Translate

মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৬

বাংলা ও ইংরেজী মাসগুলো গ্রহ নক্ষত্র ও দেবতাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে

 বাংলা ও ইংরেজী মাসগুলো গ্রহ নক্ষত্র ও  দেবতাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে,আর আরবী মাস গুলো বিভিন্ন মৌসূমের উপর ভিত্তি করেই নামকরণ করা হয়েছে ।

ইংরেজী নববর্ষের ইতিহাস

নববর্ষ মানে নতুন বছর। সময়ের হিসাবে একটি বছর শেষ হয়ে নতুন বছর শুরু হতে যাচ্ছে। তো আমরা কেন নতুন বছর বলছি। সময় তো সময়ের মতোই গড়িয়ে যাচ্ছে। দিন যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। তাহলে জেনে নেয়া যাক কীভাবে কখন থেকে সময়ের হিসেব করে নতুন বছর শুরু হলো । জেনে নেয়া যাক বর্ণিল উৎসাহে পালন করা ইংরেজি নববর্ষের ইতিহাস।

মানুষ সূর্য দেখে সময় হিসেব করতো । কিংবা বলা যায় তারও আগে মানুষ বুঝতই না সময় আসলে কী। ধারণাটা আসে চাঁদের হিসাব থেকে। অর্থাৎ চাঁদ ওঠা এবং ডুবে যাওয়ার হিসাব করে মাস এবং তারপর বছরের হিসাব। জানা যায়, প্রথম মিশরীয়রা সূর্য দেখে বছর হিসাব করতে শিখলো। যাকে তারা সৌরবর্ষ নাম দিল। কিন্তু সমস্যা হলো সূর্য দেখে হিসাব আর চন্দ্র দেখে হিসাবের অনেক পার্থক্য থাকতো। কিন্তু বছর গুনলে কী হবে তার হিসাব রাখা জরুরি। তাই সুমেরীয়রা বর্ষপঞ্জিকা আবিষ্কার করলো। যাকে ক্যালেন্ডার বলি।

এরপর গ্রিকদের কাছ থেকে বর্ষপঞ্জিকা পেয়েছিল রোমানরা। তারা কিন্তু ১২ মাসে বছর গুণতো না। তাদের বছরে ছিল ১০ মাস গোনা হতো। রোমানরা বছর হিসাব করতো তিনশো চার দিন। তারা মার্চের ১ তারিখে নববর্ষ উৎযাপনের রীতি চালু করে। পরবর্তীতে রোমের সম্রাট নুমা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস দুটিকে ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি ‘মারসিডানাস’ নামে আরও একটি মাস যুক্ত করেন রোমান বর্ষপঞ্জিকায়। তখন থেকে রোমানরা ১ জানুয়ারি নববর্ষ পালন করতে শুরু করে।

১৫৩ খ্রিস্টপূর্বে প্রথম রোমানরা ১ জানুয়ারি নববর্ষ পালন করেছিল।

ঘটা করে ১ জানুয়ারি নববর্ষ পালন শুরু হয় সম্রাট জুলিয়াস সিজারের সময় থেকে। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ অব্দে সম্রাট জুলিয়াস সিজার একটি নতুন বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন ঘটান। রোমানদের আগের বর্ষপঞ্জিকা ছিল চন্দ্রবর্ষের, সম্রাট জুলিয়াসেরটা হলো সৌরবর্ষের।

রোমানদের দরজা ও ফটকের দেবতা ছিলেন জানুস। তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে জানুয়ারি মাসের নাম হওয়ায় জুলিয়াস ভাবলেন নতুন বছরের ফটক হওয়া উচিত জানুয়ারি মাস। সেজন্য জানুয়ারির ১ তারিখে নববর্ষ পালন শুরু হলো। আর পরে জুলিয়াস সিজারের নামানুসারে প্রাচীন কুইন্টিলিস মাসের নাম পাল্টে রাখা হয় জুলাই। আরেক বিখ্যাত রোমান সম্রাট অগাস্টাসের নামানুসারে সেক্সটিনিস মাসের নাম হয় অগাস্ট।

যিশুখ্রিস্টের জন্ম বছর থেকে গণনা করে ডাইওনিসিয়াম এক্সিগুয়াস নামক এক খ্রিস্টান পাদ্রি ৫৩২ অব্দ থেকে সূচনা করেন খ্রিস্টাব্দের। ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দের কথা। রোমের পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি জ্যোতির্বিদদের পরামর্শ নিয়ে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার সংশোধন করেন। এরপর ওই সালেই অর্থাৎ ১৫৮২ তে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারে ১ জানুয়ারিকে আবার নতুন বছরের প্রথম দিন বানানো হয়।

জানুয়ারী মাসঃ    রোমান দেবতা Janus এর নাম অনুসারে জানুয়ারি মাসের নামকরণ হয়েছে। বিপরীতমুখী দুই মুখওয়ালা জানাস ছিলো দরজার দেবতা। একটি মুখ পেছনের বছরকে দেখে, আরেকটি মুখ দেখে সামনের বছরটিকে।  অতি প্রাচীনকালে রোমে জানুস নামে একজন অতি পরোপকারী সম্রাট ছিলেন। লোকেরা তাকে দেবতার আসন দেয়। তিনি যুদ্ধ-কলহ পছন্দ না করার কারণে তাকে শান্তি দেবতাও বলা হতো। তার মৃত্যুর পর ভক্তরা তার প্রতিমূর্তি স্থাপন করে পূজা করতে করতে তা তাদের কাছে হয়ে যায় দেবতা। এই জানুসের নামে প্রথম মাসের সূচনা করা হয় জানুডিয়াস নামে। পরে ইংরেজী করনে জানুয়ারী হয়েছে। রোম শাসক নুমা পম্পিলিয়াস (NUMA Pompilius) ৩০ দিন মাস করেন। যা ঈসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্মের ৭০০ বছর পূর্বে। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ অব্দে জুলিয়াস সীজার (Julius Caesar) একদিন যোগ করে প্রথম মাস হিসেবে চালু করেন।  

ফেব্রুয়ারী মাসঃ  রোমান দেবী Februa এর নাম অনুসারে ফেব্রুয়ারি মাসের নামকরণ হয়েছে। আবার Februa হলো শুদ্ধতার রোমান উৎসব, ফেব্রুয়ারির ১৫তম দিনে হতো এই উৎসব।ল্যাটিন “ফেব্রুয়া” শব্দ থেকে এসেছে এ নাম। যার অর্থ পাপের দণ্ড। অপরাধীদের এ মাসে জরিমানা ও নানা শাস্তি দিয়ে শুদ্ধ করা হতো।


মার্চ মাসঃ রোমান যুদ্ধের দেবতার নাম হচ্ছে মার্স (Mars)। এটি রোমান বছরের প্রথম মাস, যার নামকরণ হয়েছে যুদ্ধের রোমান দেবতা Mars’র নাম অনুসারে।

প্রাচীন রোমের ক্যালেন্ডারে এই মাস প্রথম মাস ছিল। সীজার তৃতীয় মাসে স্থান দেয়। কনষ্টাইনটাইনের আমলে ইংরেজী করণে নাম হয় মিয়ার্স। আধুনিকী করণে হয় মার্চ।
এপ্রিল মাসঃ রোমানরা বলতো এপ্রেলিস। তাদের ক্যালেন্ডারে এটা দ্বিতীয় মাস। সীজারই চতুর্থ মাসে নিয়ে যায়। কোন কোন ইতিহাস গবেষক বলেন, গ্রীক নাম এপরোডাইট (Aphrodite) থেকে এপ্রিল নামে উৎপত্তি। এপরোডাইট ছিল গ্রীসের প্রেম দেবতার নাম। এপ্রেলিস ইংরেজী করণে হয় এপ্রিল।
মে মাসঃ   ইতালীয় বসন্তের দেবী Maia’র নাম অনুসারে মে মাসের নাম হয়।রোমানদের নিকট বসন্ত ও সতেজতার দেবীর নাম ছিল মায়া (Maya)। এর নাম অনুসারে মে এর নামকরণ। প্রাচীন রোমান ক্যালেন্ডারে এ মাসটি তৃতীয় মাস থাকলেও সীজার তা পঞ্চম স্থানে নিয়ে যান।
জুন মাসঃ রোমানদের নিকট        বিবাহের পৃষ্টপোষক  ও নারীকল্যানের  দেবীর নাম জুনো (Juno) দেবী। তার নামানুসারে জুন মাসের নামকরণ হয়। প্রথমে মাসটি ২৯ দিনে ছিল। সীজার ৩০ দিনে করে ৬ষ্ট মাস স্থান দেন।
জুলাই মাসঃ   খ্রীস্টপূর্ব ৪৪ সালে সম্রাট Julius Caesar এর সম্মানে এ মাসের নামকরণ করা হয়।

জুলিয়াস সীজার এ মাসে জন্ম গ্রহণ করেন। তার সম্মানে রোমানরা এ মাসের নাম রাখে জুলিয়াসের মাস। সীজারের আমল থেকেই ৩১ দিনে করে সপ্তম মাসে স্থান দেয়া হয়।
আগষ্ট মাসঃ 
 রোমানরা এ মাসকে বলতো সেক্সটিলিজ মাস। সম্রাট অগাষ্টাস খ্রিষ্টপূর্ব ৩৬ অব্দে রোমের তিনাই শাসন পরিষদের সদস্য হয়ে গৃহযুদ্ধ মিটিয়ে রোমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তাই পরবর্তীতে তার সম্মানে এ মাসের নামকরণ হয় অগাষ্টাস। রোমান সিনেট অগাষ্ট নামকরণ করে। ইংরেজী করণে হয় আগষ্ট। 


সেপ্টেম্বর মাসঃ ল্যাটিন শব্দ সেপটেম থেকে এসেছে, যার অর্থ সপ্তম। রোমান ক্যালেন্ডারে সপ্তম মাসেই ছিল। সীজার এ মাসকে নবম স্থান দেন। ইংরেজী করণে হয় সেপ্টেম্বর।
অক্টোবর মাসঃ ল্যাটিন শব্দ অকটম থেকে উৎপত্তি, যার অর্থ আট। রোমান ক্যালেন্ডারে মাসটি অষ্টম স্থানে ছিল। সীজার দশম স্থানে নিয়ে যান। ইংরেজী করণে হয় অক্টোবর।
নভেম্বর মাসঃ ল্যাটিন শব্দ নভেম থেকে উৎপত্তি, যার অর্থ নবম। টাইবারিয়াস সীজার রোমের ১১তম সম্রাট ছিলেন। তার সম্মানে এ মাসের নামকরণ করতে চাইলে তিনি আপত্তি তোলেন। তাই তিনি ১১তম সম্রাট হিসেবে মাসটিকে ১১তম স্থান দেয়া হয়।
ডিসেম্বর মাসঃ রোমান ক্যালেন্ডারে দশম স্থানে ২৯ দিনে ছিল। ল্যাটিন শব্দ ডিসেম থেকে উৎপত্তি, যার অর্থ দশ। সীজার ২ দিন যোগ করে ১২তম স্থানে নিয়ে যান।
সূত্র :- সং স্কৃতি বনাম অপসংস্কৃতি বই থেকে   


 বাংলা ১২ মাস ও ৭ দিনের নাম কোথা থেকে এসেছে? আসুন জেনে নেই। 
======================================
প্রাচীনকালে উপমহাদেশে পঞ্জিকা ‘পঞ্চাঙ্গ’ নামেও পরিচিত ছিল। কারণ এতে ছিল পাঁচটি অঙ্গ। যেমন- বার, তিথি, নক্ষত্র, যোগ ও করণ। এই পঞ্জিকা গণনা পদ্ধতি রচিত হয়েছিল আনুমানিক ১৫০০ পূর্বাব্দে। তখন বছরকে ভাগ করা হয়েছিল বারোমাসে। সেই মাসগুলোর নাম ছিল নিম্নরূপঃ (১) তপঃ (২) তপস্যা (৩) মধু (৪) মাধব (৫) শুক্স (৬) শুচি (৭) নভস (৮) নভস্য (৯) ইষ (১০) উর্জ (১১) সহস ও (১২) সহস্য। পরে মহাশূন্যের নক্ষত্রের নামানুসারে বাংলা বারোমাসের নামকরণ হয়েছে। দৈনিক সংগ্রাম  30 April 2014 ১৭ বৈশাখ ১৪২১, ২৯ জমাদিউসসানি ১৪৩৫ হিজরী।

মাসঃ 
বঙ্গাব্দের বারো মাসের নামকরণ করা হযেছে নক্ষত্রমন্ডলে চন্দ্রের আবর্তনে বিশেষ তারার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে । বাংলা মাসের এই নামগুলি হচ্ছেঃ 
• বৈশাখ - বিশাখা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• জ্যৈষ্ঠ - জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• আষাঢ় - উত্তর ও পূর্ব আষাঢ়া নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• শ্রাবণ - শ্রবণা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• ভাদ্র -উত্তর ও পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• আশ্বিন - অশ্বিনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• কার্তিক - কৃত্তিকা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• অগ্রহায়ণ(মার্গশীর্ষ) - মৃগশিরা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• পৌষ - পুষ্যা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• মাঘ - মঘা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• ফাল্গুন - উত্তর ও পূর্ব ফাল্গুনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• চৈত্র - চিত্রা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
সম্রাট আকবর কর্তৃক প্রবর্তিত তারিখ-ই-ইলাহী-র মাসের নামগুলি প্রচলিত ছিল পারসি ভাষায়, যথা: ফারওয়াদিন, আর্দি, ভিহিসু, খোরদাদ, তির, আমারদাদ, শাহরিযার, আবান, আযুর, দাই, বহম এবং ইসক্নদার মিজ।
দিন
বাংলা সন অন্যান্য সনের মতোই সাত দিনকে গ্রহণ করেছে এবং এ দিনের নামগুলো অন্যান্য সনের মতোই তারকামন্ডলীর উপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে।



• সোমবার হচ্ছে সোম বা শিব দেবতার নাম অনুসারে, অথবা চন্দ্র পৃথিবীর একটি উপগ্রহ। আর চন্দ্রের প্রতিশব্দ হলো সোম। এই সোম উপগ্রহ থেকে বাংলা সোমবারের নামকরণ করা হয়েছে
• মঙ্গলবার হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের নাম অনুসারে
• বুধবার হচ্ছে বুধ গ্রহের নাম অনুসারে
• বৃহস্পতিবার হচ্ছে বৃহস্পতি গ্রহের নাম অনুসারে
• শুক্রবার হচ্ছে শুক্র গ্রহের নাম অনুসারে
• শনিবার হচ্ছে শনি গ্রহের নাম অনুসারে
• রবিবার হচ্ছে রবি বা সূর্য দেবতার নাম অনুসারে, কারণ 
সূর্য একটি নক্ষত্র। আর সূর্য নামক নক্ষত্রের প্রতিশব্দ হলো রবি। সেই রবি নক্ষত্র থেকে বাংলা রবিবারের নামকরণ হয়েছে


বাংলা সনে দিনের শুরু ও শেষ হয় সূর্যোদয়ে । ইংরেজি বা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির শুরু হয় যেমন মধ্যরাত হতে ।
তথ্যঃ উইকিপিডিয়া অবলম্বনে।


 https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6 


বাংলা-ইংরেজী বার মাসের নাম সমূহে দেবদেবী বা গ্রহ নক্ষত্রের নাম থাকলেও আজকাল বহুল প্রচলীতর কারণে এ গুলো গননা করা বা উচ্ছারণ করা গুনাহ বা নাজয়েয নহে । ,কারণ এনাম গুলো কেউ দেবদেবীর নাম হিসাবে গননা করেন না।আবার এ গুলোত যে দেবদেবীর নাম আছে তা অনেকে জানেনইনা।শুধু মাত্র ইতিহাসবিদ বা গবেষকরাই এ ব্যপারে অবগত আছেন।
এই জন্যইতো  জনৈক কবি কতইনা সুন্দর বলেছেন


من ندانم جنورى و فرورى  === ليك دانم سالما  فيغمبرى  

সংকলন সংযোজন 
এম এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া 
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক  নূরুল গনি ইসলামি একাডেমী কাটাছরা জোরারগঞ্জ মিরসরাই চট্টগ্রাম। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন