Translate

বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৭

জিনসেং কি? কেন খাবেন? কি ভাবে খাবেন

m.m.abdullah bhuiyan

আমার এ ব্লগে সকল দর্শকদের জানাই আন্তরীক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা . উক্ত ব্লগে শুধু মাত্র কুরআন হাদীসের আলোকে ইসলামী মূল্যবোধের উপর বিশদ আলোচনা করা হবে , দর্শকদের যে কোন যূক্তি ও গঠন মূলক মনতব্য সাদরে গ্রহন করা হবে , ধন্যবাদন্তে--======================== এম,এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭

জিনসেং কি?

জিনসেং কে বলা হয় wonder herbs বা আশ্চর্য লতা। চীনে সহস্র বছর ধরে জিনসেং গাছের মূল আশ্চর্য রকম শক্তি উতপাদনকারী পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও এর রয়েছে নানাবিধ গুন। চীন থেকে কেউ বেড়াতে আসলে সাধারণত দেখা যায় জিনসেং ও সবুজ চা কে গিফট হিসেবে নিয়ে আসতে। সেইরকম একটা গিফট পাওয়ার পরে ভাবলাম যে এই আশ্চর্য লতার গুন কে আসলে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত নাকি এ শুধুই প্রাচীন চাইনিজ মিথ? ঘাটতে গিয়ে পেলাম নানা তথ্য। আমাদের দেশের মানুষেরা এটা সম্পর্কে কম-ই জানেন।তাই জিনসেং সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আজকের পোস্ট। 

জিনসেং : মুলত দুই ধরণের জিনসেং ঔষধি গুনসম্পন্ন হিসেবে পরিচিত- আমেরিকান ও এশিয়ান। এর মধ্যে এশিয়ান জিনসেং অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকরী। এই দুই ধরণের জিনসেং কে বলা হয় প্যানাক্স জিনসেং। 

প্যানাক্স শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ "panacea" থেকে যার অর্থ হলো "All healer" বা সর্ব রোগের ঔষধ। জিনসেং সাদা (খোসা ছাড়ানো) ও লাল (খোসা সমেত) এই দুই রকম রূপে পাওয়া যায়। খোসা সমেত অবস্থায় এটি অধিক কার্যকরী। 

এদের মধ্যে থাকা জিনসেনোনোসাইড নামক একটি উপাদান এর কার্যক্ষমতার জন্য দায়ী। সাইবেরিয়ান জিনসেং নামে আরেক ধরণের গাছ আছে, যা জিনসেং বলে ভূল করা হলেও তা আসলে প্রকৃত জিনসেং না। 

জিনসেং ও লিংগোত্থানে অক্ষমতাঃ -

জিনসেং এর গুনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী যা প্রমানিত তা হলে, পুরুষের লিংগোত্থানে অক্ষমতা রোধে এর ভূমিকা। University of Ulsan এবং the Korea Ginseng and Tobacco Research Institute ৪৫ জন ইরেকটাইল ডিসফাংশন (লিংগোত্থানে অক্ষম ব্যাক্তি) এর রোগীর উপর একটি পরীক্ষা চালান। তাদের কে ৮ সপ্তাহের জন্য দিনে ৩বার করে ৯০০ মিগ্রা জিনসেং খেতে দেয়া হয়, এরপর দুই সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার ৮ সপ্তাহ খেতে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮০% জানান যে, জিনসেং গ্রহনের সময় তাদের লিংগোত্থান সহজ হয়েছে।

 ২০০৭ সনে Asian Journal of Andrology এ ৬০ জন ব্যাক্তির উপর করা এবং Journal of Impotent Research এ ৯০ জন ব্যাক্তির উপর করা অনুরুপ আরো দুটি গবেষনা প্রকাশিত হয়। 

২০০২ সালের একটি গবেষনায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন যে, জিনসেং কিভাবে লিংগোত্থানে সহায়তা করে। পুরুষের যৌনাংগে corpus cavernosum নামে বিষেশ ধরণের টিস্যু থাকে। নাইট্রিক অক্সাইডের উপস্থিতিতে এই টিস্যু রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে লিংগোত্থান ঘটায়। জিনসেং সরাসরি দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমান বাড়িয়ে লিংগোত্থানে সহায়তা করে।

 জিনসেং ও দ্রুত বীর্যস্খলনঃ-

 যদিও কাচা জিনসেং এর মূল এই রোগে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানা যায়না তবে জিনসেং এর তৈরী একটি ক্রীম (ss cream) পুরুষদের দ্রুত বীর্যস্খলন রোধে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হয়ে আসছে যা মিলনের একঘন্টা আগে লিঙ্গে লাগিয়ে রেখে মিলনের আগে ধুয়ে ফেলতে হয়। Journal of Urology তে ২০০০ সনে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী এটি বীর্যস্খলনের সময় কাল কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বাড়ায়। 

আসলে, জিনসেং শব্দটাই এসছে চাইনিজ শব্দ "রেনসেং" থেকে। "রেন" অর্থ পুরুষ ও "সেন" অর্থ "পা", যৌনতা বৃদ্ধিতে এর অনন্য অবদান এর জন্যই এর এইরকম নাম (অবশ্য এটি দেখতেও পা সহ মানুষের মত)। জিনসেং ও cognitive function: cognitive function বলতে বুঝায় বিভিন্ন মানসিক ক্ষমতা যেমন মনযোগ, স্মৃতিশক্তি, কথা শোনার সাথে সাথে বুঝতে পারার ক্ষমতা,কল্পনাশক্তি, শেখার ক্ষমতা, বিচারবুদ্ধি, চিন্তা শক্তি ও সমস্যা সমাধান করে কোন একটা সিদ্ধান্তে পৌছানোর ক্ষমতা। সোজা ভাষায় বলতে গেলে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি। জিনসেং স্নায়ুতন্তের উপর সরাসরি কাজ করে মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

২০০৫ সনে Journal of Psychopharmacology তে প্রকাশিত গবেষনা অনুযায়ী ৩০ জন সুস্বাস্থ্যবান যুবার উপর গবেষনা করে দেখা গিয়েছে যে জিনসেং গ্রহন তাদের পরীক্ষার সময় পড়া মনে রাখার ব্যাপারে পজিটিভ ভূমিকা রেখেছিল। একই জার্নালে ২০০০ সালে করা একটি গবেষনা, যুক্তরাজ্যের Cognitive Drug Research Ltd কর্তৃক ৬৪ জন ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা এবং চীনের Zhejiang College কর্তৃক ৩৫৮ ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ ব্যাক্তির স্মরণশক্তি ও সার্বিক বৃদ্ধিতেও সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। 

২০০৫ সনে Annals of Neurology তে প্রকাশিত ইদুরের উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মস্তিষ্কের কোষ বিনষ্টকারী রোগ যা স্মৃতিশক্তি বিনষ্ট করে (যেমন পারকিন্সন ডিজিজ, হান্টিংটন ডিজিজ ইত্যাদি) সেসব প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

 জিনসেং ও ডায়াবেটিসঃ - 

২০০৮ সনে ১৯ জন টাইপ ২ ডায়বেটিস এর রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং টাইপ ২ ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্টে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে।

 জিনসেং ও কোলেস্টেরলঃ- 

 Pharmacological Research এ ২০০৩ সালে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী, দিনে ৬ মিগ্রা হারে ৮ সপ্তাহ জিনসেং গ্রহণ খারাপ কোলেস্টেরল যেমন- total cholesterol (TC), triglyceride (TG) ও low density lipoprotein (LDL) এর মাত্রা কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরল (High Density Lipoprotein বা HDL) এর মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। 

জিনসেং ও ফুসফুসের রোগঃ- 

Chronic Obstructive Pulmonary Disease(COPD) হচ্ছে ফুসফুসের অন্যতম কমন রোগ। এই রোগীদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকে কফ থাকে ও কারো কারো ফুসফুসের ক্ষয় ঘটে। Archive of Chest Disease এ ২০০২ সনে প্রকাশিত ৯২ জন রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী ১০০মিগ্রা ডোজে ৩ মাস জিনসেং গ্রহণে সার্বিক ভাবে COPD এর অবস্থার উন্নতি হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। 

জিনসেং ও ত্বকঃ-  

 জিনসেং বিভিন্ন এন্টি-এজিং ক্রীম ও স্ট্রেচ মার্ক ক্রীম এ ব্যবহৃত হয়। এইসব ক্রীম ত্বকের কোলাজেন এর উপর কাজ করে ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধ করে ও গর্ভবতী নারীদের পেটের ত্বক স্ফীতির কারণে তৈরী ফাটা দাগ নিরসন করে। তবে এটির জন্য জিনসেং এর ভূমিকা কতটুকু ও ক্রীমে থাকা অন্যান্য উপাদানের ভূমিকা কতটুকু তা জানা যায়নি। 

জিনসেং ও ক্যান্সারঃ-- 

 জিনসেং ক্যান্সার নিরাময় করতে না পারলেও আমেরিকার ম্যায়ো ক্লিনিক ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা বলছেন, ক্যান্সারে ভুগছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা কাটাতে জিনসেং সহায়ক। ৩৪০ রোগী নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, ৮ সপ্তাহ ধরে উচ্চমাত্রার জিনসেং ক্যাপসুল সেবন করেছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা অন্যান্য পদ্ধতির চিকিৎসা গ্রহণকারীদের তুলনায় অনেক কমেছে।

 জিনসেং ও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ - 

একটি গবেষনায় ২২৭ ব্যক্তির উপর ১০০মিগ্রা দিনে এক বার করে ১২ সপ্তাহ এবং আরেকটি গবেষনায় ৬০ ব্যাক্তির উপর ১০০মিগ্রা দিনে ২বার করে ৮ সপ্তাহ জিনসেং প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে যে তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো ( যেমন T Helper cell, NK Cell, Antibody ইত্যাদি) কার্যকর পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। তার মানে জিনসেং রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। 

জিনসেং ও আরো কিছু রোগঃ- 

 মেয়েলি হরমোন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বৃদ্ধি ও শক্তি বর্ধক এনার্জি ড্রিংক হিসেবে জিনসেং দারুন কার্যকরী। জিনসেং রক্ত তরল করে স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। আরো কয়েকটি রোগ নিরসনে জিনসেং ভূমিকা রাখে বলে লোকজ ব্যবহার হতে জানা গিয়েছে। 

বিজ্ঞানীরা এই রোগ গুলোর ক্ষেত্রে গবেষনা করে জিনসেং এর কার্যকরীতা অস্বীকারও করেন নি আবার নিশ্চিত ভাবে মেনেও নেননি। এইসব রোগের মধ্যে আছে, সরদি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্যান্সার (পাকস্থলি, ফুসফুস, যকৃত, ত্বক, ডিম্বাশয়), রক্তশূণ্যতা, বিষন্নতা, পানি আসা, হজমে সমস্যা ইত্যাদি। 

ব্যবহারবিধিঃ -  

University of Maryland Medical Center এর মত অনুযায়ী এশিয়ান জিনসেং পূর্নবয়স্করা ২-৩ সপ্তাহ টানা খেয়ে ২ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারবেন। 

আমেরিকান জিনসেং টানা ৮ সপ্তাহ খেয়ে ২ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারবেন। যেহেতু এটি একটি অতি কার্যকরী ওষুধ, তাই দীর্ঘদিন ব্যবহারের কোন রকম ক্ষতি হতে পারে ভেবে এটি বেশিদিন ব্যবহার করতে মানা করা হয় (যদিও দীর্ঘ ব্যবহারে ক্ষতির কথাটার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই).. 

জিনসেং সাধারণত ট্যাবলেট, পাউডার, ড্রিঙ্কস হিসেবে খাওয়া হয়, এবং এদের গায়েই ব্যবহারবিধি লেখা থাকে। 

ট্যাবলেট বা পাউডার এর জন্য ডোজঃ University of Michigan Health System এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি ও লিংগ উত্থান এর জন্য ৯০০ মিগ্রা পাউডার করে দৈনিক ৩ বার, শক্তি বা স্ট্যামিনা বৃদ্ধি ও ডায়বেটিস এর জন্য এর ডোজ হলো ২০০ মিগ্রা পাঊডার করে দিনে ১ বার, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১০০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার। ss cream এর জন্য ডোজ হলো ০.২ মিগ্রা। সরাসরি মূল খেলে ০.৫-২ গ্রাম মুল খাওয়া যাবে দৈনিক ১ বার। মূল কিনে খাওয়া টাই সবচেয়ে সাশ্রয়ী হয়। মূল টা চিবিয়ে খাওয়া যায়, গুড়া করে জিভের নীচে রেখে দিয়ে খাওয়া যায়, পানিতে এক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে পানি সহ খাওয়া যায় অথবা পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে পানি সহ খাওয়া যায়। 

কোথায় পাবেনঃ 

সাইন্স ল্যাবরেটরির মোড়ে, ঢাকা সিটি কলেজের গেটের অপর প্বার্শে অবস্থিত সাইন্স ল্যাবরেটরি বিক্রয় কেন্দ্রে এটি এনার্জি ড্রিঙ্কস হিসেবে পাওয়া যায়। এ ছাড়াও মডার্ণ হারবাল গ্রুপ এবং স্কোয়ার ফার্মাসিঊটিকাল লিমিটেড এর ওয়েব সাইট এ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এরা জিনসেং কে ট্যাবলেট হিসেবে বিক্রি করে। যেই পণ্য ই কিনেন না কেন, দেখে নিবেন লেবেল এর গায়ে Panax ginseng লেখা আছে কিনা, কারণ এটাই অরিজিনাল এশিয়ান জিনসেং। 

গেণ্ডারিয়া রেলগেট, দয়াগঞ্জ বাজার, সায়েদাবাদ ব্রিজের ঢালে, ঠাঁটারি বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে ঔষধি গাছ, লতাপাতা বিক্রির পাইকারি দোকান। এইসব জায়গায় খোজ নিয়ে দেখতে পারেন যে সরাসরি মূল পাওয়া যায় কিনা। 

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ-  

 জিনসেং এর সবচেয়ে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিকৃয়া হলো ঘুমের সমস্যা। আগেই বলেছি, জিনসেং স্নায়ুতন্ত্র কে উত্তেজিত করে ও মানসিক ক্ষমতা বাড়ায়। উত্তেজিত স্নায়ুর কারণে ঘুম আসতে দেরি হয়, যেমন টা হয় কফি খাওয়ার পরে। 

অন্যান্য সাধারণ সমস্যার মধ্যে আছে ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, হার্ট বিট বাড়া এবং ব্লাড প্রেশারে তারতম্য হওয়া (সাময়িক)। 

যারা খাবেন নাঃ-- 

 বাচ্চা, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের এটা খেতে নিষেধ করা হয়। জিনসেং স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে তাই স্নায়ুর উপর কাজ করে এমন অন্য কোন ওষুধ (যেমন ঘুমের অষুধ, বিষন্নতার ওষুধ ইতাদি) এর সঙ্গে এটা খাওয়া উচিত না, নয়ত স্নায়ু অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে যাবে। জিনসেং রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করে, তাই হার্টের রোগীরা যারা ইতমধ্যে রক্ত তরল করার অন্যান্য ওষুধ ( যেমন heparin and warfarin) খাচ্ছেন, তারা এদের সঙ্গে জিনসেং খাবেনা না। 

জিনসেং ব্লাড সুগার কমাতে সহায়তা করে, তাই ডায়বেটিস রোগীদেরো ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এটা খাওয়া উচিত যাতে ওষুধের সাথে জিনসেং গ্রহণে সুগার যেন বেশি কমে না যায়। অতিকর্মক্ষম রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে কিছু রোগ হয়, যেমন multiple sclerosis (MS), lupus (systemic lupus erythematosus, SLE), rheumatoid arthritis (RA) এদের বলা হয় Auto-immune disease।

 জিনসেং যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাই সাধারণ মানুষ এতি খেলে উপকৃত হবে কিন্তু Auto-immune disease এর রোগীদের খাওয়া উচিত না। জিনসেং মেয়েলি হরমোন ইস্ট্রোজেন এর পরিমাণ বাড়ায়, তাই যাদের হরমোনের সমস্যা আছে তাদের এটা খাওয়া উচিত কিন্তু যাদের ব্রেস্ট, জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার আছে তাদের খাওয়া উচিত নয় কারণ অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন এইসব ক্যান্সারে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখে। 

জিনসেং ব্লাড প্রেশারেও তারতম্য ঘটায় তাই হাই ও লো প্রেশারের রোগীদেরো নিয়মিত খাওয়া উচিত না। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, জিনসেং এর ভালো গুনগুলোর কারণেই আসলে একে সতর্ক ভাবে গ্রহণ করা উচিত (যদিও উপরের আশংকা গুলো কোনটাই বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত না)। উপসংহারঃ জিনসেন এর গুন বর্ণনা করে বলা হয় যে এটি "Adaptogen" অর্থাৎ এটি সব পরিস্থিতির সাথে Adapt করাতে পারে বা খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারে মানুষের দেহে শারিরীক শক্তি-সামর্থ্য, মানসিক ক্ষমতা, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সব বেড়ে মানুষ কে সব পরিস্তিতির সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে।

সংকলক 
Abdullah bhuiyan 

 প্রয়োজনে যোগাযোগ 

০০৯৬৬৫০৪৯৬৭৮৬৩ 

০১৮২৯৩১৮১১৪

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭

জিংসিং এর উপকারিতা কি

জিংসিং এর উপকারীতা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে অনেকে এটাকে  প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা হিসাবে বলতে ভূল করেন না আসলে কি তাই?

জিনসেং কি, জিনসেং খেলে গোপন ক্ষমতা বাড়ে কেন?  একটি গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং বীর্যস্খলনের সময় কাল কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বাড়ায়। জিনসেং মূলটির বয়স ছয় বছর হতে হবে। জিনসেং বর্তমানে সারা বিশ্বে একটি আলোচিত ঔষধি উদ্ভিদ, যার মূলে রয়েছে বিশেষ রোগ প্রতিরোধকক্ষমতা। হাজার বছর ধরে চীন, জাপান ও কোরিয়ায় জিনসেংয়ের মূল বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক, শক্তি উৎপাদনকারী, পথ্য ও টনিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।  জিনসেং ইংরেজিতে Ginseng। Araliaceae পরিবারের Panax একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি মাংসল মূলবিশিষ্ট এক ধরনের বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি পূর্ব এশিয়াতে, বিশেষ করে চীন, কোরিয়া ও পূর্ব সাইবেরিয়াতে, ঠান্ডা পরিবেশে জন্মে।শক্তিবর্ধক টনিক হিসেবে বিভিন্ন দেশে জিনসেংয়ের প্রচলন আছে। জিনসেং শব্দটা উচ্চারণের সাথে যে দেশটির নাম উচ্চারিত হয় সেটি হলো কোরিয়া। জিনসেংকে অনেকে কোরিয়ান ভায়াগ্রা বলে থাকে। জিনসেং কি আসলে জিনসেং কী? Ginseng হলো গাছের মূল। এই গাছটির নামই Ginseng। হাজার হাজার বছর ধরে কোরিয়াতে জিনসেং ওষুধি গুণাগুণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জিনসেং গাছের মূল রোগ প্রতিরোধক এবং ইংরেজিতে বললে বলতে হয় Proactivetool in warding off discase। জিনসেংকে কোরিয়ানরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকে। এর পুরো মূল সুপে দিয়ে দেয়, সিদ্ধ মূল খেতে হয়। চিবিয়ে চিবিয়ে এর নির্যাস নিতে হয়। জিনসেং দিয়ে মদও তৈরি হয়। এছাড়াও জিনসেং-এর রয়েছে নানাবিধ খাদ্য উপকরণ। জিনসেং কে বলা হয় wonder herbs বা আশ্চর্য লতা। চীনে সহস্র বছর ধরে জিনসেং গাছের মূল আশ্চর্য রকম শক্তি উতপাদনকারী পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও এর রয়েছে নানাবিধ গুন। চীন থেকে কেউ বেড়াতে আসলে সাধারণত দেখা যায় জিনসেং ও সবুজ চা কে গিফট হিসেবে নিয়ে আসতে। সেইরকম একটা গিফট পাওয়ার পরে ভাবলাম যে এই আশ্চর্য লতার গুন কে আসলে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত নাকি এ শুধুই প্রাচীন চাইনিজ মিথ? ঘাটতে গিয়ে পেলাম নানা তথ্য। আমাদের দেশের মানুষেরা এটা সম্পর্কে কম-ই জানেন। তাই জিনসেং সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আজকের পোস্ট। 



জিনসেং : মুলত দুই ধরণের জিনসেং ঔষধি গুনসম্পন্ন হিসেবে পরিচিত- আমেরিকান ও এশিয়ান। এর মধ্যে এশিয়ান জিনসেং অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকরী। 


এই দুই ধরণের জিনসেং কে বলা হয় প্যানাক্স জিনসেং। প্যানাক্স শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ “panacea” থেকে যার অর্থ হলো “All healer” বা সর্ব রোগের ঔষধ। জিনসেং সাদা (খোসা ছাড়ানো) ও লাল (খোসা সমেত) এই দুই রকম রূপে পাওয়া যায়। খোসা সমেত অবস্থায় এটি অধিক কার্যকরী। এদের মধ্যে থাকা জিনসেনোনোসাইড নামক একটি উপাদান এর কার্যক্ষমতার জন্য দায়ী। সাইবেরিয়ান জিনসেং নামে আরেক ধরণের গাছ আছে, যা জিনসেং বলে ভূল করা হলেও তা আসলে প্রকৃত জিনসেং না।


 জিনসেং ও লিংগোত্থানে অক্ষমতাঃ


 জিনসেং এর গুনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী যা প্রমানিত তা হলে, পুরুষের লিংগোত্থানে অক্ষমতা রোধে এর ভূমিকা। University of Ulsan এবং the Korea Ginseng and Tobacco Research Institute ৪৫ জন ইরেকটাইল ডিসফাংশন (লিংগোত্থানে অক্ষম ব্যাক্তি) এর রোগীর উপর একটি পরীক্ষা চালান। তাদের কে ৮ সপ্তাহের জন্য দিনে ৩বার করে ৯০০ মিগ্রা জিনসেং খেতে দেয়া হয়, এরপর দুই সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার ৮ সপ্তাহ খেতে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮০% জানান যে, জিনসেং গ্রহনের সময় তাদের লিংগোত্থান সহজ হয়েছে। ২০০৭ সনে Asian Journal of Andrology এ ৬০ জন ব্যাক্তির উপর করা এবং Journal of Impotent Research এ ৯০ জন ব্যাক্তির উপর করা অনুরুপ আরো দুটি গবেষনা প্রকাশিত হয়। 

২০০২ সালের একটি গবেষনায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন যে, জিনসেং কিভাবে লিংগোত্থানে সহায়তা করে। পুরুষের যৌনাংগে corpus cavernosum নামে বিষেশ ধরণের টিস্যু থাকে। নাইট্রিক অক্সাইডের উপস্থিতিতে এই টিস্যু রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে লিংগোত্থান ঘটায়। 

জিনসেং সরাসরি দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমান বাড়িয়ে লিংগোত্থানে সহায়তা করে। জিনসেং ও দ্রুত বীর্যস্খলন যদিও কাচা জিনসেং এর মূল এই রোগে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানা যায়না তবে জিনসেং এর তৈরী একটি ক্রীম (ss cream) পুরুষদের দ্রুত বীর্যস্খলন রোধে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হয়ে আসছে যা মিলনের একঘন্টা আগে লিঙ্গে লাগিয়ে রেখে মিলনের আগে ধুয়ে ফেলতে হয়। Journal of Urology তে ২০০০ সনে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী এটি বীর্যস্খলনের সময় কাল কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বাড়ায়। আসলে, জিনসেং শব্দটাই এসছে চাইনিজ শব্দ “রেনসেং” থেকে। “রেন” অর্থ পুরুষ ও “সেন” অর্থ “পা”, যৌনতা বৃদ্ধিতে এর অনন্য অবদান এর জন্যই এর এইরকম নাম (অবশ্য এটি দেখতেও পা সহ মানুষের মত)


। জিনসেং ও Cognitive function: cognitive function বলতে বুঝায় বিভিন্ন মানসিক ক্ষমতা যেমন মনযোগ, স্মৃতিশক্তি, কথা শোনার সাথে সাথে বুঝতে পারার ক্ষমতা,কল্পনাশক্তি, শেখার ক্ষমতা, বিচারবুদ্ধি, চিন্তা শক্তি ও সমস্যা সমাধান করে কোন একটা সিদ্ধান্তে পৌছানোর ক্ষমতা। সোজা ভাষায় বলতে গেলে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি। জিনসেং স্নায়ুতন্তের উপর সরাসরি কাজ করে মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

 ২০০৫ সনে Journal of Psychopharmacology তে প্রকাশিত গবেষনা অনুযায়ী ৩০ জন সুস্বাস্থ্যবান যুবার উপর গবেষনা করে দেখা গিয়েছে যে জিনসেং গ্রহন তাদের পরীক্ষার সময় পড়া মনে রাখার ব্যাপারে পজিটিভ ভূমিকা রেখেছিল। একই জার্নালে ২০০০ সালে করা একটি গবেষনা, যুক্তরাজ্যের Cognitive Drug Research Ltd কর্তৃক ৬৪ জন ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা এবং চীনের Zhejiang College কর্তৃক ৩৫৮ ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ ব্যাক্তির স্মরণশক্তি ও সার্বিক বৃদ্ধিতেও সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। ২০০৫ সনে Annals of Neurology তে প্রকাশিত ইদুরের উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মস্তিষ্কের কোষ বিনষ্টকারী রোগ যা স্মৃতিশক্তি বিনষ্ট করে (যেমন পারকিন্সন ডিজিজ, হান্টিংটন ডিজিজ ইত্যাদি) সেসব প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। জিনসেং ও ডায়াবেটিস ২০০৮ সনে ১৯ জন টাইপ ২ ডায়বেটিস এর রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং টাইপ ২ ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্টে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে। জিনসেং ও কোলেস্টেরল Pharmacological Research এ ২০০৩ সালে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী, দিনে ৬ মিগ্রা হারে ৮ সপ্তাহ জিনসেং গ্রহণ খারাপ কোলেস্টেরল যেমন- total cholesterol (TC), triglyceride (TG) ও low density lipoprotein (LDL) এর মাত্রা কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরল (High Density Lipoprotein বা HDL) এর মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। জিনসেং ও ফুসফুসের রোগঃ Chronic Obstructive Pulmonary Disease (COPD) হচ্ছে ফুসফুসের অন্যতম কমন রোগ। এই রোগীদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকে কফ থাকে ও কারো কারো ফুসফুসের ক্ষয় ঘটে। Archive of Chest Disease এ ২০০২ সনে প্রকাশিত ৯২ জন রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী ১০০মিগ্রা ডোজে ৩ মাস জিনসেং গ্রহণে সার্বিক ভাবে COPD এর অবস্থার উন্নতি হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।

 জিনসেং ও ত্বকঃ জিনসেং বিভিন্ন এন্টি-এজিং ক্রীম ও স্ট্রেচ মার্ক ক্রীম এ ব্যবহৃত হয়। এইসব ক্রীম ত্বকের কোলাজেন এর উপর কাজ করে ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধ করে ও গর্ভবতী নারীদের পেটের ত্বক স্ফীতির কারণে তৈরী ফাটা দাগ নিরসন করে। তবে এটির জন্য জিনসেং এর ভূমিকা কতটুকু ও ক্রীমে থাকা অন্যান্য উপাদানের ভূমিকা কতটুকু তা জানা যায়নি।

 জিনসেং ও ক্যান্সার জিনসেং ক্যান্সার নিরাময় করতে না পারলেও আমেরিকার ম্যায়ো ক্লিনিক ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা বলছেন, ক্যান্সারে ভুগছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা কাটাতে জিনসেং সহায়ক। ৩৪০ রোগী নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, ৮ সপ্তাহ ধরে উচ্চমাত্রার জিনসেং ক্যাপসুল সেবন করেছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা অন্যান্য পদ্ধতির চিকিৎসা গ্রহণকারীদের তুলনায় অনেক কমেছে। জিনসেং ও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা একটি গবেষনায় ২২৭ ব্যক্তির উপর ১০০মিগ্রা দিনে এক বার করে ১২ সপ্তাহ এবং আরেকটি গবেষনায় ৬০ ব্যাক্তির উপর ১০০মিগ্রা দিনে ২বার করে ৮ সপ্তাহ জিনসেং প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে যে তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো ( যেমন T Helper cell, NK Cell, Antibody ইত্যাদি) কার্যকর পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। তার মানে জিনসেং রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। জিনসেং ও আরো কিছু রোগ মেয়েলি হরমোন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বৃদ্ধি ও শক্তি বর্ধক এনার্জি ড্রিংক হিসেবে জিনসেং দারুন কার্যকরী। জিনসেং রক্ত তরল করে স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। আরো কয়েকটি রোগ নিরসনে জিনসেং ভূমিকা রাখে বলে লোকজ ব্যবহার হতে জানা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই রোগ গুলোর ক্ষেত্রে গবেষনা করে জিনসেং এর কার্যকরীতা অস্বীকারও করেন নি আবার নিশ্চিত ভাবে মেনেও নেননি। এইসব রোগের মধ্যে আছে, সরদি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্যান্সার (পাকস্থলি, ফুসফুস, যকৃত, ত্বক, ডিম্বাশয়), রক্তশূণ্যতা, বিষন্নতা, পানি আসা, হজমে সমস্যা ইত্যাদি।  

*★★*

ব্যবহারবিধিঃ University of Maryland Medical Center এর মত অনুযায়ী এশিয়ান জিনসেং পূর্নবয়স্করা ২-৩ সপ্তাহ টানা খেয়ে ২ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারবেন। আমেরিকান জিনসেং টানা ৮ সপ্তাহ খেয়ে ২ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারবেন। যেহেতু এটি একটি অতি কার্যকরী ওষুধ, তাই দীর্ঘদিন ব্যবহারের কোন রকম ক্ষতি হতে পারে ভেবে এটি বেশিদিন ব্যবহার করতে মানা করা হয় (যদিও দীর্ঘ ব্যবহারে ক্ষতির কথাটার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই).. 

জিনসেং সাধারণত ট্যাবলেট, পাউডার, ড্রিঙ্কস হিসেবে খাওয়া হয়, এবং এদের গায়েই ব্যবহারবিধি লেখা থাকে। ট্যাবলেট বা পাউডার এর জন্য ডোজঃ University of Michigan Health System এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি ও লিংগ উত্থান এর জন্য ৯০০ মিগ্রা পাউডার করে দৈনিক ৩ বার, শক্তি বা স্ট্যামিনা বৃদ্ধি ও ডায়বেটিস এর জন্য এর ডোজ হলো ২০০ মিগ্রা পাঊডার করে দিনে ১ বার, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১০০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার। ss cream এর জন্য ডোজ হলো ০.২ মিগ্রা। সরাসরি মূল খেলে ০.৫-২ গ্রাম মুল খাওয়া যাবে দৈনিক ১ বার। মূল কিনে খাওয়া টাই সবচেয়ে সাশ্রয়ী হয়। মূল টা চিবিয়ে খাওয়া যায়, গুড়া করে জিভের নীচে রেখে দিয়ে খাওয়া যায়, পানিতে এক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে পানি সহ খাওয়া যায় অথবা পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে পানি সহ খাওয়া যায়। অথবা হালকা মধুর সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। 

তাছাডা 

জিংসিং এর সবুজ পাতা সরাসরি  বা চা এর সাথে ও সেবন করা যায় এতে শরীরে এনার্জি  বাডবে।


কোথায় পাবেনঃ

মডার্ণ হারবাল গ্রুপ এবং স্কয়ার ফার্মাসিঊটিকাল লিমিটেড এর ওয়েব সাইট এ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এরা জিনসেং কে ট্যাবলেট হিসেবে বিক্রি করে। যেই পণ্য ই কিনেন না কেন, দেখে নিবেন লেবেল এর গায়ে Panax ginseng লেখা আছে কিনা, কারণ এটাই অরিজিনাল এশিয়ান জিনসেং।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ জিনসেং এর সবচেয়ে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিকৃয়া হলো ঘুমের সমস্যা। আগেই বলেছি, জিনসেং স্নায়ুতন্ত্র কে উত্তেজিত করে ও মানসিক ক্ষমতা বাড়ায়। উত্তেজিত স্নায়ুর কারণে ঘুম আসতে দেরি হয়, যেমন টা হয় কফি খাওয়ার পরে। অন্যান্য সাধারণ সমস্যার মধ্যে আছে ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, হার্ট বিট বাড়া এবং ব্লাড প্রেশারে তারতম্য হওয়া (সাময়িক)। যারা খাবেন নাঃ বাচ্চা, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের এটা খেতে নিষেধ করা হয়। জিনসেং স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে তাই স্নায়ুর উপর কাজ করে এমন অন্য কোন ওষুধ (যেমন ঘুমের অষুধ, বিষন্নতার ওষুধ ইতাদি) এর সঙ্গে এটা খাওয়া উচিত না, নয়ত স্নায়ু অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে যাবে। জিনসেং রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করে, তাই হার্টের রোগীরা যারা ইতমধ্যে রক্ত তরল করার অন্যান্য ওষুধ ( যেমন heparin and warfarin) খাচ্ছেন, তারা এদের সঙ্গে জিনসেং খাবেনা না। জিনসেং ব্লাড সুগার কমাতে সহায়তা করে, তাই ডায়বেটিস রোগীদেরো ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এটা খাওয়া উচিত যাতে ওষুধের সাথে জিনসেং গ্রহণে সুগার যেন বেশি কমে না যায়। অতিকর্মক্ষম রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে কিছু রোগ হয়, যেমন multiple sclerosis (MS), lupus (systemic lupus erythematosus, SLE), rheumatoid arthritis (RA) এদের বলা হয় Auto-immune disease। জিনসেং যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাই সাধারণ মানুষ এতি খেলে উপকৃত হবে কিন্তু Auto-immune disease এর রোগীদের খাওয়া উচিত না। জিনসেং মেয়েলি হরমোন ইস্ট্রোজেন এর পরিমাণ বাড়ায়, তাই যাদের হরমোনের সমস্যা আছে তাদের এটা খাওয়া উচিত কিন্তু যাদের ব্রেস্ট, জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার আছে তাদের খাওয়া উচিত নয় কারণ অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন এইসব ক্যান্সারে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখে। জিনসেং ব্লাড প্রেশারেও তারতম্য ঘটায় তাই হাই ও লো প্রেশারের রোগীদেরো নিয়মিত খাওয়া উচিত না। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, 

জিনসেং এর ভালো গুনগুলোর কারণেই আসলে একে সতর্ক ভাবে গ্রহণ করা উচিত (যদিও উপরের আশংকা গুলো কোনটাই বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত না)। জিনসেং কোরিয়াতে এবং দেশের বাইরে জনপ্রিয় হলেও এর চাষাবাদ কিন্তু বেশ কঠিন। বর্হিবিশ্বে জিনসেং-এর প্রচুর চাহিদা মেটানোর জন্য কোরিয়ার Gyeong sangbuk-do প্রদেশের পুঞ্জী এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে জিনসেং-এর সফল চাষাবাদ চলছে সেই ১১২২ খ্রিস্টাব্দ থেকে। এই পুঞ্জী এলাকা জিনসেং দেশ হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে পরিচিত। ষোলশো শতাব্দী থেকেই এই এলাকায় জিনসেং খামার গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এটি কোরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত জিনসেং উৎপাদনকারী এলাকা। পুঞ্জীতে Sobeaksan পাহাড়ে ৪০০-৫০০ মিটার উচ্চতায় জিনসেং-এর চাষ করা হয়। পাহাড়ের শীতল আবহাওয়া এবং উর্বর মাটি পুঞ্জী এলাকার জিনসেং-কে বলশালী করে তোলে। প্রতিবছর অক্টোবরের প্রথমদিকে পুঞ্জীতে জিনসেং উৎসব হয়ে থাকে। এই উৎসবে খেত থেকে সদ্য তোলা জিনসেং-এর স্বাদ গ্রহণ করা যায়। পরিভ্রমণকারীরা জিনসেং তুলবার অভিজ্ঞতাও নিতে পারে এই উৎসবে। জিনসেং উৎসবে আয়োজন করা হয় নানা রকম প্রতিযোগিতার। এর একটি হলো দি বেস্ট জিনসেং। অর্থাৎ কোন জিনসেং মূলটি দেখতে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এর জন্য ৪টি শর্ত হলো: (১) মূলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং একই সাথে মূলটি দেখতে একজন মানুষের আকৃতির কতটা কাছাকাছি হয়েছে। (২) মূলের বাইরের স্তরের পুরুত্ব এবং মূলের ওজন। (৩) মূলের দৈর্ঘ্য এবং (৪) ★★জিনসেং মূলটির বয়স ছয় বছর হতে হবে। গাছের বয়স ছয় বছরের উপরে চলে গেলে মূল শক্ত হয়ে যায় এবং এর ওয়ুধি গুণাগুণ হ্রাস পায়। অবশ্য যে সব জিনসেং বন-বাদাড়ে প্রাকৃতিকভাব্ জন্মায় সেগুলোর মূলের গুণাগুণ ছয় বছরের পরও বিদ্যমান থাকে। আমেরিকা এবং ইউরোপে ফাংশনাল ফুড হিসেবে এটি বহুল প্রচলিত। এর বহুমুখী উপকারিতা, ঔষধি গুণের কথা বিবেচনা করে বিশ্বব্যাপী নতুন নতুন উৎপাদন পদ্ধতির উদ্ভাবন চলছে, যাতে করে এই মহামূল্যবান ঔষধিটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পৃথিবীর যে কোনো স্থানে উৎপাদন করা যায়। এর চাষাবাদ বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। মাঠপর্যায়ে মাটিতে চাষাবাদের জন্য সুনির্দিষ্ট নিম্ন তাপমাত্রার প্রয়োজন। কোরিয়ান জিনসেং (Panax ginseng) Araliaceae পরিবারের Panax ধরনের মাংসল মূল বিশিষ্ট বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ প্রজাতি; যা পূর্ব এশিয়ায় বিশেষ করে চীন, কোরিয়া ও পূর্ব সাইবেরিয়ায় ঠান্ডা পরিবেশে জন্মে এবং এর মূলটিই মূলত ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ‘প্যানাক্স’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ panacea থেকে, যার অর্থ হলো All healer or cure all disease বা সর্বরোগের ওষুধ।” জিনসেং মূলের উৎপাদন প্রসঙ্গে ড. সোহায়েল বলেন, ‘জিনসেং কোরিয়ায় এবং বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হলেও এর চাষাবাদ বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। মাঠপর্যায়ে মাটিতে চাষাবাদের জন্য সুনির্দিষ্ট নিম্ন তাপমাত্রার প্রয়োজন। এ ছাড়া এর বৃদ্ধি খুব ধীর, চাষাবাদও বেশ পরিশ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল। এভাবে চাষ করলে চারা থেকে বাজারজাত যোগ্য অবস্থায় পৌঁছাতে কমপক্ষে পাঁচ-সাত বছর লেগে যায়। এটি দূষণ, সংক্রমণ ও কীট-পতঙ্গের আক্রমণ এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন হ্রাসের ঝুঁকিতে থাকে। তাই বিভিন্ন দেশে জিনসেংয়ের চাহিদা মেটানোর জন্য বিকল্প পদ্ধতিতে জিনসেং মূলের টিস্যু থেকে জীবাণুমুক্ত পরিবেশে জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ জিনসেং মূল উৎপাদন করা হয়।’ মহৌষধি জিনসেং-এ রয়েছে প্রায় ৩০ প্রকারের জিনসেনোসাইডস। এ ছাড়া এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, নাইট্রোজেনযুক্ত যৌগ, ফ্যাট-দ্রবীভূতকারী পদার্থ, প্যানাক্সান নামক পেপটাইডোগ্লাইকেন, মিনারেলস প্রভৃতি। জিনসেংয়ে আরো রয়েছে ফেনলিক যৌগ, যার রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ, পলি-অ্যাসিটিলিন যা ক্যানসার কোষ ধ্বংসে ভূমিকা রাখে। জিনসেং স্নায়ুতন্ত্রের ওপর সরাসরি কাজ করে যেমন : মানসিক ক্ষমতা, মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি, কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারার ক্ষমতা, কল্পনাশক্তি, শেখার ক্ষমতা, বিচার বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি ও সমস্যা সমাধান করে কোনো একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ক্ষমতা ইত্যাদি বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া জিনসেং টাইপ ২ ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্টে কার্যকরী বলে প্রমাণিত। বর্তমানে ওষুধের পাশাপাশি প্রসাধন এবং খাদ্যশিল্পে জিনসেং বহুল ব্যবহৃত। যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সাবান-ক্রিম, সানস্ক্রিন, টুথপেস্ট, হেয়ারটনিক, শ্যাম্পু, এনার্জি ড্রিংক, ক্যান্ডি, বিভিন্ন বেভারেজ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

কপিকৃত 

জিনসেং ও অর্শ্বগন্ধা গুনাগুন সহ জেনে নিন

দেশী-বিদেশী লিংক জিনসেং এর ঔষধিগুণ,

  এএনবি ডেক্স : জিনসেং (ইংরেজি ভাষায়: এরহংবহম) অৎধষরধপবধব পরিবারের চধহধী গণের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি মাংসল মূলবিশিষ্ট এক ধরনের বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি উত্তর গোলার্ধে পূর্ব এশিয়াতে, বিশেষ করে চীন, কোরিয়া ও পূর্ব সাইবেরিয়াতে, ঠান্ডা পরিবেশে জন্মে।শক্তিবর্ধক টনিক হিসেবে বিভিন্ন দেশে জিনসেংয়ের প্রচলন আছে। জিনসেং শব্দটা উচ্চারণের সাথে যে দেশটির নাম উচ্চারিত হয় সেটি হলো কোরিয়া। জিনসেংকে অনেকে কোরিয়ান ভায়াগ্রা বলে থাকে। আসলে জিনসেং কী? এরহংবহম হলো গাছের মূল। এই গাছটির নামই এরহংবহম। হাজার হাজার বছর ধরে কোরিয়াতে জিনসেং ওষুধি গুণাগুণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জিনসেং গাছের মূল রোগ প্রতিরোধক এবং ইংরেজিতে বললে বলতে হয় চৎড়ধপঃরাবঃড়ড়ষ রহ ধিৎফরহম ড়ভভ ফরংপধংব। 


জিনসেংকে কোরিয়ানরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকে। এর পুরো মূল সুপে দিয়ে দেয়, সিদ্ধ মূল খেতে হয়। চিবিয়ে চিবিয়ে এর নির্যাস নিতে হয়। জিনসেং দিয়ে মদও তৈরি হয়। 

এছাড়াও জিনসেং-এর রয়েছে নানাবিধ খাদ্য উপকরণ। জিনসেং কোরিয়াতে এবং দেশের বাইরে জনপ্রিয় হলেও এর চাষাবাদ কিন্তু বেশ কঠিন। বর্হিবিশ্বে জিনসেং-এর প্রচুর চাহিদা মেটানোর জন্য কোরিয়ার এুবড়হম ংধহমনঁশ-ফড় প্রদেশের পুঞ্জী এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে জিনসেং-এর সফল চাষাবাদ চলছে সেই ১১২২ খ্রিস্টাব্দ থেকে। 


এই পুঞ্জী এলাকা জিনসেং দেশ হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে পরিচিত। ষোলশো শতাব্দী থেকেই এই এলাকায় জিনসেং খামার গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এটি কোরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত জিনসেং উৎপাদনকারী এলাকা। পুঞ্জীতে ঝড়নবধশংধহ পাহাড়ে ৪০০-৫০০ মিটার উচ্চতায় জিনসেং-এর চাষ করা হয়। পাহাড়ের শীতল আবহাওয়া এবং উর্বর মাটি পুঞ্জী এলাকার জিনসেং-কে বলশালী করে তোলে। প্রতিবছর অক্টোবরের প্রথমদিকে পুঞ্জীতে জিনসেং উৎসব হয়ে থাকে। এই উৎসবে খেত থেকে সদ্য তোলা জিনসেং-এর স্বাদ গ্রহণ করা যায়। পরিভ্রমণকারীরা জিনসেং তুলবার অভিজ্ঞতাও নিতে পারে এই উৎসবে। জিনসেং উৎসবে আয়োজন করা হয় নানা রকম প্রতিযোগিতার। এর একটি হলো দি বেস্ট জিনসেং। অর্থাৎ কোন জিনসেং মূলটি দেখতে সবচে আকর্ষণীয়। এর জন্য ৪টি শর্ত হলো: (১) মূলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং একই সাথে মূলটি দেখতে একজন মানুষের আকৃতির কতটা কাছাকাছি হয়েছে। (২) মূলের বাইরের স্তরের পুরুত্ব এবং মূলের ওজন। (৩) মূলের দৈর্ঘ্য এবং (৪) জিনসেং মূলটির বয়স ছয় বছর হতে হবে। কারণ গাছের বয়স ছয় বছরের উপরে চলে গেলে মূল শক্ত হয়ে যায় এবং এর ওয়ুধি গুণাগুণ হ্রাস পায়। অবশ্য যে সব জিনসেং বন-বাদাড়ে প্রাকৃতিকভাব্ জন্মায় সেগুলোর মূলের গুণাগুণ ছয় বছরের পরও বিদ্যমান থাকে। উৎসবে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী জিনসেং মূল কিনতে চাইলে বিজয়ী খামার মালিকদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।


 তাছাড়া আরেকটি প্রতিযোগিতা হলো জিনসেং কুকার্স কনটেস্ট। এই প্রতিযোগিতা জিনসেংকে খাবার হিসাবে বিভিন্নভাবে ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে আয়োজন করা হয়। এতে মূল চিন্তাধারাকে অক্ষুণœ রেখে সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়। জিনসেং বলদানকারী এক জাতের গাছের মূল, কাজেই সে দিকটা বিবেচনায় রেখে উৎসবে কুস্তি প্রতিযোগতার আয়োজনও করা হয় ।

 অশ্বগন্ধা আমাদের দেশের ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। গাছের গন্ধ ঘোড়া বা অশ্ব এর মত বলেই সংস্কৃতে একে অশ্বগন্ধা বলে। বাংলায় ও আমার অশ্বগন্ধা-ই বলে থাকি। শক্তিবর্ধক হিসেবে এবং এ্যাফ্রোডেসিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলেই ইংরেজিতে একে ওহফরধহ এরহংবহম বলে। ঝড়ষধহধপবধব ফ্যামিলির গাছ অশ্বগন্ধার বৈঙ্গানিক নাম ডরঃযধহরধ ংড়সহরভবৎধ (খ.) উঁহধষ. ডরঃযধহরহব নামক রাসায়নিক উপাদান এই গাছ থেকে আলাদা করার কারণে এই গাছের নামে ডরঃযধহরধ নামকরণ করা হয়েছে। আর ংড়সহরভবৎধ এসেছে ংড়সহরভবৎ থেকে যার মানে নিদ্রা আনয়নকারী। মূল এবং পাতা স্নায়ুর বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত হয়।


 এ গাছ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকায় পাওয়া যায়। নিদ্রা আনয়নকারী ঔষধ হিসেবে প্রচীন মেসোপটেমিয়া এবং মিশরে এর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। অশ্বগন্ধা একটি ছোট গাছ। এটি দুই-আড়াই হাত উঁচু হয়। গাছটি শাখাবহুল। এতে ছোট ছোট মটরের মতো ফল হয়। ওষুধার্থে এর মূল ব্যবহার্য। ভেষজটির নাম একটি প্রাণীর বোধক। আবার তার ক্রিয়াশক্তিরও বোধক। অশ্বের একটি বিশেষ অঙ্গ (লিঙ্গ)। এই ভেষজটির মূলের আকৃতিও অশ্বের লিঙ্গের মতো। আবার এর গাছ-পাতা সিদ্ধ করলে এমন একটা উৎকট গন্ধ বের হয়, যার গন্ধ ঠিক অশ্বমূত্রের গন্ধের মতো। অপরদিকে ক্রিয়াকারিত্বের দিক থেকে অশ্বের যেরকম যৌনক্রিয়ায় অদম্য শক্তি, এই ভেষজটিও মানবদেহে এনে দিয়ে থাকে অশ্বের মতো চলৎশক্তিথ কি কর্মশক্তিতে আর কি ইন্দ্রিয়বৃত্তি চরিতার্থের সামর্থ্যে। এখানে তার বীর্যশক্তি অশ্বের মতো, কন্দ অশ্বের মতো এবং গাছ-পাতা সিদ্ধ গন্ধ অশ্বের মূত্রের মতো হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে 'অশ্বগন্ধ'। 

আয়ুর্বেদ মতে, অশ্বগন্ধের অপর নাম বলদা ও বাজিকরি। সুতরাং অশ্বগন্ধা সেবনে যে দেহের যথেষ্ট পুষ্টি হয়, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। এটি বাজিকরি অর্থাৎ কামোদ্দীপক ও রতিবর্ধক। 

ইন্দ্রিয় শৈথিল্যে এটি একটি শ্রেষ্ঠ ওষুধ। প্রাচীন গ্রন্থ থেকে জানা যায়, সে যুগে বিলাসিনী নারীরা অশ্বগন্ধার মূল বেটে দেহে লেপন করতো, তাতে দেহকান্তির উৎকর্ষ বাড়ত, কামভাব জাগ্রত হতো এবং রতিশক্তি বর্ধিত হতো। অশ্বগন্ধার অন্য কয়েকটি ব্যবহারের কথাও জানা যায়। চক্রদত্ত বলেন, অশ্বগন্ধা গর্ভপ্রদ। ঋতুস্নানের পর বন্ধ্যা রমণী গোদুগ্ধের সঙ্গে সেবন করবে। শোথ রোগে গোদুগ্ধসহ অশ্বগন্ধা বেটে পান করলে উপকার হয়। সুনিদ্রার জন্য অশ্বগন্ধাচূর্ণ চিনিসহ সেব্য। মূল বেটে প্রলেপ দিলে বাত-বেদনা ভালো হয়। একটু গরম করে গ্রন্থিস্ফীতিতে উপকার হয়। ওষুধটি বল, বীর্য, পুষ্টিকারক এবং আগ্নেয় গুণসম্পন্ন।


 ডা. ডি এন চট্টোপাধ্যায় ওষুধটি বহু ক্ষেত্রে ব্যবহার করে ইন্দ্রিয় দৌর্বল্যে যথেষ্ট ফল পেয়েছেন। অনেকে অনেক রোগে ভেলকিবাজি দেখিয়ে থাকেন। এটিও ক্রনিক ব্রংকাইটিসে ভেলকিবাজি দেখানোর মতো একটি ওষুধ। রোগী ক্রমাগত কাশতেই থাকে; কিন্তু কফ বা সর্দি ওঠার কোনো নাম-গন্ধও নেই। অশ্বগন্ধার মূল অন্তর্ধুমে পুড়িয়ে (ছোট মাটির হাঁড়িতে মূলগুলো ভরে সরা দিয়ে ঢেকে পুনঃমাটি লেপে শুকিয়ে ঘুটের আগুনে পুড়ে নিতে হয়। আগুন নিভে গেলে হাঁড়ি থেকে মূলগুলো বের করে গুঁড়ো করে নিতে হয়) ভালো করে গুঁড়িয়ে নিয়ে আধা গ্রাম মাত্রায় একটু মধুসহ চেটে খেতে হয়।




-mail:agronewsbd@gmail.com Cell: 01815-777923 01752-300743 Copyright © 2010 by ‘‘Agro News Of Bangladesh” All Rights Reserved.

জিনসেং কি? কি ভাবে খাবেন? উপকারীতা কি?

জিনসেং কে বলা হয় wonder herbs বা আশ্চর্য লতা। চীনে সহস্র বছর ধরে জিনসেং গাছের মূল আশ্চর্য রকম শক্তি উতপাদনকারী পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও এর রয়েছে নানাবিধ গুন। চীন থেকে কেউ বেড়াতে আসলে সাধারণত দেখা যায় জিনসেং ও সবুজ চা কে গিফট হিসেবে নিয়ে আসতে। সেইরকম একটা গিফট পাওয়ার পরে ভাবলাম যে এই আশ্চর্য লতার গুন কে আসলে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত নাকি এ শুধুই প্রাচীন চাইনিজ মিথ? ঘাটতে গিয়ে পেলাম নানা তথ্য। আমাদের দেশের মানুষেরা এটা সম্পর্কে কম-ই জানেন।তাই জিনসেং সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আজকের পোস্ট। 


জিনসেং : মুলত দুই ধরণের জিনসেং ঔষধি গুনসম্পন্ন হিসেবে পরিচিত- আমেরিকান ও এশিয়ান। এর মধ্যে এশিয়ান জিনসেং অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকরী। এই দুই ধরণের জিনসেং কে বলা হয় প্যানাক্স জিনসেং। 


প্যানাক্স শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ "panacea" থেকে যার অর্থ হলো "All healer" বা সর্ব রোগের ঔষধ। জিনসেং সাদা (খোসা ছাড়ানো) ও লাল (খোসা সমেত) এই দুই রকম রূপে পাওয়া যায়। খোসা সমেত অবস্থায় এটি অধিক কার্যকরী। 



এদের মধ্যে থাকা জিনসেনোনোসাইড নামক একটি উপাদান এর কার্যক্ষমতার জন্য দায়ী। সাইবেরিয়ান জিনসেং নামে আরেক ধরণের গাছ আছে, যা জিনসেং বলে ভূল করা হলেও তা আসলে প্রকৃত জিনসেং না। 


জিনসেং ও লিংগোত্থানে অক্ষমতাঃ -

জিনসেং এর গুনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী যা প্রমানিত তা হলে, পুরুষের লিংগোত্থানে অক্ষমতা রোধে এর ভূমিকা। University of Ulsan এবং the Korea Ginseng and Tobacco Research Institute ৪৫ জন ইরেকটাইল ডিসফাংশন (লিংগোত্থানে অক্ষম ব্যাক্তি) এর রোগীর উপর একটি পরীক্ষা চালান। তাদের কে ৮ সপ্তাহের জন্য দিনে ৩বার করে ৯০০ মিগ্রা জিনসেং খেতে দেয়া হয়, এরপর দুই সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার ৮ সপ্তাহ খেতে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮০% জানান যে, জিনসেং গ্রহনের সময় তাদের লিংগোত্থান সহজ হয়েছে।

 ২০০৭ সনে Asian Journal of Andrology এ ৬০ জন ব্যাক্তির উপর করা এবং Journal of Impotent Research এ ৯০ জন ব্যাক্তির উপর করা অনুরুপ আরো দুটি গবেষনা প্রকাশিত হয়। 

২০০২ সালের একটি গবেষনায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন যে, জিনসেং কিভাবে লিংগোত্থানে সহায়তা করে। পুরুষের যৌনাংগে corpus cavernosum নামে বিষেশ ধরণের টিস্যু থাকে। নাইট্রিক অক্সাইডের উপস্থিতিতে এই টিস্যু রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে লিংগোত্থান ঘটায়। জিনসেং সরাসরি দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমান বাড়িয়ে লিংগোত্থানে সহায়তা করে।

 জিনসেং ও দ্রুত বীর্যস্খলনঃ-

 যদিও কাচা জিনসেং এর মূল এই রোগে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানা যায়না তবে জিনসেং এর তৈরী একটি ক্রীম (ss cream) পুরুষদের দ্রুত বীর্যস্খলন রোধে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হয়ে আসছে যা মিলনের একঘন্টা আগে লিঙ্গে লাগিয়ে রেখে মিলনের আগে ধুয়ে ফেলতে হয়। Journal of Urology তে ২০০০ সনে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী এটি বীর্যস্খলনের সময় কাল কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বাড়ায়। 


আসলে, জিনসেং শব্দটাই এসছে চাইনিজ শব্দ "রেনসেং" থেকে। "রেন" অর্থ পুরুষ ও "সেন" অর্থ "পা", যৌনতা বৃদ্ধিতে এর অনন্য অবদান এর জন্যই এর এইরকম নাম (অবশ্য এটি দেখতেও পা সহ মানুষের মত)। জিনসেং ও cognitive function: cognitive function বলতে বুঝায় বিভিন্ন মানসিক ক্ষমতা যেমন মনযোগ, স্মৃতিশক্তি, কথা শোনার সাথে সাথে বুঝতে পারার ক্ষমতা,কল্পনাশক্তি, শেখার ক্ষমতা, বিচারবুদ্ধি, চিন্তা শক্তি ও সমস্যা সমাধান করে কোন একটা সিদ্ধান্তে পৌছানোর ক্ষমতা। সোজা ভাষায় বলতে গেলে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি। জিনসেং স্নায়ুতন্তের উপর সরাসরি কাজ করে মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 


২০০৫ সনে Journal of Psychopharmacology তে প্রকাশিত গবেষনা অনুযায়ী ৩০ জন সুস্বাস্থ্যবান যুবার উপর গবেষনা করে দেখা গিয়েছে যে জিনসেং গ্রহন তাদের পরীক্ষার সময় পড়া মনে রাখার ব্যাপারে পজিটিভ ভূমিকা রেখেছিল। একই জার্নালে ২০০০ সালে করা একটি গবেষনা, যুক্তরাজ্যের Cognitive Drug Research Ltd কর্তৃক ৬৪ জন ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা এবং চীনের Zhejiang College কর্তৃক ৩৫৮ ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ ব্যাক্তির স্মরণশক্তি ও সার্বিক বৃদ্ধিতেও সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। 


২০০৫ সনে Annals of Neurology তে প্রকাশিত ইদুরের উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মস্তিষ্কের কোষ বিনষ্টকারী রোগ যা স্মৃতিশক্তি বিনষ্ট করে (যেমন পারকিন্সন ডিজিজ, হান্টিংটন ডিজিজ ইত্যাদি) সেসব প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।


 জিনসেং ও ডায়াবেটিসঃ - 


২০০৮ সনে ১৯ জন টাইপ ২ ডায়বেটিস এর রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং টাইপ ২ ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্টে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে।


 জিনসেং ও কোলেস্টেরলঃ- 

 Pharmacological Research এ ২০০৩ সালে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী, দিনে ৬ মিগ্রা হারে ৮ সপ্তাহ জিনসেং গ্রহণ খারাপ কোলেস্টেরল যেমন- total cholesterol (TC), triglyceride (TG) ও low density lipoprotein (LDL) এর মাত্রা কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরল (High Density Lipoprotein বা HDL) এর মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। 


জিনসেং ও ফুসফুসের রোগঃ- 

Chronic Obstructive Pulmonary Disease(COPD) হচ্ছে ফুসফুসের অন্যতম কমন রোগ। এই রোগীদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকে কফ থাকে ও কারো কারো ফুসফুসের ক্ষয় ঘটে। Archive of Chest Disease এ ২০০২ সনে প্রকাশিত ৯২ জন রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী ১০০মিগ্রা ডোজে ৩ মাস জিনসেং গ্রহণে সার্বিক ভাবে COPD এর অবস্থার উন্নতি হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। 


জিনসেং ও ত্বকঃ-  

 জিনসেং বিভিন্ন এন্টি-এজিং ক্রীম ও স্ট্রেচ মার্ক ক্রীম এ ব্যবহৃত হয়। এইসব ক্রীম ত্বকের কোলাজেন এর উপর কাজ করে ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধ করে ও গর্ভবতী নারীদের পেটের ত্বক স্ফীতির কারণে তৈরী ফাটা দাগ নিরসন করে। তবে এটির জন্য জিনসেং এর ভূমিকা কতটুকু ও ক্রীমে থাকা অন্যান্য উপাদানের ভূমিকা কতটুকু তা জানা যায়নি। 


জিনসেং ও ক্যান্সারঃ-- 


 জিনসেং ক্যান্সার নিরাময় করতে না পারলেও আমেরিকার ম্যায়ো ক্লিনিক ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা বলছেন, ক্যান্সারে ভুগছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা কাটাতে জিনসেং সহায়ক। ৩৪০ রোগী নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, ৮ সপ্তাহ ধরে উচ্চমাত্রার জিনসেং ক্যাপসুল সেবন করেছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা অন্যান্য পদ্ধতির চিকিৎসা গ্রহণকারীদের তুলনায় অনেক কমেছে।


 জিনসেং ও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ - 


একটি গবেষনায় ২২৭ ব্যক্তির উপর ১০০মিগ্রা দিনে এক বার করে ১২ সপ্তাহ এবং আরেকটি গবেষনায় ৬০ ব্যাক্তির উপর ১০০মিগ্রা দিনে ২বার করে ৮ সপ্তাহ জিনসেং প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে যে তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো ( যেমন T Helper cell, NK Cell, Antibody ইত্যাদি) কার্যকর পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। তার মানে জিনসেং রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। 


জিনসেং ও আরো কিছু রোগঃ- 


 মেয়েলি হরমোন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বৃদ্ধি ও শক্তি বর্ধক এনার্জি ড্রিংক হিসেবে জিনসেং দারুন কার্যকরী। জিনসেং রক্ত তরল করে স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। আরো কয়েকটি রোগ নিরসনে জিনসেং ভূমিকা রাখে বলে লোকজ ব্যবহার হতে জানা গিয়েছে। 


বিজ্ঞানীরা এই রোগ গুলোর ক্ষেত্রে গবেষনা করে জিনসেং এর কার্যকরীতা অস্বীকারও করেন নি আবার নিশ্চিত ভাবে মেনেও নেননি। এইসব রোগের মধ্যে আছে, সরদি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্যান্সার (পাকস্থলি, ফুসফুস, যকৃত, ত্বক, ডিম্বাশয়), রক্তশূণ্যতা, বিষন্নতা, পানি আসা, হজমে সমস্যা ইত্যাদি। 


ব্যবহারবিধিঃ -  


University of Maryland Medical Center এর মত অনুযায়ী এশিয়ান জিনসেং পূর্নবয়স্করা ২-৩ সপ্তাহ টানা খেয়ে ২ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারবেন। 


আমেরিকান জিনসেং টানা ৮ সপ্তাহ খেয়ে ২ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খেতে পারবেন। যেহেতু এটি একটি অতি কার্যকরী ওষুধ, তাই দীর্ঘদিন ব্যবহারের কোন রকম ক্ষতি হতে পারে ভেবে এটি বেশিদিন ব্যবহার করতে মানা করা হয় (যদিও দীর্ঘ ব্যবহারে ক্ষতির কথাটার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই).. 


জিনসেং সাধারণত ট্যাবলেট, পাউডার, ড্রিঙ্কস হিসেবে খাওয়া হয়, এবং এদের গায়েই ব্যবহারবিধি লেখা থাকে। 


ট্যাবলেট বা পাউডার এর জন্য ডোজঃ University of Michigan Health System এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি ও লিংগ উত্থান এর জন্য ৯০০ মিগ্রা পাউডার করে দৈনিক ৩ বার, শক্তি বা স্ট্যামিনা বৃদ্ধি ও ডায়বেটিস এর জন্য এর ডোজ হলো ২০০ মিগ্রা পাঊডার করে দিনে ১ বার, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১০০ মিগ্রা করে দিনে ২ বার। ss cream এর জন্য ডোজ হলো ০.২ মিগ্রা। সরাসরি মূল খেলে ০.৫-২ গ্রাম মুল খাওয়া যাবে দৈনিক ১ বার। মূল কিনে খাওয়া টাই সবচেয়ে সাশ্রয়ী হয়। মূল টা চিবিয়ে খাওয়া যায়, গুড়া করে জিভের নীচে রেখে দিয়ে খাওয়া যায়, পানিতে এক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে পানি সহ খাওয়া যায় অথবা পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে পানি সহ খাওয়া যায়। 





পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ-  


 জিনসেং এর সবচেয়ে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিকৃয়া হলো ঘুমের সমস্যা। আগেই বলেছি, জিনসেং স্নায়ুতন্ত্র কে উত্তেজিত করে ও মানসিক ক্ষমতা বাড়ায়। উত্তেজিত স্নায়ুর কারণে ঘুম আসতে দেরি হয়, যেমন টা হয় কফি খাওয়ার পরে। 


অন্যান্য সাধারণ সমস্যার মধ্যে আছে ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, হার্ট বিট বাড়া এবং ব্লাড প্রেশারে তারতম্য হওয়া (সাময়িক)। 


যারা খাবেন নাঃ-- 

 বাচ্চা, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের এটা খেতে নিষেধ করা হয়। জিনসেং স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে তাই স্নায়ুর উপর কাজ করে এমন অন্য কোন ওষুধ (যেমন ঘুমের অষুধ, বিষন্নতার ওষুধ ইতাদি) এর সঙ্গে এটা খাওয়া উচিত না, নয়ত স্নায়ু অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে যাবে। জিনসেং রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করে, তাই হার্টের রোগীরা যারা ইতমধ্যে রক্ত তরল করার অন্যান্য ওষুধ ( যেমন heparin and warfarin) খাচ্ছেন, তারা এদের সঙ্গে জিনসেং খাবেনা না। 


জিনসেং ব্লাড সুগার কমাতে সহায়তা করে, তাই ডায়বেটিস রোগীদেরো ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এটা খাওয়া উচিত যাতে ওষুধের সাথে জিনসেং গ্রহণে সুগার যেন বেশি কমে না যায়। অতিকর্মক্ষম রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে কিছু রোগ হয়, যেমন multiple sclerosis (MS), lupus (systemic lupus erythematosus, SLE), rheumatoid arthritis (RA) এদের বলা হয় Auto-immune disease।


 জিনসেং যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাই সাধারণ মানুষ এতি খেলে উপকৃত হবে কিন্তু Auto-immune disease এর রোগীদের খাওয়া উচিত না। জিনসেং মেয়েলি হরমোন ইস্ট্রোজেন এর পরিমাণ বাড়ায়, তাই যাদের হরমোনের সমস্যা আছে তাদের এটা খাওয়া উচিত কিন্তু যাদের ব্রেস্ট, জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার আছে তাদের খাওয়া উচিত নয় কারণ অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন এইসব ক্যান্সারে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখে। 


জিনসেং ব্লাড প্রেশারেও তারতম্য ঘটায় তাই হাই ও লো প্রেশারের রোগীদেরো নিয়মিত খাওয়া উচিত না। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, জিনসেং এর ভালো গুনগুলোর কারণেই আসলে একে সতর্ক ভাবে গ্রহণ করা উচিত (যদিও উপরের আশংকা গুলো কোনটাই বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত না)। উপসংহারঃ জিনসেন এর গুন বর্ণনা করে বলা হয় যে এটি "Adaptogen" অর্থাৎ এটি সব পরিস্থিতির সাথে Adapt করাতে পারে বা খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারে মানুষের দেহে শারিরীক শক্তি-সামর্থ্য, মানসিক ক্ষমতা, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সব বেড়ে মানুষ কে সব পরিস্তিতির সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে।



সংকলক
Abdullah bhuiyan 

 প্রয়োজনে যোগাযোগ 

০০৯৬৬৫০৪৯৬৭৮৬৩ 

০১৮২৯৩১৮১১৪

মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০১৭

তাওয়াফের ২ রাকাত নামাজ অাদায়ে সতর্কতা অবলম্ভন জরুরী


তাওয়াফের ২ রাকাত নামাজ অাদায়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
  -------m m abdullah dhuiyan ----
হজ্ব বা  ওমরাহ তাওয়াফ  শেষে ২ রাকাত নফল নামাজ অাদায় করা সুন্নত,এ ২ রাকাত নামাজ মোকামে ইব্রাহিম বরাবর সহ মসজিদুল হারামের যে কোন স্হানে অাদায় করা যায়। এমনকি  কেউ ভুলে ২ রাকাত অাদায় ব্যতিরেকে সাফা মারওয়াহ সায়ী করার পর স্বরন হওয়া মাত্র অাদায়  করে নিবে।যদিও মসজিদুল হারাম  থেকে বাহির হওয়ার পর স্বরন হয়।যেমনটি  ওমর রাঃ করেছিলেন। তাওয়াফের ২ রাকাত মোকামে  ইব্রাহীমে পডতেই  হবে বাধ্যতা মুলক তা না।

কিন্তু অনেক হাজি সাহেবানদের দেখা যায় যে,তারা  লক্ষ  লক্ষ হাজিদের প্রচন্ড ভিডের মধ্যে ও মোক্বামে  ইব্রাহিমের পাশে তাওয়াফ  শেষে ২ রাকাত নামাজ অাদায় করতে চায় কিন্তু এটা মারাত্বক ভুল।এটা অজ্ঞতা ছাডা কিছুনা।

একে  তো প্রচন্ড ভীডের কারনে অযথা জ্যাম সৃষ্টির কারন হয়,মানুষ কষ্ট পায়, যা হারাম।

দ্বিতীয়ত নামাজের একাগ্রতা নষ্ট হয় ধীরস্হির ভাবে দাডিয়ে,ঠিক ভাবে রুকু সেজদাহ করার সুযোগ ও থাকেনা।

তৃতীয়ত প্রচন্ড ভীডের কারনে পদধলীত হয়ে নিজের প্রাণ নাশের হুমকি থাকে।

সুতরাং  হজের মৌসুমে কেউ মোকামে ইব্রাহিম বা তার অাশ পাশে  নামাজ অাদায় করতে হুশিয়ার থাকার  অনুরোধ করছি।
তাছাডা রমজান/হজ্ব মৌসুম ছাডা  সারা বছর মোকামে ইব্রাহিম সহ কাবার পাশে, হাতিমে কাবায় নামাজ পডার সুযোগ অাছে।কিন্তু হজ্ব মৌসুম/ রমজানে ভীডের সময় সতর্কতা অবলম্ভন জরুরী।এবং দুরবর্তি নিরাপদ জামেলামুক্ত স্তানে ধীরস্হির ভাবে নামাজ পডা বুদ্ধিমানের কাজ।