Translate

শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১২

,,,রোযা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে?

রোযা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে?

প্রশ্ন
রোযা অবস্থায় শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে ইনহেলার ব্যাবহার করলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে?
উত্তর
চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে,শ্বাস গ্রহণের রাস্তা দিয়ে কোন ঔষধ উদাহরণ স্বরূপ ভেনটোলিন ইনহেলার ব্যবহার করলে তার ১০% উপকরণ সরাসরি ফুসফুসে পৌছায়,বাকী ৯০% উপকরণ পরিপাকযন্ত্র শোষন করে,আর এ অবস্থায় ঔষধ সরাসরি রোগীর পেটে গিয়ে পৌঁছায়।
যেহেতু ইনহেলার গ্রহণের রাস্তাটি সেটাই যেটা দ্বারা খাদ্য পেটে যায়, বা খাদ্য পৌঁছানোর নালির নিকটবর্তী শিরা দিয়ে তা গ্রহণ করা হয়,তাই এর দ্বারা রোযা ভেঙ্গে যাবে। সতর্কতা এটাই। সতর্কতা হিসেবে শরয়ী অনেক বিধানই সাব্যস্ত হয়। উদাহরণত-
1-ঘুমকে অযু ভঙ্গের কারণ সাব্যস্ত করা। এ হিসেবে যে, ঘুমিয়ে গেলে নিতম্ব জমিন থেকে উঠে যেতে পারে, ফলে বায়ু বের হয়ে যায়। যদিও ঘুম অযু ভঙ্গের কারণ নয়, বরং বায়ু বের হওয়া হল অযু ভঙ্গের কারণ। কিন্তু যেহেতু ঘুমিয়ে গেলে এসব ব্যাপারে কোন খবর থাকে না, তাই ঘুমটাকেই সতর্কতাস্বরূপ অযু ভঙ্গের কারণ সাব্যস্ত করা হয়েছে। {বাদায়েউস সানায়ে-২/৫৩৫}
২-সহবাস করা সত্বেও বীর্যপাত না হলেও গোসল করাকে আবশ্যক সাব্যস্ত করা হয়েছে। অথচ গোসল ওয়াজিব হওয়ার মূল কারণ হল বীর্যপাত হওয়া। এটা এজন্য সাব্যস্ত করা হয়েছে যে, যেহেতু বীর্যপাত সহবাসের কারণেই হয়ে থাকে। তাই কারণটাকেই সতর্কতাস্বরূপ মূল বিষয়ের হুকুমে সাব্যস্ত করা হয়েছে। {হেদায়া-১/১৯, বাদায়েউস সানায়ে-১/১৪৬}
৩-
এমনিভাবে ঐ ব্যক্তির উপর রোযা রাখা আবশ্যক করা হয়েছে সতর্কতাস্বরূপ যে নিজে চাঁদ দেখেছে কিন্তু বিচারক তথা চাঁদ কমিটি তার চাঁদ দেখাকে গ্রহণ করেনি। {হেদায়া-১/১৯, বাদায়েউস সানায়ে-১/১৪৬, ফাতওয়ায়ে শামী-১/২৯৯}
যেহেতু ইনহেলার সে রাস্তা দিয়েই ব্যবহার করা হয়, যা দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করা হয়, তাই সতর্কতামূলত রোযা ভেঙ্গে যায় বলেই হুকুম আরোপিত করা হবে।
রোযা অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া ইনহেলার ব্যবহার করা জায়েজ নয়। যদি কেউ একান্ত বাধ্য হয়ে ইনহেলার ব্যবহার করে তাহলে তার জন্য রোযা না রাখার অনুমতি আছে। তবে পরে তা কাযা আদায় করতে হবে।
فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَنْ كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ [٢:١٨٥]
কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে,সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর,যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। {সূরা বাকারা-১৮৫}
রোযা অবস্থায় ভাঁপ দিয়ে ওষুধ পৌঁছানোর বিধান
ভাঁপ দিয়ে মুখে ভিতর ওষুধ পৌছানোর দ্বারা রোযা ভেঙ্গে যায়। চাই আগের পদ্ধতিতে ভাঁপ দেয়া হোক বা নতুন কোন মেশিনের দ্বারা ভাঁপ দেয়া হোক। সর্বাবস্থায় রোযা ভেঙ্গে যাবে। কারণটি স্পষ্ট। সেটা হল-এর দ্বারা হলকের ভিতরে ওষুধ পৌঁছে যায়।
উত্তর লিখনে
লুৎফর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া ঢাকা।
ইমেইল-jamiatulasad@gmail.com
lutforfarazi@yahoo.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন