Translate

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১১

প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী ও মাসীহ আ. ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি

এম আবদূল্লাহ ভূঁইয়া প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী ও মাসীহ আ. ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি- উল্লেখ্য, কাদিয়ানী সম্প্রদায় ইমাম মাহদী ও মাসীহ আ. একই ব্যক্তি হওয়া সম্পর্কে সুনানে ইবনে মাজাহর বরাতে একটি হাদীস পেশ করে থাকে যে, لا مهدي إلا عبيسى بن مريم অর্থাৎ ঈসা ইবনে মারইয়ামই হলেন মাহদী। হাদীসটির তাৎপর্য ও ব্যাখ্যা সহ বিস্তারীত আলোক পাত করা হয়েছে পৃথক পৃথক ভাবে হযরত ঈসা আ. আল্লাহ তাআলার রাসূল। যিনি বনী ইসরাইলের নিকট প্রেরিত হয়েছিলেন। আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগে দুনিয়ায় তাঁর আগমন হয়েছে। কুরআন মজীদে তাঁর পরিচয় ও ঘটনা বিদ্যমান রয়েছে। পক্ষান্তরে মাহদী রা. এখনও আবির্ভূত হননি। কিয়ামতের পূর্বে তার আবির্ভাব হবে। তিনি নবী হবেন না। আখেরী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হিসেবে দুনিয়ায় থাকবেন। হাদীস শরীফে তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ হয়েছে। কুরআন ও হাদীসের এ সকল দলিল থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, হযরত ঈসা আ. ও মাহদী রা. ভিন্ন দুজন ব্যক্তি। তাদের সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে যা বলা হয়েছে তা জানা থাকলে এ বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। এখানে কুরআন ও হাদীস থেকে তাদের প্রত্যেকের পরিচয় ও কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল। ঈসা আ.-এর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য ক) তিনি মারইয়াম রা.-এর পুত্র। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) সে মারইয়ামের পুত্র ঈসা। (সূরা মারইয়াম : ৩৪) খ) ঈসা আ. আল্লাহ তাআলার কুদরতে পিতা ছাড়া শুধু নিজ মা (মারইয়াম) এর মাধ্যমে জন্মলাভ করেছেন। কুরআন মজীদে আছে, (তরজমা) তিনি (মারইয়ামকে) বললেন, আমি তো তোমার প্রতিপালকের প্রেরিত তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য। মারইয়াম বলল, আমার পুত্র হবে কেমন করে, যখন আমাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি এবং আমি নই কোনো ব্যভিচারিণী নারী? ফিরিশতা বলল, এভাবেই হবে। তোমার রব বলেছেন, আমার পক্ষে এটা একটা মামুলি কাজ। আমি এটা করব এজন্য যে, তাকে মানুষের জন্য (আমার কুদরতের) এক নিদর্শন বানাব এবং আমার নিকট হতে রহমতের প্রকাশ ঘটাব। (সূরা মারইয়াম : ১৯-২১) গ) ঈসা আ. ছিলেন আল্লাহ তাআলার রাসূল। তিনি বনী ইসরাইলের নিকট প্রেরিত হয়েছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, (তরজমা) স্মরণ কর সেই সময়কে যখন ঈসা ইবনে মারইয়াম বলেছিল, হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহ তাআলার রাসূল হয়ে এসেছি। (সূরা সাফ্ফ : ৬) অন্যত্র বলা হয়েছে, হে নবী! আমি তোমার প্রতি ওহী নাযিল করেছি সেইভাবে যেভাবে নাযিল করেছি নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের প্রতি। এবং আমি ওহী নাযিল করেছিলাম ইবরাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাদের বংশধরগণ-ঈসা, আইয়ুব, ইউনুস, হারুন ও সুলাইমানের প্রতি। (সূরা নিসা : ১৬৩) ঘ) ঈসা আ.কে আল্লাহ তাআলা আকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন। আখেরী যামানায় কিয়ামতের কিছুদিন পূর্বে আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। কুরআন মজীদে আছে, যখন আল্লাহ তাআলা বলেছিলেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে সহীহ সালামতে ওয়াপস নিয়ে নিব। তোমাকে নিজের কাছে তুলে নিব। এবং যারা কুফুরি অবলম্বন করেছে তাদের (উৎপীড়ন) থেকে তোমাকে মুক্ত করব। (সূরা আলইমরান : ৫৫) অন্য আয়াতে আছে, তারা বলে আমরা আল্লাহর নবী ঈসা ইবনে মারইয়ামকে হত্যা করেছি। অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি, শুলেও চড়াতে পারেনি। বরং তাদের বিভ্রম হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে যারা এ সম্পর্কে মতভেদ করেছে তারা এ বিষয়ে সংশয়ে নিপতিত। এবং এ বিষয়ে অনুমানের অনুসরণ ছাড়া তাদের প্রকৃত কোনো জ্ঞানও ছিল না। সত্য কথা হচ্ছে তারা ঈসাকে হত্যা করেনি। বরং আল্লাহ তাআলা তাকে নিজের কাছে তুলে নিয়েছেন। (সূরা নিসা : ১৫৭) ঙ) তিনি কিয়ামতের আগে আসমান থেকে অবতরণ করবেন। কিছুদিন দুনিয়ায় অবস্থান করবেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কসম সেই সত্ত্বার, যার কুদরতী হাতে আমার প্রাণ, অতি নিকটবর্তী সময়ে তোমাদের মাঝে অবতরণ করবেন মারইয়ামের পুত্র (ঈসা)। (সহীহ বুখারী ১/৪৯০; জামে তিরমিযী, হাদীস : ২২৩৩) চ) ঈসা আ. আকাশ থেকে অবতরণের পর ৪০ বছর দুনিয়াতে থাকবেন। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দীকা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, ঈসা আ. আকাশ থেকে অবতরণ করে দাজ্জালকে হত্যা করবেন এবং ৪০ বছর দুনিয়াতে থাকবেন। (মুসনাদে আহমদ ৬/৭৫; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৮৬২৯) ইমাম মাহদীর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য ক) ইমাম মাহদী ফাতেমা রা-এর বংশে জন্মগ্রহণ করবেন্ উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী হবে ফাতেমার বংশধর। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪০৮৬) খ) মাহদী রা.-এর নাম হবে মুহাম্মাদ এবং তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার মাত্র একদিনও বাকি থাকে তবুও-আল্লাহ তাআলা ঐ দিনকে দীর্ঘ করবেন এবং আমার বংশের এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। তার নাম আমার নামের সাথে এবং তার পিতার নাম আমার পিতার নামের সাথে মিলে যাবে। (অর্থাৎ তার নাম হবে মুহাম্মাদ ও তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮১; জামে তিরমিযী, হাদীস : ২২৩০) উপরোক্ত হাদীসে কিয়ামতের পূর্বে ইমাম মাহদীর আগমনের বিষয়টি এবং তার নাম ও বংশের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। গ) মাহদী রা. নবী হবেন না। তিনি হবেন একজন নেককার ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি। তিনি মুসলমানদের খলীফা হবেন। আবু উমামা বাহেলী রা. থেকে বর্ণিত, এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নেককার লোক বলে অভিহিত করেছেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪০৭৭) উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে মানুষ তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবেন। (অর্থাৎ তার দিক নির্দেশনা অনুযায়ী চলার জন্য তার হাতে হাত রেখে শপথ করবে।)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৫) ঘ) মাহদী রা. সাত বছর খেলাফতের দায়িত্ব পালন করবেন এবং দুনিয়াতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী আমার বংশের হবে। তার চেহারা উজ্জ্বল হবে। (তার দ্বারা) গোটা দুনিয়ায় ইনসাফ কায়েম হবে। যেমনিভাবে (ইতিপূর্বে) পুরো দুনিয়ায় অন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তিনি সাত বছর খেলাফতের দায়িত্ব পালন করবেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৪) উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী (খলীফা হওয়ার পর) সাত বছর বেঁচে থাকবেন। এরপর মৃত্যুবরণ করবেন। মুসলমানগণ তার জানাযা পড়বে। (সুনানে আবু দাউদ, হা: ৪২৮৬) উপরে ঈসা আ. ও মাহদী রা. সম্পর্কে কুরআন মজীদ ও হাদীস শরীফ থেকে যে তথ্যগুলো দেওয়া হল এগুলো থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায় যে, ঈসা আ. ও মাহদী রা. ভিন্ন দুই ব্যক্তি। কিয়ামতের আগে মাহদী রা.-এর আবির্ভাব হবে এবং ঐ সময় ঈসা আ.ও আসমান থেকে অবতরণ করবেন। কিছুকাল তারা দু’জন একত্রেও থাকবেন। সুতরাং তাদেরকে এক ব্যক্তি দাবি করার অর্থ, দু’জনের কোনো একজনকে অস্বীকার করা। অথচ ঈসা আ.-এর দুনিয়ায় আসা, তাকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া এবং কিয়ামতের আগে আবার দুনিয়াতে আগমন করার বিষয়টি কুরআন মজীদ ও মুতাওয়াতির হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তদ্রূপ কিয়ামতের আগে ইমাম মাহদীর আগমনও মুতাওয়াতির হাদীসে রয়েছে। তিনি ফাতেমা রা.-এর বংশধর হওয়া, একজন নেককার ও ন্যায়পরায়ণ শাসক হওয়া ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিবরণও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। জালালুদ্দীন সুয়ূতী রাহ. মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলন করে একটি আলাদা পুস্তিকাই লিখেছেন। যা তার আলহাভী লিলফাতাভী গ্রন্থের ২য় খন্ডে বিদ্যমান রয়েছে। তাতে ২১৩-২৪৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মোট ৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী ইমাম মাহদী সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলিত হয়েছে। এরপর সুয়ূতী রাহ. লিখেছেন আবুল হাসান মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন বলেন, ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির। হাফেয ইবনে হাজার রাহ. ফাতহুল বারীতে (৬/৫৬৯) লিখেছেন, আবুল হাসান মানাকেবুশ শাফেয়ী তে বলেছেন, ইমাম মাহদী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হবেন এবং ঈসা আ. তার পিছনে নামায পড়বেন। তার আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির। সুতরাং ইমাম মাহদীকে অস্বীকার করার অর্থ, মুতাওয়াতির হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অকাট্য বিষয়কে অস্বীকার করা। অতএব এ ধরনের চিন্তা ও বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। উল্লেখ্য, কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের প্রধান মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকারের মিথ্যা দাবি করেছে। কোনো সময় নিজেকে নবী ও রাসূল, কোনো সময় আদম ও মারইয়াম হওয়ার দাবি করেছে। কখনো যুগের মুজাদ্দিদ হওয়ার দাবি করেছে। এমনিভাবে নিজেকে ঈসা ও মাহদী বলেও দাবি করেছে। এমন আরো অনেক দাবি সে করেছে যেগুলো কুরআন ও হাদীসের দৃষ্টিতে সুস্পষ্ট মিথ্যা ও ঈমান পরিপন্থী। মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী নিজের ব্যাপারে এ ধরনের দাবি করায় সে সময়ের সাধারণ লোকজনও বুঝতে পারত যে, লোকটি মিথ্যাবাদী। এক সময় যখন তাকে বলা হল, মাহদী ও মাসীহ তো দু’জন। আপনি একত্রে ঐ দুজন হলেন কীভাবে? তখন সে ঐ মিথ্যা দাবির সমর্থনে উক্ত বর্ণনাটি পেশ করে। অথচ ইতিপূর্বে কুরআন ও হাদীস থেকে ঈসা আ. ও মাহদী রা.-এর যে পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে তা থেকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, তারা দু’জন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ঈসা বা মাহদী নয়। কারণ ঈসা আ. ও মাহদী রা.-এর বংশ পরিচয়ের সঙ্গে গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর বংশ পরিচয়ের কোনো মিল নেই। গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর পিতার নাম গোলাম মুর্তজা। সে পাঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলার কাদিয়ান নামক এলাকায় ১৮৩৯ মতান্তরে ১৮৪০ খৃস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করে। পক্ষান্তরে ঈসা আ. পিতা ছাড়া আল্লাহর কুদরতে নিজ মা মারইয়ামের মাধ্যমে জন্মলাভ করেছেন। তিনি বনী ইসরাইলের নিকট নবী হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন এবং আল্লাহ তাআলা তাকে জীবিত অবস্থায় আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন। কিয়ামতের আগে আসমান থেকে অবতরণ করবেন। আর ইমাম মাহদী এখনো দুনিয়াতে আসেননি। তিনি ফাতেমা রা.-এর বংশে জন্মলাভ করবেন। তার নাম হবে মুহাম্মাদ। তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ। তাদের উভয়ের বংশ-পরিচয়, বৈশিষ্ট্য কুরআন ও হাদীস থেকে বিস্তারিতভাবে উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। অতএব গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর এ ধরনের দাবি ও বিশ্বাস মিথ্যা এবং ঈমান পরিপন্থী। প্রসঙ্গ : সুনানে ইবনে মাজার হাদীস গোলাম আহমদ কাদিয়ানী তার দাবি-(ঈসা আ. ও মাহদী রা. এক ও অভিন্ন ব্যক্তি) এর সপক্ষে সুনানে ইবনে মাজাহ-এর যে বর্ণনাটি বলে থাকে, হাদীস শাস্ত্রের ইমামগণ বর্ণনাটিকে শরীয়তের অন্যান্য অকাট্য দলিলের ভিত্তিতে মুনকার (অগ্রহণযোগ্য) বলেছেন। কেউ কেউ মাওযূও বলেছেন। হাদীস বিশারদ ইমাম সাগানী রাহ. বলেছেন, উক্ত হাদীসটি মওযূ (জাল)। দেখুন : মীযানুল ইতিদাল ৪/১০৭; সিয়ারু আলামিন নুবালা ১২/৩৫১; আলফাওয়ায়িদুল মাজমূআ, শাওকানী ২/১২৭; আলমানারুল মুনীফ ১৪১ লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, সুনানে ইবনে মাজাতেই ইমাম মাহদীর আগমন সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সহীহ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। (দেখুন : সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪০৮৫, ৪০৮৬, ৪০৮৭) সুতরাং হাদীস বিশারদগণের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেটি অগ্রহণযোগ্য বা মওযূ বর্ণনা, তার উপর ভিত্তি করে একটি অকাট্য আকীদাকে কখনো অস্বীকার করা যায় না। আল্লাহ তাআলা সকলকে ঈমান ও হেদায়েতের উপর অবিচল রাখুন এবং ঈমান বিনষ্টকারী সকল প্রকার ষড়যন্ত্র থেকে হেফাযত করুন। আমীন। কাদিয়ানী সম্প্রদায় সম্পর্কে জানার জন্য আরো পড়তে পারেন : ছুবুত হাজের হেঁ; আয়নায়ে কাদিয়ানিয়্যত, কাযিবাতে মির্জা, কাদিয়ানী কিউ কাফের হ্যায় (উর্দু)। কাদিয়ানী সম্প্রদায় : তত্ত্ব ও ইতিহাস, কাদিয়ানী ফিতনা ও মুসলিম মিল্লাতের অবস্থান, কাদিয়ানী মতবাদ ও উলামায়ে ইসলাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন