Translate

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯

সেক্সুয়াল সমস্যা নিয়ে আর চিন্তিত নয়

sex fille 
১০০% মানি ব্যাক গ্যারান্টি 

বিশ্বের সবচাইতে উন্নত ফর্মুলায় তৈরি সেক্স পিল এখন পুরুষদের পছন্দের তালিকায় ১ নাম্বার।
---------------------------------------------------
সেক্সুয়ালসমস্যার স্হায়ী   সমাধান করতে অব্যর্থ   
কাদের জন্য সেক্স পিল প্রয়োজনঃ- 
স্ত্রী মিলনে অক্ষম।
দ্রুত বীর্যপাত।
আকারে ছোট লিঙ্গ।
অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে নিস্তেজ লিঙ্গ।
একবার মিলনের পর দ্বিতীয়বার আর যৌন চাহিদা না থাকা।
-------------------------------------------------------------------------------
সেক্স পিলের  কার্যকারিতাঃ-
সেক্স পিল আপনার লিঙ্গের টিস্যুতে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে আপনার লিঙ্গকে তার প্রাকৃতিক পূর্ণ আকার অর্জনের ক্ষমতা প্রদান করে।
এটি আপনার ইমিউনিটি সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে যৌন মন বল দৃঢ় করবে।
যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে সহবাসের সময়কে দীর্ঘায়িত করবে।
 লিঙ্গ আকার স্থায়ীভাবে ২-৩ ইঞ্চি বড়, দীর্ঘ, দৃঢ় এবং শক্তিশালী করবে।
বীর্যের গুণমান ও শক্তি মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।
ভাস্কুলার বিস্তার বৃদ্ধি করে এবং বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলিও কমিয়ে দিবে।
বীর্যে শুক্রাণু বৃদ্ধি করে এবং শুক্রাণুর গতিশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।বাচ্ছা জন্মদানে অক্ষম পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব দূর করবে।
---------------------------------------------
মূল্য  ৫৫০০৳ -------------------------------------
সেবন বিধিঃ-
প্রতিদিন রাতে ১ টি করে ক্যাপসুল খাবারের পর খাবেন ৫০ দিন। 
দষ্টব্যঃ  একেবারেই যাদের ডেমেজ সিস্টেমের আওতায় তারাও এটি সেবন করতে পারেন।এতে ১-৪ ফাইল সেবন করতে হবে। 
বিকাশ পেমেন্ট এর মাধ্যমে আপনার বাডির ঠিকানায় কুরিয়ার এ সংগ্রহ করতে পারবেন।সার্ভিস সার্জ ১২০ ৳ প্রযোজ্য।
সৌজন্যে 
ভূঁইয়া ন্যাচরাল হার্বস
০০৯৬৬৫০৪৯৬৭৮৬৩/
০১৮২৯৩১৮১১৪
শুধু মাত্র 
ওয়াতসাফ /ইমু তে।

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

নামধারী ভন্ডপীরের নামের তালিকা

এক নজরে বাংলাদেশে নামধারী ভন্ড পীরের নামের তালিকা===

ঈমান হরণকারী এসব বাবাদের থেকে নিজে দুরে থাকুন অন্যকে ও দুরে রাখার অপ্রান চেষ্টা করুনঃ
★মাইজ ভান্ডারী দরবার শরীফ ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।
★ঝিনজি শাহ্, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
★হেইত হইত ও হেঁহু ফকির শাহ্, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম।
★গোলাপ শাহ, ঢাকা।
★আদু মামা শাহ, ফেনী।
★আমীর ভান্ডারী, পটিয়া চট্টগ্রাম
★লেংড়া শাহ, চট্টগ্রাম।
★আগুনপানি শাহ চট্টগ্রাম।
★ধনভান্ডারী শাহ, ফটিকছড়ি,
★মুকিম শাহ, চট্টগ্রাম।
★গুই বাবা শাহ্, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
★লতা শাহ্, বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।
★কাতাল শাহ্, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
★গুনাগার আলী শাহ্, সাতকানিয়া।
★পেটান শাহ্-১, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
★পেটান শাহ্,-২, লোহাগাড়া,চট্টগ্রাম।
★জঙ্গি শাহ্, বাদুরতলা, চট্টগ্রাম।
★গাট্টি ফকির, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
★মা'জুর অলি শাহ্, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
★বাঘ শাহ্ ফকির, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
★ডলম পীর, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
★কল্লা শাহ্, খরমপুর, বি.বাড়িয়া।
★কানু শাহ, আনোয়ারা।
★আতর আলি শাহ, আনোয়ারা।
★ভোলা শাহ, আনোয়ারা।
★শাহজান শাহ ফটিকছড়ি।
★লতিফ শাহ, ফটিকছড়ি।
★লুদত শাহ্ কুটান্দর, সায়েস্তাগঞ্জ।
★টংটং শাহ্, লাখাই, হবিগঞ্জ।
★উলু শাহ্, কালাপুর, চুনারুঘাট।
★পতুশাহ্, কালাপুর, চুনারুঘাট।
★বেজি শাহ্, পটিয়া,চট্টগ্রাম।
★কালু শাহ্, হাটহাজারি, চট্টগ্রাম।
★মিসকিন শাহ্, চট্টগ্রাম।
★গরিব শাহ্, চট্টগ্রাম।
★পানি শাহ্, চট্টগ্রাম।
★বদনা শাহ্-১, হাটহাজারি,চট্টগ্রাম।
★ গরীবুল্লাহ শাহ,চট্টগ্রাম।
★বদনা শাহ্-২, প্রবর্তক, চট্টগ্রাম।
★বালু শাহ্, চট্টগ্রাম ।
★পাগলা শাহ্, ফেনী।
★ভেনভেনিয়া শাহ্, চট্টগ্রাম।
★ফাইল্লা পাগলা শাহ্,সখিপুর,টাঙ্গাইল।
★পাঙ্খা বাবা,মহনগঞ্জ।
★লেংটা বাবা, ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ।
★মাস্তান শাহ্, দূর্গাপুর, নেত্রকোনা।
★ছাওয়াল (বাচ্চা) পীর, শেরপুর।
★লেডির কান্দা,পূর্বাধল নেত্রকোনা।
★শাখা মাজার, চট্টগ্রাম।
★নিদর্শন দরবার, চট্টগ্রাম।
★গাঁধা শাহ্।
★নুনুশাহ, সন্দীপ, চট্টগ্রাম
★জহির শাহ,বাউফল,পটুয়াখালী।
★কোকোনাট বাবা মোহছেন বাবার মায়ের পাশে।
★রাজার বাগ দরবার শরীফ।
★কুতুববাগ দরবার শরীফ।
★চিল্লা শাহ, পটিয়া।
★নারী খুর শাহ, কলকাতা।
★ডলম পির
★গুনাগরি বদনা শাহ্ চকবাজার, ঢাকা।
★বিড়ি বাবা শাহ, ঢাকা।
★গোলাপ শাহ, গুলিস্থান, ঢাকা ।
★শাহজী,চান্দগাও ,চট্টগ্রাম।
★ডাইল,চাইল বাবা, সিলেট।
★মৌরাজা শাহ, হবিগঞ্জ।
★ডেকাশাহ সোনাপুর নবিগঞ্জ, হবিগঞ্জ। ★ঢাকাইয়্যাশাহ সোনাপুর,
★কালাশাহ, ধাইপুর,সুনামগঞ্জ।
★চেগেনশাহ, ধাইপুর,সুনামগঞ্জ।
★মারফতশাহ ধাইপুর সুনামগঞ্জ।
★সুরশ্বরি, ধাইপুর,সুনামগঞ্জ।
★ডাইলা শাহ., হবিগঞ্জ।
★টেক্সি ফকির-চট্টগ্রাম।
★বালতি শাহ, সিলেট।
★লেংলেং শাহ, সুনামগঞ্জ।
★জায়ফর শাহ।
★ঈমান আলী শাহ।
★বৈঠা শাহ।
★তাগারী শাহ, সুনামগঞ্জ।
★মহরম শাহ, সুনামগন্জ।
★কালু শাহ মিরসরাই, চট্টগ্রাম!।
★গরমবিবি শাহ,দামপাড়া পুলিশ লেইন চট্টগ্রাম।
★বোতল শাহ্, পটিকছড়ি, চট্রগ্রাম।
★পাতা শাহ, বড়লেখা, মৌলভীবাজার।
★কাবেরি শাহ, বড়লেখা, মৌলভীবাজার।
★কেতলি শাহ, কোলাউড়া,মৌলভীবাজার।
★পাঁচ পীরের মাজার,বিয়ানীবাজার্।
★চাচা পাগলা, বগুড়া।
★গরিব শাহ্, যশোর।
★চরম শাহ্, বরিশাল।
★জিনের বাদশা লিটন দেওয়ানের জিন্দা পীরের দরবার্।
★পানি বাবা
★বিড়ি বাবা
★শিকল বাবা
★ভুখা ফকির, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।
★টাকশাহ্ মিয়া, চকবাজার, চট্টগ্রাম।
★জিনজির পীর মৌলভীবাজার্।
★চন্দ্রপুরী ফরিদুর।
★বন্দীশাহ কুমিল্লা।
★বাবা গাজীপুরী
★বাবা বসন্তপুরী।
★বাবা সুন্দর আলী।
★ভন্ড পীর আমজাদ বেপারী সিরাজগঞ্জ
★সোলেমান লেংটার মাজার, মতলব।
★ইমাম মাহদীর সেনাপতি লুৎফর শাহ গোপীবাগ।
★কুত্তা শাহ আজমিরীগঞ্জ।
★ল্যাংটা বাবার বাইজিখানা মাজার্।
★সোলায়মন শাহর মাজার,কওরান বাজার।
★তালা বাবা, ঢাকা।
★দেওয়ান বাগি রাজারবাগ,ঢাকা।
★কুতুববাগ বাবা
★আটরশি বাবা
★সর্দার শাহ মৌলভি বাজার্।
★মফিয শাহ, মৌলভি বাজার্।
★নাজিম বাবা নোয়াখালী কবিরহাট
আরও যদি কোনো বাবার ঠিকানা জানা থাকে কমেন্টে অবশ্যই জানানোর অনুরোধ থাকলো তাহলে পরবর্তীতে  এ্যাড করবো ইনশাআল্লাহ।
চলবে----

বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

“সুন্নাতী লেবাস ইসলামী লেবাস কেমন হওয়া চাই ?


“সুন্নাতী লেবাস কেমন হওয়া জরুরী”
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
.
আমাদের সমাজে এবং ফেসবুকে আহলে হাদিস, জামায়াতি ইসলামী এবং ডাঃ জাকির নায়েকের অনুসারীরা তাদের স্কলারদের সাপোর্ট দিতে গিয়ে এবং স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে বলেন যে, জুব্বা, লম্বা জামা, টুপি, পাগড়ী এগুলি মক্কা মদিনার কাফির মুশরিকরাও পড়তো। তাই এগুলো সুন্নাত নয় বরং আরবদের পোশাক। সুন্নাতী লেবাস সম্পর্কে কুরআন হাদিসের কোনো দলীল নাই বলেও তারা দাবি করে।
.
আমি বলবো, তাদের এ কথা স্পষ্ট গোমরাহী ও ভ্রান্ত। যা অজ্ঞতা ছাড়া কিছুই নয়। উপরোক্ত বক্তব্যটি কোন নবীপ্রেমিকের কথা নয়, নবীজীর দুশমনদের কথা । কাফেররা কে কী করেছে, সেটা কোন মুসলমান বিবেচনা করতে পারে না। একজন মুসলমান হিসেবে দেখতে হবে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাঃ কি করেছেন এবং সেটাই আমাদের আলোচ্য ও বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত। রাসূল সাঃ এর প্রতিটি কাজ ও কথা উম্মতের জন্য উত্তম আদর্শ।
.
পোশাকের মাঝে রাসূল সাঃ কোন নমুনা আমাদের জন্য রেখে যান নি? তিনি শুধু মক্কার কাফেরদের অনুসরণে আরব্য জামা কাপড় পরিধান করে গেছেন? এমন কথা রাসূল বিদ্বেষী ছাড়া অন্য কেউ কিছুতেই বলতে পারে না।
যারা আল্লাহ ও হাশরে বিশ্বাস রাখে তাদের জন্য নবীজীর পোশাকে, নবীজী কথায়, নবীজীর প্রতিটি আমলে অতিউত্তম নমুনা আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ পাক।
কিন্তু যারা আল্লাহ ও হাশরে অবিশ্বাসী তাদের জন্য নবীজীর পোশাকে, নবীজীর চাল-চলনে আদর্শ না থাকাটা অসম্ভব কিছু নয়। তারা নবীজী সাঃ এর চাল-চলন ও পোশাক পরিচ্ছদ না দেখে কাফেরদের পোশাক পরিচ্ছদ দেখেই আকৃষ্ট হবে বেশি এটাই স্বাভাবিক। তাই তাদের মুখে নবীজী সাঃ এর পরিধান করা পোশাকে থাকা আল্লাহ তাআলার ঘোষণা দেয়া আদর্শিক রূপরেখা বর্জনের জন্য শ্লোগান আসতেই পারে। নবীপ্রেমিকের মুখে এমন অবান্তর কথা আসতে পারে না।
.
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
বঙ্গানুবাদঃ বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা সমূহ করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।
(সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ৩১)
.
সর্বক্ষেত্রে নবীজীর অনুসরণকে আল্লাহ প্রেমের নিদর্শন বলা হয়েছে। আর হাদীসে কাফেরদের অনুসরণকে জাহান্নামী হওয়ার নিদর্শন বলা হয়েছে।
.
হাদিসে বলা হয়েছে,
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ ثَابِتٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي مُنِيبٍ الْجُرَشِيِّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ‏
ইবন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কাওমের [সম্পদ্রায়ের] অনুসরণ-অনুকরন করবে, সে তাদের দলভুক্ত হবে।
(আবু দাউদ শরীফ-হা/৩৯৮৯; তিরমিজী-হা/২৬৯৫; মুসনাদুল বাজ্জার-হা/২৯৬৬; মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক-হা/২০৯০৮৬)
.
একজন মুমিন মুসলমান প্রতিটি আমলে রাসূলের মাঝে আদর্শ ও নমুনা খুঁজে বেড়ায়। আর নবী বিদ্বেষীরা খুঁজবে কাফেরদের মাঝে এটাই স্বাভাবিক। রাসূল সাঃ এর প্রতিটি কাজের শর্তহীন ও যুক্তিহীনভাবে অনুসরণের নাম দ্বীন ও ঈমান।
.
রাসূলে কারীম সাঃ এর প্রতিটি কর্মের অনুসরণকে রাসূল সাঃ এর সাথে জান্নাতে যাওয়ার পথ বলে ঘোষণা করে বলেন-
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ حَاتِمٍ الأَنْصَارِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، قَالَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ يَا بُنَىَّ إِنْ قَدَرْتَ أَنْ تُصْبِحَ وَتُمْسِيَ لَيْسَ فِي قَلْبِكَ غِشٌّ لأَحَدٍ فَافْعَلْ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِي ‏”‏ يَا بُنَىَّ وَذَلِكَ مِنْ سُنَّتِي وَمَنْ أَحْيَا سُنَّتِي فَقَدْ أَحَبَّنِي ‏.‏ وَمَنْ أَحَبَّنِي كَانَ مَعِي فِي الْجَنَّةِ
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে বৎস! যদি তুমি পার, সকালে ও বিকালে তোমার অন্তরে কারো প্রতি বিদ্বেষ থাকবে না তবে তাই কর। তারপর তিনি বললেন, হে বৎস, এ হল আমার রীতি। যে ব্যক্তি আমার রীতি যিন্দা করল সে যেন আমাকে যিন্দা করল। আর যে আমাকে যিন্দা করল সে জান্নাতে আমার সঙ্গে থাকবে।
(সুনানে তিরমিজী-হা/২৬৭৮)
.
সুন্নাতী লেবাস সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে জানতে হবে, সুন্নাত কি !
.
সুন্নাত এর সংঙ্গাঃ
السنة تطلق في الأكثر على ما أضيف إلى النبي من قول أو فعل أو تقرير
সুন্নাত বলা হয়, রাসূল সাঃ এর কাজ, কথা ও সম্মতি প্রদানকে।
(আনওয়ারুল কাশিফাহ, উলুমুল হাদীস ফি জাওয়ি তাতবীকাতিল মুহাদ্দিসীন, কাওয়ায়েদুত তাহদীস ফি ফুনুনি মুসতালাহিল হাদীস, লিসানুল মুহাদ্দিসীন)
.
অর্থাৎ আরো স্পষ্ট ভাবে বলা যায়,
রাসূল সাঃ নিজে যে আমল করেছেন, আমল করতে আদেশে ও নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার সামনে সাহাবীদের কৃত যে সকল আমলকে সম্মতি দিয়েছেন তাকেই সুন্নাত বলে।
.
ইসলামে অবশ্যই সুন্নাতী লেবাস আছে এবং তা সুস্পষ্ট কোরআন ও হাদিসের অকাট্ট দলীল দ্বারাই প্রমানিত।
.
.
মহান আল্লাহপাক পোষাক সম্পর্কে বলেন,
يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا ۖ وَلِبَاسُ التَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
বাংলা অনুবাদঃ হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
(সূরাঃ আল আ’রাফ, আয়াতঃ ২৬)
.
আল্লাহপাক আরো বলেন,
يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
বাংলা অনুবাদঃ হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
(সূরাঃ আল আ’রাফ, আয়াতঃ ৩১)
.
.
হাদিসের আলোকে সুন্নাতী লেবাসের দলীল ভিক্তিক আলোচনা
*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*
.
.
জোব্বা পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، مُسْلِمٍ ـ هُوَ ابْنُ صُبَيْحٍ ـ عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ حَدَّثَنِي الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ، قَالَ انْطَلَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِحَاجَتِهِ ثُمَّ أَقْبَلَ، فَلَقِيتُهُ بِمَاءٍ، وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ شَأْمِيَّةٌ، فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ، فَذَهَبَ يُخْرِجُ يَدَيْهِ مِنْ كُمَّيْهِ فَكَانَا ضَيِّقَيْنِ، فَأَخْرَجَهُمَا مِنْ تَحْتُ، فَغَسَلَهُمَا وَمَسَحَ بِرَأْسِهِ وَعَلَى خُفَّيْهِ
মুগীরা ইবনু শু‘বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন [প্রাকৃতিক] হাজত পূরণের জন্য গেলেন। সেখান থেকে ফিরে এলে আমি তাঁর কাছে পানি নিয়ে গেলাম। তিনি তা দিয়ে ওজু করেন। তাঁর পরিধানে ছিল শামী [সিরিয়া] জোব্বা। তিনি কুলি করেন, নাকে পানি দেন ও মুখমন্ডল ধৌত করেন। এরপর তিনি জামার আস্তিন গুটিয়ে দু’টি হাত বের করতে চাইলেন। কিন্তু আস্তিন দু’টি ছিল খুবই আটসাঁট। তাই তিনি ভেতর দিক দিয়ে হাত বের করে উভয় হাত ধুলেন এবং মাথা মাসেহ করলেন এবং উভয় মোজার উপর মাসেহ করলেন।
(সহীহ বুখারী-হা/২৭১৭, ৫৩৮৪, ৩৫৬; সহীহ মুসলিম-হা/৫২৩, ৫২৬; সূনানে নাসাঈ-হা/১২৩, ১২৫; রিয়াযুস স্বা-লিহীন-হা/৭৯২; ইবনে মাজাহ-হা/৩৮৯; আবু দাউদ-হা/১৪৯, ১৫১)
.
২.
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شُمَيْلٍ، أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ أَبِي زَائِدَةَ، أَخْبَرَنَا عَوْنُ بْنُ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ أَبِي جُحَيْفَةَ، قَالَ فَرَأَيْتُ بِلاَلاً جَاءَ بِعَنَزَةٍ فَرَكَزَهَا، ثُمَّ أَقَامَ الصَّلاَةَ، فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ فِي حُلَّةٍ مُشَمِّرًا، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ إِلَى الْعَنَزَةِ، وَرَأَيْتُ النَّاسَ وَالدَّوَابَّ يَمُرُّونَ بَيْنَ يَدَيْهِ مِنْ وَرَاءِ الْعَنَزَةِ
আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বিলাল (রাঃ) কে দেখলাম, তিনি একটি বর্শা নিয়ে এসেছেন এবং তা মাটিতে পুঁতে দিলেন। তারপর সালাত এর ইকামত দিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখলাম, একটি জোব্বার দুটি চাদরের মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে বের হয়ে আসলেন এবং বর্শার দিকে ফিরে দু’ রাকআত সালাত আদায় করলেন। আর মানুষ ও পশুকে দেখলাম, তারা তার সামনে দিয়ে এবং বর্শার পিছন দিয়ে গমন করছে।
(সহীহ বুখারী-হা/৫৩৭০)
.
৩.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ سَمِعْتُهُ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ لَمَّا أَسْلَمَ عُمَرُ اجْتَمَعَ النَّاسُ عِنْدَ دَارِهِ وَقَالُوا صَبَا عُمَرُ‏.‏ وَأَنَا غُلاَمٌ فَوْقَ ظَهْرِ بَيْتِي، فَجَاءَ رَجُلٌ عَلَيْهِ قَبَاءٌ مِنْ دِيبَاجٍ فَقَالَ قَدْ صَبَا عُمَرُ‏.‏ فَمَا ذَاكَ فَأَنَا لَهُ جَارٌ‏.‏ قَالَ فَرَأَيْتُ النَّاسَ تَصَدَّعُوا عَنْهُ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا الْعَاصِ بْنُ وَائِلٍ
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, যখন উমর (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করলেন, তখন লোকেরা তাঁর গৃহের পাশে সমবেত হল এবং বলতে লাগল, উমর স্বধর্ম ত্যাগ করেছে। আমি তখন ছোট বালক। আমাদের ঘরের ছাদে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখতে ছিলাম। তখন একজন লোক এসে বলল, তার গায়ে রেশমী জোব্বা ছিল, উমর স্বধর্ম ত্যাগ করেছে, [তাতে কার কি হল?] তবে এ সমাবেশ কিসের আমি তাকে আশ্রয় দিচ্ছি। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম, লোকজন চারদিক ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে গেল। তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ লোকটি কে? লোকেরা বলল, ইনি ‘আস ইবনু ওয়াইল।
(সহীহহ বুখারী-হা/৩৫৮৬)
.
৪.
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ حُذَيْفَةَ فَقَالَ رَجُلٌ لَوْ أَدْرَكْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَاتَلْتُ مَعَهُ وَأَبْلَيْتُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ أَنْتَ كُنْتَ تَفْعَلُ ذَلِكَ لَقَدْ رَأَيْتُنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الأَحْزَابِ وَأَخَذَتْنَا رِيحٌ شَدِيدَةٌ وَقُرٌّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏ فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏ فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏ فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ فَقَالَ ‏”‏ قُمْ يَا حُذَيْفَةُ فَأْتِنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ ‏”‏ ‏.‏ فَلَمْ أَجِدْ بُدًّا إِذْ دَعَانِي بِاسْمِي أَنْ أَقُومَ قَالَ ‏”‏ اذْهَبْ فَأْتِنِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ ‏”‏ ‏.‏ فَلَمَّا وَلَّيْتُ مِنْ عِنْدِهِ جَعَلْتُ كَأَنَّمَا أَمْشِي فِي حَمَّامٍ حَتَّى أَتَيْتُهُمْ فَرَأَيْتُ أَبَا سُفْيَانَ يَصْلِي ظَهْرَهُ بِالنَّارِ فَوَضَعْتُ سَهْمًا فِي كَبِدِ الْقَوْسِ فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْمِيَهُ فَذَكَرْتُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ ‏”‏ ‏.‏ وَلَوْ رَمَيْتُهُ لأَصَبْتُهُ فَرَجَعْتُ وَأَنَا أَمْشِي فِي مِثْلِ الْحَمَّامِ فَلَمَّا أَتَيْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَفَرَغْتُ قُرِرْتُ فَأَلْبَسَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ فَضْلِ عَبَاءَةٍ كَانَتْ عَلَيْهِ يُصَلِّي فِيهَا فَلَمْ أَزَلْ نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحْتُ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ قَالَ ‏”‏ قُمْ يَا نَوْمَانُ ‏”
[হাদিসের লম্বা অংশ………………………………….]
তারপর যখন ফিরে এলাম, তখন প্রতিপক্ষের খবর তাঁকে প্রদান করলাম। আমার দায়িত্ব পালন করে অবসর হতেই আবার আমি শীতের তীব্রতা অনুভব করলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার খোলা অতিরিক্ত জোব্বার অংশ দিয়ে আমাকে আবৃত করে দিলেন, যা তিনি সালাত আদায়ের সময় গায়ে দিতেন। তারপর আমি ভোর পর্যন্ত একটানা নিদ্রায় আচ্ছন্ন রইলাম। যখন ভোর হল তখন তিনি বললেনঃ হে ঘুমকাতুরে! এখন উঠে পড়ো।
(সহীহ মুসলিম-হা/৪৪৮৯)
.
৫.
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، مَوْلَى أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ وَكَانَ خَالَ وَلَدِ عَطَاءٍ قَالَ أَرْسَلَتْنِي أَسْمَاءُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ فَقَالَتْ بَلَغَنِي أَنَّكَ تُحَرِّمُ أَشْيَاءَ ثَلاَثَةً الْعَلَمَ فِي الثَّوْبِ وَمِيثَرَةَ الأُرْجُوَانِ وَصَوْمَ رَجَبٍ كُلِّهِ ‏.‏ فَقَالَ لِي عَبْدُ اللَّهِ أَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنْ رَجَبٍ فَكَيْفَ بِمَنْ يَصُومُ الأَبَدَ وَأَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنَ الْعَلَمِ فِي الثَّوْبِ فَإِنِّي سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّمَا يَلْبَسُ الْحَرِيرَ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ ‏”‏ ‏.‏ فَخِفْتُ أَنْ يَكُونَ الْعَلَمُ مِنْهُ وَأَمَّا مِيثَرَةُ الأُرْجُوَانِ فَهَذِهِ مِيثَرَةُ عَبْدِ اللَّهِ فَإِذَا هِيَ أُرْجُوَانٌ ‏.‏ فَرَجَعْتُ إِلَى أَسْمَاءَ فَخَبَّرْتُهَا فَقَالَتْ هَذِهِ جُبَّةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَأَخْرَجَتْ إِلَىَّ جُبَّةَ طَيَالَسَةٍ كِسْرَوَانِيَّةً لَهَا لِبْنَةُ دِيبَاجٍ وَفَرْجَيْهَا مَكْفُوفَيْنِ بِالدِّيبَاجِ فَقَالَتْ هَذِهِ كَانَتْ عِنْدَ عَائِشَةَ حَتَّى قُبِضَتْ فَلَمَّا قُبِضَتْ قَبَضْتُهَا وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَلْبَسُهَا فَنَحْنُ نَغْسِلُهَا لِلْمَرْضَى يُسْتَشْفَى بِهَا
[হাদিসের লম্বা অংশ………………………………….]
অতঃপর আমি আসমা (রাঃ) এর কাছে ফিরে গেলাম এবং তাকে এ ব্যাপারে সংবাদ দিলাম। তখন তিনি বললেন, এটি  রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জোব্বা। এ বলে তিনি কিসরাওয়ানী [ইরানী সম্রাট কিসরার প্রতি সম্পৰ্কীয়] সবুজ রং-এর একটি জোব্বা বের করলেন যার পকেটটি ছিল খাঁটি রেশমের প্রস্তুত এবং এর [হাতার] ছিদ্রদ্বয় ছিল খাটি রেশমের টুকরা দিয়ে ঢাকা। তিনি বললেন, এটি আয়িশাহর মৃত্যু পর্যন্ত তার নিকটেই ছিল। তার ওফাতের পর আমি এটি নিয়েছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি ব্যবহার করতেন। তাই আমরা অসুস্থদের আরোগ্য লাভের জন্য এটি ধৌত করি এবং তাদেরকে সে পানি পান করিয়ে থাকি।
(সহীহ মুসলিম-হা/৫২৩৫)
.
৬.
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَسُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، قَالاَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِوَادِي الأَزْرَقِ فَقَالَ ‏”‏ أَىُّ وَادٍ هَذَا ‏”‏ ‏.‏ فَقَالُوا هَذَا وَادِي الأَزْرَقِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى مُوسَى – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – هَابِطًا مِنَ الثَّنِيَّةِ وَلَهُ جُؤَارٌ إِلَى اللَّهِ بِالتَّلْبِيَةِ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ أَتَى عَلَى ثَنِيَّةِ هَرْشَى ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ أَىُّ ثَنِيَّةٍ هَذِهِ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا ثَنِيَّةُ هَرْشَى قَالَ ‏”‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى يُونُسَ بْنِ مَتَّى – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – عَلَى نَاقَةٍ حَمْرَاءَ جَعْدَةٍ عَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ خِطَامُ نَاقَتِهِ خُلْبَةٌ وَهُوَ يُلَبِّي ‏”‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ حَنْبَلٍ فِي حَدِيثِهِ قَالَ هُشَيْمٌ يَعْنِي لِيفًا
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আযরাক উপত্যকা অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, তখন বললেনঃ এটি কোন উপত্যকা? সঙ্গিগণ উত্তর দিলেন, আযরাক উপত্যকা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি যেন মূসা (আঃ) কে গিরিপথ থেকে অবতরণ করতে দেখছি, তিনি উচ্চম্বরে তালবিয়া পাঠ করছিলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারশা গিরিপথে আসলেন। তিনি বললেনঃ এটি কোন গিরিপথ? সঙ্গীগণ বললেন, হারশা গিরিপথ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি যেন ইউনূস ইবনু মাত্তা (আঃ) কে দেখছি। তিনি সুঠামদেহী লাল বর্নের উষ্ট্রের পিঠে আরোহিত; গায়ে একটি পশমী জোব্বা, আর তাঁর উষ্টের রশিটি খেজুরের ছাল দিয়ে তৈরি, তিনি তালবিয়া পাঠ করছিলেন। ইবনু হানবাল তার হাদীসে বলেন, হুশায়ম বলেছেন, خُلْبَةٌ এর অর্থ لِيفًا – খেজুর বৃক্ষের ছাল।
(সহীহ মুসলিম-হা/৩১৭, ৩১৮)
.
৭.
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا وَاقِدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ، قَالَ قَدِمَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ فَأَتَيْتُهُ فَقَالَ مَنْ أَنْتَ فَقُلْتُ أَنَا وَاقِدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ، ‏.‏ قَالَ فَبَكَى وَقَالَ إِنَّكَ لَشَبِيهٌ بِسَعْدٍ وَإِنَّ سَعْدًا كَانَ مِنْ أَعْظَمِ النَّاسِ وَأَطْوَلِهِمْ وَإِنَّهُ بَعَثَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جُبَّةً مِنْ دِيبَاجٍ مَنْسُوجٌ فِيهَا الذَّهَبُ فَلَبِسَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ فَقَامَ أَوْ قَعَدَ فَجَعَلَ النَّاسُ يَلْمُسُونَهَا فَقَالُوا مَا رَأَيْنَا كَالْيَوْمِ ثَوْبًا قَطُّ ‏.‏ فَقَالَ ‏ “‏ أَتَعْجَبُونَ مِنْ هَذِهِ لَمَنَادِيلُ سَعْدٍ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِمَّا تَرَوْنَ
ওয়াকিদ ইবনু আমর সা’দ ইবনু মু’আয (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর আগমন সংবাদ শুনে আমি তাঁর কাছে গেলাম। তিনি বললেন, তুমি কে? আমি বললাম আমি ওয়াকিদ ইবনু আমর ইবনু সাদ ইবনু মু’আয। তিনি কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, তুমি সা’দ-এর সদৃশ। সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন, অত্যন্ত মর্যাদাবান লোক। তিনি ছিলেন দীর্ঘদেহী। একবার একটা স্বর্ণ খচিত রেশমের জোব্বা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি পরিধান করে মিম্বরে উঠে দাঁড়ালেন, অথবা বসলেন। লোকেরা এসে এটি স্পর্শ করে দেখতে লাগল এবং বলতে লাগল আজকের মত এত সুন্দর কাপড় আর কোন দিন দেখিনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এ দেখে বিস্মিত হচ্ছ! জান্নাতে সা’দ-এর রুমালগুলিও তোমরা যা দেখছ তা থেকে উত্তম।
[এটি সম্ভবত পুরুষদের রেশমী পোশাক হারাম হবার আগের ঘটনা]
(তিরমিজী-হা/১৭২৯)
.
৮.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ خَلِيفَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ كَانَ عَلَى مُوسَى يَوْمَ كَلَّمَهُ رَبُّهُ كِسَاءُ صُوفٍ وَجُبَّةُ صُوفٍ وَكُمَّةُ صُوفٍ وَسَرَاوِيلُ صُوفٍ وَكَانَتْ نَعْلاَهُ مِنْ جِلْدِ حِمَارٍ مَيِّتٍ‏”‏
ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মূসা (আঃ) যেদিন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, সেদিন তাঁর পরিধানে ছিল একটি পশমের চাদর, পশমের জোব্বা, পশমের টুপি, পশমের পায়জামা। আর তাঁর চপ্পল দুটি ছিল মৃত গাধার চামড়ার।
(তিরমিজী-হা/১৭৪০)
.
৯.
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَبِسَ جُبَّةً رُومِيَّةً ضَيِّقَةَ الْكُمَّيْنِ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ‏
মুগীরা ইবনু শু‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুমী জোব্বা পরেছেন। এর হাত দুটো ছিল সংকীর্ণ।
(তিরমিজী-হা/১৭৭৪)
.
১০.
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ” لَبِسَ جُبَّةً رُومِيَّةً , ضَيِّقَةَ الْكُمَّيْنِ
মুগীরা ইবনে শু’বা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আঁটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট একটি রুমী জোব্বা পরিধান করেন।
(শামায়েলে তিরমিজী-হা/৫৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮২৬৫)
.
১১.
وَحَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ مُكْرَمٍ الْعَمِّيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ رَافِعٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ قَيْسًا، يُحَدِّثُ عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ، يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ عَنْ أَبِيهِ، رضى الله عنه أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ بِالْجِعْرَانَةِ قَدْ أَهَلَّ بِالْعُمْرَةِ وَهُوَ مُصَفِّرٌ لِحْيَتَهُ وَرَأْسَهُ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَحْرَمْتُ بِعُمْرَةٍ وَأَنَا كَمَا تَرَى ‏.‏ فَقَالَ ‏ “‏ انْزِعْ عَنْكَ الْجُبَّةَ وَاغْسِلْ عَنْكَ الصُّفْرَةَ وَمَا كُنْتَ صَانِعًا فِي حَجِّكَ فَاصْنَعْهُ فِي عُمْرَتِكَ
ইয়ালা ইবনু উমায়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি জিরানা নামক স্থানে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসল। লোকটি উমরার জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় ছিল। তার দাঁড়ি ও মাথার চুল হলুদ রঙে রঞ্জিত ছিল এবং তার পরনে ছিল একটি জুব্বা। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি উমরা করার জন্য ইহরাম বেঁধেছি এবং আমি কি অবস্থায় আছি তা আপনি দেখছেন। তিনি বললেন, তুমি তা খূলে ফেল এবং হলুদ রং ধুয়ে ফেল। অতঃপর হাজ্জে যা কিছু করতে, উমরাতেও তাই কর।
(আবু দাউদ-হা/১৮২২; সহীহ মুসলিম-হা/২৬৭২)
.
ইহরাম কালে পুরুষদের জন্য কোনো ধরনের জোব্বা বা যে কোনো জামা পরাই নিষেধ। উপরুক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়, লোকেরা ইহরাম ছাড়া অন্যান্য সময় জোব্বা পরে অভস্থ। তাই ইহরাম কালে রাসূল সাঃ জোব্বাটি খুলে ফেলতে বলেছেন।
.
১২.
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ أَبُو عُمَرَ، مَوْلَى أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ قَالَ رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ فِي السُّوقِ اشْتَرَى ثَوْبًا شَامِيًّا فَرَأَى فِيهِ خَيْطًا أَحْمَرَ فَرَدَّهُ فَأَتَيْتُ أَسْمَاءَ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهَا فَقَالَتْ يَا جَارِيَةُ نَاوِلِينِي جُبَّةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَأَخْرَجَتْ جُبَّةَ طَيَالِسَةَ مَكْفُوفَةَ الْجَيْبِ وَالْكُمَّيْنِ وَالْفَرْجَيْنِ بِالدِّيبَاجِ
আবদুল্লাহ ইবনে আবূ উমার (রাঃ) যিনি আসমা বিনতে আবূ বকর (রাঃ) এর দাসী ছিলেন, তার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি ইবনে উমার (রাঃ) কে বাজার থেকে একখানি শাল খরিদ করতে দেখি। তিনি তাতে একটি লাল রঙয়ের রেশমী সূতা দেখে তা ফিরিয়ে দেন। তা দেখে আমি আসমা (রাঃ) এর নিকট এসে এ সম্পর্কে বর্ণনা করলে, তিনি বলেনঃ হে দাসী! তুমি আমার নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জোব্বাটি [জামাটি] আনো। তখন সে একটি কম কারুকার্য খচিত জোব্বা আনে, যার পকেট, আস্তীন এবং সামনে পিছনে রেশমের কাজ করা ছিল।
(আবু দাউদ-হা/৪০১১)
.
১৩.
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ فَرَكَزَ عَنَزَةً فَصَلَّى إِلَيْهَا يَمُرُّ مِنْ وَرَائِهَا الْكَلْبُ وَالْمَرْأَةُ وَالْحِمَارُ
আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাল ডোরাযুক্ত জোব্বা পরিধান করে বের হলেন এবং একটি তীর পুঁতে তার দিকে সালাত আদায় করলেন যার অপরদিক দিয়ে কুকুর, নারী এবং গাধা চলাচল করছিল।
(সূনানে নাসাঈ-হা/৭৭৩)
.
১৪.
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ تُوُفِّيَتْ إِحْدَى بَنَاتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ إِلَيْنَا فَقَالَ ‏”‏ اغْسِلْنَهَا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكِ إِنْ رَأَيْتُنَّ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي ‏”‏ ‏.‏ فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ فَأَلْقَى إِلَيْنَا حَقْوَهُ وَقَالَ ‏”‏ أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ ‏”‏
উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক মেয়ের মৃত্যূ হলে তিনি আমাদের ডেকে পাঠালেন এবং নির্দেশ দিলেন যে, তাকে তিনবার, পাঁচবার বা ততোধিক যতবার ভাল মনে হয় হয় গোসল দিও পানি এবং বরই পাতা দ্বারা, আর শেষবার কর্পূরের কিছু অংশ দিয়ে দিও। আর যখন তোমরা অবসর হবে আমাকে সংবাদ দেবে। আমরা যখন অবসর হলাম তাকে সংবাদ দিলাম। তিনি আমাদের স্বীয় জোব্বা দিয়ে দিলেন এবং বললেন যে, এটা তার কাফনের নীচে দিয়ে দিও।
(সূনানে নাসাঈ-হা/১৮৯০, ১৮৯২, ১৮৯৩, ১৮৯৭)
.
১৫.
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عِكْرِمَةُ بْنُ خَالِدٍ، أَنَّ ابْنَ أَبِي عَمَّارٍ، أَخْبَرَهُ عَنْ شَدَّادِ بْنِ الْهَادِ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَعْرَابِ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَآمَنَ بِهِ وَاتَّبَعَهُ ثُمَّ قَالَ أُهَاجِرُ مَعَكَ ‏.‏ فَأَوْصَى بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْضَ أَصْحَابِهِ فَلَمَّا كَانَتْ غَزْوَةٌ غَنِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَبْيًا فَقَسَمَ وَقَسَمَ لَهُ فَأَعْطَى أَصْحَابَهُ مَا قَسَمَ لَهُ وَكَانَ يَرْعَى ظَهْرَهُمْ فَلَمَّا جَاءَ دَفَعُوهُ إِلَيْهِ فَقَالَ مَا هَذَا قَالُوا قِسْمٌ قَسَمَهُ لَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَأَخَذَهُ فَجَاءَ بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا هَذَا قَالَ ‏”‏ قَسَمْتُهُ لَكَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ مَا عَلَى هَذَا اتَّبَعْتُكَ وَلَكِنِّي اتَّبَعْتُكَ عَلَى أَنْ أُرْمَى إِلَى هَا هُنَا – وَأَشَارَ إِلَى حَلْقِهِ بِسَهْمٍ – فَأَمُوتَ فَأَدْخُلَ الْجَنَّةَ ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ إِنْ تَصْدُقِ اللَّهَ يَصْدُقْكَ ‏”‏ ‏.‏ فَلَبِثُوا قَلِيلاً ثُمَّ نَهَضُوا فِي قِتَالِ الْعَدُوِّ فَأُتِيَ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحْمَلُ قَدْ أَصَابَهُ سَهْمٌ حَيْثُ أَشَارَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَهُوَ هُوَ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ صَدَقَ اللَّهَ فَصَدَقَهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ كَفَّنَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي جُبَّةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَدَّمَهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ فَكَانَ فِيمَا ظَهَرَ مِنْ صَلاَتِهِ ‏”‏ اللَّهُمَّ هَذَا عَبْدُكَ خَرَجَ مُهَاجِرًا فِي سَبِيلِكَ فَقُتِلَ شَهِيدًا أَنَا شَهِيدٌ عَلَى ذَلِكَ
[হাদিসের লম্বা অংশ………………………………….]
অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে স্বীয় জোব্বা দ্বারা কাফন দিলেন এবং তাকে সম্মূখে রেখে তার জানাজার সালাত আদায় করলেন। তার জানাজা সালাতে যা প্রকাশ পেয়েছিল তা হল, হে আল্লাহ! এ ব্যক্তি তোমার বান্দা সে তোমার রাস্তায় মুহাজির অবস্থায় বের হয়েছিল। এখন সে শাহাদাত প্রাপ্ত হয়েছে আমি তার জন্য সাক্ষী হয়ে রইলাম।
(সূনানে নাসাঈ-হা/১৯৫৭)
.
১৬.
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيدِ، وَأَحْمَدُ بْنُ الأَزْهَرِ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ السِّمْطِ، حَدَّثَنَا الْوَضِينُ بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ مَحْفُوظِ بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ تَوَضَّأَ فَقَلَبَ جُبَّةَ صُوفٍ كَانَتْ عَلَيْهِ فَمَسَحَ بِهَا وَجْهَهُ
সালমান আল-ফারিসী থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওজু করেন এবং তাঁর পরিধানের পশমী জোব্বা উল্টিয়ে তা দিয়ে তাঁর মুখমন্ডল মাসহ করেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/৩৫৬৪, ৪৬৮)
.
১৭.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ كَرَامَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا الأَحْوَصُ بْنُ حَكِيمٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ذَاتَ يَوْمٍ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ رُومِيَّةٌ مِنْ صُوفٍ ضَيِّقَةُ الْكُمَّيْنِ فَصَلَّى بِنَا فِيهَا لَيْسَ عَلَيْهِ شَىْءٌ غَيْرُهَا
উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংকীর্ণ হাতাবিশিষ্ট একটি রুমীয় পশমী জোব্বা পরিহিত অবস্থায় আমাদের নিকট বের হয়ে এলেন। তিনি সেটি পরিহিত অবস্থায় আমাদের সাথে নামায পড়লেন। এটি ছাড়া তাঁর শরীরে [উপরাংশে] আর কিছু ছিলো না।
(ইবনে মাজাহ-হা/৩৫৬৩)
.
১৮.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ مَوْلَى أَسْمَاءَ ، قَالَ : ” أَخْرَجَتْ إِلَيَّ أَسْمَاءُ جُبَّةً مِنْ طَيَالِسَةٍ عَلَيْهَا لَبِنَةُ شِبْرٍ مِنْ دِيبَاجٍ ، وَإِنَّ فَرْجَيْهَا مَكْفُوفَانِ بِهِ ، فَقَالَتْ : هَذِهِ جُبَّةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، كَانَ يَلْبَسُهَا لِلْوُفُودِ ، وَيَوْمَ الْجُمُعَةِ
আসমা (রাঃ)-এর মুক্তদাস আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আসমা (রাঃ) আমার সামনে একটি তায়ালিসী জোব্বা বের করলেন। তাতে এক বিঘৎ পরিমাণ এক টুকরা রেশমী কাপড় লাগানো ছিল, যা দ্বারা জোব্বার দুইটি কিনারা মোড়ানো ছিল। তিনি বলেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জোব্বা। তিনি প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাতকালে এবং জুমুআর দিন তা পরতেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/৩৪৯৪; আল আবাদুল মুফরাদ-হা/৩৪৯)
.
১৯.
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : حَدَّثَنِىْ عُمَرُ قَالَ : لَمَّا كَانَ يَوْمَ خَيْبَرَ أَقْبَلَ نَفَرٌ مِنْ صَحَابَةِ النَّبِىِّ ﷺ فَقَالُوْا : فُلَانٌ شَهِيدٌ وَفُلَانٌ شَهِيدٌ حَتّٰى مَرُّوْا عَلٰى رَجُلٍ فَقَالُوْا : فُلَانٌ شَهِيدٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «كَلَّا إِنِّىْ رَأَيْتُه فِى النَّارِ فِىْ بُرْدَةٍ غَلَّهَا أَوْ عَبَاءَةٍ» ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «يَا ابْنَ الْخَطَّابِ! اِذْهَبْ فَنَادِ فِى النَّاسِ : أَنَّه لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا الْمُؤْمِنُوْنَ ثَلَاثًا» قَالَ : فَخَرَجْتُ فَنَادَيْتُ : أَلَا إِنَّه لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا الْمُؤْمِنُونَ ثَلَاثًا
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, খায়বার যুদ্ধের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কয়েকজন সাহাবী এসে নিহত মুসলিমদের বর্ণনা করতে গিয়ে বললেন, অমুক অমুক শহীদ হয়েছে। পরিশেষে তারা আরো একজন সম্পর্কেও বললেন, অমুকও শহীদ হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কখখনো না। গনীমাতের মাল হতে একটি কম্বল অথবা বলেছেন একটি জোব্বা খিয়ানাতের দায়ে আমি তাকে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হতে দেখছি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ইবনুল খত্ত্বাব! যাও, লোকেদেরকে তিনবার ঘোষণা শুনিয়ে দাও, মু’মিন ছাড়া কেউ জান্নাতে যাবে না। ‘উমার বলেনঃ আমিও এ ঘোষণা তিনবার প্রচার করলাম যে, মু’মিন ছাড়া কেউ জান্নাতের অধিকারী হবে না [জান্নাতে প্রবেশ করবে না]।
(মিশকাত-হা/৪০৩৪; মুসনাদে আহমাদ-হা/২০৩, ৩২৮)
.
২০.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، أَخْبَرَنَا عُيَيْنَةُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ: قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ، فَدَخَلْتُ عَلَى سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، وَعَلَيَّ جُبَّةُ خَزٍّ، فَقَالَ لِي سَالِمٌ: مَا تَصْنَعُ بِهَذِهِ الثِّيَابِ؟ سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّمَا يَلْبَسُ الْحَرِيرَ مَنْ لَا خَلاقَ لَهُ صحيح لغيره
আলী বিন যায়িদ বলেন, আমি মদীনায় গিয়ে সালেম ইবনে আবদুল্লাহর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন আমার গায়ে একটা রেশমী জোব্বা ছিল। সালেম আমাকে বললেনঃ এসব কাপড় দিয়ে কী কর? আমি আমার আব্বার কাছে শুনেছি, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রেশম সে-ই পরে, যে আখিরাতে রেশমের ভাগ পাবে না।
(মুসনাদে আহমাদ-হা/৩৪৫)
.
২১.
حَدَّثَنَا يَزِيدُ، أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ بْنُ يُونُسَ، عَنْ عَبْدِ الْأَعْلَى الثَّعْلَبِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ: كُنْتُ مَعَ عُمَرَ، فَأَتَاهُ رَجُلٌ، فَقَالَ: إِنِّي رَأَيْتُ الْهِلالَ هِلالَ شَوَّالٍ، فَقَالَ عُمَرُ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَفْطِرُوا، ثُمَّ قَامَ إِلَى عُسٍّ فِيهِ مَاءٌ فَتَوَضَّأَ، وَمَسَحَ عَلَى خُفَّيْهِ، فَقَالَ الرَّجُلُ: وَاللهِ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَا أَتَيْتُكَ إِلَّا لِأَسْأَلَكَ عَنْ هَذَا، أَفَرَأَيْتَ غَيْرَكَ فَعَلَهُ، فَقَالَ: نَعَمْ خَيْرًا مِنِّي، وَخَيْرَ الْأُمَّةِ، رَأَيْتُ أَبَا الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلَ مِثْلَ الَّذِي فَعَلْتُ، وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ شَامِيَّةٌ ضَيِّقَةُ الْكُمَّيْنِ، فَأَدْخَلَ يَدَهُ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ، ثُمَّ صَلَّى عُمَرُ الْمَغْرِبَ
আবদুর রাহমান ইবনে আবি লাইলা বলেন, আমি উমার (রাঃ) এর সাথে ছিলাম। এক ব্যক্তি তার কাছে এসে বললো, আমি শাওয়ালের চাঁদ দেখেছি। উমার (রাঃ) তৎক্ষণাত বললেন, হে জনতা, তোমরা রোযায় বিরতি দাও। তারপর তিনি একটি নৈশ প্রহরা কেন্দ্রে গেলেন, যেখানে পানি ছিল। তিনি ওযূ করলেন এবং তার মোযায় মাসেহ করলেন। লোকটি বললো, হে আমীরুল মুমিনীন, আমি আপনার নিকট এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই এসেছি, আপনি কি অন্য কাউকে এ কাজ করতে দেখেছেন? উমার (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, আমার চেয়েও যিনি ভালো এমনকি সমগ্র উম্মাহর মধ্যে যিনি শ্রেষ্ঠ, সেই আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি ডাকনাম] আমি যা করলাম, তা করতে দেখেছি। তখন তাঁর গায়ে ছিল চাপা হাতাওয়ালা সিরীয় জোব্বা। জোব্বার নিচ দিয়ে তিনি নিজের হাত ঢুকালেন। তারপর উমার (রাঃ) মাগরিবের নামায পড়লেন।
(মুসনাদে আহমাদ-হা/১৯৩)
.
২২.
وَعَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّهَا أَخْرَجَتْ جُبَّةَ رَسُولِ اللَّهِ – صلى الله عليه وسلم – مَكْفُوفَةَ الْجَيْبِ وَالْكُمَّيْنِ وَالْفَرْجَيْنِ, بِالدِّيبَاجِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَأَصْلُهُ فِي
আসমা বিনতু আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি জোব্বা [লম্বা জামা] বের করে দিলেন, যার সামনের দিক, দু আস্তিন, নীচের অংশে দিবাজ [মোটা রেশমের সঞ্জার] লাগান ছিল।
(বুলুগুল মারাম-হা/৫৩৩)
.
২৩.
دَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ قَالَ : أَخْبَرَنِي هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، ” أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مَوْعُوكٌ ، عَلَيْهِ قَطِيفَةٌ ، فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهِ ، فَوَجَدَ حَرَارَتَهَا فَوْقَ الْقَطِيفَةِ ، فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ : مَا أَشَدَّ حُمَّاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قَالَ : إِنَّا كَذَلِكَ ، يَشْتَدُّ عَلَيْنَا الْبَلاءُ ، وَيُضَاعَفُ لَنَا الأَجْرُ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَيُّ النَّاسِ أَشَدُّ بَلاءً ؟ قَالَ : الأَنْبِيَاءُ ، ثُمَّ الصَّالِحُونَ ، وَقَدْ كَانَ أَحَدُهُمْ يُبْتَلَى بِالْفَقْرِ حَتَّى مَا يَجِدُ إِلا الْعَبَاءَةَ يَجُوبُهَا فَيَلْبَسُهَا ، وَيُبْتَلَى بِالْقُمَّلِ حَتَّى يَقْتُلَهُ ، وَلأَحَدُهُمْ كَانَ أَشَدَّ فَرَحًا بِالْبَلاءِ مِنْ أَحَدِكُمْ بِالْعَطَاءِ
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রবেশ করলেন। তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন এবং তাঁর শরীরে একটি চাদর জড়ানো ছিল। আবু সাঈদ (রাঃ) তার দেহে হাত রাখলেন এবং চাদরের উপড় দিয়েই উত্তাপ অনুভব করলেন। আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ। আপনার শরীরে কি ভীষণ জ্বর। তিনি বলেনঃ আমাদের এরূপ হয়ে থাকে। আমাদের উপর কঠিন বিপদ আসে এবং আমাদের দ্বিগুণ সওয়াব দেয়া হয়। আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন মানুষের উপর অধিক কঠিন বিপদ আসে? তিনি বলেনঃ নবী-রাসূলগণের উপর, অতঃপর সৎকর্মশীলদের উপর। তাদের কেউ দারিদ্র্যের পরীক্ষায় নিক্ষিপ্ত হয়েছেন, এমনকি একটি জোব্বা ছাড়া পরার মত কিছুই তাঁর ছিলো না। কেউ উকুনের বিপদে পতিত হয়েছেন। শেষে তা তাঁকে হত্যা করে। নিঃসন্দেহে তোমাদের মধ্যকার কেউ পুরস্কার লাভে যতো খুশি হয়, তাদের কেউ বিপদে পতিত হলে ততোধিক খুশি হতেন।
(আল আবাদুল মুফরাদ-হা/৫১২)
.
.
পুরুষদের কামিস পরিধান করার দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ أَنَسًا، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرَ بْنَ الْعَوَّامِ شَكَوَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْقَمْلَ فَرَخَّصَ لَهُمَا فِي قُمُصِ الْحَرِيرِ فِي غَزَاةٍ لَهُمَا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে আবদুর রহমান ইবনু আওফ ও যুবায়র ইবনু আওয়াম (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট [শরীরে] উকুনের অভিযোগ করলে তিনি তাদেরকে এক যুদ্ধে রেশমী কামিস [জামা] পরিধানের অনুমতি দিয়েছেন।
(সহীহ মুসলিম-হা/৫২৫৯)
.
২.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو تُمَيْلَةَ، وَالْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، وَزَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، عَنْ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ كَانَ أَحَبَّ الثِّيَابِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْقَمِيصُ
উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট সবচেয়ে প্রিয় পোষাক ছিল কামিস।
(তিরমিজী-হা/১৭৬৮; ১৭৬৯; ১৭৭০; শামায়েলে তিরমিজী-হা/৪৪; আবু দাউদ-হা/৩৯৮৪; রিয়াযুস স্ব-লিহীহ-হা/৭৯৩)
.
৩.
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا لَبِسَ قَمِيصًا بَدَأَ بِمَيَامِنِهِ
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) যখন কামিস পরতেন তখন ডান দিক থেকে পরা শুরু করতেন।
(তিরমিজী-হা/১৭৭২)
.
৪.
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَجَدَّ ثَوْبًا سَمَّاهُ بِاسْمِهِ عِمَامَةً أَوْ قَمِيصًا أَوْ رِدَاءً ثُمَّ يَقُولُ ‏ “‏ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيهِ أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ
আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন কাপড় বানাতেন তখন এটির নাম নিতেন। যেমন, পাগড়ী বা কামিস বা চাদর, এরপর বলতেনঃ
اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيهِ أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ
হে আল্লাহ তোমার সকল প্রশংসা। তুমি আমাকে এটি পরিধান করিয়েছ। আমি তোমার কাছে এর কল্যাণ এবং যে জন্য এটিকে তৈরী করা হয়েছে সে মঙ্গল চাই। আর এর অমঙ্গল এবং যে জন্য এটিকে তৈরী করা হয়েছে সে অকল্যাণ থেকে তোমার কাছে পানাহ চাই।
(তিরমিজী-হা/৭০৭৩; শামায়েলে তিরমিজী-হা/৪৭)
.
.
মহিলাদের কামিস পরিধান করার দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ وَعَلَيْهَا دِرْعُ قِطْرٍ ثَمَنُ خَمْسَةِ دَرَاهِمَ، فَقَالَتِ ارْفَعْ بَصَرَكَ إِلَى جَارِيَتِي، انْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّهَا تُزْهَى أَنْ تَلْبَسَهُ فِي الْبَيْتِ، وَقَدْ كَانَ لِي مِنْهُنَّ دِرْعٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ تُقَيَّنُ بِالْمَدِينَةِ إِلاَّ أَرْسَلَتْ إِلَىَّ تَسْتَعِيرُهُ‏
আয়মান (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর নিকট আমি হাজির হলাম। তার গায়ে তখন পাঁচ দিরহাম মূল্যের মোটা কাপড়ের কামিস ছিল। তিনি আমাকে বললেন, আমার এ বাদীটার দিকে চোখ তুলে একটু তাকাও, ঘরের ভিতরে এটা পরতে সে অপছন্দ করে। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় মদিনায় মেয়েদের মধ্যে আমারই শুধু একটি কামিস ছিল। মদিনায় কোন মেয়েকে বিয়ের সাজে সাজাতে গেলেই আমার কাছে কাউকে পাঠিয়ে ঐ কামিসটি চেয়ে নিত [সাময়িক ব্যবহারের জন্য]।
(সহীহ বুখারী-হা/২৪৫২)
.
২.
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ فَإِنَّ نَافِعًا مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ حَدَّثَنِي عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى النِّسَاءَ فِي إِحْرَامِهِنَّ عَنِ الْقُفَّازَيْنِ وَالنِّقَابِ وَمَا مَسَّ الْوَرْسُ وَالزَّعْفَرَانُ مِنَ الثِّيَابِ وَلْتَلْبَسْ بَعْدَ ذَلِكَ مَا أَحَبَّتْ مِنْ أَلْوَانِ الثِّيَابِ مُعَصْفَرًا أَوْ خَزًّا أَوْ حُلِيًّا أَوْ سَرَاوِيلَ أَوْ قَمِيصًا أَوْ خُفًّا
আবদুল্লাহ্ ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুহরিম স্ত্রীলোকদেরকে হাতমোজা না  পরতে এবং মুখমন্ডলে নেকাব না ঝুলাতে নিষেধ শুনেছেন এবং ওয়ারস ও জা‘ফরান মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করতেও নিষেধ করেছেন। তাছাড়া অন্যান্য প্রকারের কাপড় তারা পরিধান করতে পারবে, যদিও তা হলুদ রং বিশিষ্ট হয়, অথবা রেশমী কাপড় বা গহনাপত্র, কিংবা পায়জামা কিংবা কামিস বা মোজা  হয়।
(আবু দাউদ-হা/১৮২৭)
.
.
পুরুষদের লম্বা জামা পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو أُمَامَةَ بْنُ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ النَّاسَ عُرِضُوا عَلَىَّ وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ، فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الثَّدْىَ، وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ دُونَ ذَلِكَ، وَعُرِضَ عَلَىَّ عُمَرُ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ اجْتَرَّهُ ‏”‏‏.‏ قَالُوا فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ الدِّينَ ‏”‏‏.‏
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, একদিন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। [স্বপ্নে] দেখতে পেলাম, অনেক লোককে আমার সামনে উপস্থিত করা হল। তাদের গায়ে [বিভিন্ন রকমের] জামা ছিল। কারো কারো জামা এত ছোট ছিল যে, কোন প্রকারে বুক পর্যন্ত পৌছেছে। আবার কারো জামা এর চেয়ে ছোট ছিল। আর উমর (রাঃ)-কেও আমার সামনে পেশ করা হল। তাঁর শরীরে এত লম্বা জামা ছিল যে, সে জামাটি হিঁচড়াইয়া চলতেছিল। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি এ স্বপ্নের কি তাবীর [ব্যাখ্যা] করলেন। তিনি বললেন, দ্বীনদারী [ধর্মপরায়ণতা]।
(সহীহ বুখারী-হা/২২, ৩৪২৬; সহীহ মুসলিম-৫৯৭৩)
.
২.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْحَجَّاجِ الصَّوَّافُ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ الدَّسْتَوَائِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ بُدَيْلِ بْنِ مَيْسَرَةَ الْعُقَيْلِيِّ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ بْنِ السَّكَنِ الأَنْصَارِيَّةِ، قَالَتْ كَانَ كُمُّ يَدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الرُّسْغِ
আসমা বিনত ইয়াযীদ ইবনু সাকান আনসারিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জামার হাতের ঝুল কবজা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
(তিরমিজী-হা/১৭৭১; আবু দাউদ-হা/৩৯৮৫)
.
.
মহিলাদের লম্বা জামা পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ فَكَيْفَ يَصْنَعْنَ النِّسَاءُ بِذُيُولِهِنَّ قَالَ ‏”‏ يُرْخِينَ شِبْرًا ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَتْ إِذًا تَنْكَشِفَ أَقْدَامُهُنَّ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَيُرْخِينَهُ ذِرَاعًا لاَ يَزِدْنَ عَلَيْهِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
ইবনু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে তাঁর কাপড় গোড়ালির নিচে ঝুলিয়ে পরিধান করে আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তার দিকে তাকাবেন না। উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা তখন বললেন, মেয়েরা তাঁদের আচলকে কি করবে? তিনি বললেন, এক বিঘৎ নিচে নামিয়ে দিবে। উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, তা হলে তো তাদের পা অনাবৃত হয়ে যেতে পারে? তিনি বললেন, তা হলে এক হাত নিচে ঝুলিয়ে দিবে। এর বেশী করবে না।
(তিরমিজী-হা/১৭৩৭; ইবনে মাজাহ-হা/৩৫৮২, ৩৫৮৩)
.
২.
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أُمِّ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ، أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ، حَدَّثَتْهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم شَبَّرَ لِفَاطِمَةَ شِبْرًا مِنْ نِطَاقِهَا
উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর কোমর বন্ধনীর ঝুল এক বিঘৎ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।
(তিরমিজী-হা/১৭৩৮)
.
৩.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُمَارَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أُمِّ وَلَدٍ، لإِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهَا سَأَلَتْ أُمَّ سَلَمَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنِّي امْرَأَةٌ أُطِيلُ ذَيْلِي وَأَمْشِي فِي الْمَكَانِ الْقَذِرِ ‏.‏ فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم‏ “‏ يُطَهِّرُهُ مَا بَعْدَهُ
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসলামা মুহাম্মাদ ইবনু ইব্রাহীম থেকে ইব্রাহীম ইবনু আব্দুর রহমানের উবো ওয়ানাদের সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী উম্মে সালামা (রাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করেনঃ আমি এমন এক ব্যক্তি- যে তার কাপড়ের আঁচল ঝুলিয়ে রাখে। তিনি আরো বলেন, আমি নাপাক স্হানেও চলাফেরা করি উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, পরবর্তী [পবিত্র] স্থান তা পবিত্র করে দেয়।
(ইবনে মাজাহ-হা/৫৩১; আবু দাউদ-হা/৩৮৩; তিরমিজী-হা/১৪৩; মিশকাত-হা/৫০৪)
.
৪.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ ذَكَرْتُ لاِبْنِ شِهَابٍ فَقَالَ حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ، – يَعْنِي ابْنَ عُمَرَ – كَانَ يَصْنَعُ ذَلِكَ – يَعْنِي يَقْطَعُ الْخُفَّيْنِ لِلْمَرْأَةِ الْمُحْرِمَةِ – ثُمَّ حَدَّثَتْهُ صَفِيَّةُ بِنْتُ أَبِي عُبَيْدٍ أَنَّ عَائِشَةَ حَدَّثَتْهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَانَ رَخَّصَ لِلنِّسَاءِ فِي الْخُفَّيْنِ فَتَرَكَ ذَلِكَ
আবদুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) মুহরিম স্ত্রীলোকদের [লম্বা] মোজা কেটে দিতেন। অতঃপর তাঁর স্ত্রী সাফিয়্যা বিনতে আবূ উবায়দ তাঁর নিকট বর্ণনা করেন যে, আয়েশা (রাঃ) তাঁকে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহরিম  স্ত্রীলোকদের মোজা পরিধানর অনুমতি প্রদান করেছেন [লম্বা অংশ কর্তন ব্যতীত] ফলে তিনি [ইবন উমার] তা কর্তন করা থেকে বিরত থাকেন।
(আবু দাউদ-হা/১৮৩১)
.
৫.
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّهَا سَأَلَتْ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ أَتُصَلِّي الْمَرْأَةُ فِي دِرْعٍ وَخِمَارٍ لَيْسَ عَلَيْهَا إِزَارٌ قَالَ كَانَ الدِّرْعُ سَابِغًا يُغَطِّي ظُهُوْرَ قَدَمَيْهَا. رَوَاهُ أَبُوْ دَاوٗدَ وَذَكَرَ جَمَاعَةٌ وَقَفُوْهُ عَلى اُمِّ سَلَمَةَ
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, মহিলাদের কাছে যদি লুঙ্গি পায়জামার কোন কাপড় ভিতরে পরার জন্য না থাকে, শুধু জামা ও ওড়না পরে তারা সালাত আদায় করতে পারবে কিনা? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, সলাত হয়ে যাবে। তবে জামা এতটা লম্বা হতে হবে যাতে পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢেকে যায়।
(মিশকাত-হা/৭৬৩)
.
.
পুরুষদের পায়জামা পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَامَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ عَنِ الصَّلاَةِ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ فَقَالَ ‏ “‏ أَوَكُلُّكُمْ يَجِدُ ثَوْبَيْنِ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ سَأَلَ رَجُلٌ عُمَرَ فَقَالَ إِذَا وَسَّعَ اللَّهُ فَأَوْسِعُوا، جَمَعَ رَجُلٌ عَلَيْهِ ثِيَابَهُ، صَلَّى رَجُلٌ فِي إِزَارٍ وَرِدَاءٍ، فِي إِزَارٍ وَقَمِيصٍ، فِي إِزَارٍ وَقَبَاءٍ، فِي سَرَاوِيلَ وَرِدَاءٍ، فِي سَرَاوِيلَ وَقَمِيصٍ، فِي سَرَاوِيلَ وَقَبَاءٍ، فِي تُبَّانٍ وَقَبَاءٍ، فِي تُبَّانٍ وَقَمِيصٍ ـ قَالَ وَأَحْسِبُهُ قَالَ ـ فِي تُبَّانٍ وَرِدَاءٍ‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর কাছে দাড়িয়ে এক কাপড়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের হুকুম জিজ্ঞাসা করল। তিনি বল্ললেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের কাছে কি দু’খানা করে কাপড় আছে? এরপর এক ব্যাক্তি ‘উমর (রাঃ) –কে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ যখন তোমাদের সামর্থ্য তখন তোমরাও নিজেদের সামর্থ্য প্রকাশ কর। লোকেরা যেন পুরো পোশাক একত্রে পরিধান করে অর্থাৎ মানুষ তহবন্দ ও চাঁদর, তহবন্দ ও জামা, তহবন্দ ও কাবা, পায়জামা ও চাঁদর, পায়জামা ও জামা, পায়জামা ও কাবা, জাঙ্গিয়া ও কাবা, জাঙ্গিয়া ও জামা পরে সালাত আদায় করে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, আমার মনে হয় ‘উমর (রাঃ) জাঙ্গিয়া ও চাঁদরের কথাও বলেছিলেন।
(সহীহ বুখারী-হা/৩৫৮)
.
২.
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ زَيْدٍ، سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ بِعَرَفَاتٍ ‏ “‏ مَنْ لَمْ يَجِدِ النَّعْلَيْنِ فَلْيَلْبَسِ الْخُفَّيْنِ، وَمَنْ لَمْ يَجِدْ إِزَارًا فَلْيَلْبَسْ سَرَاوِيلَ ‏”‏‏.‏ لِلْمُحْرِمِ‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুহরিমদের উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দানে ভাষণ দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ যার চপ্পল নেই এ মোজা পরিধান করবে আর যার লুঙ্গি নেই সে পায়জামা পরিধান করবে।
(সহীহ বুখারী-হা/১৭২২; ১৭২৪; ৫৪৩৫; সহীহ মুসলিম-হা/২৬৬৫; ২৬৬৮; তিরমিজী-হা/৮৩৬; আবু দাউদ-হা/১৮২৯; ইবনু আবী শায়বাহ্-হা/১৫৭৭৯; মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী-হা/১২৮০৯; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী-হা/৯০৬৬; মিশকাত-হা/২৬৭৯)
.
৩.
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا يَلْبَسُ الْمُحْرِمُ مِنَ الثِّيَابِ فَقَالَ ‏ “‏ لاَ يَلْبَسِ الْقَمِيصَ، وَلاَ الْعَمَائِمَ، وَلاَ السَّرَاوِيلاَتِ، وَلاَ الْبُرْنُسَ، وَلاَ ثَوْبًا مَسَّهُ زَعْفَرَانٌ وَلاَ وَرْسٌ، وَإِنْ لَمْ يَجِدْ نَعْلَيْنِ فَلْيَلْبَسِ الْخُفَّيْنِ، وَلْيَقْطَعْهُمَا حَتَّى يَكُونَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ ‏”‏‏
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুহরিম ব্যাক্তি কাপড় পরিধান করবে এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ মুহরিম ব্যাক্তি জামা, পাগড়ী, পায়জামা, টূপি এবং জাফরান মোজা দু’টি পায়ের গিরার নিচ থেকে কেটে নিবে।
(সহীহ বুখারী-হা/১৭২৩)
.
৪.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ خَلِيفَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ كَانَ عَلَى مُوسَى يَوْمَ كَلَّمَهُ رَبُّهُ كِسَاءُ صُوفٍ وَجُبَّةُ صُوفٍ وَكُمَّةُ صُوفٍ وَسَرَاوِيلُ صُوفٍ وَكَانَتْ نَعْلاَهُ مِنْ جِلْدِ حِمَارٍ مَيِّتٍ ‏”‏
ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মূসা (আঃ) যেদিন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, সেদিন তাঁর পরিধানে ছিল একটি পশমের চাদর, পশমের জুব্বা, পশমের টুপি, পশমের পায়জামা। আর তাঁর চপ্পল দুটি ছিল মৃত গাধার চামড়ার।
(তিরমিজী-হা/১৭৪০)
.
৫.
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ عَنِ الإِزَارِ، فَقَالَ عَلَى الْخَبِيرِ سَقَطْتَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِزْرَةُ الْمُسْلِمِ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ وَلاَ حَرَجَ – أَوْ لاَ جُنَاحَ – فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ مَا كَانَ أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ فَهُوَ فِي النَّارِ مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًا لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ ‏”‏
আবদুর রহমান (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ একদা আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) কে পাজামা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেনঃ আপনি একজন অভিজ্ঞ লোকের নিকট প্রশ্ন করেছেন। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন মুসলমানের পায়জামা পায়ের গোছার অর্ধেক হয়ে থাকে, তবে তা পায়ের গিরা পর্যন্ত হলেও তাতে কোন ক্ষতি নেই এবং গুনাহ্ নেই। অবশ্য এর নীচ পর্যন্ত হলে সে দোজখে যাবে। আর যে ব্যক্তি অহংকার করে নিজের পায়জামা ঝুলিয়ে পরবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।
(আবু দাউদ-হা/৪০৪৯)
.
৬.
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ أَبِي الصَّبَّاحِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي سُمَيَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الإِزَارِ فَهُوَ فِي الْقَمِيصِ
ইবন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু পায়জামা সম্পর্কে বলেছেন, তা জামার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।
(আবু দাউদ-হা/৪০৫১)
.
৭.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْوَلِيدِ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ مَالِكًا أَبَا صَفْوَانَ بْنَ عُمَيْرَةَ، قَالَ بِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رِجْلَ سَرَاوِيلَ قَبْلَ الْهِجْرَةِ فَوَزَنَ لِي فَأَرْجَحَ لِي ‏
মালেক আবূ সাওয়ান ইবনে ইমায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হিজরতের পূর্বে আমি তাঁর নিকট একটি পায়জামা বিক্রয় করেছিলাম। তিনি ওজন করে দিলেন এবং আমাকে কিছু বেশীই দিলেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/২২২১)
.
৮.
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ سُوَيْدِ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ أَتَانَا النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَسَاوَمَنَا سَرَاوِيلَ
সুয়াইদ ইবনে কায়েস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এখানে এসে দরদাম করে পায়জামা খরিদ করলেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/৩৫৭৯; আহমাদ-হা/১৮৬১৯, দারেমী-হা/২৫৮৫)
.
৯.
حَدَّثَنَا هَارُونُ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ السَّائِبِ حَدَّثَهُ، أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ أَبِي الْقَاسِمِ السَّبَائِيَّ حَدَّثَهُ، عَنْ قَاصِّ الْأَجْنَادِ بِالْقُسْطَنْطِينِيَّةِ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يُحَدِّثُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، فَلا يَقْعُدَنَّ عَلَى مَائِدَةٍ يُدَارُ عَلَيْهَا الْخَمْرُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، فَلا يَدْخُلِ الْحَمَّامَ إِلَّا بِإِزَارٍ، وَمَنْ كَانَتْ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، فَلا تَدْخُلِ الْحَمَّامَ حسن لغيره وهذا إسناد ضعيف لجهالة قاص الأجناد
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেছেনঃ “হে জনতা, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে সে যেন এমন খাবারের টেবিলে না বসে, যেখানে মদপরিবেশন করা হয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন পায়জামা পরিহিত অবস্থায় ব্যতীত গোসল খানায় প্রবেশ না করে। আর যে নারী আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে সে যেন গোসল খানায় প্রবেশ না করে।
[উল্লেখ্য যে, এখানে তৎকালীন গণগোসলখানাকে বুঝানো হয়েছে, যা শুধু পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল]
(মুসনাদে আহমাদ-হা/১২৫)
.
১০.
حَدَّثَنَا أَبُو نُوحٍ قُرَادٌ، أَخْبَرَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سِمَاكٌ الْحَنَفِيُّ أَبُو زُمَيْلٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ، قَالَ: نَظَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَصْحَابِهِ وَهُمْ ثَلاثُ مِائَةٍ وَنَيِّفٌ، وَنَظَرَ إِلَى الْمُشْرِكِينَ فَإِذَا هُمْ أَلْفٌ وَزِيَادَةٌ، فَاسْتَقْبَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْقِبْلَةَ، ثُمَّ مَدَّ يَدَيْهِ، وَعَلَيْهِ رِدَاؤُهُ وَإِزَارُهُ
[এবারতের লম্বা অংশ…………………………………..]
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, বদরের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সাহাবীদের দিকে দৃষ্টি দিলেন। তাদের সংখ্যা তিনশোর কিছু বেশি ছিল। মুশরিকদের দিকে দৃষ্টি দিলেন। তাদের সংখ্যা ছিল এক হাজারের কিছু বেশি। তৎক্ষণাত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবলামুখী হলেন ও তার দু’হাত মেললেন, তখন তার গায়ে ছিল তার চাদর ও পায়জামা।
[হাদিসের লম্বা অংশ…………………………………..]
(মুসনাদে আহমাদ-হা/২০৮)
.
১১.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ، حَدَّثَنَي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي الْيَعْفُورِ الْعَبْدِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُسْلِمٍ أَبِي سَعِيدٍ مَوْلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ: أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ أَعْتَقَ عِشْرِينَ مَمْلُوكًا، وَدَعَا بِسَرَاوِيلَ فَشَدَّهَا عَلَيْهِ، وَلَمْ يَلْبَسْهَا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلا إِسْلامٍ، وَقَالَ: إِنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْبَارِحَةَ فِي الْمَنَامِ، وَرَأَيْتُ أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ، وَإِنَّهُمْ قَالُوا لِي: اصْبِرْ، فَإِنَّكَ تُفْطِرُ عِنْدَنَا الْقَابِلَةَ، ثُمَّ دَعَا بِمُصْحَفٍ فَنَشَرَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَقُتِلَ وَهُوَ بَيْنَ يَدَيْهِ
উসমানের মুক্ত গোলাম আবু সাঈদ বলেছেন, উসমান (রাঃ) বিশটি গোলাম মুক্ত করলেন এবং পায়জামা আনতে বললেন ও তা পরে বাঁধলেন। অথচ ইতিপূর্বে জাহিলিয়াতের যুগে তিনি পায়জামা পরেননি, মুসলিম হওয়ার পরেও পরেননি। তারপর তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গতরাতে স্বপ্নে দেখেছি। আবু বাকর ও উমারকেও দেখেছি। তাঁরা আমাকে বললেনঃ ধৈর্য ধারণ কর, তুমি অচিরেই আমাদের কাছে ইফতার করবে। অতঃপর উসমান কুরআন শরীফ আনতে বললেন এবং তা নিজের সামনে খুললেন। তৎক্ষণাত তিনি নিহত হলেন। তখনো কুরআন তাঁর সামনে ছিল।
(মুসনাদে আহমাদ-হা/৫২৬)
.
১২.
عَن سُوَيْدِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ : جَلَبْتُ أَنَا وَمَخَرَفَةُ الْعَبْدِىُّ بَزًّا مِنْ هَجَرٍ فَأَتَيْنَا بِه مَكَّةَ فَجَاءَنَا رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ يَمْشِىْ فَسَاوَمَنَا بِسَرَاوِيلَ فَبِعْنَاهُ وَثَمَّ رَجُلٌ يَزِنُ بِالْأَجْرِ فَقَالَ لَه رَسُول اللهِ : «زِنْ وَأَرْجِحْ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُوْ دَاودَ وَالتِّرْمِذِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ. وَقَالَ التِّرْمِذِىُّ : هٰذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
সুওয়াইদ ইবনু কায়স (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং মাখরাফাতুল ‘আব্দী (রাঃ) ‘হাজার’ নামক অঞ্চল হতে ব্যবসার উদ্দেশে কাপড় নিয়ে মাক্কায় আসলাম। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাদের নিকট হতে একটি পায়জামা কিনতে চাইলেন। আমরা তাঁর নিকট তা বিক্রি করলাম। [অর্থের] বিনিময়ে বিভিন্ন দ্রব্য-সামগ্রী ওজন পরিমাপ করে দেয় এমন এক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিল। তখন তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাকে [রৌপ্য-মুদ্রার বিনিময়ে] ওজন করে দিতে বললেন এবং এটাও বললেন, ওযন করার সময় প্রাপ্যের চেয়ে একটু বেশি দেবে।
(মিশকাত-হা/২৯২৪; ইবনে মাজাহ-হা/২২২০; রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/১৩৮৩)
.
১৩.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٍ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنِ ابْنِ شَوْذَبٍ قَالَ‏:‏ سَمِعْتُ مَالِكَ بْنَ دِينَارٍ يُحَدِّثُ، عَنْ أَبِي غَالِبٍ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ قَالَتْ‏:‏ زَارَنَا سَلْمَانُ مِنَ الْمَدَائِنِ إِلَى الشَّامِ مَاشِيًا، وَعَلَيْهِ كِسَاءٌ وَانْدَرْوَرْدُ، قَالَ‏:‏ يَعْنِي سَرَاوِيلَ مُشَمَّرَةً، قَالَ ابْنُ شَوْذَبٍ‏:‏ رُؤِيَ سَلْمَانُ وَعَلَيْهِ كِسَاءٌ مَطْمُومُ الرَّأْسِ سَاقِطُ الأُذُنَيْنِ، يَعْنِي أَنَّهُ كَانَ أَرْفَشَ‏.‏ فَقِيلَ لَهُ‏:‏ شَوَّهْتَ نَفْسَكَ، قَالَ‏:‏ إِنَّ الْخَيْرَ خَيْرُ الاخِرَةِ‏
উম্মু দারদা (রাঃ) বলেন, সালমান (রাঃ) মাদায়েন থেকে পদব্রজে সিরিয়া এসে আমাদের সাথে সাক্ষাত করেন। তখন তার পরনে ছিল পায়জামা। ইবনে শাওযাব (রহঃ) বলেন, সালমান (রাঃ)-কে দেখা গেলো যে, তার গায়ে চাদর জড়ানো, তার মাথা মুণ্ডিত এবং কান প্রশস্ত। তাকে বলা হলো, আপনি নিজেকে কদাকার করে ফেলেছেন। তিনি বলেনঃ নিশ্চয় আখেরাতের কল্যাণই প্রকৃত কল্যাণ।
(আল আবাদুল মুফরাদ-হা/৩৪৬)
.
.
মহিলাদের পায়জামা পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ فَإِنَّ نَافِعًا مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ حَدَّثَنِي عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى النِّسَاءَ فِي إِحْرَامِهِنَّ عَنِ الْقُفَّازَيْنِ وَالنِّقَابِ وَمَا مَسَّ الْوَرْسُ وَالزَّعْفَرَانُ مِنَ الثِّيَابِ وَلْتَلْبَسْ بَعْدَ ذَلِكَ مَا أَحَبَّتْ مِنْ أَلْوَانِ الثِّيَابِ مُعَصْفَرًا أَوْ خَزًّا أَوْ حُلِيًّا أَوْ سَرَاوِيلَ أَوْ قَمِيصًا أَوْ خُفًّا ‏.‏ قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ عَنْ نَافِعٍ عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ وَمُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ إِلَى قَوْلِهِ وَمَا مَسَّ الْوَرْسُ وَالزَّعْفَرَانُ مِنَ الثِّيَابِ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرَا مَا بَعْدَهُ ‏
আবদুল্লাহ্ ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুহরিম স্ত্রীলোকদেরকে হাতমোজা না পরতে এবং মুখমন্ডলে নেকাব না ঝুলাতে নিষেধ শুনেছেন এবং ওয়ারস ও জা‘ফরান মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করতেও নিষেধ করেছেন। তাছাড়া অন্যান্য প্রকারের কাপড় তারা পরিধান করতে পারবে, যদিও তা হলুদ রং বিশিষ্ট হয়, অথবা রেশমী কাপড় বা গহনাপত্র, কিংবা পায়জামা কিংবা কামিস বা মোজা হয়।
(আবু দাউদ-হা/১৮২৭)
.
২.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، وَمُسَدَّدٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَفْصٌ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادٍ، عَنْ خَالَتِهِ، مَيْمُونَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُبَاشِرَ امْرَأَةً مِنْ نِسَائِهِ وَهِيَ حَائِضٌ أَمَرَهَا أَنْ تَتَّزِرَ ثُمَّ يُبَاشِرُهَا
আবদুল্লাহ্ ইবন শাদ্দাদ (রহঃ) তাঁর খালা মায়মূনা বিনত আল্ হারিস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর কোন ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে শয়ন করতেন, তখন  তিনি তাঁকে ইয়ার [পায়জামা] পরিধান করতে বলতেন। অতঃপর তিনি তাঁর সাথে রাতযাপন করতেন।
(আবু দাউদ-হা/২১৬৪, ২৬৮, ২৭৩; ইবনে মাজাহ-হা/৬৩৫, ৬৩৬, ৬৩৮)
.
৩.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ نَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ ذَكَرَ الإِزَارَ فَالْمَرْأَةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ تُرْخِي شِبْرًا ‏”‏ ‏.‏ قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ إِذًا يَنْكَشِفُ عَنْهَا ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَذِرَاعًا لاَ تَزِيدُ عَلَيْهِ ‏”‏
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পায়জামা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে আমি জিজ্ঞাসা করিঃ ইয়া রাসালুল্লাহ! মহিলারা পায়জামা কতটুকু লম্বা করবে? তিনি বলেনঃ তারা পায়ের গোছা থেকে এক বিঘত লম্বা করবে, তখন উম্মু সালামা (রাঃ) বলেনঃ এতে তো মহিলাদের সতর খোলা থাকবে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তবে এক হাত লম্বা করবে, এর অধিক নয়।
(আবু দাউদ-হা/৪০৭১)
.
৪.
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، أَخْبَرَنِي زَيْدٌ الْعَمِّيُّ، عَنْ أَبِي الصِّدِّيقِ النَّاجِيِّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ رَخَّصَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ فِي الذَّيْلِ شِبْرًا ثُمَّ اسْتَزَدْنَهُ فَزَادَهُنَّ شِبْرًا فَكُنَّ يُرْسِلْنَ إِلَيْنَا فَنَذْرَعُ لَهُنَّ ذِرَاعًا
ইবন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের পায়জামাকে এক বিঘত পরিমাণ লম্বা [গোছা থেকে] করার অনুমতি দেন। এরপর তিনি এর উপর আরো এক বিঘত বাড়াবার অনুমতি দেন, যখন তাঁরা বৃদ্ধির অনুমতি চায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবিগণ তাঁদের কাপড় আমাদের কাছে পাঠাতেন আমরা হাত দিয়ে তা মেপে দিতাম।
(আবু দাউদ-হা/৪০৭৩)
.
.
লুঙ্গি পরিধান করার দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ انْطَلَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمَدِينَةِ، بَعْدَ مَا تَرَجَّلَ وَادَّهَنَ وَلَبِسَ إِزَارَهُ وَرِدَاءَهُ، هُوَ وَأَصْحَابُهُ، فَلَمْ يَنْهَ عَنْ شَىْءٍ مِنَ الأَرْدِيَةِ وَالأُزْرِ تُلْبَسُ إِلاَّ الْمُزَعْفَرَةَ الَّتِي تَرْدَعُ عَلَى الْجِلْدِ، فَأَصْبَحَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ، رَكِبَ رَاحِلَتَهُ حَتَّى اسْتَوَى عَلَى الْبَيْدَاءِ، أَهَلَّ هُوَ وَأَصْحَابُهُ وَقَلَّدَ بَدَنَتَهُ، وَذَلِكَ لِخَمْسٍ بَقِينَ مِنْ ذِي الْقَعْدَةِ، فَقَدِمَ مَكَّةَ لأَرْبَعِ لَيَالٍ خَلَوْنَ مِنْ ذِي الْحَجَّةِ، فَطَافَ بِالْبَيْتِ وَسَعَى بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، وَلَمْ يَحِلَّ مِنْ أَجْلِ بُدْنِهِ لأَنَّهُ قَلَّدَهَا، ثُمَّ نَزَلَ بِأَعْلَى مَكَّةَ عِنْدَ الْحَجُونِ، وَهْوَ مُهِلٌّ بِالْحَجِّ، وَلَمْ يَقْرَبِ الْكَعْبَةَ بَعْدَ طَوَافِهِ بِهَا حَتَّى رَجَعَ مِنْ عَرَفَةَ، وَأَمَرَ أَصْحَابَهُ أَنْ يَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، ثُمَّ يُقَصِّرُوا مِنْ رُءُوسِهِمْ ثُمَّ يَحِلُّوا، وَذَلِكَ لِمَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ بَدَنَةٌ قَلَّدَهَا، وَمَنْ كَانَتْ مَعَهُ امْرَأَتُهُ فَهِيَ لَهُ حَلاَلٌ، وَالطِّيبُ وَالثِّيَابُ‏
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ চুল আঁচড়িয়ে, তেল মেখে, লুঙ্গি ও চাঁদর পরে [হজ্জের উদ্দেশ্যে] মদিনা থেকে রওয়ানা হন। তিনি কোন প্রকার চাঁদর বা লুঙ্গি পরতে নিষেধ করেন নি, তবে শরীরের চামড়া রঞ্জিত হয়ে যেতে পারে এরূপ জাফরানী রঙের কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন। যুল-হুলাইফা থেকে সাওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে পৌঁছে তিনি ও তাঁর সাহাবীগন তালবিয়া পাঠ করেন এবং কুরবানীর উটের গলায় মালা ঝুলিয়ে দেন, তখন যুলকা‘দা মাসের পাঁচদিন অবশিষ্ট ছিল।
[হাদিসের লম্বা অংশ………………………………….]
(সহীহ বুখারী-হা/১৪৫২)
.
২.
حَدَّثَنِي مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ لَمَّا بُنِيَتِ الْكَعْبَةُ ذَهَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَعَبَّاسٌ يَنْقُلاَنِ الْحِجَارَةَ، فَقَالَ عَبَّاسٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اجْعَلْ إِزَارَكَ عَلَى رَقَبَتِكَ يَقِيكَ مِنَ الْحِجَارَةِ، فَخَرَّ إِلَى الأَرْضِ، وَطَمَحَتْ عَيْنَاهُ إِلَى السَّمَاءِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ ‏ “‏ إِزَارِي إِزَارِي ‏”‏‏.‏ فَشَدَّ عَلَيْهِ إِزَارَهُ‏
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন কা’বা গৃহ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আব্বাস (রাঃ) [অন্যদের সাথে] পাথর বয়ে আনছিলেন। আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, তোমার লুঙ্গিটা কাঁধের উপর রাখ, পাথরের ঘর্ষণ হতে তোমাকে রক্ষা করবে। [লুঙ্গিটি খোলার সাথে সাথে] তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে গেলেন। তাঁর চোখ দু’টি আকাশের দিকে নিবিষ্ট ছিল। [কিছুক্ষন পর] তাঁর চেতনা ফিরে এল, তখন তিনি বলতে লাগলেন, আমার লুঙ্গি দাও। আমার লুঙ্গি দাও। তৎক্ষণাৎ তাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেওয়া হল।
(সহীহ বুখারী-হা/৩৫৫২, ১৪৮৭; সহীহ মুসলিম-হা/৬৬৪, ৬৬৫, ৬৬৬; আল লুলু ওয়াল মারজান-হা/১৯৫)
.
৩.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي يَعْفُورٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَهُ، وَأَحْيَا لَيْلَهُ، وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ‏
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমযানের শেষ দশক আসত তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন [বেশী বেশী ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন] এবং রাত্রে জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন।
(সহীহ বুখারী-হা/১৮৯৭; সুনানে নাসাঈ-হা/১৬৪২; রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/১২০১; বুলুগুল মারাম-হা/৬৯৮)
.
৪.
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ – عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَزَا خَيْبَرَ قَالَ فَصَلَّيْنَا عِنْدَهَا صَلاَةَ الْغَدَاةِ بِغَلَسٍ فَرَكِبَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَكِبَ أَبُو طَلْحَةَ وَأَنَا رَدِيفُ أَبِي طَلْحَةَ فَأَجْرَى نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي زُقَاقِ خَيْبَرَ وَإِنَّ رُكْبَتِي لَتَمَسُّ فَخِذَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَانْحَسَرَ الإِزَارُ عَنْ فَخِذِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَإِنِّي لأَرَى بَيَاضَ فَخِذِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا دَخَلَ الْقَرْيَةَ قَالَ ‏ “‏ اللَّهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَهَا ثَلاَثَ مِرَارٍ قَالَ وَقَدْ خَرَجَ الْقَوْمُ إِلَى أَعْمَالِهِمْ فَقَالُوا مُحَمَّدٌ – قَالَ عَبْدُ الْعَزِيزِ وَقَالَ بَعْضُ أَصْحَابِنَا – وَالْخَمِيسَ قَالَ وَأَصَبْنَاهَا عَنْوَةً
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বরের যুদ্ধে যাত্রা করেন। আমরা সেদিন তাঁর সঙ্গে সকালের সালাত [ফজর] অন্ধকারে [প্রথম ওয়াক্তে] আদায় করি। তারপর আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাহনে আরোহণ করলেন এবং আবূ তালহা (রাঃ)ও তার সাওয়ারীতে চড়লেন। আর আমি [আরোহী] ছিলাম আবূ তালহার পশ্চাতে। আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বরের গলিপথে চললেন। [আমরা এত পাশাপাশি পথ চলছিলাম যে] আমার আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উরু স্পর্শ করেছিলো।
এমন সময় আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর লুঙ্গি তাঁর উরুদেশ থেকে সরে গেল। আর আমি আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উরুর শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তিনি যখন খায়বরের জনপদে প্রবেশ করলেন, তখন বললেনঃ আল্লাহু আকবার, খায়বর ধ্বংস হলো।
[হাদিসের লম্বা অংশ………………………………….]
(সহীহ মুসলিম-হা/৪৫১৫)
.
৫.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، قَالَ : سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ , يَقُولُ : ” كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , رَجُلا مَرْبُوعًا , بَعِيدَ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ ، عَظِيمَ الْجُمَّةِ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ الْيُسْرَى ، عَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ ، مَا رَأَيْتُ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ “
বারা ইবনে আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যমাকৃতির ছিলেন। তাঁর দুই কাঁধের মধ্যবর্তী অংশ ছিল তুলনামূলক প্রশস্ত। তাঁর ঘন চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। তাঁর দেহে লাল লুঙ্গি ও লাল চাদর শোভা পেত। আমি তাঁর তুলনায় সুদর্শন কাউকে কখনো দেখিনি।
(শামায়েলে তিরমিজী-হা/৩, ৪, ৫)
.
৬.
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، ح وَحَدَّثَنَا هَنَّادٌ، – يَعْنِي ابْنَ السَّرِيِّ – عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، – الْمَعْنَى – عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، قَالَ مُوسَى عَنْ سَلْمَانَ الأَغَرِّ، – وَقَالَ هَنَّادٌ عَنِ الأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، – قَالَ هَنَّادٌ – قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْكِبْرِيَاءُ رِدَائِي وَالْعَظَمَةُ إِزَارِي فَمَنْ نَازَعَنِي وَاحِدًا مِنْهُمَا قَذَفْتُهُ فِي النَّارِ ‏”‏
হান্নাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ বলেন, ‘‘অহংকার আমার চাদর এবং শ্রেষ্ঠত্ব আমার লুঙ্গি স্বরূপ। তাই, যে ব্যক্তি এ দু’টি জিনিসে আমার শরীক হতে চায়, আমি তাকে দোজখে নিক্ষেপ করবো।’’
(আবু দাউদ-হা/৪০৪৬)
.
৭.
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلاَلٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَأَخْرَجَتْ لِي إِزَارًا غَلِيظًا مِنَ الَّتِي تُصْنَعُ بِالْيَمَنِ وَكِسَاءً مِنْ هَذِهِ الأَكْسِيَةِ الَّتِي تُدْعَى الْمُلَبَّدَةَ وَأَقْسَمَتْ لِي لَقُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِيهِمَا
আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়েশা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশ করলে তিনি আমার সামনে ইয়ামনের তৈরী মোটা কাপড়ের একটি লুঙ্গি এবং একটি কম্বল [বা চাদর] বের করলেন এবং শপথ করে আমাকে বললেন, কাপড় দু’টি পরিহিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/৩৫৫১)
.
৮.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي سَعِيدٍ هَلْ سَمِعْتَ مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ شَيْئًا فِي الإِزَارِ قَالَ نَعَمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ‏”‏ إِزْرَةُ الْمُؤْمِنِ إِلَى أَنْصَافِ سَاقَيْهِ لاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ وَمَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ فِي النَّارِ ‏”‏ ‏.‏ يَقُولُ ثَلاَثًا ‏”‏ لاَ يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَى مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًا ‏”‏
আলা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট লুঙ্গি সম্পর্কে কিছু শুনেছেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ মুমিন ব্যক্তির লুঙ্গি তার দু’ জঙঘার মধ্যাংশ পর্যন্ত [প্রলম্বিত হতে পারে], তবে জঙঘা থেকে গোছা পর্যন্ত [প্রলম্বিত হওয়ায়] কোন দোষ নেই। কিন্তু গোছার নিম্নাংশে পৌঁছলে তা জাহান্নামে যাবে। এ কথা তিনি তিনবার বলেছেন। যে ব্যক্তি অহংকারবশে তার লুঙ্গি [গোছার নিচে] ঝুলিয়ে পরে আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না।
(ইবনে মাজাহ-হা/৩৫৭৩)
.
৯.
وَعَنْ ابنِ عُمَرَ رضي الله عنه، قَالَ: مَرَرتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَفِي إزَارِي استِرخَاءٌ، فَقَالَ: «يَا عَبدَ اللهِ، ارْفَعْ إزَارَكَ ». فَرَفَعْتُهُ ثُمَّ قَالَ: « زِدْ » فَزِدْتُ، فَمَا زِلْتُ أتَحَرَّاهَا بَعْدُ . فَقَالَ بَعْضُ القَوْم: إِلَى أينَ ؟ فَقَالَ: إِلَى أنْصَافِ السَّاقَيْنِ
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন আমার লুঙ্গি বেশ ঝুলে ছিল। সুতরাং তিনি বললেন, ‘‘হে আব্দুল্লাহ! লুঙ্গি উঠিয়ে পর।’’ অতএব আমি লুঙ্গি তুলে পরলাম। তিনি আবার বললেন, ‘‘আরো উঁচু কর।’’ আমি আরো উঁচু করলাম। এরপর বরাবর আমি এর খেয়াল রাখতে থাকলাম; যেন লুঙ্গি নীচে না নামে। কিছু লোক [আব্দুল্লাহকে] জিজ্ঞাসা করল, ‘কতদূর পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরা যাবে?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘অর্ধ গোছা পর্যন্ত।’
(রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/৮০৪)
.
১০.
وَعَنْ جَابِرٍ – رضي الله عنه – أَنَّ النَّبِيَّ – صلى الله عليه وسلم – قَالَ لَهُ: «إِنْ كَانَ الثَّوْبُ وَاسِعًا فَالْتَحِفْ بِهِ»، يَعْنِي: فِي الصَّلَاةِ. وَلِمُسْلِمٍ: «فَخَالِفْ بَيْنَ طَرَفَيْهِ – وَإِنْ كَانَ ضَيِّقًا فَاتَّزِرْ بِهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ – صحيح
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেছেনঃ কাপড় যদি বড় হয়, তাহলে শরীরে জড়িয়ে পরবে। মুসলিমে আছে, [বড়] চাদর হলে তার কিনারাদ্বয়কে দু-কাঁধের উপর বিপরীতমুখী করে রেখে নেবে। [অর্থাৎ বড় প্রশস্ত একটি কাপড়ে গলা পর্যন্ত ঢেকে সালাত আদায় করা চলবে]। আর যদি ছোট হয় তাহলে লুঙ্গি হিসেবে ব্যবহার করবে।
(বুলুগুল মারাম-হা/২০৮)
.
.
টুপি পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
রাসূল (সাঃ) এর টুপিঃ
—————————
১.
হাসান বিন মেহরান থেকে বর্ণিত,
عن رجل من الصحابة : قال : أكلت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم، ورأيت عليه قلنسوة بيضاء
একজন সাহাবী বলেছেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাঁর দস্তরখানে খেয়েছি এবং তাঁর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি’
(আল ইসাবাহ-৪/৩৩৯)
.
এ হাদীসটি ইমাম ইবনুস সাকান তার কিতাবুস সাহাবায় সনদসহ বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর এ বর্ণনায় সাহাবীর নাম আসেনি। তা এসেছে তাঁর অন্য বর্ণনায় এবং ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতেমের বর্ণনায়। তাঁর নাম ফারকাদ।
(দ্র. আততারীখুল কাবীর-৭/১৩১; কিতাবুল জারহি ওয়াত তা’দীল-৭/৮১)
.
উল্লেখ্য, ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. ইমাম ইবনুস সাকানের উপরোক্ত বর্ণনার দ্বারা আবু নুআইম আল আসবাহানী রহ.এর এ দাবি খন্ডন করেছেন যে, ফারকাদ সাহাবী আল্লাহর নবীর দস্তরখানে খাবার খাননি। বরং হাসান ইবনে মেহরান খাবার খেয়েছেন সাহাবী ফারকাদের সাথে।
(মারিফাতুস সাহাবা-৪/১০৪)
.
হাফেজ ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ বলেন, এ ক্ষেত্রে আবু নুআইমই ভুলের শিকার হয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে তিনি ইমাম ইবনুস সাকানের উপরোক্ত বর্ণনাটি উল্লেখ করেন। এতে প্রমাণিত হয় এ বর্ণনা সহীহ। অন্যথায় প্রমাণ-গ্রহণ শুদ্ধ হতো না। এবং আবু নুআইম এর মত ইমাম এর কথাকে খন্ডন করা যেত না।
তাছাড়া সাহাবী ফারকাদ রা.এর আল্লাহর নবীর দস্তরখানে খাবার খাওয়ার কথা ইমাম বুখারী, ইমাম আবু হাতেম ও ইবনু আবদিল বারও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।
.
২.
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন,
أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يلبس من القلانس في السفر ذوات الآذان، وفي الحضر المشمرة يعني الشامية.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর অবস্থায় কান বিশিষ্ট টুপি পরতেন আর আবাসে শামী টুপি পরতেন।
(আখলাকুন নুবুওয়্যাহ, আল জামে লি আখলাকির রাবী ওয়া আদাবিস সামে পৃ. ২০২)
.
এ হাদীসের সকল রাবী ‘‘ছিকা’’। উরওয়া ও হিশাম তো প্রসিদ্ধ ইমাম। আর মুফাদদাল ইবনে ফাদালা নামে দুইজন রাবী আছেন। একজন মিসরী, তিনি অনেক বড় ইমাম ছিলেন। মিসরের কাযী ছিলেন। সর্বসম্মতিক্রমে তিনি ‘‘ছিকা’’। আসমাউর রিজালের কিতাবাদি থেকে প্রতীয়মান হয় সনদে উল্লেখিত ব্যক্তি ইনিই। কারণ তিনিই হিশাম ইবনে উরওয়া ও ইবনে জুরাইজ থেকে রেওয়ায়েত করেন যা আল্লামা ইবনে আদী ও আল্লামা মুহাম্মাদ বিন হাসান বিন কুতায়বা তার কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
(আল-কামিল-৭/৪০৯; ইকমালু তাহযীবিল কামাল-১১/৩৩৮)
.
অপর জন বসরী। তাঁর স্মৃতিশক্তির বিষয়ে কিছু আপত্তি থাকলেও ইবনে হিববান তাকে ছিকা রাবীদের মধ্যে গণ্য করেছেন।
.
আবু হাতেম বলেছেন,
يكتب حديثه
আর ইমাম ইবনে আদী তার একটি বর্ণনাকে ‘মুনকার’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাকিগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন-
‘তার অন্য বর্ণনাগুলো সঠিক।’ সুতরাং সনদে উল্লেখিত রাবী যদি বসরীও হন তবুও তার এ বর্ণনা সঠিক।
.
৩.
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَهْضَمٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – وَهُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ – عَنْ عُمَارَةَ، – يَعْنِي ابْنَ غَزِيَّةَ – عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ الْمُعَلَّى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ كُنَّا جُلُوسًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَدْبَرَ الأَنْصَارِيُّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ يَا أَخَا الأَنْصَارِ كَيْفَ أَخِي سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَ صَالِحٌ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ يَعُودُهُ مِنْكُمْ ‏”‏ ‏.‏ فَقَامَ وَقُمْنَا مَعَهُ وَنَحْنُ بِضْعَةَ عَشَرَ مَا عَلَيْنَا نِعَالٌ وَلاَ خِفَافٌ وَلاَ قَلاَنِسُ وَلاَ قُمُصٌ نَمْشِي فِي تِلْكَ السِّبَاخِ حَتَّى جِئْنَاهُ فَاسْتَأْخَرَ قَوْمُهُ مِنْ حَوْلِهِ حَتَّى دَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ الَّذِينَ مَعَهُ
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলাম, তখন জনৈক আনসারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তাঁকে সালাম করলেন, এরপর আনসারী প্রস্থান করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনসারী ভাই! আমার ভাই সা’দ ইবন উবাদা কেমন আছে? তিনি উত্তর দিলেন, ভাল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে কে তার খোঁজখবর নিতে যাবে? এ বলে তিনি দাঁড়ালেন, আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়ালাম। আমরা দশ জনের অধিক ছিলাম। আমাদের কারো পায়ে জুতা, মোজা, মাথায় টুপি এবং গায়ে জামা ছিল না। আমরা সে খড়খড়ে রাস্তা দিয়ে চলছিলাম এবং তার কাছে গিয়ে পৌছলাম। আমাদেরকে দেখে তার গোত্রের লোকজন তাঁর নিকট হতে সরে গেলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাথী সাহাবীরা তার কাছে এলেন।
(সহীহ মুসলিম-হা/২০১০)
.
এখানে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. এর বাক্য “আমাদের কারো পায়ে জুতা, মোজা, মাথায় টুপি এবং গায়ে জামা ছিল না” থেকে বোঝা যায়, ঐ যুগে টুপিও ছিল লিবাসের অংশ এবং কোথাও যাওয়ার জন্য সেগুলো রীতিমত আবশ্যকীয় এর ন্যয় ছিল। তাই এখানে এগুলো না থাকায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর তা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
.
বিষয়টি ঠিক এরকম যেমন ইমাম বুখারী রহ. সহীহ বুখারীতে টুপি প্রমাণ করেছেন।
সহীহ বুখারীতে
অধ্যায়ঃ ৬৪/ “পোষাক-পরিচ্ছদ” (كتاب اللباس) ২৩৪২ নং পরিচ্ছেদে
“باب الْبَرَانِسِ وَقَالَ لِي مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، سَمِعْتُ أَبِي قَالَ، رَأَيْتُ عَلَى أَنَسٍ بُرْنُسًا أَصْفَرَ مِنْ خَزٍّ”
( “টুপি। মুসাদ্দাদ (র) আমাকে বলেছেন যে, মু‘তামার বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি যে, তিনি আনাস (রাঃ) এর [মাথার] উপর হলুদ রেশমী টুপি দেখেছেন” )
নামে শিরোনাম দাঁড় করেছেন আর দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন “হজ্জের” একটি হাদিস।
.
” আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! মুহরিম লোক কি কি পোশাক পরবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা [ইহরাম অবস্থায়] জামা, পাগড়ী, পা-জামা। টুপি ও মোজা পরবে না। তবে যে ব্যাক্তির জুতা নেই, সে কেবল মোজা পরতে পারবে কিন্তু উভয় মোজা টাখনুর নীচ থেকে কেটে ফেলবে। আর যা’ফরান ও ওয়ারস রং যাতে লেগেছে, এমন কাপড় পরবে না। “
(সহীহ বুখারী-হা/৫৩৮৭)
.
আল্লামা আবু বকর ইবনুল আরাবী এ হাদীস থেকে পাগড়ী প্রমাণ করেছেন। তিনি বলেন, এ হাদীস প্রমাণ করে যে, তৎকালে পাগড়ী পরিধানের রীতি ছিল। এ কারণে ইহরাম অবস্থায় তা পরিধান করা নিষেধ করেছেন।
.
একইভাবে আলোচিত হাদীস দ্বারাও টুপি ও তার প্রচলন প্রমাণে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।
.
৪.
حَدَّثَنَا عَبْدُ السَّلاَمِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْوَابِصِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، قَالَ قَدِمْتُ الرَّقَّةَ فَقَالَ لِي بَعْضُ أَصْحَابِي هَلْ لَكَ فِي رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قُلْتُ غَنِيمَةٌ فَدَفَعْنَا إِلَى وَابِصَةَ قُلْتُ لِصَاحِبِي نَبْدَأُ فَنَنْظُرُ إِلَى دَلِّهِ فَإِذَا عَلَيْهِ قَلَنْسُوَةٌ لاَطِئَةٌ ذَاتُ أُذُنَيْنِ وَبُرْنُسُ خَزٍّ أَغْبَرُ وَإِذَا هُوَ مُعْتَمِدٌ عَلَى عَصًا فِي صَلاَتِهِ فَقُلْنَا بَعْدَ أَنْ سَلَّمْنَا ‏.‏ فَقَالَ حَدَّثَتْنِي أُمُّ قَيْسٍ بِنْتُ مِحْصَنٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا أَسَنَّ وَحَمَلَ اللَّحْمَ اتَّخَذَ عَمُودًا فِي مُصَلاَّهُ يَعْتَمِدُ عَلَيْهِ
হেলাল ইবনে ইয়াসাফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যখন শাম [সিরিয়া] দেশের রাক্কা নামক শহরে যাই, তখন আমার কোন একজন সাথী আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন সাহাবীর সাথে সাক্ষাতের আগ্রহ আছে কি? আমি বলি, এটা-তো আমার জন্য গনীমত স্বরূপ। তখন তিনি আমাকে . ওয়াবিসা (রাঃ) এর খেদমতে নিয়ে যান। আমি আমার সঙ্গীকে বলি, আমরা প্রথমে বেশভূষার প্রতি নজর করব। আমরা তাঁকে মস্তকের সাথে মিলিত একটি টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাই, যার দুই দিক কানের মত উঁচু ছিল এবং রেশম ও পশম দ্বারা তৈরি ছিল। তিনি [বয়োবৃদ্ধির কারণে] লাঠিতে ভর দিয়ে নামায আদায় করছিলেন।
[হাদিসের লম্বা অংশ……………………………………]
(আবু দাউদ-হা/৯৪৭; হাদিসটি সহীহ)
.
৫.
উমর ইবনে খাত্তাব রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-
الشهداء ثلاثة : رجل مؤمن … ورفع رسول الله صلى الله عليه وسلم رأسه حتى وقعت قلنسوته أو قلنسوة عمر.
শহীদ হল তিন শ্রেণীর লোক : এমন মুমিন … এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা তুললেন। তখন তাঁর টুপি পড়ে গেল। অথবা বলেছেন উমরের টুপি পড়ে গেল।
(মুসনাদে আহমাদ-হা/১৪৬; জামে তিরমিযী-হা/১৬৪৪; ইত্যাদি)
হাদীসটির ক্ষেত্রে ইমাম তিরমিযী বলেছেন, ‘হাসানুন গারীবুন।’
.
হাদীসটির সনদ এই,
عن عبد الله بن لهيعة عن عطاء بن دينار أبي يزيد الخولاني عن فضالة بن عبيد عن عمر بن الخطاب رضي الله عنهم
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে লাহিয়া এর ক্ষেত্রে যদিও মুহাদ্দিসীনদের বিভিন্ন রকম বক্তব্য আছে, কিন্তু এ হাদীসটি তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক। আর এক্ষেত্রে ইমামগণ এক মত যে ইবনে লাহিয়া থেকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক কর্তৃক বর্ণনাকৃত হাদীসগুলো সঠিক।
উপরন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে লাহিয়ার একজন ‘মুতাবি’ও আছেন সায়ীদ ইবনে আবী আইয়ূব। যা ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতিম এর কথায় পাওয়া যায়।
قال الترمذي : سمعت محمدا يقول : قد روى سعيد بن أبي أيوب هذا الحديث عن عطاء بن دينار عن أشياخ من خولان، ولم يذكر فيه عن أبي زيد.
وقال أبو حاتم : وروى سعيد بن أبي أيوب عن عطاء بن دينار عن أشياخ من خولان عن فضالة عن عمر.
আর এ সনদের আরেকজন রাবি, আবু ইয়াযিদ আল খাওলানী। মুতাআখখিরীনদের মাঝে কেউ কেউ তাকে মাজহুল বলেছেন।
.
এক্ষেত্রে প্রথম কথা এই যে,
হাদীসটি শুধু তিনিই বর্ণনা করেননি; বরং খাওলান শহরের আরো অনেক মুহাদ্দিস তা বর্ণনা করেন, যা ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতেম এর উপরোক্ত কথায় পাওয়া যায়।
.
দ্বিতীয় কথা এই যে,
ইমাম বুখারী, ইমাম আবু হাতেম, ইমাম তিরমিযীসহ মুতাকাদ্দিমীন ইমামগণের কেউ তাকে মাজহুল বলেন নি; বরং সকলে তাঁর জীবনীতে তাঁর নাম উল্লেখ করে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। কেউ তাঁর সম্পর্কে ভালোও বলেননি মন্দও বলেননি। এটাকে হাদীস শাস্ত্রের পরিভাষায় বলা হয়
سكوت المتكلمين في الرجال
অর্থাৎ ইমামগণের নীরব থাকা। এই কারণে রাবী মাজহুল হওয়া আবশ্যক নয় বরং এটাকে এক প্রকার তা’দীল হিসেবে ধরা হয়। বিশেষত রাবী যদি তাবেয়ী স্তরের হন। আর এখানেও তা ঘটেছে। সম্ভবত এ নিশ্চুপ থাকাকেই পরবর্তীদের কেউ মাজহুল বলে দিয়েছেন, যা ঠিক নয়।
থাকল এ বিষয় যে, উপরোক্ত হাদীসে কি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর টুপি সম্পর্কে বলা হয়েছে না ওমর রা.এর টুপি সম্পর্কে? যদি ধরেও নেয়া হয় যে, ওমর রা. এর টুপি সম্পর্কে তাহলেও তো একজন খলীফায়ে রাশেদের টুপি পরা প্রমাণিত হচ্ছে। আর খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ তো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ্রই অংশ, বিশেষত যখন একাধিক হাদীসে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরও টুপি পরা প্রমাণিত হচ্ছে।
আপাতত এ চারটি হাদীস উল্লেখ করা হল। হাদীসের কিতাবসমূহে এ বিষয়ে আরো হাদীস আছে এবং টুপি নিয়ে আলাদা শিরোনামও আছে। আসহাবুস সিয়ার তথা সীরাত প্রণেতা ইমামগণও আল্লাহর নবীর পোষাকের অধ্যায়ে তাঁর টুপির জন্যও আলাদা পরিচ্ছেদ কায়েম করেন। যেমন করেছেন ইবনে হাইয়ান, ইবনুল কায়্যিম, ইবনে আসাকির, ইবনুল জাওযী, গাযালী, শায়খ ইউসুফ সালেহী, আল্লামা দিময়াতী, বালাযুরীসহ আরো অনেক ইমাম। সকলের বক্তব্য তুলে ধরলে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে তাই শুধু আল্লামা  ইবনুল কায়্যিম রহ. এর বক্তব্য তুলে ধরছি। তিনি তাঁর সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘‘যাদুল মাআদে’’লেখেন, তাঁর একটি পাগড়ি ছিল, যা তিনি আলী রা. কে পরিয়েছিলেন। তিনি পাগড়ি পরতেন এবং পাগড়ির নিচে টুপি পরতেন। তিনি কখনো পাগড়ি ছাড়া টুপি পরতেন। কখনো টুপি ছাড়াও পাগড়ি পরতেন।
(যাদুল মাআদ-১/১৩৫)
.
৬.
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمْرَانَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، وَهُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُسْرٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا كَبْشَةَ الأَنْمَارِيَّ، يَقُولُ كَانَتْ كِمَامُ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بُطْحًا
আবূ কাবাশা আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণের টুপি ছিল মাথাজোড়া বিস্তৃত।
(তিরমিজী-হা/১৭৮৯)
.
৭.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الْحَسَنِ الْعَسْقَلاَنِيُّ، عَنْ أَبِي جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ رُكَانَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رُكَانَةَ، صَارَعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَصَرَعَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رُكَانَةُ وَسَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ فَرْقُ مَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْمُشْرِكِينَ الْعَمَائِمُ عَلَى الْقَلاَنِسِ ‏”‏
মুহাম্মদ ইবন আলী ইবন রুকানা (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রুকানা একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কুস্তি লড়লে, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পরাস্ত করেন। রুকানা (রাঃ) আরো বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আমাদের ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্য এই যে, আমরা টুপির উপর পাগড়ী ব্যবহার করি এবং তারা তা করে না।
(আবু দাউদ-হা/৪০৩৪; তিরমিজী-হা/১৭৯১)
.
৮.
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ عَطَاءَ بْنَ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي يَزِيدَ الْخَوْلانِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ:سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” الشُّهَدَاءُ ثَلاثَةٌ: رَجُلٌ مُؤْمِنٌ جَيِّدُ الْإِيمَانِ لَقِيَ الْعَدُوَّ، فَصَدَقَ اللهَ حَتَّى قُتِلَ، فَذَلِكَ الَّذِي يَرْفَعُ إِلَيْهِ النَّاسُ أَعْنَاقَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ – وَرَفَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأْسَهُ حَتَّى وَقَعَتْ قَلَنْسُوَتُهُ أَوْ قَلَنْسُوَةُ عُمَرَ
ফুযালা বিন উবাইদ বলেন, আমি উমার (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেনঃ শহীদরা তিন ধরনের, একজন দৃঢ় ঈমানের অধিকারী মুমিন, যে শত্রুর মুখোমুখি হলো, আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে সত্য প্রমাণিত করলো এবং নিহত হলো। কিয়ামাতের দিন লোকেরা মাথা উঁচু করে তার নিকট সমবেত হবে এবং এ কথা বলার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মাথা এতটা উঁচু করলেন যে, তার টুপি পড়ে গেল, অথবা উমারের টুপি পড়ে গেল।
(মুসনাদে আহমাদ-হা/১৪৬, ১৫০; মিশকাত-হা/৩৮৫৮)
.
সাহাবায়ে কেরামের টুপিঃ
——————————
.
১.
হাসান বসরী রাহ. বলেন,
باب السُّجُودِ عَلَى الثَّوْبِ فِي شِدَّةِ الْحَرِّ – وَقَالَ الْحَسَنُ كَانَ الْقَوْمُ يَسْجُدُونَ عَلَى الْعِمَامَةِ وَالْقَلَنْسُوَةِ وَيَدَاهُ فِي كُمِّهِ
লোকেরা পাগড়ী ও টুপির উপর সিজদা করতো আর তাঁদের হাত থাকতো আস্তিনের ভিতর।
(সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ৮/ “সালাত” [كتاب الصلاة], পরিচ্ছেদ নং ২৬৪ “প্রচন্ড গরমের সময় কাপরের উপর সিজদা করা” )
উল্লেখ্য, হাসান বসরী রাহ. অনেক বড় মনীষী তাবেয়ী, যিনি অনেক সাহাবীকে দেখেছেন এবং তাদের সাহচর্য গ্রহণ করেছেন।
.
২.
সুলাইমান ইবনে আবি আবদিল্লাহ বলেন,
أدركت المهاجرين الأولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر، يضع أحدهم العمامة على رأسه ويضع القلنسوة فوقها، ثم يدير العمائم هكذا على كوره لا يخرجها من ذقنه
আমি প্রথম সারির মুহাজিরগণকে দেখেছি তাঁরা সুতির পাগড়ি পরিধান করতেন। কালো, সাদা, লাল, সবুজ, হলুদ ইত্যাদি রংয়ের। তারা পাগড়ির কাপড় মাথায় রেখে তার উপর টুপি রাখতেন। অতপর তার উপর পাগড়ি ঘুরিয়ে পরতেন।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১২/৫৪৫)
.
৩.
হেলাল ইবনে ইয়াসাফ বলেন,
قدمت الرقة فقال لي بعض أصحابي : هل لك في رجل من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم؟ فقلت : غنيمة. فدفعنا إلى وابصة، فقلت  لصاحبي : نبدأ فننظر إلى دله فإذا عليه قلنسوة لا طية ذات أذنين.
আমি রাক্কায় গিয়েছিলাম তখন আমার এক সাথী আমাকে বললেন, তুমি কি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললাম-এর একজন সাহাবীর নিকট যেতে ইচ্ছুক? আমি বললাম, ‘এ তো গনীমত।’ তারপর আমরা ওয়াবেছা রা.-এর নিকট গেলাম। আমি আমার সাথীকে বললাম, দাঁড়াও, প্রথমে আমরা তাঁর আচার-আখলাক দেখব। তাঁর মাথায় দুই কান বিশিষ্ট টুপি ছিল, যা মাথার সঙ্গে মিশে ছিল।
(সুনানে আবু দাউদ-হা/৯৪৯)
.
৪.
হিশাম বলেন,
رأيت على ابن الزبير قلنسوة
আমি ইবনে যুবায়ের রা.-এর মাথায় টুপি দেখেছি।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-হা/২৫৩৫৩)
.
৫.
আশআছ রাহ. তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন-
أن أبا موسى خرج من الخلاء وعليه قلنسوة،
আবু মুসা আশআরী রা. হাম্মাম থেকে বের হলেন। তার মাথায় টুপি ছিল।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১০/৫১০)
.
৬.
আববাদ ইবনে আবী সুলাইমান বলেন,
رأيت على أنس بن مالك قلنسوة بيضاء
আমি আনাস ইবনে মালেক রা.-এর  মাথায় একটি সাদা টুপি দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৫/১২১)
.
৭.
আবু হাইয়ান বলেন,
كانت قلنسوة علي لطيفة
হযরত আলী রা.-এর টুপি ছিল পাতলা।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৩/২৩)
.
ইবনে সাদ আলী রা.-এর জীবনীতে তাঁর পোশাকের আলোচনায় তার টুপি সম্পর্কে আলাদা শিরোনাম এনেছেন।
.
৮.
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. মাথা মাসাহর সময় টুপি উঠিয়ে নিতেন এবং অগ্রভাগ মাসাহ করতেন।
(সুনানে দারা কুতনী-হা/৫৫; সুনানে কুবরা বায়হাকী-হা/২৮৮)
.
৯.
ফাযারী রাহ. বলেন,
رأيت على علي قلنسوة بيضاء مصرية
আমি আলী রা.-এর মাথায় সাদা মিসরী টুপি দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৩/২৩)
.
১০.
সায়ীদ ইবনে আবদুল্লাহ বলেন,
رأيت أنس بن مالك أتى الخلاء، ثم خرج وعليه قلنسوة بيضاء مزرورة
আমি আনাস ইবনে মালেক রা. কে দেখেছি, তিনি হাম্মাম থেকে বের হলেন। তার মাথায় বোতাম বিশিষ্ট সাদা টুপি ছিল।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক-১/১৯০)
.
১১.
আবদুল হামীদ বিন জাফর তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. ইয়ারমূক যুদ্ধের দিন তার একটি টুপি হারিয়ে ফেললেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তা পাওয়া গেল। তা ছিল একটি পুরানো টুপি। খালেদ রা. বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরার পর মাথা মুন্ডন করলেন। সাহাবীগণ তাঁর চুল নেওয়ার জন্য ছুটতে লাগলেন। আমি গিয়ে তাঁর মাথার অগ্রভাগের চুলগুলি পেলাম। তা এ টুপিতে লাগিয়ে রেখেছি। যে যুদ্ধেই এ টুপি আমার সাথে ছিল তাতেই আল্লাহর সাহায্য পেয়েছি।
(দালাইলুন নুবুওয়াহ-৬/২৪৯)
.
১২.
باب الْبَرَانِسِ وَقَالَ لِي مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، سَمِعْتُ أَبِي قَالَ، رَأَيْتُ عَلَى أَنَسٍ بُرْنُسًا أَصْفَرَ مِنْ خَزٍّ
মুসাদ্দাদ (র) আমাকে বলেছেন যে, মু‘তামার বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি যে, তিনি আনাস (রাঃ) এর [মাথার] উপর হলুদ রেশমী টুপি দেখেছেন।
(সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ৬৪/ “পোষাক-পরিচ্ছদ” [كتاب اللباس], পরিচ্ছেদ নং ২৩৪২)
.
সাহাবায়ে কেরামের টুপি ব্যবহারের প্রমাণ স্বরূপ আপাতত এ কয়টি আছার উল্লেখ করা হল। প্রথম দুই বর্ণনা ব্যাপকভাবে সাহাবায়ে কেরামের টুপি ব্যবহারের প্রমাণ বহন করছে। আর পরবর্তী বর্ণনাগুলোতে অনেক সাহাবীর টুপি ব্যবহার উল্লেখিত হয়েছে। টুপির শুধু ব্যবহার নয়, ব্যাপক প্রচলন এ বর্ণনাগুলো দ্বারা প্রমাণিত হয়। এ প্রসঙ্গে আরেকটি বর্ণনা উল্লেখ করে তাবেয়ী-যুগের বর্ণনায় যাব, যার পর অতি সংশয়গ্রস্ত লোকেরও সংশয় থাকা উচিত নয়।
.
দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর রা.-এর যুগে যখন ‘নাজরান’ শহরের খৃস্টানরা সন্ধিতে রাজি হল এবং কর দিতে সম্মত হল তখন তারা হযরত উমর রা.-এর সাথে একটি চুক্তিনামা করেছিল।
.
সেই চুক্তির অংশবিশেষ এই–
بسم الله الرحمن الرحيم، هذا كتاب لعبد الله عمر أمير المؤمنين من نصارى مدينة كذا كذا، لما قدمتم سألناكم الأمان لأنفسنا وذرارينا وأهل ملتنا وشرطنا لكم على أنفسنا أن لا نحدث في مدينتنا ولا فيما حولها ديرا ولا كنيسة … ولا نتشبه بهم (المسلمين) في شيء من لباسهم من قلنسوة ولا عمامة.
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম”
এ অমুক শহরের নাসারাদের পক্ষ থেকে আল্লাহর বান্দা আমীরুল মুমিনীন উমরের সাথে লিখিত চুক্তি। যখন আপনারা (মুসলমানগণ) আমাদের শহরে এলেন তখন আমরা আপনাদের নিকট আমাদের, আমাদের সন্তান-সন্ততি ও স্বধর্মের লোকদের জন্য নিরাপত্তা প্রার্থনা করেছি। আমরা নিজেদের উপর এ শর্ত গ্রহণ করছি যে, এ শহরে এবং এর আশপাশে আমরা কোনো গির্জা তৈরি করব না … এবং আমরা মুসলমানদের পোশাক-টুপি, পাগড়ি ইত্যাদিতে সাদৃশ্য গ্রহণ করব না …।
(সুনানে কুবরা, বায়হাকী-হা/১৯১৮৬)
.
চুক্তিনামার এ অংশে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়ঃ
.
এক. টুপিকে মুসলমানদের পোশাক বলা হয়েছে। যেমন পাগড়িকে বলা হয়েছে। একটি বস্ত্তর কতটুকু প্রচলন হলে তা একটি দল বা গোষ্ঠীর সাথে সম্বন্ধ করা হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
.
দুই. টুপিকে একটি রাষ্ট্রীয় চুক্তিনামায় উল্লেখ করা দ্বারা সহজেই অনুমান করা যায়, সে যুগে মুসলমানদের নিকট টুপির গুরুত্ব কেমন ছিল এবং তার প্রচলন কত ব্যাপক ছিল।
.
তিন. এ চুক্তিনামা যখন লেখা হয় তখন বহু সাহাবী জীবিত ছিলেন। ইতিহাসে এমন একটি বর্ণনাও নেই যে, তাদের কেউ এ বিষয়ে আপত্তি করেছেন; বরং পরবর্তী খলীফাগণও এ চুক্তি বলবৎ রেখেছেন। এমনকি হযরত আলী রা.-এর যুগে এ নাসারারা এ চুক্তির কোনো একটি বিষয়ে কথা বলতে এসেছিল। তখন তিনি তাদেরকে সাফ বলে দেন-
إن عمر كان رشيد الأمر، لن أغير شيئا صنعه عمر
নিশ্চয়ই উমর সঠিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি যা করেছেন আমি তার কিছুই কোনোরূপ পরিবর্তন করতে পারব না।
.
হযরত উমর রা.-এর এ চুক্তিনামাটিকে যিম্মীদের ক্ষেত্রে শরীয়তের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উসূল বা মানদন্ড হিসেবে ধরা হয়। পরবর্তী যুগের আলিম-মনীষী ও মুসলিম খলীফাগণ যিম্মিদের সাথে কোনো চুক্তিনামা করলে এর শর্তগুলোকে মানদন্ড হিসেবে সামনে রাখতেন।
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. বলেন, এ শর্তগুলো এতই প্রসিদ্ধ যে, এগুলোর সনদ উল্লেখের প্রয়োজন নেই। কেননা ইমামগণ তা সাদরে গ্রহণ করেছেন এবং তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন ও এগুলো দ্বারা প্রমাণ গ্রহণ করেছেন। আর হযরত উমর রা.-এর এসব শর্ত ছিল তাঁদের কিতাবে ও মুখে মুখে। পরবর্তী খলীফাগণ তা বলবৎ রেখেছেন এবং এর অনুসরণ করেছেন।
(আহকামু আহলিয যিম্মাহ-পৃষ্ঠা/৪৫৪)
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. এ কিতাবটি শুধু হযরত উমর রা.-এর এ চুক্তিনামার শরহ বা ব্যাখ্যাতেই প্রণয়ন করেছেন।
.
তাবেয়ীগণের টুপিঃ
———————–
.
১.
আবদুল্লাহ ইবনে আবি হিন্দ রাহ. বলেন,
رأيت على علي بن الحسين قلنسوة بيضاء لاطئة
আমি আলী ইবনে হুসাইন রাহ.-এর মাথায় একটি সাদা টুপি দেখেছি, যা মাথার সাথে মিলিত ছিল।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৩/২৪৩ “শামেলা” )
.
২.
আবুল গুছ্ন বলেন-
رأيت نافع بن جبير يلبس قلنسوة سماطا وعمامة بيضاء
আমি নাফে ইবনে জুবাইরকে পুঁতিবিশিষ্ট টুপি ও সাদা পাগড়ি পরতে দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৫/২০৬ “শামেলা”)
.
৩.
খালেদ ইবনে বকর বলেন,
رأيت على سالم قلنسوة بيضاء
আমি সালেম রাহ.-এর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি। [সালেম হলেন সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর পুত্র]
(তবাকাতে ইবনে সাআদ-৫/১৯৭; সিয়ারু আলামিন নুবালা-৪/৪৬৪ “শামেলা”)
.
৪.
আইয়ূব বলেন,
رأيت على القاسم بن محمد قلنسوة من خز
আমি কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ রাহ.-এর মাথায় পশমের টুপি দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৫/১৮৯; হিলইয়াতুল আওলিয়া-২/১৮৫ “শামেলা”)
.
৫.
মুহাম্মাদ ইবনে হিলাল বলেন,
رأيت سعيد بن المسيب يعتم وعليه قلنسوة لطيفة بعمامة بيضاء
আমি সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়িবকে একটি পাতলা টুপির উপর পাগড়ি বাঁধতে দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৫/১৩৮; সিয়ারু আলামিন নুবালা-৪/২৪২ “শামেলা”)
.
৬.
কাসিম ইবনে মালিক এক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন-
رأيت على الضحاك قلنسوة ثعالب
অর্থ : আমি যাহহাক রাহ.-এর মাথায় একটি চামড়ার টুপি দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৬/৩০১ “শামেলা”)
.
৭.
যুহাইর বলেন,
رأيت أبا إسحاق السبيعي وهو يصلي بنا، يأخذ قلنسوته من الأرض فيلبسها أو يأخذها عن رأسه فيضعها.
আমি আবু ইসহাক আসসাবীয়ীকে দেখেছি তিনি আমাদের নিয়ে নামায পড়েছেন। তিনি টুপি খুলে মাটিতে রাখছেন কিংবা তা উঠিয়ে মাথায় পরছেন।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৬/৩১৪ “শামেলা”)
.
৮.
ইয়াযিদ ইবনে আবী যিয়াদ রাহ. বলেন,
رأيت إبراهيم النخعي يلبس قلنسوة ثعالب
আমি ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর মাথায় চামড়ার টুপি দেখেছি।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৬/২৮০ “শামেলা)
.
৯.
আবুল হাইসাম আলকাসসাব বলেন, আমি ইবরাহীম নাখায়ীর মাথায় তায়লাসার টুপি দেখেছি, যার অগ্রভাগে চামড়া ছিল।
(প্রাগুক্ত)
.
১০.
বাক্কার ইবনে মুহাম্মাদ বলেন, আমি ইবনে আউস-এর মাথায় একটি টুপি দেখেছি, যা এক বিঘত উঁচু ছিল।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৭/২৬৭ “শামেলা”)
.
১১.
ফযল ইবনে দুকাইন বলেন, আমি দাউদ আততায়ীকে দেখেছি। তাঁর টুপি আলিমগণের টুপির মতো ছিল না। তিনি কালো লম্বা টুপি পরতেন, যা ব্যবসায়ীরা পরে থাকে।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৬/৩৬৭ “শামেলা”)
.
১২.
ইমাম মালেক বলেন, আমি রবীয়া ইবনে আবদুর রহমান আররায়ীর মাথায় একটি টুপি দেখেছি, যার বাইরে ও ভেতরে রেশমজাতীয় কাপড় ছিল।
(তবাকাতে ইবনে সাদ [আলকিসমুল মুতাম্মিম]-১/৩২১ “শামেলা”)
.
১৩.
শুআইব ইবনে হাবহাব বলেন, প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আবুল আলিয়ার একটি টুপি ছিল, যার পাটের ভিতর চামড়া ছিল।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৭/১১৬ “শামেলা”)
.
১৪.
আফফান ইবনে মুসলিম বলেন, আবু আওয়ানা টুপি পরতেন।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৭/২৮৭ “শামেলা”)
.
১৫.
আফফান ইবনে মুসলিম বলেন, হাম্মাদ ইবনে যায়েদ একটি সাদা পাতলা লম্বা টুপি পরতেন।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৭/২৮৬ “শামেলা”)
.
১৬.
হযরত সায়ীদ ইবনে জুবাইর রাহ.-এর শাহাদতের ঘটনায় আছে, যখন হাজ্জাজ জল্লাদকে বলল, তার গর্দান উড়িয়ে দাও তখন সে তা করল (নাউযুবিল্লাহ)। সায়ীদ ইবনে জুবাইর এর শীর একদিকে ছিটকে পড়ল। তখন তার মাথার সাথে একটি সাদা টুপি মিলিত ছিল।
(তবাকাতে ইবনে সাদ-৬/২৬৫ “শামেলা”)
.
১৭.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الزُّهْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، قَالَ رَأَيْتُ شَرِيكًا صَلَّى بِنَا فِي جَنَازَةٍ الْعَصْرَ فَوَضَعَ قَلَنْسُوَتَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ – يَعْنِي – فِي فَرِيضَةٍ حَضَرَتْ
সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শারীক (রহঃ)-কে দেখেছি তিনি এক জানাযায় হাযির হয়ে আমাদের সাথে আসরের নামায পড়েন তিনি [সুতরা স্বরূপ] নিজের টুপি সামনে রাখেন।
(সুনানে আবু দাউদ-হা/৬৯১)
.
উল্লেখ্য, কারো কারো ধারণা, ঐ যুগে টুপি এত লম্বা ছিল যে, তা দিয়ে সুতরাও দেওয়া যেত। আসলে তা নয়। সুতরার ক্ষেত্রে এ কথাও আছে যে, সুতরা দেওয়ার মতো কোনো কিছু পাওয়া না গেলে কমপক্ষে একটি রেখা হলেও যেন টেনে দেওয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতেই তারা রেখা না টেনে কমপক্ষে টুপিটা হলেও রাখতেন। যেন কিছু একটা রাখা হয়। এটা টুপি লম্বা হওয়া বা ছোট হওয়া আবশ্যক করে না।
.
মুজতাহিদ ইমামগণের টুপিঃ
———————————-
.
১.
ইমাম আবু হানীফা উঁচু টুপি পরতেন।
(আলইনতিকা-পৃষ্ঠা/৩২৬; উকুদুল জুমান-পৃষ্ঠা/৩০০-৩০১)
.
২.
كان مالك بن أنس إذا أراد أن يخرج يحدث توضأ وضوءه للصلاة … ولبس قلنسوته ومشط لحيته …
ইমাম মালেক রাহ. যখন হাদীস বর্ণনার জন্য বের হতেন তখন অযু করতেন, টুপি পরতেন ও দাঁড়ি আঁচড়ে নিতেন।
(আলজামে, খতীব বাগদাদী-১/৩৮৮, বর্ণনা-৯০৩)
.
৩.
ফযল ইবনে যিয়াদ বলেন-
رأيت على أبي عبد الله (الإمام أحمد) … عليه عمامة فوق القلنسوة … وربما لبس القلنسوة بغير عمامة.
আমি ইমাম আহমদকে টুপির উপর পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। … তবে কখনো কখনো তিনি পাগড়ি ছাড়া টুপি পরেছেন।
(সিয়ারু আলামিন নুবালা-১১/২২০ “শামেলা”)
.
টুপির ক্ষেত্রে আমরা উপরুক্ত আলোচনায় নবী-যুগ, সাহাবা-যুগ ও তাবেয়ী-যুগের ইতিহাস পেলাম। আল্লাহর রহমতে আমরা সংশয়হীনভাবে বুঝতে পারলাম যে, এসব যুগে টুপি ছিল এবং মুসলমানদের পোশাক হিসেবে অন্যান্য পোশাকের মতো টুপিরও ব্যাপক প্রচলন ছিল। বলাবাহুল্য, প্রত্যেক প্রজন্ম তার পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকেই দ্বীন শেখে।
.
.
পাগড়ী পরিধানের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَعْقُوبَ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْغَسِيلِ، سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ يَقُولُ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَيْهِ مِلْحَفَةٌ، مُتَعَطِّفًا بِهَا عَلَى مَنْكِبَيْهِ، وَعَلَيْهِ عِصَابَةٌ دَسْمَاءُ حَتَّى جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ، فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ أَمَّا بَعْدُ، أَيُّهَا النَّاسُ، فَإِنَّ النَّاسَ يَكْثُرُونَ وَتَقِلُّ الأَنْصَارُ، حَتَّى يَكُونُوا كَالْمِلْحِ فِي الطَّعَامِ، فَمَنْ وَلِيَ مِنْكُمْ أَمْرًا يَضُرُّ فِيهِ أَحَدًا أَوْ يَنْفَعُهُ، فَلْيَقْبَلْ مِنْ مُحْسِنِهِمْ، وَيَتَجَاوَزْ عَنْ مُسِيئِهِمْ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [অন্তিম পীড়ায় আক্রান্তকালে] একখানা চাদর গায়ে জড়িয়ে, চাদরের দু-প্রান্ত দু’কাঁধে পেঁচিয়ে এবং মাথায় একটি কাল রঙের পাগড়ী বেঁধে [ঘর থেকে] বের হলেন এবং মিম্বরে উঠে বসলেন। হামদ ও সানার পর বললেন, হে লোক সকল, জনসংখ্যা উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকবে আর আনসারগণের সংখ্যা ক্রমশঃ হ্রাস পেয়ে যাবে! এমনকি তাঁরা খাদ্য-দ্রব্যে লবনের মত [সামান্য পরিমানে] পরিনত হবে। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ এমন ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ করে সে ইচ্ছা করলে কারো উপকার বা অপকার করতে পারে, তখন সে যেন নেক্কার আনসারদের নেক্ কার্যাবলী কবুল করে এবং তাঁদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দেয়।
(সহীহ বুখারী-হা/৩৫২৮)
.
২.
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، جَمِيعًا عَنْ يَحْيَى الْقَطَّانِ، قَالَ ابْنُ حَاتِمٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنِ التَّيْمِيِّ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنِ ابْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ بَكْرٌ وَقَدْ سَمِعْتُ مِنِ ابْنِ الْمُغِيرَةِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَوَضَّأَ فَمَسَحَ بِنَاصِيَتِهِ وَعَلَى الْعِمَامَةِ وَعَلَى الْخُفَّيْنِ
মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী বাকর বলেন, আমি মুগীরা (রাঃ) এর পূত্র থেকে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা ওজু করলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ এবং পাগড়ী ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।
(সহীহ মুসলিম-হা/৫২৯, ৫২৬, ৫২৭, ৫৩০; তিরমিজী-হা/১০০, ১০১; আবু দাউদ-হা/১৪৭, ১৫৩; সূনানে নাসাঈ-হা/৮২, ১০৪, ১০৬, ১০৭, ১০৮, ১০৯; ইবনে মাজাহ-হা/৫৬১, ৫৬২, ৫৬৩, ৫৬৪; মিশকাত-হা/৩৯৯)
.
৩.
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ، قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمَّارٍ الدُّهْنِيُّ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ مَكَّةَ – وَقَالَ قُتَيْبَةُ دَخَلَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ – وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ بِغَيْرِ إِحْرَامٍ ‏.‏ وَفِي رِوَايَةِ قُتَيْبَةَ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ ‏
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় প্রবেশ করলেন। কুতায়বা (রহঃ) বলেনঃ তিনি মক্কা বিজয়ের দিন ইহরামবিহীন অবস্থায় কালো পাগড়ী পরিধান করে মক্কায় প্রবেশ করেন। কুতায়বা (রহঃ) এর রিওয়ায়াতে উল্লেখ রয়েছে যে, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালো পাগড়ী পরিধান করে মক্কা বিজয়ের দিন মক্কায় প্রবেশ করেন।
(সহীহ মুসলিম-হা/৩১৭৯, ৩১৮০; তিরমিজী-হা/১৭৪১; আবু দাউদ-হা/৪০৩২; ইবনে মাজাহ-হা/২৮২২, ৩৫৮৫, ৩৫৮৬; মিশকাত-হা/২৭১৯; রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/৭৮৮)
.
৪.
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالاَ أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُسَاوِرٍ، الْوَرَّاقِ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ النَّاسَ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ
জাফর ইবনু আমর ইবনু হুরায়স (রাঃ) থেকে তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথায় কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় লোকদের উদ্দেশ্যে [মক্কা বিজয়ের দিন] ভাষণ দেন।
(সহীহ মুসলিম-হা/৩১৮১)
.
৫.
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَالْحَسَنُ الْحُلْوَانِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ مُسَاوِرٍ الْوَرَّاقِ، قَالَ حَدَّثَنِي وَفِي، رِوَايَةِ الْحُلْوَانِيِّ قَالَ سَمِعْتُ جَعْفَرَ بْنَ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمِنْبَرِ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ قَدْ أَرْخَى طَرَفَيْهَا بَيْنَ كَتِفَيْهِ
জাফর ইবনু আমর ইবনু হুরায়স (রাঃ) এর পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় মিম্বরের উপর [উপবিষ্ট] দেখতে পাচ্ছি এবং তিনি পাগড়ীর দুই প্রান্ত কাঁধের মাঝ বরাবর ঝুলিয়ে রেখেছেন।
(সহীহ মুসলিম-হা/৩১৮২;আবু দাউদ-হা/৪০৩৩; তিরমিজী-হা/১৭৪২; রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/৭৮৯মিশকাত-হা/১৪১০)
.
৬.
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي الْوَلِيدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَعْرَابِ لَقِيَهُ بِطَرِيقِ مَكَّةَ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ وَحَمَلَهُ عَلَى حِمَارٍ كَانَ يَرْكَبُهُ وَأَعْطَاهُ عِمَامَةً كَانَتْ عَلَى رَأْسِهِ فَقَالَ ابْنُ دِينَارٍ فَقُلْنَا لَهُ أَصْلَحَكَ اللَّهُ إِنَّهُمُ الأَعْرَابُ وَإِنَّهُمْ يَرْضَوْنَ بِالْيَسِيرِ ‏.‏ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّ أَبَا هَذَا كَانَ وُدًّا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ أَبَرَّ الْبِرِّ صِلَةُ الْوَلَدِ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মক্কা মুয়াযযামার এক রাস্তায় আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) এর সঙ্গে এক বেদুঈনের সাক্ষাৎ হল। আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁকে সালাম দিলেন এবং তিনি যে গাধার পিঠে সাওয়ার হতেন সে গাধা তাকে সাওয়ারীর জন্য দিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর মাথার পাগড়ী তাকে দান করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু দ্বীনার (রহঃ) তাকে বললেন যে, আমরা তাকে বললাম, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন। বেদুঈনরা তো অল্পতেই তুষ্ট হয়ে যায়। [এত দেওয়ার প্রয়োজন কী ছিল?] তখন আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, এই ব্যক্তির পিতা উমর ইবনুল খাজব (রাঃ) এর বন্ধু ছিলেন। আর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কোন ব্যক্তির সর্বোত্তম নেকীর কাজ হচ্ছে তার পিতার বন্ধুজনের সঙ্গে সদাচারনের সম্পর্ক রক্ষা করা।
(সহীহ মুসলিম-হা/৬২৮২, ৬২৮৪; রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/৩৪৬)
.
৭.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، هُوَ الْقُرَشِيُّ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ، قَالَ سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ الْمَسْحِ، عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ السُّنَّةُ يَا ابْنَ أَخِي ‏.‏ قَالَ وَسَأَلْتُهُ عَنِ الْمَسْحِ، عَلَى الْعِمَامَةِ فَقَالَ أَمِسَّ الشَّعَرَ الْمَاءَ
আবূ উবায়দা ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আম্মার ইবনু ইয়াসির (রহঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ উবায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন চামড়ার মোযায় মাসেহ করা সম্পর্কে আমি জাবির ইবনু আবদিল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বললেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র, এটি সুন্নাত। তাঁকে পাগড়ীর উপর মাসেহ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ভিজা হাতে মাথার চুল স্পর্শ করবে।
(তিরমিজী-হা/১০২)
.
৮.
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ ثَوْرٍ، عَنْ رَاشِدِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً فَأَصَابَهُمُ الْبَرْدُ فَلَمَّا قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَهُمْ أَنْ يَمْسَحُوا عَلَى الْعَصَائِبِ وَالتَّسَاخِينِ
ছাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শত্রুদের মোকাবেলার জন্য একদল সৈন্য পাঠান। তারা ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। অতঃপর তারা রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট ফিরে এলে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে পাগড়ী ও মোজার উপর মাসেহ্ করার অনুমতি প্রদান করেন।
(আবু দাউদ-হা/১৪৬)
.
৯.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، – يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ – عَنْ زَيْدٍ، – يَعْنِي ابْنَ أَسْلَمَ – أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يَصْبُغُ لِحْيَتَهُ بِالصُّفْرَةِ حَتَّى تَمْتَلِئَ ثِيَابُهُ مِنَ الصُّفْرَةِ فَقِيلَ لَهُ لِمَ تَصْبُغُ بِالصُّفْرَةِ فَقَالَ إِنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْبُغُ بِهَا وَلَمْ يَكُنْ شَىْءٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْهَا وَقَدْ كَانَ يَصْبُغُ بِهَا ثِيَابَهُ كُلَّهَا حَتَّى عِمَامَتَهُ
যায়দ ইবন আসলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবন উমার (রাঃ) হলুদ রং দিয়ে তাঁর দাড়ি রঞ্জিত করতেন, যার ফলে তাঁর কাপড়-চোপড় হলুদ বর্ণ ধারণ করতো। তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ আপনি কেন এভাবে রঞ্জিত করেন? তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ দিয়ে রঙীন করতে দেখেছি। আর এ রং তাঁর কাছে খুবই প্রিয় ছিল এবং তিনি এ রং দিয়ে নিজের সমস্ত কাপড়-চোপড়, এমনকি পাগড়ী ও রঞ্জিত করতেন।
(আবু দাউদ-হা/৪০২০)
.
