Translate

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নিজের নামে কুরবানী না দিয়ে মৃত বা জীবিত পিতা-মাতার নামে কুরবানী ?


নিজের নামে কুরবানী না দিয়ে মৃত বা জীবিত পিতা-মাতার নামে কুরবানী ?


নিজের নামে কুরবানী না দিয়ে মৃত বা জীবিত পিতা-মাতার নামে কুরবানী ?


বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আল্লাহর রাসূলের রুহ মোবারক নূরের তৈরী, সমস্ত শরীর নয় ।


মানবের রাসুল মানবই হতে পারেনঃ

ভিন্ন শ্রেণীর সাথে পারস্পরিক মিল ব্যতীত হেদায়েত ও পথ প্রদর্শনের উপকার অর্জিত হয় না । ফেরেশতা ক্ষুধা পিপাসা জানে না, কাম-প্রবৃত্তিরও জ্ঞান রাখে না এবং শীত গ্রীষ্মের অনুভুতি ও পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি থেকে মুক্ত । এমতাবস্থায় মানুষের প্রতি কোন ফেরেশতাকে রসুল করে প্রেরণ করা হলে সে মানবের কাছেও উপরোক্ত্ কর্ম আশা করতো এবং মানবের দুর্বলতা ও অক্ষমতা উপলব্ধি করতো না ।

বলুনঃ যদি পৃথিবীতে ফেরেশতারা স্বচ্ছন্দে বিচরণ করত, তবে আমি আকাশ থেকে কোন ফেরেশতা (নুরের তৈরী) কেই তাদের নিকট পয়গম্বর করে প্রেরণ করতাম (বনী ইস্‌রাঈল-৯৫)

৭,৭ নবী রাসুল নুরের তৈরী বা ফেরেশতা নন তাও আল্লাক তায়ালা কুরআনে উল্লেখ করেছেনঃ-

আর আমি তোমাদেরকে বলিনা যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা (নুরের তৈরী); আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহতাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না । তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন । সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব (হূদ-৩১)

৮) বিদআতীরা নবীকে নূর প্রমাণ করতে যেয়ে দলীল স্বরূপ কুরআন থেকে কতিপয় আয়াত পেশ করে থাকে । যেমন,

৮,১ মহান আল্লাহ এরশাদ করেনঃ ‘তোমাদের নিকট নূর-তথা একটি উজ্জ্বল জ্যোতি এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে । এর দ্বারা আল্লাহ যারা তার সন্তুষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন, এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং সরল পথে পরিচালনা করেন’(সূরাহ আল্ মায়িদাহঃ ১৫-১৬)

অত্র আয়াতে নবীর গুণ স্বরূপ (অথবা আত্মা) তাকে নূর বা জ্যোতি বলা হয়েছে, সৃষ্টিগতভাবে তাকে নূরের তৈরী বলা হয়নি । আর কিভাবে তিনি গুণগতভাবে নূর বা জ্যোতি হলেন, তা সাথে সাথে আল্লাহ পরের আয়াতেই ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন ।

৮,২ এরশাদ হচ্ছেঃ ‘হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি । এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে । (সূরা আল্ আহযাব: ৪৫-৪৬)

নবী (সাঃ) কে উক্ত আয়াতে (রূপে) যে মহান আল্লাহ গুণগত দিক থেকে নূর বা জ্যোতি বলেছেন তা অত্র আয়াতেই স্পষ্ট ।

৯,১ এরশাদ হচ্ছে: ‘অতএব তোমরা আল্লাহ তাঁর রাসূল এবং অবতীর্ণ নূরের প্রতি ঈমান আনয়ন কর । তোমরা যা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত (সূরাহ আত্ তাগাবুন: ৮)

৯,২ অন্য সূরায় মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘সুতরাং যারা তাঁর (মুহাম্মাদ এর) উপর ঈমান এনেছে, তাঁকে সম্মান করেছে, সাহায্য করেছে এবং তার উপর যে নূর অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করেছে তারাই হল প্রকৃত সফলকাম (সূরা আল্ আরাফ: ১৫৭)

উক্ত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ কুরআনকেও ‘নূর’ বলেছেন ।নূর পার্টিরা কী বলবে কুরাআনও নূরের সৃষ্টি !অথচ কুরআন মহান আল্লাহর বাণী ইহাই সকল মুসলিমদের বিশ্বাস । কুরআনকে সৃষ্টবস্তু জ্ঞান করা স্পষ্ট কুফরী,

অতএব, কুরআনকে নূর বলার পরও যদি নূরের সৃষ্টি না বলা হয়,

তবে রাসূলকে নূরের সৃষ্টি কোন্ যুক্তিতে বলা হবে ?

কারণ মহান আল্লাহ নবীকে যেমন ‘নূর’ বলেছেন, ঠিক তেমনিভাবে পবিত্র আল কুরআনকেও ‘নূর’ বলেছেন ।

১০) প্রশ্ন করতে পারেন যে, আপনি বলেছেন নবী সা. মাটির তৈরী । অথচ, রাসূল সা. তার এক হাদিছে বলেন যে,

১০,১ আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন । এর জবাব কী ?

এ উত্তরটা একটি হাদিছ দিয়ে-ই দেই । আল্লাহর রাসূল সা. অন্য হাদিছে বলেন যে,

১০,২ আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার রূহ সৃষ্টি করেন । ঐ হাদিছ এবং এই হাদিছের মর্ম একই ।

অর্থাৎ আল্লাহর রাসূলের রুহ মোবারক নূরের তৈরী, সমস্ত শরীর নয় ।

কেননা মহানবী সা. এর রূহ বা পবিত্র আত্না মাটির তৈরী হবে তো দূরের কথা, কোন মানুষের আত্নাই মাটির তৈরী নয় । বরং সমস্ত মানুষের আত্নাই নূরের তৈরী ।

১১) সৃষ্টির উপাদানের উপর ভিত্তি করে কোন ব্যক্তির মর্যাদা নির্ণয় করা সরাসরি কুরআন ও হাদীছ বিরোধী কথা ।

১১,১ কারণ মহান আল্লাহ বলেই দিয়েছেনঃ.

‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে ঐব্যক্তি বেশি সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে সর্বধিক তাক্বওয়াশীল’ পরহেযগার (সূরা হুজুরাত: ১৩)

১১,২ নবী (সাঃ) বলেনঃ হে মানব মন্ডলি! নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক এক, সাবধান! কোন আরবীর আজমীর (অনারব) উপর, কোন আজমীর আরবীর উপর প্রাধান্য নেই । অনুরূপভাবে কোন লাল বর্ণের ব্যক্তির কালো ব্যক্তির উপর, কোন কালো ব্যক্তির লাল বর্ণের ব্যক্তির উপর প্রাধান্য নেই ।

প্রাধান্য একমাত্র তাকওয়া পরহেযগারিতার ভিত্তিতে হবে । ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি বেশি সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে সর্বধিক তাক্বওয়াশীল’-পরহেযগার (আহমাদ প্রভৃতি, হাদীছ ছহীহ । দ্রঃ শাইখ আলবানীর গায়াতুল মারাম, পৃঃ১৯০, হা/৩১৩)

কাজেই নবী (সাঃ) নূর থেকে সৃষ্টি না হয়ে মাটি থেকে সৃষ্টি হওয়া তাঁর জন্য মোটেও মানহানিকর বিষয় নয় যেমনটি অসংখ্য বিদআতী তাই ধারণা করে বসেছে ।

বরং নবী (সাঃ) মাটির তৈরী হয়েও সৃষ্টির সেরা ব্যক্তিত্ব, সর্বাধিক মুত্তাক্বী-পরহেযগার । সমস্ত সৃষ্টি কুলের সর্দার, নবীকুল শিরোমণী, আল্লাহর খালীল-অন্তরঙ্গ বন্ধু । আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে হাশরের মাঠে মহান শাফাআতের অধিকারী, হাওযে কাউছারের অধিকারী, সর্ব প্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী । মাক্বামে মাহমূদের অধিকারী, রহমাতুল লিল আলামীন, শাফিঊল লিল মুযনিবীন ।

এসব বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মাঝে কোনই দ্বিমত নেই । ইহাই ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে ইযাম, আইম্মায়ে মুজতাহিদীনের বিশ্বাস । যুগ পরম্পরায় এই বিশ্বাসই করে আসছেন সকল সুন্নী মুসলিম ।

১২) ‘সৃষ্টির উপাদানের ভিত্তিতে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠত্ব অজর্ন করে’ এটা ইবলীস শয়তানের ধারণা ও দাবী মাত্র ।

১২,১ এই অলিক ধারণার ভিত্তিতেই সে (ইবলীস) আগুনের তৈরী বলে মাটির তৈরী আদমকে সিজদাহ করতে অস্বীকার করে ছিল (উপরের ৪,১ ও ৪,২ দ্রঃ) ।

‘নবী (সাঃ) কে নূরের তৈরী গণ্য করা হলে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ হবে, আর মাটির তৈরী গণ্য করলে সেই শ্রেষ্ঠত্ব বিলুপ্ত হবে, তাতে তার মানহানী হবে’ মর্মের

যুক্তিটি শয়তানের যুক্তির সাথে মিলে কিনা চিন্তা-ভাবনা করার উদাত্ত আহ্বান রইল ।

১২,২ কাফেররাও নবী রাসুলকে মাটির তৈরী মানুষ বলে তাঁর প্রতি ঈমাম আনে নাই, অনুসরণ করে নাই, তাকে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করে নাই (উপরের ৫,১ থেকে ৫,৮ দ্রঃ) ।

আপনারা যারা নূরের তৈরী আক্বীদা পোষণ করেন, মাটির তৈরী বলে কি আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করতে চান না ?!!

এ রকম ভাবলে কাফেরদের সাথে মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় নয় কি ?

শেষ কথা আল্লাহ খালেক (সব কিছুর স্রষ্টা) আর সবকিছু তার মাখলুক (সৃষ্টি)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

‘আল্লাহ সমস্ত কিছুর স্রষ্টা ও তিনি সমস্ত কিছুর কর্মবিধায়ক । আকাশ ও পৃথিবীর চাবিও তাঁরই কাছে’ {যুমার ৬২-৬৩}

আর শ্রেষ্ঠ মাখলুক হল মানুষ (মাটির তৈরী) [যে কারনে আল্লাহ নুরের তৈরী ফেরেশতাকে মাটির তৈরী মানুষ আদম (আঃ) কে সেজদা করার আদেশ দিলেন]

মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) । তাঁর শ্রেষ্ঠতের বহু কারন রয়েছে । তন্মধ্যে

তাঁর প্রতি আল্লাহর বানী আল কুরআন নাযিল হয়েছে এবং তিনিই আল্লাহর বানীর সর্বাপেক্ষা বুঝদ্বার ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষক ।

আল্লাহ আপনার প্রতি ঐশীগ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না । আপনার প্রতি আল্লাহর করুনা অসীম (নিসা-১১৩)




((((((((((((((((((((((( আল্লাহর রাসূলের রুহ মোবারক নূরের তৈরী, সমস্ত শরীর নয় ।

কেননা মহানবী সা. এর রূহ বা পবিত্র আত্না মাটির তৈরী হবে তো দূরের কথা, কোন মানুষের আত্নাই মাটির তৈরী নয় । বরং সমস্ত মানুষের আত্নাই নূরের তৈরী ।  
)))))))))))))))))))))))))))))))))

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আলেমদের মাওলানা বলা কি জায়েজ? নাকি শিরক? জবাব

আলেমদের মাওলানা বলা কি জায়েজ? নাকি শিরক?

প্রশ্ন: আলেমদের মাওলানা বলা কি জায়েজ? কতিপয় আহলে হাদিস নামের গায়রে মুকাল্লিদ বন্ধুরা বলে থাকেন যে, “মাওলানা এটি আল্লাহর সাথে খাস। যেমন কুরআনে কারীমে এসেছে য...ে, ورحمنا انت مولانا যেখানে মাওলানা বলে আল্লাহ তায়ালাকে সম্বোধন করা হয়েছে। সুতরাং কোন বান্দাকে মাওলানা বলা জায়েজ নয়। এটা সুষ্পষ্ট শিরক”।
তাদের এই বক্তব্যটি কি সঠিক? দলিল সহ জানালে উপকৃত হব।

জবাব:
بسم الله الرحمن الرحيم

গায়রে মুকাল্লিদদের এই বক্তব্যটি বিশুদ্ধ নয়। আলেমদের মাওলানা বলা জায়েজ। কেননা পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট বান্দাকে মাওলানা বলে সম্বোধন করেছেন।

যেমন-সূরায়ে নাহলের ৭৬ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা গোলামের মনীবকে বলেছেন তার মাওলানা-وَهُوَ كَلٌّ عَلَى مَوْلاهُ অর্থাৎ সে তার মনীবের উপর বোঝা (সূরা নাহল-৭৬)
রাসূল সা. হযরত যায়েদ বিন হারেসা রা. কে বলেছেন-انت اخونا ومولانا অর্থাৎ “তুমি আমার ভাই এবং মাওলানা”(বুখারী শরীফ-১/৫২৮)

বরং নবীজী সা. গোলামদের শিখিয়েছেন যেন গোলামরা তার মনীবকে বলে-“সাইয়্যিদী ওয়া মাওলায়ী”। (বুখারী শরীফ-১/৩৪৬)

ইমাম হাসান রাহ. কে মানুষ মাওলানা হাসান বসরী রহ. ডাকতো (তাহযীবুত তাহযীব-২/২৬৩, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া-৯/২৬৬, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা-৪/৫৭৩)
সুতরাং বুঝা গেল আলেমদের সম্মান করে মাওলানা বলা কোন দোষণীয় নয়। এটাবে শিরক বলা সম্পূর্ণ বাড়াবাড়ি।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা
ইমেইল-jamiatulasad@gmail.com
lutforfarazi@yahoo.com

http://ahlehaqmedia.com/1085
আরো দেখুন 


https://www.facebook.com/photo.php?fbid=278384392352254&set=a.278384379018922.1073741923.100005420863115&type=1&theater

সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কুরবানীর পশুতে একাধিক শরীক থাকলে অংশ নির্ধারণ করতে হবে কি বেজোড় সংখ্যা ...







শরীক হতে হবে তিনজন, পাঁচজন বা সাতজন- এই ধারণা ঠিক নয়। সঠিক বিষয় হচ্ছে এই যে, এক থেকে সাত পর্যন্ত যে কোন অংশে পশুটিকে ভাগ করা যাবে। তাই দু'জন, তিনজন, চারজন, পাঁচজন, ছয়জন ও সাত ব্যক্তি মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে।



রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বিন বায রাহ এর একটি এক্সক্লুসিভ পত্রঃ প্রসঙ্গ “জামায়াতে তাবলীগ sonkolito 1

বিন বায রাহ এর একটি এক্সক্লুসিভ পত্রঃ প্রসঙ্গ “জামায়াতে তাবলীগ”

আহ্‌নাফ বিন আলী আহ্‌মাদ

যদিও তাবলীগ জামাতকে হক হিসেবে প্রমান করার জন্য কোন নির্দৃষ্ট রিজনের আলেমদের ফতোয়ায় তেমন কোন প্রভাব ফেলে না তারপরও অনেকের কনফিউশন দূর করার জন্য বলতে পারি নজদের অনেক বড় বড় শায়খগন তাদের কিতাব , পত্র ও প্রতিবেদনে তাবলীগ জামাতের পক্ষে অনেক কথা বলেছেন। তারা যদি তাবলীগ জামাতের পক্ষে কিছু নাও বলতেন তাতেও এ জামাতের মূল কার্যক্রমের উপর কোন শরঈ আপত্তি আসা প্রশ্নই উঠে না। কারণ শরঈ আপত্তিতো তখন আসবে যখন একে শরঈ হুজ্জতের সাথে যাচাই করা হবে।
আরবের অন্যতম আলেম আবু বকর যাবের আল জাযায়েরি তাবলিগ জামাতের পক্ষে “আলকাউলুল বালীগ ফি জামাতিত্‌ তাবলীগ” নামে সতন্ত্র একটি কিতাব লিখেছেন। সেখানে সে বিরোধীদের অনেক গুলো প্রশ্নের শরঈ জবাব দিয়েছেন। শায়খ আবদুল্লাহ বিন বায রহঃ তার অনেক পত্রে তাবলিগ জামাতের সাথে বের হওয়ার জন্য অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তার অনেকগুলো পত্র রয়েছে। এছাড়াও আরবের গ্রান্ড মুফতি ইবরাহীম আলে শেখ এ জামাতের অনেক প্রসংশা করে আরবের বিভিন্ন স্থানের আলেমদের কাছে পত্র লিখেছেন যেন সকলে এ জামাতকে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে মদিনা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধী দল কর্তৃক তাবলীগ জামাতের ইজতেমা ও বিভিন্ন কার্য প্রনালি পরিদর্শন পূর্বক একটি প্রতিবেদন যা হরহামেশা বিন বায রাহঃ তার পত্রে উল্লেখ করে থাকেন। শায়খ ইউসূফ মালাহী জামায়াতে তাবলীগ সম্পর্কে একটি সতন্ত্র রীসালা লিখেছেন যা বিন বায রাহঃ হর-হামেশা তাবলীগ জামাতের ব্যাপারে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করার জন্য দিয়ে থাকেন। আরো অনেক অনেক কথা ।  এখন আমি শুধুমাত্র বিন বায রাহঃ এর একটি পত্র উল্লেখ করবো ইনশাল্লাহ।

পত্রটি লেখা হয়েছে বিন বায রাহঃ এর পক্ষ থেকে শায়খ ফালেহ বিন নাফে আল্‌ হারবীর প্রতি জবাবী পত্র হিসেবে। এটি সৌদি আরবের কেন্দ্রিয় ইসলামি গবেষণা ও ফতোয়া অধিদপ্তর আল মামলাকাতুল আরবিয়্যাতুস সাউদিয়া- ইদারাতুল বুহুসিল ইলমিয়্যাতি ওয়াস ইফতা ওদ্দাওয়াতি ওয়াল ইরশাদ (মাকতাবুর রয়িস) এ সংরক্ষিত আছে।

পত্রটির মূল কপির স্ক্রিন শটঃ

পত্রটির অনুবাদঃ
সৌদি আরবের সাবেক প্রধান মুফতি হযরত আল্লামা .                                                                                                                   শায়খ আবদুল আজীজ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে বায এর পত্র .                                                                                               শায়খ ফালেহ বিন নাফে আল্‌ হারবীর প্রতি .
নং  ৮৮৮৯/খ, তারিখ ১২/৮/১৪০৬ হিজরী

আবদুল আজীজ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে বায এরপক্ষ থেকে সম্মানিত ভাই শায়খ ফালেহ বিন নাফে আল হারবীর প্রতি। আল্লাহপাক আপনাকে ধর্মীয় বিষয়ে প্রজ্ঞা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে হৃদয়ের উম্মাদনা দান করুন-আমিন।সালামুন আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

পরবার্তা এই যে, গত ২৬/৭/১৪০৬ হিজরী তারিখে প্রেরিত আপনার পত্র আমার হস্তগত হয়েছে। পত্রের বিষয়বস্তু অর্থাৎ তাবলীগ জামাত সম্পর্কে আপনার বিরূপ ধারণা এবং তাদের সম্পর্কে আমার লিখিত মতামত এবং আমার পূর্বে আমাদের উস্তাদ সৌদি আরবের সাবেক প্রধান মুফতী শায়খ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম আলে শায়খ(রাহঃ) এর মতামতের প্রতি আপনার নিন্দা প্রকাশ ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। দুইটি বিষয়ই আমার কাছে অত্যন্ত নিন্দিত মনে হয়েছে। তা হল প্রথমতঃ আমাদের উস্তাদের প্রতি আপনার এরূপ অসম্মান সূচক ব্যাবহার, দ্বিতীয়তঃ আপনি কতিপয় ব্যাক্তিবর্গের নাম উল্লেখ করেছেন যে, তারা নাকি আমাদের উস্তাদের সাথে একমত নন।

আপনার লেখা পড়ে আমি আশ্চর্য হই যে, কোথায় এসকল কথিত আলেম-ওলামা আর কোথায় আমার মুহতারাম উস্তাদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা,জ্ঞানের প্রসরতা, ধীরস্থতা ও বুদ্ধিমত্তা? আমরা আলহামদুলিল্লাহ নিজের ধর্মসম্পর্কে জ্ঞান রাখি, প্রথমে লাভ-লোকসান খতিয়ে দেখি তারপর যার উপর হৃদয় সুনিশ্চিতহয় তাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। অনেক খোঁজ-খবর নেওয়ার পর বর্তমানে আমরা এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত যে, আমাদেরকে তাবলীগ জামাতের পার্শ্বে দাড়াতে হবে। সাথে সাথে তাদের মধ্যে কারো কারো কাছে যে ঘাটতি রয়েছে সেজন্য তাকে বুঝাতে হবে। আর ভূল হওয়া মানুষের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা হেফাযত রাখেন তাদের কথা ভিন্ন।

আপনার পত্রে উল্লেখিত আমার আলেম ভাইগণ ও ছাত্র সমাজ যদি তাবলীগি ভাইদের মিলেমিশে দাওয়াতের কাজে যোগদান করতেন এবং তাঁদের ধারণা মতে তাবলীগি ভাইদের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করতেন এবং তাদের ভূল ভ্রান্তি চিহ্নিত করে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতেন তাহলে এর দ্বারা ইসলাম ও মুসলমানের অনেক উপকার হত। পক্ষান্তরে তাদের ঘৃনা করা,তাদের থেকে দূরে থাকা, লোকজনকে তাঁদের সাথে মেলামেশা থেকে বিরত রাখা মস্তবড় ভূল।এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির আশংকাই বেশী।

আপনি নিজের মনগড়া মতবাদ ছেড়ে আল্লাহর প্রতি প্রার্থনা করুন যেন আল্লাহ তায়ালা আপনাকে তাঁর পছন্দনীয় বান্দাদের উপকারী বিষয়াদি বুঝার তৌফিক দান করেন। আর যেন উম্মতের মতবিরোধের বিষয়ে সত্যের সন্ধান দান করেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন তিনি আমাদেরকে সত্যকে সত্য বুঝে তা অনুসরণ করার তাওফিক দেন। আর যেন মিথ্যাকে আমাদের সামনে অস্পষ্ট না রাখেন। তিনিই সর্বশক্তিমান।

প্রধান পরিচালক
ইসলামী গবেষণা ও ফতওয়া অধিদপ্তর।

বিঃদ্রঃ আপনি শায়খ মুহাম্মদ আমান সম্পর্কে বলেছেন যে, “উনি তাবলীগ জামাতের সুনাম করা ছেড়ে দিয়েছেন এবং এখন তিনি তাদেরকে বেদাতী বা অপসংস্কারক মনে করেন।” তিনি আপনার এ কথাকে অস্বীকার করেছেন এবং এ কথা শুনে খুবই আশ্চর্য হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, তাবলীগ জামাত সম্পর্কে তিনি স্বচক্ষে পরিদর্শন করে যে মত ব্যাক্ত করেছিলেন বর্তমানেও তার উপর অটল আছেন।

অনুবাদ শেষ হল। 
sonkolito
http://ideabd.org/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%af-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%8f%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a6%95%e0%a7%8d/


 

তাবলিগ জামাত সম্পর্কে মদিনা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিদের কর্তৃক প্রস্তুতকৃত একটি রিপোর্ট sonkolito 2

তাবলিগ জামাত সম্পর্কে মদিনা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিদের কর্তৃক প্রস্তুতকৃত কৃত একটি রিপোর্ট

আহ্‌নাফ বিন আলী আহ্‌মাদ
যদিও তাবলীগ জামাতকে হক হিসেবে প্রমান করার জন্য কোন নির্দৃষ্ট রিজনের আলেমদের ফতোয়ায় তেমন কোন প্রভাব ফেলে না তারপরও অনেকের কনফিউশন দূর করার জন্য বলতে পারি নজদের অনেক বড় বড় শায়খগন তাদের কিতাব , পত্র ও প্রতিবেদনে তাবলীগ জামাতের পক্ষ অনেক কথা বলেছেন। আরবের অন্যতম আলেম আবু বকর যাবের আল জাযায়েরি তাবলিগ জামাতের পক্ষে “আলকাউলুল বালীগ ফি জামাতিত্‌ তাবলীগ” নামে সতন্ত্র একটি কিতাব লিখেছেন। সেখানে সে বিরোধীদের অনেক গুলো প্রশ্নের শরঈ জবাব দিয়েছেন। শায়খ আবদুল্লাহ বিন বায রহঃ তার অনেক পত্রে তাবলিগ জামাতের সাথে বের হওয়ার জন্য অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তার অনেকগুলো পত্র রয়েছে। এছাড়াও আরবের গ্রান্ড মুফতি ইবরাহীম আলে শেখ এ জামাতের অনেক প্রসংশা করে আরবের বিভিন্ন স্থানের আলেমদের কাছে পত্র লিখেছেন যেন সকলে এ জামাতকে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে মদিনা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধী দল কর্তৃক তাবলীগ জামাতের ইজতেমা ও বিভিন্ন কার্য প্রনালি পরিদর্শন পূর্বক একটি প্রতিবেদন যা হরহামেশা বিন বায রাহঃ তার পত্রে উল্লেখ করে থাকেন। আরো অনেক অনেক কথা ।
আজকে আমরা ইনশাল্লাহ  মদিনা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধী দল কর্তৃক তাবলীগ জামাতের ইজতেমা ও বিভিন্ন কার্য প্রনালি পরিদর্শন পূর্বক যে প্রতিবেদনটি   প্রস্তুত করেছে তা উল্লেখ করবো । আর এটা বলে রাখা দরকার যে শায়খ বিন বায রাহঃ এর কাছে কেউ তাবলীগ জামাত সম্পর্কে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করতেন।
প্রতিবেদনটির মূল আরবী পাঠের স্ক্রিন শর্টঃ



অনুবাদঃ
মদিনা ইউনিভার্সিটির সম্মানিত উস্তাদ
শায়খ মুহাম্মদ আমান জামী ও শায়খ আবদুল করীম সাহেবান
এর বাংলাদেশে তাবলীগ জামাত পরিদর্শন
একটি সমীক্ষা
‘তাবলীগ জামাত’ এর পক্ষ থেকে জামিয়া ইসলামিয়া (মদিনা মুনাওয়ারা) এর কাছে একটি দাওয়াতনামা পাঠানো হয়, তথায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত তাবলীগি জামাতের ইসলামী বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। জামিয়া কর্তৃপক্ষ দাওয়াত গ্রহণ করে এবং অংশগ্রহণের জন্য হাদীস গবেষণা বিভাগ থেকে আমি মুহাম্মদ আমান ইবনে জামীকে শরীয়া বিভাগ থেকে জনাব আবদুল করীম মুরাদকে নির্বাচন করে। আমরা ১০/২/১৩৯৯ হিজরী সোমবারে করাচী যাওয়ার জন্য মদীনামুনাওয়ারার এয়ারপোর্ট ত্যাগ করে ঠিক ৬.৩০ ঘটিকায় জেদ্দা এয়ারপোর্টে পৌঁছলাম। সাথে সাথে জামিয়ার অফিস পরিচালক উস্তাদ, মুসফির যাভাহানীর মাধ্যমে পাকিস্তানএয়ারলাইন্সের সাথে যোগাযোগ করলাম। উস্তাদ মুসফির পূর্বেই এই এয়ারলাইন্সে বুকিংদিয়ে রেখেছিলেন বিধায় অন্ততঃ দশ মিনিট অন্তর আমাদের ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজসম্পন্ন হয়ে গেল । অতঃপর আমরা সফরের জন্য তৌরি হয়ে ওয়েটিং রুমে প্রবেশ করলাম। একঘন্টা পর ঘোষণা দেওয়া হলো বিমানের টেকনিকাল অসুবিধার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্যযাত্রা বিরতি থাকবে। আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম, এমনকি যোহরের নামাযের সময় হল এবংআমরা বিমান বন্দরেই নামায আদায় করলাম। অতঃপর আমাদের খানা দেওয়া হল এতে বুঝতেপারলাম যাত্রাবিরতী আরো বিলম্ব হবে। অপেক্ষা করতে করতে এশার পর ঘোষনা করা হল ,রাতের এগারোটায় বিমান যাত্রা করবে। অতঃপর নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা শুরু হল। আমরাবিমানে চড়েই ঘুমিয়ে পড়লাম, করাচীর পাশাপাশি আসার পর ঘুম ভাঙ্গল। সহীহ সালামতেপৌছাতে পারলাম বলে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করলাম। ফজরের পূর্বেই আমরা করাচী শহরেপ্রবেশ করলাম। ফজরের নামাজ হোটেলে নিজ রুমে পড়লাম। বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার পরলাহোর যাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ করলাম যা পূর্বেই প্রোগ্রাম ছিল। পরে স্থিক করেনিলাম যে প্রথমে ঢাকা যাব আসার পথে ইনশাআল্লাহ লাহোর আসব। ১২/২/১৩৯৯ বুধবার ঢাকাযাওয়ার আশায় কাটালাম। কিন্তু পরে জানতে পারলাম জুমাবার ব্যাতিত ঢাকা যাওয়া সম্ভবহবে না। কারণ পাকিস্তান থেকে ঢাকার জন্য সপ্তায় শুধুমাত্র দুইবার বিমান যাত্রাকরে। মঙ্গলবার পাকিস্তান এয়ারলাইন্স এবং জুমাবারে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়াতৃতীয় কণ পন্থা নেই। অতএব আমরা জুমাবারের জন্য সিট বুকিং করুলাম।
জুমাবার আছরের পর বিমানে চড়লাম এবংআলহামদুলিল্লাহ রাতের শেষভাগে ঢাকায় পৌছলাম। করাচী থেকে ঢাকা পৌছতে আমাদের সাড়েতিন ঘণ্টা সময় লাগল। এদিকে আমাদেরকে এবং আমাদের সাথে যারা ইজতেমার জন্য আসছেনসবাইকে স্বাগতম জানানোর জন্য বিমান বন্দরে একটি কমিটি উপস্থিত ছিল, যাতে আমাদেরপূর্বের পরিচিত কিছু পাকিস্তানি ও সুদানী ভায়েরাও ছিলেন। তারা আমাদের জন্য এবংইজতেমায় আগমানকারী সকল মেহমানের জন্য বিশেষ ইমিগ্রেশনের ব্যাবস্থা করলেন। ফলেআমাদেরকে কোন রকমের চেক করা হল না এমনকি আমাদের লাগেস পর্যন্ত খোলা হল না। শুধুরঙ্গিন চকের একটি দাগ দিয়ে কার্য সমাধা করা হল। অথচ আমাদের সাথে আগমনকারী অন্যান্যপ্যাসেঞ্জারের সব মালপত্র কড়াভাবে চেক করা হচ্ছিল। তারপর আমাদেরকে বিমান বন্দরেরপার্শ্বে তাদের একটি মসজিদে নিয়ে গেলেন যেন সকল মেহমানদেরকে তাদের স্ব-স্থানেঅর্থাৎ ইজতিমার পাশাপাশি নির্মিত তাঁবুতে পৌছে দিতে পারে। ফজরের পূর্বে আমাদেরকেনির্দিষ্ট স্থানে পৌছে দেওয়া হল। আযানের পূর্বে আমরা কিছুক্ষণ ঘুমালাম। অতঃপর আযানহল , আমরা পার্শ্ববর্তী মসজিদে ফজরের ফজরের নামায পড়লাম। মসজিদটি ছিলো বড় একটি হল।যা অন্ততঃ দেড় দেড় কিলোমিটার জমিতে বিস্তৃত ছিল। যেন হাজার হাজার লোক একসাথে নামাযআদায় করতে পারে। আর যেন ইজতেমার এই জনসমুদ্র যাকে ১০ লক্ষের কাছাকাছি ধারণা করাহয়েছে, একই সাথে একই ইমামের পিছনে নামাজ পড়তে পারে। নামাজ পড়ার সময় লাউড স্পিকারব্যাবহার করা হল না। বরং মসজিদের বিভিন্ন স্থানে অনেক মুকাব্বির ঠিক করা হলো।এমনিভাবে কোন একটি নামাজী সে ইমাম থেকে যত দূরেই থাকুক না কেন , মুকাব্বিরের আওয়াজশুনতে কোন অসুবিধা হয় না এবং সহজভাবে ইমামের অনুসরণ করতে পারে। তবে বিশেষতঃনামাজের সময় লাউড স্পীকার ব্যবহার করা হয় না কেন? তার কারণ আমি জানতে পারি নাই।অথচ তাঁরা বক্তৃতা , বিবৃতির সময় ঘোষণা ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন। তবে এত সুন্দর নিয়মে এত ভাল এন্তেজাম কিভাবে করতে পারলেন তা বলতে গেলে মানুষ আশ্চর্যান্বিত নাহয়ে পারে না। কারণ মসজিদ এবং মেহমানদের জন্য ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছে একেবারে হালকানির্মান সরঞ্জাম দিয়ে। তা ব্যবহার করা হয় তারপর ইজতেমা শেষে মালিকের কাছে পৌছেদেওয়া হয় অথচ তখনও তা বিক্রি উপযোগী থাকে। এ সকল সরঞ্জামে বাশ , রশি , কাঠ ইত্যাদিথাকে। তথায় পেরেক ব্যাবহার করা হয় নাই যেন সরঞ্জাম নষ্ট না হয়। কারণ তা বিভিন্নব্যাবসায়ী ও বিভিন্ন কারখানা মালিকের পক্ষ থেকে কল্যানমূলক কাজে দান সাহায্যহিসেবে দেওয়া হয়েছে। আবার এরাই তা তৈরি করেছে। পরে যখন ইজতিমা শেষ হয়ে যায় তখনএরাই আবার তা খুলে ফেলে অতি সহজভাবে, যেমন সহজভাবে তারা তৈরি করেছিল। এটা একপ্রকারঅতি আশ্চার্যান্বিত মসজিদ সেই ইসলামী পরিবেশে যা শান্তি, স্তিতিশীলতা ওঅনুনয়-বিনয়তার প্রতিক।
নামাযের পর মুসল্লিগণ মসজিদে বিভিন্ন স্থানে মজলিসে বসে পড়লেন। এটা দেখে মনে হল যেন মুসলমানদের প্রথম কালেরমসজিদ্গুলোর মত। যখন মসজিদ থেকে শুধু নামায ও অন্য ইবাদত উদ্দেশ্যহত, পারস্পারিক গর্ব প্রদর্শ্নবা নির্মাণ প্রতিযোগিতা উদ্দেশ্য গত না, আল্লহুল মুসতাআন। মশিদের বিভক্ত জামাতগুলো পারস্পারিক মুখস্থ কোরআন মজীদ শুনাতে লেগে গেলেন,তিলাওয়াতটি ছিল ছোট ছোয় সূরায় সমৃদ্ধ,যা প্রায় সকল মুসল্লীদের মুখস্থ থাকে। সুর্যোদয়পর্যন্ত এই তিলাওয়াত চালু ছিল। তারপর নাস্তার সময় হল। নাস্তার পরপর সেমিনার তথা ধর্মীয় বক্তৃতা শুরু হয়। সেই দিন ১৫/২/১৩৯৯ হিজরী তারিখ শনিবারচাসতের সময় আমরা সেই মসহিদে এক জামাতের সাথে শায়খ ঊম্র (পালনপুরীর)বয়ানে উপস্থিত হলাম। তিনি আরবীতেবয়ান করছিলেন। আর দে বয়ানটি ছিল বিশেষভাবে আরব্দের জন্য। তাঁর বক্তৃতাটিছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী। এতে তিনি জামাতের কর্মততপরতা সম্পর্কে বিভিন্ন দাওয়াত দানের ধরণ, বেরহওয়ার উদ্দেশ্য ইত্যাদি বর্ণ্না করলেন। সারসংক্ষেপকথা ছিল এই যে, ‘খুরুজে’র উদ্দেশ্য আহবানকারী এবং আমন্ত্রিত ব্যক্তিবরগেরপরিবেশ পরিবর্তন করা। কারণ যারা আল্লাহর রাস্তায় বের হন তাঁরা সবাইদায়ী থাকেন না বরং অধিকাংশরা এমন যে তাদেরকে সংস্কার করা,ইস্লাম ও ইস্লামের সাথে ভালবাসারপ্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং ধর্মীয় যে সকল বিষয়ে তারা অজ্ঞ , সেবিষয়ে তাদেরকে জ্ঞাত করাই উদ্দেশ্যে হয়। বারংবারেরঅভিজ্ঞতা একথা প্রমান করেছে যে, উক্ত উদ্দেশ্য পূরণ তখনই সম্ভব হয় যখন মানুষ জীবনের বিভিন্ন কার্যাদি চিন্তাভাবনাছেড়ে বের হয়ে পড়ে এবং সংস্কারমুখী কোন ভাল পরিবেশে প্রত্যবর্তন করে । শায়খ উমরেরবক্তৃতার পর ঘোষণা দেওয়া হল যে, আরবরা জোহরের পর সাধারণ স্টেইজে উপস্থিত হবেন। আমাদের মধ্যেএকজনকে বয়ান করতে বলা হল। আমরাও দাওয়াত কবুল করলাম এবং জোহ্রের নামাজেরপর আমি বয়ান করলাম। সাথে সাথে কয়েক ভাষায় অনুবাদ করা হল। অতঃপর রবিবার১৬/২/১৩৯৯ হিজ্রী নামাজের পর একটি একটি বয়ান শুনতাম যা উর্দু থেকে আরবীতে অনুবাদকরে শুনা হত। শায়খ আব্দুল করীম মুরাদ নির্দিষ্ট সময়ে বয়ানকরলেন। তাওহীদে ইবাদত, ছালেহীনের সম্মানে সীমালংঘন এবংতাদের কবরে ঘর নির্মান ইত্যাদি থেকে সতর্ক্করন ইত্যদি ছিল তাঁর বয়ানের বিষয় । তবে এক্সহনিবারেরবয়ান ছিল সাধারণ বিষ্যে , বিশেষতঃ কালিমায়ে তাওহীদকে বাস্তবায়ন করার ব্যপারে। ইজতেমার স্থানছিল সাজধানী থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে । বাস্তবতঃ এ কারণেই তারা নামাজ আদায় করতে বরংইজতেমা চলাকালীন মসজিদে বিদ্যমান থাকতে সক্ষম হয়েছেন । তবে আমরাএবগ আমাদের মত অন্য জারা দেরিতে পৌছেছে তারা ইজতেমার পুর্বে ও পরে রাজধানীতেজেতে পারেনি। আমরা ইজতেমাশেষ হওয়ার সাথে সাথে মঙ্গলবারে অতিসত্বর পাকিস্তান অবিমুখে রয়্যানা দিলাম, সেখানে আমাদের বিশেষ সাক্ষাতেরপ্রগ্রাম ছিল । অন্য লোকেরা আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াত দান উদ্দেসশ্যেবের হয়ে গেলেন। তারা প্রত্যেক বক্তৃতার পর বিভিন্ন জামাত ফাশকীলদিতেন । মঙ্গল্বারের দিনয়ি ছিল দ্যীদেরকে দাওয়াত সম্পর্কেবিশেষ নসীহত ও নির্দেশ্না দান এবং বিদাআয় দেওয়ার দিন। এই দিনে সবখুশী কান্নায় পরিণত হল, যা তাদের আল্লাহর ওয়াস্তে পারস্পারিক ভালবাসা, আল্লাহর প্রেমেআত্তোতসর্গ করা, আল্লাহর প্রতি আহবানের জন্য সব ছেড়ে ফারেগহওয়া এবং এক আল্লহর সাথে তাঁর বান্দাদের আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপনের জলন্ত প্রমান বহনকরে । বাস্তবে এটিই হল তাবলিগের সেমিনার সেমিনারসমূহ, তাদের কথাবার্তা,তাদের আচার আচরণ বা চাল চরিত্র এবং তদের বিভিন্ন ত্যগ তিতিক্ষার সারসংক্ষেপ। কিন্তু যারা এই জামাতকে ভালভাবে চিনতে পারেনি, অথবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তাঁদেরবাস্তব সত্যকে এড়িয়ে চলতে চায় তাদের কথা ভিন্ন হবে বয়কি।
একথা স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া উচিত মনে করি যে, এরা (তাবলীগি ভাইয়েরা) অন্যান্য দাওয়াতী দল অপেক্ষা অধিক সৌভাগ্যবান । কারন এরা যে অমুল্য ধনের অধিকারী তা অন্যদের কাছে দেখা যায় না, তা হল যাদেরকে এরা হিদায়েত ও আত্তসুদ্ধির পথে আনতে চান , তাঁদের সাথে ধৈর্য ,ভাল ব্যবহারএবং তাঁদের সুন্দর পরিচালনা, ধর্ম অনুরাগী, জ্ঞানপিপাসু ও আত্নশুদ্ধি উৎসাহীলোকজনের জন্য এদের ধৈর্যের মত । আল্লাহতায়ালা এদের সিংহভাগ হচ্ছে আমাদের ইউরোপ, আমেরিকাতে পাঠাই কিন্তু তাঁদের কোন প্রকারের অভিভাবকত্ব ও তত্বাবধায়ন ব্যতীততাদেরকে নিজের হালে ছেড়ে দেই । এই জামাতে তাব্লীগের বদৌলতে আল্লাহপাক এসকল যুবকের অনেককে হিদায়াত দান করেছেন এবং পরিবেশের প্রভাবে ধর্মদ্রোহী হওয়া থেকে রক্ষাকরেছেন । আমার কাছে এরূপ অনেক অবিজ্ঞতা ও অনেক কাহিনী রয়েছে যা বলতে গেলে দীর্ঘসময়ের প্রয়োজন ।
একথা স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া উচিত মনে করি যে, এরা (তাবলীগি ভাইয়েরা) অন্যান্য দাওয়াতী দল অপেক্ষা অধিকসৌভাগ্যবান । কারন এরা যে অমুল্য ধনের অধিকারী তা অন্যদের কাছে দেখা যায় না, তা হলযাদেরকে এরা হিদায়েত ও আত্তসুদ্ধির পথে আনতে চান , তাঁদের সাথে ধৈর্য ,ভাল ব্যবহারএবং তাঁদের সুন্দর পরিচালনা, ধর্ম অনুরাগী, জ্ঞানপিপাসু ও আত্নশুদ্ধি উৎসাহীলোকজনের জন্য এদের ধৈর্যের মত । আল্লাহতায়ালা এদের সিংহভাগ হচ্ছে আমাদেরইউরোপ,আমেরিকাতে পাঠাই কিন্তু তাঁদের কোন প্রকারের অভিভাবকত্ব ও তত্বাবধায়ন ব্যতীততাদেরকে নিজের হালে ছেড়ে দেই । এই জামাতে তাব্লীগের বদৌলতে আল্লাহপাক এসকল যুবকেরঅনেককে হিদায়াত দান করেছেন এবং পরিবেশের প্রভাবে ধর্মদ্রোহী হওয়া থেকে রক্ষাকরেছেন । আমার কাছে এরূপ অনেক অবিজ্ঞতা ও অনেক কাহিনী রয়েছে যা বলতে গেলে দীর্ঘসময়ের প্রয়োজন ।
 একটি ছোট্ট কাহিনী
উদাহরণস্বরূপ রিয়াদবাসীদের এক যুবকের ছোত একটি কাহিনী বলছি। যুবকটি আমেরিকারএকটি জামাতের সহিত ঢাকার ইজতেমায় উপস্থিত হয়েছিল। সে আমেরিকার জাহেলী চাল-চলনেহাবুডুবু খাচ্ছিল, পরে আল্লাহপাক তাকে এই জামাতের বদৌলতে তা থেকে নাজাত দিয়েছেন ।দে আমার কাছে ওমরা করার আশা প্রকাশ করল, হয়ত উমরা তাঁর পাপ মোচন করবে এবং তাঁরথেকে জাহেলিয়্যাত দূর করবে। আমি তাকে উতসাহিত করলাম  । তাওবার ফযীলত ও গুরুত্ব্ব বর্ননা করলাম ।আর  তাওবার কারনে , পুর্বের পাপ মোচন হওয়ারকথা বললাম। সে লজ্জাবোধ করত। বলল, ‘হে ভাই মুহাম্মদ! আমি ওমরাতো করতে চাই কিন্তুওম্রার নিয়ম-কানুন জানি না। কোথায় কি করব, মক্কায় পৌঁছার পর কি করতে হবে তা আমারজানা নেই। কারন আমেরিকা জাওয়ার পর হাই স্কুলে যা পড়ে ছিলাম সব ভুলে গেছি । তাঁরকথেয়ায় মর্মাহত হলাম। তাকে বললাম, তাহলে একটু নির্জনে চল, আমি তমাকে ওমরার কাহসমুহবলে দিব, সে বলল, অনুগ্রহপুর্বক আপনি কি আমাকে একটু ক্যাসেট করে দিবেন কি? আমিবললাম , যদি আপনার কাছে ক্যাসেট  আররেকর্ডার থাকে তাহলে আমার কোন অবিযোগ নেই । সে একটি রেকর্ডার নিয়ে আসল। আমি তাঁরজন্য ওমরার আ’মাল এবং এবং হজ্জের আমাল সংক্ষিপ্তভাবে রেকর্ড করে দিলাম। তারপর আমিতাকে মসজিদে নববী এবং জামিয়া ইসলামিয়া পরিদর্শ্ন করার জন্য উৎসাহিত করলাম যেনজামিয়ার পক্ষ থেকে তাকে উপকারী বি-পুস্তক দেওয়া যেতে পারে । দি কাহিনী এবং এরপুর্বের কথাসমুহ বলে আমার উদ্দেশ্য হল একথাই স্পস্টভাবে বলা যে, তাব্লীগ জামাতেরমেহনতের ফল অনেক। যা বর্ননা করার জন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। দ্বীনের প্রতিআহবানকারী অন্যান্য জামাতের কাহ এত ফল্প্রসু নইয় । এটি এমন এক সত্য কথা যাকেঅস্বীকার করা শত্রু বন্ধু কার পক্ষে সম্বব হবে না ।
এর রহস্য হল, আল্লাহর দিকে আহবান এবং মানুসদেরকে সতপথে আনার জন্য চেষ্টাকরাকে এই জামাতের লোকেরা ইহকালীন জীবনের মহৎ উদ্দেশ্য বলে ধরে নিয়েছেন এবং তারাদাওয়াতকে বাম হাতে ধরে ডান হাতে দাওয়াতের নামে টাকা কামাই করার পক্ষপাতি নয় বরংউভয় হাত দ্বারা দাওয়াতকে ধরেছে। অতঃপর একের কাছে লোকজনের মুখ থেকে প্রশংসাবানীকুড়ানোর কোন মোহ পরিলক্ষিত হয় না বরং একের কাছে প্রশংসা ও নিন্দা উভয় সমান।  সুতরাং জীবন এলের কাছে অনেক সস্তা ও সহজ ।এটুকু ইঙ্গিত আমি যথেষ্ট মনে করলাম । কারন ব্যপারটি স্পষ্ট ,আর আমি যেরূপ পুর্বেবলেছি, তাবলীগ জামাতের দাওয়াতের গভীর প্রভাব ও স্পষ্ট । আর কর্মীদের কর্মীদেরমর্মসফলতার প্রমান তাঁদের কর্মই।
আমরা এই দাওয়াত পুর্ন পরিবেশে তিন দিন অতিবাহিত করলাম এবং জেদ্দাউ চলে আসারজন্য রবিবারের বিমানে (২৩/২/১৩৯৯হিজরী) বুকিং দিলাম। তবে এর মধ্যে আমাদের একজনলাহোর থেকে ঘুরে আসার সিদ্ধান্ত হল। সে বুধবার ১৯/২/১৩৯৯ হিজ্রী তারিখে লাহোররওয়ানা হল, কিন্তু বিবিন্ন কারনে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে পারল না । বরং সে সোমবার২৪/২/১৩৯৯ হিজরী পারল না । বরং সে সোম্বার ২৪/২/১৩৯৯  হিজরী বুধবারে সম্পন্ন হল।
বিঃ দ্রঃ- উল্লেখ্য যে, তাবলিগ জামাতের বিশেষ কোন সরকারী নাম নেই কিন্তু লোকেরা তাদেরকে উক্ত নামে স্মরণ করে যা বাস্তবে তাঁদের দাওয়াত ও আমল অর্থাৎ তাবলীগও তাযকীরের উপর প্রমান বহন করে।
আর একথা লক্ষ্য করা যায় যে , দাওয়াত, তানযীমের প্রশিক্ষণ এবং বারংবারেরমজলিস সমুহে উপস্থিতি ইত্যাদি তাদেরকে তাঁদের কাজের মধ্যে সুবিন্যস্ততা অর্জন করেদিয়েছে । সুতরাং যে কোন কাজ তারা নির্দ্ধিধায় এবং বিরক্তিহীনভাবে আঞ্জাম দিয়েথাকেন। তাই বলি , অনেক বড় বাজেটের প্রয়োজন হবে এবং অনেক সময়ের প্রয়োজন হবে, এরূপবড় একটি ইজতেমা এরা বিনা কষ্টে এবং উল্লেখযোগ্য কোন খরচ ব্যতীত করে ফেলতে পারে ।এত বড় ইজতেমায় বিভিন্ন স্থান থেকে , আগত মেহমান্দের মেহমানী  ব্যতীত অন্য কোন খাতে তাঁদের বেশি খরচ হয় না ।জামাতের প্রতিটি ব্যক্তি ইজতেমার জন্য নিজেকে নিজে দায়িত্বশীল মনে করে । প্রত্যেকেদায়িত্বের সহিত যার যে কাজ আঞ্জাম দিয়ে থাকে । সবাই সাধ্যমতে সহযোগিতা করে এবংনিজেই ইজতেমার কাজে শরীক হয়।, প্রত্যেকেই খেদমত নেওয়ার স্থানে খেদমত করতে চান ।এতে করে এদের পারস্পারিক মায়া মমতা বেড়ে যায় ।
প্রস্তাবাদী
তাবলীগ জামাত এবংতাদের বহুমুখী ইসলামী কার্যকলাপ যা তাঁদের মহান স্পষ্ট সফলতা থেকে বুঝা যায়, যারকিঞ্চিত আমি বর্ননা করেছি এবং যা শত্রু ও বন্ধু সবাই এক চোখে দেখে । এসবের আমি যেবিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেছি তারপর আমি কিছু প্রস্তাব পেশ করতে চাই। তা হলো এই-
(১)জামাতের সহিত সত্য ও কার্যকরি এবংপ্রভাবান্বিত ও প্রভাব বিস্তারকারী সহযোগীতা করা।
(২)আমাদের ছাত্রদেরমাঝেও যেন জামাতের কর্মতৎপরতা চালু করা হয়, যাতে করে তারা উপকৃত হবে এবং অন্যেরউপকার করবে। আমাদের ছাত্ররা এরূপ তৎপরতা এবং এই মবারক দাওয়াতের বেশি মুখাপেক্ষি।
(৩) জামিয়া ইসলামিয়াযেন জামাতের সভা মজলিস এবং সাক্ষাত ও সেমিনারসমূহে বেশি বেশি  অংশগ্রহণ করে, যাতে শিক্ষাবোর্ডের মেম্বারগণ ওছাত্ররাও থাকে।
পরিশেষে আল্লাহরকাছে প্রার্থনা করি যেন, আমাদের কার্যসমূহ খালেছ তাঁর জন্য তিনি কবুল করেন এবংআমাদের লোক দেখানো ও প্রসিদ্ধ লাভের মোহ থেকে অনেক দূরে রাখেন, তিনি উত্তমপ্রার্থনা গ্রহণকারী।
বিনীত
মুহাম্মাদ আমান ইবনে আলি আলজামী
প্রধান, হাদিস ও ইসলামি গবেষণা বিভাগ
জামিয়া ইসলামিয়া , মদিনা মুনাওয়ারা
অনুবাদ শেষ হল।
মুল লেখার স্ক্রিন শর্ট অস্পষ্ট বিধায় আমরা এর মূল আরবীপাঠ নিচে উল্লেখ করছি-
تقرير عن زيارة جماعة التبليغ في بنغلادش
للشيخ محمد أمان الجامي وعبد الكريم مراد حفظهما الله
بسم الله الرحمن الرحيم
وجهت جماعة التبليغ والدعوة إلى الجامعة الإسلامية، فطلب إليها حضور لقاء إسلامي كبير يعقد في (داكا) عاصمة (بنغلادش) فلبّتْ الجامعة الطلب، فأوفدتنا أنا محمد أمان بن علي الجامي من كلية الحديث، وعبد الكريم مراد من كلية الشريعة, للمشاركة في اللقاء .
فغادرنا مطار المدينة المنورة صباح يوم الاثنين 10/2/1399 هـ إلى جدة في طريقنا إلى (كراتشي)، فوصلنا مطار جدة في تمام الساعة السادسة والنصف, واتصلنا بالخطوط الباكستانية فور وصولنا بواسطة مدير الخطوط المذكورة، فتمت إجراءات السفر في أقل من عشر دقائق, فدخلنا صالة المسافرين استعداداً للسفر، وبعد ساعة تقريباً من دخولنا فوجئنا بأن السفر سوف يتأخر إلى موعد غير محدد إذ طرأ في الطائرة خلل فني كما قيل، فجعلنا ننتظر هذا الموعد الذي لم يحدد بل لم َتِردْ أو لم تستطع الشركة تحديده، فحان وقت صلاة الظهر فصلينا في المطار, لأن الخروج ممنوع، ثم دعينا لتناول طعام الغداء, من هنا تأكدنا أن الموعد سوف يتأخر وأنه ليس بقريب .
وهكذا استمرّ انتظارنا إلى بعد صلاة العشاء من ليلة الثلاثاء، ثم أعلن عن الموعد الأخير, وأنه ستكون المغادرة بعد الساعة الحادية عشرة من الليل، فتمت مغادرتنا فعلا بعد منتصف الليل, فواصلنا سفرنا إلى كراتشي، فأخذنا نغط في نومنا الذي هو عبارة عن راحة بعد تعب طويل في مطار جدة، ولم نشعر إلا حين أعلن أننا على مقربة من مطار كراتشي فاستيقظنا، فحمدنا الله تعالى على الوصول بالسلامة, فدخلنا مدين كراتشي قبيل صلاة الفجر, فصلينا الفجر في منزلنا في الفندق .
وبعد أن استرحنا زمنًا كافياً للراحة بعد صلاة الفجر, تبادلنا الرأي بالنسبة للسفر إلى (لاهور) قبل السفر إلى (داما) كما هو المقرر, فرأينا تأجيله إلى ما بعد العودة من (داكا), خشية أن يحصل تأخر لسبب من الأسباب فيؤثر في الاجتماع الذي هو المقصود الأول من سفرنا هذا، فقضينا يوم الأربعاء 12/2/1399هـ في محل الحجز إلى داكا ليوم الخميس، ولكننا علمنا أن السفر إلى داكا عاصمة (بنقلاديش) لا يتم إلا ليوم الجمعة بالنسبة لمن لم يسافر يوم الثلاثاء والذي وصلنا فيه إلى كراتشي، هما رحلتان فقط رحلة لطائرة باكستانية يوم الثلاثاء ورحلة لطائرة بنغلاديش يوم الجمعة لا ثالثة لهما .
فحجزنا في طائرة يوم الجمعة فسافرنا فيها بعد صلاة بإذن الله، وصلنا مطار (داكا ) في وقت متأخر من الليل, والمسافة بين مطار (كراتشي) ومطار (داكا) تستغرق ثلاث ساعات ونصف ساعة، وكان في استقبالنا نحن وجميع الذين وصلوا معنا لحضور اللقاء لجنة مرابطة بالمطار لاستقبال الوافدين, ومعهم عدد من الأشخاص الذين بيننا وبينهم معرفة سابقة من السوادنيين وبعض الباكستانيين, فقاموا بجميع إجراءات المطار, وللوافدين لحضور الاجتماع إجراء خاص، حيث أنهم لا يفتشون بل لا تفتح شنطهم, وإنما تكتفي بالإشارة عليها بالتباشير الملون فقط, بينما يفتّش غيرهم تفتيشاً دقيقاً، ثم نقلونا إلى مسجد لهم بجوار المطار ليوزعوا الضيوف، من هناك على منازلهم في المخيم المهّيأ لهم بجوار مقرّ الاجتماع، فتم توزيعنا قبل صلاة الفجر, بل هجعنا قليلاً قبل الأذان ثم أذن, فصلينا في ذلك المسجد القريب, وهو: عبارة عن صالون كبير أقيم على مساحة من الأرض تقدّر ب(كيلو ونصف في كيلو) ليّسع لآلاف من الناس, ويصلي العدد الكبير الذي قدروه بما يقارب المليون خلف إمام واحد دون استخدام مكبّر الصوت، بل يكتفى بعدد كبير من المبّلغين موزّعين في المسجد على أماكن مرتفعة, حيث يسمع كل مصلي مهما بعد مكانه عن الإمام صوت المبلغ فيّتبع الإمام, ولست أدري ما السبب في عدم استخدام مكبر الصوت في الصلاة, علماً أنهم كانوا يستخدمونه في المحاضرات (بيانات) والتوجيه والتعليمات اللازمة؟!
وأما كيف تم ذلك التنظيم الدقيق والإعداد العجيب, فأمر يعجب الإنسان عن وصفه وصفاً دقيقاً, فقد بنى المسجد ومنازل الضيوف من مواد بناء خفيفة تستخدم ثم ترد لأصحابها في حوانيتهم, وهي لا تزال صالحة للبيع والاستعمال, وهذه المواد عبارة عن زنك وعيدان الخيزران والخيش والحبال دون استخدام المسامير لئلا يتلف شيء من مواد البناء, إذ قد تبرع بها التجار وأصحاب المصانع وقاموا بأنفسهم بالبناء والتركيب, فإذا ما انقضى الاجتماع, فسوف يقوم بحلّ الحبال ونقض البناء بسهولة كما كان التركيب والبناء بسهولة من قبل .
في هذا المسجد الغريب من نوعه في ذلك الجو الإسلامي الهادئ يبعث على الخشوع والطمأنينة, وبعد الصلاة أخذ المصلون يعقدون جلسات موزعة في المسجد, ذلك الذي يشبه مساجد المسلمين في أيامهم الأول عندما كانت المساجد إنما تقصد للصلاة والعبادة فقط لا للتباهي بها وزخرفتها… والله المستعان.
فأخذت الجماعات الموزعة في المسجد تتدارس القرآن حفظاً, وكانت التلاوة قاصرة على السور القصار التي يحفظها غالباً جميع المصلين أو أكثرهم حتى تطلع الشمس ويحين وقت تناول طعام (الفطور), فبعد الفطور تُعدّ المحاضرات, وفي ضحى ذلك اليوم السبت 15/2/1399هـ حضرنا محاضرة ألقاها في طائفة ذلك المسجد فضيلة الشيخ محمد عمر باللغة العربية، وهي محاضرة تخصّ العرب فقط، ولقد كانت قيّمة ومفيدة أجاب فيها على كثير من الشبهات التي تدور حول نشاط الجماعة ووضعية دعوة الناس إلى الخروج، والغرض من الخروج وخلاصته تغيير البيئة للدعاة والمدعوين، لأن الذين يخرجون ليسوا كلهم دعاة, بل أكثرهم ممن يُراد إصلاحهم وترغيبهم في الإسلام وحُبّه، وتعليمهم ما يجهلون من أمور دينهم، وقد أثبتتْ التجربة أن ذلك لا يتم للإنسان إلا إذا خرج تاركاً مشاغل الحياة المتنوعة, وانتقل إلى بيئة صالحة للإصلاح… ..الخ, وبعد محاضرته أعلن لجماعة العرب أنهم يحضرون محاضرة في الميكرفون العام بعد صلاة الظهر, وطلب من أحدنا أن يقوم بهذه المحاضرة العامة، فلبيّنا الطلب طبعاً, فألقيتُ المحاضرة بعد صلاة الظهر، فتُرجمت فوراً إلى عدة لغات، ثم أعلنت عن محاضرة لعبد الكريم مراد يوم الأحد 16/2/1399هـ بعد صلاة الظهر، فكنّا نحضُرُ بعد كل صلاة محاضرة مترجمة من الأردية إلى العربية .
فألقى الشيخ عبد الكريم محاضرة في الموعد المحدد, وكانت تدور حول توحيد العبادة, والتحذير من الغلو في الصالحين, والبناء على قبورهم .
وأما محاضرة يوم السبت فكانت توجيهات عامة تناولت تحقيق كلمة التوحيد في آخرها.
هذا ! وقد كان محل الاجتماع بعيداً عن العاصمة نحو 7 كيلو متر، وهذا مما ساعدهم على إيجاد الهدوء ومواظبة الناس على صلاة الجماعة، بل ملازمتهم للمسجد مدة الاجتماع.
أما نحن وأمثالنا الذين وصلنا في وقت متأخر فلم نتمكن من دخول العاصمة لا قبل الاجتماع ولا بعده، فغادرنا بالسفر يوم الثلاثاء بعد انتهاء الاجتماع مباشرة للقيام بزيارة بعض الجهات في باكستان .
وأما غيرنا فبادروا بالخروج في سبيل الدعوة إلى الله، فكانوا يُشكّلون جماعات متعددة بعد كل محاضرة، ويوم الثلاثاء كان يوم توجيه للدعاة وتبصيرهم ووداعهم، وهو يوم إمتزج فيه الفرح بالبكاء الذي يدل على ما يكنّه القوم من التّحابُب في الله, والتفاني في حب الله, والتجرد للدعوة إلى الله, وتعليق قلوب العباد بالله وحده دون الالتفات إلى ما سواه.
هذا ملخص ما يُستفاد من محاضرات القوم, وحديثهم, وتصرفاتهم, وزهدهم المتعدد، خلافَ ما يَذكُرُ من لم يعرفهم حق المعرفة أو يتجاهل حقيقة القوم لغرض .
ومما ينبغي التنويه به أن الجماعة تتمتع مما لا تتمتع به الجماعات التي تدعو إلى الله، وهو الصبر مع من يريدون إصلاحهم وهدايتهم وحسن السياسة معهم، صبرٌ يشبه صبر الأم الرؤوف على طفلها الحبيب.
وقد هدى الله بهم خلقاً كثيراً في مختلف الجنسية، وفي مقدمتهم شبابنا الذين نبعثهم للدراسة إلى أوروبا وأمريكا, ثم نهملهم ونتركهم وشأنهم دون رعاية أو تربية، وقد قيّض الله بكثير منهم بهذه الجماعة فهداهم الله بها، بعد أن كادوا يمرقون من الإسلام متأثرين بحياة الجهة التي يدرسون فيها، ولديّ مشاهدات وقصص يطول سردها .
(( قصة قصيرة))
أذكر على سبيل المثال قصة قصيرة عن شاب من أهل الرياض حضر اجتماع داكا ضمن مجموعة من شباب في أمريكا بعد أن أنقذه الله من الجاهلية التي تورّط فيها، بسبب هذه الجماعة، وهذا أبدى لي رغبة في أن يعتمر, ولعل العمرة تُكفّر عنه سيئاته وتذهب بأمر الجاهلية.
فشجّعته على ذلك طبعاً، بعد أن ذكرتُ فضل التوبة، وأنها تجبُّ ما قبلها، فقال: وهو يحسُّ بالخجل والاستحياء باد على وجهه – يا أخ محمد أريد أن أعتمر، ولكن ما أدري كيف العمرة, وأين أعمل لها، وماذا أفعل إذا وصلت مكة ؟ لأني نسيتُ كل ما درسته في المرحلة الثانوية قبل أن أذهب إلى أمريكا ؟ وضيّعتُ كل شيء… قال هذه الجملة وهو متأثر، وأنا بدوري تأثّرت، فقلت له: فتعال بنا إلى بعيد عن الناس لكي أشرح لك أعمال العمرة إلى أن قال: هل تسمح تُسجّل لي ? قلت: لا مانع إذا لديك مسجل وشريط، فأحضر المسجل فسجلتُ له بالاختصار، فشجّعته على زيارة المسجد النبوي بالمدينة المنورة، وزيارة الجامعة الإسلامية لكي تُزوّده الجامعة بالكتب والرسائل النافعة .
والأمر الذي أريد أن أخلص إليه في هذه القصة وما قبلها أن لجماعة التبليغ مكاسب يطول سردها ليست لغيرها من الجماعات التي تدعو إلى الله في العالم الإسلامي وغير الإسلامي، وهي مكاسب ملموسة لمس اليد، لا يقدر أحد إنكارها عدواً كان أو صديقاً.
وسرُّ المسألة أن الجماعة جعلت الدعوة إلى الله ومحاولة إصلاح الناس هدفها في هذه الحياة, ولم تمسك الدعوة باليد اليسرى والتعيش بإسمها باليد اليمنى، بل مسكتها بكلتى اليدين، ثم إنها ابتعدت عن التطلع إلى حب المدح والثناء عليها, بل استوى عندها المدح والذم، حتى أصبحت الحياة رخيصة عندها .
وأكتفي بهذه الإشارة لأن الأمر واضح، ولأن أثر دعوة القوم واضح كما قلت, والعاملون يستدل عليهم بآثار أعمالهم وبمكاسبهم, والله ولي التوفيق، وفي ذلك الجو الذي ذَكَّرنا حياة الدعاة الأولين الفطريين… قضينا ثلاثة أيام .
وفي اليوم الرابع غادرنا كراتشي بعد صلاة الظهر من يوم الثلاثاء 18/2/1399هـ فبادرنا بالحجز في طائرة يوم الأحد 23/2/1399هـ إلى جدة, على أن يسافر أحدنا إلى لاهور في هذه الفترة قبل يوم الأحد ثم يعود ليسافر الوفد معاً إلى جدة, فتم سفره إلى لاهور يوم الأربعاء 26/2/1399هـ , ولكنه تأخر لظروف طارئة ولم يتمكن من العودة إلى كراتشي إلا في يوم الاثنين 24/2/1399هـ , فبعد ذلك كان سفر أحدنا يوم الأحد 23/2/1399هـ وسفر الآخر يوم الأربعاء 26/2/1399هـ , هكذا انتهت الرحلة المباركة إن شاء الله .
)) ملاحظات ((
ومما يلاحظ أن جماعة التبليغ ليس لها اسم رسمي، وإنما يُسمّيها الناس بهذا الاسم الذي تدل عليه دعوتهم وعملهم وهو التبليغ والتذكير .
وأن المِرَانَ على الدعوة والتنظيم والاجتماعات المتكررة كل ذلك أكسبهم دقة التنظيم في أمورهم, دون أدنى تكلّف أو ملل .
وفي إمكان الجماعة أن تعقد وتُنظّم لأكبر اجتماع الذي لو قامت للإعداد له جهة غيرهم لتكلّفت نفقات باهظة، واحتاجت لزمن طويل جداً، أما جماعة التبليغ فلا تتكلف في مؤتمراتها ولقاءاتها شيئاً يُذكر، إلا ما كان من قِرَى الضيف بالنسبة للوافدين من جهات بعيدة، بل أفراد الجماعة يعتبر كل واحد نفسه مسؤولاً عن المؤتمر، فكل واحد منهم يقوم بعمل يخصّه، ويحضر ما في استطاعته أن يحضر, ثم يباشر العمل بنفسه, فكل واحد منهم يحاول أن يخدم وينفع غيره, مما جعل مستوى التحابُبِ عندهم مرتفعاً جداً .
)) اقتراحات ((
وبعد أن شرحنا هذا عن الجماعة وما تقوم به من أعمال إسلامية تُعبّر عنها تلك المكاسب الهائلة الملموسة التي تحدثنا عن بعضها، والتي يَعتَبِرُ فيها الصديق والعدو على حد سواء، بعد هذا كله يحسُنُ بنا أن نقترح الآتي:
1 – التعاون مع الجماعة تعاونا فعّالاً وصادقاً مُؤثّرين ومُتأثّرين, ليحصل ما يشبه تبادل الخبراء.
2 -نقترح أن يكون لنشاط الجماعة في صفوف طُلابنا ليُفيدوا ويستفيدوا، وطلابنا من أحوج الناس إلى مثل هذا النشاط, وهذه الدعوة المباركة .
3- أن تُكثرالجامعة الإسلامية من المشاركة في لقاءات الجماعة ومؤتمراتهم، مُمَثّلةً في أعضاء هيئة التدريس وطلابها .
والله نسأل أن يجعل أعمالنا خالصة لوجهه الكريم, بعيدة عن الرياء والسمعة إنه خير مسؤول, وصلى الله وسلم وبارك على أفضل رسله محمد وآله وصحبه .
محمد أمان بن علي الجامي
عميد/ كلية الحديث الشريف والدراسات الإسلامية
10/2/1399 هـ

তাবলিগে বের হওয়ার কারনে আবদুল্লাহ ইবনে বায রাহঃ এর পক্ষ থেকে খুব দোয়া sonkolito 3

তাবলিগে বের হওয়ার কারনে আবদুল্লাহ ইবনে বায রাহঃ এর পক্ষ থেকে খুব দোয়া…

আহ্‌নাফ বিন আলী আহ্‌মাদ

যদিও তাবলীগ জামাতকে হক হিসেবে প্রমান করার জন্য কোন নির্দৃষ্ট রিজনের আলেমদের ফতোয়ায় তেমন কোন প্রভাব ফেলে না তারপরও অনেকের কনফিউশন দূর করার জন্য বলতে পারি নজদের অনেক বড় বড় শায়খগন তাদের কিতাব , পত্র ও প্রতিবেদনে তাবলীগ জামাতের পক্ষে অনেক কথা বলেছেন। তারা যদি তাবলীগ জামাতের পক্ষে কিছু নাও বলতেন তাতেও এ জামাতের মূল কার্যক্রমের উপর কোন শরঈ আপত্তি আসা প্রশ্নই উঠে না। কারণ শরঈ আপত্তিতো তখন আসবে যখন একে শরঈ হুজ্জতের সাথে যাচাই করা হবে।
আরবের অন্যতম আলেম আবু বকর যাবের আল জাযায়েরি তাবলিগ জামাতের পক্ষে “আলকাউলুল বালীগ ফি জামাতিত্‌ তাবলীগ” নামে সতন্ত্র একটি কিতাব লিখেছেন। সেখানে সে বিরোধীদের অনেক গুলো প্রশ্নের শরঈ জবাব দিয়েছেন। শায়খ আবদুল্লাহ বিন বায রহঃ তার অনেক পত্রে তাবলিগ জামাতের সাথে বের হওয়ার জন্য অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তার অনেকগুলো পত্র রয়েছে। এছাড়াও আরবের গ্রান্ড মুফতি ইবরাহীম আলে শেখ এ জামাতের অনেক প্রসংশা করে আরবের বিভিন্ন স্থানের আলেমদের কাছে পত্র লিখেছেন যেন সকলে এ জামাতকে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে মদিনা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধী দল কর্তৃক তাবলীগ জামাতের ইজতেমা ও বিভিন্ন কার্য প্রনালি পরিদর্শন পূর্বক একটি প্রতিবেদন যা হরহামেশা বিন বায রাহঃ তার পত্রে উল্লেখ করে থাকেন। শায়খ ইউসূফ মালাহী জামায়াতে তাবলীগ সম্পর্কে একটি সতন্ত্র রীসালা লিখেছেন যা বিন বায রাহঃ হর-হামেশা তাবলীগ জামাতের ব্যাপারে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করার জন্য দিয়ে থাকেন। আরো অনেক অনেক কথা ।  এখন আমি শুধুমাত্র বিন বায রাহঃ এর একটি পত্র উল্লেখ করবো ইনশাল্লাহ।
এখন আমি আপনাদের সামনে জামায়াতে তাবলিগ সম্পর্কে আল্লামা আবদুল আজীজ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে বায (রহঃ)-এর পত্র উল্লেখ করবো যা সৌদি আরবের কেন্দ্রিয় ইসলামি গবেষণা ও ফতোয়া অধিদপ্তর আল মামলাকাতুল আরবিয়্যাতু সাউদিয়া-ইদারাতুল বুহুসিল ইলমিয়্যাতি ওয়াস ইফতা ওদ্দাওয়াতি ওয়াল ইরশাদ (মাকতাবুর রয়িস) এ সংরক্ষিত আছে। পত্রটি লেখা হয়েছে শায়খ আবদুল আজীজ ইবনে ইউসূফ বাহযাদ সাহেবের নিকট।



আল্লামা আবদুল আজীজ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে বায (রহঃ)-এর মূল পত্রটির স্ক্রিন সট নিম্নরুপ -

পত্রটির অনুবাদঃ
সৌদি আরবের সাবেক প্রধান মুফতী
আল্লামা শায়খ আবদুল আজীজ ইবনে বায(রহঃ)-এর পত্র
শায়খ আবদুল আজীজ ইবনে ইউসূফ বাহযাদ সাহেবের নিকট
নং ২৫১/খ, তারিখ ২৫/২/১৪০৮ হিজরী

আবদুলআজীজ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে বায এর পক্ষ থেকে সম্মানিত ছেলে শায়খ আবদুল আজীজ ইবনেইউসুফ বাহযাদের নিকট। আল্লাহপাক তার ইলম ও আমল বৃদ্ধি করুন আর তাকে সদা বরকতপূর্ণরাখুন-আমিন।

আম্মাবাদ!গত ১১/১২/১৪০৭ হিজরী তারিখে লিখিত আপনার পত্র পৌঁছেছে। আল্লাহপাক আপনাকে হিদায়েত ওতাওফিকের সাথে বিদ্যমান রাখুন। পত্রে যা খুশীর খবর লিখেছেন তা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। অর্থাৎ আপনি, আপনার পিতা এবং আপনার ভাই মাহমূদ যে জামাতের সহিত বের হয়েছেন।আর আপনি ১৩৯৩ হিজরী সনে মদীনা ইউনিভার্সিটি থেকে ফারেগ হওয়ার পর থেকে প্রত্যেকছুটিতে জামাতের সহিত বের হন এবং পাকস্তান, ভারত, লন্ডন, ব্রাজিল, সিলান, আমেরিকা ওযুক্তরাজ্য আরব আমিরাত সহ অনেক দেশে জামাতের সাথে গিয়েছেন। আর কিছু ভাইয়েরা এক চিল্লার জামাত নিয়ে চিনে গেছেন, আর কিছু রাশিয়া গেছেন চার মাসের জন্য।আর ‘রায়ওন্দের’ তাবলীগি মারকাজ যে ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। অনেক কষ্ট স্বীকার করেআল্লাহর কাছ থেকে উত্তম বদলা পাওয়ার জন্য। আর আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা অনেককে উপকৃত করেছেন। এসব কিছু আল্লাহরই তৌফিকে এবং পারষ্পরিক সহযোগিতার কারণে। আপনি যা বলেছেন, তা শুনে অনেক খুশী হয়েছি এবং আল্লাহর প্রশংসা করেছি। সবার জন্য আল্লাহর কাছে তৌফিক কামনা করি যেন আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে তার পথের আহবায়ক করেন।

     এই শুভ লগ্নে আমি আপনাকে আপনার পিতা ও ভাইমাহমূদকে সময় সুযোগ মতে নিয়মিত জামাতের সহিত দাওয়াত ইলাল্লাহের কাজে বের হওয়ারপরামর্শ দিতেছি। যারা আপনাদের সাথে বের হয় তাদেরকে সহীহ আকীদার দিকে আহবান করবেনএবং অন্যান্য দায়ীদেরকেও তা বলবেন। ছাত্রদেরকে আপনাদের সাথে বের হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন এবং কর্মতৎপরতায় শরীক থাকার জন্য উৎসাহ দিবেন। এটিই হল নবী রাসূলগণও তাঁদের অনুসারীদের নীতি। আল্লাহপাক আমাকে ও আপনাদেরকে তাঁদের অনুসরণ করার তাওফিকদান করুন। তাবলীগ জামাতের ব্যাপারে সদ্য প্রকাশিত বইয়ের সম্পর্কে যে বলেছেন, সেই হিসেবে আপনার জন্য কতিপয় কিতাব পাঠালাম। এগুলোর মধ্যে শায়খ আবু বকর আল জাযায়েরীর পুস্তিকা ও শায়খ ইউসুফ আল মালাহীর পুস্তিকাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা কিতাবে তাবলীগ সম্পর্কে পক্ষে-বিপক্ষে সব কথাই বলেছেন। দোয়া করি যেন আল্লাহ্‌পাক সবাইকে উপকৃত করেন। আশা করি পিতা ও ভাই মাহমুদ এবং অন্যান্য মাশায়েখদের আমার সালাম দিবেন।
وا لسلا معليكم و رحمت الله و بر كاته
পত্রের অনুবাদ শেষ হল।
উল্লেখ্য এখানে শায়খ বিন বায রহঃ শায়খ আবু বকর আল জাযায়েরীর ও শায়খ ইউসুফ আলমালাহীর পুস্তিকার কথা উল্লেখ করেছেন। সামনের কোন এক অবসরে শায়খ আবু বকর আল জাযায়েরীর পুস্তিকাটি এবং শায়খ ইউসুফ আল মালাহীর পুস্তিকাটি হতে কিছু কথা উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ।

http://ideabd.org/%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%97%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%86/
 

বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

মসজিদে নববী থেকে নবীজীর স. দেহ মোবারক সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। নিউজটা পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক

sonkoleto
 
ব্রিটেনভিত্তিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ডেইলি মেইল, ও টেলিগ্রাফের বরাত দিয়ে গতকাল সারাদিন নিউজফিডে এরকম একটি নিউজ শেয়ার করতে দেখলাম যে, মসজিদে নববী থেকে নবীজীর স. দেহ মোবারক সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনলাইন পোর্টালগুলোও নিউজটাকে হটকেক হিসেবে নিয়ে নিল।

এ সম্পর্কে আরবীতে খুঁজতে গিয়ে এই লিংকটি পেলাম: http://www.almasryalyoum.com/news/details/514359 - এতেও ইংরেজি পত্রিকাগুলোর ন্যায় শিরোনাম করা হয়েছে। তবে ভেতরে পড়তে গিয়ে জানতে পারলাম ড. আলী বিন আব্দুল আযীযের “عمارة مسجد النبي عليه السلام ودخول الحجرات فيه دراسة عقدية” শীর্ষক গবেষণার সূত্রে তারা এ কথাগুলো বলছেন।
আরবী গবেষণার শিরোনামটি সার্চ করতেই গবেষণাটি মাজমা’য়াহ ইউনিভার্সিটির সাইটে পাওয়া গেল, যেখানে সম্ভবত তিনি ফ্যাকাল্টি। http://faculty.mu.edu.sa/download.php?fid=77545 আরবী নিউজটিতে এখান থেকে বেশ কিছু কোটেশন আনা হয়েছে। এতে নিশ্চিত হলাম, ডকুমেন্ট এটাই, যা নিয়ে কথা হচ্ছে।
প্রথম কথা হলো, এটা মূলত মসজিদে নববীর সম্প্রসারণ ও সংস্কারের ইতিহাস, বিশেষ করে আম্মাজান আয়েশা রা. এর হুজরাসহ (যেখানে নবীজী স. শায়িত) অন্যান্য হুজরাকে মসজিদে অন্তর্ভুক্তিকরণের ইতিহাস, এবং শেষে ওনার কিছু প্রস্তাবনা। এটা মোটেও কোনো সিদ্ধান্ত নয়।
গবেষণাটা ও শেষের প্রস্তাবনাগুলো সময় নিয়ে পড়লাম। ইতিহাসটা জেনে খুব ভালো লাগল, তবে সংস্কারের বিষয়গুলো আসলেই খুব কষ্ট দিল। শেষে ওনার প্রস্তাবনাগুলোও খুব চমৎকার। এখানে রাসূল স. এর দেহ মোবারক সরানোর বিন্দুমাত্র কথাও নেই। অথচ এটাকেই শিরোনাম করছে সবাই।
গবেষণাটি পড়লে স্পষ্ট বুঝা যায়, তিনি ইতিহাসের নিরিখে মসজিদে নববীর সংস্কার ও বিবর্তন তুলে ধরেছেন। যুগে যুগে নানা আমীর-সুলতানের আমলে নানা নতুন বিষয় সংযোজনের কথা তুলে ধরেছেন।
এর শুরু প্রথম শতাব্দীর শেষ দিকে উমাউয়ী খলীফা ওয়ালীদ বিন আব্দুল মালিকের মাধ্যমে। তিনিই প্রথম আম্মাজান আয়েশা রা. এঁর হুজরা (যেখানে রাসূল স. এঁর কবর) ও অন্যান্য হুজরাকে মসজিদে নববীর অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন, যা খলীফা ওমর রা. ও উসমান রা. কেউই করেন নি। ওনাদের সময় মসজিদের অন্য তিন পাশ দিয়ে মসজিদ বড় করা হয়েছে, এই পূর্ব দিকটাকে ধরা হয় নি। যেন রাসূল স. এর কবর মসজিদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে যায়, আর কবরকে মসজিদ বানাতে রাসূল স. নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা ইয়াহুদী ও নাসারাদের লা’নত করুন, এরা এদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছে। (বুখারী: ১৩৯০)
যাহোক, তাবেয়ীদের বিশিষ্ট সাত ফকীহসহ অন্যদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও তৎকালীন খলীফা হুজরাকে মসজিদের ভেতর নিয়ে নেন। এরপর একে একে যুগে যুগে এ মসজিদে নানা ডিজাইন, মূল্যবান পাথর, মোজাইক ইত্যাদি সংযুক্ত হয়। হুজরার ওপর গম্বুজ হয়, সুলতানদের নাম খচিত মিম্বর আসে, হুজরা ও কবরের ওপর নানা আয়াত লিখিত পর্দা আসে। প্রায় প্রত্যেক খলীফাই এগুলোর পেছনে অঢেল টাকা-পয়সা খরচ করেন। এর মধ্যে দেয়ালে ও কলামে বিভিন্ন বিদয়াতী/ শিরকী কথার শ্লোকও আসে।
সবশেষে তিনি প্রথম যে প্রস্তাব করেছেন সেটা হলো, হুজরার পূর্ব দিক থেকে দেয়াল পর্যন্ত এবং উত্তর দিকে আহলুস সুফফার জায়গাসহ ওদিকে বাবে জিবরীল পুরোটাকে দেয়াল দিয়ে দিতে, যদিও সেটা কাঠের হয়। এতে রাসূলের স. কবর ও হুজরাগুলো মসজিদ থেকে আলাদা হবে, যা রাসূলেরই স. নির্দেশ। আর বিদয়াতীরা এসব জায়গা ব্যবহারের সুযোগ কম পাবে; একইভাবে ফাতিমা রা. -র হুজরাকে কেন্দ্র করে শীয়াদের তৎপরতাও রোধ হবে।
এছাড়া হুজরার দেয়াল ও কলামের ওপর লেখা প্রশংসাসূচক শ্লোকগুলো মিটিয়ে দিতে, যেন শিরকের পথ বন্ধ হয়। এবং দুই পাথুরে জায়গায় লেখা সাহাবীদের নাম ও বারো ইমামের নাম মুছে ফেলতে, যেন এগুলোকে কেন্দ্র করে হওয়া ফাসাদ বন্ধ হয়। এবং সবুজ গম্বুজকে আর সংস্কার না করতে এবং এর ওপরের তামার প্রলেপও যথাসম্ভব মিটিয়ে দিতে। (এগুলো রাসূল স. ও খুলাফায়ে রাশেদীনের যুগে ছিল না। মসজিদের এসব অতিরিক্ত নকশা মূলত পারস্য/রোম ও চীনাদের প্রভাব, গবেষণায় তা তিনি দেখিয়েছেন। এর আগে মসজিদ ছিল সাদামাটা।)
আর সম্প্রসারণ যেন কিবলার দিকে করা হয়। উমর রা. ও কিবলার দিকে সম্প্রসারণ করেছিলেন। কিবলার দিকে দেয়াল ভেঙে তা আরো সামনের দিকে সম্প্রসারিত করা যেতে পারে।
সবশেষে তিনি মসজিদে নববীর প্রয়োজনগুলো গবেষণার জন্য উলামাদের একটি টিম গঠনের সুপারিশ করেন, যেন মানুষের ঈমান-আক্বীদা সুরক্ষিত থাকে।
সবমিলিয়ে ওনার গবেষণাটি আমার কাছে দালীলীক ও যৌক্তিক মনে হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন আসে, নিউজটা ছড়াচ্ছে কোথা থেকে?
নিউজটা মূলত করেছে ইউকের ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ড. ইরফান আলাউইর বরাত দিয়ে। ওনার পরিচয়ে যাব না, গার্ডিয়ানে ওনার সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও নিউজগুলো রয়েছে। (http://www.theguardian.com/profile/irfan-al-alawi) মূল গবেষণা থেকে নিউজটি মাইলের পর মাইল দূরে অবস্থান করছে। নিউজটা পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে।
আরব বিশ্বের বলতে গেলে বড় কোনো পত্রিকায় এসব কভার করে নি, কভার করার মতো কিছু হয় নি বলে। আরবী-ইংরেজী-বাংলাসহ সব ভাষাতেই শিয়া ও বিদয়াতীদের এই নিউজ ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পেছনে কী কারণ, তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। সবমিলিয়ে আমাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন। এবং তাহকীক (যাচাই) ছাড়া নিউজ শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার তাওফীক দিন। আমীন।
==
লিংকসমূহ:
১. ইন্ডিপেন্ডেন্টের মূল নিউজ: http://www.independent.co.uk/news/world/middle-east/saudis-risk-new-muslim-division-with-proposal-to-move-mohameds-tomb-9705120.html
২. ড. ইরফান আলাউই: http://www.theguardian.com/profile/irfan-al-alawi
৩. একটি আরবী নিউজ: http://www.almasryalyoum.com/news/details/514359
৪. ড. আলী বিন আব্দুল আযীযের “عمارة مسجد النبي عليه السلام ودخول الحجرات فيه دراسة عقدية” শীর্ষক গবেষণা: http://faculty.mu.edu.sa/download.php?fid=77545

লিখেছেন :  Mufti Yousuf Sultan 
 
 
রাসুল সা: রওজা সরানোর খবর: প্রচারনা ও বাস্তবতা   
link
 
মহানবীর (সা.) রওজা মোবারক সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ! 
 

http://insaf24.com/archives/7365?fb_action_ids=273952356128791&fb_action_types=og.comments&fb_source=aggregation&fb_aggregation_id=288381481237582 

 

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কুরবানী সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব and মাছায়েলে কুরবানী তাৎপয্য

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব?
 যিলহজ্জ মাসের দশ, এগার, বার অর্থাৎ দশ তারিখের সুবহে সাদিক হতে বার তারিখের সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যদি কেউ মালিকে নিসাব হয় অর্থাৎ হাওয়ায়েজে আসলিয়াহ্ (নিত্যপ্রয়োজনীয় ধন-সম্পদ) বাদ দিয়ে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা তার সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হয়, তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।


(1)  প্রশ্ন      নিজের ওয়াজিব কুরবানি করার পর মৃত আত্মীয়র জন্য কুরবানি করা যাই কিনা।


 জবাব:

নিজের ওয়াজিব কুরবানী আদায় করার পর মৃত আত্মীয়ের জন্য কুরবানী করতে পারবে। এ কুরবানীর সওয়াব পৌঁছে যাবে সেই মৃত ব্যক্তির আমলনামায়। আর মালিক থাকবে কুরবানীদাতা। অর্থাৎ এর গোস্ত অন্য কুরবানীর গোস্তের মতই কুরবানীদাতা ব্যবহার করতে পারবে।
দলিল:
فى البزازية- على هامش الهندية- واجاز نصير بن يحيى ومحمد بن سلمة ومحمد بن مقاتل فيمن يضحى عن الميت انه يصح به  مثل ما يصنع باضحية نفسه من التصدق والأكل، والأجر للميت والملك للذابح، (الفتاوى البزازية على هامش الهندية-6/295)

(2)   প্রশ্ন         ৫জন মিলে কুরবানী দেয়া হচ্ছে। এর মাঝে দুইজনের নিয়ত শুধু গোস্ত খাওয়া। কুরবানী দেয়া ইবাদত এমন মনে কর কুরবানী দিচ্ছে না। তাহলে বাকিদের কুরবানীর হুকুম কি?

জবাব:   কুরবানী শরীকদার দ্বীনদার ও আল্লাহর জন্যই কুরবানী দিচ্ছে এমন ব্যক্তি হওয়া আবশ্যক। যদি একজন শরীকের নিয়তও খারাপ থাকে, তাহলে সকল শরীকের কুরবানী বাতিল বলে সাব্যস্ত হবে।
দলিল
فى رد المحتار- ( وإن ) ( كان شريك الستة نصرانيا أو مريدا اللحم ) ( لم يجز عن واحد ) منهم لأن الإراقة لا تتجزأ (رد المحتار، كتاب الاضحية-9/472)  
প্রামাণ্য গ্রন্থাবলী
১-ফাতওয়া শামী-৯/৪৭২
২-ফাতওয়া তাতারখানিয়া-৩/৪৫৪
৩-মিনহাতুল খালেক আলাল বাহরির রায়েক-৯/৩২৫
৪-খানিয়া আলা হামিশিল হিন্দিয়া-৩/৩৪৯
৫-ফাতওয়া আলমগীরী-৫/৪০৪
৬-ফাতওয়া আল ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ-৩/৭৫
৭-তাবয়ীনুল হাকায়েক-৬/৪৮৪
৮-খুলাসাতুল ফাতওয়া-৪১৫
والله اعلم بالصواب



(3)  প্রশ্ন     কয়েকজন মিলে শেয়ারে কুরবানী দেয়ার মাসআলা কি?



জবাব:
উট, গরু ও মহিষের মাঝে ৭ জন পর্যন্ত শরীক হয়ে কুরবানী করা জায়েজ আছে। এরচে’ বেশি শরীক হলে কুরবানী করলে কুরবানী হবে না।
আর বকরী, দুম্বা, ভেড়ার মাঝে কোন শরীকানা জায়েজ নয়।
দলিল:
فى البدائع- ولا يجوز بعير واحد ولا بقرة واحدة عن أكثر من سبعة
 ويجوز ذلك عن سبعة أو أقل من ذلك وهذا قول عامة العلماء___ والصحيح قول العامة لما روي عن رسول الله صلى الله عليه وسلم البدنة تجزي عن سبعة والبقرة تجزي عن سبعة (بدائع الصنائع، كتاب الاضحية،  فصل وأما محل إقامة الواجب-4/206-207)
وفى البحر الرائق- وقوله شاة أو سبع بدنة بيان للقدر الواجب والقياس أن لا يجوز إلا البدنة كلها إلا عن واحد لأن الإراقة قربة لا تتجزىء إلا أنا تركناه بالأثر وهو ما روي عن جابر رضي الله تعالى عنه قال نحرنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم البقرة عن سبعة والبدنة عن سبعة ولا نص في الشاة فبقي على أصل القياس (البحر الرائق-8/319)
প্রামান্য গ্রন্থাবলী:
১- বাদায়েউস সানায়ে-৪/২০৬-২০৭
২- আল বাহরুর রায়েক-৮/৩১৯
৩-ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৪৫৭
৪-খুলাসাতুল ফাতওয়া-৩/৩১৫
৫-ফাতওয়া আলমগীরী-৫/৩০৪
৬-হেদায়া-৪/৪২৮






(4)
প্রশ্ন:
যার উপর কুরবানী ওয়াজিব, সে যদি কুরবানীর দিনগুলোতে কুরবানীর পশু না পায়, তাহলে কী করবে?

                                                                   জবাব:
                                                      
কুরবানীর পশু না পাওয়া অবস্থায় যদি কুরবানীর দিন অতিক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে কুরবানী যোগ্য একটি বকরীর সমমূল্য সদকা করে দেয়া ওয়াজিব।
দলিল:
فى البدائع الصنائع- وإن كان لم يوجب على نفسه ولا اشترى وهو موسر حتى مضت أيام النحر تصدق بقيمة شاة تجوز في الأضحية لأنه إذا لم يوجب ولم يشتر لم يتعين شيء للأضحية وإنما الواجب عليه إراقة دم شاة فإذا مضى الوقت قبل أن يذبح ولا سبيل إلى التقرب بالإراقة بعد خروج الوقت لما قلنا انتقل الواجب من الإراقة والعين أيضا لعدم التعيين إلى القيمة وهو قيمة شاة يجوز ذبحها في الأضحية (بدائع الصنائع، كتاب الأضحية، فصل واما كيفية الوجوب فانواع-4/203)
প্রামান্য গ্রন্থাবলী:
১. ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৪২৩-৪৬৫
২. আল বাহরুর রায়েক-৮/৩২২
৩. ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/২৯৬
৪. বাদায়েউস সানায়ে-৪/২০৩
৫. খোলাসাতুল ফাতওয়া-৩/৩১৭
৬. হেদায়া-৪/৪৩০


(5)
প্রশ্ন:
নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর উপর তার সম্পদ থেকে কুরবানী ওয়াজিব হবে কি?
জবাব:
بسم الله الرحمن الرحيم
না, অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর সম্পদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। তার সম্পদ থেকেও নয় তার পিতার সম্পদ থেকেও নয়।
দলিল:
فى رد المحتار-وليس للأب أن يفعله من مال طفله ، ورجحه ابن الشحنة .
قلت : وهو المعتمد لما في متن مواهب الرحمن من أنه أصح ما يفتى به  (الفتوى الشامية-9/458
প্রামান্য গ্রন্থাবলী:
১. ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৪৫৮
২. ফাতওয়ায়ে খানিয়া আলা হামিশিল হিন্দিয়া-৩/৩৪৫-৩৪৬
৩. বাদায়েউস সানায়ে’-৪/১৯৭
৪. আল বাহরুর রায়েক-৮/৩১৯
৫. হেদায়া-৪/৪২৮



(6)  প্রশ্ন:

পশু জবাই করতে গিয়ে গর্দান আলাদা হয়ে গেলে হুকুম কি?


জবাব:
ইচ্ছাকৃত গর্দান আলাদা করে ফেলা মাকরুহে তাহরীমী। অনিচ্ছাকৃত হলে কোন সমস্যা নেই। মুরগী খাওয়াতে কোন গোনাহ ও হবে না এবং তা হারামও হবে না। { হেদায়া-৪/৪২২, ফাতওয়ায়ে রহিমিয়া-১০/৬৯, কিতাবুল ফাতওয়া-৪/১৯৩}
দলিল
فى رد المحتار-( و ) كره كل تعذيب بلا فائدة مثل ( قطع الرأس والسلخ قبل أن تبرد ) (الفتوى الشامية-9/427)
প্রামান্য গ্রন্থাবলী
১- ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৪২৭
২-ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/২৮৬
৩- আল বাহরুর রায়েক-৮/১৭০
৪-হেদায়া-৪/৪২২

( 7)              প্রশ্ন          হারাম টাকা উপার্জনকারীর সাথে কুরবানী দেয়ার হুকুম কি?


জবাব:
হারাম টাকা কামানোর সম্ভাবনার সাথে সাথে হালাল টাকাও আছে সুনিশ্চিতভাবে। তাই স্বাভাবিকভাবে তার সাথে কুরবানীতে শরীক হতে কোন সমস্যা নেই। তবে যদি একথা জানা যায় যে, তিনি হারাম টাকা দিয়েই কুরবানী দিচ্ছেন। কিংবা কুরবানী করার দ্বারা তার আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য নয়, বরং গোস্ত খাওয়া, বা মানুষকে দেখানো উদ্দেশ্য হয়, তাহলে নিয়ত খারাপ থাকার কারণে তার সাথে কুরবানী করা জায়েজ হবে না। এরকম ব্যক্তির সাথে কুরবানীতে শরীক হলে উক্ত পশুতে শরীক সবার কুরবানী বাতিল হয়ে যাবে।
فى رد المحتار- ( وإن ) ( كان شريك الستة نصرانيا أو مريدا اللحم ) ( لم يجز عن واحد ) منهم لأن الإراقة لا تتجزأ (رد المحتار، كتاب الاضحية-9/472)
প্রামাণ্য গ্রন্থাবলী
১-ফাতওয়া শামী-৯/৪৭২
২-ফাতওয়া তাতারখানিয়া-৩/৪৫৪
৩-মিনহাতুল খালেক আলাল বাহরির রায়েক-৯/৩২৫
৪-খানিয়া আলা হামিশিল হিন্দিয়া-৩/৩৪৯
৫-ফাতওয়া আলমগীরী-৫/৪০৪
৬-ফাতওয়া আল ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ-৩/৭৫
৭-তাবয়ীনুল হাকায়েক-৬/৪৮৪
৮-খুলাসাতুল ফাতওয়া-৪১৫

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

http://ahlehaqmedia.com/798




(8)   প্রশ্নকুরবানী কার উপর ওয়াজিব?

জাওয়াব: যিলহজ্জ মাসের দশ, এগার, বার অর্থাৎ দশ তারিখের সুবহে সাদিক হতে বার তারিখের সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যদি কেউ মালিকে নিসাব হয় অর্থাৎ হাওয়ায়েজে আসলিয়াহ্ (নিত্যপ্রয়োজনীয় ধন-সম্পদ) বাদ দিয়ে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা তার সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হয়, তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।

(9)         সুওয়াল: কুরবানীর কিছুদিন আগে নাকি হাত ও পায়ের নখ কাটা, মোছ ছাঁটা এবং মাথার চুল ইত্যাদি কাটা যায় না? কুরবানী করার পর কাটতে হয়! কথাটা কতটুকু সত্য?

জাওয়াবঃ হ্যাঁ, যারা কুরবানী দেয়ার নিয়ত রাখেন, তাদের পক্ষে যিলহজ্জের চাঁদ ওঠার পর থেকে এই চাঁদের দশ তারিখ কুরবানী করা পর্যন্ত মাথার চুল, হাতের ও পায়ের নখ ইত্যাদি না কাটা মুস্তাহাব। যেমন হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
عن ام سلمة عليهاالسلام قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من راى هلال ذى الحجة و اراد ان يضحى فلا ياخذ من شعره ولا من اظفاره.
অর্থঃ- “হযরত উম্মে সালামা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখলো এবং কুরবানী করার নিয়ত করলো, সে যেন (কুরবানী না করা পর্যন্ত) তার শরীরের চুল, নখ ইত্যাদি না কাটে।” (মুসলিম শরীফ)
মূলত, ছহীহ্ ও গ্রহণযোগ্য মত হলো এই যে, যারা কুরবানী করবে এবং যারা কুরবানী করবে না, তাদের উভয়ের জন্যই উক্ত আমল মুস্তাহাব ও ফযীলতের কারণ। আর এ ব্যাপারে দলীল হলো এ হাদীছ শরীফ।
যেমন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে,
عن عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم امرت بيوم الاضحى عيدا جعله الله لـهذه الامة قال له رجل يا رسول الله صلى الله عليه وسلم ارايت ان لم اجد الا منيحة انثى افاضحى بـها قال لا ولكن خذ من شعرك واظفارك وتقص شاربك وتحلق عانتك فذلك تمام اضحيتك عند الله.
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, মহান আল্লাহ্ পাক উনার রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “আমি কুরবানীর দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত দিনটিকে এই উম্মতের জন্য ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি যদি একটি মাদী মানীহা (উটনী) ব্যতীত অন্য কোন পশু কুরবানীর জন্য না পাই, তাহলে আপনি কি (আমাকে) অনুমতি দিবেন যে, আমি উক্ত মাদী মানীহাকেই কুরবানী করবো। জবাবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, না। তুমি উক্ত পশুটিকে কুরবানী করবে না। বরং তুমি কুরবানীর দিনে তোমার (মাথার) চুল ও হাত-পায়ের নখ কাটবে। তোমার গোঁফ খাট করবে এবং তোমার নাভীর নিচের চুল কাটবে, এটাই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তোমার পূর্ণ কুরবানী অর্থাৎ এর দ্বারা তুমি মহান আল্লাহ্ পাক উনার নিকট কুরবানীর পূর্ণ ছওয়াব পাবে।” (আবু দাউদ শরীফ)
উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে যে, যারা কুরবানী করবে না, তাদের জন্যও যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত নিজ শরীরের চুল, নখ ইত্যাদি না কাটা মুস্তাহাব। আর যে ব্যক্তি তা কাটা থেকে বিরত থাকবে, সে একটি কুরবানীর ছওয়াব পাবে।

( 10)  সুওয়াল: হালাল পশুর কোন কোন অংশ খাওয়া নিষিদ্ধ?

জাওয়াব: কুরবানী বা হালাল পশুর ৮টি জিনিস খাওয়া যাবে না। (১) দমে মাছফুহা বা প্রবাহিত রক্ত হারাম, (২) অন্ডকোষ, (৩) মুত্রনালী, (৪) পিত্ত, (৫) লিঙ্গ, (৬) গুহ্যদ্বার, (৭) গদুদ বা গুটলী মাকরূহ্ তাহ্রীমী, (৮) শিরদাড়ার ভিতরের মগজ, এটা কেউ মাকরূহ্ তাহ্রীমী, আবার কেউ মাকরূহ্ তান্যিহী বলেছেন।



(11) সুওয়াল:    কুরবানীর পশু যবেহ করার পূর্বে চামড়া বিক্রি করা জায়িয আছে কি?
জাওয়াব: কুরবানীর পশু অথবা অন্য যে কোনো হালাল পশুই হোক, তা যবেহ করার পূর্বে চামড়া বিক্রি করা জায়িয নেই। এমনিভাবে বাঁটে দুধ থাকতে, ঝিনুকে মুক্তা থাকতে, মেষের পিঠে লোম থাকতে, সে দুধ, মুক্তা, লোম বিক্রি করা নাজায়িয।

(12) সুওয়াল : যে ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব, সে তার নিজের নামে কুরবানী না দিয়ে মৃত বা জীবিত পিতা-মাতার নামে কুরবানী দিলে তার নিজের কুরবানী আদায় হবে কিনা?জাওয়াব: আমাদের হানাফী মাযহাব মতে মালিকে নিছাব প্রত্যেকের উপর আলাদাভাবে কুরবানী করা ওয়াজিব। যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তার পক্ষ থেকেই কুরবানী করতে হবে। যার উপর কুরবানী ওয়াজিব সে তার নামে কুরবানী না করে মৃত বা জীবিত অপরের নামে কুরবানী করলে ওয়াজিব তরকের কারণে সে কঠিন গুনাহে গুনাহগার হবে। যদিও বাবা মা-এর নামে কুরবানী করে; যাদের প্রতি কুরবানী ওয়াজিব নয়।



(13)  সুওয়াল :  কুরবানীর পশুর দুধ, গোবর ও রশি দ্বারা ফায়দা  লাভ করা জায়িয আছে কি?

জাওয়াব: সাধারণতঃ কুরবানীর পশুর দ্বারা কোনো প্রকারের ফায়দা লাভ করা জায়িয নেই। যেমন- (১) কুরবানীর পশুর উপর আরোহণ করে চলাচল করা,  (২) কুরবানীর পশুর পশম কেটে বিক্রয় করা, (৩) কুরবানীর পশু হাল চাষের কাজে ব্যবহার করা, (৪) কুরবানীর পশু দ্বারা বোঝা বহন করানো, (৫) কুরবানীর পশুর দুধ পান করা,  (৬) কুরবানীর পশুর গোবর দ্বারা ফায়দা লাভ করা,  (৭) কুরবানীর পশুর রশি, নাক বন্ধ, পায়ের খুরাবৃত, গলার আবরণ, জিনপোষ, লাগাম ইত্যাদি দ্বারা ফায়দা লাভ করা।     উল্লেখ্য, (১) কুরবানীর পশুর উপর আরোহণ করে চলাচল করা জায়িয নেই, তবে যদি কুরবানীর পশুর পানীয় ও ঘাসের বন্দোবস্ত করানোর জন্য আরোহণ করে কোথাও যায়, তাতে কোন ক্ষতি নেই। অথবা পালিত পশু যদি হয়, যার উপর মালিক পূর্ব থেকেই আরোহণ করতো এখন মালিক তা কুরবানী দেয়ার নিয়ত করেছে, তাতে আরোহণ করলেও ক্ষতি হবে না। তবে কুরবানীর দিন উপস্থিত হলে কুরবানী করে দিতে হবে, আরোহণ করার জন্য রাখা যাবে না। (২) কুরবানীর পশুর পশম কেটে বিক্রয় করা জায়িয নেই। যদি কেউ বিক্রি করে, তবে তার মূল্য ছদ্কা করে দিতে হবে। তা কুরবানীর পূর্বে হোক বা কুরবানীর পরে হোক। আর কুরবানীর পর কুরবানীর পশুর পশম থেকে ফায়দা হাছিল করতে পারবে অর্থাৎ নিজ কাজে ব্যবহার করতে পারবে অথবা কাউকে হাদিয়াও দিতে পারবে। যেমন পশমী কম্বল ও চাদর ইত্যাদি। (৩) কুরবানীর পশুকে হালের কাজে ব্যবহার করা জায়িয নেই। হ্যাঁ, যদি কেউ হালের গরুকে কুরবানী দেয়ার নিয়ত করে যে, আমি হালের এই গরুটি আগামী ঈদের দিনে কুরবানী করবো, তাহলে কুরবানীর দিনের পূর্ব পর্যন্ত হালের কাজে ব্যবহার করতে পারবে। কুরবানীর দিন উপস্থিত হলে, হালের কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আর রাখা যাবে না। (৪) কুরবানীর পশুর দ্বারা বোঝা বহন করা জায়িয নেই। তবে উক্ত পশু পালিত হলে বোঝা বহন করাতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে কুরবানীর দিন উপস্থিত হলে তখন আর বোঝা বহনের জন্য রাখা যাবে না। কুরবানী করে দিতে হবে। (৫) কুরবানীর পশুর দুধ পান করা বা বিক্রি করা জায়িয নেই। যদি কেউ পান করে বা বিক্রয় করে তবে তার মূল্য ছদকা করে দিতে হবে। কিন্তু যদি উক্ত প্রাণীর দুধ মালিক পূর্ব থেকেই পান করে বা বিক্রয় করে আসছে অর্থাৎ পালিত পশু যদি হয়, তাহলে দুধ পান করতে বা বিক্রয় করতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে কুরবানীর দিন উপস্থিত হলে তা কুরবানী করে দিতে হবে। (৬) কুরবানীর পশুর গোবরের হুকুমও দুধের অনুরূপ।     স্মরণীয় যে, কুরবানীর পশু যদি আইইয়ামে নহরের মধ্যে কিনে এনে সাথে সাথে কুরবানী করে, তাহলে তা থেকে কোনো প্রকার ফায়দা হাছিল করা জায়িয নেই। যদি কুরবানী পশুর দুধ, গোশত, পশম ইত্যাদি দ্বারা ফায়দা হাছিল করে, তাহলে তার মূল্য ছদ্কা করে দিতে হবে। তবে যদি আইয়্যামে নহরের দু’চারদিন আগে কিনে এনে পশুকে খাওয়ায় বা পান করায়, তাহলে তার দ্বারা ফায়দা হাছিল করতে পারবে যেমন- উক্ত পশু দুধ দিলে তাও পান করতে পারবে খাদ্যের বিনিময়ে। (৭) কুরবানীর পশুর রশি, নাক বন্ধ, পায়ের খুরাবৃত, গলার আবরণ, জিনপোষ, লাগাম ইত্যাদি দ্বারা কোনো প্রকার ফায়দা হাছিল করা জায়িয নেই। যদি এ সমস্ত দ্রব্য দ্বারা কোনো প্রকার ফায়দা হাছিল করে, তবে তার মূল্য ছদকা করে দিতে হবে।


(14)  সুওয়াল :  হারাম মাল কামাই করে ধনী হয়েছে- এমন ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হবে কি? কুরবানী ওয়াজিব হবে কি?
জাওয়াব: না, হজ্জ ফরয হবে না। কুরবানী ওয়াজিব হবে না। কেননা হজ্জ ফরয হওয়ার ও কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য ছাহিবে নিসাব হওয়া শর্ত। এখন যেহেতু হারাম উপায়ে অর্জিত মাল তার নিজস্ব নয়, তাই তার উপর হজ্জ ফরয হবে না, কুরবানী ওয়াজিব হবে না।
বরং তার প্রধান ফরয হলো- যাদের থেকে হারাম উপায়ে মালগুলো নেয়া হয়েছে, তাদের এ সকল মাল ফেরত দেয়া।




see more -----------------------------------------------------------------------------------

কুরবানী , ফাযায়েল- মাছায়েলে কুরবানী /কুরবানীর তাৎপয্য

https://www.facebook.com/notes/163322593858435/