মহিলাদের মসজিদে গমন সম্পর্কে ৪ মাজহাব
নিষেধের ৯টি দলিল ও ঘরে পড়া উত্তমের ১২টি দলিলের
💢 এসমস্ত কারণে চার মাযহাবের ইমামগণ কিছুটা ভিন্ন ভাষায় মহিলাদের এ ফিতনার যুগে মসজিদে গমন করাকে মাকরূহ বলে ফাতওয়া দিলেন।
.
সুতরাং মহিলাদের মসজিদে গমন বর্তমান যুগেও মাকরূহে তাহরীমা ।
.
মহিলাদের মসজিদে গমন সম্পর্কে চার মাযহাবের ইমামগণের মতামত
.
🔲 ক.ফিকহে হানাফী
.
হানাফী ইমামগণের মতে যুবতীদের মসজিদের জামাতে শরীক হওয়া মাকরূহ। বৃদ্ধাদের ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফা রা. ফযর , মাগরিব ও ইশার নামাযে মসজিদে গমন করার অবকাশ দিয়েছেন।
ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ র.-এর মতে বৃদ্ধা মহিলারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাযেই মসজিদের জামাতে শরীক হতে পারবে।
উল্লেখ্য, হানাফী মাযহাবের ইমামগণ উপরোক্ত ফয়সালা ফেতনার আশঙ্কা থাকা বা না থাকার ভিত্তিতে প্রদান করেছেন।
পরবর্তী যুগে দিনে কিংবা রাতে যুবতী কিংবা বৃদ্ধা সব মহিলা জন্য ফেতনার আশঙ্কা বিদ্ধমান থাকায় সকল নামাযে মসজিদের জামাতে শরীক হওয়া নিষেধ করে ফাতওয়া জারি করেছেন।
.
🌻 আল্লামা কাসানী র. বলেন-
ﻭَﻟَﺎ ﻳُﺒَﺎﺡُ ﻟِﻠﺸَّﻮَﺍﺏِّ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭﺝُ ﺇﻟَﻰ ﺍﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺎﺕِ، ﺑِﺪَﻟِﻴﻞِ ﻣَﺎ ﺭُﻭِﻱَ ﻋَﻦْ ﻋُﻤَﺮَ – ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ – ﺃَﻧَّﻪُ ﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﺸَّﻮَﺍﺏَّ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭﺝِ؛ ﻭَﻟِﺄَﻥَّ ﺧُﺮُﻭﺟَﻬُﻦَّ ﺇﻟَﻰ ﺍ ’; ﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺔِ ﺳَﺒَﺐُ ﺍﻟْﻔِﺘْﻨَﺔِ، ﻭَﺍﻟْﻔِﺘْﻨَﺔُ ﺣَﺮَﺍﻡٌ، ﻭَﻣَﺎ ﺃَﺩَّﻯ ﺇﻟَﻰ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ﻓَﻬُﻮَ ﺣَﺮَﺍﻡٌ .
যুবতীদের জন্য জামাতে বা মসজিদে আগমন বৈধ নয়। যার প্রমাণ হযরত ওমর রা. যুবতীদের মসজিদে আসতে নিষেধ করেছেন। কেননা যুবতীদের উপস্থিত হওয়াটা ফেতনার কারণ। আর ফেতনা সৃষ্টি করা হারাম এবং যে কাজের মাধ্যমে ফেতনার সৃষ্টি হয় তাও হারাম।
.
🌻ইনায়াহ শরহে হিদায়াহ গ্রন্থে উল্লেখ আছে-
ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﻧَﻬَﻰ ﻋُﻤَﺮُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭﺝِ ﺇﻟَﻰ ﺍﻟْﻤَﺴَﺎﺟِﺪِ ﻓَﺸَﻜَﻮْﻥَ ﺇﻟَﻰ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ – ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ – ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ﻟَﻮْ ﻋَﻠِﻢَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ – ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ – ﻣَﺎ ﻋَﻠِﻢَ ﻋُﻤَﺮُ – ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ – ﻣَﺎ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻜُﻦَّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭﺝِ، ﻓَﺎﺣْﺘَﺞَّ ﺑِﻪِ ﻋُﻠَﻤَﺎﺅُﻧَﺎ ﻭَﻣَﻨَﻌُﻮﺍ ﺍﻟﺸَّﻮَﺍﺏَّ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭﺝِ ﻣُﻄْﻠَﻘًﺎ .
হযরত উমর রা. তার খিলাফতকালে নারীদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করেন। তখন হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট উমর রা.-এর এ সিন্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। জবাবে হযরত আয়েশা রা. বলেন, তোমাদের চালচলন সম্পর্কে হযরত উমর রা. যা জানেন তা যদি রাসূল স. অবগত হতেন তাহলে রাসূল স. তোমাদের কখনো মসজিদে গমনের অনুমতি দিতেন না।
.
🌻 আল্লামা আইনি র. বলেন, আমাদের উলামায়ে কিরাম এ হাদীসকে দলীলস্বরূপ গ্রহণ করে যুবতীদের জন্য মসজিদে আসা একেবারে নিষেধ করে দিয়েছেন। [আল ইনায়াহ : ১/৩৭৬]
🌻 হিদায়াহ গ্রন্থে রয়েছে-
ﻭﻳﻜﺮﻩ ﻟﻬﻦ ﺣﻀﻮﺭ ﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺎﺕ ” ﻳﻌﻨﻲ ﺍﻟﺸﻮﺍﺏ ﻣﻨﻬﻦ ﻟﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻦ ﺧﻮﻑ ﺍﻟﻔﺘﻨﺔ ” ﻭﻻ ﺑﺄﺱ ﻟﻠﻌﺠﻮﺯ ﺃﻥ ﺗﺨﺮﺝ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﺠﺮ ﻭﺍﻟﻤﻐﺮﺏ ﻭﺍﻟﻌﺸﺎﺀ ” ﻭﻫﺬﺍ ﻋﻨﺪ ﺃﺑﻲ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ” ﻭﻗﺎﻻ ﻳﺨﺮﺟﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻠﻮﺍﺕ ﻛﻠﻬﺎ ” ﻷﻧﻪ ﻻ ﻓﺘﻨﺔ ﻟﻘﻠﺔ ﺍﻟﺮﻏﺒﺔ ﺇﻟﻴﻬﺎ ﻓﻼ ﻳﻜﺮﻩ ﻛﻤﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻴﺪ
সারমর্ম- যুবতীদের জন্যে মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণ একেবারে মাকরূহ । বৃদ্ধাদের জন্য ফযর মাগরিব ,এশাতে জায়েয। যোহর আসরে না জায়েয। এটা ইমাম আবু হানীফার নিকট। আর অপর দুইজন ইমামের দৃষ্টিতে বৃদ্ধাদের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কম থাকায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে মসজিদে গমন বৈধ। [হিদায়া : ১২৬/১]
.
🌻আউযাজুল মাসালিক গ্রন্থে আছে,
ﺍﻓﺘﻲ ﺍﻟﻤﺸﺎﺋﺦ ﺍﻟﻤﺘﺄﺧﺮﻭﻥ ﺑﻤﻨﻌﻬﺎ ﺃﻱ ﺍﻟﻌﺠﻮﺯ ﻣﻦ ﺣﻀﻮﺭ ﺍﻟﺼﻠﻮﺍﺕ ﻛﻠﻬﺎ ﻭﺍﻟﺸﺎﺑﺎﺕ ﻭﻻﺑﻌﺪ ﻓﻲ ﺍﺧﺘﻼﻑ ﺍﻻﺣﻜﺎﻡ ﺑﺎﻋﺘﺒﺎﺭ ﺍﺧﺘﻼﻑ ﺍﺣﻮﺍﻝ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻓﺄﻓﺘﻮ ﺑﻤﻨﻊ ﺍﻟﻌﺠﺎﺋﺰ ﻣﻄﻠﻘﺎ ﻛﻤﺎ ﻣﻨﻌﺖ ﺍﻟﺸﻮﺍﺏ ﺑﺠﺎﻣﻊ ﺷﻴﻮﻉ ﺍﻟﻔﺴﺎﺩ . ( ﺍﻭﺟﺰﺍﻟﻤﺴﺎﻟﻚ : ৪/১৫৪)
পরবর্তী মাশায়িখগণ বৃদ্ধাদেরকেও সকল নামাযে অংশগ্রহণ থেকে নিষেধ করেছেন যেমনিভাবে যুবতীদের নিষেধ করা হয়েছিলো। (কেননা) মানুষের অবস্থার পরিবর্তন আসাটা নতুন কিছু নয়। এ দৃষ্টিকোণ থেকে ফেতনার দিকে লক্ষ করে যুবতীদর ন্রায় বৃদ্দাদে;র কেও মসজিদে আসতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। [১৫৪/৪]
🌻ফাতওয়ায়ে আলমগীরী তে আছে-
ﻭَﺍﻟْﻔَﺘْﻮَﻯ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻜَﺮَﺍﻫَﺔِ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺍﻟﺼَّﻠَﻮَﺍﺕِ ﻟِﻈُﻬُﻮﺭِ ﺍﻟْﻔَﺴَﺎﺩِ . ﻛَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﻲ ﻭَﻫُﻮَ ﺍﻟْﻤُﺨْﺘَﺎﺭُ . ﻛَﺬَﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺘَّﺒْﻴِﻴﻦِ .
বর্তমান যামানায় ফাতওয়া নারীদের যেকোন নামাযের জন্য মসিজদে আগমন মাকরূহ। কারণ বর্তমানে ব্যপক হারে ফেতনা ছড়িয়ে পড়েছে, [দ; ফাতওয়ায়ে আলমগীরী ৮৯/১]
.
🔲 খ. মালেকী মাযহাবের মত
.
মালেকী মাযহাবের ইমাগণনের মতে সকল মহিলার জন্য মসিজদে গমনের অনুমতি নেই। কারো কারো ক্ষেত্রে বিশেষশর্ত স্বাপেক্ষ অনুমতি থাকলেও না যাওয়া উত্তম।
🌻 আশ শারহুল কাবীর গ্রন্তে উদ্ধৃত আছে-
ﻭَ ﺟَﺎﺯَ ﺧُﺮُﻭﺝُ ﻣُﺘَﺠَﺎﻟَّﺔٍ ﻟَﺎ ﺃَﺭَﺏَ ﻟِﻠﺮِّﺟَﺎﻝِ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻏَﺎﻟِﺒًﺎ ( ﻟِﻌِﻴﺪٍ ﻭَﺍﺳْﺘِﺴْﻘَﺎﺀٍ ) ﻭَﺍﻟْﻔَﺮْﺽُ ﺃَﻭْﻟَﻰ ( ﻭَ ) ﺟَﺎﺯَ ﺧُﺮُﻭﺝُ ( ﺷَﺎﺑَّﺔٍ ﻟِﻤَﺴْﺠِﺪٍ ) ﻟِﺼَﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺔِ ﻭَﻟِﺠِﻨَﺎﺯَﺓِ ﺃَﻫْﻠِﻬَﺎ ﻭَﻗَﺮَﺍﺑَﺘِﻬَﺎ ﺑِﺸَﺮْﻁِ ﻋَﺪَﻡِ ﺍﻟﻄِّﻴﺐِ ﻭَﺍﻟﺰِّﻳﻨَﺔِ ﻭَﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﻣَﺨْﺸِﻴَّﺔَ ﺍﻟْﻔِﺘْﻨَﺔِ ..… ﺍﻟﺦ
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺪﺳﻮﻗﻲ : ﻗﻮﻟﻪ ﺟﺎﺯ ﺧﺮﻭﺝ ﻣﺘﺠﺎﻟﺔ ﺃﻱ ﺟﻮﺍﺯﺍ ﻣﺮﺟﻮﻋﺎ ﺃﻧﻪ ﺧﻼﻑ ﺍﻻﻭﻟﻲ ﻭﻗﻮﻟﻪ ﺷﺎﺑّﺔ ﺃﻱ ﻏﻴﺮ ﻓﺎﺭﻫﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺸﺒﺎﺏ ﻭﺍﻟﻨﺠﺎﺑﺔ، ﺃﻣﺎ ﺍﻟﻔﺎﺭﻫﺔ ﻓﻼ ﺗﺼﻠﺢ ﺍﺻﻼ .
এমন বয়োবৃদ্ধ মহিলা যাদের প্রতি সাধারণত পুরূষের আগ্রহ থাকেনা; তাদের জন্য ঈদ ও ইস্তিসকার উদ্দেশ্যে মসজিদে বের হওয়া এ শর্তে বৈধ যে তারা সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। সাজসজ্জা পরিহার করবে। ফিতনায় পতিত হওয়ার আশংকা মুক্ত হতে হবে ইত্যাদি ।
.
🌻ইমাম দুসুকী র. বলেন, বয়োবৃদ্ধেেদর বের হওয়া জায়েয এর অর্থ হচ্ছে, অনুত্তম। যুবতী যে শর্ত সাপেক্ষে বের হওয়া জায়েয বলা হয়েছে সেটা যারা সুন্দর আকর্ষণীয় নয় তাদের ক্ষেত্রে । আর যারা সুন্দর আকর্ষণীয় তারা নামাযের জন্য মোটেই বের হওয়ার অনুমতি নেই। [আউজাযুল মাসালিক : ১৫৪/৪]
.
🔲 গ. শাফেয়ী মাযহাবের মতামত
.
শাফেয়ী মাযহাবের ইমামদের মতে যুবতীদের জন্য মসজিদে গমন মাকরূহ। অন্যদের জন্য অনুত্তম, ঘরে পড়াই শ্রেয়।
.
🌻শাফেয়ী মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ কিতাব ‘আল মাজমু’-তে রয়েছে-
ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺑُﻨَﺎ ﺇﻥْ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺷَﺎﺑَّﺔً ﺃَﻭْ ﻛَﺒِﻴﺮَﺓً ﺗُﺸْﺘَﻬَﻰ ﻛُﺮِﻩَ ﻟَﻬَﺎ ﻭَﻛُﺮِﻩَ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻬَﺎ ﻭَﻭَﻟِﻴّﻬَﺎ ﺗَﻤْﻜِﻴﻨُﻬَﺎ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻋَﺠُﻮﺯًﺍ ﻟَﺎ ﺗُﺸْﺘَﻬَﻰ ﻟَﻢْ ﻳُﻜْﺮَﻩْ ﻭَﻗَﺪْ ﺟَﺎﺀَﺕْ ﺃَﺣَﺎﺩِﻳﺚُ ﺻَﺤِﻴﺤَﺔٌ ﺗَﻘْﺘَﻀِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺘَّﻔْﺼِﻴﻞَ
অর্থাৎ শাফেয়ী ইমামগণ বলেন, মহিলা যদি যুবতী কিংবা এমন বয়স্কা হয় যে, পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে; তাহলে তাদের জন্য মসজিদে গমন মাকরূহ। আর যে বৃদ্ধা পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না তার জন্য মসজিদে গমন মাকরূহ নয়। এ ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীস এসেছে যেগুলো যুবতী ও ব্দ্ধৃার হুকুমের মাঝে তারতম্যের দাবী রাখে। [আল মাজমূ ১৭১/৪]
.
🔲ঘ. হাম্বলী মাযহাব
.
হাম্বলী মাযহাবেও যুবতী সুন্দরী রমনীদের ক্ষেত্রে মসজিদে গমন মাকরূহ। অন্যান্যদের জন্য মসজিদ গমন মাকরূহ না হলেও অনুত্তম বরং ঘরে পড়াই উত্তম।
🌻আউযাজুল মাসালিক গ্রন্থে নাইলুল মাআরিব কিতাবের উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে-
ﻭﻳﻜﺮﻩ ﻟﺤﺴﻨﺎﺀ ﺣﻀﻮﺭﻫﺎ ﻣﻊ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ، ﻭﻳﺒﺎﺡ ﻟﻐﻴﺮﻫﺎ ﺣﻀﻮﺭ ﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺔ .
সুন্দরীদের জন্য পুরুষদের সাথে জামাতে অংশগ্রহণ মাকরূহ। অন্যান্যদের জন্য অবকাশ আছে। [আওজায : ১৫৪/৪]
.
💝 চার মাযহাবের মতামতের সারকথা
.
যুবতী মহিলাদের জন্য মসজিদে গমন চারো মাযহাবের ইমামগণের মতে মাকরূহ। আর যারা একেবারে বয়োবৃদ্ধ তাদের ব্যাপারে সকল মাযহাবের বক্তব্য থেকে কিছু শর্তসাপেক্ষে মসজিদ গমনের অবকাশ বুঝা যায়। আর মাঝামাঝি যেসব মহিলা আছে তাদের ক্ষেত্রে কেউ কঠিন শর্তের সাথে অবকাশ দিয়েছেন আবার কেউ মসজিদ গমনের একেবারেই নিষেধ করেছেন।
.
ফুকাহায়ে কেরামের কারো মতেই সব শর্ত বিদ্যমান থাকাবস্থায়ও মহিলাদের মসজিদে যাওয়া ওয়াজিব বা সুন্নাত পর্যায়ের কোনো আমল নয় । আবার শর্ত লঙ্ঘন করে মসজিদে যাওয়া কারো মতেই বৈধ নয়।
.
মহিলাদের মসজিদে গমন শর্ত সাপেক্ষেও জরুরী, সুন্নাত বা উত্তম না হওয়ায় পরবর্তী হানাফী ইমামগণ বর্তমান যুগে মহিলাদের গাফলত, খামখেয়ালী এবং চতুর্মুখী ফেতনার কথা বিবেচনা করে জামাতে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।
.
💝 সারসংক্ষেপ
.
রাসূল স.-এর হাদীস, সাহাবাদের আছার ও ফিকহের ইমামগণের বক্তব্য ও সিদ্ধান্তমূলক ফাতওয়ার আলোকে এটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে বর্তমান যামানায় কোনো মহিলার জন্যই মসজিদের জামাতে হাযির হওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয নেই। কারণ যামানাটা ফেতনা ফাসাদের ।
বর্তমানে মহিলারা ঘর থেকে বের হওয়ার শরয়ী শর্তাবলী পালনে ব্যর্থ ।
.
মসজিদে না যাওয়াতে একটি উত্তম কাজও ছুটে যাচ্ছে না। বরং ঘরের নামাযে উত্তমের উপর আমল হচ্ছে।
.
রাসুলের যুগে যেসব কারণে মসজিদে যাওয়া হতো তা বর্তমানে অনুপস্থিত। সুতরাং উত্তম আমল বাদ দিয়ে প্রবল গুনাহের আশঙ্কার পথ অবলম্বন করা কোনো বিবেকবান মানুষের কাজ হতে পারে না। এরপরও যদি কেউ আজকের যমানায় বিচার বিশ্লেষণ না করে হাদেিসর মমৃ, লক্স্য উদ্দেশ্য এবং গভীরতার দিকে না তাকিয়ে মুসলিম রমনী দের গৃহের নিরাপদ প্রাচির ভেঙ্গে বের করে আনার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে।
.
সে হয়তো হাদীস কুরআনে র ব্যপারে অজ্ঞ বা বিধর্মীয় ষড়যন্ত্র কারীদের শিকার না হয় সে খলীফায়ে রাসুল হযরত উমর এবং হযরত আয়েশা সহ সকল সাহাবিদের চেয়ে অধিক জ্ঞানী হওয়ার দাবীদার ।
.
এ ক্ষুদ্র প্রবন্ধে জরুরী বিষয় গুলো সংক্ষিপ্ত আকারে পেশ করলাম। আল্লাহ সঠিকটা বুঝার তাওফিক দান করুক। আমিন।।
কপি কৃত
বিঃদ্রঃ
আমি ব্যক্তিগত ভাবে যা মনে করি তাহল
পথে ঘাটে চলাচলের সময় যদি নামাজের সময় হয়ে যায় তখন যে কোন নিরাপদ স্হান,বা মসজিদে গিয়ে আবশ্যই নামাজ পড়ে নিবে।
পডে নিতে পারবে এতে সন্দেহ নাই।
তবে নিয়ম করে ৫ ওয়াক্ত নামাজের জন্য মহিলাদের কে মসজিদে পাঠানোর জন্য উদ্বধ্য করা সেটা হল ভিন্ন কথা।
যেখানে হাজার বছর আগের অধিকাংশ ফকিহদের মতে মসজিদ থেকে ঘরের কোনে মহিলাদের জন্য নামাজ উত্তম বলা হয়েছে, মসজিদে মাকরূহ বলেছেন।
তারা যদি বর্তমান যুগে জীবিত থাকতেন তাহলে তারা আগে মাকরূহ বলে থাকলে ও বর্তমানে তা হারামই বলতেন।
তাছাড়া
অনেকে বলে থাকেন যে অসংখ্য মহিলা হাটে বাজারে যাচ্ছে , মসজিদে গেলে সমস্যা কি?
আসলে আপনি চিন্তা করে গবেষণা করে দেখবেন বাজারী মহিলা কয়জনই বা নামাজ পড়েন??
তাছাডা বাজারের উপর মসজিদের সাথে তুলনা করা কেয়াস মা-য়াল ফারেগ্।
তার পরও কেউ বাজারে গেলে বা সফরে গেলে নামাজের সময় হয়ে গেলে
মসজিদ হউক
কিংবা রাস্তার পাশে নিরাপদ স্হানে হউক নামাজ আদায় করে নিতে পারেন তাতে সমস্যা নেই। করা দরকার ও আছে।
তবে নিয়ম করে মহিলাদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ে তাদের কে ডাকাডাকি করা।
মসজিদে জমায়েত করা কোন প্রকায়ে শরিয়ত সন্মত নয়।
অনেকে বলে থাকেন যে মসজিদে নববীতে ও মসজিদুল হারামে মহিলারা নামাজ পড়েন কেন?
মসজিদে নববীতে ৩ কারণে মহিলারা নামাজ আদায় করতেন বর্তমানে কি এসকল কারণ বিদ্যমান?
১, যেয়ারতে নববীঃ
তথা নবী সাঃ দর্শন বা যেয়ারত করতে মহিলারা আসতেন
২, তালীমে নববী ঃ
তথা নবী সাঃ এর থেকে কোরআন ও হাদিসের তালীম নিতে আসতেন
৩, ফজিলতে মসজিদে নববী ঃ
তথা মসজিদে নববীতে ১ রাকাতে ৫০ হাজার রাকাত নামাজের ছাওয়াব অর্জন করতে।
বর্তমানে আমাদের মহল্লার বা আপনার মহল্লার মসজিদে এ কারণ গুলো কি বিদ্যমান?
তাহলে কেন মহিলাদের কে মসজিদে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
মনে রাখবেন মহিলারা ঘরের কোনে নামাজ পড়া উত্তম।
বরং ছাওয়াব বেশী।
তাছাডা
যারা এখন মসজিদে নববী ও মসজিদুল হারামের উপমা দেন তাদের ও মনে রাখা উচিত যে, সেটা এ ২ মসজিদের সাথে খাছ। কারণ সেখানে হজ্জ ওমরার বিষয় রয়েছে নবী সাঃ এর রওজা যেয়ারতের বিষয় রয়েছে।
যা অন্য কোথাও নেই।
কারণ এতে ছাওয়াব নিহীত আছে।
তবে হ্যা রাস্তা ঘাটে চলাচলের সময় যদি নামাজের সময় হয়ে যায় তখন কোন মসজিদে মহিলাদের জন্য সূব্যবস্হা থাকলে তখন নামাজ আদায় করে নিতে পারেন, নামাজ ক্বাজা না করে।সেটা ভিন্ন কথা।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ্
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন