৫ বছর পূর্বেই এদেশ থেকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য হলেও তাদের নিমক হালাল অনুগামীরা এখনো বেঁচে আছেন এবং যে কোন বাতিল শক্তিকেই তারা মদত যোগাতে সদা প্রস্ত্তত! 
এবং তাদের  মতের বিরুদ্ধে হলেই তাকে ওয়াহহাবী বলে গালি দেন। এবং নিজেদের কে সুন্নি বলে দাবী করেন,অথচ করছে সুন্নতের বিপরীত বেদআত সহ নানান কুসংস্কার।আর যারাই প্রকৃত সুন্নাত আর তাওহিদের উপর প্রতিষ্ঠিত , যারা সারা জীবন কুফর শীর্ক  বেদআত আর কুসংস্কারের বিরুদ্বে লডাই করছেন তারা হয়ে গেল ওহহাবী আর বেদআতিরা হয়ে গেল সুন্নি এ কি হাস্যকর ব্যপার! 

আর যদি কাউকে  ওয়াহহাবী  বলতেও যদি কারো মনে চায় তাহলে সেই  সৌদি আরব এর শেখ আবদুল ওয়াহহাব নজদীর নামের সাথে  যেহেতু ওয়াহহাব শব্দটি যুক্ত আছে সেহেতু তাদের কে বা তাদের অনুসারীদের কে ওয়াহহাবী বলতেও পারেন। 
কিন্তু ক্বওমী ওলামায়ে কেরাম বা দেওবন্দি ওলামায়ে কেরাম কে কোন যুক্তি তে ওয়াহহাবী বলা হবে? এটাতো নিতান্ত  হাস্যকর ছাডা কিছুই নয়। 

কারণ  শেখ আবদুল ওয়াহহাব নজদী হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী,  যদিও তারা এখন নিজেদের কে সালাফী বা লা মাযহাবী হিসাবে দাবী করেন, ভারতবর্ষে তারা আহলে হাদীস হিসাবে পরিচিত। 

 আর  দেওবন্দী ওলামায়ে কেরাম হানাফি মাযহাবের অনুসারী। ওদের সাথে এদের  কি সম্পর্ক? 
যদি ও এখনো কাউকে ওয়াহহাবী  হিসাবে আখ্যায়িত করতে কারো মনে চয় তাহলে বর্তমান সালাফী বা লা মাযহাবী  তথা আহলে হাদীসের  অনুসারীদের কে ওয়াহহাবী বলে আখ্যায়িত করতে পারেন দেলবন্দী বা কওমী ওলামাদেরকে নয়।

আল্লাহ সকলকে তাওহিদে খালেছ বুঝার ও মানার তাওফিক দান করুন আমিন ।
আল্লাহ সকলর সহায় হউক 

সংকলন সংযোজন এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক  নূরুল গনি ইসলামি একাডেমী কাটাছরা জোরারগঞ্জ মিরসরাই চট্টগ্রাম 

শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১

চিয়াসীড ‎পেটের ‎যাবতীয় ‎সমস্যার ‎সমাধানে ‎অব্যর্থ ‎পথ্য ‎

সুপার ফুড চিয়া সীড 

চিয়াসিড এর অবাক করা পুষ্টি গুন জানলে কেউ না খেয়ে থাকবেনা তাহলে জেনে নিন। 
যেমন 
দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশী ক্যালসিয়াম
কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি
পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশী আয়রন (লোহা)
কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম
স্যামন মাছের থেকে ৮ গুণ বেশী ওমেগা-৩। 

চিয়া সিড সরাসরি যে কোন ফলের স্মুদি বা জুসের সাথে পান করা যায়। শুধু পানিতে মিশিয়েও পান করা যায়। চিয়া বীজের নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে এটা সব ধরনের খাবারের সাথে মিশিয়ে ও  খাওয়ার উপযুক্ত। বেক করা খাবার (বিস্কুট, কেক ইত্যাদি), সুপ, সালাদ ইত্যাদির সাথে মিশিয়েও চিয়া সীড খাওয়া যায়।

সুপারফুড চিয়া সীডের ১৫টি উপকারিতা

১। এটা শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে

২। চিয়া সীড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে

৩। চিয়া বীজ ওজন কমাতে সহায়তা করে

৪। চিয়া সিড ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়

৫। চিয়া বীজ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারি

৬। চিয়া সিড মলাশয় (colon) পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

৭। চিয়া সিড শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয়

৮। চিয়া সীড প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে

১০। চিয়া বীজ ক্যান্সার রোধ করে

১১। চিয়া সিড হজমে সহায়তা করে

১২। চিয়া বীজ হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে

১৩। চিয়া সীড এটেনশান ডেফিসিট হাইপার এক্টিভিটি ডিসর্ডার (Attention deficit hyperactivity disorder ADHD) দূর করে

১৪। চিয়া সিড ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে

১৫। চিয়া সীড গৃহপালিত পশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
১৬। চিয়াসীড কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্টিক আই বি এস  অর্শ পাইলস পিস্টোলা সমস্যার সমাধান করতে কার্যকর। 

খাবার নিয়ম :
১ গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ চিয়া বীজ দিয়ে নেড়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। স্বাদ বাড়াতে চাইলে এতে লেবুর রস, কমলার রস, গোল মরিচ গুড়ো, বা মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।

তাছাডা ক্লোন পরিস্কার কোষ্ঠকাঠিন্য  অর্শ পাইলস পিস্টোলা সমস্যার সমাধান করতে  ১ চা চামচ চিয়াসীডের সাথে সমপরিমাণ  ইসুবগুল ভুষি  ও তোকমা দানা  মিশিয়ে  খালি পেটে সেব্য। 
অথবা একক ভাবে চিয়াসীড আধা ঘন্টা বা ততোধিক  ভিজিয়ে রেখে   সকালে খালি পেটে সেব্য।
সৌজন্যে ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস 
০১৮২৯৩১৮১১৪ ইমু ওয়াতসাফ এ।