১০.
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُسَاوِرٍ الْوَرَّاقِ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَخْطُبُ عَلَى الْمِنْبَرِ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ
আমর ইবনু হুরাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় মিম্বারে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে দেখেছি।
(ইবনে মাজাহ-হা/১১০৪, ৩৫৮৪)
.
১১.
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ مُسَاوِرٍ، حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ قَدْ أَرْخَى طَرَفَيْهَا بَيْنَ كَتِفَيْهِ
আমর ইবনে হুরাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যেন এখনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর মাথায় কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি এবং তিনি তাঁর পাগড়ীর উভয় প্রান্ত তাঁর দু’ কাঁধের উপর ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/২৮২১, ৩৫৮৭)
.
১২.
عَن أَبي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَجَدَّ ثَوباً سَمَّاهُ بِاسْمِهِ – عِمَامَةً، أَوْ قَميصاً، أَوْ رِدَاءً- يَقُولُ: اَللهم لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيهِ، أَسْأَلكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ، وَأَعوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ
আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন কাপড় পরতেন, তখন পাগড়ী, জামা কিংবা চাদর তার নাম নিয়ে এই দো‘আ পড়তেন,
“আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু আন্তা কাসাউতানীহ, আসআলুকা মিন খাইরিহী অখাইরি মা সুনি‘আ লাহ, অ‘আঊযু বিকা মিন শার্রিহি অশার্রি মা সুনি‘আ লাহ।”
অর্থ- হে আল্লাহ তোমারই নিমিত্তে সমস্ত প্রশংসা, তুমি আমাকে এই [নতুন কাপড়] পরালে, আমি তোমার নিকট এর কল্যাণ এবং এ যার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর এর অকল্যাণ এবং যার জন্য এ প্রস্তুত করা হয়েছে তার অকল্যাণ থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।
(রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/৮১৭)
.
১৩.
আবু উবাইদ রাহ. বলেছেন, আমি আতা ইবনে ইয়াযিদকে পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় নামায পড়তে দেখেছি।
(মুসনাদে আহমদ-হা/১১৭৮০)
.
১৪.
সুলাইমান ইবনে আবি আবদিল্লাহ রাহ. বলেন, আমি মুহাজির সাহাবীগণকে কালো, সাদা, হলুদ, সবুজ বিভিন্ন রঙের পাগড়ী পরতে দেখেছি।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-হা/২৫৪৮৯)
.
.
চামড়ার মোজা ব্যবহারের দলীলঃ
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
১.
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَعَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَجُلاً سَأَلَهُ مَا يَلْبَسُ الْمُحْرِمُ فَقَالَ ‏ “‏ لاَ يَلْبَسِ الْقَمِيصَ وَلاَ الْعِمَامَةَ وَلاَ السَّرَاوِيلَ وَلاَ الْبُرْنُسَ وَلاَ ثَوْبًا مَسَّهُ الْوَرْسُ أَوِ الزَّعْفَرَانُ، فَإِنْ لَمْ يَجِدِ النَّعْلَيْنِ فَلْيَلْبَسِ الْخُفَّيْنِ وَلْيَقْطَعْهُمَا حَتَّى يَكُونَا تَحْتَ الْكَعْبَيْنِ”‏‏
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, ‘মুহরিম কী কাপড় পরবে?’ তিনি বলেনঃ ‘জামা পরবে না, পাগড়ী পরবে না, পাজামা পরবে না, টুপি পরবে না এবং কুসুম বা যা‘ফরান রঙে রঞ্জিত কোন কাপড় পরবে না। জুতা না থাকলে চামড়ার মোজা পরতে পারে, তবে এমনভাবে কেটে ফেলতে হবে যাতে মোজা দু’টি পায়ের গিরার নিচে থাকে।
(সহীহ বুখারী-হা/১৩৬; তিরমিজী-হা/৮৩৫, ৮৩৬)
.
২.
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، قَالَ أَتَيْتُ صَفْوَانَ بْنَ عَسَّالٍ الْمُرَادِيَّ أَسْأَلُهُ عَنِ الْمَسْحِ، عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ مَا جَاءَ بِكَ يَا زِرُّ فَقُلْتُ ابْتِغَاءَ الْعِلْمِ فَقَالَ إِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَضَعُ أَجْنِحَتَهَا لِطَالِبِ الْعِلْمِ رِضًا بِمَا يَطْلُبُ ‏.‏ قُلْتُ إِنَّهُ حَكَّ فِي صَدْرِي الْمَسْحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ بَعْدَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَكُنْتَ امْرَأً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُ أَسْأَلُكَ هَلْ سَمِعْتَهُ يَذْكُرُ فِي ذَلِكَ شَيْئًا قَالَ نَعَمْ كَانَ يَأْمُرُنَا إِذَا كُنَّا سَفَرًا أَوْ مُسَافِرِيِنَ أَنْ لاَ نَنْزِعَ خِفَافَنَا ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيَهُنَّ إِلاَّ مِنْ جَنَابَةٍ لَكِنْ مِنْ غَائِطٍ وَبَوْلٍ وَنَوْمٍ ‏.‏ فَقُلْتُ هَلْ سَمِعْتَهُ يَذْكُرُ فِي الْهَوَى شَيْئًا قَالَ نَعَمْ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَبَيْنَا نَحْنُ عِنْدَهُ إِذْ نَادَاهُ أَعْرَابِيٌّ بِصَوْتٍ لَهُ جَهْوَرِيٍّ يَا مُحَمَّدُ ‏.‏ فَأَجَابَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى نَحْوٍ مِنْ صَوْتِهِ هَاؤُمُ وَقُلْنَا لَهُ وَيْحَكَ اغْضُضْ مِنْ صَوْتِكَ فَإِنَّكَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ نُهِيتَ عَنْ هَذَا ‏.‏ فَقَالَ وَاللَّهِ لاَ أَغْضُضُ ‏.‏ قَالَ الأَعْرَابِيُّ الْمَرْءُ يُحِبُّ الْقَوْمَ وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ ‏.‏ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏ فَمَازَالَ يُحَدِّثُنَا حَتَّى ذَكَرَ بَابًا مِنْ قِبَلِ الْمَغْرِبِ مَسِيرَةُ عَرْضِهِ أَوْ يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي عَرْضِهِ أَرْبَعِينَ أَوْ سَبْعِينَ عَامًا قَالَ سُفْيَانُ قِبَلَ الشَّامِ خَلَقَهُ اللَّهُ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ مَفْتُوحًا يَعْنِي لِلتَّوْبَةِ لاَ يُغْلَقُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْهُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
যির ইবন হুবাইশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি সাফওয়ান ইবন আসসাল মুরাদী (রাঃ) এর কাছে চামরার মোজার উপর মাসেহ করার বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য এলাম। তিনি বললেনঃ হে যির! কি উদ্দেশ্যে তোমার আগমন? আমি বললামঃ ইলমের অন্বেষণে। তিনি বললেনঃ তালেবুল ইলমের জন্য ফিরিশতারা তাদের পাখনা বিছিয়ে দেন তার ইলম সন্ধানের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশে। আমি বললামঃ প্রসাব-পায়খানার পর [উযূর ক্ষেত্রে] চামড়ার মোজায় মাসেহ করার বিষয়টি আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে। আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের একজন। তাই আপনার কাছে জিজ্ঞেস করতে এলাম যে, এই বিষয়ে আপনি তাকে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা যখন মুসাফির থাকি তখন যেন গোসল ফরযজনিত কারন ব্যতীত [উযূ করার] তিন দিন তিন রাত আমাদের চামড়ার মোজা না খুলি, প্রস্রাব- পায়খানা ও নিদ্রা ইত্যাদি কারণের বেলায়ও নয়।
[ হাদিসের লম্বা অংশ………………………………….]
(তিরমিজী-হা/৩৫৩৫, ৩৫৩৬)
.
৩.
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ دَلْهَمِ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ حُجَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّجَاشِيَّ، أَهْدَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خُفَّيْنِ أَسْوَدَيْنِ سَاذَجَيْنِ فَلَبِسَهُمَا ثُمَّ تَوَضَّأَ وَمَسَحَ عَلَيْهِمَا ‏.‏ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ دَلْهَمٍ وَقَدْ رَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ عَنْ دَلْهَمٍ
ইবন বুরায়দা তার পিতা বুরায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নাজাশী [আবিসিনীয় সম্রাট] নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পশমহীন দু’টো কাল চামড়ার মোজা হাদিয়া দিয়েছিলেন। তিনি এ দু’টো পরেছেন পরে [প্রয়োজনে] উযূ করেছেন এবং তার উপর মাসাহ করেছেন।
(তিরমিজী-হা/১৭৭৫, ২৮২০; ইবনে মাজাহ-হা/৫৪৯, ৫৪৪, ৫৪৫)
.
৪.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الْجَدَلِيِّ، عَنْ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ ‏ “‏ لِلْمُسَافِرِ ثَلاَثَةٌ وَلِلْمُقِيمِ يَوْمٌ ‏”‏ ‏.‏ وَذُكِرَ عَنْ يَحْيَى بْنِ مَعِينٍ أَنَّهُ صَحَّحَ حَدِيثَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ فِي الْمَسْحِ ‏.‏ وَأَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْجَدَلِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ بْنُ عَبْدٍ وَيُقَالُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
খুযায়মা ইবনু ছাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, চামড়ার মোযায় মাসেহ করা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ মূসাফির তা করতে পারবে তিন দিন আর মুকীম পারবে একদিন।
(তিরমিজী-হা/৯৫; ইবনে মাজাহ-হা/৫৫৬; বুলুগুল মারাম-হা/৬২)
.
৫.
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُنَا إِذَا كُنَّا سَفْرًا أَنْ لاَ نَنْزِعَ خِفَافَنَا ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيَهُنَّ إِلاَّ مِنْ جَنَابَةٍ وَلَكِنْ مِنْ غَائِطٍ وَبَوْلٍ وَنَوْمٍ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
সাফওয়ান ইবনু আসসাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেনঃ আমরা মূসাফির হলে ফরয গোসল ব্যতীত তিনদিন তিনরাত পর্যন্ত চামড়ার মোযা না খুলতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেন।
(তিরমিজী-হা/৯৬)
.
৬.
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، عَنْ بِلاَلٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَسَحَ عَلَى الْخُفَّيْنِ وَالْخِمَارِ ‏
বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চামড়ার মোযা এবং পাগড়ির উপর মাসেহ করেছেন।
(তিরমিজী-হা/১০০, ১০১; ইবনে মাজাহ-হা/৫৬১, ৫৬২; বুলুগুল মারাম-হা/৬৩)
.
৭.
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، أَخْبَرَنِي ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ رَجَاءِ بْنِ حَيْوَةَ، عَنْ كَاتِبِ الْمُغِيرَةِ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَسَحَ أَعْلَى الْخُفِّ وَأَسْفَلَهُ
মুগীরা ইবনু শু‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে , নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চামড়ার মোযার উপর ও নীচ উভয় পিঠেই মাসেহ করেছেন।
(তিরমিজী-হা/৯৭; বুলুগুল মারাম-হা/৬০)
.
৮.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ عَلَى ظَاهِرِهِمَا
মুগীরা ইবনু শুবা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মোযার উপরিভাগে মাসেহ করতে দেখেছি।
(তিরমিজী-হা/৯৮)
.
৯.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، هُوَ الْقُرَشِيُّ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ، قَالَ سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ الْمَسْحِ، عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ السُّنَّةُ يَا ابْنَ أَخِي ‏.‏ قَالَ وَسَأَلْتُهُ عَنِ الْمَسْحِ، عَلَى الْعِمَامَةِ فَقَالَ أَمِسَّ الشَّعَرَ الْمَاءَ
আবূ উবায়দা ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আম্মার ইবনু ইয়াসির (রহঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ উবায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন চামড়ার মোযায় মাসেহ করা সম্পর্কে আমি জাবির ইবনু আবদিল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বললেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র, এটি সুন্নাত। তাঁকে পাগাড়ির উপর মাসেহ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ভিজা হাতে মাথার চুল স্পর্শ করবে।
(তিরমিজী-হা/১০২)
.
১০.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَوَضَّأُ لِكُلِّ صَلاَةٍ فَلَمَّا كَانَ عَامُ الْفَتْحِ صَلَّى الصَّلَوَاتِ كُلَّهَا بِوُضُوءٍ وَاحِدٍ وَمَسَحَ عَلَى خُفَّيْهِ ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ إِنَّكَ فَعَلْتَ شَيْئًا لَمْ تَكُنْ فَعَلْتَهُ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ عَمْدًا فَعَلْتُهُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
বুরায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রত্যেক সালাতের জন্য ওজু করতেন। কিন্তু মক্কা বিজয়ের দিন এক ওজুতে সব ক’টি সালাত আদায় করেছিলেন এবং চামড়ার মোজায় মাসেহ করেছিলেন। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন তাঁকে বললেন আপনি আজকে এমন একটি কাজ করলেন যা পূর্বে কখনও করেননি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ, ইচ্ছা করেই এমন করেছি।
(তিরমিজী-হা/৬১, ১৩; আল লুলু ওয়াল মারজান-হা/১৫৮)
.
১১.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ الْحَارِثِ، قَالَ بَالَ جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ ثُمَّ تَوَضَّأَ وَمَسَحَ عَلَى خُفَّيْهِ فَقِيلَ لَهُ أَتَفْعَلُ هَذَا قَالَ وَمَا يَمْنَعُنِي وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَفْعَلُهُ ‏.‏ قَالَ إِبْرَاهِيمُ كَانَ يُعْجِبُهُمْ حَدِيثُ جَرِيرٍ لأَنَّ إِسْلاَمَهُ كَانَ بَعْدَ نُزُولِ الْمَائِدَةِ
হাম্মাম ইবনুল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) পেশাব করার পর ওজু করলেন এবং তার চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপর মাসহ করলেন। তাকে বলা হল, আপনিও কি এরূপ করেন? তিনি বলেন, আমাকে কোন্ জিনিস তাতে বাধা দিবে? অথচ আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এরূপ করতে দেখেছি। ইব্রাহীম (রহঃ) বলেন, জারীর -এর হাদীস শুনে লোকেরা বিস্মিত হতো। কারণ তিনি সূরাহ আল-মায়িদাহ নাযিল হওয়ার পর ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/৫৪৩)
.
১২.
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى اللَّيْثِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَوَاءٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ رَأَى سَعْدَ بْنَ مَالِكٍ وَهُوَ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ إِنَّكُمْ لَتَفْعَلُونَ ذَلِكَ فَاجْتَمَعْنَا عِنْدَ عُمَرَ فَقَالَ سَعْدٌ لِعُمَرَ أَفْتِ ابْنَ أَخِي فِي الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ كُنَّا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ نَمْسَحُ عَلَى خِفَافِنَا لَمْ نَرَ بِذَلِكَ بَأْسًا ‏.‏ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ وَإِنْ جَاءَ مِنَ الْغَائِطِ قَالَ نَعَمْ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) কে চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপর মাসহ করতে দেখে বলেন, আপনারাও এটা করছেন! এরপর তারা উভয়ে উমার (রাঃ) এর এর নিকট একত্র হলেন। সা’দ (রাঃ) উমার (রাঃ) কে বলেন, আমার এই ভাতিজাকে চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপর মাসহ সম্পর্কে ফতওয়া দিন। উমার (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে থাকাকালে আমাদের চামড়ার মোজার উপর মাসহ করতাম। আমরা একে আপত্তিকর দেখতে পাইনি। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, আর যদি সে পায়খানা সেরে আসে? তিনি বলেন, হ্যাঁ [সে ক্ষেত্রেও]।
(ইবনে মাজাহ-হা/৫৪৬)
.
১৩.
حَدَّثَنَا أَبُو مُصْعَبٍ الْمَدَنِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمُهَيْمِنِ بْنُ الْعَبَّاسِ بْنِ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَسَحَ عَلَى الْخُفَّيْنِ وَأَمَرَنَا بِالْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ
আবদুল মুহাইমিন ইবনুল আব্বাস ইবনু সাহল আস্-সাইদী থেকে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপর মাসহ করেছেন এবং আমাদেরকেও মোজাদ্বয়ের উপর মাসহ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
(ইবনে মাজাহ-হা/৫৪৭)
.
১৪.
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ – رضي الله عنه – قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صلى الله عليه وسلم: «إِذَا وَطِئَ أَحَدُكُمْ الْأَذَى بِخُفَّيْهِ فَطَهُورُهُمَا التُّرَابُ». أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ – صحيح
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ তার চামড়ার মোজায় কোন নাপাক বস্তু পাড়ায় তবে ঐ মোজাদ্বয়ের পবিত্ৰতাকারী হচ্ছে মাটি [অর্থাৎ মাটিতে ঘসে পাক ও সাফ করে নেবে]।
(বুলুগুল মারাম-হা/২১৯; “ইবনু হিব্বান রহঃ হাদিসটি সহীহ বলেছেন” )
.
আলহামদুলিল্লাহ !
ইসলামে সুন্নাতী লেবাসের নীতিমালা সুস্পষ্ট দলীল-ভিক্তিক আলোচনার মাধ্যমে প্রমানিত হলো।
.
আরো প্রমাণিত হলো,
যারা বলে ইসলামে সুন্নাতী লেবাস বলতে কিছু নাই, জোব্বা, টুপি, পাগড়ি ইত্যাদি সুন্নাতী লেবাস নয় বরং আরবদের দেশীয় লেবাস, তাদের এ কথা স্পষ্ট মনগড়া এবং ভ্রান্ত !
.
আল্লাহপাকের হুকুম এবং নবীর আদর্শের মাঝে কামিয়াবী নিহিত ও আমাদের সকল ভ্রান্ত-মতবাদ থেকে হেফাজত থাকার জন্য রাসুল সাঃ দেখিয়েছেন নাজাতের পথ।
.
হাদিসে এসেছে,
عَنْ مَالِكِ بْنِ اَنَسٍ مُرْسَلًا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ رَسُوْلِه. رَوَاهُ فى المُوَطَّا
মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না – আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাত।
(মিশকাত-হা/১৮৬, ১৪১; মুয়াত্ত্বা মালিক-হা/১৫৯৪; হাকেম-হা/৩১৮, ৩১৯; তারগীব-হা/৩৬)
.
হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাত এবং তার নিজের সুন্নাতকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরার ব্যপারে নবী কারীম সাঃ বলেন,
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، عَنْ بَحِيرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَمْرٍو السُّلَمِيِّ، عَنِ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ، قَالَ وَعَظَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا بَعْدَ صَلاَةِ الْغَدَاةِ مَوْعِظَةً بَلِيغَةً ذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ وَوَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ فَقَالَ رَجُلٌ إِنَّ هَذِهِ مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَمَاذَا تَعْهَدُ إِلَيْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏ “‏ أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإِنْ عَبْدٌ حَبَشِيٌّ فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ يَرَى اخْتِلاَفًا كَثِيرًا وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّهَا ضَلاَلَةٌ فَمَنْ أَدْرَكَ ذَلِكَ مِنْكُمْ فَعَلَيْهِ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ عَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
[হাদিসের কিছু অংশ বিশেষ………………………………….]
তিনি [রাসূল সাঃ] বললেন, তোমাদের আমি আল্লাহকে ভয় করার অসিয়্যাত করছি। যদি হাবশী গোলামও আমীর নিযুক্ত হয় তবুও তোমরা তার প্রতি অনুগত থাকবে, তার নির্দেশ শুনবে। তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা বহু বিরোধ প্রত্যক্ষ করবে। তোমরা সাবধান থাকবে, নতুন নতুন বিষয়ে লিপ্ত হওয়া থেকে। কারণ তা হল বেদআত বা গুমরাহী। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ঐযুগ পাবে তার কর্তব্য হল, আমার সুন্নাত এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতের উপর অবিচল থাকা। এগুলো তোমরা চোয়ালের দাঁত দিয়ে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে রাখবে।
(তিরমিজী-হা/২৬৭৬ আবু দাউদ-হা/৪৫৫২; ইবনে মাজাহ-হা/৪২; ৪৩; সুনানে আদ দারেমী-হা/৯৬; রিয়াযুস স্ব-লিহীন-হা/১৬১; আহমাদ-হা/১৬৬৯২; ইরওয়াহ-হা/২৪৫৫; ইবনু হিব্বান-হা/৫)
.
আল্লাহপাক আমাদেরকে, তার হুকুম, রাসূলের সুন্নাত এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে আমল করার তৌফিক দান করুন।
আমিন !

কপি
https://muhammadsaifurbd.wordpress.com/2018/01/20/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%80-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%A8-%E0%A6%B9%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE/