Translate

মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৫

৬ষ্ঠ রত্ন:- আল্লাহর ৯৯ গুনবিশিষ্ট নামগুলি ১০০% জাহেলিয়াতের প্রভাব মূক্ত

৬ষ্ঠ রত্ন:- আল্লাহর ৯৯ গুনবিশিষ্ট নামগুলি ১০০% জাহেলিয়াতের প্রভাব মূক্ত
গত ৩ জুলাই 2015 নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে তথাকথীত সাংবাদিকও কলামিষ্ট্ খ্যাত আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছিলেন, যে "আজকের আরবি ভাষায় যেসব শব্দ, এর সবই তৎকালীন কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, এর সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম।সে বলেছিল যে,তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল"। নাউযুবিল্লাহ ।
প্রিয় দেশবাসী মুসলিম ভাইবোনেরা আপনারা সকলেই অবগত আছেন এই পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক আল্লাহদ্রোহী ভন্ড,জাহেল-মূর্খ, মুরতাদদের আবির্ভাব ঘটেছিল,ইসলামের আলোকে নিভিয়ে ফেলার জন্য।কিন্তু কোন বেঈমান-কাফেরের দল ইসলামের চুল পরিমান ও ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়নি।বরং তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।যারাই ইসলামের আলোকে নিভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করবে তারাই এর আগুনে পুড়ে ছারখার হতে বাধ্য। ।এই সকল মুরতাদদের কথার সত্যতার বিন্দুমাত্রও এর অবকাশ নেই।যারা নিজের স্রষ্টাকে অস্বীকার করে তাদের চেয়ে অপদার্থ আর কেউ আছে বলে মনে হয়না।কাজেই কেউ যেনএই ধরণের আগাছাদের কথায়  বিভ্রান্তী না হন এই জন্যই আমার এ প্রয়াস ।এবার আসা যাক মূল কথায়
১* আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহ ১০০%জাহেলিয়াত মূক্ত কারণ অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমানীত
যখন ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে রাহমান ,রাহীম,গাফুর, রাজ্জাক,হাইয়ূল-ক্বাইয়ূম ইত্যাদী আল্লাহর গুনবাচক নাম গুলো উচ্ছারণ করতেন তখনি কাফেররা বলত ماالحى القيوم؟ ماالرحمن؟ماالرحيم ؟ما الغفار ؟   অর্থাৎ ؟ কে রাহমান ?কে রাহীম ? কে গাফুর ? কে রাজ্জাক?  ইত্যাদী,
 মূলত কাফেররা এই সকল নাম সম্পর্কে কোন প্রকারের অবগতও ছিলেন না। যদি দেবতাদের নাম হত, বা আগে  থেকে অবগত থাকত তাহলে তারা এ প্রশ্ন কখনই করতেন না যে, কে রাহমান ?কে রাহীম ? কে রাজ্জাক ইত্যাদী।অবশ্যই আল্লাহর মূল নাম "আল্লাহ" সম্পর্কে সকলেই অবগত ছিলেন।কিন্তু গুনবাচক নাম সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিলনা।
২ * ইসলাম ধর্ম, দেবতা তথা মূর্তি পুজাকে বিশ্বাস তথা  এলাউ করেনা , ইসলামে দেবতা পুজার কোন স্হান নেই। আপনারা যারা ইতিহাস জানেন তাদের ও আবশ্যই জানা থাকার কথা যে আজকে যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ধর্ম সহ অন্যান্য ধর্মে দেবতা পুজার যে হিড়িক চলছে, ঐ সকল ধর্মের মূল গ্রন্হেই বর্ণিত আছে যে মূর্তি দেবতা  পুজা নট এলাউ । সেখানে ইসলাম ধর্মে আল্লাহর গুনবাচক নাম কে দেবতাদের নাম বলে মানুষ কে বিভ্রান্তি করার অপকৌশল মাত্র ।
পবিত্র কোরআনে পূর্ণাঙ্গ একটি সুরাই অবতীর্ণ করা হয়েছে ," সূরায়ে কাফেরুন"   যেখানে দেবতা পুজাকে  সম্পূর্ন ভাবে  প্রত্যাখান করা হয়েছে ।
যেমন এরশাদ হচ্ছে  قل يا ايهاالكافرون لا اعبد ماتعبدون   ولا انتم عبدون ما اعبد অর্থাৎ  1 বলুন  ( হে নবী) হে কাফেরকুল 2 আমি এবাদত করিনা ,তোমরা যার এবাদত কর ।  3 এবং তোমরাও এবাদত কারী নও , যার এবাদত আমি করি । 4 এবং আমি এবাদতকারী নই যার এবাদত তোমরা কর। 5 তোমরা এবাদতকারী নও যার এবাদত আমি করি 6 তোমাদের কর্ম  ও কর্ম  ফল তোমাদের জন্য  এবং আমার কর্ম ও কর্মফল  আমার জন্যে ।
এই পূর্নাঙ্গ একটি সুরা সহ অন্যান্য আয়াতে  দেবতা পুজাকে  যেখানে সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাখান করা হয়েছে ,সেখানে আল্লাহর ৯৯ নাম দেবতাদের নাম হয় কি করে ? এই আগাছাদের জানা দরকার ।
এই সুরার শানে নুযুল দেখলে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বর্নণা করেন ,একবার তৎকালীন  মক্কার বড বড কাফেরদের লীডার যেমন ওলীদ ইবনে মুগীরা ,আস ইবনে ওয়ায়েল, আসওয়াদ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ও উমাইয়া ইবনে খলফ  প্রমুখ মক্কার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কয়েকজন রাসুল সাঃ এর কাছে এসে  প্রস্তাব দিল।
আসুন আমরা পরস্পরের মধ্যে এই শান্তি চুক্তি করি যে, একবছর আপনি আমাদের উপাস্য তথা দেবতাদের এবাদত করবেন এবং এক বছর আমরা আপনার উপাস্যের  তথা আল্লাহর  এবাদত করব । ( কুরতুবী ) মারেফুল কোরআন বাংলা পৃঃ 1479 ।
 এর পরিপেক্ষিতে জিবরাইল আঃ এই পূর্নাঙ্গ সূরা নিয়ে আল্লাহর পক্ষথেকে হাজির হলেন এবং কাফেরদের এই সকল ক্রিয়া-কর্মের সাথে সম্পূর্ন স্মপর্কচ্ছেদ ও ভয়কট করার নির্দেশ দিলেন এবং আল্লাহর অকৃত্রিম ভালবাসা ও এবাদতে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছন।
এখানে আগাছাদের কাছে প্রশ্ন যদি আল্লাহর ৯৯ নাম দেবতাদের নামই হতো তাহলে কাফেরদের প্রস্তাব মেনে নিলেইতো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। কাফের মুশরীকদের সাথে এত যুদ্ধ করতে হতোনা আবার নবী সাঃ তাঁর প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে মদীনাতে হিজরত করতে হতোনা।সুতরাং এতে কারো বুঝতে কষ্ট হবেনা যে দেবতাদের নাম ও আল্লাহর গুনবাচক নাম সম্পর্নই ভিন্ন।
৩ * একবার কাফের /মুশরিকরা  নবী সাঃ থেকে আল্লাহর বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল অথবা অন্য রেওয়াতে এসেছে  মুশরিকরা আল্লাহর প্রিয় হাবীব সাঃ এর কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে আল্লাহ কিসের তৈরী? স্বর্নরৌপ্প অথবা অন্য কিছুর থেকে তৈরী ? তখন তাদের জবাবে সুরায়ে এখলাস সমপূর্ন অবতীর্ণ হয়। আর বলা হয় "আল্লাহ"হলেন তিনি, যিনি একক অদ্বিতীয় যার কোন শরীক নেই যার কোন মাতা পিতা নেই , তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকে ও কেউ জন্ম দান করেননি। কারন সন্তান প্রজনন সৃষ্টির বৈশিষ্ট স্রষ্টার নয় । তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কেউ তাঁর সমতূল্য নয় এবং আকার আকৃতিতে কেউ তাঁর সাথে সামঞ্জস্য রাখেনা ।  তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তিনিই হলেন আল্লাহ ।
আর দেবতা বলা হয় যার শরীক আছে যাদের ছেলে-মেয়ে আছে, যাকে জন্ম দান করেছেন কেউ ,তিনিও কাউকে জন্ম দিয়েছেন। তাছাড়া দেবতা তথা মূর্তি গুলো কোন এক সময় মানুষ ছিল, তাদের মৃত্যুর পর ভক্তরা তার মূর্তি বানিয়ে তাদের পুজা শুরু করে দিয়েছে ।। ইসলাম তথা  মুসলমানগন  মানব পুজা করেনা ।
মুসলমান এমন দেবতাদের এবাদত করেনা ।যাকে শরিয়তে ইসলামে শীর্ক ও হারাম করা করা হয়েছে ।
৪*অপর দিকে আল্লাহর গুনবাচক নাম আর-রাহমান  এরالرحمن পরিচয় দেয়ার জন্য কোরআন মজীদের পূনাঙ্গ একটি সূরা,সূরা আর-রাহমান অবতীর্ণ করা হয়েছে।কারণ তৎকালীন মক্কার কাফেররা আল্লাহ তায়ালার এই নাম সমপর্কে অবগত ছিলনা।তাই মুসলমানদের মুখে "রাহমান"নাম শুনে ওরা বলাবলি করত:وماالرحمن  রহমান আবার কি?সুতরাং কাফেরদের অবহিত করার জন্য সূরার শুরুতে এই নাম ব্যবহার করা হয়েছে।এবং অত্র সুরার প্রথম থেকেই শেষ পর্যন্ত ৭৮টি আয়াতে মূলত সেই "রাহমান"এর পরিচয় গুনাবলী,কুদরত,বৈশিষ্ট আর ক্ষমতার কথা বর্নণা করা হয়েছে। সুতরাং রাহমান সহ আল্লাহর প্রসিদ্ধ ৯৯ নামের সাথে দেবতা-মুর্তির নামের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ।আললাহ যেমন অবদী আল্লাহর সকল নাম ও অবদী, তাছাড়া আল্লাহর এ প্রসিদ্ধ ৯৯ নাম ছাড়া আরও প্রায় ৩ হাজার বা ১০ হাজার গুনবাচক নামের কথা বিভিন্ন ওলামাদের (নুর ইসলাম আদীবওওলীপুরী )মুখে শুনে থাকি,সবই আল্লাহর জন্য প্রজোয্য,যদিও তা আমাদের জানা নেই।
 ঐসকল খোদাদ্রোহী নাস্তিকদের প্রতি জিজ্ঞাসা আল্লাহর গুনবাচক নাম গুলো দেবতাদের নাম হয় কি ভাবে ?যেমন ধরুন আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহের একটি" حى القيوم" অর্থাৎ যিনি জিবীত এবং চিরন্জীব।পৃথিবীতে এমন কোন দেবতার কি অস্হিস্ত আছে যে,যিনি জিবীত এবং চিরজিবী ?
তাহলে এটা দেবতার নাম হয় কি ভাবে ؟
আল্লাহর অপর গুনবাচক নাম যেমন "خالق"  সৃষ্টি কর্তা  অর্থাৎ ভূমন্ডল-নবমন্ডলে  মানব দানব আসমান জমিন গ্রহ -নক্ষত্র সহ সব কিছুরই যিনি সৃষ্টি কর্তা ।
পৃথিবীতে যারা দেবতা পুজক তারাও আজ পর্যন্ত এই কথার দাবী করার সাহস পায়নি  যে তাদের দেবতা  ছোট একটি মশা মাছি আর পিপিলীকার মত ছোট্ট প্রানী সৃষ্টি করেছে ।তাহলে خالق দেবতার নাম হয় কি ভাবে?তেমনি ভাবে "الصمد"  অর্থাৎ অমুখাপেক্ষী । আল্লাহ  যিনি মানব দানব তথা সৃষ্টি কুলের মত কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী নয়।
পৃথিবীতে এমন কোন দেবতা আছে কি? যে কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নয় ? প্রথমত দেবতার অস্হিত্বের জন্য মাটি, পাথর,রং, অলংকার,পোশাক,আর মানবের হাতের স্পর্শের মুখাপেক্ষী। মানবের হাতের তৈরী এ মূর্তি বা দেবতা কি ভাবে الصمد "অমুখাপেক্ষী"আল্লাহর এ গুনবাচক নাম ধারণ করতে পারে?
এই সকল নাস্তিকদের প্রতি জিজ্ঞাসা ।এইভাবে আল্লাহর অন্যান্য গুনবাচক নামও একই ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখুন,এমন কোন একটা নাম পাওয়া যাবেনা যেটা দেবতাদের নামের সাথে সামান্যতম্ সামঞ্জস্য রাখতে সক্ষম।এখানে এক্ষুদ্র লেখনিতে তা বিশ্লেষন সম্ভব না।আক্বলমন্দ কে ইশারাই যথেষ্ট।
৪* আল্লাহর ৯৯ নাম  গুলো কি ?  যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন
     ولله الاسماء الحسنى فادعوه بها وذروااللذين يلحدون فى اسمائه سيجزون  ما كانوا يعملون
অর্থাৎ  আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সেই নাম ধরেই তাকে ডাক। আর তাদের বর্জন কর ,যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃত কর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।আল আরাফ -আয়াত ১৮০ ।উক্ত আয়াতে মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদেরকে তাঁকে তাঁর সুন্দরতম নাম দিয়ে স্বরণ করতে বলেছেন।
মূল "আল্লাহ" শব্দ হল আল্লাহর জাতী নাম ।আর আল্লাহ জাল্লাহ শানুহুর ৯৯ নামের কিছু নাম এসেছে আল্লাহর নিজের পছন্দে যা কোরআনুল করিমে আল্লাহ নিজেকে নিজে অভিহিত করেছেন, কিছু এসেছে জিব্রায়িল ফেরেশতার পরামর্শে। যা হাদীসে রসুল সা্ঃ দ্বারা প্রমানীত এ নাম গূলো সম্পর্কে পৃথিবীবাসী কখনো এর পূর্বে ওয়াকেফহাল ছিলেননা একমাত্র এটা দ্বীনিয়াল্ ইসলামের বৈশিষ্ট। ৯৯ নামের হাদিসটি আবু হোরায়রা (রা) বর্ণিত, এর সনদ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাছাড়া আরও অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমানীত যে , আল্লাহর ৯৯ নাম দ্বারা তাকে ডাকার জন্য বলেছেন।যেমন আবু হোরাইরাহ রাঃ থেকে এক দীর্ঘ হাদিসে  সেই ৯৯ নামের  বর্ণনা পাওয়া যায় নিন্মে হাদিসটি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করা হল ।
عن أبي هريرة ، رضي الله عنه ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : " إن لله تسعا وتسعين اسما مائة إلا واحدا ، من أحصاها دخل الجنة ، وهو وتر يحب الوتر " .
أخرجاه في الصحيحين من حديث سفيان بن عيينة ، عن أبي الزناد ، عن الأعرج ، عنه رواه البخاري ، عن أبي اليمان ، عن شعيب بن أبي حمزة ، عن أبي الزناد به وأخرجه الترمذي ، عن الجوزجاني ، عن صفوان بن صالح ، عن الوليد بن مسلم ، عن شعيب فذكر بسنده مثله ، وزاد بعد قوله : " يحب الوتر " : هو الله الذي لا إله إلا هو الرحمن الرحيم ، الملك ، القدوس ، السلام ، المؤمن ، المهيمن ، العزيز ، الجبار ، المتكبر ، الخالق ، البارئ ، المصور ، الغفار ، القهار ، الوهاب ، الرزاق ، الفتاح ، العليم ، القابض ، الباسط ، الخافض ، الرافع ، المعز ، المذل ، السميع ، البصير ، الحكم ، العدل ، اللطيف ، الخبير ، الحليم ، العظيم ، الغفور ، الشكور ، العلي ، الكبير ، الحفيظ ، المقيت ، الحسيب ، الجليل ، الكريم ، الرقيب ، المجيب ، الواسع ، الحكيم ، الودود ، المجيد ، الباعث ، الشهيد ، الحق ، الوكيل ، القوي ، المتين ، الولي ، الحميد ، المحصي ، المبدئ ، المعيد ، المحيي ، المميت ، الحي ، القيوم ، الواجد ، الماجد ، الواحد ، الأحد ، الفرد ، الصمد ، القادر ، المقتدر ، المقدم ، المؤخر ، الأول ، الآخر ، الظاهر ، [ ص: 515 ] الباطن ، الوالي ، المتعالي ، البر ، التواب ، المنتقم ، العفو ، الرءوف ، مالك الملك ، ذو الجلال والإكرام ، المقسط ، الجامع ، الغني ، المغني ، المانع ، الضار ، النافع ، النور ، الهادي ، البديع ، الباقي ، الوارث ، الرشيد ، الصبور

ثم قال الترمذي : هذا حديث غريب وقد روي من غير وجه عن أبي هريرة [ رضي الله عنه ] ولا نعلم في كثير من الروايات ذكر الأسماء إلا في هذا الحديث .
মূলত:এই নাম গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বিশেষ ক্ষমতা মাহাত্য ও কুদরতের বহিঃপ্রকাশ করে থাকেন ।
তাছাড়া উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখায়  (মুফতি শফি ছাঃ রাহঃ তফসীরে মারেফুল কোরআন বাংলা সংস্করণ   মাওঃ মহিউদ্দিন খান কতৃক ৫০৬ পৃঃ ) বলেছেন  এই নিদ্দিষ্ট নাম  গুলি যদি আল্লাহ ছাডা অপর কারো ক্ষেত্রে ভ্রান্ত বিশ্বাসের  ভিত্তিতে হয় ,যাকে এসব শব্দ সম্বোধন করা হচ্ছে তাকেই যদি খালেক কিংবা রায্যাক মনে করা হয় ,( যেমনটি আঃ গাফ্ফার চোধুরী বলেছেন  এই নাম গুলি দেবতাদের নাম ) তাহলে তা সম্পূর্ণ কূফর। (অর্থাৎ কাফের হয়ে যাবে ) ।আর বিশ্বাস যদি ভ্রান্ত না হয়, শুধু অমনোযোগিতা কিংবা না বুঝার দরুন কাউকে খালেক ,রায্যাক রাহমান কিংবা সুবহান বলে ডাকা হয়, যেমনটি ( যেমনটি আঃ গাফ্ফার চোধুরী বলেছেন  এই নাম গুলি দেবতাদের নাম )  তাহলে তা যদি ও কুফর নয়, কিন্তু শেরেকী সূলভ শব্দ হওয়ার কারনে কঠিন পাপের কাজ ।(  মারেফুল কোরআন বাংলা বঙ্গানুবাদ  মহিউদ্দিন খান কৃত  ৫০৬ পৃঃ ) অর্থাৎ শির্ক হওয়ার কারনে বিনা তাওবায় ক্ষমা যোগ্য নয় ।
৫*তৎকালীন আইয়্যামে জাহেলিয়াতে
কাবা শরীফে ৩৬০টির মত মূর্তি ছিলো তাদের নামের সাথে আল্লাহর ৯৯ নামের কোনো দূরতম সম্পর্ক নেই,   হুবাল,লাত ,উজ্জা, মানাত, অবগাল ,দুল খালসা, , মালাকবেল, এল্লাহ নেব, নের্গাল,সিন সুয়া, ইগুছ,নছর, নুহা, সুয়া, রুভা , ‘ছাফা’ পর্বতে ‘এসাফ’ এবং ‘মারওয়ায়’ ‘নায়েলা’ইত্যাদি।
শুধু "এল্লাহ" নামটি আল্লাহর নামের কাছাকাছি, কিনতু এল্লাহ দেবতার নাম হলেও কাফেররা "আল্লাহ"কে আল্লাহই ডাকতো। আর দেবতাদের ডাকতো আল্লাহ পর্যন্ত পৌছার মাধ্যম হিসাবে ।সেই কারণে আমরা দেখতে পাই জাহেলিয়াত যুগেও আবদুল ওজজাহ আবদুল লাত মুলত দেবতাদের নামের সাথে মিল রেখেই নাম রাখতো মুশরেকরা, আবার  আবদুল্লাহ যেমন আমাদের নবী সাঃ এর পিতার নাম ছিল ।আরও অনেকেই এনাম রেখেছিল ।কিন্তু আল্লাহর মূল নামের সাথে পরিচিত থাকলেও গুনবিশিষ্ট নামের সাথে পরিচিত ছিলনা তাইতো প্রশ্ন করেছিল  ما الرحمن؟ماالرحيم؟ কে রাহমান ?কে রাহীম ? ইত্যাদী।
কিনতু আল্লাহর গুনবাচকতায় বিভিন্নতা ছিলো। কিন্তু  শাব্দিক উচ্চারণে একই আল্লাহ শব্দে আল্লাহকে ডাকতো কাফেররা এবং মুসলমানরা, কিন্তু ৯৯ বা ততোধিক নামের গুনবাচকতার অর্থে মুসলমানদের আল্লাহ আলাদা ।
দেবতাদের যে নামেই ডাকা হতনা কেন, সেগুলি কখনো আল্লাহর নাম ছিলনা। দেবতাদের নাম থেকে আল্লাহর নাম এডাপ্ট করা হয়নি।  আর আল্লাহর নাম জাহেলিয়াত যুগে ও আল্লাহই ছিল ।
আবার নাস্তিকদের কেউ বলেন যে "আল্লাহ" শব্দটা নাকী জাহেলিয়াতের শব্দ তারা বলে থাকেন যে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এর পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ, আবদ+আল্লাহ= আব্দুল্লাহ। আরবী আবদ অর্থ- দাস, অর্থাৎ আল্লাহর দাস। কিন্তু কোন্ আল্লাহর দাস? তখন তো মক্কায় ইসলাম প্রচার হয়নি। অর্থাৎ মক্কার কুরাইশরা সবাই ছিল মূর্তি পুজক?
আসলে আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের মক্কার সেই কাফেরদের সংস্কৃতি থেকে আসেনি,    আল্লাহ যেমন আজলী-আবদী তেমনি আল্লাহর নাম ও আজলী-আবদী
 বরং আল্লাহ শব্দটি প্রথম মানব হযরত আদম আঃ এর সময় থেকেই পরিচিত ছিল, যেমন আদম আঃ এর সময় তাওহিদের কালিমা ছিল "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ আদমু ছফিউল্লাহ " (ছফি+আল্লাহ) আবার নূহ আঃ সময়"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ নূহ রাসুলুল্লাহ "লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মুসা কালিমুল্লাহ"লাইলাহা ইল্লাল্লাহ ঈসা রুহূল্লাহ ইত্যাদি । আর আদম আঃ থেকে শুরু করে নূহ আঃ এর যূগ পর্যন্ত তৎকালীন সকলমানুষই তাওহীদ তথা একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন , মুসলিম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আত্নসমর্পণকারী ছিলেন,কোন কুফর- শীর্ক বা মূর্তি দেবতা পূজা তাদের কে স্পর্শ করেনি।আল্লাহকে আল্লাহ হিসাবেই মানতো,চিনতো। কিন্তু এর পরবর্তিতে নূহ আঃএর বংশে কুফর শীর্ক মূর্তি পুজা আরম্ভ হলেও,আল্লাহ কে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে মূর্তি বা দেবতাদের ডাকতো এই ভেবে যে তারা আল্লাহর নিকটবর্তি করে দেবে, আল্লাহর কাছে সুপারীশ করবে ইত্যাদি।পরবর্তিতে কাফেররা আল্লাহকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেবতাদেরকেও ডাকতো সহযোগী হিসাবে, যেমন আজকাল আমাদের দেশের হিন্দুরাও মূর্তি-দেবতা পুজায় সেরা হওয়ার পরও জিজ্ঞাসা করলে বলবে , আল্লাহ একজন ,খৃষ্টানরাও তাই বলে, তবে সাথে অংশীদারিত্ব সাব্যস্হ করেন, যা ইসলাম এলাউড করেনা। সুতরাং আল্লাহ শব্দটি জাহেলিয়াতের কাফেরদের শব্দ নয় বরং এই শব্দটি আদিকাল থেকেই পরিচিত একটি শব্দ একটা সত্বা, যিনি হলেন আমার আপনার সকলের সৃষ্টি কর্তা । আল্লাহ তায়ালা। তাছাড়া জাহেলিয়াত বলা হয় হযরত ঈসা আঃকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেয়ার পর থেকে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃএর আগমনের আগ পর্যন্ত প্রায় ৫৭০ বছর, এর মধ্যবর্তী সময়কেই একমাত্র জাহেলী যুগ বলা হয়। এতে পৃথিবীর সকল ঐতিহাসীক একমত,অথচ আল্লাহ শব্দটির সাথে জাহেলী যুগের সাথে কোন সম্পর্কই নেই বরংএর আগের থেকেও দুনিয়াবাসী পরিচিত ছিল।যা উপরের আলোচনা দ্বারায় স্পষ্ট হয়েছে।  ====

উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে আল্লাহ্ একটি আরবি শব্দ, ইসলাম ধর্মানুযায়ী যার মানে হল "বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা এবং প্রতিপালকের নাম"। আল্লাহ" শব্দটি আরবি "আল" (বাংলায় যার অর্থ সুনির্দিষ্ট বা একমাত্র) এবং "ইলাহ" (বাংলায় যার অর্থ সৃষ্টিকর্তা) শব্দদ্বয়ের সম্মিলিত রূপ, যার অর্থ দাড়ায় "একমাত্র আললাহ" বা "একক আললাহ""আল্লাহ" শব্দটি  বর্তমানে প্রধানতঃ মুসলমানরাই  সর্বাধীক ব্যবহার করে থাকেন। তবে আরবি খ্রিস্টানরাও প্রাচীন আরবকাল থেকে "আল্লাহ" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে থাকেন।
সুতরাং আল্লা শব্দটি জাহেলী যুগের শব্দ বলে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মুসলিমদের বোকা বানানো যাবেনা বরং নাস্তিকরাই বোকা সেজে ইতিহাসের আস্তাকুডে নিক্ষিপ্ত হবে ।
৬*  কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি " হুবাল" বা হুবুল" ইলাত বা ইলাহ নয়
ঐভদ্রলোক অন্য এক বক্ততায় বলছে কাবার প্রথম মূর্তির নাম নাকী " ইলাত, বা  ইলাহ," থেকে আল্লাহ শব্দ এসেছে ,নাউযুবিল্লাহ । অথচ এই আগাছা বুড়ো বয়সে  ইতিহাস বিকৃত করে মানুষ কে কি মেসেজ দিতে চাচ্ছে আমরা জানিনা আসলে ইতিহাস বলছে মক্কার প্রথম ও প্রধান মূর্তির নাম হল"হুবাল" বা হুবুল " যা সর্ব প্রথম তৎকালীন মুশরেকদের সরদার আমর বিন লুহাই সিরিয়া থেকে এনে সেই কাবা ঘরে রেখেছিল সেই থেকে মক্কা তথা কাবা ঘরে মূর্তি পুজা শুরু হয়। সুতরাং হুবাল বা হুবুল হল কাবার প্রথম মূর্তি ।
এখন আমর বিন লুহাই কি ভাবে মূর্তি আনলেন তা জেনে নেয়ার চেষ্টা করব ইনাআল্লাহ।
আমর ইবন লুহাই বনু খুজা‘আ গোত্রের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। ছোটবেলা থেকে এ লোকটি ধর্মীয় পূণ্যময় পরিবেশে প্রতিপালিত হয়েছিল। ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল অসামান্য। সাধারণ মানুষ তাকে ভালবাসার চোখে দেখতো এবং নেতৃস্থানীয় ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনে করে তার অনুসরণ করতো। এক পর্যায়ে এ লোকটি সিরিয়া সফর করে। সেখানে যে মূর্তিপূজা করা হচ্ছে সে মনে করলো এটাও বুঝি আসলেই ভাল কাজ। যেহেতু সিরিয়ায় অনেক নবী আবির্ভূত হয়েছেন এবং আসমানী কিতাব নাযিল হয়েছে। কাজেই সিরিয়ার জনগণ যা করছে সেটা নিশ্চয় ভালো কাজ এবং পূণ্যের কাজ হবে। এরূপ চিন্তা করে সিরিয়া থেকে ফেরার পথে সে ‘হুবাল’ নামের এক মূর্তি নিয়ে এসে সেই মূর্তি কা‘বাঘরের ভেতর স্থাপন করলো। এরপর সে মক্কাবাসীদের মূর্তিপূজার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে শির্ক করার আহবান জানালো। মক্কার লোকেরা ব্যাপকভাবে তার ডাকে সাড়া দেয়। মক্কার জনগণকে মূর্তিপূজা করতে দেখে আরবের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তাদের অনুসরণ করলো। কেননা, কা‘বাঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের বৃহত্তর আরবের লোকেরা ধর্মগুরু মনে করতো। (শায়খ মুহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহাব, মুখতাছারুস সীরাত, প্রাগুক্ত, পৃ. ২)।
অবশ্য তার পূর্বেই নূহ ‘আলাইহিস সালাম-এর সময়ে সর্বপ্রথম পৃথিবীতে মূর্তিপূজার সূচনা হয়। তারা ওয়াদ্দ, সুওয়া, ইয়াগুছ, ইয়া‘উক ও নসর নামক মূর্তির পূজা করত। এ মর্মে কুরআনে এসেছে
﴿ وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ ﴾ [نوح:٢٣]
“তারা বলল, তোমরা ছাড়বে না তোমাদের উপাস্যদের এবং তোমরা ওয়াদ্দ, সূওয়া, ইয়াগুছ,
ওয়াদ ছিল ‘কালব’ গোত্রের দেবতা, ‘সুওয়া’ ‘হুযাইল’ গোত্রের, ‘ইয়াগুছ’ ‘মায্যাহ’ গোত্রের, ‘ইয়া‘উক’ ইয়ামেনের ‘হামদান’ গোত্রের এবং ‘নাসর’ ইয়ামেন অঞ্চলের ‘হিমইয়ার’ গোত্রের দেবতা ছিল। (ড. জামীল আব্দুল্লাহ আল-মিসরী, তারিখুদ দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফি যামানির রাসূল ওয়াল খোলাফায়ির রাশেদীন, (মদীনা মুনওয়ারা : মাকতাবাতুদ দার, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ৩১।যা ইতে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। সুতস সুতরাং
কাবার প্রথম ও প্রধান মূর্তি " হুবাল" বা হুবুল" ইলাত বা ইলাহ নয় ।
পরিশেষে জাতীয় কবি নজরুলের একটি কবিতার ভাষায় বলতে চাই,
উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেস আর নিন্দাবাদ
আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ
মানুষের অনাগত কল্যানে উহারা চির অবিশ্বাসী
ওরা বলে,হবে নাস্তিক সব মানুষ, করিবে হানাহানি।
মোরা বলি, হবে আস্তিক, হবে আল্লাহ মানুষে জানাজানি।
নিত্য সজীব যৌবন যার, এস এস সেই নৌ-জোয়ান
সর্ব-ক্লৈব্য করিয়াছে দূর তোমাদেরই চির আত্নদান!
ওরা কাদা ছুডে বাঁধা দেবে ভাবে-ওদের অস্র নিন্দাবাদ।
মোরা ফুল ছড়ে মারিব ওদের, বলিব-"এক আল্লাহ জিন্দাবাদ"।
উঃয়য়হহ উ উহারাউউউহাhttp://www.bangla-kobita.com/nazrulislam/ek-allah-jindabad/
আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ইতিহাস পড়ার ও বুঝার তাওফিক দান করুন আমিন।

লেখক :--  এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 

 প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুলগন ইসলামিক একাডিমী  মিরসরাই 

অনলাইন ইসলামী এক্টিভিস্ট, কলামিষ্ট্  ও ব্লগার 

    ফাজেলে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া 

   মিরসরাই কাটাছরা চট্টগ্রাম  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন