Translate

শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১২

সাহরী, কালিন সহবাস,কুলি করা ,,ফজরের নামাজ তাড়াতাড়ি ,

সাহরী খাওয়ার সুন্নত সময়:
রোযাদারের জন্য রাতের শেষাংশে সুবহে সাদিকের আগে আগেই সাহরী খাওয়া সুন্নত এবং সাওয়াব ও বরকতরেত কারণ। অর্ধ রাতের পরে যে সময়ই সাহরী খাবে সাহরীর সুন্নত আদায় হয়ে যাব। কিন্তু রাত্রের শেষাংশে সাহরী খাওয়া উত্তম। যদি মুয়ায্যিন সময় হওয়ার পূর্বেই ফযরের আযান দিয়ে দেন, তা হলে সাহরী খাওয়া নিধে নয়। যতণ সুবহে সাদিক না হয়, ততণ খেতে পারবে। সাহরীর সময়ের ব্যপারে হাদীস শরীফে পাওয়া যায়, যায়েদ বিন সাবেত রাদিঃ বর্ণনা করেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে সাহরী খেয়েছি তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নামাজের জন্য দণ্ডায়মান হয়ে গেলেন। আরেক হাদীসে এসেছে, হযরত আনাস রাদিঃ বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আযান এবং সাহরীর মধ্যে কতটুকু বিলম্ব থাকত? তিনি বললেন, পঞ্চাশ আয়াত তেলাওয়াত করার সময় পরিমাণ (তরজমা বোখারী :১/৬৮৯)।
সাহরীর জন্য ঘন্টা-ঢোল বাজানো:
সামাজি ও ধর্মীয় অন্যান্য কাজে যে রকম ডাকা ডাকি ও ঘন্টা বাজানো সাইলেন বাজানো জায়েয আছে। তবে প্রচলিত কোন বাদ্যযন্ত্র না হতে হবে। সাহরী ও ইফতারের সময় জানানোর জন্য গানবাদ্ধ সাদৃশ্য ছাড়া প্রয়োজনীয় উচ্চ আওয়াজ সম্বলিত বস্তু দিয়ে মানুষকে ঢাকা যাবে (ফতোওয়ায়ে রহীমিয়া/ শামী)।
তাড়াতাড়ি সাহরী খেয়ে অব্যস্ত কিছু খাওয়া:
যথা সম্ভব সাহরী দেরী করে খাবে। মনে রাখতে হবে যাতে রোযার ব্যপারে সন্দেহ সৃষ্টি না হয় (বেহেস্তী জেওর)।এ এ ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায়, সাহরী তাড়াতাড়ি খেয়ে তারপর পান, তামাক (সিগারেট) চা ইত্যাদী দেরি করে পানাহার করে আর যখন সুবহে সাদিক হওয়ার সামান্য সময় বাকি থাকে তখন কুলি করে নেয়, তা হলে বিলম্ব করে সাহরী খাওয়ার সওয়াব পেয়ে যাবে (শরহুল বিদায়াহ)। তবে রামাযান মাসে পান সিগারেট যতটুকু সম্ভব পরিহার করা ভাল। অনেক সময় দেখা যায়, সাহরী খাওয়া সময় মুয়াজ্জিন সাহেব আযান দিয়ে দিচ্ছে, এসময়টা নিয়ে অনেক সময় আমাদের দেশের কতক লোকটে রোযা নিয়ে সন্দেহ মনোরোগে ভোগে। এেেত্র ফয়সালা হচ্ছে, যদি প্রবল ধারণা হয় যে, সুবহে সাদিক হওয়ার পরেই আযান আরম্ভ হয়েছে, তা হলে রোযা হবেনা। আর যদি মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়, সুবহে সাদিকের পূর্বে না পরে তাহলে ঐ সময়ে পানাহার মাকরূহ তবে রোযা হয়ে যাবে (আহসানুল ফতোওয়া)।
সাহরী খাওয়া ছাড়া রোযা হবে কি না?
এমন রোগও কারো কারো মাঝে দেখা যায়, সাহরী খাওয়া মূলত রোযার জন্য মুস্তাহাব। সুতরাং সাহরী খাওয়া ছাড়া রোযা হয়ে যাবে (ফতোওয়ায়ে দারুল উলুম)। জাগ্রত না হওয়ার কারণে সাহরী ছুটে গেলে সাহরী খাওয়া ছাড়াই রোযা রাখবে। সাহরী না খাওয়ার অজুহাতে রোযা ছেড়ে দেওয়া যাবেনা।
সাহরী খাওয়ার পর বিবির সাথে সহবাস করা:
আমাদের দেশে অনেক সময় এমনও হয়। সাহরী খাওয়ার পর স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হয়। এমতাবস্থায় রোযাদারের করণীয় কি? ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম ও মিশকাত শরীফে পাওয়া যায়, রমযান শরীফে সাহরী খাওয়ার পর যদি সুবহে সাদিক হওয়ার সময় দেরী থাকে, তা হলে স্বীয় বিবির সাথে সহবাস করা যাবে। কোন ব্যক্তি যদি সুবহে সাদিকের পূর্বে সাহরী খেয়ে সুবহে সাদিকের সময় থাকতে থাকতে বিবির সাথে সহবাস করে তাহলে দোষের কিছু নেই। সাহরীও দ্বিতীয়বার খেতে হবেনা এবং রোযারও কোন প্রকার তি হবেনা। ফরজ গোসল সুবহে সাদিকের পর করলেও কোন অসুবিধা নেই।
সাহরী খাওয়ার পর কুলি করা প্রসঙ্গে:
এবিষয়টা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেননা আমাদের দেশের মানুষের প্রায়শ দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। অনেকের দাঁতের মধ্যে বড় বড় গর্ত ও সুড়ঙ্গ সৃষ্টি হয়। ফলে কিছু খাওয়ার পর দাঁতের ঐসমস্ত গর্তে খাদ্যদ্রব্যের কিছু কিছু অংশ লুকিয়ে থাকে। এজন্যে সাহরী খাওয়ার পর ভালভাবে কুলি করে নেবে যেন দাঁতের ফাঁক ফোঁকে কোন খাদ্যদ্রব্য আটকে থাকলেও তা পরিস্কার হয়ে যায়। মনে রাখা ভাল, কুলি না করার কারণে দাঁতের ফাঁকে চনা বা বুটের সমপরিমাণ অথবা তার বেশী কোন খাদ্য যদি আটকে যায়, এবং তা যদি গলার ভিতর চলে যায়, তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। এরোযার েেত্র উক্ত রোযার কাযা ওয়াজিব হবে কাফফারা ওয়াজিব হবেনা। উল্লেখিত পরিমাণের চেয়ে ছোট বা কম হলে রোযা ভাংবে না। তারপরও সতর্কতা অবলম্বনের জন্য কুলি করে নেওয়া ভাল (আহসানুল ফতোওয়া)।
রমাযান মাসে ফজরের নামাজ তাড়াতাড়ি করা প্রসঙ্গে:
রমাযান মাসে দেখা যায় অনেক লোক সাহরী খাওয়ার পর ফজরের নামাজ দেরী আছে তখন তারা ঘুমিয়ে পড়ে, এবস্থায় অনেক লোকের ফজরের মূল্যবান নামাজ ছুটে যায় আবার অনেকের কাযা হয়ে যায়। উক্ত বিষয়ে ফয়সালা হল, রমাযানে সাহরী খাওয়ার পরে, প্রথম ওয়াক্তে ফযরের নামাজের জন্য নামাজীরা একত্রিত হলে এবং প্রতিদিনের সময়মত (রমাযান ছাড়া অন্যান্য সময়ের ফযরের নামাজের মত) জামাত করতে গেলে অধিকাংশ লোকের জামাত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকে। এমনকি নামাজই কাযা হয়ে যায়। তাই রমাযান মাসে ফজরের নামাজ প্রথম সময়ে আদায় করে নেওয়া উত্তম (ফতোওয়ায়ে মাহমুদিয়াহ)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন