Translate

শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১

টুপির ব্যবহার কি ইসলামে নেই?

আজকাল ইসলামের শি'য়ার টুপি নিয়ে এক শ্রেনীর মানুষ যাদের কাজই হল ইসলামের যে কোন কাজ কর্ম  আর আমল নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরী করে সংশয় সন্দেহ তৈরী  করে  উম্মতের মধ্যে  ফাটল সৃষ্টি করা তাই  আমি এ নিয়ে 

মুহাররম ১৪৩৫   ||   নভেম্বর ২০১৩ প্রকাশিত প্রবন্ধটি হুবহু পাঠকের জন্য তুলে ধরছি। 


হাদীসে কি টুপির কথা নেই?

মাওলানা মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক

টুপি মুসলিম উম্মাহর শিআর জাতীয় নিদর্শন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের যুগ থেকে প্রতি যুগে এর উপর ব্যাপকভাবে আমল ছিল। কিন্তু, যেমনটা আমি বিভিন্ন জায়গায় লিখেছি, আমলে মুতাওয়ারাছের (উম্মাহর ও অবিচ্ছিন্ন কর্মের) সূত্রে বর্ণিত সুন্নাহ্র দলীল যখন সনদসহ বর্ণনারসূত্রে খোঁজ করা হয় তখন কখনো কখনো এমনও হয় যে, তা সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে পাওয়া যায় না যা পাওয়া যায় তার সনদ সহীহ হয় না। এ কারণে যারা দু চার কিতাবের দু চার জায়গায় দেখেই কোনো বিষয়কে ভিত্তিহীন বলে দিতে অভ্যস্থ তারা খুব দ্রুত এ ধরণের সুন্নাহকে অস্বীকার করে বসেন। টুপির ক্ষেত্রেও এ ব্যাপার ঘটেছে।

আযীযম মাওলানা ইমদাদুল হক কুমিল্লায়ী এ বিষয়ে কিছু হাদীস-আছার একত্র করেছে। এ বিষয়ে আরো দলিল আছে এবং এমন রেওয়ায়েতও আছে, যার সনদ সব রকমের আপত্তির উর্ধ্বে। এ প্রবন্ধ তার সংকলনের প্রথম ধাপ। অবশিষ্ট রেওয়ায়াত ইনশাআল্লাহ আগামী কোনো অবসরে পেশ করা হবে।-আব্দুল মালেক


‘‘টুপি পরা সুন্নত’’ কথাটি শৈশব থেকেই শুনে আসছি এবং সুন্নতের অনুসারী আলিম-উলামা ও দ্বীনদার মানুষকে তা পরতে দেখেছি। এই ব্যাপক অনুসৃত সুন্নাহর বিষয়ে কখনোই মনে সংশয় জাগেনি। একসময় উচ্চস্তরের পড়াশোনার জন্য গ্রাম থেকে চলে এলাম দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বড় মাদরাসায়। সেখানে গিয়েই ছাত্রভাইদের কাছে প্রথম শুনলাম টুপি নিয়ে ভিন্ন কথা, সংশয় সন্দেহ। টুৃপি নাকি হাদীসে নেই। তাই কোনো কোনো আলেম তা পরেন না। শুধু রুমাল ব্যবহার করেন।

এদিকে কিছু প্রবাসী ভাই যারা আরব দেশগুলোতে থাকেন তারা এসে বলেন, আরবে নাকি টুপির গুরুত্ব বা রেওয়াজ নেই। খালি মাথায়ই তারা নামায পড়ে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করে সেই একই কথা-হাদীসের ভান্ডারে টুপির কথা নেই!

ইদানিং আবার আমাদের দেশে একটি মহল তৈরী হচ্ছে, যারা নির্দিষ্ট কিছু হাদীসের উপর আমল করে আর অন্যগুলোকে বিভিন্ন খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে এক প্রকার অস্বীকার করে। দ্বীনের অনেক স্বতসিদ্ধ বিষয় এবং নবী-যুগ থেকে অবিচ্ছিন্ন কর্মধারায় সর্বযুগে বিদ্যমান অনেক বিষয়কে স্থুল ও মুখরোচক কিছু অজুহাত দেখিয়ে ভ্রান্ত বলে আর নিজেদের ছাড়া অন্য সকলকে বাতিল বলতে থাকে। ওদের তরফ থেকেও ‘টুপি নেই’ জাতীয় কথা মিডিয়াতেও প্রচারিত হয়েছে। এসব কারণে এ বিষয়ে কিছু কিতাব ঘাঁটাঘাঁটি করলাম যা কিছু সংগ্রহ হল পাঠক মহলের নিকট পেশ করার ইচ্ছা করলাম।

টুপি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরেছেন, সাহাবায়ে কেরাম পরেছেন, তাবেয়ীন তাবে-তাবেয়ীন পরেছেন এবং পরবর্তীতে সব যুগেই মুসলিমগণ তা পরিধান করেছেন। টুপি, পাগড়ীর মতোই একটি ইসলামী লেবাস। হাদীসে, আছারে ও ইতিহাসের কিতাবে এ বিষয়ে বহু তথ্য আছে এবং অনেক আলিম-মনীষীর বক্তব্য আছে। এমন প্রতিষ্ঠিত একটি বিষয়কেও যারা ভিত্তিহীন মনে করেন তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার উপর সত্যিই করুণা হয়। নিম্নে এ সম্পর্কে কিছু দলীল পেশ করছি। প্রথমে হাদীস থেকে।

হাদীস-১  

হাসান বিন মেহরান থেকে বর্ণিত-

عن رجل من الصحابة : قال : أكلت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم، ورأيت عليه قلنسوة بيضاء

 একজন সাহাবী বলেছেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাঁর দস্তরখানে খেয়েছি এবং তাঁর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি’ (আল ইসাবাহ ৪/৩৩৯)

এ হাদীসটি ইমাম ইবনুস সাকান তার কিতাবুস সাহাবায় সনদসহ বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর এ বর্ণনায় সাহাবীর নাম আসেনি। তা এসেছে তাঁর অন্য বর্ণনায় এবং ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতেমের বর্ণনায়। তাঁর নাম ফারকাদ। (দ্র. আততারীখুল কাবীর ৭/১৩১; কিতাবুল জারহি ওয়াত তা’দীল ৭/৮১) উল্লেখ্য, ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. ইমাম ইবনুস সাকানের উপরোক্ত বর্ণনার দ্বারা আবু নুআইম আল আসবাহানী রহ.এর এ দাবি খন্ডন করেছেন যে, ফারকাদ সাহাবী আল্লাহর নবীর দস্তরখানে খাবার খাননি। বরং হাসান ইবনে মেহরান খাবার খেয়েছেন সাহাবী ফারকাদের সাথে। (মারিফাতুস সাহাবা ৪/১০৪)

হাফেজ ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ বলেন, এ ক্ষেত্রে আবু নুআইমই ভুলের শিকার হয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে তিনি ইমাম ইবনুস সাকানের উপরোক্ত বর্ণনাটি উল্লেখ করেন। এতে প্রমাণিত হয় এ বর্ণনা সহীহ। অন্যথায় প্রমাণ-গ্রহণ শুদ্ধ হতো না। এবং আবু নুআইম এর মত ইমাম এর কথাকে খন্ডন করা যেত না।

তাছাড়া সাহাবী ফারকাদ রা.এর আল্লাহর নবীর দস্তরখানে খাবার খাওয়ার কথা ইমাম বুখারী, ইমাম আবু হাতেম ও ইবনু আবদিল বারও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।

হাদীস-২

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন

أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يلبس من القلانس في السفر ذوات الآذان، وفي الحضر المشمرة يعني الشامية.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর অবস্থায় কান বিশিষ্ট টুপি পরতেন আর আবাসে শামী টুপি পরতেন। (আখলাকুন নুবুওয়্যাহ, আল জামে লি আখলাকির রাবী ওয়া আদাবিস সামে পৃ. ২০২)

এ হাদীসের সকল রাবী ‘‘ছিকা’’। উরওয়া ও হিশাম তো প্রসিদ্ধ ইমাম। আর মুফাদদাল ইবনে ফাদালা নামে দুইজন রাবী আছেন। একজন মিসরী, তিনি অনেক বড় ইমাম ছিলেন। মিসরের কাযী ছিলেন। সর্বসম্মতিক্রমে তিনি ‘‘ছিকা’’। আসমাউর রিজালের কিতাবাদি থেকে প্রতীয়মান হয় সনদে উল্লেখিত ব্যক্তি ইনিই। কারণ তিনিই হিশাম ইবনে উরওয়া ও ইবনে জুরাইজ থেকে রেওয়ায়েত করেন যা আল্লামা ইবনে আদী ও আল্লামা মুহাম্মাদ বিন হাসান বিন কুতায়বা তার কিতাবে উল্লেখ করেছেন। (আল-কামিল ৭/৪০৯ ইকমালু তাহযীবিল কামাল ১১/৩৩৮)

অপর জন বসরী। তাঁর স্মৃতিশক্তির বিষয়ে কিছু আপত্তি থাকলেও ইবনে হিববান তাকে ছিকা রাবীদের মধ্যে গণ্য করেছেন।

আবু হাতেম বলেছেন يكتب حديثه

আর ইমাম ইবনে আদী তার একটি বর্ণনাকে ‘মুনকার’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাকিগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন-

‘তার অন্য বর্ণনাগুলো সঠিক।’ সুতরাং সনদে উল্লেখিত রাবী যদি বসরীও হন তবুও তার এ বর্ণনা সঠিক।

হাদীস-৩

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসা ছিলাম। ইতিমধ্যে একজন আনসারী সাহাবী তাঁর কাছে এলেন। এবং তাঁকে সালাম দিলেন। তিনি ফিরে যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আনসারী! আমার ভাই সাদ ইবনে উবাদাহ কেমন আছে? আনসারী বললেন, ভাল আছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের কে কে তাকে দেখতে যাবে? অতপর তিনি দাঁড়ালেন আমরাও দাঁড়ালাম। আমরা সংখ্যায় দশের অধিক হব। আমাদের পায়ে মোজাও ছিল না। চপ্পলও না। গায়ে জামাও ছিল না, টুপিও না। ঐ কংকরময় ভূমিতে আমরা চলছিলাম। অবশেষে আমরা সাদ এর নিকট পৌঁছলাম তখন তার পাশ থেকে মানুষজন সরে গেল। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীরা প্রবেশ করলেন।

এখানে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. এর বাক্য ‘‘আমাদের পায়ে মোজাও ছিল না, চপ্পলও না। গায়ে জামাও ছিল না টুপিও না’’ থেকে বোঝা যায়, ঐ যুগে টুপিও ছিল লিবাসের অংশ এবং কোথাও যাওয়ার জন্য সেগুলো রীতিমত আবশ্যকীয় এর ন্যয় ছিল। তাই এখানে এগুলো না থাকায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর তা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

বিষয়টি ঠিক এরকম যেমন ইমাম বুখারী রহ. সহীহ বুখারীতে বুরনুস প্রমাণ করেছেন। সহীহ বুখারীতে কিতাবুল লিবাসে باب البرانس নামে শিরোনাম দাঁড় করেছেন আর দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন হজের একটি হাদীস।

لا يلبس المحرم القميص ولا العمائم ولا البرانس

 ‘‘ইহরাম গ্রহণকারী জামাও পরবে না, পাগড়ীও না, বুরনুস (এক প্রকার টুপি)ও না।’’

আল্লামা আবু বকর ইবনুল আরাবী এ হাদীস থেকে পাগড়ী প্রমাণ করেছেন। তিনি বলেন, এ হাদীস প্রমাণ করে যে, তৎকালে পাগড়ী পরিধানের রীতি ছিল। এ কারণে ইহরাম অবস্থায় তা পরিধান করা নিষেধ করেছেন।

একইভাবে আলোচিত হাদীস দ্বারাও টুপি ও তার প্রচলন প্রমাণে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।

হাদীস -৪

উমর ইবনে খাত্তাব রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-

الشهداء ثلاثة : رجل مؤمن ... ورفع رسول الله صلى الله عليه وسلم رأسه حتى وقعت قلنسوته أو قلنسوة عمر.

শহীদ হল তিন শ্রেণীর লোক : এমন মুমিন ... এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা তুললেন। তখন তাঁর টুপি পড়ে গেল। অথবা বলেছেন উমরের টুপি পড়ে গেল। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১৪৬ জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৬৪৪ ইত্যাদি)

হাদীসটির ক্ষেত্রে ইমাম তিরমিযী বলেছেন, ‘হাসানুন গারীবুন।’

হাদীসটির সনদ এই,

عن عبد الله بن لهيعة عن عطاء بن دينار أبي يزيد الخولاني عن فضالة بن عبيد عن عمر بن الخطاب رضي الله عنهم

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে লাহিয়া এর ক্ষেত্রে যদিও মুহাদ্দিসীনদের বিভিন্ন রকম বক্তব্য আছে, কিন্তু এ হাদীসটি তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক। আর এক্ষেত্রে ইমামগণ এক মত যে ইবনে লাহিয়া থেকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক কর্তৃক বর্ণনাকৃত হাদীসগুলো সঠিক।

উপরন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে লাহিয়ার একজন ‘মুতাবি’ও আছেন সায়ীদ ইবনে আবী আইয়ূব। যা ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতিম এর কথায় পাওয়া যায়।

قال الترمذي : سمعت محمدا يقول : قد روى سعيد بن أبي أيوب هذا الحديث عن عطاء بن دينار عن أشياخ من خولان، ولم يذكر فيه عن أبي زيد.

وقال أبو حاتم : وروى سعيد بن أبي أيوب عن عطاء بن دينار عن أشياخ من خولان عن فضالة عن عمر.

আর এ সনদের আরেকজন রাবি, আবু ইয়াযিদ আল খাওলানী। মুতাআখখিরীনদের মাঝে কেউ কেউ তাকে মাজহুল বলেছেন।

এক্ষেত্রে প্রথম কথা এই যে, হাদীসটি শুধু তিনিই বর্ণনা করেননি; বরং খাওলান শহরের আরো অনেক মুহাদ্দিস তা বর্ণনা করেন, যা ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতেম এর উপরোক্ত কথায় পাওয়া যায়।

দ্বিতীয় কথা এই যে, ইমাম বুখারী, ইমাম আবু হাতেম, ইমাম তিরমিযীসহ মুতাকাদ্দিমীন ইমামগণের কেউ তাকে মাজহুল বলেন নি; বরং সকলে তাঁর জীবনীতে তাঁর নাম উল্লেখ করে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। কেউ তাঁর সম্পর্কে ভালোও বলেননি মন্দও বলেননি। এটাকে হাদীস শাস্ত্রের পরিভাষায় বলা হয় سكوت المتكلمين في الرجال অর্থাৎ ইমামগণের নীরব থাকা। এই কারণে রাবী মাজহুল হওয়া আবশ্যক নয় বরং এটাকে এক প্রকার তা’দীল হিসেবে ধরা হয়। বিশেষত রাবী যদি তাবেয়ী স্তরের হন। আর এখানেও তা ঘটেছে। সম্ভবত এ নিশ্চুপ থাকাকেই পরবর্তীদের কেউ মাজহুল বলে দিয়েছেন, যা ঠিক নয়।

থাকল এ বিষয় যে, উপরোক্ত হাদীসে কি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর টুপি সম্পর্কে বলা হয়েছে না ওমর রা.এর টুপি সম্পর্কে? যদি ধরেও নেয়া হয় যে, ওমর রা. এর টুপি সম্পর্কে তাহলেও তো একজন খলীফায়ে রাশেদের টুপি পরা প্রমাণিত হচ্ছে। আর খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ তো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ্রই অংশ, বিশেষত যখন একাধিক হাদীসে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরও টুপি পরা প্রমাণিত হচ্ছে।

আপাতত এ চারটি হাদীস উল্লেখ করা হল। হাদীসের কিতাবসমূহে এ বিষয়ে আরো হাদীস আছে এবং টুপি নিয়ে আলাদা শিরোনামও আছে। আসহাবুস সিয়ার তথা সীরাত প্রণেতা ইমামগণও আল্লাহর নবীর পোষাকের অধ্যায়ে তাঁর টুপির জন্যও আলাদা পরিচ্ছেদ কায়েম করেন। যেমন করেছেন ইবনে হাইয়ান, ইবনুল কায়্যিম, ইবনে আসাকির, ইবনুল জাওযী, গাযালী, শায়খ ইউসুফ সালেহী, আল্লামা দিময়াতী, বালাযুরীসহ আরো অনেক ইমাম। সকলের বক্তব্য তুলে ধরলে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে তাই শুধু আল্লামা  ইবনুল কায়্যিম রহ. এর বক্তব্য তুলে ধরছি। তিনি তাঁর সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘‘যাদুল মাআদে’’ লেখেন, তাঁর একটি পাগড়ি ছিল, যা তিনি আলী রা. কে পরিয়েছিলেন। তিনি পাগড়ি পরতেন এবং পাগড়ির নিচে টুপি পরতেন। তিনি কখনো পাগড়ি ছাড়া টুপি পরতেন। কখনো টুপি ছাড়াও পাগড়ি পরতেন। (যাদুল মাআদ ১/১৩৫)

সাহাবায়ে কেরামের টুপি

জানা কথা যখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টুপি পরেছেন তখন সাহাবায়ে কেরামও পরবেন। বরং কোনো হাদীসে আল্লাহর নবীর টুপির উল্লেখ না এলেও যদি সাহাবায়ে কেরামের টুপি পরা প্রমাণিত হয় তাহলে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর টুপি পরিধানেরই প্রমাণ বহন করবে। হাদীস ও আছারের কিতাবে সাহাবায়ে কেরামের টুপি পরার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে একটি পুস্তিকা হয়ে যাবে। এখানে সামান্য কিছু বর্ণনা উল্লেখ করা হল।

1.            হাসান বসরী রাহ. বলেন,

وكان القوم يسجدون على العمامة والقلنسوة

তাঁরা (সাহাবায়ে কেরাম গরমের দিনে) পাগড়ি বা টুপির উপর সিজদা করতেন।-সহীহ বুখারী, কিতাবুস সালাত ‘প্রচন্ড গরমের কারণে কাপরের উপর সিজদা করা’ অধ্যায়।

উল্লেখ্য, হাসান বসরী রাহ. অনেক বড় মনীষী তাবেয়ী, যিনি অনেক সাহাবীকে দেখেছেন এবং তাদের সাহচর্য গ্রহণ করেছেন।

2.            সুলাইমান ইবনে আবি আবদিল্লাহ বলেন,

أدركت المهاجرين الأولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر، يضع أحدهم العمامة على رأسه ويضع القلنسوة فوقها، ثم يدير العمائم هكذا على كوره لا يخرجها من ذقنه

আমি প্রথম সারির মুহাজিরগণকে দেখেছি তাঁরা সুতির পাগড়ি পরিধান করতেন। কালো, সাদা, লাল, সবুজ, হলুদ ইত্যাদি রংয়ের। তারা পাগড়ির কাপড় মাথায় রেখে তার উপর টুপি রাখতেন। অতপর তার উপর পাগড়ি ঘুরিয়ে পরতেন।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১২/৫৪৫

3. হেলাল ইবনে ইয়াসাফ বলেন,

قدمت الرقة فقال لي بعض أصحابي : هل لك في رجل من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم؟ فقلت : غنيمة. فدفعنا إلى وابصة، فقلت  لصاحبي : نبدأ فننظر إلى دله فإذا عليه قلنسوة لا طية ذات أذنين.

আমি রাক্কায় গিয়েছিলাম তখন আমার এক সাথী আমাকে বললেন, তুমি কি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললাম-এর একজন সাহাবীর নিকট যেতে ইচ্ছুক? আমি বললাম, ‘এ তো গনীমত।’ তারপর আমরা ওয়াবেছা রা.-এর নিকট গেলাম। আমি আমার সাথীকে বললাম, দাঁড়াও, প্রথমে আমরা তাঁর আচার-আখলাক দেখব। তাঁর মাথায় দুই কান বিশিষ্ট টুপি ছিল, যা মাথার সঙ্গে মিশে ছিল।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৯৪৯

4.    হিশাম বলেন,

رأيت على ابن الزبير قلنسوة

আমি ইবনে যুবায়ের রা.-এর মাথায় টুপি দেখেছি।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৫৩৫৩

5.    আশআছ রাহ. তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন-

أن أبا موسى خرج من الخلاء وعليه قلنسوة،

আবু মুসা আশআরী রা. হাম্মাম থেকে বের হলেন। তার মাথায় টুপি ছিল।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১০/৫১০

6.   আববাদ ইবনে আবী সুলাইমান বলেন,

رأيت على أنس بن مالك قلنسوة بيضاء

আমি আনাস ইবনে মালেক রা.-এর  মাথায় একটি সাদা টুপি দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৫/১২১

7.    আবু হাইয়ান বলেন,

كانت قلنسوة علي لطيفة

হযরত আলী রা.-এর টুপি ছিল পাতলা।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৩/২৩

ইবনে সাদ আলী রা.-এর জীবনীতে তাঁর পোশাকের আলোচনায় তার টুপি সম্পর্কে আলাদা শিরোনাম এনেছেন।

8.    আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. মাথা মাসাহর সময় টুপি উঠিয়ে নিতেন এবং অগ্রভাগ মাসাহ করতেন।-সুনানে দারা কুতনী, হাদীস : ৫৫; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস : ২৮৮

9.    ফাযারী রাহ. বলেন,

10.  رأيت على علي قلنسوة بيضاء مصرية

আমি আলী রা.-এর মাথায় সাদা মিসরী টুপি দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৩/২৩

11. সায়ীদ ইবনে আবদুল্লাহ বলেন,

رأيت أنس بن مالك أتى الخلاء، ثم خرج وعليه قلنسوة بيضاء مزرورة

আমি আনাস ইবনে মালেক রা. কে দেখেছি, তিনি হাম্মাম থেকে বের হলেন। তার মাথায় বোতাম বিশিষ্ট সাদা টুপি ছিল।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ১/১৯০

12. আবদুল হামীদ বিন জাফর তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. ইয়ারমূক যুদ্ধের দিন তার একটি টুপি হারিয়ে ফেললেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তা পাওয়া গেল। তা ছিল একটি পুরানো টুপি। খালেদ রা. বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরার  পর মাথা মুন্ডন করলেন। সাহাবীগণ তাঁর চুল নেওয়ার জন্য ছুটতে লাগলেন। আমি গিয়ে তাঁর মাথার অগ্রভাগের চুলগুলি পেলাম। তা এ টুপিতে লাগিয়ে রেখেছি। যে যুদ্ধেই এ টুপি আমার সাথে ছিল তাতেই আল্লাহর সাহায্য পেয়েছি।-দালাইলুন নুবুওয়াহ ৬/২৪৯

সাহাবায়ে কেরামের টুপি ব্যবহারের প্রমাণ স্বরূপ আপাতত এ কয়টি আছার উল্লেখ করা হল। প্রথম দুই বর্ণনা ব্যাপকভাবে সাহাবায়ে কেরামের টুপি ব্যবহারের প্রমাণ বহন করছে। আর পরবর্তী বর্ণনাগুলোতে অনেক সাহাবীর টুপি ব্যবহার উল্লেখিত হয়েছে। টুপির শুধু ব্যবহার নয়, ব্যাপক প্রচলন এ বর্ণনাগুলো দ্বারা প্রমাণিত হয়। এ প্রসঙ্গে আরেকটি বর্ণনা উল্লেখ করে তাবেয়ী-যুগের বর্ণনায় যাব, যার পর অতি সংশয়গ্রস্ত লোকেরও সংশয় থাকা উচিত নয়।

দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর রা.-এর যুগে যখন ‘নাজরান’ শহরের খৃস্টানরা সন্ধিতে রাজি হল এবং কর দিতে সম্মত হল তখন তারা হযরত উমর রা.-এর সাথে একটি চুক্তিনামা করেছিল। সেই চুক্তির অংশবিশেষ এই-

بسم الله الرحمن الرحيم، هذا كتاب لعبد الله عمر أمير المؤمنين من نصارى مدينة كذا كذا، لما قدمتم سألناكم الأمان لأنفسنا وذرارينا وأهل ملتنا وشرطنا لكم على أنفسنا أن لا نحدث في مدينتنا ولا فيما حولها ديرا ولا كنيسة ... ولا نتشبه بهم (المسلمين) في شيء من لباسهم من قلنسوة ولا عمامة.

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

এ অমুক শহরের নাসারাদের পক্ষ থেকে আল্লাহর বান্দা আমীরুল মুমিনীন উমরের সাথে লিখিত চুক্তি। যখন আপনারা (মুসলমানগণ) আমাদের শহরে এলেন তখন আমরা আপনাদের নিকট আমাদের, আমাদের সন্তান-সন্ততি ও স্বধর্মের লোকদের জন্য নিরাপত্তা প্রার্থনা করেছি। আমরা নিজেদের উপর এ শর্ত গ্রহণ করছি যে, এ শহরে এবং এর আশপাশে আমরা কোনো গির্জা তৈরি করব না ... এবং আমরা মুসলমানদের পোশাক-টুপি, পাগড়ি ইত্যাদিতে সাদৃশ্য গ্রহণ করব না ...।-সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস : ১৯১৮৬

চুক্তিনামার এ অংশে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় :

এক. টুপিকে মুসলমানদের পোশাক বলা হয়েছে। যেমন পাগড়িকে বলা হয়েছে। একটি বস্ত্তর কতটুকু প্রচলন হলে তা একটি দল বা গোষ্ঠীর সাথে সম্বন্ধ করা হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

দুই. টুপিকে একটি রাষ্ট্রীয় চুক্তিনামায় উল্লেখ করা দ্বারা সহজেই অনুমান করা যায়, সে যুগে মুসলমানদের নিকট টুপির গুরুত্ব কেমন ছিল এবং তার প্রচলন কত ব্যাপক ছিল।

তিন. এ চুক্তিনামা যখন লেখা হয় তখন বহু সাহাবী জীবিত ছিলেন। ইতিহাসে এমন একটি বর্ণনাও নেই যে, তাদের কেউ এ বিষয়ে আপত্তি করেছেন; বরং পরবর্তী খলীফাগণও এ চুক্তি বলবৎ রেখেছেন। এমনকি হযরত আলী রা.-এর যুগে এ নাসারারা এ চুক্তির কোনো একটি বিষয়ে কথা বলতে এসেছিল। তখন তিনি তাদেরকে সাফ বলে দেন-

إن عمر كان رشيد الأمر، لن أغير شيئا صنعه عمر

নিশ্চয়ই উমর সঠিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি যা করেছেন আমি তার কিছুই কোনোরূপ পরিবর্তন করতে পারব না।

হযরত উমর রা.-এর এ চুক্তিনামাটিকে যিম্মীদের ক্ষেত্রে শরীয়তের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উসূল বা মানদন্ড হিসেবে ধরা হয়। পরবর্তী যুগের আলিম-মনীষী ও মুসলিম খলীফাগণ যিম্মিদের সাথে কোনো চুক্তিনামা করলে এর শর্তগুলোকে মানদন্ড হিসেবে সামনে রাখতেন।

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. বলেন, এ শর্তগুলো এতই প্রসিদ্ধ যে, এগুলোর সনদ উল্লেখের প্রয়োজন নেই। কেননা ইমামগণ তা সাদরে গ্রহণ করেছেন এবং তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন ও এগুলো দ্বারা প্রমাণ গ্রহণ করেছেন। আর হযরত উমর রা.-এর এসব শর্ত ছিল তাঁদের কিতাবে ও মুখে মুখে। পরবর্তী খলীফাগণ তা বলবৎ রেখেছেন এবং এর অনুসরণ করেছেন। -আহকামু আহলিয যিম্মাহ, পৃষ্ঠা : ৪৫৪

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. এ কিতাবটি শুধু হযরত উমর রা.-এর এ চুক্তিনামার শরহ বা ব্যাখ্যাতেই প্রণয়ন করেছেন।

যাহোক, উপরোক্ত উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যায়, সকল যুগেই টুপি মুসলমানদের পোশাক ছিল। আশা করি, খিলাফতে রাশিদা-যুগের এ চুক্তিনামা দেখার পর কারো কোনো সংশয় থাকবে না। কোনো হাদীস বা আছারে টুপির কথা উল্লেখিত না হলেও এ দলীলটি আলোচ্য বিষয়ে যথেষ্ট হত।

তাবেয়ীগণের টুপি

যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টুপি পরেছেন, সাহাবায়ে কেরাম পরেছেন এবং তা ছিল মুসলিমদের পোশাকের অংশ তখন জানা কথা, তাবেয়ীগণও তা পরেছেন। উপরের আলোচনা থেকেই তাবেয়ীন-যুগও পরবর্তী যুগেও মুসলিম-সমাজে টুপির সুন্নাহ প্রতিষ্ঠিত থাকা প্রমাণিত হয়। তাই আলাদাভাবে তাবেয়ীদের টুপি প্রমাণের আর প্রয়োজন থাকে না। এরপরও কিছু নমুনা পেশ করছি।

1.    আবদুল্লাহ ইবনে আবি হিন্দ রাহ. বলেন,

رأيت على علي بن الحسين قلنسوة بيضاء لاطئة

আমি আলী ইবনে হুসাইন রাহ.-এর মাথায় একটি সাদা টুপি দেখেছি, যা মাথার সাথে মিলিত ছিল।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৩/২৪৩

2.   আবুল গুছ্ন বলেন-

رأيت نافع بن جبير يلبس قلنسوة سماطا وعمامة بيضاء

আমি নাফে ইবনে জুবাইরকে পুঁতিবিশিষ্ট টুপি ও সাদা পাগড়ি পরতে দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৫/২০৬ (শামেলা)

3.      খালেদ ইবনে বকর বলেন,

رأيت على سالم قلنسوة بيضاء

আমি সালেম রাহ.-এর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি। (সালেম হলেন সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর পুত্র)।-তবাকাতে ইবনে সাআদ ৫/১৯৭; সিয়ারু আলামিন নুবালা ৪/৪৬৪ (শামেলা)

4.    আইয়ূব বলেন,

رأيت على القاسم بن محمد قلنسوة من خز

আমি কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ রাহ.-এর মাথায় পশমের টুপি দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৫/১৮৯; হিলইয়াতুল আওলিয়া ২/১৮৫ (শামেলা)

5.      মুহাম্মাদ ইবনে হিলাল বলেন,

رأيت سعيد بن المسيب يعتم وعليه قلنسوة لطيفة بعمامة بيضاء

আমি সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়িবকে একটি পাতলা টুপির উপর পাগড়ি বাঁধতে দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ, ৫/১৩৮; সিয়ারু আলামিন নুবালা ৪/২৪২ (শামেলা)

6.      কাসিম ইবনে মালিক এক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন-

رأيت على الضحاك قلنسوة ثعالب

অর্থ : আমি যাহহাক রাহ.-এর মাথায় একটি চামড়ার টুপি দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৬/৩০১ (শামেলা)

7.      যুহাইর বলেন,

رأيت أبا إسحاق السبيعي وهو يصلي بنا، يأخذ قلنسوته من الأرض فيلبسها أو يأخذها عن رأسه فيضعها.

আমি আবু ইসহাক আসসাবীয়ীকে দেখেছি তিনি আমাদের নিয়ে নামায পড়েছেন। তিনি টুপি খুলে মাটিতে রাখছেন কিংবা তা উঠিয়ে মাথায় পরছেন।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৬/৩১৪ (শামেলা)

8.      ইয়াযিদ ইবনে আবী যিয়াদ রাহ. বলেন,

رأيت إبراهيم النخعي يلبس قلنسوة ثعالب

আমি ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর মাথায় চামড়ার টুপি দেখেছি।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৬/২৮০ (শামেলা)

9.      আবুল হাইসাম আলকাসসাব বলেন, আমি ইবরাহীম নাখায়ীর মাথায় তায়লাসার টুপি দেখেছি, যার অগ্রভাগে চামড়া ছিল।-প্রাগুক্ত

10.   বাক্কার ইবনে মুহাম্মাদ বলেন, আমি ইবনে আউস-এর মাথায় একটি টুপি দেখেছি, যা এক বিঘত উঁচু ছিল।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৭/২৬৭ (শামেলা)

11.   ফযল ইবনে দুকাইন বলেন, আমি দাউদ আততায়ীকে দেখেছি। তাঁর টুপি আলিমগণের টুপির মতো ছিল না। তিনি কালো লম্বা টুপি পরতেন, যা ব্যবসায়ীরা পরে থাকে।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৬/৩৬৭ (শামেলা)

12.   ইমাম মালেক বলেন, আমি রবীয়া ইবনে আবদুর রহমান আররায়ীর মাথায় একটি টুপি দেখেছি, যার বাইরে ও ভেতরে রেশমজাতীয় কাপড় ছিল।-তবাকাতে ইবনে সাদ (আলকিসমুল মুতাম্মিম) ১/৩২১ (শামেলা)

13.  শুআইব ইবনে হাবহাব বলেন, প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আবুল আলিয়ার একটি টুপি ছিল, যার পাটের ভিতর চামড়া ছিল।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৭/১১৬ (শামেলা)

14.   আফফান ইবনে মুসলিম বলেন, আবু আওয়ানা টুপি পরতেন।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৭/২৮৭ (শামেলা)

15.   আফফান ইবনে মুসলিম বলেন, হাম্মাদ ইবনে যায়েদ একটি সাদা পাতলা লম্বা টুপি পরতেন।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৭/২৮৬ (শামেলা)

16.  হযরত সায়ীদ ইবনে জুবাইর রাহ.-এর শাহাদতের ঘটনায় আছে, যখন হাজ্জাজ জল্লাদকে বলল, তার গর্দান উড়িয়ে দাও তখন সে তা করল (নাউযুবিল্লাহ)। সায়ীদ ইবনে জুবাইর এর শীর একদিকে ছিটকে পড়ল। তখন তার মাথার সাথে একটি সাদা টুপি মিলিত ছিল।-তবাকাতে ইবনে সাদ ৬/২৬৫ (শামেলা)

17.   হযরত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা বলোনিশরীক ইবনে আবদুল্লাহ আমাদের নিয়ে জানাযার নামায পড়লেন এবং তার টুপিকে সুতরা হিসেবে সামনে রাখলেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৬৯১

উল্লেখ্য, কারো কারো ধারণা, ঐ যুগে টুপি এত লম্বা ছিল যে, তা দিয়ে সুতরাও দেওয়া যেত। আসলে তা নয়। সুতরার ক্ষেত্রে এ কথাও আছে যে, সুতরা দেওয়ার মতো কোনো কিছু পাওয়া না গেলে কমপক্ষে একটি রেখা হলেও যেন টেনে দেওয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতেই তারা রেখা না টেনে কমপক্ষে টুপিটা হলেও রাখতেন। যেন কিছু একটা রাখা হয়। এটা টুপি লম্বা হওয়া বা ছোট হওয়া আবশ্যক করে না।

তাবেয়ীনের টুপি সম্পর্কে আপাতত এ কয়েকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা হল।

বিজ্ঞ পাঠক আমাদের বরাতগুলো দেখে সম্ভবত অনুমান করতে পেরেছেন যে, হাদীস ও তারীখের দু’ চারটি কিতাব থেকেই তা সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি হাদীস-আছার ও তারীখের কিতাবাদিতে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হয় তাহলে এ বিষয়ে বিশাল সংগ্রহ প্রস্ত্তত হবে। কিন্তু আমরা এখানে এতটুকুই যথেষ্ট মনে করছি।

আমরা এখানে সতেরজন তাবেয়ীর বরাত উল্লেখ করেছি। এদের মধ্যে আছেন হুসাইন রা.-এর পুত্র, যিনি আহলে বাইতের একজন। আছেন সালেম ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উমর, যিনি মক্কা নগরীর ফকীহদের একজন। আরো আছেন সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়্যিব ও সায়ীদ ইবনে জুবাইর এবং ইবরাহীম নাখায়ীর মতো অকুতোভয় ফকীহ ইমাম।

তাঁদের মতো মনীষী ব্যক্তিত্ব কোনো বিষয়ে একমত হবেন আর তা নবী ও সাহাবীদের যুগে থাকবে না তা কি চিন্তা করা যায়?

মুজতাহিদ ইমামগণের টুপি

মুজতাহিদ ইমামগণ হলেন কুরআন-সুন্নাহর ভাষ্যকার এবং কুরআন-সুন্নাহর বিধানের সংকলক। গোটা মুসলিম জাহানের অধিকাংশ মুসলিম তাঁদের ব্যাখ্যা অনুসারেই কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক আমল করেন। তাই তাদের টুপি ব্যবহারের বিষয়টিও উল্লেখ করছি।

ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর টুপি

ইমাম আবু হানীফা উঁচু টুপি পরতেন।-আলইনতিকা, পৃষ্ঠা : ৩২৬; উকুদুল জুমান, পৃষ্ঠা : ৩০০-৩০১

ইমাম মালিক রাহ.-এর টুপি

كان مالك بن أنس إذا أراد أن يخرج يحدث توضأ وضوءه للصلاة ... ولبس قلنسوته ومشط لحيته ...

অর্থ : ইমাম মালেক রাহ. যখন হাদীস বর্ণনার জন্য বের হতেন তখন অযু করতেন, টুপি পরতেন ও দাঁড়ি আঁচড়ে নিতেন।-আলজামে, খতীব বাগদাদী ১/৩৮৮, বর্ণনা : ৯০৩

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ.-এর টুপি

ফযল ইবনে যিয়াদ বলেন-

رأيت على أبي عبد الله (الإمام أحمد) ... عليه عمامة فوق القلنسوة ... وربما لبس القلنسوة بغير عمامة.

অর্থ : আমি ইমাম আহমদকে টুপির উপর পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। ... তবে কখনো কখনো তিনি পাগড়ি ছাড়া টুপি পরেছেন।-সিয়ারু আলামিন নুবালা ১১/২২০ (শামেলা)

এ পর্যন্ত আমরা টুপির ক্ষেত্রে নবী-যুগ, সাহাবা-যুগ ও তাবেয়ী-যুগের ইতিহাস পেলাম। আল্লাহর রহমতে আমরা সংশয়হীনভাবে বুঝতে পারলাম যে, এসব যুগে টুপি ছিল এবং মুসলমানদের পোশাক হিসেবে অন্যান্য পোশাকের মতো টুপিরও ব্যাপক প্রচলন ছিল। বলাবাহুল্য, প্রত্যেক প্রজন্ম তার পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকেই দ্বীন শেখে।

সুতরাং তাবেয়ীন থেকে তাবে তাবেয়ীন তাদের থেকে তাদের পরবর্তীগণ এভাবে নবী-যুগ, সাহাবা-যুগের এ সুন্নাহ আমাদের পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। দ্বীনের অন্যান্য বিষয়ের মতো এ বিষয়েও আমরা আমাদের স্বর্ণোজ্জ্বল অতীতের সাথে যুক্ত। 

রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১

যৌন শিক্ষা ও এর খুটিনাটি১৮+সেক্স এডুকেশন

(একটি  ১৮+ সেক্স এডুকেশন বিষয়ক লেখা , যৌনতা নিয়ে যাদের এলার্জি আছে তাদের পড়তে হবেনা  ।)

 একজন অনুজ , আমার ডাক্তার পরিচয় পাওয়ার পরে একদিন সন্ধ্যায় ইচ্ছে করে আমার সাথে বাড়ি ফিরতে চাইলেন। তার বাড়ির রাস্তা ভিন্ন দিকে আর আমিও রোগী দেখে দেখে ততদিনে বুঝতে পারি অনেক কিছুই। বুঝলাম , একটু আড়ালে কিছু আলোচনা করতে চান। আন্দাজে ভুল হয়নি। অতি সংক্ষেপে তিনি আমাকে জানালেন তার প্রেমিকার সাথে তার প্রথম যৌণ অভিজ্ঞতায় তার অতি দ্রুত স্খলনের ( প্রি ম্যাচিউর ইজাকুলেশন) সমস্যার কথা। 
.
সে একজন ডাক্তারকে দেখিয়েছেন ওই ডাক্তার কিছু ভিটামিন ওষুধ   দিয়েছিলেন।এই ভিটামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পর কিছুদিন তিনি ভাল ছিলেন । নতুন একজন গার্লফ্রেন্ডের সাথে আবার যৌন সম্পর্ক করার সময় বর্তমানে নাকি সমস্যা টা আবার হয়েছে  ।  
.
প্রি-ম্যাচিউর ইজাকুলেশন বা দ্রুত বীর্যপাতের জন্য আসলে ভিটামিন কোন কাজের ওষুধ না তবুও এই ডাক্তার দিয়েছিলেন এবং এতে নাকি রোগী কিছুদিন ভালো ছিলেন। কারণটা কি ? 
  আমি সেই তরুণকে অনেকভাবে  বোঝালাম যে এটা কোনো সমস্যা ন না , আর সত্যি সত্যি সমস্যা থাকলে ভিটামিনে কোনো রেজাল্ট পাওয়া যেত না । এটা মানসিক কারণে হয়েছে । তরুণটি আমার কথা মানলেন না , তিনি বললেন এই ভিটামিন জাতীয় ওষুধেই রেজাল্ট ভালো এসেছেন, আমি যেনো এমন টাইপের কিছু ওষুধ এর নাম বলে দেই ।
.

আসুন , আমরা একটু বুঝার চেষ্টা করি ঘটনাটা আসলে কি ঘটেছে। ছেলেটির সমস্যা ছিলো অতিদ্রুত স্খলন। এর সরাসরি ফলাফল যেইটা হয় , পুরুষ বা নারীর যৌণ তৃপ্তি বা ক্লাইমেক্স / অর্গাজম এ পৌছানোর আগেই সঙ্গম শেষ হয়ে যাওয়া । ব্যাপারটা অনেকটা প্রচন্ড ক্ষুধার মুখে দুই লোকমা খাওয়ার পরে প্লেট কেড়ে নেওয়ার মতন। বিস্তারিত আর বললাম না । 
.
কেন ঘটে এই রকম? যাদের সত্যি সত্যি কোন রকম ইনফেকশন ( যৌণ রোগ), এনাটমিক বা যৌণাঙ্গের গঠনগত সমস্যা আছে কিংবা ফিজিওলজিকাল বা কার্যকারিতার দিক থেকে কোন সমস্যা আছে - তারা ছাড়া বাকি সবার জীবনেই এইটা ঘটতে পারে মানসিক কারণে । 
.
★ প্রথমত, জীবনে প্রথম যৌণ সঙ্গম করতে গেলে ১ম কিছুদিন অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণে অতিদ্রুত স্খলন ঘটতে পারে। নিজের উত্তেজনাকে মানসিক ও শারীরীক ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে না পারাটাই কারণ । 
★ দ্বিতীয়ত , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে কোন রকম অপরাধবোধে ভুগলে । 
★ তৃতীয়ত , কোন কারণে যথেষ্ট সময় না থাকলে তাড়াহুড়া ও টেনশনে । 
★ চতুর্থত , আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকে অতিরিক্ত টেনশনে । 
★ পঞ্চমত , সঙ্গিনীর সাথে কোন কারণে যথেষ্ট স্বস্তি বা কম্ফোর্ট লেভেল না থাকলে । 
.
এখন কথা হলো , এর জন্য ওষুধ  খাওয়া কত জরুরী? 
.
যাদের কোন কারণে যৌণ রোগ বা ইনফেকশন আছে কেবল তাদের জন্যই ঔষুধ প্রয়োজন হতে পারে। জীবনের ১ম যৌণ অভিজ্ঞতায় কোন রোগ কারণ না হওয়ারই কথা । রইলো বাকি এনাটমিকাল ও ফিজিওলজিকাল কোন সমস্যা । এইটা প্রকৃতিতে খুবই রেয়ার। ডাক্তারের পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে এইটা বের হয়ে আসবে। কিন্তু উল্লেখিত তরুণের এই ধরনের কোন সমস্যা ধরা পড়ে নাই। 
.
আর মানসিক সমস্যার জন্য ভিটামিন? বুঝতেই পারছেন, এইটা ঠিক খাপ খায় না । তারপরেও মাঝে মাঝে নাছোড়বান্দা রোগী হইলে কিছু ডাক্তার রোগীর মন রক্ষা করতে গিয়ে ভিটামিন, স্যালাইন - এইসব বেকার জিনিস পত্র প্রেস্ক্রাইব করেন। তাহলে ছেলেটি উপকার পেলো কি করে? 
.
এখানে আমাদের আসলে তার সমস্যার মূলে পৌছাতে হবে। আমি যা বুঝেছিলাম, উনি তার প্রেমিকাকে তৃপ্ত করতে পারবেন কি পারবেন না সেই অতিরিক্ত টেনশন, সাথে ১ম বারের অতিরিক্ত উত্তেজনা = এর ফলে সমস্যায় পড়েছিলেন। ভিটামিন খাওয়ার পরে তার ভিতরে বিশ্বাস চলে আসে যে উনার সমস্যা মিটে গেছে । উনি এখন যৌন ভাবে সবল । এই ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ও কমফোর্ট লেভেল তাকে যে রিল্যাক্সসেশন বা আরাম দিয়েছে - তাতেই উনি পরের বার গুলোতে ভালো পারফর্ম করতে পেরেছেন। 
.
এখন , ঝড়ে বক পড়লো আর তাতে ফকিরের / ভিটামিনের কেরামতি বেড়ে গেলো। 
.
এই রকম কেরামতি কেন দরকার হয়? মূল সমস্যা কি? সমাধান কি? 
.
একজন ডাক্তার হয়েও সেই তরুণকে বুঝাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে আমি এইটা নিয়ে অনেক ভেবেছি। কেন উনি বুঝতে চাইলেন না একেবারেই? এবং ভেবে ভেবে , তার সাথে এর উপরে পড়ালেখা করে আমি যা বের করেছি তা হলো , মানুষের বিশ্বাসের সাথে তথ্যের লড়াইয়ে বিশ্বাসের জয় হবেই।
.
 এই তরুণের বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই কোন যৌণ শিক্ষা নেই । তার শেখার সূত্র ছিলো হয়ত আদিরসাত্মক সাহিত্য , নীল ছবি কিংবা নিদেন পক্ষে বড় ভাইদের অভিজ্ঞতা । এর কোনটাই সঠিক শিক্ষা দেয় না , দিতে পারে না । বরং এসব থেকে মানুষ বেশির ভাগ সময়েই ভয়াবহ ভুল শেখে । 
.
আবার এই সব সূত্র গুলো কোনটা স্বাভাবিক, কোনটা সমস্যা আর কোনটা রোগ- তাও শিক্ষা দেয় না । যারা এই সব নোংরা পথে কিছু শিখতে পছন্দ করেন না , তাদের জন্য কি কোন ভিন্ন পরিষ্কার পথ খোলা আছে? সার্বিক ভাবে - নাহ। যারা সেই রকম উচ্চ শিক্ষিত এবং ইন্টারনেট এ সংযুক্ত , তারা কিছুটা ভালো অবস্থানে আছেন। ইন্টারনেট থেকেই শিখতে পারেন কিন্তু সেই ওয়েবসাইট গুলো কি নির্ভরযোগ্য?
.
 লাইক , ভিয়ারাস বাড়িয়ে ইউটিউব থেকে  টাকা কামানো মেডিকেল বিষয়ক তথ্য দেওয়া ইউটিউবার গণ যে  সঠিক তথ্য দিচ্ছে  তা বুঝার কিন্তু উপায় একজন তরুণের নাই। অর্থাৎ একজন তরুণ কোন তথ্যটি সঠিক,  কোন তথ্যটি ভুল তা যাচাই করতে পারে না ,  ফলে  ভুল তথ্য গুলোকে সে সঠিক  হিসেবে মনে করে। (বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমি ইউটিউব থেকে কোন টাকা ইনকাম করি না, আমার মনিটাইজেশন অফ করা।  তাই কেউ এটা বলবেন না যে আমিও ইউটিউবে টাকা ইনকামের জন্য তথ্য দিয়ে থাকি ) 
.
আমাদের দেশের তরুণ তরুণিদের তাই মূল সমস্যা হলো:  একটা ভালো, ভদ্র , পদ্ধতিগত ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষা বা জ্ঞানের মাধ্যম - যা থেকে মানুষ সঠিক শিক্ষাটা নিতে পারে- তার অভাব। আর এরই সুযোগ নেয় যত রকমের হাতুড়ে আব জাব কোম্পানি ও ডাক্তার গুলো । বাংলাদেশে অশিক্ষা তো আছেই , তার চেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো , যারা স্কুল কলেজে পড়েন, তারা কুশিক্ষিত কিংবা অর্ধ শিক্ষিত । 
.
  এখনো মানুষ জানে না , মেয়েদের প্রতি মাসে রক্তপাত হওয়াটা (মাসিক বা রজঃস্রাব) যেমন একটা স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া , সেই রকম পুরুষের কিছুদিন পর পর ইরেকশন বা যৌণাঙ্গ দৃঢ় হওয়া থেকে শুরু করে ইজাকুলেশন বা ধাতু নির্গত হওয়াটা একটা অতি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া । স্বপ্নদোষ নামে যাকে  মানুষ এটা সেটা খেয়ে রোগমুক্তির আশা করে, সেইটা আসলে কোন রোগই না । একবার চিন্তা করুন, মেয়েরা যদি দল বেধে "ঋতুদোষের" জন্য ওষুধ খাওয়া শুরু করে তাহলে ব্যাপার কি দাঁড়াবে? 
.
সময়ের আগেই ধাতু নির্গমন বা ইজাকুলেশন কোন দুর্বলতার লক্ষণ নয় । এইটা কোন রোগও নয়। তবে , পুষ্টিহীন নারী শরীরে যেমন ঋতুস্রাবের সমস্যা হতে পারে, অতিরিক্ত পুষ্টিহীনতায় ভুগলে পুরুষেরও পারফর্মেন্সে ঘাটতি হতে পারে। তবে সে সব ঘাটতি মলম মেখে দূর করা যায় না । বেটার পার্ফর্মেন্সের জন্য চাই বেটার স্বাস্থ্য । সুস্বাস্থ্য। চিকিৎসকের  পরামর্শ সঠিক ভাবে অনুসরন করা । 
.
যারা জানেন না , তাদের জন্য বলি, অতিরিক্ত শুকনা কিংবা অতিরিক্ত মোটা হলে , উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিস হলে , সিগারেট - মদ জাতীয় বদভ্যাস থাকলে - যৌণ দক্ষতা কমে যেতে পারে। বাচ্চা হতেও সমস্যা হতে পারে। তার মানে এইনা যে আপনাকে সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে জিমে গিয়ে ডাম্বেল ভাজতে হবে, কিন্তু , স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান না হলে স্ত্রীর প্রেম পাইতে কিংবা বাচ্চার বাপ হইতে সমস্যা হতেই পারে। 
.
যারা যৌণ শিক্ষার নাম শুনলেই সব গেলো গেলো বলে চিল্লাতে ভালোবাসেন, সেই সব মানুষদের মন রক্ষা করতে গিয়ে আমাদের পাঠ্য বই গুলাতে যথা সম্ভব কম তথ্য দেওয়া থাকে। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে , উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আগে মানব দেহ সিলেবাসেই ছিলো না ( বায়োলজি) । আশা করি এখন সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মানুষের যৌণ বা রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেম আমি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াতে দেখিনি। এমন কি , মেডিকেলের ফিজিওলজি ম্যাডাম আমাদের বলেছিলেন, " এইটা তোমরা বাড়িতে পড়ে নিও।" এই থেকেই বুঝা যায় , মানুষের দেহের এই অংশ বা সিস্টেমটিকে নিয়ে সঠিক শিক্ষার পরিবেশ বাংলাদেশে প্রায় অনুপস্থিত । কিন্তু তাতে কি প্রলয় বন্ধ আছে? 
.
যারা বলেন, সঠিক যৌণ শিক্ষা দিলে মানুষের নৈতিক আচরণে ধ্বস নামবে , এতদিন তো এই শিক্ষা বাংলাদেশে বন্ধই আছে এক রকম, তাতে কি ধ্বস নামা বন্ধ হয়েছে? কমেছে? নাকি, বেড়েছে? 
যৌণ শিক্ষা বন্ধ আছে । কিন্তু যৌণ সঙ্গম কি বেড়েছে না কমেছে? 
যৌণ শিক্ষা বন্ধ আছে । কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষকে যৌণ সুড়সুড়ি দেওয়া কি বন্ধ আছে? 
.
যারা এর বিরোধিতা করেন, তারা কি দায়িত্ব নিয়েছেন ছেলে মেয়ে গুলো যাতে কোন বিপদে না পড়ে , অশিক্ষা - কুশিক্ষা জনিত স্বাস্থ্যহানি না ঘটায় - সেইটা বন্ধে? 
অসামাজিক কার্যকলাপ বাদ দেন, যারা সামাজিক কার্যকলাপ (বিয়ে, বাচ্চা নেওয়া, একটা স্বাভাবিক যৌণ জীবন কাটাতে চান) করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিপদ , আপদ, রোগ, শোক, বিব্রতকর অবস্থা এবং কখনো কখনো মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছেন , তাদের শিক্ষার কোন ব্যবস্থা কি নিয়েছেন? 
.
আমরা যারা ডাক্তার , তারা প্রতিদিনই কারো না কারো মারাত্মক কোন সমস্যার কথা শুনি বলে আমরা টের পাই , এই " লুকিয়ে রাখা" , " চেপে রাখা" , "দমিয়ে রাখা" যৌণ অজ্ঞতাজনিত সমস্যা গুলো কি হারে মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে। আর কত সহজেই একটা সঠিক শিক্ষা মানুষকে এই কষ্ট গুলো থেকে রক্ষা করতে পারে। 
কিছু ঘটনা ঃ 
.
১। এই ২০২১ সালের শেষের দিকে এসে শুনতে হয় শান্ডা বা মান্ডার তেল আর শিয়ালের বাম এর বেচাবিক্রির জন্য হাতুরেদের শোর গোল। 
২। এই যুগেও মানুষ জানে না কোনটা স্বাভাবিক যৌণতা আর কোনটা অস্বাভাবিক। 
৩। অতি আধুনিক দম্পতিকেও বিয়ের পরে পর্ণ দেখে শিক্ষা নিতে হয় কেমনে কি করে। যারা এই সব দেখা পাপ বলে বিশ্বাস করেন, তাদের অবস্থা আরো করুণ। 
৪। পতিতার কাছ থেকে "অভিজ্ঞতা" ও "জ্ঞান " আহোরণ করতে গিয়ে যৌণ রোগ বাধিয়ে আসে। 
৫। জানে না কিভাবে বাচ্চা হয়। 
৬। বিয়ের আট মাসেও না জানা কি ভাবে সঙ্গম করতে হয়। 
৭। জানে না কি ভাবে গর্ভ ধারণ আটকানো যায়। 
৮। অবৈধ গর্ভপাত এখনো বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যবসা। 
৯। এখনো সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে হওয়া নিয়ে স্ত্রীকেই দায়ী করা হয়। 
১০। এখনো যে কোন সমস্যা হলে মানুষ পরিচিত ডাক্তারদের কাছে ছোটে । কিন্তু যৌন সমস্যার ক্ষেত্রে বেশির ভাগই লজ্জায় চেপে রাখে আর নিজে নিজে রাস্তার ক্যানভাসারদের কাছ থেকে বা এক ফাইলে যথেষ্ট টাইপের কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ কিনে কিনে খায়।। 
১১। এই যুগে মানুষ শান্ডার তেল,ধোনেশ পাখির তেল, শিয়ালের বাম, শিকড় বাকড় তাবিজ তুমার , তুক তাক আর ভিটামিন- স্যালাইনের পিছনে টাকা নষ্ট করে। 
.
এখন সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনার কথা বলি । স্রেফ " কি ভাবে আদর করতে হয় জানে না বলে" স্ত্রীকে বছরের পর বছর ধরে যা করা হয়েছে তাকে শুধু তুলনা করা চলে "ধর্ষণ" হিসেবে । স্ত্রী স্বামীকে ভালোবাসেন কিন্তু তার যন্ত্রনা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো যে অত্যন্ত ধর্ম ভীরু সেই দম্পতি যৌণতা এক প্রকার বাদ দেন। এক পর্যায়ে স্ত্রী স্বামীকে অনুরোধ করেন, " তোমার দরকার হলে তুমি আরেকটা বিয়ে করো । আমি মানা করবো না।" 
.
এখন প্রশ্ন হইলো , আল্লাহ মানুষের ভিতর যৌণ সঙ্গম নামক একটা প্রক্রিয়া দিয়েছেন যার মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা প্রকাশিত হওয়ার কথা। যার মাধ্যমে নতুন শিশু জন্ম হওয়ার কথা । সেই প্রক্রিয়াটা একজন স্ত্রীর জন্য এত কষ্টের কেন হবে? কেন একজন স্ত্রীর মনে হবে তাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে ? আর স্বামীই বা কেন বুঝবে না কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা ধর্ষণ ? এই মারাত্মক অবস্থাটা কিন্তু আমি দেখেছি আমার পরিচিত গন্ডিতে ! ঘটনার কেউ মূর্খ , অশিক্ষিত নয়। বরং উচ্চ শিক্ষিত । এরা কেউ পাশবিক নয় বরং সঙ্গী- সঙ্গীনীর প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল। এরা কেউ ধর্মহীন নয় - এদের কেউ কেউ প্রচন্ড ধার্মিক  । 
.
বাংলাদেশের সমাজের যেই অংশটি কম শিক্ষিত  , তাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। 
.
আমাদের বুঝতে হবে , যৌণ শিক্ষা শুধুমাত্র বায়োলজির বিষয় নয়। এর সাথে জড়িত আছে স্বাস্থ্য। এর সাথে জড়িত আছে যৌণতার সামাজিক, ধর্মীয়/নৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অবশ্যই অর্থনৈতিক ইস্যু । যৌণতার সাথে জড়িত আছে ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ও আবেগ এর বিকাশ। এখনো বাংলাদেশে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার ভয়াবহ। আমরা এখনো এই সব স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করতে পারছি না বলে অন্য কোন দিকে উন্নতির কথা ভাবতেই পারছি না । প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছি দুনিয়া থেকে। আমরা কি একটা স্বাস্থ্য, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক,পারিবারিক (বাচ্চা হওয়া থেকে শুরু করে একটা বাচ্চাকে সঠিক ভাবে লালন পালন করতে কি কি করা লাগে, কেমন খরচ হয়) ও নৈতিক শিক্ষাসহ একটা পরিপূর্ণ ও ব্যালেন্সড যৌণ শিক্ষার সিলেবাস তৈরী করতে পারি না?
.
সরকার কি যৌণ শিক্ষার এই দিকে কিছু সিস্টেমিক ও সাহসী পদক্ষেপ নেবেন?
.
Md. Faijul Huq

বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

মরিয়ম ফুল বেবী কনসেভ ও ডেলীভারীতে কি ভাবে সেবন করবেন

মরিয়ম ফুলের কাহিনী- ফুলের নাম-“মরিয়ম ফুল”, মরু অঞ্চলের ক্ষণজন্মা উদ্ভিদ মরিয়ম ফুল, বৈজ্ঞানিক নাম- Anastatica hierochuntica । এই ফুলকে হযরত ঈসা (আঃ) এর মায়ের নাম নামানুসারে “মরিয়ম ফুল বা মরিয়ম বুটি”, নবী সাঃ এর কন্যা ফাতিমার নামানুসারে “ফাতিমার হাত বা হ্যান্ড অব ফাতিমা” এবং এর বৈশিষ্ট্য অনুসারে “পুনরুত্থান উদ্ভিদ” বলা হয়।

কারণ এই ফুল দেখতে খটখটে শুকনো ও মরা মনে হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই তরতর করে পাপড়ি মেলতে শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই ফুটন্ত ফুলের মতো তাজা আর পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত হয়ে যায়। এ এক আশ্চর্য ফুল ।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এর ব্যবহার হয়ে আসছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। অত্যন্ত দূর্লভ এই ফুলের উপকারিতা বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের প্রসবকালীন সময়ে এই ফুলের ব্যবহার এক রকম আবশ্যক। ঐতিহ্যবাহী ধাত্রীরা শত শত বছর ধরে প্রসবকালীন সময়ে মায়ের বেদনা লাঘব করার জন্য এই ফুলের ব্যবহার করছেন।নরমাল ডেলীভারীতে খুব কার্যকর। 

এই কুদরতি ফুলটি আল্লাহর রহমতে বেবি কন্সিভ করতে সহায়তা করে এবং লেবার পেইন কমাতে সাহায্য করে।

শুধু আমাদের দেশেই নয়, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই এর ব্যবহার হয়ে থাকে। ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মনীষী এর ব্যবহারের উপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন এবং বাতলে দিয়েছেন এর ব্যবহারের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিসমূহ। খ্রীষ্ট ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেলেও এর কথা বর্ণনা করা হয়েছে বলে অনেকে বর্ননা করেছেন।তবে সত্যতা যাচায় সম্ভব হয়নি।


। এটি কোরআন হাদিসের কোন কথা নয় বরং  ভেষজ চিকিৎসা হিসাবে  বিবেচিত। 


সেবনবিধিঃ  
ডেলীভারী নরমাল ডেলিভারিতে মরিয়ম ফুল 

যারা ডেলীভারীর জন্য  ব্যবহার করবেন একটি ফুল কে পরিস্কার  গরম পানিতে ডুবন্ত করে ভিজিয়ে রাখবেন কিছু সময় পর এটি অটোমেটিক  ফুটে যাবে  এর পর ঐ পানি টুকু এক কাপ করে কিছু সময় পর পর  সেবন করতে হবে। 
আর 
বেবী কনসেভ করতে মরিয়ম ফুল 

যারা কনসেভ করানোর জন্য  ব্যবহার করবেন তারা রাতে হালকা নরমাল পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন  ফুলটি ফুটে গেলে উঠিয়ে নিন এবং  ঐ পানি থেকে যত টুকু পারনে ভোর বেলা ফজরের নামাজের আগে শেষ  রাতে  সেবন করুন  এবং  রতি কার্য সম্পাদন করুন। এ ভাবে নিয়মিত  কয়েক দিন করতে থাকুন। ফুলটি পানি থেকে উঠানোর পর সুষ্ক স্হানে রেখে দিন  দেখবেন এটি আবার আগের মত হয়ে গেছে,  আবার ভিজিয়ে  রাখুন ঐ নিয়মে সেবন করতে  থাকুন। 

এখন আপাদত বড ছোট ও মাঝারী সাইজের মরিয়ম ফুল পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। 

সৌজন্যে
 ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস 
০১৮২৯৩১৮১১৪ 
ইমু ওয়াতসাফ এ। 


রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১

ভোটের ৪ টি মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রয়েছে

ভোটের ৪ টি অর্থ  বা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রয়েছে 
সারাদেশে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে৷ এ নির্বাচনকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও বলা হয়৷ ইউনিয়ন পরিষদ ব্যবস্থায় নির্বাচন একটি অপরিহার্য বিষয়৷ নির্বাচনে রাষ্ট্রের নাগরিকগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে বাছাই করার সুযোগ পায়৷ বর্তমানে প্রার্থীর দৃষ্টিতে ভোট হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার মোক্ষম হাতিয়ার৷
প্রার্থী মনে করে ভোট হচ্ছে ভিআইপি মর্যাদা অর্জন করা, টেন্ডারবাজি করা, আধিপত্য অর্জন করা এবং জনগণের উপর শোষণের ক্ষমতা অর্জন করার একটি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম৷ আর অনেক ভোটার মনে করে ভোট মানে প্রার্থী থেকে কিছু টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া৷ তবে সাধারণত এলাকার উন্নয়ন যাকে দিয়ে বেশি হবে বলে মনে করে ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে থাকে৷ অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে এই ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম৷ ইসলামে কাউকে ভোট দেওয়ার অর্থ সুদূর প্রসারী৷
ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিটি ভোট ৪টি অর্থ
প্রদান করে৷ 
১. সাক্ষ্য প্রদান করা ২. সুপারিশ করা ৩. প্রতিনিধি নিয়োগ করা ও ৪. আমানত তার প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়া৷ 
শরীয়তে উপরোক্ত বিষয়গুলোর গুরুত্ব খুবই বেশি৷ ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে প্রার্থীর ভবিষ্যতের সকল কাজ কর্মের জিম্মাদারী নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া৷ প্রার্থী ভালো কাজ করলে ভোটার যেভাবে তার থেকে সওয়াব পাবে, তেমনি প্রার্থী খারাপ কাজ করলেও তার দায়ভার ভোটারের কাঁধে বর্তাবে৷ উল্লেখিত ৪টি বিষয় নিয়ে নিম্নে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হলো৷ 

১, সাক্ষ্য দেয়া ঃ

আমরা জানি ‘মিথ্যা সাক্ষ্য’ হচ্ছে একটি ভয়াবহ কবীরা গুনাহের নাম৷ ভোটার যদি প্রার্থীর আমানতের খেয়ানত, বে-আমল, বাজে স্বভাব, দুর্নীতি ও অযোগ্যতার ব্যাপারে অবগত হওয়ার পরেও তাকে ভোট প্রদান করে থাকে, তাহলে ভোটার প্রার্থীর ব্যাপারে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করল, যা একটি স্পষ্টত কবিরা গুনাহ৷ 
হযরত আবূ বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে সতর্ক করব না?’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল!’ 

তিনি বললেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে শরীক স্থাপন করা ও পিতা-মাতার নাফরমানী করা৷ (এ কথা বলার সময় তিনি হেলান দিয়ে বসে ছিলেন৷ এরপর সোজা হয়ে) বসে বললেন) সাবধান! মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া৷ সাবধান! মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া৷ অতঃপর ক্রমাগত বলেই চললেন। এমনকি আমি মনে মনে বললাম, তিনি মনে হয় আর থামবেন না’৷- (বুখারী শরীফ: হাদীস নং ৫৯৭৬) 

২,  সুপারিশ করাঃ 
কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি কেউ কোনো ভালো (কাজের) সুপারিশ করে তাহলে তাতে তার অংশ থাকবে, আর কেউ কোনো মন্দ (কাজের) সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে; আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে নযর রাখেন৷-(সূরা নিসা: আয়াত নং ৮৫) 

আয়াতের মর্ম খুবই স্পষ্ট- প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যদি ভালো কাজ করে তাহলে ভোটার তা থেকে সওয়াব পাবে, আর যদি প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে খারাপ কাজ করে তাহলেও ভোটার সে খারাপ কাজের গুনাহের যিম্মাদার হবে৷ সুতরাং ভোট প্রদানের সময় ভোটারের বিবেচনা করা উচিত- প্রার্থীর কাজ ভোটারের আমলনামার নেকির পাল্লা ভারি করবে, নাকি গোনাহের পাল্লা৷ 

৩,  প্রতিনিধি নিয়োগ করাঃ 
বর্তমানে ভোটার জনপ্রতিনিধি নিয়োগ করে তার অর্থ  সম্পদ ও পেশী শক্তির বিবেচনায়, অথচ জনপ্রতিনিধি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল তার সততা  ইনসাফ ও জ্ঞানের পরিধির প্রতি লক্ষ্য রেখে।
একটি জাতির জন্য আল্লাহ তা‘আলা জনপ্রতিনিধি নিয়োগ করেছিলেন এভাবে-  
‘আর তাদের নবী তাদেরকে বলেছিল, আল্লাহ্ অবশ্যই তালুতকে তোমাদের রাজা করেছেন। তারা বললো, আমাদের উপর তার রাজত্ব কীরূপে হবে; যখন আমরা তার অপেক্ষা রাজত্বের অধিক হক্দার এবং তাকে প্রচুর ঐশ্বর্য্য দেয়া হয়নি। নবী বললেন, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রাজত্ব দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাবান।’ (সূরা বাকারা: আয়াত নং ২৪৭) 

৪, আমানত প্রাপকের কাছে পৌঁছে
 দেওয়াঃ 
ভোট একটি আমানত৷ আমানত তার প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়া ঈমানদারদের জন্য ওয়াজিব৷ আল্লাহ তা‘আলা আমানতকে তার যথাযথ প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা আমানতকে তার যথাযথ প্রাপকের কাছে পৌঁছে দাও।’ – (সূরা নিসা: আয়াত নং ৫৮) 
আমানত রক্ষার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমানত রক্ষা করে না, তার কোনো ঈমান নেই। যে ব্যক্তি কথা রক্ষা করে না তার কোনো দ্বীন নেই।’ – (সুনানুল বায়হাকি কুবরা: ১২৪৭০) 

আমরা অনেকে মনে করি ভোট প্রদান একটি পার্থিব বিষয় মাত্র, বিষয়টি মোটেও এমন নয়;  বরং এ ভোটের মাধ্যমে  ইসলামের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিধান সংযুক্ত রয়েছে এই ভোটের সাথে৷ দল বা প্রতিকের প্রতি আবেগী না হয়ে প্রার্থীকে যাচাই করা উচিত শরীয়তের মানদণ্ডে তার সততা নিষ্ঠা ও যোগ্যতা কত টুকু আছে।
অথচ তা বিবেচনায় না নিয়ে  সামান্য এক কাপ চা বা  ৫ শত বা হাজার টাকার বিনিময়ে  এ মহান কাজটিকে বিতর্কিত  করে আমার ঈমান বিক্রি করছিনা তো!
 আল্লাহ তা‘আলা যেন এই গুরু দায়িত্বকে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফীক দান করেন আমিন। 
মূল 
লেখক: মুফতি নাজমুল হাসান 
নবীন আলেম, লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট৷ 

মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১

৬৪ জন আলেম মুক্তিযোদ্ধা

#চাপা_পড়ে_যাওয়া_ইতিহাস 
……………………………………
#মহান_মুক্তিযুদ্ধে_অংশ_গ্রহনকারী_সসস্ত্র 
৬৬ জন আলেম বীর মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা
======================================
#জালেমের_বিরুদ্ধে_রুখে_দাঁড়ানো ,মজলুমের পক্ষে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ মূখর হয়ে উঠা সকল ধর্ম ও শ্রেষ্ঠ মতাদর্শ গুলোর প্রাণ কথা। আর ইসলাম তো এ ব্যাপারে শত ভাগ আপোষহীন। তাই ইসলামের সত্য,সুন্দর এবং মানবতা ও শান্তির ধারক বাহক উলামায়ে-কেরাম সব সময় জালেমের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে আপোষহীন থেকে মানব সমাজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ বেনিয়াদের জুলুমে যখন আক্রান্ত উপমহাদেশ,তখন উলামায়ে কেরামের কণ্ঠ চিরেই সর্ব প্রথম ইংরেজ খেদাও আন্দোলনের সংগ্রামী ডাক এসেছিল। ভারত উপমহাদেশ এখন ‘দারুল হারব’ শত্রু কবলিত, এ এক ফতোয়া টলিয়ে দিয়েছিল ইংরেজদের মসনদ। এ সবই ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাম্রাজ্যবাদের দোসর ইসলাম বিদ্ধেষী কুচক্রি মহল যা ছাই চাপা দিয়েও চেপে রাখতে পারেনি। 

#পাকিস্তানিদের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তান তথা আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল নির্মম ভাবে। তখন পাক জালিমদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই দেশের লড়াকু আমজনতার সঙ্গে তৎকালীন আলেম সমাজও। প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন দুর্বার গতিতে। এটা ইতিহাসের অবিসংবাদিত সত্য ও অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। স্বাধীনতার পর ৪৪ বছর পর্যন্ত এই সত্যকে পদদলিত করা হয়েছে। ইতিহাসের পবিত্র দেহকে করা হয়েছে ক্ষতবিক্ষত। আলেম সমাজ সহ সাধারণ জনগণ যারা ধর্মের কারণে দাড়ি,টুপি ব্যবহার করে তাদের গায়েও ঢালাও ভাবে সেঁটে দেয়া হয়েছে রাজাকার,আল-বদর ও আল-সামসের অভিশপ্ত ফলক। তারা প্রজন্ম ৭১-এর পরে জন্ম হলেও!

#জনপ্রিয় লেখক সাংবাদিক শাকের হুসাইন শিবলী ইতিহাসের অনির্বায্য সত্যকে স্ব-মহিমায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উন্মোচিত করেছেন চেপে রাখা এক অধ্যায়ের। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি শহর,গ্রাম ঘুরে বেড়িয়ে কষ্টিপাথরে যাচাই করে রচনা করেছেন একটি প্রামান্য গ্রন্থ ‘আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে’ উক্ত গ্রন্থ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অংশ গ্রহণ কারী কয়েক জন আলেম মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশ করা হল। যাতে আলেম সমাজ সম্পর্কে সৃষ্ট ভূল ধারনার অবসান ঘটে।

১/ মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসেনানী মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী (টাঙ্গাইল) 
২/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (নোয়াখালী) 
৩/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শাহ আহমদুল্লাহ আশ্রাফ (ঢাকা) 
৪/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ 
৫/ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বু্দ্ধীজীবি মাওলানা অলিউর রহমান 
৬/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (সিলেট) 
৭/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (সিলেট) 
৮/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুর রহমান (কুমিল্লা) 
৯/ হাতিয়া দ্বীপের সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুস্তাফির রহমান (হাতিয়া দ্বীপ) 
১০/ মুক্তিযুদ্ধে অকুতোভয় সৈনিক মুহাদ্দিস আব্দুস সোবহান 
১১/ মুক্তিযোদ্ধা মুফতি আব্দুস সালাম (চট্টগ্রাম) 
১২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবু ইসহাক 
১৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবুল কালাম 
১৪/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আব্দুল মালেক (পটিয়া) 
১৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা দলিলুর রহমান (চন্দ্র কোনা) 
১৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মতিউর--রাসুল (রানীর হাট) 
১৭/ সাহসী বীর গেরিলা কমান্ডার মাওলানা মৌলভী সৈয়দ (চট্রলা) 
১৮/ মুক্তিযোদ্ধা আল্লামা দানেশ (পটিয়া) 
১৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা নোমান আহমদ 
২০/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী মোঃ মকসুদ আহমদ 
২১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল মতিন মজুমদার (কুমিল্লা) 
২২/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী নুরুল আফসার (ফেনী) 
২৩/ মুক্তিযোদ্ধা নানু ক্বারী (কুমিল্লা) 
২৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কাজী আব্দুল মতিন (চাঁদপুর) 
২৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মতিউর রহমান (নারায়ণগঞ্জ) 
২৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মির্জা মোঃ নূরুল হক (নারায়ণগঞ্জ) 
২৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আলিফুর রহমান (রংপুর) 
২৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ক্বারী আব্দুস সালাম সরকার (রংপুর) 
২৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদ আলী 
৩০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মাহতাফ উদ্দিন (কুড়িগ্রাম) 
৩১/ সেক্টর কমান্ডার মাওলানা সামসুল হুদা (কুড়িগ্রাম) 
৩২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আমজাদ হোসেন (কুড়িগ্রাম) 
৩৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কামরুজ্জামান (নরসিংদী) 
৩৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা বশির উদ্দিন (টাঙ্গাইল) 
৩৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা বজলুর রহমান 
৩৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ময়মনসিংহ) 
৩৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কাজী মুতাসিম বিল্লাহ 
৩৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা সাইফুল মালেক সাহেব (জামালপুর) 
৩৯/ মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী খাঁন (চরমোনাই মাদ্রাসা) 
৪০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইউসুফ 
৪১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইসহাক রহঃ (চরমোনাই) 
৪২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মৌলভী মির্জা আব্দুল হামিদ (বরিশাল) 
৪৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুখলিসুর রহমান (চান্দিনা) 
৪৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা লোকমান আহমেদ আমিনী 
৪৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোঃ ফিরোজ আহমদ (নোয়াখালী) 
৪৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা উসমান গণি (নোয়াখালী) 
৪৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল আউয়াল (চাঁদপুর) 
৪৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আতাউর রহমান খাঁন (কিশোরগঞ্জ) 
৪৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আতাহার আলী রহঃ (কিশোরগঞ্জ) 
৫০/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আব্দুস সোবহান (চট্টগ্রাম) 
৫১/ মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবু ইউসুফ (চট্টগ্রাম) 
৫২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ফজলুল হক (নূর নগরী) 
৫৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা খায়রুল ইসলাম (যশোর) 
৫৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মহিউদ্দিন (ময়মনসিংহ) 
৫৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ক্বারী আব্দুল খালেক সাহেব 
৫৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা সামসুদ্দিন কাশেমী (ঢাকা) 
৫৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা জহিরুল হক (বি-বাড়ীয়া) 
৫৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইসহাক ওবায়দী (নোয়াখালী) 
৫৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুফতি নূরুল্লাহ রহঃ (বি-বাড়ীয়া) 
৬২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মিরাজ রহমান (যশোর) 
৬৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আলী (শরীয়তপুর) 
৬৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা এমদাদুল হক আড়াই হাজারী (চট্টগ্রাম) 
৬৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ (কিশোরগঞ্জ) 
৬৬/ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী (মোমেন শাহী)। 

#আমাদের আলেম সমাজ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে দেশকে শত্রুমূক্ত করেছিলেন এবং এটা যে সূর্যালোকের ন্যায় স্পষ্ট তার কিঞ্চিত নমুনা পেশ করা হল মাত্র। বিস্তারিত জানতে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস গুলো অধ্যায়ন করুন।

তথ্য সূত্রঃ-স্মৃতির পাতায় হাফেজ্জী হুজুর 
(সংগৃহীত)

ইমাম আশআরী ও মাতুরীদি পর্ব ০১

ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী ও ইমাম আবুল হাসান আশআরী আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মহান দুই মুখপাত্র-

শায়খ মুহাম্মাদ আবদুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ-

ইমাম মাতুরীদী রহি.-

ইমাম মাতুরীদীর নাম মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন মাহমুদ । উপনাম আবু মানসুর । সমরকন্দের নিকটবর্তী একটি মহল্লার নাম মাতুরীদ । তিনি সেখানকার অধিবাসী ছিলেন । সেদিকে সম্পৃক্ত করেই তাঁকে মাতুরীদী বলা হয় । বিভিন্ন শক্তিশালী আলামত থেকে বোঝা যায় , ২৪০ হিজরীর কাছাকাছি সময়ে তাঁর জন্ম হয়ে থাকবে। ওফাত হয়েছে ৩৩৩ হিজরীতে। তাঁর উসতাযগণের মধ্যে ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল রাহ . (২৪৮ হি .) , ইমাম আবু নসর ‘ ইয়াযী , ইমাম নাসীর ইবনে ইয়াহইয়া বলখী (২৬৮ হি .) এবং ইমাম আবু বকর আহমদ ইবনে ইসহাক জুযজানী রাহ . - এর কথা বিশেষভাবে আলোচিত হয় । আবু বকর জুযজানী হলেন ইমাম আবু সুলাইমান জুযজানীর শাগরিদ , যিনি ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান শায়বানী (১৮৯ হি .) - এর শাগরিদ । আর ইমাম মুহাম্মাদ হলেন ইমাম আবু হানীফা , ইমাম মালেক , ইমাম সুফিয়ান সাওরীসহ হাদীস,ফিকহ ও আকাইদের অনেক ইমামের শাগরিদ। এমনিভাবে মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল রাযী সরাসরি ইমাম মুহাম্মাদের শাগরিদ । অপর দিকে নাসীর ইবনে ইয়াহইয়া ইমাম আবু সুলায়মান জুযজানীরও শাগরিদ আবার ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সামাআরও শাগরিদ । মুহাম্মাদ ইবনে সামাআ ইমাম আবু ইউসুফের শাগরিদ আর তিনি ইমাম আবু হানীফার শাগরিদ । মাতুরীদী রাহ . - এর বিশিষ্ট উসতায ইমাম আবু নসর ‘ ইয়াযী , যিনি ফকীহ হওয়ার পাশাপাশি অনেক বড় মুজাহিদ ছিলেন । এমনকি জীবনের শেষে তিনি আল্লাহ্র রাস্তায় শাহাদাতের মহাসৌভাগ্যও লাভ করেন । তিনিও ফিকহশাস্ত্রে ইমাম আবু বকর জুযজানীর শাগরিদ ছিলেন ।

এসব বলার উদ্দেশ্য হলো, ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী রাহ.-এর ইলমী সনদ খায়রুল কুরূনের ইমামদের সাথে যুক্ত। তিনি উসুলুদ্দীন (ইসলামী আকাইদ), হাদিস, তাফসীর, ফিকাহ ও উসুলের ইলম আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইমামগণের নিকট হাসিল করেছেন। আর আমৃত্যু তিনি এই নির্ভরযোগ্য ইলমই তাঁর কিতাবসমূহে প্রচার করে গিয়েছেন । তাঁর মূল ব্যস্ততা ছিল বিভিন্ন ভ্রান্ত ফেরকার খণ্ডন করা এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের পথ ও আদর্শকে দলীলের মাধ্যমে শক্তিশালী করা । সেজন্যই মুসলিম উম্মাহ তাঁকে 'ইমামুল হুদা' উপাধিতে স্মরণ করে । তাঁর কিতাবসমূহের মধ্যে " تأويلات أهل السنة ও " كتاب التوحيد" মুদ্রিত হয়েছে ।

ইমাম আশআরী রহি.

ইমাম আশআরী রাহ.এর উপনাম আবুল হাসান । নাম আলী ইবনে ইসমাঈল। নবী সা.এর বিশিষ্ট সাহাবী আবু মূসা আশআরী রা . - এর বংশধর । জন্ম ২৬০ হি. আর ওফাত ৩২৪ হি .। বসরার অধিবাসী ।
এটা একটা আশ্চর্য বিষয় যে , আবুল হাসান আশআরী রাহ . প্রথমে মুতাযিলা ফেরকার বড় ব্যক্তিত্ব আবু আলী জুব্বায়ীর শাগরিদ ও তার আকীদার অনুসারী ছিলেন । আল্লাহ তা'য়ালার অনুগ্রহে পরবর্তীতে তাঁর কাছে মু'তাযিলাদের গোমরাহী স্পষ্ট হয়ে যায়। ফলে তিনি প্রকাশ্যে তওবা করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদায় ফিরে আসেন এবং মু'তাযিলাদের ভ্রান্ত আকীদাসমূহের খণ্ডনে কলম ধরেন। তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকাইদের সমর্থনে এবং বিভিন্ন বাতিল ফেরকার সংশয়সমূহের অপনোদনে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কিতাব রচনা করেন । তার কিতাবসমূহের মধ্যে ‘ আলইবানা আন উসূলিদ দিয়ানা ' ও ' আল লুমা '

'মাকালাতুল ইসলামিয়্যীন ওয়াখতিলাফুল মুসল্লীন'. (مقالات الإسلاميين واختلاف المصلين) 'ইসতিহসানুল খাওযি ফী ইলমিল কালাম' (استحسان الخوض في علم الكلام) ইত্যাদি ছাপা হয়েছে।

আবুল হাসান আশআরী রাহ. ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর ইলম হাসিল করেছেন তার সমসাময়িক শাফেয়ী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফকীহ আবু ইসহাক মারওয়াযী থেকে।তিনি আবুল আব্বাস ইবনে সুরাইজের শাগরিদ।ইবনে সুরাইজ হলেন ইমাম আবুল কাশেম আনমাতির শাগরিদ আর তিনি ইমাম মুযানির।আর মুযানী ছিলেন ইমাম শাফেয়ীর বিশিষ্ট শাগরিদ।

আবুল হাসান আশআরীর অন্যান্য উস্তাদগণের মধ্যে যাকারিয়া সাজি(৩০৭ হি.) আবু খলিফা জুমাহী(৩০৫ হি.) আব্দুর রহমান ইবনে খালাফ বসরী (২৭৯ হি.) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এদের মধ্যে যাকারিয়া সাজী বহুত বড় হাফিজুল হাদিস এবং মুফতী ছিলেন। তিনি ইলমে ফিকহ হাসিল করেছেন ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর দুই শাগরিদ রবী ও মুযানী রাহ. থেকে।

শামসুদ্দীন যাহাবী রাহ. লিখেছেন-

كان من أئمة الحديث ، أخذ عنه أبو الحسن الأشعري مقالة السلف في الصفات ، واعتمد عليها أبو الحسن في عدة تأليف

যাকারিয়া সাজী ইলমে হাদীসের ইমামগনের মধ্যে অন্যতম।আবুল হাসাল আশআরী আল্লাহ্ তায়া’লার সিফাত সংক্রান্ত বিষয়ে সালাফের নীতি তাঁর থেকেই গ্রহণ করেছেন এবং তিনি তাঁর বিভিন্ন কিতাবে এই নীতিরই অনুসরণ করেছেন। -সিয়ারু আ'লামিন নুবালা খ পৃষ্ঠা ১৪
১৯৮

ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী বয়সে ইমাম আবুল হাসান আশআরীর বড় ছিলেন । তাঁর জন্ম ইমাম আশআরীর আগে হয়েছিল , তবে ওফাত হয়েছিল পরে। ওদিকে আশআরী রাহ . এর মত তাঁর জীবনে দুই ভাগ ছিল না ; তিনি শুরু থেকে ওফাত অবধি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের নীতি ও আদর্শের উপর অবিচল ছিলেন।

আল-আকীদাতুত তহাবিয়্যা

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের এই ইমামদ্বয় ছিলেন ইমাম আবু জাফর তহাবী রাহ . - এর সমসাময়িক । ইমাম আবু জাফর তহাবী হিজরী তৃতীয় শতকের শেষার্ধে ও চতুর্থ শতকের প্রথম এক - চতুর্থাংশে মিসরে ইলমে হাদীস ও ইলমে ফিকহের বড় ইমামগণের অন্যতম ছিলেন । আকীদার দিক থেকে তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ইমাম ছিলেন আর মাযহাবের দিক থেকে হানাফী মাযহাবের ফকীহ ছিলেন । তাঁর জন্ম ২৩৯ হিজরীতে আর ওফাত ৩২১ হিজরীতে । হাদীস শাস্ত্রে তাঁর রচিত ' শরহু মাআনিল আসার ’ ও ‘ শরহু মুশকিলিল আসার ' হল তাজদীদী কিতাব । ইলমে ফিকহ ও ইলমে তাফসীরেও তাঁর লিখিত কিতাবগুলো সর্বজন সমাদৃত । তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকাইদ বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত কিতাব রচনা করেন , যাঁ ‘ আলআকীদাতুত তহাবিয়্যা ' নামে পরিচিত । সমগ্র পৃথিবীতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের নীতি ও আদর্শের মুখপত্র হিসেবে এই কিতাবটি গ্রহণ করা হয়েছে । এই পুস্তিকার শুরুতে ইমাম তহাবী রাহ . লিখেছেন

هذا ذكر بيان عقيدة أهل السنة والجماعة على مذهب فقهاء الملة ، أبي حنيفة النعمان بن ثابت الكوفي ، وأبي يوسف يعقوب بن إبراهيم الأنصاري ، وأبي عبد الله محمد بن الحسن الشيباني ، رضوان الله عليهم أجمعين ، وما يعتقدون من أصول الدين .

ইমাম তহাবী রাহ . এখানে বলেন , তিনি এই পুস্তিকায় আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা বর্ণনা করবেন । আর এসব আকীদা তিনি হানাফী মাযহাবের প্রথম সারির তিন ইমাম ( ইমাম আবু হানীফা রাহ . ৮০ হি . - ১৫০ হি . , ইমাম আবু ইউসুফ রাহ.১১৩ হি.- ১৮২ হি . ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান ১৩২ হি.১৮৯ হি.) এর রেওয়ায়েত ও আকিদা মোতাবেক বর্ণানা করবেন।

যদ্দুর জানি , ইতিহাসে এমন কোনো বর্ণনা সংরক্ষিত নেই , যার দ্বারা বোঝা যায় , এই ইমামত্রয়ের অর্থাৎ ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী , ইমাম আবুল হাসান আশআরী ও ইমাম আবু জাফর তহাবী পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটেছে । তবে যেহেতু এই তিনজনই ইলমে ওহী ও উলূমে শরীয়তে পারদর্শী ছিলেন এবং দ্বীন ও ইলমে দ্বীন নিয়মমাফিক সালাফে সালেহীনের স্থলবর্তী ইমামগণ থেকে হাসিল করেছেন সেজন্য তাঁরা সকলে একই গন্তব্যে পৌঁছেছেন এবং ইসলামী আকীদার প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে তাঁরা যে খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন তার ফলাফল একই হয়েছে । তিনজন একই সময়ে ইসলামী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মাসলাক ও নীতি - আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করেছেন । পার্থক্য এটুকু যে , ইমাম তহাবী সংক্ষেপে শুধু মৌলিক আকীদাগুলো উপস্থাপন করেছেন । আর ইমাম মাতুরীদী ও ইমাম আশআরী সেই আকীদাগুলো ব্যাখ্যা ও দলীলসহ সবিস্তারে আলোচনা করেছেন । পাশাপাশি সেসব আকীদার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভ্রান্ত ফেরকা বিকৃতির যে অপচেষ্টা চালিয়েছে তার খণ্ডনও করেছেন । নতুবা মূল আকীদার বিষয়ে এই তিন ইমামের আলোচনায় মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই । এজন্যই আমরা দেখি , মাতুরীদী মাসলাকের অনুসারী অনেক আলেম ‘ আলআকীদাতুত তহাবিয়্যা ' - এর ব্যাখ্যা লিখেছেন । তবে তাদের কেউই ইমাম তহাবীর সঙ্গে মতবিরোধ করেননি। এমনিভাবে আশআরী আলেমগণও ‘ আলআকীদাতুত তহাবিয়্যার সঙ্গে একমত । এই পুস্তিকা তাদের নিকটও গ্রহণযোগ্য ।

আহলুস সুন্নাহ আশআরী বা মাতুরীদী কেন ?
এখানে এই কথা স্পষ্ট করে দেয়া জরুরি যে , আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা ما أنا عليه وأصحابي
( যে পথে আমি ও আমার সাহাবীরা আছি ) - এর বাস্তবরূপ ৷ চতুর্থ শতাব্দী থেকে এই আকীদার অনুসারী অধিকাংশ মানুষকে আশআরী বা মাতুরীদী বলা হয় । এর কারণ হল , আকীদায়ে আহলে সুন্নতের সংরক্ষণ ও এ বিষয়ে উদ্ভূত বিভিন্ন বাতিল ফেরকার খণ্ডনে এই দুই ইমাম অধিক পরিচিতি লাভ করেন । মুসলিম উম্মাহ তাঁদের এই খেদমত গ্রহণ করে । সেজন্য তাঁদের মাসলাকের অনুসারীগণ ‘ মাতুরীদী ’ বা ‘আশআরী ’ নিসবতে পরিচিতি লাভ করেন।

এই বাস্তবতাটি একাধিক আলেম স্পষ্টভাবে আলোচনা করেছেন । আমরা এখানে কয়েকজন মনীষীর বক্তব্য উদ্ধৃত করব।
আল্লামা মুরতাযা যাবীদী ( ১২০৫ হি . ) রাহ . লেখেন

وليعلم أن كلا من الإمامين أبي الحسن وابي منصور رضي الله عنهما وجزاهما عن الإسلام خيرا، لم يبدعا من عندهما رأيا ، ولم يشتقا مذهبا ، إنما هما مفزران لمذاهب السلف ، مناضلان عما كانت عليه اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم ، فأحدهما قام بنصرة نصوص مذهب الشافعي وما دلت عليه ، والثاني قام بنصرة نصوص مذهب أبي حنيفة وما دلت عليه ، وناظر كل منهما ذوي البدع والضلالات ، حتى انقطعوا وولوا منهزمين . وهذا في الحقيقة هو أصل الجهاد الحقيقي ( من أنواع الجهاد باللسان والقلم ) ، الذي تقدمت الإشارة إليه ، فالانتساب إليهما إنما هو باعتبار أن كلا منهما عقد على طريق السلف نطاقا ، وتمسك وأقام الحجج والبراهين عليه ، فصار المقتدي به في تلك المسائل والدلائل يسمى أشعريا وماتريديا
. وذكر العز بن عبد السلام أن عقيدة الأشعري أجمع عليها الشافعية والمالكية والحنفية وفضلاء الحنابلة ، ووافقه على ذلك من أهل عصره شيخ المالكية في زمانه أبو عمرو ابن الحاجب ، وشيخ الحنفية جمال الدين الحصيري ، وأقره على ذلك التقي السبكي فيما نقله عنه ولده التاج "

মুরতাযা যাবীদী রাহ. - এর এই বক্তব্য তাঁর কিতাব ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন ' - এর দ্বিতীয় খণ্ডের শুরুতে ( ২ । ৬-৭ ) রয়েছে ।
ইতহাফ হল ইমাম গাযালী রাহ . - এর কিতাব “ ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন' এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ । 'ইহইয়া ' এর দ্বিতীয় অধ্যায় হল ' قواعد العقائد ' অর্থাৎ আকীদা সংক্রান্ত নীতিমালা । এর ব্যাখ্যায় শুরুতে আল্লামা যাবীদী রাহ . ভূমিকা হিসেবে যা লিখেছেন তাতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআ ' বলতে কাদের বুঝায় সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন । উচ্চতর স্তরে অধ্যয়নরত তালিবে ইলমগণ এটি মুতালাআ করতে পারেন । সেখানে আল্লামা যাবীদী রাহ . বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গ্রন্থের উদ্ধৃতিতে এ বিষয়টিও স্পষ্ট করেছেন যে , ইমাম মাতুরীদী রাহ . ও ইমাম আশআরী রাহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা সংক্রান্ত ইলম কোন মাধ্যমে হাসিল করেছেন ?

সেখানে যাবীদী রাহ . সংক্ষেপে এই গুরুত্বপূর্ণ কথাটির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যে , ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী রাহ . এবং ইমাম আবুল হাসান আশআরী রাহ . -আল্লাহ পানাহ- কোনো নতুন আকীদা বা নতুন ফেরকা আবিষ্কার করেননি । " আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা তো সাহাবায়ে কেরাম , তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের যুগ থেকে চলে আসছে । ইমাম মাতুরীদী ও ইমাম আশআরী সেসব আকীদারই সংকলন ও বিশ্লেষণ করেছেন এবং সেগুলোর প্রতি বাতিলপন্থীদের উত্থাপিত আপত্তিসমূহের জবাব দিয়েছেন । সেজন্য তাঁদের পরবর্তীদেরকে তাঁদের দিকে সম্বন্ধ করা হয় ।

আবুল হাসান আশআরী রাহ . ছিলেন ইরাকের বাসিন্দা । তাই চতুর্থ শতাব্দী থেকে ইরাক , শাম ও খোরাসানে আহলুস সুন্নাহ বলতে আশাইরা তথা আশআরী রাহ . - এর অনুসারীদের বোঝানো হয় । আর আবু মানসুর মাতুরীদী রাহ . ছিলেন হানাফী এবং সমরকন্দের অধিবাসী । সেজন্য ' মা ওরাআন নাহর ' - এ আহলুস সুন্নাহ বলতে মাতুরীদীয়া তথা মাতুরীদী রাহ . - এর অনুসারীদের বোঝানো হয় । ( দেখুন , শরহুল আকায়েদের উপর মুস্তফা ইবনে মুহাম্মাদ কাসতালী ( ৯০১ হি . ) - এর হাশিয়া এবং শামসুদ্দীন আহমাদ ইবনে মূসা খয়ালী ( ৮৭০ হি . ) - এর হাশিয়া । আরো দেখুন ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন , খ . ২ পৃ . ৬ )

স্মর্তব্য , ইরাক , শাম ও খোরাসানের হানাফী আলেমগণের অধিকাংশ মাতুরীদীই ছিলেন । তবে যেহেতু আশআরী ও মাতুরীদী মাসলাকের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই সেহেতু হানাফীদেরকেও সাধারণত আশআরী বলা হয়। বিশেষত যেসব অঞ্চলে আবুল হাসান আশআরী রাহ.-এর ইলম ও খেদমত অধিক প্রচারিত হয়েছে।

কারণ সেখানে তিনিই ছিলেন "সুন্নাহ'-এর নিদর্শন।
তাই পুরো আহলুল সুন্নাহ ওয়াল জামাআতকে তাঁর দিকেই নিসবত করা হত।
যেমন হিন্দুস্তানে বেরেলবীদের মোকাবেলায় সকল আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অনুসারীকে দেওবন্ধী বলা হয়, অথচ তাদের অনেকেই দেওবন্দের সাথে যুক্ত নয়।

যাইহোক, ইমাম আবু মানসুর মাতৃরীদী রাহ. ও ইমাম আবুল হাসান আশআরী রাহ. এবং তাঁদের অনুসারীগণ যে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অন্তর্ভুক্ত- এটা স্বতঃসিদ্ধ বিষয়। তা অস্বীকার করেন একমাত্র মু'তাযিলীগণ এবং ওই সালাফীগণ যারা মুশাব্বিহার মাসলাক গ্রহণ করেছেন কিংবা তার দিকে ঝুঁকে গেছেন।

উল্লিখিত বাস্তবতাটি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী অনেক মুহাক্কিক আলেম স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। এখানে আমরা ইমাম বায়হাকী (৪৫৮ হি.) রাহ.-এর বক্তব্য থেকে সংশ্লিষ্ট অংশটুকু উদ্ধৃত করছি।
ইমাম বায়হাকী রাহ. এর বক্তব্যটি মুহাদ্দিস ইবনে আসাকির দিমাশকী (৪৯৯ হি.-৫৭১ হি.) -এর কিতাব

تبيين كذب المفتري، فيما نسب إلى الإمام أبي الحسن الأشعري"

(পৃ. ৮৬-৯১, প্রকাশনা: আলমাকতাবাতুল আযহারিয়্যা লিত তুরাস, কায়রো, মিশর)-এ সনদসহ বর্ণিত আছে। সেখান থেকে তাজুদ্দীন সুবকী রাহ. তাঁর কিতাব "তবাকাতুশ শাফিইয়্যাতিল কুবরা' (খ. ৩. পৃ. ৩৯৫-৩৯৯)-এ ইমাম আশআর রাহ.-এর জীবনীতে সংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন।

ইমাম বায়হাকী রাহ. তাঁর এক পত্রে লেখেন

إلى أن بلغت النوبة إلى شيخنا (أي امام جماعتنا) أبي الحسن الأشعري حمه الله تعالى، فلم يحدث في دين الله حدثا ، ولم يأت فيه ببدعة ، بل أخذ أقاويل الصحابة والتابعين ومن بعدهم من الائمة في أصول الدين ، فنصرها بزيادة شرح وتبيين ، وأن ما قالوا في الأصول وجاء به الشرع صحيح في العقول ، خلاف ما زعم أهل الأهواء من أن بعضه لا يستقيم في الآراء . فكان في بيانه تقوية ( لدلائل ) أهل السنة والجماعة ، ونصرة لأقاويل من مضى من الائمة ، كأبي حنيفة وسفيان الثوري من أهل الكوفة ، والأوزاعي وغيره من أهل الشام ، ومالك والشافعي من أهل الحرمين ، ومن نحا نحوهما من الحجاز ، وغيرها من سائر البلاد ، وكأحمد بن حنبل وغيره من أهل الحديث ، والليث بن سعد وغيره ، وأبي عبد الله محمد بن إسماعيل البخاري ، وأبي الحسين مسلم بن الحجاج النيسابوري ، إمامي أهل الآثار وحفاظ السن ، التي عليها مدار الشرع رضي الله عنهم أجمعين
وذلك دأب من تصدى من الأئمة في هذه الأمة ، وصار رأسا في العلم من أهل السنة في قديم الدهر وحديثه ...

উচ্চতর স্তরে অধ্যয়নরত তালিবে ইলমগণ ইমাম বায়হাকী রাহ . - এর বক্তব্যের বাকি অংশ 'তাবয়ীনু কাযিবিল মুফতারী ’ বা ‘ তবাকাতুশ শাফিইয়্যাতিল কুবরা ' থেকে দেখে নিতে পারেন ।
যদি এই বাস্তবতাটি উপলব্ধি করা যায় তাহলে ওইসকল সালাফী ভাইয়ের বাড়াবাড়ি ও প্রান্তিকতার ব্যাপারে আফসোস না করে উপায় থাকবে না , যারা ইমাম আবু মানসুর মাতুরীদী ও ইমাম আবুল হাসান আশআরীকে-আল্লাহ্ পানাহ- আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত থেকে খারিজ বলতে কোনো দ্বিধা বোধ করে না !!

প্রবন্ধের বাকী দুই পর্ব পরবর্তী পোস্টে আসবে ইনশাআল্লাহ

মাসিক আল-কাউসার
রবিউল আউয়াল ১৪৪৩ || নভেম্বর ২০২১ 
কপি কৃত। 

রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১

ধাতুদৌর্বল্য, পেশাবের আগে পরে ক্ষয় সমস্যার সমাধান

ধাতু দৌর্বল্যতা  বা পেশাবের ক্ষয় ও যৌন সমস্যার সমাধান 
=========০০০০======

 ধাতুদূর্বলতা বলতে কি  বুঝায়?  
মূলত অনৈচ্ছিক বীর্য পাতের নামই হলো ধাতু দৌর্বল্যতা, উত্তেজনা বা নাড়াচাড়া ছাড়াই পেশাবের আগে বা পরে বা পেশাবের সাথে পূরুষাঙ্গ হতে বীর্যের মত ফ্লুইড  বের হওয়া, যদিও বীর্যের মত তবে এটা বীর্য নয় বরং বিভিন্ন কোষ থেকে বের হওয়া ফ্লুইড। অথবা ফেনা যুক্ত পেশাব হওয়া, অথবা উত্তেজনা আসার দ্বারা কিংবা মহিলাকে স্পর্শ করার দ্বরা বা কথাবার্তা বলার দ্বারায় এমনিতেই বীর্যপাত হয়। তবে এটা কম হলে রোগের আওতায় পডেনা বরং স্বাভাবিক নিয়ম, তবে বেশী হলে চিকিৎসা  নিতে  হবে।  আবার অনেক সময় জোর খাটানোর সময় বীর্যপাত হয়। তদ্রুপভাবে ঘুমের মধ্যে অচেতন আবস্হায়  বীর্যপাত হয়। 

ক্ষতির দিক ঃ- 
ধাতু বা বীর্য যেহেতু শরীরের রুহ বলা হয়ে থাকে, সেহেতু অতিরিক্ত বীর্যপাত হওয়ার দ্বারা শরীরের অলসতার দেখা দে,কোন কাজে মন বসতে চায়না সর্বদা হতাশা দূঃচিন্তা বিরাজ করে,এমনকি কোমরে ব্যথ্যাও অণুভব হয়।ধাতু দুর্বলতা- সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হলো মাথায় ব্রেনে দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
চেহারা শুকিয়ে যায়। শারীরিক দুর্বলতাও ব্যাপকভাবে প্রকাশ পায়। কোনো কাজেই ভালো লাগেনা। সব কিজেই বিরক্তি বিরক্তি ভাব দেখা দেয়।
সব সময় মনে চায় যদি শুয়ে থাকতে পারতাম।
মহিলার প্রতি যৌন হ্রাস পেতে পেতে এক সময় তাদের প্রতি কোন চাহিদাই জাগে না। কারো কারো মেলা মেশা কথাবার্তা বলতেও ভালো লাগে না।
নীরব ও অন্ধকার লাগে। একাকী ও নির্জনতা পচ্ছন্দ হয়। কারো কারো অবস্থা এমন করুন হয়ে দাড়াঁইয়া যার কারনে অাত্মহত্যার জন্যও প্রস্তুতি নেয়। এসব কেবল ধাতু দুর্বলাতার কারনে হয়ে থাকে।তাছাডা বিবাহিত জীবনে নেমে আসে কালোছায়া এক পর্যায়ে এ রোগ মারাত্বক আকার ধারণ করলে এক সময় স্ত্রী সহবাসে অক্ষম হয়ে পডে।এবং সন্তান জন্ম দানেও বিগ্ন সৃষ্টি হয় এ জন্য সূচিকিতকার বিকল্প নেই। 

ধাতু দুর্বলাতার কারন-
ধাতু দুর্বলাতার অনেক কারন আছে। তম্মধ্যে নিম্মক্ত কারন গুলো বেশির ভাগ লোকদের মাঝে পাওয়া যায়।

১। উত্তেজনার বশিভুত হয়ে হস্ত মৈথুন করে বীর্যপাত ঘটানো।
২। সমকামিতা মাধ্যমে বীর্যপাত  ঘটানো।
৩। সব সময় পেটের অসুখ লেগে থাকার কারনে ধাতু দুর্বলতা হয়।
৪। অধিক গরম  খাদ্ গ্রহণ, ও পুর্বের খাদ্য হজম না করে আবার খাদ্য খাওয়া বিলম্বে হজম হয় এমন খাওয়ার দ্বারা।
৫। ভরাপেটে সহবাস করার দ্বারা ধাতু দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
৬। অশ্নীল যৌন উদ্দীপক ছবি দেখার দ্বারা বীর্যপাত হয়ে থাকে।
৭/ আবার অনেক সময় অন্য কোন রোগের মাত্রারিক্ত ঔষধ সেবনে সাইডএপেক্ট এর কারণে ও হতে পারে।
৮/ অতিরিক্ত সহবাস/ হস্তমৈথুন / অতিরিক্ত স্বপ্ন দোষ ও অন্যতম কারণ। 
৯/ অপুষ্টি / ভিটামিনের অভাব, অতিরিক্ত মেহনত।
৯/ আলকোহল / নেশা দ্রব্ খাদ্য অভ্যাসের কারণে ও হতে পারে। 

চিকিৎসা / সমাধান 

 প্রসাবের আগে পরে যারা ক্ষয় রোগে ভূগছেন, যেমন পেসাবের আগে পরে পিচ্ছিল জাতীয় বা আঠাল জাতীয় পদার্থ বের হলে বা সামান্য যৌন কল্পনা করলে বা পায়খানার সময় কোথ দিলে লিঙ্গ দিয়ে ধাতু ক্ষয় হলে তথা ধাতুর মত ফ্লুইড বের হলে তাদের  জন্য  প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে খুবই কার্যকরী এ টিপস।

প্রথমিক চিকিৎসা -ঃ 

১- নিমপাতা -: সকালে খালি পেটে ২০ টি নিমপাতা ভাল করে পরিস্কার করে চিবিয়ে বা গিলে খেয়ে নিন নিয়মিত ১ মাস।
২- ডাবের পানি- ফিটকিরি-: 
একটি নারিকেলের ডাবের ভিতর ফিটকিরীর ছোট একটা টুকরো রাতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে বিকাল খালি পেটে সেবন করুন ১০ দিন, ইনশাআল্লাহ্‌ খুব উপকারী।
৩- আতপ চাউল -:
১ মুষ্ঠি আতপচাউল রাতে ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে চাউল গুলো চিবিয়ে খেয়ে পরে পানিসহ পান করুন ২-৩ মাস।তাছাডা লিকোরিয়া সমস্যা সমাধানের জন্য ও একই নিয়মে সেবন করতে হবে।
৪-: তুলশি বীজ -:
তুলশিবীজ বা বিচি আধা গ্রাম পরিমান নিয়ে একটা খালি পানের সাথে চিবিয়ে সেবন করুন।১০-১৫ দিন।
তবে যাদের হাইপেসার,হার্ট সমস্যা ও বেশী গরমের সময় সেবন নিষেধ। এর পর ভাল না হলে দ্বীতীয় পর্যায়ে আরও উন্নত চিকিৎসা নিতে হবে।আবস্হা ভেদে ১ থেকে ৩/৬ মাস পর্যন্ত ঔষধ সেবন করতে হতে পারে।
                       

দ্বিতীয় পর্যায়ে চিকিৎসা 

১/ দীনার 
২/কুশতা কলয়ী 
৩/ শরবত এ্যালকুলি

সেবন করতে হব  ১/৩/৬ মাস আবস্হা ভেদে।

৩য়  পর্যায়ে 

৪/ হরমোঘট   ( বিদেশী- দামী)  জটিল ধাতু  ক্ষয় রোধে অত্যন্ত কার্যকর।
১ ফাইল ৯০০ টাকা করে ১৫ টি ক্যাপ, ১-৪ ফাইল সেবন করতে  হয়। 

৫/ এবং সাথে বীর্য পাতলা টাইমিং এর সমস্যা হলে sexfill usa ( দামী)  

৬// সুফুপ গাওহার  

৭// সুফুপ ক্ষয় 
৮// ক্ষয়ভষ্ম ভাজিকরণ 

 ইত্যাদি  আবস্হা ভেদে চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। 

কারণ যাদের দীর্ঘ  দিনের  ক্ষয় সমস্যা  আছে তাদের বীর্য পাতলা হয়ে থাকে তাই বিবাহিত জীবনে টাইমিং সমস্যা  থেকে বাচতে এ ঔষধ টি অত্যন্ত কার্যকর। 

তাছাডা আরও আবস্হা ভেদে চিকিৎসা দেয়া যায়।

প্রয়োজনে ৩/ ৬ মাস ও লাগাতার ও সময় লাগতে পারে।
অনেকে কোর্স শেষ না করে  ১/২ মাস  ঔষধ সেবন করে উপকার না পেয়ে ঔষধ বন্ধ করে দেন এটা কিন্তু ঠিক না, কোর্স পূর্ণ করাই বেটার।
অনেক সময় কোর্স পূর্ণ হওয়ার পর কার্যকরীতা শুরু হয় সেটা অনেকের জানা থাকেনা।

প্রাকৃতিক চিকিৎসা নিতে আমাদের ভূবনে স্বাগতম। 

সৌজন্যে 
ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস 

যোগাযোগ ঃ 
০১৮২৯৩১৮১১৪
 ওয়াতসাফ ইমু।

শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১

যাবতীয় ‎যৌন সমস্যার ‎সমাধান ‎করতে ‎খাদ্য ‎পথ্য ‎

যাবতীয় যৌন সমস্যা সমাধান করতে কিছু  কার্যকরী খাদ্য পথ্য। 
ধৈর্য্য সহকারে সময় নিয়ে পডতে পারেন। 

যেমন অতিরিক্ত 
স্বপ্ন দোষ / অতিরিক্ত মৈথুনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা,  পেশাবের আগে পরে ক্ষয় /  টাইমিং সমস্যা, ২/৩ মিনিটে আউট হয়ে যাওয়া, বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়া, সময়মত উত্থান না হওয়া,  উত্থানজনিত সমস্যা,  শুক্র  ও শুক্রানু সমস্যায় ভূগতেছেন  তাদের জন্য  আবস্তা ভেদে বিভিন্ন ইউনানী আয়ুর্বেদীক  হোমিও ও  প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরী করা খাদ্য পথ্যের মাধ্যমে  চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে থাকি। 

এখানে যাবতীয়  যৌন সমস্যায় বহুল  ব্যবহারীত কিছু ঔষধ  তথা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরী  খাদ্য পথ্যের সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়া হল তবে আবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শে ব্যবহার করতে হবে।
======
যেমন ------- 
১, মাজুন আরদে খোরমা 

কার্যকরীতাঃ ক্ষয়  রোগ, মেহ, প্রমেহ, শুক্র তারল্য, শুক্র ও শুক্রানু সমস্যা সমাধান, টাইমিং সমস্যার সমাধান, উত্থান জনিত সমস্যার সমাধান,  সর্দি  কাশি, অপুষ্টি তে কার্যকর।  
ইউনানী।। 

২,  কুশতা কলয়ী  

কার্যকরীতাঃ বীর্য  গাঢ, স্বপ্নদোকষ, শুক্র মেহ,শুক্র তারল্য,দ্রুত  বীর্য পাত রোধ, ও সাদা স্রাবে দ্রুত কার্যকর। 
ইউনানি 

৩, লিভার কেয়ার - দীনার সিরাপ 

কার্যকরীতাঃ জন্ডিস, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিরোধ,হাত পা জালাপোডা,যকৃত প্রদাহ ও স্বপ্ন দোষ  প্রতিরোধক।
ইউনানি। 

( ৪,  এ্যালকুলি  (শরবত সানতারা ইউনানি- 
  
কার্যকরীতাঃ পেশাবের জালাপোডা ইনফেকশন এ কার্যকর, অধিক জ্বর,জন্ডিস শরীর পেশাবের জালাপোডা  অধিক পিপাসা দূর করতে কার্যকর।
  
৫, শরবত জিনসিন 

কার্যকরীতাঃ যৌন শক্তি  বর্ধক,সাধারণ  বলকারক,প্রফুল্ল কারক,স্নায়ু ও যৌনশক্তি  বর্ধক,বিশেষ  অঙ্গের অনূভুতিহীনতা দূর করে ও  মানসিক শক্তি  বৃদ্ধি তে কার্যকর। 
ইউনানী।

৬, এনার্জি প্লাস ক্যাপ, 
( হাব্বে আম্বর মোমিয়াবী ) 
কার্যকরীতাঃ 
যৌনশক্তি  বর্ধক,, হারানো যৌনশক্তি  ও উদ্যম ফিরিয়ে আনে,শারীরিক  দুর্বলতা  দূর করে। টাইমিং সমস্যার সমাধান করে। 
(১-২ টি সহবাসের আগে সেব্য) 
ইউনানি।  

৭, মুকাব্বি খাছ ক্যাপ -
( মাল্টিভিটামিন  এটু জেড) 

কার্যকরীতাঃ ২৬ প্রকার ভিটামিনের সমাহার,পুরুষ  ও নারীদের  শক্তিবর্ধক,   ক্ষুধা বর্ধক,বীর্য  স্তবক, হরমোন নিয়ন্ত্রন ও যৌবন শক্তিবৃদ্ধি  কারক।  
ইউনানী। 

৮, শ্রী গোপাল তেল 
কার্যকরীতাঃ 
নারী ও পুরুষের বিশেষ অঙ্গে কার্যকর, লিঙ্গের উত্থান জনিত  সমস্যা  যৌন দূর্বলতা  ও নারীদের স্তনের সৌন্দর্যে বিশেষ  কার্যকর। এটি মালিশের জন্য। 
ইউনানি। 

৯, চ্যবন প্রাশ

কার্যকরীতাঃ সর্দিকাশি জ্বর,ক্ষয় রোগ,মেহ প্রমেহ,শ্বাসকষ্ট, কাশি,অপুষ্টিতে কার্যকর  ও রোগ প্রতি রোধ  ক্ষমতা বৃদ্ধিতে  কার্যকর।  
আয়ুর্বেদীক।  

১০, জিনসেং + ক্যাপ 
কার্যকরীতাঃ 
যৌনশক্তি  বর্ধক, শারীরিক  শক্তি, ও উদ্যম ফিরিয়ে  আনতে, তারুন্যদিপ্ত যৌবন ধরে রাখতে, ও মস্তিষ্কের  কার্যক্ষমতা  বাডাতে,ডায়াবেটিস  ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।  টাইমিং  ও উত্থান জনিত সমস্যা সমাধান করে। 
হারবাল। 

১১, ফাইভ ফস সুপার  ট্যাব 
কার্যকরীতাঃ 
শারীরিক  শক্তি  বৃদ্ধি  করে,শরীরের  টিসু ঘঠন, ও ক্ষয় রোধ, মস্তিষ্ক  ও হাডের পুষ্টি  যোগায়, এবং যৌনশক্তি  বৃদ্ধি  করে । 
হোমিও।
  
১২, এ্যারালিয়া কুইনকিউফোলিয়া  জিংসিং  ইকোনো "  ট্যাব  " 

কার্যকরীতাঃ 
দ্রুত  শারীরিক শক্তি  বৃদ্ধি  করে  মৈথুন  জনিত  সমস্যা সমাধান করে। 
হোমিও।

১৩, সিলেনিয়াম প্লাস ট্যাব 
কার্যকরীতাঃ 
দ্রুত  বীর্যপাত  রোধ, শুক্র তারল্য,আর্সেনিক  বিষ ক্রিয়া,ক্যানসার, এবং দূর্বলতা  প্রতি রোধ  ও জীবনি শক্তি  বৃদ্ধি করে। 
হোমিও 

১৪, কুস্তুরী সুপার  ট্যাব 

কার্যকরীতাঃ 
যৌবন ধরে রাখে,যৌন দূর্বলতা,,কাজ করার অক্ষমতা,স্নায়ুবিক  দূর্বলতা,অবসাদ, ক্লান্তি দূর করে, উত্তেজনা  বৃদ্ধি  করতে  কার্যকর। 
হোমিও।

১৫,  সিলিনিয়াম ক্যাপ 
কার্যকরীতাঃ 
বীর্য  ঘন থেকে ঘন ও গাঢ  করতে, শুক্র তারল্য দ্রুত  বীর্যপাত  রোধ  ও ক্যান্সার  প্রতি রোধ  করে।
হোমিও।  

১৬, জিনসেং 3 x  
কার্যকরীতাঃ 
হারানো যৌনশক্তি  ও উদ্যম ফিরিয়ে  আনতে  উচ্চ  রক্তচাপ  ও ডায়াবেটিস  নিয়ন্ত্রণে  কার্যকর। 
হোমিও 

১৭, এসিড ফস   3 x 
কার্যকরীতাঃ 
স্বপ্ন দোষ  শুক্র ক্ষয় মানসিক দূর্বলতা  পায়োরিয়ায় কার্যকর। 
হোমিও।

১৮, সুপার গোল্ড কস্তুরী ক্যাপ 
কার্যকরীতাঃ 
পুরুষদের  জেনিটো ইউরিনারী  ট্রাস্টে কার্যকরী,বলে লিঙ্গোত্থান ও যৌবনশক্তি বৃদ্ধিতে দ্রুত  কার্যকর,   
ইউনানি। 

১৯, টিটিনিয়াম 
কার্যকরীতা ঃ 
যৌন আকাঙ্খা কম পুরুষ,উত্থান জনিত সমস্যা, মহিলাদের যৌন আকাঙ্খা কমে গেলে,  

২০, পঞ্চ ভূত ১০০% প্রাকৃতিক
কার্যকরীতাঃ  
যে কোন যৌন সমস্যার ,যেমন   টাইমিং উত্তেজনা কম,  দ্রুত পতন রোধক, স্তবক, উত্থান জনিত সমস্যা,  অল্প সময়ে নেতিয়ে পডা, হস্তমৈথুনের কারনে  সৃষ্ট   সমস্যা,  পেশাবের আগে পরে  ক্ষয় সমাধান করতে কার্যকর  ১২ টি প্রাকৃতিক উপাদান এ তৈরী ১০০% ন্যাচরাল।  
ুটি প্রথমিক চিকিৎসা হিসাবে  নিয়মিত  ২ মাস প্রয়োজন ভেদে ১২০-১৮০ দিন সেবন করতে পারলে আশ্চর্য জনক ফলাফল পাওয়া যাবে  ইনশাআল্লাহ। 

২১, দশমূলী  ১০০% প্রাকৃতিক 

কার্যকরীতাঃ-
সাধারনদূর্বলতা,বলকারক,যৌনদূর্বলতা,মানসিক দূর্বলতা,ক্লান্তি,স্নায়ুবিক অবসাদ,স্মৃতি শক্তির দূর্বলতা,শুক্রা'পাদন  বর্ধক, শুক্র স্তবক,শুক্র গাঢ কারক,শুক্রমেহ,মুত্রকুচ্ছতা,পীডন,গ্রন্হিস্ফীতি, অনিদ্রা, কোষকলার ঘাটতি পুরণ ,মহিলাদের শ্বেতপদর,অতিরিক্ত ঋতুস্রাব,জরায়ুর শক্তি বৃদ্ধি, দুগ্ধবৃদ্ধি কারক,ও অতিরিক্ত স্বপ্ন দোষ নিবারক। অজীবন যৌবন ধরে রাখতে নিয়মতি সেবন করতে
সর্কতাঃ উচ্চ রক্তচাপ রুগিদের সেবন নিষেধ। 

এখানে  অনেক  গুলো ঔষধ এর উপকারিতা সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে  চিকিৎসক  রুগির আবস্হা  ভেদে  নির্নয় করবেন।

%%%%%%%
বিঃদ্রঃ  এখানে  কোন ওয়ান টাইম চিকিৎসার ফর্মুলা দেয়া হয়নি সব গুলোই স্হায়ী চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত  তাছাডা নিজে নিজে বাজার থেকে  কিনে সেবন করবেন সেটা যাতে না হয়, তবে    অভিজ্ঞতা সম্পন্ন  ডাক্তার হাকীম সাহেবানদের পরামর্শে  লাগাতার ৩/৬ মাস সেবন করতে পারলে ইনশাআল্লাহ  স্হায়ী সমাধান পেতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। 

========
★★   আনুমানিক কত টাকা খরচ হতে পারে মাসিক  ★★★  
==========
রোগ ও রুগির আবস্হা ভেদে এর ভিন্নতা রয়েছে।

স্বপ্ন দোষ  ও ক্ষয়  সমস্যার সমাধান করতে @@@@  মাসিক প্রায়  ৬ শত থেকে ১ হাজার  টাকা পর্যন্ত হতে পারে ।

যৌন সমস্যা সমাধান করতে মাসিক  প্রায়  #### ১২০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ  হতে পারে। 
তবে অবস্থা ভেদে আরও বেশী ও লাগতে পারে। তবে সেটা রুগির আবস্থার উপর নির্ভর করবে। 

&&&&&&&&&
বীনা মূল্যে পরামর্শ পেতে যোগাযোগ করতে পারেন। 

সৌজন্যে 
ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস 
০১৮২৯৩১৮১১৪ 
ইমু ওয়াতসাফ এ।

শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

যৌন ‎সমস্যায় ‎ব্যবহারীত ‎খাদ্য ‎ও ‎পথ্য ‎

আজকে এখানে যৌন সমস্যার সমাধান করতে 
 আয়ুর্বেদিক  ইউনানী ফর্মুলায় তৈরী কৃত ব্যবহারীত খাদ্য পথ্য উপকারীতা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে  উপস্থাপন করবো  তবে এ সকল খাদ্য পথ্য গুলো আবশ্যই যে কোন ডাঃ  হাকীম কবিরাজদের পরামর্শে সেবনের বিকল্প নেই। 

★★★
যেমন যাবতীয় যৌন সমস্যা, টাইমিং, উত্থান জনিত সমস্যা,  
স্বপ্ন দোষ /  পেশাবের আগে পরে ক্ষয় সংক্রান্ত বিভিন্ন  খাদ্য পথ্য। তবে এখানে একটা কথা বলতে হয় যে কেউ  যৌন সমস্যার চিকিৎসা নিতে হলে  আগে পেটের কোন সমস্যা  যদি থেকেই  থাকে তাহলে পেটের চিকিৎসাও নিতে হবে।


======
১, মাজুন আরদে খোরমা ==

কার্যকরীতাঃ 
ক্ষয়  রোগ, মেহ, প্রমেহ, শুক্র তারল্য, সর্দি  কাশি, অপুষ্টি তে কার্যকর। 
৪৫০ গ্রাম,  ৫৫০ t
২০০ গ্রাম, ৩৬৫t   
ইউনানী।। 

২,  কুশতা কলয়ী==  
কার্যকরীতাঃ 
বীর্য  গাঢ, স্বপ্নদোকষ, শুক্র মেহ,শুক্র তারল্য,দ্রুত  বীর্য পাত রোধ, ও সাদা স্রাবে দ্রুত কার্যকর। 
৩০ ট্যাব ৮০t  ইউনানি 

৩, লিভার কেয়ার - দীনার সিরাপ ==
কার্যকরীতাঃ 
জন্ডিস, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিরোধ,হাত পা জালাপোডা,যকৃত প্রদাহ ও স্বপ্ন দোষ  প্রতিরোধক।
৪০০ মিলি ১৫০ t
১৮০ মিলি  ৬৫t ইউনানি। 

( ৪,  এ্যালকুলি  (শরবত সানতারা== ইউনানি- ৪০০ মিলি ১৭০ t 
কার্যকরীতাঃ 
পেশাবের জালাপোডা ইনফেকশন এ কার্যকর, অধিক জ্বর,জন্ডিস শরীর পেশাবের জালাপোডা  অধিক পিপাসা দূর করতে কার্যকর।
  
৫, শরবত জিনসিন ==
কার্যকরীতাঃ 
যৌন শক্তি  বর্ধক,সাধারণ  বলকারক,প্রফুল্ল কারক,স্নায়ু ও যৌনশক্তি  বর্ধক,বিশেষ  অঙ্গের অনূভুতিহীনতা দূর করে ও  মানসিক শক্তি  বৃদ্ধি তে কার্যকর। 
১৮০ মিলি ১৫০ t
৪০০ মিলি ২৩০t ইউনানী।

৬, এনার্জি প্লাস ক্যাপ, ==
( হাব্বে আম্বর মোমিয়াবী ) 
কার্যকরীতাঃ 

যৌনশক্তি  বর্ধক,, হারানো যৌনশক্তি  ও উদ্যম ফিরিয়ে আনে,শারীরিক  দুর্বলতা  দূর করে। 
(১-২ টি সহবাসের আগে সেব্য) 
৩০ ক্যাপ ৩৭০t ইউনানি।  

৭, মুকাব্বি খাছ ক্যাপ -==
( মাল্টিভিটামিন  এটু জেড) 
কার্যকরীতাঃ 
২৬ প্রকার ভিটামিনের সমাহার,পুরুষ  ও নারীদের  শক্তিবর্ধক,   ক্ষুধা বর্ধক,বীর্য  স্তবক, হরমোন নিয়ন্ত্রন ও যৌবন শক্তিবৃদ্ধি  কারক। 
৩০ ক্যাপ -৪২০t ইউনানী। 

৮, শ্রী গোপাল তেল ==
কার্যকরীতাঃ 
নারী ও পুরুষের বিশেষ অঙ্গে কার্যকর, লিঙ্গের উত্থান জনিত  সমস্যা  যৌন দূর্বলতা  ও নারীদের স্তনের সৌন্দর্যে বিশেষ  কার্যকর। 
৫০ মিলি ১১০t ইউনানি। 

৯, চ্যবন প্রাশ==
কার্যকরীতাঃ 
সর্দিকাশি জ্বর,ক্ষয় রোগ,মেহ প্রমেহ,শ্বাসকষ্ট, কাশি,অপুষ্টিতে কার্যকর  ও রোগ প্রতি রোধ  ক্ষমতা বৃদ্ধিতে  কার্যকর।  
২০০ g 260 t
৪৫০ গ্রাম  ৫০০t আয়ুর্বেদীক।  

১০, জিনসেং + ক্যাপ ==
কার্যকরীতাঃ 
যৌনশক্তি  বর্ধক, শারীরিক  শক্তি, ও উদ্যম ফিরিয়ে  আনতে, তারুন্যদিপ্ত যৌবন ধরে রাখতে, ও মস্তিষ্কের  কার্যক্ষমতা  বাডাতে,ডায়াবেটিস  ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 
৩০ ক্যাপ ৪৫০t  হারবাল। 

১১, ফাইভ ফস সুপার  ট্যাব ==
কার্যকরীতাঃ 
শারীরিক  শক্তি  বৃদ্ধি  করে,শরীরের  টিসু ঘঠন, ও ক্ষয় রোধ, মস্তিষ্ক  ও হাডের পুষ্টি  যোগায়, এবং যৌনশক্তি  বৃদ্ধি  করে । 
৫০ ট্যাব ১২৫ t 
১০০ ট্যাব ২০০t  হোমিও।
  
১২, এ্যারালিয়া কুইনকিউফোলিয়া  জিংসিং  ইকোনো  ট্যাব  ==
কার্যকরীতাঃ 

দ্রুত  শারীরিক শক্তি  বৃদ্ধি  করে  মৈথুন  জনিত  সমস্যা সমাধান করে। 
৩০ ট্যাব১৩০t হোমিও।

১৩, সিলেনিয়াম প্লাস ট্যাব ==
কার্যকরীতাঃ 

দ্রুত  বীর্যপাত  রোধ, শুক্র তারল্য,আর্সেনিক  বিষ ক্রিয়া,ক্যানসার, এবং দূর্বলতা  প্রতি রোধ  ও জীবনি শক্তি  বৃদ্ধি করে। 
৫০ ট্যাব ১০০t হোমিও 

১৪, কুস্তুরী সুপার  ট্যাব== 
কার্যকরীতাঃ 

যৌবন ধরে রাখে,যৌন দূর্বলতা,,কাজ করার অক্ষমতা,স্নায়ুবিক  দূর্বলতা,অবসাদ, ক্লান্তি দূর করে, উত্তেজনা  বৃদ্ধি  করতে  কার্যকর। 
৫০ ট্যাব১৩০t 
১০০ ট্যাব ২৫০t হোমিও।

১৫,  সিলিনিয়াম ক্যাপ ==
কার্যকরীতাঃ 

বীর্য  ঘন থেকে ঘন ও গাঢ  করতে, শুক্র তারল্য দ্রুত  বীর্যপাত  রোধ  ও ক্যান্সার  প্রতি রোধ  করে।
৩০ ক্যাপ -১৮০t হোমিও।  

১৬, জিনসেং 3 x==  
কার্যকরীতাঃ 
হারানো যৌনশক্তি  ও উদ্যম ফিরিয়ে  আনতে  উচ্চ  রক্তচাপ  ও ডায়াবেটিস  নিয়ন্ত্রণে  কার্যকর। 
৫০ ট্যাব ৬৫t হোমিও 

১৭, এসিড ফস   3 x =
কার্যকরীতাঃ 

স্বপ্ন দোষ  শুক্র ক্ষয় মানসিক দূর্বলতা  পায়োরিয়ায় কার্যকর। 
৫০ ট্যাব ৬৫t হোমিও।

১৮, সুপার গোল্ড কস্তুরী ক্যাপ ==
কার্যকরীতাঃ 
স্পেশাল 
পুরুষদের  জেনিটো ইউরিনারী  ট্রাস্টে কার্যকরী,বলে লিঙ্গোত্থান ও যৌবনশক্তি বৃদ্ধিতে দ্রুত  কার্যকর,   
১০ ক্যাপ ১০০০t ইউনানি। 

১৯, টিটিনিয়াম =
কার্যকরীতাঃ 
যৌন আকাঙ্খা কম পুরুষ,উত্থান জনিত সমস্যা, মহিলাদের যৌন আকাঙ্খা কমে গেলে,   
১৮০-২৩৫ 

বিঃদ্রঃ 
পুরুষাঙ্গের উত্থান জনিত সমস্যা,, যোন আকর্ষণ কমে যাওয়া ও দ্রুত বীর্যস্খলন সমস্যা  সমাধান  এ 
জিংসিং  প্লাস ১ টি করে 
টিটানিয়াম  ১-/২ টি করে ২ বার 
হাব্বে আম্বর মোমিয়াবী  ১-২ টি করে সহবাসের পূর্বে। 

যে কোন রেজিস্ট্রার ডাঃ হাকীম কবিরাজ দের পরামর্শে সেবন করতে হবে।

সৌজন্যে 
ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস  
০১৮২৯৩১৮১১৪ 
শুধু মাত্র ইমু তে। 

বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০২১

খৃষ্টান ‎মিশনারীর অপততপরতা ‎ও ‎আমাদের ‎করনীয়

 খৃষ্টান মিশনারির অপতৎপরতা ও আমাদের করণীয়----
★এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ★

( কিছু জানতে হলে সর্ব প্রথম বিনীতভাবে আরজ করব একটু ধৈর্য্য সহকারে সময় নিয়ে সব টুকু পডার অনুরোধ রইল)

 ২০২৫ সাল পর্যন্ত খৃষ্টানদের বিভিন্ন টার্গেট ও পরিকল্পনা

১৯৭৮ সালে উত্তর আমেরিকার লুওয়াজিন নামক স্থানে সমকালীন খৃষ্টবাদ প্রচারের ধারাবাহিকতায় এক ঐতিহাসিক কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। তাতে সারা দুনিয়ার প্রায় দেড়শ প্রথম সারির খৃষ্টান ধর্মগুরু ও ধর্মনেতাগণ যোগদান করেন। তাদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন দেশের বড় বড় গির্জা, মিশনারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ছিলেন। উক্ত কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী সবাই নিজ নিজ অভিজ্ঞতা, জ্ঞান-গবেষণা এবং বোধ ও বুদ্ধিমত্তার আলোকে বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে মুসলমানদের মাঝে খৃষ্টবাদ প্রচারের স্বার্থে এ ব্যাপারে অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেন যে, দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনার সময় যদি তাৎক্ষণিকভাবে মুসলমানদেরকে খৃষ্টবাদের বিষাক্ত ট্যাবলেট গলধকরণ করানো নাও যায় তাহলে সমস্যা নেই; 

কিন্তু কমপক্ষে অতি অবশ্যই মুসলমানদের মাঝে নৈতিক ও চারিত্রিক স্খলন ঘটানো এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে তাদেরকে পঙ্গু করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যেতে হবে। 
★★ তারা এতে সফল ও হয়েছে  বলা যায়।

কনফারেন্সে যোগদানকারী ধর্মনেতাগণ এ প্রস্তাবকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে একটি রিসার্চ ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবী জানান। যা পরবর্তীতে একজন প্রসিদ্ধ উগ্র ও চরমপন্থী খৃষ্টান ধর্মপ্রচারক স্যমুয়েল জেইমারের নামে পরিচিতি লাভ করে।

মোটকথা, গির্জাপতি আর ধর্মনেতাগণ খৃষ্টধর্ম প্রচার-প্রসারের পথকে সহজ ও সুগম করতে কোন কল্পনা-পরিকল্পনা বাকি রাখেননি। একজন মুসলমানের অমূল্য সম্পদ ঈমানকে ছিনতাই করা, মুসলিম যুবসমাজের চরিত্রকে নষ্ট করা এবং ইসলামবৃক্ষের গোড়াকর্তন করার – সার্বিক অর্থেই যতো পথ ও পন্থা হতে পারে তারা সব আবিস্কার করেছে এবং মুসলমানদেরকে সে অনুযায়ী পরিচালিত করছে। 
কিন্তু পরিতাপের কথা হলো, মুসলমানরা নিজেদের সঠিক পথ ছেড়ে ইয়াহুদি-খৃষ্টানদের বাতলানো পথে চলতে লজ্জা ও অনুশোচনাবোধ তো দূরের কথা, বরং সেটাকেই গর্ব ও আভিজাত্যের বিষয় মনে করছে। যারা এ ব্যাপারে সামান্য “নাক গলায়”, তাদেরকে সেকেলে, চরমপন্থী,  জঙ্গী প্রগতির পথে বাধা ইত্যাদি নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করছে। কিছু নামধারী মুসলিম ও এতে শামীল আছে যা সকলেই জানি। 

★★আপনাদের সামনে একটি রিপোর্ট পেশ করছি, আশা করছি এর দ্বারা আপনি খৃষ্টানদের বিভিন্ন পরিকল্পনা সম্পর্কে কিঞ্চিৎ ধারণা লাভ করতে পারবেন।★★

আন্তর্জাতিক খৃষ্টান মিশনারি প্রতিষ্ঠান তার তেরতম বাৎসরিক রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে রয়েছে খৃষ্টান মিশনারিদের অতীত সফলতাসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটি সংক্ষিপ্ত খসড়া। চলতি শতাব্দীর প্রথম ২৫ বছরে তাদের কি কি অভিসন্ধি রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে কোন পথে এগুতে হবে, কি পরিমাণ অর্থসম্পদ তাতে ব্যয় হবে, কতজন ধর্মপ্রচারক ও মিশনারি এই মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তার সম্ভাব্য ফলাফল কি দাঁড়াতে পারে ইত্যাদি বিষয়ের সামান্য চিত্র তাতে তুলে ধরা হয়েছে। আমেরিকার অরজিনা ভার্সিটির খৃষ্টান প্রফেসর ডক্টর ডিওড বেরিয়েট এ প্রতিবেদনের উপর বিস্তর গবেষণা-পর্যালোচনা করার পর মন্তব্য করেছেন –

“নিশ্চয়ই এই প্রতিবেদন দুনিয়াজুড়ে খৃষ্টানদের একচ্ছত্র আধিপত্যের ইঙ্গিত বহন করছে। এ আধিপত্য সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও হতে পারে, আবার হতে পারে চিন্তানৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক অঙ্গনে। 

★★খৃষ্টানদের কর্মতৎপরতা ও সফলতার একটি চিত্র দেখুন –★★
 শুধুমাত্র ১৯৯৬ সালের এক বছর সময়েই খৃষ্টানরা সারা দুনিয়ায় বাইবেলের ২৮ বিলিয়ন কপি (আঠারশত কোটি কপি) বিতরণ করেছে। আর এ কথা শুনলে তো রীতিমত অবাক হতে হয় যে, গেলো বছর পর্যন্ত পৃথিবীর নামী-দামী বড় বড় লাইব্রেরীগুলোতে যীশু খৃষ্টের নামে লেখা বই-পত্রের সংখ্যা ৬৫৭৫১ এ দাঁড়িয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৫৩০৯৪ টি বইয়ের প্রচ্ছদে উজ্জ্বল ও স্পষ্ট অক্ষরে যীশু খৃষ্টের নাম লেখা আছে।”।


ডক্টর বেরিয়েট আরো বলেন, উক্ত প্রতিবেদনে সে সকল অঞ্চলের আলোচনাও এসেছে যেগুলোতে এখনো পর্যন্ত খৃষ্টধর্মের দাওয়াত পৌঁছেনি। উক্ত প্রতিবেদনে অ-খৃষ্টান রাজ্যসমূহকে ‘আলিফ’ ও ‘বা’ – এই দুটো শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে।

“আলিফ’ দ্বারা উদ্দেশ্য সে সকল রাজ্য, যেগুলোতে খৃষ্টধর্মের আওয়াজ বিলকুল পৌঁছেনি। আর ‘বা’ দ্বারা সে সকল রাজ্য উদ্দেশ্য, যেগুলো খৃষ্টান রাজ্যের পার্শ্ববর্তী ও ভৌগলিক দিক থেকে তার সাথে মিলিত। 

উক্ত প্রতিবেদনে দাবী করা হয় যে, অ-খৃষ্টান রাজ্যসমূহে অনতিবিলম্বে খৃষ্টধর্মের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভৌগলিক তথ্য, ভাষা ও আঞ্চলিক সব রীতি অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে।

উক্ত প্রতিবেদনের একটি পরিসংখ্যান ছিল এই যে, বর্তমানে অ-খৃষ্টান রাজ্যে বসবাসকারী জনগণের সংখ্যা হলো তের বিলিয়ন। আর এই জনপদগুলোতে বছরে প্রায় ৪৭ মিলিয়ন লোক বাড়ছে। এ হিসেবে দৈনিক ১২৯০০০ নবজাতক শিশু জন্মগ্রহণ করছে। উনিশ শতকে জনসংখ্যার বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র এক মিলিয়ন। এ হিসেবে আশা করা যায়, বিশ শতকে অ-খৃষ্টানদের রাজ্যের জনসংখ্যা ১৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ১৫ বিলিয়নে পৌঁছে যাবে। (এডিটেডঃ হিসাবে কোন একটা প্রবলেম হয়েছে, তবে এটা শিউর যে, “বিলিয়ন” হবে না। 

হতে পারে মিলিয়নের পরিবর্তে ভুল করে বিলিয়ন লেখা হয়েছে, কিন্তু শিউর না হয়ে কারেক্ট করতে পারছি না।)

পৃথিবীর শতকরা ৮১ ভাগ লোক কোন না কোন ধর্ম পালন করে। এ হিসেবে পৃথিবীতে বর্তমানে নাস্তিক বা স্রস্টায় অবিশ্বাসী লোকের সংখ্যা হলো ১১১০ মিলিয়ন। সারা পৃথিবীতে ১৫ হাজারেরও বেশী ধর্মের প্রচলন রয়েছে। আর দিন দিন তো নতুন ধর্মের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এই বৃদ্ধি খৃষ্টানদের ধর্ম প্রচারে বড় বাঁধা। 

★★★★এখন আমরা বাংলাদেশে খৃষ্টান মিশনারীদের কর্মফলাফল, গির্জার সফলতা ও অন্যান্য সংস্থার কারগুজারী ধারাবাহিক উল্লেখ করবো ইন শা আল্লাহ। যা দ্বারা অনুমান করা সহজ হবে যে, বাংলাদেশে তাদের অপতৎপরতা কি পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 ★★★বাংলাদেশে মিশনারির আগমন★★

মিশনারি হলো খৃষ্টানদের দাওয়াতি সংস্থা। সারা দুনিয়াতে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে লক্ষ্ লক্ষ প্রচারকের মাধ্যমে খৃষ্টানরা খৃষ্টধর্মের দাওয়াত দিয়ে আসছে। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে, আজ থেকে পাঁচশ বা ছয়শ বছর আগে খৃষ্টান মিশনারিরা এই বাংলায় আসে। পর্তুগিজরা যখন বাংলায় বা ভারতে আসে তখন সাথে করে খৃষ্টান মিশনারিদেরও নিয়ে আসে। জেসুইস ও অগস্টেইনিয়া নামক ক্যাথলিক খৃষ্টানদের দুটো দল পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের ছত্রছায়ায় ২০০ বছর যাবত বাংলায় খৃষ্টধর্ম প্রচার করে আসছে। মোগল সম্রাট আকবর ভারতের বাঙাল প্রদেশের প্রসিদ্ধ স্থান হুগলিতে পর্তুগিজদের বসতি স্থাপনের অনুমতি দিলে তাদের ছত্রছায়ায় মিশনারিরা এসে এলাকায় গির্জা প্রতিষ্ঠা করলো, স্কুল বানালো, হাসপাতাল চালু করলো। হুগলিকে কেন্দ্র করে খৃষ্টধর্ম প্রচার করতে তারা ঢাকাতেও নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করলো।

এভাবে ১৬২১ খৃষ্টাব্দে এতদাঞ্চলে খৃষ্টান মিশনারি তৎপরতা পূর্ণ উদ্যমে শুরু হয়। ১৬৩৩ খৃষ্টাব্দে সম্রাট শাহজাহান ৭৭৭ বিঘা জমি বিনা খাজনায় (লা-খেরাজ) খৃষ্টান মিশনারিদের দান করলেন। ফলে তারা আরো বেশী উৎসাহিত হয়। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোঘল আমলে খৃষ্টান মিশনারিরা অগস্টেইনিয়া গির্জা গড়ে তোলে। (আমাদের মধ্যে যেমন বিভিন্ন দল-উপদল আছে, তেমন খৃষ্টানদের মধ্যে বিভিন্ন দল আছে, যেমন – জেসুইল, অগস্টেইনিয়া, ক্যাথলিক, ব্যাপটিস্ট, প্রটেস্ট্যান্ট ইত্যাদি) 
মোগল আমলে মোগল বাদশাহদের পৃষ্ঠপোষকতার ফলে বাংলায় ১৬৩৩ খৃষ্টাব্দের পরে ১৩ টি অগস্টেইনিয়া গির্জা গড়ে উঠে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রোমান ক্যাথলিকদের সংখ্যা বেশী। ব্যাপটিস্টদের সংখ্যাও কম নয়।

১৯০৮ সালে ব্রিটিশ আমলে চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনায় ব্যাপটিস্টরা এসে একটি সোসাইটি হাসপাতাল গড়ে তোলে। লেবৃসি হসপিটাল কুষ্ঠনিরাময় কেন্দ্র খোলে। বাংলাদেশে মোট খৃষ্টান সংখ্যা ৫ লাখ, এর মধ্যে ব্যাপটিস্ট খৃষ্টানদের সংখ্যা বর্তমানে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন ছলে বলে কৌশলে পুরো ভারতের ক্ষমতা হাতে নিলো, তখন মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে খৃষ্টান মিশনারিদের তৎপরতা চালু হয়। পর্যায়ক্রমে পাকিস্তান আমলে এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে খৃষ্টান মিশনারিদের তৎপরতা অব্যাহতভাবে চলতে থাকে।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখি, খৃষ্টানরা যেখানেই গেছে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে আর সমাজের বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা-উপকরণ সরবরাহ করেছে। হাসপাতাল স্থাপন, ঋণসুবিধা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং দরিদ্রতা বিমোচনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নারীদের ক্ষমতায়ন তাদের অন্যতম শ্লোগান আজ। তবে খৃষ্টধর্ম প্রচারই তাদের মূল লক্ষ্য। যা সেবার ছলনায় শুরু থেকেই তারা বাস্তবায়ন করে আসছে।

১৮৫৭ সালে আযাদী আন্দোলনের পর এই উপমহাদেশে ৯০ টি প্রটেস্ট্যান্ট খৃষ্টান মিশনারি কর্মরত ছিল। তারা এদেশে জটিল রোগের চিকিৎসার জন্যে বড় বড় ডাক্তার, সার্জনদের ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আসে এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের মালুম ঘাট, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাসপাতাল তৈরি করে বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দেয়। এর আড়ালে সমতল ভূমি ও পার্বত্য এলাকায় খৃষ্টধর্ম প্রচার পুরোপুরি অব্যাহত রাখে।

মূলত তারা সেবার আডালে খৃষ্টান ধর্ম প্রচারই একমাত্র  উদ্দেশ্য যদিও সেবার নাম দিয়ে থাকে।


৭১ এ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ৩০,০০০ এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। এই এনজিওরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে। প্রশ্ন জাগে, এই টাকা দেয় কারা ? তাদের তো টাকশাল নেই, তারা টাকা বানায় না। বিশ্বের বড় বড় ধনকুবেররা ইয়াহুদি ও খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী। আর কোন ধনকুবের বরং সাধারণ সম্পদশালীও তার অর্থ বেকার খরচ করে না। সুতরাং এটা সুস্পষ্ট যে, মুসলমানদের খৃষ্টান বানানোর জন্য তারা কোটি কোটি টাকা খৃষ্টান মিশনারিতে দেয়।

 🔶Board of Directors এর প্রস্তাব

আযাদী আন্দোলনের পর ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে খৃষ্টানদের Board of Directors গৃহীত প্রস্তাবে যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তাতে খোলাখুলি বলা হয়েছে যে, “প্রকৃতি ভারতীয় উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলটি এই জন্যে ব্রিটেনের কাছে সোপর্দ করে, যাতে এতদঅঞ্চলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত মিশনারিদের বিজয় পতাকা উড্ডীন হয়। তাই এতদঞ্চলকে খৃষ্টান রাষ্ট্রে পরিণত করার আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিৎ।” (সূত্রঃ তারিখে পাকিস্তান)

🔻🔷🔻বর্তমানে এটাই বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চলছে।

যে সমস্ত এনজিও সেবার নামে সরাসরি ধর্ম প্রচার করছে

অসহায়, নিরক্ষর মানুষকে সেবা দেওয়ার নামে খৃষ্টধর্মে দীক্ষিত করতে যে সংস্থাগুলো উল্লেখযোগ্য তৎপরতা চালাচ্ছে তার মধ্যে কিছু হলো –

(১) কারিতাস, (২) এন.সি.সি. (ননলাইট সেন্ট্রাল কমিটি), (৩) লুথারান মিশন, (৪) দ্বীপশিখা, (৫) সালভেশন আর্মি, (৬) ওয়ার্ল্ড ভিশন, (৭) সি.ডি.এস. (সেন্ট্রাল ফর ডেভেলপম্যান্ট সার্ভিস), (৮) আর.ডি.আর.এস. (রংপুর দিনাজপুর রোড এন্ড সার্কেল), (৯) সি.সি.ডি.ভি. (খৃষ্টান কমিশন অফ ডেভেলপম্যান্ট), (১০) হিড বাংলাদেশ, (১১) সেভেন ডে এডভেঞ্চারিস্ট, (১২) চার্চ অফ বাংলাদেশ, (১৩) পের ইন্টারন্যাশনাল, (১৪) সুইডিশ ফ্রেমিশন, (১৫) কনসার্ন, (১৬) এডরা, (১৭) অস্ট্রেলিয়ান ব্যাপটিস্ট সোসাইটি, (১৮) এমসিনি, (১৯) ওয়াই.ডব্লিউ.সি. (২০) ফেমিলিজ ফর চিলড্রেন, (২১) আল-হানিফ কল্যাণ ট্রাস্ট ইত্যাদি।

এসব সংস্থা বাজেটের ৯০ ভাগ খৃষ্টানদের অথবা খৃষ্টধর্মে দীক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনায়ময় ব্যক্তিদের পিছনে ব্যয় করে থাকে।

 🔻🔷🔻এনজিওদের কার্যক্রম 

চার্চ অফ বাংলাদেশ

ডঃ জিগা বি. আলসেনের পরিচালনায় “চার্চ অফ বাংলাদেশ” নামে একটি খৃষ্টান মিশনারি এনজিও “মৌলবাদী এনজিও”, ১৯৬৫ সালে কক্সবাজারের মালুমঘাটে “মেমোরিয়াল হসপিটাল” নামে একটি খৃষ্টান হাসপাতাল তৈরি করে। এলাকার লোকজন ছিল অভাবগ্রস্ত ও নিরক্ষর। এই সুযোগে ড. ভিগা বি আলসেন তার প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে সেবাদানের মাধ্যমে ৩৮ বছর এই মালুমঘাটের চকরিয়ায় খৃষ্টধর্ম প্রচার করতে থাকেন। ১৯৬৪ সালে মালুমঘাটে যেখানে একজনও খৃষ্টান ছিল না, তার প্রচেষ্টায় ২০০৩ সালে সেখানে খৃষ্টানদের সংখ্যা ৪০ হাজারে উন্নীত হয়েছে।
তাহলে ২০২১ সনে এসে তা কতটুকু হয়েছে তার হিসাব এখনও অজানা।

 তারা আশেপাশের জমি ক্রয় করে নয়া খৃষ্টানদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের দৌলতপুরে মরিয়াম আশ্রমের পাশে তারা বিশাল খৃষ্টান এলাকা গড়ে তুলেছে। সেখানে দুর্গম এলাকায় পাহাড়ের ভিতরে তারা গির্জা নির্মাণ করেছে।

সেভেন ডে এডভেঞ্চারিস্ট
এই “সেভেন ডে এডভেঞ্চারিস্ট” খৃষ্টান মিশনারি তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে ৮৫ টি প্রাইমারী স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল পরিচালনা করে। এসব স্কুলে কোন মুসলমানের সন্তান ভর্তি নেওয়া হয় না। ১৯৯০-৯১ সনে এই “সেভেন ডে চার্চ” ২৩০ মিলিয়ন টাকা খরচ করে বহু মানুষকে খৃষ্টান বানিয়েছে।
হিড বাংলাদেশ
“হিড বাংলাদেশ” নামে এ এনজিও মৌলভী বাজারে, কমলগঞ্জে, সুন্দরবনে সেবার আড়ালে খৃষ্টধর্ম প্রচার করে যাচ্ছে। সূচনাতেই তারা ৬ লক্ষ মার্কিন ডলার নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে।
সি. সি. ডি. ভি.

“সি. সি. ডি. ভি.” নামক সংস্থা রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে কাজ করছে। আর “ডি.আর. আর. এস.” এর সমস্ত সংগঠন টাকা নেয় সুইডেন, ডেনমার্ক, ইংল্যান্ড থেকে। টাকা আনে মিস্টার টরবেন পিটারসের নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে ২১৮ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর অঞ্চলে সাঁওতাল উপজাতিদেরকে দাওয়াত দিয়ে ৩৫ হাজার সাঁওতালকে তারা খৃষ্টান বানিয়েছে।

 🔻পাহাড়িদের বিভিন্ন উপজাতি

এগুর্ণা, চাকমা, মারমা, তনচৈঙ্গা, চাক, ক্ষুমি, ভৌম, ত্রিপুরা, খাশিয়া, মনিপুরী, খিয়াং, মাংখু, লুশাই, মগ, গারো, মুরু, সাঁওতাল, রাখাইন, হাজং, রাজবংশী, মুরং, কুকি, হুদি, পাংখো, উড়াও, বোনজোগী, দালই, লুসাই, খুশী, তংচংগা, বংশাই, বোম, মুনী চাক, চোক, হরিজন, মুন্ডা ইত্যাদি –
 এগুলো আলাদা আলাদা জাতিগোষ্ঠী। এক গোত্র আরেক গোত্রের সাথে বিয়ে-বন্ধনে আবদ্ধ হয় না। বৈবাহিক ক্ষেত্রে তারা বংশীয় সীমাবদ্ধতার মধ্যে আবদ্ধ। এসব সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধু “পাঙন” সম্প্রদায় ছাড়া অন্য উপজাতির অধিকাংশ লোক ধর্মান্তরিত হয়ে খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করেছে। আবার ১০.৫ % হিন্দু জনসংখ্যার বিপুল পরিমাণ লোক ধর্মান্তরিত হয়ে খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করেছে।

🔶মুসলমানের সন্তান নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে চিনে না, মেরী ও যীশুকে চিনে !

বারিধারা নতুন বাজারের পিছনে একটি বড় বস্তি আছে। একদিন বিকালে বন্ধুবর মাওলানা মুজিব সাহেবসহ ঐ এলাকায় ঘুরছিলাম। চোখের সামনে পড়লো একটি স্কুল, সাথে গির্জা। স্কুলটি দেখে আমাদের কৌতূহল হলো।

স্কুলের সামনে ১০ / ১২ বছর বয়সের কয়েকটি ছেলে খেলাধুলা করছে। একজনকে তার নাম জিজ্ঞেস করলে “রাকিবুল ইসলাম” বলে উত্তর দিলো এবং এও জানতে পারলাম যে, সে এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। তাকে কালেমা জিজ্ঞাসা করলে “পারি না” বলে উত্তর দেয়। এবার আমাদের নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাম জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে বললো “জানি না”। এবার জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি কি মেরী বা যীশুকে চেনো ? সে উত্তর দিলো – হ্যা, চিনি। আবার জিজ্ঞাসা করলাম – কিভাবে চেনো। সে বললো, আমাদের স্যার আমাদের শিখিয়েছেন।

দেখুন, আমাদের উদাসীনতার সুযোগে আমাদের সন্তানদেরকে তারা খৃষ্টান বানাচ্ছে। এটাই হলো তাদের সেবার আসল রূপ।

 🔶মিশনারির স্বরূপ সন্ধানে

পৃথিবী জুড়ে খৃষ্টধর্ম প্রচার কাজে তাদের সেবার ছদ্মাবরণে বহুরূপী কর্মকাণ্ড দেখে সচেতন মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে – “খৃষ্টধর্ম কি আসলেই কোন ঐশী ধর্ম ?”

তা যদি ঐশীই হয়, তাহলে মিশনারিদের খৃষ্টধর্ম প্রচার কাজে কেন এতো ব্যাপক কৃত্রিমতা, জালিয়াতি, অপপ্রচার ও প্রলোভন ? 

বর্তমানে খৃষ্টধর্মের ধ্বজাধারীগণ বিশ্বব্যাপী শান্তি তথা পাপ মুক্তির জন্য ত্রাণকর্তার ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। অথচ তারাই আড়াই শতাব্দী আগে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রতিষ্ঠা করে। যার ফলে বর্তমান খৃষ্টধর্মের কেন্দ্রভূমি পাশ্চাত্যেই ব্যক্তি স্বার্থ, বর্ণবাদের উন্মত্ততা, নৈতিক অধঃপতন তথা অনৈতিক কর্মকাণ্ড বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে। খৃষ্টবাদের প্রচারকগণ এদেশেও তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থে নানা সূক্ষ্ম কুটচালের মাধ্যমে অগ্রসর হচ্ছে।

আজ তাই প্রতিটি সচেতন ধার্মিক ব্যক্তির তাদের এই অশুভ ও মানবতাবিরোধী কর্মতৎপরতা সম্পর্কে অবহিত হওয়া আবশ্যক। আসুন তাদের রূপ উদঘাটন করি।

 🔷মিশনারি শ্রেণীবিভাগ

বিশ্বে খৃষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ১৫৬ টি প্রধান এবং ২৮,০০০ টি উপদল রয়েছে। মূল দলগুলোর মধ্যে দুটো দলই প্রধান – ক্যাথলিক ও প্রটেস্ট্যান্ট। এদের মধ্যে শুধু ধর্ম-বিশ্বাসের পার্থক্যই নয় বরং মূল ধর্মগ্রন্থ বাইবেলের মধ্যেও রয়েছে পার্থক্য। তাছাড়া তাদের বাইবেল সংস্করণগুলোর একটির সাথে অন্যটির বহুলাংশেই মিল নেই।

  🔷বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক

যদিও প্রচলিত খৃষ্টধর্ম ছিল সেমেটিক অর্থাৎ প্রাচ্যের, কিন্তু বর্তমানে পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদীরাই এর ধারক-বাহক হয়ে বসেছে। পাশ্চাত্যের বিভিন্ন সরকার ও সংস্থার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাহায্য সহযোগিতায় খৃষ্টান মিশনারীরা বিশ্ব জুড়ে গড়ে তুলছে খৃষ্টধর্ম প্রচার ও প্রচারের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক।

🔷প্রতিষ্ঠান ও প্রচার মাধ্যম

বর্তমানে ৭০ হাজারের বেশী মিশনারি ক্রুসেডার (ধর্ম যোদ্ধার) শিকার মুসলিম বিশ্ব। এ প্রেক্ষিতে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলেছে চার্চ ও বিভিন্ন ছদ্মবেশী সেবা, শিক্ষা ও আর্থিক দাতা প্রতিষ্ঠান “এনজিও” সমূহ।

সরাসরি মিশনারির মধ্যে “হ্যাগাই ইন্সটিটিউট” এমন একটি সংস্থা, যার কাজ হলো ধর্মের অসারতা প্রমাণ ও ইসলামের নবজাগরণকে প্রতিহত করা এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। এ ব্যাপারে জার্মান, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত থেকে প্রচুর নিষিদ্ধ ও ইসলাম বিরোধী বই এদেশে বহু কথিত বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, নাট্যকর্মী, কণ্ঠশিল্পী এবং প্রগতিবাদীদের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। “হ্যাগাই ইন্সটিটিউট” ২০০০ অ্যালুমনই (সদস্য) নিয়ে ৫ টি মহাদেশের ৭০ টি প্রদেশে ১,০০,০০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ২০০০ সালের মধ্যে ১০ লক্ষ মানুষকে দক্ষ প্রচারকরূপে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বে খৃষ্টধর্ম প্রচারের জন্য পাঠাবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক খৃষ্টান মিশনারি গবেষণা বুলেটিন থেকে প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানের মাধ্যমে জানা যায় যে, ১৯৯১ সালে বিশ্বব্যাপী খৃষ্টধর্ম প্রচার ও ইসলামী জাগরণকে প্রতিহত করতে ১,২০,৮৮০ টি প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশে প্রটেস্ট্যান্ট গোত্রের ইয়াং খৃষ্টান ওয়ার্কস এবং এভরী হোম কান্ট্রাস্ট, খৃষ্টান কমিশন ফর ডেভেলপম্যান্ট ইন বাংলাদেশ (সি. সি. ডি. বি.) ইয়াং ম্যানস খৃষ্টান এসোসিয়েশন (ওয়াই. এম. সি.) উল্লেখযোগ্য। তারা বাংলাদেশের নানা স্থানে বিভিন্ন নামে অসংখ্য সংস্থা স্থাপন করেছে। যেমন –

* নুর-ই-ইলাহী, পোস্টবক্স নং ৩৫০৭, ঢাকা,

* খোদার পথ, পোস্টবক্স নং ৫৮, ঢাকা – ১০০০,

* মাসীহী জামাত, পোস্টবক্স নং ৩৫০৭, ঢাকা,

* আল হানিফ কল্যাণ ট্রাস্ট,

* ডাকযোগে বাইবেল শিক্ষার জন্য পোস্টবক্স ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

১৯৯৭ সালের তথ্য ও পরিসংখ্যানের সংরক্ষণ ও প্রচারে ব্যবহৃত হয় ৩১ কোটি ৫০ লক্ষ কম্পিউটার সেট। তাছাড়া ৩৪০০ রেডিও ও টেলিফোন সেন্টার খৃষ্টধর্ম প্রচারে নিয়োজিত ছিল। দেশে বর্তমানে “ঈমানের পথ” নামে ইসলামী আঙ্গিকে রেডিও অনুষ্ঠান চালু করেছে।

🔷🔶প্রকাশনা     

বই প্রচার ও পত্রাদি বিলি

উল্লিখিত আন্তর্জাতিক খৃষ্টান মিশনারি গবেষণা বুলেটিন থেকে জানা যায়, খৃষ্টধর্ম বিষয়ক ১ লাখ ৯ হাজার ৯ শত ধরনের বই ও একত্রিশ হাজার তিনশত রকম ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয়। মুসলিম বিশ্বে বিনামূল্যে বিলিকৃত বাইবেলের সংখ্যা প্রায় ৬৩ কোটি ৯ লক্ষ ৪০ হাজার এবং মুসলমানদের জন্য ইসলামী পরিভাষায় রচিত বাইবেল অর্থাৎ “কিতাবুল মুকাদ্দাস” আঠারো কোটি তিরাশি লক্ষ তিরিশ হাজার। সর্বোপরি খৃষ্টবাদ, ইউরোপীয় ধর্মদর্শ ও সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লক্ষ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম মিথ্যাচারে সমৃদ্ধ অগণিত পুস্তক-পুস্তিকা ও প্রচারপত্র প্রকাশ করে চলেছে। ১৬ ই এপ্রিল ১৯৯৮ ইং সনে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এডওয়ার্ডের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ১৮৯০ সাল থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে অর্থাৎ ২৫ বছরে ইসলামের বিরুদ্ধে ষাট হাজার রকম বই প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও ভিডিও, অডিও ক্যাসেট প্রকাশ করা এবং “স্বর্গমত ম্যাগাজিন” উল্লেখযোগ্য।

 🔷🔶প্রকাশনায় অপকৌশল

ধর্মগ্রন্থ ও সংস্থার নাম পরিবর্তন

মিশনারিরা মানুষকে ধর্মান্তরিত করার জন্য বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে থাকে। যেমন খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ সারা বিশ্বে বাইবেল নামেই বহুল পরিচিত। কিন্তু স্থান-কাল-পাত্রভেদে নাম পরিবর্তন করার কৌশলে খৃষ্টান মিশনারিদের জুড়ি নেই। সর্ব প্রথম বাংলা ভাষায় খৃষ্টানরা বাইবেলকে “ধর্ম পুস্তক” নামে ১৯৬৩ সালে “পাকিস্তান বাইবেল সোসাইটি” থেকে প্রকাশ করে। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে একই সংস্থা “বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি” (বি. বি. এস.) তাদের গ্রন্থের নাম পরিবর্তন করে “পবিত্র বাইবেল” নামে প্রকাশ করে। উল্লেখ্য, উভয় নামের বাইবেলে (তথাঃ ধর্ম পুস্তক
 – ১. “বাংলাদেশ বাইবেল”, ২. “পবিত্র বাইবেল”; মৌলিকভাবে দুটো অংশ রয়েছে – ১. “নতুন নিয়ম”, ২. “পুরাতন নিয়ম”) পরবর্তীতে সংস্থার নাম পাল্টিয়ে “মসীহী জামাত” নামকরণ করে তাদের পবিত্র বাইবেলকে “কিতাবুল মুকাদ্দাস” নামে প্রকাশ করে। এই কিতাবুল মুকাদ্দাসে “পুরাতন নিয়ম” অংশের নামকরণ করেছে “তৌরাত, জবুর ও নবীদের কিতাব” এবং “নতুন নিয়ম” অংশের নামকরণ করেছে “ইঞ্জিল শরীফ”। প্রমাণ্য ঐতিহাসিক সত্য হলো, ওসব নামের তৌরাত, জবুর ও ইঞ্জিল শরীফ আল্লাহ’র পক্ষ থেকে অবতীর্ণ অবিকৃত কিতাব নয়।

★★মুসলিম ঐতিহ্যবাহী নকশা নকল★করে কি ভাবে ধোকায় ফেলার চক্রান্ত করছে দেখুন।

খৃষ্টান মিশনারিরা তাদের “কিতাবুল মুকাদ্দাস” 
ও “ইঞ্জিল শরীফ” এর মলাট সম্পূর্ণ ইসলামী ঐতিহ্যের ধারক প্রচ্ছদে অলংকৃত করে প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন রঙের সুদৃশ্য কভারের উপর সোনালী রঙের ইসলামী ধাঁচের প্রচ্ছদ দেখে এটাকে পবিত্র কুরআনের তাফসীর বা পবিত্র হাদিসগ্রন্থ বলে ভুল করা অস্বাভাবিক নয়।

তারা এখন তাদের যাবতীয় ধর্মীয় বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা, পত্রাদির প্রচ্ছদ, মসজিদ, কালেমা, আরবি বর্ণের শৈল্পিক নকশা দ্বারা অলংকৃত করার অপকৌশল অবলম্বন করছে। এমনকি ইসলামের মৌলিক বিষয়াদি যেমন পর্দা, নামায, নারী শিক্ষা, ওযু ইত্তাদিকে বিকৃত উপস্থাপনে ও বক্তব্যে সমৃদ্ধ করে বই প্রকাশ করে চলেছে।

এ গুলোতে সাধারণ  মুসলিমরা বিভ্রান্ত হচ্ছে  ধর্মীয় শিক্ষার অভাবের কারণে। 

 🔷ইসলামী পরিভাষা ও নামাবলী ব্যবহার

খৃষ্টান মিশনারিরা এতটুকুতেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা তাদের ধর্ম গ্রন্থের নাম পরিবর্তনের সাথে সাথে ইসলামী পরিভাষা, শব্দ ও নামাবলী চুরি করে তাদের ধর্মগ্রন্থ ও বইগুলো প্রকাশ করে চলেছে। তাদের পবিত্র বাইবেলের কিছু শব্দ উল্লেখ করা হলো, যে শব্দগুলোকে তারা তাদের গ্রন্থ কিতাবুল মুকাদ্দাসে ইসলামী পরিভাষা ও নামের রূপ দিয়েছে (কিতাবুল মুকাদ্দাসের পরিবর্তিত রূপ ব্র্যাকেটে উল্লেখ করা হলো) –

আদিপুস্তক (আল-তৌরাত), প্রথম সিপারা (পয়দায়েশ), পরমগীত (নবীদের কিতাব সোলায়মান), গীতসংহিতা (আল জবুরঃ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম সিপারা), ঈশ্বর (আল্লাহ), ঈশ্বর পুত্র (ইবনুল্লাহ), পরিত্রাণ (নাজাত), ভাববাদী (নবী), ভজনা (এবাদত), বিশ্বাস (ঈমান), ব্যবস্থা (শরীয়ত), আব্রাহাম (ইব্রাহীম), মোশি (মুসা), দায়ুদ (দাউদ), যীশুখৃষ্ট (ঈসা মসীহ), দূত (ফেরেশতা), শির্ষ (সাহাবী), প্রায়শ্চিত্ত (কাফফারা), উবড় (সিজদা), যাচঞা (মুনাজাত), অলৌকিক কার্য (মোযেজা) ইত্যাদি।

 🔷বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম জালিয়াতি

সর্বোপরি তাদের নির্লজ্জ ও জঘন্যতম জালিয়াতির দৃষ্টান্ত হলো দীর্ঘ ১৬ বছর সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার পর কুরআনের বিভিন্ন আয়াত চুরি করে প্রতিটি অধ্যায়ে আরবিতে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” দিয়ে শুরু করে তাদের কথিত ইঞ্জিল শরীফ প্রকাশ করেছে। অথচ তাদের কোন কিছু শুরু করা হয় “পিতা-পুত্র ও পবিত্র আত্মা” এর নামে। বিশ্বের ইতিহাসে ধর্মের নামে এতো বড় জালিয়াতির নজির আর নেই।

 🔷পবিত্র কুরআনের অপব্যাখ্যা

ইদানিং তাদের ঘৃণ্য প্রতারণা ও ধোঁকাবাজী চরমে পৌঁছেছে। তারা কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের আংশিক প্রয়োগ এবং নিজেদের মনগড়া বানোয়াট অনুবাদ ও বাইবেলের স্বপক্ষে অপব্যাখ্যা দিয়ে নানা রকম পুস্তিকাদি প্রকাশ ও প্রচার করছে। যেমন ত্রিত্ববাদের মাঝে আল্লাহ এক, ইঞ্জিল ও কুরআনে ঈসা কালিমাতুল্লাহ’র ব্যক্তিসত্তা রক্তমাংসের দেহে আবৃত, আমরা কিভাবে সালাত কায়েম করি ?

তারা এখন তাদের বইয়ে সরাসরি কুরআনের আরবি আয়াত সংযোজন করছে। মুসলমানরা কুরআনের আয়াতকে সম্মান করে বলে তাদের ঘরে মিশনারিদের রচিত বই-পুস্তক স্থান পায়। কালার সমৃদ্ধ তাদের এ বইগুলো পড়ে সরল মনের সাধারণ মুসলমানরা বিভ্রান্ত হয় এবং ঈমান আমল হারিয়ে চিরস্থায়ী জাহান্নামের পথ ধরে। এভাবে মিশনারিগুলো তাদের (ঈমান ধংসের) লক্ষ্যে পৌছতে সক্ষম হয়।
এ জন্য  যেন তেন বই কিনতে নেই  পডতে ও নেই,  যদিও পডা হয় সন্দেহ  লাগলে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন  আলেম ওলামাদের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী, যাচাই বাছাই করার জন্য। 

তাদের প্রত্যেক বইয়ের শেষে প্রশ্নপর্ব থাকে। সেগুলোর উত্তর প্রদানে আরো বই ও উপহারের আশ্বাস দেওয়া হয়। বইয়ের বিকৃত বিষয়ের কোন প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। তবুও কেউ প্রশ্ন করলে তারা নীরবতার কৌশল অবলম্বন করে। এভাবে যে কোন মূল্যে পাঠক থেকে মিথ্যার সাক্ষ্য নিয়ে কুফরীর পক্ষে স্বীকৃতি আদায় করে নেয়।

 🔷এলাকা ও জনগণ নির্ধারণ

তারা সমগ্র বাংলাদেশকে প্রচারের আওতাভুক্ত করার জন্য ১৯৬৮ সালে ১লা সেপ্টেম্বর তৎকালীন ঢাকা মহাপ্রদেশের অধীনে পুরো পূর্ব পাকিস্তানকে চারটি ধর্ম প্রদেশে বিভক্ত করে, এগুলো হলো –

চট্টগ্রাম ধর্মপ্রদেশঃ এ ধর্মপ্রদেশের আওতাভুক্ত এলাকা প্রদেশের সমস্ত দক্ষিণাঞ্চল।

দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশঃ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে এ ধর্মপ্রদেশ। এ ধর্মপ্রদেশের পরিধি যমুনা নদীর পশ্চিমাঞ্চল তীর থেকে দক্ষিণে পদ্মা এবং পশ্চিমে ভারতীয় সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত।

খুলনা ধর্মপ্রদেশ।

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ।

এ সকল এলাকায় তারা সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। আর হবেই না কেন ? তাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য রয়েছে বিশাল অর্থের যোগান। ১৯৯৭ সালে খ্রিস্টবাদের প্রচার সংস্থাগুলোর মধ্যে শুধু ওয়ার্ল্ড ভিশনের অর্থ পরিকল্পনা ছিল ২১২৯ মিলিয়ন ইউ.এস. ডলার।

 
🔶🔶প্রচার ও প্রচারণার অপকৌশল

নকল ইমাম তৈরি

তারা গোপনে খৃষ্টান দেশগুলোতে ছদ্মবেশী ইমাম তৈরি করে মুসলিম দেশে পাঠিয়ে দেয়। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসকে নষ্ট করে তাদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করাই হলো এর মূল উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাদ্রীদের সম্মেলনে “জবাজ” নামক এক পাদ্রী বিশেষ সভায় সভাপতিত্বের ভাষণে বলেনঃ মুসলমানদের সাথে বিতর্কে আমরা বিজয়ী হতে পারবো না। তাই আমরা তাদের পরস্পরে ঝগড়া বিবাদ লাগিয়ে দেওয়ার কৌশল অবলম্বন করছি। এটা আমাদের সফলতার একমাত্র পথ। সুতরাং আমাদের সবাইকে দেশে বিদেশে এ ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।

তারা একধাপ এগিয়ে নিজেদের খৃষ্টান পরিচয় না দিয়ে নিজেদের পরিচয় দেয় ঈসায়ী মুসলমান। তারা কালিমাও বানিয়েছে – লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ঈসা মসীহুল্লাহ।


🔻যুবতী প্রচারক

খৃষ্টান মিশনারির নারী সদস্যরা তাবলীগের ছদ্মবেশে মুসলিম নারীদের ধর্মান্তরিত করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের প্রশিক্ষিত খৃষ্টান নারীরা (ধর্মান্তরিত করার) লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য মুসলমানদের সাথে বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ হচ্ছে, যাতে পরবর্তী জেনারেশনকে তাদের ধর্মে দীক্ষিত করতে পারে। কারণ স্বামী মুসলমান হলেও পরবর্তী জেনারেশনই তাদের টার্গেট। এমনকি মহিলা ফেরীওয়ালাদের মাধ্যমে তারা ধর্মপ্রচার করে থাকে।

🔷🔶একটি পরিসংখ্যান

দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন মূল দাবী হলেও তাদের কোন কোন এনজিও এসব কর্মকাণ্ডের আড়ালে খৃষ্টান মিশনারির “ধর্মান্তর কর্মসূচি” প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তারা সমাজের অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীকে ধর্মান্তরের প্রধান টার্গেট বানায়।
এ গুলোর প্রমান ভরি ভরি।
 খৃষ্টান মিশনারি ও তাদের সহযোগী এনজিওগুলো কাজের ও কর্মসূচীর দিক দিয়ে ভিন্ন হলেও তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন। উভয়ের প্রধান লক্ষ্য বিশ্বে খৃষ্টান জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটানো। এ লক্ষ্য সামনে রেখে আমাদের দেশে এনজিও ও মিশনারিগুলো কাজ করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা অনেকটা সফল। বাংলাদেশের খৃষ্টান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করলে সে কথার প্রমাণ মিলে।

১৮৮১ সালে প্রতি ৬ হাজার লোকের মাঝে ১ জন খৃষ্টান ছিল। সে সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭৪ সালে প্রতি ৩২৬ জনের মাঝে ১ জন, ১৯৮১ সালে প্রতি ২৯ জনের মাঝে ১ জন, ১৯৯১ সালে প্রতি বাইশজনের মাঝে একজন খৃষ্টান রয়েছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। 

★★১৯৩৯ সালে খৃষ্টান জনসংখ্যা ছিল ৫০ হাজার। তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৯১ সালে আদমশুমারিতে খৃষ্টান জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখে। ২০০১ সালের আদমশুমারিতে খৃষ্টান জনসংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকায় খৃষ্টানদের সবচেয়ে বড় গির্জা “হলি রোজারি”। ১৮৭৭ সালে পর্তুগিজ ব্যবসায়ীগণ এটি নির্মাণ করেন। ১৯৫২ সালে উক্ত গির্জায় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ১৫৩ জন আর ১৯৭৬ সালে তা ৩০০০ জনে উন্নীত হয়, ১৯৮৩ সালে উপস্থিতি ৬০০০ জনে আর ১৯৯৮ সালে উপস্থিতির সংখ্যা ৫০,০০০ এ পৌঁছে।

বাংলাদেশে এনজিও ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী বিদেশী সাহায্যপুষ্ট এনজিও সংখ্যা ৮৫০। এর বাইরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন নিয়ে কাজ করছে এমন এনজিওর সংখ্যা বিশ থেকে ত্রিশ হাজার অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রতি ১.১৮ বর্গমাইলের মাঝে একটি এনজিও কাজ করছে। নামে বে- নামে। হয়তো অনেকে জানেইনা যে এ গুলো খৃষ্টান মিশনারী। 


★★বাংলাদেশে এনজিও কার্যক্রমের বিস্তার সম্পর্কিত ব্যাপারগুলোর পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ পর্যন্ত এনজিও আওতাধীন গ্রামের সংখ্যা ৪০ হাজার, পরিবারের সংখ্যা ৩৫ লাখ। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে এনজিওদের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকা। উপ-আনুষ্ঠানিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩০ হাজার। ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা ১০ লাখ, বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ৪৪ লাখ, এনজিওদের রোপণকৃত বৃক্ষের সংখ্যা ৪ কোটি। উপরোক্ত তথ্য ও সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছ?

পরিশেষে এ দীর্ঘ আলোচনার পর বলতে চাই। 
যে,  এ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ইসলামের ঐতিহ্য হেফাজতে এ দেশের সর্ব সাধারণের সাথে সাথে আলেম ওলামা পীর মাশায়েখ দায়ী ইলাল্লাহ সহ সচেতন  দেশ প্রেমিক ইসলাম প্রিয় নাগরিক  সমাজের  ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় খৃষ্টান মিশনারীদের অপতৎপরতা কে রুখে দিতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ। এ জন্য  কৌশল অবলম্বন করে অগ্রসর হতে হবে।


সংকলন সংযোজন 
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া